নামাজের হাদিস সমূহ । মুয়াত্তা ইমাম মালিক

নামাজের হাদিস সমূহ । মুয়াত্তা ইমাম মালিক

নামাজের হাদিস সমূহ । মুয়াত্তা ইমাম মালিক, এই অধ্যায়ে হাদীস =৭১ টি ( ১৪৬-২১৬ পর্যন্ত ) >> মুয়াত্তা ইমাম মালিক এর মুল সুচিপত্র দেখুন

অধ্যায় – ৩ নামায

পরিচ্ছেদ ০১. নামাযের প্রতি আহ্বান

১৪৬. ইয়াহইয়া ইবনি সাঈদ [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ দুটি কাঠ তৈরী করাবার ইচ্ছা করেছিলেন, যেন একটির দ্বারা অপরটির উপর আঘাত করে ধ্বনি সৃষ্টি করে মানুষকে নামাযের জামাতের উদ্দেশ্যে একত্র করা যায়। অতঃপর আবদুল্লাহ ইবনি যায়দ আনসারী এবং বনি হারিস ইবনি খাযরাযী [রাদি.] স্বপ্নে দুটি কাঠ দেখিতে পেয়ে বলিলেন, এ দুটি অনুরূপ কাঠই যেরূপ কাঠ রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ তৈরী করিতে চেয়েছেন। তারপর তাহাকে বলা হলো, তোমরা নামাযের জন্য আযান দাও না কেন? ঘুম হইতে জাগার পর তিনি রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ-এর সমীপে উপস্থিত হয়ে তাঁর স্বপ্নের কথা আরয করলেন। অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ আযানের জন্য হুকুম দিলেন।

[হাসান, আবু দাঊদ ৪৯৯, তিরমিজি ১৮৯, ইবনি মাজাহ ৭০৬, আল্লামা আলবানী [রাহিমাহুল্লাহ] ইরওয়া ২৪৬ গ্রন্থে হাদীসটিকে হাসান বলেছেন, আর ঈমাম মালিক কর্তৃক হাদীসটি মুরসাল] নামাজের হাদিস সমূহ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ অন্যান্য

১৪৭ আবু সাঈদ খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ বলেছেন, যখন তোমরা আযান শোন তখন মুয়াযযিনের অনুরূপ তোমরাও বল।

[বুখারি ৬১১, মুসলিম ৩৮৩] নামাজের হাদিস সমূহ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৪৮ আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ বলেছেন, মানুষ যদি জানত আযান ও প্রথম কাতারে কী [বরকত ও মঙ্গল] রয়েছে, তবে তা পাবার জন্য লটারী ছাড়া উপায় না থাকলে তারা এর জন্য লটারী করত। আর যদি তারা জানত দ্বিপ্রহরের নামাযে [যোহর ও জুমআয়] প্রথম সময়ে জাওয়াতে কী রয়েছে তবে তার দিকে দ্রুত গতিতে ধাবিত হত। আর তাঁরা যদি জানত ইশা ও ফজরের নামাযে কী রয়েছে তা হলে উভয় নামাযের জন্য অবশ্যই আসত, এমনকি হামাগুড়ি দিয়েও।

[বুখারি ৬১৫, ৬৫৪, মুসলিম ৪৩৭] নামাজের হাদিস সমূহ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৪৯ আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ বলেছেন, যখন নামাযের ইকামত বলা হয় তখন তাড়া-হুড়া না করে ধীরে সুস্থে আসবে। অতঃপর জামাতের সাথে যতখানি পাবে তা আদায় করে অবশিষ্ট নামায নিজে নিজে পুরণ করিবে। কেননা তোমাদের কেউ নামাযের উদ্দেশ্যে বের হলে তাকে নামাযে গণ্য করা হয়।

[বুখারি ৬৩৬, মুসলিম ৬০২] নামাজের হাদিস সমূহ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৫০ আবদুর রহমান ইবনি আবি সাসাআ আনসারী মাযনী [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

আবু সাঈদ খুদরী [রাদি.] তাহাকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, আমি দেখিতেছি তুমি মাঠ ও বকরীকে ভালবাস। তুমি যখন তোমার বকরীর সঙ্গে থাক অথবা মাঠে থাক এবং নামাযের জন্য আযান দাও তবে তার স্বরে আযান দিও। কারণ আযানের স্বর মানুষ, জিন এবং অন্য যে কেউ শুনতে পায়, সে মুয়াযযিনের জন্য কিয়ামত দিবসে সাক্ষ্য দেবে।

আবু সাঈদ [রাদি.] বলেছেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ হইতে অনুরূপ শুনিয়াছি।

[বুখারি ৬০৯, এবং ৩২৯৬] নামাজের হাদিস সমূহ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৫১ আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ বলেছেন, নামাযের জন্য আযান দেওয়ার সময় শয়তান সশব্দে বায়ু ছাড়তে ছাড়তে পালায়, যেন সে আযানের শব্দ না শোনে। আযান শেষ হলে সে আবার আসে। ইকামত আরম্ভ হলে আবার পলায়ন করে। ইকামত বলা শেষ হলে পুনরায় উপস্থিত হয় এবং ওয়াস্ওয়াসা ঢেলে নামাযী ব্যক্তি ও তাঁর অভীষ্ট লক্ষের মধ্যে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে; যে সকল বিষয় তার স্মরণ ছিল না সে সবের প্রতি আকৃষ্ট করে সে বলিতে থাকে অমুক বিষয় স্মরণ কর, অমুক বিষয় স্মরণ কর। ফলে সে ব্যক্তি কত রাকাআত নামায আদায় করেছে তা পর্যন্ত ভুলে যায়।

[বুখারি ৬০৮, মুসলিম ৩৮৯] নামাজের হাদিস সমূহ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৫২ সাহ্ল ইবনি সাআদ সায়েদী [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

দুটি মুহূর্ত এরূপ আছে সে সময় অসমানের দরওয়াজা খোলা হয় এবং সে মুহূর্তদ্বয়ে প্রার্থনাকারীর প্রার্থনা ক্বচিৎ ফেরত দেয়া হয়; নামাযের আযানের মুহূর্ত এবং আল্লাহর পথে জিহাদের কাতার ঠিক করার মুহূর্ত। [সহীহ, আবু দাঊদ ২৪৫০, আল্লামা আলবানী সহীহ ও জঈফ সুনানে আবু দাঊদ গ্রন্থে হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন]

ইয়াহ্ইয়া [রাহিমাহুল্লাহ] বলেছেন, মালিক [রাহিমাহুল্লাহ]-কে প্রশ্ন করা হল জুমআর দিন সময়ের পূর্বে আযান দেয়া যায় কি? তিনি উত্তর দিলেন, না, যায় না। সূর্য পশ্চিম দিকে ঝুঁকার পরই আযানের সময় হয়।

ইয়াহ্ইয়া [রাহিমাহুল্লাহ] বর্ণনা করেন, মালিক [রাহিমাহুল্লাহ]-কে প্রশ্ন করা হল আযান ও ইকামত-এর [বাক্যগুলি] দুই দুইবার বলা প্রসঙ্গে এবং ইকামতের সময় মানুষের কোন সময় দাঁড়াতে হইবে সে প্রসঙ্গে। তিনি উত্তর দিলেন আযান ও ইকামতের বিষয় আমি লোকজনক যে পর্যায়ে পেয়েছি এর চেয়ে বেশি কিছু আমার কাছে পৌঁছেনি। ইকামত অবশ্য দুই দুইবার বলিতে নাই। আমাদের শহরের [মদীনা শরীফ] বিজ্ঞ আলিমগণ এই মতই পোষণ করিতেন। ইকামতের সময় দাঁড়ানোর সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট কোন সীমা আমি জ্ঞাত নই। তবে আমার মতে এটা অনেকটা লোকের শক্তি-সামর্থ্যরে উপর নির্ভর করে। কারণ সব লোক এক রকমের নয়; তাদের মধ্যে সবল ও দুর্বল সকল প্রকারের লোকই থাকে।

ইয়াহ্ইয়া [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিত; মালিক [রাহিমাহুল্লাহ]-কে প্রশ্ন করা হল, যারা প্রবাসী নয় বরং মুকীম [স্বদেশে বা বিদেশে শরীয়তসম্মত স্থায়ী বসবাসকারী] তারা ফরয নামায জামাত সহকারে আযান ছাড়া শুধু ইকামত বলে আদায় করিতে চাইলে-এই বিষয়ে আপনার মত কি? তিনি বলিলেন, কেবল ইকামত বললেও চলবে। কেননা আযান ওয়াজিব হয় সেই মসজিদের জন্য যেসব মসজিদে জামাত অনুষ্ঠিত হয় এবং লোকজনকে নামাযের জন্য আহ্বান করা হয়।

ইয়াহ্ইয়া [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিত; মুয়াযযিন কর্তৃক ঈমামকে সালাম দেওয়া, নামাযের জন্য তাকে আহ্বান করা এবং সর্বপ্রথম কোন আমীরের প্রতি এইরূপ করা হয়েছিল এই বিষয়ে মালিক [রাহিমাহুল্লাহ]-কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলিলেন, এইরূপ সালাম দেওয়ার রীতি প্রথম যুগে ছিল বলে আমি অবগত নই।

ইয়াহ্ইয়া [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিত; মুয়াযযিন আযান দিয়ে অপেক্ষা করিল, কিন্তু নামায আদায়ের জন্য কেউ আসল না। অতএব, সে ইকামত বলে একা একাই নামায আদায় করিল। নামায শেষ হলে কিছু লোক আসল। এমতাবস্তায় সে কি পুনরায় আগন্তুকদের সাথে নামায আদায় করিবে? মালিক [রাহিমাহুল্লাহ]-এর নিকট এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলিলেন, না, পরে যারা আসবে তারা পৃথক পৃথকভাবে নামায আদায় করিবে ।

ইয়াহ্ইয়া [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিত; মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] কে প্রশ্ন করা হলো মুয়াযযিন আযান দেবার পর নফল নামায শুরু করিল। লোকজন এসে অন্যের দ্বারা ইকামত বলে জামাত সহকারে নামায আদায়ের ইচ্ছা করিল, এইরূপ করা চলে কি ? তিনি উত্তর দিলেন যায়, এটা বৈধ। ইকামত বলার ব্যাপারে মুয়াযযিন এবং অন্য ব্যক্তি এক সমান।

ইয়াহ্ইয়া [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিত; মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] কে প্রশ্ন করা হলো ফজরের আযান প্রায়ই সুবহে-সাদিক-এর আগে দেয়া হত। কিন্তু অন্যসব নামাযের আযান আমরা সময় হওয়ার পূর্বে দিতে দেখিনি।

নামাজের হাদিস সমূহ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

১৫৩ মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেছেন, তাঁর নিকট সংবাদ পৌঁছেছে যে, ফজরের নামাযের সংবাদ দেয়ার জন্য মুয়াযযিন উমার ইবনি খাত্তাব [রাদি.]-এর কাছে আসলেন এবং তাহাকে ঘুমন্ত পেয়ে বলিলেন

الصَّلَاةُ خَيْرٌ مِنْ النَّوْمِ

আস্‌সলা-তু খয়রুম মিনান্‌ নাওম

উমার [রাদি.] শুনে বাক্যটিকে ফজরের আযানের অন্তর্ভূক্ত করবার নির্দেশ দিলেন। [হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ]-এর চাচা আবু সুহায়ল ইবনি মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] তাঁর পিতা হইতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেছেন, লোকদেরকে [পূর্বযুগে] যেরূপ পেয়েছি, এখন নামাযের আযান ব্যতীত আর অন্য কিছুই সেরূপ দেখছি না। [হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

নামাজের হাদিস সমূহ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

১৫৪ নাফি [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

আবদুল্লাহ্ ইবনি উমার [রাদি.] ইকামত শুনে বকী নামক স্থান হইতে মসজিদের দিকে ত্বরিত ধাবিত হয়েছিলেন। [হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

নামাজের হাদিস সমূহ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

পরিচ্ছেদঃ ২ঃ সফরে আযান দেওয়া এবং ওযূ ছাড়া আযান দেওয়া

১৫৫ নাফি [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

এক শীতল রজনীতে আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] আযান দিতে নির্দেশ দিলেন। আযানের পর বলিলেন,

أَلَا صَلُّوا فِي الرِّحَالِ

আলা সাল্লু ফী রিহালা

তোমরা নিজ নিজ আবাসে নামায আদায় কর। তারপর তিনি বলিলেন, শীতল ও বর্ষণশীলা রজনীতে

أَلَا صَلُّوا فِي الرِّحَالِ

আলা সাল্লু ফী রিহালা

বলবার জন্য রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ মুয়াযযিনকে নির্দেশ দিতেন।

[বুখারি ৬৬৬, ৬৩২, মুসলিম ৬৯৭] নামাজের হাদিস সমূহ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৫৬ নাফি [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] সফরে শুধু ইকামত বলিতেন। অবশ্য ফজরের সময় আযান ও ইকামত দুটোরই ব্যবস্থা করা হত। তিনি বলিতেন, আযান বলিতে হয় সেই ইমামের বেলায় যাঁর সাথে নামায আদায়ের উদ্দেশ্যে লোকজন একত্রিত হয়। [হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

নামাজের হাদিস সমূহ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

১৫৭ হিশাম ইবনি উরওয়া [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

তাঁর পিতা বলেছেন, তুমি সফরে থাকাবস্থায় চাইলে আযান ও ইকামত দুটোই বলিতে পার, আর যদি চাও, আযান না দিয়ে শুধু ইকামতও বলিতে পার।

ইয়াহ্ইয়া [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিত; আমি মালিক [রাহিমাহুল্লাহ]-কে বলিতে শুনিয়াছি, আরোহী আযান দিলে কোন সমস্যা নেই। [হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

নামাজের হাদিস সমূহ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

১৫৮ ইয়াহ্ইয়া ইবনি সাঈদ [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

সাঈদ ইবনি মুসায়্যাব [রাহিমাহুল্লাহ] বলেছেন, যে ব্যক্তি মাঠে নামায আদায় করে তাঁর ডানে একজন ও বামে একজন ফেরেশতা নামাযে দাঁড়ান। আর যদি সে আযান ও ইকামত দিয়ে নামায আদায় করে তবে তাঁর পিছনে পাহাড় পরিমাণ [বহু] ফেরেশতা নামাযে শামিল হন। [হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

নামাজের হাদিস সমূহ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

পরিচ্ছেদঃ ৩ঃ আযানের পর সাহরী খাওয়া

১৫৯ আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ বলেছেন, বিলাল রাত অবশিষ্ট থাকতে আযান দেয়। অতএব ইবনি উম্মি-মাকতুম আযান না দেওয়া পর্যন্ত তোমরা পানাহার করিতে পার।

[বুখারি ৬২০, মুসলিম ১০৯২] নামাজের হাদিস সমূহ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৬০ সালিম ইবনি আবদুল্লাহ [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ বলেছেন, বিলাল রাত [অবশিষ্ট থাকতে] আযান দেয়। অতঃপর তোমরা পানাহার করিতে থাক যতক্ষণ ইবনি উম্মি মাকতুম আযান না দেয়।

তিনি [রেওয়ায়ত বর্ণনাকারী] বলেছেন, ইবনি উম্মি মাকতুম ছিলেন অন্ধ ব্যক্তি। তাঁর উদ্দেশ্যে [ভোর হয়েছে] না বলা পর্যন্ত তিনি আযান দিতেন না।

[বুখারি ৬১৭, মুসলিম ১০৯৩, তবে ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] কর্তৃক হাদীসটি মুরসাল] নামাজের হাদিস সমূহ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ অন্যান্য

পরিচ্ছেদঃ ৪ঃ নামাযের আরম্ভ

১৬১ আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ নামায শুরু করার সময় উভয় হাত কাঁধ বরাবর তুলতেন এবং যখন রুকূ হইতে মাথা তুলতেন তখনও দুই হাত অনুরূপভাবে তুলতেন এবং বলিতেন

سَمِعَ اللهُ لِمَنْ حَمِدَهُ رَبَّنَا وَلَكَ الْحَمْدُ

(সামিয়াল্লাহু লিমান হামিদা রাব্বানা লাকাল হামদ)

অবশ্য সিজদার সময় তিনি হাত তুলতেন না। [বুখারি ৭৩৫, মুসলিম ৩৯০] নামাজের হাদিস সমূহ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৬২

রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ নামায শুরু করার সময় উভয় হাত কাঁধ বরাবর তুলতেন এবং যখন রুকূ হইতে মাথা তুলতেন তখনও দুই হাত অনুরূপভাবে তুলতেন এবং বলিতেন

سَمِعَ اللهُ لِمَنْ حَمِدَهُ رَبَّنَا وَلَكَ الْحَمْدُ

(সামিয়াল্লাহু লিমান হামিদা রাব্বানা লাকাল হামদ)

অবশ্য সিজদার সময় তিনি হাত তুলতেন না। [বুখারি ৭৩৫, মুসলিম ৩৯০]

আলী ইবনি হুসায়ন আলী ইবনি আবি তালিব [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ নামাযের মধ্যে যখন নিচের দিকে ঝুঁকতেন ও মাথা উপরে তুলতেন তখন তাকবীর বলিতেন। তিনি আল্লাহর সাথে মিলিত হওয়া পর্যন্ত এভাবে নামায আদায় করিয়াছেন। [হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

নামাজের হাদিস সমূহ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

১৬৩ সুলায়মান ইবনি ইয়াসার [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ নামাযে দু হাত উপরে তুলতেন। [হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

নামাজের হাদিস সমূহ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

১৬৪ আবি সালমা ইবনি আবদুর রহমান ইবনি আওফ [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

আবু হুরায়রা [রাদি.] তাঁদের [শিক্ষাদানের] উদ্দেশ্যে নামায আদায় করিতেন এবং তিনি যতবার নিচের দিকে ঝুঁকতেন ও মাথা উপরে তুলতেন ততবার তাকবীর বলিতেন। নামায শেষ করার পর তিনি বলিতেন, তোমাদের মধ্যে রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ-এর নামাযের সাথে আমি অধিকতর সামঞ্জস্য-রক্ষাকারী।

[বুখারি ৭৮৫, মুসলিম ৩৯২] নামাজের হাদিস সমূহ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৬৫ নাফি [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] যখন নিচের দিকে ঝুঁকতেন ও মাথা উপরে তুলতেন তখন তাকবীর বলিতেন। [হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

নাফি [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিত; আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] নামায শুরু করার সময় দুহাত কাঁধ বরাবর তুলতেন। আর যখন রুকূ হইতে মাথা তুলতেন তখন দুহাত কাঁধের একটু নিচ পর্যন্ত তুলতেন।

নামাজের হাদিস সমূহ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

১৬৬ আবু নুঈম ওয়াহব ইবনি কায়সার [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] তাঁদেরকে নামাযের তাকবীর শিক্ষা দিতেন। তিনি আরও বর্ণনা করেন, নিচের দিকে ঝুঁকাবার ও মাথা উপরে তুলবার সময় তাকবীর বলার জন্য তিনি {জাবির [রাদি.]} আমাদেরকে নির্দেশ দিতেন। [হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

নামাজের হাদিস সমূহ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

১৬৭ মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেছেন, যদি কোন ব্যক্তি এক রাকআত নামায পায় এবং একবার তাকবীর বলে তার জন্য ঐ এক তাকবীর যথেষ্ট হইবে।

ইয়াহইয়া [রাহিমাহুল্লাহ] মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণনা করেন; ঐ এক তাকবীরই যথেষ্ট হইবে যদি সে উক্ত তাকবীর দ্বারা তাকবীর-এ তাহরীমা-এর নিয়ত করে। [হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

ইয়াহইয়া [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিত; মালিক [রাহিমাহুল্লাহ]-কে প্রশ্ন করা হল এক ব্যক্তি ইমামের সাথে নামাযে শরীক হল কিন্তু সে তাকবীর-এ তাহরীমা ও রুকূর তাকবীর বলেনি। অতঃপর দ্বিতীয় রাকআতে সে তাকবীর বলল। তার কি করা উচিত ? তিনি উত্তর দিলেন সে ব্যক্তির জন্য নামায শুরু হইতে নতুন করে আদায় করা আমি ভাল মনে করি। আর যদি কোন ব্যক্তি ইমামের সাথে তাকবীর-এ-তাহরীমা বলিতে ভুলে যায়, প্রথম রুকূর সময় তাকবীর বলে, রুকূর তাকবীরের সাথে তাকবীর-এ-তহরীমারও নিয়ত করে, তবে আমার মতে উক্ত রুকূর তাকবীরই তার জন্য যথেষ্ট হইবে।

ইয়াহইয়া [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিত; মালিক [রাহিমাহুল্লাহ]-বলেছেন, যে ব্যক্তি একা একা নামায আদায় করেছে সে তাকবীর-এ-তাহরীমা ভুলে গেলে তাকে নামায নতুন করে আদায় করিতে হইবে।

ইয়াহইয়া [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিত; মালিক [রাহিমাহুল্লাহ]-বলেছেন, ঈমাম যদি তাকবীর-এ-তাহরীমা বলিতে ভুলে গেলেন এবং নামায সমাপ্ত করলেন, তবে আমার মতে ঈমাম ও মুকতাদী দুজনের নামায পুনরায় পড়া উচিত, এমন কি মুকতাদীগণ তাকবীর বলে থাকলেও। [হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

নামাজের হাদিস সমূহ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

পরিচ্ছেদঃ ৫ঃ মাগরিব ও ইশা-এর কিরাআত

১৬৮ মুহাম্মাদ ইবনি যুবায়র ইবনি মুতয়িম [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেছেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাঃআঃকে মাগরিবের নামাযে সূরা তুর পাঠ করিতেন শুনেছে।

[বুখারি ৭৬৫, মুসলিম ৪৬৩] নামাজের হাদিস সমূহ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৬৯ আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

উম্মুল ফযল বিনত হারিস [রাদি.] তাহাকে সূরা মুরসালাত পাঠ করিতে শুনে বলেছেন, হে বৎস! তুমি এই সূরা পাঠ করে রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ-এর কথা স্মরণ করিয়ে দিলে। এই সূরাটি সর্বশেষ সূরা যা রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ-এর পবিত্র মুখে মাগরিবের নামাযে পাঠ করিতে আমি শুনিয়াছি।

[বুখারি ৭৬৩, মুসলিম ৪৬২] নামাজের হাদিস সমূহ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৭০

উম্মুল ফযল বিনত হারিস [রাদি.] তাহাকে সূরা মুরসালাত পাঠ করিতে শুনে বলেছেন, হে বৎস! তুমি এই সূরা পাঠ করে রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ-এর কথা স্মরণ করিয়ে দিলে। এই সূরাটি সর্বশেষ সূরা যা রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ-এর পবিত্র মুখে মাগরিবের নামাযে পাঠ করিতে আমি শুনিয়াছি।

[বুখারি ৭৬৩, মুসলিম ৪৬২] কায়স ইবনি হারিস [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি [আবু আবদুল্লাহ সুনাবিহি] বলেছেন, আমি আবু বকর [রাদি.]-এর খিলাফতকালে মদীনায় গেলাম এবং তাঁর ঈমামতিতে মাগরিবের নামায আদায় করলাম। তিনি প্রথম দুই রাকআতে সূরা ফাতিহার পর [কিসার-ই-মুফাসসাল] হইতে এক রাকআতে একটি করে সূরা পাঠ করলেন; তারপর তৃতীয় রাকআতে দাঁড়ালেন। আমি তখন তাঁর এত নিকটবর্তী ছিলাম যে, আমার কাপড় তাঁর কাপড়কে প্রায় স্পর্শ করছিল। সে সময় আমি তাহাকে সূরা ফাতিহা ও [নিচের] আয়াতটি পাঠ করিতে শুনিয়াছি

رَبَّنَا لَا تُزِغْ قُلُوبَنَا بَعْدَ إِذْ هَدَيْتَنَا وَهَبْ لَنَا مِنْ لَدُنْكَ رَحْمَةً إِنَّكَ أَنْتَ الْوَهَّابُ.

হে আমাদের প্রতিপালক! সরলপথ প্রদর্শনের পর তুমি আমাদের অন্তরকে সত্য-লংঘনপ্রবণ করো না এবং তোমার নিকট হইতে আমাদেরকে করুণা দাও, তুমিই মহাদাতা। [সূরা আলে-ইমরান, ৮]

[হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

নামাজের হাদিস সমূহ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

১৭১ নাফি [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] যখন একা নামায আদায় করিতেন তখন চার রাকআত বিশিষ্ট নামাযের প্রত্যেক রাকআতে সূরা ফাতিহার সাথে একটি সূরা পাঠ করিতেন। আর এমনও হত যে, ফরয নামাযের এক রাকআতে দুই-তিনটি সূরা একসাথে পাঠ করিতেন। আর মাগরিবের নামাযে প্রথম দু রাকআতে সূরা ফাতিহার সাথে একটি করে সূরা পড়তেন। [হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

নামাজের হাদিস সমূহ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

১৭২ আদী ইবনি আনসারী [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

বারা ইবনি আযির [রাদি.] বলেছেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ-এর সাথে ইশার নামায আদায় করিতেছিলাম। তিনি সেই নামাযে সূরা ত্বীন পড়েছিলেন। [বুখারি ৭৬৭, মুসলিম ৪৬৪]

নামাজের হাদিস সমূহ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

পরিচ্ছেদঃ ৬ঃ কিরাআত সম্পর্কীয় আহকাম

১৭৩ ইবরাহীম ইবনি আবদিল্লাহ ইবনি হুনায়ন [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ قَسِّـىَّ ও مُعَصْفَرْ [পুরুষদেরকে] পরিধান করিতে নিষেধ করেন, আরও নিষেধ করেন পুরুষদেরকে স্বর্ণের আংটি ব্যবহার করিতে। রুকূতে কুরআন পাঠ করিতেও তিনি নিষেধ করেন قَسِّـىَّ রেখাযুক্ত এক প্রকার রেশমী বস্ত্র এবং معصفر হলুদ বর্ণের বস্ত্র।

[সহীহ, ঈমাম মুসলিম হাদীসের শেষাংশ করিয়াছেন ৪৮০] নামাজের হাদিস সমূহ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ অন্যান্য

১৭৪ আবু হাযিম তাম্মার [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ একদল লোকের কাছে আসলেন, সে সময় তারা [ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দলে বিভক্ত হয়ে] নামায আদায় করছিলেন এবং উচ্চকণ্ঠে কুরআন তিলাওয়াত করছিলেন। এটা দেখে তিনি বলিলেন, নামাযরত ব্যক্তি তার প্রতিপালকের সাথে মোনাজাত করে, কাজেই তার খেয়াল রাখা উচিত যে, কিভাবে তার প্রভুর সাথে আলাপ করছে। আর তোমরা সরবে [নামাযে] কুরআন পাঠে একে অপরের সাথে প্রতিযোগিতা করো না। [সহীহ, আবু দাঊদ ১৩৩২ [রাহিমাহুল্লাহ] তিনি আবু সাঊদ খুদরী [রাদি.] থেকে অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেন, আল্লামা আলবানী সহীহ আল জামে ২৬৩৯ গ্রন্থে সহীহ বলেছেন]

নামাজের হাদিস সমূহ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৭৫ হুমায়দ-এ তবীল [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] বলেছেন, আমি আবু বকর, উমার, উসমান [রাদি.]-এর পেছনে [নামাযে] দাঁড়িয়েছে। তাঁদের কেউই নামায শুরু করার পর

بِسْمِ اللهِ

বিস্মিল্লাহ

[সরবে] পড়তেন না। [বুখারি ৭৪৩, মুসলিম ৩৯৯] নামাজের হাদিস সমূহ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৭৬ আবু সুহায়ল ইবনি মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেছেন, আমরা বলাত নামক স্থানে অবস্থিত আবু জুহায়মের বাড়ি হইতে উমার [রাদি.]-এর কিরাআত শুনতাম। [হাদীসটি ঈমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

নামাজের হাদিস সমূহ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

১৭৭ নাফি [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.]-এর নিয়ম ছিল যে নামাযে ঈমাম সরবে কিরাআত পড়তেন সেই নামাযে ইমামের সহিত কিছু অংশ ছুটে গেলে ঈমাম সালাম ফিরাবার পর আবদুল্লাহ [রাদি.] দাঁড়িয়ে অবশিষ্ট নামায সরবে কিরাআত সহকারে পড়তেন। [হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

ইয়াযিদ ইবনি রূমান [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিত; তিনি বলেছেন, আমি নাফি ইবনি যুবায়র ইবনি মুতয়িম-এর পার্শ্বে দাঁড়িয়ে নামায আদায় করতাম। তিনি আমাকে হস্ত দ্বারা যখন চাপ দিতেন অর্থাৎ ইশারা করিতেন তখন আমি তাহাকে কিরাআত বলে দিতাম, অথচ আমরা দুজনেই তখন নামাযে। [হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

নামাজের হাদিস সমূহ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

পরিচ্ছেদঃ ৭ঃ ফজরের কিরাআত

১৭৮ হিশাম ইবনি উরওয়া [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

আবু বকর সিদ্দীক [রাদি.] ফজরের নামাযে পড়লেন, তিনি ফজরের উভয় রাকাআতে সূরা বাকারা পাঠ করলেন। [হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

নামাজের হাদিস সমূহ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

১৭৯ হিশাম ইবনি উরওয়া [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি আবদুল্লাহ ইবনি আমির ইবনি রবীআ-কে বলিতে শুনেছেন, আমরা উমার ইবনি খাত্তাব [রাদি.]-এর পিছনে ফজরের নামায পড়েছি। তিনি ফজরের নামাযে সূরা ইউসুফ ও সূরা হাজ্ব ধীরেসুস্থে পাঠ করেছিলেন। তিনি [হিশাম-এর পিতা] বলিলেন, তাহলেতো তিনি তখন নামাজে দাঁড়াতেন যখন ফজর শুরু হত। তিনি [আবদুল্লাহ ইবনি আমির ইবনি রবীআ] বলিলেন, হ্যাঁ। [হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

নামাজের হাদিস সমূহ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

১৮০ কাসিম ইবনি মুহাম্মাদ [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

ফুরাফিসা ইবনি উমাইর আল-হানাফি [রাহিমাহুল্লাহ] বলেছেন, উসমান ইবনি আফফান [রাদি.] ফজরের নামাযে প্রায় সূরা ইউসুফ পাঠ করিতেন। তার [পুনঃ পুনঃ] তিলাওয়াত হইতেই আমি উক্ত সূরা কণ্ঠস্থ করেছি। [হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

নামাজের হাদিস সমূহ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

১৮১ নাফি [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] ফজরের নামাযে مُفَصَّلِ -এর প্রথম দশটি সূরা হইতে পাঠ করিতেন; প্রতি রাকআতে উম্মুল কুরআন [ফাতিহা] এবং একটি সূরা। [হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

নামাজের হাদিস সমূহ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

পরিচ্ছেদঃ ৮ঃ উম্মুল কুরআন

১৮২ আলা ইবনি আবদুর রহমান ইবনি ইয়াকুব [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

“আমির ইবনি কুরায়য-এর মাওলা আবু সাঈদ [রাহিমাহুল্লাহ] তাঁর নিকট বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ উবাই ইবনি কাব [রাদি.]-কে ডাকলেন, তখন তিনি নামায আদায় করছিলেন। নামায শেষ করে তিনি রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ-এর সমীপে হাযির হলেন; রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ আপন হাত তাঁর হাতের উপর রাখলেন, তখন তিনি [উবাই ইবনি কাব] মসজিদের দরজা দিয়ে বের হইতে চাচ্ছিলেন। রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ তাহাকে বলিলেন, আমার ইচ্ছা যে, তুমি একটি সূরা জ্ঞাত না হয়ে মসজিদ হইতে বের হইবে না। সূরাটি এইরূপ যে, উহার সমতুল্য কোন সূরা তাওরাত, ইনযীল এমন কি খোদ কুরআন শরীফে ও অবতীর্ণ হয়নি। উবাই [রাদি.] বলিলেন, এটা শুনে সূরাটি জানবার আগ্রহে আমি ধীরে ধীরে চলতে লাগলাম। অতঃপর আমি বললাম হে আল্লাহর রসূল! যে সূরাটি জানাবার বিষয় আপনি আমাকে বলেছেন, তা কোন সূরা ? তিনি বলিলেন, তুমি নামায শুরু করার পর কিভাবে কিরাআত পড় ? উবাই [রাদি.] বলেন আমি সূরা ফাতিহা الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ হইতে শেষ পর্যন্ত তাহাকে পড়ে শুনালাম। তারপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিলেন, এটাই সে সূরা। [যে সূরার কথা বলেছিলাম] এ সূরার নামই {১} سَّبْعُ الْمَثَانِي وَالْقُرْآنُ الْعَظِيمُ [সাবই মাসানী] যা আমাকে প্রদান করা হয়েছে।

[সহীহ, বুখারি ৪৪৭৪, ৪৬৪৭] {১} সাবই মাসানী: সূরা ফাতিহার সাত আয়াত যা পুনঃ পুনঃ আবৃত্তি করা হয়। কুরআনুল আযীম অর্থ মহা কুরআন। নামাজের হাদিস সমূহ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৮৩ আবু নুয়ায়ম ওহ্ব ইবনি কায়সাম [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.]-কে বলিতে শুনেছেন যে ব্যক্তি এমন এক রাকআত নামায আদায় করেছে যাতে সূরা ফাতিহা পাঠ করেনি তার নামায হয়নি, অবশ্য যদি সে ব্যক্তি ইমামের পশ্চাতে [নামায পড়িয়া] থাকে [তবে তার নামায শুদ্ধ হয়েছে]। [হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

নামাজের হাদিস সমূহ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

পরিচ্ছেদঃ ৯ঃ নীরবে যে নামাযে কিরাআত পড়া হয় সেই নামাযে ইমামের পিছনে কুরআন পড়া

১৮৪ আবুস সায়িব মাওলা হিশাম ইবনি যুহরা [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি আবু হুরায়রা [রাদি.]-কে এইরূপ বর্ণনা করিতে শুনেছেন আমি রাসূলুল্লাহ সাঃআঃকে বলিতে শুনিয়াছি, যে ব্যক্তি নামায আদায় করেছে, কিন্তু সে নামাযে উম্মুল কুরআন পাঠ করেনি, তার নামায অসম্পূর্ণ, অসম্পূর্ণ না-তামাম।

আবুস সায়িব [রাহিমাহুল্লাহ] বলিলেন, আমি প্রশ্ন করলাম হে আবু হুরায়রা [রাদি.]! আমি অনেক সময় ইমামের পিছনে [নামায আদায় করে] থাকি [তখন কিভাবে আদায় করব?]। তিনি আমার বাহুতে চিমটি কেটে বলিলেন, হে পারস্যের অধিবাসী! তুমি তা মনে মনে পাঠ কর। কেননা আমি রাসূলুল্লাহ সাঃআঃকে বলিতে শুনিয়াছি আল্লাহ্ তাআলা বলেছেন আমি নামাযকে [সূরা ফাতিহাকে] আমার বান্দা ও আমার মধ্যে আধা-আধি ভাগ করেছি। এটার অর্ধেক আমার, অর্ধেক আমার বান্দার। আর আমার বান্দার জন্য তাই যা সে চায়। রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ বলেছেন, তোমরা পাঠ কর;

الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِيْنَ.

[বিশ্ব জগতের প্রতিপালক আল্লাহরই প্রাপ্য সমস্ত প্রশংসা], আল্লাহ্ [এর উত্তরে] বলেন, আমার বান্দা আমার প্রশংসা করেছে। বান্দা বলে,

الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ

[যিনি দয়াময়, পরম দয়ালু] আল্লাহ্ বলেন, আমার বান্দা আমার গুণ বর্ণনা করেছে। বান্দা বলে-

مَالِكِ يَوْمِ الدِّينِ

[কর্মফল দিবসের মালিক], আল্লাহ্ বলেন, আমার বান্দা আমার শ্রেষ্ঠত্ব বর্ণনা করেছে। বান্দা বলে,

إِيَّاكَ نَعْبُدُ وَإِيَّاكَ نَسْتَعِينُ

আমরা শুধু তোমারই ইবাদত করি, শুধু তোমারই সাহায্য প্রার্থনা করি], আল্লাহ্ বলেন, এই আয়াতটি আমার ও আমার বান্দার মধ্যে আধা-আধি বিভক্ত। আর আমার বান্দার জন্য তাই যা সে চায়! বান্দা বলে

اهْدِنَا الصِّرَاطَ الْمُسْتَقِيمَ صِرَاطَ الَّذِينَ أَنْعَمْتَ عَلَيْهِمْ غَيْرِ الْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ وَلَا الضَّالِّيْنَ.

[আমাদেরকে সরলপথ প্রদর্শন কর, যাদেরকে তুমি অনুগ্রহ দান করেছ, যারা ক্রোধ-নিপতিত নহে, পথভ্রষ্ট নহে।] আল্লাহ্ বলেন, এই আয়াতগুলি আমার বান্দারই। [অর্থাৎ এই প্রার্থনা আমার বান্দার পক্ষ হইতে] এবং তার জন্য উহা যা সে চায়।

[সহীহ, মুসলিম ৩৯৫]নামাজের হাদিস সমূহ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৮৫ হিশাম ইবনি উরওয়া [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

ঈমাম যে সকল নামাযে নীরবে কিরাআত তিলাওয়াত করিতেন সেই নামায তিনি ইমামের পিছনে কিরাআত তিলাওয়াত করিতেন। [হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

নামাজের হাদিস সমূহ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

১৮৬ কাসিম ইবনি মুহাম্মাদ [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

নামাযে ঈমাম কিরাআত সরবে পড়তেন না সেসব নামাযে ইমামের পিছনে কিরাআত পাঠ করিতেন। [হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

নামাজের হাদিস সমূহ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

১৮৭ মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] য়াযিদ ইবনি রূমান [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

যেসব নামাযে ঈমাম সরবে কিরাআত পাঠ করিতেন না সে সব নামাযে নাফি ইবনি মুতায়িম [রাহিমাহুল্লাহ] ইমামের পিছনে কিরাআত পাঠ করিতেন।

ইয়াহইয়া [রাহিমাহুল্লাহ] বর্ণনা করেন যে, মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেছেন, এ বিষয়ে আমি যা শুনিয়াছি তন্মধ্যে এটাই আমার মনঃপূত। [হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

নামাজের হাদিস সমূহ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

পরিচ্ছেদঃ ১০ঃ যাহরী নামাযে ইমামের পেছনে কিরাআত পাঠ হইতে বিরত থাকা

১৮৮ নাফি [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.]-কে প্রশ্ন করা হত, ইমামের পেছনে কেউ কুরআন পাঠ করিবে কি ? তিনি বলিতেন, তোমাদের কেউ যখন ইমামের পেছনে নামায আদায় করে তখন ইমামের কিরাআতই তার জন্য যথেষ্ট। আর একা নামায আদায় করলে অবশ্য কুরআন পাঠ করিবে। আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] নিজেও ইমামের পেছনে কুরআন পাঠ করিতেন না। [হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

ইয়াহ্ইয়া [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, আমি মালিক [রাহিমাহুল্লাহ]-কে বলিতে শুনিয়াছি, আমার মতে যেসব নামাযে ঈমাম সরবে কুরআন পাঠ করেন সেসব নামাযে মুকতাদিগণ কিরাআত হইতে বিরত থাকিবেন। আর যেসব নামাযে ঈমাম নীরবে কুরআন পাঠ করেন সেসব নামাযে তাঁরা কুরআন পাঠ করিবেন। {১}

{১} যেসব নামাযে সরবে কুরআন পাঠ করা হয়, যেমন ফজর, মাগরিব, ইশা, জুমুআ ইত্যাদি, সেসব নামাযকে যাহরী নামায বলা হয়। আর যে সকল নামাযে নীরবে কিরাআত পাঠ করা হয় সে সকল নামাযকে সিররী নামায বলা হয়। নামাজের হাদিস সমূহ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

১৮৯ আবু হুরায়রা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ সরবে কুরআন পাঠ করা হয়েছে এমন একটি নামায সমাপ্ত করলেন। অতঃপর বলিলেন, তোমাদের কেউ এখন [নামাযে] আমার সাথে কুরআন পাঠ করেছে কি? উত্তরে এক ব্যক্তি বলল, হ্যাঁ, আমি পাঠ করেছিলাম, ইয়া রাসূলুল্লাহ ! আবু হুরায়রা [রাদি.] বলিলেন, এর পর রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ বলিলেন, আমি [মনে মনে] বলিতেছিলাম, আমার কী হল, কুরআন পাঠে আমার সাথে মুকাবিলা করা হচ্ছে কেন! এটা শুনে লোকেরা [নামাযে ইমামের পেছনে] কুরআন পাঠ হইতে বিরত হলেন। যে নামাযে রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ সরবে কুরআন পাঠ করেছিলেন, সেইরূপ নামাযেই তিনি [কোন সাহাবী কর্তৃক কুরআন পাঠ করিতে] শুনিয়াছিলেন।

[সহীহ, আবু দাঊদ ৭২৬, তিরমিজি ৩১২, নাসাঈ ৯১৯, ইবনি মাজাহ ৮৪৯, আহমাদ ৭২৬৮] আল্লামা আলবানী হাদীসটি সহীহ বলেছেন, মিশকাত ৮৫৫] নামাজের হাদিস সমূহ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

পরিচ্ছেদঃ ১১ঃ ইমামের পেছনে আমীন বলা

১৯০ আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ বলেছেন, যখন ঈমাম আমীন

آمِينَ

আমিন

বলেন তখন তোমরাও আমীন বল। কেননা যার আমীন ফেরেশতাদের আমীন-এর সাথে একত্রে উচ্চারিত হয় তার পূর্বের গুনাহ্ মাফ করা হয়। [বুখারি ৭৮০, মুসলিম ৪১০]

ইবনি শিহাব [রাহিমাহুল্লাহ] [এই হাদীসের একজন রাবী] বলেছেন, রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ বলিতেন, আমীন।

আবু হুরায়রা [রাদি.] হইতে বর্ণিত; রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ বলেছেন, ঈমাম যখন غَيْرِ الْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ وَلَا الضَّالِّينَ বলবেন তখন আমীন বলো। যাঁর বাক্য ফেরেশতাদের [আমীন] বাক্যের সাথে মিলিত হইবে তার পূর্বের গুনাহ মাফ করা হইবে।

[বুখারি ৭৮২, মুসলিম ৪১০] নামাজের হাদিস সমূহ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৯১ আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ বলেছেন, যখন তোমাদের কেউ আমীন বলে তখন আসমানের ফেরেশতাগণও আমীন বলেন। ফলে যদি এক আমীন [যা তোমাদের কেউ বলেছে] দ্বিতীয় আমীন-এর সাথে [যা ফেরেশতাগণ বলেছেন] মিলিত হয় তবে তার পূর্বের সকল গুনাহ ক্ষমা করা হয়।

[বুখারি ৭৮১, মুসলিম ৪১০] নামাজের হাদিস সমূহ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৯২ আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ বলেছেন, ঈমাম

سَمِعَ اللهُ لِمَنْ حَمِدَهُ

সামিয়াল্লাহু লিমান হামিদাহ

বললে তোমরা বলবে

اَللّٰهُمَّ رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ

আল্লহাহুম্মা রব্বানা লাকাল হামদ

কেননা যার বাক্য ফেরেশতাদের বাক্যের সাথে মিলিত হয় তার পূর্বের পাপ সমূহ মাফ করা হয়।

[বুখারি ৭৯৬, মুসলিম ৪০৯] নামাজের হাদিস সমূহ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

পরিচ্ছেদঃ ১২ঃ নামাযে বসা

১৯৩ মুসলিম ইবনি আবু র্মাইয়াম্ [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেছেন, আবদুল্লাহ্ ইবনি উমার [রাদি.] আমাকে দেখলেন, আমি ছোট ছোট কংকর নিয়ে নামাযে খেলতেছি। আমি নামায পড়ে ফিরলে তিনি আমাকে এইরূপ করিতে নিষেধ করলেন এবং বলিলেন, রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ [নামাযে] যেরূপ করেন তুমিও সেইরূপ করিবে। আমি [আলী ইবনি আবদুর রহমান] বললাম, রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ কিরূপ করিতেন ? তিনি [আবদুল্লাহ ইবনি উমার] বলিলেন, আত্তাহিয়্যাতু পড়ার জন্য ন্মাাযে যখন বসতেন, তখন তিনি ডান করতল ডান উরুর উপর রাখতেন এবং হাতের আঙ্গুলগুলি সংকুচিত করে নিতেন। অতঃপর ইবহাম-এর [বৃদ্ধাঙ্গুলির পার্শ্ববর্তী আঙুল] দ্বারা ইশারা করিতেন এবং বাম করতলকে বাম উরুর উপর রাখতেন, তিনি তারপর বলিলেন, রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ এইরূপই করিতেন।

[সহীহ, মুসলিম ৫৮০] নামাজের হাদিস সমূহ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৯৪ আবদুল্লাহ ইবনি দীনার [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

তাঁর পার্শ্বে এক ব্যক্তি নামায আদায় করলেন। যখন তিনি চার রাকআতের পর বসলেন তখন পিঁড়িতে বসার মত বসলেন। পা দুটি বিছিয়ে দিলেন। নামায সমাপ্ত করার পর আবদুল্লাহ [রাদি.] তাহাকে এইরূপ বসার জন্য দোষারোপ করলেন। ঐ ব্যক্তি বলিলেন, আপনি যে এইরূপভাবে বসেন! আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] বলিলেন, আমার রোগ আছে। [হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

নামাজের হাদিস সমূহ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

১৯৫ মুগীরা ইবনি হাকীম [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি আবদুল্লাহ্ ইবনি উমার [রাদি.]-কে সিজদার মাঝখানে তাঁর উভয় পায়ের গোড়ালির উপর বসতে দেখেছেন। নামায শেষ করার পর তাঁর নিকট এ বিষয়ে উত্থাপন করা হলে, তিনি বলিলেন, এটা নামাযের সুন্নত নয়। আমি অসুস্থতার কারণে এভাবে বসি। [হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

নামাজের হাদিস সমূহ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

১৯৬ আবদুর রহমান ইবনি কাসিম [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

আবদুল্লাহ্ ইবনি আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাহিমাহুল্লাহ] তাঁর নিকট বর্ণনা করেন যে, তিনি আবদুল্লাহ্ ইবনি উমার [রাদি.]-কে নামাযে বসাকালে পিঁড়িতে বসার মত [চার জানু] হয়ে বসতে দেখিতেন। তিনি আরও বলেছেন, আমিও [তা দেখে] সেভাবে বসলাম। তখন আমি তরুণ। আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] আমাকে [এভাবে বসতে] নিষেধ করলেন এবং বলিলেন, নামাযের সুন্নত হচ্ছে ডান পা খাড়া রেখে বাম পা বিছিয়ে দেওয়া। আমি বলে উঠলাম আপনি যে এইরূপ করেন [পিঁড়িতে বসার মত বসেন?] তিনি বলিলেন আমার পা দুটো [বসবার সময়] আমার ভার বহন করিতে অক্ষম।

[সহীহ, বুখারি ৮২৭] নামাজের হাদিস সমূহ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৯৭ ইয়াহ্ইয়া ইবনি সাঈদ [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

কাসিম ইবনি মুহাম্মাদ [রাহিমাহুল্লাহ] আত্তাহিয়্যাতু পড়ার সময় বসার নিয়ম দেখালেন। তিনি ডান পা খাড়া রাখলেন এবং বাম পা বিছিয়ে দিলেন। পায়ের উপর না বসে বাম নিতম্বের উপর বসলেন। অতঃপর বলিলেন, আবদুল্লাহ ইবনি আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাহিমাহুল্লাহ] আমাকে বসার এইরূপ পদ্ধতি দেখিয়েছেন এবং তিনি বলেছেন, তাঁর পিতা এইরূপ করিতেন। [হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

নামাজের হাদিস সমূহ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

পরিচ্ছেদঃ ১৩ঃ তাশাহ্হুদ

১৯৮ আবদুর রহমান ইবনি আবদুল কারী [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি উমার ইবনিল খাত্তাব [রাদি.]-কে মিম্বরে আরোহণ করে লোকদেকে তাশাহহুদ তালীম দিতে শুনেছেন। তিনি বলিতেন,

التَّحِيَّاتُ لِلَّهِ الزَّاكِيَاتُ لِلَّهِ الطَّيِّبَاتُ لِلّٰهِ الصَّلَوَاتُ لِلّٰهِ السَّلَامُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللهِ وَبَرَكَاتُهُ السَّلَامُ عَلَيْنَا وَعَلَى عِبَادِ اللهِ الصَّالِحِينَ أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ.

আত্তাহিয়্যাতু লিল্লাহিয্ যাকিয়াতু লিল্লাহিত তায়্যিবাতু আসসালাওয়াতু লিল্লাহি আস্সালামু আলাইকা আইয়ুহাননাবিয়্যু ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু আস্সালামু আলাইনা ওআলা ইবাদিল্লাহিস সালিহিনা আশহাদু আল লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রসূলুহু।

[হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন, তবে হাদীসটি মারফু পর্যায়ের]

নামাজের হাদিস সমূহ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

১৯৯ নাফি [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] তাশাহহুদ এইরূপ পড়তেন

بِسْمِ اللهِ التَّحِيَّاتُ لِلَّهِ الصَّلَوَاتُ لِلَّهِ الزَّاكِيَاتُ لِلَّهِ السَّلَامُ عَلَى النَّبِيِّ وَرَحْمَةُ اللهِ وَبَرَكَاتُهُ السَّلَامُ عَلَيْنَا وَعَلَى عِبَادِ اللهِ الصَّالِحِينَ شَهِدْتُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ شَهِدْتُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللهِ.

বিসমিল্লাহি আত্তাহিয়্যাতু লিল্লাহি আস্সালাওয়াতু লিল্লাহি আযযাকিয়াতু লিল্লাহি, আস্সালামু আলাননাবিয়্যি ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু আস্সালামু আলাইনা ওআলা ইবাদিল্লাহিস সালিহীন। শাহিদতু আল্-লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু শাহিদ্তু আন্না মুহাম্মাদার রসূলুল্লাহ্।

প্রথম দুই রাকআতের পর তিনি উক্ত তাশাহহুদ পাঠ করিতেন। তাশাহহুদ পাঠ সমাপ্ত করে তাঁর পছন্দ মত দুআ পাঠ করিতেন। নামাযের সর্বশেষ রাকআতের যখন বসতেন তখনও অনুরূপ তাশাহহুদ পড়তেন। অবশ্য তিনি তাশাহহুদ আগে পাঠ করে পরে যা ইচ্ছা দুআ পাঠ করিতেন। তারপর তাশাহহুদ পড়ার পর সালাম-এর ইচ্ছা করলে বলিতেন,

السَّلَامُ عَلَى النَّبِيِّ وَرَحْمَةُ اللهِ وَبَرَكَاتُهُ السَّلَامُ عَلَيْنَا وَعَلَى عِبَادِ اللهِ الصَّالِحِينَ

আসসালামু আলান নাবিয়্যে অয়া রহমাতুল্লাহি অয়া বারাকাতুহু আস সালামু আলাইনা অয়া আলা এবাদিল্লাহিস সালিহিন

السَّلَامُ عَلَيْكُمْ.

আসসালামু আলাইকুম

প্রথমে ডান দিকে, তারপর ইমামের প্রতি অর্থাৎ সামনের দিকে সালাম দিতেন। অতঃপর কেউ বাম দিক হইতে সালাম দিলে তার উত্তর দিতেন। [হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করলেও মারফু পর্যায়ের]

নামাজের হাদিস সমূহ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

২০০ আবদুর রহমান ইবনি কাসিম [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

নাবী সাঃআঃ-এর সহধর্মিনী আয়েশা [রাদি.] তাশাহহুদ পড়ার সময় বলিতেন,

التَّحِيَّاتُ الطَّيِّبَاتُ الصَّلَوَاتُ الزَّاكِيَاتُ لِلَّهِ أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ السَّلَامُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللهِ وَبَرَكَاتُهُ السَّلَامُ عَلَيْنَا وَعَلَى عِبَادِ اللهِ الصَّالِحِينَ السَّلَامُ عَلَيْكُمْ.

[ঈমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করলেও হাদীসটি মারফু পর্যায়ের]

নামাজের হাদিস সমূহ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

২০১ ইয়াহ্ইয়া ইবনি সাঈদ [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

কাসিম ইবনি মুহাম্মাদ তাহাকে বলিলেন যে, নাবী [স.]-এর সহধর্মিনী আয়েশা [রাদি.] তাশাহ্হুদ পড়ার সময় বলিতেন,

التَّحِيَّاتُ الطَّيِّبَاتُ الصَّلَوَاتُ الزَّاكِيَاتُ لِلَّهِ أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُ اللهِ وَرَسُولُهُ السَّلَامُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللهِ وَبَرَكَاتُهُ السَّلَامُ عَلَيْنَا وَعَلَى عِبَادِ اللهِ الصَّالِحِينَ السَّلَامُ عَلَيْكُمْ.

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিত; তিনি ইবনি শিহাব ও নাফি مَوْلَى ابْنِ عُمَرَ [রাহিমাহুল্লাহ]-এর নিকট প্রশ্ন করেন, এক ব্যক্তি জামাতে শামিল হল, ইতিপূর্বে ঈমাম এক রাকআত শেষ করেন, সে ইমামের সাথে দ্বিতীয় ও চতুর্থ রাকআতে তাশাহহুদ পড়বে কি, যদিও সে তিন রাকআতই পড়িল ? দুজনে [উত্তরে] বলিলেন, হ্যাঁ, সে ইমামের সাথে তাশাহ্হুদ পড়বে। [হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

ইয়াহ্ইয়া [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিত; মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেছেন, আমাদের [মদীনাবাসীদের] আমল ও অনুরূপ।

নামাজের হাদিস সমূহ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

পরিচ্ছেদঃ ১৪ঃ যে ব্যক্তি [রুকু অথবা সিজদা হইতে] ইমামের পূর্বে মাথা উত্তোলন করে তার কি করিতে হইবে

২০২আবু হুরায়রা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেছেন, যে ব্যক্তি ইমামের পূর্বে মাথা তোলে অথবা ঝোঁকায় তার কপাল শয়তানের হাতে। [মাওকুফ, হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

ইয়াহ্ইয়া [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেছেন, যে ব্যক্তি ভুলবশত রুকূ-সিজদায় ইমামের পূর্বে মাথা উঠিয়েছে তার বিষয়ে সুন্নাহ বা নিয়ম হল, সে পুনরায় রুকূ অথবা সিজদায় ফিরে যাবে। এতে সে ইমামের অপেক্ষা করিবে না। কেননা যে ব্যক্তি এটা করেছে, সে ভুল করেছে। কারণ রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ বলেছেন, অনুসরণের জন্যই ঈমাম নিযুক্ত করা হয়েছে। কাজেই তোমরা ইমামের বরখেলাফ করো না। আবু হুরায়রা [রাদি.] বলেছেন, যে ব্যক্তি ইমামের পূর্বে মাথা উঠায় অথবা ঝোঁকায় তার কপাল শয়তানের হাতে।

[বুখারি ৭২২, মুসলিম ৪১৪] নামাজের হাদিস সমূহ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

পরিচ্ছেদঃ ১৫ঃ দুই রাকআত পড়ার পর ভুলবশত কেউ সালাম ফিরালে তার কি করা কর্তব্য

২০৩ আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ [একবার] দুই রাকআত [পড়িয়া] নামায সমাপ্ত করলেন, তখন যুল-ইয়াদায়ন {১} [রাদি.] তাহাকে বলিলেন, হে আল্লাহর রসূল! নামায সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে, না আপনার ভুল হয়েছে ? এটা শুনে রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ উপস্থিত মুসল্লিদের সম্বোধন করে বলিলেন, যুল-ইয়াদায়ন ঠিক বলেছেন কি ? লোকেরা বলিলেন, হ্যাঁ। অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ উঠলেন এবং শেষের দু রাকআত আদায় করলেন; তারপর [একদিকে] সালাম ফিরিয়ে আল্লাহু আকবার বলে সিজদা করলেন, পূর্বের মত [সিজদা] অথবা তা হইতে দীর্ঘ সিজদা। অতঃপর [পবিত্র] শির উঠালেন, পুনরায় তাকবীর বলে সিজদায় গেলেন, পূর্বের [সিজদার] মত অথবা তা হইতে দীর্ঘ সিজদা, অতঃপর [পবিত্র] শির উঠালেন।

[বুখারি ৭১৪, মুসলিম ৫৭৩] {১} যুল-ইয়াদায়ন সাহাবীর নাম খিরবাক [রাদি.]। তাঁর হাত কিছুটা লম্বা ছিল বলে তাহাকে যুল-ইয়াদায়ন [দুই হাতধারী] বলা হত অথবা তিনি নিজ হাতের শ্রম দ্বারা উপার্জন করিতেন বা দান খয়রাত করিতেন। তাই তিনি যুল-ইয়াদায়ন উপাধি লাভ করেছিলেন। নামাজের হাদিস সমূহ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২০৪ আবু আহমাদ [রাহিমাহুল্লাহ]-এর পুত্রের মাওলা আবু সুফইয়ান [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি আবু হুরায়রা [রাদি.]-কে বলিতে শুনেছেন রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ [একদা] আসরের নামায আদায় করলেন, তিনি [উহাতে] দুই রাকআতের পর সালাম ফিরালেন। যুল-ইয়াদায়ন দাঁড়িয়ে বলিলেন, হে আল্লাহর রসূল! নামায কমিয়ে দেয়া হয়েছে না আপনি ভুলে গিয়েছেন? রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ ফরমালেন [আমার মনে হয়] দুজনের কোনটাই ঘটেনি। যুল-ইয়াদায়ন বলিলেন, হে আল্লাহর রসূল! একটা কিছু ঘটেছে। [এটা শোনার পর] রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ পবিত্র মুখমণ্ডল সাহাবাদের দিকে করলেন এবং জিজ্ঞেস করলেন যুল-ইয়াদায়ন কি ঠিক বলিতেছেন?

উপস্থিত সাহাবা বলিলেন, হ্যাঁ। তারপর রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ দাঁড়ালেন এবং অবশিষ্ট নামায পূর্ণ করলেন। তারপর [একদিকে] সালামের পর বসা অবস্থায় দুটি সিজদা করলেন।

[সহীহ, মুসলিম ৫৭৩] নামাজের হাদিস সমূহ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২০৫ আবু বাকর ইবনি সুলায়মান ইবনি আবি হাসমা [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেছেন, আমার নিকট রেওয়ায়ত পৌঁছেছে যে, রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ দিনের কোন এক নামায- যোহর কিংবা আসরে দুরাকাআত আদায় করে সালাম ফিরলেন, তখন বনি যোহরা ইবনি কিলাব গোত্রের যুশ-শিমালায়ন [রাদি.] {১} নামক জনৈক সাহাবী বলিলেন, হে আল্লাহর রসূল! নামায কি সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে, না আপনি ভুলে গিয়েছেন? রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ ফরমালেন নামাযও সংক্ষিপ্ত করা হয়নি, আমিও ভুলিনি। যুশ-শিমালায়ন [রাদি.] পুনরায় বলিলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ! [অবশ্যই] কোন একটা হয়েছে। অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ চেহারা মুবারক লোকের দিকে করলেন এবং বলিলেন, যুশ শিমালায়ন ঠিক বলেছেন কি? [উপস্থিত] লোকজন বলিলেন, হ্যাঁ। তারপর রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ অবশিষ্ট নামায পূর্ণ করলেন। অতঃপর সালাম ফিরালেন। {২} [হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

{১} যুল-ইয়াদায়ন ও যুশ শিমালায়ন একই ব্যক্তির দুটি উপাধি। {২} নামাযে কথা বলা, নামায কত রাকআত পড়া হয়েছে তা জিজ্ঞেস করা এবং উহার উত্তর দেয়া, নামাযরত ব্যক্তিকে সালাম দেয়া, সালামের জবাব দেয়া ইত্যাদি প্রথমে বৈধ ছিল, পরে তা বাতিল হয়। নাবী সাঃআঃ বলেন, নামাযে কথাবার্তার অবকাশ নেই। নামাজের হাদিস সমূহ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

২০৬ সাঈদ ইবনি মুসায়্যাব [রাহিমাহুল্লাহ] এবং আবি সালামা ইবনি আবদুর রহমান [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেছেন, যে ভুলে নামাযে ঘাটতি হয়, উহাতে সালামের পূর্বে সিজদা করিতে হয়। আর যে ভুলে বৃদ্ধি হয় উহাতে সালামের পরে সিজদা করিতে হয়। [হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

নামাজের হাদিস সমূহ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

পরিচ্ছেদঃ ১৬ঃ নামাযে সংশয় সৃষ্টি হলে মুসল্লির স্মরণ মুতাবিক নামায পূর্ণ করা

২০৭ আতা ইবনি ইয়াসার [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ বলেছেন, তোমাদের কেউ যদি নামাযের মধ্যে সন্দেহগ্রস্ত হয়, তদ্দরুন তিন রাকআত পড়িয়াছে না চার রাকআত পড়িয়াছে তা স্মরণ করিতে না পারে তবে সে আর এক রাকআত পড়িবে এবং বসা অবস্থায়ই সালামের পূর্বে দুইটি সিজদা করিবে। যে [এক] রাকআত সে আদায় করেছে তা যদি পঞ্চম রাকআত হয়ে থাকে, তবে উক্ত দুই সিজদা [ষষ্ঠ রাকআতের পরিবর্তে গণ্য করা হইবে এবং] ঐ নামাযকে জোড় নামাযে পরিণত করিবে। আর যদি তা চতুর্থ রাকআত হয়, তবে দুই সিজদা শয়তানের অপমানের কারণ হইবে। [সহীহ, ঈমাম মুসলিম আবু সাঈদ [রাদি.] থেকে মারফু সনদে বর্ণনা করেন, মুসলিম ৫৭১] আর মালিক [রাদি.] কর্তৃক বর্ণিত হাদীসটি মুরসাল]

নামাজের হাদিস সমূহ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ অন্যান্য

২০৮ সালিম ইবনি আবদুল্লাহ [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] বলেন, তোমাদের কেউ নামাযে [কত রাকআত আদায় হল সে বিষয়] সন্দেহে লিপ্ত হলে সে তার ধারণা মত কত রাকআত নামায ভুলে গিয়েছে, তা স্থির করিবে এবং [সে মত] নামায আদায় করিবে। তারপর বসা অবস্থায় ভুলের জন্য দুটি সিজদা করিবে। [হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

নামাজের হাদিস সমূহ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

২০৯ আতা ইবনি ইয়াসার [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

আমি আবদুল্লাহ ইবনি আমর ইবনি আস [রাদি.] এবং কাব আল-আহবার [রাহিমাহুল্লাহ]-কে এমন এক ব্যক্তি সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করেছি, যে ব্যক্তি নামাযে সংশয়ে লিপ্ত হয়, অতঃপর সে বলিতে পারে না কত রাকআত আদায় করেছে তিন রাকআত না চার রাকআত। তখন তাঁরা [উত্তরে] বলিলেন যে, সে আর এক রাকআত আদায় করিবে। তারপর বসা অবস্থায়ই দুটি সিজদা করিবে। [হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] নাফি [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণনা করেন যে, আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.]-কে নামাযে ভুলে যাওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে [উত্তরে] তিনি বলিতেন, যে ব্যক্তি মনে করে যে, কিছু নামায ভুলিয়া গিয়াছে সে ভাবিয়া ঠিক করিবে, অতঃপর নামায পড়িয়া লইবে। [হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

নামাজের হাদিস সমূহ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

পরিচ্ছেদঃ ১৭ঃ যে ব্যক্তি নামায পূর্ণ করার পর অথবা দুই রাকআত আদায়ের পর দাঁড়িয়ে যায়

২১০ আবদুল্লাহ ইবনি বুহায়না [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ [একবার] আমাদেরকে দুই রাকআত নামায আদায় করিয়ে [আত্তাহিয়্যাতু পড়তে না বসেই] দাঁড়িয়ে গেলেন। মুসল্লিগণ তাঁর সাথে দাঁড়ালেন। তারপর যখন নামায পূর্ণ করলেন এবং আমরা সালামের অপেক্ষায় রইলাম তখন তিনি আল্লাহু আকবার বলিলেন। অতঃপর সালামের পূর্বে বসা অবস্থায়ই দুটি সিজদা করলেন এবং সালাম ফিরালেন।

[বুখারি ১২২৪, মুসলিম ৫৭০] নামাজের হাদিস সমূহ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২১১ আবদুল্লাহ ইবনি বুহায়না [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেছেন, [একবারের ঘটনা] রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ আমাদেরকে যোহরের নামায আদায় করালেন, তিনি দু রাকআতের পর দাঁড়িয়ে গেলেন এবং [আত্তাহিয়্যাতু পড়ার জন্য] বসলেন না। যখন তিনি নামায পূর্ণ করলেন দুটি সিজদা [সাহু সিজদা] করলেন, অতঃপর সালাম ফিরালেন।

মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন; যে ব্যক্তি নামাযে ভুল করে এবং চার রাকআত পূর্ণ করার পর দাঁড়িয়ে যায়, তারপর কিরাআত সমাপ্ত করে রুকূ করে, রুকূ হইতে মাথা তোলার পর তার স্মরণ হল যে, সে নামায পূর্ণ পড়েছিল, তখন সে ব্যক্তি বসার দিকে প্রত্যাবর্তন করিবে এবং বসে যাবে। সে তখন আর সিজদায় যাবে না। আর যদি দুই সিজদার এক সিজদা করে থাকে তবে আমি দ্বিতীয় সিজদা করা সঙ্গত মনে করি না। অতঃপর সে যখন নামায পূর্ণ করিবে তখন দুটি সিজদা করিবে বসা অবস্থায় সালামের পর।

[বুখারি ৮৩০, মুসলিম ৫৭০] নামাজের হাদিস সমূহ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

পরিচ্ছেদঃ ১৮ঃ নামাযে এরূপ কোন বস্তুর দিকে দেখা যা নামায হইতে মনোযোগ দূরে সরিয়ে দেয় অথবা অন্য দিকে ব্যস্ত রাখে

২১২ আলকামা ইবনি আবি আলকামা [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

নাবী সাঃআঃ-এর সহধর্মিণী আয়েশা [রাদি.] বলেছেন, আবু জাহম ইবনি হুযাইফা [রাদি.] রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ-এর খেদমতে শামী চাদর উপহারস্বরূপ পেশ করলেন, যাতে ফুল, বুটা ইত্যাদি দ্বারা কারুকার্য করা ছিল। এটা পরিধান করে তিনি নামায আদায় করলেন। নামায হইতে ফিরে তিনি ফরমালেন এই চাদরখানা আবু জাহম-এর কাছে ফিরিয়ে দাও। কেননা এটার কারুকার্যের দিকে নামাযে আমার দৃষ্টি পতিত হয়েছে। এটা নামাযের একাগ্রতা নষ্ট করে আমাকে ফিতনায় লিপ্ত করেছে।

[বুখারি ৩৭৩, মুসলিম ৫৫৬] নামাজের হাদিস সমূহ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২১৩ হিশাম ইবনি উরওয়াহ [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ [একবার] শামী চাদর পরিধান করেছিলেন। সেটাতে ফুল, বুটা দ্বারা কারুকার্য করা ছিল; অতঃপর আবু জাহমকে সেটা ফিরিয়ে দিয়ে [তৎপরিবর্তে] আবু জাহম হইতে আমবিজানিয়া [মোটা পশমী কাপড়] গ্রহণ করলেন। এর কারণ ব্যাখ্যা করে রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ ফরমালেন নামাযে এর কারুকার্যের প্রতি আমার দৃষ্টি পতিত হয়েছে। [হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন বটে তবে এরূপ হাদীস বুখারি ও মুসলিম শরীফে বর্ণিত হয়েছে]

নামাজের হাদিস সমূহ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

২১৪ আবদুল্লাহ ইবনি আবু বাকর [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

আবু তালহা আনসারী [রাদি.] একবার তাঁর এক বাগানে নামায আদায় করিতেছিলেন। ইতিমধ্যে একটি ছোট পাখি উড়তে শুরু করিল, [বাগান এত ঘন ছিল যে এই ক্ষুদ্র পাখিটি পথ খুঁজে পাচ্ছিল না], তাই পাখিটি এদিক-সেদিক বের হওয়ার পথ খুঁজতে শুরু করিল। এই দৃশ্য তাঁর খুব ভাল লাগল। ফলে তিনি কিছুক্ষণ সেদিকে তাকিয়ে রইলেন। তারপর নামাযের দিকে মনোযোগ দিলেন। কিন্তু [অবস্থা এই দাঁড়াল] তিনি [তখন] স্বরণ করিতে পারলেন না যে, নামায কত রাকআত আদায় করিয়াছেন। তিনি বলিলেন, এই মাল আমাকে পরীক্ষায় ফেলেছে। অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ-এর খেদমতে উপস্থিত হলেন এবং বাগানে তাঁর সম্মুখে যে পরীক্ষা উপস্থিত হয়েছিল তা বর্ণনা করলেন।

তারপর বলিলেন, হে আল্লাহর রসূল! এই মাল আল্লাহর জন্য উৎসর্গ করছি। আপনি যেখানে পছন্দ করেন উহা সেখানে ব্যয় করুন। [হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

নামাজের হাদিস সমূহ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

২১৫ আবদুল্লাহ ইবনি আবু বাকর [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণিতঃ

আনসারী এক ব্যক্তি মদীনা শরীফের উপত্যকাসমূহের মধ্যে এক উপত্যকায় তাঁর এক বাগানের উঁচু ভূমিতে নামায আদায় করিতেছিলেন, তখন ছিল [খেজুরের] মওসুম। খেজুরের গাছগুলি খেজুরের ভারে ঝুঁকে পড়ছিল। গাছগুলি যেন স্বীয় ফলগুচ্ছের হার পরিহিত। ফলের এ দৃশ্যটি তাঁর খুবই মনঃপুত হল। তাই সেদিকে চেয়ে রইলেন। অতঃপর নামাযের দিকে মনোযোগী হলেন। কিন্তু তাঁর আর স্মরণ হচ্ছিল না যে, তিনি কত রাকআত নামায আদায় করিয়াছেন। এটা দেখে তিনি বলিলেন, আমার এই সম্পত্তি আমার জন্য ফিতনারূপে উপস্থিত হয়েছে। তখন ছিল উসমান [রাদি.]-এর খিলাফতকাল। তিনি উসমান ইবনি আফফান [রাদি.]-এর নিকট হাজির হলেন এবং তাঁর কাছে ঘটনা বর্ণনা করলেন। তারপর বলিলেন, উক্ত সম্পদ আল্লাহর পথে উৎসর্গ করা হল। এটাকে সৎকাজে ব্যয় করুন। উসমান [রাদি.] এটাকে পঞ্চাশ হাজার [দিরহাম] এর বিনিময়ে বিক্রি করলেন। [এই কারণে] উক্ত সম্পত্তির নাম রাখা হল [খমসিন] বা পঞ্চাশ হাজারী। [হাদীসটি ঈমাম মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

নামাজের হাদিস সমূহ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়


by

Comments

Leave a Reply