নামাজের সুতরা – মুসল্লীর সামনে দিয়ে গাধা, কুকুর অতিক্রম করলে

নামাজের সুতরা – মুসল্লীর সামনে দিয়ে গাধা, কুকুর অতিক্রম করলে

নামাজের সুতরা – মুসল্লীর সামনে দিয়ে গাধা, কুকুর অতিক্রম করলে >>আবুদ দাউদ শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন

অধ্যায়ঃ ২, অনুচ্ছেদঃ ১০২-১১৫ =১৪টি

অনুচ্ছেদ-১০২ মুসল্লী কিরূপ সুতরাহ স্থাপন করিবে
অনুচ্ছেদ-১০৩ ছড়ি না পাওয়া গেলে রেখা টেনে দিবে
অনুচ্ছেদ-১০৪ জন্তুযান সামনে রেখে নামায আদায় করা
অনুচ্ছেদ-১০৫ কেউ খুঁটি বা অনুরূপ কিছু সামনে রেখে নামাজে দাঁড়ালে তা কোথায় রাখবে?
অনুচ্ছেদ-১০৬ আলাপে রত ও ঘুমন্ত ব্যক্তিদের সামনে রেখে নামায আদায় করা
অনুচ্ছেদ-১০৭ সুতরাহর কাছাকাছি দাঁড়ানো
অনুচ্ছেদ-১০৮ মুসল্লীর সামনে দিয়ে কেউ অতিক্রম করলে তাকে বাধা দেয়া
অনুচ্ছেদ-১০৯ নামায আদায়কারীর সামনে দিয়ে অতিক্রম করা নিষেধ
অনুচ্ছেদ-১১০ যে জিনিস নামাযকে নষ্ট করে দেয়
অনুচ্ছেদ-১১১ ইমামের সুতরাহ্‌ মুক্তাদীর জন্য যথেষ্ট
অনুচ্ছেদ-১১২ যে বলে, মুসল্লীর সামনে দিয়ে মহিলাদের যাতায়াতে নামায ভঙ্গ হয় না।
অনুচ্ছেদ-১১৩ মুসল্লীর সামনে দিয়ে গাধা অতিক্রম করলে নামায ভঙ্গ হয় না।
অনুচ্ছেদ-১১৪ যে বলে মুসল্লীর সামনে দিয়ে কুকুর অতিক্রম করলে নামায নষ্ট হয় না
অনুচ্ছেদ-১১৫ – যে বলে, সামনে দিয়ে কিছু অতিক্রম করলে নামায নষ্ট হয় না।

অনুচ্ছেদ-১০২ মুসল্লী কিরূপ সুতরাহ স্থাপন করিবে

৬৮৫.ত্বালহা ইবনি উবাইদুল্লাহ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ তুমি (খোলা ময়দানে নামায আদায়কালে) তোমার সামনে উটের পিঠের হাওদার পিছন দিকের কাষ্ঠ খণ্ড বা অনুরূপ কোন কিছু স্থাপন করলে তোমরা সামনে দিয়ে কারো চলাচলে (নামাজের) কোন ক্ষতি হইবে না।

সহীহঃ মুসলিম নামাজের সুতরা – এই হাদীস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৬৮৬. আত্বা (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, হাওদার পশ্চৎভাগের কাষ্ঠ খণ্ড এক হাত বা তার চেয়ে কিছু বেশি (লম্বা) হয়ে থাকে।

হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ মাকতু

৬৮৭. ইবনি উমার (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) ঈদের দিন বের হওয়ার সময় সঙ্গে বর্শা নেয়ার নির্দেশ দিতেন। সেটি তাহাঁর সামনে স্থাপন করা হত এবং তিনি সেদিকে ফিরে নামায আদায় করতেন। আর লোকজন তাহাঁর পেছনে থাকত। তিনি সফর অবস্থায়ও এরূপ করতেন। এ জন্যই তখন থেকে শাসকরা হাতে বর্শা রেখে থাকেন।

সহীহঃ বোখারি ও মুসলিম। নামাজের সুতরা – এই হাদীস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৬৮৮. আবু জুহাইফাহ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ) আল-বাত্বহা নামক স্থানে নামায আদায় করিলেন। তখন তাহাঁর সামনে একটি বর্শা স্থাপিত ছিল। তিনি যুহরের দু রাকআত ওআসরের দু রাকআত নামায আদায় করিলেন। এ সময় বর্শার অপর পাশ দিয়ে নারী ও গাধা চলাচল করছিল।

সহীহঃ বোখারি ও মুসলিম। নামাজের সুতরা – এই হাদীস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-১০৩ ছড়ি না পাওয়া গেলে রেখা টেনে দিবে

৬৮৯. আবু হুরাইরাহ্ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ তোমাদের কেউ (খোলা জায়গাতে) নামায আদায় করলে যেন (সুতরাহ্ হিসেবে) তার সামনে কিছু স্থাপন করে। কিছু না পাওয়া গেলে যেন একটি লাঠি স্থাপন করে নেয়। সাথে কোন লাঠি না থাকলে (মাটিতে) যেন একটি দাগ টেনে নেয়। তারপর সামনে দিয়ে কিছু চলাচল করলে নামাজের কোন ক্ষতি হইবে না। {৬৮৯}

দুর্বলঃ মিশকাত ৭৮১ {৬৮৯} ইবনি মাজাহ (অধ্যায়ঃ নামায, অনুঃ মুসল্লী কি দিয়ে সুতরাহ্ করিবে, হাঃ ৯৪৩), আহমাদ (২/২৪৯), ইবনি খুযাইমাহ (৮১১,৮১২), সকলে আবুআমর সূত্রে। ইযতিরাব ও সানাদস্থ বর্ণনাকারীর অবস্থা অজ্ঞাত হওয়ার কারনে এর সানাদ দুর্বল। তিনি হলেন আবু মুহাম্মাদআমর ইবনি হুরাইস। শায়খ আহমাদ শাকির বলেন, এ সূত্রে হাদিসটির অন্যান্য সানাদও রহিয়াছে। যার কতিপয় সামঞ্জস্যপূর্ন অথবা বিরোধী। আর প্রত্যেকটিই ইযতিরাব ও জাহালাতের প্রমান বহন করে..। অতঃপর তিনি বলেন,উলামায়ি ইসত্বিলাহ এ হাদিসকে মুযতারিব সানাদে বর্ণিত হাদিসের উপমা হিসেবে পেশ করে থাকেন। মিশকাতের তাকক্বীক্বে শায়খ আলবানী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেনঃ এতে কঠিন ইযতিরাব ও দুজন অজ্ঞাত লোক রহিয়াছে। সেজন্য একদল ঈমাম একে দুর্বল বলেছেন। যাঁদের মধ্যে ঈমাম আহমাদ অন্যতম। হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৬৯০. আবু হুরাইরাহ্ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

আবুল ক্বাসিম (সাঃআঃ) বলেছেন.. বর্ণনাকারী অতঃপর দাগ টানা সম্পর্কিত হাদিস বর্ণনা করেন। আবু সুফিয়ান বলেন, এ হাদিসটিকে মজবুত প্রমান করার মত কিছুই পেলাম না। হাদিসটি কেবল উক্ত সানাদেই বর্ণিত হয়েছে। বর্ণনাকারী বলেন, আমি সুফিয়ানকে বললাম, লোকেরা এতে মত পার্থক্য করেছে। তিনি কিছুক্ষণ ভেবে বলিলেন, আমার কেবল আবু মহাম্মাদ ইবনিআমরের কথাই মনে পড়ছে। সুফিয়ান বলেন, ইসমাঈল ইবনি উমায়্যাহর মৃত্যুর পর এক ব্যক্তি এখানে (কুফায়) এসে এ শায়খ আবু মুহাম্মাদের অনুসন্ধান করে তাকে পেয়ে যান। তিনি তাকে এ মাটিতে দাগ টানা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি সঠিক উত্তর দিয়ে ব্যর্থ হন। ঈমাম আবু দাউদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, আমি একাধিকবার আহমাদ ইবনি হাম্বাল থেকে মাটিতে দাগ দেয়া সম্পর্কে শুনিয়াছি যে, দাগটি প্রস্থে নবচন্দ্রের ন্যায় (মোটা) হইবে। ঈমাম আবু দাউদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, আমি মুসাদ্দাদকে বলিতে শুনেছিঃ ইবনি দাউদ বলেছেন, দাগ লম্বালম্বিভাবে টানতে হইবে। {৬৯০}

{৬৯০} এর পূর্বেরটি দেখুন।হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৬৯১. সুফিয়ান ইবনিউয়াউনাহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি শারীক (রাঃআঃ)-কে দেখেছি, তিনি এক জানাযার নামায আদায় করতে এসে আমাদের সাথেআসরের নামায আদায় করিলেন। তিনি (উক্ত ফরয নামাজে সুতরাহ্ হিসেবে) নিজের টুপি (খুলে) সামনে রাখলেন।

হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ মাকতু

অনুচ্ছেদ-১০৪ জন্তুযান সামনে রেখে নামায আদায় করা

৬৯২. ইবনি উমার (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ) তাহাঁর উটের দিকে ফিরে নামায আদায় করতেন।

সহীহঃ মুসলিম, অনুরূপ বোখারি। নামাজের সুতরা – এই হাদীস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-১০৫ কেউ খুঁটি বা অনুরূপ কিছু সামনে রেখে নামাজে দাঁড়ালে তা কোথায় রাখবে?

৬৯৩. দুবাআহ বিনতু মিক্বদাদ ইবনিল আসওয়াদ হইতে তার পিতার হইতে বর্ণিতঃ

তিনি (মিক্বদাদ) বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) -কে দেখেছি, তিনি (সুতরাহ্ হিসেবে) কোন লাকড়ি, স্তম্ভ বা গাছের দিকে ফিরে নামায আদায় করলে ওগুলোকে নিজের ডান অথবা বাম পাশে রাখতেন, দুচোখের ঠিক মাঝ বরাবর রাখতেন না। {৬৯৩}

দুর্বলঃ মিশকাত ৭৮৩। {৬৯৩} আহমাদ (৬/৪)। এর সানাদে আবুউবাইদাহ ওয়ালীদ ইবনি কামিল রহিয়াছে। ইবনি হিব্বান তাকে সিক্বাহ বলেছেন। হাফিয বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় শিথিল। ঈমাম বোখারি বলেন, তার নিকট আশ্চর্যকর বস্তু আছে। আল্লামা মুনযিরী বলেন, তার ব্যাপারে সমালোচনা আছে। এছাড়া সানাদে মুহাল্লাব ইবনি হুজ্র অজ্ঞাত এবং যুবাআহ বিনতু মিক্বদাদকে চেনা যায়নি। অনুরূপ রহিয়াছে,আত-তাক্বরীব গ্রন্থে। ইবনি কাত্তান বলেন, সানাদে উক্ত তিনজন বর্ণনাকারীই অজ্ঞাত।আবদুল হাক্ব বলেন, এর সানাদ মজবুত নয়। মিশকাতের তাহক্বীক্বে শায়খ আলবানী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেনঃ সানাদটি দুর্বল। সানাদে একজন দুর্বল ও একজন অজ্ঞাত লোক রহিয়াছে। অতঃপর এর সানাদ ও মাতান মুযতারিব (উলটপালট)। একদল একে দুর্বল বলেছেন। হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

অনুচ্ছেদ-১০৬ আলাপে রত ও ঘুমন্ত ব্যক্তিদের সামনে রেখে নামায আদায় করা

৬৯৪. আবদুল্লা ইবনি আব্বাস  (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ তোমরা ঘুমন্ত ও বাক্যালাপকারী লোকদের সামনে রেখে নামায আদায় করো না।

হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

অনুচ্ছেদ-১০৭ সুতরাহর কাছাকাছি দাঁড়ানো

৬৯৫. সাহল ইবনি আবু হাসমাহ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, তার নিকট সংবাদ পৌঁছেছে যে, নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ তোমাদের কেউ সুত্রাহ স্থাপন করে নামায আদায় করলে যেন সুত্রার কাছাকাছি দাঁড়ায়। যাতে করে শাইত্বান তার নামায ভঙ্গ করতে না পারে।

সহিহ ঈমাম আবু দাউদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, হাদিসটি বর্ণনা করিয়াছেন অয়াক্বিদ ইবনি মুহাম্মাদ সাফওয়ান হইতে, তিনি মুহাম্মাদ ইবনি সাহল হইতে তার পিতার সূত্রে অথবা মুহাম্মাদ ইবনি সাহল হইতে নাবী (সাঃআঃ) -এর সূত্রে। কোন কোন বর্ণনাকারী বলেছেন, নাফি ইবনি জুবাইর সাহল ইবনি সাদ হইতে। এর সানাদ বর্ণনায় মত পার্থক্য করা হয়েছে। নামাজের সুতরা – এই হাদীস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৬৯৬. সাহল (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) -এর দাঁড়ানোর স্থান ও তাহাঁর ক্বিবলাহ্র মধ্যবর্তী স্থানে একটি বকরী চলাচলের পরিমাণ জয়গা ফাঁকা থাকত।

সহীহঃ বোখারি ও মুসলিম। নামাজের সুতরা – এই হাদীস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-১০৮ মুসল্লীর সামনে দিয়ে কেউ অতিক্রম করলে তাকে বাধা দেয়া

৬৯৭. আবু সাঈদ আল-খুদরী (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ তোমাদের কেউ নামায আদায়কালে তার সামনে দিয়ে কাউকে যেতে দিবে না এবং সাধ্যমত যেন তাকে বাধা দেয়া হয়। সে বাধা উপেক্ষা করলে তার সাথে যুদ্ধ করিবে। কারণ সে হচ্ছে একটা শাইত্বান।

সহীহঃ বোখারি ও মুসলিম। নামাজের সুতরা – এই হাদীস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৬৯৮. আবদুর রহমান ইবনি আবু সাঈদ আল-খুদরী (রাঃআঃ) থেকে তার পিতার হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ তোমাদের কেউ নামায আদায় করলে যেন সুত্রার কাছাকাছি দাঁড়িয়ে নামায আদায় করে। অতঃপর বর্ণনাকারী পূর্বোক্ত হাদিসের সমার্থবোধক হাদিস বর্ণনা করেন।

হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ

৬৯৯. সুলাইমান ইবনি মালিকের দ্বাররক্ষী আবুউবায়িদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমিআত্বা ইবনি ইয়াযীদ আল-লাইসীকে দাঁড়িয়ে নামায আদায় করতে দেখি। অতঃপর আমি তার সামনে দিয়ে যেতে উদ্যত হলে তিনি আমাকে বাধা দিয়ে বলিলেন, আবু সাঈদ আল-খুদরী (রাঃআঃ) আমার নিকট বর্ণনা করিয়াছেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ তোমাদের মধ্যকার কেউ তার ও ক্বিবলাহ্র মধ্যবর্তী স্থান দিয়ে চলাচলে কাউকে বিরত রাখতে সক্ষম হলে সে যেন তাই করে।

হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ

৭০০. হুমায়িদ ইবনি হিলাল হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আবু সালিহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেছেন, আমি আবু সাঈদ (রাঃআঃ)-কে যা করতে দেখেছি ও বলিতে শুনিয়াছি তোমার নিকট তাই বর্ণনা করব। একদা আবু সাঈদ আল-খূদরী (রাঃআঃ) মারওয়ানের নিকট গিয়ে বলিলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) -কে বলিতে শুনেছিঃ তোমাদের কেউ কোন কিছুকে সুতরাহ্ বানিয়ে নামায আদায়কালে কেউ তা লঙ্ঘন করে তার সামনে দিয়ে অতিক্রম করতে চাইলে সে যেন তার বক্ষে হাত মেরে তাকে বাধা দেয়। যদি সে না মানে, তাহলে সে যেন তার সাথে লড়াই করে। কারণ সে হচ্ছে একটা শাইত্বান।

সহীহঃ বোখারি ও মুসলিম। নামাজের সুতরা – এই হাদীস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ১০৯ নামায আদায়কারীর সামনে দিয়ে অতিক্রম করা নিষেধ

৭০১. বুসর ইবনি সাঈদ হইতে বর্ণিতঃ

যায়িদ ইবনি খালিদ আল-জুহানী (রাঃআঃ) তাকে আবু জুহায়িম (রাঃআঃ)- এর নিকট পাঠালেন-নামায আদায়কারীর সামনে দিয়ে গেলে কি (পরিমাণ অন্যায়) হইবে এ সম্পর্কে তিনি রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) থেকে যা শুনেছেন তা জিজ্ঞেস করার জন্য। আবু জুহায়িম (রাঃআঃ) বলিলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ নামায আদায়কারীর সামনে দিয়ে অতিক্রমকারী যদি জানত যে, এ কারনে তাকে কত মারাত্মক শাস্তি ভোগ করতে হইবে, তাহলে নামায আদায়কারীর সামনে দিয়ে অতিক্রম করার চেয়ে চল্লিশ (দিন) দাঁড়িয়ে থাকাও অধিকতর উত্তম মনে করত। আবুন নাদর বলেন, আমার স্মরণ নেই যে, তিনি চল্লিশ দিন, মাস, না বছর বলেছেন।

সহীহঃ বোখারি ও মুসলিম। নামাজের সুতরা – এই হাদীস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ১১০ যে জিনিস নামাযকে নষ্ট করে দেয়

৭০২. আবু যার (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ নামায আদায়কারী ব্যক্তির সম্মুখে উটের পিঠের হাওদার পিছনের লাকড়ি পরিমাণ কিছু না থাকলে তার সামনে দিয়ে গাধা, কালো কুকুর অথবা মহিলা অতিক্রম করলে তার নামায নষ্ট হয়ে যাবে। আমি বললাম, লাল, হলুদ কিংবা সাদা রংয়ের কুকুরের তুলনায় কালো কুকুরের কী এমন বিশেষত্ব? তিনি বলিলেন, হে ভ্রাতুষ্পুত্র! তুমি যেরূপ আমাকে জিজ্জেস করলে আমিও সেরূপ রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) -কে জিজ্জেস করেছিলাম। তিনি বলেছিলেনঃ কালো কুকুর হলো একটা শাইত্বান।

সহীহঃ মুসলিম। এক নজরে নামায বিনষ্টের কারণ সমূহঃ বিভিন্ন হাদিস থেকে জানা যায় কয়েকটি কারণে নামায বিনষ্ট হয়। যথাঃ (১) নামাযরত অবস্থায় ইচ্ছাকৃতভাবে কিছু খাওয়া বা পান করা।

(২) নামাজের স্বার্থ ব্যতিরেকে অন্য কারণে ইচ্ছাকৃতভাবে কথা বলা।

(৩) ইচ্চাকৃতভাবে বাহুল্য কাজ বাআমালে কাসীর করা। যা দেখে মনে হয় যে, সে নামাজের মধ্যে নেই।

(৪) ইচ্ছাকৃত বা বিনা কারণে নামাজের কোন রুকন বা শর্ত পরিচ্যাগ করা।

(৫) নামাজের মধ্যে অধিক হাসা। (দেখুন, ফিক্বহুস সুন্নাহ ১,২০৩-২০৫, সলাতুর রসূল, ২৭ পৃঃ)

নামাজের সুতরা – এই হাদীস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৭০৩. ইবনি আব্বাস  (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেনঃ ঋতুবর্তী মহিলা ও কুকুর নামায আদায়কারীর (সামনে দিয়ে অতিক্রম করলে) নামায নষ্ট হয়ে যায়।

নামাজের সুতরা – এই হাদীস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৭০৪. ইবনি আব্বাস  (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ তোমাদের কেউ সুতরাহ ছাড়া নামায আদায় করলে তার সামনে দিয়ে কুকুর, গাধা, শূকর, ইয়াহূদী, অগ্নিউপাসক অথবা স্ত্রীলোক অতিক্রম করলে তার নামায নষ্ট হয়ে যাবে। অবশ্য কঙ্কর নিক্ষেপের দূরত্বের বাইরে দিয়ে যদি অতিক্রম করে, তাহলে তার নামায হয়ে যাবে।

দুর্বলঃ মিশকাত ৭৮৯। ঈমাম আবু দাউদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, হাদিসটির ব্যাপারে আমি কিছু (সন্দেহ) অনুভব করছি। ইবরহীম (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) প্রমুখের সাথে এ হাদিস সম্পর্কে আলোচনা করে আমি দেখলাম, হাদিসটি হিশাম থেকে কেউই বর্ণনা করেননি এবং এ ব্যাপারে অজ্ঞতা প্রকাশ করেন। হাদিসটিকে কাউকেই আমি হিশামের সাথে সম্পর্কিত করতে দেখিনি। আমার ধারনা মতে ইবনি আবী সামীনাহ হইতে সন্দেহের সূত্রপাত হয়েছে। হাদিসটিতেঅগ্নিউপাসককঙ্কর নিক্ষেপের দূরত্ব এবংশূকর-এর উল্লেখ প্রত্যাখ্যাত ও অগ্রহণযোগ্য। ইমামা আবু দাউদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) আরো বলেন, আমি হাদিসটি কেবলমাত্র মুহাম্মাদ ইবনি ইসমাইল আল-বাসরী থেকে শুনিয়াছি। আমার ধারনা, তিনি ভুলে পতিত হয়েছেন। কারণ হাদিসটি তিনি তার মুখস্থ থেকে বর্ণনা করিয়াছেন। {৭০৩} হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৭০৫. ইয়াযীদ ইবনি নীমরান হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি তাবূতে এক খোঁড়া ব্যক্তিকে দেখিতে পেলাম। সে বলিল, একদা নাবী (সাঃআঃ) নামায আদায়কালে আমি গাধার পিঠে সওয়ার হয়ে তার সামনে দিয়ে অতিক্রম করলে তিনি বললেনঃ হে আল্লাহ! তার পদচিহ্ন (চলার শক্তি) মিটিয়ে দাও। এরপর থেকে আমি আর হাঁটতে পারি না। {৭০৪}

{৭০৪} বায়হাক্বীসুনানুল কুবরা (২/২৭৫)। এর সানাদে মাওলা ইয়াযীদ ইবনি নিমরান অজ্ঞাত, তাকে চেনা যায় না। হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৭০৬. সাঈদ হইতে বর্ণিতঃ

উক্ত সানাদ ও অর্থে উপরোক্ত হাদিস বর্ণিত হয়েছে। তাতে এও রয়েছেঃ রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বললেনঃ সে আমাদের নামায নষ্ট করেছে। আল্লাহ তার পা কেটে দিন।

দুর্বল। ঈমাম আবু দাউদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, সাইদ হইতে মুসহিরও উক্ত হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন। তাতেও রয়েছেঃ সে আমার নামায নষ্ট করেছে। {৭০৫} {৭০৫} পূর্বেরটি দেখুন। হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৭০৭. সাঈদ ইবনি গাযওয়ান থেকে তার পিতার হইতে বর্ণিতঃ

তিনি হাজ্জ পালনের উদ্দেশ্যে গমনকালে তাবূকে গিয়েছিলেন। সেখানে তিনি এক খোঁড়া লোক দেখিতে পেয়ে তার অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলেন। লোকটি বলিল, আমি আপনার কাছে এ শর্তে একটি কথা বলব যে, আমি যতদিন জীবিত থাকব, ততদিন পর্যন্ত আপনি কাউকে তা বলিতে পারবেন না। একদা রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) তাবূকে অবতরণ করে একটি খেজুর গাছের নিকট গিয়ে বলেলনঃ এটাই হচ্ছে আমাদের ক্বিবলাহ্‌ (সুতরাহ্‌)। এই বলে তিনি সেদিকে ফিরে নামায শুরু করিলেন। আমি তখন বালক ছিলাম বিধায় (না বুঝতে পেরে) দৌড়ে তাহাঁর ও সেই গাছের মাঝখান দিয়ে অতিক্রম করলাম। তিনি বললেনঃ সে আমাদের নামায কেটেছে। আল্লাহ! তুমিও তার পদচিহ্ন (চলার শক্তি) মিটিয়ে দাও। অতঃপর সেদিন থেকে আজকের এদিন পর্যন্ত আমি আর (দুপায়ে ভর করে) দাঁড়াতে পারিনি। {৭০৬}

{৭০৬} বায়হাক্বীসুনানুল কুবরা (২/২৭৫)। আওনুল মাবুদে রয়েছেঃ আল্লামা শামসুদ্দীন ইবনিল কাইয়্যিম বলেনঃ ইবনি গাযওয়ানের এ হাদিস সম্পর্কেআবদুল হাক্ব বলেন, এর সানাদ দুর্বল। ইবনি কাত্তান বলেছেন, সানাদে সাঈদ অজ্ঞাত।হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

অনুচ্ছেদ১১১ ইমামের সুতরাহ্‌ মুক্তাদীর জন্য যথেষ্ট

৭০৮. আমর ইবনি শুআইব থেকে পর্যায়ক্রমে তার পিতা ও তার দাদার হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) এর সাথেসানিয়্যাতু আযাখির নামক স্থানে অবতরন করলাম। নামাজের সময় হলে তিনি দেয়ালের দিকে ক্বিবলাহমুখী হয়ে (দেয়ালকে সুতরাহ্‌ বানিয়ে) নামায আদায় করিলেন। আমরাও তাহাঁর পেছনে দাঁড়ালাম। ইতোমধ্যে একটি ছাগলছানা এসে তাহাঁর সামনে দিয়ে অতিক্রম করতে চাইলে তিনি সেটিকে এমনভাবে বাধা দিতে থাকলেন যে, শেষ পর্যন্ত তাহাঁর পেট দেয়ালের সাথে লেগে গেল। অবশেষে ছানাটি তাহাঁর পেছন দিয়ে চলে গেল।

হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ.

৭০৯. ইবনি আব্বাস  (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

একদা নাবী (সাঃআঃ) এর নামায আদায়কালে একটি ছাগলছানা তাহাঁর সামনে দিয়ে অতিক্রম করতে চাইলে তিনি সেটিকে বাধা দিলেন।

নামাজের সুতরা – এই হাদীস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ১১২ যে বলে, মুসল্লীর সামনে দিয়ে মহিলাদের যাতায়াতে নামায ভঙ্গ হয় না।

৭১০.আয়েশা (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) এর (নামায আদায়কালে) আমি তাহাঁর ক্বিবলাহ্‌র মধ্যবর্তী স্থানে ছিলাম। শুবাহ বলেন, আমার ধারণা,আয়েশা (রাঃআঃ) এটাও বলেছিলেন, আমি তখন হায়িয অবস্থায় ছিলাম।

সহিহ, তবেআমি হায়িয অবস্থায় ছিলাম এ কথাটি বাদে। ঈমাম আবু দাউদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, হাদিসটিআয়েশা (রাঃআঃ) সূত্রে বিভিন্ন সানাদে বর্ণিত হয়েছে। ক্বাসিম ইবনি মুহাম্মাদ ও আবু সালামাহ্‌ কর্তৃকআয়িশা (রাঃআঃ) এর সূত্রের বর্ণনায়আমি তখন হায়িয অবস্থায় ছিলাম কথাটুকু উল্লেখ নেই। নামাজের সুতরা – এই হাদীস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৭১১. আয়েশা (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) এর রাতে নামায আদায়কালে তিনি তাহাঁর ও ক্বিবলাহ্‌র মধ্যবর্তী স্থানে ঐ বিছানায় ঘুমিয়ে থাকতেন, যেখানে রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) ঘুমাতেন। অতঃপর রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বিত্‌র নামায আদায়ের ইচ্ছা করলে তাকে জাগিয়ে দিতেন, ফলে তিনিও বিত্‌র নামায আদায় করতেন।

সহীহঃ বোখারি ও মুসলিম। নামাজের সুতরা – এই হাদীস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৭১২. আয়েশা (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, অত্যন্ত দুঃখের বিষয় যে, তোমরা (নামায ভঙ্গের ব্যাপারে) আমাদেরকে গাধা ও কুকুরের পর্যায়ভুক্ত করেছ। অথচ আমি রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) কে এরূপ অবস্থায় নামায আদায় করতে দেখেছি যে, আমি তাহাঁর সামনে আড়া-আড়িভাবে শুয়ে থাকতাম। তিনি সাজদাহ্‌ করতে চাইলে আমার পায়ে চিমটি কাটতেন, এতে আমি আমার পা গুটিয়ে নিতাম। অতঃপর তিনি সাজদাহ্‌ করতেন।

সহীহঃ বোখারি। নামাজের সুতরা – এই হাদীস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৭১৩. আয়েশা (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) এর রাতে নামায আদায়কালে ঘুমন্ত অবস্থায় আমার দু পা তাহাঁর সামনে থাকত। তিনি যখন সাজদাহ্‌ করতে চাইতেন, তখন আমার পায়ে খোঁচা দিতেন। ফলে আমি পা গুটিয়ে নিতাম, অতঃপর তিনি সাজদাহ্‌ করতেন।

সহীহঃ বোখারি ও মুসলিম। নামাজের সুতরা – এই হাদীস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৭১৪. আয়েশা (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) এর সামনে ক্বিবলাহ্‌র দিকে আড়া-আড়িভাবে শুয়ে থাকতাম। এরূপ অবস্থায়ই রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) (রাতের নফল) নামায আদায় করতেন। অতঃপর তিনি বিত্‌র নামায আদায়ের ইচ্ছা করলে আমাকে চিমটি কাটতেন আর বলিতেনঃ উঠো এবং পাশে দাঁড়াও। বর্ণনাকারীউসমানের বর্ণনায়চিমটি কাটার কথাটি আছে।

হাসান সহীহঃ বোখারি ও মুসলিম।

হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ

অনুচ্ছেদ১১৩ মুসল্লীর সামনে দিয়ে গাধা অতিক্রম করলে নামায ভঙ্গ হয় না।

৭১৫. ইবনি আব্বাস  (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি বালিগ হওয়ার কাছাকাছি বয়সে একটি মাদী গাধার পেটে সওয়ার হয়ে মিনায় আসলাম। তখন রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) লোকদের নামায আদায় করাচ্ছিলেন। আমি একটি কাতারের সামনে দিয়ে অতিক্রম করে গাধীর পিঠ থেকে নামলাম এবং সেটিকে ঘাস খাওয়ার জন্যে ছেড়ে দিয়ে কাতারে শামিল হলাম। এ সময় কেউ আমাকে এ ব্যাপারে নিষেধ করেনি।

ঈমাম আবু দাউদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন এটা হলো কানাবীর বর্ণনা। এটাই পূর্নাঙ্গ। ঈমাম মালিক (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, ইমামের সামনে দিয়ে অতিক্রম করলে নামাজের ক্ষতি হয়, কিন্তু কাতারের সামনে দিয়ে অতিক্রম করলে কোন ক্ষতি নেই।

সহীহঃ বোখারি ও মুসলিম। নামাজের সুতরা – এই হাদীস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৭১৬. আবুস সাহবা হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা ইবনি আব্বাস  (রাঃআঃ) এর নিকট নামায নষ্ট হওয়ার কারণ সম্পর্কে আলোচনা করলাম। ইবনি আব্বাস  (রাঃআঃ) বলিলেন, একদা আমি এবং বনুআবদুল মুত্তালিবের এক বালক গাধার পিঠে আরোহণ করে রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) এর নিকট আসলাম। তখন তিনি নামায আদায় করছিলেন। সে ও আমি গাধার পিঠ থেকে নামলাম এবং আমরা গাধাটিকে কাতারের সামনে ছেড়ে দিলাম। রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) একে আপত্তিকর মনে করিলেন না। এ সময় বনুআবদুল মুত্তালিবের দুটি বালিকা এসে কাতারের মধ্যে প্রবেশ করিল। এতেও তিনি কোন ভ্রুক্ষেপ করিলেন না।

নামাজের সুতরা – এই হাদীস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৭১৭. মানসূর (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

একই সানাদে উপরোক্ত হাদিস বর্ণিত হয়েছে। ইবনি আব্বাস  (রাঃআঃ) বলেন, তখনআবদুল মুত্তালিব গোত্রে দুটি মেয়ে ঝগড়ারত অবস্থায় আসল। রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) তাহাঁদেরকে ধরে ফেললেন।উসমান বলেন, তারপর উভয়কে পৃথক করে দিলেন। দাউদ বলেন, তারপর তাহাঁদের একজনকে অপরজন হইতে আলাদা করে দিলেন কিন্তু তিনি এরূপ করা আপত্তিকর মনে করিলেন না।

নামাজের সুতরা – এই হাদীস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ১১৪ যে বলে মুসল্লীর সামনে দিয়ে কুকুর অতিক্রম করলে নামায নষ্ট হয় না

৭১৮. আল-ফাদল ইবনি আব্বাস  (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একদা রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) আমাদের নিকট আসলেন। আমরা তখন আমাদের বাগানে ছিলাম। তাহাঁর সাথেআব্বাস (রাঃআঃ)-ও ছিলেন। তিনি বালু ভূমিতে নামায আদায় করিলেন। অথচ তাহাঁর সামনে কোন সুতরাহ্‌ ছিল না। আমাদের মাদী গাধা এবং কুকুরটি তাহাঁর সামনে দৌড়াদৌড়ি করছিল। কিন্তু তিনি একে আপত্তিকর মনে করিলেন না। {৭১৭}

{৭১৭} আহমাদ (১/২১২, হাঃ ১৮১৭)। সানাদে মুহাম্মদ ইবনি উমার ইবনিআলী এবং ফাযল ইবনিআব্বাসের মাঝে ইনকিতা (বিচ্ছিন্নতা) হওয়ায় এর সানাদ দুর্বল। হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

অনুচ্ছেদ১১৫যে বলে, সামনে দিয়ে কিছু অতিক্রম করলে নামায নষ্ট হয় না।

৭১৯. আবু সাঈদ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ নামাজের সামনে দিয়ে কোন কিছু অতিক্রম করলে নামায ভঙ্গ হয় না। তবে সাধ্যানুযায়ী তোমরা এরূপ করতে বাধা দিবে। কারণ সে তো একটা শাইত্বান। {৭১৮}

{৭১৮} ইবনিআবদুল বারআত-তামহীদ (৪/১৯০) আবু দাউদ সূত্রে। এর সানাদের হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৭২০. আবুল ওয়াদ্দাক হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একদা আবু সাঈদ আল-খুদরী (রাঃআঃ) নামায আদায় করছিলেন। এমন সময় তাহাঁর সামনে দিয়ে এক কুরাইশ যুবক অতিক্রম করলে তিনি তাকে বাধা দিলেন। সে পুনরায় অতিক্রম করতে চাইলে তিনি তাকে আবারো বাধা দিলেন। এরূপ তিনবার হলো। অতঃপর নামায শেষে তিনি বলিলেন, বস্তুত নামাযকে কোন কিছুই নষ্ট করতে পারে না। তবে রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ তোমরা যথাসাধ্য (নামাজের সামনে দিয়ে অতিক্রমকারীকে) বাধা দিবে। কারণ সে একটা শাইত্বান।

ঈমাম আবু দাউদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, নাবী (সাঃআঃ) এর দুটি হাদিস পরস্পর বিরোধী হলে তাহাঁর পরে তাহাঁর সাহাবীগণ যেরূপ আমল করিয়াছেন তা বিবেচনায় আনতে হইবে। {৭১৯}

হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস


Posted

in

by

Comments

Leave a Reply