নামাজের সিজদার দোয়া কত অঙ্গের উপর সিজদা ও সকল নিয়ম

নামাজের সিজদার দোয়া কত অঙ্গের উপর সিজদা ও সকল নিয়ম

নামাজের সিজদার দোয়া কত অঙ্গের উপর সিজদা ও সকল নিয়ম >> সুনানে নাসাই শরিফের মুল সুচিপত্র দেখুন

পর্বঃ ১১, নামাজ আরম্ভ করা, হাদীস (১০৮১-১১৫৬)

১.পরিচ্ছেদঃ সিজদার জন্য পাথরের টুকরা ঠাণ্ডা করা
২.পরিচ্ছেদঃ সিজদার জন্য তাকবীর বলা
৩.পরিচ্ছেদঃ কিরূপে সিজদায় ঝুঁকবে?
৪.পরিচ্ছেদঃ সিজদার জন্য হাত ওঠানো
৫..পরিচ্ছেদঃ সিজদায় হাত না ওঠানো
৬.পরিচ্ছেদঃ সিজদায় সর্বাগ্রে যে অঙ্গ যমীনে পৌঁছাবে
৭.পরিচ্ছেদঃ সিজদায় মুখমন্ডলের সাথে উভয় হাত স্থাপন করা
৮.পরিচ্ছেদঃ কত অঙ্গের উপর সিজদা ?
৯.পরিচ্ছেদঃ ললাটের উপর সিজদা করা
১০.পরিচ্ছেদঃ নাকের উপর সিজদা
১১.পরিচ্ছেদঃ দুহাতের উপর সিজদা
১২.পরিচ্ছেদঃ হাঁটুর উপর সিজদা
১৩.পরিচ্ছেদঃপদদ্বয়ের উপর সিজদা করা
১৪.পরিচ্ছেদঃ সিজদায় উভয় পায়ের পাতা খাড়া রাখা
১৫.পরিচ্ছেদঃ সিজদায় উভয় পায়ের আঙ্গুল খাড়া রাখা
১৬.পরিচ্ছেদঃ সিজদায় হাতের স্থান
১৭.পরিচ্ছেদঃ সিজদায় বাহূদ্বয় বিছিয়ে দেয়ার নিষেধাজ্ঞা
১৮.পরিচ্ছেদঃ সিজদা করার নিয়ম
১৯.পরিচ্ছেদঃ সিজদায় অঙ্গ পৃথক রাখা
২০.পরিচ্ছেদঃ সিজদায় মধ্যপন্থা অবলম্বন
২১.পরিচ্ছেদঃ সিজদায় পিঠ সোজা রাখা
২২.পরিচ্ছেদঃ কাকের ন্যায় ঠোকর মারার নিষেধাজ্ঞা
২৩.পরিচ্ছেদঃ সিজদায় চুল একত্র করে রাখার নিষেধাজ্ঞা
২৪.পরিচ্ছেদঃ চুলে বেণী করে নামাজ আদায়কারীর উদাহরণ
২৫.পরিচ্ছেদঃ সিজদায় কাপড় একত্র করার নিষেধাজ্ঞা
২৬.পরিচ্ছেদঃ কাপড়ের উপর সিজদা
২৭.পরিচ্ছেদঃ সিজদা পূর্ণ করার আদেশ
২৮.পরিচ্ছেদঃ সিজদায় কুরআন পড়ার নিষেধাজ্ঞা
২৯.পরিচ্ছেদঃ সিজদায় বেশি বেশি দোয়া করার নির্দেশ
৩০.পরিচ্ছেদঃ সিজদায় দোয়া করা
৩১.পরিচ্ছেদঃ সিজদায় অন্য প্রকার দোয়া
৩২.পরিচ্ছেদঃ অন্য প্রকার দোয়া
৩৩.পরিচ্ছেদঃ সিজদায় অন্য প্রকার দোয়া
৩৪.পরিচ্ছেদঃ অন্য প্রকার দোয়া
৩৫.পরিচ্ছেদঃ সিজদায় তাসবীহর সংখ্যা
৩৬.পরিচ্ছেদঃ সিজদায় তাসবীহ পরিত্যাগ করার অনুমতি
৩৭.পরিচ্ছেদঃ বান্দা যে অবস্থায় আল্লাহর অধিক নিকটবর্তী হয়
৩৮.পরিচ্ছেদঃ সিজদার ফযীলত
৩৯.পরিচ্ছেদঃ যে ব্যক্তি আল্লাহর জন্য একটি সিজদা করিল তার সওয়াব
৪০.পরিচ্ছেদঃ সিজদার স্থান
৪১.পরিচ্ছেদঃ এক সিজদা অন্য সিজদা থেকে লম্বা হওয়া
৪২.পরিচ্ছেদঃ সিজদা থেকে মাথা উঠানোর সময় তাকবীর
৪৩.পরিচ্ছেদঃ প্রথম সিজদা থেকে মাথা ওঠানোর সময় হাতদ্বয় ওঠানো
৪৪.পরিচ্ছেদঃ দু সিজদার মাঝে হাত না ওঠানো
৪৫.পরিচ্ছেদঃ দুসিজদার মধ্যে দোয়া
৪৬.পরিচ্ছেদঃ দুসিজদার মধ্যে চেহারা বরাবর হাত উঠানো
৪৭.পরিচ্ছেদঃ দুসিজদার মধ্যে কিভাবে বসবে?
৪৮.পরিচ্ছেদঃ দুসিজদার মধ্যে বসার পরিমাণ
৪৯.পরিচ্ছেদঃ সিজদার জন্য তাকবীর
৫০.পরিচ্ছেদঃ দুসিজদার পর ওঠার সময় সোজা হয়ে বসা
৫১.পরিচ্ছেদঃ ওঠার সময় মাটিতে ঠেক লাগানো
৫২.পরিচ্ছেদঃ ওঠার জন্য তাকবীর বলা

১.পরিচ্ছেদঃ সিজদার জন্য পাথরের টুকরা ঠাণ্ডা করা

১০৮১. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, আমরা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে জোহরের নামাজ আদায় করলাম। আমি এক মুষ্টি পাথর টুকরা তা ঠাণ্ডা করার জন্য হাতে নিলাম। তারপর আমি তা আমার অন্য হাতে নাড়াচাড়া করিতে লাগলাম। যখন আমি সিজদা করলাম তখন তা আমার কপাল রাখার স্থানে রেখে দিলাম।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

২.পরিচ্ছেদঃ সিজদার জন্য তাকবীর বলা

১০৮২. মুতাররিফ [রহঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, আমি এবং ইমরান ইবনি হুসাইন, আলী ইবনি আবু তালিব [রাঃআঃ]-এর পেছনে নামাজ আদায় করলাম। তিনি যখন সিজদা করিলেন, তখন তাকবীর বলিলেন। আর যখন তিনি সিজদা থেকে মাথা তুললেন, তখন তাকবীর বলিলেন। যখন দুরাকাতের পর দাঁড়ালেন তখনও তাকবীর বলিলেন। নামাজ শেষ হওয়ার পর ইমরান আমার হাত ধরে বলিলেন, ইনি {আলী [রাঃআঃ] আমাকে স্মরণ করিয়ে দিলেন, তিনি এমন একটি বাক্য বলিলেন, যার অর্থ হলো- মুহাম্মদ [সাঃআঃ]-এর নামাজ।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১০৮৩. আবদুল্লাহ ইবনি মাসউদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] প্রত্যেক নীচু হওয়ার সময় এবং ওঠার সময় তাকবীর বলিতেন। এবং তাহাঁর ডানে ও বামে সালাম করিতেন। আর আবু বকর এবং উমর [রাঃআঃ] তা করিতেন।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩.পরিচ্ছেদঃ কিরূপে সিজদায় ঝুঁকবে?

১০৮৪. হাকীম [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট বায়আত গ্রহণ করেছি এ কথার উপর যে, আমি সোজা হয়ে দাঁড়ানো অবস্থা ব্যতীত সিজদার জন্য নীচু হব না।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৪.পরিচ্ছেদঃ সিজদার জন্য হাত ওঠানো

১০৮৫. মালিক ইবনি হুয়াইরিছ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি নাবী [সাঃআঃ]-কে নামাজে উভয় হাত ওঠাতে দেখেছেন। যখন তিনি রুকূ করিতেন, যখন রুকূ থেকে তাহাঁর মাথা তুলতেন আর যখন সিজদা করিতেন এবং সিজদা থেকে মাথা ওঠাতেন। তাহাঁর হাতদ্বয় তাহাঁর উভয় কানের লতি বরাবর হতো।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১০৮৬. মালিক ইবনি হুয়াইরিছ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি নাবী [সাঃআঃ]-কে নামাজে উভয় হাত ওঠাতে দেখেছেন। তারপর তিনি পূর্ববত উল্লেখ করেন।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

১০৮৭. মালিক ইবনি হুয়াইরিছ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

নাবী [সাঃআঃ] যখন নামাজ আরম্ভ করিতেন, এরপর তিনি অনুরূপ বর্ণনা করিলেন, তাতে অতিরিক্ত বাড়িয়েছেন – আর যখন তিনি রুকূ করিলেন, এরূপ করিলেন। আর যখন রুকূ থেকে তাহাঁর মাথা ওঠালেন, এরূপ করিলেন, আর যখন তিনি সিজদা থেকে স্বীয় মাথা তুললেন, অনুরূপ করিলেন।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৫.পরিচ্ছেদঃ সিজদায় হাত না ওঠানো

১০৮৮. ইবনি উমর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যখন নামাজ আরম্ভ করিতেন তখন তাহাঁর হাতদ্বয় ওঠাতেন। আর যখন রুকূ করিতেন এবং রুকূ থেকে [মাথা] ওঠাতেন। আর তিনি সিজদায় এরূপ করিতেন না।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৬.পরিচ্ছেদঃ সিজদায় সর্বাগ্রে যে অঙ্গ যমীনে পৌঁছাবে

১০৮৯. ওয়ায়িল ইবনি হুজর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে দেখেছি, যখন তিনি সিজদা করিতেন তখন তাহাঁর হাতদ্বয়ের পূর্বে তাহাঁর উভয় হাঁটু [যমীনে] স্থাপন করিতেন। আর যখন উঠতেন তখন হাঁটুর পূর্বে উভয় হাত ওঠাতেন।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১০৯০. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন তোমাদের কেউ নামাজে বসতে চায় এরপর সে এমনভাবে বসে, যেভাবে উট বসে।১

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১০৯১. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, তোমাদের কেউ যখন সিজদা করে তখন সে যেন হাঁটু স্থাপনের পূর্বে তার উভয় হাত স্থাপন করে আর সে যেন উটের বসার মত না বসে।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৭.পরিচ্ছেদঃ সিজদায় মুখমন্ডলের সাথে উভয় হাত স্থাপন করা

১০৯২. ইবনি উমর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, উভয় হাতও সিজদা করে যেরূপ মুখমন্ডল সিজদা করে। অতএব, যখন তোমাদের কেউ তার মুখমন্ডল স্থাপন করে তখন সে যেন তার উভয় হাতও স্থাপন করে। আর যখন তা ওঠাবে তখন উভয় হাতকেও ওঠাবে।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৮.পরিচ্ছেদঃ কত অঙ্গের উপর সিজদা ?

১০৯৩. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] আদিষ্ট হয়েছেন সাত অঙ্গের উপর সিজদা করিতে। আর তাহাঁর কাপড় ও চুল একত্র না করিতে।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১০৯৪. আব্বাস ইবনি আবদুল মুত্তালিব [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

যে, তিনি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছেন, যখন কোন বান্দা সিজদা করে তখন তার সপ্ত অঙ্গ সিজদা করে। তার মুখমণ্ডল, উভয় হাতের তালু, উভয় হাঁটু এবং উভয় পা।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৯.পরিচ্ছেদঃ ললাটের উপর সিজদা করা

১০৯৫. আবু সাঈদ খুদরী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, আমার দুচোখ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর ললাটে এবং নাকের উপর পানি এবং কাদা মাটির চিহ্ন একুশ তারিখের ভোর থেকে দেখেছে।[সংক্ষিপ্ত]

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১০.পরিচ্ছেদঃ নাকের উপর সিজদা

১০৯৬. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, আমি আদিষ্ট হয়েছি সাত অঙ্গের উপর সিজদা করিতে। আর যেন আমি চুল ও কাপড় একত্র করে না রাখি [সে সাত অঙ্গ হচ্ছে] ললাট, নাক, উভয় হাত, উভয় হাঁটু এবং উভয় পা।১

{১. এখানে ললাট ও নাক উভয়ই মুখমন্ডলের অংশ হওয়ার কারণে এক সঙ্গে ধরা হয়েছে।}

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১১.পরিচ্ছেদঃ দুহাতের উপর সিজদা

১০৯৭. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

নাবী [সাঃআঃ] থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি সাত অঙ্গের উপর সিজদা করিতে আদিষ্ট হয়েছি। ললাটের উপর, নাকের উপর এবং দুহাঁটু, দুহাত এবং দুপায়ের প্রান্তের ওপরে, আর তিনি হাত দ্বারা ইঙ্গিত করিলেন।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১২.পরিচ্ছেদঃ হাঁটুর উপর সিজদা

১০৯৮. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

নাবী [সাঃআঃ] সাত অঙ্গের উপর সিজদা করিতে আদিষ্ট হয়েছেন এবং চুল ও কাপড় একত্র করে রাখতে নিষেধ করা হয়েছে। ঐ সাত অঙ্গ হল– হাতদ্বয়, উভয় হাঁটু এবং পায়ের আঙ্গুলের কিনারা। সুফিয়ান বলেন, ইবনি তাঊস তাহাঁর হাতদ্বয় তাহাঁর ললাটের উপর রাখলেন এবং তা তাহাঁর নাকের উপর ঘুরালেন এবং আমাদের বলিলেন, এ হলো একটা। ঈমাম নাসাঈ [রহঃ] বলেনঃ আমি এ হাদিস দুব্যাক্তি থেকে শুনিয়াছি- মুহাম্মদ ইবনি মনসূর ও আবদুল্লাহ ইবনি মুহাম্মদ। তবে এ হাদিসের শব্দমালা মুহাম্মদ ইবনি মানসূরের।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৩.পরিচ্ছেদঃপদদ্বয়ের উপর সিজদা করা

১০৯৯. আব্বাস ইবনি আবদুল মুত্তালিব [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছেন, যখন কোন বান্দা সিজদা করে তখন তার সাথে সাত অঙ্গ সিজদা করেঃ তার চেহারা, তার দুহাতের তালু, দুহাঁটু এবং দুপা।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৪.পরিচ্ছেদঃ সিজদায় উভয় পায়ের পাতা খাড়া রাখা

১১০০. আয়িশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, একরাতে আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে না পেয়ে তাহাঁর নিকট পৌঁছে দেখি তিনি সিজদায় আছেন আর তাহাঁর পায়ের পাতাদ্বয় খাড়াবস্থায়। আর তিনি বলছেন- [আরবী]।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৫.পরিচ্ছেদঃ সিজদায় উভয় পায়ের আঙ্গুল খাড়া রাখা

১১০১. আবু হুমায়দ সায়িদী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] যখন সিজদার জন্য যমীনের দিকে যেতেন, তখন তিনি তাহাঁর বাহু উভয় বগল থেকে পৃথক রাখতেন এবং তাহাঁর উভয় পায়ের আঙ্গুল খাড়া রাখতেন। [সংক্ষিপ্ত]

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৬.পরিচ্ছেদঃ সিজদায় হাতের স্থান

১১০২. ওয়ায়িল ইবনি হুজর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, আমি মদীনায় আগমন করে বললাম, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নামাজ প্রত্যক্ষ করবো। তিনি তাকবীর বলিলেন, এবং তাহাঁর হাতদ্বয় তুললেন যাতে দেখলাম তাহাঁর বৃদ্ধাঙ্গুলীদ্বয় তাহাঁর কানের নিকটে। যখন তিনি রুকূ করিতে ইচ্ছা করিলেন তখন তাকবীর বলিলেন এবং তাহাঁর হাতদ্বয় তুললেন। অতঃপর তাহাঁর মাথা ওঠালেন এবং বলিলেন, সামিয়াল্লাহু লিমান হামিদাহ। তারপর তাকবীর বলিলেন এবং সিজদা করিলেন। তখন তাহাঁর হাতদ্বয় কানের ঐস্থানে ছিলো, যেখানে নামাজ আরম্ভ করার সময় ছিল।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৭.পরিচ্ছেদঃ সিজদায় বাহূদ্বয় বিছিয়ে দেয়ার নিষেধাজ্ঞা

১১০৩. আনাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, তোমাদের কেউ যেন সিজদায় তার বাহুদ্বয় বিছিয়ে না দেয়, যেমন কুকুর বিছিয়ে দিয়ে থাকে।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহীহ

১৮.পরিচ্ছেদঃ সিজদা করার নিয়ম

১১০৪. আবু ইসহাক [রহঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, বারা [রাঃআঃ] আমাদেরকে সিজদার নিয়ম বর্ণনা করিতে গিয়ে তাহাঁর হাতদ্বয় মাটিতে স্থাপন করিলেন এবং তাহাঁর নিতম্ব উঠিয়ে রাখলেন এবং বলিলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]- কে এরূপ করিতে দেখেছি।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

১১০৫. বারা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যখন নামাজ আদায় করিতেন তখন প্রত্যেক অঙ্গ পৃথক পৃথক রাখতেন।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১১০৬. আবদুল্লাহ ইবনি মালিক ইবনি বুহায়না [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যখন নামাজ আদায় করিতেন তখন তাহাঁর হাতদ্বয় এমনভাবে পৃথক রাখতেন যে, তাহাঁর বগলের শুভ্রতা প্রকাশ পেত।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১১০৭. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, আমি যদি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সামনে থাকতাম [যখন তিনি সিজদায় থাকতেন] তাহলে তাহাঁর বগল দেখিতে পেতাম। [এই পরিমাণ তিনি বাহুদ্বয় খোলা রাখতেন]।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১১০৮. আবদুল্লাহ ইবনি আকরাম [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে নামাজ আদায় করেছি। তিনি যখন সিজদা করিতেন আমি তাহাঁর বগলের শুভ্রতা দেখিতে পেতাম।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৯.পরিচ্ছেদঃ সিজদায় অঙ্গ পৃথক রাখা

১১০৯. মায়মূনা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

নাবী [সাঃআঃ] যখন সিজদা করিতেন তখন তাহাঁর হাতদ্বয় পৃথক রাখতেন। এমনকি যদি একটি বকরীর বাচ্চা তাহাঁর হাতদ্বয়ের নীচ দিয়ে যেতে চাইতো, যেতে পারত।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২০.পরিচ্ছেদঃ সিজদায় মধ্যপন্থা অবলম্বন

১১১০. আনাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমরা সিজদায় মধ্যপন্থা অবলম্বন কর। তোমাদের কেউ যেন, তার বাহুদ্বয় কুকুরের ন্যায় বিছিয়ে না রাখে।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২১.পরিচ্ছেদঃ সিজদায় পিঠ সোজা রাখা

১১১১. আবু মাসঊদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ ঐ নামাজ পূর্ণ হয় না, যে নামাজে কোন ব্যাক্তি রুকূ ও সিজদায় তার পিঠ সোজা রাখে না।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২২.পরিচ্ছেদঃ কাকের ন্যায় ঠোকর মারার নিষেধাজ্ঞা

১১১২. আবদূর রহমান ইবনি শিবল [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তিনটি কাজ থেকে নিষেধ করিয়াছেন। কাকের ন্যায় ঠোকর মারা থেকে, চতুষ্পদ জন্তুর ন্যায় হাত বিছিয়ে দেয়া থেকে এবং কোন ব্যাক্তির একস্থানকে নামাজের জন্য নির্দিষ্ট করা থেকে যেরূপ উট কোন স্থান নির্দিষ্ট করে নেয়।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

২৩.পরিচ্ছেদঃ সিজদায় চুল একত্র করে রাখার নিষেধাজ্ঞা

১১১৩. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, আমি সাত অঙ্গে সিজদা করিতে এবং নামাজে চুল অথবা কাপড় একত্র করে না রাখার জন্য আদিষ্ট হয়েছি।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২৪.পরিচ্ছেদঃ চুলে বেণী করে নামাজ আদায়কারীর উদাহরণ

১১১৪. আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি আবদুল্লাহ ইবনি হারিসকে নামাজ আদায় করিতে দেখেছেন। তখন তাহাঁর মাথা পেছন দিক থেকে বেণী করা ছিল। তিনি দাঁড়িয়ে তা খুলতে লাগলেন। নামাজ শেষ করে তিনি ইবনি আব্বাসের দিকে ফিরে বলিলেন, আমার মাথার সাথে তোমার কি সম্পর্ক? তিনি বলিলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে বলিতে শুনিয়াছি, এর উদাহরণ ঐ ব্যাক্তির ন্যায়, যে নামাজ আদায় করে আর তার উভয় হাত বাঁধা থাকে।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২৫.পরিচ্ছেদঃ সিজদায় কাপড় একত্র করার নিষেধাজ্ঞা

১১১৫. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] আদিষ্ট হয়েছেন সাত অঙ্গের উপর সিজদা করিতে। আর তাঁকে নিষেধ করা হয়েছে চুল ও কাপড় একত্র করে রাখতে।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২৬.পরিচ্ছেদঃ কাপড়ের উপর সিজদা

১১১৬. আনাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, আমরা যখন দুপুরে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর পেছনে নামাজ আদায় করতাম তখন আমরা উত্তাপ থেকে রক্ষা পাবার জন্য আমাদের কাপড়ের উপর সিজদা করতাম।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২৭.পরিচ্ছেদঃ সিজদা পূর্ণ করার আদেশ

১১১৭. আনাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ তোমারা রুকূ এবং সিজদা পূর্ণভাবে আদায় কর। আল্লাহর শপথ! আমি তোমাদেরকে আমার পেছন থেকে তোমাদের রুকূতে এবং তোমাদের সিজদায় দেখে থাকি।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২৮.পরিচ্ছেদঃ সিজদায় কুরআন পড়ার নিষেধাজ্ঞা

১১১৮. আলী ইবনি আবু তালিব [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, আমার বন্ধু [সাঃআঃ] আমাকে তিনটি কাজ থেকে নিষেধ করিয়াছেন। আমি বলি না যে, লোকদের নিষেধ করিয়াছেন। তিনি আমাকে নিষেধ করিয়াছেন সোনার আংটি পরিধান করিতে, রেশম মিশ্রিত কাপড়, কুসুম রংয়ের কাপড় এবং গাঢ় লাল রংয়ের কাপড় পরিধান করিতে। আর আমি যেন রুকূ এবং সিজদা অবস্থায় কুরআন পাঠ না করি।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১১১৯. আলী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাকে নিষেধ করিয়াছেন, রুকূ এবং সিজদা অবস্থায় কুরআন পাঠ করিতে।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২৯.পরিচ্ছেদঃ সিজদায় বেশি বেশি দোয়া করার নির্দেশ

১১২০. আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যে অসুখে ইনতিকাল করেন, সে অসুস্থ অবস্থায় তিনি পর্দা খুললেন, তখন তার মাথার পট্টি বাঁধা ছিল। তিনি বলিলেন, হে আল্লাহ! আমি পৌঁছিয়েছি, একথা তিনবার বলিলেন। বস্তুত যথার্থ স্বপ্ন ব্যতীত নবুওতের সুসংবাদ থেকে আর কিছুই বাকি রইল না। বান্দা তা দেখে অথবা তাকে তা দেখানো হয়। তোমরা শুনে রেখ ; আমাকে রুকূ এবং সিজদায় কিরাআত থেকে নিষেধ করা হয়েছে। অতএব, যখন তোমারা রুকূ করিবে তখন তোমাদের রবের তাযীম করিবে। আর যখন তোমারা সিজদা করিবে তখন তোমারা বেশি বেশি দোয়া করার চেষ্টা করিবে। কেননা, এটা তোমাদের দোয়া কবুলের উপযুক্ত সময়।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩০.পরিচ্ছেদঃ সিজদায় দোয়া করা

১১২১. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, আমি আমার খালা মায়মূনা বিনত হারিছের নিকট রাত যাপন করলাম। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ও তার নিকট রাত যাপন করিলেন। আমি তাঁকে দেখলাম, তিনি তাহাঁর প্রয়োজনে উঠে দাঁড়ালেন। তিনি পানির পাত্রের নিকট এসে তার ঢাকনা খুললেন। তারপর, তিনি ওযু করিলেন এক ধরনের [অর্থাৎ হাত ধুইলেন] পরে তিনি তাহাঁর বিছানায় আগমন করে নিদ্রা গেলেন। তারপর তিনি পুনরায় ঘুম থেকে জাগলেন এবং পানির নিকট এসে তার ঢাকনা খুলে পূর্ণ ওযু করিলেন [নামাজের ওযুর ন্যায়]। তারপর দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করিলেন এবং তিনি সিজদায় বলেছিলেন,

اللَّهُمَّ اجْعَلْ فِي قَلْبِي نُورًا وَاجْعَلْ فِي سَمْعِي نُورًا وَاجْعَلْ فِي بَصَرِي نُورًا وَاجْعَلْ مِنْ تَحْتِي نُورًا وَاجْعَلْ مِنْ فَوْقِي نُورًا وَعَنْ يَمِينِي نُورًا وَعَنْ يَسَارِي نُورًا وَاجْعَلْ أَمَامِي نُورًا وَاجْعَلْ خَلْفِي نُورًا وَأَعْظِمْ لِي نُورًا

“আল্ল-হুম্মাজ আল ফী কলবী নূরন ওয়াজ’আল ফী সাম’ঈ নূরন ওয়াজ’আল ফী বাসারী নূরন ওয়াজ’আল মিন তাহতী নূরন ওয়াজ’আল মিন ফাওকী নূরন ওয়া’আন ইয়ামীনী নূরন ওয়া’আন ইয়াসা-রী নূরন ওয়াজ আল আমা-মী নূরন ওয়াজ আল খলফী নূরন ওয়া আ’যিম লী নূরন” 

(হে আল্লাহ! আমার হৃদয়ে, আমার কর্ণে, আমার চক্ষুতে, আমার উর্ধ্বে ও নিম্নে, আমার ডানে ও বামে, আমার সামনে ও পিছনে জ্যোতি প্রদান কর, আর আমাকে অধিক অধিক নূর (জ্যোতি) দান কর)। অতঃপর তিনি (সা.) নিদ্রা গেলেন, এমন কি তিনি নাকের শব্দ করলেন। পরে বিলাল (রাঃ) এসে তাকে সালাতের জন্যে জাগালেন।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩১.পরিচ্ছেদঃ সিজদায় অন্য প্রকার দোয়া

১১২২. আয়িশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] রুকূ এবং সিজদায় বলিতেন,

سُبْحَانَكَ اللَّهُمَّ رَبَّنَا وَبِحَمْدِكَ، اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي

সুবহা-নাকা আল্ল-হুম্মা রব্বানা- ওয়াবিহামদিকা আল্ল-হুম্মাগফিরলী” 

(হে আল্লাহ! আমাদের প্রতিপালক আমি তোমার প্রশংসাসহ পবিত্রতা ঘোষণা করছি, হে আল্লাহ! তুমি আমাকে ক্ষমা করো।) এর দ্বারা তিনি কুরআনের মর্ম বর্ণনা করতেন।

এর দ্বারা তিনি কুরআনের মর্ম বর্ণনা করিতেন।১

১. তিনি উক্ত দোয়ার মাধ্যমে [এইখানে একটি দোয়া আছে] আয়াতের বাস্তবায়ন করিতেন।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১১২৩. আয়িশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] রুকূ এবং সিজদায় বলিতেন,

سُبْحَانَكَ اللَّهُمَّ رَبَّنَا وَبِحَمْدِكَ، اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي

সুবহা-নাকা আল্ল-হুম্মা রব্বানা- ওয়াবিহামদিকা আল্ল-হুম্মাগফিলী

(হে আল্লাহ! আমাদের প্রতিপালক আমি তোমার প্রশংসাসহ পবিত্রতা ঘোষণা করছি, হে আল্লাহ! তুমি আমাকে ক্ষমা করো।) এর মাধ্যমে তিনি কুরআনের মর্ম বর্ণনা করতেন।

মাধ্যমে তিনি কুরআনের মর্ম বর্ণনা করিতেন।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১১২৪. আয়িশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

[একরাতে] আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে তাহাঁর বিছানায় না পেয়ে তাঁকে হাতড়িয়ে তালাশ করিতে লাগলাম। আমি মনে করেছিলাম তিনি তাহাঁর কোন দাসীর নিকট গিয়ে থাকিবেন। এমতাবস্থায় আমার হাত তাহাঁর উপর পতিত হলো, তখন তিনি সিজদায় থেকে বলেছিলেন ,

اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي مَا أَسْرَرْتُ وَمَا أَعْلَنْتُ

“আল্ল-হুম্মাগফিরলী লী মা- আসরারতু ওয়ামা- আ’ লানতু” 

(হে আল্লাহ! তুমি আমার গোপনে ও প্রকাশ্যে কৃত অপরাধ ক্ষমা কর)।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১১২৫. আয়িশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে না পেয়ে মনে করলাম তিনি হয়তো তাহাঁর কোন দাসীর নিকট গিয়ে থাকিবেন। তাঁকে খুঁজে দেখলাম, তিনি সিজদারত অবস্থায় বলছেন

رَبِّ اغْفِرْ لِي مَا أَسْرَرْتُ وَمَا أَعْلَنْتُ

রব্বিগফিরলী মা- আসরারতু ওয়ামা- আ’লানতু

(হে আমার প্রতিপালক! তুমি আমার গোপনে ও প্রকাশ্যে কৃত অপরাধ ক্ষমা কর)।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১১২৬. আলী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যখন সিজদা করিতেন, তখন বলিতেন

اللَّهُمَّ لَكَ سَجَدْتُ، وَلَكَ أَسْلَمْتُ، وَبِكَ آمَنْتُ، سَجَدَ وَجْهِي لِلَّذِي خَلَقَهُ وَصَوَّرَهُ فَأَحْسَنَ صُورَتَهُ وَشَقَّ سَمْعَهُ وَبَصَرَهُ، تَبَارَكَ اللَّهُ أَحْسَنُ الْخَالِقِينَ

আল্ল-হুম্মা লাকা সাজাদতু ওয়াবিকা আ-মানতু ওয়ালাকা আসালামতু ওয়া আনতা রব্বী সাজাদা ওয়াজহী লিল্লাযী খলাকাহ ওয়া সওওয়ারাহু ওয়া শাক্কা সাম্ আহূ ওয়া বাসারাহূ তাবা-রকাল্ল-হূ আহসানুল খলিকীন।” 

(হে আল্লাহ! আমি তোমারই জন্য সিজদা করেছি, আমি তোমারই প্রতি ঈমান এনেছি, আমি তোমার নিকটেই আত্মসমর্পণ করেছি, তুমি আমার রব। আমার মুখমণ্ডল তার উদ্দেশে সিজদাবনত হল, যিনি তা সৃষ্টি করেছেন ওর আকৃতি দান করেছেন এবং তার চক্ষু ও কর্ণকে উদগত করেছেন। সুতরাং সুনিপুণ স্রষ্টা আল্লাহ কত মহান!)।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১১২৭. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

নাবী [সাঃআঃ] থেকে বর্ণিত, তিনি সিজদায় বলিতেন

اللَّهُمَّ لَكَ سَجَدْتُ، وَبِكَ آمَنْتُ، وَلَكَ أَسْلَمْتُ، وَأَنْتَ رَبِّي، سَجَدَ وَجْهِي لِلَّذِي خَلَقَهُ وَصَوَّرَهُ وَشَقَّ سَمْعَهُ وَبَصَرَهُ، تَبَارَكَ اللَّهُ أَحْسَنُ الْخَالِقِينَ

“আল্ল-হুম্মা লাকা সাজাদতু ওয়াবিকা আ-মানতু ওয়ালাকা আসালামতু ওয়া আনতা রব্বী সাজাদা ওয়াজহী লিল্লাযী খলাকাহূ ওয়া সওওয়ারাহূ ওয়া শাক্কা সাম আহূ ওয়া বাসারাহূ তাবা-রকাল্ল-হূ আহসানুল খলিকীন।” 

(হে আল্লাহ! আমি তোমারই জন্য সিজদা করেছি, আমি তোমারই প্রতি ঈমান এনেছি, আমি তোমার নিকটেই আত্মসমর্পণ করেছি, তুমি আমার রব। আমার মুখমণ্ডল তার উদ্দেশ্যে সিজদাবনত হল, যিনি তা সৃষ্টি করেছেন ও আকৃতি দান করেছেন এবং তার চক্ষু ও কর্ণকে উদ্গত করেছেন। সুতরাং সুনিপুণ স্রষ্টা আল্লাহ কত মহান!)।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩২.পরিচ্ছেদঃ অন্য প্রকার দোয়া

১১২৮. মুহাম্মদ ইবনি মাসলামা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

যে, রাত্রে যখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] নফল নামাজে দাঁড়াতেন। তখন সিজদায় বলিতেন,

اللَّهُمَّ لَكَ سَجَدْتُ، وَبِكَ آمَنْتُ، وَلَكَ أَسْلَمْتُ، اللَّهُمَّ أَنْتَ رَبِّي، سَجَدَ وَجْهِي لِلَّذِي خَلَقَهُ وَصَوَّرَهُ وَشَقَّ سَمْعَهُ وَبَصَرَهُ، تَبَارَكَ اللَّهُ أَحْسَنُ الْخَالِقِينَ

“আল্ল-হুম্মা লাকা সাজাদতু ওয়াবিকা আ-মানতু ওয়ালাকা আসালামতু আল্ল-হুম্মা আনতা রব্বী সাজাদা ওয়াজহী লিল্লাযী খলাকাহূ ওয়া সওওয়ারাহূ ওয়াশাক্কা সাম্’আহূ ওয়া বাসারাহূ তাবা-রকাল্ল-হু আহসানুল খলিকীন।”

(হে আল্লাহ! আমি তোমারই জন্য সিজদা করেছি, আমি তোমারই প্রতি ঈমান এনেছি, আমি তোমার নিকটেই আত্মসমর্পণ করেছি, তুমি আমার রব। আমার মুখমণ্ডল তাঁর উদ্দেশ্য সিজদাবনত হল, যিনি তা সৃষ্টি করেছেন ও আকৃতি দান করেছেন এবং তার চক্ষু ও কর্ণকে উদ্গত করেছেন। সুতরাং সুনিপুণ স্রষ্টা আল্লাহ কত মহান!)।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১১২৯. আয়িশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

নাবী [সাঃআঃ] রাতে কুরআনের সিজদায় বলিতেন

 سَجَدَ وَجْهِي لِلَّذِي خَلَقَهُ وَشَقَّ سَمْعَهُ وَبَصَرَهُ بِحَوْلِهِ وَقُوَّتِهِ

“সাজাদা ওয়াজহী লিল্লাযী খলাকাহূ ওয়াশাকক্কা সাম’আহূ ওয়াবাসারাহূ বিহাওলিহী ওয়াকুওয়াতিহী।” 

(আমার চেহারা সিজদা করলো তারই জন্য যিনি একে সৃষ্টি করেছেন এবং এতে শ্রবণশক্তি ও দৃষ্টিশক্তি দিয়েছেন; তারই প্রদত্ত শক্তি ও সামর্থ্য বলে।)।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১১৩০. আয়িশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, এক রাতে আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে না পেয়ে পরে তাঁকে সিজদারত অবস্থায় পেলাম; তাহাঁর পদদ্বয়ের আঙ্গুলসমূহ ছিল কিবলার দিকে। তাঁকে বলিতে শুনলাম,

أَعُوذُ بِرِضَاكَ مِنْ سَخَطِكَ، وَأَعُوذُ بِمُعَافَاتِكَ مِنْ عُقُوبَتِكَ، وَأَعُوذُ بِكَ مِنْكَ، لَا أُحْصِي ثَنَاءً عَلَيْكَ أَنَتْ كَمَا أَثْنَيْتَ عَلَى نَفْسِكَ

“আউযু বিরিযা-কা মিন সাখাত্বিকা ওয়াআ’উযু বিমু’আ-ফা-তিকা মিন ‘উকূবাতিকা ওয়াআ’উযুবিকা মিনকা লা-উহসী সানা-আন ‘আলায়কা আনতা কামা- আসনায়তা ‘আলা- নাফসিকা।” 

(আমি পানাহ চাই তোমার সন্তুষ্টির মাধ্যমে তোমার গজব থেকে, তোমার নিরাপত্তার মাধ্যমে তোমার ‘আযাব থেকে। আমি পানাহ চাই তোমার নিকট তোমার [অসন্তোষ] থেকে। তোমার প্রশংসা বর্ণনা করে আমি শেষ করতে পারবো না। তুমি তেমন, যেমন তুমি তোমার বিবরণ দিয়েছো।)।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১১৩১. আয়িশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, আমি এক রাতে রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে না পেয়ে মনে করলাম তিনি তাহাঁর অন্য কোন বিবির নিকট গিয়ে থাকিবেন। হাতড়িয়ে দেখলাম তিনি রুকু অথবা সিজদা অবস্থায় বলছেনঃ

سُبْحَانَكَ اللَّهُمَّ وَبِحَمْدِكَ لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ

“সুবহা-নাকা আল্ল-হুম্মা ওয়াবিহামদিকা লা- ইলা-হা ইল্লা আনতা”

(হে সুমহান আল্লাহ! আমরা তোমার প্রশংসার সাথে তোমার পবিত্রতা বর্ণনা করছি। তুমি ব্যতীত প্রকৃত কোন মা’বুদ নেই।) 

তখন আমি বললাম, আমার মাতা-পিতা আপনার উপর উৎসর্গ হোক। আমি এক অবস্থায় ছিলাম আর আপনি আছেন অন্য অবস্থায়।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩৩.পরিচ্ছেদঃ সিজদায় অন্য প্রকার দোয়া

১১৩২. আউফ ইবনি মালিক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, আমি নাবী [সাঃআঃ] এর সঙ্গে উঠলাম। তিনি মিসওয়াক করিতে আরম্ভ করিলেন। তারপর ওযু করে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করিলেন। তিনি শুরুতেই সূরা বাকারা আরম্ভ করিলেন। তিনি কোন রহমতের আয়াতে পৌছালে তাতে দোয়া না করে ছাড়তেন না। আর কোন আযাবের আয়াতে পৌছালে সেখানে থেমে আল্লাহর আশ্রয় গ্রহণ করিতেন। তারপর তিনি রুকূ করিলেন, তিনি কিয়ামের সময় পরিমাণ অবস্থান করিলেন। তিনি রুকূতে বলছিলেন

سُبْحَانَ ذِي الْجَبَرُوتِ وَالْمَلَكُوتِ وَالْكِبْرِيَاءِ وَالْعَظَمَةِ

“সুবহা-না যিল জাবারূতি ওয়াল মালাকূতি ওয়াল কিবরিয়া-য়ি ওয়াল আযামাহ”

তারপর তিনি এক রাকাতের সমপরিমাণ সময় সিজদা করিলেন। আর সিজদায় বলছিলেন

سُبْحَانَ ذِي الْجَبَرُوتِ وَالْمَلَكُوتِ وَالْكِبْرِيَاءِ وَالْعَظَمَةِ

সুবহা-না যিল জাবারূতি ওয়াল মালাকূতি ওয়াল কিবরিয়া-য়ি ওয়াল ‘আযামাহ

তারপর তিনি আলে-ইমরান পাঠ করিলেন। তারপর এক সূরা তারপর আর এক সূরা এরূপ করিলেন।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩৪.পরিচ্ছেদঃ অন্য প্রকার দোয়া

১১৩৩. হুযায়ফা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, আমি এক রাতে রাসুলূল্লাহ [সাঃআঃ] এর সঙ্গে নামাজ আদায় করলাম। তিনি সূরা বাকারা আরম্ভ করিলেন এবং এক শত আয়াত পড়লেন। তিনি রুকূ না করে সামনে চললেন। আমি বললাম, তা দু’রাকআতে শেষ করবেন ও তারপর রুকূ করবেন। তিনি চলতে থাকলেন, এমনকি সূরা নিসা শেষ করিলেন। অতঃপর সূরা আলে ইমরান। তারপর তিনি রুকূ করিলেন তাহাঁর কিওয়ামের কাছাকাছি সময় নিয়ে। তিনি রুকূতে বলছিলেনঃ

سُبْحَانَ رَبِّيَ الْعَظِيمِ، سُبْحَانَ رَبِّيَ الْعَظِيمِ، سُبْحَانَ رَبِّيَ الْعَظِيمِ

সুবহা-না রব্বিয়াল আযীম, সুবহা-না রব্বিয়াল আযীম, সুবহা-না রব্বিয়াল আযীম

পরে তিনি তাহাঁর মাথা ওঠালেন এবং বলিলেন

سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ

সামি আল্ল-হু লিমান হামিদাহ, রব্বানা লাকাল হামদ

এরপর বেশ কিছু সময় দাঁড়িয়ে থাকলেন। তারপর সিজদা করিলেন এবং সিজদা লম্বা করিলেন। আর তিনি সিজদায় বলছিলেন

سُبْحَانَ رَبِّيَ الْأَعْلَى، سُبْحَانَ رَبِّيَ الْأَعْلَى، سُبْحَانَ رَبِّيَ الْأَعْلَى

সুবহা-না রব্বিয়াল আ’লা-, সুবহা-না রব্বিয়াল আ’লা-, সুবহা-না রব্বিয়াল আ’লা

তিনি আল্লাহর ভয় অথবা তাযীমের আয়াত পৌছলেই স্মরণ করিতেন।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১১৩৪. আয়িশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] রুকু এবং সিজদায় বলিতেনঃ [আরবি]

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩৫.পরিচ্ছেদঃ সিজদায় তাসবীহর সংখ্যা

১১৩৫. আনাস ইবনি মালিক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নামাজের সাথে অধিক সামন্জস্যশীল নামাজ আদায় করিতে এ যুবকের অর্থাৎ উমর ইবনি আবদুল আযীযের মত আর কাউকে দেখিনি। আমরা তাহাঁর রুকূতে দশ তাসবীহ অনুমান করেছি। আর তার সিজদায়ও দশ তাসবীহ।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য

৩৬.পরিচ্ছেদঃ সিজদায় তাসবীহ পরিত্যাগ করার অনুমতি

১১৩৬. রিফায়া ইবনি রাফি [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, এক সময় রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] উপবিষ্ট ছিলেন আর আমরা তাহাঁর আশেপাশে বসা ছিলাম। এমন সময় একব্যক্তি প্রবেশ করে কিবলার দিকে এসে নামাজ আদায় করিল। সে নামাজ শেষ করে এসে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে সালাম করিল এবং দলের অন্যদেরকেও। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর সালামের উত্তর দিয়ে বলিলেন, যাও, নামাজ আদায় কর। কেননা, তুমি নামাজ আদায় করনি। সে ব্যক্তি গিয়ে আবার নামাজ আদায় করিল। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর নামাজের প্রতি লক্ষ্য রাখছিলেন। সে ব্যক্তি বুঝতে পারল না, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এতে কি ভুল ধরছেন। সে এবারও নামাজ শেষ করে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট এসে তাঁকে এবং দলের অন্যদেরকে সালাম করিল। এবারও রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তার সালামের উত্তর দিয়ে তাকে বলিলেন, যাও, নামাজ আদায় কর। কেননা, তুমি নামাজ আদায় করনি। সে ব্যক্তি এভাবে দুবার কি তিনবার নামাজ পুনঃ আদায় করিলেন। তারপর সে ব্যক্তি বলিল, ইয়া রসূলুল্লাহ! আপনি আমার নামাজে কি ভুল পেলেন? তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, তোমাদের কারও নামাজ পূর্ণ হয় না যতক্ষণ না সে আল্লাহ তাআলা‌ যেরুপ ওযু করিতে আদেশ করিয়াছেন সেরুপ ওযু না করে। অর্থাৎ সে তার চেহারা এবং উভয় হাত কুনই পর্যন্ত ধৌত না করে এবং মাথা মসেহ না করে এবং তার উভয় পা টাখনু পর্যন্ত ধৌত না করে। তারপর আল্লাহর তাকবীর না বলে [তাকবীর তাহরীমা না বলে] এবং তাহাঁর তাহমীদ ও তামজীদ না করে [ছানা না পড়ে]। তারপর কুরআনের যতটুকু সম্ভব পড়বে, আল্লাহ তাকে যতটুকু শিক্ষাদান করিয়াছেন এবং যার অনুমতি দান করিয়াছেন। তারপর তাকবীর বলে রুকু করিবে যেন তার সকল অঙ্গ স্থির হয়ে যায়। তারপর বলবে [আরবি] তারপর সোজা হয়ে দাঁড়াবে যেন তার পিঠ সোজা হয়ে যায়। পরে তাকবীর বলে সিজদা করিবে যেন তার চেহারা ঠিকভাবে স্থাপিত হয়। আর তার সকল অঙ্গ সোজা হয়ে স্থির হয়ে যায়। এরপর তাকবীর বলবে এবং মাথা তুলে সোজা হয়ে বসবে বসার অঙ্গের উপর। আর পিঠ সোজা রাখবে। তারপর তাকবীর বলে সিজদা করিতে যেন তার চেহারা ঠিকভাবে স্থাপিত হয় এবং স্থির হয়ে যায়। যখন এরুপ না করিবে তার নামাজ পূর্ণ হইবে না।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩৭.পরিচ্ছেদঃ বান্দা যে অবস্থায় আল্লাহর অধিক নিকটবর্তী হয়

১১৩৭. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, বান্দা আল্লাহ তাআলার অধিক নিকটবতী হয়, যে অবস্থায় সে সিজদারত থাকে। অতএব, তখন তোমরা অধিক দোয়া করিতে থাক।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩৮.পরিচ্ছেদঃ সিজদার ফযীলত

১১৩৮. রাবিআ ইবনি কাব আসলামী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট তার ওযূর পানি এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস নিয়ে আসতাম। একদিন তিনি আমাকে বলিলেন, তুমি আমার নিকট কিছু চাও। আমি বললাম, আমি বেহেশতে আপনার সঙ্গ কামনা করি। তিনি বলিলেন, এছাড়া অন্য কিছু কি চাও? আমি বললাম, না, এটাই। তিনি বলিলেন, তা হলে তুমি অধিক সিজদা দ্বারা তোমার এ কাজে আমাকে সহায়তা কর।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩৯.পরিচ্ছেদঃ যে ব্যক্তি আল্লাহর জন্য একটি সিজদা করিল তার সওয়াব

১১৩৯. মাদান ইবন্ তালহা ইয়ামারী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর আযাদকৃত দাস ছাওবানের সাথে আমি সাক্ষাৎ করলাম। আমি বললাম, আমাকে এমন একটি আমলের কথা বলুন যা আমার উপকারে আসবে অথবা আমাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে। তিনি আমার জবাব না দিয়ে কিছুক্ষণ চুপ রইলেন। তারপর আমার প্রতি লক্ষ্য করে বলিলেন, আপনি সিজদা করিতে থাকুন। কেননা, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনিয়াছি, যে বান্দাই আল্লাহর উদ্দেশে একটি সিজদা করিবে, আল্লাহ তাআলা এর বিনিময়ে তার একটি মর্যাদা বৃদ্ধি করবেন। আর এর দ্বারা তার একটি পাপ মুছে ফেলবেন। মাদান [রাঃআঃ] বলেন, অতঃপর আমি আবুদ্ দারদার সাথে সাক্ষাৎ করলাম এবং তাঁকেও ঐ প্রশ্ন করলাম যা আমি ছাওবান [রাঃআঃ]-কে করেছিলাম। তিনিও আমাকে বলিলেন, আপনি সিজদাকে অবশ্য করণীয়রুপে গ্রহণ করুন। কেননা, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনিয়াছি, যে কোন বান্দা আল্লাহর উদ্দেশে একটি সিজদা করে, আল্লাহ তাআলা তার একটি মর্যাদা বৃদ্ধি করেন এবং তার দ্বারা তার একটি পাপ মার্জনা করেন।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৪০.পরিচ্ছেদঃ সিজদার স্থান

১১৪০. আতা ইবনি ইয়াযীদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, আমি আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] এবং আবু সাঈদ [রা]-এর নিকট উপবিষ্ট ছিলাম। তাঁদের একজন শাফাআতের হাদিস বর্ণনা করিলেন, আর অন্যজন ছিলেন নিশ্চুপ। তিনি বলেন, তারপর ফেরেশতা এসে সুপারিশ করবেন এবং রাসূলগণ সুপারিশ করবেন, তারপর তিনি পুলসিরাতের উল্লেখ করে বলিলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, যাদের অনুমতি দেয়া হইবে তাঁদের মধ্যে আমি-ই হবো প্রথম। তারপর যখন আল্লাহ্ তাআলা তাহাঁর সৃষ্টির বিচারকার্য থেকে অবসর গ্রহণ করবেন এবং দোযখ থেকে যাকে বের করিতে ইচ্ছা করবেন তাকে বের করবেন। আল্লাহ তাআলা ফেরেশতা ও রাসূলগণকে আদেশ করবেন সুপারিশ করার জন্য। তখন তাঁরা তাহাদের চিহ্ন দ্বারা চিনে নিবেন যে, আদম সন্তানের সিজদার স্থান ব্যতীত আর সব কিছুই আগুন জ্বালিয়ে ফেলেছে। তারপর তাহাদের উপর আবে হায়াত ঢেলে দেয়া হইবে। তখন তারা নবজীবন লাভ করিবে যেরুপ স্রোতের ধারে বীজ গজিয়ে ওঠে।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৪১.পরিচ্ছেদঃ এক সিজদা অন্য সিজদা থেকে লম্বা হওয়া

১১৪১. শাদ্দাদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, এক ইশার নামাজে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে আমাদের দিকে বেরিয়ে আসলেন। তখন তিনি হাসান অথবা হুসায়ন [রা]-কে বহণ করে আনছিলেন। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] সামনে অগ্রসর হয়ে তাঁকে রেখে দিলেন। তারপর নামাজের জন্য তাকবীর বলিলেন ও নামাজ আদায় করিলেন। নামাজের মধ্যে একটি সিজদা লম্বা করিলেন। [হাদিসের অন্যতম রাবী আবদুল্লাহ বলেন], আমার পিতা [শাদ্দাদ] বলেন, আমি আমার মাথা উঠালাম এবং দেখলাম, ঐ ছেলেটি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর পিঠের উপর রয়েছেন। আর তিনি সিজদারত। তারপর আমি আমার সিজদায় গেলাম। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] নামাজ শেষ করলে লোকেরা বলিল, ইয়া রাসূলু্ল্লাহ্! আপনি আপনার নামাজের মধ্যে একটি সিজদা এত লম্বা করিলেন, যাতে আমরা ধারণা করলাম, হয়তো কোন ব্যাপার ঘটে থাকিবে। অথবা আপনার উপর ওহী নাযিল হচ্ছে। তিনি বলিলেন, এর কোনটাই ঘটেনি। বরং আমার এ সন্তান আমাকে সাওয়ারী বানিয়েছে। আমি তাড়াতাড়ি উঠতে অপছন্দ করলাম, যেন সে তার কাজ সমাধা করিতে পারে।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৪২.পরিচ্ছেদঃ সিজদা থেকে মাথা উঠানোর সময় তাকবীর

১১৪২. আবদুল্লাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে দেখেছি, তিনি [নামাজের মধ্যে] প্রত্যেক নীচু হওয়ার সময় এবং মাথা উত্তোলনের সময় আর প্রত্যেক দাঁড়ানোর এবং বসার সময় তাকবীর বলিতেন এবং তিনি ডান ও বাম দিকে আস্ সালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ বলে সালাম করিতেন। তখন তাহাঁর চেহারায় শুভ্রতা দেখা যেত। রাবী বলেন, আর আমি আবু বকর [রাঃআঃ] এবং উমর [রা]-কেও এরুপ করিতে দেখেছি।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৪৩.পরিচ্ছেদঃ প্রথম সিজদা থেকে মাথা ওঠানোর সময় হাতদ্বয় ওঠানো

১১৪৩. মালিক ইবনি হুয়ায়রিছ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

নাবী [সাঃআঃ] যখন নামাজে প্রবেশ করিতেন তখন তাহাঁর হাতদ্বয় ওঠাতেন। আর যখন রুকূ করিতেন ঐরুপ করিতেন, আর যখন রুকূ থেকে মাথা ওঠাতেন তখনও ঐরুপ করিতেন। আর যখন সিজদা থেকে মাথা ওঠাতেন তখনও ঐরুপ করিতেন। অর্থাৎ তাহাঁর হাতদ্বয় ওঠাতেন।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৪৪.পরিচ্ছেদঃ দু সিজদার মাঝে হাত না ওঠানো

১১৪৪. আবদুল্লাহ ইবনি উমর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] যখন নামাজ আরাম্ভ করিতেন তখন তাকবীর বলিতেন এবং তাহাঁর হাত ওঠাতেন, আর যখন রুকূ করিতেন এবং রুকূর পরেও। আর তিনি হাত ওঠাতেন না দুসিজদার মাঝে।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৪৫.পরিচ্ছেদঃ দুসিজদার মধ্যে দোয়া

১১৪৫. হুযায়ফা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট গিয়ে তাহাঁর পাশে দাঁড়ালেন। তিনি বলিলেন,

اللَّهُ أَكْبَرُ ذُو الْمَلَكُوتِ وَالْجَبَرُوتِ وَالْكِبْرِيَاءِ وَالْعَظَمَةِ

আল্ল-হু আকবার যুল মালাকূতি ওয়াল জাবারূতি ওয়াল কিবরিয়া-য়ি ওয়াল ‘আযামাহ

তারপর তিনি সূরা বাকারা পড়তে আরাম্ভ করিলেন, পরে তিনি রুকূ করিলেন। তাহাঁর রুকূ তাহাঁর কিয়ামের প্রায় বরাবর ছিল। তিনি রুকূতে বলিলেন- [আরবি] আর যখন তিনি মাথা উঠালেন, তখন বলিলেন,

سُبْحَانَ رَبِّيَ الْعَظِيمِ، سُبْحَانَ رَبِّيَ الْعَظِيمِ

সুবহা-না রব্বিয়াল ‘আযীম, সুবহা ব্বিয়াল আযীম

আর তিনি তাহাঁর সিজদায় বলিতেন

سُبْحَانَ رَبِّيَ الْأَعْلَى، سُبْحَانَ رَبِّيَ الْأَعْلَى

সুবহা-না রব্বিয়াল ‘আলা, সুবহা ব্বিয়াল আলা

আর তিনি তাহাঁর দুসিজদার মধ্যে বলিতেন

رَبِّ اغْفِرْ لِي، رَبِّ اغْفِرْ لِي

লিরব্বিয়াল হামদু লিরব্বিয়াল হামদু

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৪৬.পরিচ্ছেদঃ দুসিজদার মধ্যে চেহারা বরাবর হাত উঠানো

১১৪৬. নযর ইবনি কাসারী আবু সাহল আযদী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, আবদুল্লাহ ইবনি তাঊস [রহঃ] মিনার মসজিদে খায়ফে আমার পাশে নামাজ আদায় করিলেন। যখন তিনি প্রথম সিজদা করিতেন এবং সিজদা থেকে মাথা ওঠাতেন, তখন তিনি তাহাঁর চেহারা বরাবর তাহাঁর উভয় হাত ওঠাতেন। তা আমার না-পছন্দ হওয়ায় আমি উহায়ব ইবনি খালিদকে বললাম, এ ব্যক্তি এমন কিছূ করছে যা আমি কাউকে করিতে দেখিনি। উহায়ব তাঁকে বলিলেন, আপনি এমন কিছু করছেন যা আমরা কাউকে করিতে দেখিনি, তখন আবদুল্লাহ ইবনি তাঊস বলিলেন, আমি আমার পিতাকে তা করিতে দেখেছি। আর আমার পিতা বলেছেন, আমি আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাসকে এরুপ করিতে দেখেছি। আর আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস বলেছেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে এরুপ করিতে দেখেছি।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৪৭.পরিচ্ছেদঃ দুসিজদার মধ্যে কিভাবে বসবে?

১১৪৭. মায়মূনা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যখন সিজদা করিতেন তখন তাহাঁর হাত দুখানা এত দূরে রাখতেন যে, তাহাঁর পেছন দিক থেকে তাহাঁর বগলদ্বয়ের শুভ্রতা দেখা যেত। আর যখন তিনি বসতেন তখন তিনি তাহাঁর বাম উরুর উপর স্থির হয়ে বসতেন।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৪৮.পরিচ্ছেদঃ দুসিজদার মধ্যে বসার পরিমাণ

১১৪৮. বারা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নামাজে তাহাঁর রুকূ-সিজদা এবং রুকূ থেকে মাথা উত্তোলনের পর দাঁড়ানোর এবং দুসিজদার মধ্যবর্তী সময় প্রায় বরাবর হতো।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৪৯.পরিচ্ছেদঃ সিজদার জন্য তাকবীর

১১৪৯. আবদুল্লাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আবু বকর উমর ও উসমান [রাঃআঃ] [মাথা] উত্তোলনের সময়, সিজদার সময়, দাঁড়ানোর সময় এবং বসার সময় তাকবীর বলিতেন।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১১৫০. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যখন নামাজে দাঁড়াতেন তখন তাকবীর বলিতেন। তারপর যখন রুকূ করিতেন তখনও তাকবীর বলিতেন। যখন তিনি রুকূ থেকে স্বীয় পিঠ ওঠাতেন তখন বলিতেন

سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ

সামি’আল্ল-হু লিমান হামিদাহ

এরপর যখন তিনি সিজদার জন্য নীচু হইতেন, তখনও তাকবীর বলিতেন। তারপর যখন তিনি মাথা উত্তোলন করিতেন তখন তাকবীর বলিতেন। এরপর তিনি সম্পূর্ণ নামাজে এরুপ করিতেন এবং নামাজ সম্পন্ন করিতেন। আর তিনি দুরাকাআত এর পর বসা থেকে যখন দাঁড়াতেন তখন তাকবীর বলিতেন।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৫০.পরিচ্ছেদঃ দুসিজদার পর ওঠার সময় সোজা হয়ে বসা

১১৫১. আবু কিলাবা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, আবু সূলায়মান মালিক ইবনি হুয়াইরিছ [রাঃআঃ] আমাদের মসজিদে এসে বলিলেন, আমি তোমাদের দেখাতে ইচ্ছা করি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে আমি কিরুপে নামাজ আদায় করিতে দেখেছি। [এরপর তিনি নামাজ আদায় করেন] তিনি যখন প্রথম রাকাআতে শেষ সিজদা থেকে মাথা ওঠালেন তখন বসে পড়লেন।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১১৫২. মালিক ইবনি হুয়াইরিছ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে নামাজ আদায় করিতে দেখেছি। তিনি যখন তাহাঁর নামাজের বেজোড় রাকআত আদায় করিতেন তখন সোজা হয়ে বসে ওঠতেন না।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৫১.পরিচ্ছেদঃ ওঠার সময় মাটিতে ঠেক লাগানো

১১৫৩. আবু কিলাবা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, মালিক ইবনি হুয়াইরিছ [রাঃআঃ]আমাদের নিকট এসে বলিতেন, আমি কি তোমাদেরকে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নামাজ সম্বন্ধে বর্ণনা করব না? তারপর তিনি নামাজের সময় ছাড়াই [নফল] নামাজ আদায় করিতেন। যখন তিনি প্রথম রাকআতে দ্বিতীয় সিজদা থেকে মাথা ওঠাতেন, তখন সোজা হয়ে বসতেন। তারপর মাটিতে ঠেক দিয়ে দাঁড়াতেন।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৫২..পরিচ্ছেদঃ হাঁটুর পূর্বে হাত ওঠানো

১১৫৪. ওয়ায়িল ইবনি হুজর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]- কে দেখেছি, যখন তিনি সিজদা করিতেন তখন তাহাঁর হাঁটুদ্বয় হাতদ্বয়ের পূর্বে রাখতেন। আর যখন তিনি ওঠতেন তখন উভয় হাঁটু ওঠানোর পূর্বে উভয় হাত ওঠাতেন। আবু আবদুর রহমান বলেন, ইয়াযীদ ইবনি হারুন ছাড়া আর কেউ এ হাদিস শরীফ [জনৈক রাবী] থেকে বর্ণনা করেন নি। আল্লাহই সর্বজ্ঞ।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৫৩.পরিচ্ছেদঃ ওঠার জন্য তাকবীর বলা

১১৫৫. আবু সালমা [রহঃ] হইতে বর্ণীত

আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] তাহাদের [সাহাবীদের] নিয়ে নামাজ আদায় করিতেন। তিনি যখনই ওঠতেন বা নীচু হইতেন তখনই তাকবীর বলিতেন। নামাজ শেষ করে তিনি বলিতেন, আল্লাহর শপথ! তোমাদের মধ্যে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নামাজের সাথে আমার নামাজ অধিক সামঞ্জস্যশীল।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১১৫৬. আবু সালমা ইবনি আবদুর রহমান [রহঃ] হইতে বর্ণীত

তাঁরা উভয়েই আবু হুরাইরা [রা]-এর পেছনে নামাজ আদায় করেন। যখন তিনি রুকূ করিলেন তখন তাকবীর বলিতেন। যখন মাথা ওঠালেন তখন বলিলেন

سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ رَبَّنَا وَلَكَ الْحَمْدُ

সামি আল্ল-হু লিমান হামিদাহ, রব্বানা ওয়ালাকাল হামদ

তারপর সিজদা দিতে তাকবীর বলিলেন এবং যখন তাহাঁর মাথা ওঠালেন তখনও তাকবীর বলিলেন। এরপর এক রাকআতের পর যখন দাঁড়ালেন তখন তাকবীর বলিলেন। পরে বলিলেন, যাঁর হাতে আমার প্রাণ, তাহাঁর শপথ! আমি তোমাদের মধ্যে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সাথে অধিক সামঞ্জস্যশীল। পৃথিবী ত্যাগ করা পর্যন্ত তাহাঁর নামাজ এরুপই ছিল।

নামাজ শিক্ষা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস


Posted

in

by

Comments

Leave a Reply