নামাজের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস – ইমাম ও ইসলাম গ্রহণ

নামাজের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস – ইমাম ও ইসলাম গ্রহণ

নামাজের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস – ইমাম ও ইসলাম গ্রহণ >> সুনান তিরমিজি শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন

অধ্যায়ঃ ৪, অনুচ্ছেদঃ (৫৭-৮১)=২৫টি

৫৭. অনুচ্ছেদঃ ইমামের আগে রুকূ-সাজদাহ্ হইতে মাথা উত্তোলনকারীর প্রতি কঠোর হুশিয়ারী
৫৮. অনুচ্ছেদঃ ফরয নামাজ আদায় করার পর আবার লোকদের ঈমামতি করা
৫৯. অনুচ্ছেদঃ গরম অথবা ঠাণ্ডার কারণে কাপড়ের উপর সাজদাহ করার অনুমতি আছে
৬০. অনুচ্ছেদঃ ফজরের নামাজ আদায়ের পর সূর্য উঠা পর্যন্ত মসজিদে বসে থাকা মুস্তাহাব
৬১. অনুচ্ছেদঃ নামাযে এদিক-সেদিক তাকানো
৬২. অনুচ্ছেদঃ কোন ব্যক্তি ঈমামকে সাজদাহইতে পেলে সে তখন কি করিবে?
৬৩. অনুচ্ছেদঃ নামাজ শুরু হওয়ার সময় দাঁড়িয়ে ইমামের অপেক্ষা করা মাকরূহ
৬৪. অনুচ্ছেদঃ আর পূর্বে আল্লাহ তাআলার প্রশংসা ও রাসূলের প্রতি দরূদ ও সালাম পাঠ করিবে
৬৫. অনুচ্ছেদঃ মসজিদ সুগন্ধময় করে রাখা
৬৬. অনুচ্ছেদঃ দিন ও রাতের [নফল] নামাজ দুই দুই রাকআত করে
৬৭. অনুচ্ছেদঃ রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর দিনের নামাজ কিরূপ ছিল?
৬৮. অনুচ্ছেদঃ মহিলাদের দোপাট্টা, চাদর ইত্যাদিতে নামাজ আদায় করা মাকরূহ
৬৯. অনুচ্ছেদঃ নফল নামাজরত অবস্থায় হাঁটা এবং কোন কাজ করা
৭০. অনুচ্ছেদঃ এক রাকআতে দুটি সূরা পাঠ করা
৭১. অনুচ্ছেদঃ পায়ে হেঁটে মসজিদে যাওয়ার ফযিলত এবং প্রতিটি পদক্ষেপের পুরস্কার
৭২. অনুচ্ছেদঃ মাগরিবের [ফরয] নামাযের পর [নফল] নামাজ ঘরে আদায় করাই উত্তম
৭৩. অনুচ্ছেদঃ ইসলাম গ্রহণ করার সময় গোসল করা
৭৪. অনুচ্ছেদঃ পায়খানায় যাওয়ার সময় বিসমিল্লাহ্‌ বলা
৭৫. অনুচ্ছেদঃ কিয়ামাতের দিন এই উম্মাতের নিদর্শন হইবে সাজদাহ ও ওযূর চিহ্ন
৭৬. অনুচ্ছেদঃ পবিত্রতা অর্জনের জন্য ডানদিক হইতে শুরু করা মুস্তাহাব
৭৭. অনুচ্ছেদঃ ওযূর জন্য কতটুকু পানি যথেষ্ট
৭৮. অনুচ্ছেদঃ দুগ্ধপোষ্য শিশুর পেশাবে পানি ছিটিয়ে দেয়া
৭৯. অনুচ্ছেদঃ সূরা আল-মায়িদাহ অবতীর্ণ হওয়ার পর মুজার উপর মাসাহ করা প্রসঙ্গ
৮০. অনুচ্ছেদঃ নাপাক অবস্থায় ওযু করে পানাহার ও ঘুমানোর অনুমতি
৮১. অনুচ্ছেদঃ নামাযের ফযিলত

৫৭. অনুচ্ছেদঃ ইমামের আগে রুকূ-সাজদাহ্ হইতে মাথা উত্তোলনকারীর প্রতি কঠোর হুশিয়ারী

৫৮২. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, মুহাম্মাদ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ ইমামের আগে [রুকূ-সাজদাহ্ থেকে] মাথা উত্তোলনকারীর কি ভয় নেই যে, আল্লাহ্ তাআলা তার মাথাকে গাধার মাথায় রূপান্তরিত করে দিবেন?

-সহীহ। ইবনি মাজাহ- [৯৬১], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ। আবু হুরাইরা [রাদি.] আমা ইয়াখশা [সে কি ভয় করে না] শব্দ বলেছেন। আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহিহ। নামাজের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৫৮. অনুচ্ছেদঃ ফরয নামাজ আদায় করার পর আবার লোকদের ঈমামতি করা

৫৮৩. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

মুআয ইবনি জাবাল [রাদি.] রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সাথে মাগরিবের নামাজ আদায় করিতেন, তারপর নিজের গোত্রে গিয়ে তাহাদের ঈমামতি করিতেন।

-সহীহ। সহিহ আবু দাঊদ- [৭৫৬], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ আরো পূর্ণরূপে।আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহিহ। আমাদের সঙ্গী ঈমাম শাফি, আহমাদ ও ইসহাক এ হাদীস অনুযায়ী আমল করিয়াছেন। তাঁরা বলেছেন, কোন ব্যক্তি ফরয নামাজ আদায় করার পর আবার ঈমাম হয়ে সে যদি ঐ নামাজ আদায় করায় তবে তার পিছনে ইকতিদাকারীদের নামাজ আাদয় হয়ে যাবে। তাঁরা উপরের হাদীস নিজেদের দলীল হিসেবে গ্রহণ করিয়াছেন। এটা একটা সহীহ হাদীস। আর এটা বেশ কয়েকটি সূত্রে জাবির [রাদি.] -হইতে বর্ণিত হয়েছে। “আবু দারদা [রাদি.] -কে প্রশ্ন করা হলো, এক ব্যক্তি মসজিদে গেল, লোকেরা তখন আসরের নামাজ আদায় করছিল। সে ধারণা করলো তারা যুহরের নামাজ আাদায় করছে। সে জামাআতে অন্তর্ভুক্ত হয়ে নামাজ আদায় করলো [তার নামাযের হুকুম কি]। তিনি বলেন, তার নামাজ জায়িয হয়েছে।” কুফাবাসীদের একদল বলেছেন, একদল লোক ইমামের পিছনে এসে ইকতিদা করলো। সে তখন আসরের নামাজ আদায় করছিল। তারা মনে করলো, সে [ঈমাম] যুহরের নামাজ আাদায় করছে। সে তাহাদের নামাজ আদায় করালো এবং তারাও তার পিছনে ইকতিদা করলো। এ অবস্থায় তাহাদের নামাজ ফাসিদ [নষ্ট] হয়ে যাবে। কেননা ঈমাম ও মুক্তাদীদের নিয়্যাতের মধ্যে প্রভেদ সৃষ্টি হয়ে গেছে। নামাজের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৫৯. অনুচ্ছেদঃ গরম অথবা ঠাণ্ডার কারণে কাপড়ের উপর সাজদাহ করার অনুমতি আছে

৫৮৪. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেনঃ আমরা গরমের দিনে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পিছনে নামাজ আদায়কালে গরম থেকে বাঁচার জন্য কাপড়ের উপর সাজদাহ করতাম।

-সহীহ। ইবনি মাজাহ– [১০৩৩], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ। আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহীহ। এ অনুচ্ছেদে জাবির ইবনি আবদুল্লাহ ও ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। উল্লেখিত হাদীসটি ওয়াকী [রঃ] খালিদ ইবনি আবদুর রহমানের সূত্রে বর্ণনা করিয়াছেন। নামাজের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৬০. অনুচ্ছেদঃ ফজরের নামাজ আদায়ের পর সূর্য উঠা পর্যন্ত মসজিদে বসে থাকা মুস্তাহাব

৫৮৫. জাবির ইবনি সামুরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফজরের নামাজ আদায়ের পর সূর্য উঠা পর্যন্ত নিজের নামাযের জায়গায় বসে থাকতেন।

-সহীহ। সহীহ আবু দাঊদ- [১১৭১], মুসলিম। আবু ঈসা বলেনঃ হাদীসটি হাসান সহীহ। নামাজের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৫৮৬. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেনঃ রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি ফজরের নামাজ জামাআতে আদায় করে, তারপর সূর্য উঠা পর্যন্ত বসে বসে আল্লাহ তাআলার যিকর করে, তারপর দুই রাকআত নামাজ আদায় করে- তার জন্য একটি হাজ্জ ও একটি উমরার সাওয়াব রহিয়াছে। আনাস [রাদি.] বলেন, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ পূর্ণ, পূর্ণ, পূর্ণ [হাজ্জ ও উমরার সাওয়াব]।

-হাসান। তালীকুর রাগীব- [১/১৬৪, ১৬৫], মিশকাত- [৯৭১] আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান গারীব। তিনি আরো বলেন, আমি মুহাম্মাদ ইবনি ইসমাঈলকে আবু যিলাল সম্পর্কে প্রশ্ন করায় তিনি বলিলেন, তিনি হাদীস বর্ণনার উপযুক্ত। তার নাম হিলাল। এই হাদীসটির তাহকিকঃ হাসান হাদীস

৬১. অনুচ্ছেদঃ নামাযে এদিক-সেদিক তাকানো

৫৮৭. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] নামাজরত অবস্থায় ডানে-বাঁয়ে তাকাতেন কিন্তু পিছনের দিকে ঘাড় ফেরাতেন না।

-সহিহ। মিশকাত- [৯৯৮]। আবু ঈসা বলেনঃ হাদীসটি গারীব, ওয়াকী [রঃ] তাহাঁর বর্ণনায় আল-ফাযল ইবনি মূসার বর্ণনার সাথে মতপার্থক্য করিয়াছেন। নামাজের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৫৮৮. ইকরামার কিছু সঙ্গী হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ] নামাযে এদিক-সেদিক চোখ ঘুরাতেন উপরের হাদীসের মতো।

-সহিহ। দেখুন পূর্বোক্ত হাদীস। এ অনুচ্ছেদে আনাস ও আয়েশা [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। নামাজের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৫৮৯. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেনঃ রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাকে বললেনঃ হে প্রিয় বৎস সাবধান! নামাযের মধ্যে কখনো এদিক-সেদিক দেখবে না। কেননা নামাজরত অবস্থায় এদিক-সেদিক তাকানো সর্বনাশ ডেকে আনে। যদি তাকানোর খুবই দরকার হয় তবে নফল নামাযে তাকাও, ফরয নামাযে নয়।

যঈফ, তালিকাতুল জিয়াদ, তালিকুর রাগীব- [১৯৯১], মিশকাত- [৯৯৭] , আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান গারীব। এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস

৫৯০. আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেনঃ আমি রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]কে নামাজরত অবস্থায় এদিক-সেদিক তাকানো প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলাম। তিনি বললেনঃ এটা শাইতানের ছোঁ মারা, শাইতান সুযোগ বুঝে ছোঁ মেরে কোন ব্যক্তির নামাজ থেকে কিছু অংশ নিয়ে যায়।

-সহিহ। ইরওয়া- [৩৭০], বুখারী। আবু ঈসা বলেনঃ হাদীসটি হাসান গারীব। নামাজের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৬২. অনুচ্ছেদঃ কোন ব্যক্তি ঈমামকে সাজদাহইতে পেলে সে তখন কি করিবে?

৫৯১. মুআয ইবনি জাবাল [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেনঃ নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমাদের কেউ নামাজ আদায় করিতে এসে ঈমামকে কোন এক অবস্থায় পেল। ঈমাম যেরূপ করে সেও যেন অনুরূপ করে [তাকে যে অবস্থায় পাবে সেই অবস্থায় তার সাথে নামাযে শারীক হয়ে যাবে]।

-সহিহ। সহিহ আবু দাঊদ- [৫২২], আস-সাহীহাহ্- [১১৮৮] আবু ঈসা বলেনঃ এটি গারীব হাদীস। উল্লেখিত সূত্রটি ছাড়া আর কোন সূত্রে এ হাদীসটি কেউ বর্ণনা করিয়াছেন বলে আমাদের জানা নেই। বিদ্বানগণ এ হাদীস অনুসারে আমল করিয়াছেন। কোন ব্যক্তি মসজিদে এসে ঈমামকে সাজদাহরত অবস্থায় পেলে সেও তার সাথে সাজদাহ্য় শারীক হইবে। যদি ঈমামকে রুকূতে না পায় তবে সেই রাকআত পেল না। আবদুল্লাহ ইবনিল মুবারাক ইমামের সাথে সাজদাহ্য় শারীক হওয়া পছন্দ করিয়াছেন। কোন কোন বিদ্বান প্রসঙ্গে বর্ণিত আছে, তাঁরা বলেছেন, আশা করা যায় এ সাজদাহ্ হইতে মাথা তোলার আগেই তাকে মাফ করা হইবে। নামাজের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৬৩. অনুচ্ছেদঃ নামাজ শুরু হওয়ার সময় দাঁড়িয়ে ইমামের অপেক্ষা করা মাকরূহ

৫৯২. আব্দুল্লাহ ইবনি কাতাদা [রাদি.] হইতে তার পিতা হইতে বর্ণীতঃ

তিনি [আবু কাতাদা] বলেনঃ রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ নামাযের জন্য ইক্বামাত দেয়া হলে আমাকে [কামরা হইতে] বের হইতে না দেখা পর্যন্ত তোমরা দাঁড়াবে না।

¬

-সহিহ। সহিহ আবু দাঊদ- [৫৫০], আর রাউজুন নাযীর- [১৮৩], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ। আবু ঈসা বলেনঃ আবু কাতাদার হাদীসটি হাসান সহিহ। এ অনুচ্ছেদে আনাস [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। কিন্তু তাহাঁর হাদীসটি সুরক্ষিত নয়। নাবী [সাঃআঃ] একদল সাহাবা ও অন্যরা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ইমামের জন্য বিলম্ব করা মাকরূহ বলেছেন। অপর দল বলেছেন, ঈমাম মসজিদে হাযির থাকলে এবং নামাযের ইক্বামাতও দেয়া হলে মুয়াজ্জিন “কাদ কামাতিস নামাজ কাদ কামাসিত নামাজ” বললে উঠে দাঁড়াবে। ইবনিল মুবারাক একথা বলেছেন। নামাজের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৬৪. অনুচ্ছেদঃ আর পূর্বে আল্লাহ তাআলার প্রশংসা ও রাসূলের প্রতি দরূদ ও সালাম পাঠ করিবে

৫৯৩. আবদুল্লাহ ইবনি মাসউদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি নামাজ আদায় করছিলাম এবং নাবী [সাঃআঃ]-এর সাথে আবু বকর এবং উমার [রাদি.] -ও উপস্থিত ছিলেন। আমি [শেষ বৈঠকে] বসলাম, প্রথমে আল্লাহ তাআলার প্রশংসা করলাম, তারপর নাবী [সাঃআঃ]-এর প্রতি সালাম নিবেদন করলাম, তারপর নিজের জন্য দুআ করলাম। নাবী [সাঃআঃ] বললেনঃ তুমি প্রার্থনা করিতে থাক তোমাকে দেয়া হইবে, তুমি প্রার্থনা করিতে থাক তোমাকে দেয়া হইবে।

-হাসান সহিহ। সিফাতুস নামাজ, তাখরীজুল মুখতারাহ- [২৫৫], মিশকাত- [৯৩১]। এ অনুচ্ছেদে ফাযালা ইবনি উবাইদ [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেনঃ আব্দুল্লাহ ইবনি মাসঊদের হাদীসটি হাসান সহিহ। আহমাদ ইবনি হাম্বাল হাদীসটি ইয়াহ্ইয়া ইবনি আদমের সূত্রে সংক্ষিপ্ত আকারে বর্ণনা করিয়াছেন। এই হাদীসটির তাহকিকঃ হাসান সহীহ

৬৫. অনুচ্ছেদঃ মসজিদ সুগন্ধময় করে রাখা

৫৯৪. আইশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেনঃ রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] পাড়ায় পাড়ায় মসজিদ নির্মাণ করিতে, তা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে এবং সুবাসিত করিতে হুকুম দিয়েছেন।

-সহিহ। ইবনি মাজাহ- [৭৫৯] নামাজের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৫৯৫. হিশাম ইবনি উরাওয়া [রঃ] হইতে তাহাঁর পিতার সূত্রে হইতে বর্ণীতঃ

হিশাম ইবনি উরাওয়া [রঃ] হইতে তাহাঁর পিতার সূত্রে বর্ণিত। রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] নির্দেশ দিয়েছেন…… উপরের হাদীসের মতোই।

আবু ঈসা বলেনঃ এই বর্ণনা সূত্র পূর্ববর্তী সূত্রের চেয়ে বেশি সহিহ।

৫৯৬. হিশাম ইবনি উরাওয়া [রঃ] হইতে তাহাঁর পিতার সূত্র হইতে বর্ণীতঃ

হিশাম ইবনি উরাওয়া [রঃ] হইতে তাহাঁর পিতার সূত্রে বর্ণিত। রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] নির্দেশ দিয়েছেন…… উপরের হাদীসের মতোই।

সুফিয়ান সাওরী বলেছেন, পাড়ায় পাড়ায় মসজিদ নির্মাণের অর্থ প্রতি বংশ ও লোকালয়ে মসজিদ তৈরী করা। এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

৬৬. অনুচ্ছেদঃ দিন ও রাতের [নফল] নামাজ দুই দুই রাকআত করে

৫৯৭. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ রাত ও দিনের [নফল] নামাজ দুই রাকআত দুই রাকআত।

-সহিহ। ইবনি মাজাহ- [১৩২২]। আবু ঈসা বলেনঃ শুবার সঙ্গীরা ইবনি উমার [রাদি.] -এর হাদীসটি বর্ণনায় মত পার্থক্য করিয়াছেন। তাহাদের কয়েকজন এটাকে মারফূ হিসেবে বর্ণনা করিয়াছেন, আবার কয়েকজন মাওকূফ হিসেবে। নাফি [রঃ] ইবনি উমারের সূত্রে একই রকম হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। সহিহ বর্ণনা হলো, ইবনি উমার [রাদি.] নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট হইতে বর্ণনা করিয়াছেন, “রাতের নামাজ দুই দুই রাকআত”। নির্ভরযোগ্য [সিকাহ] রাবীগণ ইবনি উমারের সূত্রে, তিনি নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট হইতে যে বর্ণনা করিয়াছেন তাতে দিনের নামাযের উল্লেখ করেননি। ইবনি উমার [রাদি.] প্রসঙ্গে বর্ণিত আছে যে, তিনি রাতের নামাজ দুই রাকআত করে এবং দিনের নামাজ চার রাকআত করে আদায় করিতেন। এ প্রসঙ্গে বিদ্বানদের মধ্যে মতের অমিল রয়েছে। ঈমাম শাফি ও আহমাদ রাত ও দিনের [ফরয ছাড়া অন্যান্য] নামাজ এক সালামে দুই দুই রাকআত [করে আদায় করিতে হইবে] বলে মত দিয়েছেন। অপর একদল বলেছেন, রাতের নামাজ দুই দুই রাকআত। তাহাদের মতে দিনের নফল ও অন্যান্য নামাজ চার রাকআত করে, যেমন যুহরের পূর্বে চার রাকআত আদায় করা হয়। সুফিয়ান সাওরী, ইবনিল মুবারাক ও ইসহাক এ মতেই মত দিয়েছেন। নামাজের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৬৭. অনুচ্ছেদঃ রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর দিনের নামাজ কিরূপ ছিল?

৫৯৮. আসিম ইবনি যামরা [রঃ] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেনঃ আমরা আলী [রাদি.] -কে রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর দিনের বেলার নামাজ প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলাম। তিনি বলিলেন, তোমরা সে রকম নামাজ আদায় করিতে সক্ষম হইবে না। আমরা বললাম, আমাদের মধ্যে কে সে রকম আদায় করিতে সক্ষম হইবে? তিনি বলিলেন, যখন সূর্য এদিকে [পূর্বাকাশে] এরূপ হতো যেমন আসরের সময় হয়ে থাকে, তখন রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] দুই রাকআত [সালাতুল ইশরাক] নামাজ আদায় করিতেন। আবার যখন সূর্য এদিকে [পূর্বাকাশে] এরূপ হতো, যেমন যুহরের ওয়াক্তের সময় [পশ্চিমাকাশে] হয় তখন তিনি চার রাকআত [সালাতুদ যুহা] নামাজ আদায় করিতেন।

তিনি যুহরের পূর্বে চার রাকআত এবং পরে দুই রাকআত এবং আসরের পূর্বে চার রাকআত নামাজ আদায় করিতেন। তিনি নৈকট্য লাভকারী ফেরেশতা, নাবী-রাসূল এবং তাঁদের অনুসারী মুমিন মুসলমানদের প্রতি সালাম পাঠানোর মাধ্যমে প্রতি দুই রাকআতের মাঝখানে অন্তরাল সৃষ্টি করিতেন। [অর্থাৎ দুই দুই রাকআত করে আদায় করিতেন]। -হাসান। ইবনি মাজাহ- [১১৬১]।এই হাদীসটির তাহকিকঃ হাসান হাদীস

৫৯৯. আসিম [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

অপর একটি সূত্রেও আসিম [রাদি.] হইতে এ হাদীসটি বর্ণিত হয়েছে।

এটি হাসান হাদীস। ইসহাক ইবনি ইবরাহীম বলেন, নাবী [সাঃআঃ]-এর দিনের বেলার নফল নামাজ সম্পর্কে এ হাদীসটি সর্বাধিক সহিহ। ইবনিল মুবারাক এ হাদীসটিকে যঈফ বলিতেন। আমার মতে তাহাঁর এ হাদীসটিকে যঈফ বলার কারণ এই যে, আল্লাহ তাআলাই বেশি ভাল জানেন, কেবল উল্লেখিত সূত্রেই হাদীসটি বর্ণিত হয়েছে। কিন্তু হাদীস বিশারদদের মতে আসিম ইবনি যামরা নির্ভরযোগ্য রাবী। সুফিয়ান সাওরী বলেন, আমাদের কাছে হারিসের হাদীসের তুলনায় আসিমের হাদীস বেশি উত্তম। এই হাদীসটির তাহকিকঃ হাসান হাদীস

৬৮. অনুচ্ছেদঃ মহিলাদের দোপাট্টা, চাদর ইত্যাদিতে নামাজ আদায় করা মাকরূহ

৬০০. আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেনঃ রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর বিবিদের ওড়না, চাদর ইত্যাদিতে নামাজ আদায় করিতেন না।

-সহিহ। আবু দাঊদ- [৩৯১]।আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহিহ। এ ব্যাপারে নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট হইতে সম্মতির কথাও উল্লেখ আছে। নামাজের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৬৯. অনুচ্ছেদঃ নফল নামাজরত অবস্থায় হাঁটা এবং কোন কাজ করা

৬০১. আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি [যখন] আসলাম রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] [তখন] নামাজ আদায় করছিলেন। এ সময় ভিতর হইতে ঘরের দরজা আটকানো ছিল। তিনি [নামাজরত অবস্থায়] হেঁটে এসে আমার জন্য দরজা খুলে দিলেন। তারপর তিনি নিজের জায়গায় ফিরে আসলেন। দরজাটি কিবলার দিকে ছিল।

-হাসান। সহিহ আবু দাঊদ- [৮৫৫], মিশকাত- [১০০৫], আল-ইরওয়া- [৩৮৬]।আবু ঈসা বলেনঃ হাদীসটি হাসান গারীব।এই হাদীসটির তাহকিকঃ হাসান হাদীস

৭০. অনুচ্ছেদঃ এক রাকআতে দুটি সূরা পাঠ করা

৬০২. আমাশ [রঃ] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি আবু ওয়ায়িলকে বলিতে শুনিয়াছি, এক ব্যক্তি আবদুল্লাহ ইবনি মাসউদ [রাদি.] -কে [সূরা মুহাম্মাদের] একটি শব্দ প্রসঙ্গে প্রশ্ন করিল, এটা কি গাইর আসিনিন হইবে না গাইরু ইয়াসিনিন হইবে? তিনি বলিলেন, এটা ছাড়া তুমি কি সমগ্র কুরআন পাঠ করে নিয়েছ? সে বলিলঃ হ্যাঁ। তিনি বলিলেন, একদল লোক কুরআন পাঠ করে এবং তারা এটাকে ঝাড়ে নিম্নমানের খেজুর ঝাড়ার মত। তাহাদের [কুরআন] পাঠ তাহাদের কণ্ঠনালীর উপরে উঠে না। আমি দুই দুইটি সাদৃশ্যপূর্ণ সূরা সম্পর্কে জানি যেগুলো রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] একত্রে মিলিয়ে পাঠ করিতেন। রাবী বলেন, আমরা আলকামা [রঃ] -কে প্রশ্ন করিতে বললে তিনি আবদুল্লাহ ইবনি মাসউদ [রাদি.] -কে প্রশ্ন করিলেন। তিনি বলিলেন, মুফাসসাল সূরাগুলোর মধ্যে এমন বিশটি সূরা রয়েছে, নাবী [সাঃআঃ] যেগুলোর দুই দুইটিকে পরস্পরের সাথে মিলিয়ে প্রতি রাকআতে পাঠ করিতেন [অর্থাৎ এক এক রাকআতে দুটি করে সূরা পাঠ করিতেন]।

-সহিহ। সহিহ আবু দাঊদ- [১২৬২], সিফাতুস নামাজ, বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ। আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহিহ। নামাজের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৭১. অনুচ্ছেদঃ পায়ে হেঁটে মসজিদে যাওয়ার ফযিলত এবং প্রতিটি পদক্ষেপের পুরস্কার

৬০৩. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ কোন ব্যক্তি সুন্দরভাবে ওযূ করিল তারপর নামাযের উদ্দেশ্যে রাওয়ানা হল। একমাত্র নামাজই তাকে [ঘর হইতে] বের করিল অথবা নামাজই তাকে উঠিয়েছে, এ অবস্থায় তার প্রতিটি কদমের বিনিময়ে আল্লাহ তাআলা তার একগুণ মর্যাদা বৃদ্ধি করে দিবেন অথবা একটি করে গুনাহ মাফ করে দিবেন।

-সহিহ। ইবনি মাজাহ- [৭৭৪], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ। আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহিহ। নামাজের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৭২. অনুচ্ছেদঃ মাগরিবের [ফরয] নামাযের পর [নফল] নামাজ ঘরে আদায় করাই উত্তম

৬০৪. সাদ ইবনি ইসহাক ইবনি কাব ইবনি উজরা [রাদি.] হইতে পর্যায়ক্রমে তাহাঁর পিতা এবং দাদা হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] আবদুল আশহাল গোত্রের মসজিদে মাগরিবের নামাজ আদায় করিলেন। লোকেরা নফল নামাজ আদায় করিতে দাঁড়াল। নাবী [সাঃআঃ] বলিলেন, এ নামাজ অবশ্যই তোমাদের ঘরে আদায় করা উচিৎ।

-হাসান। ইবনি মাজাহ- [১১৬৫]। আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি গারীব। কেননা এটা আমরা শুধুমাত্র উল্লেখিত সূত্রেই জেনেছি। ইবনি উমারের সূত্রে বর্ণিত হাদীসটি সহিহ। তাতে আছে, “নাবী [সাঃআঃ] মাগরিবের পরের দুই রাকআত নিজের ঘরেই আদায় করিতেন।” হুযাইফা [রাদি.] হইতে বর্ণিত আছে, “নাবী [সাঃআঃ] মাগরিবের নামাজ আদায় করিলেন, তিনি বরাবর মসজিদে নামাজ আদায় করিতে থাকলেন। এমনকি ইশার ওয়াক্ত উপস্থিত হলো। তিনি ইশার নামাজ আদায় করিলেন।” নাবী [সাঃআঃ] মাগরিবের পর দুই রাকআত [সুন্নাত] নামাজ মসজিদেও আদায় করিয়াছেন, এ হাদীস হইতে তার প্রমাণ পাওয়া যায়। নামাজের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৭৩. অনুচ্ছেদঃ ইসলাম গ্রহণ করার সময় গোসল করা

৬০৫. ক্বাইস ইবনি আসিম [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি ইসলাম ক্ববূল করিলেন। নাবী [সাঃআঃ] তাঁকে কূলের পাতা মেশানো পানি দিয়ে গোসল করার হুকুম দিলেন।

-সহিহ। তাখরীজুল মিশকাত- [৫৪৩], সহিহ আবু দাঊদ- [৩৮১]। আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান। উপরোক্ত সনদসূত্রেই আমরা হাদীসটি অবগত হয়েছি। এ অনুচ্ছেদে আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসের পরিপ্রেক্ষিতে আলিমগণ বলেছেন, মুসলমান হওয়ার সময় গোসল করা ও পরনের পোশাক ধোয়া মুস্তাহাব। নামাজের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৭৪. অনুচ্ছেদঃ পায়খানায় যাওয়ার সময় বিসমিল্লাহ্‌ বলা

৬০৬. আলী ইবনি আবু তালিব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ জ্বিনের দৃষ্টি ও আদম সন্তানের লজ্জাস্থানের মাঝখানে পর্দা হলো, যখন তাহাদের কেউ পায়খানায় প্রবেশ করে সে যেন

بِسْمِ اللَّهِ

বিসমিল্লাহ বলে।

-সহিহ। ইবনি মাজাহ- [২৯৭]। আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি গারীব। শুধুমাত্র উপরোক্ত সূত্রেই আমরা হাদীসটি জেনেছি। এর সনদ খুব একটা নির্ভরযোগ্য নয়। এ প্রসঙ্গে আনাস [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। নামাজের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৭৫. অনুচ্ছেদঃ কিয়ামাতের দিন এই উম্মাতের নিদর্শন হইবে সাজদাহ ও ওযূর চিহ্ন

৬০৭. আবদুল্লাহ ইবনি বুসর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ ক্বিয়ামাতের দিন আমার উম্মাতের মুখ-মণ্ডল সাজদাহর কল্যাণে আলোক উদ্ভাসিত হইবে এবং ওযূর কল্যাণে হাত-মুখ চমকপ্রদ [আলোকিত] হইবে।

-সহীহ। আস-সহীহাহ- [২৮৩৬]।আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি উপরোক্ত সূত্রে হাসান, সহীহ গারীব।নামাজের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৭৬. অনুচ্ছেদঃ পবিত্রতা অর্জনের জন্য ডানদিক হইতে শুরু করা মুস্তাহাব

৬০৮. আয়িশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] পবিত্রতা অর্জন, মাথা আচড়ানো এবং জুতা পরার সময় এ কাজগুলো ডান দিক থেকে শুরু করাই পছন্দ করিতেন।

-সহীহ। ইবনি মাজাহ- [৪০১]। বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেন। আবু ঈসা বলেনঃ হাদীসটি হাসান সহীহ। নামাজের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৭৭. অনুচ্ছেদঃ ওযূর জন্য কতটুকু পানি যথেষ্ট

৬০৯. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ দুই রিতল পানিই ওযূর জন্য যথেষ্ট।

-সহীহ। ইবনি মজাহ- [২৭০]। আবু ঈসা বলেনঃ হাদীসটি গারীব। আমরা শুধুমাত্র উপরোক্ত সূত্রেই শব্দে হাদীসটি জেনেছি। আনাস [রাদি.] হইতে অপর এক বর্ণনায় আছে- “রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসল্লাম এক মাকূক পানি দিয়ে ওযূ এবং পাঁচ মাকূক পানি দিয়ে গোসল করিতেন।” অপর বর্ণনায় আছে, আনাস [রাদি.] বলেনঃ রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] এক মুদ্দ পানি দিয়ে ওযূ এবং এক সা পানি দিয়ে গোসল করিয়াছেন। এই হাদীসটি শারীকের হাদীস হইতে অধিক সহীহ। নামাজের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৭৮. অনুচ্ছেদঃ দুগ্ধপোষ্য শিশুর পেশাবে পানি ছিটিয়ে দেয়া

৬১০. আলী ইবনি আবু তালিব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] দুগ্ধপোষ্য শিশুর পেশাব প্রসঙ্গে বলেনঃ পুরুষ শিশুর পেশাবে পানি ছিটিয়ে দিতে হইবে এবং কন্যা শিশুর পেশাব ধুয়ে ফেলতে হইবে। ক্বাতাদা [রঃ] বলেনঃ শিশুরা যতক্ষণ শক্ত খাবার না ধরবে ততক্ষণ এই নির্দেশ বহাল থাকিবে। শক্ত খাবার খাওয়া শুরু করলে উভয়ের পেশাবই ধুয়ে ফেলতে হইবে।

-সহীহ। ইবনি মাজাহ- [৫২৫]। আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহীহ। হিশাম আদ-দাসতাওয়াঈ এটি মারফূ হিসেবে এবং ক্বাতাদা মাওকূফ হিসেবে বর্ণনা করিয়াছেন। নামাজের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৭৯. অনুচ্ছেদঃ সূরা আল-মায়িদাহ অবতীর্ণ হওয়ার পর মুজার উপর মাসাহ করা প্রসঙ্গ

৬১১. শাহর ইবনি হাওশাব হইতে বর্ণীতঃ

শাহর ইবনি হাওশাব হইতে বর্ণিত; তিনি বলেনঃ আমি জারীর ইবনি আব্দুল্লাহ [রাদি.] –কে ওযূ করিতে ও মুজার উপর মাসাহ করিতে দেখলাম। ও তাকে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বলেনঃ আমি রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]কে ওযূ করিতে ও মুজার উপর মাসাহ করিতে দেখেছি। আমি তাকে বললাম, এটা কি সূরা আল-মায়িদাহ অবতীর্ণ হওয়ার পূর্বে না পরে? তিনি বললেনঃ আমি তো মায়িদাহ অবতীর্ণ হওয়ার পরেই মুসলমান হয়েছি।

-সহীহ। ইরওয়া- [১/১৩৭]।নামাজের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৬১২. খালিদ ইবনি যিয়াদ হইতে বর্ণীতঃ

খালিদ ইবনি যিয়াদ থেকে অন্য সূত্রেও হাদীসটি অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে।

আবু ঈসা বলেনঃ এই হাদীসটি গারীব। শাহর ইবনি হাওশাব থেকে মুকাতিল ইবনি হাইয়ান ছাড়া অন্য কোন সূত্রে হাদীসটি জানতে পারিনি। এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

৮০. অনুচ্ছেদঃ নাপাক অবস্থায় ওযু করে পানাহার ও ঘুমানোর অনুমতি

৬১৩. আম্মার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] অপবিত্র ব্যক্তিকে নামাযের ওয়ূর মতো ওযু করে খাওয়া-দাওয়া ও ঘুমানোর সম্মতি দিয়েছেন।

যঈফ, যঈফ আবু দাউদ [২৮]। আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহীহ। এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস ৮১. অনুচ্ছেদঃ নামাযের ফযিলত

৬১৪. কাব ইবনি উজারা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেনঃ রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাকে বললেনঃ হে কাব ইবনি উজরা! আমার পরে যেসব নেতার উদয় হইবে আমি তাহাদের [খারাবী] থেকে তোমার জন্য আল্লাহ তাআলার সহায়তা প্রার্থনা করি। যে ব্যক্তি তাহাদের দ্বারস্থ হলো [সান্নিধ্য লাভ করলো], তাহাদের মিথ্যাকে সত্য বললো এবং তাহাদের স্বৈরাচার ও যুলুম-নির্যাতনে সহায়তা করলো, আমার সাথে ঐ ব্যক্তির কোন সম্পর্ক নেই এবং এ ব্যক্তির সাথে আমারো কোন সংস্রব নেই। ঐ ব্যক্তি কাওসার নামক হাউজের ধারে আমার নিকট আসতে পারবে না। অপরদিকে যে ব্যক্তি তাহাদের দ্বারস্থ হলো [তাহাদের কোন পদ গ্রহণ করলো] কিন্তু তাহাদের মিথ্যাকে সত্য বলে মানল না এবং তাহাদের স্বৈরাচার ও যুলুম-নির্যাতনে সহায়তা করলো না, আমার সাথে এ ব্যক্তির সম্পর্ক রয়েছে এবং এ ব্যক্তির সাথে আমারও সম্পর্ক রয়েছে। শীঘ্রই সে কাওসার নামক হাউজের কাছে আমার সাথে দেখা করিবে। হে কাব ইবনি উজরা! নামাজ হল [মুক্তির] সনদ, রোজা হল মজবুত ঢাল [জাহান্নামের বিরুদ্ধে প্রতিবন্ধক] এবং সাদাকা [যাকাত বা দান-খায়রাত] গুনাহসমূহ মিটিয়ে দেয়, যেভাবে পানি আগুনকে নিভিয়ে দেয়। হে কাব ইবনি উজরা! হারাম [পন্থায় উপার্জিত সম্পদ] দ্বারা সৃষ্ট ও পরিপুষ্ট গোশত [দেহ] -এর জন্য [জাহান্নামের] আগুনই উপযুক্ত।

-সহীহ। তালীকুর রাগীব- [৩/১৫, ১৫০] আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান গারীব। আমরা শুধুমাত্র উল্লেখিত সূত্রেই হাদীসটি জেনেছি। আমি মুহাম্মাদকে [বুখারীকে] এ হাদীস প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলাম। তিনিও শুধুমাত্র উবাইদুল্লাহ ইবনি মূসার সূত্রেই হাদীসটি বর্ণনা করিয়াছেন এবং এটাকে খুবই গারীব বলেছেন।নামাজের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৬১৫. ঈমাম মুহাম্মাদ হইতে বর্ণীতঃ

ঈমাম মুহাম্মাদ বলেনঃ ইবনি নুমাইর উবাইদুল্লাহ ইবনি মূসার সূত্রে গালিব হইতে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন।

এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

৬১৬. আবু উমামা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

আমি রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]কে বিদায় হাজ্জের ভাষণে বলিতে শুনিয়াছি, তিনি বলেছেনঃ তোমাদের প্রতিপালক আল্লাহ তাআলাকে ভয় কর, তোমাদের পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় কর। তোমাদের রামাযান মাসের রোজা রাখ, তোমাদের ধন-দৌলতের যাকাত আদায় কর এবং তোমাদের আমীরের অনুসরণ কর, তবেই তোমাদের রবের জান্নাতে প্রবেশ করিতে পারবে। আমি [সুলাইম] আবু উমামা [রাদি.] -কে প্রশ্ন করলাম, আপনি কতদিন পূর্বে রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট এ হাদীস শুনেছেন? তিনি বলেনঃ আমি তিরিশ বছর বয়সে তাহাঁর নিকট এ হাদীস শুনিয়াছি।

-সহীহ। আস-সহীহাহ- [৮৬৭]। আবু ঈসা বলেনঃ হাদীসটি হাসান সহীহ। নামাজের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস


by

Comments

Leave a Reply