নামাজের দিক নির্ণয়
>> সুনান তিরমিজি শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন
অধ্যায়ঃ ২, অনুচ্ছেদঃ (১৪৩-১৫০)=৮টি
১৪৩. অনুচ্ছেদঃ কিবলা শুরু হওয়ার বর্ণনা
১৪৪. অনুচ্ছেদঃ পূর্ব ও পশ্চিমের মাঝখানে কিবলা
১৪৫. অনুচ্ছেদঃ যে ব্যক্তি বৃষ্টি–বাদলের কারণে কিবলা ব্যতীত অন্যদিকে ফিরে নামাজ আদায় করে
১৪৬. অনুচ্ছেদঃ কোথায় এবং কিসের দিকে ফিরে নামাজ আদায় করা মাকরুহ
১৪৭. অনুচ্ছেদঃ ছাগলের ঘরে ও উটশালায় নামাজ আদায় করা
১৪৮. অনুচ্ছেদঃ চতুস্পদ জন্তুর পিঠে থাকা কালে জন্তুটি যেদিকে মুখ করে আছে সেদিকে ফিরে নামাজ আদায় করা
১৪৯. অনুচ্ছেদঃ জন্তুযানের দিকে ফিরে নামাজ আদায় করা
১৫০. অনুচ্ছেদঃ রাতের খাবার উপস্থিত হওয়ার পর নামাজ শুরু হলে প্রথমে খাবার খেয়ে নাও
১৪৩. অনুচ্ছেদঃ কিবলা শুরু হওয়ার বর্ণনা
৩৪০. বারআ ইবনি আযিব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] মাদীনায় আসার পর হইতে ষোল অথবা সতের মাস বাইতুল মুকাদ্দাসকে কিবলা করে নামাজ আদায় করিলেন। রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর আন্তরিক বাসনা ছিল কাবার দিকে ফিরে নামাজ আদায় করা। তারপর মহান আল্লাহ তাআলা এ আয়াত অবতীর্ণ করলেনঃ
قَدْ نَرَى تَقَلُّبَ وَجْهِكَ فِي السَّمَاءِ فَلَنُوَلِّيَنَّكَ قِبْلَةً تَرْضَاهَا فَوَلِّ وَجْهَكَ شَطْرَ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ
“তোমরা বারবার আকাশের দিকে মুখ করে তাকানোকে আমরা দেখিতে পাচ্ছি। তোমার আকাংখিত কিবলার দিকে আমরা তোমার মুখ ফিরিয়ে দিচ্ছি। এখন হইতে মসজিদে হারামের দিকে তোমর মুখ ফিরাও” [সূরাদি. আল-বাকারা-১৪৪]। তিনি কাবার দিকে মুখ ফিরালেন, আর তিনি এটাই চাচ্ছিলেন। এক বাক্তি তাহাঁর সাথে আসরের নামাজ আদায়ের পর আনসার সম্প্রদায়ের একদল লোকের নিকট দিয়ে যাচ্ছিলেন। তারা তখন বাইতুল মুকাদ্দাসকে সামনে রেখে আসরের নামাযের রুকূর মধ্যে ছিলেন। লোকটি সাক্ষ্য দিয়ে বলিলেন যে, তিনি এই মাত্র রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সাথে কাবার দিকে মুখ করে নামাজ আদায় করে এসেছেন। রাবী বলেন, তারা রুকূর অবস্থাই ঘুরে গেলেন।
সহিহ। সিফাতুস নামাজ-[৫৬], ইরওয়া হাদীস নং-[২৯০], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ। এ অনুচ্ছেদে ইবনি উমার, ইবনি আব্বাস, উমারা ইবনি আওস, আমর ইবনি আওফ ও আনাস [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। নামাজের দিক নির্ণয় -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৪১. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, তারা তখন ফজরের নামাযের রুকূতে ছিলেন।
সহিহ। সিফাতুস নামাজ-[৫৭], ইরওয়া হাদীস নং-[২৯০], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ। আবু ঈসা বলেনঃ ইবনি উমারের এ হাদীসটি হাসান সহীহ। নামাজের দিক নির্ণয় -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৪৪. অনুচ্ছেদঃ পূর্ব ও পশ্চিমের মাঝখানে কিবলা
৩৪২. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ পূর্ব ও পশ্চিমের মধ্যবর্তী দিকে কিবলা অবস্থিত।
সহিহ। ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[১০১১]। নামাজের দিক নির্ণয় -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৪৩. ইয়াহহিয়া ইবনি মূসা হইতে বর্ণীতঃ
ইয়াহহিয়া ইবনি মূসা তিনি মুহাম্মাদ ইবনি আবী মাশার হইতে অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেন।
আবু ঈসা বলেনঃ আবু হুরাইরা হাদীসটি বিভিন্ন সুত্রে বর্ণিত হয়েছে। কোন কোন বিশেষজ্ঞ আবু মাশারের স্মরণশক্তি সম্পর্কে ওজর তুলেছেন। আবু মাশারের নাম নাজীহ। মুহাম্মাদ বলেন, আমি তার নিকট হইতে কিছু বর্ণনা করিনা, অন্য লোকেরা তার নিকট হইতে বর্ণনা করে থাকে। মুহাম্মাদ বলেন, আবু মাশারের বর্ণনার চেয়ে আবদুল্লাহ ইবনি জাফরের বর্ণনাটি বেশি শক্তিশালী এবং সহিহ। এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়
৩৪৪. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ পূর্ব ও পশ্চিমের মাঝে কিবলা অবস্থিত।
সহিহ। দেখুন পূর্বের হাদীস। আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহীহ। আব্দুল্লাহ ইবনি জাফর মাখরামী এজন্য বলা হয়ে থাকে যে, তিনি মিসওয়ার ইবনি মাখরামার সন্তান। এ হাদীসটি রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর একাধিক সাহাবা বর্ণনা করিয়াছেন। উমার ঈবনুল খাত্তাব, আলি ইবনি আবু তালিব ও ইবনি আব্বাস [রাদি.] তাহাদের অন্তর্ভূক্ত। ইবনি উমার [রাদি.] বলেনঃ “যখন তুমি পশ্চিমকে ডান দিকে এবং পূর্বকে বাম দিকে রেখে কিবলামুখী হয়ে দাড়াও তখন এই উভয় দিকের মধ্যবর্তী দিকই কিবলার দিক”। ইবনূল মুবারাক বলেন, পূর্ব-পশ্চিমের মধ্যবর্তী দিকগুলো প্রাচ্যবাসীদের কিবলা। তিনি মরুবাসীদের জন্য বাঁ দিক কিবলা নির্দিষ্ট করিয়াছেন। নামাজের দিক নির্ণয় -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৪৫. অনুচ্ছেদঃ যে ব্যক্তি বৃষ্টি–বাদলের কারণে কিবলা ব্যতীত অন্যদিকে ফিরে নামাজ আদায় করে
৩৪৫. আব্দুল্লাহ ইবনি আমির ইবনি রবীআ [রাদি.] হইতে তাহাঁর পিতার হইতে বর্ণীতঃ
, তিনি [আমির] বলেন, এক অন্ধকার রাতে নাবী রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সাথে সফরে ছিলাম। কিবলা যে কোন দিকে তা আমরা ঠিক করিতে পারলাম না। আমাদের প্রত্যেকে যার যার সামনের দিকে ফিরে নামাজ আদায় করলাম। সকাল বেলা আমরা এ ঘটনা নাবী [সাঃআঃ]-কে বললাম। এ প্রসঙ্গে এই আয়াত অবতীর্ণ হল-
فَأَيْنَمَا تُولُّوا فَثَمَّ وَجْهُ الله
“পূর্ব ও পশ্চিম সবই আল্লাহ তাআলার। যে দিকে তুমি মুখ ফিরাবে, সেদিকেই আল্লাহ তাআলার চেহারা বিরাজমান”-[সূরা আল-বাকারা-১১৫]।
হাসান। ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[১০২০]। আবু ঈসা বলেন–এ হাদীসের সনদ খুব একটা শক্তিশালী নয়। এ হাদীসের রাবি আশআস ইবনি সাঈদ একজন দুর্বল রাবি। আমরা শুধু তাহাঁর মাধ্যমেই হাদীসটি জেনেছি। বেশিরভাগ বিশেষজ্ঞ বলেছেন, মেঘের কারণে কিবলা ছাড়া অন্য দিকে নামাজ আদায় করা হল, তারপর নামাজ শেষে জানা গেল যে, কিবলার দিক ব্যতীত অন্য দিকে ফিরে নামাজ আদায় করা হয়েছে, এ অবস্থায় নামাজ নির্ভুল হইবে। সুফিয়ান সাওরী, ইবনিল মুবারাক, আহমাদ ও ইসহাক এ মতের সমর্থক। এই হাদীসটির তাহকিকঃ হাসান হাদীস
১৪৬. অনুচ্ছেদঃ কোথায় এবং কিসের দিকে ফিরে নামাজ আদায় করা মাকরুহ
৩৪৬. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] সাতটি জায়গায় নামাজ আদায় করিতে নিষেধ করেছেনঃ ময়লা রাখার স্থানে, কসাইখানায়, কবরস্থানে, পথিমধ্যে, গোসলখানায়, উট [পশু]-শালায় এবং বাইতুল্লাহর [কাবা ঘরের] ছাদে।
যঈফ, ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[৭৪৬]। এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস
৩৪৭. আলী ইবনি হুজুর হইতে বর্ণীতঃ
আলী ইবনি হুজুর স্বীয় সনদে ইবনি উমর [রাদি.] এর সুত্রে রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট হইতে উপরের হাদীসের মতই হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন।
যঈফ, দেখুন পূর্বের হাদীস। এ অনুচ্ছেদে আবু মারসাদ, জাবির ও আনাস [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেন, ইবনি উমারের হাদীসের সনদ খুব একটা শক্তিশালী নয়। যাইদ ইবনি জাবিরার স্মরণশক্তির সমালোচনা করা হয়েছে। আবু ঈসা বলেনঃ যাইদ ইবনি যুবাইর আল-কুফী যাইদ ইবনি জাবিরার তুলনায় অধিক বিশস্ত ও অধিক বয়স্ক আর তিনি ইবনি উমার হইতে হাদীস শুনেছেন। লাইস ইবনি সাদ-আব্দুল্লাহ ইবনি উমর আল-উমারির সনদ পরম্পরায় ইবনি উমারের হাদীসটি বর্ণনা করিয়াছেন। দাউদের হাদীস নাফী হইতে তিনি ইবনি উমার হইতে তিনি রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] হইতে বর্ণনা করিয়াছেন। এই বর্ণনাটি লাইসের বর্ণনা চেয়ে অধিক সহীহ। কিছু হাদীস বিশারদ আল-উমারির স্মরণশক্তির সমালোচনা করিয়াছেন এবং বলেছেন, তার স্মৃতিশক্তি অত্যন্ত দুর্বল। সমালোচকদের মধ্যে ইয়াহ্ইয়া ইবনি সাঈদ আল-কাত্তান অন্যতম। এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস
১৪৭. অনুচ্ছেদঃ ছাগলের ঘরে ও উটশালায় নামাজ আদায় করা
৩৪৮. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমরা ছাগলের ঘরে নামাজ আদায় করিতে পার কিন্তু উটশালায় নামাজ আদায় করিবেনা।
সহিহ। ইবনে মাজাহ-[৭৬৮]। নামাজের দিক নির্ণয় -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৪৯. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন……উপরের হাদীসের অনুরূপ।
আবু ঈসা বলেনঃ আবু হুরাইরার হাদীসটি হাসান সহিহ। এ অনুচ্ছেদে জাবির ইবনি সামুরা, বারাআ, সাবরা ইবনি মাবাদ, আবদুল্লাহ ইবনি মুগাফফাল, ইবনি উমার ও আনাস [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেনঃ আমাদের সঙ্গীরা এই হাদীস অনুসারে আমল করেন। আহমাদ এবং ইসহাকও একই রকম কথা বলেন। আবু হুরাইরা হইতে আবু সালিহর সূত্রে হাসীন কর্তৃক বর্ণিত হাদীসটি গারীব। এ হাদীসটি ইসরাঈল আবু হাসীন হইতে তিনি আবু সালিহ হইতে তিনি আবু হুরাইরা হইতে মাওকূফরূপে বর্ণনা করিয়াছেন। আবু হাসীনের নাম উসমান ইবনি আসিম। এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়
৩৫০. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বকরীশালায় নামাজ আদায় করিতেন।
সহিহ। বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ। আবু ঈসা বলেন এ হাদীসটি হাসান সহিহ। নামাজের দিক নির্ণয় -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৪৮. অনুচ্ছেদঃ চতুস্পদ জন্তুর পিঠে থাকা কালে জন্তুটি যেদিকে মুখ করে আছে সেদিকে ফিরে নামাজ আদায় করা
৩৫১. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাকে কোন এক কাজে পাঠালেন। আমি ফিরে এসে দেখি, তিনি তাহাঁর সওয়ারীর উপর পূর্ব দিকে ফিরে নামাজ আদায় করিয়াছেন এবং সিজদাতে রুকূ অপেক্ষা বেশী নীচু হচ্ছেন।
সহিহ। সহিহ আবু দাঊদ হাদীস নং-[১১১২], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ সিজদার কথা উল্লেখ না করে; বুখারী, কাজে পাঠানো শব্দ ব্যতীত। এ অনুচ্ছেদে আনাস, ইবনি উমার, আবু সাঈদ ও আমির ইবনি রাবীআহ [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেনঃ জাবিরের হাদীসটি হাসান সহীহ। উল্লেখিত হাদীসটি জাবিরের নিকট হইতে একাধিক সূত্রে বর্ণিত হয়েছে। সব বিশেষজ্ঞ এ হাদীস অনুযায়ী আমল করিয়াছেন। আমরা তাহাদের মধ্যে এ ব্যপারে কোনরূপ অমিল খুঁজে পাইনি। জন্তুযান যানবাহন যেদিকে মুখ করে থাকে আরোহী সেদিকে ফিরেই নফল নামাজ আদায় করিতে পারে, এই বিষয়ে তাহাদের মধ্যে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, চাই জন্তুযান যানবাহন কিবলার দিকে হোক বা অন্যদিকে। নামাজের দিক নির্ণয় -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৪৯. অনুচ্ছেদঃ জন্তুযানের দিকে ফিরে নামাজ আদায় করা
৩৫২. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] তাহাঁর উট বা বাহনের দিকে [বাহন সামনে রেখে] নামাজ আদায় করিয়াছেন। জন্তুযান যানবাহন তাঁকে নিয়ে যেদিকে চলত সেদিকে ফিরেই [ফরয ছাড়া অন্যান্য] নামাজ আদায় করিতেন।
সহিহ। সিফাতুস নামাজ–[৫৫], সহিহ আবু দাঊদ হাদীস নং-[৬৯১, ১১০৯], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ, বিচ্ছিন্নভাবে। আবু ঈসা বলেনঃ হাদীসটি হাসান সহিহ। কিছু বিশেষজ্ঞ বলেছেন, উটকে অন্তরাল বানিয়ে [নামাযীর সামনে রেখে ] নামাজ আদায় করিতে কোন অপরাধ নেই। নামাজের দিক নির্ণয় -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৫০. অনুচ্ছেদঃ রাতের খাবার উপস্থিত হওয়ার পর নামাজ শুরু হলে প্রথমে খাবার খেয়ে নাও
৩৫৩. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ যখন রাতের খাবার পরিবেশন করা হয় এবং নামাযের ইকামতও দেওয়া হয়, তখন আগে খাবার খেয়ে নাও।
সহিহ। ইবনি মাজাহ –[৯৩৩], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ। এ অনুচ্ছেদে আয়েশা, ইবনি উমার, সালামা ইবনিল আকওয়া ও উম্মু সালামা [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেনঃ আনাসের হাদীসটি হাসান সহীহ। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের একদল বিশেষজ্ঞ সাহাবা যেমন, আবু বাক্র, উমার ও ইবনি উমার [রাদি.] এ হাদীস অনুসারে আমল করিয়াছেন। ঈমাম আহমাদ এবং ইসহাকও একই রকম মত দিয়েছেন। তারা উভয়েই বলেছেনঃ যদি নামাযের জামাআতও হারাবার আশংকা থাকে তবুও আগে খাবার খেয়ে নিবে। ওয়াকী [রঃ] এ হাদীসের ব্যাপারে বলেছেন, যদি খাবার নষ্ট হয়ে যাওয়ার ভয় থাকে, তবে প্রথমে খেয়ে নিবে। নাবী [সাঃআঃ]-এর কিছু সাহাবা উল্লেখিত হাদীসের এই মর্ম গ্রহণ করিয়াছেন যে, মন যদি কোন জিনিস নিয়ে চিন্তিত থাকে তবে তখন নামাজ আদায় করিবে না। এই মতের অনুসরণ করাই উত্তম। খাবারের ব্যাপারটাও একইরকম, সুতরাং আহারই আগে খেয়ে নিবে। আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস [রাদি.] বলেছেন “মনের কোন চিন্তা বা দুশ্চিন্তা ব্যস্ততা থাকলে আমরা নামাযে দাঁড়াইনা। ” নামাজের দিক নির্ণয় -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৫৪. ইবনি উমার [রাদি.] নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেছেনঃ “যখন রাতের খাবার উপস্থিত করা হয় এবং নামাযেরও ইকামত দেওয়া তখন প্রথমে খাবার খেয়ে নাও। ”
সহিহ। বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ। ইমামের কিরাআতের শব্দ শুনার পরও ইবনি উমার [রাদি.] “প্রথমে খাবার খেয়ে নিতেন।”তিরমিযী বলেনঃ আমাদের ইহা বর্ণনা করিয়াছেন হান্নাদ, তিনি আবদাহ হইতে, তিনি উবাইদুল্লাহ হইতে, তিনি নাফি হইতে, তিনি ইবনি উমার হইতে। নামাজের দিক নির্ণয় -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
Leave a Reply