নবী [সাঃ]এর স্বপ্ন
নবী [সাঃ]এর স্বপ্ন >> সহীহ মুসলিম শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন >> নিম্নে মুসলিম শরীফ এর একটি অধ্যায়ের হাদিস পড়ুন
১. অধ্যায়ঃ নবী [সাঃআঃ] -এর বাণী : যে আমাকে স্বপ্নে দেখলো সে আমাকেই দেখলো
২. অধ্যায়ঃ ঘুমের মধ্যে শাইতানের সঙ্গে খেলাধুলার সংবাদ প্রকাশ করিবে না
৩. অধ্যায়ঃ স্বপ্নের ব্যাখ্যা
৪. অধ্যায়ঃ নবী [সাঃআঃ] -এর স্বপ্ন
১. অধ্যায়ঃ নবী [সাঃআঃ] -এর বাণী : যে আমাকে স্বপ্নে দেখলো সে আমাকেই দেখলো
৫৭৯০. আবু সালামাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি এমন স্বপ্ন দেখতাম যাতে ভয় পেয়ে জ্বর জ্বর ভাব অনুভব করতাম। তবে আমাকে কম্বল দিয়ে ঢাকতে হতো না। অবশেষে আমি আবু কাতাদাহ্ [রাদি.]-এর সঙ্গে দেখা করলাম এবং এ বিষয়টি তার নিকট বর্ণনা করলাম। তিনি বলিলেন, আমি রসূলুল্লাহ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -কে বলিতে শুনেছি الرُّؤْيَا সু-স্বপ্ন আল্লাহর তরফ হতে, আর الْحُلْمُ খারাপ স্বপ্ন শাইতানের তরফ হইতে। অতএব তোমাদের কেউ যখন এমন স্বপ্ন দেখে, যা সে পছন্দ করে না, তখন যেন সে তার বাম পাশে তিনবার থু থু ফেলে এবং এর অনিষ্ট থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করে [অর্থাৎ- আঊযুবিল্লাহ পড়ে], তাহলে সেটি তার ক্ষতি করিবে না।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭০০, ইসলামিক সেন্টার- ৫৭৩২]
৫৭৯১. আবু কাতাদাহ্ [রাদি.]-এর সানাদে নবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণীতঃ
হুবহু হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। তবে এঁরা এদের বর্ণিত হাদীসে [পূর্বোল্লিখিত হাদীসের] বর্ণনাকারী আবু সালামাহ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] -এর কথা– আমি স্বপ্ন দেখে ভয় পাওয়ার দরুন জ্বর জ্বর ভাব দেখা দিতো, কিন্তু আমাকে কম্বল দিয়ে ঢাকতে হতো না কথাটি বর্ণনা করেননি।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭০১, ইসলামিক সেন্টার- ৫৭৩৩]
৫৭৯২. যুহরী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
উপরোল্লিখিত সূ্ত্রে হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। কিন্তু তাঁদের উভয়ের বর্ণিত হাদীসে- ভয় পেয়ে জ্বরাক্রান্ত হয়ে পড়তাম উক্তিটি নেই। আর [প্রথম সূত্রে] বর্ণনাকারী ইউনুস [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বর্ধিত করে বলেছেন, যখন সে ঘুম হইতে জেগে উঠবে তখন সে যেন তিনবার তার বাম পাশে থু থু ফেলে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭০২, ইসলামিক সেন্টার- ৫৭৩৪]
৫৭৯৩. আবু কাতাদাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -কে বলিতে শুনেছি যে, الرُّؤْيَا সু-স্বপ্ন আল্লাহর তরফ হতে, আর الْحُلْمُ দুঃস্বপ্ন শাইতানের তরফ থেকে। অতএব তোমাদের কেউ যখন এমন কোন ব্যাপারে স্বপ্নে দেখে, যা সে পছন্দ করে না, তখন সে যেন তার বাম পাশে তিন বার থু থু ফেলে এবং [আঊযুবিল্লাহ্ বা সূরা আল ফালাক্ব ও সূরা আন্ নাস পড়ে] স্বপ্নের অনিষ্ট হইতে আশ্রয় চায়। কারণ [এভাবে করলে] তা তার কোন খারাবী করিতে পারবে না। রাবী বলেন, আমি এমন স্বপ্নও দেখতাম যা আমার জন্য পাহাড়ের চাইতেও কঠিন [ও ভয়াবহ] কিন্তু এখন অবস্থা এই যে, এ হাদীস যখন আমি শুনে ফেলেছি, এখন আর সে সবের পরোয়া করি না।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭০৩, ইসলামিক সেন্টার- ৫৭৩৫]
৫৭৯৪. ইয়াহ্ইয়া ইবনি সাঈদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
উপরোল্লিখিত সূ্ত্রে হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। কিন্তু বর্ণনাকারী আস্-সাকাফী [রাদি.] কর্তৃক বর্ণিত হাদীসে আছে, [আমার উস্তাদ] বর্ণনাকারী আবু সালামাহ্ [রাদি.] বলেছেন, আমি এমন স্বপ্নও দেখতাম যা…..। আর বর্ণনাকারী আল-লায়স ও ইবনি নুমায়র [রাদি.] সূ্ত্রে বর্ণিত হাদীসে আবু সালামাহ্ [রাদি.] এর কথা হইতে হাদীসের শেষাংশ নেই এবং বর্ণনাকারী ইবনি রুম্হ্ এ হাদীসের রিওয়ায়াতে বর্ধিত বলেছেন যে, আর সে [স্বপ্নদ্রষ্টা] লোক যে পাশে ঘুমাচ্ছিল সে পাশ পরিবর্তন করে অন্যপাশে ঘুমাবে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭০৪, ইসলামিক সেন্টার- ৫৭৩৬]
৫৭৯৫. আবু কাতাদাহ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] সূ্ত্রে নবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেছেন, ভাল স্বপ্ন আল্লাহ্র তরফ থেকে আর মন্দ স্বপ্ন শাইতানের তরফ থেকে। সুতরাং যে ব্যক্তি কোন স্বপ্ন দেখল আর এতে কোন কিছু পছন্দ হলো না, তখন সে যেন তার বাম পাশে থু থু ফেলে এবং শাইতান [এর অনিষ্ট] হইতে আল্লাহ্র আশ্রয় প্রার্থনা করে, [তাহলে] তা তাকে কোন সমস্যায় ফেলবে না। আর কোরো কাছে ঐ স্বপ্নের কথা বর্ণনা করিবে না। আর যদি কোন ভাল স্বপ্ন দেখে তাহলে সু-সংবাদ গ্রহণ করিবে। আর যাকে সে মুহাব্বাত করে এমন ব্যক্তি ব্যতীত কারো নিকট তা বর্ণনা করিবে না।
[ই.ফা.৫৭০৫, ইসলামিক সেন্টার- ৫৭৩৭]
৫৭৯৬. আবু সালামাহ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি এমন স্বপ্ন দেখতাম, যা আমাকে রোগগ্রস্ত করে দিত। তিনি বলেন, পরে আমি আবু কাতাদাহ্ [রাদি.]-এর সঙ্গে দেখা করলাম [এবং আমার সমস্যার ব্যাপারটি তাঁকে বললাম]। তখন তিনি বলিলেন, আমিও এমন স্বপ্ন দেখতাম, যা আমাকে অসুস্থ করে দিত। অবশেষে আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনলাম, ভাল স্বপ্ন আল্লাহর তরফ থেকে। অতএব তোমাকে কেউ যখন এমন [স্বপ্ন] দেখে, যা সে পছন্দ করে তাহলে তা তার ঘনিষ্ট লোক ব্যতীত কারো নিকট যেন প্রকাশ না করে। আর যখন এমন [স্বপ্ন] দেখে,
যা সে অপছন্দ করে তাহলে সে যেন তার বামপাশে তিন [বার] থু থু নিক্ষেপ করে এবং শাইতানের অনিষ্ট ও স্বপ্নের অমঙ্গল থেকে আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করে ও কাউকে তা না বলে। কারণ [এভাবে করলে] সে স্বপ্ন তার কোন অকল্যাণ হইবে না।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭০৬, ইসলামিক সেন্টার- ৫৭৩৮]
৫৭৯৭. জাবির [রাদি.]-এর সানাদে নবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, তোমাদের কেউ যখন এমন স্বপ্ন দেখে, যা সে পছন্দ করে না তখন সে যেন তার বামপাশে তিনবার থু থু ফেলে এবং শাইতান [এর খারাবী] থেকে আল্লাহর নিকট তিনবার আশ্রয় প্রার্থনা করে। আর যে পাশে ঘুমন্ত ছিল তা হইতে যেন বিপরীত পাশে ঘুমায়।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭০৭, ইসলামিক সেন্টার- ৫৭৩৯]
৫৭৯৮. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] সূ্ত্রে নবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, যখন যুগ ও সময় [কিয়ামাতের] সন্নিকটে হয়ে আসবে তখন প্রায়শ [খাঁটি] মুসলিমের স্বপ্ন মিথ্যা ও ভ্রান্ত হইবে না। তোমাদের [মাঝে] অধিক সত্যভাষী লোক সর্বাধিক সত্য [ও বাস্তব] স্বপ্নদ্রষ্টা হইবে। আর মুসলিমের স্বপ্ন নুবূওয়াতের পঁয়তাল্লিশ ভাগের এক ভাগ। আর স্বপ্ন তিন [প্রকার]- ভাল স্বপ্ন আল্লাহর তরফ হইতে সুসংবাদ [বাহক]। আর [এক ধরনের] স্বপ্ন শাইতানের পক্ষ হইতে দুর্ভাবনা তৈরি করে। আর [এক ধরনের] স্বপ্ন শাইতানের পক্ষ হইতে দুর্ভাবনা তৈরি করে। আর [এক ধরনের] স্বপ্ন যা মানুষ তার মনের সাথে কথা বলে [এবং ভাবনা-চিন্তা করে] তা থেকে [উদ্ভূত]। অতএব তোমাদের কেউ যদি এমন কিছু [স্বপ্ন] দর্শন করে- যা সে পছন্দ করে না, তাহলে সে যেন [ঘুম থেকে] উঠে দাঁড়ায় এবং নামাজ আদায় করে আর মানুষের নিকট সে [স্বপ্নের] কথা গোপন রাখে। তিনি [আরও] বলেছেন যে, আমি [স্বপ্নে] হাত কড়া [দেখা] পছন্দ করি এবং গলায় বেড়ী [দেখা] পছন্দ করি না। কারণ, হাত কড়া দীন-ধর্মে অবিচলতা [র পরিচায়ক]। বর্ণনাকারী বলেন, তবে আমি জানি না যে, তা [রিওয়ায়াতের এ শেষাংশটি] মূল হাদীসের অংশ [নবী [সাঃআঃ] -এর বাণী] নাকি তা {জাবির [রাদি.] থেকে রিওয়ায়াতকারী} ইবনি সীরীন [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭০৮, ইসলামিক সেন্টার- ৫৭৪০]
৫৭৯৯. আইয়ূব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
উপরোল্লিখিত সুত্রে হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। আর তিনি [তাহাঁর বর্ণিত] হাদীসে বলেছেন, আবু হুরায়রা্ [রাদি.] বলেন, হাত কড়া [দেখা] আমাকে বিমোহিত করে এবং গলায় বেড়ী [দেখা] আমি পছন্দ করি না। [কেননা] হাতকড়া হলো দ্বীন ধর্মে অটল থাকার পরিচায়ক। নবী [সাঃআঃ] আরো বলেছেন, [খাঁটি] ঈমানদারের স্বপ্ন নুবূওয়াতের [চল্লিশ অংশের] একটি অংশ।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭০৯, ইসলামিক সেন্টার- ৫৭৪১]
৫৮০০. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, যখন যুগ বা সময় কিয়ামাতের সন্নিকটে এসে যাবে… বর্ণনাকারী [এভাবেই] হাদীসটি রিওয়ায়াত করিয়াছেন এবং তিনি তাতে নবী [সাঃআঃ] -এর নামোল্লেখ করেননি।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭১০, ইসলামিক সেন্টার- ৫৭৪২]
৫৮০১. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.]-এর সানাদে নবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি তাহাঁর বর্ণনায় আর আমি গলায় বেড়ী দেখা পছন্দ করি না… পর্যন্ত অংশ সংযোজন করিয়াছেন। আর স্বপ্ন নুবূওয়াতের ছিচল্লিশ ভাগের এক ভাগ- উক্তিটি তিনি বর্ণনা করেননি।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭১১, ইসলামিক সেন্টার- ৫৭৪৩]
৫৮০২. উবাদাহ্ ইবনি সামিত [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ মুমিনের স্বপ্ন নুবূওয়াতের ছিচল্লিশ ভাগের এক ভাগ।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭১২, ইসলামিক সেন্টার- ৫৭৪৪]
৫৮০৩. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] নবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণীতঃ
উপরে বর্ণিত হাদীসের হুবহু বর্ণনা করিয়াছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭১৩, ইসলামিক সেন্টার- ৫৭৪৫]
৫৮০৪. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, অবশ্য ঈমানদারের স্বপ্ন নুবূওয়াতের ছিচল্লিশ ভাগের এক ভাগ।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭১৪, ইসলামিক সেন্টার- ৫৭৪৬]
৫৮০৫. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ মুসলিমের স্বপ্ন, যা সে দেখে অথবা যা তার ব্যাপারে দৃশ্য হয়। বর্ণনাকারী ইবনি মুসহির বর্ণিত হাদীসে মুসলিমের স্বপ্ন এ জায়গায় রয়েছে ভাল স্বপ্ন নুবূওয়াতের ছিচল্লিশ ভাগরে এক ভাগ।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭১৫, ইসলামিক সেন্টার- ৫৭৪৭]
৫৮০৬. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.]-এর সানাদে নবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, সৎ লোকের স্বপ্ন নুবূওয়াতের ছিচল্লিশ ভাগের এক ভাগ।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭১৬, ইসলামিক সেন্টার- ৫৭৪৮]
৫৮০৭. ইয়াহ্ইয়া ইবনি আবু কাসীর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
উপরোল্লিখিত সূ্ত্রে হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭১৭, ইসলামিক সেন্টার- ৫৭৪৯]
৫৮০৮. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] সূত্রে নবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণীতঃ
আবদুল্লাহ ইবনি ইয়াহ্ইয়া ইবনি আবু কাসীর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] তাহাঁর পিতার সূ্ত্রে বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ হাদীস রিওয়ায়াত করিয়াছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭১৮, ইসলামিক সেন্টার- ৫৭৫০]
৫৮০৯. ইবনি উমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ ভাল স্বপ্ন নুবূওয়াতের সত্তর ভাগের এক ভাগ।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭১৯, ইসলামিক সেন্টার- ৫৭৫১]
৫৮১০. ইয়াহ্ইয়া সূ্ত্রে উবাইদুল্লাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
অবিকল রিওয়ায়াত করিয়াছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭২০, ইসলামিক সেন্টার- নেই]
৫৮১১. কুতাইবাহ্ ও ইবনি রুমহ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] লায়স ইবনি সাদ থেকে [ভিন্ন সানাদে] ইবনি রাফি ও ইবনি ফুদায়ক [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] নাফি [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
হুবহু রিওয়ায়াত করিয়াছেন। লায়স-এর হাদীসে আছে নাফি [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, আমার ধারণা ইবনি উমর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেছেনঃ স্বপ্ন নুবূওয়াতের সত্তর ভাগের এক ভাগ। {৩৩}
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭২১, ইসলামিক সেন্টার- নেই]
{৩৩} [আরবী] বর্ণনাকারীদের শ্রবণে কিংবা স্মৃতিশক্তির তারতম্যের কারণে রিওয়ায়াত বিভিন্ন রকমের দেখা যায়। তবে মূলতঃ [আরবী] বর্ণিত রিওয়ায়াতই অধিক বিশুদ্ধ ও প্রাধান্যপ্রাপ্ত। কারণ নবী [সাঃআঃ] নুবূওয়াত প্রাপ্তির পূর্বের ছয় মাস শুধু ভাল ও কল্যাণমূলক স্বপ্নই দর্শন করিয়াছেন। যা নুবূওয়াত প্রাপ্তির পূর্ণ ২৩ বছর সময়ের ছিচল্লিশ অংশের এক অংশ।
৫৮১২. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে লোক আমাকে স্বপ্নে দেখে সে [অবশ্যই] আমাকে দেখেছে। কারণ, শাইতান আমার আকৃতি ধারণ করিতে পারে না।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭২২, ইসলামিক সেন্টার- ৫৭৫২]
৫৮১৩. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছি, যে লোক আমাকে স্বপ্নে দেখে, শীঘ্রই সে আমাকে জেগে থাকাবস্থায় দেখিতে পাবে। অথবা তিনি বলেছেন, সে যেন আমাকে জাগ্রত অবস্থায় প্রত্যক্ষ করলো। কারণ শাইতান আমার আকৃতি ধারণ করিতে পারে না।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭২৩, ইসলামিক সেন্টার- ৫৭৫৩]
৫৮১৪. আবু কাতাদাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]বলেনঃ যে আমাকে দেখলো সে যেন [অবশ্যই] সত্যই দেখলো।
৫৮১৫. যুহরীর ভাইয়ের ছেলে হইতে বর্ণীতঃ
তাহাঁর চাচা [অর্থাৎ যুহরী] তাঁকে হাদীস রিওয়ায়াত করিয়াছেন। এ ব্যাপারে তিনি ইউনুস বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ দুটি হাদীস সানাদসহ রিওয়ায়াত করেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭২৩, ইসলামিক সেন্টার- ৫৭৫৪]
৫৮১৬. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে লোক স্বপ্নযোগে আমাকে দেখল, সে নিশ্চয়ই আমাকে [স্বপ্নে] দেখল। কারণ, শাইতানের পক্ষে আমার আকৃতি ধারণ করা অসম্ভব। তিনি আরও বলেন, তোমাদের কেউ যখন খারাপ স্বপ্ন দেখে সে যেন ঘুমের মধ্যে তার সাথে শাইতানের চক্রান্তের সংবাদ কাউকে না দেয়।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭২৪, ইসলামিক সেন্টার- ৫৭৫৫]
৫৮১৭. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে লোক স্বপ্নযোগে আমাকে দেখল সে অবশ্যই আমাকেই দেখল। কারণ আমার রূপ ধারণ করা শাইতানের পক্ষে অসম্ভব।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭২৫, ইসলামিক সেন্টার- ৫৭৫৬]
৫৮১৮. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
একবার এক বেদুঈন তাহাঁর নিকট এসে বলিল, আমি স্বপ্নে প্রত্যক্ষ করলাম যে, আমার মস্তিষ্ক কর্তন করা হয়েছে আর আমি তার পিছু পিছু ছুটে চলেছি। সে সময় নবী [সাঃআঃ] তাকে রাগান্বিত হয়ে বললেনঃ ঘুমের মধ্যে তোমার সঙ্গে শাইতানের খেলাধূলার সংবাদ কাউকে প্রকাশ করো না।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭২৬, ইসলামিক সেন্টার- ৫৭৫৭]
৫৮১৯. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, এক বেদুঈন নবী [সাঃআঃ] -এর নিকট এসে বলিল, হে আল্লাহর রসূল! আমি স্বপ্নে দেখলাম যেন আমার মাথা কর্তন করা হয়েছে এবং তা গড়াতে শুরু করেছে, আর আমি তার পিছনে পিছনে খুব জোরে দৌড়াতে লাগলাম। তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] সে বেদুঈন আরবকে বলিলেন, তোমার ঘুমের মধ্যে তোমার সঙ্গে শাইতানের ক্রীড়া-কৌতুকের ব্যাপারে কারো নিকটেই প্রকাশ করো না।
বর্ণনাকারী {জাবির [রাদি.]} বলেন, এ ঘটনার পর আমি নবী [সাঃআঃ] -কে ভাষণ দিতে শুনলাম। তাতে তিনি বলিলেন, তোমাদের কেউ ঘুমের মধ্যে তার সঙ্গে শাইতানের ক্রীড়া-কৌতুকের ব্যাপারে বলে দিও না।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭২৭, ইসলামিক সেন্টার- ৫৭৫৮]
২. অধ্যায়ঃ ঘুমের মধ্যে শাইতানের সঙ্গে খেলা ধুলার সংবাদ প্রকাশ করিবে না
৫৮২০. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, এক লোক নবী [সাঃআঃ] -এর নিকট এসে বলিল, হে আল্লাহর রসূল! আমি স্বপ্নে দেখলাম যেন, আমার মস্তিষ্ক কর্তন করা হয়েছে। বর্ণনাকারী বলেন, তখন নবী [সাঃআঃ] মুচকি হেসে বলিলেন, শাইতান যখন তোমাদের কারো সঙ্গে তার ঘুমের মধ্যে খেলাধূলা করে, তখন সে যেন কোন ব্যক্তির নিকট তা প্রকাশ না করে। আর বর্ণনাকারী আবু বকর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] -এর বর্ণনাতে আছে- যখন তোমাদের কারো সঙ্গে ক্রীড়া-কৌতুহল করা হয় তিনি শাইতান শব্দ বর্ণনা করেননি।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭২৮, ইসলামিক সেন্টার- ৫৭৫৯]
৩. অধ্যায়ঃ স্বপ্নের ব্যাখ্যা
৫৮২১. উবাইদুল্লহ ইবনি আবদুল্লাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
ইবনি আব্বাস [রাদি.] অথবা আবু হুরায়রা্ [রাদি.] হাদীস রিওয়ায়াত করিতেন যে, জনৈক লোক রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর নিকট উপস্থিত হলো …..। ভিন্ন সূত্রে হারমালাহ্ ইবনি ইয়াহ্ইয়া তুজীবী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] উবাইদুল্লাহ ইবনি আবদুল্লাহ ইবনি উতবাহ্ [রাদি.] {ইবনি শিহাব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]} -কে সংবাদ দিয়েছেন যে, ইবনি আব্বাস [রাদি.] এ হাদীসটি রিওয়ায়াত করিতেন যে, জনৈক লোক রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর দরবারে এসে বলিল, হে আল্লাহর রসূল! আমি আজ রাতে স্বপ্ন দেখলাম যে, শামিয়ানা হইতে ঘি ও মধু ঝড়ে পড়ছে আর লোকদের দেখলাম- তারা তা থেকে তাদের হাতের অঞ্জলি ভরে ভরে নিয়ে যাচ্ছে। কেউ বেশি পরিমাণ নিচ্ছে, কোউ স্বল্প পরিমাণে। আর একটি রশি দেখলাম আসমান থেকে জমিন পর্যন্ত সংযোগ স্থাপনকারী, আর দেখলাম আপনি তা ধরলেন এবং উপরে উঠ গেলেন, এরপর এক ব্যক্তি তা ধরল এবং সে উপর উঠে গেল, তারপর আর এক ব্যক্তি তা ধরল এবং তা ছিঁড়ে পড়ে গেল। পরিশেষে তা তার জন্য জুড়ে দেয়া হলো এবং সেও উপরে উঠে গেল।
স্বপ্ন বর্ণনার এ পর্যায়ে আবু বকর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলিলেন, হে আল্লাহর রসূল! আমার পিতা আপনার জন্য উৎসর্গিত! আল্লাহ্র শপথ! আপনি অবশ্য আমাকে অনুমতি দিবেন, তাহলে আমি এ স্বপ্নটির ব্যাখ্যা করব। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, আপনি ব্যাখ্যা করুন। আবু বকর [রাদি.] বলিলেন, শামিয়ানাটি হলো ইসলামের [রূপক] শামিয়ানা, আর যে ঘি ও মধু ফোটা ঝরে পড়ছিল, তা হচ্ছে আল-কুরআনের মধুরতা ও কোমলতা আর মানুষেরা যে তা থেকে অঞ্জলি ভরে ভরে নিয়ে যাচ্ছিল তা হলো- কেউ বেশি পরিমাণে আর কেউ সামান্য পরিমাণে আল-কুরআন হইতে সংগ্রহ করছে। আর আসমান হইতে জমিন পর্যন্ত সংযুক্ত রশিটি হলো হক ও সত্য [পথ], যার উপরে আপনি রয়েছেন তা ধারণ করিলেন, আর আল্লাহ তা দিয়ে আপনাকে উপরে উঠিয়ে নিলেন। তারপর আপনার পরে এক লোক তা ধারণ করিলেন এবং তা দিয়ে সেও উপরে উঠে যাবে, তারপর আর এক লোক তা ধারণ করিবে এবং তা দিয়ে সেও উপরে উঠে যাবে, তারপর আর এক লোক তা ধারণ করিবে এবং তা ছিঁড়ে পরে যাবে, পরে তা তার জন্য জুড়ে দেয়া হইবে এবং তা দিয়ে সে উপরে উঠে যাবে। হে আল্লাহর রসূল! এখন আমাকে বলে দিন, আমার পিতা আপনার উদ্দেশে উৎসর্গিত, আমি ঠিক বলেছি নাকি ভুল বলেছি? রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ কতক ঠিক বলেছেন আর কতক ভুল করিয়াছেন। তিনি বলিলেন, তাহলে আল্লাহ্র শপথ! হে আল্লাহর রসূল! যা আমি ভুল করেছি তা আপনি অবশ্যই আমাকে বর্ণনা করে দিবেন। তিনি বলিলেন, এভাবে শপথ করিবে না।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭২৯, ইসলামিক সেন্টার- ৫৭৬০]
৫৮২২. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, উহুদ [যুদ্ধক্ষেত্র] হইতে তাহাঁর ফিরে আসার সময় জনৈক লোক নবী [সাঃআঃ] -এর দরবারে এলো। সে বলিল, হে আল্লাহর রসূল! আজ রাতে আমি স্বপ্নে দেখলাম- একটি শামিয়ানা তা থেকে ফোটা ফোটা ঘি ও মধু ঝরছে। হাদীসের পরবর্তী অংশ ইউনুস [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বর্ণিত হাদীসের অর্থানুরূপ।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৩০, ইসলামিক সেন্টার- ৫৭৬১]
৫৮২৩. ইবনি আব্বাস [রাদি.] কিংবা আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
আবদুর রায্যাক বলেন [আমার ঊর্ধ্বতন বর্ণনাকারী উস্তাদ] মামার [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] কখনো বর্ণনা করিতেন ইবনি আব্বাস [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে আবার কখনো বর্ণনা করিতেন আবু হুরায়রা্ [রাদি.] হইতে এ মর্মে যে, জনৈক লোক রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর দরবারে উপস্থিত হয়ে বলিলেন, আজ রাতে [স্বপ্নে] আমি একটি শামিয়ানা দেখিতে পাই, তারপর পূর্বোল্লিখিত বর্ণনাকারীগণের বর্ণিত হাদীসের অর্থে হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৩১, ইসলামিক সেন্টার- ৫৭৬২]
৫৮২৪. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] [যেসব অভ্যাসে অভ্যস্ত] ছিলেন [সে সবের মধ্যে একটি ছিল এই] যে, তিনি তাহাঁর সাহাবীগণকে [ফজরের নামাজের পরে] বলিতেন, তোমাদের কেউ কোন স্বপ্ন দেখলে সে তা আমার নিকট প্রকাশ করুক, তাহলে আমি তাকে তার ব্যাখ্যা বলে দিব। জনৈক লোক এসে বলিল, হে আল্লাহর রসূল! আমি একটি শামিয়ানা দেখলাম …..। পরবর্তী বর্ণনা [পূর্বোল্লিখিত] বর্ণনাকারীগণের বর্ণিত হাদীসের অবিকল।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৩২, ইসলামিক সেন্টার- ৫৭৬৩]
৪. অধ্যায়ঃ নবী [সাঃ]এর স্বপ্ন
৫৮২৫. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ এক রাতে আমি দেখলাম যেভাবে ঘুমন্ত লোক দেখে [অর্থাৎ-স্বপ্ন], যেন আমরা উক্বাহ্ ইবনি রাফি-এর গৃহে রয়েছি। তখন আমাদের নিকট ইবনি তাব৩৪ [নামক] খেজুর হইতে কিছু তাজা খেজুর নিয়ে আসা হলো। তখন আমি এর বিশ্লেষণ করলাম- পৃথিবীর বুকে আমাদের জন্য উন্নতি এবং আখিরাতে উত্তম পরিণতি। আর আমাদের দ্বীন অবশ্যই উত্তম।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৩৩, ইসলামিক সেন্টার- ৫৭৬৪]
৩৪ [আরবি] ইবনি তাব আরবের উন্নতমানের খেজুরসমূহের একটি। [আরবি] শব্দের অর্থ উত্তম হলো।
৫৮২৬. নাফি [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
আবদুল্লাহ ইবনি উমর [রাদি.] এ মর্মে বর্ণনা করিয়াছেন যে, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আমি ঘুমের মধ্যে আমার একটি দাঁতন দিয়ে মিস্ওয়াক করিতে দেখলাম। তখন দু লোক আমাকে আকৃষ্ট করিল, যাদের একজন অন্যজনের চেয়ে বয়সে বড়। তখন আমি মিস্ওয়াকটি কম বয়সীকে দিতে গেলে আমাকে বলা হলো- বড়কে দিন, তাই আমি বয়স্ককে দিয়ে দিলাম।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৩৪, ইসলামিক সেন্টার- ৫৭৬৫]
৫৮২৭. আবু মূসা [রাদি.]-এর সানাদ হইতে বর্ণীতঃ
নবী [সাঃআঃ]- কে বলিতে শুনেছি। তিনি বলেন, আমি স্বপ্নে দেখলাম যে, আমি মাক্কাহ্ থেকে এমন এক দেশে হিজরত করে যাচ্ছি, যেখানে খেজুর বৃক্ষ আছে, তাতে আমার কল্পনা এদিকে গেল যে, তা ইয়ামামাহ্ অথবা হাজর [এলাকা] হইবে। পরে [বাস্তবে] দেখি যে, তা হলো মাদীনাহ্- [যার পূর্ব নাম] ইয়াস্রিব। আমি আমার এ স্বপ্নে আরও দেখলাম যে, আমি একটি তলোয়ার নাড়াচাড়া করলাম, ফলে তার মধ্যখান ভেঙ্গে গেল। তা ছিল উহুদের দিনে যা মুমিনগণের উপর আপতিত হয়েছিল। তারপরে আমি আর একবার সে তলোয়ার নাড়া দিলে তা পূর্বের চাইতে ভাল হয়ে গেল। তারপরে মূলত তা হলো সে বিজয় ও ঈমানদারদের সম্মেলন- যা আল্লাহ সংঘটিত করিলেন [মাক্কাহ্ বিজয়]। আমি তাতে একটি গরুও দেখলাম। আর আল্লাহ তাআলাই কল্যাণের অধিকারী। মূলত তা হলো- উহুদের যুদ্ধে [শাহাদাতপ্রাপ্ত] মুমিনদের দলটি। আর মঙ্গল হলো, সে কল্যাণ যা পরবর্তীতে আল্লাহ তাআলা দান করিয়াছেন এবং সততা ও নিষ্ঠার সে সাওয়াব ও প্রতিদান- যা আল্লাহ তাআলা আমাদের বদর যুদ্ধের পরে দিয়েছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৩৫, ইসলামিক সেন্টার- ৫৭৬৬]
৫৮২৮. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, [ভণ্ড নবী] মুসাইলামাহ্ কায্যাব নবী [সাঃআঃ]-এর আমলে মাদীনায় আসলো, সে তখন বলিতে থাকল- মুহাম্মাদ যদি তার [মৃত্যুর] পরে আমাকে নেতৃত্ব দেয়ার ওয়াদা করে, তাহলে আমি তার অনুসরণ করব। সে তার সম্প্রদায়ের প্রচুর লোকজন নিয়ে মাদীনায় আসলো। নবী [সাঃআঃ] তাহাঁর দিকে অগ্রসর হলেন। তাহাঁর সঙ্গে ছিলেন সাবিত ইবনি কায়স ইবনি শাম্মাস [রাদি.], আর তখন নবী [সাঃআঃ]-এর হাতে ছিল খেজুর শাখার একটি টুকরো। পরিশেষে তিনি সহচর বেষ্টিত মুসাইলামার সম্মুখে গিয়ে থামলেন এবং কথাবার্তার এক পর্যায়ে বলিলেন [তুমি যদি আমার কাছে এ] সামান্য খেজুর ডালের টুকরাটিও আবদার করো, তবু আমি তা তোমাকে দিব না এবং আমি কিছুতেই তোমার বিষয়ে আল্লাহ্র আইন লঙ্ঘন করব না। আর যদি তুমি [অবাধ্য হয়ে] পিছনে ফিরে যাও, তাহলে অবশ্যই আল্লাহ তোমাকে পরাভূত করবেন। আর আমি অবশ্যই ধারণা করি যে, যা আমাকে স্বপ্নে দেখানো হয়েছে তা তোমার বিষয়েই দেখানো হয়েছে। আর [আমি তোমার সঙ্গে বেশি কথা বলিতে চাই না] এ সাবিত আমার তরফ থেকে তোমাকে উত্তর দিবে। তারপর তিনি তার নিকট হইতে ফিরে চললেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৩৬, ইসলামিক সেন্টার- ৫৭৬৭]
৫৮২৯. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
পরে আমি নবী [সাঃআঃ] -এর বক্তব্য- আমি মনে করি যে, আমাকে [স্বপ্নে] যা দেখানো হয়েছে তা তোমার বিষয়েই দেখানো হয়েছে” সম্বন্ধে প্রশ্ন করলাম। তখন আবু হুরায়রা্ [রাদি.] আমাকে বলিলেন যে, নবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আমি ঘুমে থাকাবস্থায় আমার দুহাতে দুটি সোনার কাঁকন দেখিতে পেলাম; সে দুটির অবস্থা আমাকে মহাদুশ্চিন্তায় ফেলল। স্বপ্নে আমার নিকট ওয়াহী পাঠানো হলো যে, ও দুটিকে ফুঁ দিন। আমি সে দুটিকে ফুঁ দিলে সে দুটি ভেসে গেল। তখন আমি স্বপ্নে দেখা সে বালা দুটির ব্যাখা করলাম- দুজন নুবূওয়াতের মিথ্যা দাবীদার, যারা আমার পরে আত্মপ্রকাশ করিবে। [বর্ণনাকারী বলেন], তাদের উভয়ের একজন হলো আল-আনসী সানআ-বাসীদের নেতা এবং অপরজন হলো মুসাইলামাহ্-ইয়ামামাবাসীদের সরদার।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৩৬, ইসলামিক সেন্টার- ৫৭৬৭]
৫৮৩০. হাম্মাম ইবনি মুনাব্বিহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, এ হলো সেসব হাদীস যা আবু হুরায়রা্ [রাদি.] রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] থেকে আমাদের নিকট বর্ণনা করিয়াছেন। এ কথা বলে তিনি কয়েকটি হাদীস বর্ণনা করেন। এটি হলো [সেগুলোর একটি]। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আরও বলেন, আমি নিদ্রিত ছিলাম এমতাবস্থায় আমার নিকট দুনিয়ার ভাণ্ডারসমূহ নিয়ে আসা হলো। সে সময় আমার হাতে দুটি স্বর্ণের কাঁকন রেখে দেয়া হলে সে দুটি আমার জন্য অনেক ওজন মনে হলো এবং তারা আমাকে দুর্ভাবনায় ফেলল। তখন আমার নিকট ওয়াহীর মাধ্যমে জানানো হলো যে, আমি যেন সে দুটির উপরে ফুঁ দেই। তখন আমি ফুঁ দিলে সে দুটি উড়ে গেল। আমি সে দুটির ব্যাখ্যা করলাম- সে দু মিথ্যাবাদী [ভণ্ড নবী] যে দুজনের মাঝে আমি রয়েছি- [অর্থাৎ-] সানআ অধিবাসী আসওয়াদ আল-আনসী এবং ইয়ামামাহ্ অধিবাসী মুসাইলামাতুল কায্যাব।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৩৭, ইসলামিক সেন্টার- ৫৭৬৮]
৫৮৩১. সামুরাহ্ ইবনি জুনদাব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] ফজরের নামাজ আদায়ন্তে লোকদের দিকে মুখ ফিরিয়ে বসতেন এবং বলিতেন, তোমাদের কেউ কি গত রাতে কোন স্বপ্ন দেখেছে?
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৩৮, ইসলামিক সেন্টার- ৫৭৬৯]
Leave a Reply