নফল সিয়াম

নফল সিয়াম

নফল সিয়াম >> মিশকাতুল মাসাবীহ এর মুল সুচিপত্র দেখুন

পর্বঃ ৭, অধ্যায়ঃ ৬

  • অধ্যায়ঃ ৬. প্রথম অনুচ্ছেদ
  • অধ্যায়ঃ ৬. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
  • অধ্যায়ঃ ৬. তৃতীয় অনুচ্ছেদ

অধ্যায়ঃ ৬. প্রথম অনুচ্ছেদ

২০৩৭. আবদুল্লাহ ইবনি শাক্বীক [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি আয়িশাহ্ [রাদি.]-কে জিজ্ঞেস করেছি যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি গোটা মাস সওম রাখতেন? তিনি {আয়িশাহ্ [রাদি.]] বললেন, আমি জানি না যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমাযান [রমজান] ছাড়া অন্য কোন মাস পুরো সওম রেখেছেন কিনা? কিংবা এমন কোন মাসের কথাও জানি না যে, মাসে তিনি [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] মোটেও সওম রাখেননি। তিনি প্রতি মাসেই কিছু দিন সওম পালন করিতেন। এ নিয়মেই তিনি [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] জীবন কাটিয়েছেন।

[মুসলিম]{১}, {১} সহীহ : মুসলিম ১১৫৬। নফল সিয়াম -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

২০৩৮. ইমরান ইবনি হুসায়ন [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হইতে বর্ণনা করিয়াছেন যে, তিনি [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] ইমরানকে অথবা অন্য কোন লোককে জিজ্ঞেস করিয়াছেন, আর ইমরান তা শুনছিলেন, তিনি [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বললেন, হে অমুক ব্যক্তির পিতা! তুমি কী শাবান মাসের শেষ দিনগুলো সওম রাখো না? তখন তিনি বললেন, না। তিনি [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বললেন, তুমি [রমাযানের শেষে শাবান মাসের] দুটি সওম পালন করে নিবে।

[বোখারী, মুসলিম]{১}, {১} সহীহ : বোখারী ১৯৮৩, মুসলিম ১১৬১, আহমাদ ১৯৯৪৭, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৭৯৬৭, সহীহ ইবনি হিব্বান ৩৫৮৮। নফল সিয়াম -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

২০৩৯. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ রমাযান [রমজান] মাসের সওমের পরে উত্তম সওম হলো আল্লাহর মাস, মুহাররম মাসের আশূরার সওম। আর ফরয সলাতের পরে সর্বোত্তম নামাজ হলো রাতের নামাজ [অর্থাৎ- তাহাজ্জুদ]।

[মুসলিম]{১}, {১} সহীহ : মুসলিম ১১৬৩, আবু দাউদ ২৪২৯, তিরমিজি ৪৩৮, নাসায়ী ১৬১৩, আহমাদ ৮৫৩৪, সহীহ ইবনি খুযায়মাহ্ ১১৩৪, মুসতাদারাক লিল হাকিম ১১৫৫, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৮৪২১, সহীহ ইবনি হিব্বান ৩৬৩৬, ইরওয়া ৯৫১, সহীহ আত তারগীব ৬১৫। নফল সিয়াম -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

২০৪০. আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি কখনো নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে সওম পালনের ক্ষেত্রে আশূরার দিনের সওম ছাড়া অন্য কোন দিনের সওমকে এবং এ মাস [অর্থাৎ-] রমাযান [রমজান] ছাড়া অন্য কোন মাসের সওমকে অধিক মর্যাদা দিতে দেখিনি।

[বোখারী, মুসলিম]{১}, {১} সহীহ : বোখারী ২০০৬, মুসলিম ১১৩২, মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক্ব ৭৮৩৭, আহমাদ ৩৪৭৫, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৮৩৯৮। নফল সিয়াম -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

২০৪১. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, যে সময় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আশূরার দিন সওম রেখেছেন; আর সাহাবীগণকেও রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। সাহাবীগণ আরয করেন, হে আল্লাহর রসূল! এদিন তো ঐদিন, যেটি ইয়াহূদী ও খ্রিষ্টানদের নিকট খুবই গুরুত্বপূর্ণ! [আর যেহেতু ইয়াহূদী-খ্রিষ্টানদের আমরা বিরোধিতা করি, তাই আমরা সওম রেখে তো এ দিনের গুরুত্ব প্রদানের ব্যাপারে তাদের সহযোগিতা করছি]। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ যদি আমি আগামী বছর জীবিত থাকি, তাহলে অবশ্য অবশ্যই নয় তারিখেও সওম রাখবো।

[মুসলিম]{১}, {১} সহীহ : মুসলিম ১১৩৪, ইবনি মাজাহ ১৭৩৬, ইবনি আবী শায়বাহ্ ৯৩৮১, আহমাদ ৩২১৩, সহীহ আল জামি ৫০৬২। নফল সিয়াম -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

২০৪২. উম্মুল ফাযল বিনতু হারিস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, একবার আরাফার দিন আমার সামনে কিছু লোক রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সওম সম্পর্কে তর্কবিতর্ক করছিল। কেউ বলছিল, তিনি [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] আজ সওমে আছেন। আর কেউ বলছিল, না, আজ তিনি [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] সায়িম নন। তাদের এ তর্কবিতর্ক দেখে আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে এক কাপ দুধ পাঠালাম। তিনি [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] তখন আরাফাতের ময়দানে নিজের উটের উপর বসা ছিলেন। তিনি [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] [পেয়ালা হাতে নিয়ে] দুধ পান করিলেন।

[মুসলিম]{১}, {১} সহীহ : বোখারী ১৯৮৮, মুসলিম ১১২৩, আবু দাউদ ২৪৪১, মুয়াত্ত্বা মালিক ১৩৮৯, সহীহ ইবনি হিববান ৩৬০৬। নফল সিয়াম -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

২০৪৩. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে কখনো আশর-এ [অর্থাৎ- যিলহজ মাসের প্রথম দশকে] সওম পালন করিতে দেখিনি।

[মুসলিম]{১}, {১} সহীহ : মুসলিম ১১৭৬, তিরমিজি ৭৫৬, আহমাদ ২৪১৪৭, সহীহ ইবনি খুযায়মাহ্ ২১০৩, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৮৩৯৪। নফল সিয়াম -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

২০৪৪. আবু কাতাদাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর খিদমাতে হাযির হয়ে জিজ্ঞেস করিল, আপনি কিভাবে সওম রাখেন? তার কথা শুনে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাগান্বিত হলেন। উমার তাহাঁর রাগ দেখে বলে উঠলেন,

 رَضِينَا بِاللّٰهِ رَبًّا وَّبِالْإِسْلَامِ دِينًا وَبِمُحَمَّدٍ نَبِيًّا نَعُوذُ بِاللّٰهِ مِنْ غَضَبِ اللّٰهِ وَغَضَبِ رَسُوْلِه

রযীনা- বিল্লা-হি রব্বান, ওয়াবিল ইসলা-মি দীনান, ওয়াবি মুহাম্মাদিন নাবিয়্যা। নাঊযুবিল্লা-হি মিন গযাবিল্লা-হি ওয়া গযাবি রসূলিহী

[অর্থাৎ- আমরা রব হিসেবে আল্লাহর ওপর সন্তুষ্ট। দ্বীন হিসেবে ইসলামের ওপর সন্তুষ্ট। আর নবী হিসেবে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ওপর সন্তুষ্ট। আমরা আল্লাহ ও আল্লাহর রসূলের গযব হইতে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাই।]

উমার এ বাক্যগুলো বার বার আওড়াতে থাকেন। এমনকি এ সময় রসূলের রাগ প্রশমিত হলো। এরপর উমার জিজ্ঞেস করিলেন, হে আল্লাহর রসূল! যে ব্যক্তি একাধারে সওম রাখে তার কী হুকুম? তিনি বললেন, সে ব্যক্তি না সওম রেখেছে, আর না ছেড়েছে। অথবা তিনি [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেছেন, না সওম রেখেছে আর না সওম ছেড়ে দিয়েছে। [অর্থাৎ- এখানে বর্ণনাকারীর সন্দেহ রাসূলুল্লাহ কি لَا صَامَ وَلَا أَفْطَرَ বলেছেন, না কি لَمْ يَصُمْ وَلَمْ يُفْطِرْ বলেছেন]।

তারপর উমার জিজ্ঞেস করিলেন, ওই ব্যক্তির ব্যাপারে কি হুকুম, যে দু দিন সওম রাখে আর একদিন তা ছাড়া থাকে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ কেউ কী এমন শক্তি রাখে? তারপর উমার বললেন, ওই ব্যক্তির ব্যাপারে কি হুকুম, যে একদিন রাখে আর একদিন রাখে না? এবার তিনি [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বললেন, এটা হলো দাউদ [আঃ]-এর সওম।

উমার জিজ্ঞেস করিলেন, আচ্ছা ওই ব্যক্তির ব্যাপারে কি হুকুম যে, একদিন সওম রাখে আর দুদিন রাখে না। তিনি [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বললেন, আমি এটা পছন্দ করি যে, এতটুকু শক্তি আমার সংগ্রহ হোক। এরপর তিনি [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বললেন, এক রমাযান [রমজান] থেকে আর এক রমাযান [রমজান] পর্যন্ত প্রতি মাসের তিনটি সওম একাধারে রাখার সমান। আরাফার দিনের সওমের ব্যাপারে আমি আশা করি আল্লাহ এর আগের ও পরের বছরের সব গুনাহ মাফ করে দেবেন। আর আশূরার দিনের সওমের ব্যাপারে আল্লাহর কাছে আমার প্রত্যাশা, আল্লাহ এর দ্বারা আগের বছরের সব গুনাহ মাফ করে দেবেন। [মুসলিম]{১}

{১} সহীহ : মুসলিম ১১৬২, আবু দাউদ ২৪২৫, তিরমিজি ৭৫২, ইবনি মাজাহ ১৭৩৮, সহীহ ইবনি খুযায়মাহ্ ২০৮৭, শুআবুল ঈমান ৩৮৮৩, সহীহ ইবনি হিববান ৩৬৩২, ইরওয়া ৯২৫, সহীহ আত তারগীব ১০১৭, সহীহ আল জামি ৩৮৩৫। নফল সিয়াম -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

২০৪৫. আবু কাতাদাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে সোমবারের সওম সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল। তিনি [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বললেনঃ এ দিনে আমি জন্মগ্রহণ করেছি। এ দিনে আমার ওপর [কুরআন] নাযিল করা হয়েছে।

[মুসলিম]{১},{১} সহীহ : মুসলিম ১১৬২, আবু দাউদ ২৪২৬, আহমাদ ২২৫৫০, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৮৪৩৪, শুআবুল ঈমান ১৩২৩। নফল সিয়াম -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

২০৪৬. মুআযাহ্ আদাবিয়্যাহ্ [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি উম্মুল মুমিনীন আয়িশাহ্ [রাদি.]-কে জিজ্ঞেস করেছিলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি প্রতি মাসে তিনটি করে [নফল সওম] রাখতেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ। তারপর আবার আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম, মাসের কোন্ দিনগুলোতে তিনি [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] সওম রাখতেন? তিনি বললেন, মাসের বিশেষ কোন দিনের সওমের প্রতি লক্ষ্য করিতেন না।

[মুসলিম]{১}, {১} সহীহ : মুসলিম ১১৬০, আবু দাউদ ২৪৫০, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৮৪৪৮, ইবনি মাজাহ ২৫১২৭, সহীহ ইবনি হিব্বান ৩৬৫৭, সহীহ ইবনি খুযায়মাহ্ ২১৩০। নফল সিয়াম -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

২০৪৭. আবু আইয়ূব আল আনসারী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি এ হাদিসটি বর্ণনা করিয়াছেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি রমাযান [রমজান] মাসের সওম রাখবে। এরপর সে শাওয়াল মাসের ছয়টি সওমও রাখবে তাহলে সে একাধারে সওম পালনকারী গণ্য হবে।

[মুসলিম]{১}, {১} সহীহ : মুসলিম ১১৬৪, তিরমিজি ৭৫৯, আবু দাউদ ২৪৩৩, দারিমী ১৭৫৪, সহীহ ইবনি খুযায়মাহ্ ২১১৪, সহীহ ইবনি হিব্বান ৩৬৩৪, মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক্ব ৭৯১৮, আহমাদ ২৩৫৩৩, মুজামুল কাবীর লিত্ব ত্ববারানী ৩৯০৮, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৮৪৩১, সহীহ আত তারগীব ১০০৬। নফল সিয়াম -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

২০৪৮. আবু সাঈদ আল খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার দিন সওম পালন করিতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিষেধ করিয়াছেন।

[বোখারী, মুসলিম]{১}, {১} সহীহ : বোখারী ১৯৯১, মুসলিম ৮২৭, সহীহ আল জামি ৬৯৬২, আহমাদ ১১৪১৭, ইরওয়া ৯৬২। নফল সিয়াম -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

২০৪৯. আবু সাঈদ আল খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ দু দিন কোন সওম নেই। ঈদুল ফিতর আর ঈদুল আযহা।

[বোখারী, মুসলিম]{১}. {১} সহীহ : বোখারী ১১৯৭, মুসলিম ৮২৭, ইবনি মাজাহ ১৭২১, ইবনি আবী শায়বাহ্ ৯৭৬৯, আহমাদ ১১৮০৪, সহীহ আল জামি ৭৩০৪। নফল সিয়াম -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

২০৫০. নুবায়শাহ্ আল হুযালী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আইয়্যামুত তাশরীক হলো খানাপিনার ও পান করার এবং আল্লাহর জিকির করার দিন।

[মুসলিম]{১}, {১} সহীহ : মুসলিম ১১৪১, আবু দাউদ ২৮১৩, নাসায়ী ৪২৩০, আহমাদ ২০৭২২, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৪১৬৮, ইরওয়া ৯৬৩। নফল সিয়াম -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

২০৫১. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কোন ব্যক্তি যেন জুমার দিন সওম না রাখে। হ্যাঁ, জুমার আগের অথবা পরের দিনসহ সওম রাখতে পারে।

[বোখারী, মুসলিম]{১}, {১} সহীহ : বোখারী ১৯৮৫, মুসলিম ১১৪৪, তিরমিজি ৭৪৩, ইবনি আবী শায়বাহ্ ৯২৪০, সহীহ আত তারগীব ১০৪৬, আবু দাউদ ২০৯১, ইরওয়া ৯৫৯, সহীহ ইবনি হিববান ৩৬১৪, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৮৪৮৮। নফল সিয়াম -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

২০৫২. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ অন্যান্য রাতগুলোর মধ্যে লায়লাতুল জুমাকে ইবাদাত বন্দেগীর জন্য খাস করো না। আর ইয়াওমুল জুমাকেও [জুমার দিন] অন্যান্য দিনের মধ্যে সওমের জন্য নির্দিষ্ট করে নিও না। তবে তোমাদের কেউ যদি আগে থেকেই অভ্যস্ত থাকে, জুমাহ্ ওর মধ্যে পড়ে যায়, তাহলে জুমার দিন সওমে অসুবিধা নেই। [মুসলিম]{১}

{১} সহীহ : মুসলিম ১১৪৪, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৮৪৯০, সহীহাহ্ ৯৮০, সহীহ আল জামি ৭২৫৪। নফল সিয়াম -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

২০৫৩. আবু সাঈদ আল খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি একদিন আল্লাহর পথে [অর্থাৎ- জিহাদ ফী সাবীলিল্লাহ-এর সময় খালিসভাবে আল্লাহর জন্য] সওম রাখে, আল্লাহ তাআলা তার মুখম-লকে [অর্থাৎ- তাকে] জাহান্নামের আগুন থেকে সত্তর বছরের দূরত্বে রাখবেন

। [বোখারী, মুসলিম]{১}. {১} সহীহ : বোখারী ২৮৪০, মুসলিম ১১৫৮, নাসায়ী ২২৪৫, ইবনি মাজাহ ১৭১৭, মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক্ব ৯৬৮৪, আহমাদ ১১৪০৬, দারিমী ২৪৪৪, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ১৮৫৭৬, সহীহ আল জামি ৬৩২৯। নফল সিয়াম -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

২০৫৪. আবদুল্লাহ ইবনি আমর ইবনুল আস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ হে আবদুল্লাহ! আমি জানতে পেরেছি, তুমি দিনে সওম রাখো ও রাত জেগে নামাজ আদায় করো। আমি বললাম, হ্যাঁ, হে আল্লাহর রসূল! তিনি [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বললেনঃ না, [এরূপ] করো না। সওম রাখবে, আবার ছেড়ে দেবে। নামাজ আদায় করিবে, আবার ঘুমাবে। অবশ্য অবশ্যই তোমার ওপর তোমার শরীরের হক আছে, তোমার চোখের ওপর হক আছে, তোমার ওপর তোমার স্ত্রীর হক আছে। তোমার মেহমানদেরও তোমার ওপর হক আছে। যে সবসময় সওম রাখে সে [যেন] সওমই রাখল না। অবশ্য প্রতি মাসে তিনটি সওম সবসময়ে সওম রাখার সমান। অতএব প্রতি মাসে [আইয়্যামে বীযে অথবা যে কোন দিনে তিনদিন] সওম রাখো। এভাবে প্রতি মাসে কুরআন পড়বে। আমি নিবেদন করলাম, আমি তো এর চেয়ে বেশী করার সামর্থ্য রাখি। তিনি [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বললেন, তাহলে উত্তম দাউদ [আঃ]-এর সওম রাখো। একদিন রাখবে, আর একদিন ছেড়ে দেবে। আর সাত রাতে একবার কুরআন খতম করিবে। এতে আর মাত্রা বাড়াবে না

। [বোখারী, মুসলিম]{১}, {১} সহীহ : বোখারী ১৯৭৫, ১৯৭৬, ৫০৫৪, মুসলিম ১১৫৯, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৪৭৩২, সহীহ ইবনি হিববান ৩২০, ইরওয়া ২০১৫, আহমাদ ৬৮৬৭, সহীহ আত তারগীব ২৫৮৭, সহীহ আল জামি ৭৯৪২, ইবনি খুযায়মাহ্ ২১১০। নফল সিয়াম -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

অধ্যায়ঃ ৬. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ

২০৫৫. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সোমবার ও বৃহস্পতিবারে সওম রাখতেন।

[তিরমিজি, নাসায়ী]{১}, {১} সহীহ : তিরমিজি ৭৪৫, নাসায়ী ২৩৬১, ইবনি মাজাহ ১৭৪০, সহীহ আত তারগীব ১০৪৪, সহীহ আল জামি ৪৯৭০। নফল সিয়াম -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

২০৫৬. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সোমবার ও বৃহস্পতিবারে [আল্লাহর দরবারে বান্দার] আমাল পেশ করা হয়। তাই আমি চাই আমার আমাল পেশ করার সময় আমি সওম অবস্থায় থাকি।

[তিরমিজি]{১}, {১} সহীহ লিগায়রিহী : তিরমিজি ৭৪৭, শামায়িল ২৫৯, ইরওয়া ৯৫৯, সহীহ আত তারগীব ১০৪১, সহীহ আল জামি ২৯৫৯। এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ লিগাইরিহি

২০৫৭. আবু যার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ হে আবু যার! তুমি যখন কোন মাসে তিনদিন সওম পালন করিতে চাও, তাহলে তেরো, চৌদ্দ ও পনের তারিখে করিবে।

[তিরমিজি ও নাসায়ী]{১},{১} হাসান সহীহ : তিরমিজি ৭৬১, নাসায়ী ২৪২৪, সহীহ ইবনি খুযায়মাহ্ ২১২৮, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৮৪৪৫, ইরওয়া ৯৪৭, সহীহ আত তারগীব ১০৩৮, সহীহ আল জামি ৬৭৩, আহমাদ ২১৪৩৭। এই হাদিসটির তাহকীকঃ হাসান সহীহ

২০৫৮,. আবদুল্লাহ ইবনি মাস্ঊদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম [কখনো] মাসের প্রথম তিনদিন সওম রাখতেন। আর খুব কম দিনই তিনি [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] জুমার দিন সওম ছাড়তেন। [তিরমিজি, নাসায়ী। আর ঈমাম আবু দাউদ ثَلَاثَةَ أَيَّامٍ অর্থাৎ- তিনদিন পর্যন্ত বর্ণনা করিয়াছেন।]{১}

{১} হাসান : তিরমিজি ৭৪২, নাসায়ী ২৩৬৮, শামায়িল ২৫৭, আবু দাউদ ২১১৬, সহীহ ইবনি হিববান ৩৬৪৫, সহীহ আল জামি ৪৯৭২। এই হাদিসটির তাহকীকঃ হাসান হাদিস

২০৫৯। আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোন মাসে শনি, রবি, সোমবার, আবার কোন মাসে মঙ্গল, বুধ ও বৃহস্পতিবার দিন সওম রাখতেন।

[তিরমিজি]{১},{১} জইফ : তিরমিজি ৭৪৬, শামায়িল ২৬০, সহীহ আল জামি ৪৯৭১। কারণ এর সানাদে খায়সামাহ্ ইবনি আবদুর রহমান আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে শুনেননি । অতএব সানাদটি মুনক্বতি। এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস

২০৬০. উম্মু সালামাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে প্রতি মাসে তিনটি সওম রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। [আর এ সওমের] শুরু সোমবার অথবা বৃহস্পতিবার থেকে করিতে বলেছেন।

[আবু দাউদ, নাসায়ী]{১}, {১} মুনকার : আবু দাউদ ২৪৫২, নাসায়ী ২৪১৯, আহমাদ ২৬৪৮০। কারণ এর সানাদে হাসান ইবনি উবায়দুল্লাহ সম্পর্কে ঈমাম বোখারী [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, আমি তার থেকে হাদিস নেয়নি। কারণ তার অধিকাংশ হাদিসই মুযতাবের । এই হাদিসটির তাহকীকঃ মুনকার

২০৬১. মুসলিম আল কুরাশী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি অথবা অন্য কোন ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে সবসময়ে সওম পালনের বিষয় জিজ্ঞেস করেছে। তখন তিনি বলেছেন, তোমার ওপর তোমার পরিবার-পরিজনের হক আছে। রমাযান [রমজান] মাসের সওম রাখো। আর রমাযান [রমজান] মাসের সাথের দিনগুলোতে রাখো। অর্থাৎ- ঈদুল ফিতরের পরের দিন থেকে ছয়টি সওম পালন কর। আর প্রত্যেক বুধ, বৃহস্পতিবার রাখতে পার। যদি তুমি এ দিনগুলো সওম রাখো তাহলে মনে করিবে যে, তুমি সব সময়ই সিয়াম রেখেছ।

[আবু দাউদ, তিরমিজি]{১}, 1] জইফ : আবু দাউদ ২৪৩২, নাসায়ী ২৪১৯, শুআবুল ঈমান ৩৫৮৬, জইফ আত তারগীব ৬৩৫, তিরমিজি ৭৪৮। কারণ এর সানাদে উবায়দুল্লাহ ইবনি মুসলিম একজন মাজহূল রাবী। এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস

২০৬২. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরাফার দিন আরাফার ময়দানে সওম রাখতে নিষেধ করিয়াছেন

। [আবু দাউদ]{১}. {১} জইফ : আবু দাউদ ২৪৪০, মুজামুল আওসাত্ব ২৫৫৬, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৮৩৮৯, যঈফাহ্ ৪০৪, জইফ আত তারগীব ৬১২, জইফ আল জামি ৬০৬৯। কারণ এর সানাদে মাহদী আল হাজারী একজন মাজহূল রাবী। এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস

২০৬৩. আবদুল্লাহ ইবনি বুসর হইতে বর্ণীতঃ

তার বোন সাম্মা হইতে বর্ণনা করিয়াছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা শনিবার দিন একান্ত প্রয়োজন না হলে সওম রেখ না। যদি কিছু না পাও তাহলে অন্ততঃ গাছের ছাল অথবা ডালপালা চিবিয়ে হলেও ইফতার করিবে।

[আহমদ, আবু দাউদ, তিরমিজি, ইবনি মাজাহ, দারিমী]{১}, {১} সহীহ : আবু দাউদ ২৪২১, তিরমিজি ৭৪৪, ইবনি মাজাহ ১৭২৬, আহমাদ ১৭৬৮৬, দারিমী ১৭৯০, সহীহ ইবনি খুযায়মাহ্ ২১৬৩, মুজামুল কাবীর লিত্ব ত্ববারানী ৮১৮, সহীহ ইবনি হিববান ৩৬১৫, ইরওয়া ৯৬০, সহীহ আত তারগীব ১০৪৯। নফল সিয়াম -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

২০৬৪. আবু উমামাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আল্লাহর পথে একদিন সওম রাখবে, আল্লাহ তাআলা তার ও জাহান্নামের মধ্যে এমন একটা পরিখা আড় হিসেবে বানিয়ে দেবেন যা আসমান ও জমিনের মধ্যে দূরত্বের সমান হবে।

[তিরমিজি]{১}, {১} হাসান সহীহ : তিরমিজি ১৬২৪, মুজামুল কাবীর লিত্ব ত্ববারানী ৭৯২১, সহীহাহ্ ৫৬৩, সহীহ আত তারগীব ৯৯১, সহীহ আল জামি ৬৩৩৩। এই হাদিসটির তাহকীকঃ হাসান সহীহ

২০৬৫. আমির ইবনি মাস্ঊদ [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ ঠাণ্ডা গনীমাত [অর্থাৎ- বিনা কষ্ট-ক্লেশে সাওয়াব পাওয়া] শীতের দিনে সওম পালন করা।

{আহমদ ও তিরমিজি;{১} ঈমাম তিরমিজি [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, হাদিসটি মুরসাল।], {১} সহীহ : তিরমিজি ৭৯৭, আহমাদ ১৮৯৫৯, সহীহ ইবনি খুযায়মাহ্ ২১৪৫, সহীহাহ্ ১৯২২, সহীহ আল জামি ৩৮৬৮। তবে আহমাদ এবং সহীহ ইবনি খুযায়মাহ্-এর সানাদটি দুর্বল। কারণ কারো কারো নিকট আমির ইবনি মাস্ঊদ সাহাবী নন, বরং তাবিঈ। নফল সিয়াম -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

২০৬৬. আর আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

এর বর্ণিত হাদিস [তিরমিজির] কুরবানীর অধ্যায়ে উল্লেখ করা হয়েছে যে, এমন কোন দিন নেই যা আল্লাহর নিকট অধিক প্রিয়।{১}

{১} জইফ : এর তাখরীজ ১৪৭১ নং-এ অতিবাহিত হয়েছে। এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস

অধ্যায়ঃ ৬. তৃতীয় অনুচ্ছেদ

২০৬৭. ইবনি আব্বাস হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাদীনায় গমন করার পর দেখলেন ইয়াহূদীরা আশূরার দিন সওম রাখে। রাসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] তাদের জিজ্ঞেস করিলেন, এ দিনটার বৈশিষ্ট্য কি যে, তোমরা সওম রাখো? তারা বলিল, এটা একটি গুরুত্ববহ দিন। এ দিনে আল্লাহ তাআলা মূসা [আঃ] ও তাহাঁর জাতিকে মুক্তি দিয়েছেন। আর ফির্আওন ও তার জাতিকে [সমুদ্রে] ডুবিয়েছেন। মূসা [আঃ] শুকরিয়া হিসেবে এ দিন সওম রেখেছেন। অতএব তাহাঁর অনুসরণে আমরাও রাখি। এ কথা শুনে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ দ্বীনের দিক দিয়ে আমরা মূসার বেশী নিকটে আর তার তরফ থেকে শুকরিয়া আদায়ের ব্যাপারে তোমাদের চেয়ে আমরা বেশী হকদার। বস্তুত আশূরার দিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেও সওম রেখেছেন অন্যদেরকেও রাখার হুকুম দিয়েছেন।

[বোখারী, মুসলিম]{১}, {১} সহীহ : বোখারী ২০০৪, মুসলিম ১১৩০, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৮৬৯৭, ইবনি মাজাহ ১৭৩৪, আহমাদ ৩১১২, সহীহ ইবনি হিববান ৩৬২৫। নফল সিয়াম -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

২০৬৮. উম্মু সালামাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অন্যান্য দিন সওম রাখার চেয়ে শনি ও রবিবার দিন বেশী রাখতেন। তিনি বলিতেন, এ দু দিন মুশরিকদের ঈদের দিন। তাই আমি তাদের বিপরীত কাজ করিতে ভালবাসি।

[আহমদ]{১}, {১} জইফ : আহমাদ ২৬৭৫০, ইবনি খুযায়মাহ্ ২১৬৭, ইবনি হিববান ৯৪১, জইফ আত তারগীব ৬৩৯। কেননা মুহাম্মাদ ইবনি উমার একজন অপ্রসিদ্ধ রাবী। যেমনটি আলবানী [রাহিমাহুল্লাহ] সিলসিলাহ্ আয্ যঈফাহ্-তে বলেছেন।এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস

২০৬৯. জাবির ইবনি সামুরাহ্ হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রথম প্রথম আমাদেরকে আশূরার দিন সওম রাখার হুকুম দিয়েছেন। এর প্রতি অনুপ্রেরণা যুগিয়েছেন; এ দিন আসার সময় আমাদের খোঁজ-খবর নিয়েছেন। কিন্তু রমাযানের সওম ফরয হবার পর তিনি [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] আর আমাদেরকে এ দিনের সওম রাখতে না হুকুম দিয়েছেন, না নিষেধ করিয়াছেন। আর এ দিন এলে আমাদের না কোন খোঁজ-খবর নিয়েছেন

। [মুসলিম]{১}, {১} সহীহ : মুসলিম ১১২৮, ইবনি আবী শায়বাহ্ ৯৩৫৮, আহমাদ ২০৯০৮, মুজামুল কাবীর লিত্ব ত্ববারানী ১৮৬৯, সুনানুল কাবীর লিল বায়হাক্বী ৮৪১৩। নফল সিয়াম -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

২০৭০. হাফসা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, চারটি জিনিস এমন আছে যা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছাড়তেন না। ১. আশূরার সওম। ২. যিলহজ মাসের প্রথম নয় দিনের সওম। ৩. প্রতি মাসের তিনদিন সওম। ৪. আর ফজরের [ফরযের] আগের দু রাক্আত [সুন্নাত] নামাজ।

[নাসায়ী]{১}, {১} জইফ : নাসায়ী ২৪১৬, আহমাদ ২৬৪৫৯, মুজামুল কাবীর ৩৫৪, ইরওয়া ৯৫৪। কারণ এর সানাদে আবু ইসহাকব আল আশ্জাঈ একজন মাজহূল রাবী। এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস

২০৭১. ইবনি আব্বাস হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আইয়ামে বীয-এ সফরে অথবা মুকীম অবস্থায় সওম ছাড়া থাকতেন না।

[নাসায়ী]{১}, {১} সানাদ জইফ : নাসায়ী ২৩৪৫, সিলসিলাহ্ আস্ সহীহাহ্ ৫৮০, সহীহ আল জামি ৪৮৪৮। এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস

২০৭২. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ প্রত্যেক জিনিসেরই যাকাত আছে। শরীরের যাকাত হলো সওম।

[ইবনি মাজাহ]{১}, {১} জইফ : ইবনি মাজাহ ১৭৪৫, ইবনি আবী শায়বাহ্ ৮৯০৮, যঈফাহ্ ১৩২৯, জইফ আত তারগীব ৫৭৯, জইফ আল জামি ৪৭২৩। কারণ এর সানাদে মূসা ইবনি উবায়দাহ্ সর্বসম্মতিক্রমে একজন দুর্বল রাবী। এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস

২০৭৩. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সোমবার ও বৃহস্পতিবার সওম রাখতেন। তাহাঁর কাছে আরয করা হলো, হে আল্লাহর রসূল! আপনি অধিকাংশ সময়ই সোম ও বৃহস্পতিবার সওম রাখেন। তিনি [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বললেন, সোম ও বৃহস্পতিবার হলো ঐ দিন, যেদিন আল্লাহ তাআলা প্রত্যেক মুসলিমকে মাফ করে দেন। কিন্তু ওদেরকে মাফ করে দেন না যারা সম্পর্কচ্ছেদ করে রাখে। তাদের ব্যাপারে আল্লাহ তাআলা মালায়িকাহ্ [ফেরেশতা]-কে [ফেরেশতাগণকে] বলেন, ওদেরকে ছেড়ে দাও যে পর্যন্ত তারা পরস্পর সম্পর্ক ঠিক করে নেয় [এরপর তাদেরকে মাফ করে দেয়া হবে]।

[আহমদ, ইবনি মাজাহ]{১}, {১} সহীহ : ইবনি মাজাহ ১৭৪০, সহীহ আল জামি ২২৭৮, সহীহ আত তারগীব ১০৪২। নফল সিয়াম -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস

২০৭৪. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় সওম রাখে, আল্লাহ তাআলা তাকে জাহান্নাম থেকে ওই উড়তে থাকা কাকের দূরত্বের পরিমাণ দূরে রাখবেন, যে কাক বাচ্চা অবস্থায় উড়তে শুরু করে বৃদ্ধ অবস্থায় মারা যায়।

[আহমদ, বায়হাক্বী]{১}, {১} জইফ : আহমাদ ১০৪২৭, সিলসিলাহ্ আয্ যঈফাহ্ ১৩৩০। কারণ এর সানাদে লাহ্ইআহ্-এর উস্তায একজন অপরিচিত রাবী। আর লাহ্ইআহ্-কে ইবনুল কত্ত্বান মাজহূলুল হাল বলেছেন। এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস

২০৭৫. সালামাহ্ ইবনি কায়স হইতে বর্ণীতঃ

হইতে শুআবুল ঈমান-এ এটি বর্ণনা করিয়াছেন।{১}

{১} জইফ : শুআবুল ঈমান ৩৩১৮। কারণ এর সানাদে رجل যার নাম আমর ইবনি রবীআহ্ একজন মাজহূল রাবী আর লাহ্ইআহ্-এর উস্তায একজন অপরিচিত রাবী। এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস


Posted

in

by

Comments

Leave a Reply