নফল নামাজ ও সুন্নাত নামাজ সমুহের এর নিয়ম কানুন
নফল নামাজ ও সুন্নাত নামাজ সমুহের এর নিয়ম কানুন , এই অধ্যায়ে মোট হাদীস ১২১ টি (১২৫০ – ১৩৭০) >>আবুদ দাউদ শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন
অধ্যায়ঃ ৫, অনুচ্ছেদঃ ২৯০-৩০৫=১৬টি
অনুচ্ছেদ-২৯০ নফল ও সুন্নাত নামাজের রাকআত সংখ্য
অনুচ্ছেদ-২৯১ ফাজরের দু রাকআত (সুন্নাত )
অনুচ্ছেদ-২৯২ ফাজ্রের দু রাকআত সুন্নাত সংক্ষেপ করা
অনুচ্ছেদ-২৯৩ ফাজরের সুন্নাতের পর বিশ্রাম গ্রহণ
অনুচ্ছেদ–২৯৪ ফাজরের সুন্নাত আদায়ের পূর্বে ঈমামকে জামাআতে পেলে
অনুচ্ছেদ-২৯৫ ফাজরের সুন্নাত ছুটে গেলে তা কখন আদায় করিবে?
অনুচ্ছেদ-২৯৬ যুহরের পূর্বে ও পরে চার রাকআত নামাজ
অনুচ্ছেদ- ২৯৭ আসরের ফারয্ নামাজের পূর্বে নামাজ
অনুচ্ছেদ-২৯৮ আসরের পর নামাজ আদায়
অনুচ্ছেদ-২৯৯ সূর্য উপরে থাকতে দু রাকআত নামাজের অনুমতি
অনুচ্ছেদ-৩০০ মাগরিবের পূর্বে নফল নামাজ
অনুচ্ছেদ-৩০১ সালাতুদ্- দুহা (চাশতের নামাজ)
অনুচ্ছেদ-৩০২ দিনের নফল নামাজ এর বর্ণনা
অনুচ্ছেদ-৩০৩ সলাতুত তাসবীহ
অনুচ্ছেদ- ৩০৪ মাগরিবের দু রাকআত (সুন্নাত) কোথায় আদায় করিবে
অনুচ্ছেদ–৩০৫ ইশার ফার্য নামাজের পর নফল নামাজ
অনুচ্ছেদ-২৯০ নফল ও সুন্নাত নামাজের রাকআত সংখ্য
১২৫০. উম্মু হাবীবা (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি দৈনিক বারো রাকআত নফল নামাজ আদায় করিবে এর বিনিময়ে তার জন্য জান্নাতে একখানা ঘর নির্মান করা হইবে।
নফল নামাজ ও সুন্নাত নামাজ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১২৫১. আবদুল্লা ইবনি শাক্বীক্ব (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন আমিআয়েশা (রাঃআঃ) কে রসূলুল্লাহর (সাঃআঃ) নফল নামাজ সর্ম্পকে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, তিনি আমার ঘরে যুহরের (ফরয নামাজের) পুর্বে চার রাকআত নামাজ আদায় করেন। অতঃপর বাইরে গিয়ে লোকদেরকে নিয়ে ফরয নামাজ আদায় করতেন। পুনরায় আমার ঘরে ফিরে এসে দু রাকআত নামাজ আদায় করেন। তিনি লোকদেরকে নিয়ে ইশার নামাজ আদায় করার পর আমার ঘরে এসে দু রাকআত নামাজ আদায় করেন। তিনি লোকদের নিয়েইশার নামাজ আদায়ের পর আমার ঘরে এসে দু রাকআত নামাজ আদায় করতেন। এছাড়া তিনি রাতে বিতরসহ নয় রাকআত নামাজ আদায় করতেন। তিনি রাতে দীর্ঘক্ষন দাঁড়িয়ে এবং দীর্ঘক্ষন বসে নামাজ আদায় করতেন। যখন তিনি দাঁড়িয়ে ক্বিরাআত পড়তেন ঐ অবস্থায়ই রুকু ও সাজদাহ্ করতেন আর বসাবস্থায় ক্বিরাআত পড়লে বসাবস্থায় থেকেই রুকু ও সাজদাহ্ করতেন। যখন ফাজ্র উদয় হতো তিনি দু রাকআত নামাজ আদায় করতেন। অতঃপর বের হয়ে লোকদেরকে নিয়ে ফাজ্রের নামাজ আদায় করতেন।
সহীহঃ মুসলিম। নফল নামাজ ও সুন্নাত নামাজ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১২৫২. আবদুল্লা ইবনি উমার (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) যুহরের (ফারয নামাজের) পুর্বে দু রাকআত ও পরে দু রাকআত, মাগরিবের পরে দু রাকআত নামাজ তাহাঁর ঘরে আদায় করতেন। তিনি ইশার পরে দু রাকআত নামাজ আদায় করতেন। আর জুমুআহর (ফারয নামাজের) পরে ঘরে এসে দু রাকআত আদায় করতেন।
সহীহঃ বোখারি, মুসলিমে কেবল জুমুআহর পরে দু রাকআত । নফল নামাজ ও সুন্নাত নামাজ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১২৫৩. আয়েশা (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) যুহরের পূর্বে চার রাকআত ও ফজরের পূর্বে দু রাকআত নামাজ কখনও ত্যাগ করতেন না।
সহীহঃ বোখারি। নফল নামাজ ও সুন্নাত নামাজ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-২৯১ ফাজরের দু রাকআত (সুন্নাত )
১২৫৪. আয়েশা (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) ফাজরের পূর্বে দু রাকআত নামাজের চেয়ে অধিক দৃঢ় প্রত্যয় অন্য কোন নফল নামাজে রাখেননি।
সহীহঃ বোখারি ও মুসলিম। নফল নামাজ ও সুন্নাত নামাজ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-২৯২ ফাজ্রের দু রাকআত সুন্নাত সংক্ষেপ করা
১২৫৫. আয়েশা (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) ফাজরের পুর্বে দু রাকআত নামাজ এতো সংক্ষেপে আদায় করতেন যে , আমি (মনে মনে ) বলতাম, তিনি কি এ দু রাকআতে সূরাহ ফাতিহা পাঠ করিয়াছেন?
সহীহঃ বোখারি ও মুসলিম। নফল নামাজ ও সুন্নাত নামাজ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১২৫৬. আবু হুরাইরা (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃআঃ) ফাজরের দু রাকআত (সুন্নাতে)ক্বুল ইয়া- আয়্যুহাল কা-ফিরু-ন এবং ক্বুল হুওয়াল্লা-হু আহাদ সূরাদ্বয় তিলাওয়াত করতেন।
সহীহঃ মুসলিম। নফল নামাজ ও সুন্নাত নামাজ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১২৫৭. বিলাল (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
একদা তিনি রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ)-কে ফাজ্রের নামাজের সংবাদ দিতে আসলে আয়েশা (রাঃআঃ) বিলালকে কোন বিষয়ে প্রশ্ন করে তাকে তাতেই ব্যস্ত রাখলেন, এমতাবস্থায় আকাশ পরিষ্কার হয়ে গেলো। বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর বিলাল (রাঃআঃ) এসে নাবী (সাঃআঃ)-কে বারবার সংবাদ দেয়া স্বত্বেও তিনি বাইরে আসলেন না। অতঃপর কিছুক্ষণ পর বাইরে এসে লোকদেরকে নিয়ে নামাজ আদায় করিলেন। তিনি তাঁকে জানালেন যে, আয়েশা (রাঃআঃ) তাকে কোন এক কাজে ব্যস্ত রেখেছিলেন এবং তিনি (সাঃআঃ)-ও বাইরে আসতে যথেষ্ট দেরী করিয়াছেন, এমতাবস্থায় আকাশ পরিষ্কার হয়ে যায়। অতঃপর (বিলম্ব হওয়ার কারণ সম্পর্কে) নাবী (সাঃআঃ) বললেনঃ আমি ফাজরের দু রাকআত (সুন্নাত) নামাজ আদায় করেছি। বিলাল বলিলেন, হে আল্লাহর রসূল! আপনিও আজ খুব ভোর করে ফেলেছেন। তিনি বললেনঃ আমি এর চেয়ে অধিক ভোর করলেও ঐ দুরাকআত আদায় করবো এবং তা উত্তম সুন্দরভাবে আদায় করবো।
নফল নামাজ ও সুন্নাত নামাজ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১২৫৮. আবু হুরাইরাহ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ তোমরা ফাজরের দুরাকআত কখনো ত্যাগ করো না, যদিও তোমাদেরকে ঘোড়া পদদলিত করলেও।
{১২৬১} আহমাদ (হাঃ ৯২৪২) খালিদ হইতে। এর সানাদ দুর্বল। সানাদে আবদুর রহমান ইবনি ইসহাক্ব জমরুর ঈমামগণের নিকট দুর্বল। নফল নামাজ ও সুন্নাত নামাজ হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১২৫৯. আবদুল্লা ইবনি আব্বাস (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) অধিকাংশ সময় ফাজরের দু রাকআতে “আমান্না বিল্লাহি ওয়ামা উনজিলা ইলাইনা” (সূরাহ আল-বাকারাহঃ ১৩৬) এ আয়াতটি তিলাওয়াত করতেন। তিনি বলেন, তবে এ আয়াতটি প্রথম রাকআতে পাঠ করতেন। আর দ্বিতীয় রাকআতে পাঠ করতেনঃ “আমান্না বিল্লাহি ওয়াশহাদ বিআন্না মুসলিমূন” (সূরাহ আলে-ইমরানঃ ৫২)।
সহীহঃ মুসলিমে এ কথা বাদেঃ অধিকাংশ সময়। নফল নামাজ ও সুন্নাত নামাজ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১২৬০. আবু হুরাইরাহ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি নাবী (সাঃআঃ)-কে ফাজ্রের দু রাকআতের প্রথম রাকআতে “কুল আমান্না বিল্লাহি ওয়ামা উনযিলাআলাইনা” (সূরাহ আলে ইমরানঃ ৮৪) তিলাওয়াত করতে শুনেছেন। আর দ্বিতীয় রাকআতে তিলাওয়াত করতে শুনেছেন এ আয়াতঃ “রব্বানা আমান্না বিমা আনযালতা ওয়াত্তাবানার রসূলা ফাক্তুবনা মাআশ শাহিদীন” (সূরাহ আলে-ইমরানঃ ৫৩) অথবা “ইন্না আরসালনাকা বিলহাক্কি বাশীরাও ওয়া নাযীরা, ওয়ালা তুসআলু আন আসহাবিল জাতীম” (সূরাহ আল-বাকারাহঃ ১১৯)।
হাসানঃ বায়হাক্বী এটি বর্ণনা করিয়াছেন তার এ কথাটি বাদেঃ অথবা “ইন্না আরসালনাকা বিলহাক্কি বাশীরাও ওয়া নাযীরা, ওয়ালা তুসআলু আন আসহাবিল জাতীম” (সূরাহ আল-বাকারাহঃ ১১৯) নফল নামাজ ও সুন্নাত নামাজ হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
অনুচ্ছেদ-২৯৩ ফাজরের সুন্নাতের পর বিশ্রাম গ্রহণ
১২৬১. আবু হুরাইরাহ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ তোমাদের কেউ ফাজরের পূর্বে দু রাকআত নামাজ আদায়ের পর যেন ডান কাতে শুয়ে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেয়। মারওয়ান ইবনিল হাকাম তাকে বললো, আমাদের কেউ যতক্ষণ ডান কাতে শুয়ে বিশ্রাম গ্রহণের সময়টুকুতে মসজিদে রওয়ানা হলে তাকি যথেষ্ট হইবে না?উবায়দুল্লাহ বর্ণনা করেন যে, তিনি উত্তরে বলেন,না। তিনি বলেন, ইবনি উমারের কাছে এ হাদিস পৌঁছুলে তিনি বলেন, আবু হুরাইরা (রাঃআঃ) নিজের প্রতি বাড়াবাড়ি করিয়াছেন। তখন কেউ ইবনি উমার (রাঃআঃ)-কে জিজ্ঞেস করলো, তিনি যা বলেছেন আপনি তার কিছু অস্বীকার করেন? তিনি বলেন, না, তবে তিনি সাহসিকতার পরিচয় দিচ্ছেন, আর আমরা ভীরুতা ও নমনীয়তা প্রকাশ করছি। বর্ণনাকারী বলেন, ইবনি উমারের উক্তিতে আবু হুরাইরা (রাঃআঃ) বলিলেন, তারা ভুলে গেলে এবং আমি স্মরণে রাখলে আমার দোষ কোথায়?
নফল নামাজ ও সুন্নাত নামাজ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১২৬২. আয়েশা (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) তাহাঁর শেষ রাতের নামাজ শেষ করার পর আমাকে জাগ্রত দেখলে আমার সাথে কথাবার্তা বলিতেন। যদি আমি ঘুমিয়ে থাকতাম তাহলে তিনি আমাকে জাগিয়ে দিয়ে দু রাকআত আদায় করতেন। অতঃপর মুয়ায্যিন আসা পর্যন্ত ডান কাতে শুয়ে থাকতেন। মুয়াযযিন এসে ফাজ্রের নামাজের সংবাদ দিলে তিনি সংক্ষেপে দু রাকআত আদায় করে নামাজের জন্য বের হইতেন।
সহীহঃ কিন্তু হাদিসেরমুয়াযযিন আসার পর্যন্ত ডান কাতে শুয়ে থাকা কথাটি শায। মাহফূয হচ্ছেঃ তার পরে। নফল নামাজ ও সুন্নাত নামাজ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১২৬৩. আবু সালামাহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,আয়েশা (রাঃআঃ) বলেছেন, নাবী (সাঃআঃ) ফাজ্রের দু রাকআত সুন্নাত আদায়ের পর আমি ঘুমিয়ে থাকলে তিনিও বিশ্রাম নিতেন। আর আমি জাগ্রত থাকলে তিনি আমার সাথে কথাবার্তা বলিতেন।
সহীহঃ বোখারি ও মুসলিম। নফল নামাজ ও সুন্নাত নামাজ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১২৬৪. মুসলিম ইবনি আবু বাকরাহ (রাঃআঃ) হইতে তাহাঁর পিতার সূত্রে হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নাবী (সাঃআঃ) এর সাথে ফাজ্রের নামাজের জন্য বের হতাম। তিনি কারোর নিকট দিয়ে যাবার সময় তাকে নামাজের জন্য আহ্বান করতেন অথবা তাহাঁর পা দিয়ে তাকে নাড়া দিতেন। {১২৬৭}
{১২৬৭} সুনান বায়হাকী (৩/৪৬) আবুল ফাযল হইতে। এর সানাদ দুর্বল। সানাদে আবুল ফাযল আনসারী সম্পর্কে হাফিযআত-তাক্বরীর গ্রন্থে বলেনঃ মাজহুল (অজ্ঞাত)। নফল নামাজ ও সুন্নাত নামাজ হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ–২৯৪ ফাজরের সুন্নাত আদায়ের পূর্বে ঈমামকে জামাআতে পেলে
১২৬৫. আবদুল্লা ইবনি সারজিস (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা নাবী (সাঃআঃ) ফাজ্রের নামাজ আদায় করছিলেন এমন সময় এক ব্যক্তি আগমন করলো। সে প্রথমে দু রাকআত সুন্নাত আদায় করার পর নাবী (সাঃআঃ) এর সাথে নামাজে শরীক হলো। নামাজ শেষে তিনি জিজ্ঞেস করলেনঃ হে অমুক! তোমার একাকী আদায়কৃত ঐ দু রাকআত নামাজ কিসের অথবা তুমি আমাদের সাথে যা আদায় করেছো?
সহীহঃ মুসলিম. নফল নামাজ ও সুন্নাত নামাজ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১২৬৬. আবু হুরাইরাহ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ নামাজের ইক্বামাত দেয়া হলে উক্ত ফরয নামাজ ছাড়া অন্য কোন নামাজ আদায় করা যাবে না।
সহীহঃ মুসলিম। নফল নামাজ ও সুন্নাত নামাজ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-২৯৫ ফাজরের সুন্নাত ছুটে গেলে তা কখন আদায় করিবে?
১২৬৭. ক্বায়িস ইবনি আমর (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন একদা রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) ফাজরের নামাজের পর এক ব্যাক্তিকে দু রাকআত আদায় করতে দেখে বলেনঃ ফজরের নামাজ তো দু রাকআত। সে বলিল, আমি তো ফজরের পূর্বে যে দু রাকাআত আদায় করিনি, সেটাই এখন আদায় করে নিলাম। তখন রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) নীরব থাকলেন।
নফল নামাজ ও সুন্নাত নামাজ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১২৬৮. সুফয়ান (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
তিনিআত্বা ইবনি আবু রাবাহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) এ হাদিস সাদ ইবনি সাঈদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) সূত্রে বর্ণনা করিয়াছেন। ঈমাম আবু দাউদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, সাদ এর দুই পুত্রআবদ রাব্বিহী ও ইয়াহইয়া এ হাদিস মুরসাল হিসেবে বর্ণনা করিয়াছেন। তাহাঁদের দাদা যায়িদ (রাঃআঃ) নাবী (সাঃআঃ) এর সাথে নামাজ আদায় করিয়াছেন এবং ঘটনাটি তার সাথে সংশ্লিষ্ট।
সহীহঃ পূর্বেরটির কারনে। এবং তার উক্তিঃ (তাহাঁদের দাদা যায়িদ) কথাটি ভুল। সঠিক হচ্ছেঃ (তাহাঁদের দাদা ক্বায়িস)। (১২৫৪-১২৬৮ নং) হাদিসসমূহ হইতে শিক্ষাঃ ১। সুন্নাত সমূহের মধ্যে ফাজরের দু রাকআত খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ২। ফজরের সুন্নাত সংক্ষেপে কিন্তু সুন্দরভাবে আদায় করতে হয়। ৩। এতে সূরাহ কাফিরুন ও ইখলাস পড়া সুন্নাত। ৪। ফাজরের ফারয্ নামাজের পূর্বে সুন্নাত পড়তে না পারলে ফারযের পরে আদায় করিবে। ৫। ফাজরের সুন্নাত বাড়িতে আদায় করা সুন্নাত। ৬। ফাজরের সুন্নাত আদায়ের পর কাত হয়ে বিশ্রাম নেয়া সুন্নাত।৭। ফাজরের সুন্নাত আদায়ের পর কারো সাথে কথা বলা জায়িজ আছে। ৮। কেউ মাসজিদে এসে ঈমামকে ফাজরের জামাআতে পেলে তখন সুন্নাত পড়বে না বরং জামাআতে শরীক হইবে। ছুটে যাওয়া সুন্নাত জামাআতের পরে আদায় করিবে। ৯। ফাজরের আজান শেষে নামাজের জন্য কাউকে জাগিয়ে দেয়া এবং কারো সম্মুখ দিয়ে যাওয়ার সময় নামাজের জন্য আহবান করা জায়িজ। ১০। ফাজরের নামাজ আদায়ের জন্য মাসজিদে আসার পূর্বে স্বীয় পরিবারকেও জাগিয়ে দিবে। নফল নামাজ ও সুন্নাত নামাজ হাদিসের তাহ কঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-২৯৬ যুহরের পূর্বে ও পরে চার রাকআত নামাজ
১২৬৯. আনবাসাহ ইবনি আবু সুফয়ান (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) এর স্ত্রী উম্মু হাবিবাহ (রাঃআঃ) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি নিয়মিতভাবে যুহরের পূর্বে চার রাকআত এবং পরে চার রাকআত নামাজ আদায় করিবে, তার জন্য জাহান্নাম হারাম করা হইবে।
নফল নামাজ ও সুন্নাত নামাজ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১২৭০. আবু আইয়ূব (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃআঃ) বলেনঃ যুহরের পূর্বে এক সালামে চার রাকআত নামাজ রহিয়াছে, এগুলোর জন্য আকাশের সকল দরজা খুলে দেয়া হয়।
নফল নামাজ ও সুন্নাত নামাজ হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
অনুচ্ছেদ- ২৯৭ আসরের ফারয্ নামাজের পূর্বে নামাজ
১২৭১.ইবনি উমার (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ আল্লাহ এমন ব্যক্তির উপর অনুগ্রহ করেন, যে আসরের পূর্বে চার রাকআত নামাজ আদায় করে।
নফল নামাজ ও সুন্নাত নামাজ হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
১২৭২.আলী (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃআঃ)আসরের পূর্বে দু রাকআত নামাজ আদায় করতেন।
হাসান, তবে (চার রাকআত) শব্দযোগে। নফল নামাজ ও সুন্নাত নামাজ হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
অনুচ্ছেদ-২৯৮ আসরের পর নামাজ আদায়
১২৭৩. ইবনি আব্বাস (রাঃআঃ) এর মুক্তদাস কুরাইব (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
একদা আব্দুল্লাহ ইবনি আব্বাস ,আব্দুর রহমান ইবনি আযহার ও আল-মিসওয়ার ইবনি মাখরামাহ (রাঃআঃ) সকলেই তাকে নাবী (সাঃআঃ) এর স্ত্রীআয়েশা (রাঃআঃ) এর কাছে প্রেরণ করেন। (তারা তাকে বলিলেন), আমাদের পক্ষ হইতে আয়েশাকে সালাম জানাবে, তাঁকে আসরের পরে দু রাকআত নামাজ সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করিবে এবং বলবে যে, আমাদের জানতে পেরেছি, আপনি ঐ দু রাকআত নামাজ আদায় করে থাকেন। অথচ আমাদের কাছে সংবাদ পৌঁছেছে যে, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) তা পড়তে নিষেধ করিয়াছেন। (বর্ণনাকারী কুরাইব বলেন), অতঃপর আমি তাহাঁর কাছে যাই এবং তারা আমাকে যে সংবাদসহ পাঠিয়েছেন, তা পৌঁছাই। তিনি বলিলেন, এ বিষয়ে উম্মু সালামাহ (রাঃআঃ) কে জিজ্ঞেস করো। সুতরাং আমি তাহাঁদের নিকট ফিরে এসে তার বক্তব্য তাহাঁদেরকে জানাই। তারা আমাকে পুনরায় উম্মু সালামহ (রাঃআঃ) এর নিকট আয়েশার অনুরুপ সংবাদসহ পাঠালেন। উমু সালামাহ (রাঃআঃ) বলিলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) এ দু রাকআতকে যে নিষেধ করিয়াছেন, তা আমিও শুনিয়াছি। কিন্তু পরবর্তীতে আমি তাকে এ দু রাকআত আদায় করতে দেখেছি। তবে তিনি এ দু রাকআত আদায় করিয়াছেন আসরের (ফারয) নামাজের পরে। অতঃপর তিনি যখন আমার কাছে আসেন, তখন আনসারের বনি হারাম গোত্রীয় কতিপয় মহিলা আমার কাছে উপস্থিত ছিল। তিনি সে সময় তা আদায় করিয়াছেন। আমি আমার এক দাসীকে তাহাঁর কাছে এ বলে প্রেরণ করি যে, তুমি তাহাঁর পাশে দাঁড়িয়ে তাঁকে বলবে, হে আল্লাহর রাসূল! উম্মু সালামাহ (রাঃআঃ) এ দু রাকআত নামাজ সম্পর্কে আপনাকে নিষেধ করতে শুনেছেন। অথচ এখন তিনি দেখেছেন যে, আপনি তা নিজেই আদায় করিয়াছেন। এ সময় তিনি হাত দিয়ে ইশারা করলে তাহাঁর থেকে সরে দাঁড়াবে। তিনি বলেন, দাসী তাই করলো। তিনি তাকে হাত দ্বারা ইঙ্গিত করায় সে সরে দাঁড়ালো। অতঃপর তিনি নামাজ শেষে বললেনঃ হে আবু উমাইয়্যার কন্যা! তুমি আমাকে আসরের পরে দু রাকআত নামাজ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেছো। ইসলাম গ্রহনের উদ্দেশে আবদুল ক্বায়িস গোত্রীয় কতিপয় লোক আমার নিকট আসার কারনে আমি যুহরের দু রাকআত আদায় করতে পারিনি। এটা সেই দু রাকআত।
সহীহঃ মুসলিম ও বোখারি। নফল নামাজ ও সুন্নাত নামাজ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-২৯৯ সূর্য উপরে থাকতে দু রাকআত নামাজের অনুমতি
১২৭৪. আলী (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃআঃ) আসরের পর নামাজ আদায় করতে নিষেধ করিয়াছেন। অবশ্য সূর্য উঁচুতে থাকাবস্থায় আদায় করা যায়।
নফল নামাজ ও সুন্নাত নামাজ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১২৭৫. আলী (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) ফায্র ও আসর ব্যতীত প্রত্যেক ফরয নামাজের পরে দু রাকআত নামাজ আদায় করতেন। {১২৭৮}
{১২৭৮} আহমাদ (হাঃ ১০১২) শায়খ আহমাদ শাকির বলেনঃ এর সানাদ সহিহ। ইবনি খুযাইমাহ (হাঃ ১১৯৬) সূফয়ান হইতে। নফল নামাজ ও সুন্নাত নামাজ হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১২৭৬. ইবনি আব্বাস (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, কতিপয় আল্লাহর প্রিয় লোক আমার কাছে সাক্ষ্য দেন,উমার ইবনিল খাত্তাব (রাঃআঃ) ছিলেন তাহাঁদের একজন। মুলতঃ আমার নিকট উমার (রাঃআঃ) ছিলেন তাহাঁদের মধ্যেকার অধিক আল্লাহর প্রিয়। নাবী (সাঃআঃ) বলেছেন ফায্রের পর সূর্যোদয় পর্যন্ত কোনো নামাজ নেই এবংআসরের পর সূর্যাস্ত পর্যন্ত কোনো নামাজ নেই।
সহীহঃ বোখারি ও মুসলিম। নফল নামাজ ও সুন্নাত নামাজ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১২৭৭. আমর ইবনি আনবাসাহ আস-সুলামী (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি জিজ্ঞেস করলাম,হে আল্লাহর রসূল! রাতের কোন অংশ অধিক শ্রবণীয় (অর্থাৎ আল্লাহ দুআ বেশি কবুল করেন)? তিনি বলেনঃ রাতের শেষাংশ, এ সময় যতটুকু ইচ্ছা নামাজ আদায় করিবে। কেননা এ সময়ে মালায়িকাহ (ফেরেশতাগণ) এসে ফাজরের নামাজ শেষ হওয় পর্যন্ত উপস্থিত থাকেন এবং লিপিবদ্ধ করেন। অতঃপর সূর্য উঠা পর্যন্ত নামাজ হইতে বিরত থাকিবে, যতক্ষণ না তা এক কিংবা দুই তীর পরিমাণ উপরে উঠে। কারণ সূর্য উদিত হয় শাইত্বানের দুই শিংয়ের মধ্য দিয়ে। আর কাফিররা এ সময় তার পূজা করে থাকে। এরপর তীরের ছায়া ঠিকথাকা (দ্বি প্রহরের পূর্বে) পর্যন্ত যত ইচ্ছা নামাজ আদায় করিবে, এ সময়ের নামাজ সম্পর্কে ফেরেশতাগণ সাক্ষ্য দিয়ে থাকেন এবং তা লিপিবদ্ধ করেন। অতঃপর নামাজ হইতে বিরত থাকিবে, কেননা এ সময় জাহান্নাম উত্তপ্ত করা হয় এবং তার সমস্ত দরজা খুলে দেয়া হয়। যখন সূর্য পশ্চিমাকাশে হেলে পড়বে তখন যত ইচ্ছা নামাজ আদায় করিবে, কেননা আসরের নামাজ পর্যন্ত এ সময়ের মধ্যকার নামাজ সম্পর্কে সাক্ষ্য দেয় হয়। অতঃপর সূর্য অস্ত যাওয়া পর্যন্ত নামাজ হইতে বিরত থাকিবে, কেননা তা শাইত্বানের দুই শিংয়ের মধ্যে দিয়ে অস্ত যায় এবং এ সময় কাফিররা তার উপাসনা করে থাকে। অতঃপর বর্ণনাকারী এ বিষয়ে দীর্ঘ হাদিস বর্ণনা করেন।
আল-আব্বাস (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন,আবু উমামাহ (রাঃআঃ) হইতে আবু সাললাম (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) আমার কাছে অনুরূপ হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন। তবে তাতে আমি অনিচ্ছাকৃত কিছু ভুল করেছি, সেজন্যে আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই এবং তাহাঁরই কাছে তাওবাহ করি।
সহীহঃ মুসলিম এ বাক্য বাদে জাওফুল লাইল। নফল নামাজ ও সুন্নাত নামাজ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১২৭৮. ইবনি উমার (রাঃআঃ) এর মুক্তদাস ইয়াসার (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা ইবনি উমার (রাঃআঃ) আমাকে সুবহি সাদিকের পর নামাজ আদায় করতে দেখে বলিলেন, হে ইয়াসার! রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) আমাদের নিকট আসলেন। ঠিক ঐ সময় আমরা এ নামাজ আদায় করছিলাম। তিনি বললেনঃ অবশ্যই তোমাদের উপস্থিতরা যেন অনুপস্থিতদের কাছে পৌঁছিয়ে দেয় যে সুবহি সাদিকের পর (ফজরের) দুরাকআত সুন্নাত ব্যতীত তোমরা অন্য কোন নামাজ আদায় করিবে না।
সহিহঃ মুসলিম। নফল নামাজ ও সুন্নাত নামাজ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১২৭৯. আল-আসওয়াদ ও মাসরূক (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) সূত্র হইতে বর্ণিতঃ
তারা উভয়ে বলেন, আমরা আয়েশা (রাঃআঃ) সম্পর্কে সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, তিনি বলেছেন, নাবী (সাঃআঃ) যে দিনই আমার কাছে আসতেন, তখন তিনি আসরের পর দু রাকআত নামাজ আদায় করতেন।
সহিহঃ বোখারি ও মুসলিম। নফল নামাজ ও সুন্নাত নামাজ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১২৮০. আয়িশা (রাঃআঃ) এর মুক্তদাস যাকওয়ান (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি তাকে বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) নিজে আসরের পরে নামাজ আদায় করতেন, তবে লোকদেরকে নিষেধ করতেন এবং তিনি বিরতিহীনভাবে (বহুদিন) সওম পালন করতেন, কিন্ত অন্যদেরকে বিরতিহীনভাবে সওম পালনে নিষেধ করতেন। {১২৮৩}
{১২৮৩} আবু দাউদ এটি এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। সানাদে মুহাম্মাদ ইবনি ইসহাক্ব একজন মুদাল্লিস এবং তিনি এটি আন্ আন শব্দে বর্ণনা করিয়াছেন। নফল নামাজ ও সুন্নাত নামাজ হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-৩০০ মাগরিবের পূর্বে নফল নামাজ
১২৮১. আব্দুল্লাহ আল-মুযানী (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ তোমরা মাগরিবের পূর্বে দু রাকআত নামাজ আদায় করো। তিনি দু বার এরূপ বলিলেন। অতঃপর বলিলেন, যার ইচ্ছা হয়। এ আশংকায় যে লোকেরা হয়ত এটাকে সুন্নাত (বা স্থায়ী নিয়ম) বানিয়ে নিবে।
সহীহঃ বোখারি, নফল নামাজ ও সুন্নাত নামাজ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১২৮২. আনাস ইবনি মালিক (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) এর যুগে মাগরিবের পূর্বে দু রাকআত নামাজ আদায় করেছি। মুখতার ইবনি ফুলফুল (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, আমি আনাস (রাঃআঃ)-কে জিজ্ঞেস করি, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) আপনাদের নামাজ আদায় করতে দেখেছেন কি? তিনি বলিলেন, হাঁ, তিনি আমাদেরকে দেখেছেন। তবে তিনি আমাদেরকে এ বিষয় কোন আদেশ বা নিষেধ করেননি।
সহিহঃ মুসলিম, অনুরূপ বোখারি। নফল নামাজ ও সুন্নাত নামাজ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১২৮৩. আব্দুল্লাহ ইবনি মুগাফফাল (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ প্রত্যেক দুই আযানের মধ্যবর্তী সময়ে নামাজ রহিয়াছে। প্রত্যেক দুই আযানের মধ্যবর্তী সময়ে নামাজ রহিয়াছে, যার ইচ্ছে হয় পড়তে পারে।
সহিহ ঃ বোখারি ও মুসলিম। নফল নামাজ ও সুন্নাত নামাজ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১২৮৪. তাঊস (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ইবনি উমার (রাঃআঃ)-কে মাগরিবের পূর্বে দু রাকআত নামাজ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) এর যুগে আমি কাউকে এ নামাজ আদায় করতে দেখিনি। তবে আসরের পরে দু রাকআত নামাজ আদায়ের অনুমতি আছে। {১২৮৭}
{১২৮৭} আবু দাউদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) এটি এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। এর সানাদ দুর্বল। নফল নামাজ ও সুন্নাত নামাজ হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-৩০১ সালাতুদ্- দুহা (চাশতের নামাজ)
১২৮৫. আবু যার (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃআঃ) বলেনঃ আদম সন্তানের শরীরের প্রতিটি অস্থি প্রতিদিন নিজের উপর সদাক্বাহ ওয়াজিব করে। কারোর সাক্ষাতে তাকে সালাম দেয়া একটি সদাক্বাহ। সৎ কাজের আদেশ একটি সদাক্বাহ, অন্যায় হইতে নিষেধ করা একটি সদাক্বাহ। রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক বস্তু সরিয়ে ফেলা একটি সদাক্বাহ। পরিবার-পরিজনের দায়-দায়িত্ব বহন করা একটি সদাক্বাহ। আর চাশতের দু রাকআত নামাজ এসব কিছুর পরিপূরক হইতে পারে।
ঈমাম আবু দাউদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, বর্ণনাকারীআব্বাদের বর্ণনাটি পরিপূর্ণ ও ক্রটিমুক্ত। অপর বর্ণনাকারী মুসাদ্দাদ তার বর্ণনায় “সৎ কাজের আদেশ ও অন্যায় হইতে নিষেধ” বাক্যটি উল্লেখ করেননি। তিনি তার বর্ণনায় উল্লেখ করিয়াছেন, “এবং নাবী (সাঃআঃ) বলেছেন, অমুক অমুক কাজ। ইবনি মানী তার হাদীসে বৃদ্ধি করিয়াছেন যে, লোকেরা জিজ্ঞেস করলো, হে আল্লাহর রসূল! আমাদের কেউ তার স্ত্রী সাথে সহবাস করে যৌন-তৃপ্তি মিটাবে এটাও কি তার জন্য সদাক্বাহ? তিনি বললেনঃ তোমার কি ধারণা যদি সে তা অবৈধ স্থানে ব্যবহার করতো তবে কি সে গুনাহগার হতো না?
সহিহঃ মুসলিম। নফল নামাজ ও সুন্নাত নামাজ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১২৮৬. আবুল আসওয়াদ আদ-দুয়ালী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা আমরা আবু যার (রাঃআঃ) এর নিকট অবস্থানকালে তিনি বলেছেন, প্রতিদিন তোমাদের প্রত্যেকের দেহের প্রতিটি অস্থি একটি সদাক্বাহ ওয়াজিব করে। প্রত্যেক নামাজ, প্রত্যেক সওম, প্রত্যেক হাজ্জ, প্রত্যেক তাসবীহ, প্রত্যেক তাকবীর এবং প্রত্যেক তাহমীদ তার জন্য সদাক্বাহ স্বরূপ। রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) এ উত্তম কাজগুলোকে গণনা করিয়াছেন। অতঃপর তিনি বলেছেনঃ চাশতের দু রাকআত নামাজ আদায় করলে তা ঐগুলোর পরিপূরক হইবে (অনুরূপ সওয়াব পাবে)।
সহিহঃ মুসলিম। নফল নামাজ ও সুন্নাত নামাজ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১২৮৭. সাহল ইবনি মুআয ইবনি আনাস আল-জুহানী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে তার পিতার সূত্রে হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেনঃ কোন ব্যক্তি ফাজ্রের নামাজ আদায় শেষে চাশতের নামাজ আদায় পর্যন্ত তার জায়গাতে বসে থাকলে এবং এ সময়ে উত্তম কথা ছাড়া অন্য কিছু না বললে তার সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করা হয়্ যদিও গুনাহের পরিমাণ সমুদ্রের ফেনারাশির চেয়ে অধিক হয়। {১২৯০}
আহমাদ (৩/৪৩৮) উভয়ে যাব্বান হইতে। সানাদের যাব্বান ইবনি ফায়িদ সম্পর্কেহাফিয আত-তাক্বরীর গ্রন্থে বলেন ঃ দুর্বল। নফল নামাজ ও সুন্নাত নামাজ হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১২৮৮. আবু উমামাহ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ এক নামাজের পরে আরেক নামাজ যার মধ্যবর্তী সময়ে কোনো গুনাহ হয়নি, তা ইল্লীয়্যুনে (উচ্চ মর্যাদায়) লিপবদ্ধ করা হয়।
নফল নামাজ ও সুন্নাত নামাজ হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
১২৮৯. নুআইম ইবনি হাম্মার (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,আমি রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) -কে বলিতে শুনিয়াছি ঃ মহান পরাক্রমশালী আল্লাহ বলেছেন, হে আদম সন্তান! তোমরা দিনের পূর্বহ্নের মধ্যে চার রাকআত নামাজ হইতে আমাকে ত্যাগ করো না, তাহলে আমি আখিরাতে তোমার জন্য যথেষ্ট হবো।
নফল নামাজ ও সুন্নাত নামাজ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১২৯০. আবু ত্বালিবের কন্য উম্মু হানী (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) মাক্কাহ বিজয়ের দিন আট রাকআত চাশতের নামাজ আদায় করিয়াছেন। তিনি প্রতি দু রাকআতে সালাম ফিরিয়েছেন। ঈমাম আবু দাউদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, আহমাদ ইবনি সলিহ বলেছেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) মাক্কাহ বিজয়ের দিন চাশতের নামাজ আদায় করিয়াছেন। অতঃপর পূর্ববতী হাদিসের অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে। ইবনিস সারহ বলেন, উম্মু হানী (রাঃআঃ) বলেছেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) আমার নিকট এলেন, কিন্ত এ হাদীসে চাশতের নামাজের উল্লেখ নেই। তবে তিনি পূর্বোক্ত হাদিসের ভাবার্থ বর্ণনা করিয়াছেন।
নফল নামাজ ও সুন্নাত নামাজ হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১২৯১. ইবনি আবু লায়লাহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, উম্মু হানী (রাঃআঃ) ছাড়া অন্য কেউ আমদেরকে অবহিত করেননি যে, তিনি রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) -কে চাশতের নামাজ আদায় করতে দেখেছেন। অবশ্য তিনি বর্ণনা করিয়াছেন, মাক্কাহ বিজয়ের দিন রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) তার ঘরে গোসল করে আট রাকআত নামাজ আদায় করিয়াছেন। এরপর কেউই তাকেঁ উক্ত নামাজ আদায় করতে দেখেনি।
সহিহঃ বোখারি ও মুসলিম। নফল নামাজ ও সুন্নাত নামাজ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১২৯২. আব্দুল্লাহ ইবনি শাক্বীক্ব (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমিআয়েশা (রাঃআঃ)-কে জিজ্ঞেস করলাম, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) কি (একই রাকআতে) একাধিক সূরাহ একত্রে পাঠ করতেন? তিনি বলিলেন, (হাঁ) তিনি মুফাসসাল হইতে পাঠ করতেন। (অর্থাৎ সূরাহ হুজরাত হইতে নাস পর্যন্ত কুরাআনের শেষ দিকের সূরাহগুলো মিলিয়ে পড়তেন)।
সহিহঃ মুসলিমে এর প্রথমাংশ। নফল নামাজ ও সুন্নাত নামাজ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১২৯৩. রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) এর স্ত্রী আয়েশা (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) কখনো চাশতের নামাজ আদায় করেননি। তবে আমি তা আদায় করি। রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) কখনো কোনো কাজকে যদিও প্রিয় মনে করতেন, কিন্ত তা এ আশংকায় বর্জন করতেন যে, লোকেরা তার উপর আমল করলে হয়ত তাহাঁদের উপর তা ফরয করে দেয়া হইবে।
সহিহ ঃ বোখারি ও মুসলিম। নফল নামাজ ও সুন্নাত নামাজ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১২৯৪. সিমাক (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
আমি জাবির ইবনি সামুরাহ (রাঃআঃ)-কে জিজ্ঞেস করলাম, আপনি কি রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) এর সাহচর্যে থাকতেন? তিনি বলেন, হাঁ, অধিক সময় তার সাহচর্যে ছিলাম। তিনি সূর্যোদায় পর্যন্ত ঐ স্থানেই বসে থাকতেন সেখানে তিনি ফজরের নামাজ আদায় করিয়াছেন। অতঃপর সূর্যোদয় হলে তিনি (সাঃআঃ) উঠে যেতেন।
সহিহঃ মুসলিম, নফল নামাজ ও সুন্নাত নামাজ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৩০২ দিনের নফল নামাজ এর বর্ণনা
১২৯৫. ইবনি উমার (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ রাতের এবং দিনের (নাফল) নামাজ দু রাকআত করে আদায় করতে হয়।
নফল নামাজ ও সুন্নাত নামাজ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১২৯৬. আল-মুত্তালিব (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃআঃ) বলেনঃ নামাজ দু রাকআত দু রাকআত করে আদায় করতে হয়। প্রত্যেক দু রাকআতে তোমার তাশাহহুদ পড়তে হইবে। অতঃপর তুমি তোমার বিপদাপদ ও দারিদ্রের কথা দু হাত উঠিয়ে দুআ করিবে,
اللَّهُمَّ اللَّهُمَّ
আল্লাহুম্মা আল্লাহুম্মা
হে আল্লাহ! হে আল্লাহ!
যে ব্যাক্তি এরূপ করে না তার আচরণ হইবে ক্রটিপূর্ণ। ঈমাম আবু দাউদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি)-কে রাতে দু রাকআত নামাজ সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, তুমি ইচ্ছা করলে দু রাকআত আদায় করতে পারো, আবার ইচ্ছে হলে চার রাকআত করেও আদায় করতে পারো।
নফল নামাজ ও সুন্নাত নামাজ হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-৩০৩ সলাতুত তাসবীহ
১২৯৭. ইবনি আব্বাস (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ)আব্বাস ইবনিআব্দুল মুত্তালিব (রাঃআঃ)-কে বললেনঃ হেআব্বাস! হে আমার চাচা ! আমি কি আপনাকে দান করবো না? আমি কি আপনাকে উপহার দিবো না? আমি কি আপনার দশটি মহৎ কাজ করে দিবো না? আপনি যখন সে কাজগুলো বাস্তবায়ন করবেন, তখন আল্লাহ আপনার প্রথম ও শেষ, অতীত ও বর্তমান, ইচ্ছা ও অনিচ্ছাকৃত, ছোট ও বড় এবং প্রকাশ্য ও গোপন সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করে দিবেন। ঐ দশটি মহৎ কাজ হচ্ছেঃ আপনি চার রাকআতের ক্বিরাআত হইতে অবসর হয়ে দাঁড়ানো অবস্থায় বলবেন, “সুবহানাল্লাহ ওয়াল-হামদুলিল্লাহ ওয়া লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার” পনের বার, অতঃপর রুকূ করুন এবং রুকূ অবস্থায় তা পাঠ করুন দশবার, আবার রুকূ হইতে মাথা উঠিয়ে তা পাঠ করুন দশবার, অতঃপর সাজদাহ্য় যান এবং সাজদাহ্ অবস্থায় তা পাঠ করুন দশবার, অতঃপর সাজদাহ্ হইতে মাথা উঠিয়ে তা পাঠ করুন দশবার। আবার সাজদাহ্ করুন, সেখানে তা পাঠ করুন দশবার। অতঃপর সাজদাহ্ হইতে মাথা তুলে তা পাঠ করুন দশবার, এ নিয়মে প্রত্যেক রাকআতে তাসবীহর সংখ্যা হইবে পঁচাত্তুর বার এবং তা করতে থাকুন পূর্ণ চার রাকআতে। (এতে পুরো নামাজে তাসবীহর সংখ্যা হইবে তিন শত বার)। আপনার পক্ষে সম্ভব হলে উক্ত নামাজ দৈনিক একবার আদায় করুন। অন্যথায় সপ্তাহে একবার, তাও সম্ভব না হলে মাসে একবার, এটাও সম্ভব না হলে বছরে একবার, যদি তাও না হয় তবে সারা জীবনে অন্তত একবার আদায় করুন।
নফল নামাজ ও সুন্নাত নামাজ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১২৯৮. আবুল জাওযা (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) সূত্র হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমাকে নাবী (সাঃআঃ) এর এক সাহাবী বর্ণনা করিয়াছেন। তাহাঁদের ধারণা, তিনি হচ্ছেনআব্দুল্লাহ ইবনি আমর (রাঃআঃ)। তিনি বলেছেন, একদা নাবী (সাঃআঃ) আমাকে বলিলেন, তুমি আগামীকাল ভোরে আমার কাছে আসবে, আমি তোমাকে কিছু দান করবো, আমি তোমাকে দিবো, আমি তোমাকে উপঢৌকন প্রদান করবো। আমি ধারণা করলাম, তিনি আমাকে কোন জিনিস দিবেন। (অতঃপর পরদিন তাহাঁর নিকটে আসলে) তিনি বললেনঃ “দুপুরে সূর্য হেলে পড়লে তুমি দাঁড়িয়ে চার রাকআত নামাজ আদায় করিবে”। অতঃপর পূর্বের হাদিসের অনুরূপ বর্ণিত। তিনি বললেনঃ অতঃপর দ্বিতীয় সাজদাহ্ হইতে মাথা উঠিয়ে সোজা হয়ে বসবে এবং দাঁড়ানোর পূর্বে দশবার সুবহানাল্লাহ, দশবার আল্হামদুলিল্লাহ, দশবার আল্লাহু আকবার এবং দশবার লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলবে। এভাবে তোমার চার রাকআত আদায় করিবে। তিনি বললেনঃ তুমি দুনিয়াবাসীদের মধ্যে সবচেয়ে বড় গুনাহগার হয়ে থাকলেও এ বিনিময়ে তোমাকে ক্ষমা করা হইবে। বর্ণনাকারী বলেন, আমি বললাম, আমি ঐ সময়ে এ নামাজ আদায় করতে না পারলে? তিনি বললেনঃ রাত ও দিনের যে কোন সময়ে সুযোগ পেলেই তা আদায় করে নিবে। {১৩০১}
ঈমাম আবু দাউদ (রাঃআঃ) এ হাদিসআব্দুল্লাহ ইবনিআমরের (রাঃআঃ) মাউকূফ হিসেবে বর্ণিত হয়েছে। অন্য সানাদে এটি ইবনি আব্বাস (রাঃআঃ) এর নিজস্ব বক্তব্য হিসেবে বর্ণিত হয়েছে। {১৩০১} তিরমিযী (অধ্যায়ঃ নামাজ, হাঃ ৪৮১, ঈমাম তিরমিযী বলেন, আনাসের হাদিসটি হাসান গরীব) । উল্লেখ্য, সলাতুত তাসবীহ এর হাদিসগুলোকে হাদিসবিশারদ ঈমামগণের একদল দুর্বল বলেছেন এবং আরেক দল বলেছেন হাসান বা সহিহ । , *সলাতুত তসবীহ জামাআত করে আদায় করা বিদআতঃ** তাসবীহের নামাজ রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ), সাহাবায়ি কিরাম এবং তাবেঈ ঈমামগণ থেকে জামাআতের সাথে আদায় করার কোন প্রমাণ নেই । না মাসজিদে, না ঘরে, না রমাযান মাসে, না অন্য মাসে । তাই এর জামাআত করা এবং জামাআতের ব্যবস্থা করা বিদআত থেকে মুক্ত নয় । কাজেই সলাতুত তাসবীহ জামাআত করে আদায় করা থেকে বিরত থাকা উচিত । (আইনী তুহফা নামাজে মুস্তফা) নফল নামাজ ও সুন্নাত নামাজ হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ
১২৯৯. উরওয়াহ ইবনি রুওয়াইম (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, জনৈক আনসারী (রাঃআঃ) আমাকে বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) জাফারকে উপরোক্ত হাদিসটি বলেছেন। অতঃপর উপরোক্ত বর্ণনাকারীদের অনুরূপ। বর্ণনাকারী বলেন, তিনি প্রথম রাকআতের দ্বিতীয় সাজদাহ্য় তাই বলেছেন, যেরূপ মাহদী ইবনি মাইমূনের হাদীসে রহিয়াছে।
নফল নামাজ ও সুন্নাত নামাজ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ- ৩০৪ মাগরিবের দু রাকআত (সুন্নাত) কোথায় আদায় করিবে
১৩০০. সাদ ইবনি ইসহাক্ব ইবনি কাব ইবনিউজরাহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) তাহাঁর পিতা হইতে বর্ণিতঃ
তিনি তাহাঁর দাদার সূত্রে বর্ণনা করেন, একদা নাবী (সাঃআঃ) বনীআবদুল আশহালের মাসজিদে এসে সেখানে মাগরিবের নামাজ আদায়ের পর দেখলেন, নামাজ শেষে লোকেরা সেখানেই (সুন্নাত) নামাজ আদায় করছেন। তখন তিনি বললেনঃ এটাতো ঘরের নামাজ। {১৩০৩}
{১৩০৩} অনুঃ বাড়িতে নামাজ আদায়ে উৎসাহ দান, হাঃ ১৫৯৯ । নফল নামাজ ও সুন্নাত নামাজ হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
১৩০১. ইবনি আব্বাস (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) মাগরিবের ফরয নামাজের পর দু রাকআত (সুন্নাত) নামাজের ক্বিরাআত এতো দীর্ঘ করতেন যে, মাসজিদের লোকজন চলে যেতো। {১৩০৪}
{১৩০৪} বায়হাক্বীসুনানুল কুবরা (২/১৯০), এবং তাবরীযীমিশকাত (১/৩৭১) । এর সানাদ দুর্বল । সানাদে সাঈদ ইবনি যুবাইর সূত্রে জাফার ইবনি আবু মুগীরাহ রহিয়াছে । ইবনি মুনদিহ বলেনঃ তিনি মজবুত নন । নফল নামাজ ও সুন্নাত নামাজ হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১৩০২. সাঈদ ইবনি জুবাইর (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃআঃ) এর সূত্রে এ হাদিসের ভাবার্থ মুরসাল হিসেবে বর্ণিত হয়েছে। {১৩০৫}
{১৩০৫} সুনান বায়হাকী (২/১৯০) আবু দাউদের সূত্রে । নফল নামাজ ও সুন্নাত নামাজ হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিসঅনুচ্ছেদ–৩০৫ ইশার ফার্য নামাজের পর নফল নামাজ
১৩০৩. শুরাইহ ইবনি হানী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতেআয়েশা (রাঃআঃ) সূত্র হইতে বর্ণিতঃ
তিনি (শুরাইহ) বলেন, আমি তাকে রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) এর নামাজ সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ)ইশার ফার্য নামাজ আদায়ের পর আমার ঘরে আসলে অবশ্যই চার কিংবা ছয় রাকআত নামাজ আদায় করতেন। একদা রাতে আমাদের এখানে বৃষ্টি হওয়ায় আমরা তাহাঁর জন্য চামড়া বিছিয়ে দেই। আমি যেন এখন চাক্ষুস দেখছি যে, খেজুর পাতার চালনির ছিদ্র দিয়ে পানি গড়ে পড়ছে। আমি তাঁকে কখনো কোন কাপড় দিয়ে মাটি হইতে রক্ষা করতে দেখিনি। {১৩০৩}
{১৩০৩} আহমাদ (৬/৫৮)। এর সানাদ দুর্বল । সানাদে বাশীর আল-ইজলী রহিয়াছে । ঈমাম যাহাবী বলেনঃ তাকে চেনা যায়নি ।, নফল নামাজ ও সুন্নাত নামাজ হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
Leave a Reply