দুয়া কুনুত
দুয়া কুনুত >> মিশকাতুল মাসাবীহ এর মুল সুচিপত্র দেখুন
পর্বঃ ৪, অধ্যায়ঃ ৩৬
- অধ্যায়ঃ ৩৬. প্রথম অনুচ্ছেদ
- অধ্যায়ঃ ৩৬. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
- অধ্যায়ঃ ৩৬. তৃতীয় অনুচ্ছেদ
অধ্যায়ঃ ৩৬. প্রথম অনুচ্ছেদ
১২৮৮. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসূলুল্লাহ [সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] কোন লোককে বদ্দুআ অথবা কোন লোককে দুআ করিতে চাইলে রুকূর পরে কুনূত পড়তেন। তাই কোন কোন সময় তিনি,
سَمِعَ اللّهُ لِمَنْ حَمِدَه رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ
সামিআল্লা-হু লিমান হামিদাহ, রাব্বানা- লাকাল হাম্দু বলার পরে এ দুআ করিতেন,
اللّهُمَّ أَنْج الْوَلِيْدَ بْنِ الْوَلِيْدِ وَسَلَمَةَ ابْنِ هِشَامٍ وَعَيَّاشَ بْنِ رَبِيْعَةَ اللّهُمَّ اشْدُدْ وَطْأَتَكَ عَلى مُضَرَ وَاجْعَلْهَا سِنِينَ كَسِنِىْ يُوسُفَ
আল্লা-হুম্মা আন্জিল ওয়ালীদ ইবনি ল ওয়ালীদ। ওয়া সালামাতাব্নি হিশা-ম, ওয়া আইয়্যা-শাব্নি রবীআহ্, আল্লা-হুম্মাশ্দুদ ওয়াত্ব আতাকা আলা-মুযারা ওয়াজ্আল্হা- সিনীনা কাসিনী ইউসুফা।
অর্থাৎ হে আল্লাহ! ওয়ালীদ ইবনি ওয়ালীদকে সালামাহ্ ইবনি হিশামকে, আইয়্যাশ ইবনি আবু রবীআকে তুমি মুক্তি দান করো। হে আল্লাহ! মুয়ায জাতির ওপরে তুমি কঠিন আযাব নাযিল করো। আর এ আযাবকে তাদের ওপর ইউসুফ [আঃ] -এর বছরগুলোর ন্যায় দুর্ভিক্ষের রূপ ধারণ করে দাও। তিনি উচ্চৈঃস্বরে এ দুআ পড়তেন। কোন কোন সালাতে তিনি [সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] আরবে এসব গোত্রের জন্যে এভবে দুআ করিতেন,
اللّهُمَّ الْعَنْ فُلَانًا وَفُلَانًا لِأَحْيَاءٍ مِنَ الْعَرَبِ
হে আল্লাহ! তুমি অমুক অমুকের ওপর অভিশাপ বর্ষণ করো। তারপর আল্লাহ তাআলা এ আয়াত নাযিল করিয়াছেন, লাইসা লাকা মিনাল আম্রি শাইয়ুন অর্থাৎ
لَيْسَ لَكَ مِنَ الْأَمْرِ شَيْءٌ
“এ ব্যাপারে আপনার কোন দখল নেই”- [সূরাহ্ আ-লি ইমরান ৩ : ১২৮]। {১}
{১} সহীহ : বোখারী ৪৫৬০, মুসলিম ৬৭৭; শব্দ বিন্যাস মুসলিমের। দুয়া কুনুত -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
১২৮৯. আসিম আল আহ্ওয়াল [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] -কে “দুআয়ে কুনূত” ব্যাপারে প্রশ্ন করেছি যে, এটা সলাতে রুকূর পূর্বে পড়া হয়, না পরে? আনাস বললেন, রুকূর পূর্বে। তিনি আরো বললেন, রাসূলুল্লাহ [সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] [ফাজ্রের সলাতে অথবা সকল সলাতে রুকূর পরে দুআয়ে] কুনূত পড়েছেন শুধু একবার। [তারও কারণ ছিল] রাসূলুল্লাহ [সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] কিছু লোককে, যাদেরকে ক্বারী বলা হত, তাদের সংখ্যা ছিল সত্তরজন [তাবলীগের জন্য] কোথাও পাঠিয়েছিলেন। ওখানকার লোকেরা তাদেরকে শাহীদ করে দিয়েছে। সেজন্য রাসূলুল্লাহ [সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] এক মাস পর্যন্ত রুকূর পরে দুআয়ে কুনূত পড়ে হত্যাকারীদের জন্যে বদদুআ করিয়াছেন। {১}
{১} সহীহ : বোখারী ৪০৯৬, মুসলিম ৬৭৭। দুয়া কুনুত -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
অধ্যায়ঃ ৩৬. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
১২৯০. আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] একাধারে এক মাস পর্যন্ত প্রতিদিন যুহর আস্র, মাগরিব, ইশা ও ফাজ্রের সলাতের শেষ রাক্আতে সামিআল্লা-হু লিমান হামিদাহ বলার পর দুআ কুনূত পড়তেন। এতে তিনি [সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বানী সুলায়ম-এর কয়েকটি গোত্র, রিল, যাকওয়ান, উসাইয়্যাহ্ এর জীবিতদের জন্যে বদ্দুআ করিতেন। পেছনের লোকেরা আমীন আমীন বলিতেন। {১}
{১} হাসান : আবু দাউদ ১৪৪৩। এই হাদিসটির তাহকীকঃ হাসান হাদিস
১২৯১. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নবী [সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] একাধারে এক মাস পর্যন্ত [রুকূর পরে] দুআ কুনূত পাঠ করিয়াছেন। তারপর তিনি [সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] তা ত্যাগ করিয়াছেন।{১}
{১} সহীহ : আবু দাউদ ১৪৪৫, নাসায়ী ১০৭৯, আহমাদ ১২৯৯০, ১৩৬০১, ১৩৬৪১। দুয়া কুনুত -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
১২৯২. আবু মালিক আল আশজাঈ [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি আমার পিতার কাছে প্রশ্ন করেছিলাম, হে পিতা! আপনি রাসূলুল্লাহ [সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম], আবু বাক্র, উমার, উসমান, আর আলী [রাদি.] -এর পেছনে কুফায় প্রায় পাঁচ বছর পর্যন্ত সলাত আদায় করিয়াছেন। এসব মর্যাদাবান ব্যক্তিগণ কি “দুআ কুনূত” পড়তেন? তিনি জবাব দিলেন, হে আমার পুত্র! [দুআ কুনূত পড়া] বিদআত। [ {১}
{১} সহীহ : নাসায়ী ১০৮০, আত তিরমিজি ৪০২, ইবনি মাজাহ ১২৪১, ইরওয়া ৪৩৫, আহমাদ ১৫৮৭৯, শারহুস্ সুন্নাহ্ ৬৩৮। দুয়া কুনুত -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
অধ্যায়ঃ ৩৬. তৃতীয় অনুচ্ছেদ
১২৯৩. হাসান [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমীরুল মুমিনীন উমার ইবনুল খাত্ত্বাব [রাদি.] [রমাযান মাসের তারাবীহের জন্যে] লোকজনকে একত্র করিলেন। তিনি [উমার] উবাই ইবনি কাবকে ঈমাম নিযুক্ত করিলেন। উবাই ইবনি কাব তাদের নিয়ে বিশ রাত সলাত আদায় করালেন। তিনি [উবাই] রমযানের শেষ পনের দিন ছাড়া আর কোন দিন লোকদেরকে নিয়ে দুআ কুনূত পড়েননি। শেষ দশ দিন উবাই ইবনি কাব মসজিদে আসেননি। বরং তিনি বাড়িতেই সলাত আদায় করিতে লাগলেন। লোকেরা বলিতে লাগল, উবাই ইবনি কাব ভেগে গেছেন। {১}
{১} জইফ : আবু দাউদ ১৪২৯, সুনান আল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৪৩০০। হাদিসের সানাদটি বিচ্ছিন্ন, কারণ হাসান আল বসরী [রাহিমাহুল্লাহ] উমার [রাদি.]-এর সাক্ষাৎ পাননি। এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস
১২৯৪. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] -কে কুনূত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলো। তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ [সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] রুকূর পরে দুআ কুনূত পড়তেন। আর এক সূত্রে আছে, তিনি [সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] দুআ কুনূত পড়তেন কখনো রুকূর পূর্বে, আর কখনো রুকূর পরে। {১}
{১} সহীহ : বোখারী ১০০২, ৪০৯৬, ইবনি মাজাহ ১১৮৪, দারাকুত্বনী ১৬৬৬। দুয়া কুনুত -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
Leave a Reply