দুই ঈদের সালাত
দুই ঈদের সালাত >> মিশকাতুল মাসাবীহ এর মুল সুচিপত্র দেখুন
পর্বঃ ৪, অধ্যায়ঃ ৪৭
- অধ্যায়ঃ ৪৭. প্রথম অনুচ্ছেদ
- অধ্যায়ঃ ৪৭. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
- অধ্যায়ঃ ৪৭. তৃতীয় অনুচ্ছেদ
অধ্যায়ঃ ৪৭. প্রথম অনুচ্ছেদ
১৪২৬. আবু সাঈদ আল খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার দিন [ঘর থেকে] বের হয়ে ঈদগাহের ময়দানে গমন করিতেন। প্রথমে তিনি [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] সেখানে গিয়ে সলাত আদায় করাতেন। এরপর তিনি মানুষের দিকে মুখ ফিরে দাঁড়াতেন। মানুষরা সে সময় নিজ নিজ সারিতে বসে থাকতেন। তিনি [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] তাদেরকে ভাষণ শুনাতেন, উপদেশ দিতেন। আর যদি কোন দিকে কোন সেনাবাহিনী পাঠাবার ইচ্ছা করিতেন, তাদেরকে নির্বাচন করিতেন। অথবা কাউকে কোন নির্দেশ দেয়ার থাকলে তা দিতেন। তারপর তিনি [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] [ঈদগাহ] হইতে প্রত্যাবর্তন করিতেন।
[বোখারী, মুসলিম] {১};{১} সহীহ : বোখারী ৯৫৬, মুসলিম ৮৮৯, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৬১৩৪, ইরওয়া ৬৩০। দুই ঈদের সালাত -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
১৪২৭. জাবির ইবনি সামুরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, তিনি রাসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-এর সাথে দুঈদের সলাত একবার নয়, দুবার নয়, আযান ও ইক্বামাত ছাড়া… [বহুবার] আদায় করেছি।
[মুসলিম] {১}, {১} সহীহ : মুসলিম ৮৮৭, আবু দাউদ ১১৪৮, আত তিরমিজি ৫৩২, ইবনি আবী শায়বাহ্ ৫৬৫৬, আহমাদ ২০৮৪৭, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৬১৬৭, শারহুস্ সুন্নাহ্ ১১০০, ইবনি হিব্বান ২৮১৯। দুই ঈদের সালাত -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
১৪২৮. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] আবু বাক্র ও উমার [রাদি.] দু ঈদের সলাত খুতবার পূর্বেই আদায় করিতেন।
[বোখারী, মুসলিম] {১}. {১} সহীহ : বোখারী ৯৬৩, মুসলিম ৮৮৮, নাসায়ী ১৫৬৪, ইবনি আবী শায়বাহ্ ৫৬৭৩, মুসতাদরাক লিল হাকিম ১১১০, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৬২০১, ইরওয়া ৬৪৫। দুই ঈদের সালাত -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
১৪২৯. আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস হইতে বর্ণীতঃ
আপনি কি রাসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] এর সাথে ঈদের সলাতে উপস্থিত ছিলেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ, ছিলাম। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] ঈদের সলাতের জন্য ঈদগাহে এসেছেন। [প্রথমে] সলাত আদায় করিয়াছেন, তারপর খুত্বাহ্ প্রদান করিয়াছেন। তবে তিনি আযান ও ইক্বামাতের কথা উল্লেখ করেননি। এরপর তিনি [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] মহিলাদের নিকট এসেছেন। তাদের ওয়াজ নাসীহাত করিয়াছেন। অতঃপর আমি দেখলাম মহিলাগণ নিজ নিজ কান ও গলার দিকে হাত বাড়াচ্ছেন। গহনা খুলে খুলে বিলালের নিকট দিতে লাগলেন। এরপর তিনি [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] ও বিলাল বাড়ীর দিকে চলে গেলেন।
[বোখারী, মুসলিম] {১}, {১} সহীহ : বোখারী ২৫৪৯, মুসলিম ৮৮৪। দুই ঈদের সালাত -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
১৪৩০. আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] ঈদুল ফিত্রের দিন মাত্র দু রাক্আত সলাত আদায় করিয়াছেন। এর পূর্বেও তিনি [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] কোন সলাত আদায় করেননি, পরেও পড়েননি।
[বোখারী, মুসলিম]{১}, {১} সহীহ : বোখারী ৯৬৪, মুসলিম ৮৮৪, আবু দাউদ ১১৫৯, মুসান্নাফ আবদুর রায্যাক্ব ৫৬১৭, ইরওয়া ৬৩১। দুই ঈদের সালাত -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
১৪৩১. উম্মু আত্বিয়্যাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, দুঈদের দিনে ঋতুবতী ও পর্দানশীন মহিলাদেরকে মুসলিমদের জামাআতে ও দুআয় অংশ নিতে বের করে নেবার জন্য আমাদেরকে নির্দেশ দেয়া হলো। তবে ঋতুবতীগণ যেন সলাতের জায়গা হইতে সরে বসেন। একজন মহিলা জিজ্ঞেস করিল, হে আল্লাহ্র রসূল! আমাদের কারো কারো [শরীর ঢাকার জন্য] বড় চাদর নেই। তিনি বললেন, তাহাঁর সাথী-বান্ধবী তাঁকে আপন চাদর প্রদান করিবে।
[বোখারী, মুসলিম] {১}, {১} সহীহ : বোখারী ৩৫১, মুসলিম ৮৯০। দুই ঈদের সালাত -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
১৪৩২. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, [বিদায় হাজ্জে] মিনায় অবস্থানকালে আবু বাক্র তাহাঁর নিকটে গেলেন। সে সময় আনসারদের দুজন বালিকা সেখানে গান গাচ্ছিল ও দফ্ বাজাচ্ছিল। অন্য বর্ণনায় আছে, তারা বুআস যুদ্ধে আনসার গোত্রের লোকেরা যে সব গান গেয়ে গর্ব করেছিল সে সব গান আবৃত্তি করছিল। এ সময় নবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] চাদর মুড়ে নিজেকে ঢেকে রেখেছিলেন। এ অবস্থা দেখে আবু বাক্র বালিকা দুটিকে ধমক দিলেন। এ সময় নবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] কাপড় হইতে মুখ খুলে বললেন, হে আবু বাক্র ওদেরকে ছেড়ে দাও। এটা ঈদের দিন। অন্য বর্ণনায়, হে আবু বাক্র! প্রত্যেক জাতির একটা ঈদের দিন আছে। আর এটা হলো আমাদের ঈদের দিন।
[বোখারী, মুসলিম] {১}, {১} সহীহ : বোখারী ৯৮৭, ৩৫২৯, মুসলিম ৮৯২, নাসায়ী ১৫৯৩, ইবনি হিব্বান ৫৮৭৬। দুই ঈদের সালাত -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
১৪৩৩. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] ঈদুল ফিত্রের দিন কয়েকটি খেজুর না খেয়ে বের হইতেন না। আর খেজুরও খেতেন তিনি বিজোড়।
[বোখারী] {১}, {১} সহীহ : বোখারী ৯৫৩, ইবনি খুযায়মাহ্ ১৪২৯, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৬১৫২, শারহুস্ সুন্নাহ্ ১১০৫, মুসনাদে বাযযার ৭৪৫৭। দুই ঈদের সালাত -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
১৪৩৪. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] ঈদের দিন [ঈদের মাঠে] যাতায়াতের পথ পরিবর্তন করিতেন।
[বোখারী] {১}, {১} সহীহ : বোখারী ৯৮৬, ইরওয়া ৬৩৭, সহীহ আল জামি ৪৭৭৭। দুই ঈদের সালাত -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
১৪৩৫,. বারা ইবনি আযিব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] এক কুরবানীর ঈদের দিন আমাদের সামনে এক ভাষণ প্রদান করেন। তিনি বলেন, এ ঈদের দিন প্রথমে আমাদেরকে সলাত আদায় করিতে হবে। এরপর আমরা বাড়ী গিয়ে কুরবানী করব। যে ব্যক্তি এভাবে করিল সে আমাদের পথে চলল। আর যে ব্যক্তি আমাদের সলাত আসায় করার পূর্বে কুরবানী করিল সে তাহাঁর পরিবারের জন্য তাড়াতাড়ি যাবাহ করে নিশ্চয়ই তা গোশত ভক্ষণের ব্যবস্থা করিল, তা কুরবানীর কিছুই নয়।
[বোখারী, মুসলিম] {১}, {১} সহীহ : বোখারী ৯৬৮, মুসলিম ১৯৬১, আহমাদ ১৮৬৯৩, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ১৯০৫৮, শারহুস্ সুন্নাহ্ ১১১৪, সহীহ আল জামি ২০১৯। দুই ঈদের সালাত -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
১৪৩৬. জুনদুব ইবনি আবদুল্লাহ আল বাজালী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছেন : যে ব্যক্তি সলাতের আগে যাবাহ করেছে সে যেন এর পরিবর্তে [সলাতের পরে] আর একটি যাবাহ করে। আর যে ব্যক্তি আমাদের সলাত আদায়ের পূর্ব পর্যন্ত যাবাহ করেনি সে যেন [সলাতের পর] আল্লাহ্র নামে যাবাহ করে [এটাই প্রকৃত কুরবানী]।
[বোখারী, মুসলিম] {১}; {১} সহীহ : বোখারী ৫৫০০, মুসলিম ১৯৬০, নাসায়ী ৪৩৯৮, ইবনি হিব্বান ৫৯১৩, সহীহ আল জামি ৬৪৮২। দুই ঈদের সালাত -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
১৪৩৭. বারা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] ইরশাদ করেন : যে ব্যক্তি [ঈদের] সলাতের আগে যাবাহ করিল সে নিজের [খাবার] জন্যই যাবাহ করিল। আর যে ব্যক্তি সলাত আদায়ের পর যাবাহ করিল তার কুরবানী পরিপূর্ণ হলো। সে মুসলিমদের নিয়ম অনুসরণ করিল।
[বুখারি, মুসলিম] {১}, {১} সহীহ : বোখারী ৫৫৫৬, মুসলিম ১৯৬১, শারহুস্ সুন্নাহ্ ১১১৩, সহীহ আল জামি ৬২৪২। দুই ঈদের সালাত -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
১৪৩৮. আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] যাবাহ করিতেন এবং নহর করিতেন ঈদগাহের ময়দানে।
[বোখারী] {১}, {১} সহীহ : বোখারী ৫৫৫২, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ১৯১১৯। দুই ঈদের সালাত -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
অধ্যায়ঃ ৪৭. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
১৪৩৯. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] মাদীনায় আগমন করার পর তাদের দুটি দিন ছিল। এ দিন দুটিতে তারা খেলাধুলা ও আমোদ-প্রমোদ করত। [এ দেখে] তিনি [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] জিজ্ঞেস করিলেন, এ দুটি দিন কি? তারা বলিল ইসলামের পূর্বে জাহিলিয়্যাতের সময় এ দিন দুটিতে আমরা খেলাধুলা করতাম। [এ কথা শ্রবণে] রাসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বললেন, এ দুদিনের পরিবর্তে আল্লাহ তাআলা তোমাদের জন্য আরো উত্তম দুটি দিন দান করিয়াছেন। এর একটি হলো ঈদুল আযহার দিন ও অপরটি ঈদুল ফিত্রের দিন।
[আবু দাউদ] {১}, {১} সহীহ : আবু দাউদ ১১৩৪, আহমাদ ১৩৬২২, মুসতাদরাক লিল হাকিম ১০৯১। দুই ঈদের সালাত -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
১৪৪০. বুরায়দাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ.
তিনি বলেন, নবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] ঈদুল ফিতরের দিন কিছু না খেয়ে ও ঈদুল আযহার দিন কিছু খেয়ে সলাতের জন্য বের হইতেন না। [তিরমিজি, ইবনি মাজাহ, দারিমী] {১}
{১} সহীহ : আত তিরমিজি ৫৪২, ইবনি মাজাহ ১৭৫৪, ইবনি খুযায়মাহ্ ১৪২৬, মুসতাদরাক লিল হাকিম ১০৮৮, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৬১৫৯, শারহুস্ সুন্নাহ্ ১১০৪, ইবনি হিব্বান ২৮১২, সহীহ আল জামি ৪৮৪৫। দুই ঈদের সালাত -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
১৪৪১. কাসীর তাহাঁর পিতা আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি তাহাঁর পিতা আম্র ইবনি আওফ হইতে বর্ণনা করিয়াছেন যে, নবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] দুঈদের প্রথম রাক্আতে ক্বিরাআতের পূর্বে সাতবার ও দ্বিতীয় রাক্আতে ক্বিরাআতের পূর্বে পাঁচবার তাকবীর বলেছেন।
[তিরমিজি, ইবনি মাজাহ ও দারিমী] {১}, {১} সহীহ : আত তিরমিজি ৫৩৬, ইবনি মাজাহ ১২৭৯। দুই ঈদের সালাত -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
১৪৪২. জাফার সাদিক্ব ইবনি মুহাম্মাদ [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীতঃ
জাফার সাদিক্ব ইবনি মুহাম্মাদ [রাহিমাহুল্লাহ] মুরসাল হিসেবে এ হাদিসটি বর্ণনা করিয়াছেন। তিনি বলেছেন, নবী [সাঃআঃ] ও আবু বাক্র, উমার দু ঈদে ও ইস্তিক্বার সলাতে সাতবার ও পাঁচবার করে তাকবীর বলেছেন। তাঁরা সলাত আদায় করিতেন খুতবার পূর্বে। সলাতে ক্বিরাআত পড়েছেন উচ্চৈঃস্বরে।
[শাফিঈ] {১},{১} খুবই দুর্বল : মুসনাদ আশ্ শাফিঈ ৪৫৭। কারণ এর সানাদে রাবী ইব্রাহীম বিন মুহাম্মাদ যার প্রকৃত নাম ইবনি আবী ইয়াহ্ইয়া আল আসলামী তিনি একজন মিথ্যার অফিযোগে অভিযুক্ত রাবী। এই হাদিসটির তাহকীকঃ খুবই দুর্বল
১৪৪৩. সাঈদ ইবনুল আস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি আবু মূসা আল আশ্আরী ও হুযায়ফাহ্ [রাদি.]-কে জিজ্ঞেস করছিলাম, রাসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] ঈদুল আযহা ও ঈদুল ফিত্রের সলাতে কতবার তাকবীর বলিতেন? তখন আবু মূসা আল আশ্আরী বললেন, তিনি [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] জানাযার তাকবীরের মতো চার তাকবীর বলিতেন। এ জবাব শুনে হুযায়ফাহ্ [রাদি.] বললেন, তিনি ঠিকই বলেছেন।
[আবু দাউদ] {১}, {১} হাসান সহীহ : আবু দাউদ ১১৫৩, শারহু মাআনির আসার ৭২৭৪, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৬১৮৩, সহীহাহ্ ২৯৯৭। এই হাদিসটির তাহকীকঃ হাসান সহীহ
১৪৪৪. বারা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-কে ঈদের দিনে একটি ক্বাওস দেয়া হলো। তিনি এ ক্বাওসের উপর ভর করে [ঈদের] খুতবাহ্ দান করিলেন।
[আবু দাউদ] {১}, {১} হাসান : আবু দাউদ ১১৪৫। এই হাদিসটির তাহকীকঃ হাসান হাদিস
১৪৪৫. আত্বা [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] খুতবাহ্ প্রদান করার সময় নিজের লাঠির উপর ঠেস দিয়ে [খুতবাহ্] দিতেন।
[শাফিঈ] {১}, {১} জইফ : মুসনাদ আশ্ শাফিঈ ৪২২, সিলসিলাহ্ আয্ যঈফাহ্ ৯৬৪, জইফ আল জামি ৪৩৮৫। এর সানাদেও ইব্রাহীম বিন মুহাম্মাদ রয়েছেন যিনি একজন অত্যন্ত দুর্বল রাবী। এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস
১৪৪৬. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি নবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-এর সাথে ঈদের সলাতে উপস্থিত ছিলাম। তিনি খুতবার আগেই আযান ও ইক্বামাত ছাড়া সলাত শুরু করে দিলেন। সলাত শেষ করার পর তিনি বিলালের গায়ে ভর করে দাঁড়ালেন। অতঃপর আল্লাহ তাআলার মহত্ত্ব ও গুণ গরীমা বর্ণনা করিলেন। লোকদের উপদেশ বাণী শুনালেন। তাদেরকে আখিরাতের কথা স্মরণ করিয়ে দিলেন। আল্লাহর আদেশ নিষেধ অনুসরণ করার প্রতি অনুপ্রেরণা যোগালেন। তারপর তিনি মহিলাদের দিকে এগিয়ে গেলেন। তাহাঁর সাথে ছিলেন বেলাল। তাদেরকে তিনি আল্লাহর ভয়-ভীতির কথা বললেন, ওয়াজ করিলেন। পরকালের কথা স্মরণ করিয়ে দিলেন।
[নাসায়ী] {১},{১} সহীহ : নাসায়ী ১৫৭৫, আহমাদ ১৪৪২০, ইবনি খুযায়মাহ্ ১৪৬০, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৬১৯৮। দুই ঈদের সালাত -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
১৪৪৭. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নবী [সাল্লাল্লাহুআলাইহি ওয়া সাল্লাম] ঈদের দিন এক পথ দিয়ে [ঈদগাহে] আসতেন। আবার অন্য পথ দিয়ে [বাড়ীতে] ফিরতেন।
[তিরমিজি, দারিমী] {১}, {১} সহীহ : আত তিরমিজি ৫৪১, সহীহ আল জামি ৪৭১০, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৬২৫১। দুই ঈদের সালাত -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
১৪৪৮. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, একবার ঈদের দিন তাঁদের সেখানে বৃষ্টি হচ্ছিল। তাই নবী [সাল্লাল্লাহুআলাইহি ওয়া সাল্লাম] তাদের সবাইকে নিয়ে মাসজিদে ঈদের সলাত আদায় করিলেন।
[আবু দাউদ, ইবনি মাজাহ] {১}, {১} জইফ : আবু দাউদ ১১৬০, ইবনি মাজাহ ১৩১৩, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৬২৫৭। কারণ এর সানাদে ঈসা এবং আবু ইয়াহ্ইয়া আত তায়মী দুজনই দুর্বল রাবী। হাফিয ইবনি হাজার [রাহিমাহুল্লাহ] বলেছেন, হাদিসের সানাদটি দুর্বল। এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস
১৪৪৯. আবুল হুওয়াইরিস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] নাজরানে নিযুক্ত তাহাঁর প্রশাসক আম্র ইবনি হায্ম-এর নিকট চিঠি লিখলেন। ঈদুল আযহার সলাত তাড়াতাড়ি আদায় করাবে। আর ঈদুল ফিত্রের সলাত বিলম্ব করে আদায় করিবে। লোকজনকে ওয়াজ নাসীহাত করিবে।
[শাফিঈ] {১}, {১} খুবই দুর্বল : মুসনাদ আশ শাফিঈ ৪৪২, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৬১৪৯, ইরওয়া ৬৩৩। এর সানাদেও ইব্রাহীম বিন মুহাম্মাদ রয়েছে যাকে হাফিয ইবনি হাজার মাতরূক বলেছেন। এই হাদিসটির তাহকীকঃ খুবই দুর্বল
১৪৫০. আবু উমায়র ইবনি আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি তাহাঁর এক চাচা হইতে বর্ণনা করিয়াছেন। তিনি ছিলেন সাহাবীদের অন্তর্ভক্ত। [তিনি বলেন] একবার একদল আরোহী নবী কারীম [সাঃআঃ] এর নিকট এসে সাক্ষ্য দিলো যে, তারা গতকাল [শাওয়াল মাসের] নতুন চাঁদ দেখেছে। তিনি [সাঃআঃ] তাদের সওম ভেঙ্গে ফেলার ও পরের দিন সকালে ঈদগাহের ময়দানে যেতে নির্দেশ দিলেন।
[আবু দাউদ, নাসায়ী] {১}, {১} সহীহ : আবু দাউদ ১১৫৭, নাসায়ী ১৫৫৭, ইবনি মাজাহ ১৬৫৩, মুসান্নাফ আবদুর রায্যাক্ব ৭৩৩৯, ইবনি শায়বাহ্ ৯৪৬১, আহমাদ ২০৫৮৪, শারহু মাআনির আসার ২২৭৪, দারাকুত্বনী ২২০৪, ইরওয়া ৬৩৪। দুই ঈদের সালাত -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
অধ্যায়ঃ ৪৭. তৃতীয় অনুচ্ছেদ
১৪৫১. ইবনি জুরায়জ [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আত্বা [রাহিমাহুল্লাহ] আমার কাছে আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস ও জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণনা করিয়াছেন। তাঁরা দুজনেই বলেছেন, [রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর জীবদ্দশায়] ঈদুল ফিত্র ও ঈদুল আযহার সলাতের জন্য আযান দেয়া হত না। ইবনি জুরায়জ বলেন, এর কিছুদিন পর আমি আবার আত্বা [রাহিমাহুল্লাহ]-কে জিজ্ঞেস করলাম। আত্বা [রাহিমাহুল্লাহ] তখন বললেন, জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] আমাকে বলেছেন। ঈদুল ফিত্রের সলাত আদায়ের জন্য আযানের প্রয়োজন নেই। ঈমাম [সলাতের জন্য] বের হবার সময়েও না। বের হয়ে আসার পরেও না। [এভাবে] ইক্বামাত ও কোন আহবানও নেই। না অন্য কিছু আছে। এ দিন না কোন আহবান আছে। আর না কোন ইক্বামাত।
[মুসলিম] {১}, {১} সহীহ : মুসলিম ৮৮৬, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৬১৬৫। বোখারী ৯৬০, মুসান্নাফ আবদুর রায্যাক্ব ৫৬২৭। দুই ঈদের সালাত -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
১৪৫২. আবু সাঈদ আল খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ঈদুল আযহা ও ঈদুল ফিত্রের দিন [ঈদগাহে গিয়ে] প্রথমে সলাত আরম্ভ করিতেন। সলাত আদায় করা শেষ হলে [খুতবাহ্ প্রদানের জন্য] মানুষের দিকে ফিরে দাঁড়াতেন। তাঁরা নিজ নিজ জায়গায় বসে থাকতেন। বস্ততঃ যদি কোথাও সৈন্য বাহিনী পাঠাবার প্রয়োজন থাকত তাহলে, তা মানুষদেরকে বলে [বাহিনী পাঠিয়ে] দিতেন। অথবা জনগণের প্রয়োজনের ব্যাপারে কোন কথা থাকলে সে ব্যাপারে নির্দেশ দিয়ে দিতেন। তিনি খুতবায় বলিতেন, তোমরা সদাক্বাহ্ দাও, তোমরা সাদক্বাহ্ দাও, তোমরা সাদক্বাহ্ দাও। বস্তুতঃ মহিলারাই অধিক পরিমাণে সদাক্বাহ্ করিতেন। এরপর তিনি নিজ বাড়ীতে ফিরে আসতেন। এভাবেই [দুঈদের সলাত] চলতে থাকল যে পর্যন্ত [মুআবিয়ার পক্ষ হইতে] মারওয়ান ইবনি হাকাম [মাদীনার] শাসক নিযুক্ত না হন। [এ সময় এক ঈদের দিনে] মারওয়ান-এর হাত ধরে আমি ঈদগাহের ময়দানে উপস্থিত হলাম। এসে দেখি কাসির ইবনি সাল্ত মাটি ও কাঁচা ইট দিয়ে একটি মিম্বার তৈরি করিয়াছেন। এ সময় মারওয়ান হাত দিয়ে আমার হাত ধরে টানাটানি আরম্ভ করিল আমি যেন মিম্ভারে উঠে খুতবাহ্ দেই। আর আমি তাকে সলাত আদায়ের জন্য টানতে লাগলাম। আমি তার এ অবস্থা দেখে বললাম, সলাত দিয়ে শুরু করা কোথায় গেল? সে বলিল, না আবু সাঈদ! আপনি যা জানেন না তা এখন নেই। আমি বললাম, কখনো নয়। আমার জান যার হাতে নিবন্ধ তার শপথ করে বলছি। আমি যা জানি এর চেয়ে ভাল কিছু তোমরা কখনো বের করিতে পারবে না। বর্ণনাকারী বলেন এ কথা তিনি তিনবার বললেন, তারপর [ঈদগাহ হইতে] চলে গেলেন।
[মুসলিম] {১}, {১} সহীহ : মুসলিম ৮৮৯, আহমাদ ১১৩১৫, ইবনি খুযায়মাহ্ ১৪৪৯, সিলসিলাহ্ আস্ সহীহাহ্ ২৯৬৮। দুই ঈদের সালাত -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
Leave a Reply