দান করার ফজিলত হাদিস ও কৃপণতা সর্ম্পকে

দান করার ফজিলত হাদিস ও কৃপণতা সর্ম্পকে

দান করার ফজিলত হাদিস ও কৃপণতা সর্ম্পকে >>আবুদ দাউদ শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন

অধ্যায়ঃ ৯, অনুচ্ছেদঃ ৩৬-৪৭=১২টি

অনুচ্ছেদ-৩৬ঃ যে বস্তু চাইলে বাধা দেয়া নিষেধ
অনুচ্ছেদ-৩৭ঃ মাসজিদে যাঞ্চা করা
অনুচ্ছেদ-৩৮ঃ আল্লাহর দোহাই দিয়ে কিছু চাওয়া অপছন্দনীয়।
অনুচ্ছেদ-৩৯ঃ কেউ আল্লাহর দোহাই দিয়ে কিছু চাইলে তাহাকে দান করা
অনুচ্ছেদ-৪০ঃ যে ব্যক্তি তার সমস্ত সম্পদ দান করিতে চায়
অনুচ্ছেদ-৪১ঃ সমস্ত সম্পদ দানের অনুমুতি সম্পর্কে
অনুচ্ছেদ-৪২ঃ পানি পান করানোর ফযীলত
অনুচ্ছেদ-৪৩ঃ দুগ্ধবতী পশু ধার দেয়া সম্পর্কে
অনুচ্ছেদ-৪৪ঃ কোষাধ্যক্ষের সওয়াব সম্পর্কে
অনুচ্ছেদ-৪৫ঃ স্ত্রী স্বীয় স্বামীর ঘর হইতে দান করা সম্পর্কে
অনুচ্ছেদ-৪৬ঃ চ সাথে সদাচরণ করা
অনুচ্ছেদ-৪৭ঃ কৃপণতা সর্ম্পকে

অনুচ্ছেদ৩৬ঃ যে বস্তু চাইলে বাধা দেয়া নিষেধ

১৬৬৯. বুহায়সাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] তার পিতা হইতে বর্ণীতঃ

আমার পিতা নাবী [সাঃআঃ] -এর [শরীরে চুমু দেয়ার] অনুমতি চাইলেন। অতঃপর তিনি তাহাঁর জামার ভেতরে প্রবেশ করে চুমা দিতে লাগলেন এবং তাঁকে জড়িয়ে ধরে বলিলেন, হে আল্লাহর রসূল! কোন বস্তু চাইলে নিষেধ করা হালাল নয়? তিনি বলিলেনঃ পানি। তিনি আবার জিজ্ঞেস করিলেন, কোন বস্তু চাইলে নিষেধ করা হালাল নয়? তিনি বলিলেনঃ লবণ। তিনি পুনরায় জিজ্ঞেস করিলেন, কোন বস্তু চাইলে নিষেধ করা হালাল নয়? তিনি বলিলেনঃ তোমার কোন ভালো কাজ করাটাই তোমার জন্য কল্যাণকর।

১৬৬৯. আহমাদ, বায়হাক্বী। সানাদে সাইয়ার এবং তার পিতা দুজনেই মাক্ববুল। এছাড়া বুহায়সাহ ও তার পিতা- এর দুজন অজ্ঞাত। যাকাতের নিয়ম কানুন হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

অনুচ্ছেদ৩৭ঃ মাসজিদে যাঞ্চা করা

১৬৭০. আবদুর রহমান ইবনি আবু বক্‌র [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেনঃ তোমাদের মধ্যে এমন কেউ আছে কি যে আজ মিসকীনকে আহার করিয়েছে? আবু বকর [রাদি.] বলিলেন, আমি মাসজিদে ঢুকেই এক ভিক্ষুকের সাক্ষাত পেলাম। আমি আবদুর রহমানের হাতে এক টুকরা রুটি পেয়ে তার থেকে সেটা নিয়ে ভিক্ষুককে দান করলাম।

দূর্বলঃ তবে ভিক্ষুকের ঘটনা বাদে সহিহ। ১৬৭০. হাকিম, বায়হাক্বী, ত্বাবারানী। ঈমাম হাকিম বলেন, মুসলিমের শর্তে সহিহ। ঈমাম যাহাবী তার সাথে একমত পোষণ করেছেন। শায়খ আরবানী সিলসিলাতুল আহাদীসিয যঈফাহ গ্রন্থে বলেন, এটা তাঁদের উভয়ের পক্ষ থেকে আশ্চর্যকর ব্যাপার! কেননা ঈমাম যাহাবী নিজেই সনদের মুবারক ইবনি ফাযালাহকে যুআফা ওয়াল মাতরূকীন গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন। ঈমাম আহমাদ ও নাসায়ী তাহাকে দুর্বল বলিয়াছেন। তাছাড়া তিনি তাদলীস করিতেন এবং তিনি এ হাদিসটি আন আন শব্দে বর্ণনা করেছেন। যাকাতের নিয়ম কানুন হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

অনুচ্ছেদ৩৮ঃ আল্লাহর দোহাই দিয়ে কিছু চাওয়া অপছন্দনীয়।

১৬৭১. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ আল্লাহর নামের দোহাই দিয়ে জান্নাত ছাড়া অন্য কিছু চাওয়া উচিৎ নয়।

১৬৭১. ইবনি আদী কামিল [৩/২৫৭]। এর সনদ দুর্বল। সনদের সুলায়মান ইবনি মুআযের স্মরণশক্তি দুর্বল হওয়ার তার দ্বারা দলীল গ্রহণ করা যাবে না। যাকাতের নিয়ম কানুন হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

অনুচ্ছেদ৩৯ঃ কেউ আল্লাহর দোহাই দিয়ে কিছু চাইলে তাহাকে দান করা

১৬৭২. আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ যে ব্যক্তি আল্লাহর নামে নিরাপত্তা চায়, তাহাকে নিরাপত্তা দাও। যে ব্যক্তি আল্লাহর নামে ভিক্ষা চায়, তাহাকে দাও। যে ব্যক্তি তোমাদেরকে দাওয়াত করে তার ডাকে সাড়া দাও। যে ব্যক্তি তোমাদের সাথে সদ্ব্যবহার করে তোমরা তার উত্তম প্রতিদান দাও। প্রতিদান দেয়ার মতো কিছু না পেলে তার জন্য দুআ করিতে থাকো, যতক্ষণ না তোমরা অনুধাবন করিতে পারো যে, তোমরা তার প্রতিদান দিতে পেরেছো।

দান করার ফজিলত হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ৪০ঃ যে ব্যক্তি তার সমস্ত সম্পদ দান করিতে চায়

১৬৭৩. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ আল-আনসারী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, একদা আমরা রসূলুল্লাহর [সাঃআঃ] নিকট অবস্থানকালে এক ব্যক্তি একটি ডিম পরিমাণ স্বর্ণ নিয়ে এসে বললো, হে আল্লাহর রসূল! আমি এ স্বর্ণ খনি থেকে পেয়েছি, এটি দান হিসেবে গ্রহণ করুন। এছাড়া আমার আর কিছুই নেই। রসূলুল্লাহ তার মুখ ফিরিয়ে নিলে লোকটি তাহাঁর ডান পাশ এসে আগের মতই বললো। এরপর সে তাহাঁর বাম পাশে এসেও তাই বললো। আর তিনিও তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলেন। অবশেষে সে তাহাঁর পিছনে এসে অনুরূপ বললে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তা নিয়ে এমন জোরে তার দিকে ছুড়ে মারলেন যে, তার শরীরে লাগলে সে অবশ্যই যখম বা আহত হতো। অতঃপর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেনঃ তোমাদের কেউ তার সমস্ত মাল আমার কাছে নিয়ে এসে বলে, এটা সদাক্বাহ। পরে সে [সম্বলহীন হয়ে] লোকের কাছে ভিক্ষা করে বেড়ায়। বস্তুত সর্বোত্তম সদাক্বাহ সেটাই যা অভাবমুক্ত থেকে দান করা হয়।

দুর্বলঃ তবে হাদিসের এ বাক্যটি সহীহঃ “সর্বোত্তম সদাক্বাহ সেটাই যা অভাবমুক্ত থেকে দান করা হয়।” ১৬৭৩. দারিমী [হাঃ ১৬৫৯], ইবনি খুযাইমাহ [হাঃ ২৪৪১], হাকিম, বায়হাক্বী। হাকিম ও যাহাবী একে সহিহ বলিয়াছেন। কিন্তু এর সনদ দুর্বল। সানাদে ইবনি ইসহাক্ব একজন মুদাল্লিস এবং তিনি এটি আন আন শব্দে বর্ণনা করেছেন। যাকাতের নিয়ম কানুন হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

১৬৭৪. ইবনি ইসহাক্ব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

উল্লেখিত সানাদে অনুরূপ অর্থের হাদিস বর্ণিত। তাতে আরো রয়েছেঃ তুমি তোমার মাল নিয়ে যাও, আমাদের এর কোনই প্রয়োজন নেই।{১৬৭৪}

{১৬৭৪}ইবনি খুযাইমাহ [হাঃ ২৪৪১]। এর সনদও পূর্বেরটির ন্যায় দুর্বল। যাকাতের নিয়ম কানুন হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

১৬৭৫.আবু সাঈদ আল-খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, একদা এক ব্যক্তি মাসজিদে প্রবেশ করলে নাবী [সাঃআঃ] লোকদেরকে বস্ত্র দানের আদেন করেন। তখন লোকেরা বস্ত্র দান করলো। তিনি ঐ ব্যক্তিকে তা থেকে দুটি কাপড় দেয়ার নির্দেশ দিলেন। এরপর তিনি আবারো দান করিতে উৎসাহিত করলে ঐ ব্যক্তি তার দুটি কাপড়ের একটি কাপড় দান করায় তিনি তাহাকে ধমক দিলে বলিলেনঃ তোমার কাপড় নিয়ে যাও।

যাকাতের নিয়ম কানুন হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

১৬৭৬.আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ সচ্ছলতা বজায় রেখে যে দান করা হয় সেটাই সর্বোত্তম দান। দান আরম্ভ করিবে তোমার পোষ্যদের থেকে।

সহীহঃ বুখারী। দান করার ফজিলত হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ৪১ঃ সমস্ত সম্পদ দানের অনুমুতি সম্পর্কে

১৬৭৭. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, হে আল্লাহর রসূল ! কোন ধরণের দান অতি উত্তম? তিনি বলিলেনঃ সামান্য সম্পদের মালিক নিজ সামর্থ্যানুযায়ী যা দান করে এবং নিজের পোষ্যদের থেকে আরম্ভ করে।

দান করার ফজিলত হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১৬৭৮. উমার ইবনিল খাত্তাব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

একদিন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদেরকে সদাক্বাহ করার নির্দেশ দেন। ঘটনাক্রমে সেদিন আমার কাছে মালও ছিল। আমি [মনে মনে] বলিলাম, আজ আমি আবু বাকর [রাদি.] এর অগ্রগামী হবো, যদিও আমি কোনো দিন দানে তার অগ্রগামী হইতে পারিনি। কাজেই আমি আমার অর্ধেক মাল নিয়ে উপস্থিত হলাম। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাকে জিজ্ঞেস করলেনঃ পরিবারের জন্য কি অবশিষ্ট রেখে এসেছো? আমি বলিলাম, এর সম-পরিমাণ। উমার [রাদি.] বলেন, আর আবু বাকর [রাদি.] তার সমস্ত মাল নিয়ে উপস্থিত হলেন। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাকে জিজ্ঞেস করলেনঃ পরিবারের জন্য কী অবশিষ্ট রেখে এসেছো? তিনি বলিলেন, আল্লাহ আর তাহাঁর রসূলকে রেখে এসেছি। তখন আমি [উমার] বলিলাম, আমি কখনো কোনো বিষয়েই আপনাকে অতিক্রম করিতে পারবো না।

যাকাতের নিয়ম কানুন হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

অনুচ্ছেদ৪২ঃ পানি পান করানোর ফযীলত

১৬৭৯. সাঈদ [রাঃ] হইতে বর্ণীতঃ

একদা সাদ ইবনি উবাধ [রাদি.] নাবী [সাঃআঃ]এর নিকট এসে বলিলেন, আপনার কাছে কোন সাক্বাহ অধিক পছন্দনীয়? তিনি বলিলেনঃ পানি [পান করানো]।

যাকাতের নিয়ম কানুন হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

১৬৮০. সাদ ইবনি উবাদাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ] সূত্রে পূর্বোক্ত হাদিসের অনুরূপ বর্ণিত। {১৬৮০}

{১৬৮০} নাসায়ী [অধ্যায়ঃ যাকাত হাদিস নং ৩৬৬৮], আহমদ. যাকাতের নিয়ম কানুন হাদিসের তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

১৬৮১. সাদ ইবনি উবাদাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, হে আল্লাহর রসূল! উম্মু সাদ মৃত্যুবরণ করেছেন [তার পক্ষ হইতে] কোন সদাক্বাহ সর্বোত্তম হইবে? তিনি বলিলেনঃ পানি। বর্ণনাকারী বলেন, তিনি [সাদ] একটি কূপ খনন করে বলিলেন, এটা উম্মু সাদের [কল্যাণের] জন্য ওয়াক্‌ফ। {১৬৮১}

যাকাতের নিয়ম কানুন হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

১৬৮২. আবু সাঈদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ যে মুসলিম কোন বস্ত্রহীন মুসলিমকে কাপড় পরাবে, মহান আল্লাহ তাহাকে জান্নাতের সবুজ পোশাক পরাবেন। যে মুসলিম কোন অভূক্ত মুসলমানকে আহার করাবে, আল্লাহ তাহাকে জান্নাতের ফল- ফলাদি খাওয়াবেন। আর যে মুসলিম কোন পিপাসু মুসলিমকে পানি পান করাবে, মহান আল্লাহ তাহাকে জান্নাতের সীলমোহরকৃত বিশুদ্ধ পানীয় পান করাবেন।

যাকাতের নিয়ম কানুন হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

অনুচ্ছেদ৪৩ঃ দুগ্ধবতী পশু ধার দেয়া সম্পর্কে

১৬৮৩. আবদুল্লাহ ইবনি আমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ চল্লিশটি বৈশিষ্টপূর্ণ কাজের মধ্যে সর্বোত্তম হচ্ছে [দুধ পানের জন্য] কাউকে দুগ্ধবতী বকরী দান করা। যে ব্যক্তি নেকীর আশায় এবং অঙ্গীকারের উপর পূর্ণ বিশ্বাস রেখে এ চল্লিশটি কাজের যেকোনো একটি করিবে, আল্লাহ তাহাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন।

ঈমাম আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, হাসসান [রাদি.] বলেন, দুগ্ধবতী বকরী ছাড়া [অন্যান্য কাজের মধ্যে রয়েছে]- সালামের জবাব দেওয়া, হাঁচির জবাব দেওয়া এবং রাস্তা হইতে কষ্টদায়ক বস্তু সরিয়ে ফেলা ইত্যাদি। শেষ পর্যন্ত আমরা পনেরটি কাজ পর্যন্তও পৌঁছাতে পারিনি। সহীহঃ বুখারী। দান করার ফজিলত হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ৪৪ঃ কোষাধ্যক্ষের সওয়াব সম্পর্কে

১৬৮৪. আবু মূসা আল-আশআরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ বিশ্বস্ত কোষাধ্যক্ষ্য সেই ব্যক্তি যে নির্দেশ মতো সন্তুষ্টচিত্তে পরিপূর্ণভাবে কাজ সম্পন্ন করে, এমনকি যাকে যা দান করিতে বলা হয় তাহাকে তাই দান করে, সে দুই দানকারীর একজন।

সহীহঃ সহিহ বুখারী ও সহিহ মুসলিম। দান করার ফজিলত হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ৪৫ঃ স্ত্রী স্বীয় স্বামীর ঘর হইতে দান করা সম্পর্কে

১৬৮৫. আয়িশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ যদি কোনো স্ত্রী স্বামীর ঘর থেকে নষ্টের উদ্দেশ্যে না রেখে কিছু দান করে, তবে সে দানের কারণে সওয়াব পাবে এবং তার স্বামীও অনুরূপ সওয়াব পাবে উপার্জন করার কারণে। রক্ষণাবেক্ষণকারীও অনুরূপ সওয়াব পাবে। কিন্তু এতে কারোর সওয়াবে অন্যের কারণে ঘাটতি হইবে না।

সহীহঃ সহিহ বুখারী ও সহিহ মুসলিম। দান করার ফজিলত হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১৬৮৬. সাদ ইবনি আবু ওয়াককাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ.

তিনি বলেন, যখন মহিলারা রসূলুল্লাহর [সাঃআঃ] নিকট বাইইয়াত হন তখন তাহাদের মধ্যে এক স্থূলদেহী মহিলাও ছিল, সম্ভবত মহিলাটি মুদার গোত্রীয়। তিনি দাঁড়িয়ে বলিলেন, হে আল্লাহর রসূল ! আমরা আমাদের পিতা, পুত্রের উপর নির্ভরশীল। ঈমাম আবু দাউদ [রাদি.] বলেন, আমার ধারণা হাদিসে এটাও আছেঃ এবং আমাদের স্বামীদের উপর নির্ভরশী। এমতাবস্থায় তাহাদের ধন-সম্পদে আমাদের কী পরিমাণ অধিকার আছে? তিনি বলিলেনঃ তোমরা যা [রাতাব হিসেবে] খাও এবং দান কর। ঈমাম আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, আর-রাতাব হচ্ছে রুটি, তরি-তরকারি ও তাজা খেজুর।

যাকাতের নিয়ম কানুন হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

১৬৮৭. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ স্ত্রী বিনা অনুমতিতে তার স্বামীর উপার্জিত সম্পদ হইতে দান করলে অর্ধেক সওয়াব পাবে।

সহীহঃ সহিহ বুখারী ও সহিহ মুসলিম। দান করার ফজিলত হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১৬৮৮. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

আবু হুরায়রা [রাদি.] হইতে এমন নারী সম্পর্কে বর্ণিত, যিনি তার স্বামীর ঘর থেকে দান করে থাকেন। তিনি বলিয়াছেন, [দান করা] বৈধ নয়, তবে স্বামী তাহাকে যা খোরাকী দিয়েছে, তা থেকে দান করিতে পারবে, আর এতে উভয়ই সওয়াব পাবে। স্বামীর বিনা অনুমতিতে তার সম্পদ থেকে স্ত্রীর দান-খয়রাত করা বৈধ নয়।

সহিহ মাওকুফ। ঈমাম আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, এ হাদিস হাম্মাদের হাদিসকে দুর্বল করে। যাকাতের নিয়ম কানুন হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ মাওকুফ

অনুচ্ছেদ৪৬ঃ নিকটাত্মীয়দের সাথে সদাচরণ করা

১৬৮৯. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

যখন এ আয়াত অবতীর্ণ হলঃ “তোমরা তোমাদের ভালবাসার বস্তু ব্যয় না করা পর্যন্ত কখনো পুণ্য লাভ করিবে না” [সূরাহ আলে ইমরানঃ ৯২], তখন আবু ত্বালহাহ [রাদি.] বলিলেন, হে আল্লাহর রসূল ! আমার মনে হচ্ছে, আমাদের রব্ব আমাদের সম্পদের অংশ চান। আমি আপনাকে সাক্ষী রেখে আরীহাতে অবস্থিত আমার ভূমিটি আল্লাহর উদ্দেশ্যে দান করলাম। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাকে বলিলেনঃ তুমি তা তোমার ঘনিষ্ঠ আত্মীয়দের দাও। অতঃপর তিনি তা হাসসান ইবনি সাবিত [রাদি.] এবং ইবাই ইবনি কাব [রাদি.] এর মধ্যে বণ্টন করে দিলেন।

সহীহঃ মুসলিম, অনুরূপ বুখারী। দান করার ফজিলত হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১৬৯০. নাবী [সাঃআঃ] এর স্ত্রী মায়মূনাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ.

তিনি বলেন, আমার একটি দাসী ছিল, তাহাকে আমি মুক্ত করে দেই। অতঃপর নাবী [সাঃআঃ] আমার কাছে এলে আমি তাঁকে বিষয়টি জানাই। তিনি বলেনঃ আল্লাহ তোমাকে এর সওয়াব দিন। কিন্তু তুমি যদি তা তোমার মাতুল গোষ্ঠীকে দান করিতে তাহলে সর্বশ্রেষ্ঠ সওয়াব পেতে।

সহীহঃ মুসলিম। দান করার ফজিলত হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১৬৯১. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেন, তোমরা সদাকাহ প্রদান কর। জনৈক ব্যক্তি বলিলেনঃ হে আল্লাহ্‌র রসূল [সাঃআঃ]! আমার নিকট একটি দিনার [স্বর্ণ মুদ্রা] আছে। তিনি বলিলেন- তুমি ওঁটা নিজেকেই দান কর [রেখে দাও]। লোকটা বললঃ আমার নিকট আরও একটি আছে। তিনি উত্তরে বলিলেনঃ এটা তোমার ছেলেদের [সন্তানদের] জন্য খরচ কর। লোকটা বললো আমার নিকট আরও একটি আছে। নাবী [সাঃআঃ] বলিলেনঃ ওঁটা তোমার স্ত্রীর জন্য খরচ কর। সে বলিল, আমার আরো একটি আছে। তিনি বলিলেনঃ তোমার খাদিমের জন্য সদাক্বাহ কর। লোকটা বললো আমার নিকট আরও একটি আছে। নাবী [সাঃআঃ] বলিলেনঃ তুমিই ভাল জানো [এটা কোথায় খরচ করিবে]। আবু দাউদ, নাসায়ী, আর ইবনি হিব্বান ও হাকিম একে সহিহ বলিয়াছেন।

যাকাতের নিয়ম কানুন হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

১৬৯২. আবদুল্লাহ ইবনি আমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

আবদুল্লাহ ইবনি আমর [রাদি.] সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ কেউ পাপী হওয়ার জন্য এটুকুই যথেষ্ট যে, সে তার উপর নির্ভরশীলদের রিযিক্ব নষ্ট করে।

যাকাতের নিয়ম কানুন হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

১৬৯৩. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ যে ব্যক্তি স্বীয় রিযিক্ব বৃদ্ধি ও দীর্ঘজীবী হইতে চায় সে যেন আত্মীয়তার সম্পর্ক অটুট রাখে।

দান করার ফজিলত হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১৬৯৪. আবদুর রহমান ইবনি আওফ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]কে বলিতে শুনেছিঃ মহান আল্লাহ বলিয়াছেন, আমিই রহমান [দয়ালু], আত্মীয়তার বন্ধন হচ্ছে রহিম, যা আমি আমার নাম থেকে নির্গত করেছি। সুতরাং যে ব্যক্তি আত্মীয়দেরকে সংযুক্ত রাখে আমিও তাহাকে সংযুক্ত রাখব এবং তাহাদের সাথে সম্পর্কচ্ছেদ করিবে আমিও তার থেকে সম্পর্কচ্ছেদ করি।

দান করার ফজিলত হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১৬৯৫. আবদুর রহমান ইবনি আওফ [রাদি.] সূত্র হইতে বর্ণীতঃ

তিনি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে বলিতে শুনেছেন… পূর্বোক্ত হাদিসের অনুরূপ। {১৬৯৫}

{১৬৯৫} আহমাদ হা/১৬৮০, হাকিম, বায়হাক্কী। আহমাদ শাকির বলেন, এর সনদ সহিহ, যাকাতের নিয়ম কানুন হাদিসের তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

১৬৯৬. জুবাইর ইবনি মুত্বঈম [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী জান্নাতে প্রবেশ করিবে না।

সহীহঃ সহিহ বুখারী ও সহিহ মুসলিম। দান করার ফজিলত হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১৬৯৭. আবদুল্লাহ ইবনি আমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ আত্মীয়তার সর্ম্পক রক্ষাকারী ঐ ব্যক্তি নয়, যে বরাবর ব্যবহার করে। বরং প্রকৃত আত্মীয়তা রক্ষাকারী ঐ ব্যক্তি যার আত্মীয় সর্ম্পক ছিন্ন করলেও সে তা পুনঃস্থাপন করে।

সহীহঃ বুখারী। দান করার ফজিলত হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ৪৭ঃ কৃপণতা সর্ম্পকে

১৬৯৮. আবদুল্লাহ ইবনি আমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, একদা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ভাষণ দিলেন এবং বলিলেনঃ তোমরা কৃপণতার ব্যাপারে সাবধান হও। কেননা তোমাদের পূর্বর্তীরা কৃপণতার কারনে ধ্বংস হয়েছে। অর্থলোভ তাহাদেরকে কৃপণতার নির্দেশ দিয়েছে, ফলে তারা কৃপণতা করেছে, তাহাদেরকে আত্মীয়তা ছিন্ন করার নির্দেশ দিয়েছে, যখন তারা তাই করেছে এবং তাহাদেরকে পাপাচারে প্ররোচিত করেছে, তখন তারা তাতে লিপ্ত হয়েছে।

দান করার ফজিলত হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১৬৯৯. আসমা বিনতে আবু বকর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি বলিলাম, হে আল্লাহর রাসুল [সাঃআঃ] [আমার স্বামী] যুবাইর [রাদি.] ঘরে যা উপার্জন করে নিয়ে আসেন তা ছাড়া অন্য কোন মাল আমার নেই। সুতরাং আমি কি তা থেকে সাদক্বাহ করিতে পারি? তিনি বলিলেনঃ সাদক্বাহ করো , ধরে রেখো না, তাহলে তোমার [রিযিক] ধরে রাখা হইবে।

সহীহঃ সহিহ বুখারী ও সহিহ মুসলিম। দান করার ফজিলত হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১৭০০. আয়িশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি কতিপয় মিসকিন সর্ম্পকে আলোচনা করিলেন। ঈমাম আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, আরেকজনের বর্ননায় আছে অথবা কতিপয় মিসকিনকে সাদক্বাহ করা সর্ম্পকে জিজ্ঞেস করিলেন। তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, দান খয়রাত করো এবং তা গুনে রেখো না। তাহলে তোমাকেও না দিয়ে রেখে দেয়া হইবে।

দান করার ফজিলত হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস


Posted

in

by

Comments

Leave a Reply