চাদর, শোয়া, নখ, গোঁফ ও দাড়ি কাটার হাদিস

চাদর, শোয়া, নখ, গোঁফ ও দাড়ি কাটার হাদিস

চাদর, শোয়া, নখ, গোঁফ ও দাড়ি কাটার হাদিস >> সুনান তিরমিজি শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন

অধ্যায়ঃ ৪১, অনুচ্ছেদঃ (১৪-২৭)=১৪টি

অনুচ্ছেদ-১৪ঃ নখ কাটা
অনুচ্ছেদ-১৫ঃ গোঁফ ও নখ কাটার সময়সীমা
অনুচ্ছেদ-১৭ঃ দাড়ি ছাঁটা প্রসঙ্গে
অনুচ্ছেদ-১৮ঃ দাড়ি লম্বা হওয়ার জন্য ছেড়ে দেয়া
অনুচ্ছেদ-১৯ঃ চিৎ হয়ে শুয়ে এক পায়ের উপর অন্য পা রাখা
অনুচ্ছেদ-২০ এক পায়ের উপর অন্য পা রেখে চিৎ হয়ে শোয়া মাকরূহ
অনুচ্ছেদ-২১ঃ উপুড় হয়ে শোয়া মাকরূহ
অনুচ্ছেদ-২৩ঃ বালিশে হেলান দিয়ে শোয়া
অনুচ্ছেদ-২৪ঃ[কারো প্রভাবাধীন এলাকায় ঈমামতি করা]
অনুচ্ছেদ-২৫ঃমালিক তার জন্তুযানের সামনের আসনে বসার বেশি হকদার
অনুচ্ছেদ-২৬ঃ নরম চাদর ব্যবহারের অনুমতি প্রসঙ্গে
অনুচ্ছেদ-২৭ঃ একটি জন্তুযানে তিনজনের আরোহণ

অনুচ্ছেদ১৪ঃ নখ কাটা

২৭৫৬. আবু হুরাইরাহ্‌ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেছেনঃ পাঁচ প্রকার কাজ ফিতরাতের [স্বভাব ধর্মের] অন্তর্গত। [১] নাভীর নীচের লোম কেটে ফেলা, [২] খাৎনাহ্‌ করা, [৩] গোঁফ কাটা, [৪] বগলের চুল উপড়িয়ে ফেলা এবং [৫] নখ কাটা।

সহীহঃ ইবনি মা-জাহ [২৯২], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। শোয়া, নখ, গোঁফ ও দাড়ি কাটার হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৭৫৭. আয়িশাহ্‌ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেছেনঃ দশ প্রকার কাজ ফিত্‌রাতের [স্বভাব ধর্মের] অন্তর্গতঃ [১] গোঁফ কাটা, [২] দাড়ি লম্বা করা, [৩] মিসওয়াক করা, [৪] নাকে পানি দেয়া, [৫] নখ কাটা, [৬] আঙ্গুলের গ্রন্থিগুলো ধোয়া, [৭] বগলের লোম উপড়িয়ে ফেলা, [৮] নাভীর নিম্নাংশের চুল কামানো এবং [৯] পানি দ্বারা শৌচ করা। যাকারিয়াহ্‌ [রঃ] বলেন, মুসআব [রঃ] বলেছেন, আমি দশম কাজটি ভুলে গেছি। তবে সম্ভবতঃ সেটা হইবে কুলি করা।

সহীহঃ ইবনি মা-জাহ [২৯৩], মুসলিম। আবু ঈসা বলেন, ইন্তিকাসুল মা অর্থ পানি দিয়ে শৌচ করা। আম্মার ইবনি ইয়াসির, ইবনি উমার ও আবু হুরাইরাহ্‌ [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান। শোয়া, নখ, গোঁফ ও দাড়ি কাটার হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

অনুচ্ছেদ১৫ঃ গোঁফ নখ কাটার সময়সীমা

২৭৫৮. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] সাহাবীদের জন্য চল্লিশ দিন অন্তর একবার নখ কাটা, গোঁফ খাটো করা এবং নাভীর নিম্নাংশের লোম কামানোর জন্য সময় নির্ধারণ করিয়াছেন।

সহীহঃ ইবনি মা-জাহ [২৯৫], মুসলিম। শোয়া, নখ, গোঁফ ও দাড়ি কাটার হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৭৫৯. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমাদের জন্য গোঁফ ছাটা, নখ কাটা, নাভীর নিম্নাংশের লোম কামানো এবং বগলের লোম উপড়িয়ে ফেলার জন্য সময় নির্ধারণ করা হয়েছে এমনভাবে যে, তা যেন চল্লিশ দিনের বেশি রেখে না দেয়া হয়।

সহীহঃ দেখুন পূর্বের হাদীস। আবু ঈসা বলেন, প্রথমোক্ত হাদীসের চাইতে এই হাদীসটি অনেক বেশি সহীহ। হাদীসবিশারদদের মতে সাদাক্বাহ্‌ ইবনি মূসা প্রখর স্মৃতিশক্তির অধিকারী নন। শোয়া, নখ, গোঁফ ও দাড়ি কাটার হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

অনুচ্ছেদ-১৬ঃ গোঁফ কাটা

২৭৬০. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] তাহাঁর গোঁফ ছেটে খাটো করিতেন এবং বলিতেনঃ দয়াময়ের প্রিয় বন্ধু ইবরাহীম [আঃ] এরকম করিতেন।

সনদ দূর্বল আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব। শোয়া, নখ, গোঁফ ও দাড়ি কাটার হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস

২৭৬১. যাইদ ইবনি আরক্বাম [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

, রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি গোঁফ খাটো করে না, সে আমাদের [সুন্নাতের] অনুসারী নয়।

সহীহঃ রাওযুন নাযীর [৩১৩], মিশকাত [৪৪৩৮] মুগীরাহ্‌ ইবনি শুবাহ্‌ [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। মুহাম্মাদ ইবনি বাশ্‌শার-ইয়াহ্‌ইয়া ইবনি সাঈদ হইতে, তিনি ইউসুফ ইবনি সুহাইব [রঃ] হইতে এই সনদে উপরোক্ত হাদীসের সমার্থবোধক হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। শোয়া, নখ, গোঁফ ও দাড়ি কাটার হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

অনুচ্ছেদ১৭ঃ দাড়ি ছাঁটা প্রসঙ্গে

২৭৬২. আমর ইবনি শুআইব [রঃ] হইতে পর্যায়ক্রমে তার পিতা ও দাদার সূত্রে হইতে বর্ণীতঃ

রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] দৈঘ্যে-প্রস্থে দু দিকে তাহাঁর দাড়ি ছাঁটতেন।

মাওযূ, যঈফা [২৮৮], আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি গারীব। আমি মুহাম্মাদ ইবনি ইসমাঈল [আল-বুখারী]-কে বলিতে শুনিয়াছি, উমার ইবনি হারূনের বর্ণিত হাদীস গ্রহণ যোগ্য বলা যায়। “রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর দাড়ির দৈর্ঘ্য-প্রস্থ উভয় দিকে ছাঁটতেন” এই হাদীস ছাড়া তার অন্য কোন রিওয়ায়াত সম্পর্কে আমার জানা নাই, যার কোন বুনিয়াদ নাই বা যা তিনি এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। আমরা শুধুমাত্র ইবনি হারূনের রিওয়ায়াত হিসেবে উপরোক্ত হাদীস জেনেছি। আমি ঈমাম বুখারীকে উমার ইবনি হারূন সম্পর্কে উত্তম অভিমত মনে ধারণ করিতে দেখেছি। আবু ঈসা বলেন, আমি কুতাইবাকে বলিতে শুনিয়াছি, উমার ইবনি হারূন ছিলেন হাদীসের ধারক। তিনি বলিতেন, “কথা ও কাজের সমষ্টি হল ঈমান” [আল-ঈমান কাওল ওয়া আমাল]। কুতাইবা বলেন, ওয়াকী ইবনি জাররাহ আমাদেরকে জানিয়েছেন এক ব্যক্তির সূত্রে, তিনি সাওর ইবনি ইয়াযীদের সূত্রেঃ রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাইফবাসীদের বিপক্ষে মিনজানীক [পাথর নিক্ষেপক যন্ত্র] স্থাপন করিয়াছেন। কুতাইবা বলেন, আমি ওয়াকীকে প্রশ্ন করলাম, ইনি কে? তিনি বলেন, আপনাদের সঙ্গী উমার ইবনি হারূন। শোয়া, নখ, গোঁফ ও দাড়ি কাটার হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ জাল হাদীস

অনুচ্ছেদ১৮ঃ দাড়ি লম্বা হওয়ার জন্য ছেড়ে দেয়া

২৭৬৩. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসুলূল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেছেনঃ তোমরা গোঁফ খাটো কর এবং দাড়ি লম্বা কর।

সহীহঃ আদাবুয্‌ যিফাফ নতুন সংস্করণ [২০৯] আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। শোয়া, নখ, গোঁফ ও দাড়ি কাটার হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৭৬৪. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসুলূল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] আমাদেরকে গোঁফ খাটো করিতে এবং দাড়ি লম্বা করিতে আদেশ করিয়াছেন।

সহীহঃ দেখুন পূর্বের হাদীস, বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। আবু বাক্‌র ইবনি নাফি নির্ভরযোগ্য বর্ণনাকারী এবং ইবনি উমার [রাদি.]-এর মুক্তদাস। উমার ইবনি নাফি একজন নির্ভরযোগ্য বর্ণনাকারী। কিন্তু তার অপর মুক্তদাস আবদুল্লাহ ইবনি নাফি হাদীস শাস্ত্রে দুর্বল। শোয়া, নখ, গোঁফ ও দাড়ি কাটার হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

অনুচ্ছেদ১৯ঃ চিৎ হয়ে শুয়ে এক পায়ের উপর অন্য পা রাখা

২৭৬ . আব্বাদ ইবনি তামীম [রঃ] হইতে তাহাঁর চাচার সূত্রে হইতে বর্ণীতঃ

তিনি মাসজিদের মধ্যে রাসুলূল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম]-কে এক পায়ের উপর অন্য পা [ভাঁজ করে হাঁটু দাঁড় করিয়ে] রেখে চিৎ হয়ে শুয়ে থাকতে দেখেছেন।

সহীহঃ বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ, আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। আব্বাদ ইবনি তামীমের চাচার নাম আবদুল্লাহ ইবনি যাইদ ইবনি আসিম আল-মাযিনী। শোয়া, নখ, গোঁফ ও দাড়ি কাটার হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

অনুচ্ছেদ২০ এক পায়ের উপর অন্য পা রেখে চিৎ হয়ে শোয়া মাকরূহ

২৭৬৬. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসুলূল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেছেন, তোমাদের মাঝে কেউ যখন পিঠের উপর চিৎ হয়ে শয়ণ করে তখন যেন সে এক পা অপর পায়ের উপর না রাখে।

সহীহঃ সহীহাহ্‌ [৩/২৫৪] এ হাদীসটি একাধিক বর্ণনাকারী সুলাইমান আত্‌-তাইমীর সূত্রে বর্ণনা করিয়াছেন। সানাদে বর্ণিত খিদাশ অপরিচিত। সুলাইমান আত্‌-তাইমী তার বরাতে একাধিক হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। শোয়া, নখ, গোঁফ ও দাড়ি কাটার হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৭৬৭. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

[রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] ]ইশতিমালুস সাম্মা [বাম কাঁধ অনাবৃত রেখে চাদরের দুই প্রান্ত দান কাঁধে জড়ো করে পরতে] , ইহতিবা [নিতম্বে ভর করে হাঁটুদ্বয় উঁচু করে পেটের সাথে চাদর পেচিয়ে বসতে] এবং এক পায়ের উপড় অপর পা [হাঁটু ভাঁজ করে] উঠিয়ে পিঠের উপর চিত হয়ে শুতে বারণ করিয়াছেন।

সহীহঃ সহীহাহ [১২৫৫] মুসলিম। আবু ঈসা বলেন , এ হাদীসটি হাসান সহীহ । শোয়া, নখ, গোঁফ ও দাড়ি কাটার হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

অনুচ্ছেদ২১ঃ উপুড় হয়ে শোয়া মাকরূহ

২৭৬৮. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন , রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] জনৈক ব্যক্তিকে পেটের উপর হয়ে শুয়ে থাকতে দেখে বললেনঃ আল্লাহ তাআলা এ রকম শোয়া পছন্দ করেন না।

হাসান সহীহঃ মিশকাত [৪৭১৮, ৪৭১৯] তিহফা ও ইবনি উমার [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে । আবু ঈসা বলেন , ইয়াহইয়া ইবনি আবী কাসীর উক্ত হাদীস আবু সালাম হইতে , তিনি ইয়াঈশ ইবনি তিহফা হইতে , তিনি তার বাবার সুত্রে বর্ণনা করিয়াছেন । তিহফার স্থলে তিখফা উচ্চারণও আছে । তবে তিহফা- ই সঠিক । আবার তিগবা উচ্চারণও আছে। কিছু সংখ্যক হাদীসের হাফিয বলেন যে , তিখফা উচ্চারণই যথার্থ । ইয়াঈশ সাহাবীদের অন্তর্ভুক্ত। শোয়া, নখ, গোঁফ ও দাড়ি কাটার হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ হাসান সহীহ

অনুচ্ছেদ-২ঃ লজ্জাস্থানের হিফাযাত করা

২৭৬৯. বাহ্‌য ইবনি হাকীম [রঃ] হইতে পর্যায়ক্রমে তাহাঁর বাবা ও তাহাঁর দাদার সূত্রে হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি প্রশ্ন করলাম , হে আল্লাহর রাসূল ! আমাদের লজ্জাস্থান কতটুকু ঢেকে রাখব এবং কতটুকু খোলা রাখতে পারব? তিনি বললেনঃ তোমার স্ত্রী ও দাসী ছাড়া সকলের দৃষ্টি হইতে তোমার লজ্জাস্থান হিফাযাত করিবে। তিনি আবার প্রশ্ন করিলেন, পুরুষেরা একত্রে অবস্থানরত থাকলে? তিনি বললেনঃ যতদূর সম্ভব কেউ যেন আভরণীয় স্থান দেখিতে না পারে তুমি তাই কর। আমি আবার প্রশ্ন করলাম , মানুষ তো কখনো নির্জন অবস্থায়ও থাকে। তিনি বললেনঃ আল্লাহ তাআলা তো লজ্জার ক্ষেত্রে বেশি হাক্বদার।

হাসানঃ ইবনি মা-জাহ [১৯২০] আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান। বাহ্‌যের দাদার নাম মুআবিয়াহ ইবনি হাইদাহ্‌ আল-কুশাইরী। আল-জুরাইরী হাকীম ইবনি মুআবিয়ার সূত্রে হাদীসটি বর্ণনা করিয়াছেন। তিনি হলেন বাহ্‌যের বাবা। শোয়া, নখ, গোঁফ ও দাড়ি কাটার হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ হাসান হাদীস

অনুচ্ছেদ২৩ঃ বালিশে হেলান দিয়ে শোয়া

২৭৭০. জাবির ইবনি সামুরাহ্‌ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে তাহাঁর বাম পার্শ্বদেশে বালিশে হেলান দিয়ে শুয়ে থাকতে দেখেছি।

সহীহঃ মুখতাসার শামা-য়িল [১০৪] আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব। একাধিক বর্ণনাকারী ইসরাইল হইতে, তিনি সিমাক হইতে তিনি জাবির ইবনি সামুরাহ্‌ [রাদি.] হইতে যে হাদীসটি বর্ণনা করিয়াছেন, তাতে বাম “ পার্শ্বদেশ” কথাটুকু নেই । শোয়া, নখ, গোঁফ ও দাড়ি কাটার হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৭৭১. জাবির ইবনি সামুরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে বালিশে হেলান দিয়ে শুয়ে থাকতে দেখেছি।

সহীহ ঃ দেখুন পূর্বের হাদীস। আবু `ঈসা বলেন, হাদীসটি সহিহ। শোয়া, নখ, গোঁফ ও দাড়ি কাটার হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

অনুচ্ছেদ-২৪ঃ[কারো প্রভাবাধীন এলাকায় ঈমামতি করা]

২৭৭২. আবু মাসঊদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কোন ব্যক্তির প্রভাবাধীন এলাকায় কেউ ঈমামতি করিবে না এবং তার বাড়ীতে তার নির্দিষ্ট আসনে তার অনুমতি ব্যতীত বসবে না।

সহীহ ঃ ইরওয়াহ্ [৪৯৪], সহীহ আবু দাঊদ [৫৯৪] আবু ঈসা বলেন, হাদীসটি হাসান সহিহ। সহীহ তিরমিযী শরীফ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

অনুচ্ছেদ-২৫ঃমালিক তার জন্তুযানের সামনের আসনে বসার বেশি হকদার

২৭৭৩. বুরাইদাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, কোন একদিন নাবী [সাঃআঃ] [কোথাও] হেঁটে যাচ্ছিলেন। তখন জনৈক ব্যাক্তি একটি গাধা সাথে নিয়ে এসে বলিল, হে আল্লাহর রাসূল [সাঃআঃ]! আপনি আরোহন করুন, এবং সে পিছনে সরে গেল। রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ না, তুমি পিছনে যেও না, তুমি তোমার বাহনের সামনে বসার অধিকারী, তবে আমার জন্য স্বেচ্ছায় ছেড়ে দিলে ভিন্ন কথা। লোকটি বলিল, আমি তা আপনাকে দিয়ে দিলাম। বর্ণনাকারী বলেন, তারপর তিনি সাওয়ার হলেন।

সহীহ ঃ মিশকাত [৩৯১৮], ইরওয়াহ্ [২/২৫৭] আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান এই সূত্রে গারীব। ক্বাইস ইবনি সাদ ইবনি উবাদা [রাদি.]হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। সহীহ তিরমিযী শরীফ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

অনুচ্ছেদ-২৬ঃ নরম চাদর ব্যবহারের অনুমতি প্রসঙ্গে

২৭৭৪. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] প্রশ্ন করিলেন ঃ তোমাদের চাদর আছে কি? আমি বললাম, আমরা চাদর কোথায় পাব? তিনি বললেনঃ খুব শীঘ্রই তা তোমাদের নিকট থাকিবে। জাবির [রাদি.]বলেন, আমি আমার স্ত্রীকে বললাম, আমার নিকট হইতে তোমার চাদরটি সরিয়ে নাও। সে বলিল, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] কি বলেননি যে, অচিরেই তোমাদের নিকট চাদর থাকিবে? তিনি [জাবির] বলেন, এরপর আমি তাকে এ কথা বলা হইতে বিরত হলাম।

সহীহ ঃ বুখারি ও মুসলিম,আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। সহীহ তিরমিযী শরীফ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

অনুচ্ছেদ-২৭ঃ একটি জন্তুযানে তিনজনের আরোহণ

২৭৭৫. ইয়াস ইবনি সালামাহ্ [রঃ] হইতে তার বাবা হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, কোন একদিন আমি নাবী [সাঃআঃ]-এর আশ্-শাহ্ববাহ্ নামক খচ্চরটি টেনে নিয়ে যাচ্ছিলাম। হাসান ও হুসাইন [রাদি.]তাহাঁর সামনে-পিছনে বসা ছিলেন। আমি সেটা টেনে রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর হুজরার নিকটে নিয়ে গেলাম।

হাসান ঃ মুসলিম [৭/১৩০] ইবনি আব্বাস ও আব্দুল্লাহ ইবনি জাফার [রাদি.]হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ এই সূত্রে গারীব। সহীহ তিরমিযী শরীফ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ হাসান হাদীস


Posted

in

by

Comments

Leave a Reply