লোহা গরম করে শরীরে দাগ লাগানো
দাগ লাগানো হাদিস সহিহ বুখারি + সহিহ বুখারি+ সুনান আবু দাউদ + ইবনে মাজাহ
আপনারা পড়তে পারেন আরো হাদিস রোগের চিকিৎসায় জন্য শিঙ্গা লাগানো ও রক্তমোক্ষণ করা উত্তম। রক্তক্ষরণ বন্ধ করা
কায়স ইবনু আবূ হাযিম (রহ:), হতে বর্ণিতঃ আবূ হুরায়রা (রাদিআল্লাহু আঃ), আয়িশা (রাদিআল্লাহু আঃ) , ইমরান ইবনু হুসাইন (রাদিআল্লাহু আঃ), আনাস (রাদিআল্লাহু আঃ) , মুগীরাহ (রাদিআল্লাহু আঃ), আক্কার ইবনুল মুগীরাহ (রহঃ), ইমরান ইবনু হুসাইন (রাদিআল্লাহু আঃ), জাবির (রাদিআল্লাহু আঃ), ইয়াহইয়া বিন আসআদ (রাদিআল্লাহু আঃ), জাবির বিন আবদুল্লাহ (রাদিআল্লাহু আঃ)
সহিহ বুখারি
সহিহুল বুখারি – ৫৬৭২ঃ কায়স ইবনু আবূ হাযিম (রহ:) হতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা অসুস্থ খব্বাব (রাদিআল্লাহু আঃ) -কে দেখিতে গেলাম। এ সময় (চিকিৎসার জন্য তাঁকে) সাতবার দাগ লাগানো হয়েছিল। তখন তিনি বললেনঃ আমাদের সাথীরা ইন্তিকাল করিয়াছেন। তাঁরা এমন অবস্থায় চলে গেছেন যে, দুনিয়া তাঁদের আমলের সাওয়াবে কোন রকম কমতি করিতে পারেনি। আর আমরা এমন জিনিস লাভ করেছি, যা মাটি ভিন্ন অন্য কোথাও রাখার জায়গা পাচ্ছি না। যদি নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের মৃত্যুর জন্য দু’আ কামনা করিতে নিষেধ না করিতেন, তবে আমি মৃত্যুর জন্য দু’আ করতাম। অতঃপর আমরা আরেকবার তাহাঁর কাছে এসেছিলাম। তখন তিনি তাহাঁর বাগানের দেয়াল তৈরী করছিলেন। তিনি বললেনঃ মুসলিমকে তাহাঁর যাবতীয় ব্যয়ের জন্য সাওয়াব দান করা হয়, তবে এ মাটিতে স্থাপিত জিনিসের কথা আলাদা।
(আধুনিক প্রঃ- ৫২৬১, ইঃ ফাঃ- ৫১৫৭)
সহিহুল বুখারি – ৫৬৭৩ঃ হতে বর্ণিতঃ আ
বূ হুরায়রা (রাদিআল্লাহু আঃ) বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে বলিতে শুনেছিঃ তোমাদের কোন ব্যক্তিকে তার নেক আমাল জান্নাতে প্রবেশ করাতে পারবে না। লোকজন প্রশ্ন করলঃ হে আল্লাহ্র রসূল! আপনাকেও নয়? তিনি বললেনঃ আমাকেও নয়, যতক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহ আমাকে তাহাঁর করুণা ও দয়া দিয়ে আবৃত না করেন। কাজেই মধ্যমপন্থা গ্রহণ কর এবং নৈকট্য লাভের চেষ্টা চালিয়ে যাও। আর তোমাদের মধ্যে কেউ যেন মৃত্যু কামনা না করে। কেননা, সে ভাল লোক হলে (বয়স দ্বারা) তার নেক আমাল বৃদ্ধি হইতে পারে। আর খারাপ লোক হলে সে তাওবাহ করার সুযোগ পাবে।
(আধুনিক প্রঃ- ৫২৬২, ইঃ ফাঃ- ৫১৫৮)
সহিহুল বুখারি – ৫৭১৯ঃ আনাস (রাঃ) হইতে বর্ণিতঃ
আবূ ত্বালহা ও আনাস ইবনু নাযর (রাঃ) তাকে আগুন দিয়ে দাগ দিয়েছেন। আর আবূ ত্বালহা (রাঃ) তাকে নিজ হাতে দাগ দিয়েছেন।
(আধুনিক প্রঃ- ৫৩০১, ইঃ ফাঃ- ৫১৯৭)
সহিহুল বুখারি – ৫৭২১ঃ আব্বাস ইবনু মানসূর বলেন, আইউব আবূ কিলাবা…………. আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) সূত্র হইতে বর্ণিতঃ
আনাস (রাঃ) বলেনঃ আমাকে পাঁজর ব্যথা রোগের কারণে রসূলুল্লাহ্ (সাঃআঃ) -এর জীবিত কালে আগুন দিয়ে দাগ দেয়া হয়েছিল। তখন আমার নিকট উপস্থিত ছিলেন আবূ ত্বালহা, আনাস ইবনু নাযর এবং যায়দ ইবনু সাবিত (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা)। আর আবূ ত্বালহা (রাঃ) আমাকে দাগ দিয়েছিলেন।
(আধুনিক প্রঃ- ৫৩০১, ইঃ ফাঃ- ৫১৯৭)
সুনান আত তিরমিজি
হাদিসঃ সুনান আত তিরমিজি – ২০৪৯ঃ ইমরান ইবনু হুসাইন (রাদিআল্লাহু আঃ) হতে বর্ণিতঃ
উত্তপ্ত লোহার মাধ্যমে শরীরে দাগ দিতে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিষেধ করিয়াছেন। বর্ণনাকারী বলেন, আমরা যখন রোগাক্রান্ত হয়ে উত্তপ্ত লোহা দ্বারা দাগ লাগিয়েছি তখন ব্যর্থতা ও বিফলতা ব্যতীত আর কিছুই পাইনি।
সহীহ, ইবনু মা-জাহ (৩৪৯০)। আবূ ঈসা বলেন, এ হাদিসটি হাসান সহীহ্ । ইমরান ইবনু হুসাইন (রাদিআল্লাহু আঃ) হইতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, আমাদেরকে শরীরে উত্তপ্ত লোহার মাধ্যমে দাগ লাগাতে বারণ করা হয়েছে । আবূ ঈসা বলেন, ইবনু মাসউদ, উকবা ইবনু আমির ও ইবনু আব্বাস (রাদিআল্লাহু আঃ) হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদিস বর্ণিত আছে । দাগ লাগানো এ হাদিসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসঃ সুনান আত তিরমিজি – ২০৫০ঃ আনাস (রাদিআল্লাহু আঃ) হতে বর্ণিতঃ
নবী করীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সা’দ ইবনু যুরারাকে কাঁটা বিদ্ধ হওয়ার কারণে উত্তপ্ত লোহার মাধ্যমে দগ্ধ করেছিলেন।
সহীহ, মিশকাত তাহকীক ছানী (৩৫৩৪)। আবূ ঈসা বলেন, উবাই ও জাবির (রাদিআল্লাহু আঃ) হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদিস বর্ণিত আছে । এ হাদিসটি হাসান গারীব । হাদিস এর মানঃ সহিহ হাদিস
হাদিসঃ সুনান আত তিরমিজি – ২০৫৫ঃ আক্কার ইবনুল মুগীরা (রহঃ) হইতে তাহাঁর বাবা হতে বর্ণিতঃ
তিনি (মুগীরা) বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে লোক (শরীরে) দাগ নেয় অথবা ঝাড়ফুঁক করায় সে তাওয়াক্বকুল (আল্লাহ তা’আলার উপর নির্ভরশীলতা) হইতে বিচ্যুত হয়েছে।
সহীহ, ইবনু মা-জাহ (৩৪৮৯)। আবূ ঈসা বলেন, ইবনু মাসঊদ, ইবনু আব্বাস ও ইমরান ইবনু হুসাইন (রাদিআল্লাহু আঃ) হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদিস বর্ণিত আছে । এ হাদিসটি হাসান সহীহ্। দাগ লাগানো হাদিস এর মানঃ সহিহ হাদিস
সুনান আবু দাউদ
হাদিসঃ সুনান আবু দাউদ -৩৮৬৫ঃ ইমরান ইবনু হুসাইন (রাদিআল্লাহু আঃ) হতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) লোহা গরম করে শরীরে দাগ দিতে বারণ করিয়াছেন। তবুও আমরা লোহা দাগিয়ে চিকিৎসা করেছি; কিন্তু সুস্থ হইনি, সফলকামও হইনি। ইমাম আবূ দাঊদ (রহঃ) বলেন, তিনি (ইমরান) ফেরেশতাহাদের সালাম শুনতেন। তিনি লোহার দাগ গ্রহনের পর তা আর শুনতে পাননি। তিনি তা ত্যাগ করলে আগের ন্যয় সালাম শুনতে পান।
দাগ লাগানো হাদিস এর মানঃ সহিহ হাদিস
হাদিসঃ সুনান আবু দাউদ -৩৮৬৬ঃ জাবির (রাদিআল্লাহু আঃ) হতে বর্ণিতঃ
সা’দ ইবনু মুআয (রাদিআল্লাহু আঃ)-এর তীরের আঘাতের স্থানে নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) গরম লোহার স্যাক দিয়ে চিকিৎসা করিয়াছেন।
হাদিস এর মানঃ সহিহ হাদিস
ইবনে মাজাহ
হাদিসঃ ইবনে মাজাহ-৩৪৮৯ঃ মুগীরাহ (রাদিআল্লাহু আঃ), হতে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ যে ব্যক্তি তপ্ত লোহা দ্বারা (দেহে) দাগ নেয় বা ঝাড়ফুঁক গ্রহণ করায় সে তাওয়াক্কুল (আল্লাহর উপর নির্ভরশীলতা) থেকে বিচ্যুত হলো (আ. তি,না)।
তাহকীক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। দাগ লাগানো হাদিস এর মানঃ সহিহ হাদিস
হাদিসঃ ইবনে মাজাহ-৩৪৯০ঃ ইমরান ইবনুল হুসায়ন (রাদিআল্লাহু আঃ), হতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উত্তপ্ত লোহা দ্বারা দাগ দিতে নিষেধ করিয়াছেন। রাবী বলেন, আমি উত্তপ্ত লোহার দাগ লাগালে ব্যর্থতা ও বিফলতা ছাড়া আর কিছুই পাইনি।
তাহকীক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। দাগ লাগানো হাদিস এর মানঃ সহিহ হাদিস
হাদিসঃ ইবনে মাজাহ-৩৪৯১ঃ ইবনু আব্বাস (রাদিআল্লাহু আঃ), হতে বর্ণিতঃ
তিন জিনিসে রোগমুক্তি নিহিতঃ মধুপানে, রক্তমোক্ষণে এবং তপ্ত লোহার দাগ গ্রহণে। তবে আমার উম্মাতকে আমি তপ্ত লোহার দাগ গ্রহণ করিতে বারণ করেছি। ইবনু আব্বাস (রাদিআল্লাহু আঃ) হাদিসটি নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণনা করিয়াছেন।
তাহকীক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। হাদিস এর মানঃ সহিহ হাদিস
হাদিসঃ ইবনে মাজাহ-৩৪৯২ঃ ইয়াহইয়া বিন আসআদ (রাদিআল্লাহু আঃ) হতে বর্ণিতঃ
তার কণ্ঠনালীতে যাব্হ’ নামীয় ব্যথা হলো। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ আবূ উমামার চিকিৎসার ব্যাপারে আমি যথাসাধ্য চেষ্টা করবো। অতঃপর তিনি নিজ হাতে তাকে তপ্ত লোহার দ্বারা সেঁক দিলেন। তিনি ইন্তিকাল করলে নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তার মৃত্যুতে ইহূদীদের খারাপ অপবাদ হস্তগত হলো। তারা বলবে, সে তার সাথীর মৃত্যু ঠেকাতে পারলো না; অথচ আমি নিজের জন্য অথবা কারো জন্য কিছু করার ক্ষমতা রাখি না।
তাহকীক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ (আরবি) ব্যতীত হাসান। (৩৪৯২) মুওয়াত্তা’ মালিক ১৭৫৮। হাদিস এর মানঃ অন্যান্য
হাদিসঃ ইবনে মাজাহ-৩৪৯৩ঃ জাবির (রাদিআল্লাহু আঃ), হতে বর্ণিতঃ
উবাই বিন কাব (রাদিআল্লাহু আঃ) খুব অসুস্থ হয়ে পড়লেন। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার নিকট চিকিৎসক পাঠালেন। সে তার (হাতের) শিরায় তপ্ত লোহার সেঁক দিলো।
তাহকীক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। দাগ লাগানো হাদিস এর মানঃ সহিহ হাদিস
হাদিসঃ ইবনে মাজাহ-৩৪৯৪ঃ জাবির বিন আবদুল্লাহ (রাদিআল্লাহু আঃ), হতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাদ বিন মুআজ (রাদিআল্লাহু আঃ) এর হাতের শিরায় দু’বার গরম লোহার সেঁক দিলেন।
তাহকীক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। দাগ লাগানো হাদিস এর মানঃ সহিহ হাদিস
সারাংসঃ লোহা গরম করে শরীরে দাগ লাগানো
Leave a Reply