দাউদ আঃ এর কিতাব যাবুর ও সুলাইমান আঃ এর বর্ণনা

দাউদ আঃ এর কিতাব যাবুর ও সুলাইমান আঃ এর বর্ণনা

দাউদ আঃ এর কিতাব যাবুর ও সুলাইমান আঃ এর বর্ণনা >> বুখারী শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন

পর্বঃ ৬০, আম্বিয়া কিরাম, অধ্যায়ঃ (৩৭-৪০)=৪টি

৬০/৩৭. অধ্যায়ঃ মহান আল্লাহর বাণী: আমি দাউদকে যাবুর দিয়েছি। (বনী ইসরাঈল ৫৫)
৬০/৩৮. অধ্যায়ঃ আল্লাহর নিকট সবচেয়ে পছন্দনীয় সালাত দাউদ (আঃ)-এর সালাত ও সবচেয়ে পছন্দনীয় সওম দাউদ (আঃ)-এর সওম। তিনি রাতের প্রথমার্ধে ঘুমাতেন আর এক-তৃতীয়াংশ দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করিতেন এবং বাকী ষষ্ঠাংশ ঘুমাতেন। তিনি একদিন সওম পালন করিতেন আর একদিন বিরতি দিতেন।
৬০/৩৯. অধ্যায়ঃ মহান আল্লাহর বাণীঃ এবং স্মরণ করুন আমার বান্দা দাউদের কথা, যিনি ছিলেন খুব শক্তিশালী এবং যিনি ছিলেন অতিশয় আল্লাহ অভিমুখী…….. ফায়সালাকারীর বর্ণনা শক্তি। (সোয়াদ ১৭-২০)
৬০/৪০. অধ্যায়ঃ মহান আল্লাহর বাণীঃ আর আমি দাঊদকে দান করলাম সুলাইমান। সে ছিল অতি উত্তম বান্দা। তিনি তো ছিলেন অতিশয় আল্লাহ অভিমুখী। (সোয়াদ ৩০)

৬০/৩৭. অধ্যায়ঃ মহান আল্লাহর বাণী: আমি দাউদকে যাবুর দিয়েছি। (বনী ইসরাঈল ৫৫)

—- কিতাবসমূহ। তার একবচনে —- আর —- আমি লিখেছি। আর আমি আমার পক্ষ হইতে দাউদকে বিশেষ মর্যাদা দিয়েছিলাম। হে পর্বত! তাহাঁর সঙ্গে মিলে আমার তাসবীহ পাঠ কর। মুজাহিদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, তার সঙ্গে তাসবীহ পাঠ কর। —- লৌহবর্মসমূহ। আর এ নির্দেশ আমি পাখীকেও দিয়েছিলাম। আমি তাহাঁর জন্য লোহাকে নরম করে দিয়েছিলাম। তুমি লৌহবর্ম তৈরি করিতে সঠিক পরিমাপের প্রতি লক্ষ্য রেখো। —- পেরেক ও কড়াসমূহ। পেরেক এমন ছোট করে তৈরি করো না যাতে তা ঢিলে হয়ে যায়। আর এতো বড় করোনা যাতে বর্ম ভেঙ্গে যায়। —— অর্থ-অবতীর্ণ করা। —- অর্থ-বেশি ও সমৃদ্ধ। “আর সৎকর্ম কর, নিশ্চয়ই তোমরা যা কর আমি তা দেখি।” (সাবা ১০-১১)

৩৪১৭. আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী‎ (সাঃআঃ) বলেছেন, দাউদ (আঃ)-এর জন্য কুরআন (যাবুর) তেলাওয়াত সহজ করে দেয়া হয়েছিল। তিনি তাহাঁর পশুযানে গদি বাঁধার আদেশ করিতেন, তখন তার উপর গদি বাঁধা হতো। অতঃপর তাহাঁর পশুযানের উপর গদি বাঁধার পূর্বেই তিনি যাবুর তিলাওয়াত করে শেষ করে ফেলতেন। তিনি নিজ হাতে উপার্জন করেই জীবিকা নির্বাহ করিতেন। মূসা ইবনু উকবা (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) …… আবু হুরাইরা (রাদি.) সূত্রে নাবী‎ (সাঃআঃ) হইতে হাদীসটি রিওয়ায়াত করিয়াছেন।

৩৪১৮. আবদুল্লাহ ইবনু আমার (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-কে জানান হল যে, আমি বলছি, আল্লাহর কসম! আমি যতদিন বেঁচে থাকব ততদিন অবশ্যই আমি অবিরত দিনে সওম পালন করবো আর রাতে ইবাদাতে রত থাকবো। তখন আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) জিজ্ঞেস করিলেন, তুমিই কি বলেছো, আল্লাহর শপথ! আমি যতদিন বাঁচবো, ততদিন দিনে সওম পালন করবো এবং রাতে ইবাদাতে মশগুল থাকবো। আমি আরয করলাম, আমিই তা বলেছি। তিনি বলিলেন, সেই শক্তি তোমার নেই। কাজেই সওমও পালন কর, ইফ্‌তারও কর। রাতে ইবাদতও কর এবং ঘুমও যাও। আর প্রতি মাসে তিনদিন সওম পালন কর। কেননা প্রতিটি নেক কাজের কমপক্ষে দশগুণ সওয়াব পাওয়া যায়। আর এটা সারা বছর সওম পালন করার সমান। তখন আমি আরয করলাম, হে আল্লাহর রাসুল! আমি এর থেকেও বেশী সওম পালন করার ক্ষমতা রাখি। তখন তিনি বলিলেন, তাহলে তুমি একদিন সওম পালন কর আর দুদিন ইফতার কর।  তখন আমি আরয করলাম, হে আল্লাহর রাসুল! আমি এ থেকেও অধিক পালন করার শক্তি রাখি। তখন তিনি বলিলেন, তাহলে তুমি একদিন সওম পালন কর আর একদিন বিরতি দাও। এটা দাউদ (আঃ)-এর সওম পালন করার নিয়ম। আর এটাই সওম পালনের উত্তম নিয়ম। আমি আরয করলাম, হে আল্লাহর রাসুল! আমি এ থেকেও অধিক শক্তি রাখি। তিনি বলিলেন, এ থেকে বেশী কিছু নেই।

৩৪১৯. আবদুল্লাহ ইবনু আমর ইবনু আস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী‎ (সাঃআঃ) আমাকে জিজ্ঞেস করিলেন, আমি কি জ্ঞাত হইনি যে, তুমি রাত ভর ইবাদত এবং দিন ভর সওম পালন কর! আমি বললাম হাঁ। তিনি বলিলেন, যদি তুমি এমন কর; তবে তোমার দৃষ্টিশক্তি দুর্বল হয়ে যাবে এবং দেহ ক্লান্ত হয়ে যাবে। কাজেই প্রতিমাসে তিনদিন সওম পালন কর। তাহলে তা সারা বছরের সওমের সমতুল্য হয়ে যাবে। আমি বললাম, আমি আমার মধ্যে আরও অধিক পাই। মিসআর (রাদি.) বলেন, এখানে শক্তি বুঝানো হয়েছে। তখন আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) বলিলেন, তাহলে তুমি দাউদ (আঃ)-এর নিয়মে সওম পালন কর। তিনি একদিন সওম পালন করিতেন আর একদিন বিরত থাকতেন। আর শত্রুর মুখোমুখী হলে তিনি কখনও পালিয়ে যেতেন না।

৬০/৩৮. অধ্যায়ঃ আল্লাহর নিকট সবচেয়ে পছন্দনীয় সালাত দাউদ (আঃ)-এর সালাত ও সবচেয়ে পছন্দনীয় সওম দাউদ (আঃ)-এর সওম। তিনি রাতের প্রথমার্ধে ঘুমাতেন আর এক-তৃতীয়াংশ দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করিতেন এবং বাকী ষষ্ঠাংশ ঘুমাতেন। তিনি একদিন সওম পালন করিতেন আর একদিন বিরতি দিতেন।

আলী (ইবনু মদীনী) (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, এটাই আয়েশা (রাদি.)-এর কথা যে, আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) সর্বদা সাহরীকালে আমার নিকট নিদ্রিত থাকতেন।

৩৪২০. আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) আমাকে বলেছেন, আল্লাহর নিকট অধিক পছন্দনীয় সওম হলো দাউদ (আঃ)-এর নিয়মে সওম পালন করা। তিনি একদিন সওম পালন করিতেন আর একদিন বিরত থাকতেন। আল্লাহর নিকট অধিক পছন্দনীয় সালাত হলো দাউদ (আঃ)-এর নিয়মে সালাত আদায় করা। তিনি রাতের অর্ধাংশ ঘুমাতেন, রাতের এক তৃতীয়াংশ সালাতে দাঁড়াতেন আর বাকী ষষ্ঠাংশ আবার ঘুমাতেন।

৬০/৩৯. অধ্যায়ঃ মহান আল্লাহর বাণীঃ এবং স্মরণ করুন আমার বান্দা দাউদের কথা, যিনি ছিলেন খুব শক্তিশালী এবং যিনি ছিলেন অতিশয় আল্লাহ অভিমুখী…….. ফায়সালাকারীর বর্ণনা শক্তি। (সোয়াদ ১৭-২০)

মুজাহিদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, ———- অর্থ বিচার-ফায়সালার সঠিক জ্ঞান। —— অবিচার করিবে না। (আল্লাহর বাণী) আমাদের সঠিক পথ নির্দেশ করুন। এ আমার ভাই, তার আছে নিরানব্বইটি দুম্বা এবং আমার আছে মাত্র একটি দুম্বা। —– মহিলা এবং বকরী উভয়কে বলা হয়ে থাকে- সে বলে আমার যিম্মায় এটি দিয়ে দাও। এ বাক্য ———-এর মত অর্থাৎ যাকারিয়া তার যিম্মায় মারইয়ামকে নিয়ে নিলেন। ———- এবং কথায় সে আমার প্রতি কঠোরতা প্রদর্শন করেছে। —— অর্থ আমার উপর সে প্রবল হয়েছে। আমার চেয়ে সে প্রবল। —– অর্থ তাকে আমি প্রবল করে দিলাম। —– অর্থ কথা-বাক্যালাপ। (আল্লাহর বাণী) দাঊদ বললেনঃ এ ব্যক্তি তোমার দুম্বাটিকে তার দুম্বাগুলোর সাথে সংযুক্ত করার দাবি করে তোমার প্রতি অবশ্যই যুল্‌ম করেছে। আর অধিকাংশ শরীকেরাই একে অন্যের উপর অন্যায় আচরণ করে থাকে।- (সোয়াদ ২৪)। —— অর্থ শরীকগণ —– ইবনু আব্বাস (রাদি.) বলেন, এর অর্থ পরীক্ষা করলাম। উমর (রাদি.) — শব্দে —- হরফে তাশদীদ দিয়ে পাঠ করিয়াছেন। (আল্লাহর বাণী) অতএব তিনি তার রবের সমীপে ক্ষমা প্রার্থনা করিলেন এবং সিজদায় লুটিয়ে পড়লেন ও তাহাঁর অভিমুখী হলেন। (সোয়াদ ২৪)

৩৪২১. মুজাহিদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি ইবনু আব্বাস (রাদি.)-কে জিজ্ঞেস করলাম, আমরা কি সুরা ছোয়াদ পাঠ করে সিজদা করবো? তখন তিনি ————- হইতে ———– পর্যন্ত আয়াত তিলাওয়াত করিলেন। অতঃপর  ইবনু আব্বাস (রাদি.) বলিলেন, তোমাদের নাবী‎ (সাঃআঃ) ঐ সব মহান ব্যক্তিদের একজন, যাঁদেরকে পূর্ববর্তীদের অনুসরণ করিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছিল।

৩৪২২. ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, সুরা ছোয়াদের সিজ্‌দা একান্ত জরুরী নয়। কিন্তু আমি নাবী‎ (সাঃআঃ)-কে সুরায় সিজ্‌দা করিতে দেখেছি।

৬০/৪০. অধ্যায়ঃ মহান আল্লাহর বাণীঃ আর আমি দাঊদকে দান করলাম সুলাইমান। সে ছিল অতি উত্তম বান্দা। তিনি তো ছিলেন অতিশয় আল্লাহ অভিমুখী। (সোয়াদ ৩০)

—— অর্থ গোনাহ হইতে ফিরে যে আল্লাহ অভিমুখী হয়। মহান আল্লাহর বাণীঃ তিনি প্রার্থনা করলেনঃ হে আমার রব! আমাকে ক্ষমা করুন এবং আমাকে এমন রাজ্য দান করুন, যা আমি ছাড়া আর কারও ভাগ্যে না জোটে- (সোয়াদ ৩৫)। মহান আল্লাহর বাণীঃ তারা তা অনুসরণ করিল যা শয়তানরা আবৃত্তি করত সুলাইমানের রাজত্বকালে- (আল-বাকারা ১০২) মহান আল্লাহর বাণীঃ আমি বায়ুকে সুলাইমানের অধীন করে দিলাম যা সকালে একমাসের পথ অতিক্রম করত এবং বিকালে একমাসের পথ অতিক্রম করত। আর আমি তার জন্য বিগলিত তামার এক প্রস্রবণ প্রবাহিত করেছিলাম। —- অর্থ বিগলিত করে দিলাম —- অর্থ লোহার প্রস্রবণ-আর কতক জ্বিন তাহাঁর রবের নির্দেশে তার সামনে কাজ করত। তাদের যে কেউ আমার আদেশ অমান্য করে, তাকে জ্বলন্ত আগুনের শাস্তি আস্বাদন করাব। জ্বিনেরা সুলাইমানের ইচ্ছানুযায়ী তার জন্য প্রাসাদ তৈরি করত। মুজাহিদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, ——- অর্থ বড় বড় দালানের তুলনায় ছোট ইমারত-ভাস্কর্য শিল্প প্রস্তুত করতো, আর হাউজ সদৃশ বৃহদাকার রান্না করার পাত্র তৈরি করতো- যেমন উটের জন্য হাওম থাকে। ইবনু আব্বাস (রাদি.) বলেন, যেমন যমীনে গর্ত থাকে। আর তৈরি বিশাল বিশাল ডেকচি যা সুদৃঢ়ভাবে স্থাপিত। হে দাঊদের পরিবার! আমার কৃতজ্ঞতার সঙ্গে তোমরা কাজ কর। আর আমার বান্দাগনের মধ্যে অল্পই শুকুর গুযারী করে- (সাবা ১২-১৩)। ———— কেবল মাটির পোকা অর্থাৎ উই পোকা যা তার (সুলাইমানের) লাঠি খেতেছিল। —– তার লাঠি। যখন সে (সুলাইমান) পড়ে গেল…..লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তিতে- (সাবা ১৪) মহান আল্লাহর বাণীঃ সম্পদের মোহে আমার রবের স্মরণ থেকে- আয়াতাংশে —- অর্থ ———- অর্থ তিনি [(সুলাইমান (আঃ)] ঘোড়াগুলোর গর্দানসমূহ ও তাদের হাঁটুর নলাসমূহ কাটতে লাগলেন। —- অর্থ, শৃঙ্খলসমূহ। মুজাহিদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, —- অর্থ, দৌড়ের জন্য প্রস্তুত ঘোড়াসমূহ। এ অর্থ ———- হইতে গৃহীত। ঘোড়া যখন দৌড়ের জন্য প্রস্তুতি নিয়ে এক পা উঠিয়ে অন্য পায়ের খুরার উপর দাঁড়িয়ে যায়, তখন এ বাক্য বলা হয়। ——- অর্থ দ্রুতগামী , —- শয়তান — উত্তম ———– যেখানে ইচ্ছা —- দান কর ———– নির্দ্বিধায়। (সদ ৩১-৩৮)

৩৪২৩. আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী‎ (সাঃআঃ) বলেছেন, একটি অবাধ্য  জ্বিন এক রাতে আমার সালাতে বাধা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে আমার নিকট আসল। আল্লাহ আমাকে তার উপর ক্ষমতা প্রদান করিলেন। আমি তাকে ধরলাম এবং মসজিদের একটি খুঁটির সাথে বেঁধে রাখার ইচ্ছে করলাম, যাতে তোমরা সবাই স্বচক্ষে তাকে দেখিতে পাও। তখনই আমার ভাই সুলাইমান (আঃ)-এর এ দুআটি আমার মনে পড়লো। হে আমার রব! আমাকে ক্ষমা করুন এবং আমাকে এমন রাজ্য দান করুন, যা আমি ছাড়া আর কারও ভাগ্যে না জোটে- (সোয়াদ ৩৫)। অতঃপর আমি জ্বিনটিকে ব্যর্থ এবং লাঞ্ছিত করে ছেড়ে দিলাম। জ্বিন কিংবা মানুষের অত্যন্ত পিশাচ ব্যক্তিকে ইফ্‌রীত বলা হয়। ইফ্‌রীত ও ইফ্‌রীয়াতুন যিবনিয়াতুন-এর মত এক বচন, যার বহু বচন যাবানিয়াতুন।

৩৪২৪. আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী‎ (সাঃআঃ) বলেন, সুলায়মান ইবনু দাঊদ (আঃ) বলেছিলেন, আজ রাতে আমি আমার সত্তর জন স্ত্রীর নিকট যাব। প্রত্যেক স্ত্রী একজন করে অশ্বারোহী যোদ্ধা গর্ভধারণ করিবে। এরা আল্লাহর পথে জিহাদ করিবে। তখন তাহাঁর সাথী বলিলেন, ইন শা আল্লাহ। কিন্তু তিনি মুখে তা বলিলেন না। অতঃপর একজন স্ত্রী ছাড়া কেউ গর্ভধারণ করিলেন না। সে যাও এক (পুত্র) সন্তান প্রসব করিলেন যার এক অঙ্গ ছিল না। নাবী‎ (সাঃআঃ) বলিলেন, তিনি যদি ইন শা আল্লাহ মুখে বলিতেন, তাহলে আল্লাহর পথে জিহাদ করতো। শুআয়ব এবং ইবনু আবু যিনাদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) এখানে নব্বই জন স্ত্রীর কথা উল্লেখ করিয়াছেন আর এটাই সঠিক।

৩৪২৫.আবু যার (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! সর্বপ্রথম কোন মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছে। তিনি বলিলেন, মসজিদে হারাম। আমি বললাম, অতঃপর কোনটি? তিনি বলিলেন, মসজিদে আক্‌সা। আমি বললাম, এ দুয়ের নির্মাণের মাঝখানে কত তফাৎ? তিনি বলিলেন, চল্লিশ (বছরের) [১] (অতঃপর তিনি বলিলেন), যেখানেই তোমার সালাতের সময় হইবে, সেখানেই তুমি সালাত আদায় করে নিবে। কারণ পৃথিবীটাই তোমার জন্য মসজিদ।

[১] এ দু মসজিদের ভিত্তি স্থাপন করেন আদম (আঃ)। দু মসজিদের ভিত্তি স্থাপনে ব্যবধান ছিল ৪০ বছর।

৩৪২৬.আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-কে বলিতে শুনেছেন যে, আমার ও অন্যান্য মানুষের দৃষ্টান্ত হলো এমন যেমন কোন এক ব্যক্তি আগুন জ্বালাল এবং তাতে পতঙ্গ এবং পোকামাকড় ঝাঁকে ঝাঁকে পড়তে লাগল।

৩৪২৭. See previous Hadith. আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) বলেন, দুজন মহিলা ছিল। তাদের সাথে দুটি সন্তানও ছিল। হঠাৎ একটি বাঘ এসে তাদের একজনের ছেলে নিয়ে গেল। সঙ্গের একজন মহিলা বললো, “তোমার ছেলেটিই বাঘে নিয়ে গেছে।” অন্য মহিলাটি বললো, “না, বাঘে তোমার ছেলেটি নিয়ে গেছে।” অতঃপর উভয় মহিলাই দাঊদ (আঃ)-এর নিকট এ বিরোধ মীমাংসার জন্য বিচারপ্রার্থী হল। তখন তিনি ছেলেটির বিষয়ে বয়স্কা মহিলাটির পক্ষে রায় দিলেন। অতঃপর তারা উভয়ে বেরিয়ে দাঊদ (আঃ)-এর পুত্র সুলায়মান (আঃ)-এর নিকট দিয়ে যেতে লাগল এবং তারা দুজনে তাঁকে ব্যাপারটি জানালেন। তখন তিনি লোকদেরকে বলিলেন, তোমরা আমার নিকট একখানা ছোরা নিয়ে আস। আমি ছেলেটিকে দু টুক্‌রা করে তাদের দুজনের মধ্যে ভাগ করে দেই। একথা শুনে অল্পবয়স্কা মহিলাটি বলে উঠলো, তা করবেন না, আল্লাহ আপনার উপর রহম করুন। ছেলেটি তারই। তখন তিনি ছেলেটি সম্পর্কে অল্পবয়স্কা মহিলাটির অনুকূলে রায় দিলেন।

আবু হুরাইরা (রাদি.) বলেন, আল্লাহর কসম! ছোরা অর্থে لسّيكينا শব্দটি আমি ঐদিনই শুনিয়াছি। তা না হলে আমরাতো ছোরাকে المُديَتُ ই বলতাম।

Comments

Leave a Reply