কুরআন তিলাওয়াতের সিজদা নিয়ম ও যেসব সুরায় সেজদা আছে
কুরআন তিলাওয়াতের সিজদা নিয়ম ও যেসব সুরায় সেজদা আছে >> বুখারী শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন
পর্বঃ ১৭, কুরআন তিলাওয়াতের সিজ্দা, অধ্যায়ঃ (১-১২)=১২টি
১৭/১. অধ্যায়ঃ কুরআন তিলাওয়াতের সিজদার নিয়ম।
১৭/২. অধ্যায়ঃ সুরা তানযীলুস্-সিজদা এর সিজদা।
১৭/৩. অধ্যায়ঃ সুরা স-দ-এর সিজদা।
১৭/৪. অধ্যায়ঃ সুরা আন নাজ্ম-এর সিজদা।
১৭/৫. অধ্যায়ঃ মুশ্রিকদের সাথে মুসলিমগণের সিজদা করা আর মুশ্রিকরা অপবিত্র। তাদের উযূ হয় না।
১৭/৬. অধ্যায়ঃ যিনি সিজদার আয়াত তিলাওয়াত করিলেন অথচ সিজদা করিলেন না।
১৭/৭. অধ্যায়ঃ সুরা ইযাস্ সামাউন শাক্কাত-এর সিজদা।
১৭/৮. অধ্যায় : তিলাওয়াতকারীর সিজদার কারণে সিজদা করা।
১৭/৯. অধ্যায় : ইমাম যখন সিজদার আয়াত তিলাওয়াত করেন তখন লোকের ভীড়।
১৭/১০. অধ্যায় : যাঁরা অভিমত প্রকাশ করেন যে, আল্লাহ তাআলা তিলাওয়াতের সিজদা আবশ্যক করেননি।
১৭/১১. অধ্যায় : সলাতে সিজদার আয়াত তিলাওয়াত করে সিজদা করা।
১৭/১২. অধ্যায় : ভীড়ের কারণে সিজদা করার স্থান না পেলে।
১৭/১. অধ্যায়ঃ কুরআন তিলাওয়াতের সিজদার নিয়ম।
১০৬৭. আবদুল্লাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন নাবী (সাঃআঃ) মক্কায় সুরা আন-নাজ্ম তিলাওয়াত করেন। অতঃপর তিনি সিজদা করেন এবং একজন বৃদ্ধ লোক ছাড়া তাহাঁর সঙ্গে সবাই সিজদা করেন। বৃদ্ধ লোকটি এক মুঠো কঙ্কর বা মাটি হাতে নিয়ে তার কপাল পর্যন্ত উঠিয়ে বলিল আমার জন্য এ যথেষ্ট। আমি পরবর্তীতে দেখেছি যে, সে কাফির অবস্থায় নিহত হয়েছে।
১৭/২. অধ্যায়ঃ সুরা তানযীলুস্-সিজদা এর সিজদা।
১০৬৮. আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন নাবী (সাঃআঃ) শুক্রবার ফজরের সালাতে (আরবি) সুরা আস সিজদা এবং (আরবি) সুরা ইনসান তিলাওয়াত করিতেন।
১৭/৩. অধ্যায়ঃ সুরা স-দ-এর সিজদা।
১০৬৯. ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, সুরা স-দ-এর সিজদা অত্যাবশ্যক সিজদাসমূহের মধ্যে গণ্য নয়। তবে নাবী (সাঃআঃ)-কে আমি তিলাওয়াতের পর সিজদা করিতে দেখেছি।
১৭/৪. অধ্যায়ঃ সুরা আন নাজ্ম-এর সিজদা।
ইবন আব্বাস (রাদি.) নাবী করীম (সাঃআঃ) থেকে এ বিষয়ে বর্ণনা করিয়াছেন
১০৭০. আবদুল্লাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
একবার নাবী (সাঃআঃ) সুরা আন নাজ্ম তিলাওয়াত করেন, অতঃপর সিজদা করেন। তখন উপস্থিত লোকদের মধ্যে এমন কেউ বাকী ছিল না, যে তাহাঁর সঙ্গে সিজদা করেনি। কিন্তু একব্যক্তি এক মুঠো কঙ্কর বা মাটি হাতে নিয়ে মুখমণ্ডল পর্যন্ত তুলে বলিল, এটাই আমার জন্য যথেষ্ট। [আবদুল্লাহ (রাদি.) বলেন] পরে আমি এ ব্যক্তিকে দেখেছি যে, সে কাফির অবস্থায় নিহত হয়েছে।
১৭/৫. অধ্যায়ঃ মুশ্রিকদের সাথে মুসলিমগণের সিজদা করা আর মুশ্রিকরা অপবিত্র। তাদের উযূ হয় না।
আবদুল্লাহ ইবন উমর (রাদি.) বিনা উযূতে তিলাওয়াতের সিজ্দা করিয়াছেন [১]
[১] হযরত ইবন উমর (রাদি.) থেকে অপর হাদীসে বর্ণিত আছে যে, তিনি উযূ অবস্থায় সিজ্দা করিতেন । তাছাড়া কোন ইমামই উযূ ছাড়া তিলাওয়াতের সিজ্দা সমর্থন করেননি । –আইনী
১০৭১. ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
একবার নাবী (সাঃআঃ) সুরা আন-নাজ্ম তিলাওয়াতের পর সিজদা করেন এবং তাহাঁর সাথে সমস্ত মুসলিম, মুশরিক, জ্বিন ও ইনসান সবাই সিজদা করেছিল।
১৭/৬. অধ্যায়ঃ যিনি সিজদার আয়াত তিলাওয়াত করিলেন অথচ সিজদা করিলেন না।
১০৭২. যায়দ ইবনু সাবিত (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
একবার নাবী (সাঃআঃ)-এর নিকট সুরা আন-নাজ্ম তিলাওয়াত করা হল কিন্তু তাতে তিনি সিজদা করেননি।
১০৭৩. যায়দ ইবনু সাবিত (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নাবী (সাঃআঃ)-এর সামনে সুরা ওয়ান-নাজ্ম তিলাওয়াত করলাম। এতে তিনি সিজদা করেননি।
১৭/৭. অধ্যায়ঃ সুরা ইযাস্ সামাউন শাক্কাত-এর সিজদা।
১০৭৪. আবু সালামা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একবার আবু হুরাইরা (রাদি.) কে দেখলাম, তিনি (আরবি) সুরা তিলাওয়াত করিলেন এবং সিজদা করিলেন। আমি জিজ্ঞেস করলাম, হে আবু হুরাইরা! আমি কি আপনাকে সিজদা করিতে দেখিনি? তিনি বলিলেন, আমি নাবী (সাঃআঃ) কে সিজদা করিতে না দেখলে সিজদা করতাম না।
১৭/৮. অধ্যায় : তিলাওয়াতকারীর সিজদার কারণে সিজদা করা।
তামীম ইবন হাযলাম নামক এক বালক সিজ্দার আয়া্ত তিলাওয়াত করলে ইবন মাসউদ (রাদি.) তাঁকে (সিজদা করিতে আদেশ করে) বলেন, এ ব্যাপারে তুমিই আমাদের ইমাম
১০৭৫. ইবনু উমর (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) একবার আমাদের সামনে এমন এক সুরা তিলাওয়াত করিলেন যাতে সিজদার আয়াত রয়েছে। তাই তিনি সিজদা করিলেন এবং আমরাও সিজদা করলাম। ফলে অবস্থা এমন দাঁড়াল যে, আমাদের কেউ কেউ কপাল রাখার জায়গা পাচ্ছিলেন না।
১৭/৯. অধ্যায় : ইমাম যখন সিজদার আয়াত তিলাওয়াত করেন তখন লোকের ভীড়।
১০৭৬. ইবনু উমর (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) সিজদার আয়াত তিলাওয়াত করিতেন এবং আমরা তাহাঁর নিকট থাকতাম, তখন তিনি সিজদা করিতেন এবং আমরাও তাহাঁর সঙ্গে সিজদা করতাম। এতে এত ভীড় হতো যে, আমাদের মধ্যে কেউ কেউ সিজদা করার জন্য কপাল রাখার জায়গা পেত না।
১৭/১০. অধ্যায় : যাঁরা অভিমত প্রকাশ করেন যে, আল্লাহ তাআলা তিলাওয়াতের সিজদা আবশ্যক করেননি।
ইমরান ইবন হুসাইন (রাদি.) -কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, যে ব্যক্তি সিজ্দার আয়াত শুনলো কিন্তু এর জন্য সে বসেনি (তার কি সিজ্দা করিতে হইবে?)। তিনি বলিলেন, তুমি কি মনে কর সে যদি তা শোনার জন্য বসতো (তা হলে কি) তাকে সিজ্দা করিতে হত? (বুখারী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন,) যেন তিনি তার জন্য সিজ্দা ওয়াজিব মনে করেন না। সালমান (ফারিসী) (রাদি.) বলেছেন, আমরা এ জন্য (সিজ্দার আয়াত শোনার জন্য) আসিনি। উসমান ইবন আফ্ফান (রাদি.) বলেছেন, যে মনোযোগসহ সিজ্দার আয়াত শোনে শুধু তার উপর সিজ্দা ওয়াজিব। যুহরী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেছেন, পবিত্র অবস্থা ছাড়া সিজ্দা করিবে না। যদি তুমি আবাসে থেকে সিজ্দা কর, তবে কিব্লামুখী হইবে। যদি তুমি সাওয়ার অবস্থায় হও, তবে যে দিকেই তোমার মুখ হোক না কেন, তাতে তোমার কোন দোষ নাই। আর সায়িব ইবন ইয়াযীদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বক্তার বক্তৃতায় সিজ্দার আয়াত শোনে সিজ্দা করিতেন না।
১০৭৭. উমর ইবনু খাত্তাব (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি এক জুমুআর দিন মিম্বরে দাঁড়িয়ে সুরা নাহল তিলাওয়াত করেন। এতে যখন সিজদার আয়াত এল, তখন তিনি মিম্বর হইতে নেমে সিজদা করিলেন এবং লোকেরাও সিজদা করিল। এভাবে যখন পরবর্তী জুমুআ এল, তখন তিনি সে সুরা পাঠ করেন। এতে যখন সিজদার আয়াত এল, তখন তিনি বলিলেন, হে লোক সকল! আমরা যখন সিজদার আয়াত তিলাওয়াত করি, তখন যে সিজদা করিবে সে ঠিকই করিবে, যে সিজদা করিবে না তার কোন গুনাহ নেই। তার বর্ণনায় (বর্ণনাকারী বলেন) আর উমর (রাদি.) সিজদা করেননি। নাফি(রহমাতুল্লাহি আলাইহি) ইবনু উমর (রাদি.) হইতে আরো বলেছেন, আল্লাহ তাআলা সিজদা ফরয করেননি, তবে আমরা ইচ্ছা করলে সিজদা করিতে পারি।
১৭/১১. অধ্যায় : সলাতে সিজদার আয়াত তিলাওয়াত করে সিজদা করা।
১০৭৮. আবু রাফি (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি একবার আবু হুরাইরা (রাদি.)-এর সাথে ইশার সালাত আদায় করেছিলাম। তিনি সলাতে (আরবী) সুরা তিলাওয়াত করে সিজদা করিলেন। আমি জিজ্ঞেস করলাম, এ কী? তিনি বলিলেন, এ সুরা তিলাওয়াতের সময় আবুল কাসিম (সাঃআঃ)-এর পিছনে আমি এ সিজদা করেছিলাম। তাই তাহাঁর সঙ্গে মিলিত না হওয়া পর্যন্ত এভাবে আমি সিজদা করিতে থাকব।
১৭/১২. অধ্যায় : ভীড়ের কারণে সিজদা করার স্থান না পেলে।
১০৭৯. ইবনু উমর (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) যখন এমন সুরা তিলাওয়াত করিতেন যাতে সিজদা আছে, তখন তিনি সিজদা করিতেন এবং আমরাও তাহাঁর সঙ্গে সিজদা করতাম। এমন কি (ভীড়ের কারণে) আমাদের মধ্যে কেউ কেউ কপাল রাখার জায়গা পেত না।
Leave a Reply