তারাবীহর সালাত – রমযানে তারাবীর সালাতের গুরুত্ব
তারাবীহর সালাত – রমযানে তারাবীর সালাতের গুরুত্ব >> বুখারী শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন
পর্বঃ ৩১, তারাবীহর সালাত, অধ্যায়ঃ ১ টি
৩১/১. অধ্যায়ঃ কিয়ামে রমযান- এর (রমযানে তারাবীর সালাতের) গুরুত্ব।
২০০৮. আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) – কে রমযান সম্পর্কে বলিতে শুনিয়াছি, যে ব্যক্তি রমযানে ঈমানের সাথে সওয়াব লাভের আশায় কিয়ামে রমযান অর্থাৎ তারাবীর সালাত আদায় করিবে তার পূর্ববর্তী গোনাহসমূহ মাফ করে দেয়া হইবে।
২০০৯. আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি রমযানে ঈমানের সাথে সওয়াব লাভের আশায় তারাবীর সালাতে দাঁড়াবে তার পূর্ববর্তী গোনাহসমূহ মাফ করে দেয়া হইবে। হাদীসের রাবী ইবনু শিহাব (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) ইনতিকাল করেন এবং তারাবীর ব্যাপারটি এভাবেই চালু ছিল। এমনকি আবু বকর (রাদি.)- এর খিলাফতকালে ও উমর (রাদি.)- এর খিলাফতের প্রথমভাগে এরূপই ছিল।
২০১০. আবদুর রাহমান ইবনু আবদ আল-ক্বারী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রমযানের এক রাতে উমর ইবনুল খাত্তাব (রাদি.)- এর সাথে মসজিদে নাবাবীতে গিয়ে দেখি যে, লোকেরা এলোমেলোভাবে জামাআতে বিভক্ত। কেউ একাকী সালাত আদায় করছে আবার কোন ব্যক্তি সালাত আদায় করছে এবং ইকতেদা করে একদল লোক সালাত আদায় করছে। উমর (রাদি.) বলিলেন, আমি মনে করি যে, এই লোকদের যদি আমি একজন ক্বারীর (ইমামের) পিছনে জমা করে দেই, তবে তা উত্তম হইবে। এরপর তিনি উবাই ইবনু কাব (রাদি.)- এর পিছনে সকলকে জমা করে দিলেন। পরে আর এক রাতে আমি তাহাঁর [উমর (রাদি.)] সাথে বের হই। তখন লোকেরা তাদের ইমামের সাথে সালাত আদায় করছিল। উমর (রাদি.) বলিলেন, কতইনা সুন্দর এই নতুন ব্যবস্থা! তোমরা রাতের যে অংশে ঘুমিয়ে থাক তা রাতের ঐ অংশ অপেক্ষা উত্তম যে অংশে তোমরা সালাত আদায় কর, এর দ্বারা তিনি শেষ রাত বুঝিয়েছেন, কেননা তখন রাতের প্রথমভাগে লোকেরা সালাত আদায় করত।
২০১১. নাবী-সহধর্মিণী আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) সালাত আদায় করেন এবং তা ছিল রমযানে।
২০১২. আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) গভীর রাতে বের হয়ে মসজিদে সালাত আদায় করেন, কিছু সংখ্যক পুরুষ তাহাঁর পিছনে সালাত আদায় করেন। সকালে লোকেরা এ সম্পর্কে আলোচনা করেন, ফলে লোকেরা অধিক সংখ্যায় সমবেত হন। তিনি সালাত আদায় করেন এবং লোকেরা তাহাঁর সঙ্গে সালাত আদায় করেন। সকালে তাঁরা এ বিষয়ে আলাপ-আলোচনা করেন। তৃতীয় রাতে মসজিদে মুসল্লীর সংখ্যা আরো বেড়ে যায়। এরপর আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) বের হয়ে সালাত আদায় করেন ও লোকেরা তাহাঁর সঙ্গে সালাত আদায় করেন। চতুর্থ রাতে মসজিদে মুসল্লীর সংকুলান হল না, কিন্তু তিনি রাতে আর বের না হয়ে ফজরের সালাতে বেরিয়ে আসলেন এবং সালাত শেষে লোকদের দিকে ফিরে প্রথমে তাওহীদ ও রিসালতের সাক্ষ্য দেয়ার পর বললেনঃ শোন! তোমাদের (গতরাতের) অবস্থান আমার অজানা ছিল না, কিন্তু আমি এই সালাত তোমাদের উপর ফরয হয়ে যাবার আশংকা করছি (বিধায় বের হই নাই) কেননা তোমরা তা আদায় করায় অপারগ হয়ে পড়তে। আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) -এর ওফাত হলো আর ব্যাপারটি এভাবেই থেকে যায়।
২০১৩. আবু সালামা ইবনু আবদুর রাহমান (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি আয়েশা (রাদি.)-কে জিজ্ঞেস করেন যে, রমযানে আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) –এর সালাত কিরূপ ছিল? তিনি বলিলেন, রমযান মাসে ও রমযানে ব্যতীত অন্য সময়ে (রাতে) তিনি এগার রাকআত হইতে বৃদ্ধি করিতেন না। [২] তিনি চার রাকআত সালাত আদায় করিতেন, তুমি তার সৌন্দর্য ও দীর্ঘতা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করো না। অতঃপর তিনি চার রাকআত পড়েন। তুমি তার সৌন্দর্য ও দীর্ঘতা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করো না। এরপর তিন রাকআত সালাত আদায় করিতেন। আমি (আয়েশা রাঃ) বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! আপনি বিতর আদায়ের আগে ঘুমিয়ে যাবেন? তিনি বললেনঃ হে আয়েশা! আমার দুচোখ ঘুমায় বটে কিন্তু আমার কাল্ব নিদ্রাভিভূত হয়না।
Leave a Reply