তারাবির সালাত ( রমাজান মাসের কিয়াম )
তারাবির সালাত ( রমাজান মাসের কিয়াম ) >> মিশকাতুল মাসাবীহ এর মুল সুচিপত্র দেখুন
পর্বঃ ৪, অধ্যায়ঃ ৩৭
- অধ্যায়ঃ ৩৭. প্রথম অনুচ্ছেদ
- অধ্যায়ঃ ৩৭. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
- অধ্যায়ঃ ৩৭. তৃতীয় অনুচ্ছেদ
অধ্যায়ঃ ৩৭. প্রথম অনুচ্ছেদ
১২৯৫. যায়দ ইবনি সাবিত [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নবী [সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] [রমাযান] মাসে মাসজিদের ভিতরে চাটাই দিয়ে একটি কামরা তৈরি করিলেন। তিনি [সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] এখানে কয়েক রাত [তারাবীহ] সলাত আদায় করিলেন। আস্তে আস্তে তাহাঁর নিকট লোকজনের ভিড় জমে গেল। এক রাতে তাহাঁর কণ্ঠস্বর না শুনতে পেয়ে লোকের মনে করেছে তিনি [সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] ঘুমিয়ে গেছেন। তাই কেউ কেউ গলা খাকারী দিলো, যাতে তিনি [সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] তাদের কাছে বেরিয়ে আসেন। তিনি [সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বললেন, তোমাদের যে অনুরাগ আমি দেখছি তাতে আমার আশংকা হচ্ছে এ সলাত না আবার তোমাদের ওপর ফার্য হয়ে যায়। তোমাদের ওপর ফার্য হয়ে গেলে তোমরা তা পালন করিতে সক্ষম হবে না। অতএব হে লোক সকল! তোমরা নিজেদের বাড়ীতে সলাত আদায় কর। এজন্য ফার্য সলাত ব্যতীত যে সলাত ঘরে পড়া হয় তা উত্তম সলাত। {১}
{১} সহীহ : বোখারী ৭২৯০, মুসলিম ৭৮১। তারাবির সালাত -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
১২৯৬. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] রমাযানের মাসে ক্বিয়ামুল লায়লের উৎসাহ দিতেন [তারাবীহ সলাত], কিন্তু তাকিদ করে কোন নির্দেশ দিতেন না। তিনি বলিতেন, যে লোক ঈমানের সঙ্গে ও পুণ্যের জন্যে রমাযান মাসে রাত জেগে ইবাদত করে তার পূর্বের সব সগীরাহ্ গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হয়। রাসূলুল্লাহ [সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] -এর ওফাতের পর ব্যাপারটি এভাবেই থেকে গেল। [অর্থাৎ তারবীহের জন্য জামাআত নির্দিষ্ট ছিল না, বরং যে চাইতো সওয়াব অর্জনের জন্যে আদায় করে নিত]। আবু বাক্রের খিলাফতকালেও এ অবস্থা ছিল। উমারের খিলাফাতের প্রথম দিকেও এ অবস্থা ছিল। শেষের দিকে উমার তারাবীহের সলাতের জন্যে জামাআতের ব্যবস্থা করেন এবং তখন থেকে লাগাতার তারবীহের জামাআত চলতে থাকল। {১}
{১} সহীহ : বোখারী ২০০৯, মুসলিম ৮৫৯; শব্দবিন্যাস মুসলিমের। তারাবির সালাত -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
১২৯৭. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] ইরশাদ করিয়াছেন : তোমাদের কোন লোক যখন নিজের ফার্য সলাত মাসজিদে আদায় করে, সে যেন তার সলাতের কিছু অংশ বাড়ীতে আদায়ের জন্য জন্য রেখে দেয়। কেননা, আল্লাহ তাআলা তার সলাতের দ্বারা ঘরের মাঝে কল্যাণ সৃষ্টি করে দেন।”{১}
{১} সহীহ : মুসলিম ৭৮৭। তারাবির সালাত -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
অধ্যায়ঃ ৩৭. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
১২৯৮. আবু যার গিফারী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ [সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] -এর সঙ্গে [রমাযান মাসের] সওম পালন করেছি। তিনি [সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] মাসের অনেক দিন আমাদের সঙ্গে ক্বিয়াম করেননি [অর্থাৎ তারাবীহের সলাত আদায় করেননি]। যখন রমযান মাসের সাতদিন অবশিষ্ট থাকল তখন তিনি [সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] আমাদের সঙ্গে এক তৃতীয়াংশ রাত পর্যন্ত ক্বিয়াম করিলেন অর্থাৎ তারাবীহের সলাত আদায় করালেন। যখন ছয় রাত বাকী থাকল [অর্থাৎ চব্বিশতম রাত এলো] তিনি [সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] আমাদের সঙ্গে ক্বিয়াম করিলেন না। আবার পাঁচ রাত অবশিষ্ট থাকতে অর্থাৎ পঁচিশতম রাতে তিনি [সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] আমাদের সঙ্গে আধা রাত পর্যন্ত ক্বিয়াম করিলেন। আমি আবেদন করলাম, হে আল্লাহর রসূল! আজ রাত যদি আরো অনেক সময় আমাদের সঙ্গে ক্বিয়াম করিতেন [তাহলে কতই না ভাল হত]। রাসূলুল্লাহ [সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বললেন, যখন কোন লোক ফার্য সলাত ইমামের সঙ্গে আদায় করে। সলাত শেষে ফিরে চলে যায়, তার জন্যে গোটা রাত্রের ইবাদাতের সাওয়াব লেখা হয়ে যায়। এরপর যখন চার রাত বাকী থাকে অর্থাৎ ছাব্বিশতম রাত আসে তখন তিনি [সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] আমাদের সঙ্গে ক্বিয়াম করিতেন না। এমনকি আমরা তাহাঁর জন্যে অপেক্ষা করিতে করিতে এক তৃতীয়াংশ রাত বাকী থাকল। যখন তিনরাত বাকী থাকল অর্থাৎ সাতাশতম রাত আসলো। তিনি [সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] পরিবারের নিজের বিবিগণের সকলকে একত্র করিলেন এবং আমাদের সঙ্গে ক্বিয়াম করালেন [অর্থাৎ গোটা রাত আমাদেরকে সলাত আদায় করালেন]। এমনকি আমাদের আশংকা হলো যে, আবার না ফালাহ ছুটে যায়। বর্ণনাকারী বললেন, আমি প্রশ্ন করলাম ফালা-হ কি? আবু যার বললেন। ফালা-হ হলো সাহরী খাওয়া। এরপর তিনি [সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] আমাদের সঙ্গে মাসের বাকী দিনগুলো [অর্থাৎ আটাশ ও উনত্রিশতম দিন] ক্বিয়াম করেননি। [আবু দাউদ, তিরমিজি, নাসায়ী; ইবনি মাজাহও এভাবে বর্ণনা নকল করিয়াছেন। তিরমিয়ীও নিজের বর্ণনায় “এরপর আমাদের তিনি [সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] সঙ্গে মাসের অবশিষ্ট দিনগুলোতে কিয়াম করেননি” শব্দগুলো উল্লেখ করেনি।] {১}
{১} সহীহ : আবু দাউদ ১৩৭৫, আত তিরমিজি ৮০৬, নাসায়ী ১৬০৫, ইবনি মাজাহ ১৩২৭, দারিমী ১৭৭৭, মুসনাদ আল বায্যার ৪০৪৩, ইবনি খুযায়মাহ্ ২২০৬, ইবনি হিব্বান ২৫৪৭, শারহুস্ সুন্নাহ্ ৯৯১। তারাবির সালাত -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
১২৯৯. উম্মুল মুমিনীন আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, একবার আমি রাত্রে রাসূলুল্লাহ [সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] -কে বিছানায় খুঁজে না পেয়ে তাকে খুঁজতে খুঁজতে হঠাৎ জান্নাতুল বাকীতে দেখিতে পেলাম। আমাকে দেখে তিনি [সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বললেন, তুমি কি আশংকা করেছিলে যে, আল্লাহ ও রাসূলুল্লাহ তোমার ওপর অবিচার করিবে? আমি আবেদন করলাম, হে আল্লাহর রসূল! আমি মনে করেছিলাম আপনি আপনার কোন বিবির নিকট গিয়েছেন। তিনি [সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বললেন, [আয়িশাহ্] আল্লাহ তাআলা শাবান মাসের পনের তারিখের রাত্রে প্রথম আকাশে নেমে আসেন। বানূ কাল্ব গোত্রের [বকরীর] দলের পশমের সংখ্যার চেয়েও বেশী পরিমাণ গুনাহ ক্ষমা করে দেন
। [তিরমিয়ী, ইবনি মাজাহ; রযীন অতিরিক্ত বর্ণনা করিয়াছেন “যাদের জন্য জাহান্নাম অবধারিত হয়েছে তাদের মধ্য থেকে”। আর তিরমিয়ী বলেছেন, আমি ঈমাম বোখারীকে এ হাদিসটি দুর্বল হিসেবে উল্লেখ করিতে শুনিয়াছি] {১}; {১} জইফ : আত তিরমিজি ৭৩৯, ইবনি মাজাহ ১৩৮৯, দারাকুত্বনী ৮৯, শুআবুল ঈমান ৩৮২৬, শারহুস্ সুন্নাহ্ ৯৯২। এর সানাদে বিচ্ছিন্নতা রয়েছে, কারণ ইয়াহ্ইয়া ইবনি আনবী কাসীর উরওয়াহ্ থেকে শুনেননি। এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস
১৩০০. যায়দ ইবনি সাবিত [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] ইরশাদ করেন : মানুষ তার ঘরে ফার্য সলাত ব্যতীত যে সলাত আদায় করিবে তা এ মাসজিদে সলাত আদায়ের চেয়ে ভাল।{১}
{১} সহীহ : আবু দাউদ ১০৪৪, আত তিরমিজি ৪৫০, শারহুস্ সুন্নাহ্ ৯৯৫, সহীহ আল জামি ৩৮১৪। তারাবির সালাত -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
অধ্যায়ঃ ৩৭. তৃতীয় অনুচ্ছেদ
১৩০১. আবদুর রহমান ইবনি আবদুল ক্বারী [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, একবার রমযান মাসের রাত্রে উমর ইবনুল খাত্ত্বাব [রাদি.] -এর সঙ্গে আমি মাসজিদে গেলাম। সেখানে গিয়ে দেখলাম মানুষ অমীমাংসিত বিক্ষিপ্ত অবস্থায়। কেউ একা একা নিজের সলাত আদায় করছে। আর কারো পেছনে ছোট একদল সলাত আদায় করছে এ অবস্থা দেখে উমার [রাদি.] বললেন, আমি যদি সকলকে একজন ইমামের পেছনে জমা করে দেই তাহলেই চমৎকার হবে। তাই তিনি এ কাজের ইচ্ছা পোষণ করে ফেললেন এবং সকলকে উবাই ইবনি কাব [রাদি.] -এর পেছনে জমা করে তাকে তারাবীহ সলাতের জন্যে লোকের ঈমাম বানিয়ে দিলেন। আবদুর রহমান বলেন, এরপর আমি একদিন উমারের সঙ্গে মাসজিদে গেলাম। সকল লোককে দেখলাম তারা তাদের ইমামের পেছনে [তারাবীহের] সলাত আদায় করছে। উমার তা দেখে বললেন, “উত্তম বিদআত”। আর তারাবীহের এ সময়ের সলাত তোমাদের ঘুমিয়ে থাকার সময়ের সলাতের চেয়ে ভাল। এ কথার দ্বারা উমার বুঝাতে চেয়েছেন শেষ রাতকে। অর্থাৎ তারাবীহের রাতের প্রথমাংশের চেয়ে শেষাংশে আদায় করাই উত্তম। ঐ সময়ের লোকেরা তারাবীহের সলাত প্রথম ভাগে আদায় করে ফেলতেন। {১}
{১} সহীহ : বোখারী ২০১০। তারাবির সালাত -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
১৩০২. সায়িব ইবনি ইয়াযীদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, উমার [রাদি.] উবাই ইবনি কাব ও তামীম আদ দারী-কে আদেশ করিলেন যেন তারা লোকেদেরকে নিয়ে রমাযান মাসের রাতের এগার রাকাআত তারাবীহের সলাত আদায় করে। এ সময় ঈমাম তারাবীহের সলাতে এ সূরাগুলো পড়তেন। যে সূরার প্রত্যেকটিতে একশতের বেশী আয়াত ছিল। বস্তুতঃ কিয়াম বেশী লম্বা হওয়ার কারণে আমরা আমাদের লাঠির উপর ভর করে দাঁড়িয়ে ফাজরের নিকটবর্তী সময়ে সলাত শেষ করতাম। {১}
{১} সহীহ : মালিক ২৫৩। তারাবির সালাত -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
১৩০৩. আরাজ [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমরা সব সময় লোকদেরকে [সহাবীদেরকে] পেয়েছি তারা রমযান মাসে কাফিরদের ওপর লানাত বর্ষণ করিতেন। সে সময় ক্বারী অর্থাৎ তারাবীহের সলাতের ঈমামগণ সূরাহ আল বাক্বারাহ-কে আট রাকাআতে পড়তেন। যদি কখনো সূরাহু আল বাক্বারাহ-কে বারো রাকাআতে পড়ত, তাহলে লোকেরা মনে করত ঈমাম সলাত সংক্ষেপ করে ফেলেছেন। {১}
{১} সহীহ : মালিক ৩৮১, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৪২৯৬, শুআবুল ঈমান ৩০০১। তারাবির সালাত -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
১৩০৪. আবদুল্লাহ ইবনি আবু বাকর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি উবাইকে বলিতে শুনিয়াছি, তিনি বলেন, আমরা রমযান মাসে ক্বিয়াম অর্থাৎ তারাবীহের সলাত শেষ করে ফিরতাম রাত শেষ হয়ে সাহরীর সময় থাকিবে না ভয়ে খাদিমদেরকে তাড়াতাড়ি খাবার দিতে বলতাম। অন্য এক সূত্রের ভাষ্য হলো, ফাজরের সময় হয়ে যাবার ভয়ে [খাদিমদেরকে দ্রুত খাবার দিতে বলতাম]। {১}
{১} মালিক ৩৮২, শুআবুল ঈমান ৩০০২। এই হাদিসটির তাহকীকঃ নির্ণীত নয়
১৩০৫. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নবী [সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] আমাকে বললেন : তুমি কি জানো এ রাতে অর্থাৎ শাবান মাসের পনের তারিখে কি ঘটে? তিনি বললেন, হে আল্লাহর রসূল! আমি তো জানি না। আপনিই বলে দিন এ রাতে কি ঘটে? রাসূলুল্লাহ [সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বললেন : বানী আদামের প্রতিটি লোক যারা এ বছর জন্মগ্রহণ করিবে এ রাতে তাদের নাম লেখা হয়। আদাম সস্তানের যারা এ বছর মৃত্যুবরণ করিবে এ রাতে তা ঠিক করা হয়। এ রাতে বান্দাদের আমাল উপরে উঠিয়ে নেয়া হয়। এ রাতে বান্দাদের রিযক্ব আসমান থেকে নাযিল করা হয়। আয়িশাহ এমএ প্রশ্ন করিলেন, হে আল্লাহর রসূল! কোন লোকই আল্লাহর রহমাত ব্যতীত জান্নাতে প্রবেশ করিতে পারবে না? তিনি [সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] ইরশাদ করিলেন : হ্যাঁ! কোন মানুষই আল্লাহর রহমাত ব্যতীত জান্নাতে প্রবেশ করিতে পারবে না। তিনি [সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] এ বাক্যটি তিনবার উচ্চারণ করিলেন। আয়িশাহ্ [রাদি.] আবেদন করিলেন, এমনকি আপনিও নয়! এবার তিনি [সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] আপন মাথায় হাত রেখে বললেন, আমিও না, তবে আল্লাহ তার রহমাত দ্বারা আমাকে আবৃত করে নেবেন। এ বাক্যটিও তিনি তিনবার উচ্চারণ করিলেন। [বায়হাক্বী এ বর্ণনাটি দাওয়াতুল কাবীর নামক গ্রন্থে নকল করেছে] {১}
{১} জইফ : শায়খ আলবানী [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, হাদিসটি কোন গ্রন্থে রয়েছে, এর সানাদটি এবং সানাদের ব্যাপারে সমালোচনা করিয়াছেন এসব কোন বিষয়েই আমি অবগত হয়নি। তবে مَا مِنْ أحدٍ -এর পরের অংশটুকু সহীহ হাদীসে রয়েছে। এই হাদিসটির তাহকীকঃ অন্যান্য
১৩০৬. আবু মূসা আল আশ্আরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসূলুল্লাহ [সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] ইরশাদ করিয়াছেন : আল্লাহ তাআলা শাবান মাসের পনের তারিখ রাত্রে অর্থাৎ শবে বরাতে দুনিয়াবাসীর প্রতি ফিরেন এবং মুশরিক ও হিংসুক ছাড়া তাহাঁর সৃষ্টির সকলের গুনাহ ক্ষমা করে দেন। {১}
{১} হাসান : ইবনি মাজাহ ১৩৯০, সিলসিলাহ্ আস্ সহীহাহ্ ১৫৬৩, সহীহুল জামি ১৮১৯। যদিও এ সানাদে ইবনি লাহইয়া এবং তার উসতায যহ্হাক ইবনি আয়মান-এর দুর্বলতার কারণে হাদিসের সানাদটি জইফ। কিন্তু এর অনেক শাহিদমূলক হাদিস থাকায় তা হাসানের স্তরে উন্নীত হয়েছে। এই হাদিসটির তাহকীকঃ হাসান হাদিস
১৩০৭. আবদুল্লাহ ইবনি আমর ইবনুল আস হইতে বর্ণীতঃ
ঈমাম আহমাদ [রাহিমাহুল্লাহ] এ হাদিসটি আবদুল্লাহ ইবনি আমর ইবনুল আস থেকে বর্ণনা করিয়াছেন। তাঁদের এক বর্ণনায় এ বাক্যটি আছে যে, কিন্তু দু লোক : হিংসা পোষণকারী ও আত্মহত্যাকারী ব্যতীত আল্লাহ তার সকল সৃষ্টিকে মাফ করে দেন]। {১}
{১} হাসান : আহমাদ ৬৬৪২, যদিও সানাদে বর্ণনাকারী আবদুল্লাহ ইবনি লিহ্ইয়া এবং হাই ইবনি আবদুল্লাহ দুর্বল হওয়ায়-এর সানাদটি দুর্বল, কিন্তু এর শাহিদমূলক বর্ণনা থাকায় তা হাসানের স্তরে উন্নীত হয়েছে। এই হাদিসটির তাহকীকঃ হাসান হাদিস
১৩০৮. আলী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] ইরশাদ করিয়াছেন : শাবান মাসের পনের তারিখ রাত হলে তোমরা সে রাত্রে সলাত আদায় কর ও দিনে রোযা রাখো। কেননা, আল্লাহ তাআলা এ রাত্রে সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গে দুনিয়ার আকাশে নেমে আসেন এবং [দুনিয়াবাসীকে উদ্দেশ্য করে] বলেন, কোন ক্ষমা প্রার্থনাকারী আছে কি? আমি তাকে ক্ষমা করে দেবো। কোন রিযক্বপ্রার্থী আছে, আমি তাকে রিযক্ব দান করব? কোন বিপদগ্রস্ত কি আছে, আমি তাকে বিপদ মুক্ত করে দেব? এভাবে আল্লাহ মানুষের প্রতিটি দরকার ও প্রতিটি বিপদের নাম উল্লেখ করে তাহাঁর বান্দাদেরকে সকাল হওয়া পর্যন্ত আহবান করিতে থাকেন।{১}
1] মাওযূ : ইবনি মাজাহ ১৩৮৮, যঈফাহ্ ২১৩২, জইফ আত তারগীব ৬২৩। কারণ এর সানাদের বর্ণনাকারী ইবনি আবী সাবরাহ্ সম্পর্কে ঈমাম আহমাদ এবং ইবনি মাঈন [রাহিমাহুল্লাহ] বলেছেন, সে হাদিস বানিয়ে বর্ণনা করে। এই হাদিসটির তাহকীকঃ জাল হাদিস
Leave a Reply