তায়াম্মুমের বিবরণ উপাদান। সফর মুকীম ও জুনুব ব্যক্তির বর্ণনা

তায়াম্মুমের বিবরণ উপাদান। সফর মুকীম ও জুনুব ব্যক্তির বর্ণনা

তায়াম্মুমের বিবরণ উপাদান। সফর মুকীম ও জুনুব ব্যক্তির বর্ণনা >> সুনানে নাসাই শরিফের মুল সুচিপত্র দেখুন

পর্বঃ ১, পবিত্রতা, হাদীস (৩১০-৩২৪)

১.পরিচ্ছেদঃ তায়াম্মুমের সূচনা
২.পরিচ্ছেদঃ মুকীমের তায়াম্মুম
৩.পরিচ্ছেদঃ মুকীমের তায়াম্মুম
৪.পরিচ্ছেদঃ সফরে তায়াম্মুম
৫.পরিচ্ছেদঃ তায়াম্মুমের পদ্ধতি সম্পর্কে মতভেদ
৬.পরিচ্ছেদঃ আরেক প্রকারের তায়াম্মুম এবং উভয় হাতে ফুঁ দেওয়া
৭.পরিচ্ছেদঃ আরেক প্রকারের তায়াম্মুম
৮.পরিচ্ছেদঃ তায়াম্মুম-এর অন্য প্রকার
৯.পরিচ্ছেদঃ জুনুব ব্যক্তির তায়াম্মুম
১০.পরিচ্ছেদঃ মাটি দ্বারা তায়াম্মুম করা
১১.পরিচ্ছেদঃ এক তায়াম্মুমে কয়েক নামাজ আদায় করা
১২.পরিচ্ছেদঃ যে ব্যক্তি পানি এবং মাটি কোনটাই না পায়

১.পরিচ্ছেদঃ তায়াম্মুমের সূচনা

৩১০. আয়িশাহ[রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেনঃ আমরা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে কোন এক সফরে বের হলাম। আমরা যখন বায়দা অথবা যাতুল জায়শ নামক স্থানে পৌঁছলাম তখন আমার একটি হার হারিয়ে গেল। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এবং তাহাঁর সংগীগণ তার তালাশে সেখানে অবস্থান করিলেন। তাহাদের অবস্থান পানির নিকটে ছিল না এবং তাহাদের সাথে পানিও ছিল না। লোকজন আবু বকর [রাঃআঃ]-এর নিকট এসে বলিল, আপনি কি দেখছেন না আয়িশাহ [রাঃআঃ] কি করিলেন? তিনি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে এবং অন্যান্য লোকদের এমন স্থানে অবস্থানে বাধ্য করিয়াছেন যার নিকটে কোন পানি নেই এবং লোকদের সাথেও কোন পানি নেই। তখন আবু বকর [রাঃআঃ] আমার নিকট এলেন। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তখন আমার উরুর উপর মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। আবু বকর[রাঃআঃ] বলিলেন, তুমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এবং অন্যান্য লোকদের এমন স্থানে আটকিয়ে রেখেছ যেখানে পানির কোন উৎস নেই আর তাহাদের সাথেও পানি নেই। আয়িশাহ[রাঃআঃ]বলেনঃ তিনি আমাকে খুব তিরস্কার করিলেন আর আল্লাহ্‌র যা ইচ্ছা ছিল তাই বলিলেন এবং তাহাঁর হাত দিয়ে আমার কোমরে খোঁচা দিতে লাগলেন। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর শরীর আমার উরুর উপর থাকার কারণে আমি নড়াচড়া করিতে পারছিলাম না। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] নিদ্রায় রইলেন, এমনকি পানির কোন ব্যবস্থা ছাড়াই ভোর হয়ে গেল। তখন আল্লাহ্‌ তাআলা তায়াম্মুমের আয়াত নাযিল করিলেন। এতে উসায়দ ইবনি হুযায়র [রাঃআঃ] বললেনঃ হে আবু বকরের পরিজন! এটাই তোমাদের প্রথম বরকত নয়। আয়িশাহ [রাঃআঃ]বলেনঃ আমি যে উটের উপর ছিলাম সেটিকে উঠালে তার নিচে আমার হারটি পেলাম।

নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২.পরিচ্ছেদঃ মুকীমের তায়াম্মুম

৩১১. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছেন যে, আমি এবং মায়মূনা [রাঃআঃ]-এর আযাদকৃত গোলাম আবদুল্লাহ ইবনি ইয়াসার আবু জুহায়াম ইবনি সিম্মা আনসারী [রাঃআঃ]-এর নিকট গেলাম। আবু জুহায়ম বলিলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বির আল- জামাল–এর দিক থেকে আসছিলেন, তাহাঁর সাথে এক ব্যক্তির সাক্ষাত হল। সে তাঁকে সালাম করিল। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তার সালামের উত্তর দিলেন না। তিনি একটি দেওয়ালের নিকট আসলেন এবং তাহাঁর চেহারা ও উভয় হাত মসেহ করিলেন, এরপর সালামের জবাব দিলেন।

নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩.পরিচ্ছেদঃ মুকীমের তায়াম্মুম

৩১২. আবদুর রহমান ইবনি আবযা [রহঃ] হইতে বর্ণীত

এক ব্যক্তি উমর [রাঃআঃ]-এর নিকট এসে বলিল, আমি জানাবাত অবস্থায় আছি কিন্তু পানি পাইনি। উমর [রাঃআঃ]বললেনঃ তুমি নামাজ আদায় করো না। এ কথা শুনে আম্মার ইবনি ইয়াসির বলিলেন, হে আমীরুল মুমিনীন! আপনার কি স্মরণ নাই যে, এক সময় আমি এবং আপনি এক যুদ্ধে ছিলাম, আমরা উভয়ে জুনুবী হয়ে পড়লাম, আর আমরা পানি পেলাম না। এতে আপনি নামাজ আদায় করিলেন না কিন্তু আমি মাটিতে গড়াগড়ি দিলাম, তারপর নামাজ আদায় করলাম। তারপর আমরা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট উপস্থিত হয়ে তাহাঁর নিকট ঘটনা বর্ণনা করলাম। তখন তিনি বললেনঃ তোমার জন্য এ-ই যথেষ্ট ছিল। এ বলে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর হস্তদ্বয় মাটিতে মারলেন এরপর তাতে ফুঁ দিলেন এবং তা দ্বারা তাহাঁর চেহারা এবং উভয় হাত মসেহ করিলেন। বর্ণনাকারী সালামা সন্দেহ করিলেন, এ ব্যাপারে তাহাঁর মনে নেই কনুই পর্যন্ত বলেছেন, না কব্জি পর্যন্ত। এ কথা শুনে উমর [রাঃআঃ] বললেনঃ তুমি যা বর্ণনা করলে তার দায়-দায়িত্ব তোমার উপরই অর্পণ করলাম।

নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩১৩. আম্মার ইবনি ইয়াসির [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেনঃ একবার আমি জুনুবী হয়ে পড়লাম, তখন আমি ছিলাম উটপালের মধ্যে। এ সময়ে আমি পানি পেলাম না। তখন আমি চতুষ্পদ জন্তুর ন্যায় মাটিতে গড়াগড়ি দিলাম। তারপর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট উপস্থিত হয়ে তাঁকে এই সংবাদ জানালাম। তিনি বললেনঃ এ রকম না করে বরং তায়াম্মুম করাই তোমার জন্য যথেষ্ট ছিল।

নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ লিগাইরিহি

৪.পরিচ্ছেদঃ সফরে তায়াম্মুম

৩১৪. আম্মার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] শেষরাতে উলাতুল জায়শ নামক স্থানে যাত্রা বিরতি দিলেন। আর তাহাঁর সঙ্গে ছিলেন তাহাঁর সহধর্মিণী আয়িশাহ[রাঃআঃ]। তাহাঁর ইয়ামানী মোতির হার হারিয়ে গেলে এর তালাশে সমস্ত লোক আটকা পড়ল। অবশেষে ভোর হয়ে গেল অথচ লোকদের পানি ছিল না। যদ্দরুন আবু বকর [রাঃআঃ] তাহাঁর উপর রাগান্বিত হয়ে বললেনঃ তুমি লোকদের আটকিয়ে রেখেছ অথচ তাহাদের সাথে পানি নেই। তখন আল্লাহ তাআলা মাটি দ্বারা তায়াম্মুম করার অনুমতি সংক্রান্ত আয়াত নাযিল করিলেন। বর্ণনাকারী বলেন, তখন মুমিনগণ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে উঠে মাটিতে নিজেদের হাত মারলেন আর তাহাদের হাত উঠালেন এবং হাত থেকে মাটি একটুও ঝাড়লেন না, বরং তা দ্বারা তাহাদের চেহারা ও হাত {উপর দিক থেকে} কাঁধ পর্যন্ত মসেহ করিলেন আর তাহাদের হাতের নিচের দিক থেকে বগল পর্যন্ত মসেহ করিলেন।

নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৫.পরিচ্ছেদঃ তায়াম্মুমের পদ্ধতি সম্পর্কে মতভেদ

৩১৫. আম্মার ইবনি ইয়াসির [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেনঃ আমরা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সাথে মাটি দ্বারা তায়াম্মুম করলাম। এতে আমরা আমাদের চেহারা এবং কাঁধ পর্যন্ত আমাদের হাত মসেহ করেছিলাম।

নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৬.পরিচ্ছেদঃ আরেক প্রকারের তায়াম্মুম এবং উভয় হাতে ফুঁ দেওয়া

৩১৬. আবদুর রহমান ইবনি আবযা [রহঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেনঃ আমরা উমর[রাঃআঃ]-এর নিকট ছিলাম। তাহাঁর কাছে এক ব্যক্তি এসে বলিল, হে আমীরুল মুমিনীন! অনেক সময় আমরা এক মাস বা দুই মাস পর্যন্ত কোথাও অবস্থান করি আর আমরা পানি পাই না। উমর[রাঃআঃ]বলিলেন, আমি পানি না পেলে নামাজ আদায় করবার নই, যাবৎ না পানি পাই। তখন আম্মার ইবনি ইয়াসির [রাঃআঃ] বললেনঃ হে আমীরুল মুমিনীন! আপনার মনে আছে কি, যখন অমুক অমুক স্থানে ছিলাম আর আমরা উট চরাতাম, আপনি জানেন যে, আমরা জানাবাতগ্রস্ত হলাম। তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। তখন আমি মাটিতে গড়াগড়ি দিলাম। পরে আমরা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট আসলে তিনি হেসে বললেনঃ মাটিই তোমার জন্য যথেষ্ট ছিল, আর তিনি উভয় হাত মাটিতে মারলেন এবং তাতে ফুঁ দিলেন। তারপর তিনি তাহাঁর চেহারা এবং তাহাঁর উভয় হাতের কিয়দাংশ মসেহ করিলেন। উমর [রাঃআঃ] বললেনঃ হে আম্মার! আল্লাহকে ভয় কর। আম্মার বললেনঃ হে আমীরুল মুমিনীন! যদি আপনি চান তাহলে আমি এটা বর্ণনা করব না। উমর [রাঃআঃ] বললেনঃ না। কিন্তু আমার নিকট যা বর্ণনা করলে, এর দায়িত্বভার তোমার উপর অর্পণ করলাম [তাই হাদিস বর্ণনায় সাবধানতা অবলম্বনের জন্য এটা বললাম]।

নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য

৭.পরিচ্ছেদঃ আরেক প্রকারের তায়াম্মুম

৩১৭. দুর রহমান ইবনি আবযা [রহঃ] হইতে বর্ণীত

এক ব্যক্তি উমর ইবনি খাত্তাব [রাঃআঃ]-কে তায়াম্মুম সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করিল। এ প্রশ্নের তিনি কোন উত্তর খুঁজে পেলেন না। তখন আম্মার বলিলেন, আপনার কি স্মরণ আছে? যখন আমরা এক যুদ্ধে ছিলাম, আমি জানাবাতগ্রস্ত হলাম। তখম আমি মাটিতে গড়াগড়ি দিলাম। পরবর্তীতে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট উপস্থিত হলে তিনি বললেনঃ তোমার এরূপ করাই যথেষ্ট ছিল। এ বলে শুবা হাঁটুর উপর তাহাঁর উভয় হাত মেরে তাহাঁর হস্তদ্বয়ে ফুঁ দিলেন আর উভয় হাত দ্বারা তার মুখ ও হস্তদ্বয় একবার করে মসেহ করিলেন।

নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩১৮. নি আবদুর রহমান [রহঃ] হইতে বর্ণীত

এক ব্যক্তি জানাবাতগ্রস্ত হলে উমর [রাঃআঃ]-এর নিকট এসে বলিল, আমি জানাবাত অবস্থায় উপনীত হয়েছি কিন্তু পানি পাই না। তিনি বলিলেন, তুমি নামাজ আদায় করিবে না। তখন আম্মার বলিলেন, আপনার কি স্মরণ নেই যে, আমরা এক যুদ্ধে ছিলাম। আমরা জানাবাত অবস্থায় পতিত হলাম, তখন আমরা পানি পাইনি, এতে আপনি নামাজ আদায় করিলেন না কিন্তু আমি মাটিতে গড়াগড়ি দিলাম এবং নামাজ আদায় করলাম। পরবর্তীতে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট এসে তা বর্ণনা করলাম। তখন তিনি বললেনঃ তোমার জন্য এটাই যথেষ্ট ছিল, এ বলে শুবা [রহঃ] একবার মাটিতে হাত মারলেন আর তাতে ফুঁ দিলেন আর তা দিয়ে এক হাত অন্য হাতের সাথে ঘষলেন এবং উভয় হাত দ্বারা তার মুখমণ্ডল মসেহ করিলেন। তখন উমর [রাঃআঃ] বলিলেন, আমি জানি না এটা কী? আম্মার বলিলেন, যদি আপনি চান তাহলে আমি এটা বর্ণনা করব না। সালামার বর্ণনায় অতিরিক্ত আছে যে, উমর [রাঃআঃ] বললেনঃ তুমি যা বর্ণনা করলে, তার দায়দায়িত্ব তোমার।

নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

৮.পরিচ্ছেদঃ তায়াম্মুম-এর অন্য প্রকার

৩১৯. আবদুর রহমান ইবনি আবযা [রহঃ] হইতে বর্ণীত

এক ব্যক্তি উমর[রাঃআঃ]-এর নিকট এসে বলিল, আমি জানাবাতগ্রস্ত হয়েছি কিন্তু পানি পেলাম না। উমর [রাঃআঃ] বলিলেন, তুমি নামাজ আদায় করো না। তখন আম্মার [রাঃআঃ]বলিলেন, হে আমীরুল মুমিনীন! আপনার স্মরণ আছে কি? একবার আমি এবং আপনি এক যুদ্ধে ছিলাম আর আমরা জানাবাতগ্রস্ত হলাম কিন্তু পানি পাচ্ছিলাম না। তখন আপনি নামাজ আদায় করিলেন না। কিন্তু আমি মাটিতে গড়াগড়ি দিলাম এবং নামাজ আদায় করলাম। পরবর্তীতে যখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট তা ব্যক্ত করলাম, তিনি বললেনঃ তোমার জন্য এ-ই যথেষ্ট ছিল এ বলে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] মাটিতে হাত রাখলেন এবং উভয় হাতে ফুঁ দিলেন তারপর উভয় হাত দ্বারা আপন মুখমণ্ডল ও উভয় কব্জি মসেহ করিলেন। সালামা সন্দেহ করে বলেন, আমার জানা নেই[তিনি এতে উভয় কনুই বলেছেন না উভয় কব্জি]। উমর[রাঃআঃ]বলিলেন, তুমি যা করলে তার দায়িত্ব তোমার উপরই অর্পণ করলাম। শুবা [রহঃ] বলেন, তিনি উভয় হাত, মুখমণ্ডল এবং বাহুদ্বয়ের কথা বলিতেন। এজন্য মানসূর তাঁকে বলিলেন, আপনি কি বলছেন? আপনি ব্যতীত কেউই বাহুর কথা উল্লেখ করেন নি। এজন্য সালামার সন্দেহ হল। তিনি বললেনঃ আমার স্মরণ নেই তিনি বাহুর কথা উল্লেখ করিয়াছেন কিনা।

নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৯.পরিচ্ছেদঃ জুনুব ব্যক্তির তায়াম্মুম

৩২০. শাকীক[রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেনঃ আমি আবদুল্লাহ এবং আবু মূসা [রাঃআঃ]-এর সঙ্গে বসা ছিলাম, তখন আবু মূসা বলিলেন, আপনি কি আম্মারের কথা শোনেন নি যে, তিনি উমর [রাঃআঃ]-কে বলেছিলেন, আমাকে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এক কাজে পাঠালেন, আমি জানাবাতগ্রস্ত হলে পানি পেলাম না। অতএব আমি মাটিতে গড়াগড়ি দিলাম। পরবর্তীতে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকটে উপস্থিত হয়ে এ ঘটনা বর্ণনা করলাম। তিনি বললেনঃ তোমার জন্য এ-ই যথেষ্ট ছিল। এই বলে তাহাঁর হস্তদ্বয় একবার মাটিতে মারলেন। তারপর উভয় হাতের তালু মুছলেন ও ঝাড়লেন, তারপর তাহাঁর বাম হাত ডান হাতের উপর মারলেন আর ডান হাত বাম হাতের উপর এবং উভয় কব্জি ও মুখমণ্ডল মসেহ করিলেন। আবদুল্লাহ বলিলেন, তুমি কি দেখছ না যে, উমর [রাঃআঃ] আম্মারের কথায় তৃপ্ত হননি।

নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১০.পরিচ্ছেদঃ মাটি দ্বারা তায়াম্মুম করা

৩২১. আবু রাজা [রহঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেনঃ আমি ইমরান ইবনি হুসায়ন [রাঃআঃ]-কে বলিতে শুনিয়াছি,রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এক ব্যক্তিকে লোকদের সঙ্গে নামাজ আদায় না করে আলাদা থাকতে দেখলেন। তিনি বললেনঃ হে অমুক! লোকদের সঙ্গে নামাজ আদায় করিতে কোন্ বস্তুটি তোমাকে বাধা দিল? সে ব্যক্তি বলিল, ইয়া রাসূলাল্লাহ্ ! আমি জানাবাত অবস্থাই আছি অথচ পানি পাইনি। তিনি বললেনঃ তুমি মাটি ব্যবহার কর, তা-ই তোমার জন্য যথেষ্ট।

নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১১.পরিচ্ছেদঃ এক তায়াম্মুমে কয়েক নামাজ আদায় করা

৩২২. আবু যর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন পবিত্র মাটি মুমিনের উযূর উপকরণ, যদি সে দশ বৎসরও পানি না পায়।

নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১২.পরিচ্ছেদঃ যে ব্যক্তি পানি এবং মাটি কোনটাই না পায়

৩২৩. আয়িশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] উসায়দ ইবনি হুযায়র [রাঃআঃ] এবং আরও কয়েক ব্যক্তিকে হযরত আয়িশাহ [রাঃআঃ]-এর একটি হার তালাশের জন্য পাঠিয়েছিলেন, যা তিনি যে মনযিলে অবতরণ করেছিলেন সেখানে হারিয়েছিলেন। এমতাবস্থায় নামাজের সময় উপস্থিত হল, অথচ লোকদের উযূ ছিল না আর তারা পানিও পাচ্ছিলেন না। তখন তারা উযূ ব্যতীতই নামাজ আদায় করিলেন। তারপর তারা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট তা উল্লেখ করিলেন। আল্লাহ্‌ তাআলা তায়াম্মুমের আয়াত অবতীর্ণ করিলেন। উসায়দ ইবনি হুযায়র[রাঃআঃ]বলে উঠলেন, আল্লাহ্‌ তাআলা আপনাকে উত্তম বিনিময় দান করুন, যখনই আপনার প্রতি এমন কোন বিপদ আপতিত হয়েছে যা আপনি অপছন্দ করেন, তার মধ্যেই আল্লাহ্‌ তাআলা আপনার ও মুসলমানদের জন্য কল্যাণ নিহিত রেখেছেন।

নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩২৪. তারিক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

বর্ণিত। এক ব্যক্তি জানাবাতগ্রস্ত হলে সে নামাজ আদায় করিল না। এরপর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট এসে তা বর্ণনা করিল। তিনি বললেনঃ তুমি ঠিক করেছ। এরপর অন্য একটি লোক জানাবাতগ্রস্ত হয়ে তায়াম্মুম করে নামাজ আদায় করিল। তারপর সে তাহাঁর নিকট আসল। তিনি অন্য ব্যক্তিকে যা বলেছিলেন তাকেও তাই বলিলেন। অর্থাৎ তুমি ঠিকই করেছ। {১}

নাসায়ী শরীফ বাংলা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস


Posted

in

by

Comments

Leave a Reply