তায়াম্মুম [মাটির সাহায্যে পবিত্রতা অর্জন]

তায়াম্মুম [মাটির সাহায্যে পবিত্রতা অর্জন]

 তায়াম্মুম [মাটির সাহায্যে পবিত্রতা অর্জন] >> বুলুগুল মারাম এর মুল সুচিপত্র দেখুন

অধ্যায় -৯ঃ তায়াম্মুম [মাটির সাহায্যে পবিত্রতা অর্জন]

পরিচ্ছেদ ১০১. নবী [সাল্লাল্লাহু`আলাইহই ওয়া সাল্লাম] ও তার উম্মতের বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্য, তন্মধ্যে তায়াম্মুম
পরিচ্ছেদ ১০২. মাটি দ্বারা তায়াম্মুম করা শর্ত
পরিচ্ছেদ ১০৩. তায়াম্মুমের পদ্ধতিতে ছোট-বড় নাপাকির ক্ষেত্রে কোন পার্থক্য নেই
পরিচ্ছেদ ১০৪. তায়াম্মুমের ভিন্ন পদ্ধতির বিবরণ
পরিচ্ছেদ ১০৫. অযুর স্থলাভিষিক্ত হয়ে তায়াম্মুম নাপাকী দূর করে
পরিচ্ছেদ ১০৬. তায়াম্মুম করে নামায পড়ার পর [নামাযের] সময় থাকতেই কেউ পানি পেলে তার বিধান
পরিচ্ছেদ ১০৭. অসুস্থ ব্যক্তির [অযুর সময়] পানি ব্যবহার ক্ষতিকর হলে তার বিধান
পরিচ্ছেদ ১০৮. পটির উপর মাসাহ করার বিধান
পরিচ্ছেদ ১০৯. এক তায়াম্মুম দ্বারা কেবল মাত্র এক ওয়াক্ত সলাত পড়া যায়

পরিচ্ছেদ ১০১. নবী [সাল্লাল্লাহু`আলাইহই ওয়া সাল্লাম] ও তার উম্মতের বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্য, তন্মধ্যে তায়াম্মুম

১২৬- জাবির ইবনু`আবদুল্লাহ [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ আমাকে এমন পাঁচটি বিষয় দান করা হয়েছে, যা আমার পূর্বে কাউকেও দেওয়া হয়নি। [১] আমাকে এমন প্রভাব দিয়ে সাহায্য করা হয়েছে যে, একমাস দূরত্বেও তা প্রতিফলিত হয়; [২] সমস্ত যমীন আমার জন্য পবিত্র ও সলাত আদায়ের উপযোগী করা হয়েছে। কাজেই আমার উম্মতের যে কোন লোক ওয়াক্ত হলেই সলাত আদায় করিতে পারবে যে কোন স্থানে। অতঃপর রাবী পূর্ণ হাদিসটি বর্ণনা করিলেন। {১৫১}

{১৫১} বুখারী ৩৩৫; মুসলিম ৫২১ পরিপূর্ণ হাদিসটি হচ্ছে [আরবী] “আমার জন্য গনীমতের মাল হালাল করা হয়েছে যা আমার পূর্বে কোন [নবীর জন্য] করা হয়নি। আমাকে শাফায়াতের অধিকার দেয়া হয়েছে। প্রত্যেক নবীগণ তাঁদের নির্দিষ্ট জাতির উপর নাযিল হতেন অথচ আমি সাধারণভাবে সকল মানুষের প্রতি প্রেরিত হয়েছি। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ ১০২. মাটি দ্বারা তায়াম্মুম করা শর্ত

১২৭- হুযইফাহ [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

“পানি না পাওয়া গেলে তদস্থলে মাটিকে আমাদের জন্য পবিত্রকারী করা হয়েছে।” {১৫২}

{১৫২} মুসলিম ৫২২। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস

১২৮- আলী [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

আমার জন্য মাটিকে পবিত্রকারী করা হয়েছে।’ {১৫৩}

{১৫৩} হাসান। আহমাদ ৭৬৩; হাদিসটির পূর্ণাঙ্গ রূপ এইঃ [আরবী] আমাকে যা দেয়া হয়েছে তা পূর্ববর্তী কোন নবীকেই দেয়া হয়নি। আমরা বললামঃ হে আল্লাহর রাসূল [সাঃআঃ] সেটা কী জিনিস? তিনি [সাঃআঃ] বলিলেন, আমাকে ভীতিসঞ্চারকারী প্রতাপ দ্বারা সাহায্য করা হয়েছে, জমীনের ধনভাণ্ডারসমূহের চাবিকাঠি আমাকে দেয়া হয়েছে, আমার নাম রাখা হয়েছে আহমদ, আমার জন্য মাটিকে পবিত্রকারী করা হয়েছে এবং আমার উম্মতকে সর্বশ্রেষ্ঠ হিসেবে ভূষিত করা হয়েছে। হাদিসের তাহকীকঃ হাসান হাদিস

পরিচ্ছেদ ১০৩. তায়াম্মুমের পদ্ধতিতে ছোট-বড় নাপাকির ক্ষেত্রে কোন পার্থক্য নেই

১২৯- ‘আম্মার বিন ইয়াসির [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন,`নাবী [সাঃআঃ] আমাকে কোন প্রয়োজনে [কোন এক স্থানে] পাঠালেন। কিন্তু সেখানে আমি জুনুবী হয়ে পড়ি এবং পানি না পাওয়ায় ধূলার উপর [শুয়ে] গড়াগড়ি দেই যেভাবে চতুশ্পদজন্তু গড়াগড়ি দিয়ে থাকে। তারপর নাবী [সাঃআঃ] -এর নিকটে প্রত্যাবর্তন করে আমি তা বর্ণনা করি। তখন তিনি আমাকে বলিলেন,`ঐ অবস্থায় তোমার পক্ষে এতটুকুই যথেষ্ট ছিল যে, তুমি তোমার হাত দুটিকে এভাবে করিতে [তিনি তা দেখাতে গিয়ে] তাহাঁর দুহাতের তালুকে এক বার মাটির উপরে মারলেন, তারপর বাম হাতকে ডান হাতের উপর মাসহ করিলেন এবং তাহাঁর দুহাতের বাহির ভাগ ও মুখমণ্ডলও মাস্হ করিলেন।’ এ শব্দ বিন্যাস মুসলিমের। {১৫৪}

বুখারীর অন্য বর্ণনায় আছে, “এবং তাহাঁর হাত দু’টিকে মাটিতে মারলেন এবং দুহাতে ফূঁক দিলেন; তারপর দু’হাত দ্বারা মুখমণ্ডল ও হাতের দু’ কবজি মাসহ করিলেন।” {১৫৫}। {১৫৪} বুখারী ৩৪৭ মুসলিম ৩৬৮। {১৫৫} বুখারী ৩৩৮। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ ১০৪. তায়াম্মুমের ভিন্ন পদ্ধতির বিবরণ

১৩০ – ইবনু`উমার [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন,`তায়াম্মুমের জন্য মাটিতে দু’ বার হাত মারতে হয়। এক বার মুখমণ্ডলের জন্য আরেক বার কনুই পর্যন্ত দু’হাতের জন্য।’ হাদিসবেত্তাগণ হাদিসটির মওকুফ হওয়াকেই সহিহ বলে সাব্যস্ত করিয়াছেন। {১৫৬}

{১৫৬} দারাকুতনী ১৮০৬। ইমাম নববী তাহাঁর আল-মাজমু‘ [২/২১০] গ্রন্থে বলেন, হাদিসটি মুনকার, এর কোন ভিত্তিই নেই। ইমাম হায়সামী তার মাযমাউয যাওয়ায়েদ [১/২৬৭] গ্রন্থে বলেন, এর সনদে আলী বিন যিবইয়ান রহিয়াছে, ইয়াহইয়া বিন মুঈন ও একদল মুহাদ্দিস তাকে দুর্বল আখ্যায়িত করে বলেন, সে হচ্ছে মহামিথ্যাবাদী, খবীস। তবে আবূ আলী নিসাবুরী বলেন, তার মধ্যে কোন সমস্যা নেই। ইবনুল মুলকিন তার বদরুল মুনীর [২/৬৩৮] গ্রন্থে বলেন, এর শাহেদ রহিয়াছে। হাদিসের তাহকীকঃ খুবই দুর্বল

পরিচ্ছেদ ১০৫. অযুর স্থলাভিষিক্ত হয়ে তায়াম্মুম নাপাকী দূর করে

১৩১- আবূ হুরাইরা [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন,`মুমিন মুসলিমের জন্য পবিত্র মাটি উযু বিশেষ [অর্থাৎ-পানির স্থলাভিসিক্ত] যদিও সে দশ বছর ধরে পানি না পায়। তারপর পানি পেলে সে যেন আল্লাহকে ভয় করে ও তার দেহে তা ব্যবহার করে [অর্থাৎ পানি দিয়ে উযু করে] ।’ ইবনুল কাত্তান একে সহিহ বলেছেন। কিন্তু দারাকুৎনী এটি মুরসাল হওয়াকেই সঠিক বলেছেন। {১৫৭}

{১৫৭} বাজ্জার ৩১০ যাওয়ায়েদ, হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস

১৩২- আবূ যার [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

অনুরূপ হাদিস বর্ণিত হয়েছে এবং তিনি একে সহিহও বলেছেন। {১৫৮}

{১৫৮} তিরমিজি ১২৪; তিরমিজির শব্দসমূহ হচ্ছেঃ [আরবী] “নিশ্চয়ই পবিত্র মাটি মুসলিমের জন্য পবিত্রকারী যদিও সে দশ বছর যাবৎ পানি না পায়। আর যখন পানি পেয়ে যাবে তখন সে তা তার শরীরে স্পর্শ করায় তথা ব্যবহার করে গোসল করে নেয়। কেননা এটা তার জন্য অতি উত্তম । তিরমিজি হাদিসটিকে হাসান সহিহ বলেছেন। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ ১০৬. তায়াম্মুম করে নামায পড়ার পর [নামাযের] সময় থাকতেই কেউ পানি পেলে তার বিধান

১৩৩ – আবূ সা‘ঈদ খুদরী [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন,`দু-জন সহাবী সফরে বের হলেন। [পথিমধ্যে] সলাতের সময় উপস্থিত হল, কিন্তু তাদের কাছে কোন পানি ছিল না; ফলে তাঁরা উভয়ে পবিত্র মাটি দিয়ে তায়াম্মুম করে সলাত আদায় করিলেন। তারপর [সলাতে] ওয়াক্ত থাকতেই তাঁরা পানি পেয়ে গেলেন। তাদের মধ্যে একজন উযু করে পুনরায় সলাত আদায় করিলেন আর অপর ব্যক্তি তা করিলেন না। তারপর তাঁরা উভয়েই নাবী [সাঃআঃ] -এর নিকট এসে বিষয়টি তাঁকে জানালেন। যিনি পুনরায় সলাত আদায় করেননি তাঁকে বলিলেন, তুমি সুন্নাত [নিয়ম] অনুযায়ী ঠিকই করেছ।’ তোমার জন্য ঐ সলাতই যথেষ্ট হয়েছে আর অপর ব্যক্তিটিকে বলিলেন,`তোমার দ্বিগুণ সওয়াব হয়েছে।’ {১৫৯}

{১৫৯} আবূ দাউদ ৩৩৮; নাসায়ী ১১৩। হাদিসের তাহকীকঃ মুরসাল

পরিচ্ছেদ ১০৭. অসুস্থ ব্যক্তির [অযুর সময়] পানি ব্যবহার ক্ষতিকর হলে তার বিধান

১৩৪ – ইবনু`আব্বাস [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

আল্লাহর বাণী`যদি তোমরা অসুস্থ হও বা সফরে থাকো {১৬০} – এ আয়াতের ব্যাখ্যায়`আব্বাস [রাঃআঃ] বলেন, “কোন ব্যক্তি যদি আল্লাহর পথে কোন জখম বা আঘাত প্রাপ্ত হয় এবং সে জুনুৰী বা অপবিত্র হয়ে পড়ে আর গোসল করিতে মৃত্যুর আশংকা করে, তবে মতাবস্থায় সে তায়াম্মুম করিবে।” দারাকুৎনী এটিকে মাওকুফরূপে ও বাযযার মারফূ‘রূপে রিওয়ায়াত করিয়াছেন; এবং ইমাম হাকিম ও ইবনু খুযাইমাহ একে সহিহ বলেছেন। {১৬১}

{১৬০} আবূ দাউদ ৩৩৮; নাসায়ী ১১৩। {১৬১} হাদিসটি মারফূ‘ ও মাওকূফ উভয় হিসেবেই জঈফ। মাওকূফ‘ হিসেবে বর্ণনা করিয়াছেন দারাকুৎনী [৯/১৭৭] আর মারফূ‘ হিসেবে বর্ণনা করিয়াছেন ইবনু খুজাইমাহ [২৭২] ও হাকিম [১৬৫], এ হাদীসে রহিয়াছে জাসারা বিনতু দাজাজা। তিনি তার বর্ণনায় ইজতিরাব ঘটিয়েছেন। ইজতিরাব হচ্ছে হাদিসের ক্রটি। তাই এক দল মুহাদ্দিস এ হাদিসটিকে দুর্বল আখ্যায়িত করিয়াছেন। [তামামুল মিন্নাহ ১১৮] জাসারা বিন দাজাজাহকে ইমাম বুখারী দুর্বল আখ্যায়িত করিয়াছেন [ইরওয়াউল গলীল ১/২১০], সহিহ ইবনু খুযাইমাহ [১৩২৭], আলবানী জঈফ বলেছেন, ইমাম শাওকানী হাদিসটিকে সহিহ বলেছেন। [নায়লুল আওতার ১/২৮৭], হাদিসের তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস

পরিচ্ছেদ ১০৮. পটির উপর মাসাহ করার বিধান

১৩৫ – ‘আলী [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন,`আমার একটি কবজি ভেঙ্গে যাওয়াতে আমি আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] -কে [করণীয় সম্পর্কে] জিজ্ঞেস করলাম। তিনি আমাকে পট্টির [ব্যান্ডেজ] উপর মাসহ করার নির্দেশ দিলেন।’ ইবনু মাজাহ অতি দুর্বল সানাদে। {১৬২}

{১৬২} হাদিসটি মাওজূ‘ বা জাল। ইবনু মাজাহ [৬৫৭] ,ইমাম যাহাবী তাহাঁর মীযানুল ই’তিদাল [৩/২৫৮] গ্রন্থে বলেন, এর সনদে উমার বিন খালিদ আল কারশী রহিয়াছে যাকে ক্রটিযুক্ত বর্ণনাকারীদের তালিকায় উল্লেখ করা হয়েছে। ইমাম দারাকুতনী তাহাঁর সুনানে [১/৪৯৯], ইবনু হাজার তাহাঁর আদ দিরাইয়াহ [১/৮৩] গ্রন্থে, বিন বায তাহাঁর হাশিয়া বুলুগুল মারাম [১৩৬] গ্রন্থে বলেন, এর সনদে আমর বিন খালিদ আল ওয়াসিত্বী রয়েছে যিনি মাতরূক [আরবী] শাইখ আলবানী জঈফ ইবনু মাজাহ [১২৬], ইবনু উসাইমীন তাহাঁর বুলুগুল মারামের শরাহ [১/৩৭৪] গ্রন্থে হাদিসটিকে অত্যন্ত দুর্বল বলেছেন। আবূ হাতিম আর রাযী তাহাঁর তানকীহু তাহকীকুত তা‘লীক [১/২০০] গছে বলেন, হাদিসটি বাতিল, এর কোন ভিত্তি নেই। হাদিসের তাহকীকঃ জাল হাদিস

১৩৬- জাবির বিন`আবদিল্লাহ [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

এক সহাবী সম্পর্কে বর্ণিত- যিনি গোসল করার পর মারা গিয়েছিলেন। তাহাঁর জন্য তায়াম্মুমই যথেষ্ট হতো, সে ক্ষতস্থানে পট্টি বেঁধে নিত। অতঃপর তার উপর মাসহ করে নিত এবং বাকি সমস্ত শরীর ধুয়ে নিত।’ আবূ দাউদ দূর্বল সানাদে এবং তাতে বর্ণনাকারীর ব্যাপারেও মতানৈক্য রহিয়াছে। {১৬৩}

{১৬৩} জঈফ। আবূ দাউদ [৩৩৬] জাবির [রাঃআঃ] হতে বর্ণনা করিয়াছেন। তিনি বলেন, আমরা সফরে রওয়ানা হলাম। আমাদের এক সাথীর পাথর লেগে মাথা ফুড়ে গেল। অতঃপর তার স্বপ্লদোষ হল। সে তার সাথীদের কাছে এ মর্মে জিজ্ঞেস করলো যে, তার জন্য কি তায়াম্মুমের অনুমতি আছে? তারা বলিলেন, আমরা তোমার জন্য এ ব্যাপারে কোন অনুমতি পাচ্ছি না। আর তুমি তো পানি ব্যবহারে সক্ষম। ফলে ঐ ব্যক্তি গোসল করিল, অতঃপর মারা গেল। যখন সফর শেষে আমরা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর নিকট এ ঘটনা বিবৃত করলাম, তিনি বলিলেন, তার সাথীগণ তাকে ধ্বংস করেছে, আল্লাহ তাদের ধ্বংস করুন। যেহেতু তাদের এ সম্পর্কিত জ্ঞান নেই তাহলে কেন জিজ্ঞাসা করলো না। আর ঐ ব্যক্তির জিজ্ঞেস করার অর্থই হলো সে [গোসল করার] ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছিল। …আল-হাদিস বিন বায তাহাঁর হাশিয়া বুলুগুল মারাম [১৩৭] গ্রন্থে বলেন, এর সনদে আয যুবাইর বিন খারীক আল যাযারী রহিয়াছে, যাকে ইমাম দারাকুতনী ও ইমাম আবূ দাউদ শক্তিশালী নয় বলে মন্তব্য করিয়াছেন। আর ইবনু আব্বাস বর্ণিত হাদিসটিতে দুর্বলতা ও সনদের বিচ্ছিন্নতা রহিয়াছে। শাইখ আলবানী তাহাঁর যঈফুল জামে [৪০৭৪] গ্রন্থে হাদিসটিকে দুর্বল বলেছেন। ইবনু উসাইমীন তাহাঁর বুলুগুল মারামের শরাহ [১/৩৭৫] গ্রন্থে বলেন, এর সনদে দুর্বলতা রহিয়াছে ও ইযতিরাব [পরস্পর বিরোধিতা] সংঘটিত হয়েছে। ইবনু হাজার তাহাঁর তালখীসুল হাবীর [১/২২৯] গ্রন্থে দারাকুতনী ও ইমাম যাহাবীর মন্তব্য উদ্ধৃত করিয়াছেন, দারাকুতনী বলেন, সে শক্তিশালী নয়। ইমাম যাহাবী বলেন, “এ রাবীটি সত্যবাদী ও হাদিসটি এবং আলীর হাদিসটি যুক্ত করলে শক্তিশালী হয়”। ইমাম সনআনী সুবুলুস সালাম [১/১৫৪] ইবনু হাজারের উপরোক্ত মন্তব্য নকল করিয়াছেন। হাদিসের তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস

পরিচ্ছেদ ১০৯. এক তায়াম্মুম দ্বারা কেবল মাত্র এক ওয়াক্ত সলাত পড়া যায়

১৩৭- ইবনু`আব্বাস [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন,`সুন্নাত [পদ্ধতি] হচ্ছে মানুষ তায়াম্মুম দ্বারা মাত্র এক ওয়াক্তেরই সলাত আদায় করিবে তারপর অন্য সালাতের জন্য আবারো তায়াম্মুম করিবে।’ দারকুতনী অতি দুর্বল সানাদে। {১৬৪}

{১৬৪} দারাকুতনী ১৮৫; ইমাম বায়হাকী তাহাঁর সুনান আল কুবরা [১/২২২] গ্রন্থে , ও আল খিলাফিয়্যাত [১/৪৬৫] গ্রন্থে, ইবনুল মুলকিন তাহাঁর [২/৬৭৪] গ্রন্থে বলেন, ইমাম সনআনী তাহাঁর সুবুলুস সালাম [১/১৫৫] গ্রন্থে এর সনদে আল হাসান বিন আম্মারাহ রয়েছেন, যাকে ইমাম দারাকুতনী দুর্বল বলেছেন। শাইখ আলবানী সিলসিলাহ যঈফা [৪২৩] গ্রন্থে হাদিসটিকে জাল বলেছেন। মুহাদ্দিস আযীমাবাদী তাহাঁর গায়াতুল মাকসূদ [৩/২০৮] গ্রন্থে বলেন, ইবনুল মাদীনী আল হাসান বিন আম্মারাহকে হাদিস জালকারী হিসেবে অভিযুক্ত করিয়াছেন। আহমাদ, মুসলিম ও আবূ হাতিম উক্ত রাবীকে মাতরূক হিসেবে আখ্যায়িত করিয়াছেন। ইবনু হাজার তাহাঁর তালখীসুল হাবীর [১/২৪১] গ্রন্থে হাদিসটিকে অত্যন্ত দুর্বল বলেছেন। ইমাম ইবনু কাসীর তাহাঁর ইরশাদুল ফাকীহ [১/৭৫] গ্রন্থে বলেন, আল হাসান বিন আম্মারাহকে একেবারেই পরিত্যক্ত বলে মন্তব্য করিয়াছেন। শু‘বাহ তাকে মিত্থাবাদী ও হাদিস জালকারী হিসেবে অভিযুক্ত করিয়াছেন। এরপরেও ইমাম দারাকুতনী কয়েকটি উত্তম সনদসহকারে হাদিসটিকে মাওকূফ হিসেবে বর্ণনা করিয়াছেন । হাদিসের তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস


by

Comments

2 responses to “তায়াম্মুম [মাটির সাহায্যে পবিত্রতা অর্জন]”

Leave a Reply