তামাত্তু হজ্জ ও কুরবানী ওয়াজিবের বর্ণনা
তামাত্তু হজ্জ পালনকারীর জন্য কুরবানী ওয়াজিব >> সহীহ মুসলিম শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন >> নিম্নে মুসলিম শরীফ এর একটি অধ্যায়ের হাদিস পড়ুন
২২. অধ্যায়ঃ ইহরাম থেকে হালাল হওয়া রহিতকরণ এবং তা পূর্ণ করার নির্দেশ প্রসঙ্গে
২৩. অধ্যায়ঃ তামাত্তু হাজ্জের বৈধতা
২৪. অধ্যায়ঃ তামাত্তু হাজ্জ পালনকারীর জন্য কুরবানী ওয়াজিব; যে ব্যক্তি এর সামর্থ্য না রাখে, সে হাজ্জের অনুষ্ঠান চলাকালে তিনদিন এবং বাড়িতে প্রত্যাবর্তনের পরে সাতদিন সওম পালন করিবে
২২. অধ্যায়ঃ ইহরাম থেকে হালাল হওয়া রহিতকরণ এবং তা পূর্ণ করার নির্দেশ প্রসঙ্গে
২৮৪৭. আবু মূসা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট এলাম। তিনি বাত্বহা নামক স্থানে উট বসিয়ে যাত্রা বিরতি করছিলেন। তিনি আমাকে বলিলেন, তুমি কি হজ্জের নিয়্যাত করেছ? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি বলিলেন, তুমি কী ধরনের ইহরাম বেঁধেছ? তিনি বলিলেন, আমি বলেছি –লাব্বায়কা, নবী [সাঃআঃ] যে হজ্জের ইহরাম বেঁধেছেন, আমিও তদ্রূপ ইহরাম বাঁধলাম। তিনি বলিলেন, তুমি ভালই করেছ। এখন বায়তুল্লাহ-এর ত্বওয়াফ কর এবং সাফা-মারওয়ার সাঈ কর ,অতঃপর ইহরাম খুলে ফেল। তিনি বলেন, আমি বায়তুল্লাহ-এর ত্বওয়াফ করলাম, সাফা-মারওয়ার সাঈ করলাম, অতঃপর ক্বায়স গোত্রের এক স্ত্রীলোকের নিকট এলাম। সে আমার মাথার উকুন বেছে দিল। এরপর আমি হজ্জের ইহরাম বাঁধলাম। আমি লোকদেরকে এভাবেই ফাতাওয়া দিতে থাকলাম উমর [রাদি.]- এর খিলাফাত পর্যন্ত।
এ সময় এক ব্যক্তি তাকে বলিল, হে আবু মূসা অথবা [বলিল] আবদুল্লাহ ইবনি ক্বায়স! আপনার কিছু ফাতাওয়া আপাততঃ স্থগিত রাখুন। কারণ আমীরুল মুমিনীন [উমর] আপনার পরে হজ্জ সম্পর্কে যে নতুন বিধান প্রবর্তন করিয়াছেন, তা আপনি জ্ঞাত নন। তখন আবু মূসা [রাদি.] বলিলেন, হে লোক সকল! আমি যাদের ফাতাওয়া দিয়েছি [ইহরাম খোলা সম্পর্কে] তারা যেন অপেক্ষা করে। কারণ আমীরুল মুমিনীন অচিরেই তোমাদের নিকট আসছেন, অতএব তাহাঁর আনুগত্য করা তোমাদের কর্তব্য। রাবী বলেন, উমর [রাদি.] এলেন এবং আমি তাহাঁর সামনে বিষয়টি উপস্থাপন করলাম। তিনি বলিলেন, আমরা যদি আল্লাহর কিতাব অনুযায়ী চলি, তবে তা আমাদের নির্দেশ দেয় [হজ্জ ও উমরাহ্] পূর্ণ করার। আমরা যদি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সুন্নাতের উপর আমল করি, তবে কুরবানীর পশু তার [কুরবানীর] স্থানে না পৌঁছা পর্যন্ত রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ইহরাম খুলেননি।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৮২৪, ইসলামিক সেন্টার- ২৮২২]
২৮৪৮. শুবাহ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
এ সূত্রে পূর্বোক্ত হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৮২৪, ইসলামিক সেন্টার- ২৮২৩]
২৮৪৯. আবু মূসা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট এলাম। তিনি বাত্বহা নামক স্থানে উট বসিয়ে অবস্থান করছিলেন। তিনি জিজ্ঞেস করিলেন, তুমি কিসের ইহরাম বেঁধেছ? আমি বললাম, আমি নবী [সাঃআঃ]-এর অনুরূপ ইহরাম বেঁধেছি। তিনি পুনরায় জিজ্ঞেস করিলেন, তুমি কি কুরবানীর পশু এনেছ? আমি বললাম, না। তিনি বলিলেন, তাহলে তুমি বায়তুল্লাহ-এর ত্বওয়াফ এবং সাফা- মারওয়ার মাঝে সাঈ করার পর ইহরাম খুলে ফেল। অতএব আমি বায়তুল্লাহ-এর ত্বওয়াফ ও সাফা-মারওয়ার মাঝে সাঈ করার পর ইহরাম খুলে ফেললাম। এরপর আমার গোত্রের এক মহিলার নিকট এলাম, সে আমার মাথার চুল আঁচড়িয়ে দিল এবং আমার মাথা ধুয়ে দিল। আমি আবু বাক্র [রাদি.] ও উমর [রাদি.] – এর খিলাফাতকালে লোকদেরকে অনুরূপ ফাতাওয়া দিতাম। হজ্জের মৌসুম আগত, এ সময় এক ব্যক্তি আমার নিকট এসে বলিল, আপনি হয়ত জানেন না , আমীরুল মুমিনীন [উমর] হজ্জের ব্যাপারে কী নতুন বিধান প্রবর্তন করিয়াছেন। আমি বললাম, হে জনগণ! আমি যাদেরকে কতগুলো বিষয় সম্পর্কে যে ফাতাওয়া দিয়েছি- তারা যেন অপেক্ষা করে। কারণ, ইতোমধ্যেই আমীরুল মুমিনীন তোমাদের মধ্যে এসে পৌঁছবেন। তোমরা তাহাঁর অনুসরণ করিবে। তিনি [উমর] এসে পৌঁছলে আমি বললাম, হে আমীরুল মুমিনীন! আপনি হজ্জের ব্যাপারে নতুন কী বিধান দিচ্ছেন? তিনি বলিলেন, আমরা যদি আল্লাহর কিতাব আঁকড়ে ধরি, তবে আল্লাহ বলেনঃ
وَأَتِمُّوا الْحَجَّ وَالْعُمْرَةَ لِلَّهِ
“তোমরা আল্লাহর উদ্দেশে হজ্জ ও উমরাহ্ পূর্ণ কর”- [সুরা আল বাক্বারাহ্ ২ : ১৯৬]। আর আমরা যদি আমাদের নবী [সাঃআঃ]- এর সুন্নাতের অনুসরণ করি, তাহলে নবী [সাঃআঃ] সাথে করে নিয়ে আসা পশু যবাহ না করা পর্যন্ত ইহরাম খুলতেন না।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৮২৫, ইসলামিক সেন্টার- ২৮২৪]
২৮৫০. আবু মূসা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাকে ইয়ামানে প্রেরণ করেছিলেন। তিনি যে বছর হজ্জ করেছিলেন, আমি সে বছর [হজ্জ] এসে তাহাঁর সঙ্গে মিলিত হলাম। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাকে বলিলেন, হে আবু মূসা! ইহরাম বাঁধার সময় তুমি কী নিয়্যাত করেছিলে? আমি বললাম, লাব্বায়কা! আমার ইহরাম নবী [সাঃআঃ]- এর ইহরামের অনুরূপ। তিনি জিজ্ঞেস করিলেন, তুমি কি সাথে করে কুরবানীর পশু এনেছ? আমি বললাম, না। তিনি বললেনঃ তাহলে যাও, বায়তুল্লাহ-এর ত্বওয়াফ কর, সাফা-মারওয়ার মাঝে সাঈ কর, অতঃপর ইহরাম খুলে ফেল। … হাদীসের অবশিষ্ট বর্ণনা পূর্বোক্ত শুবাহ্ ও সুফ্ইয়ানের হাদীস দুটির অনুরূপ।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৮২৬, ইসলামিক সেন্টার- ২৮২৫]
২৮৫১. আবু মূসা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি তামাত্তু হজ্জের অনুকূলে ফাতাওয়া দিতেন। এক ব্যক্তি তাঁকে বলিল, আপনি আপনার ফাতাওয়া স্থগিত রাখুন। আপনি হয়ত জানেন না, আপনার পরে আমীরুল মুমিনীন হজ্জের ব্যাপারে কী বিধান প্রবর্তন করিয়াছেন। পরে তিনি [আবু মূসা] তাহাঁর সাথে সাক্ষাৎ করিলেন এবং [এ ব্যাপারে] তাঁকে জিজ্ঞেস করিলেন। উমর [রাদি.] বলিলেন, আমি অবশ্যই জানি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ও তাহাঁর সাহাবীগণ [তামাত্তু] করিয়াছেন। কিন্তু আমি এটা পছন্দ করি না যে, বিবাহিত লোকেরা গাছের ছায়ায় স্ত্রীদের সাথে যৌন সঙ্গম করিবে, অতঃপর এমন অবস্থায় হজ্জের জন্য রওনা হইবে যে, তাদের মাথার চুল দিয়ে পানি টপকে পড়ছে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৮২৭, ইসলামিক সেন্টার- ২৮২৬]
২৩. অধ্যায়ঃ তামাত্তু হজ্জের বৈধতা
২৮৫২. ক্বাতাদাহ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আবদুল্লাহ ইবনি শাক্বীক্ব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেছেন, উসমান [রাদি.] তামাত্তু হজ্জ করিতে নিষেধ করিতেন। আর আলী [রাদি.] তামাত্তু হজ্জ করার নির্দেশ দিতেন। অতএব উসামান [রাদি.] আলী [রাদি.] –এর সঙ্গে কথা বলিলেন। অতঃপর আলী [রাদি.] বলিলেন, আপনি অবশ্যই জানেন, আমরা নিশ্চিত রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে তামাত্তু হজ্জ করেছি। উসমান [রাদি.] বলিলেন, হ্যাঁ; কিন্তু আমরা তখন আতঙ্কিত ছিলাম।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৮২৮, ইসলামিক সেন্টার- ২৮২৭]
২৮৫৩. শুবাহ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
এ সানাদে অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৮২৯, ইসলামিক সেন্টার- ২৮২৮]
২৮৫৪. সাঈদ ইবনি মুসাইয়্যাব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আলী [রাদি.] ও উসমান [রাদি.] উসফান নামক স্থানে একত্রে হলেন। উসমান [রাদি.] তামাত্তু ও উমরাহ্ করিতে নিষেধ করিতেন। আলী [রাদি.] বলিলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যে কাজ করিয়াছেন, আপনি তা নিষেধ করিয়াছেন- এতে আপনার উদ্দেশ্য কী? উসমান [রাদি.] বলিলেন, আপনি আমাকে আপনার কথা থেকে রেহাই দিন। আলী [রাদি.] বলিলেন, আমি আপনাকে ছাড়তে পারি না। আলী [রাদি.] যখন এ অবস্থা দেখলেন, তিনি একত্রে হজ্জ ও উমরাহ্ উভয়ের ইহরাম বাঁধলেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৮৩০, ইসলামিক সেন্টার- ২৮২৯]
২৮৫৫. আবু যার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, তামাত্তু হজ্জ মুহাম্মাদ-এর সাহাবীগণের জন্যই বিশেষভাবে নির্দিষ্ট ছিল।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৮৩১, ইসলামিক সেন্টার- ২৮৩০]
২৮৫৬. আবু যার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, তামাত্তু হজ্জ আমাদের জন্য একটি বিশেষ সুবিধা হিসেবে অনুমোদিত ছিল।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৮৩২, ইসলামিক সেন্টার- ২৮৩১]
২৮৫৭. আবু যার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
দুটি মুতআহ কেবল আমাদের যুগের জন্যই নির্দিষ্ট ছিল। অর্থাৎ মুতআহ্ বিবাহ ও তামাত্তু হজ্জ।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৮৩৩, ইসলামিক সেন্টার- ২৮৩২]
২৮৫৮. আবদুর রহমান ইবনি আবু শাসা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি ইব্রাহীম নাখাঈ ও ইব্রাহীম আত্ তায়মীর নিকট এলাম এবং বললাম, আমি এ বছর হজ্জ ও উমরাহ্ একত্রে করিতে চাই। ইব্রাহীম নাখাঈ বলিলেন, কিন্তু তোমার পিতা তো এরূপ সংকল্প করেননি। কুতায়বাহ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি].. ইব্রাহীম আত্ তায়মী তার পিতার সূত্রে বর্ণনা করেন যে, তিনি [পিতা] রাবাযাহ্ নামক স্থানে আবু যার [রাদি.]-এর নিকট দিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন তিনি তার সামনে এ প্রসঙ্গ উপস্থাপন করিলেন। আবু যার [রাদি.] বলিলেন, তা আমাদের জন্য [একটা সুবিধা স্বরূপ] নির্দিষ্ট ছিল, তোমাদের জন্য নয়।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৮৩৪, ইসলামিক সেন্টার- ২৮৩৩]
২৮৫৯. গুনায়ম ইবনি ক্বায়স [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি সাদ ইবনি আবু ওয়াক্কাস [রাদি.]-কে তামাত্তু হজ্জ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বলিলেন, আমরা উমরাহ্ আদায় করেছি। এটা সে সময়কার কথা যখন তিনি [আমীর মুআবিয়াহ্] কাফির ছিলেন এবং মাক্কার বাড়িতে বসবাস করিতেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৮৩৫, ইসলামিক সেন্টার- ২৮৩৪]
২৮৬০. সুলায়মান আত্ তায়মী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
উক্ত সানাদে বর্ণনা করেন। তিনি এ রিওয়ায়াতে মুআবিয়াহ্ [রাদি.]-এর নাম উল্লেখ করিয়াছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৮৩৬, ইসলামিক সেন্টার- ২৮৩৫]
২৮৬১. sসুলায়মান আত্ তায়মী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
উক্ত সূত্রে উভয়ের হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে এবং সুফ্ইয়ানের হাদীসে তামাত্তু হজ্জের উল্লেখ রয়েছে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৮৩৭, ইসলামিক সেন্টার- ২৮৩৬]
২৮৬২. মুত্বাররিফ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, ইমরান ইবনি হুসায়ন [রাদি.] আমাকে বলিলেন, আমি আজ তোমাকে একটি হাদীস বলব, পরবর্তী সময়ে আল্লাহ তাআলা এর দ্বারা তোমাকে উপকৃত করবেন। জেনে রাখ, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর পরিবারের কয়েকজন সদস্যকে যিলহাজ্জ্ব মাসের দশ তারিখের মধ্যে উমরাহ্ করিয়েছিলেন। এটা রহিত করে কোন আয়াত নাযিল হয়নি এবং রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর ইন্তিকাল পর্যন্ত তা করিতে নিষেধ করেননি। পরে লোকেরা নিজ নিজ ইচ্ছানুযায়ী মত পোষণ করে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৮৩৮, ইসলামিক সেন্টার- ২৮৩৭]
২৮৬৩. আল জুরায়রী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
উক্ত সূত্রে বর্ণনা করিয়াছেন। তবে হাতিম তার রিওয়ায়াতে বলেছেন, “এক ব্যক্তি অর্থাৎ উমর [রাদি.] তাহাঁর নিজ ইচ্ছানুযায়ী মত পোষণ করেন”।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৮৩৯, ইসলামিক সেন্টার- ২৮৩৮]
২৮৬৪. মুত্বাররিফ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, ইমরান ইবনি হুসায়ন [রাদি.] আমাকে বলিলেন, আমি তোমাকে একটি হাদীস শুনাব। আশা করি, আল্লাহ তোমাকে এর দ্বারা উপকৃত করবেন। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] হজ্জ ও উমরাহ্ একত্রে আদায় করিয়াছেন। তিনি মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত এরূপ করিতে নিষেধ করেননি এবং তা হারাম বলে কুরআনের কোন আয়াতও নাযিল হয়নি। [রোগের কারণে] তপ্ত লোহার দাগ গ্রহণ করার পূর্ব পর্যন্ত আমাকে [ফেরেশতাগণ কর্তৃক] সালাম দেয়া অব্যাহত ছিল। আমি দাগ গ্রহণ করলে সালাম দেয়া বন্ধ হয়ে যায়। আবার যখন দাগ দেয়া বন্ধ করলাম, পুনরায় সালাম দেয়া শুরু হয়।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৮৪০, ইসলামিক সেন্টার- ২৮৩৯
২৮৬৫. মুত্বাররিফ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, ইমরান ইবনি হুসায়ন [রাদি.] আমাকে বলিলেন.. পরবর্তী অংশ উপরোক্ত মুআয বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৮৪১, ইসলামিক সেন্টার- ২৮৪০]
২৮৬৬. মুত্বাররিফ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, ইমরান ইবনি হুসায়ন [রাদি.] মৃত্যুকালীন রোগে আমাকে ডেকে পাঠান। তিনি বলিলেন, আমি তোমাকে কয়েকটি হাদীস বলব, আশা করি আল্লাহ তাআলা আমার পরে তোমাকে এর দ্বারা উপকৃত করবেন। আমি বেঁচে থাকলে তুমি আমার সূত্রে বর্ণনা করা গোপন রাখবে। আর আমি মারা গেলে তুমি চাইলে তা বর্ণনা করিতে পার। আমাকে সালাম করা হতো। জেনে রাখ, আল্লাহর নবী [সাঃআঃ] হজ্জ ও উমরাহ্ একত্রে আদায় করিয়াছেন। অতঃপর এ বিষয়ে কোন আয়াতও নাযিল হয়নি এবং নবী [সাঃআঃ] ও তা নিষিদ্ধ করেননি। এক ব্যক্তি [উমর] এ বিষয়ে যা ইচ্ছা করিলেন, তা বলিলেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৮৪২, ইসলামিক সেন্টার- ২৮৪১]
২৮৬৭. ইমরান ইবনি হুসায়ন [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, জেনে রাখ, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] হজ্জ ও উমরাহ্ একত্রে [একই ইহরামে] আদায় করিয়াছেন। এরপর এ বিষয়ে কোন আয়াত নাযিল হয়নি এবং রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-ও অনুরূপ করিতে আমাদেরকে নিষেধ করেননি। এরপর এক ব্যক্তি এ বিষয়ে নিজ ইচ্ছামত যা বলার, তা বলিলেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৮৪৩, ইসলামিক সেন্টার- ২৮৪২]
২৮৬৮. ইমরান ইবনি হুসায়ন [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমরা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে তামাত্তু হজ্জ করেছি। এ বিষয়ে কুরআনে কোন আয়াত নাযিল হয়নি। এক ব্যক্তি ইচ্ছামত যা বলার, তাই বলিলেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৮৪৪, ইসলামিক সেন্টার- ২৮৪৩]
২৮৬৯. ইমরান ইবনি হুসায়ন [রাদি.]-এর সূত্র হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] তামাত্তু হজ্জ আদায় করিয়াছেন এবং আমরাও তাহাঁর সঙ্গে তামাত্তু হজ্জ করেছি।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৮৪৫, ইসলামিক সেন্টার- ২৮৪৪]
২৮৭০. ইমরান ইবনি হুসায়ন [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর কিতাবে মুত্আহ অর্থাৎ তামাত্তু হজ্জ সম্পর্কে আয়াত নাযিল হয়েছে। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদের তা করার নির্দেশ দিয়েছেন। অতঃপর তামাত্তু হজ্জ সম্পর্কিত আয়াত রহিতকারী কোন আয়াত নাযিল হয়নি এবং রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-ও ইন্তিকালের পূর্ব পর্যন্ত তা করিতে নিষেধ করেননি। পরবর্তীকালে এক ব্যক্তি নিজ ইচ্ছামত যা বলার, তাই বলেছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৮৪৬, ইসলামিক সেন্টার- ২৮৪৫]
২৮৭১. ইমরান ইবনি হুসায়ন [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
অনুরূপ বর্ণনা করেন। অবশ্য তিনি বলেছেন, “আমরা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে হজ্জ করেছি।” তিনি এরূপ বলেননি- “রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদের তা করার নির্দেশ দিয়েছেন”।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৮৪৭, ইসলামিক সেন্টার- ২৮৪৬]
২৪. অধ্যায়ঃ তামাত্তু হজ্জ পালনকারীর জন্য কুরবানী ওয়াজিব; যে ব্যক্তি এর সামর্থ্য না রাখে, সে হজ্জের অনুষ্ঠান চলাকালে তিনদিন এবং বাড়িতে প্রত্যাবর্তনের পরে সাতদিন সওম পালন করিবে
২৮৭২. আবদুল্লাহ ইবনি উমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
বিদায় হাজ্জে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তামাত্তু করিয়াছেন, প্রথমে উমরাহ্ ও পরে হজ্জ করিয়াছেন এবং পশু কুরবানী করিয়াছেন। তিনি যুল হুলায়ফাহ্ থেকে সাথে করে কুরবানীর পশু নিয়েছিলেন। এখান থেকে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] প্রথমে উমরার, অতঃপর হজ্জের তালবিয়াহ্ পাঠ শুরু করেন। লোকেরাও রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর অনুসরণে হজ্জের সাথে উমরাহ্ যুক্ত করে তামাত্তু করেছে। কতক লোকেরা কুরবানীর পশু সাথে নিয়েছিল, আর কতকের কুরবানীর পশু ছিল না। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] মাক্কাতে উপনীত হয়ে লোকদের উদ্দেশে বলিলেন, তোমাদের মধ্যে যাদের সাথে কুরবানীর পশু আছে, হজ্জ শেষ না করা পর্যন্ত তাদের জন্য [সাময়িকভাবে] নিষিদ্ধ কোন জিনিস হালাল হইবে না। আর তোমাদের মধ্যে যাদের সাথে কুরবানীর পশু নেই- তার যেন বায়তুল্লাহ-এর ত্বওয়াফ ও সাফা-মারওয়ার মাঝে সাঈ করে মাথার চুল খাটো করার পর ইহরাম খুলে ফেলে। অতঃপর তারা [৮ যিলহজ্জ] পুনরায় হজ্জের জন্য ইহরাম বাঁধবে এবং [নির্দিষ্ট দিনে] কুরবানী করিবে। কোন ব্যক্তি বুরবানীর পশু না পেলে হজ্জ চলাকালীন সময়ে তিনদিন এবং বাড়িতে ফেরার পর সাতদিন সওম পালন করিবে।
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] মাক্কায় পৌঁছে প্রথমে রুকনে [হাজারে আসওয়াদ] স্পর্শ করিলেন, অতঃপর বায়তুল্লাহ-এর ত্বওয়াফ করিলেন- তিন চক্কর সামান্য দ্রুতগতিতে এবং চার চক্কর ধীরগতিতে। বায়তুল্লাহ-এর ত্বওয়াফ সমাপ্ত করে তিনি মাক্বামে ইব্রাহীমের নিকট দু রাকআত নামাজ আদায় করিলেন। অতঃপর সালাম ফিরিয়ে নামাজ শেষ করিলেন। অতঃপর তিনি সাফা পাহাড়ে এলেন এবং সাফা-মারওয়াহ্ পাহাড়দ্বয়ের মাঝে সাতবার সাঈ করিলেন। এরপর তিনি কোন জিনিস হালাল করেননি- যা হারাম হয়েছিল [ইহরামের কারণে অর্থাৎ তিনি ইহরামমুক্ত হননি] যে পর্যন্ত না হজ্জ সমাপন করেন এবং কুরবানীর দিন নিজের পশু কুরবানী না করেন এবং কাবাহ্ ঘর-এর ত্বওয়াফ করিয়াছেন। অতঃপর যে সব জিনিস হারাম ছিল, তা তাহাঁর জন্য হালাল হয়ে গেল [অর্থাৎ তিনি ইহরাম খুললেন] আর যেসব লোক সাথে করে কুরবানীর পশু এনেছিল, তারাও রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর অনুরূপ করেছিল।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৮৪৮, ইসলামিক সেন্টার- ২৮৪৭]
২৮৭৩. উরওয়াহ্ ইবনি যুবায়র [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
নবী [সাঃআঃ]-এর সহধর্মিণী আয়িশা [রাদি.] তাকে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর তামাত্তু হজ্জ পালন এবং তাহাঁর সাথের লোকদের তামাত্তু হজ্জ সম্পাদন সম্পর্কে অবহিত করিয়াছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৮৪৯, ইসলামিক সেন্টার- ২৮৪৮]
Leave a Reply