পুরুষ ও ঋতুবতী নারীর তাওয়াফের নিয়ম। যমযমের পানি

পুরুষ ও ঋতুবতী নারীর তাওয়াফের নিয়ম। যমযমের পানি

পুরুষ ও ঋতুবতী নারীর তাওয়াফের নিয়ম । যমযমের পানি >> বুখারী শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন

পর্বঃ ২৫, হজ্জ, অধ্যায়ঃ (৬৩-৮১)=১৯টি

২৫/৬৩. অধ্যায়ঃ মক্কায় আগমন করে গৃহে প্রত্যাবর্তনের পূর্বে বাইতুল্লাহ তাওয়াফ করা। অতঃপর দু রাকআত সালাত আদায় করে সাফার দিকে (সায়ী করিতে) যাওয়া।
২৫/৬৪. অধ্যায়ঃ পুরুষের সঙ্গে নারীদের তাওয়াফ করা।
২৫/৬৫. অধ্যায়ঃ তাওয়াফ করার সময় কথাবার্তা বলা।
২৫/৬৬. অধ্যায়ঃ তাওয়াফের সময় রশি দিয়ে কাউকে টানতে দেখলে বা অশোভণীয় কোন কিছু দেখলে তা হইতে বাধা প্রদান করিবে।
২৫/৬৭. অধ্যায়ঃ উলঙ্গ হয়ে বাইতুল্লাহর তাওয়াফ করিবে না এবং কোন মুশরিক হজ্জ করিবে না।
২৫/৬৮. অধ্যায়ঃ তাওয়াফ আরম্ভ করার পর থেমে গেলে।
২৫/৬৯. অধ্যায়ঃ নাবী (সাঃআঃ) তাওয়াফের সাত চক্কর পর দু রাকআত সালাত আদায় করিয়াছেন।
২৫/৭০. অধ্যায়ঃ প্রথমবার তাওয়াফ (তাওয়াফে কুদুম)-এর পর আরাফাতে গিয়ে সেখান থেকে প্রত্যাবর্তন না করা পর্যন্ত বাইতুল্লাহর নিকটবর্তী না হওয়া (তাওয়াফ না করা)।
২৫/৭১. অধ্যায়ঃ তাওয়াফের দু রাকআত সালাত মাসজিদুল হারামের বাইরে আদায় করা।
২৫/৭২. অধ্যায়ঃ তাওয়াফের দু রাকআত সালাত মাকামে ইব্রাহীমের পশ্চাতে আদায় করা।
২৫/৭৩. অধ্যায়ঃ ফজর ও আসর-এর (সালাতের) পর তাওয়াফ করা।
২৫/৭৪. অধ্যায়ঃ অসুস্থ ব্যক্তির আরোহী হয়ে তাওয়াফ করা।
২৫/৭৫. অধ্যায়ঃ হাজীদেরকে পানি পান করানো।
২৫/৭৬. অধ্যায়ঃ যমযম সম্পর্কে যা কিছু বর্ণিত হয়েছে।
২৫/৭৭. অধ্যায়ঃ কিরান হজ্জকারীর তাওয়াফ।
২৫/৭৮. অধ্যায়ঃ অযূ সহকারে তাওয়াফ করা।
২৫/৭৯. অধ্যায়ঃ সাফা ও মারওয়া মাঝে সায়ী করা অবশ্য কর্তব্য এবং এ দুটিকে আল্লাহুর নিদর্শন বানানো হয়েছে।
২৫/৮০. অধ্যায়ঃ সাফা ও মারওয়ার মধ্যে সা”ঈ করা প্রসঙ্গে যা কিছু বর্ণিত হয়েছে।
২৫/৮১. অধ্যায়ঃ ঋতুবতী নারীর বাইতুল্লাহর তাওয়াফ ছাড়া হজ্জের অন্য সকল কার্য সম্পাদন করা এবং অযূ ব্যতীত সাফা ও মারওয়ার মাঝে সাঈ করা।

২৫/৬৩. অধ্যায়ঃ মক্কায় আগমন করে গৃহে প্রত্যাবর্তনের পূর্বে বাইতুল্লাহ তাওয়াফ করা। অতঃপর দু রাকআত সালাত আদায় করে সাফার দিকে (সায়ী করিতে) যাওয়া।

১৬১৪. আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ) মক্কায় উপনীত হয়ে সর্বপ্রথম অযূ করে তাওয়াফ সম্পন্ন করেন। (রাবী) উরওয়াহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-এর এই তাওয়াফটি উমরাহর তাওয়াফ ছিল না। (তিনি আরো বলেন) অতঃপর আবু বকর ও উমর (রাদি.) অনুরূপভাবে হজ্জ করিয়াছেন। এরপর আমার পিতা যুবাইর (রাদি.)-এর সাথে আমি হজ্জ করেছি তাতেও দেখেছি যে, সর্বপ্রথম তিনি তাওয়াফ করিয়াছেন। এরপর মুহাজির, আনসার সকল সাহাবা (রাদি.)-কে এরূপ করিতে দেখেছি। আমার মা আমাকে জানিয়েছেন যে, তিনি, তাহাঁর বোন এবং যুবাইর ও অমুক অমুক ব্যক্তি উমরাহর ইহরাম বেঁধেছেন, যখন তাঁরা তাওয়াফ সমাধা করিয়াছেন, হালাল হয়ে গেছেন।

(১৬১৪=১৬৪১) (১৬১৫=১৬৪২, ১৭৯৬) (আঃপ্রঃ ১৫০৯, ইঃফাঃ ১৫১৫)

১৬১৫. আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ) মক্কায় উপনীত হয়ে সর্বপ্রথম অযূ করে তাওয়াফ সম্পন্ন করেন। (রাবী) উরওয়াহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-এর এই তাওয়াফটি উমরাহর তাওয়াফ ছিল না। (তিনি আরো বলেন) অতঃপর আবু বকর ও উমর (রাদি.) অনুরূপভাবে হজ্জ করিয়াছেন। এরপর আমার পিতা যুবাইর (রাদি.)-এর সাথে আমি হজ্জ করেছি তাতেও দেখেছি যে, সর্বপ্রথম তিনি তাওয়াফ করিয়াছেন। এরপর মুহাজির, আনসার সকল সাহাবা (রাদি.)-কে এরূপ করিতে দেখেছি। আমার মা আমাকে জানিয়েছেন যে, তিনি, তাহাঁর বোন এবং যুবাইর ও অমুক অমুক ব্যক্তি উমরাহর ইহরাম বেঁধেছেন, যখন তাঁরা তাওয়াফ সমাধা করিয়াছেন, হালাল হয়ে গেছেন।

(১৬১৪=১৬৪১). (১৬১৫=১৬৪২, ১৭৯৬) (আঃপ্রঃ ১৫০৯, ইঃফাঃ ১৫১৫)

১৬১৬. আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) মক্কায় উপনীত হয়ে হজ্জ বা উমরাহ উভয় অবস্থায় সর্বপ্রথম যে তাওয়াফ করিতেন, তার প্রথম তিন চক্করে রামল করিতেন এবং পরবর্তী চার চক্করে স্বাভাবিকভাবে হেঁটে চলতেন। তাওয়াফ শেষে দু রাকআত সালাত আদায় করে সাফা ও মারওয়ায় সাঈ করিতেন।

(১৬০৩)

(আঃপ্রঃ ১৫১০, ইঃফাঃ ১৫১৬).

১৬১৭. আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ) বায়তুল্লাহ পৌঁছে প্রথম তাওয়াফ করার সময় তিন চক্করে রামল করেতেন এবং পরবর্তী চার চক্করে স্বাভাবিক গতিতে হেঁটে চলতেন। সাফা ও মারওয়ায় সাঈ করার সময় উভয় টিলার মধ্যবর্তী নিচু স্থানটুকু দ্রুতগতিতে চলতেন। (১৬০৩)

(আঃপ্রঃ ১৫১১, ইঃফাঃ ১৫১৭)

২৫/৬৪. অধ্যায়ঃ পুরুষের সঙ্গে নারীদের তাওয়াফ করা।

১৬১৮. আত্বা (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেছেন

, ইবনু হিশাম (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) যখন মহিলাদের পুরুষের সঙ্গে তাওয়াফ করিতে নিষেধ করেন, তখন আত্বা (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) তাঁকে বলিলেন, আপনি তাদের কী করে নিষেধ করিয়াছেন, অথচ নাবী সহধর্মিণীগন পুরুষদের সঙ্গে তাওয়াফ করিয়াছেন? [ইবনু জুরাইজ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন] আমি তাঁকে প্রশ্ন করলাম, তা কি পর্দার আয়াত নাযিল হওয়ার পরে, না পূর্বে? তিনি [আত্বা (রহমাতুল্লাহি আলাইহি)] বলিলেন, হ্যাঁ আমার জিবনের কসম, আমি পর্দার আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার পরের কথাই বলছি। আমি জানতে চাইলাম পুরুষগন মহিলাদের সাথে মিলে কিভাবে তাওয়াফ করিতেন? তিনি বলিলেন, পুরুষগন মহিলাদের সাথে মিলে তাওয়াফ করিতেন না। আয়েশা (রাদি.) বরং পুরুষদের পাশ কাটিয়ে তাওয়াফ করিতেন, তাদের মাঝে মিশে যেতেন না। এক মহিলা আয়েশা (রাদি.) কে বলিলেন চলুন, হে উম্মুল মুমিনীন! আমরা তাওয়াফ করে আসি। তিনি বলিলেন, “তোমার মনে চাইলে তুমি যাও” আর তিনি যেতে অস্বীকার করিলেন। তাঁরা রাতের বেলা পর্দা করে বের হয়ে (সম্পূর্ণ না মিশে) পুরুষদের পাশাপাশি থেকে তাওয়াফ করিতেন। উম্মুল মুমিনীনগন বায়তুল্লাহর তাওয়াফ করিতে চাইলে সকল পুরুষ বের করে না দেয়া পর্যন্ত তাঁরা দাঁড়িয়ে থাকতেন। আত্বা (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেনহ, ঊবাইদ ইবনু উমাইর এবং আমি আয়েশা (রাদি.) এর কাছে গেলাম, তিনি তখন “সবীর” পর্বতে অবপাথান করছিলেন।? [ইবনু জুরাইজ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন] আমি বললাম, তখন তিনি কি দিয়ে পর্দা করছিলেন? আত্বা (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলিলেন, তখন তিনি পর্দা ঝুলানো তুর্কী তাঁবুতে ছিলেন, এছাড়া তাহাঁর ও আমাদের মাঝে অন্য কোন কিছু ছিলনা। (অকস্মাৎ দৃষ্টি পড়ায়) আমি তাহাঁর গায়ে গোলাপি রং-এর চাদর দেখিতে পেলাম।

[ইমাম বুখারী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন] আমাকে আমর ইবনু আলী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) থেকে ইবনু জুরাইজ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

(আঃপ্রঃ অনুচ্ছেদ ৬৪, ইঃফাঃ পরিচ্ছেদ ১০২৪)

১৬১৯. নাবী সহধর্মিণী উম্মু সালামাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-এর নিকট অসুস্থতার কথা জানালে তিনি বললেনঃ বাহনে আরোহণ করে মানুষের পেছনে পেছনে থেকে তাওয়াফ কর। আমি মানুষের পেছনে পেছনে থেকে তাওয়াফ করছিলাম, তখন আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) কাবা ঘরের পার্শ্বে সালাত আদায় করছিলেন এবং এতে তিনি (আ-রবি) এই (সুরাটি) তিলাওয়াত করেছিলেন। (৪৬৪)

(আঃপ্রঃ ১৫১২, ইঃফাঃ ১৫১৮)

২৫/৬৫. অধ্যায়ঃ তাওয়াফ করার সময় কথাবার্তা বলা।

১৬২০. ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ) বায়তুল্লাহর তাওয়াফের সময় এক ব্যক্তির নিকট দিয়ে অতিক্রম করছিলেন, সে চামড়ার ফিতা বা সূতা অথবা অন্য কিছু দ্বারা আপন হাত অপর এক ব্যক্তির সাথে বেঁধে দিয়েছিল। নাবী (সাঃআঃ) নিজ হাতে তাহাঁর বাঁধন ছিন্ন করে দিয়ে বললেনঃ হাত ধরে টেনে নাও।

(১৬২১, ৬৭০২, ৬৭০৩) (আঃপ্রঃ ১৫১৩, ইঃফাঃ ১৫১৯)

২৫/৬৬. অধ্যায়ঃ তাওয়াফের সময় রশি দিয়ে কাউকে টানতে দেখলে বা অশোভণীয় কোন কিছু দেখলে তা হইতে বাধা প্রদান করিবে।

১৬২১. ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ) এক ব্যক্তিকে কাবা ঘরে তাওয়াফ করিতে দেখিতে পেলেন এ অবস্থায় যে, চাবুকের ফিতা বা অন্য কিছু দিয়ে (তাকে টেনে নেয়া হচ্ছে)। তখন তিনি টা বিচ্ছিন্ন করে দিলেন। (১৬২০)

(আঃপ্রঃ ১৫১৪, ইঃফাঃ ১৫২০)

২৫/৬৭. অধ্যায়ঃ উলঙ্গ হয়ে বাইতুল্লাহর তাওয়াফ করিবে না এবং কোন মুশরিক হজ্জ করিবে না।

১৬২২. আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, বিদায় হজ্জের পুর্বে যে হজ্জে আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) আবু বকর (রাদি.)-কে আমীর নিযুক্ত করেন, সে হজ্জে কুরবানীর দিন [আবু বকর (রাদি.)] আমাকে একদল লোকের সঙ্গে পাঠালেন, যারা লোকদের কাছে ঘোষনা করিবে যে, এ বছরের পর হইতে কোন মুশরিক হজ্জ করিবে না এবং উলঙ্গ হয়ে বায়তুল্লাহর তাওয়াফ করিবে না।

(৩৬৯, মুসলিম ১৫/৭৭, হাদীস ১৩৪৭, আহমাদ ৪) (আঃপ্রঃ ১৫১৫, ইঃফাঃ ১৫২১)

২৫/৬৮. অধ্যায়ঃ তাওয়াফ আরম্ভ করার পর থেমে গেলে।

আত্বা (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, কেও তাওয়াফ করার সময় সালাতের ইক্বামাত দেয়া হলে অথবা কাউকে তার স্থান হইতে হটিয়ে দেয়া হলে সালামের পর ঐ স্থান হইতে তাওয়াফ আবার শুরু করিবে যেখান হইতে তা বন্ধ হয়েছিল। ইবনু উমর ও আবদুর রাহমান ইবনু আবু বাকার (রাদি.) হইতেও অনুরূপ উল্লেখ রয়েছে।

২৫/৬৯. অধ্যায়ঃ নাবী (সাঃআঃ) তাওয়াফের সাত চক্কর পর দু রাকআত সালাত আদায় করিয়াছেন।

নাফি (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, ইবনু উমর (রাদি.) প্রতি সাত চক্কর শেষে দু রাকআত সালাত আদায় করিতেন। ইসমাঈল ইবনু উমাইয়া (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, আমি যুহরীকে বললাম, আত্বা (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, তাওয়াফের দু রাকআতের ক্ষেত্রে ফারয্‌ সালাত আদায় করে নিলে তা যথেষ্ট হইবে। তখন যুহরী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলিলেন, আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-এর তরীকা অবলম্বন করাই উত্তম, যতবার নাবী (সাঃআঃ) তাওয়াফের সাত চক্কর পূর্ণ করিয়াছেন, ততবার তার পর দু রাকআত সালাত আদায় করিয়াছেন।

১৬২৩. আমর (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা ইবনু উমর (রাদি.)-কে জিজ্জেস করলাম, উমরাহকারীর জন্য সাফা ও মারওয়া সায়ী করার পূর্বে স্ত্রী সহবাস বৈধ হইবে কি? তিনি বলিলেন, আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) মক্কায় উপনীত হয়ে সাত চক্করে বাইতুল্লাহর তাওয়াফ সমাপ্ত করে মাকামে ইব্রাহীমের পিছনে দু রাকআত সালাত আদায় করেন, অতঃপর সাফা ও মারওয়া সায়ী করেন। এরপর ইবনু উমর (রাদি.) তিলাওয়াত করেন, “তোমাদের জন্য আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-এর মধ্যে উত্তম আদর্শ রয়েছে”-(আল-আহযাবঃ ২৩)। (৩৯৫)

(আঃপ্রঃ, ইঃফাঃ ১৫২২)

১৬২৪. (রাবী) আমর (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

আমি জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাদি.)-কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, সাফা ও মারওয়া সায়ী করার পূর্বে স্ত্রী সহবাস বৈধ নয়। (৩৯৬)

(আঃপ্রঃ ১৫১৬, ইঃফাঃ ১৫২২ শেষাংশ)

২৫/৭০. অধ্যায়ঃ প্রথমবার তাওয়াফ (তাওয়াফে কুদুম)-এর পর আরাফাতে গিয়ে সেখান থেকে প্রত্যাবর্তন না করা পর্যন্ত বাইতুল্লাহর নিকটবর্তী না হওয়া (তাওয়াফ না করা)।

১৬২৫. আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) মক্কায় উপনীত হয়ে সাত চক্করে তাওয়াফ করে সাফা ও মারওয়া সাঈ করেন, এরপর (প্রথম) তাওয়াফের পরে আরাফাহ হইতে ফিরে আসার পূর্ব পর্যন্ত বাইতুল্লাহর নিকটবর্তী হননি। (তাওয়াফ করেননি)। (১৫৪৫)

(আঃপ্রঃ ১৫১৭, ইঃফাঃ ১৫২৩)

২৫/৭১. অধ্যায়ঃ তাওয়াফের দু রাকআত সালাত মাসজিদুল হারামের বাইরে আদায় করা।

উমর [ইবনু খাত্তাব (রাদি.)] দু রাকআত সালাত হারাম সীমানার বাইরে আদায় করিয়াছেন।

১৬২৬. উম্মু সালামাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-এর নিকট অসুস্থতার কথা জানালাম, অন্য সূত্রে মুহাম্মাদ ইবনু হারব (রহমাতুল্লাহি আলাইহি)… নাবী সহধর্মিনী উম্মু সালামাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিত যে, আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) মক্কা হইতে প্রস্থান করার ইচ্ছা করলে উম্মু সালামাহ (রাদি.) -ও মক্কা ত্যাগের ইচ্ছা ব্যক্ত করেন, অথচ তিনি (অসুস্থতার কারণে) তখনও বাইতুল্লাহ তাওয়াফ করিতে পারেননি। রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) তখন তাঁকে বললেনঃ যখন ফজরের সালাতের ইক্বামাত দেয়া হইবে আর লোকেরা সালাত আদায় করিতে থাকবে, তখন তোমরা উটে আরোহণ করে তুমি তাওয়াফ আদায় করে নিবে। তিনি তাই করিলেন। এরপর (তাওয়াফের) সালাত আদায় করার পূর্বেই মক্কা ছেড়ে বেরিয়ে গেলেন। (৪৬৪)

(আঃপ্রঃ ১৫১৮, ইঃফাঃ ১৫২৪)

২৫/৭২. অধ্যায়ঃ তাওয়াফের দু রাকআত সালাত মাকামে ইব্রাহীমের পশ্চাতে আদায় করা।

১৬২৭. ইবনু উমর (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) মক্কায় উপনীত হয়ে সাত চক্করে (বাইতুল্লাহর) তাওয়াফ সম্পন্ন করে মাকামে ইব্রাহীমের পিছনে দু রাকআত সালাত আদায় করিলেন। অতঃপর সাফার দিকে বেরিয়ে গেলেন। [ইবনু উমর (রাদি.) বলেন] মহান আল্লাহ বলেছেনঃ

لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِي رَسُولِ اللهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ

“নিশ্চয়ই তোমাদের জন্য আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-এর মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ”- (আল-আহযাবঃ ২৩) (৩৯৫)

(আঃপ্রঃ ১৫১৯, ইঃফাঃ ১৫২৫)

২৫/৭৩. অধ্যায়ঃ ফজর ও আসর-এর (সালাতের) পর তাওয়াফ করা।

ইবনু উমর (রাদি.) সূর্যোদয়ের পূর্বেই তাওয়াফের দুরাকআত সালাত আদায় করে নিতেন। (একদা) উমর (রাদি.) ফজরের সলাতের পর তাওয়াফ করে বাহনে আরোহণ করেন এবং তাওয়াফের দু রাকআত সালাত যু-তুওয়া (নামক স্থানে) পৌছে আদায় করেন।

১৬২৮. আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

কিছু লোক ফজরের সলাতের পর বাইতুল্লাহ তাওয়াফ করিল। অতঃপর তারা নসীহতকারীর (নসীহত শোনার জন্য) বসে গেল। অবশেষে সুর্যোদয় হলে তারা দাঁড়িয়ে (তাওয়াফের) সালাত আদায় করিল। তখন আয়েশা (রাদি.) বলিলেন, তারা বসে রইল আর যে সময়টিতে সালাত আদায় করা মাকরূহ তখন তারা সলাতে দাঁড়িয়ে গেল!

(আঃপ্রঃ ১৫২০, ইঃফাঃ ১৫২৬)

১৬২৯. আবদুল্লাহ (ইবনু উমর) (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি নাবী (সাঃআঃ) হইতে শুনিয়াছি, তিনি সূর্যোদয়ের সময় এবং সূর্যাস্থের সময় সালাত আদায় করিতে নিষেধ করিয়াছেন। (৫৮২)

(আঃপ্রঃ ১৫২১, ইঃফাঃ ১৫২৭)

১৬৩০. আবদুল আযীয ইবনু রূফাই (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি আবদুল্লাহ ইবনু যুবাইর (রাদি.)-কে ফজরের সালাতের পর তাওয়াফ করিতে এবং দু রাকআত (তাওয়াফের) সালাত আদায় করিতে দেখেছি।

(আঃপ্রঃ ১৫২২, ইঃফাঃ ১৫২৮)

১৬৩১. আবদুল আযীয (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

আমি আবদুল্লাহ ইবনু যুবাইর (রাদি.)-কে আসরের সালাতের পর দু রাকআত সালাত আদায় করিতে দেখেছি এবং তিনি বলেছেন আয়েশা (রাদি.) তাঁকে বলেছেন, নাবী (সাঃআঃ) (আসরের সালাতের পরের) এই দুরাকআত সালাত আদায় করা ব্যতীত তাহাঁর ঘরে প্রবেশ করিতেন না। (৫৯০)

(আঃপ্রঃ ১৫২২, ইঃফাঃ ১৫২৮ শেষাংশ)

২৫/৭৪. অধ্যায়ঃ অসুস্থ ব্যক্তির আরোহী হয়ে তাওয়াফ করা।

১৬৩২. ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) উটের পিঠে সওয়ার হয়ে বাইতুল্লাহ তাওয়াফ করেন, যখনই তিনি হাজরে আসওয়াদের কাছে আসতেন তখন তাহাঁর হাতের বস্তু (লাঠি) দিয়ে তার দিকে ইঙ্গিত করিতেন ও তাকবীর বলিতেন। (১৬০৭)

(আ.প্র ১৫২৩. , ইঃফাঃ ১৫২৯)

১৬৩৩. উম্মু সালামাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-এর নিকট আমার অসুস্থতার কথা জানালে তিন বললেনঃ তুমি সওয়ার হয়ে লোকদের পিছন দিক দিয়ে তাওয়াফ করে নাও। তাই আমি তাওয়াফ করছিলাম এবং আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) কাবার পাশে সালাত আদায় করছিলেন ও সুরা (আরবি) (আত-তূর) তিলাওয়াত করছিলেন। (৪৬৪)

(আঃপ্রঃ ১৫২৪, ইঃফাঃ ১৫৩০)

২৫/৭৫. অধ্যায়ঃ হাজীদেরকে পানি পান করানো।

১৬৩৪. ইবনু উমর (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আব্বাস ইবনু আবদুল মুত্তালিব (রাদি.) আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-এর নিকট হাজীদের পানি পান করানোর উদ্দেশে মিনায় অবস্থানের রাতগুলো মক্কায় কাটানোর অনুমতি চাইলে তিনি তাঁকে অনুমতি দেন।

(১৬৪৩, ১৬৪৪, ১৬৪৫, মুসলিম ১৫/৬০, হাদীস ১৩১৫, আহমাদ ৬৭০৭) (আঃপ্রঃ ১৫২৫, ইঃফাঃ ১৫৩১)

১৬৩৫. ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) পানি পান করার স্থানে এসে পানি চাইলেন, আব্বাস (রাদি.) বলিলেন, হে ফায্‌ল! তোমার মার নিকট যাও। আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-এর জন্য তার নিকট হইতে পানীয় নিয়ে এসো। নাবী (সাঃআঃ) বললেনঃ এখান হইতেই পান করান। আব্বাস (রাদি.) বলিলেন, হে আল্লাহর রাসুল! লোকেরা এই পানিতে হাত রাখে। আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) বললেনঃ এখান হইতেই দিন এবং এই পানি হইতেই পান করিলেন। এরপর যমযম কূপের নিকট এলেন। লোকেরা পানি তুলে (হাজীদের) পান করাচ্ছিল, তখন তিনি বললেনঃ তোমরা কাজ করে যাও। তোমরা নেক কাজে রত আছ। এরপর তিনি বললেনঃ তোমরা পরাভূত হয়ে যাবে এ আশঙ্কা না থাকলে আমি নিজেই নেমে (বালতির) রশি এখানে নিতাম; এ বলে তিনি আপন কাঁধের প্রতি ইঙ্গিত করেন।

(আঃপ্রঃ ১৫২৬, ইঃফাঃ ১৫৩২)

২৫/৭৬. অধ্যায়ঃ যমযম সম্পর্কে যা কিছু বর্ণিত হয়েছে।

১৬৩৬. আবু যার (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) বলেনঃ আমি মক্কায় অবস্থানকালে ঘরের ছাদ ফাঁক করা হল এবং জিবরাঈল (আঃ) অবতরণ করিলেন। এরপর তিনি আমার বক্ষ বিদারণ করিলেন এবং তা যমযমের পানি দ্বারা ধুলেন, এরপর ঈমান ও হিক্‌মতে পরিপূর্ণ একটি সোনার পেয়ালা নিয়ে এলেন এবং তা আমার বুকে ঢেলে দিয়ে জোড়া লাগিয়ে দিলেন। অতঃপর আমার হাত ধরে আমাকে নিয়ে দুনিয়ার আসমানে গেলেন এবং জিবরাঈল (আঃ) এই আসমানের তত্ত্বাবধানকারী ফেরেশ্‌তাকে বলিলেন, (দরজা) খোল। তিনি বলিলেন কে? তিনি বলিলেন, আমি জিবরাঈল।

(৩৪৯) (আঃপ্রঃ ৭৫, ইঃফাঃ অনুচ্ছেদ ১০৩৬)

১৬৩৭. ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি যমযমের পানি আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-এর নিকট পেশ করলাম। তিনি তা দাঁড়িয়ে পান করিলেন। (রাবী) আসিম বলেন, ইকরিমা (রাদি.) হলফ করে বলেছেন, নাবী (সাঃআঃ) তখন উটের পিঠে আরোহী অবস্থায়ই ছিলেন।

(৫৬১৭, মুসলিম ৩৬/১৫, হাদীস ২০২৭, আহমাদ ২৬০৮) (আঃপ্রঃ ১৫২৭, ইঃফাঃ ১৫৩৩)

২৫/৭৭. অধ্যায়ঃ কিরান হজ্জকারীর তাওয়াফ।

১৬৩৮. আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা বিদায় হজ্জে আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-এর সঙ্গে বের হলাম এবং উমরাহর ইহরাম বাঁধলাম। এরপর আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) বললেনঃ যার সাথে হাদী-এর জানোয়ার আছে সে যেন হজ্জ ও উমরাহ উভয়ের ইহরাম বেঁধে নেয়। অতঃপর উভয় কাজ সমাপ্ত না করা পর্যন্ত সে হালাল হইবে না। আমি মক্কায় উপনীত হয়ে ঋতুবতী হলাম। যখন আমরা হজ্জ সমাপ্ত করলাম, তখন নাবী (সাঃআঃ) আবদুর রাহমান (রাদি.)-এর সঙ্গে আমাকে তানঈম প্রেরণ করিলেন। এরপর আমি উমরাহ পালন করলাম। নাবী (সাঃআঃ) বললেনঃ এ হলো তোমার পূর্ববর্তী (অসমাপ্ত) উমরাহর স্থলবর্তী। ঐ হজ্জের সময় যাঁরা (কেবল) উমরাহর নিয়্যাতে ইহরাম বেঁধে এসেছিলেন, তাঁরা তাওয়াফ করে হালাল হয়ে গেলেন। এরপর তাঁরা মিনা হইতে প্রত্যাবর্তন করে দ্বিতীয়বার তাওয়াফ করেন। আর যাঁরা একসাথে উমরাহ ও হজ্জের নিয়্যাত করেছিলেন, তাঁরা একবার তাওয়াফ করিলেন। (২৯৪)

(আঃপ্রঃ ১৫২৮, ইঃফাঃ ১৫৩৪)

১৬৩৯.নাফি (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

ইবনু উমর (রাদি.) তাহাঁর ছেলে আবদুল্লাহ ইবনু আবদুল্লাহ-এর নিকট গেলেন, যখন তাহাঁর (হজ্জ যাত্রার) বাহন প্রস্তুত, তখন তাহাঁর ছেলে বলিলেন, আমার আশঙ্কা হয়। এ বছর মানুষের মধ্যে লড়াই হইবে, তারা আপনাকে কাবায় যেতে বাধা দিবে। কাজেই এবার নিবৃত্ত হওয়াটাই উত্তম। তখন ইবনু উমর (রাদি.) বলিলেন, আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) একদা রওনা হয়েছিলেন, কুরায়শ কাফিররা তাঁকে বাইতুল্লাহ যেতে বাধা দিয়েছিল। আমাকেও যদি বাইতুল্লাহ যেতে বাধা দেয়া হয়, তবে আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) যা করেছিলেন, আমিও তাই করব। “কেননা, নিশ্চয়ই তোমাদের জন্য আল্লাহর রসূলের মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ”-(আল-আযহাব ২১)। এরপর তিনি বলিলেন, তোমরা সাক্ষী থেকো, আমি উমরাহর সাথে হজ্জ-এর সংকল্প করছি। (রাবী) নাফি (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, তিনি মক্কায় উপনীত হয়ে উভয়টির জন্য মাত্র একটি তাওয়াফ করিলেন।

(১৬৪০, ১৬৯৩, ১৭০৮, ১৭২৯, ১৮০৬, ১৮০৭, ১৮০৮, ১৮১০, ১৮১২, ১৮১৩, ৪১৮৩, ৪১৮৪, ৪১৮৫, মুসলিম ১৫/২৬, হাদীস ১২৩০, আহমাদ ১৮১৩) (আঃপ্রঃ ১৫২৯, ইঃফাঃ ১৫৩৫)

১৬৪০. নাফি (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

যে বছর হাজ্জাজ ইবনু ইউসুফ আবদুল্লাহ ইবনু যুবাইর (রাদি.)-এর সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য মক্কায় আসেন, ঐ বছর ইবনু উমর (রাদি.) হজ্জের এরাদা করেন। তখন তাঁকে বলা হলো, (বিবদমান দু দল) মানুষের মধ্যে যুদ্ধ হইতে পারে। আমাদের আশঙ্কা হচ্ছে যে, আপনাকে তারা বাধা দিবে। তিনি বলিলেন, “নিশ্চয়ই তোমাদের জন্য আল্লাহর রসূলের মধ্যে উত্তম আদর্শ রয়েছে”-(আযহাবঃ ২১)। কাজেই এমন কিছু হলে আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) যা করেছিলেন আমিও তাই করব। আমি তোমাদের সাক্ষী রেখে বলছি যে, আমি উমরাহর সংকল্প করলাম। এরপর তিনি বের হলেন এবং বায়দার উঁচু অঞ্চলে পৌছার পর তিনি বলিলেন, হজ্জ ও উমরাহর বিধান একই, আমি তোমাদের সাক্ষী করে বলছি, আমি উমরাহর সঙ্গে হজ্জেরও নিয়্যাত করলাম এবং তিনি কুদায়দ হইতে ক্রয় করা একটি হাদী পাঠালেন, এর অতিরিক্ত কিছু করেননি। এরপর তিনি কুরবানী করেননি এবং ইহরামও ত্যাগ করেন নি এবং মাথা মুণ্ডন বা চুল ছাঁটা কোনটাই করেননি। অবশেষে কুরবানীর দিন এলে তিনি কুরবানী করিলেন, মাথা মুন্ডালেন। তাহাঁর অভিমত হলো, প্রথম তাওয়াফ-এর মাধ্যমেই তিনি হজ্জ ও উমরাহ উভয়ের তাওয়াফ সেরে নিয়েছেন। ইবনু উমর (রাদি.) বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) এমনই করিয়াছেন।

(১৬৩৯, মুসলিম ১৫/২৬, হাদীস ১২৩০) (আঃপ্রঃ ১৫৩০, ইঃফাঃ ১৫৩৬)

২৫/৭৮. অধ্যায়ঃ অযূ সহকারে তাওয়াফ করা।

১৬৪১. মুহাম্মদ ইবনু আবদুর রাহমান ইবনু নাওফাল কুরাশী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি উরওয়া ইবনু যুবাইর (রহমাতুল্লাহি আলাইহি)-কে নাবী (সাঃআঃ)-এর হজ্জ বিষয়ে জিজ্জেস করিলেন। তিনি বলিলেন, নাবী (সাঃআঃ)-এর হজ্জ-এর বিষয়টি আয়েশা (রাদি.) আমাকে এরূপে বর্ণনা দিয়েছেন যে, নাবী (সাঃআঃ) মক্কায় উপনীত হয়ে সর্বপ্রথম অযূ করে বাইতুল্লাহ তাওয়াফ করেন। তা উমরাহর তাওয়াফ ছিল না। পরে আবু বকর (রাদি.) হজ্জ করিয়াছেন, তিনিও হজ্জের প্রথম কাজ বাইতুল্লাহ তাওয়াফ দ্বারাই শুরু করিতেন, তা উমরাহর তাওয়াফ ছিল না। তাহাঁরপর উমর (রাদি.)-ও অনুরূপ করিতেন। এরপর উসমান (রাদি.) হজ্জ করেন। আমি তাঁকেও ( হজ্জের কাজ) বাইতুল্লাহ তাওয়াফ দ্বারাই শুরু করিতে দেখেছি, তাহাঁর এই তাওয়াফও উমরাহর তাওয়াফ ছিল না। মুআবিয়া এবং আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাদি.) (অনুরূপ করেন)। এরপর আমি আমার পিতা যুবাইর ইবনু আওয়াম (রাদি.)-এর সঙ্গে হজ্জ করলাম। তিনি বাইতুল্লাহর তাওয়াফ হইতেই শুরু করেন, আর তাহাঁর এ তাওয়াফ উমরাহর তাওয়াফ ছিল না। মুহাজির ও আনসার সাহাবীগণ (রাদি.)-কে আমি এরূপ করিতে দেখেছি। তাদের সে তাওয়াফও উমরাহর তাওয়াফ ছিল না। সবশেষে আমি আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাদি.)-কেও অনুরূপ করিতে দেখেছি। তিনিও সে তাওয়াফ উমরাহর তাওয়াফ হিসেবে করেননি। ইবনু উমর (রাদি.) তো তাঁদের নিকটেই আছেন তাহাঁর কাছে জেনে নিন না কেন? সাহাবীগণের মধ্যে যাঁরা অতীত হয়ে গেছেন তাঁদের কেউই মাসজিদে হারামে প্রবেশ করে বাইতুল্লাহর তাওয়াফ সমাধান করার পূর্বে অন্য কোন কাজ করিতেন না এবং তাওয়াফ করে ইহরাম ভঙ্গ করিতেন না। আমার মা (আসমা) ও খালা (আয়েশা) (রাদি.)-কে দেখেছি, তাঁরা উভয়ে মাসজিদুল হারামে প্রবেশ করে সর্বপ্রথম তাওয়াফ সমাধা করেন, কিন্তু তাওয়াফ করে ইহরাম ভঙ্গ করেননি। (১৬১৪)

(আঃপ্রঃ , ইঃফাঃ ১৫৩৭)

১৬৪২. বর্ণনাকারী হইতে বর্ণিতঃ

তিনি তাহাঁর বোন [আয়েশা (রাদি.) ও (আমার পিতা) যুবাইর (রাদি.) এবং অমুক অমুক উমরাহর নিয়্যাতে ইহরাম বাঁধেন। এরপর তাওয়াফ (ও সায়ী) শেষে হালাল হয়ে যান।

(১৬১৫, মুসলিম ১৫/২৯, হাদীস ১২৩৫) (আঃপ্রঃ ১৫৩১, ইঃফাঃ ১৫৩৭ শেষাংশ)

২৫/৭৯. অধ্যায়ঃ সাফা ও মারওয়া মাঝে সায়ী করা অবশ্য কর্তব্য এবং এ দুটিকে আল্লাহুর নিদর্শন বানানো হয়েছে।

১৬৪৩. উরওয়াহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি আয়েশা (রাদি.)-কে জিজ্জেস করলাম যে, মহান আল্লাহর এ বাণী সম্পর্কে আপনার অভিমত কী? “সাফা ও মারওয়া আল্লাহর নিদর্শনসমূহের অন্যতম। কাজেই যে কেও কাবা ঘরে হজ্জ বা উমরাহ সম্পন্ন করে, এ দুটির মাঝে যাতায়াত করলে তার কোন দোষ নেই”-(আল-বাকারাঃ ১৫৮)। (আমার ধারোণা যে,) সাফা-মারওয়ার মাঝে কেও সাঈ না করলে তার কোন দোষ নেই। তখন তিনি [আয়েশা (রাদি.)] বলিলেন, ওহে বোনপো! তুমি যা বললে, তা ঠিক নয়। কেননা, যা তুমি তাফসীর করলে, যদি আয়াতের মর্ম তা-ই হতো, তাহলে আয়াতের শব্দ বিন্যাস এভাবে হতো (আরবি) -“দুটোর মাঝে সাঈ না করায় কোন দোষ নেই।” কিন্তু আয়াতটি আনসারদের সম্পর্কে অবতীর্ন হয়েছে, যারা ইসলাম গ্রহনের পূর্বে মুশাল্লাহ নামক স্থানে স্থাপিত মানাত নামের মূর্তির পূজা করত, তার নামেই তারা ইহরাম বাঁধত। সে মূর্তির নামে যারা ইহরাম বাঁধত তারা সাফা-মারওয়া সাঈ করাকে দোষবহ মনে করত। ইসলাম গ্রহণের পর তাঁরা আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-এর কাছে এ সম্পর্কে জিজ্জেস করিলেন, হে আল্লাহর রাসুল! পূর্বে আমরা সাফা ও মারওয়া সাঈ করাকে দোষবহ মনে করতাম (এখন কি করবো?) এ প্রসঙ্গেই আল্লাহ তাআলা (আরবি) অবতীর্ণ করেন। আয়েশা (রাদি.) বলেন, (সাফা ও মারওয়ার মাঝে) উভয় পাহাড়ের মাঝে সাঈ করা আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) বিধান দিয়েছেন। কাজেই কারো পক্ষে এ দুয়ের সাঈ পরিত্যাগ করা ঠিক নয়। (রাবী বলেন) এ বছর আবু বকর ইবনু আবদুর রাহমান (রাদি.)-কে ঘটনাটি জানালাম। তখন তিনি বলিলেন, আমি তো এ কথা শুনিনি, তবে আয়েশা (রাদি.) ব্যাতীত বহু আলিমকে উল্লেখ করিতে শুনিয়াছি যে, মানাতের নামে যারা ইহরাম বাঁধত তারা সকলেই সাফা ও মারওয়া সায়ী করত, যখন আল্লাহ কুরআনে বাইতুল্লাহ তাওয়াফের কথা উল্লেখ করিলেন, কিন্তু সাফা ও মারওয়ার আলোচনা তাতে হলো না, তখন সাহাবাগন বলিতে লাগলেন, হে আল্লাহর রাসুল! আমরা সাফা ও মারওয়া সাঈ করতাম, এখন দেখি আল্লাহ কেবল বাইতুল্লাহ তাওয়াফের কথা অবতীর্ন করিয়াছেন, সাফার উল্লেখ করেননি। কাজেই সাফা ও মারওয়ার মাঝে সায়ী করলে আমাদের দোষ হইবে কি? এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা অবতীর্ন করেন- (আরবি) আবু বকর (রাদি.) আরো বলেন, আমি শুনতে পেয়েছি, আয়াতটি দু প্রকার লোকদের উভয়ের প্রতি লক্ষ করেই অবতীর্ন হয়েছে, অর্থাৎ যারা জাহিলী যুগে সাফা ও মারওয়া সাঈ করা হইতে বিরত থাকতেন, আর যারা তৎকালে সায়ী করত বটে, কিন্তু ইসলাম গ্রহনের পর সায়ী করার বিষয়ে দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়েন। তাঁদের দ্বিধার কারণ ছিল আল্লাহ বাইতুল্লাহ তাওয়াফের নির্দেশ দিয়েছেন, কিন্তু সাফা ও মারওয়ার কথা উল্লেখ করেননি? অবশেষে বাইতুল্লাহ তাওয়াফের কথা আলোচনার পর আল্লাহ সাফা ও মারওয়া সাঈ করার কথা উল্লেখ করেন।

(১৭৯০, ৪৪৯৫, ৪৭৬১, মুসলিম ১৫/৪৩, হাদীস ১২৭৭) (আঃপ্রঃ ১৫৩২, ইঃফাঃ ১৫৩৮)

২৫/৮০. অধ্যায়ঃ সাফা ও মারওয়ার মধ্যে সা”ঈ করা প্রসঙ্গে যা কিছু বর্ণিত হয়েছে।

ইবনু উমর (রাদি.) বলেন, বনূ আব্বাস-এর বসতি হইতে বনূ হুসাইন-এর গলি পর্যন্ত সাঈ করিবে।

১৬৪৪. ইবনে উমর (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) তাওয়াফ-ই-কুদূমের সময় প্রথম তিন চক্করে রামল করিতেন ও পরবর্তী চার চক্কর স্বাভাবিক গতিতে হেঁটে চলতেন এবং সাফা ও মারওয়ার মাঝে সাঈর সময় বাতনে মসীলে দ্রত চলতেন। আমি (উবাইদুল্লাহ) নাফিকে বললাম, আবদুল্লাহ (রাদি.) কি রুকন ইয়ামনীতে পৌছে হেঁটে চলতেন? তিনি বলিলেন, না। তবে হাজ্‌রে আসওয়াদের নিকট ভীড় হলে (একটুখানি মন্থর গতিতে চলতেন), কারণ তিনি তা চুম্বন না করে সরে যেতেন না। (১৬০৩)

(আঃপ্রঃ ১৫৩৩, ইঃফাঃ ১৫৩৯)

১৬৪৫. আমর ইবনু দীনার (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা ইবনু উমর (রাদি.)-এর নিকট জিজ্জেস করলাম, কোন ব্যক্তি উমরাহ করিতে গিয়ে শুধু বাইতুল্লাহ তাওয়াফ করে, আর সাফা ও মারওয়া সাঈ না করে, তার পক্ষে কি স্ত্রী সহবাস বৈধ হইবে? তখন তিনি বলিলেন, নাবী (সাঃআঃ) (মক্কায়) উপনীত হয়ে বাইতুল্লাহ তাওয়াফ সাত চক্করে সমাধা করে মাকামে ইব্রাহীমের পিছনে দু রাকআত সালাত আদায় করিলেন, এরপর সাত চক্করে সাফা ও মারওয়া সায়ী করিলেন। [এতটুকু বলে ইবনু উমর (রাদি.) বলেন] “তোমাদের জন্য রাসুলুল্লাহর মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ”-(আল-আহযাবঃ ২১)।(৩৯৫)

(আঃপ্রঃ ১৫৩৪, ইঃফাঃ ১৫৪০)

১৬৪৬. জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

আমরা জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাদি.)-কে উক্ত বিষয়ে জিজ্জেস করলাম। তখন তিনি বলিলেন, সাফা ও মারয়ার সাঈ করার পূর্বে কারো পক্ষে স্ত্রী সহবাস মোটেই বৈধ হইবে না। (৩৯৬)

(আঃপ্রঃ ১৫৩৪ শেষাংশ, ইঃফাঃ ১৫৪০ শেষাংশ)

১৬৪৭. ইবনু উমর (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) মক্কায় উপনীত হয়ে বাইতুল্লাহর তাওয়াফ সম্পন্ন করিলেন। এরপর দুরাকারাত সালাত আদায় করিলেন। এরপর সাফা ও মারওয়া সাঈ করিলেন। এরপর তিনি (ইবনু উমর) তিলাওয়াত করলেনঃ “নিশ্চয়ই তোমাদের জন্য আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) এর মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ” – (আল আহযাবঃ২১)। (৩৯৫)

(আঃপ্রঃ ১৫৩৫, ইঃফাঃ১৫৪১)

১৬৪৮. আসিম (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি আনাস ইবনু মালিক (রাদি.) কে বললাম, আপনারা কি সাফা ও মারওয়া সাঈ করিতে অপছন্দ করিতেন? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। কেননা তা ছিল জাহিলী যুগের নিদর্শন। অবশেষে মহান আল্লাহ অবতীর্ণ করেনঃ

إِنَّ الصَّفَا وَالْمَرْوَةَ مِنْ شَعَائِرِ اللهِ فَمَنْ حَجَّ الْبَيْتَ أَوْ اعْتَمَرَ فَلاَ جُنَاحَ عَلَيْهِ أَنْ يَطَّوَّفَ بِهِمَا

“নিশ্চয়ই সাফা ও মারওয়া আল্লাহর নিদর্শন। কাজেই হজ্জ বা উমরাকারীদের জন্য এ দুইয়ের মধ্যে সাঈ করায় কোন দোষ নেই” – (আল-বাকারাঃ ১৫৮)।

(৪৪৯৬, মুসলিম ১৫/৪৩, হাদীস ১২৭৮) (আঃপ্রঃ ১৫৩৬, ইঃফাঃ১৫৪২)

১৬৪৯. ইবনু আব্বাস (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) মুশরিকদেরকে নিজ শক্তি প্রদর্শনের উদ্দেশে বাইতুল্লাহ তাওয়াফে ও সাফা মারওয়া মধ্যেকার সাঈতে দ্রুত চলেছিলেন।

(৪২৫৭, মুসলিম ১৫/৩৯, হাদীস ১২৬৬) (আঃপ্রঃ ১৫৩৭, ইঃফাঃ ১৫৪৩)

২৫/৮১. অধ্যায়ঃ ঋতুবতী নারীর বাইতুল্লাহর তাওয়াফ ছাড়া হজ্জের অন্য সকল কার্য সম্পাদন করা এবং অযূ ব্যতীত সাফা ও মারওয়ার মাঝে সাঈ করা।

১৬৫০. আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি মক্কা-য় আসার পর ঋতুবতী হওয়ার কারণে বাইতুল্লাহর তাওয়াফ ও সাফা সাঈ করিতে পারিনি। তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-এর নিকট এ অসুবিধার কথা জানালে তিনি বললেনঃ পবিত্র হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত বাইতুল্লাহর তাওয়াফ ব্যতীত অন্য সকল কাজ অপর হাজীদের ন্যায় সম্পন্ন করে নাও। (২৯৪)

(আঃপ্রঃ১৫৩৮, ইঃফাঃ১৫৪৪)

১৬৫১. জাবির ইবনু আব্দুল্লাহর (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) ও তাহাঁর সাহাবীগণ হজ্জ-এর ইহরাম বাঁধেন, তাঁদের মাঝে কেবল নাবী (সাঃআঃ) ও তালহা (রাদি.) ব্যতীত অন্য কারো সঙ্গে কুরবানীর পশু ছিল না। আলী (রাদি.) ইয়ামান হইতে আগমন করে, তাহাঁর সঙ্গে কুরবানীর পশু ছিল। তিনি [আলী (রাদি.)] বলিলেন, নাবী (সাঃআঃ) যেরূপ ইহরাম বেঁধেছেন, আমি ও সেরূপ ইহরাম বেঁধেছি। নাবী (সাঃআঃ) সাহাবীগণের মধ্যে যাদের নিকট কুরবানীর পশু ছিল না, তাদের ইহরামকে উমরায় পরিণত করার নির্দেশ দিলেন, তারা যেন তাওয়াফ করে, চুল ছেঁটে অথবা মাথা মুণ্ডিয়ে হালাল হয়ে যায়। তারা বলাবলি করিতে লাগলেন, (যদি হালাল হয়ে যাই তা হলে) স্ত্রীর সাথে মিলনের পরপরই আমাদের পক্ষে মিনায় যাওয়াটা কেমন হইবে! তা অবগত হয়ে নাবী (সাঃআঃ) বললেনঃ আমি পরে যা জানতে পেরেছি তা যদি আগে জানতে পারতাম, তাহলে কুরবানীর পশু সাথে আনতাম না। আমার সাথে কুরবানীর পশু না থাকলে অবশ্যই ইহরাম ভঙ্গ করতাম। (হজ্জ এর সফরে) আয়েশা (রাদি.) ঋতুবতী হওয়ার কারণে বাইতুল্লাহ তাওয়াফ ব্যতীত হজ্জ-এর অন্য সকল কাজ সম্পন্ন করে নেন। পবিত্র হওয়ার পর তাওয়াফ আদায় করেন, (ফিরার পথে) আয়েশা (রাদি.) বলিলেন, হে আল্লাহর রাসুল! সকলেই হজ্জ ও উমরাহ উভয়টি আদায় করে ফিরছে, আর আমি কেবল হজ্জ আদায় করে ফিরছি, তখন নাবী (সাঃআঃ) আবদুর রহমান ইবনু আবু বকর (রাদি.) -কে নির্দেশ দিলেন, যেন আয়েশা (রাদি.) -কে নিয়ে তানঈমে চলে যান, সেখানে গিয়ে উমরাহর ইহরাম বাঁধবেন)। আয়েশা (রাদি.) হজ্জের পর উমরাহ আদায় করে নিলেন। (১৫৫৭)

(আঃপ্রঃ১৫৩৯, ইঃফাঃ১৫৪৫)

১৬৫২. হাফসাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা আমাদের যুবতীদেরকে বের হইতে নিষেধ করতাম। এক মহিলা বনূ খালীফা-এর দুর্গে এলেন। তিনি বর্ণনা করেন যে, তাহাঁর বোন আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-এর এক সাহাবীর সহধর্মিণী ছিলেন। যিনি আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-এর সঙ্গে বারটি যুদ্ধে অংশগ্রহন করেছিলেন, (সেগুলোর মধ্যে) ছয়টি যুদ্ধে আমার বোনও স্বামীর সঙ্গে ছিলেন। তাহাঁর বোন বলেন, আমরা আহত যোদ্ধা ও অসুস্থ সৈনিকদের সেবা করতাম। আমার বোন নাবী (সাঃআঃ)-কে জিজ্ঞেস করেছিলেন, আমাদের মধ্যে যার (শরীর উত্তমরূপে আবৃত করার মত) চাদর নেই, সে বের না হলে অন্যায় হইবে কি? নাবী (সাঃআঃ) বললেনঃ তোমাদের একজন অপরজনকে তাহাঁর প্রয়োজনের অতিরিক্ত চাদরটি দিয়ে দেয়া উচিত এবং কল্যাণমূলক কাজে ও মুমিনদের দুআয় বের হওয়া উচিত। উম্মু আতিয়া (রাদি.) উপস্থিত হলে এ বিষয়ে তাহাঁর নিকট আমি জিজ্ঞেস করলাম, তিনি আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-এর কথা (আমার পিতা উৎসর্গ হোন) ব্যতীত কখনও উচ্চারণ করিতেন না। আমি তাঁকে বললাম, আপনি কি আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-কে এরূপ বলিতে শুনেছেন? তিনি বলিলেন, হ্যাঁ, অবশ্যই। আমার পিতা উৎসর্গ হোন। তিনি বললেনঃ যূবতী ও পর্দাশীলা নারীদেরও বের হওয়া উচিত। অথবা বললেনঃ পর্দাশীলা যুবতী ও ঋতুবতীদেরও বের হওয়া উচিত। তাঁরা কল্যাণমূলক কাজে এবং মুসলমানদের দুআয় যথাস্থানে উপস্থিত হইবে। তবে ঋতুবতী মহিলাগণ সলাতের স্থানে উপস্থিত হইবে না। আমি জিজ্ঞেস করলাম, ঋতুবতী মহিলাও কি? তিনি বললেনঃ (কেন উপস্থিত হইবে না?) তাঁরা কি আরাফার ময়দানে এবং অমুক অমুক স্থানে উপস্থিত হইবে না? (৩২৪)

(আঃপ্রঃ১৫৪০, ইঃফাঃ১৫৪৬)


Posted

in

by

Comments

Leave a Reply