টুপি ,পায়জামা, পাগড়ী, চাদর, কম্বল ও লৌহ শিরস্ত্রাণ প্রসঙ্গে

টুপি ,পায়জামা, পাগড়ী, চাদর, কম্বল ও লৌহ শিরস্ত্রাণ প্রসঙ্গে

টুপি ,পায়জামা, পাগড়ী, চাদর, কম্বল ও লৌহ শিরস্ত্রাণ প্রসঙ্গে >> বুখারী শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন

পর্বঃ ৭৭, পোশাক-পরিচ্ছদ, অধ্যায়ঃ (১৩-২২)=১০টি

৭৭/১৩. অধ্যায়ঃ টুপি
৭৭/১৪. অধ্যায়ঃ পায়জামা প্রসঙ্গে
৭৭/১৫. অধ্যায়ঃ পাগড়ী প্রসঙ্গে
৭৭/১৬. অধ্যায়ঃ চাদর বা অন্য কিছু দ্বারা মাথা ও মুখের অধিকাংশ অঙ্গ ঢেকে রাখা।
৭৭/১৭. অধ্যায়ঃ লৌহ শিরস্ত্রাণ প্রসঙ্গে
৭৭/১৮. অধ্যায়ঃ ডোরাওয়ালা চাদর, কারুকার্যময় ইয়ামনী চাদর ও চাদরের আঁচলের বিবরণ।
৭৭/১৯. অধ্যায়ঃ কম্বল ও কারুকার্যপূর্ণ চাদর পরিধান প্রসঙ্গে।
৭৭/২০. অধ্যায়ঃ কাপড় মুড়ি দিয়ে বসা প্রসঙ্গে।
৭৭/২১. অধ্যায়ঃ এক কাপড়ে পেঁচিয়ে বসা প্রসঙ্গে।
৭৭/২২. অধ্যায়ঃ নকশাওয়ালা কালো চাদর প্রসঙ্গে।

৭৭/১৩. অধ্যায়ঃ টুপি

৫৮০২

মুসাদ্দাদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

মুসাদ্দাদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) আমাকে বলেছেন যে, মুতামির বলেন, আমি আমার পিতাকে বলিতে শুনিয়াছি যে, তিনি আনাস (রাদি.) এর (মাথার) উপর হলুদ রেশমী টুপি দেখেছেন।

৫৮০৩

আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

যে, এক ব্যক্তি বললঃ হে আল্লাহর রাসুল! মুহরিম কী কী পোশাক পরবে? রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বললেনঃ তোমরা জামা, পাগড়ী, পায়জামা, টুপি ও মোজা পরবে না। তবে যার জুতা নেই, সে শুধু মোজা পরতে পারবে, কিন্তু মোজা দুটি পায়ের গোড়ালির নীচ থেকে কেটে ফেলবে। আর যাফরান ও ওয়ার্‌স রং লেগেছে, এমন কাপড় পরবে না।(আঃপ্রঃ- ৫৩৭৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫২৭৪)

৭৭/১৪. অধ্যায়ঃ পায়জামা প্রসঙ্গে

৫৮০৪

ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ যে লোকের ইযার নেই, সে যেন পায়জামা পরে; আর যার জুতা নেই, সে যেন মোজা পরে।(আঃপ্রঃ- ৫৩৭৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫২৭৫)

৫৮০৫

আবদুল্লাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বললঃ হে আল্লাহর রাসুল! আমরা যখন ইহরাম বাঁধি, তখন কী পোশাক পরতে আমাদের নির্দেশ দেন? তিনি বললেনঃ তোমরা জামা, পায়জামা, টুপি ও মোজা পরবে না। তবে যার জুতা নেই, সে পায়ের গোড়ালির নীচে পর্যন্ত মোজা পরবে। আর তোমরা এমন কোন কাপড়ই পরবে না, যাতে যাফরান বা ওয়ার্‌স রং লেগেছে।(আঃপ্রঃ- ৫৩৮০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫২৭৬)

৭৭/১৫. অধ্যায়ঃ পাগড়ী প্রসঙ্গে

৫৮০৬

সালিমের পিতা হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ মুহরিম জামা, পাগড়ী, পায়জামা ও টুপি পরতে পারবে না। যাফরান ও ওয়ারস রঞ্জিত কাপড়ও নয় এবং মোজাও নয়। তবে সে ব্যক্তি ছাড়া, যার জুতা নেই। যদি সে জুতা না পায় তাহলে দু মোজার পায়ের গোড়ালির নীচে থেকে কেটে নিবে।(আঃপ্রঃ- ৫৩৮১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫২৭৭)

৭৭/১৬. অধ্যায়ঃ চাদর বা অন্য কিছু দ্বারা মাথা ও মুখের অধিকাংশ অঙ্গ ঢেকে রাখা।

ইবনু আব্বাস (রাদি.) বলেন, নাবী (সাঃআঃ) একদা বাইরে আসলেন, তখন তাহাঁর (মাথার) উপর কালো রুমাল ছিল। আনাস (রাদি.) বলেছেনঃ নাবী (সাঃআঃ) নিজ মাথা চাদরের এক পার্শ্ব দিয়ে বেঁধে রেখেছিলেন।

৫৮০৭

আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, কতক মুসলিম হাবশায় হিজরাত করেন। এ সময় আবু বাকর (রাদি.) হিজরাত করার প্রস্তুতি গ্রহণ করেন। নাবী (সাঃআঃ) বললেনঃ তুমি একটু অপেক্ষা কর; কেননা মনে হয় আমাকেও (হিজরাতের) হুকুম দেওয়া হইবে। আবু বাকর (রাদি.) বললেনঃ আমার পিতা আপনার উপর কুরবান হোক, আপনিও কি এ আশা পোষণ করেন? তিনি বললেনঃ হাঁ। আবু বাকর (রাদি.) নাবী (সাঃআঃ) -এর সঙ্গ লাভের আশায় নিজেকে সংবরণ করে রাখেন এবং তাহাঁর অধীনস্হ দুটি সাওয়ারীকে চার মাস যাবৎ সামূর গাছের পাতা খাওয়ান। উরওয়াহ (রাহ.) বর্ণনা করেন, আয়েশা (রাদি.) বলেছেন যে, একদিন ঠিক দুপুরের সময় আমরা আমাদের ঘরে বসে আছি। এ সময় এক লোক আবু বাকর (রাদি.) -কে বলিল, এই যে রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) মুখমণ্ডল ঢেকে এগিয়ে আসছেন। এমন সময় তিনি এসেছেন, যে সময় তিনি সাধারণতঃ আমাদের কাছে আসেন না। আবু বাকর (রাদি.) বললেনঃ আমার মা-বাপ তাহাঁর উপর কুরবান হোক, আল্লাহর কসম! এমন সময় তিনি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়েই এসে থাকবেন। নাবী (সাঃআঃ) আসলেন। তিনি অনুমতি চাইলেন। তাঁকে অনুমতি দেয়া হল। তিনি প্রবেশ করিলেন। প্রবেশের সময় আবু বাকর (রাদি.) -কে বললেনঃ তোমার কাছে যারা আছে তাদের হটিয়ে দাও। তিনি বললেনঃ আমার পিতা আপনার উপর কুরবান হোক, হে আল্লাহর রাসুল! এরা তো আপনারই পরিবারস্থ লোক। নাবী (সাঃআঃ) বললেনঃ আমাকে মাক্কাহ থেকে বের হওয়ার অনুমতি দেয়া হয়েছে। আবু বাকর (রাদি.) বললেনঃ তাহলে আমি কি আপনার সঙ্গী হব? হে আল্লাহর রাসুল! আমার পিতা-মাতা আপনার উপর কুরবান হোক। তিনি বললেনঃ হাঁ। আবু বাকর (রাদি.) বললেনঃ হে আল্লাহর রাসুল! আপনি আমার এ দুটি সাওয়ারীর একটি গ্রহণ করুন। নাবী (সাঃআঃ) বললেনঃ মূল্যের বিনিময়ে (নিব)। আয়েশা (রাদি.) বলেনঃ তাদের উভয়ের জন্যে সফরের জিনিসপত্র প্রস্তুত করলাম এবং সফরকালের নাস্তা তৈরী করে একটি চামড়ার থলের মধ্যে রাখলাম। আবু বাকর (রাদি.) -এর কন্যা আসমা তাহাঁর উড়নার এক অংশ ছিঁড়ে থলের মুখ বেঁধে দিল। এ কারণে তাকে যাতুন নিতাক (উড়না ওয়ালী) নামে ডাকা হত। এরপর নাবী (সাঃআঃ) ও আবু বাকর (রাদি.) সাওর নামক পর্বত গুহায় পৌছেন। সেখানে তিনি রাত কাটান। আবু বাকর (রাদি.) -এর পুত্র আবদুল্লাহ তাঁদের সঙ্গে রাত্রি কাটাতেন। তিনি ছিলেন সুচতুর বুদ্ধিসম্পন্ন যুবক। তিনি তাঁদের নিকট হইতে রাতের শেষ ভাগে চলে আসতেন এবং ভোর বেলা কুরাইশদের সাথে মিশে যেতেন, যেন তাদের মধ্যেই তিনি রাত কাটিয়েছেন। তিনি কারও থেকে পার্শ্ববর্তী স্থানে কিছু শুনলে তা মনে রাখতেন এবং রাতের আঁধার ছড়িয়ে পড়লে দিনের সব খবর নিয়ে তিনি তাঁদের দুজনের কাছে পৌঁছে দিতেন। আবু বাকর (রাদি.) -এর দাস আমির ইবনু ফুহাইরা তাঁদের আশে পাশে দুধওয়ালা বকরী চরাতেন, রাতের এক ঘন্টা পার হলে সে তাঁদের নিকট ছাগল নিয়ে যেত (দুধ পান করাবার জন্যে)। তাঁরা দুজনে (আমির ও আবদুল্লাহ) গুহাতেই রাত কাটাতেন। ভোরে আঁধার থাকতেই আমির ইবনু ফুহাইরা ছাগল নিয়ে চলে আসতেন। ঐ তিন রাতের প্রতি রাতেই তিনি এমন করিতেন।(আঃপ্রঃ- ৫৩৮২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫২৭৮)

৭৭/১৭. অধ্যায়ঃ লৌহ শিরস্ত্রাণ প্রসঙ্গে

৫৮০৮

আনাস ইবনু মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ) মাক্কাহ বিজয়ের বছর যখন মক্কায় প্রবেশ করেন, তখন তাহাঁর মাথার উপর লৌহ শিরস্ত্রাণ ছিল।(আঃপ্রঃ- ৫৩৮৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫২৭৯)

৭৭/১৮. অধ্যায়ঃ ডোরাওয়ালা চাদর, কারুকার্যময় ইয়ামনী চাদর ও চাদরের আঁচলের বিবরণ।

খাব্বাব (রাদি.) বলেন, আমরা নাবী (সাঃআঃ) -এর নিকট অভিযোগ করছিলাম, তখন তিনি ডোরাওয়ালা চাদরে হেলান দিয়ে বসেছিলেন।

৫৮০৯

আনাস ইবনু মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) -এর সঙ্গে চলছিলাম। এ সময় তাহাঁর পরনে চওড়া পাড়ওয়ালা একটি নাজরানী ডোরাদার চাদর ছিল। একজন বেদুঈন তাহাঁর কাছে এলো। সে তাহাঁর চাদর ধরে খুব জোরে টান দিল। এমন কি আমি দেখিতে পেলাম রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) -এর কাঁধে চাদরের পাড়ের দাগ পড়ে গেছে। তারপর সে বললঃ হে মুহাম্মাদ (সাঃআঃ)! আপনার নিকট আল্লাহর যে সম্পদ আছে, তা থেকে আমাকে কিছু দিতে বলুন। রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) তার দিকে ফিরে তাকিয়ে হাসলেন এবং তাকে কিছু দান করার নির্দেশ দিলেন।(আঃপ্রঃ- ৫৩৮৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫২৮০)

৫৮১০

সাহল ইবনু সাদ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একজন স্ত্রী লোক একটি বুরদাহ নিয়ে এলো। সাহল (রাদি.) বললেনঃ তোমরা জান বুরদাহ কী? একজন উত্তর দিলঃ হাঁ, বুরদাহ হল এমন চাদর যার পাড় কারুকার্যময়। স্ত্রী লোকটি বললঃ হে আল্লাহর রাসুল! আমি এটি আমার নিজের হাতে বুনেছি আপনাকে পরানোর জন্য। রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) তা গ্রহণ করিলেন। তখন তাহাঁর এটার প্রয়োজনও ছিল। এরপর তিনি আমাদের কাছে বেরিয়ে আসলেনঃ তখন সে চাদরটি ইযার হিসেবে তাহাঁর পরিধানে ছিল। দলের এক ব্যক্তি হাত দিয়ে চাদরটি স্পর্শ করিল এবং বললঃ হে আল্লাহর রাসুল! আমাকে এটি পরতে দিন। তিনি বললেনঃ হাঁ। এরপর রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) মজলিসে বসলেন, যতক্ষণ আল্লাহর ইচ্ছে ছিল, তারপর উঠে গেলেন এবং চাদরটি ভাঁজ করে এ ব্যক্তির কাছে পাঠিয়ে দিলেন। উপস্থিত লোকেরা বললঃ রাসুলুল্লাহর (সাঃআঃ) কাছে এটি চেয়ে তুমি ভাল করনি। তুমি তো জান যে, কোন প্রার্থীকে তিনি বঞ্চিত করেন না। লোকটি বললঃ আল্লাহর কসম! আমি কেবল এজন্যই চেয়েছি যে, যেদিন আমার মৃত্যু হইবে, সে দিন যেন এ চাদরটি আমার কাফন হয়। সাহল (রাদি.) বলেনঃ এটি তাহাঁর কাফনই হয়েছিল।(আঃপ্রঃ- ৫৩৮৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫২৮১)

৫৮১১

আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) -কে বলিতে শুনেছিঃ আমার উম্মাতের মধ্য থেকে সত্তর হাজারের একটি দল (বিনা হিসেবে) জান্নাতে প্রবেশ করিবে। তখন তাদের মুখমণ্ডল চাঁদের ন্যায় উজ্জ্বল হইবে। উকাশাহ ইবনু মিহসান তাহাঁর পরিহিত রঙ্গিন ডোরাওয়ালা চাদর উপরে তুলে ধরলেনঃ হে আল্লাহর রাসুল! আপনি আল্লাহর নিকট আমার জন্য দুআ করুন, যেন তিনি আমাকে তাঁদের অন্তর্ভুক্ত করেন। তিনি দুআ করলেনঃ হে আল্লাহ! একে তাদের অন্তর্ভুক্ত করুন। তারপর আনসারদের মধ্য থেকে এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বললঃ হে আল্লাহর রাসুল! আপনি আল্লাহর নিকট দুআ করুন, যেন তিনি আমাকে তাঁদের অন্তর্ভুক্ত করেন। নাবী (সাঃআঃ) বললেনঃ উকাশাহ তোমার অগ্রগামী হয়েছে। [৬৫৪২; মুসলিম ১/৯৪, হাদীস ২১৬, আহমাদ ৮০২২, ৮৬২২] আঃপ্রঃ- ৫৩৮৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫২৮১)

৫৮১২

ক্বাতাদা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি আনাস (রাদি.) -কে জিজ্ঞেস করলামঃ কোন্ ধরণের কাপড় রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) -এর নিকট অধিক প্রিয় ছিল? তিনি বললেনঃ হিবারা-ইয়ামনী চাদর। [৫৮১৩; মুসলিম ৩৭/৫, হাদীস ২০৭৯, আহমাদ ১৪১১০] আঃপ্রঃ- ৫৩৮৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫২৮৩)

৫৮১৩

আনাস ইবনু মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) হিবারা (ইয়ামনী চাদর) পরতে অধিক পছন্দ করিতেন। [৫৮১২; মুসলিম ৩৭/৫, হাদীস ২০৭৯, আহমাদ ১৪১১০] আঃপ্রঃ- ৫৩৮৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫২৮৪)

৫৮১৪

আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) যখন মারা যান, তখন (ইয়ামনী চাদর) দ্বারা তাঁকে ঢেকে রাখা হয়।[মুসলিম ১১/১৪, হাদীস ৯৪২, আহমাদ ২৬৩৭৮] আঃপ্রঃ- ৫৩৮৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫২৮৫)

৭৭/১৯. অধ্যায়ঃ কম্বল ও কারুকার্যপূর্ণ চাদর পরিধান প্রসঙ্গে।

৫৮১৫

আয়েশা ও আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তাঁরা উভয়ে বলেনঃ রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) যখন মৃত্যু শয্যায় শায়িত, তখন তিনি তাহাঁর কারুকার্যপূর্ণ চাদর দ্বারা মুখ ঢেকে রাখেন। যখন তাহাঁর শ্বাসরোধ হয়ে আসত তখন তাহাঁর মুখ থেকে তা সরিয়ে নিতেন। এ অবস্থায় তিনি বলিতেনঃ ইয়াহূদী ও নাসারাদের উপর আল্লাহর লানাত, তারা তাদের নাবীদের কবরগুলোকে মাসজিদ বানিয়ে নিয়েছে। তাদের কাজের কথা উল্লেখ করে তিনি সতর্ক করছিলেন।(আঃপ্রঃ- ৫৩৯০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫২৮৬)

৫৮১৬

আয়েশা ও আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তাঁরা উভয়ে বলেনঃ রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) যখন মৃত্যু শয্যায় শায়িত, তখন তিনি তাহাঁর কারুকার্যপূর্ণ চাদর দ্বারা মুখ ঢেকে রাখেন। যখন তাহাঁর শ্বাসরোধ হয়ে আসত তখন তাহাঁর মুখ থেকে তা সরিয়ে নিতেন। এ অবস্থায় তিনি বলিতেনঃ ইয়াহূদী ও নাসারাদের উপর আল্লাহর লানাত, তারা তাদের নাবীদের কবরগুলোকে মাসজিদ বানিয়ে নিয়েছে। তাদের কাজের কথা উল্লেখ করে তিনি সতর্ক করছিলেন।(আঃপ্রঃ- ৫৩৯০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫২৮৬)

৫৮১৭

আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) তাহাঁর চাদর গায়ে দিয়ে সলাত আদায় করিলেন। চাদরটি ছিল কারুকার্যপূর্ণ। তিনি কারুকার্যের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকালেন, তারপর সালাম ফিরিয়ে বললেনঃ এ চাদরটি আবু জাহমের কাছে নিয়ে যাও। কারণ, এখনই তা আমাকে সলাত থেকে অন্যমনস্ক করে দিয়েছে। আর আবু জাহম ইবনু হুযাইফার আনবিজানিয়্যা (কারুকার্যবিহীন চাদর) -টি আমার জন্যে নিয়ে এসো। সে হচ্ছে আদী ইবনু কাব গোত্রের লোক।(আঃপ্রঃ- ৫৩৯২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫২৮৮)

৫৮১৮

আবু বুরদাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আয়েশা (রাদি.) একবার একখানি কম্বল ও মোটা ইযার নিয়ে আমাদের কাছে আসেন এবং তিনি বললেনঃ এ দুটি পরা অবস্থায় নাবী (সাঃআঃ) -এর রূহ কবয করা হয়।(আঃপ্রঃ- ৫৩৯১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫২৮৭)

৭৭/২০. অধ্যায়ঃ কাপড় মুড়ি দিয়ে বসা প্রসঙ্গে।

৫৮১৯

আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) মুলামাসাহ ও মুনাবাযাহ থেকে নিষেধ করিয়াছেন এবং দুসময়ে সলাত আদায় করা থেকেও অর্থাৎ ফাজরের (সলাতের) পর সূর্য উপরে উঠা পর্যন্ত এবং আসরের (সলাতের) পর সূর্যাস্ত পর্যন্ত। আরও নিষেধ করিয়াছেন একটি মাত্র কাপড় এমনভাবে পরতে, যাতে লজ্জাস্থানের উপরে তার ও আকাশের মধ্যস্থলে আর কিছুই থাকে না। আর তিনি কাপড় মুড়ি দিয়ে বসতে নিষেধ করিয়াছেন।(আঃপ্রঃ- ৫৩৯৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫২৮৯)

৫৮২০

আবু সাঈদ খুদরী (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) দুপ্রকার কাপড় পরিধান করিতে ও দুপ্রকার ক্রয়-বিক্রয় করিতে নিষেধ করিয়াছেন। ক্রয়-বিক্রয়ে তিনি মুলামাসা ও মুনাবাযা থেকে নিষেধ করিয়াছেন। মুলামাসা হল রাতে বা দিনে একজন অপর জনের কাপড় হাত দিয়ে স্পর্শ করা। এটুকু বাদে তা আর উলট-পালট করে দেখে না। আর মুনাবাযা হল- এক লোক অন্য লোকের প্রতি তার কাপড় নিক্ষেপ করা। আর দ্বিতীয় ব্যক্তিও তার কাপড় নিক্ষেপ করা এবং এর দ্বারাই তাদের ক্রয়-বিক্রয় সম্পন্ন হওয়া, দেখা ও পারস্পরিক সম্মতি ব্যতিরেকেই। আর দুপ্রকার পোশাক পরিধানের (এর এক প্রকার) হল- ইশ্‌তিমালুস-সাম্মা। সাম্মা হল এক কাঁধের উপর কাপড় এমনভাবে রাখা যাতে অন্য কাঁধ খালি থাকে, কোন কাপড় থাকে না। পোশাক পরার অন্য ধরণ হচ্ছে- উপবিষ্ট অবস্থায় নিজের কাপড় দ্বারা নিজেকে এমনভাবে ঘিরে রাখা, যাতে লজ্জাস্থানের উপর কাপড়ের কোন অংশ না থাকে।(আঃপ্রঃ- ৫৩৯৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫২৯০)

৭৭/২১. অধ্যায়ঃ এক কাপড়ে পেঁচিয়ে বসা প্রসঙ্গে।

৫৮২১

আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) দুধরণের কাপড় পরতে নিষেধ করিয়াছেন। একটি কাপড়ে পুরুষের এমনভাবে পেঁচিয়ে থাকা যে, তার লজ্জাস্থানের উপর সে কাপড়ের কোন অংশই থাকে না। আর একটি কাপড় এমনভাবে পেঁচিয়ে পরা যে, শরীরের এক অংশ খোলা থাকে। আর মুলামাসাহ ও মুনাবাযাহ থেকেও (তিনি নিষেধ করিয়াছেন)।(আঃপ্রঃ- ৫৩৯৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫২৯১)

৫৮২২

আবু সাঈদ খুদরী (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ) নিষেধ করিয়াছেন শরীরের এক পাশ খোলা রেখে অন্য পাশ ঢেকে পরতে। আর এক কাপড়ে পুরুষকে এমনভাবে ঢেকে বসতে, যাতে তার লজ্জাস্থানের উপর ঐ কাপড়ের কোন অংশ না থাকে।(আঃপ্রঃ- ৫৩৯৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫২৯২)

৭৭/২২. অধ্যায়ঃ নকশাওয়ালা কালো চাদর প্রসঙ্গে।

৫৮২৩

উম্মু খালিদ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

একবার রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ -এর নিকট কিছু কাপড় নিয়ে আসা হয়। তার মধ্যে কিছু কালো নকশীদান ছোট চাদর ছিল। তিনি বললেনঃ আমরা এগুলো পরব, তোমাদের মত কী? উপস্থিত সকলে চুপ থাকল। তারপর তিনি বললেনঃ উম্মু খালিদকে আমার কাছে নিয়ে এসো। তাকে বহন করে আনা হল। রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ নিজের হাতে একটি চাদর নিলেন এবং তাকে পরিয়ে দিলেন। এরপর বললেনঃ এটি) তুমি পুরাতন কর ও ছিঁড়ে ফেল অর্থাৎ তুমি বহুদিন বাঁচ)। ঐ চাদরে সবুজ অথবা হলুদ রঙের নকশী ছিল। তিনি বললেনঃ হে খালিদের মা!هٰذَا سَنَاهْঅর্থাৎ এটি কত সুন্দর! হাবশী ভাষায় সানাহ অর্থ সুন্দর। [৩০৭১] আঃপ্রঃ- ৫৩৯৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫২৯৩)

৫৮২৪

আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ উম্মু সুলাইম (রাদি.) যখন একটি সন্তান প্রসব করিলেন তখন আমাকে জানালেন, হে আনাস! শিশুটিকে দেখ, যেন সে কিছু না খায়, যতক্ষন না তুমি একে নাবী (সাঃআঃ) -এর নিকট নিয়ে যাও, তিনি এর তাহনীক করবেন। আমি তাকে নিয়ে গেলাম। দেখলাম, তিনি একটি বাগানে আছেন, আর তাহাঁর পরনে হুরাইসিয়া নামের চাদর আছে। তিনি যে উটে করে মাক্কাহ বিজয়ের দিনে অভিযানে গিয়েছিলেন তার পিঠে ছিলেন। [১৫০২; মুসলিম ৩৭/৩০, হাদীস ২১১৯] আঃপ্রঃ- ৫৩৯৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫২৯৪)

Comments

Leave a Reply