জুম্মার নামাজ এর ওয়াক্ত, খুতবা, মিম্বার, আযান ও সফর
জুম্মার নামাজ এর ওয়াক্ত, খুতবা, মিম্বার, আযান ও সফর >> সুনান তিরমিজি শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন
অধ্যায়ঃ ৪, অনুচ্ছেদঃ (৯-২৯)=২১টি
৯. অনুচ্ছেদঃ জুমুআর নামাযের ওয়াক্ত
১০. অনুচ্ছেদঃ মিম্বারের উপর দাঁড়িয়ে খুতবা দেওয়া
১১. অনুচ্ছেদঃ দুই খুতবার মাঝখানে বসা
১২. অনুচ্ছেদঃ খুতবা সংক্ষিপ্ত করা
১৩. অনুচ্ছেদঃ মিম্বারের উপর কুরআন পাঠ করা
১৪. অনুচ্ছেদঃ ইমামের খুতবার সময় তার দিকে মুখ করে বসতে হইবে
১৫. অনুচ্ছেদঃ ইমামের খুতবা দেওয়ার সময় কোন ব্যক্তি আসলে তাহাঁর দুই রাকআত নামাজ আদায় করা প্রসঙ্গে
১৬. অনুচ্ছেদঃ খুতবা চলাকালে কথাবার্তা বলা মাকরূহ
১৭. অনুচ্ছেদঃ জুমুআর দিন লোকদের ডিঙ্গিয়ে সামনে যাওয়া মাকরূহ
১৮. অনুচ্ছেদঃ ইমামের খুতবা চলাকালে পায়ের নলা জড়িয়ে বসা মাকরূহ
১৯. অনুচ্ছেদঃ মিম্বারে অবস্থানকালে দুআর মধ্যে হাত তোলা মাকরূহ
২০. অনুচ্ছেদঃ জুমুআর আযান সম্পর্কে
২১. অনুচ্ছেদঃ ইমামের মিম্বার হইতে নামার পর কথা বলা
২২. অনুচ্ছেদঃ জুমুআর নামাযের কিরাআত
২৩. অনুচ্ছেদঃ জুমুআর দিন ভোরের নামাযের কিরাআত প্রসঙ্গে
২৪. অবুচ্ছেদঃ জুমুআর [ফরযের] পূর্বের ও পরের নামাজ
২৫. অনুচ্ছেদঃ যে ব্যক্তি জুমুআর নামাযের এক রাকআত পায়
২৬. অনুচ্ছেদঃ জুমুআর দিন দুপুরের বিশ্রাম [কাইলুলা]
২৭. অনুচ্ছেদঃ জুমুআর নামাযের সময় তন্দ্রা আসলে নিজ স্থান হইতে উঠে যাবে
২৮. অনুচ্ছেদঃ জুমুআর দিন সফর করা
২৯. অনুচ্ছেদঃ জুমুআর দিন মিসওয়াক করা ও সুগন্ধি লাগানো
৯. অনুচ্ছেদঃ জুমুআর নামাযের ওয়াক্ত
৫০৩. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] সূর্য ঢলে গেলে জুমুআর নামাজ আদায় করিতেন।
-সহিহ। সহীহ্ আবু দাঊদ- [৯৯৫], বুখারী। জুম্মার নামাজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫০৪. উসমান ইবনি আব্দুর রহমান তাইমী হইতে বর্ণীতঃ
উসমান ইবনি আব্দুর রহমান তাইমীর সূত্রেও আনাস [রাদি.] হইতে অনুরূপ হাদীস বর্ণিত হয়েছে।
এ অনুচ্ছেদে সালামা ইবনিল আকওয়া, জাবির ও যুবাইর ইবনিল আওয়াম [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেনঃ আনাস [রাদি.] –এর হাদীসটি হাসান সহিহ। বেশিরভাগ মনীষীর মতে সূর্য ঢলে যাওয়ার পর জুমুআর ওয়াক্ত শুরু হয়, যেমন যুহরের ওয়াক্ত। ঈমাম শাফি, আহমাদ ও ইসহাক এই মত ব্যক্ত করিয়াছেন। একদল আলিমের মতে, জুমুআর নামাজ সূর্য ঢলে যাওয়ার পূর্বে আদায় করে নিলে তাও জায়িয এবং নামাজ হয়ে যাবে। ঈমাম আহমাদ বলেন, যে ব্যক্তি সূর্য ঢলে যাওয়ার পূর্বে জুমুআ আদায় করে নিল আমার মতে তার নামাজ আবার আদায় করা তার উপর ওয়াজিব নয়। জুম্মার নামাজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়
১০. অনুচ্ছেদঃ মিম্বারের উপর দাঁড়িয়ে খুতবা দেওয়া
৫০৫. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] খেজুর গাছের গুড়ির সাথে ভর দিয়ে জুমুআর বক্তৃতা করিতেন। যখন মিম্বার তৈরী করা হল খেজুরের গুঁড়িটা কাঁদতে লাগল। তিনি গাছটির নিকট গেলেন এবং তা স্পর্শ করিলেন। ফলে এটা চুপ করিল।
-সহীহ। সহীহাহ্- [২১৭৪], বুখারী। এ অনুচ্ছেদে আনাস, জাবির, সাহল ইবনি সাদ, উবাই ইবনি কাব, ইবনি আব্বাস ও উম্মু সালামা [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেনঃ ইবনি উমারের হাদীসটি হাসান, গারীব সহিহ। মুআয ইবনিল আলা বাসরার অধিবাসী, তিনি আবু আমর ইবনিল আলা এর ভাই। জুম্মার নামাজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১১. অনুচ্ছেদঃ দুই খুতবার মাঝখানে বসা
৫০৬. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] জুমুআর দিনে খুতবা দিতেন, অতঃপর বসতেন, অতঃপর উঠে আবার খুতবা দিতেন, যেমন আজকালকার দিনে তোমরা কর।
সহীহ্ । সহীহ্ আবু দাঊদ- [১০০২], ইরওয়া- [৬০৪], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ সংক্ষিপ্তভাবে। এ অনুচ্ছেদে ইবনি আব্বাস, জাবির ইবনি আবদুল্লাহ ও জাবির ইবনি সামুরা [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেনঃ ইবনি উমারের হাদীসটি হাসান সহিহ। বিশেষজ্ঞগণ দুই খুতবার মাঝখানে বসে উভয় খুতবার মধ্যে দূরত্ব রচনা করার কথা বলেছেন। জুম্মার নামাজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১২. অনুচ্ছেদঃ খুতবা সংক্ষিপ্ত করা
৫০৭. জাবির ইবনি সামুরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি নাবী [সাঃআঃ]-এর সাথে নামাজ আদায় করেছি। তাহাঁর নামাজ ছিল মাঝারি ধরণের এবং খুতবাও ছিল মাঝারি ধরণের [সংক্ষেপও নয়, দীর্ঘও নয়]।
-সহিহ। ইবনি মাজাহ- [১১০৬], মুসলিম। এ অনুচ্ছেদে আম্মার ইবনি ইয়াসির ও ইবনি আবু আওফা [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেনঃ জাবির ইবনি সামুরার হাদীসটি হাসান সহিহ। জুম্মার নামাজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৩. অনুচ্ছেদঃ মিম্বারের উপর কুরআন পাঠ করা
৫০৮. সাফওয়ান ইবনি ইয়ালা [রাদি.] হইতে তাহাঁর পিতা হইতে বর্ণীতঃ
তিনি [ইয়ালা] বলেন, আমি নাবী [সাঃআঃ]কে মিম্বারের উপর দাঁড়িয়ে “ওয়া নাদাও ইয়া মালিকু……” [সূরাদি. যুখরুফ- ৭৭] আয়াত পাঠ করিতে শুনিয়াছি।
-সহিহ। ইরওয়া- [৩/৭৫], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ। এ অনুচ্ছেদে আবু হুরাইরা ও জাবির ইবনি সামুরা [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেনঃ ইয়ালা ইবনি উমাইয়ার হাদীসটি হাসান সহীহ্ গারীব। একদল বিদ্বান জুমুআর খুতবায় কুরআনের আয়াত পাঠ করার নীতি অনুসরণ করিয়াছেন। ঈমাম শাফি বলেছেন, ঈমাম যদি তাহাঁর খুতবার মধ্যে কুরআনের আয়াত পাঠ না করে থাকে তবে তাকে আবার খুতবা দিতে হইবে। জুম্মার নামাজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৪. অনুচ্ছেদঃ ইমামের খুতবার সময় তার দিকে মুখ করে বসতে হইবে
৫০৯. আবদুল্লাহ ইবনি মাসউদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] যখন মিম্বারে উঠতেন তখন আমরা তাহাঁর দিকে মুখ ফিরিয়ে বসতাম।
-সহিহ। সহীহাহ্- [২০৮০], বুখারী অনুরূপ। এ অনুচ্ছেদে ইবনি উমার [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। উল্লেখিত হাদীসটি যঈফ। কেননা এর এক বর্ণনাকারী মুহাম্মাদ ইবনিল ফযল হাদীসশাস্ত্রে দুর্বল এবং তাহাঁর স্মারণশক্তি ক্ষীণ। নাবী [সাঃআঃ]-এর সাহাবী ও অন্যরা খুতবা চলাকালে ইমামের দিকে মুখ করে বসা পছন্দ করিয়াছেন। সুফিয়ান সাওরী, শাফিঈ, আহমাদ ও ইসহাক একই রকম আমল করিয়াছেন। আবু ঈসা বলেনঃ এ অনুচ্ছেদে কোন সহীহ্ হাদীস নেই। জুম্মার নামাজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৫. অনুচ্ছেদঃ ইমামের খুতবা দেওয়ার সময় কোন ব্যক্তি আসলে তাহাঁর দুই রাকআত নামাজ আদায় করা প্রসঙ্গে
৫১০. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, একদা নাবী [সাঃআঃ] জুমুআর খুতবা দিচ্ছিলেন। এমন সময় একটি লোক এসে উপস্থিত হল। নাবী [সাঃআঃ] বললেনঃ তুমি কি [তাহিয়্যাতুল মসজিদ] নামাজ আদায় করেছ? সে বলিল, না। তিনি বললেনঃ ওঠো এবং নামাজ আদায় কর।
-সহিহ। ইবনি মাজাহ- [১১১২], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ। আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহিহ। এ অনুচ্ছেদে এটি সর্বাধিক সহীহ্ হাদীস।জুম্মার নামাজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫১১. আবদুল্লাহ ইবনি আবু সারহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
আবু সাঈদ আল-খুদরী [রাদি.] জুমুআর দিন [মসজিদে] ঢুকলেন। মারওয়ান তখন খুতবা দিচ্ছিল। তিনি নামাজ আদায় করিতে দাঁড়ালেন। মারওয়ানের চৌকিদার তাঁকে বসিয়ে দেওয়ার [নামাজ হইতে বিরত রাখার] জন্য আসল। কিন্তু তিনি তা মানলেন না এবং নামাজ আদায় করিলেন। তিনি অবসর হলে আমরা তাহাঁর নিকট আসলাম। আমরা বললাম, আল্লাহ তাআলা আপনার উপর দয়া করুন, তারা আপনাকে পরাজিত করার জন্য এসেছিল। তিনি বলিলেন, আমি রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]কে এটা করিতে দেখেছি। এরপর আমি এ দুই রাকআত কখনও ছাড়তে পারি না। তারপর তিনি উল্লেখ করিলেন, জুমুআর দিন এক ব্যক্তি তাড়াহুড়া করে উস্কখুস্ক অবস্থায় মসজিদে আসল। নাবী [সাঃআঃ] তখন জুমুআর খুতবা দিচ্ছিলেন। তিনি তাকে নির্দেশ দিলে সে দুই রাকআত নামাজ আদায় করিল। আর নাবী [সাঃআঃ] খুতবা দিতে থাকলেন।
-হাসান সহিহ। ইবনি মাজাহ- [১১১৩]। আবু ঈসা বলেনঃ হাদীসটি হাসান সহিহ। এ হাদীসের এক রাবী ইবনি আবী উমার বলেন, ইবনি উআইনা মসজিদে এসে দুই রাকআত নামাজ আদায় করিতেন; ঈমাম তখন খুতবা দিতে থাকতেন। তিনি এটা আদায় করার নির্দেশও দিতেন। আবু আবদুর রহমান আল-মাকবুরীও তাঁকে এরকম করিতে দেখেছেন। মুহাম্মাদ ইবনি আজলান একজন সিকাহ রাবী এবং হাদীসশাস্ত্রে তিনি নির্ভরযোগ্য ছিলেন। এ অনুচ্ছেদে আবু হুরাইরা, জাবির এবং সাহল ইবনি সাদ [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। একদল আলিম এ হাদীস অনুযায়ী আমল করিয়াছেন। ঈমাম শাফি, আহমাদ ও ইসহাক একই রকম মত দিয়েছেন। অপর একদল বিদ্বান বলেছেন, ঈমাম যখন খুতবা দিতে থাকেন তখন কোন লোক আসলে সে বসে যাবে এবং নামাজ আদায় করিবে না। সুফিয়ান সাওরী ও কুফাবাসীগণ এই মত পালন করেন। কিন্তু প্রথম মতই বেশি সহিহ। আলা ইবনি খালিদ আল-কুরাশী [রঃ] হইতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, আমি হাসান আল-বাসরীকে জুমুআর দিন মসজিদে ঢুকতে দেখলাম, ঈমাম তখন খুতবা দিচ্ছিলেন। তিনি দুই রাকআত নামাজ আদায় করিলেন, তারপর বসলেন। হাদীসের অনুসরণ করার জন্যই হাসান এরকমটি করিলেন। তিনি এ সম্পর্কিত হাদীস জাবির [রাদি.] -এর মাধ্যমে রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট হইতে বর্ণনা করিয়াছেন। জুম্মার নামাজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ হাসান সহীহ
১৬. অনুচ্ছেদঃ খুতবা চলাকালে কথাবার্তা বলা মাকরূহ
৫১২. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ.
নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ যে ব্যক্তি জুমুআর দিনে ইমামের খুতবা দানকালে [অন্যকে] বুলল, চুপ কর সে অকারণে কথা বলিল।
-সহিহ। ইবনি মাজাহ- [১১১০], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ। এ অনুচ্ছেদে ইবনি আবু আওফা ও জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে।আবু ঈসা বলেনঃ আবু হুরাইরার হাদীসটি হাসান সহিহ। বিশেষজ্ঞগণ এ হাদীসের উপর আমল করিয়াছেন। তাঁরা ইমামের খুতবা চলাকালে কথা বলাকে মাকরূহ বলেছেন। যদি কেউ কথা বলে তবে হাত দিয়ে ইশারায় তাকে থামিয়ে দিবে। কিন্তু তাঁরা সালামের উত্তর দেওয়া ও হাঁচির জবাব দেওয়ার ব্যাপারে মত পার্থক্য করিয়াছেন। ঈমাম আহমাদ ও ইসহাক ইমামের খুতবা চলার সময়ে সালামের উত্তর দেওয়া ও হাঁচির উত্তরে ইয়ারহামুকাল্লাহ বলার সম্মতি দিয়েছেন। একদল তাবিঈ এটাকে মাকরূহ বলেছেন। ঈমাম শাফি এই মত গ্রহণ করিয়াছেন। জুম্মার নামাজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৭. অনুচ্ছেদঃ জুমুআর দিন লোকদের ডিঙ্গিয়ে সামনে যাওয়া মাকরূহ
৫১৩. সাহাল ইবনি মুআয ইবনি আনাস [রাদি.] হইতে তাহাঁর পিতা হইতে বর্ণীতঃ
তিনি [মুয়ায রা] বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, জুমুআর দিন [নামাজের সময়] যে ব্যক্তি লোকের ঘাড় টপকিয়ে [কাতার ভেদ করে] সামনে যাবার চেষ্টা করিল সে যেন [এই কাজ টিকে] জাহান্নামের পুল [সাঁকো] বানাল।
যঈফ, ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[১১১৬]। এ অনুচ্ছেদে জাবির [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি গারীব। কেবল রিশদীন ইবনি সাদের সূত্রেই আমরা এ হাদীস জানতে পেরেছি। বিশেষজ্ঞগণ এ হাদীসের পরিপ্রেক্ষিতে লোকদের ঘাড় টপকিয়ে কোন ব্যক্তির সামনে যাওয়া মাকরূহ বলেছেন এবং কঠোর হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করিয়াছেন। এ হাদীসের রাবী রিশদীন ইবনি সাদকে কিছু হাদীস বিশারদ স্মরণশক্তির দিক হইতে দুর্বল বলেছেন। জুম্মার নামাজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস
১৮. অনুচ্ছেদঃ ইমামের খুতবা চলাকালে পায়ের নলা জড়িয়ে বসা মাকরূহ
৫১৪. সাহল ইবনি মুআয [রাদি.] হইতে তাহাঁর পিতা হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] জুমুআর দিনে ইমামের খুতবা চলার সময়ে দুই হাতে [পায়ের] নলা জড়িয়ে ধরে বসতে নিষেধ করিয়াছেন।
-হাসান। মিশকাত- [১২৯৩], সহীহ্ আবু দাঊদ- [১০১৭] আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান। একদল বিদ্বান জুমুআর দিনে ঈমাম খুৎবা দান কালে পায়ের নলা জড়িয়ে ধরে বসাকে মাকরূহ বলেছেন, কিছু কিছু বিদ্বান এর অনুমতি দিয়েছেন। আব্দুল্লাহ ইবনি উমার তাহাদের একজন। ঈমাম আহমাদ ও ইসহাকের এটাই অভিমত। জুম্মার নামাজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ হাসান হাদীস
১৯. অনুচ্ছেদঃ মিম্বারে অবস্থানকালে দুআর মধ্যে হাত তোলা মাকরূহ
৫১৫. উমারা ইবনি রুওয়াইবা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
একদিন বিশর ইবনি মারওয়ান জুমুআর খুতবা দেওয়াকালে দুআ করার সময় উভয় হাত উপরে তুললেন। এতে উমারা বলিলেন, আল্লাহ এই বেঁটে হাত দুটিকে কুৎসিত করুন। আমি নিশ্চিতরূপে রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]কে দেখেছি, তিনি নিজের হাত দিয়ে এর বেশি কিছু করিতেন না। [অধঃস্তন রাবী] হুশাইম এ কথা বলার সময় নিজের তর্জনী দ্বারা ইঙ্গিত করিলেন।
-সহিহ। সহীহ্ আবু দাঊদ- [১০১২], মুসলিম। আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহিহ। জুম্মার নামাজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২০. অনুচ্ছেদঃ জুমুআর আযান সম্পর্কে
৫১৬. সায়িব ইবনি ইয়াযীদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ], আবু বাক্র ও উমার [রাদি.] -এর যুগে ঈমাম বের হয়ে আসলে এবং নামাজ শুরু হওয়ার সময় জুমুআর আযান হত। উসমান [রাদি.] খালীফা হওয়ার পর যাওরায় তৃতীয় আযানের প্রচলন করেন।
-সহিহ। ইবনি মাজাহ- [১১৩৫], বুখারী।আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহিহ। জুম্মার নামাজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২১. অনুচ্ছেদঃ ইমামের মিম্বার হইতে নামার পর কথা বলা
৫১৭. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] যখন মিম্বার হইতে নামতেন তখন প্রয়োজনবোধে কথা বলিতেন।
শাজ, ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[১১১৭] আমি [তিরমিযী] এ হাদীসটি কেবলমাত্র জারীর ইবনি হাযিমের সূত্রে জানতে পেরেছি। আমি মুহাম্মাদকে বলিতে শুনিয়াছি, জারীর ইবনি হাযিম এ হাদীসে সংশয়ে পড়ে গেছেন। আনাসের সূত্রে সাবিত যে বর্ণনা করিয়াছেন সেটাই সহিহ। তাতে আছেঃ “নামাযের জন্য ইকামাত দেওয়া হল। এমন সময় এক ব্যক্তি রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]–এর হাত ধরে কথা বলিতে থাকল। এমনকি লোকেরা নিদ্রার আবেশে আচ্ছন্ন হইতে লাগল”। মুহাম্মাদ বলেন, আসলে হাদীস হল এটি। কখনও কখনও জারীর ইবনি হাযিম অনুমানে লিপ্ত হন কিন্তু তিনি সত্যবাদী। যেমন এক হাদীসে রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ “নামাযের জন্য ইকামাত হয়ে গেলেও আমাকে না দেখা পর্যন্ত তোমরা নামাযে দাঁড়াবে না”। জারীরের বর্ণিত সনদের পরিপ্রেক্ষিতে এ হাদীসটি ভুল কিন্তু অন্য সনদে সহীহ্ হাদীস। তিনি রাবীদের সনদ বর্ণনায় ত্রুটি করে ফেলেন। যেমন হাদীসটি সাবিত আল-বুনানী আবু কাতাদা [রাদি.] -এর সূত্রে বর্ণনা করিয়াছেন। কিন্তু জারীর সংশয়ের বশবর্তী হয়ে আনাস [রাদি.] –এর সূত্রে বর্ণিত বলেছেন। জুম্মার নামাজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ শায
৫১৮. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, একদা আমি ইক্বামাত হয়ে যাওয়ার পর এক ব্যক্তিকে নাবী [সাঃআঃ]-এর সাথে কথা বলিতে দেখলাম। লোকটি তাহাঁর ও কিবলার মাঝখানে দাঁড়ানো ছিল। সে অনেক সময় কথা বলিল। নাবী [সাঃআঃ]-এর এই দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকার ফলে আমি লোকদেরকে নিদ্রার আবেশে আচ্ছন্ন হইতে দেখেছি।
-সহিহ। সহিহ আবু দাঊদ- [১৯৭], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ। আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহিহ। জুম্মার নামাজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২২. অনুচ্ছেদঃ জুমুআর নামাযের কিরাআত
৫১৯. রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর আযাদকৃত গোলাম আবু রাফি [রাদি.] -এর পুত্র উবাইদুল্লাহ [রঃ] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, একবার মারওয়ান আবু হুরাইরা [রাদি.] -কে মাদীনায় তাহাঁর প্রতিনিধি করে মক্কায় চলে গেলেন। আবু হুরাইরা [রাদি.] আমাদের জুমুআর নামাজ আদায় করালেন। তিনি প্রথম রাকআতে সূরা জুমুআ এবং দ্বিতীয় রাকআতে সূরা ইযা জাআকাল মুনাফিকূন পাঠ করিলেন। উবাইদুল্লাহ বলেন, আমি আবু হুরাইরার সাথে দেখা করে তাঁকে বললাম, আপনি এমন দুটি সূরা পাঠ করিলেন যা আলী [রাদি.] কুফায় পাঠ করিতেন। আবু হুরাইরা [রাদি.] বলিলেন, আমি রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]কে এ দুটো সূরা পাঠ করিতে শুনিয়াছি।
-সহিহ। ইবনি মাজাহ- [১১১৮], মুসলিম। এ অনুচ্ছেদে ইবনি আব্বাস, নুমান ইবনি বাশীর ও আবু ইনাবা আল-খাওলানী [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেনঃ আবু হুরাইরার হাদীসটি হাসান সহিহ। অপর এক বর্ণনায় আছে, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] জুমুআর নামাযে সাব্বিহিসমা রব্বিকাল আলা ও হাল আতাকা হাদীসুল গাশিয়া সূরা পাঠ করিতেন। উবাইদুল্লাহ ইবনি আবী রাফি আলী [রাদি.] -এর কাতিব [সচিব] ছিলেন। জুম্মার নামাজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৩. অনুচ্ছেদঃ জুমুআর দিন ভোরের নামাযের কিরাআত প্রসঙ্গে
৫২০. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] জুমুআর দিন ফজরের নামাযে তানযীলুস সাজদাহ এবং হাল আতা আলাল ইনসান সূরা দুটি পাঠ করিতেন।
-সহিহ। ইবনি মাজাহ- [৮২১], মুসলিম। এ অনুচ্ছেদে সাদ, ইবনি মাসউদ ও আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেনঃ ইবনি আব্বাসের হাদীসটি হাসান সহিহ। সুফিয়ান সাওরী ও অন্যরা এ হাদীসটি মুখাওয়ালের সূত্রে বর্ণনা করিয়াছেন। জুম্মার নামাজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৪. অবুচ্ছেদঃ জুমুআর [ফরযের] পূর্বের ও পরের নামাজ
৫২১. সালিম [রঃ] হইতে তাহাঁর পিতা হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] জুমুআর [ফরযের] পরে দুই রাকআত নামাজ আদায় করিতেন।
-সহিহ। ইবনি মাজাহ- [১১৩১], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ। এ অনুচ্ছেদে জাবির [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহিহ। নাফি [রঃ] ইবনি উমার [রাদি.] -এর নিকট হইতে একই রকম হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। একদল বিশেষজ্ঞ এ হাদীস অনুযায়ী আমল করিয়াছেন। ঈমাম শাফি ও আহমাদ একই রকম কথা বলেছেন। জুম্মার নামাজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫২২. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি জুমুআর [ফরয] নামাজ শেষ করে বাড়িতে গিয়ে দুই রাকআত নামাজ আদায় করিতেন। তারপর তিনি বলিতেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] এটা করিতেন।
-সহিহ। ইবনি মাজাহ- [১১৩০], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ। আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহিহ। জুম্মার নামাজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫২৩. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি জুমুআর নামাযের পর নামাজ আদায় করিতে চায় সে যেন চার রাকআত আদায় করে।
-সহিহ। ইবনি মাজাহ- [১১৩২]। আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান। সুফিয়ান ইবনি উয়াইনা বলেন, সুহাইল ইবনি আবু সালিহ হাদীসশাস্ত্রে একজন নির্ভরযোগ্য রাবী। একদল আলিম এ হাদীস অনুযায়ী আমল করেন। আবদুল্লাহ ইবনি মাসউদ [রাদি.] জুমুআর [ফরযের] পূর্বে চার রাকআত এবং পরে চার রাকআত [সুন্নাত] নামাজ আদায় করিতেন। আলী [রাদি.] প্রসঙ্গে বর্ণিত আছে যে, তিনি জুমুআর পর দুই রাকআত তারপর চার রাকআত আদায় করার হুকুম দিয়েছেন। সুফিয়ান সাওরী ও ইবনিল মুবারাক [রঃ] ইবনি মাসঊদের মত গ্রহণ করিয়াছেন। ইসহাক বলেছেন, জুমুআর দিন যদি মসজিদে [সুন্নাত] নামাজ আদায় করা হয় তবে চার রাকআত আদায় করিবে, আর যদি ঘরে আদায় করে তবে দুই রাকআত আদায় করিবে। তিনি দলীল হিসাবে এ হাদীস উল্লেখ করিয়াছেন,“রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] জুমুআর পর বাড়িতে গিয়ে দুই রাকআত [সুন্নাত] নামাজ আদায় করিয়াছেন।” তিনি আরো বলেছেনঃ “তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি জুমুআর [ফরযের] পরে নামাজ আদায় করিতে চায় সে যেন চার রাকআত আদায় করে।” আবু ঈসা বলেনঃ ইবনি উমার [রাদি.] যিনি নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট হইতে বর্ণনা করিয়াছেন, “জুমুআর পর তিনি বাড়িতে গিয়ে দুই রাকআত আদায় করিতেন।” তিনিও রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর পরে জুমুআর নামাযের পর মসজিদেই দুই রাকআত নামাজ আদায় করিয়াছেন, তারপর চার রাকআত আদায় করিয়াছেন। আতা [রঃ] হইতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, আমি ইবনি উমার [রাদি.] -কে জুমুআর [ফরয নামাযের] পর দুই রাকআত তারপর চার রাকআত নামাজ আদায় করিতে দেখেছি। -সহিহ। আবু দাঊদ [১০৩৫, ১০৩৮] আমর ইবনি দীনার বলেন, যুহরীর চাইতে ভালভাবে হাদীস বর্ণনা করিতে আমি আর কাউকে দেখিতে পাইনি এবং তাহাঁর মত আর কাউকে ধন-দৌলতকে তুচ্ছ ভাবিতে দেখিনি। তাহাঁর দৃষ্টিতে ধন-দৌলত উটের মলতুল্য তুচ্ছ জিনিস। আমর ইবনি দীনার যুহরীর চাইতে বেশি বয়সী ছিলেন। জুম্মার নামাজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৫. অনুচ্ছেদঃ যে ব্যক্তি জুমুআর নামাযের এক রাকআত পায়
৫২৪. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ যে ব্যক্তি [ইমামের সাথে] এক রাকআত নামাজ পেল সে পূর্ণ নামাজ পেল।
-সহিহ। ইবনি মাজাহ- [১১২২], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ। আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহিহ। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বেশিরভাগ সাহাবা ও অন্যান্যরা উল্লেখিত হাদীসের পক্ষে মত দিয়েছেন। তাঁরা বলেছেন, যে ব্যক্তি ইমামের সাথে জুমুআর এক রাকআত নামাজ পায় সে এর সাথে বাকী রাকআত পূর্ণ করিবে। যে ব্যক্তি দ্বিতীয় রাকআতের বৈঠকে জামাআতে উপস্থিত হয় সে চার রাকআত [যুহর] আদায় করিবে। সুফিয়ান সাওরী, ইবনিল মুবারাক, শাফিঈ, আহমাদ এবং ইসহাকও একই রকম মত দিয়েছেন। জুম্মার নামাজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৬. অনুচ্ছেদঃ জুমুআর দিন দুপুরের বিশ্রাম [কাইলুলা]
৫২৫. সাহল ইবনি সাদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমরা রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর যুগে জুমুআর নামাযের পরেই দুপুরের খাবার খেতাম ও বিশ্রাম নিতাম।
-সহিহ। ইবনি মাজাহ- [১০৯৯], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ। এ অনুচ্ছেদে আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহিহ। জুম্মার নামাজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৭. অনুচ্ছেদঃ জুমুআর নামাযের সময় তন্দ্রা আসলে নিজ স্থান হইতে উঠে যাবে
৫২৬. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ জুমুআর দিন তোমাদের কোন ব্যক্তির ঘুমের আবেশ আসলে সে যেন নিজ জায়গা হইতে উঠে যায়।
-সহিহ। সহিহ আবু দাঊদ- [১০২৫], তালীক ইবনি খুজাইমাহ্- [১৮১৯]। আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহিহ। জুম্মার নামাজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৮. অনুচ্ছেদঃ জুমুআর দিন সফর করা
৫২৭. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] আবদুল্লাহ ইবনি রাওয়াহা [রাদি.]–কে একটি সৈন্য বাহিনীর সাথে পাঠালেন। ঘটনাক্রমে তা ছিল জুমুআর দিন। তাহাঁর সঙ্গীরা সকাল বেলা রওয়ানা হয়ে গেলেন। তিনি বলিলেন, আমি পিছনে থেকে যেতে চাই, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] –এর সাথে নামাজ আদায় করব, তারপর তাহাদের সাথে মিলিত হব। তিনি রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]–এর সাথে নামাজ আদায় করলে রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাঁকে দেখে ফেললেন। তিনি তাঁকে বলিলেন, সকাল বেলা তোমার সঙ্গীদের সাথে একত্রে যেতে কোন্ জিনিষ তোমাকে বাধা দিল? তিনি বলিলেন, আমি আপনার সাথে নামাজ আদায় করার ইচ্ছা করেছি, তারপর তাহাদের সাথে গিয়ে মিলিত হব। তিনি বললেনঃ দুনিয়ার সমস্ত কিছু ব্যয় করলেও তুমি সকাল বেলায় চলে যাওয়া দলের সমান ফাযীলাত ও মর্যাদা লাভ করিতে পারবে না।
সনদ দুর্বল, আবু ঈসা বলেনঃ এটা গারীব হাদীস। আমরা এ হাদীসটি শুধুমাত্র উল্লেখিত সনদেই জেনেছি। শুবা বলেছেন, হাকাম মিকসামের নিকট মাত্র পাঁচটি হাদীস শুনেছেন। শুবা হাদীসগুলো গণনা করিয়াছেন কিন্তু তার মধ্যে উল্লেখিত হাদীসটি নেই। সম্ভবত হাকাম এ হাদীসটি মিকসামের নিকট শুনেননি। জুমুআর দিন সফর প্রসঙ্গে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে মতের অমিল আছে। একদল বলেছেন, যদি নামাযের ওয়াক্ত উপস্থিত না হয় তবে জুমুআর দিন সফরে বের হওয়ায় কোন সমস্যা নেই। অপর একদল বলেছেন, শুক্রবার সকাল হওয়ার পর জুমুআর নামাজ আদায়ের আগে সফরে বের হইবে না। জুম্মার নামাজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস
২৯. অনুচ্ছেদঃ জুমুআর দিন মিসওয়াক করা ও সুগন্ধি লাগানো
৫২৮. বারাআ ইবনি আযিব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ মুসলমানদের কর্তব্য হল, তারা যেন জুমুআর দিন গোসল করে। তাহাদের প্রত্যেকে যেন নিজ পরিবারে সুগন্ধি থাকলে তা ব্যবহার করে। তা না পাওয়া গেলে গোসলের পানিই তার জন্য সুগন্ধি।
যইফ, মিশকাত [১৪০০]। এ অনুচ্ছেদে আবু সাঈদ ও একজন আনসারী [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীস হাসান। উল্লেখিত হাদীসটি হুশাইম ইয়াযীদ ইবনি আবী যিয়াদ হইতে উক্ত সূত্রে অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেন। হুশাইমের এ বর্ণনাটি পূর্ববর্তী ইসমাঈল ইবনি ইবরাহীমের বর্ণনার চেয়ে বেশী উত্তম। কেননা পূর্ববর্তী সনদের রাবী ইসমাঈল ইবনি ইবরাহীমকে হাদীস শাস্ত্রে দুর্বল বলা হয়েছে। জুম্মার নামাজ – এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস
Leave a Reply