জুমার খুতবা সময় আযান নামাজ রাকাত এর বর্ণনা

জুমার খুতবা

জুমার খুতবা সময় আযান নামাজ রাকাত এর বর্ণনা >> সুনানে নাসাই শরিফের মুল সুচিপত্র দেখুন

পর্বঃ ১৪, জুমা, হাদীস (১৩৬৭ – ১৪৩২)

১.পরিচ্ছেদঃ জুমার নামাজ ফরয হওয়া
২.পরিচ্ছেদঃ জুমুআয় উপস্থিত না হওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কবাণী
৩.পরিচ্ছেদঃ বিনা কারণে জুমুআ ত্যাগ করার কাফ্‌ফারা
৪.পরিচ্ছেদঃ জুমার দিনের ফযীলতের বর্ণনা
৫.পরিচ্ছেদঃ শুক্রবার নাবী [সাঃআঃ]-এর উপর অধিক দরূদ পড়া
৬.পরিচ্ছেদঃ শুক্রবার মিসওয়াক করার আদেশ
৭.পরিচ্ছেদঃ শুক্রবার গোসল করার আদেশ
৮.পরিচ্ছেদঃ জুমার দিনে গোসল জরুরী হওয়া
৯.পরিচ্ছেদঃ জুমার দিন গোসল না করার অনুমতি
১০.পরিচ্ছেদঃ জুমার দিনে গোসল করার ফযীলত
১১.পরিচ্ছেদঃ জুমার পরিচ্ছদ
১২.পরিচ্ছেদঃ জুমার জন্য পায়ে হেঁটে যাওয়ার ফযীলত
১৩.পরিচ্ছেদঃ জুমুআয় সকাল সকাল গমন করা
১৪.পরিচ্ছেদঃ জুমার সময়
১৫.পরিচ্ছেদঃ জুমার জন্য আযান দেওয়া
১৬.পরিচ্ছেদঃ শুক্রবার দিন ইমামের [খুতবা দেওয়ার জন্য] বের হওয়ার পর আগত বাক্তির নামাজ আদায় করা
১৭.পরিচ্ছেদঃ খুতবা দেওয়ার সময় ইমামের দাঁড়ানোর স্থান
১৮.পরিচ্ছেদঃ খুতবা দেওয়ার সময় ইমামের দাঁড়ানো
১৯.পরিচ্ছেদঃ ইমামের নিকটবর্তী হওয়ার ফযীলত
২০.পরিচ্ছেদঃ শুক্রবার ইমামের মিম্বরে থাকা অবস্থায় মানুষের ঘাড়ের উপর দিয়ে যাওয়ার নিষেধাজ্ঞা
২১.পরিচ্ছেদঃ শুক্রবারে ইমামের খুতবা দেওয়ার সময় আগত ব্যক্তির নামাজ আদায় করা
২২.পরিচ্ছেদঃ জুমার দিনে খুতবার জন্য চুপ থাকা
২৩.পরিচ্ছেদঃ জুমার দিনে চুপ থাকা এবং অনর্থক কাজ পরিহার করার ফযীলত
২৪.পরিচ্ছেদঃ খুতবার প্রকার
২৫.পরিচ্ছেদঃ ইমামের খুতবায় জুমার দিনে গোসল করার প্রতি উৎসাহ প্রদান
২৬.পরিচ্ছেদঃ ইমামের জুমার দিনে খুতবায় সদকাহ্‌র প্রতি উদ্বুদ্ধ করা
২৭.পরিচ্ছেদঃ ঈমাম মিম্বরে থাকাবস্থায় মুসল্লীদের সম্বোধন করা
২৮.পরিচ্ছেদঃ খুতবায় কুরআন শরীফ তিলাওয়াত করা
২৯.পরিচ্ছেদঃ খুতবায় ইশারা করা
৩০.পরিচ্ছেদঃ জুমার দিন ইমামের খুতবা শেষ করার পূর্বে মিম্বর থেকে নেমে যাওয়া এবং তাহাঁর খুতবা বন্ধ করে দেওয়া, তারপর পুনরায় তা শুরু করা
৩১.পরিচ্ছেদঃ খুতবার সংক্ষেপকরণ মুস্তাহাব হওয়া
৩২.পরিচ্ছেদঃ খুতবা কতবার পাঠ করিবে ?
৩৩.পরিচ্ছেদঃ দুই খুতবার মাঝে বসার দ্বারা বিরতি করা
৩৪.পরিচ্ছেদঃ দুই খুতবার মাঝখানের বসা অবস্থায় চুপ থাকা
৩৫.পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় খুতবায় কুরআন শরীফ তিলাওয়াত করা এবং যিকির করা
৩৬.পরিচ্ছেদঃ মিম্বর থেকে অবতরণ করার পর কথা বলা এবং দাঁড়ানো
৩৭.পরিচ্ছেদঃ জুমার নামাজের [রাকাআত] সংখ্যা
৩৮.পরিচ্ছেদঃ জুমার নামাজে সূরা জুমুআ এবং মুনাফিকুন পড়া
৩৯.পরিচ্ছেদঃ জুমার নামাজে [আরবী] এবং [আরবী] পাঠ করা
৪০.পরিচ্ছেদঃ জুমার নামাজে কিরাআতে নুমান ইবনি বশীর [রাঃআঃ] থেকে বর্ণনাকারীদের বর্ণনার পার্থক্য
৪১.পরিচ্ছেদঃ যে ব্যক্তি জুমার নামাজের এক রাকআত পেল
৪২.পরিচ্ছেদঃ জুমার পরে মসজিদে নামাজের সংখ্যা
৪৩.পরিচ্ছেদঃ জুমার পরে ইমামের নামাজ আদায় করা
৪৪.পরিচ্ছেদঃ জুমার পরের দুরাকআত নামাজ দীর্ঘ করা
৪৫.পরিচ্ছেদঃ ঐ মুহূর্তের উল্লেখ যে মুহূর্তে জুমার দিনে দোয়া কবূল করা হয়

১.পরিচ্ছেদঃ জুমার নামাজ ফরয হওয়া

১৩৬৭. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, আমরা হলাম দুনিয়াতে [কালের পরিপ্রেক্ষিতে] পশ্চাৎবর্তী এবং আখিরাতে হব [মর্যাদার পরিপ্রেক্ষিতে] অগ্রবর্তী। তবে এতটুকু ব্যতিক্রম যে আমাদের পূর্বে তাহাদের কিতাব দেওয়া হয়েছিল এবং আমাদের তা তাহাদের পরে দেওয়া হয়েছে এবং এই জুমার দিন, যে দিনের সম্মান করা আল্লাহ তাআলা তাহাদের উপর ফরয করেছিলেন, তারা তাতে মতানৈক্য সৃষ্টি করেছিল। তারপর আল্লাহ তাআলা আমাদের সে দিন অর্থাৎ জুমার দিন সম্পর্কে সঠিক পথ দেখালেন। অতএব, সে দিনের ব্যাপারে অন্যান্য মানুষ হইবে আমাদের অনুসারী। ইহুদীরা আগামীকাল [শনিবার] এবং নাসারারা তার পরবর্তী দিন [রবিবারে] সম্মান করিবে।

হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৩৬৮. আবু হুরাইরা ও হুযায়ফা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তাঁরা বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, আল্লাহ তাআলা জুমার দিন সম্পর্কে আমাদের পূর্ববর্তীদের ভ্রষ্টতায় রেখেছিলেন, সুতরাং তা ইহুদীদের জন্য ছিল শনিবার এবং নাসারাদের জন্য রবিবার। তারপর আল্লাহ তাআলা আমাদের সৃষ্টি করিলেন এবং জুমার দিন সম্পর্কে সঠিক পথ দেখালেন। অতএব, আল্লাহ তাআলা আমাদের জন্য জুমার দিন শুক্রবার, ইহুদীদের জন্য শনিবার এবং নাসারাদের জন্য রবিবার নির্ধারণ করিলেন। অনুরূপভাবে তারা কিয়ামতের দিনেও আমাদের অনুসারী হইবে। আমরা দুনিয়ায় অবস্থানের পরিপ্রেক্ষিতে হব তাহাদের পশ্চাৎবর্তী এবং কিয়ামতের পরিপ্রেক্ষিতে হব তাহাদের অগ্রবর্তী; যা সৃষ্টির পূর্বেই তাহাদের জন্য নির্ধারিত হয়ে আছে।

হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২.পরিচ্ছেদঃ জুমুআয় উপস্থিত না হওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কবাণী

১৩৬৯. আবুল জাদ যামরী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

নাবী [সাঃআঃ]-এর সাহাবী ছিলেন, নাবী [সাঃআঃ] থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যে ব্যক্তি তিনটি জুমুআ তার প্রতি অবহেলা প্রদর্শন পূর্বক ছেড়ে দেয়, আল্লাহ তাআলা তার অন্তরে মোহর মেরে দেন।

হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহীহ

১৩৭০. ইবনি আব্বাস এবং ইবনি উমর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] মিম্বরের ধাপের উপর উপবিষ্ট অবস্থায় বলেছেন, হয় মানুষ জুমুআ ছেড়ে দেওয়া থেকে বিরত থাকিবে, না হয় আল্লাহ তাআলা তাহাদের অন্তরে মোহর মেরে দেবেন এবং তারা গাফিলদের পর্যায়ভুক্ত হয়ে যাবে।

হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৩৭১. মাহমূদ ইবনি গায়লান [রহঃ] হইতে বর্ণীত

নাবী [সাঃআঃ]-এর সহধর্মিনী হাফসা [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিত যে, নাবী [সাঃআঃ] বলেছেন, জুমার জন্য মধ্যাহ্নের পর যাত্রা করা প্রত্যেক সাবালক ব্যক্তির উপর ওয়াজিব।

হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩.পরিচ্ছেদঃ বিনা কারণে জুমুআ ত্যাগ করার কাফ্‌ফারা

১৩৭২. সামুরা ইবনি জুন্দুব [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, যে ব্যক্তি বিনা কারণে জুমুআ ছেড়ে দেয় সে যেন একটি দীনার সদকা করে দেয়, আর যদি তা না পায় তাহলে যেন অর্ধ দীনার সদকা করে দেয়।

হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৪.পরিচ্ছেদঃ জুমার দিনের ফযীলতের বর্ণনা

১৩৭৩. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, যে দিনসমূহে সূর্য উদিত হয় তন্মধ্যে সর্বোত্তম দিন হল জুমার দিন। সে দিন আদম [আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-কে সৃষ্টি করা হয়েছিল এবং সে দিনই তাঁকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয়েছিল এবং সে দিনই তাঁকে জান্নাত থেকে বের করে দেওয়া হয়েছিল।

হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৫.পরিচ্ছেদঃ শুক্রবার নাবী [সাঃআঃ]-এর উপর অধিক দরূদ পড়া

১৩৭৪. আওস ইবনি আওস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

নাবী [সাঃআঃ] থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, তোমাদের সকল দিনের মধ্যে পরমোৎকৃষ্ট দিন হল জুমার দিন, সে দিন আদম [আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-কে সৃষ্টি করা হয়েছিল, সে দিনই তাহাঁর ওফাত হয়, সে দিনই দ্বিতীয় বার শিঙ্গায় ফুঁক দেওয়া হইবে এবং সে দিনই কিয়ামত অনুষ্ঠিত হইবে। অতএব, তোমরা আমার উপর বেশি বেশি দরূদ পড়। কেননা, তোমাদের দরূদ আমার কাছে পেশ করা হয়। তাঁরা বলিলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! কিভাবে আমাদের দরূদ আপনার কাছে পেশ করা হইবে। যেহেতু আপনি [এক সময়] ওফাত পেয়ে যাবেন অর্থাৎ তাঁরা বলিলেন, আপনার দেহ মাটির সাথে মিশে যাবে। তিনি বলিলেন, নিশ্চিয় আল্লাহ তাআলা যমীনের জন্য নাবীগণের দেহ গ্রাস করা হারাম করে দিয়েছেন।

হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৬.পরিচ্ছেদঃ শুক্রবার মিসওয়াক করার আদেশ

১৩৭৫. আবু সাঈদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, প্রত্যেক বালেগ ব্যক্তির উপর শুক্রবার গোসল করা জরুরী এবং মিসওয়াক করা ও সুগন্ধি লাগানো তার জন্য যা সম্ভব হয়। কিন্তু [রাবী] বুকায়র [রহঃ] আব্দুর রহমান [রহঃ]-এর কথা উল্লেখ করেননি এবং সুগন্ধির ব্যাপারে বলেছেন, যদিও তা মেয়ে লোকের ব্যবহার্য সুগন্ধি থেকে হয়।

হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৭.পরিচ্ছেদঃ শুক্রবার গোসল করার আদেশ

১৩৭৬. ইবনি উমর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, যখন তোমাদের কেউ জুমার দিন পায় তখন সে যেন গোসল করে নেয়। {১}

হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৮.পরিচ্ছেদঃ জুমার দিনে গোসল জরুরী হওয়া

১৩৭৭. আবু সাঈদ খুদরী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, জুমার দিনের গোসল প্রত্যেক বালিগ ব্যক্তির উপর জরুরী।

হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৩৭৮. জাবির [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, প্রত্যেক মুসলমান ব্যক্তির উপর প্রত্যেক সাত দিনে একদিন গোসল করা জরুরী এবং সেই দিনটি হল জুমার দিন।

হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ লিগাইরিহি

৯.পরিচ্ছেদঃ জুমার দিন গোসল না করার অনুমতি

১৩৭৯. আব্দুল্লাহ ইবনি আলা [রহঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি কাসিম ইবনি মুহাম্মদ ইবনি আবু বকর [রাঃআঃ] থেকে শুনেছেন যে, তাঁরা জুমার দিনের গোসল সম্পর্কে আয়িশাহ [রাঃআঃ]-এর কাছে আলোচনা করলে তিনি বলিলেন, তখন লোকজন গ্রামে বাস করত, অতএব তারা জুমুআয় এমন অবস্থায় উপস্থিত হত যে, জীবিকা অর্জনের পেশায় ব্যস্ততার কারণে তাঁদের শরীরে ময়লা লেগে থাকত, যখন তাহাদের শরীরে হাওয়া লাগত, তাহাদের হাওয়া দুর্গন্ধযুক্ত হয়ে যেত, যাতে লোকজনের কষ্ট হত, ব্যাপারটি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]–কে অবহিত করলে তিনি বলিলেন, তোমরা গোসল কর না কেন?

হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৩৮০. সামুরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, যে ব্যক্তি জুমার দিন ওযূ করে তা তার জন্য যথেষ্ট এবং তা উত্তম কাজ আর যে ব্যক্তি গোসল করে তবে তা পরমোত্তম কাজ।

হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১০.পরিচ্ছেদঃ জুমার দিনে গোসল করার ফযীলত

১৩৮১. আওস ইবনি আওস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

নাবী [সাঃআঃ] থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যে ব্যক্তি মাথা এবং শরীর ধুয়ে উত্তম রূপে গোসল করে এবং জুমার সময়ের প্রথম সময়েই মসজিদে যায় এবং খুতবা শুরু থেকেই শুনতে পায় ও ইমামের নিকটবর্তী হয়ে বসে এবং কোন অনর্থক কাজ না করে [কথা না বলে], তার জন্য প্রত্যেক পদক্ষেপ এক বছর আমল করার সওয়াব হইবে অর্থাৎ এক বছর সিয়াম পালন করা এবং নামাজ আদায় করার।

হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১১.পরিচ্ছেদঃ জুমার পরিচ্ছদ

১৩৮২. আব্দুল্লাহ ইবনি উমর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

যে, উমর ইবনি খাত্তাব [রাঃআঃ] এক জোড়া কাপড় দেখে বলিলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! যদি আপনি এই জোড়াটা কিনে নিতেন এবং তা জুমার দিনে পরিধান করিতেন! এবং যখন কোন প্রতিনিধি দল আপনার কাছে আসে তখনও! রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, এই জোড়া কাপড় তারাই পরিধান করিবে যাদের জন্য আখিরাতে কোন অংশ নেই। তারপর একদিন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর কাছে অনুরূপ কাপড় হাদিয়া আসলে তিনি উমর [রাঃআঃ]-কে সেখান থেকে এক জোড়া কাপড় দিয়ে দিলেন, তখন উমর [রাঃআঃ] বলিলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আপনি এই কাপড় তো আমাকে দান করিলেন অথচ আপনি উতারিদের {১} কাপড় জোড়া সম্পর্কে যা যা বলার বলেছিলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, আমি তোমাকে তা পরিধান করার জন্য দেইনি। তখন উমর [রাঃআঃ] উক্ত কাপড় জোড়া তাহাঁর মক্কার এক মুসরিক ভাইকে দিয়ে দিলেন।

{১} উতারিদ ইবনি হাজিব তামীমী একজন সাহাবী, বনূ তামীমের প্রতিনিধি দলের সাথে তিনি মদীনায় আগমণ করে নাবী [সাঃআঃ]-এর কাছে মুসলমান হয়েছিলেন। হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৩৮৩. আব্দুর রহমান ইবনি আবু সাঈদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, জুমার দিনে গোসল প্রত্যেক বালিগ ব্যক্তির উপর জরুরী আর মিসওয়াক করা এবং যতটুকু সুগন্ধি ব্যবহার করা তার সামর্থ্যে কুলায়।

হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১২.পরিচ্ছেদঃ জুমার জন্য পায়ে হেঁটে যাওয়ার ফযীলত

১৩৮৪. আওস ইবনি আওস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, যে ব্যক্তি জুমার দিনে মাথা ও শরীর ধুয়ে উত্তম রূপে গোসল করে জুমার সময়ের প্রথম সময়েই মসজিদে যায়, কোন বাহনে আরোহণ না করে পায়ে হেঁটেই মসজিদে যায় এবং ইমামের নিকটবর্তী হয়ে বসে, নিশ্চুপ হয়ে খুতবা শুনে ও কোন অনর্থক কাজ না করে, তার জন্য প্রত্যেক পদক্ষেপে এক বছর আমল করার সওয়াব হইবে।

হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৩.পরিচ্ছেদঃ জুমুআয় সকাল সকাল গমন করা

১৩৮৫. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

নাবী [সাঃআঃ] বলেছেন, যখন জুমার দিন হয় ফেরেশতাগণ মসজিদের দরজাসমূহে বসে যান। এবং যারা জুমার জন্য আসতে থাকেন তাহাদের নাম লিপিবদ্ধ করিতে থাকেন। এরপর যখন ঈমাম খুতবা দেওয়ার জন্য বের হয়ে আসেন ফেরেশতাগণ খাতা বন্ধ করে দেন। আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, সূর্য পশ্চিম দিগন্তে হেলে যাওয়ার পর জুমার প্রথম আগমনকারী একটি উট সদকাকারীর ন্যায়, তারপর আগমনকারী একটি গরু সদকাকারীর ন্যায়, তারপর আগমনকারী একটি বকরী সদকাকারীর ন্যায়, তারপর আগমনকারী একটি হাঁস সদকাকারীর ন্যায়, তারপর আগমনকারী একটি মুরগী সদকাকারীর ন্যায়, তারপর আগমনকারী একটি ডিম সদকাকারীর ন্যায় সওয়াব পাবে।

হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৩৮৬. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি অত্র হাদিসকে সনদ সূত্রে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] পর্যন্ত পৌঁছিয়েছেন। নাবী [সাঃআঃ] বলেন যে, যখন জুমার দিন হয় মসজিদের দরজাসমূহের প্রত্যেক দরজায় ফেরেশতাগণ বসে থাকেন। তাঁরা মর্যাদা অনুযায়ী আগমনকারীদের নাম লিখে নেন। প্রথম আগমনকারীর নাম প্রথমে, যখন ঈমাম খুতবা দেওয়ার জন্য বের হয়ে আসেন তখন তাঁদের খাতা বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং তাঁরা খুতবা শুনতে থাকেন। অতএব, সূর্য পশ্চিম দিগন্তে হেলে যাওয়ার পর জুমআয় প্রথম আগমনকারী একটি উট সদকাকারীর ন্যায়, তারপর আগমনকারী একটি গরু সদকাকারীর ন্যায়, তারপর আগমনকারী একটি ভেড়া সদকাকারীর ন্যায় সওয়াব পাবে। এমনকি তিনি মুরগী এবং ডিমের কথাও উল্লেখ করেছিলেন।

হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৩৮৭. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ফেরেশতাগণ জুমার দিনে মসজিদের দরজাসমূহে বসে থাকেন, তাঁরা মর্যাদা অনুসারে মানুষের নাম লিপিবদ্ধ করিতে থাকেন। ফলে কতক মানুষ সেই লিস্টে উট সদকাকারীর ন্যায়, কতক মানুষ গরু সদকাকারীর ন্যায়, কতক মানুষ বকরী সদকাকারীর ন্যায়, কতক মানুষ মুরগী সদকাকারীর ন্যায়, কতক মানুষ চড়ুই সদকাকারীর ন্যায় এবং কতক মানুষ ডিম সদকাকারীর ন্যায় [সওয়াবের দিক থেকে]।

হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য.

১৪.পরিচ্ছেদঃ জুমার সময়

১৩৮৮. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, যে ব্যক্তি জুমার দিনে সহবাসের পর দেহ পবিত্র করার জন্য গোসলের ন্যায় গোসল করে এবং সূর্য পশ্চিম দিগন্তে হেলে যাওয়ার পর প্রথম মুহূর্তে মসজিদে গমন করে, সে যেন একটি উট সদকা করিল। যে ব্যক্তি দ্বিতীয় মুহূর্তে মসজিদে গমন করে, সে যেন একটি গরু সদকা করিল। যে ব্যক্তি তৃতীয় মুহূর্তে মসজিদে গমন করে, সে যেন একটি ভেড়া সদকা করিল আর যে ব্যক্তি চতুর্থ মুহূর্তে মসজিদে গমন করে সে যেন একটি মুরগী সদকা করিল এবং যে ব্যক্তি পঞ্চম মুহূর্তে মসজিদে গমন করে সে যেন একটি ডিম সদকা করিল। যখন ঈমাম খুতবা দেওয়ার জন্য বের হয়ে আসেন, তখন ফেরেশতাগণ উপস্থিত হয়ে খুতবা শুনতে থাকেন।

হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৩৮৯. জাবির ইবনি আব্দুল্লাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, জুমার দিনে এমন বারটি মুহূর্ত রয়েছে, এমন কোন মুসলিম বান্দা পাওয়া যাবে না, যে ঐ মুহূর্তগুলোতে আল্লাহর কাছে কোন কিছু চাইবে, কিন্তু তাকে তা দেওয়া হইবে না। অতএব, তোমরা ঐ মুহূর্তগুলোকে আসরের পর শেষ সময়ে অনুসন্ধান কর।

হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৩৯০. জাবির ইবনি আব্দুল্লাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, আমরা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে জুমার নামাজ আদায় করতাম। তারপর আমরা আমাদের আবাসে ফিরে এসে উটগুলোকে আরাম দিতাম। ঈমাম মুহাম্মদ বাকের [রহঃ] বলেন, আমি [জাবির রাঃআঃ-কে] জিজ্ঞাসা করলাম- কখন [ফিরে আসতেন]? তিনি বলিলেন, শীতকালে সূর্য পশ্চিম দিগন্তে হেলে যাওয়ার পর।

হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৩৯১. সালামা ইবনি আকওয়া [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, আমরা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে জুমার নামাজ আদায় করতাম, তারপর ঘরে ফিরে আসতাম, তখনও দেয়ালের এমন কোন ছায়ার সৃষ্টি হত না, যেখানে বিশ্রাম গ্রহণ করা যেতে পারে।

হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৫.পরিচ্ছেদঃ জুমার জন্য আযান দেওয়া

১৩৯২. ইবনি শিহাব [রহঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, আমার কাছে সাইব ইবনি ইয়াযীদ [রাঃআঃ] বর্ণনা করিয়াছেন যে, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আবু বকর এবং উমর [রাঃআঃ]-এর যুগে জুমার দিনে প্রথম আযান ছিল যখন ঈমাম জুমার দিনে মিম্বরের উপর বসতেন। উসমান [রাঃআঃ]-এর খিলাফতের যুগে মানুষের সংখ্যা যখন বেড়ে গেল, তখন উসমান [রাঃআঃ] জুমার দিনে তৃতীয় আযানের নির্দেশ দিলেন, এবং সর্বপ্রথম সে আযান যাওরা নামক স্থানে দেওয়া হয়েছিল। তারপর [অত্র] আযানের উপর এই আদেশ বলবৎ রয়ে গেল।

হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৩৯৩. ইবনি শিহাব [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

, সাইব ইবনি ইয়াযীদ [রাঃআঃ] তার কাছে বর্ণনা করিয়াছেন যে, যখন মদীনায় মানুষের সংখ্যা বেড়ে গিয়েছিল তখন উসমান [রাঃআঃ] তৃতীয় আযানের নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]–এর যুগে একটি মাত্র ব্যতীত অন্য আযান ছিল না, আর জুমার দিনে যখন ঈমাম [মিম্বরের উপর] বসতেন তখন উক্ত আযান দেওয়া হতো।

জুমার খুতবা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৩৯৪. সাইব ইবনি ইয়াযীদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, রাসূ্লুল্লাহ্ [সাঃআঃ] জুমার দিনে মিম্বরের উপর বসতেন, তখন বিলাল [রাঃআঃ] আযান দিতেন এবং যখন তিনি মিম্বর থেকে অবতরণ করিতেন তখন ইকামাত দিতেন। তারপর এরূপ আবু বকর এবং উমর [রাঃআঃ]-এর যুগেও [প্রচলিত] ছিল।

জুমার খুতবা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৬.পরিচ্ছেদঃ শুক্রবার দিন ইমামের [খুতবা দেওয়ার জন্য] বের হওয়ার পর আগত বাক্তির নামাজ আদায় করা

১৩৯৫. আমর ইবনি দীনার [রহঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, আমি জাবির ইবনি আব্দুল্লাহ [রাঃআঃ]-কে বলিতে শুনিয়াছি যে, রাসূ্লুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বলেছেন, যখন তোমাদের কেউ এমন সময় আসে যখন ঈমাম [খুতবা দেওয়ার জন্য] বের হয়ে আসে, তবে সে যেন দুরাকআত নামাজ আদায় করে নেয়। রাবী শুবা [রাঃআঃ] বলেন, জুমার দিনে।

জুমার খুতবা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৭.পরিচ্ছেদঃ খুতবা দেওয়ার সময় ইমামের দাঁড়ানোর স্থান

১৩৯৬. জাবির ইবনি আব্দুল্লাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

রাসূ্লুল্লাহ্ [সাঃআঃ] যখন খুতবা দিতেন, মসজিদের খর্জূর বৃক্ষের স্তম্ভের সাথে ঠেস দিতেন। তারপর যখন মিম্বর প্রস্তুত হয়ে গেল, এবং তিনি তাতে বসলেন, তখন উক্ত খর্জূর বৃক্ষের স্তম্ভটি উটনীর ন্যায় ক্রন্দন করিতে লাগল, এমনকি তা মসজিদের মুসল্লীরাও শুনছিল। রাসূ্লুল্লাহ্ [সাঃআঃ] উক্ত স্তম্ভের দিকে নেমে এসে তাকে জড়িয়ে ধরলেন। তখন উক্ত স্তম্ভটি চুপ হয়ে গেল।

জুমার খুতবা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৮.পরিচ্ছেদঃ খুতবা দেওয়ার সময় ইমামের দাঁড়ানো

১৩৯৭. কাব ইবনি উজরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, তিনি একদা মসজিদে প্রবেশ করিলেন, তখন আব্দুর রহমান ইবনি উম্মি হাকাম [রাঃআঃ] বসে খুতবা দিচ্ছিলেন, তিনি [উপস্থিত মুসল্লীদের লক্ষ্য করে] বলিলেন, আপনারা এর দিকে তাকান, ইনি বসে খুতবা দিচ্ছেন। অথচ আল্লাহ তাআলা বলেছেনঃ

وَإِذَا رَأَوْا تِجَارَةً أَوْ لَهْوًا انْفَضُّوا إِلَيْهَا وَتَرَكُوكَ قَائِمًا [الجمعة: 11]

অর্থঃ যখন তারা দেখল ব্যবসা ও কৌতুক, তখন তারা আপনাকে দাঁড়ান অবস্থায় রেখে তার দিকে ছুটে গেল। [৬২:১১]

জুমার খুতবা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৯.পরিচ্ছেদঃ ইমামের নিকটবর্তী হওয়ার ফযীলত

১৩৯৮. আওস ইবনি সাকাফী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

রাসূ্লুল্লাহ্ [সাঃআঃ] থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যে ব্যক্তি শরীর ও মাথা ধৌত করতঃ উত্তমরূপে গোসল করে ও জুমার সময়ের প্রথম সময়েই মসজিদে গিয়ে খুতবা প্রথম থেকে শুনতে পায় আর নিশ্চুপ হয়ে ইমামের নিকটে বসে এবং কোন অনর্থক কাজ না করে, তার জন্য প্রত্যেক পদক্ষেপে এক বছর আমল করার, এক বছর নামাজ আদায় করার এবং সিয়াম পালন করার ন্যায় সওয়াব হইবে।

জুমার খুতবা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২০.পরিচ্ছেদঃ শুক্রবার ইমামের মিম্বরে থাকা অবস্থায় মানুষের ঘাড়ের উপর দিয়ে যাওয়ার নিষেধাজ্ঞা

১৩৯৯. আব্দুল্লাহ ইবনি বুসর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, আমি শুক্রবারে তাহাঁর পাশে বসা ছিলাম, তারপর তিনি বলেন, এক ব্যক্তি মানুষের ঘাড় ডিঙ্গিয়ে আসছিল, রাসূ্লুল্লাহ্ [সাঃআঃ] তাঁকে বলিলেন, বসে পড়, তুমি মানুষকে কষ্ট দিচ্ছ।

জুমার খুতবা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২১.পরিচ্ছেদঃ শুক্রবারে ইমামের খুতবা দেওয়ার সময় আগত ব্যক্তির নামাজ আদায় করা

১৪০০. জাবির ইবনি আব্দুল্লাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

এক ব্যক্তি আসল, তখন নাবী [সাঃআঃ] শুক্রবারে মিম্বরের উপর ছিলেন, তিনি তাঁকে বলিলেন, তুমি কি দুরাকআত নামাজ আদায় করেছ? সে বলিল, না; তখন রাসূ্লুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বলিলেন, তুমি নামাজ আদায় করে নাও।

জুমার খুতবা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২২.পরিচ্ছেদঃ জুমার দিনে খুতবার জন্য চুপ থাকা

১৪০১. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

নাবী [সাঃআঃ] থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যে ব্যক্তি জুমার দিন ইমামের খুতবা দেওয়ার সময় তার সাথীকে বলিল চুপ থাক সে একটি অনর্থক কাজ করিল।

জুমার খুতবা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৪০২. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, আমি রাসূ্লুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনিয়াছি যে, তুমি যদি জুমার দিন ইমামের খুতবা দেওয়া অবস্থায় তোমার সাথীকে বল চুপ কর তা হলে তুমি একটি অনর্থক কাজ করলে।

জুমার খুতবা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২৩.পরিচ্ছেদঃ জুমার দিনে চুপ থাকা এবং অনর্থক কাজ পরিহার করার ফযীলত

১৪০৩. সালমান [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, আমাকে রাসূ্লুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বলেছেন, যেকোন ব্যক্তি জুমার দিনে পবিত্রতা গ্রহণ করে যেভাবে তাকে আদেশ করা হয়েছে, তারপর তার ঘর থেকে বের হয়ে জুমুআয় পৌঁছে যায় এবং নামাজ সমাপন না করা পর্যন্ত চুপ থাকে তার জন্য এ আমল জুমার পূর্ববর্তী সমুদয় গুনাহর কাফ্‌ফারা হয়ে যায়।

জুমার খুতবা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২৪.পরিচ্ছেদঃ খুতবার প্রকার

১৪০৪. আব্দুল্লাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

নাবী [সাঃআঃ] থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] আমাদেরকে খুতবায়ে হাজাত শিক্ষা দিলেনঃ [আরবী]

এরপর তিনটি আয়াত পাঠ করলেনঃ [আরবী]

অর্থঃ হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহকে যথার্থভাবে ভয় কর এবং তোমরা আত্মসমর্পণকারী না হয়ে কোন অবস্থায় মর না। [৩:১০২]

“হে মানব! তোমরা তোমাদের প্রতিপালককে ভয় কর যিনি তোমাদেরকে এক ব্যক্তি থেকে সৃষ্টি করিয়াছেন ও যিনি তা হইতে তাহাঁর সঙ্গিনী সৃষ্টি করেন, যিনি তাঁদের দুজন থেকে বহু নর-নারী ছড়িয়ে দেন; এবং আল্লাহকে ভয় কর যাঁর নামে তোমরা একে অপরের নিকট যাঞ্চ্রা কর এবং সতর্ক থাক জ্ঞাতিবন্ধন সম্পর্কে। আল্লাহ তোমাদের উপর তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখেন। [৪:১] হে মুমিনগণ! আল্লাহকে ভয় কর এবং সঠিক কথা বল।” [৩৩:৭০]।

জুমার খুতবা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২৫.পরিচ্ছেদঃ ইমামের খুতবায় জুমার দিনে গোসল করার প্রতি উৎসাহ প্রদান

১৪০৫. ইবনি উমর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, রাসূ্লুল্লাহ্ [সাঃআঃ] [একদিন] আমাদের সামনে খুতবা দিলেন। তিনি বলিলেন, যখন তোমাদের কেউ জুমার নামাজ আদায় করার জন্য যাওয়ার ইচ্ছা করে তখন সে যেন গোসল করে নেয়।

জুমার খুতবা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৪০৬. ইবরাহীম ইবনি নাশীত [রহঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি ইবনি শিহাব [রহঃ]-কে জুমার দিনের গোসল করা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, তা হলো সুন্নাত। তিনি আরও বলেন, আমার কাছে এ সম্পর্কে সালিম ইবনি আব্দুল্লাহ তাহাঁর পিতা [আব্দুল্লাহ] [রাঃআঃ] থেকে বর্ণনা করিয়াছেন যে, রাসূ্লুল্লাহ্ [সাঃআঃ] এ সম্পর্কে মিম্বরের উপর বর্ণনা করিয়াছেন।

জুমার খুতবা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৪০৭. আব্দুল্লাহ ইবনি উমর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

রাসূ্লুল্লাহ্ [সাঃআঃ] থেকে বর্ণিত। তিনি মিম্বরের উপর দণ্ডায়মান অবস্থায় বলেছেন যে, তোমাদের মধ্যে যে জুমার দিন পায় সে যেন গোসল করে নেয়।

জুমার খুতবা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২৬.পরিচ্ছেদঃ ইমামের জুমার দিনে খুতবায় সদকাহ্‌র প্রতি উদ্বুদ্ধ করা

১৪০৮. আবু সাঈদ খুদরী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

এক ব্যাক্তি জুমার দিনে ছিন্ন বস্ত্রে আসল, তখন নাবী [সাঃআঃ] খুতবা দিচ্ছিলেন। তখন রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাকে বলিলেন, তুমি কি নামাজ আদায় করেছ? সে বলিল, না; তিনি বলিলেন, তুমি দুরাকআত নামাজ আদায় করে নাও এবং লোকদের সদকাহ্‌র প্রতি উদ্বুদ্ধ করিলেন। তারা কাপড় দান করিল, তিনি সেখান থেকে তাকে দুটি কাপড় দিয়ে দিলেন। দ্বিতীয় জুমুআয় ঐ ব্যক্তি আসল, তখন রাসূ্লুল্লাহ্ [সাঃআঃ] খুতবা দিচ্ছিলেন- তিনি লোকদের সদকাহ্‌র প্রতি উদ্বু্দ্ধ করিলেন। রাবী বলেন, ঐ ব্যক্তি ও তার দুকাপড়ের একটা সাদকাহ্ করে দিলেন। তখন রাসূ্লুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বলিলেন, এই ব্যক্তি গত জুমুআয় ছিন্ন বস্ত্রে এসেছিল, তখন আমি লোকদের সদকাহ্ করার আদেশ দিয়েছিলাম, তারা কাপড় দান করেছিল, তখন আমি একে সেখান থেকে দুটো কাপড় দেওয়ার আদেশ দিয়েছিলাম। তারপর এই ব্যক্তি এখন আসল, এবং আমি লোকদের সদকাহ্‌র আদেশ দিলাম, তো লোকটি তার দুটো কাপড় থেকে একটা দান করে দিল। নাবী [সাঃআঃ] তাকে ধমক দিলেন এবং বলিলেন, তুমি তোমার কাপড় নিয়ে নাও। {১}

{১} এ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, অভাবী মানুষ প্রথমে নিজের অভাব দূর করিবে, এরপর যদি কিছু উদ্ধৃত্ত থাকে তবে তা সদকা করিতে পারে।জুমার খুতবা হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

২৭.পরিচ্ছেদঃ ঈমাম মিম্বরে থাকাবস্থায় মুসল্লীদের সম্বোধন করা

১৪০৯. জাবির ইবনি আব্দুল্লাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, [একদা] নাবী [সাঃআঃ]–এর জুমার দিনে খুতবা দেওয়ার সময় এক ব্যক্তি আসল। নাবী [সাঃআঃ] তাকে বলিলেন, তুমি কি নামাজ আদায় করেছ? সে বলিল, না; তিনি বলিলেন, তুমি দাঁড়াও এবং নামাজ আদায় কর।

জুমার খুতবা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৪১০. আবু বাকরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]–কে মিম্বরের উপর দেখেছি, এবং ঈমাম হাসান [রাঃআঃ] তাহাঁর সঙ্গে ছিলেন। তিনি একবার লোকদের দিকে তাকাচ্ছিলেন, আর একবার হাসান [রাঃআঃ]-এর দিকে তাকাচ্ছিলেন এবং বলছিলেন, নিশ্চয়ই আমার এ দৌহিত্র সর্দার হইবে এবং সম্ভবত আল্লাহ তাআলা তার দ্বারা মুসলমানদের দুটি বড় দলের মধ্যে সন্ধি স্থাপন করাবেন।

জুমার খুতবা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২৮.পরিচ্ছেদঃ খুতবায় কুরআন শরীফ তিলাওয়াত করা

১৪১১. হারিছা ইবনি নুমান [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, আমি ক্বাফ ওয়াল কুরআনিল মাজিদ, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর মুখ থেকে মুখস্থ করেছিলাম, যখন তিনি জুমার দিনে মিম্বরের উপর ছিলেন।

জুমার খুতবা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২৯.পরিচ্ছেদঃ খুতবায় ইশারা করা

১৪১২. হুসায়ন [রহঃ] হইতে বর্ণীত

যে, বিশর ইবনি মারওয়ান [রাঃআঃ] জুমার দিন মিম্বরের উপর থাকাবস্থায় উভয় হাত উঠালেন, তখন তাঁকে উমারা ইবনি রুওয়ায়বা ছাকাফী [রাঃআঃ] তিরস্কার করে বলিলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]–এর থেকে বেশি কিছু করেন নি, আর তাহাঁর তর্জনী দ্বারা ইশারা করিলেন।

জুমার খুতবা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩০.পরিচ্ছেদঃ জুমার দিন ইমামের খুতবা শেষ করার পূর্বে মিম্বর থেকে নেমে যাওয়া এবং তাহাঁর খুতবা বন্ধ করে দেওয়া, তারপর পুনরায় তা শুরু করা

১৪১৩. বুরায়দা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] খুতবা দিচ্ছিলেন এমন সময় ঈমাম হাসান ও ঈমাম হুসায়ন [রাঃআঃ] আগমন করিলেন; তাঁদের পরিধানে দুটি লাল কুর্তা ছিল। তাঁরা দুর্বলতা হেতু এদিক-ওদিক পড়ে যাচ্ছিলেন, তাই নাবী [সাঃআঃ] নেমে আসলেন এবং তাহাঁর খুতবা বন্ধ করে দিলেন, তিনি তাঁদের উভয়কে উঠিয়ে নিলেন ও মিম্বরের উপর ফিরে আসলেন। তারপর বলিলেন, আল্লাহ তাআলা সত্যই বলেছেনঃ

إِنَّمَا أَمْوَالُكُمْ وَأَوْلَادُكُمْ فِتْنَةٌ [التغابن: 15]

অর্থঃ তোমাদের সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি তো তোমাদের জন্য পরীক্ষা [৬৪:১৫]। আমি এদের দুই জনকেই দেখলাম যে, তাহাদের কুর্তা নিয়ে তারা এদিক-ওদিক পড়ে যাচ্ছিল, কাজেই আমি ধৈর্যধারণ করিতে পারলাম না, আমি আমার খুতবা বন্ধ করে দিলাম এবং তাঁদের উঠিয়ে নিয়ে আসলাম।

জুমার খুতবা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩১.পরিচ্ছেদঃ খুতবার সংক্ষেপকরণ মুস্তাহাব হওয়া

১৪১৪. আব্দুল্লাহ ইবনি আবু আউফা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যিকির অত্যধিক পরিমাণে করিতেন এবং অনর্থক কাজ একেবারেই করিতেন না আর নামাজ দীর্ঘ করিতেন, ও খুতবা সংক্ষেপ করিতেন, তিনি বিধবা ও গরীবদের সাথে চলা-ফেরায় সংকোচ বোধ করিতেন না; যাতে তিনি তাহাদের প্রয়োজন পূরণ করিতে পারেন।

জুমার খুতবা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩২.পরিচ্ছেদঃ খুতবা কতবার পাঠ করিবে ?

১৪১৫. জাবির ইবনি সামুরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, আমি নাবী [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে উঠাবসা করেছি। আমি তাঁকে দাঁড়ানো অবস্থায় ছাড়া কখনো খুতবা দিতে দেখিনি। তিনি বসতেন, পুনরায় দাঁড়িয়ে যেতেন ও দ্বিতীয় খুতবা পাঠ করিতেন।

জুমার খুতবা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩৩.পরিচ্ছেদঃ দুই খুতবার মাঝে বসার দ্বারা বিরতি করা

১৪১৬. আব্দুল্লাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] দুইটি খুতবা দিতেন দাঁড়ানো অবস্থায় এবং উভয়ের মাঝে বসার দ্বারা বিরতি করিতেন।

জুমার খুতবা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩৪.পরিচ্ছেদঃ দুই খুতবার মাঝখানের বসা অবস্থায় চুপ থাকা

১৪১৭. জাবির ইবনি সামুরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে দেখেছি যে, তিনি জুমার দিনে দাঁড়ানো অবস্থায় খুতবা দিতেন তারপর বসতেন, যে বসাতে কথা বলিতেন না। পুনরায় দাঁড়িয়ে যেতেন এবং দ্বিতীয় খুতবা দিতেন। অতএব, যে ব্যক্তি তোমাদের কাছে বর্ণনা করে যে, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বসাবস্থায় খুতবা দিতেন তা হলে সে মিথ্যা বলিল।

জুমার খুতবা হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

৩৫.পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় খুতবায় কুরআন শরীফ তিলাওয়াত করা এবং যিকির করা

১৪১৮. জাবির ইবনি সামুরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] দাঁড়িয়ে খুতবা দিতেন, তারপর বসতেন, পুনরায় দাঁড়াতেন ও কিছু আয়াত তিলাওয়াত করিতেন এবং আল্লাহ্‌ তাআলার যিকির করিতেন। আর তাহাঁর খুতবা হত পরিমিত আকারের, এবং তাহাঁর নামাজ হত মধ্যম প্রকারের।

জুমার খুতবা হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

৩৬.পরিচ্ছেদঃ মিম্বর থেকে অবতরণ করার পর কথা বলা এবং দাঁড়ানো

১৪১৯. আনাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] মিম্বর থেকে অবতরণ করার পর কেউ তাহাঁর সামনে আসলে তিনি তার সাথে কথা বলিতেন এবং নাবী [সাঃআঃ] দাঁড়িয়ে তার প্রয়োজন মিটিয়ে দিতেন, তারপর তাহাঁর নামাজের স্থানে এসে নামাজ আদায় করে নিতেন।

জুমার খুতবা হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য

৩৭.পরিচ্ছেদঃ জুমার নামাজের [রাকাআত] সংখ্যা

১৪২০. আব্দুর রহমান ইবনি আবু লায়লা [রহঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, উমর [রাঃআঃ] বলেছেন, জুমার নামাজ দুরাকআত, ঈদুল ফিত্‌রের নামাজ দুরাকআত, ঈদুল আযহার নামাজ দুরাকআত এবং সফরের অবস্থার নামাজও দুরাকআত। হযরত মুহাম্মদ [সাঃআঃ]-এর ভাষ্য মতে সে দুরাকআতই পূর্ণ নামাজ, সংক্ষেপ নয়। আবু আব্দুর রহমান নাসাঈ [রহঃ] বলেন, আব্দুর রহমান ইবনি আবু লায়লা উমর [রাঃআঃ] থেকে শুনেন নি।

জুমার খুতবা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩৮.পরিচ্ছেদঃ জুমার নামাজে সূরা জুমুআ এবং মুনাফিকুন পড়া

১৪২১. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] জুমার দিনে ফজরের নামাজে [আরবী] পাঠ করিতেন, আর জুমার নামাজে সূরা জুমুআ ও সূরা মুনাফিকূন পাঠ করিতেন।

জুমার খুতবা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩৯.পরিচ্ছেদঃ জুমার নামাজে [আরবী] এবং [আরবী] পাঠ করা

১৪২২. সামুরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] জুমার নামাজে [আর-বী] এবং [আর-বী] পড়তেন।

الْجُمُعَةِ بِسَبِّحِ اسْمَ رَبِّكَ الْأَعْلَى وَهَلْ أَتَاكَ حَدِيثُ الْغَاشِيَةِ

জুমার খুতবা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৪০.পরিচ্ছেদঃ জুমার নামাজে কিরাআতে নুমান ইবনি বশীর [রাঃআঃ] থেকে বর্ণনাকারীদের বর্ণনার পার্থক্য

১৪২৩. উবায়দুল্লাহ ইবনি আব্দুল্লাহ [রহঃ] হইতে বর্ণীত

যাহ্‌হাক ইবনি কায়স [রহঃ] নুমান ইবনি বশীর [রাঃআঃ]-কে প্রশ্ন করিলেন, জুমার দিনে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] সূরা জুমার পরে কোন্‌ সূরা পাঠ করিতেন? তিনি বলিলেন, তিনি

هَلْ أَتَاكَ حَدِيثُ الْغَاشِيَةِ

পাঠ করিতেন।

হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৪২৪. নুমান ইবনি বশীর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] জুমার নামাজে

سَبِّحِ اسْمَ رَبِّكَ الْأَعْلَى

এবং

هَلْ أَتَاكَ حَدِيثُ الْغَاشِيَةِ

পাঠ করিতেন। আর কখনো কখনো ঈদ এবং জুমুআ একত্রিত হয়ে যেত তখন ঈদ এবং জুমার উভয় নামাজে ঐ দুই সূরা পড়তেন।

হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৪১.পরিচ্ছেদঃ যে ব্যক্তি জুমার নামাজের এক রাকআত পেল

১৪২৫. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

নাবী [সাঃআঃ] থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যে ব্যক্তি জুমার নামাজের এক রাকআত পেল সে ব্যক্তি জুমুআ পেল।

হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য

৪২.পরিচ্ছেদঃ জুমার পরে মসজিদে নামাজের সংখ্যা

১৪২৬. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, যখন তোমাদের কেউ জুমার নামাজ আদায় করে তখন সে যেন তার পরে চার রাকআত নামাজ আদায় করে।

হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৪৩.পরিচ্ছেদঃ জুমার পরে ইমামের নামাজ আদায় করা

১৪২৭. ইবনি উমর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] জুমার পরে কোন নামাজ আদায় করিতেন না, যতক্ষণ না ঘরে ফিরে আসতেন, তারপর দুরাকআত নামাজ আদায় করিতেন।

হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৪২৮. সালিমের পিতা [ইবনি উমর] [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] জুমার পরে তাহাঁর ঘরে দুরাকআত নামাজ আদায় করিতেন।

হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৪৪.পরিচ্ছেদঃ জুমার পরের দুরাকআত নামাজ দীর্ঘ করা

১৪২৯. ইবনি উমর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি জুমার পরে দুরাকআত নামাজ আদায় করিতেন এবং তা দীর্ঘ করিতেন। তিনি বলিতেন যে, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাই করিতেন।

হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য

৪৫.পরিচ্ছেদঃ ঐ মুহূর্তের উল্লেখ যে মুহূর্তে জুমার দিনে দোয়া কবূল করা হয়

১৪৩০. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, আমি একদা তূর নামক স্থানে আসলাম। তথায় আমি কাব [রাঃআঃ]-কে পেলাম, সেখানে আমি এবং তিনি একদিন অবস্থান করলাম। আমি তাঁকে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] থেকে হাদিস বর্ণনা করতাম, আর তিনি আমাকে তাওরাত থেকে বর্ণনা করিতেন। আমি তাঁকে বললাম, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, সর্বোৎকৃষ্ট দিন যাতে সূর্য উদিত হয়, জুমার দিন। সেই দিনে আদম [আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-কে সৃষ্টি করা হয়েছে, সে দিনই তাকে জান্নাত থেকে অবতরণ করানো হয়েছে, সে দিনই তাহাঁর তওবা কবূল করা হয়েছে, সে দিনই তাহাঁর মৃত্যু হয়েছে, সে দিনই কিয়ামত অনুষ্ঠিত হইবে। ভূপৃষ্ঠে বনী আদম ছাড়া এমন কোন জীব-জন্তু নেই যা জুমার দিন সূর্যোদয় পর্যন্ত কিয়ামত সংঘটিত হওয়ার ভয়ে উৎকণ্ঠিত হয়ে না থাকে। সেই দিনে এমন একটি মুহূর্ত রয়েছে যে কোন মুমিন নামাজে রত থাকা অবস্থায় তা পেয়ে আল্লাহ্‌র কাছে যদি সেই সময় কোন কিছু প্রার্থনা করে, আল্লাহ্‌ তাকে নিশ্চয় তা দেবেন। তারপর কাব জিজ্ঞাসা করিলেন, সেই মুহূর্তটি প্রতি বছর কি একদিনই হয়? আমি বললাম, বরং তা প্রতি জুমার দিনেই হয়। তখন কাব তাওরাত থেকে পাঠ করিলেন, তারপর বলিলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] সত্যিই বলেছেন, তা প্রত্যেক জুমার দিনেই হয়। তখন আমি বের হলে বসরা ইবনি আবু বসরা গিফারী [রাঃআঃ]-এর সাথে আমার সাক্ষাৎ হয়। তিনি বলিলেন, তুমি কোথা থেকে আসছ? আমি বললাম, তূর থেকে। তিনি বলিলেন, যদি তোমার সেখানে যাওয়ার পূর্বে তোমার সাথে আমার সাক্ষাৎ হতো, তা হলে তুমি সেখানে যেতে না। আমি তাঁকে বললাম, তুমি এমন কথা কেন বলছ? আমি তো রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনিয়াছি যে, তিনটি মসজিদ ছাড়া সফর করা যাবে না। মসজিদে হারাম, আমার মসজিদ [মসজিদে নববী] এবং মসজিদে বায়তুল মুকাদ্দাস। তারপর আমি আব্দুল্লাহ ইবনি সালাম [রাঃআঃ]-এর সাথে সাক্ষাৎ করে বললাম, যদি আপনি আমাকে দেখিতেন যে, আমি তূর নামক স্থানে গিয়েছি ও কাব [রাঃআঃ]-এর সাথে সাক্ষাৎ করেছি আর আমি এবং তিনি একদিন সেখানে অবস্থান করেছি। আমি তাঁকে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] থেকে হাদিস বর্ণনা করে শুনাতাম আর তিনি আমাকে তাওরাত থেকে বর্ণনা করে শুনাতেন। তখন আমি তাঁকে বললাম যে, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, সর্বোৎকৃষ্ট দিন যাতে সূর্য উদিত হয় জুমার দিন। সেই দিন আদম [আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-কে সৃষ্টি করা হয়েছে, সে দিনই তাঁকে জান্নাত থেকে অবতরণ করানো হয়েছে, সে দিনই তাহাঁর তওবা কবূল করা হয়েছে, সে দিনই তাহাঁর মৃত্যু হয়েছে এবং সে দিনই কিয়ামত অনুষ্ঠিত হইবে। ভূ-পৃষ্ঠে বনী আদম ছাড়া এমন কোন জীব-জন্তু নেই, জুমার দিন সূর্যোদয় পর্যন্ত কিয়ামত সংঘটিত হওয়ার ভয়ে উৎকর্ণ হয়ে না থাকে। সেই দিনে এমন একটি মুহূর্ত রয়েছে যে কোন মুমিন নামাজে রত থাকা অবস্থায় তা পেয়ে আল্লাহ্‌র কাছে যদি সেই সময় কোন কিছু প্রার্থনা করে আল্লাহ্‌ তাকে তা নিশ্চয় দেবেন। কাব [রাঃআঃ] বলেছেন, সেই দিনটি প্রতি বছর একদিনই হয়, তখন আব্দুল্লাহ ইবনি সালাম [রাঃআঃ] বলিলেন, কাব [রাঃআঃ] সত্য বলেনি। আমি [আবু হুরাইরা] বললাম, তারপর কাব [রাঃআঃ] পুনরায় [তওরাত] পড়লেন। তখন তিনি বলিলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] সত্যই বলেছেন, সেই মুহূর্তটি প্রত্যেক জুমার দিনেই হয়। তখন আব্দুল্লাহ [রাঃআঃ] বলিলেন, কাব [রাঃআঃ] সত্যই বলেছেন, আমি সেই মুহূর্তটি সম্পর্কে অবশ্যই অবগত আছি। আমি বললাম, হে আমার ভাই! আপনি আমাকে সেই মুহূর্তটি সম্পর্কে বর্ণনা করুন। তিনি বলিলেন, তা হল জুমার দিনে সূর্য অস্ত যাওয়ার পূর্বে শেষ সময়। তখন আমি বললাম, আপনি কি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেননি যে, কোন মুমিন ব্যক্তি নামাজে রত থাকা অবস্থায় তা পায় [এবং সে সময় কোন দোয়া করলে আল্লাহ্‌ কবুল করেন] অথচ সে সময় তো কোন নামাজ নেই। তিনি বলিলেন, তুমি কি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুননি যে, যে ব্যক্তি নামাজ আদায় করে এবং বসে বসে পরবর্তী নামাজের অপেক্ষায় থাকে, সে ব্যক্তি নামাজেই থাকিবে, যতক্ষণ পর্যন্ত না তার কাছে পরবর্তী নামাজ উপস্থিত হয়। আমি বললাম, কেন নয়? নিশ্চয়! তিনি বলিলেন, এটাও সেই রকমই।

হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৪৩১. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নিশ্চয়ই জুমার দিনে এমন একটি মুহূর্ত রয়েছে কোন মুসলিম বান্দা উক্ত মুহূর্তটি পেয়ে আল্লাহ্‌র কাছে কোন কিছু প্রার্থনা করলে অবশ্যই আল্লাহ তাকে তা নিশ্চয় দেবেন।

হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

১৪৩২. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, আবুল কাসেম [সাঃআঃ] বলেছেন যে, নিশ্চয় জুমার দিনে এমন একটি মুহূর্ত রয়েছে যে, কোন মুসলিম বান্দা সেই সময়টি পেয়ে নামাজে দাঁড়িয়ে আল্লাহ তাআলার কাছে কোন কিছু প্রার্থনা করলে নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা তাঁকে তা দেবেন। [আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] বলেন, নাবী [সাঃআঃ] বলেছিলেন যে, এ মুহূর্তটি সংকীর্ণ।]

হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদি

Comments

One response to “জুমার খুতবা সময় আযান নামাজ রাকাত এর বর্ণনা”

Leave a Reply