জিহাদ অভিযানে অংশগ্রহণকারী মহিলাদের জন্য গনীমাতের কোন অংশ নেই

জিহাদ অভিযানে অংশগ্রহণকারী মহিলাদের জন্য গনীমাতের কোন অংশ নেই

জিহাদ অভিযানে অংশগ্রহণকারী মহিলাদের জন্য গনীমাতের কোন অংশ নেই >> সহীহ মুসলিম শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন >> নিম্নে মুসলিম শরীফ এর একটি অধ্যায়ের হাদিস পড়ুন

৪৮. অধ্যায়ঃ জিহাদ অভিযানে অংশগ্রহণকারী মহিলাদের জন্য গনীমাতের কোন অংশ নেই, তবে স্বেচ্ছায় তাদের কিছু দেয়া এবং শত্রুপক্ষের শিশুদের হত্যা করা নিষিদ্ধ

৪৫৭৮. ইয়াযীদ ইবনি হুরমুয [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

নাজদাহ্‌ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] ইবনি আব্বাস [রাদি.] -কে পাঁচটি ব্যাপারে প্রশ্ন করে পত্র লিখলেন। তখন ইবনি আব্বাস [রাদি.] বলিলেন, যদি আমি ইল্‌ম গোপনকারী হওয়ার আশংকা না করতাম তাহলে আমি তার কাছে জবাব লিখতাম না। নাজ্‌দাহ সে পত্রে তাঁকে লিখেছিলেন, হাম্‌দ ও সালাতের পর আমাকে অবহিত করুন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কি মহিলাদেরকে নিয়ে যুদ্ধযাত্রা করিতেন? তিনি তাদেরকে কি গনীমাতের ভাগ দিতেন? তিনি কি শত্রুপক্ষের শিশুদের হত্যা করিতেন? আর কখন ইয়াতীমের ইয়াতীম অবস্থার সমাপ্তি হয়? আর গনীমাতের এক পঞ্চমাংশের হকদার কারা? জবাবে ইবনি আব্বাস [রাদি.] লিখলেন, তুমি আমাকে লিখিত প্রশ্ন করেছো যে, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কি মহিলাদেরকে নিয়ে যুদ্ধযাত্রা করিতেন? হ্যাঁ, তিনি তাদেরকে নিয়ে যুদ্ধ যাত্রা করিতেন এবং তাঁরা আহতদের সেবা-শুশ্রুষা করিতেন এবং গনীমাতের মাল থেকে তাদেরকে পুরস্কৃত করা হতো, কিন্তু গনীমাতের ভাগ তাদের জন্য বরাদ্দ করা হতো না। আর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কখনও শিশুদের হত্যা করিতেন না। সুতরাং তুমিও শিশুদেরকে হত্যা করিবে না। আর তোমার চিঠিতে আমাকে এও প্রশ্ন করেছ যে, কখন ইয়াতীমের ইয়াতীম অবস্থা সমাপ্ত হয়? আমার জীবনের শপথ! অনেক সময় কোন ব্যক্তির দাড়ি গজিয়ে যায়; অথচ সে তার নিজের হক গ্রহণে দুর্বল থাকে এবং অন্য কারো হক প্রদানের বেলায়ও দুর্বল থাকে। সুতরাং যখন সে লোকদের মতো নিজের অধিকার বুঝে নিতে পারে তখনই তার ইয়াতীম অবস্থার সমাপ্তি হয়। আর তুমি লিখেছ, গনীমাতের এক পঞ্চমাংশ কাদের প্রাপ্য? আমরা বলি, তা আমাদের [আহলে বায়তদের] জন্যই, কিন্তু আমাদের গোত্রের লোকেরা [বানূ উমাইয়াহ্‌] তা অস্বীকার করছে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৫৩৩, ইসলামিক সেন্টার- ৪৫৩৬]

৪৫৭৯. ইবনূ হুরমু্য [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

নাজদাহ্‌ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] ইবনি আব্বাস [রাদি.] -কে কয়েকটি ব্যাপারে প্রশ্ন করে পত্র লিখেন। পরবর্তী অংশ সুলাইমান ইবনি বিলালের হাদীসের অনুরূপ। তবে হাতিমের এ হাদীসে রয়েছে যে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] শিশুদেরকে হত্যা করিতেন না। সুতরাং তুমিও বালকদেরকে হত্যা করিবে না। তবে যদি তুমি তা জানতে পারো, যা খিযির সেই বালক সম্পর্কে জানতে পেরেছিলেন, যাকে তিনি হত্যা করেছিলেন, তবে স্বতন্ত্র কথা। এ হাদীসের একজন রাবী ইসহাক্‌ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] তাহাঁর বর্ণনায় হাদীসের সূত্রে এতটুকু বাড়িয়েছেন-আর যদি তুমি বেছে বের করিতে পারো মুমিনকে, তবে তুমি কাফিরকে হত্যা করিবে এবং মুমিনকে ছেড়ে দিবে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৫৩৪, ইসলামিক সেন্টার- ৪৫৩৭]

৪৫৮০. ইয়াযীদ ইবনি হুরমুয [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন যে, নাজদাহ্‌ ইবনি আম্‌র হারূরী ইবনি আব্বাস [রাদি.] -এর নিকট পত্র লিখে জানতে চাইলেন, জিহাদে উপস্থিত গোলাম ও মহিলাদের গনীমাতের অংশ দেয়া হইবে কি? আর [শত্রুপক্ষের] শিশুদের হত্যা সম্পর্কে এবং ইয়াতীম সম্পর্কে যে, কখন তার ইয়াতীম অবস্থার সমাপ্তি ঘটে? এবং যাবিল কুরবা বা নিকটাত্মীয় কারা? তখন তিনি ইয়াযীদকে বলিলেন, তুমি তাকে লিখ, তার নির্বুদ্ধিতায় পতিত হবার আশঙ্কা না থাকলে আমি তাকে পত্র লিখাতাম না। লিখ, তুমি আমাকে লিখেছো এ প্রশ্ন করে যে, যারা জিহাদে যোগ দিয়েছে এমন নারী এবং গোলামকে কি গনীমাতের কিছু দেয়া হইবে? তাদের [নির্ধারিত] কিছুই দেয়া হইবে না। তবে সবার কাছ থেকে কিছু কিছু নিয়ে [বখ্‌শিশরূপে] দেয়া হইবে। তুমি আমকে প্রশ্ন করে লিখেছ শিশুদের হত্যা সম্পর্কে। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কখনও তাদেরকে হত্যা করেন নি এবং তুমিও তাদেরকে হত্যা করিবে না। তবে [তা স্বতন্ত্র কথা] যদি তুমি তাদের ব্যাপারে তা জানতে পারো যা মূসা [আঃ]-এর সঙ্গী {খিযির [আঃ]} জানতে পেরেছিলেন, যে ছেলেটিকে তিনি হত্যা করেছিলেন তার সম্পর্কে। তার ইয়াতীম নাম ঘুচবে না যতক্ষণ না সে বালিগ হইবে এবং তার মধ্যে বুদ্ধিমত্তা পরিলক্ষিত হইবে। আর তুমি আমাকে যাবিল কুরবা সম্বন্ধে প্রশ্ন করে লিখেছ যে, তারা কারা? আমরা মনে করি, আমরাই তাঁরা। কিন্তু আমাদের লোকেরা তা অস্বীকার করেছে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৫৩৫, ইসলামিক সেন্টার- ৪৫৩৮]

৪৫৮১. ইয়াযীদ ইবনি হুরমু্য [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন নাজদাহ্‌ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] ইবনি আব্বাস [রাদি.]-এর কাছে পত্র লিখেন এবং অনুরূপ হাদীস বর্ননা করেন।

আবু ইসহাক্‌ বলেন, সুফ্‌ইয়ান [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] অনুরূপ হাদীস বিস্তারিত বর্ণনা করেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৫৩৬, ইসলামিক সেন্টার- ৪৫৩৯]

৪৫৮২. কায়স [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, ইয়াযীদ ইবনি হুরমুযকে আমি এ হাদীস বর্ণনা করিতে শুনেছি। মুহাম্মাদ ইবনি হাতিম ইয়াযীদ ইবনি হুরমুয হইতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাজদাহ্‌ ইবনি আমির ইবনি আব্বাস [রাদি.] -কে পত্র লিখেন। রাবী বলেন, ইবনি আব্বাস [রাদি.] যখন তাহাঁর পত্রখানি পাঠ করেন এবং যখন তিনি তার জবাব লিখেন তখন আমি তাহাঁর [ইবনি আব্বাস] সামনেই উপস্থিত ছিলাম। ইবনি আব্বাস [রাদি.] বলেন, যদি সে নাপাকীতে [অজ্ঞানতা প্রসূত কথাবার্তায়] পতিত হইবে বলে আশংকা না করতাম তবে আমি তার কাছে জবাব লিখতাম না। তার চোখ কোন দিন না জুড়াক [অর্থাৎ আল্লাহ তাকে খুশী না রাখুক, তার বাতিল আকীদার দরুন এ বদদুআ করিলেন]। রাবী [ইয়াযীদ] বলেন, তারপর তিনি তাকে লিখলেন, তুমি আমাকে জিজ্ঞেস করেছ, আল্লাহ [গনীমাতের অংশ সংক্রান্ত আয়াতে] যাদের সম্পর্কে উল্লেখ করিয়াছেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর ঘনিষ্ঠজন কারা? আমরা মনে করি, আমরাই রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সে ঘনিষ্ঠজন। কিন্তু আমাদের গোত্রের লোকেরা তা অস্বীকার করে। আর তুমি ইয়াতীম সম্পর্কে প্রশ্ন করেছ যে, কখন তার ইয়াতীম অবস্থার সমাপ্তি ঘটে? যখন সে বিবাহযোগ্য হয়, তার মধ্যে বুদ্ধি বিবেচনা পরিলক্ষিত হয় এবং তার সম্পদ তার কাছে প্রত্যর্পণ করা হয়, তখন তার ইয়াতীম অবস্থার অবসান ঘটে। আর তুমি প্রশ্ন করেছ, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কি মুশরিকদের কোন শিশুকে হত্যা করিতেন? রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কোনদিন তাদের শিশুদের কাউকে হত্যা করেন নি। সুতরাং তুমিও তাদের কাউকে হত্যা করিবে না। অবশ্য তুমি যদি অবগত হও, যা অবগত হয়েছিলেন খিযির [আঃ] সে বালকটির সম্পর্কে যখন তিনি তাকে হত্যা করেন। আর তুমি প্রশ্ন করেছ, নারী ও গোলাম সম্পর্কে, যখন তারা যুদ্ধে উপস্থিত থাকে, তাদের জন্য নির্ধারিত অংশ নেই। তবে লোকদের গনীমাতের মাল থেকে তারা উপঢৌকন হিসেবে পায়।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৫৩৭, ইসলামিক সেন্টার- ৪৫৪০]

৪৫৮৩. ইয়াযীদ ইবনি হুরমুয [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, নাজদাহ্‌ ইবনি আব্বাস [রাদি.]-কে লিখেছিলেন, বর্ণনাকারী এ হাদীসের কিয়দংশ রিওয়ায়াত করিয়াছেন। তবে তাঁদের হাদীসসমূহের মতো তিনি ঘটনা হুবহু বর্ননা করেননি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৫৩৮, ইসলামিক সেন্টার- ৪৫৪১]

৪৫৮৪. উম্মু আতিয়্যাহ্‌ আন্‌সারীয়াহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে সাতটি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছি। আমি তাঁদের শিবিরের পশ্চাতে অবস্থান করতাম, তাদের খাবার তৈরী করতাম, আহতদের চিকিৎসা করতাম, এবং রোগীদের সেবাশুশ্রূষা করতাম।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৫৩৯, ইসলামিক সেন্টার- ৪৫৪২]

৪৫৮৫. হিশাম ইবনি হাস্সান [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

এ সূত্রে হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৫৪০, ইসলামিক সেন্টার- ৪৫৪৩]


Posted

in

by

Comments

One response to “জিহাদ অভিযানে অংশগ্রহণকারী মহিলাদের জন্য গনীমাতের কোন অংশ নেই”

Leave a Reply