পরামর্শ করা, তাসবীহ, আমল ও জিকিরের ফজিলত

পরামর্শ করা, তাসবীহ, আমল ও জিকিরের ফজিলত

পরামর্শ করা, তাসবীহ, আমল ও জিকিরের ফজিলত >> সুনানে ইবনে মাজাহ হাদিস এর মুল সুচিপত্র পড়ুন

পর্বঃ ৩৩, অধ্যায়ঃ (৫০-৫৯)=১০টি

৫০. অধ্যায়ঃ তৃতীয় জনকে বাদ দিয়ে দুজনে যেন কান পরামর্শ না করে
৫১. অধ্যায়ঃ কারো সাথে তীর থাকলে সে যেন তাহার ফলা হাতের মুঠোয় রাখে
৫২. অধ্যায়ঃ কুরআন অধ্যয়নের সওয়াব
৫৩. অধ্যায়ঃ যিকিরের ফজিলত
৫৪. অধ্যায়ঃ “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” এর ফজিলত
৫৫. অধ্যায়ঃ প্রশংসাকারীদের ফজিলত
৫৬. অধ্যায়ঃ তাসবীহ-এর ফজিলত
৫৭. অধ্যায়ঃ ক্ষমা প্রার্থনা
৫৮ অধ্যায়ঃ আমলের ফজিলত
৫৯. অধ্যায়ঃ “লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ”-এর ফজিলত

৫০. অধ্যায়ঃ তৃতীয় জনকে বাদ দিয়ে দুজনে যেন কান পরামর্শ না করে

৩৭৭৫. আবদুল্লাহ [বিন মাসঊদ] [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমরা তিনজন একত্র হলে একজনকে বাদ দিয়ে যেন দুজনে কান পরামর্শ না করে। কেননা তাতে সে চিন্তিত হইতে পারে। {৩১০৭}

{৩০০৬} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ৬২৯০, মুসলিম ২১৮৪, তিরমিজি ২৮২৫, আবু দাউদ ৪৮৫১, আহমাদ ৩৫৫০, ৪০২৯, ৪০৮২, ৪০৯৫, ৪১৬৪, ৪১৭৯, ৪৩৮১, ৪৩৯৩, ৪৪১০, ৪৪২২, দারেমী ২৬৫৭। জিকিরের ফজিলত -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩৭৭৬. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তৃতীয় জনকে বাদ দিয়ে দুজনে কান পরামর্শ করিতে নিষেধ করিয়াছেন। {৩১০৮}

{৩০০৭} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ৬২৮৮, মুসলিম ২১৮৩, আবু দাউদ ৪৮৫১, আহমাদ ৪৫৫০, ৪৬৫০, ৪৮৫৬, ৫০০৩, ৫০২৬, ৫২৩৬, ৫৪০২, ৫৪৭৭, ৫৯১৩, ৫৯৮৮, ৬০২১, ৬০৪৯, ৬১৯০, ৬২২৮, ৬৩০২, জিকিরের ফজিলত -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৫১. অধ্যায়ঃ কারো সাথে তীর থাকলে সে যেন তাহার ফলা হাতের মুঠোয় রাখে

৩৭৭৭. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

সুফইয়ান বিন উইয়ায়নাহ বলেন, আমি আমর বিন দীনারকে বললাম, আপনি কি জাবির বিন আবদুল্লাহ [রাদি.] কে বলিতে শুনেছেন, “এক ব্যক্তি তীরসহ মসজিদ অতিক্রম করিলে রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ তীরের ফলা মুষ্টিবন্ধ রাখো”। তিনি বলেন, হাঁ। {৩১০৯}

{৩০০৮} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ৪৫১, ৭০৭৩, ৭০৭৪, মুসলিম ২৬১৪, নাসাঈ ৭১৮, আবু দাউদ ২৫৮৬, আহমাদ ১৩৮৯৮, দারেমী ৬৩৩, ১৪০২। সহীহ আবু দাউদ ২৩২৯। জিকিরের ফজিলত -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩৭৭৮. আবু মূসা আল-আশআরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] বলেন, তোমাদের কেউ তীরসহ আমাদের মসজিদ অথবা আমাদের বাজার অতিক্রম করিলে সে যেন তাহার তীরের ফলার অংশটুকু মুষ্ঠিবন্ধ করে রাখে, যাতে তা কোন মুসলমানের গায়ে না লাগতে পারে। {৩১১০}

{৩০০৯} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ৪৫২, ৭০৭৫, মুসলিম ২৬১৫, আবু দাউদ ২৫৮৭, আহমাদ ১৯০০৬, ১৯০৮০, ১৯১৭৫, ১৯২০৪, ১৯২৫৫। জিকিরের ফজিলত -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৫২. অধ্যায়ঃ কুরআন অধ্যয়নের সওয়াব

৩৭৭৯. আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কুরআন মজীদে দক্ষ ব্যক্তি [আখেরাতে] সম্মানিত নেককার লিপিকার ফেরেশতাহাদের সাথে থাকিবে। যে ব্যক্তি ঠেকে ঠেকে কষ্ট করে কুরআন পড়ে সে দুটি পুরস্কার পাবে। {৩১১১}

{৩০১০} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ৪৯৩৭, মুসলিম ৭৯৮, তিরমিজি ২৯০৪, আবু দাউদ ১৪৫৪, আহমাদ ২৩২৯১, ২৪১১৩, ২৪১৪৬, ২৪২৬৭, ২৪৮৩৭, দারেমী ৩৩৬৮। আত তালীকুর রাগীব ২/২০৭। জিকিরের ফজিলত -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩৭৮০. আবু সাঈদ আল-খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কুরআনের বাহককে জান্নাতে প্রবেশকালে বলা হইবে, তুমি পাঠ করিতে থাকো এবং উপরে আরোহণ করিতে থাকো। অতঃপর সে পড়তে থাকিবে এবং প্রতিটি আয়াত পড়ার সাথে সাথে একটি স্তর অতিক্রম করিবে। এভাবে সে তাহার জ্ঞাত শেষ আয়াতটি পর্যন্ত পড়বে। {৩১১২}

{৩০১১} আহমাদ ১০৯৬৮। আত তালীকুর রাগীব ২/২০৮, সহীহাহ ২২৪০, সহীহ আবু দাউদ ১৩১৭। জিকিরের ফজিলত -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩৭৮১. বুরায়দাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কিয়ামতের দিন কুরআন পর্যুদস্ত লোকের অবয়বে উপস্থিত হয়ে বলবে, আমিই তোমাকে রাতে বিনিদ্র এবং দিনে পিপাসার্ত করেছি। {৩১১৩}

{৩০১১} দারেমী ৩৩৯১। তাখরীজু শারহুল আকীদাতুত তাহাবীয়াহ ৫৯, দঈফ আল-জামি৬৪১৭। জিকিরের ফজিলত -এই হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৩৭৮২. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] জিজ্ঞেস করিলেন ঃ তোমাদের কেউ কি তাহার ঘরে ফিরে এসে সেখানে তিনটি হৃষ্টপুষ্ট গর্ভবতী উষ্ট্রী পেতে পছন্দ করে? আমরা বললাম, হাঁ। তিনি বলেনঃ তোমাদের কেউ তাহার নামাযে তিনটি আয়াত পড়লে তাহার জন্য হৃষ্টপুষ্ট তিনটি গর্ভবতী উষ্ট্রীর চেয়ে উত্তম। {৩১১৪}

{৩০১২} মুসলিম ৮০২, আহমাদ ৯৬৮৭, ১০০৬৯, দারেমী ৩৩১৪। আত তালীকুর রাগীব ২/২০৬। জিকিরের ফজিলত -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩৭৮৩. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কুরআনের উদাহরণ হল বেঁধে রাখা উটের [উদাহরণ] তুল্য। উটের মালিক তাহাকে রশি দিয়ে বেঁধে রাখলে সে তাহাকে আয়ত্তাধীনে রাখতে পারে, সে যদি তাহার রশির বাঁধন খুলে দেয় তবে তা ভেগে যায়। {৩১১৫}

{৩০১৩} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ৫০৩১, মুসলিম ৭৮৯, নাসাঈ ৯৪২, আহমাদ ৪৬৫১, ৪৭৪৫, ৪৮৩০, ৫২৯৩, ৫৮৮৭, মুওয়াত্তামালিক ৪৭৩। আত তালীকুর রাগীব ২/২১৪। জিকিরের ফজিলত -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩৭৮৪. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে বলিতে শুনিয়াছি ঃ মহামহিম আল্লাহ তাআলা বলেছেন, আমি নামাযকে আমার ও আমার বান্দার মাঝে আধাআধি ভাগ করে নিয়েছি। সলাতের অর্ধেক আমার এবং অর্ধেক আমার বান্দার। আমার বান্দা যা প্রার্থনা করে তাই তাহাকে দেয়া হয়। রাবী বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ তোমরা পড়ো। বান্দা বলে,

الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ

আলহামদু লিল্লাহি রব্বিল আলামীন ঃ [সমস্ত প্রশংসা বিশ্বজাহানের রব আল্লাহর]।

তখন মহামহিম আল্লাহ বলেন আমার বান্দা আমার প্রশংসা করেছে আর আমার বান্দা যা প্রার্থনা করেছে, তাই তাহাকে দেয়া হইবে। সে বলে,

الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ

আর-রহমানির রাহীম [তিনি দয়াময় পরম দয়ালু]।

আল্লাহ বলেন, আমার বান্দা আমার গুনগান করেছে। আমার বান্দা যা প্রার্থনা করেছে তা পাবে। সে বলে,

مَالِكِ يَوْمِ الدِّينِ

মালিকি ইয়াওমিদ্দীন [প্রতিফল দিবসের মালিক]।

আল্লাহ বলেন, আমার বান্দা আমার মর্যাদা বর্ণনা করেছে। বান্দা বলে ঃ

إِيَّاكَ نَعْبُدُ وَإِيَّاكَ نَسْتَعِينُ

ইয়্যাকা নাবুদু ওয়া ইয়্যাকা নাসতাঈন [আমরা কেবল তোমারই ইবাদাত করি এবং তোমারই কাছে সাহায্য চাই]।

এটা আমার ও আমার বান্দার জন্য। বান্দা বলে ঃ

اهْدِنَا الصِّرَاطَ الْمُسْتَقِيمَ * صِرَاطَ الَّذِينَ أَنْعَمْتَ عَلَيْهِمْ غَيْرِ الْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ وَلاَ الضَّالِّينَ

ইহদিনাস সিরাতাল মুসতাকীম সিরাতাল্লাযীনা আনআমতা আলায়হিম। গায়রিল মাগদূবি আলায়হিম ওয়ালাদ দোয়া-ল্লী-ন [আমাদেরকে সরল ও মজবুত পথ দেখাও। সেই লোকেদের পথ যাদের তুমি নিআমাত দিয়েছো, যারা অভিশপ্ত হয়নি, যারা পথভ্রষ্ট হয়নি]।

এটা আমার বান্দার জন্য। আমার বান্দা যা প্রার্থনা করেছে, তাই সে পাবে। {৩১১৬}

{৩০১৪} মুসলিম ৩৯৫, তিরমিজি ২৯৫৩, নাসাঈ ৯০৯, ৮২১, আহমাদ ৭২৪৯, ৭৭৭৭, ৯৬১৬, মুওয়াত্তামালিক ১৮৯। আত তালীকুর রাগীব ২/২১৭। জিকিরের ফজিলত -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩৭৮৫. আবু সাঈদ ইবনিল মুআল্লা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাকে বললেনঃ আমি কি মসজিদ থেকে বের হওয়ার পূর্বেই তোমাকে কুরআনের শ্রেষ্ঠতম সূরা শিক্ষা দিবো না? রাবী বলেনঃ অতঃপর নবী [সাঃআঃ] বের হওয়ার জন্য অগ্রসর হলেন। তখন আমি তাহাঁকে স্মরণ করিয়ে দিলে তিনি বলেনঃ সূরা আলহামদু লিল্লাহি রব্বিল আলামীন [সূরা ফাতিহা]। এটা হলো “সাবউল মাছানী” [বারবার পঠিত সপ্তক] ও মহান কুরআন, যা আমাকে দান করা হইয়াছে। {৩১১৭}

{৩০১৫} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ৪৪৭৪, ৪৬৪৭, ৫০০৬, নাসাঈ ৯১৩, আবু দাউদ ১৪৫৮, আহমাদ ১৫৩০৩, ১৭৩৯৫, দারেমী ১৪৯২, ৩৩৭১। আত তালীকুর রাগীব ২/২১৬, সহীহ আবু দাউদ ১৩১১। জিকিরের ফজিলত -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩৭৮৬. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] বলেনঃ কুরআন মজীদে তিরিশ আয়াতবিশিষ্ট একটি সূরা আছে, যা তাহার তিলাওয়াতকারীর জন্য শাফাআত করিবে, শেষে তাহাকে ক্ষমা করা হইবে। তা হলো ঃ তাবারাকাল্লাযী বিয়াদিহিল “মুলক” [সূরা মুলক]। {৩১১৮}

{৩০১৬} তিরমিজি ২৮৯১, আবু দাউদ ১৪০০। রাওদুন নাদীর ৬৪, তালীকুর রাগীব ২/২২২, ২২৩, সহীহ আবু দাউদ ১২৬৫। জিকিরের ফজিলত -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩৭৮৭. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ “কুল হুয়াল্লাহু আহাদ” সূরাটি কুরআনের এক-তৃতীয়াংশের সমতুল্য। {৩১১৯}

৩১১৯.মুসলিম ৮১২,তিরমিজি ২৮৯৯,২৯০০,আহমাদ ৯২৫১,দারেমী ৩৪৩২। আত তালিকুর রাগিব ২/২৫,সহিহাহ ১৩১৪। জিকিরের ফজিলত -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩৭৮৮. আনাস বিন মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ “কুল হুয়াল্লাহু আহাদ” সূরাটি কুরআনের এক-তৃতীয়াংশের সমতুল্য। {৩১২০}

{৩১২০} মুসলিম ২৬১৫,তিরমিজি ২৮৯৮,দারেমী ৩৪৩৮। জিকিরের ফজিলত -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩৭৮৯. আবু মাসউদ আল আনসারী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ “আল-আহাদুল ওয়াহিদুস সামাদ” [ইখলাস] সূরাটি কুরআনের এক তৃতীয়াংশের সমতুল্য। {৩১২১}

{৩১২১} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। রাওদূন নাদীর ১০২৪। জিকিরের ফজিলত -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৫৩. অধ্যায়ঃ যিকিরের ফজিলত

৩৭৯০. আবু দারদা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] বলেনঃ আমি কি তোমাদের আমলসমূহের সর্বোত্তমটি সম্পর্কে তোমাদেরকে অবহিত করিব না, যা তোমাদের প্রভুর নিকট সরবাধিক প্রিয়, তোমাদের মর্যাদা অধিক উন্নীতকারী, তোমাদের সোনা-রুপা দান করার চেয়ে এবং যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়ে তোমাদের শত্রুদের হত্যা করা এবং তোমাদের নিহত হওয়ার চেয়ে উত্তম? সাহাবীগণ বলেনঃ ইয়া রাসূলআল্লাহ! সেটি কি? তিনি বলেনঃ আল্লাহর যিকির। মুআয বিন জাবাল [রাদি.] বলেন, কোনো মানুষের জন্য আল্লাহর যিকিরের চেয়ে উত্তম আমল নাই, যা তাহাকে মহামহিম আল্লাহর শাস্তি থেকে রেহাই দিতে পারে। {৩১২২}

{৩১২২} তিরমিজি ৩৩৭৭,আহমাদ ২১১৯৫, ২৬৯৭৭, মুওয়াত্তা মালিক ৪৯০। তাখরিজুল কালিমুত তায়িব ১,মিশকাত ২২৬৯,আত তালিকুব রাগীব ২/২২৮। জিকিরের ফজিলত -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩৭৯১. আবু হুরাইরাহ ও আবু সাঈদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তাহারা উভয়ে নবী [সাঃআঃ] সম্পর্কে সাক্ষ্য দেন যে, তিনি বলেছেনঃ লোকজন কোন মজলিসে সমবেত হয়ে আল্লাহর যিকিরে রত হলে ফেরেশতাগণ তাহাদের বেষ্টন করে রাখেন, আল্লাহর রহমত তাহাদের ঢেকে নেয়, তাহাদের উপর প্রশান্তি নাযিল হইতে থাকে এবং আল্লাহ তাহাঁর ফেরেশতাগণের সামনে তাহাদের সম্পর্কে আলোচনা করেন। {৩১২৩}

৩১২৩.তিরমিজি ৩৩৭৮। সহিহাহ ৭৫।জিকিরের ফজিলত -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩৭৯২. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] বলেনঃ মহান আল্লাহ বলেন, আমার বান্দা যখন আমার যিকির করে এবং আমার যিকিরে তাহার দু ঠোঁট নড়াচড়া করে তখন আমি তাহার সঙ্গে থাকি। {৩১২৪}

{৩১২৪} আহমাদ ১০৫৮৫।আত তালীকুর রাগীব ২/২২৭, তাখরিজুল মিশকাত ২২৮৫। জিকিরের ফজিলত -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩৭৯৩. আবদুল্লাহ বিন বুসর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

এক বেদুঈন রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে বলল, ইসলামের বিধিবিধান আমার জন্য অনেক বেশি হয়ে গেছে। আমাকে তাহার মধ্যে এমন কিছু বলে দিন যা আমি আঁকড়ে থাকবো। তিনি বলেনঃ মহান আল্লাহর যিকিরে তোমার জিহ্বা সর্বদা যেন সজীব থাকে। {৩১২৫}

{৩১২৫} তিরমিজি ৩৩৭৫,আহমাদ ১৭২২৭,১৭২৪৫। তাখরিজুল কালিমুত তায়্যিব ৩,আত তালীকুর রাগীব ২/২২৭। জিকিরের ফজিলত -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৫৪. অধ্যায়ঃ “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” এর ফজিলত

৩৭৯৪. আবু হুরাইরাহ ও আবু সাঈদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

আবু হুরাইরাহ ও আবু সাঈদ [রাদি.] সাক্ষ্য দেন যে, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ বান্দা যখন

لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَاللَّهُ أَكْبَرُ

“লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবর” [আল্লাহ ব্যতীত কোনো ইলাহ নাই, আল্লাহ মহান]

বলেন, তখন মহান আল্লাহ বলেন, আমার বান্দা সত্য কথা বলেছে। আমি ছাড়া আর কোনো ইলাহ নাই এবং আমিই মহান। বান্দা যখন বলে,

لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ

“লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু” [আল্লাহ ব্যতীত কোনো ইলাহ নাই, তিনি এক],

তখন আল্লাহ বলেন, আমার বান্দা সত্য কথা বলেছে, আমি একা ব্যতীত আর কোনো ইলাহ নাই। বান্দা যখন বলে,

لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ

লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু লা শারীকা লাহু” [আল্লাহ ব্যতীত কোনো ইলাহ নাই, তাহাঁর কোনো শরীক নাই],

তখন তিনি বলেন, আমার বান্দা সত্য কথা বলেছে। আমি ছাড়া আর কোনো ইলাহ নাই এবং আমার কোনো শরীক নাই। বান্দা যখন বলে,

لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ

“লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু লাহুল মূলকু ওয়ালাহুল হামদু” [আল্লাহ ব্যতীত কোনো ইলাহ নাই, তিনিই সার্বভৌমত্বের মালিক এবং সকল প্রশংসা তাহাঁর],

তখন তিনি বলেন, আমার বান্দা সত্য কথা বলেছে, আমি ছাড়া আর কোন ইলাহ নাই, সার্বভৌমত্ব আমারই এবং সকল প্রশংসা আমারই। যখন সে বলে, “

لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَلاَ حَوْلَ وَلاَ قُوَّةَ إِلاَّ بِاللَّ

লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়ালা হাওলা ওয়ালা কুওওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ” [আল্লাহ ব্যতীত কোনো ইলাহ নাই, আল্লাহ ভিন্ন ক্ষতি রোধ করার এবং কল্যাণ হাসিলের কোনো শক্তি নাই],

তখন তিনি বলেন, আমার বান্দা সত্য কথা বলেছে। আমি ছাড়া কোনো ইলাহ নাই এবং আমি ভিন্ন ক্ষতি রোধ করার এবং কল্যাণ হাসিলের কোনো শক্তি নাই। আবু ইসহাক [রাদি.] বলেন, আল-আগার [রাদি.] আরও কিছু বলেছিলেন, যা আমি হৃদয়ঙ্গম করিতে পারিনি। তাই আমি আবু জাফর [রাদি.] কে জিজ্ঞেস করলাম যে, তিনি কি বলেছিলেন? তিনি বলেন, আল্লাহ যাকে মৃত্যুর সময় এই বাক্য বলার সৌভাগ্য দান করবেন, জাহান্নামের আগুন তাহাকে স্পর্শ করিতে পারবে না। {৩১২৬}

৩১২৬.তিরমিজি ৩৪৩০। আত তালিকুর রাগীব ৪/১৬৫।সহিহাহ ১৩৯০।উক্ত হাদিসের রাবি হামজাহ আয যায়্যাত সম্পর্কে আবুল ফাতহ আল আযাদী বলেন,তিনি সত্যবাদী তবে তাহার স্মৃতিশক্তি দুর্বল।আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি সিকাহ।ইবনি আজার আল-আসকালনী বলেন,তিনি সত্যবাদী তবে কখনো কখনো হাদিস বর্ণনায় সন্দেহ করেন।যাকারিয়্যা বিন ইয়াহহিয়া আস সাজী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে তাহার স্মৃতি শক্তি দুর্বল। ইয়াহহিয়া বিন মাঈন তাহাকে সিকাহ বলেন।।[তাহযিবুল কামালঃ রাবী নং ১৫০১,৭/৩১৪ নং পৃষ্ঠা ] জিকিরের ফজিলত -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩৭৯৫. তালহা বিন উবায়দুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

[সুদা] বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর ইনতিকালের পর উমার [রাদি.] তালহা [রাদি.]-র নিকট দিয়ে জেতে তাহাকে বলেন, তোমার কী হইয়াছে? তুমি বিষণ্ণ কেন? তোমার চাচাতো ভাই এর খেলাফত কি তোমার অপছন্দ হইয়াছে? তালহা [রাদি.] বলেন, না। বরং আমি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে বলিতে শুনিয়াছি ঃ আমার এমন একটি বাক্য জানা আছে, যা কোনো ব্যক্তি মৃত্যুর সময় বললে সেটা তাহার আমলনামার জন্য নূর হইবে এবং নিশ্চয়ই তাহার দেহ ও আত্মা মৃত্যুর সময় তাহাকে স্বস্তি দিবে। সেটি আমি তাহাঁকে জিজ্ঞেস করিনি, এরই মধ্যে তিনি ইন্তিকাল করেন। উমার [রাদি.] বলেন, আমি সেটি জানি। তা হল সেই কলেমা যা তিনি তাহাঁর চাচার নিকট পেশ করেছিলেন। যদি তিনি জানতেন যে, সেই কলেমার চেয়েও অধিক নাজাত দানকারী কিছু আছে, তবে অবশ্যই সেটি তিনি সেটি তাহার চাচার নিকট পেশ করিতেন। {৩১২৭}

৩১২৭.আহমাদ ১৩৮৭। তাখরিজুল মুখতাহার ১১৪,১১৯,২৩৮,২৩৯,আল-আহকাম ৩৪। জিকিরের ফজিলত -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩৭৯৬. মুআয বিন জাবাল [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে কোন ব্যক্তি সর্বান্তঃকরণে এ সাক্ষ্য দিয়ে মারা গেলো,

لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَأَنِّي رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم

“আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ নাই এবং আমি আল্লাহর রাসূল”,

আল্লাহ তাহাকে ক্ষমা করে দেন। {৩১২৮}

৩১২৮.আহমাদ ২১৪৯৩, ২১৫০৪, ২১৫৫৫। সহিহাহঃ ২২৭৮। জিকিরের ফজিলত -এই হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান সহীহ

৩৭৯৭. উম্মু হানী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ [বান্দার] কোন আমলই

 لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ

“লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু” -কে অতিক্রম করিতে পারে না এবং তা কোন গুনাহকেই মাফ না করিয়ে ছাড়ে না। {৩১২৯}

{৩১২৯} হাদিসটি ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন।তাখরিজু কালিমাতুল ইখলাস ৫৬ নং পৃষ্ঠা। জিকিরের ফজিলত -এই হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৩৭৯৮. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি দিনে একশতবার বলে,

 لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَىْءٍ قَدِيرٌ

“আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নাই, তাহাঁর কোন শরীক নাই, রাজত্ব তাহাঁরই ও সমস্ত প্রশংসা তাহাঁর, তিনি সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান”,

তাহার জন্য দশটি গোলাম আযাদ করার সমান সওয়াব লেখা হয়, একশত নেকী লেখা হয় এবং তাহার একশত গুনাহ বিলোপ করা হয়, তাহার এ শব্দগুলো সারা দিন রাত পর্যন্ত তাহার জন্য শয়তান থেকে প্রতিবন্ধক হয় এবং তাহাকে যা দান করা হয় তাহার চেয়ে উত্তম কিছু নিয়ে অপর কেউ হাজির হইতে পারবে না। তবে যে ব্যক্তি এ বাক্য তাহার চেয়ে অধিক সংখ্যায় পরে তাহার কথা স্বতন্ত্র। {৩১৩০}

{৩১৩০} সহিহুল বুখারি ৩২৯৩,৬৪০৫,মুসলিম ২৬৯১,২৬৯৩,তিরমিজী ৩৪৬৮,আহমাদ৭৯৪৮,৮৫০২,৮৬১৭,৮৬৫৬,মুয়াত্তা মালিক ৪৮৬,৪৮৮। জিকিরের ফজিলত -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩৭৯৯. আবু সাঈদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি ফজর সালাতের পর বলে,

لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ بِيَدِهِ الْخَيْرُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَىْءٍ قَدِيرٌ

“লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারীকা লাহু লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু বিয়াদিহিল খাইরু ওয়াহুয়া আলা কুল্লি শায়ইন কাদীর” [আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ নাই, তিনি একক, তাহার কোন শরীক নেই, সার্বভৌমত্ব তাহাঁর, সমস্ত প্রশংসা তাহাঁর, তাহাঁর হাতেই সমস্ত কল্যাণ নিহিত এবং তিনিই সবকিছুর উপর ক্ষমতাবান ,

সে ঈসমাইলের [আঃ] বংশের একটি গোলাম আজাদ করার সমান সওয়াব পাবে। {৩১৩১}

{৩১৩১} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। জিকিরের ফজিলত -এই হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৫৫. অধ্যায়ঃ প্রশংসাকারীদের ফজিলত

৩৮০০. জাবির বিন আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন আমি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে বলিতে শুনিয়াছি ঃ সর্বশ্রেষ্ঠ জিকির হল

لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ

“লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” [আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ নাই]

এবং সর্বশ্রেষ্ঠ দুআ হলো

 الْحَمْدُ لِلَّهِ 

“আলহামদু লিল্লাহ” [সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর]। {৩১৩২}

{৩১৩২} তিরমিজী ৩৩৮৩।১৪৯৭,মিশকাত ২৩০৬। আত তালীকুর রাগীব ২/২২৯। জিকিরের ফজিলত -এই হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান হাদিস

৩৮০১. আবদুল্লাহ বিন উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাদের নিকট হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন যে, আল্লাহর বান্দাগণের মধ্যকার এক বান্দা বলল, “হে প্রভু! আপনার মহিমান্বিত চেহারার এবং আপনার রাজত্বের উপযোগী প্রশংসা আপনার জন্য”। দুজন ফেরেশতা একথা শুনে হতবাক হলেন এবং তাহারা ঠিক বুঝে উঠতে পারলেন না যে, তা কিভাবে লিপিবদ্ধ করবেন। তাই তাহারা আসমানে আরোহণ করে বলেন, হে আমাদের প্রভু! আপনার এক বান্দা এমন এক বাক্য বলেছে, যা আমরা কিভাবে লিখবো তা বুঝে উঠতে পারছি না। মহান আল্লাহ জিজ্ঞেস করিলেন, যদিও তাহাঁর বান্দা যা বলেছে তা তিনি সম্যক অবগত,- আমার বান্দা কি বলেছে? ফেরেশতাদ্বয় বলেন, হে আমাদের প্রভু! সে বলেছে, “হে প্রভু! তোমার মহিমান্বিত চেহারার এবং তোমার মহান রাজত্বের উপযোগী প্রশংসা তোমার জন্য”। মহান আল্লাহ তাআলা তাহাদেরকে বলেন, আমার বান্দা যেভাবে বলেছে তদ্রূপই লিখে রাখো। আমার সাথে সাক্ষাত লাভের সময় আমি তাহাকে তাহার বিনিময় দান করিব। {৩১৩৩}

{৩১৩৩} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন।আততালীকুর রাগীব ২/২৫৩। জিকিরের ফজিলত -এই হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৩৮০২. ওয়াইল বিন হুজর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি নবী [সাঃআঃ] এর সাথে নামায পড়লাম। এক ব্যক্তি বলল, “

الْحَمْدُ لِلَّهِ حَمْدًا كَثِيرًا طَيِّبًا مُبَارَكًا فِيهِ

আলহামদু লিল্লাহি হামদান কাসীরান তায়্যিবান মুবারাকান ফীহি” [সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর, পর্যাপ্ত, পবিত্র ও বরকতপূর্ণ প্রশংসা]।

নবী [সাঃআঃ] বলেনঃ একথা যে বলেছে, সে কে? লোকটি বলল, আমি, তবে ভালো ছাড়া অন্য কিছু আমার উদ্দেশ্য নয়। তিনি বলেনঃ এই কথাগুলোর জন্য আসমানের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হইয়াছে এবং আরশে উপনীত হওয়ার পথে কোন কিছুই তাহার প্রতিবন্ধক হয়নি। {৩১৩৪}

{৩১৩৪} আহমাদ ১৮৩৮১। দঈফ আবু দাউদ ১৩৩।সানাদের সকল রাবী সিকাহ। তবে সানাদে ইনকিতা রয়েছে অর্থাৎ আবদুল জাব্বার বিন ওয়াইল বিন হুজর থেকে হাদিসটি শ্রবণ করেননী। [আশ শাসি ২/৯৩২-৯৩৩] জিকিরের ফজিলত -এই হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৩৮০৩. আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] পছন্দনীয় কিছু দেখলে বলিতেন ঃ

الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي بِنِعْمَتِهِ تَتِمُّ الصَّالِحَاتُ

“আলহামদু লিল্লাহিল্লাযী বিনিয়মাতিহি তাতিমুসসালিহাত” [সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর, যাহার করুণায় নেক কাজসমূহ পূর্ণতা লাভ করে]।

তিনি অপছন্দনীয় কিছু দেখলে বলিতেন ঃ

الْحَمْدُ لِلَّهِ عَلَى كُلِّ حَالٍ

“আলহামদু লিল্লাহি আলা কুল্লি হাল” [সর্বাবস্থায় সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য]। {৩১৩৫}

{৩১৩৫} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন।সহিহাহ ২৬৫। জিকিরের ফজিলত -এই হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান হাদিস

৩৮০৪. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] বলিতেন ঃ

الْحَمْدُ لِلَّهِ عَلَى كُلِّ حَالٍ رَبِّ أَعُوذُ بِكَ مِنْ حَالِ أَهْلِ النَّارِ

“আলহামদু লিল্লাহি আলা কুল্লি হাল, রব্বি আউযুবিকা মিন হালি আহলিন্‌-নার” [সর্বাবস্থায় সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য, হে আমার প্রতিপালক! আমি আপনার নিকট জাহান্নামীদের অবস্থা থেকে আশ্রয় পার্থনা করি]। {৩১৩৬}

{৩১৩৬} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। সহিহাহ ২৬৫। জিকিরের ফজিলত -এই হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৩৮০৫. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আল্লাহ কোন বান্দাকে যখন যে নিয়ামতই দান করেন, তাতে সে যদি বলে,

الْحَمْدُ لِلَّهِ

“আলহামদু লিল্লাহ”, তবে তা [প্রশংসা] তাহাকে প্রদত্ত জিনিসের চেয়ে উত্তম। {৩১৩৭}

{৩১৩৭} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। জিকিরের ফজিলত -এই হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান হাদিস

৫৬. অধ্যায়ঃ তাসবীহ-এর ফজিলত

৩৮০৬. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ দুটি বাক্য আছে যা উচ্চারণ করিতে সহজ, তুলাদণ্ডে পরিমাপে খুবই ভারী এবং করুণাময়ের নিকট খুবই প্রিয় ঃ

 سُبْحَانَ اللَّهِ وَبِحَمْدِهِ سُبْحَانَ اللَّهِ الْعَظِيمِ 

সুবহানাল্লাহিল ওয়াবিহামদিহি সুবহানাল্লাহিল আযীম [মহাপবিত্র আল্লাহ, তাহাঁর জন্য সমস্ত প্রশংসা। মহাপবিত্র আল্লাহ, তিনি মহান]। {৩১৩৮}

{৩১৩৮} সহিহুল বুখারী ৬৪০৬,তিরমিজি ৩৪৬৬,৩৪৬৭,৩৯৫৬,আহমাদ ৭১২৭। জিকিরের ফজিলত -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩৮০৭. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি একটি চারাগাছ রোপণরত অবস্থায় রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহার নিকট দিয়ে যেতে জিজ্ঞেস করিলেন ঃ আবু হুরাইরাহ! কী রোপণ করছো? আমি বললাম, আমার একটি চারা রোপণ করছি। তিনি বলেনঃ আমি কি তোমাকে এমন কিছু রোপণের কথা বলে দিবো না, যা তোমার জন্য এর চেয়েও উত্তম? তিনি বলেন, অবশ্যই, হে আল্লাহর রাসূল! তিনি বলেনঃ তুমি বলো,

 سُبْحَانَ اللَّهِ وَالْحَمْدُ لِلَّهِ وَلاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَاللَّهُ أَكْبَرُ

“সুবহানাল্লাহি ওয়ালহামদু লিল্লাহি ওয়ালা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার” [সমস্ত পবিত্রতা আল্লাহর, সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর এবং আল্লাহ ব্যতীত আর কোন ইলাহ নেই, আল্লাহ মহান]। প্রতিবারে বিনিময়ে তোমার জন্য জান্নাতে একটি করে গাছ রোপিত হইবে। {৩১৩৯}

{৩১৩৯} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ৬৪০৪, তিরমিজি ৩৪৬৬,৩৪৬৭,৩৯৫৬, আহমাদ ৭১২৭। আত তালীকুর রাগীব ২/২৪৪।জিকিরের ফজিলত -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩৮০৮. জুওয়ায়রিয়াহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ফজরের নামায শেষে তাহার নিকট গেলেন। তখন তিনি [জুয়ায়রিয়াহ] আল্লাহর যিকিরে লিপ্ত ছিলেন। বেলা বাড়লে বা দিনের অর্ধেক অতিবাহিত হলে তিনি পুনরায় ফিরে এসে জুয়ায়রিয়াহ [রাদি.] কে একই অবস্থায় দেখলেন। তিনি বলেনঃ তোমার নিকট থেকে যাওয়ার পর আমি চারটি কথা তিনবার বলেছি এবং তা তুমি এতক্ষণ যা বলেছ তাহার চেয়ে ওজনে অনেক বেশি।

سُبْحَانَ اللَّهِ عَدَدَ خَلْقِهِ

“সুবহানাল্লাহি আদাদা খালকিহি” [আল্লাহর পবিত্রতা বর্ণনা করি তাহাঁর সৃষ্টি সংখ্যার সমান],

سُبْحَانَ اللَّهِ رِضَا نَفْسِهِ

সুবহানাল্লাহি রিদা নাফসিহী [আল্লাহর পবিত্রতা বর্ণনা করি তাহাঁর সন্তুষ্টি মোতাবেক],

سُبْحَانَ اللَّهِ زِنَةَ

সুবহানাল্লাহি যিনাতা আরশিহি [আল্লাহর পবিত্রতা বর্ণনা করি তাহাঁর আরশের ওজনের সমপরিমাণ] এবং

سُبْحَانَ اللَّهِ مِدَادَ كَلِمَاتِهِ

সুবহানাল্লাহি মিদাদা কালিমাতিহি [আল্লাহর পবিত্রতা বর্ণনা করি তাহাঁর কালাম সমুহের সমপরিমাণ]। {৩১৪০}

{৩১৪০} মুসলিম ২৭২৬, তিরমিজি ৩৫৫৫, নাসাঈ ১৩৫২, আহমাদ ২৬২১৮,২৬৮৭৫,। সহীহ আবু দাঊদ ১৩৪৭। জিকিরের ফজিলত -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩৮০৯. নুমান বিন বাশীর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তাসবীহ [সুবহানাল্লাহ], তাহলীল [লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ] ও তাহমীদের [আলহামদু লিল্লাহ]-এর মাধ্যমে তোমরা আল্লাহর যে মহিমা বর্ণনা কর তা মৌমাছির গুঞ্জনের ন্যায় শব্দ করে আরশের চারপাশে ঘুরতে থাকে। সেগুলো নিজ নিজ প্রেরকের কথা উল্লেখ করিতে থাকে। তোমাদের কেউ কি এটা পছন্দ করে না যে, আল্লাহর নিকট অনবরত তাহার উল্লেখকারী কেউ থাকুক? {৩১৪১}

{৩১৪১} আহমাদ ১৭৮৯৮,১৭৯২১। মুখতাসারুল উলু ৩২/২৪। জিকিরের ফজিলত -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩৮১০. উম্মু হানী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর নিকট এসে বললাম, হে রাসূলাল্লাহ! আমাকে একটা আমল বলে দিন। কেননা এখন তো আমি বৃদ্ধ হয়ে পড়েছি, দুর্বল হয়ে গেছি এবং আমার দেহও ভারী হয়ে গেছে। তিনি বলেনঃ তুমি শতবার আল্লাহু আকবার, শতবার আলহামদু লিল্লাহ এবং শতবার সুবহানাল্লাহ পড়ো। তা জিনপোষ ও লাগামসহ একশত ঘোড়া আল্লাহর পথে [জিহাদে] দান করার চেয়ে উত্তম, একশত উটের চেয়ে উত্তম এবং একশত গোলাম আজাদ করার চেয়ে উত্তম। {৩১৪২}

{৩১৪২} আহমাদ ২৭৭২৩, ২৬৮৪৭। সহীহাহ ১৩১৬। জিকিরের ফজিলত -এই হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান হাদিস

৩৮১১. সামুরাহ বিন জুনদুব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] বলেনঃ চারটি শ্রেষ্ঠ বাক্য আছে তাহার যে কোনোটি দিয়ে শুরু করাতে তোমার ক্ষতি নেই,

 سُبْحَانَ اللَّهِ

সুবহানাল্লাহ [আল্লাহ মহাপবিত্র],

 وَالْحَمْدُ لِلَّهِ 

ওয়ালহামদু লিল্লাহ [সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর]

 وَلاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ 

ওয়া লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু [আল্লাহ ব্যাতিত কোন ইলাহ নাই] এবং

وَاللَّهُ أَكْبَرُ

ওয়াল্লাহু আকবার [আল্লাহ মহান]। {৩১৪৩}

{৩১৪৩} মুসলিম ২১৩৭। সহীহাহ ৩৪৬। জিকিরের ফজিলত -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩৮১২. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি

 سُبْحَانَ اللَّهِ وَبِحَمْدِهِ

“সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি”

শতবার বলল, তাহার গুনাহসমূহ মাফ করে দেয়া হইবে, যদিও তা সমুদ্রের ফেনার ন্যায় [অধিক] হয়। {৩১৪৪}

{৩১৪৪} সহিহুল বুখারী ৬৪০৬, তিরমিজি ৩৪৬৬, ৩৪৬৭, ৩৯৫৬, আহমাদ ৭১২৭। তাখরীজুল কালিমুৎ তায়্যিব ৭। জিকিরের ফজিলত -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩৮১৩. আবু দারদা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাকে বললেনঃ তুমি অবশ্যই

سُبْحَانَ اللَّهِ وَالْحَمْدُ لِلَّهِ وَلاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَاللَّهُ أَكْبَرُ

“সুবহানাল্লাহি ওয়াল হামদু লিল্লাহি ওয়ালা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার” পড়তে থাকো। কারণ তা গুনাহ সমূহঝরিয়ে দেয়, যেমন গাছ তাহার পাতা ঝরিয়ে দেয়। {৩১৪৫}

{৩১৪৫} আহমাদ ২১২৩৪। আত তালীকুর রাগীব ২/২৪৮, দঈফ আল-জামি ৩৭৫০। জিকিরের ফজিলত -এই হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৫৭. অধ্যায়ঃ ক্ষমা প্রার্থনা

৩৮১৪. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমরা গণনা করে দেখেছি যে, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] একই মজলিশে শতবার বলিতেন,

 رَبِّ اغْفِرْ لِي وَتُبْ عَلَىَّ إِنَّكَ أَنْتَ التَّوَّابُ الرَّحِيمُ

“রব্বিগফির লী ওয়াতুব আলাইয়্যা ইন্নাকা আনতাত তাওয়াবুর রহীম” [প্রভু! আমাকে ক্ষমা করো এবং আমার তওবা কবুল কর।

কেননা তুমিই তওবা কবুলকারী ও করুণাময়]। {৩১৪৬}

{৩১৪৬} তিরমিজি ৩৪৩৪, আবু দাউদ ১৫১৬। সহীহাহ ৫৫৬, সহীহ আবু দাউদ ১৩৫৭। জিকিরের ফজিলত -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩৮১৫. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ নিশ্চয়ই আমি দৈনিক শতবার আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করি এবং তওবা করি। {৩১৪৭}

{৩১৪৭} আহমাদ ৭৭৩৪,৮২৮৮। জিকিরের ফজিলত -এই হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান সহীহ

৩৮১৬. আবু মুসা আল-আশাআরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ নিশ্চয়ই আমি দৈনিক সত্তরবার আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করি এবং তওবা করি। {৩১৪৮}

{৩১৪৮} আহমাদ ২২৮২৯ । জিকিরের ফজিলত -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩৮১৭. হুযায়ফাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাগে আমার জিহ্বা আমার পরিবারের উপর অসংযত হয়ে যেতো, তবে তা তাহাদের অতিক্রম করে অন্যদের স্পর্শ করতো না। বিষয়টা আমি নবী [সাঃআঃ] এর নিকট উল্লেখ করিলে তিনি বলেনঃ তুমি তোমার ক্ষমা প্রার্থনা থেকে কোথায় আছো? দৈনিক সত্তরবার আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করো। {৩১৪৯}

{৩১৪৯} আহমাদ ২২৮২৯,২২৮৫৩,২২৮৬২,২২৯১২, দারেমী ২৭২৩। রাওদুন নাদীর ২৮০। জিকিরের ফজিলত -এই হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৩৮১৮. আবদুল্লাহ বিন বুসর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি তাহার আমলনামায় অধিক পরিমাণ “ক্ষমা প্রার্থনা” যোগ করিতে পেরেছে, তাহার জন্য সুসংবাদ, আনন্দ। {৩১৫০}

{৩১৫০} হাদিস টি ঈমাম ইবনি মাজাহ একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। মিশকাত ২৩৬, আত তালীকুর রাগীব ২/২৬৮। জিকিরের ফজিলত -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩৮১৯. আবদুল্লাহ বিন আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি সদাসর্বদা ক্ষমা প্রার্থনা করিবে, আল্লহ তাহাকে প্রতিটি দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির পথ ও প্রতিটি সংকট থেকে উদ্ধারের পথ বের করে দিবেন এবং তাহাকে তাহার ধারণাতীত উৎস থেকে রিযিক দান করবেন। {৩১৫১}

{৩১৫১} আবু দাউদ ১৫১৮। দঈফাহ ৭০৬, দঈফ আবু দাউদ ২৬৮, আত তালীকুর রাগীব ২/২৬৮, দঈফ আল জামি ৫৮২৯। জিকিরের ফজিলত -এই হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৩৮২০. আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] বলিতেন ঃ হে আল্লাহ! যারা উত্তম কাজ করে আনন্দিত হয় এবং নিকৃষ্ট কাজ করিলে ক্ষমা প্রার্থনা করে, আমাকে তাহাদের অন্তর্ভুক্ত করো। {৩১৫২}

{৩১৫২} আহমাদ ২৪৪৫৯,২৪৫৯৬,২৫০২৩,২৫৪৯০। মিশকাত ২৩৫৭। জিকিরের ফজিলত -এই হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৫৮ অধ্যায়ঃ আমলের ফজিলত

৩৮২১. আবু যাহার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আল্লাহ তাআলা বলেন, যে ব্যাক্তি একটি নেকি আমল করিল, তাহার জন্য রয়েছে তাহার দশ গুণ। আমি অবশ্য বাড়াতেও পারি। যে ব্যক্তি কোন পাপ কাজ করিল, তাহার পাপের শাস্তি হইবে তাহার সম-পরিমাণ অথবা আমি তা ক্ষমাও করিতে পারি। যে ব্যক্তি আমার দিকে এক বিঘত অগ্রসর হয়, আমি তাহার দিকে এক হাত অগ্রসর হই। আর যে ব্যক্তি এক হাত আমার দিকে অগ্রগামী হয়, আমি এক বাহু তাহার দিকে অগ্রগামী হই। যে ব্যক্তি আমার দিকে হেঁটে আসে, আমি তাহার দিকে দৌড়ে যাই। কোন ব্যক্তি আমার সাথে কোন কিছু শরীক না করা অবস্থায় পৃথিবীপূর্ণ গুনাহ নিয়ে আমার সাথে মিলিত হলেও আমি অনুরূপ পরিমাণ ক্ষমাসহ তাহার সাথে মিলিত হবো। {৩১৫৩}

{৩১৫৩} মুসলিম ২৬৮৭, আহমাদ ২০৮০৮, ২০৮৫৩,২০৮৬৬,২০৯৬১, ২০৯৭৭, ২১০৫৫, দারেমী ২৭৮৮। রাওদুন নাদীর ৯৫৫, সহীহাহ ৫৮১, ২২৮৭। জিকিরের ফজিলত -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩৮২২. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আল্লাহ তাআলা বলেন, আমি আমার সম্পর্কে আমার বান্দার ধারণা মোতাবেক আচরণ করি। সে যখন আমাকে স্মরণ করে, তখন আমি তাহার সাথেই থাকি। সে যদি মনে মনে আমাকে স্মরণ করে, তবে আমিও তাহাকে মনে মনে স্মরণ করি। সে যদি কোন মজলিসে আমাকে স্মরণ করে, তবে আমি তাহাদের চেয়ে উত্তম মজলিসে তাহার আলোচনা করি। সে যদি আমার দিকে এক বিঘত অগ্রসর হয়, তবে আমি তাহার দিকে দৌড়ে অগ্রসর হই। {৩১৫৪}

{৩১৫৪} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ৭৪০৫, মুসলিম ২৬৭৫, তিরমিজি ৩৬০৩, আহমাদ ৭৩৭৪, ২৭৪০৯,৮৪৩৬,৯০০১, ৯০৮৭,৯৩৩৪,২৭২৭৯,২৭২৮৩,১০১২০,১০২৪১,১০৪০৩,১০৫২৬। সহীহাহ ২২৮৭। জিকিরের ফজিলত -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩৮২৩. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আদম-সন্তানের প্রতিটি কাজের সওয়াব দশ থেকে সাতশত গুন পর্যন্ত বর্ধিত হয়। আল্লাহ তাআলা বলেন, তবে রোযা ব্যতীত। কেননা তা শুধু আমার জন্য এবং আমিই তাহার পুরষ্কার দিবো। {৩১৫৫}

{৩১৫৫} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৮৯৪, ১৯০৪, ৫৯২৭, ৭৪৯২,৭৫৩৮, মুসলিম ১১৫১, তিরমিজি ৭৬৪, নাসাঈ ২২১৫, ২২১৬, ২২১৭, ২২১৮, ২২১৯, আহমাদ ৭৪৪২, ৭৬৩৬, ২৭৩৪৫, ২৭২৪৮। জিকিরের ফজিলত -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৫৯. অধ্যায়ঃ “লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ”-এর ফজিলত

৩৮২৪. আবু মুসা আল আশআরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] আমাকে “লা হাওলা ওয়ালা কুওওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ” বলিতে শুনে বললেনঃ হে আবদুল্লাহ বিন কায়স! আমি কি তোমাকে এমন এক বাক্যের সন্ধান দিবো না, যা জান্নাতের ভাণ্ডারসমূহের অন্তর্ভুক্ত? আমি বললাম, হাঁ, ইয়া রাসূলাল্লাহ! তিনি বলেনঃ তুমি বলো

لاَ حَوْلَ وَلاَ قُوَّةَ إِلاَّ بِاللَّهِ

“লা হাওলা ওয়ালা কুওওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ”। {৩১৫৬}

{৩১৫৬} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ৪২০৫, মুসলিম ২৭০৪, তিরমিজি ৩৩৭৪, ২৪৬১, আবু দাউদ ১৫২৬, আহমাদ ১৯০২৬, ১৯১০২,১৯১৫১,১৯২৪৬,১৯২৫৬। রাওদুন নাদইরঃ ১০৪১। জিকিরের ফজিলত -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩৮২৫. আবু যার্র [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাকে বললেনঃ আমি কি তোমাকে জান্নাতের গুপ্তধনসমূহের একটির সন্ধান দিবো না? আমি বললাম, হাঁ, ইয়া রাসূলাল্লাহ! তিনি বলেনঃ

لاَ حَوْلَ وَلاَ قُوَّةَ إِلاَّ بِاللَّهِ

“লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ”। {৩১৫৭}

{৩১৫৭} আহমাদ ২০৮২৯, ২০৮৪২, ২০৮৭৯। রাওদুন নাদীর ১০৪১, আত তালীকুর রাগীব ২/২৫৬। জিকিরের ফজিলত -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩৮২৬. হাযিম বিন হারমালাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি নবী [সাঃআঃ] এর নিকট দিয়ে যাচ্ছিলাম। তিনি আমাকে বলেনঃ হে হাযিম! তুমি অধিক সংখ্যায়

لاَ حَوْلَ وَلاَ قُوَّةَ إِلاَّ بِاللَّهِ

“লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ” বাক্যটি পড়ো। কেননা তা হলো জান্নাতের গুপ্তধন। {৩১৫৮}

{৩১৫৮} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন।মিশকাত ২৩১৯। জিকিরের ফজিলত -এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস


Posted

in

by

Comments

Leave a Reply