কিয়ামত , জান্নাত ও জাহান্নামের বর্ণনা
কিয়ামত , জান্নাত ও জাহান্নামের বর্ণনা
পর্বঃ ৫২, কিয়ামত , জান্নাত ও জাহান্নামের বর্ণনা, অধ্যায়ঃ (১-১৯)=১৯টি
১. অধ্যায়ঃ সৃষ্টির সূচনা এবং আদাম [আঃ]-এর সৃষ্টি
২. অধ্যায়ঃ পুনরুত্থান, হাশ্র-নাশর ও কিয়ামাত দিবসে পৃথিবীর অবস্থা
৩. অধ্যায়ঃ জান্নাতবাসীদের আতিথেয়তা
৪. অধ্যায়ঃ নবী [সাঃআঃ]-কে ইয়াহূদীদের রূহ্ সম্বন্ধে জিজ্ঞাসাবাদ ও আল্লাহর বাণীঃ “ওরা আপনাকে রূহ্ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করছে”
৫. অধ্যায়ঃ মহান আল্লাহর বাণীঃ “আপনি তাদের মাঝে অবস্থানকালে কক্ষনো আল্লাহ তাদেরকে আযাব দিবেন না”
৬. অধ্যায়ঃ মহান আল্লাহর বাণীঃ “অবশ্যই মানুষ নিজেকে অভাবমুক্ত মনে করে, ফলে সে সীমালঙ্ঘন করে”
৭. অধ্যায়ঃ ধুম্র প্রসঙ্গ
৮. অধ্যায়ঃ চন্দ্র খণ্ডিত হওয়ার বর্ণনা
৯. অধ্যায়ঃ আল্লাহ তাআলার চেয়ে বেশি ধৈর্যশীল আর কোন সত্তা নেই
১০. অধ্যায়ঃ কাফির কর্তৃক পৃথিবীপূর্ণ স্বর্ণ মুক্তিপণ দিতে চাওয়া প্রসঙ্গ
১১. অধ্যায়ঃ [কিয়ামাতের দিন] কাফিরদের অধোমুখী করে একত্র করা হইবে
১২. অধ্যায়ঃ দুনিয়ার সর্বাধিক স্বাচ্ছন্দ্যভোগী ব্যক্তিকে জাহান্নামে অবগাহন এবং সবচেয়ে কঠিন দুরাবস্থাভোগী বাক্তিকে জান্নাতে অবগাহন করানো প্রসঙ্গ
১৩. অধ্যায়ঃ নেকীর প্রতিফল মুমিনকে দুনিয়া ও আখিরাত দু জগতে প্রদান করা হয় এবং কাফিরের নেকীর প্রতিফল দুনিয়াতেই ত্বরান্বিত করা হয়
১৪. অধ্যায়ঃ মুমিনের দৃষ্টান্ত শস্যক্ষেতের মতো এবং মুনাফিক ও কাফিরের দৃষ্টান্ত দেবদারু গাছের মত
১৫. অধ্যায়ঃ মুমিনের দৃষ্টান্ত খেজুর গাছের মতো
১৬. অধ্যায়ঃ শাইতানের উস্কিয়ে দেয়া, মানুষের মাঝে ফিত্নাহ্ সৃষ্টি করার উদ্দেশে শাইতান কর্তৃক সেনাদল পাঠানো এবং প্রতিটি মানুষের সঙ্গে একজন সাথী রয়েছে
১৭. অধ্যায়ঃ কোন লোকই তার আমালের দ্বারা জান্নাতে যেতে পারবে না, বরং আল্লাহর রহমতের মাধ্যমে জান্নাতে যাবে
১৮. অধ্যায়ঃ আমল বৃদ্ধি করা ও ইবাদাতে চেষ্টারত থাকা
১৯. অধ্যায়ঃ উপদেশ দানের ক্ষেত্রে মধ্যপন্থা অবলম্বন করা
১. অধ্যায়ঃ সৃষ্টির সূচনা এবং আদাম [আঃ]-এর সৃষ্টি
৬৯৪৭. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমার হাত ধরে বলিলেন, আল্লাহ তাআলা শনিবার দিন মাটি সৃষ্টি করেন এবং এতে পর্বত সৃষ্টি করেন রবিবার দিন। সোমবার দিন তিনি বৃক্ষরাজি সৃষ্টি করেন। মঙ্গলবার দিন তিনি বিপদাপদ সৃষ্টি করেন। তিনি নূর সৃষ্টি করেন বুধবার দিন। এ দিনে তিনি পৃথিবীতে পশু-পাখি ছড়িয়ে দেন এবং জুমুআর দিন আসরের পর জুমুআর দিনের শেষ মুহূর্তে অর্থাৎ আসর থেকে নিয়ে রাত পর্যন্ত সময়ের মধ্যবর্তী সময়ে সর্বশেষ মাখলুক আদাম [আঃ]-কে সৃষ্টি করেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৭৯৭, ইসলামিক সেন্টার- ৬৮৫১]
২. অধ্যায়ঃ পুনরুত্থান, হাশর-নাশর ও কিয়ামাত দিবসে পৃথিবীর অবস্থা
৬৯৪৮. সাহ্ল ইবনি সাদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ লোকেদেরকে কিয়ামাতের দিন ময়দার রুটির ন্যায় [গোল] লালচে সাদা জমিনের উপরে জমায়েত করা হইবে। সেখানে কারো কোন বিশেষ নিদর্শন মওজুদ থাকিবে না।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৭৯৮, ইসলামিক সেন্টার- ৬৮৫২]
৬৯৪৯. আয়েশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে আল্লাহর বাণীঃ
يَوْمَ تُبَدَّلُ الأَرْضُ غَيْرَ الأَرْضِ وَالسَّمَوَاتُ
[অর্থ] “যেদিন এ পৃথিবী পরিবর্তিত হয়ে অন্য পৃথিবী হয়ে যাবে এবং আকাশমণ্ডলীও” – [সুরা ইবরা-হীম ১৪ : ৪৮] সম্পর্কে প্রশ্ন করলাম, হে আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]! তবে সেদিন লোকেরা কোথায় থাকিবে? তিনি বলিলেন, [জাহান্নামের উপরে নির্মিত] সেতুর উপরে অবস্থান করিবে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৭৯৯, ইসলামিক সেন্টার- ৬৮৫৩]
৩. অধ্যায়ঃ জান্নাতবাসী দের আতিথেয়তা
৬৯৫০. আবু সাঈদ আল খুদরী [রাদি.]-এর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, সমস্ত ভূখণ্ড কিয়ামাতের দিন একটি রুটির মতো হয়ে যাবে। আল্লাহ সেটি নিজ হাতে এপাশ-ওপাশ করবেন, যেমন তোমাদের মাঝে কেউ সফরের সময় নিজ রুটি এপাশ-ওপাশ করে। এ দিয়ে হইবে জান্নাতবাসীর জন্য আতিথেয়তা। এমন সময় এক ইয়াহূদী লোক এসে বলিল, হে আবুল কাসিম! রহ্মান আপনার প্রতি বারাকাত দান করুন। কিয়ামাতের দিন জান্নাতবাসীদের আতিথেয়তা সম্পর্কে আপনাকে জানাব কি? তিনি বলিলেন, হ্যাঁ। ইয়াহূদী হলল, এ পৃথিবীটি একটি রুটির রূপ ধারণ করিবে, যেমন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছিলেন। রাবী বলেন, তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদের দিকে লক্ষ্য করে এমনভাবে হেসে দিলেন যে, তাহাঁর মাড়ির মুবারক দাঁত প্রকাশিত হয়ে পড়েছিল। ইয়াহূদী বলিল, তাদের তরকারি কি হইবে তা কি আপনাকে বলিল? তিনি বলিলেন, হ্যাঁ। সে বলিল, বালাম এবং নূন। সহাবাগণ প্রশ্ন করিলেন, তা কি? সে বলিল ষাঁড় এবং মাছ- যাদের কলিজার বাড়তি অংশ থেকে সত্তর হাজার লোক আহার করিতে পারবে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮০০, ইসলামিক সেন্টার- ৬৮৫৪]
৬৯৫১. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ দশজন ইয়াহূদী ব্যক্তি যদি আমার অনুসরণ করতো তাহলে এ ভূখণ্ডে মুসলিম হওয়া ছাড়া কোন ইয়াহূদী আর অবশিষ্ট থাকত না।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮০১, ইসলামিক সেন্টার- ৬৮৫৫]
৪. অধ্যায়ঃ নবী [সাঃআঃ]-কে ইয়াহূদীদের রূহ সম্বন্ধে জিজ্ঞাসাবাদ ও আল্লাহর বাণীঃ “ওরা আপনাকে রূহ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করছে”
৬৯৫২. আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, একদা আমি নবী [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে এক ফসলি জমিতে চলছিলাম। সে সময় তিনি একটি খেজুর শাখার ছড়ির উপর ভর দিয়ে যাচ্ছিলেন। হঠাৎ তিনি ইয়াহূদীদের একটি দলের পাশ দিয়ে অতিক্রম করিলেন। তখন তারা একজন আরেকজনকে বলাবলি করিতে লাগল, রূহ সম্বন্ধে তাঁকে প্রশ্ন করো। তাদের কেউ বলিল, কি সন্দেহ তৈরী হয়েছে তোমাদের যে, তোমরা তাকে প্রশ্ন করিবে? তোমাদের যেন এমন কথার সম্মুখীন না হইতে হয়, যা তোমরা অপছন্দ করো। এরপরও তারা বলিল, তাকে অবশ্যই প্রশ্ন করো। পরিশেষে তাদের কেউ উঠে গিয়ে তাঁকে রূহ সম্বন্ধে প্রশ্ন করিল। রাবী বলিলেন, তখন নবী [সাঃআঃ] চুপ রইলেন। তার কোন উত্তর দিলেন না। আমি বুঝতে পারলাম, তাহাঁর উপর ওয়াহী অবতীর্ণ হচ্ছে। রাবী বলেন, আমি নিজের স্থানে দাঁড়িয়ে রইলাম। এরপর ওয়াহী অবতীর্ণ শেষ হলে তিনি বলিলেন,
وَيَسْأَلُونَكَ عَنِ الرُّوحِ قُلِ الرُّوحُ مِنْ أَمْرِ رَبِّي وَمَا أُوتِيتُمْ مِنَ الْعِلْمِ إِلاَّ قَلِيلاً
“তোমাকে তারা রূহ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে; বলো, রূহ আমার প্রতিপালকের একটি আদেশ মাত্র এবং তোমাদের অতি নগণ্য জ্ঞান দেয়া হয়েছে” – [সুরা আল ইসরা ১৭ : ৮৫]।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮০২, ইসলামিক সেন্টার- ৬৮৫৬]
৬৯৫৩. আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি নবী [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে মাদীনার একটি ফসলি জমিতে হাঁটছিলাম। তারপর তিনি হাফ্সের অবিকল হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। তবে ওয়াকী-এর হাদীসে আছে-وَمَا أُوتِيتُمْ مِنَ الْعِلْمِ إِلاَّ قَلِيلاً আর খাশ্রামের সূ্ত্রে বর্ণিত ঈসার হাদীসে রয়েছে- وَمَا أُوتُوا
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮০৩, ইসলামিক সেন্টার- ৬৮৫৭]
৬৯৫৪. আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, একদা নবী [সাঃআঃ] কোন এক খেজুর বাগানে খেজুর ডালের লাঠির উপর ভর করে চলছিলেন। এরপর তিনি আমাশ হইতে বর্ণিত হাদীসের হুবহু বর্ণনা করিয়াছেন। কিন্তু তার বর্ণনার মধ্যে রয়েছে [আর-বী] অর্থাৎ- “এ বিষয়ে তোমাদেরকে সামান্য জ্ঞানই দান করা হয়েছে”।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮০৪, ইসলামিক সেন্টার- ৬৮৫৮]
৬৯৫৫. খাব্বাব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আস ইবনি ওয়ায়িল-এর কাছে আমার কিছু পাওনা ছিল। এর উসূলান্তে আমি তার নিকট গেলাম। সে বলিল, যে পর্যন্ত তুমি মুহাম্মাদকে অস্বীকার না করিবে ততক্ষণ পর্যন্ত তোমার পাওনা দিব না। এ কথা শুনে আমি তাকে বললাম, আমি কক্ষনো মুহাম্মাদ [সাঃআঃ]-কে অস্বীকার করব না, তুমি মরার পর আবার জীবিত হয়ে আসলেও। সে বলিল, আমি কি মৃত্যুর পর আবার জীবিত হয়ে উঠব? তাহলে তখনই আমি আমার সম্পদ এবং সন্তানাদি লাভ করে তোমার পাওনা পরিশোধ করব। তখন এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয়,
أَفَرَأَيْتَ الَّذِي كَفَرَ بِآيَاتِنَا وَقَالَ لأُوتَيَنَّ مَالاً وَوَلَدًا) إِلَى قَوْلِهِ ( وَيَأْتِينَا فَرْدًا
“আপনি কি দেখেছেন তাকে যে আমার আয়াতসমূহ উপেক্ষা করে এবং বলে, আমাকে তো ধন-সম্পদ ও সন্তানাদি দেয়া হইবে।” “….. আর সে আমার কাছে একাকী আসবে” – তখন এ আয়াতটি নাযিল হয়।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮০৫, ইসলামিক সেন্টার- ৬৮৫৯]
৬৯৫৬. আমাশ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর সানাদে এ সূ্ত্র হইতে বর্ণীতঃ
ওয়াকীর হাদীসের অবিকল বর্ণনা করিয়াছেন। তবে জারীর-এর হাদীসের মধ্যে অতিরিক্ত আছে যে, খাব্বাব [রাদি.] বলেন, জাহিলী যুগে আমি কর্মকার ছিলাম। তখন আস ইবনি ওয়ায়িলকে আমি একটি কাজ করে দিয়েছিলাম। এরপর আমি তা আদায় করার জন্য তার কাছে গেলাম।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮০৬, ইসলামিক সেন্টার- ৬৮৬০]
৫. অধ্যায়ঃ মহান আল্লাহর বাণীঃ “আপনি তাদের মাঝে অবস্থানকালে কক্ষনো আল্লাহ তাদেরকে আযাব দিবেন না”
৬৯৫৭. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, একদা আবু জাহ্ল বলিল, “হে আল্লাহ! এটা যদি তোমার তরফ থেকে সত্য হয়, তাহলে আমাদের উপর আকাশ থেকে প্রস্তর বর্ষণ করো অথবা আমাদের কঠিন আযাব দাও।” তখন অবতীর্ণ হলোঃ “আল্লাহ এমন নন যে, আপনি তাদের মাঝে অবস্থান করবেন আর তিনি তাদের আযাব দিবেন এবং আল্লাহ এমনও নন যে, তারা মার্জনা প্রার্থনা করিবে আর তিনি তাদের আযাব দিবেন। আর তাদের কি বা বলার আছে যে, আল্লাহ তাদের আযাব দিবেন না, যদিও তারা লোকেদের মাসজিদুল হারাম হইতে নিবৃত্ত করে”? [সুরা আল আনফাল ৮ : ৩৩-৩৪] ….. আয়াতের শেষ পর্যন্ত। arbi
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮০৭, ইসলামিক সেন্টার- ৬৮৬১]
৬. অধ্যায়ঃ মহান আল্লাহর বাণীঃ “অবশ্যই মানুষ নিজেকে অভাবমুক্ত মনে করে, ফলে সে সীমালঙ্ঘন করে”
৬৯৫৮. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আবু জাহ্ল বলেছিল, মুহাম্মাদ কি তোমাদের মাঝে তাহাঁর মুখমণ্ডল জমিনের উপর রাখে? লোকেরা বলিল, হ্যাঁ রাখে। তখন সে বলিল, আমি লাত এবং উয্যার শপথ করে বলছি, আমি যদি তাকে এমন করিতে দেখি তবে নিশ্চয়ই আমি তার ঘাঁড় পদদলিত করব, অথবা তার মুখমণ্ডল আমি মাটিতে মেখে দিব। [নাঊযুবিল্লাহ] তারপর একদা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] নামাজ আদায়ে রত ছিলে। এমন সময় আবু জাহ্ল রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর গর্দানকে পদদলিত করার উদ্দেশে তাহাঁর কাছে আসলো। একটু অগ্রসর হয়ে অকস্মাৎ সে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] থেকে মুখ ফিরিয়ে দ্রুত পিছনে সরে আসল এবং দু হাত দিয়ে নিজেকে বাঁচাতে লাগল। এ দেখে তাকে প্রশ্ন করা হলো, তোমার কি হয়েছে? উত্তরে সে বলিল, আমি দেখেছি যে, আমার এবং তাহাঁর মধ্যে আগুনের একটা প্রকাণ্ড খাদক, ভয়াবহ অবস্থা এবং এবং কতগুলো ডানা।
অতঃপর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, সে যদি আমার নিকটে আসত, তবে ফেরেশ্তাগণ তার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন করে ফেলতো।
রাবী বলেন, অতঃপর আল্লাহ তাআলা অবতীর্ণ করিলেন। রাবী [আবু হাযিম] বলেন, আবু হুরায়রা্ [রাদি.]-এর হাদীসের মধ্যে এ অবতীণ আয়াতটি আছে, না এ মর্মে তার কাছে কোন খবর পৌঁছেছে, তা আমাদের জানা নেই। “কক্ষনো ঠিক নয়, মানুষ তো সীমালঙ্ঘন করেই থাকে, কেননা সে নিজেকে স্বয়ংসম্পূর্ণ মনে করছে। আপনার প্রতিপালকের কাছে ফিরে যেতে হইবে এটা সুনিশ্চিত। আপনি বলুন তো সে ব্যক্তি সম্পর্কে যে বাধা দেয় এক বান্দাকে যখন সে নামাজ আদায় করে। আপনি বলুন তো যদিও সে নামাজ আদায়কারী ব্যক্তিটি সৎপথে থাকে এবং তাকওয়ার আদেশ করে এমন ব্যক্তিকি কি বাধা দেয়া ব্যক্তি তবে সে কি জানে না যে, আল্লাহ প্রত্যক্ষ করেন? সাবধান, সে যদি বিরত না হয়, তবে আমি অবশ্যই তাকে হেঁচড়িয়ে নিয়ে যাব মস্তকের অগ্রভাগের কেশগুচ্ছ ধরে, সেটি মিধ্যাচারী পাপিষ্ঠের কেশগুচ্ছ। অতএব সে তার নাসিয়াহ্ অর্থাৎ- তার সম্প্রদায়কে আহ্বান করুক। আমি যবানিয়াকে [সম্প্রদায়কে] আহবান করব। কক্ষনো তুমি তার অনুকরণ করো না” – [সুরা আল আলাক ৯৬ : ৬-১৯]। arbi
উবাইদুল্লাহ তার হাদীসে এতটুকু বাড়িয়েছেনঃ রাবী {আবু হুরায়রা্ [রাদি.]} বলেন, তাহাঁর [রসুল] আদেশ আল্লাহর নির্দেশ অনুযায়ী [প্রযোজ্য]।
ইবনি আবদুল আলা বৃদ্ধি করিয়াছেন فَلْيَدْعُ نَادِيَهُ অর্থাৎقَوْمَهُ তার সম্প্রদায়কে ডাকুক।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮০৮, ইসলামিক সেন্টার- ৬৮৬২]
৭. অধ্যায়ঃ ধুম্র প্রসঙ্গ
৬৯৫৯. মাসরূক [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমরা আবদুল্লাহ ইবনি মাসঊদ [রাদি.]-এর কাছে উপবিষ্ট ছিলাম। এ সময় তিনি আমাদের মাঝে এক পার্শ্বদেশ হয়ে ঘুমিয়েছিলেন। এমতাবস্থায় তাহাঁর কাছে জনৈক লোক এসে বলিল, হে আবু আবদুর রহ্মান! কিনদা দ্বারপ্রান্তে এক বক্তা বলছেন, কুরআনে বর্ণিত ধোঁয়ার কাহিনীটি ভবিষ্যতে সংঘটিত হইবে। তা প্রবাহিত হয়ে কাফিরদের শ্বাসরুদ্ধ করে দিবে এবং এতে মুমিনদের সর্দির মতো অবস্থা হইবে। এ কথা শুনে তিনি গোস্বা হয়ে বসলেন এবং বলিলেন, হে লোক সকল! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর। তোমাদের কেউ কোন কথার জ্ঞান থাকলে সে যেন তা-ই বলে। আর যে না জানে সে যেন বলে- arbi আল্লাহই সবচেয়ে ভাল জানেন। কেননা প্রকৃত জ্ঞানের কথা হচ্ছে এই যে, যে বিষয়ে তার জ্ঞান নেই সে বিষয়ে বলবে, আল্লাহই অধিক ভাল জানেন। কারণ আল্লাহ তাআলা তাহাঁর নবী [সাঃআঃ]-কে বলেছেন, “বলো, আমি এর জন্য তোমাদের কাছে কোন প্রতিফল চাই না এবং আমি মিথ্যা দাবীদারদের অন্তর্ভুক্ত নই।” প্রকৃত অবস্থা তো এই যে, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যখন লোকেদের মাঝে দীনবিমুখতা দেখলেন, তখন তিনি বলেছিলেন, হে আল্লাহ! ইউসূফ [আঃ]-এর সময়ের ন্যায় অভাব-অনটনের সাতটি বছর তাদের উপর আপতিত কর। তারপর তাদের উপর অভাব-অনটন এমনভাবে পতিত হলো যে, তা সব কিছুকে নিঃশেষ করে দিল। ফলে ক্ষুধার জ্বালায় তারা চামড়া ও মৃত দেহ খাদ্য উপকরণ হিসেবে গ্রহণ করলো। এমনকি তাদের কোন লোক আকাশের দিকে তাকালে শুধূ ধোঁয়ার মতই দেখিতে পেত। অতঃপর আবু সুফ্ইয়ান রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর কাছে এসে বলিল, হে মুহাম্মাদ! আপনি তো আল্লাহর আনুগত্যের আদেশ করেন এবং আত্মীয়তার হক আদায় করার আদেশ দিয়ে আসছেন, অথচ আপনার সম্প্রদায় তো ধ্বংস হয়ে গেলো। আপনি তাদের জন্য আল্লাহর কাছে দুআ করুন। [এ প্রসঙ্গে] আল্লাহ তাআলা বললেনঃ “অতএব আপনি অপেক্ষা করুন সে দিনের, যেদিন স্পষ্ট ধুম্রাচ্ছন্ন হইবে আকাশ এবং সেটা আবৃত করে ফেলবে মানব জাতিকে। এ হইবে কাঠিন শাস্তি। ….. তোমরা তো তোমাদের পূর্বাবস্থায় ফিরে যাবে।” এ পর্যন্ত তিলাওয়াত করিলেন। [সুরা আদ্ দুখান ৪৪ : ১০-১২]
আবদুল্লাহ [রাদি.] বলেন, আখিরাতের শাস্তি কি লাঘব করা হইবে? [আল্লাহ তাআলা আরো বলেছেন], “যেদিন আমি তোমাদের সুদৃঢ়ভাবে পাকড়াও করব, অবশ্যই সেদিন আমি তোমাদের নিকট থেকে প্রতিশেষ নিব।” [সুরা আদ্ দুখান ৪৪ : ১৬]
অনুরূপ এ আয়াতে বাতশাহ্ দ্বারা বাদ্রের যুদ্ধ উদ্দেশ্য করা হয়েছে। কাজেই দুখান [ধোয়ার নিদর্শন], আল বাত্বশাহ্ [পাকড়াও], লিযাম [আবশ্যিক শাস্তি] এবং রূম [রোমকদের পরাজয়ের কাহিনী] এসব অতীত হয়ে গেছে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮০৯, ইসলামিক সেন্টার- ৬৮৬৩]
৬৯৬০. মাসরূক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আবদুল্লাহ [রাদি.]-এর কাছে এক লোক এসে বলিল, আমি মাসজিদে এক লোককে দেখে এসেছি, সে কুরআনের ইচ্ছামাফিক তাফসীর করছে। সে [আরবী] এ আয়াতের ব্যাখ্যায় বলছে যে, কিয়ামাতের দিন ধোঁয়া এসে লোকেদের আবৃত করে ফেলবে ও তাদের শ্বাসরুদ্ধ করে ফেলবে, এমনকি এতে লোকেদের সর্দির ন্যায় অবস্থা হয়ে যাবে। এ কথা শুনে আবদুল্লাহ [রাদি.] বলিলেন, যে ব্যক্তি যে বিষয়ে জানে সে তা বর্ণনা করিবে। আর যে না জানে তার বলা অনুচিত, আল্লাহই অধিক জ্ঞাত। কেননা অজানা বিষয় সম্বন্ধে আল্লাহই অধিক জ্ঞাত, এ কথা বলাই মানুষের পরিপূর্ণ জ্ঞানের লক্ষণ। কারণ এ বিষয়টি তখনই সংঘটিত হয়েছিল, যখন কুরায়শরা নবী [সাঃআঃ]-এর অবাধ্যতা করেছিল। তখন তিনি তাদের বিরুদ্ধে দুআ করেন যেন ইউসুফ [আঃ]-এর সময়ের সাত বছরের মতো অভাব-অনটন তাদের উপর নিপতিত হয়। এরপর তাদের উপর অভাব-অনটন এবং ক্ষুধার কষ্ট এমনভাবে নিপতিত হলো যে, কেউ আকাশের দিকে তাকালে সে ধূম্রাচ্ছন্ন দেখত, এমনকি তারা হাড্ডি খাওয়া শুরু করিল। তখন জনৈক লোক এসে নবী [সাঃআঃ]-কে বলিল, হে আল্লাহর রসূল! মুযার গোত্রের জন্য আল্লাহর কাছে মার্জনা প্রার্থনা করুন। তারা নিশ্চয় ধ্বংস হয়ে গেল। তিনি বলিলেন, মুযার গোত্রের জন্য তুমি তো দুর্দান্ত সাহসী। রাবী বলেন, তারপর নবী [সাঃআঃ] তাদের জন্য আল্লাহর কাছে দুআ করিলেন। তখন আল্লাহ তাআলা অবতীর্ণ করিলেন, “আমি তোমাদের শাস্তি কিছু সময়ের জন্য বিরত রেখেছি। তোমরা তো তোমাদের আগের অবস্থায়ই প্রত্যাবর্তন করিবে”- [সুরা আদ্ দুখান ৪৪ : ১৫]।
রাবী বলেন, অতঃপর তাদের উপর অনবরত বৃষ্টি হলো। এরপর তাদের যখন স্বচ্ছলতা ফিরে এলো তখন তারা আবার আগের অবস্থায় প্রত্যাবর্তন করিল। তখন আল্লাহ তাআলা অবতীর্ণ করিলেন, “অতএব আপনি অপেক্ষা করুন সেদিনের, যেদিন ধূম্রাচ্ছন্ন হইবে আকাশ এবং সেটা মানব জাতিকে ঢেকে ফেলবে। এ হইবে কঠিন শাস্তি”- [সুরা আদ্ দুখান ৪৪ : ১০-১১]। যেদিন আমি তোমাদের শক্তভাবে পাকড়াও করব, সেদিন আমি তোমাদেরকে আযাব দিবই”- [সুরা আদ্ দুখান ৪৪ : ১৬]। রাবী বলেন, অর্থাৎ- বাদ্রের দিন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮১০, ইসলামিক সেন্টার- ৬৮৬৪]
৬৯৬১. আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, পাঁচটি বিষয় অতীত হয়ে গেছেঃ ধোঁয়া, শাস্তি, রোম-এর পরাজয়, পাকড়াও এবং চন্দ্রের নিদর্শন অর্থাৎ বিদীর্ণ হওয়া।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮১১, ইসলামিক সেন্টার- ৬৮৬৫]
৬৯৬২. ওয়াকী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর সূত্র হইতে বর্ণীতঃ
আমাশ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে এ সানাদে অবিকল হাদীস বর্ণনা করেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮১১, ইসলামিক সেন্টার- ৬৮৬৬]
৬৯৬৩. উবাই ইবনি কাব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
আল্লাহর বাণী- “বড় বড় শাস্তির পূর্বে তাদের আমি অবশ্যই ছোট ছোট শাস্তি আস্বাদন করাব”- [সূরাহ্ আস্ সাজদাহ্ ৩২ : ২১] এ আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেছেনঃ উদ্দেশ্য হলো পার্থিব বিপদাপদ, রোমের পরাজয়, পাকড়াও অথবা ধোঁয়া। পাকড়াও না ধোঁয়া এ সম্পর্কে শুবাহ্ সন্দেহ প্রকাশ করিয়াছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮১৩, ইসলামিক সেন্টার- ৬৮৬৭]
৮. অধ্যায়ঃ চন্দ্র খণ্ডিত হওয়ার বর্ণনা
৬৯৬৪. আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সময় চন্দ্র দুটুকরো হয়েছিল। তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছিলেনঃ তোমরা সাক্ষী থাকো।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮১৪, ইসলামিক সেন্টার- ৬৮৬৮]
৬৯৬৫. আবদুল্লাহ ইবনি মাসঊদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, মিনায় আমরা রসূলূল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সাথে ছিলাম। এমতাবস্থায় অকস্মাৎ চাঁদ দুটুকরো হয়ে গেল। এক টুকরো পাহাড়ের পিছনে পতিত হল এবং অপর টুকরো পাহাড়ের সামনে। তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদেরকে বলিলেন, তোমরা সাক্ষী থাকো।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮১৫, ইসলামিক সেন্টার- ৬৮৬৯]
৬৯৬৬. আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সময় চন্দ্র ফেটে দুটুকরো হয়ে যায়। এক টুকরোকে পাহাড় আড়াল করে ফেলেছে এবং অপর এক টুকরো পাহাড়ের উপর পরিলক্ষিত হয়েছে। তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ হে আল্লাহ! তুমি সাক্ষী থাকো।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮১৬, ইসলামিক সেন্টার- ৬৮৭০]
৬৯৬৭. ইবনি উমর [রাদি.]-এর সানাদে নবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণীতঃ
হুবহু বর্ণনা করিয়াছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮১৭, ইসলামিক সেন্টার- ৬৮৭১]
৬৯৬৮. শুবাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
অবিকল বর্ণনা করিয়াছেন। তবে ইবনি আবু আদী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর হাদীসের মধ্যে রয়েছে যে, তারপর তিনি বললেনঃ তোমরা সাক্ষী থাকো, তোমরা সাক্ষী থাকো।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮১৭, ইসলামিক সেন্টার- ৬৮৭২]
৬৯৬৯. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, মাক্কাহ্বাসী লোকেরা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর কাছে তাদের একটি নিদর্শন [মুজিযা] দেখানোর অনুরোধ করিল। তিনি তাদের দুবার চন্দ্র দুটুকরো হওয়ার নিদর্শন দেখালেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮১৮, ইসলামিক সেন্টার- ৬৮৭৩]
৬৯৭০. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
শাইবানের অবিকল হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮১৮, ইসলামিক সেন্টার- ৬৮৭৪]
৬৯৭১. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, চাঁদ দুটুকরো হয়েছে।
তবে আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর হাদীসে রয়েছে, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সময় চাঁদ দুটুকরো হয়েছে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮১৯, ইসলামিক সেন্টার- ৬৮৭৫]
৬৯৭২. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সময় চাঁদ দুটুকরো হয়েছে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮২০, ইসলামিক সেন্টার- ৬৮৭৬]
৯. অধ্যায়ঃ আল্লাহ তাআলার চেয়ে বেশি ধৈর্যশীল আর কোন সত্তা নেই
৬৯৭৩. আবু মূসা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কষ্টকর কোন কথা শোনার পর আল্লাহ তাআলার চেয়ে বেশি ধৈর্যশীল আর কোন সত্তা নেই। অবস্থা এই যে, আল্লাহর সাথে অংশীদার স্থাপন করা হয় এবং তাহাঁর জন্য সন্তান সাব্যস্ত করা হয়, এরপরও তিনি তাদেরকে মাফ করে দেন এবং তাদেরকে রিযিক দান করেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮২১, ইসলামিক সেন্টার- ৬৮৭৭]
৬৯৭৪. আবু মূসা [রাদি.]-এর সূত্রে নবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণীতঃ
হুবহু হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। তবে হাদীসের মধ্যে وَيُجْعَلُ لَهُ الْوَلَدُ কথাটি উল্লেখ নেই।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮২২, ইসলামিক সেন্টার- ৬৮৭৮]
৬৯৭৫. আবদুল্লাহ ইবনি কায়স [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, কষ্টকর কোন কথা শোনার পর আল্লাহর চেয়ে বেশি ধৈর্যশীল আর কেউ নেই। কেননা মানুষ আল্লাহর সঙ্গে অংশীদার স্থাপন করে এবং তাহাঁর জন্য সন্তান সাব্যস্ত করে, এতদসত্ত্বেও তিনি তাদের জীবিকা নির্বাহ করেন, তাদেরকে মাফ করেন এবং তাদেরকে প্রয়োজনীয় সব কিছু প্রদান করেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮২৩, ইসলামিক সেন্টার- ৬৮৭৯]
১০. অধ্যায়ঃ কাফির কর্তৃক পৃথিবীপূর্ণ স্বর্ণ মুক্তিপণ দিতে চাওয়া প্রসঙ্গ
৬৯৭৬. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.]-এর সূত্রে নবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, জাহান্নামীদের মাঝে যার শাস্তি সবচেয়ে কম হইবে, আল্লাহ তাআলা তাকে বলবেন, পৃথিবী এবং পৃথিবীর মাঝে যা কিছু আছে সব কিছু যদি তোমার হয়ে যায়, তবে কি তুমি এসব কিছু মুক্তিপণ হিসেবে প্রদান করে নিজেকে আযাব থেকে রক্ষা করিবে? সে বলবে, হ্যাঁ, অবশ্যই। তখন তিনি বলবেল, তুমি আদামের পৃষ্ঠে থাকা অবস্থায় আমি তো তোমার কাছে এ থেকেও সহজ জিনিস আশা করেছিলাম। তা হলো, তুমি শির্ক করিবে না। রাবী বলেন, আমার মনে হয়, তিনি বলেছেনঃ তাহলে আমি তোমাকে জাহান্নামে প্রবেশ করাব না। কিন্তু তুমি তা উপেক্ষা করে শির্কে জড়িয়ে পড়েছো।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮২৪, ইসলামিক সেন্টার- ৬৮৮০]
৬৯৭৭. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি নবী [সাঃআঃ] থেকে অবিকল বর্ণনা করেছন। তবে তিনি [আরবী] কথাটি উল্লেখ করেননি।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮২৫, ইসলামিক সেন্টার- ৬৮৮১]
৬৯৭৮. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নবী [সাঃআঃ] বলেন, কিয়ামাতের দিন কাফিরদেরকে বলা হইবে, তুমি কি বলো, যদি তুমি পৃথিবী সমতুল্য স্বর্ণের মালিক হও, তাহলে মুক্তিপণ হিসেবে তা প্রদান করে তুমি কি নিজেকে শাস্তি হইতে রক্ষা করিবে? সে বলবে, হ্যাঁ অবশ্যই। তখন তাকে বলা হইবে, তোমার নিকট হইতে তো এর থেকে অধিক সহজ বিষয় কামনা করা হয়েছিল।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮২৬, ইসলামিক সেন্টার- ৬৮৮২]
৬৯৭৯. আনাস [রাদি.]-এর সানাদে নবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণীতঃ
অবিকল হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। তবে এতে রয়েছে যে, তাকে বলা হইবে, তুমি মিথ্যা বলেছ। তোমার কাছে তো এর থেকে সহজ বিষয় কামনা করা হয়েছিল।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮২৭, ইসলামিক সেন্টার- ৬৮৮৩]
১১. অধ্যায়ঃ কিয়ামাতের দিন কাফিরদের অধোমুখী করে একত্র করা হইবে
৬৯৮০. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, এক লোক জিজ্ঞেস করিল, হে আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]! কিয়ামাত দিবসে কাফিরদেরকে নিম্নমুখী করে কিরূপে উত্থিত হইবে? তিনি বলিলেন, যিনি দুনিয়াতে উভয় পায়ের উপর ভর করে চালিত করিয়াছেন, তিনি কি কিয়ামাতের দিন তাদেরকে মুখের উপর ভর করে চালাতে সক্ষম হইবেন না?
এ হাদীস শুনে কাতাদাহ্ বলিলেন, আমার রবের মর্যাদার শপথ! অবশ্যই তিনি সক্ষম হইবেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮২৮, ইসলামিক সেন্টার- ৬৮৮৪]
১২. অধ্যায়ঃ দুনিয়ার সর্বাধিক স্বাচ্ছন্দ্যভোগী ব্যক্তিকে জাহান্নামে অবগাহন এবং সবচেয়ে কঠিন দুরাবস্থাভোগী বাক্তিকে জান্নাতে অবগাহন করানো প্রসঙ্গ
৬৯৮১. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ জাহান্নামের উপযোগী-দুনিয়ায় সর্বাধিক সচ্ছল ও ধন-সম্পদের অধিকারী লোককে কিয়ামাতের দিন উপস্থিত করা হইবে। এরপর তাকে জাহান্নামের আগুনে একবার অবগাহন করিয়ে বলা হইবে, হে আদাম সন্তান! দুনিয়াতে আরাম-আয়েশ কখনো তুমি ভোগ করেছো কি? কখনো তুমি স্বাচ্ছন্দ্য অবস্থায় দিন অতিবাহিত করেছো কি? সে বলবে, আল্লাহর শপথ! হে আমার প্রতিপালক! না, কক্ষনো করিনি। এরপর জান্নাতের উপযোগী দুনিয়ায় সর্বাধিক দুরাবস্থা সম্পন্ন লোককে আনা হইবে। এরপর তাকে জান্নাতে একবার অবগাহন করিয়ে জিজ্ঞেস করা হইবে, হে আদাম সন্তান! কখনো তুমি কষ্টে দিনাতিপাত করেছো কি? হৃদয় বিদারক এবং ভয়াবহ অবস্থায় দিনাতিপাত করেছো কি? সে বলবে, আল্লাহর কসম, হে আমার প্রতিপালক! কক্ষনো আমি কষ্টের সাথে দিনাতিপাত করিনি এবং দুঃখ কক্ষনো দেখিনি।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮২৯, ইসলামিক সেন্টার- ৬৮৮৫]
১৩. অধ্যায়ঃ নেকীর প্রতিফল মুমিনকে দুনিয়া ও আখিরাত দু জগতে প্রদান করা হয় এবং কাফিরের নেকীর প্রতিফল দুনিয়াতেই ত্বরান্বিত করা হয়
৬৯৮২. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ একটি নেকীর ক্ষেত্রেও আল্লাহ তাআলা কোন মুমিন বান্দার প্রতি অত্যাচার করবেন না। বরং তিনি এর ফলাফল দুনিয়াতে দান করবেন এবং আখিরাতেও দান করবেন। আর কাফির লোক পার্থিব জগতে আল্লাহর উদ্দেশে যে সৎ আমল করে এর প্রতিদান স্বরূপ তিনি তাকে জীবিকা নির্বাহ করেন। পরিশেষে আখিরাতে প্রতিফল দেয়ার মতো তার কাছে কোন সৎ আমলই থাকিবে না।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮৩০, ইসলামিক সেন্টার- ৬৮৮৬]
৬৯৮৩. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] থেকে রিওয়ায়াত করিয়াছেন যে, কাফির যদি দুনিয়াতে কোন সৎ আমল করে তবে এর প্রতিদান স্বরূপ দুনিয়াতেই তাকে জীবনোপকরণ প্রদান করা হয়ে থাকে। আর মুমিনদের নেকী আল্লাহ তাআলা আখিরাতের জন্য জমা করে রেখে দেন এবং আনুগত্যের প্রতিফল স্বরূপ আল্লাহ তাআলা তাদেরকে পৃথিবীতেও জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮৩১, ইসলামিক সেন্টার- ৬৮৮৭]
৬৯৮৪. আনাস [রাদি.]-এর সূত্রে নবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণীতঃ
অবিকল বর্ণনা করিয়াছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮৩২, ইসলামিক সেন্টার- ৬৮৮৮]
১৪. অধ্যায়ঃ মুমিনের দৃষ্টান্ত শস্যক্ষেতের মতো এবং মুনাফিক ও কাফিরের দৃষ্টান্ত দেবদারু গাছের মত
৬৯৮৫. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ মুমিনের দৃষ্টান্ত শস্যক্ষেতের মতো। বাতাস সবসময় তাকে আন্দোলিত করে। অনুরূপভাবে মুমিনের উপরও সবসময় বিপদাপদ আসতে থাকে। আর মুনাফিকের দৃষ্টান্ত দেবদারু গাছের মতো। মূল উৎপাটন হয়ে যায়; কিন্তু সেটা আন্দোলিত হয় না।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮৩৩, ইসলামিক সেন্টার- ৬৮৮৯]
৬৯৮৬. যুহরী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] থেকে এ সূত্র হইতে বর্ণীতঃ
অবিকল হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। তবে আবদুর রায্যাক-এর হাদীসে تُمِيلُهُ -এর স্থলে تُفِيئُهُ উল্লেখ রয়েছে [উভয়ের অর্থ একই, অর্থাৎ আন্দোলিত করে]।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮৩৪, ইসলামিক সেন্টার- ৬৮৯০]
৬৯৮৭. কাব ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ মুমিনের দৃষ্টান্ত নরম চারাগাছের মতো। বাতাস সেটাকে দুলাতে থাকে কখনো তাকে নুইয়ে ফেলে আবার কখনো একেবারে সোজা করে ফেলে। এমনিভাবে অবশেষে সেটা পূর্ণতা লাভ করে শুকিয়ে যায়। আর কাফিরদের দৃষ্টান্ত হচ্ছে স্বীয় কাণ্ডে দাঁড়ানো দেবদারু গাছের মতো। কোন কিছুই তাকে নাড়াতে পারে না। কিন্তু এটা একেবারেই মূলোৎপাটিত হয়ে যায়।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮৩৫, ইসলামিক সেন্টার- ৬৮৯১]
৬৯৮৮. কাব ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ মুমিনের দৃষ্টান্ত নরম চারাগাছের মতো। বাতাস তাকে আন্দোলিত করে। বাতাস কখনো তাকে নুইয়ে দেয়, আবার কখনো একেবারে সোজা দাঁড় করিয়ে দেয়। এমনি করে তার মৃত্যুক্ষণ এসে উপস্থিত হয়। আর মুনাফিকের দৃষ্টান্ত দাঁড়ানো দেবদারু গাছের মতো, কোন কিছুই তাকে নত করিতে পারে না। পরিশেষে তাকে একেবারেই মূলোচ্ছেদ করে দেয়।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮৩৬, ইসলামিক সেন্টার- ৬৮৯১{ক}]
৬৯৮৯. কাব ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি নবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণনা করিয়াছেন। তবে মাহমূদ-এর রিওয়ায়াতে বিশ্র-এর সূত্রে বর্ণিত আছে, [আরবী] কাফিরের দৃষ্টান্ত দেবদারু গাছের মতো। আর ইবনি হাতিম [রাদি.] যুহায়র [রাদি.]-এর ন্যায় [আরবী] অর্থাৎ- মুনাফিকের দৃষ্টান্তের কথাটি বর্ণনা করিয়াছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮৩৬, ইসলামিক সেন্টার- ৬৮৯২]
৬৯৯০. কাব ইবনি মালিক [রাদি.]-এর সানাদে নবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণীতঃ
তাদের অবিকল হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। কিন্তু তারা দুজনেই ইয়াহ্ইয়া [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণনা করিয়াছেন যে, কাফিরের দৃষ্টান্ত দেবদারু গাছের মতো।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮৩৭, ইসলামিক সেন্টার- ৬৮৯৩]
১৫. অধ্যায়ঃ মুমিনের দৃষ্টান্ত খেজুর গাছের মতো
৬৯৯১. আবদুল্লাহ ইবনি উমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, গাছ-গাছালির মধ্যে এমন একটি গাছ আছে, যার পাতা ঝরে পড়ে না এবং তা হলো মুমিনের দৃষ্টান্ত। তোমরা আমাকে বলিতে পার, সেটা কোন্ গাছ? তারপর লোকজনের ধারণা জঙ্গলের কোন গাছের প্রতি নিবদ্ধ হল।
আবদুল্লাহ [রাদি.] বলেন, আমার মনে হইতে লাগল যে, তা হলো খর্জুর বৃক্ষ। কিন্তু আমি লজ্জাবোধ করলাম। সহাবায়ে কিরাম [রাদি.] বলিলেন, হে আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]! আপনিই আমাদের তা বলে দিন। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ তা হলো খর্জুর বৃক্ষ।
আবদুল্লাহ [রাদি.] বলেন, এরপর আমি আমার পিতাকে আমার মনে যা এসেছিল তা বললাম। তিনি বলিলেন, তুমি যদি তখন তা বলে দিতে যে, সেটা হলো খর্জুর বৃক্ষ, তবে আমি অমুক অমুক জিনিস লাভ করার চাইতেও অধিক খুশী হতাম।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮৩৮, ইসলামিক সেন্টার- ৬৮৯৪]
৬৯৯২. ইবনি উমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
একদা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর সহাবাগণকে বলিলেন, এমন একটি গাছ আছে, যার দৃষ্টান্ত মুমিনের মতো, এ গাছটি কি গাছ, তোমরা কি আমাকে বলিতে পার? তখন লোকেরা জঙ্গলের গাছসমূহ থেকে এক একটি গাছের কথা বর্ণনা করিল।
ইবনি উমর [রাদি.] বলেন, আমার মনে হইতে লাগল, তা হলো খেজুর গাছ। তখন আমি বলার ইচ্ছা করলাম। কিন্তু সেখানে যেহেতু সমাজের বয়োবৃদ্ধ ব্যক্তিগণও ছিলেন, তাই আমি কথা বলিতে ভয় পাচ্ছিলাম। লোকজন চুপ হলে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, তা হলো খেজুর গাছ।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮৩৯, ইসলামিক সেন্টার- ৬৮৯৫]
৬৯৯৩. মুজাহিদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি মাদীনায় ইবনি উমর [রাদি.]-এর সাথে ছিলাম। একটি হাদীস ছাড়া রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] হইতে কোন হাদীস বর্ণনা করিতে তাকে আমি শুনিনি। তিনি বলেনঃ , আমরা নবী [সাঃআঃ]-এর সাথে বসা ছিলাম। তখন তার নিকট খেজুর গাছের মাথি আনা হলো। তারপর তিনি পূর্বোক্ত হাদীস দুটোর মতো এ হাদীসটি বর্ণনা করিলেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮৪০, ইসলামিক সেন্টার- ৬৮৯৬]
৬৯৯৪. মুজাহিদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি ইবনি উমর [রাদি.]-কে বলিতে শুনেছি যে, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর কাছে খেজুর গাছের মাথি আনা হলো। তারপর তিনি পূর্বোক্তদের অবিকল হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮৪১, ইসলামিক সেন্টার- ৬৮৯৭]
৬৯৯৫. ইবনি উমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমরা নবী [সাঃআঃ]-এর নিকট উপবিষ্ট ছিলাম। এ সময় তিনি বলিলেন, এমন একটি গাছ আছে যা মুসলিম লোকের ন্যায়, যার পাতা কখনো ঝরে পড়ে না, গাছটি কি গাছ তোমরা কি আমাকে বলিতে পার?
ইব্রাহীম ইবনি সুফ্ইয়ান [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, সম্ভবতঃ ঈমাম মুসলিম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেছেন, [আরবী] যা প্রত্যেক মৌসুমে ফল প্রদান করে। তবে আমি ছাড়া অন্যান্যদের বর্ণনায়ও আমি পেয়েছি [আরবী] অর্থাৎ- [আরবী] ছাড়া।
ইবনি উমর [রাদি.] বলেনঃ , আমার মনে হইতে লাগল, তা হলো খেজুর গাছ। কিন্তু তখন আমি দেখলাম যে, আবু বকর ও উমর [রাদি.] কিছুই বলছেন না। তাই কোন কথা বা কিছু বলা আমার ভালো লাগালো না। কিন্তু উমর [রাদি.] এ কথা শুনে বলিলেন, যদি তুমি বলে দিতে তবে অমুক অমুক জিনিস লাভ করা হইতেও আমি বেশি খুশী হতাম।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮৪২, ইসলামিক সেন্টার- ৬৮৯৮]
১৬. অধ্যায়ঃ শাইতানের উস্কিয়ে দেয়া , মানুষের মাঝে ফিত্নাহ্ সৃষ্টি করার উদ্দেশে শাইতান কর্তৃক সেনাদল পাঠানো এবং প্রতিটি মানুষের সঙ্গে একজন সাথী রয়েছে
৬৯৯৬. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] থেকে শুনেছি, তিনি বলেন, আরব ভূখণ্ডে মুসল্লীগণ শাইতানের উপাসনা করিবে, এ বিষয়ে শাইতান নিরাশ হয়ে পড়েছে। তবে তাদের একজনকে অন্যের বিরুদ্ধে উস্কিয়ে দেয়ার ব্যাপারে নিরাশ হয়নি।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮৪৩, ইসলামিক সেন্টার- ৬৮৯৯]
৬৯৯৭. আমাশ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে এ সূত্র হইতে বর্ণীতঃ
অবিকল হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮৪৪, ইসলামিক সেন্টার- ৬৯০০]
৬৯৯৮. জারীর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি নবী [সাঃআঃ] হইতে শুনেছি। তিনি বলেন, নিশ্চয়ই ইবলিসের আর্শ সমুদ্রের উপর স্থিরকৃত। সে লোকেদেরকে ফিতনায় নিপতিত করার উদ্দেশে তার বাহিনী পাঠায়। শাইতানের কাছে সবচেয়ে বড় সে-ই, যে সবচেয়ে বেশি ফিতনা সৃষ্টিকারী।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮৪৫, ইসলামিক সেন্টার- ৬৯০১]
৬৯৯৯. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলূল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ ইবলীস পানির উপর তার আরশ স্থাপন করতঃ তার বাহিনী প্রেরণ করে। তম্মধ্যে তার সর্বাধিক নৈকট্য অর্জনকারী সে-ই যে সবচেয়ে বেশী ফিতনা সৃষ্টিকারী। তাদের একজন এসে বলে, আমি অমুক অমুক কাজ করেছি। সে বলে, তুমি কিছুই করনি। অতঃপর অন্যজন এসে বলে, অমুকের সাথে আমি সকল প্রকার ধোঁকার আচরণই করেছি। এমনকি তার থেকে তার স্ত্রীকে আলাদা করে দিয়েছি। তারপর শাইতান তাকে তার নিকটবর্তী করে নেয় এবং বলে হ্যাঁ, তুমি খুব ভাল।
রাবী আমাশ বলেন, আমার মনে হয় তিনি বলেছেনঃ অতঃপর শাইতান তার সাথে আলিঙ্গন করে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮৪৬, ইসলামিক সেন্টার- ৬৯০২]
৭০০০. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছেন, শাইতান তার সৈন্য বাহিনীকে পাঠিয়ে লোকেদেরকে ফিতনায় নিপতিত করে। তম্মধ্যে সে-ই তার নিকট সবচেয়ে বেশি মর্যাদার অধিকারী যে অধিক ফিতনা সৃষ্টিকারী।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮৪৭, ইসলামিক সেন্টার- ৬৯০৩]
৭০০১. আবদুল্লাহ ইবনি মাসঊদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলূল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমাদের প্রত্যেকের সাথেই একটি শাইতান নির্ধারিত আছে। সহাবাগণ প্রশ্ন করিলেন, হে আল্লাহর রসূল! আপনার সাথেও কি? তিনি বলিলেন, হ্যাঁ, আমার সাথেও। তবে তার মুকাবিলায় আল্লাহ আমাকে সাহায্য করিয়াছেন। এখন আমি তার সম্পর্কে সম্পূর্ণরূপে নিরাপদ। এখন সে আমাকে কল্যাণকর বিষয় ছাড়া কক্ষনো অন্য কিছুর নির্দেশ দেয় না।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮৪৮, ইসলামিক সেন্টার- ৬৯০৪]
৭০০২. মানসূর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর সূত্র হইতে বর্ণীতঃ
জারীর থেকে অবিকল হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। তবে সুফ্ইয়ান [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর হাদীসের মধ্যে রয়েছে যে, প্রত্যেক মানুষের সাথে একটি শাইতান সঙ্গীরূপে এবং একজন ফেরেশ্তা সঙ্গীরূপে নিযুক্ত রয়েছে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮৪৯, ইসলামিক সেন্টার- ৬৯০৫]
৭০০৩. নবী [সাঃআঃ]-এর সহধর্মিণী আয়িশাহ্ সিদ্দীকা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, কোন এক রজনীতে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তার কাছ থেকে বের হলেন। তিনি বলেন, এতে আমার মনে কিছুটা অহমিকা আসল। তারপর তিনি এসে আমার অবস্থা অবলোকন করে বলিলেন, হে আয়িশাহ্! তোমার কি হয়েছে? তুমি কি ঈর্ষাপরায়ণ হয়েছো? উত্তরে আমি বললাম, আমার ন্যায় মহিলা আপনার ন্যায় স্বামীর প্রতি কেন ঈর্ষাপরায়ণ হইবে না? এ কথা শুনে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, তোমার শাইতান মনে হয় তোমার কাছে এসেছে? তখন তিনি বলিলেন, হে আল্লাহর রসূল! আমার সঙ্গেও কি শাইতান রয়েছে? তিনি বলিলেন, হ্যাঁ, অবশ্যই। তারপর আমি বললাম, প্রত্যেক মানুষের সাথেই কি শাইতান রয়েছে? তিনি বলিলেন, হ্যাঁ। অতঃপর আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আপনার সঙ্গেও কি রয়েছে? তিনি বলিলেন, হ্যাঁ, আমার সঙ্গেও। তবে আল্লাহ তাআলা তার মুকাবিলায় আমাকে সাহায্য করিয়াছেন। এখন তার ব্যাপারে আমি সম্পূর্ণরূপে নিরাপদ।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮৫০, ইসলামিক সেন্টার- ৬৯০৬]
১৭. অধ্যায়ঃ কোন লোকই তার আমালের দ্বারা জান্নাতে যেতে পারবে না , বরং আল্লাহর রহমতের মাধ্যমে জান্নাতে যাবে
৭০০৪. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.]-এর সূত্রে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, তোমাদের কোন লোকের আমলই তাকে পরিত্রাণ দিতে পারবে না। এ কথা শুনে এক লোক বলিলেন, হে আল্লাহর রসূল! আপনাকেও না? তিনি বলিলেন, হ্যাঁ, আমাকেও না। তবে যদি আল্লাহ তাআলা তাহাঁর করুণা দ্বারা আমাকে ঢেকে নেন। তোমরা অবশ্য সঠিক পন্থা অবলম্বন করিবে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮৫১, ইসলামিক সেন্টার- ৬৯০৭]
৭০০৫. বুকায়র ইবনি আশাজ্জ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] থেকে এ সূত্র হইতে বর্ণীতঃ
অবিকল হাদীস বর্ননা করিয়াছেন। তবে এতে بِرَحْمَةٍ مِنْهُ [তার করুণা]-এর সঙ্গে وَفَضْلٍ [অনুগ্রহ] শব্দটিও উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু তাতে سَدِّدُوا [সঠিক পন্থা অবলম্বন কর] শব্দটি বিদ্যমান নেই।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮৫১, ইসলামিক সেন্টার- ৬৯০৮]
৭০০৬. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নবী [সাঃআঃ] বলেনঃ তোমাদের মাঝে এমন কোন লোক নেই, যার আমল তাকে জান্নাতে দাখিল করাতে পারে। অতঃপর তাঁকে জিজ্ঞস করা হলো, হে আল্লাহর রসূল! আপনিও কি নন? তিনি বলিলেন, হ্যাঁ আমিও নই। তবে আল্লাহ যদি তাহাঁর অনুগ্রহ দ্বারা আমাকে আবৃত করে নেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮৫২, ইসলামিক সেন্টার- ৬৯০৯]
৭০০৭. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ , তোমাদের মাঝে এমন কোন লোক নেই, যার আমল তাকে নাযাত দিতে পারে। সহাবাগণ জিজ্ঞেস করিলেন, হে আল্লাহর রসূল! আপনিও কি নন? জবাবে তিনি বলিলেন, আমিও নই। তবে যদি আল্লাহ তাআলা আমাকে তাহাঁর মার্জনা ও করুণা দ্বারা ঢেকে নেন।
রাবী ইবনি আওন [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] নিজ হাত দ্বারা নিজ মাথার দিকে ইশারা করে বলিলেন, আমিও না। হ্যাঁ, যদি আল্লাহ তাআলা তাহাঁর মার্জনা ও করুণা দ্বারা আমাকে ঢেকে ফেলেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮৫৩, ইসলামিক সেন্টার- ৬৯১০]
৭০০৮. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ এমন কোন লোক নেই, যার আমল তাকে মুক্তি দিতে পারে। তারা বলিলেন, হে আল্লাহর রসূল! আপনিও নি নন? তিনি বলেনঃ , আমিও নই। একমাত্র প্রত্যাশা এই যে, যদি আল্লাহ তাআলা আমাকে তাহাঁর করুণা দ্বারা সহায়তা করেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮৫৪, ইসলামিক সেন্টার- ৬৯১১]
৭০০৯. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ : তোমাদের কারো আমল তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাতে পারবে না। সহাবাগণ বলিলেন, হে আল্লাহর রসূল! আপনিও কি নন? তিনি বললেনঃ আমিও নই। তবে যদি আল্লাহ তাআলা আমাকে তাহাঁর অনুগ্রহ ও করুণা দ্বারা ঢেকে নেন। [ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮৫৫, ইসলামিক সেন্টার- ৬৯১২]
৭০১০. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমরা সঠিক পথে কায়িম থাকো এবং কমপক্ষে তার কাছাকাছি থাক। নিশ্চিতভাবে তোমরা জেনে রাখো, তোমাদের কেউ আমালের দ্বারা মুক্তি পাবে না। সহাবাগণ বলিলেন, হে আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]! আপনিও নন? তিনি বলিলেন, হ্যাঁ, আমিও নেই। তবে আল্লাহ তাআলা যদি স্বীয় রহ্মাত ও অনুগ্রহ দ্বারা আমাকে ঢেকে রাখেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮৫৬, ইসলামিক সেন্টার- ৬৯১৩]
৭০১১. জাবির [রাদি.]-এর সানাদে নবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণীতঃ
অবিকল বর্ণনা করিয়াছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮৫৭, ইসলামিক সেন্টার- ৬৯১৪]
৭০১২. আমাশ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর সানাদ হইতে বর্ণীতঃ
ইবনি নুমায়র [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর অবিকল বর্ণনা করিয়াছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮৫৮, ইসলামিক সেন্টার- ৬৯১৫]
৭০১৩. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.]-এর সানাদ হইতে বর্ণীতঃ
নবী [সাঃআঃ] হইতে অবিকল বর্ণনা করিয়াছেন, তবে তাতে বর্ধিত আছে [আর-বী] অর্থাৎ- তোমরা সুসংবাদ গ্রহণ কর।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮৫৯, ইসলামিক সেন্টার- ৬৯১৬]
৭০১৪. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি নবী [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছি যে, তোমাদের কোন লোক তার আমল দ্বারা জান্নাতে প্রবেশ করিতে পারবে না এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তি পাবে না। আর আল্লাহর রহমাত ব্যতীত আমি নিজেও বাঁচতে পারব না।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮৬০, ইসলামিক সেন্টার- ৬৯১৭]
৭০১৫. নবী [সাঃআঃ]-এর সহধর্মিণী আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ মধ্যম পন্থা অবলম্বন কর, এর কাছাকাছি পথে থেকো এবং সুসংবাদ গ্রহন কর, কারো আমলই তাকে জান্নাতে দাখিল করাতে পারবে না। সহাবাগণ জিজ্ঞেস করিলেন, হে আল্লাহর রসূল! আপনিও কি নন? তিনি বলিলেন, আমিও নই। তবে হ্যাঁ, যদি আল্লাহ তাআলা আমাকে তাহাঁর রহ্মাত দ্বারা ঢেকে নেন। তোমরা জেনে রাখো, নিয়মিত আমলই আল্লাহর কাছে সবচেয়ে বেশী পছন্দের আমল, যদিও তা পরিমাণে কম হয়।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮৬১, ইসলামিক সেন্টার- ৬৯১৮]
হাসান আল হুলওয়ানী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] ….. মূসা ইবনি উক্বাহ্ [রাদি.] থেকে এ সূত্রে অবিকল হাদীস বর্ননা করিয়াছেন। কিন্তু তাতে তারা [আরবী] [সুসংবাদ গ্রহণ কর] শব্দটি বর্ণনা করেননি।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮৬২, ইসলামিক সেন্টার- ৬৯১৯]
১৮. অধ্যায়ঃ আমল বৃদ্ধি করা ও ইবাদাতে চেষ্টারত থাকা
৭০১৬. মুগীরাহ্ ইবনি শুবাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নবী [সাঃআঃ] এমনভাবে নামাজ আদায় করিয়াছেন যে, তাহাঁর দুপা ফুলে যেত। এ দেখে তাঁকে বলা হলো, আপনি এত কষ্ট করছেন কেন? আপনার তো পূর্বাপর যাবতীয় ত্রুটি-বিচ্যুতি মাফ করে দেয়া হয়েছে। এ কথার প্রত্যুত্তরে তিনি বলিলেন, আমি কি শুকরগুজার বান্দা হিসেবে পরিণত হব না?
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮৬৩, ইসলামিক সেন্টার- ৬৯২০]
৭০১৭. মুগীরাহ্ ইবনি শুবাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] সলাতে এমনভাবে দাঁড়িয়ে থাকতেন যে, এতে তাহাঁর দুপা ফুলে যেতো। এ দেখে সহাবাগণ বলিলেন, আল্লাহ তো আপনার আগের ও পরের যাবতীয় ত্রুটি-বিচ্যুতি মাফ করে দিয়েছেন। এ কথা শুনে তিনি বলিলেন, আমি কি শুকরগুজার বান্দা হব না?
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮৬৪, ইসলামিক সেন্টার- ৬৯২১]
৭০১৮. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যখন নামাজ আদায় করিতেন তখন এত বেশি দাঁড়িয়ে থাকতেন যে, এতে তাহাঁর দুপা ফুলে যেত। এ দেখে আয়িশা [রাদি.] বলিলেন, হে আল্লাহর রসূল! আপনি এরূপ করছেন? অথচ আপনার পূর্বাপর যাবতীয় ত্রুটি-বিচ্যুতি মাফ করে দেয়া হয়েছে। এ কথা শুনে তিনি বলিলেন, হে আয়িশাহ্! আমি কি শুকরগুজার বান্দা হব না?
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮৬৫, ইসলামিক সেন্টার- ৬৯২২]
১৯. অধ্যায়ঃ উপদেশ দানের ক্ষেত্রে মধ্যপন্থা অবলম্বন করা
৭০১৯. শাকীক্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আবদুল্লাহ [রাদি.]-এর অপেক্ষায় আমরা তাহাঁর [বাড়ীর] দ্বারপ্রান্তে বসা ছিলাম। এ সময় ইয়াযীদ ইবনি মুআবিয়াহ্ নাখাঈ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] আমাদের পাশ দিয়ে অতিক্রম করিতে লাগলেন। আমরা তাকে বললাম, আপনি তাকে আমাদের অবস্থানের সংবাদটি দিন। তিনি ভেতরে তাহাঁর নিকট গেলেন। অমনি দেরী না করে আবদুল্লাহ [রাদি.] আমাদের সম্মুখে বেরিয়ে আসলেন। তারপর তিনি বলিলেন, তোমাদের অবস্থানের সংবাদ আমাকে পৌঁছানো হয়েছে। তবে তোমাদের কাছে আসতে এ জিনিসই আমাকে নিষেধ করেছে যে, আমি যেন তোমাদেরকে বিরক্ত না করে ফেলি। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদের উদ্দেশে নির্ধারিত দিনে উপদেশ দিতেন, আমাদের মধ্যে যাতে বিরক্ত ভাব সৃষ্টি না হয়।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮৬৬, ইসলামিক সেন্টার- ৬৯২৩]
৭০২০. আবু সাঈদ আল আশাজ্জ ও মিনজাব ইবনিল হারিস আত্ তামীমী, ইসহাক্ ইবনি ইব্রাহীম ও আলী ইবনি খাশরাম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি], ইবনি আবু উমর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] ….. আমাশ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
আবু সাঈদ আল আশাজ্জ ও মিনজাব ইবনিল হারিস আত্ তামীমী, ইসহাক্ ইবনি ইব্রাহীম ও আলী ইবনি খাশরাম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি], ইবনি আবু উমর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] ….. আমাশ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে এ সূত্রে অবিকল হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন।
মিনজাব আরও উল্লেখ করিয়াছেন যে, ইবনি মুসহির হইতে। তিনি বলেন, আমাশ বলেছেন, আম্র ইবনি মুর্রাহ্ হইতে, তিনি শাকীক্ হইতে, তিনি আবদুল্লাহ হইতে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮৬৭, ইসলামিক সেন্টার- ৬৯২৪]
৭০২১. ওয়ায়িল-এর পিতা শাকীক [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আবদুল্লাহ [রাদি.] প্রত্যেক বৃহস্পতিবার দিন আমাদেরকে উপদেশ দিতেন। এক লোক তাকে বলিলেন, হে আবদুর রহ্মানের পিতা! আমরা আপনার কাছ থেকে হাদীস বর্ণনা শুনতে ভালো লাগে এবং ইচ্ছা পোষণ করি যে, আপনি আমাদের কাছে প্রত্যেক দিন হাদীস বর্ণনা করেন। এ কথা শুনে তিনি বলিলেন, এ কাজ হইতে আমাকে যা বিরত রাখে তা হলো, আমি তোমাদেরকে বিরক্ত করা পছন্দ করি না, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদের অবস্থার প্রতি লক্ষ্য রেখে নির্ধারিত দিনে উপদেশ দিতেন, আমরা যাতে বিরক্ত না হই।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮৬৮, ইসলামিক সেন্টার- ৬৯২৫]
Leave a Reply