জামায়াতে নামাজ পড়ার ফজিলত , কাতার সোজা করা ও ইমামতি
জামায়াতে নামাজ পড়ার ফজিলত , কাতার সোজা করা ও ইমামতি
অধ্যায়ঃ ২, অনুচ্ছেদঃ (৪৭-৬৩)=১৭টি
৪৭. অনুচ্ছেদঃ আল্লাহ তাআলা বান্দাদের উপর কত ওয়াক্ত নামাজ ফরয করিয়াছেন
৪৮. অনুচ্ছেদঃ পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের ফাযীলাত
৪৯. অনুচ্ছেদঃ জামাআতে নামযে আদায়ের ফাযীলাত
৫০. অনুচ্ছেদঃ আযান শুনে যে ব্যক্তি তাতে সাড়া না দেয় [জামাআতে উপস্থিত না হয়]
৫১. অনুচ্ছেদঃ যে ব্যক্তি একাকী নামাজ আদায়ের পর আবার জামাআত পেল
৫২. অনুচ্ছেদঃ মসজিদে এক জামাআত হয়ে যাবার পর আবার জামাআত করা
৫৩. অনুচ্ছেদঃ ফযর ও ইশার নামাজ জামাআতে আদায়ের ফাযীলাত
৫৪. অনুচ্ছেদঃ প্রথম কাতারে দাঁড়ানোর ফাযীলাত
৫৫. অনুচ্ছেদঃ কাতার সমান্তরাল করা সম্পর্কে
৫৬. অনুচ্ছেদঃ রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নির্দেশঃ তোমাদের মধ্যকার বুদ্ধিমান ও জ্ঞানীরা আমরা নিকটে দাঁড়াবে
৫৭. অনুচ্ছেদঃ খাম্বাসমূহের [খুঁটির] মাঝখানে কাতার করা মাকরূহ
৫৮. অনুচ্ছেদঃ কাতারের পেছনে একাকী দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করা
৫৯. অনুচ্ছেদঃ দুই ব্যক্তির একসাথে নামাজ আদায় করা
৬০. অনুচ্ছেদঃ তিন ব্যক্তি একসাথে নামাজ আদায় করা
৬১. অনুচ্ছেদঃ ইমামের সাথে পুরুষ ও স্ত্রীলোক উভয় ধরনের মুক্তাদী থাকলে
৬২. অনুচ্ছেদঃ কে ঈমাম হওয়ার যোগ্য
৬৩. অনুচ্ছেদঃ ঈমাম নামাজ সংক্ষিপ্ত করিবে
৪৭. অনুচ্ছেদঃ আল্লাহ তাআলা বান্দাদের উপর কত ওয়াক্ত নামাজ ফরয করিয়াছেন
২১৩. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, মিরাজের রাতে নাবী [সাঃআঃ]-এর উপর পঞ্চাশ ওয়াক্ত নামাজ ফরয করা হয়েছিল। অতঃপর কমাতে কমাতে পাঁচ ওয়াক্তে সীমাবদ্ধ করা হয়। অতঃপর ঘোষণা করা হল, হে মুহাম্মাদ! আমার নিকট কথার কোন অদল বদল নাই। তোমার জন্য এই পাঁচ ওয়াক্তের মধ্যে পঞ্চাশ ওয়াক্তের সওয়াব রয়েছে।
সহীহ। বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ। এ অনুচ্ছেদে উবাদা ইবনি সামিত, তালহা ইবনি উবাইদুল্লাহ, আবু কাতাদা, আবু যার, মালিক ইবনি সাসাআ এবং আবু সাঈদ খুদরী [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত হয়েছে। আবু ঈসা বলেনঃ আনাসের হাদীসটি হাসান সহীহ গারীব। জামায়াতে নামাজ পড়ার ফজিলত -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৪৮. অনুচ্ছেদঃ পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের ফাযীলাত
২১৪। আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ পাঁচ ওয়াক্তের নামাজ এবং জুমুআর নামাজ হইতে পরবর্তী জুমুআর নামাযে তার মাঝখানে সংঘটিত [ছোটখাট] গুনাহসমূহের কাফফারা [ক্ষতিপূরণ] হয়ে যায়; তবে শর্ত হল কাবীরা গুনাহ হইতে বেঁচে থাকতে হইবে।
সহীহ। তালীকুর রাগীব-[১/১৩৭]। এ অনুচ্ছেদে জাবির, আনাস ও হানযালা আল-উসায়দী [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত রয়েছে। আবু ঈসা বলেনঃ আবু হুরাইরার হাদীসটি হাসান সহীহ। জামায়াতে নামাজ পড়ার ফজিলত -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৪৯. অনুচ্ছেদঃ জামাআতে নামযে আদায়ের ফাযীলাত
২১৫. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কোন ব্যক্তির একাকি আদায়কৃত নামাযের উপর জামাআতে আদায়কৃত নামাযের সাতাশ গুন বেশি মর্যাদা রয়েছে।
সহীহ। ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[৭৮৯], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ। এ অনুচ্ছেদে ইবনি মাসউদ, উবাই ইবনি কাব, মুআয ইবনি জাবাল, আবু সাঈদ, আবু হুরাইরা ও আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেনঃ ইবনি উমারের হাদীসটি হাসান সহীহ। একইভাবে নাফি হইতে ইবনি উমার [রাদি.]-এর সূত্রে রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট হইতে একই অর্থের অপর একটি হাদীস বর্ণিত হয়েছে। তাতে আছেঃ “জামাআতের নামাজ একাকি নামাযের তুলনায় সাতাশ গুন বেশি মর্যাদা রাখে। এ সম্পর্কিত অন্যান্য সব বর্ণনায়ই পঁচিশ গুনের কথা উল্লেখ রয়েছে, শুধু ইবনি উমারের বর্ণনায় সাতাশ গুনের কথা উল্লেখ আছে। জামায়াতে নামাজ পড়ার ফজিলত -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২১৬. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ কোন ব্যক্তির জামাআতের নামাজ তার একাকি নামাযের তুলনায় পঁচিশ গুন [সাওয়াব] বৃদ্ধি পায়।
সহীহ। ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[৭৮৬, ৭৮৭], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ। আবু ঈসা বলেনঃ হাদীসটি হাসান সহীহ। জামায়াতে নামাজ পড়ার ফজিলত -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫০. অনুচ্ছেদঃ আযান শুনে যে ব্যক্তি তাতে সাড়া না দেয় [জামাআতে উপস্থিত না হয়]
২১৭. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ আমার ইচ্ছা হয়, আমি আমার যুবকদের কাঠের স্তুপ সংগ্রহ করার নির্দেশ দেই, অতঃপর নামাজ আদায়ের নির্দেশ দেই এবং ইক্বামাত বলা হইবে [নামাজ শুরু হয়ে যাবে], অতঃপর যেসব লোক নামাযে উপস্থিত হয়নি তাহাদের [ঘরে] আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দেই।
সহীহ। ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[৭৯১], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ। আবু ঈসা বলেনঃ এ অনুচ্ছেদে ইবনি মাসউদ, আবু দারদা, ইবনি আব্বাস, মুআয ইবনি আনাস ও জাবির [রাদি.] হইতেও বর্ণিত হাদীস রয়েছে। আবু ঈসা বলেনঃ আবু হুরাইরা [রাদি.] কর্তৃক বর্ণিত হাদীসটি হাসান সহীহ। নাবী [সাঃআঃ]-এর বহু সংখ্যক সাহাবী হইতে বর্ণিত আছে, তাঁরা বলেছেন, যে ব্যক্তি আযান শুনার পরও জামাআতে উপস্থিত হয়নি তার কোন নামাজ নেই। কিছু বিশেষজ্ঞ আলিম বলেছেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] জামাআতের গুরুত্ব বুঝাতে এবং জামাআতে অনুপস্থিত ব্যক্তিকে ভর্ৎসনা করার জন্য এরূপ বলেছেন। কোন উপযুক্ত কারণ ছাড়া কারো পক্ষে জামাআতে অনুপস্থিত থাকার অনুমতি নাই। জামায়াতে নামাজ পড়ার ফজিলত -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২১৮. মুজাহিদ হইতে বর্ণীতঃ
ইবনি আব্বাস [রাদি.]-কে এক ব্যক্তি সম্পর্কে প্রশ্ন করা হল, সে দিনভর রোযা রাখে এবং রাতভর নামাজ আদায় করে, কিন্তু জুমুআ ও জামাআতে উপস্থিন হয় না। তিনি বলিলেন, সে জাহান্নামী। ঈমাম তিরমিযী বলেনঃ হান্নাদ মুহারেবী হইতে তিনি লাইস হইতে তিনি মুজাহিদ হইতে হাদীসটি বর্ণনা করিয়াছেন।
সনদ দুর্বল, মুজাহিদ এ হাদীসের নিম্নরূপ ব্যাখ্যা করেছেনঃ যে ব্যক্তি জামাআতকে তুচ্ছ ও হালকাজ্ঞান করে এরূপ করিবে সে জাহান্নামী হইবে। এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস
৫১. অনুচ্ছেদঃ যে ব্যক্তি একাকী নামাজ আদায়ের পর আবার জামাআত পেল
২১৯. জাবির ইবনি ইয়াযীদ ইবনি আসওয়াদ [রাদি.] হইতে তাহাঁর পিতার সূত্রে হইতে বর্ণীতঃ
তিনি [ইয়াযীদ] বলেন, আমি রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সাথে তাহাঁর বিদায় হাজ্জে উপস্থিত ছিলাম। আমি তাহাঁর সাথে [মিনায় অবস্থিত] মসজিদে খাইফে ফযরের নামাজ আদায় করলাম। নামাজ শেষ করে তিনি মোড় ফিরলেন। তিনি লোকদের এক প্রান্তে দুই ব্যক্তিকে দেখলেন, তারা তাহাঁর সাথে নামাজ আদায় করেনি। তিনি বললেনঃ এদেরকে আমার নিকট নিয়ে এসো। তাহাদেরকে নিয়ে আসা হল, [কিন্তু ভয়ে] তাহাদের ঘাড়ের রগ কাঁপছিল। তিনি প্রশ্ন করলেনঃ আমার সাথে নামাজ আদায় করিতে তোমাদের উভয়কে কিসে বাঁধা দিল? তারা বলিল, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা বাড়িতে নামাজ আদায় করে এসেছি। তিনি বললেনঃ এরূপ আর করিবেনা। তোমরা বাড়িতে নামাজ আদায়ের পর যদি মসজিদে এসে জামাআত হইতে দেখ, তাহলে তাহাদের সাথে আবার নামাজ আদায় করিবে। এটা তোমাদের উভয়ের জন্য নফল হইবে।
সহিহ। মিশকাত-হাদীস নং-[১১৫২], সহীহ আবু দাঊদ হাদীস নং-[৫৯০]। এ অনুচ্ছেদে মিহজান ও ইয়াযীদ ইবনি আমির [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেনঃ ইয়াযিদ ইবনি আসওয়াদের হাদীসটি হাসান সহীহ। সুফিয়ান সাওরী, শাফিঈ, আহমাদ ও ইসহাক বলেছেন, কোন ব্যক্তি একাকি নামাজ আদায়ের পর আবার জামাআত পেলে পুনরায় নামাজ আদায় করে নেবে। যদি সে মাগরিবের নামাজ একাকি আদায়ের পর আবার জামাআত পায় তাহলে জামাআতের সাথে তিন রাকআত পড়ার পর সে আরো এক রাকআত মিলিয়ে আদায় করিবে। সে পূর্বে একাকী যে নামাজ আদায় করিল সেটা তাহাদের মতে ফরয হিসেবে গণ্য হইবে। জামায়াতে নামাজ পড়ার ফজিলত -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫২. অনুচ্ছেদঃ মসজিদে এক জামাআত হয়ে যাবার পর আবার জামাআত করা
২২০. আবু সাঈদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, এক ব্যক্তি এমন সময় [মসজিদে] আসল যখন রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] নামাজ আদায় করে নিয়েছেন। তিনি বললেনঃ তোমাদের মধ্যে কে এই ব্যক্তির সাথে ব্যবসা করিতে চায়? এক ব্যক্তি উঠে দাঁড়াল এবং তার সাথে নামাজ আদায় করিল।
সহিহ। মিশকাত-হাদীস নং-[১১৪৬], ইরওয়া–[৫৩৫], রাওযুন নাযীর–[৯৭৯]। এ অনুচ্ছেদে আবু উমামা, আবু মূসা ও হাকাম ইবনি উমাইর [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত হয়েছে। আবু ঈসা বলেনঃ আবু সাঈদ বর্ণিত হাদীসটি হাসান। নাবী [সাঃআঃ]-এর একাধিক বিশেষজ্ঞ সাহাবা এবং তাবিঈদের মতেঃ মসজিদে জামাআত হওয়ার পর কিছু লোক একত্র হয়ে আবার জামাআত করে নামাজ আদায় করে নিলে এতে কোন দোষ নেই। ঈমাম আহমাদ এবং ইসহাকও এমন কথা বলেছেন। অপর একদল বিদ্বান বলেছেন, প্রথম জামাআত হওয়ার পরে আসা লোকেরা একাকি নামাজ আদায় করিবে। সুফিয়ান সাওরী, ইবনিল মুবারাক, মালিক ও শাফিঈ একাকি নামাজ আদায় করা পছন্দ করিয়াছেন। সুলায়মান আন-নাজী বাসরীকে সুলাইমান ইবনি আসওয়াদও বলা হয়। আবুল মুতাওয়াক্কিলের নাম আলী ইবনি দাঊদ। জামায়াতে নামাজ পড়ার ফজিলত -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫৩. অনুচ্ছেদঃ ফযর ও ইশার নামাজ জামাআতে আদায়ের ফাযীলাত
২২১. উসমান ইবনি আফফান [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি এশার নামাজ জামাআতের সাথে আদায় করে তার জন্য অর্ধরাত [নফল] নামাজ আদায়ের সাওয়াব রয়েছে। যে ব্যক্তি ইশা ও ফযরের নামাজ জামাআতের সাথে আদায় করে তার জন্য সারারাত [নফল] নামাজ আদায়ের সমপরিমাণ সাওয়াব রয়েছে।
সহীহ। সহীহ আবু দাঊদ হাদীস নং-[৫৫৫], মুসলিম। এ অনুচ্ছেদে ইবনি উমার, আবু হুরাইরা, আনাস, উমারাহ ইবনি রুআইবা, জুনদাব, উবাই ইবনি কাব, আবু মূসা ও বুরাইদা [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেনঃ উসমান হইতে বর্ণিত হাদীসটি হাসান সহীহ। আব্দুর রহমানের সূত্রে হাদীসটি উসমান হইতে মাওকুফভাবেও বর্ণিত হয়েছে । আবার বিভিন্ন সূত্রে উসমান হইতে মাওফূরূপেও বর্ণিত হয়েছে। জামায়াতে নামাজ পড়ার ফজিলত -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২২২. জুনদাব ইবনি সুফিয়ান [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ যে ব্যক্তি ফযরের নামাজ আদায় করিল সে আল্লাহর হিফাজাতে চলে গেল। অতএব তোমরা আল্লাহ তাআলার হিফাজাতকে চূর্ণ কর না, তুচ্ছ মনে কর না।
সহীহ। তালীকুর রাগীব-[১/১৪১, ১৬৩], মুসলিম। আবু ঈসা বলেনঃ হাদীসটি হাসান সহীহ। জামায়াতে নামাজ পড়ার ফজিলত -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২২৩. বুরাইদা আল-আসলামী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ যারা অন্ধকার পার হয়ে মসজিদে যায় তাহাদেরকে কিয়ামাতের দিনের পরিপূর্ণ নূরের সুখবর দাও।
সহিহ। ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[৭৭৯-৭৮১]। আবু ঈসা বলেনঃ এই হাদীসটি এই সনদে মারফূ গারীব। সহীহ্ সনদে হাদীসটি মাওকুফ। জামায়াতে নামাজ পড়ার ফজিলত -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫৪. অনুচ্ছেদঃ প্রথম কাতারে দাঁড়ানোর ফাযীলাত
২২৪. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেনঃ রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ পুরুষ লোকদের জন্য প্রথম কাতার হচ্ছে সবচেয়ে ভাল এবং খুবই খারাপ হচ্ছে সবার পেছনের কাতার। স্ত্রী লোকদের জন্য সবার পেছনের কাতার সবচেয়ে ভাল এবং খুবই খারাপ হচ্ছে প্রথম কাতার।
সহীহ। ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[১০০০-১০০১]।এ অনুচ্ছেদে জাবির, ইবনি আব্বাস, আবু সাঈদ, উবাই, আয়িশাহ, ইরযাব ইবনি সারিয়াহ ও আনাস [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেনঃ আবু হুরাইরার হাদীসটি হাসান সহীহ। বর্ণিত আছে যে, নাবী [সাঃআঃ] প্রথম কাতারের লোকদের জন্য তিনবার এবং দ্বিতীয় কাতারের লোকদের জন্য একবার ক্ষমা প্রার্থনা করিতেন। জামায়াতে নামাজ পড়ার ফজিলত -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২২৫. বর্ণনাকারী হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ লোকেরা যদি জানতে পারত আযান দেওয়া ও প্রথম কাতারে দাঁড়ানোর মধ্যে কত সাওয়াব রয়েছে, তাহলে তাহাদের এতো ভীড় হত যে, শেষ পর্যন্ত লটারি করে ঠিক করিতে হত [কে আযান দেবে এবং কে প্রথম কাতারে দাঁড়াবে]।
সহিহ। ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[৯৯৮], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ। এ হাদীসটি বর্ণনা করিয়াছেন ইসহাক ইবনি মূসা আনসারী, তিনি মান হইতে, তিনি মালিক হইতে, তিনি সুমাই হইতে তিনি আবু সালিহ হইতে তিনি আবু হুরাইরা হইতে তিনি নাবী [সাঃআঃ] হইতে। জামায়াতে নামাজ পড়ার ফজিলত -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২২৬. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
এ হাদীসটি কুতাইবা মালিকের সূত্রে আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেন।
এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়
৫৫. অনুচ্ছেদঃ কাতার সমান্তরাল করা সম্পর্কে
২২৭. নুমান ইবনি বাশীর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদের কাতারসমূহ সমান করে দিতেন। একদিন তিনি [ঘর হইতে] বের হয়ে এসে দেখলেন, এক ব্যক্তির বুক কাতারের বাইরে এগিয়ে রয়েছে। তিনি বললেনঃ তোমরা তোমাদের সারিগুলো সোজা করে দাঁড়াবে, অন্যথায় আল্লাহ তাআলা তোমাদের মুখমণ্ডলে বিভেদ সৃষ্টি করে দেবেন।
সহিহ। ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[৯৯৪], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ। এ অনুচ্ছেদে জাবির ইবনি সামুরা, বারাআ, জাবির ইবনি আবদুল্লাহ, আনাস, আবু হুরাইরা ও আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতেও বর্ণনাকৃত হাদীস রয়েছে। আবু ঈসা বলেনঃ নুমান ইবনি বাশীরের হাদীসটি হাসান সহীহ।
নাবী সাঃআঃ হইতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেছেনঃ কাতার ঠিক করা নামাজ পরিপূর্ণ করার অন্তর্ভুক্ত।
উমার [রাদি.] হইতে বর্ণিত আছে, তিনি কাতার ঠিক করার জন্য একজন লোক নিযুক্ত করিতেন। যে পর্যন্ত না তাঁকে জানানো না হত যে, কাতার সোজা হয়েছে সে পর্যন্ত তিনি তাকবির [তাহরীমা] বলিতেন না। উসমান এবং আলী [রাদি.] এদিকে তীক্ষ্ণ নজর রাখতেন এবং তারা বলিতেন, তোমরা সোজা হও। আলী [রাদি.] তো নাম ধরেই বলিতেন, অমুক একটু আগাও, অমুক একটু পিছাও। জামায়াতে নামাজ পড়ার ফজিলত -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫৬. অনুচ্ছেদঃ রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নির্দেশঃ তোমাদের মধ্যকার বুদ্ধিমান ও জ্ঞানীরা আমরা নিকটে দাঁড়াবে
২২৮. আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী সাঃআঃ বলেনঃ তোমাদের মধ্যে যারা বয়স্ক ও বুদ্ধিমান তারা যেন আমার নিকটে দাঁড়ায়; অতঃপর যারা [উভয় গুণে] এদের নিকটবর্তী; অতঃপর যারা এদের নিকটবর্তী। আঁকাবাঁকা [কাতরে] দাঁড়িও না, তাতে তোমাদের অন্তরসমূহ আলাদা হয়ে যাবে। সাবধান! মসজিদকে বাজারে পরিণত কর না [হৈ চৈ করে]।
সহিহ। সহীহ্ আবু দাঊদ হাদীস নং-[৬৭৯], মুসলিম। এ অনুচ্ছেদে উবাই ইবনি কাব, আবু মাসউদ, আবু সাঈদ, বারাআ ও আনাস [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেনঃ ইবনি মাসঊদের হাদীসটি হাসান সহীহ গারীব। বর্ণিত আছে যে, নাবী [সাঃআঃ] মুহাজির ও আনসারদের নিজের নিকট দাঁড়ানোকে পছন্দ করিতেন। উদ্দেশ্য ছিল তাহাঁর নিকট হইতে তারা [নামাযের নিয়ম কানুন সঠিকভাবে] শিখে নেবে। খালিদ আল-হায্যা তিনি হলেন, খালিদ ইবনি মিহরান, উপনাম আবুল মানাযিল। তিরমিযী বলেনঃ আমি মুহাম্মাদ ইবনি ইসমাঈলকে বলিতে শুনিয়াছি, বলা হয়ে থাকে যে, খালিদ আল-হায্যা কখনো জুতা পরিধান করেননি। হায্যার নিকট বসতেন বলে তাকে হায্যা বলা হয়। আবু মাশার-এর নাম যিয়াদ ইবনি কুলাইব । জামায়াতে নামাজ পড়ার ফজিলত -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫৭. অনুচ্ছেদঃ খাম্বাসমূহের [খুঁটির] মাঝখানে কাতার করা মাকরূহ
২২৯. আবদুল হামীদ ইবনি মাহমূদ [রঃ] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমরা জনৈক আমীরের পেছনে নামাজ আদায় করলাম। লোকের এত ভীড় হল যে, আমরা বাধ্য হয়ে দুই খুঁটির মাঝখানে নামাযে দাঁড়ালাম। যখন নামাজ শেষ করলাম, আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] বলিলেন, আমরা রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সময়ে [এভাবে দাঁড়ানো] এড়িয়ে যেতাম।
সহিহ। ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[১০০২]। এ অনুচ্ছেদে কুররা ইবনি ইয়াস আল-মুযানী [রাদি.] হইতেও বর্ণিত হাদীস আছে। আবু ঈসা বলেনঃ আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণনাকৃত হাদীসটি হাসান সহীহ। ঈমাম আহমাদ ও ইসহাকের মতে, দুই খুঁটির মাঝখানে নামাযের কাতার করা মাকরূহ। কিছু বিশেষজ্ঞ আলিম এর অনুমতি দিয়েছেন। জামায়াতে নামাজ পড়ার ফজিলত -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫৮. অনুচ্ছেদঃ কাতারের পেছনে একাকী দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করা
২৩০. হিলাল ইবনি ইয়াসাফ [রঃ] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, যিয়াদ ইবনি আবুল যাদ আমার হাত ধরলেন। এ সময়ে আমরা রাক্কা নামক জায়গায় ছিলাম। তিনি আমাকে এক মুরুব্বির নিকট নিয়ে গেলেন। তিনি ছিলেন আসাদ গোত্রের ওয়াবিসা ইবনি মাবাদ [রাদি.]। যিয়াদ বলিলেন, আমাকে এই মুরুব্বি বলেছেন, এক ব্যক্তি কাতারের পেছনে একাকি দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করছিল। মুরুব্বি লোকটি শুনছিলেন, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে আবার নামাজ আদায়ের নির্দেশ দিলেন।
সহিহ। ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[১০০৪]। এ অনুচ্ছেদে আলী ইবনি শাইবান ও ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেনঃ ওয়াবিসার হাদীসটি হাসান। কিছু বিশেষজ্ঞ আলিম কাতারের পেছনে একাকি দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করা মাকরূহ বলেছেন। তাঁরা আরো বলেছেন, কেউ এভাবে নামাজ আদায় করলে তাকে আবার নামাজ আদায় করিতে হইবে। ঈমাম আহমাদ ও ইসহাক এ মত গ্রহণ করিয়াছেন। অপর দল বলেছেন, নামাজ হয়ে যাবে। সুফিয়ান সাওরী, ইবনিল মুবারাক ও শাফিঈ এমত গ্রহণ করিয়াছেন। কূফাবাসীদের একদল ওয়াবিসার হাদীসের ভিত্তিতে বলেছেন, সারির পিছনে একাকি দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করলে তা আবার আদায় করিতে হইবে। এদের মধ্যে রয়েছেন হাম্মাদ, ইবনি আবু লাইলা ও ওয়াকী। হিলাল ইবনি ইয়াসাফের নিকট হইতে প্রাপ্ত হুসাইনের হাদীসটি বিভিন্ন সূত্রে বর্ণিত হয়েছে। যেমন আবুল আহওয়াস যিয়াদ ইবনি আবুল যাদ হইতে, তিনি ওয়াবিসা হইতে বর্ণনা করিয়াছেন। হুসাইনের হাদীস হইতে জানা যায়, হিলাল ওয়াবিসার সাক্ষাত পেয়েছেন। এ ব্যাপারে হাদীস বিশারদদের মধ্যে মতের অমিল রয়েছে। কিছু লোক বলেছেন, হিলালের নিকট হইতে আমর ইবনি মুরার হইতে বর্ণিত হাদীসটি বেশি সহীহ। আবার কিছু লোক বলেছেন, হিলালের নিকট হইতে হুসাইনের বর্ণিত হাদীসটি অধিক সহিহ। আবু ঈসা বলেনঃ শেষের বর্ণনাটিই বেশি সহীহ। কেননা এই বর্ণনাটি হিলাল ছাড়াও অন্য সূত্রে বর্ণিত হয়েছে। জামায়াতে নামাজ পড়ার ফজিলত -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৩১. ওয়াবিসা ইবনি মাবাদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
এক ব্যক্তি কাতারের পেছনে একাকী দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করলো। নাবী [সাঃআঃ] তাকে আবার নামাজ আদায়ের নির্দেশ দিলেন।
সহিহ। দেখুন পূর্বের হাদীস। আবু ঈসা বলেনঃ আমি জারূদকে বলিতে শুনিয়াছি, তিনি ওয়াকীকে বলিতে শুনেছেনঃ কোন ব্যক্তি কাতারের পেছনে একাকি দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করলে তাকে আবার ঐ নামাজ আদায় করিতে হইবে। জামায়াতে নামাজ পড়ার ফজিলত -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫৯. অনুচ্ছেদঃ দুই ব্যক্তির একসাথে নামাজ আদায় করা
২৩২. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেনঃ আমি এক রাতে নাবী [সাঃআঃ]-এর সাথে নামাজ আদায় করলাম। আমি তাহাঁর বাম পাশে দাঁড়ালাম। রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমার মাথার পেছনের চুল ধরে আমাকে তাহাঁর ডান পাশে এনে দাঁড় করালেন।
সহিহ। সহীহ্ আবু দাঊদ হাদীস নং-[৬২৩,১২৩৩], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ। এ অনুচ্ছেদে আনাস [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেনঃ ইবনি আব্বাসের হাদীসটি হাসান সহীহ। নাবী [সাঃআঃ]-এর সাহাবা ও তাহাদের পরবর্তীদের মতে, ইমামের সাথে মাত্র একজন মুক্তাদী হলে সে তার [ইমামের] ডান পাশে দাঁড়াবে। জামায়াতে নামাজ পড়ার ফজিলত -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৬০. অনুচ্ছেদঃ তিন ব্যক্তি একসাথে নামাজ আদায় করা
২৩৩. সামুরা ইবনি জুনদুব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদের নির্দেশ দিয়েছেঃ আমরা যখন তিনজন এক সাথে নামাজ আদায় করি তখন আমদের একজন যেন সামনে এগিয়ে যায় [ঈমামতির জন্য]।
সনদ দূর্বল, আবু ঈসা বলেন, এ অনুচ্ছেদে ইবনি মাসউদ, জাবির এবং আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। সামুরার হাদীসটি হাসান গারীব। বিশেষজ্ঞ আলিমগণ বলেছেন, তিনজন লোক হলে দুইজন ইমামের পেছনে দাঁড়াবে। ইবনি মাসউদ [রাদি.] হইতে বর্ণিত আছে যে, তিনি আলকামা ও আসওয়াদকে সাথে নিয়ে নামাজ আদায় করিলেন। একজনকে তাহাঁর ডান পাশে এবং অপরজনকে তাহাঁর বাম পাশে দাঁড় করালেন। ইবনি মাসউদ [রাদি.] রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] সম্পর্কেও এরূপ বর্ণনা করিয়াছেন। কেউ কেউ ইসমাঈল ইবনি মুসলিমের স্মরণশক্তির সমালোচনা করিয়াছেন। এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস
৬১. অনুচ্ছেদঃ ইমামের সাথে পুরুষ ও স্ত্রীলোক উভয় ধরনের মুক্তাদী থাকলে
২৩৪. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তাহাঁর নানী মুলাইকা [রাদি.] রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে দাওয়াত করিলেন। তিনি তাহাঁর জন্য খাবার তৈরী করিলেন। তিনি তা খেলেন, অতঃপর বললেনঃ উঠো, তোমাদের সাথে নামাজ আদায় করব। আনাস [রাদি.] বলেন, নামাজ আদায়ের জন্য আমি একটি কালো পুরানো চাটাই নিলাম। এটাকে পরিস্কার ও নরম করার জন্য পানি ছিটিয়ে দিলাম। রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] তার উপর দাঁড়ালেন। আমি এবং ইয়াতীম [ছেলে]-ও তার উপর তাহাঁর পেছনে দাঁড়ালাম। বুড়ো নানী আমাদের পেছনে দাঁড়ালেন। তিনি আমাদের নিয়ে এভাবে দুই রাকআত নামাজ আদায় করার পর চলে গেলেন।
-সহীহ, বুখারি-মুসলিম। আবু ঈসা বলেনঃ আনাসের হাদীসটি হাসান সহীহ। বিশেষজ্ঞ আলিমগণ এ হাদীসের ভাষ্য অনুযায়ী আমল করিয়াছেন। তাঁরা বলেছেন, যদি ঈমাম ছাড়া মুক্তাদীর সংখ্যা পুরুষ স্ত্রী মিলিয়ে দুজন হয় তবে পুরুষ লোকটি ইমামের ডান পাশে এবং স্ত্রীলোকটি তাহাদের পেছনে দাঁড়াবে। কিছু আলিম এ হাদীসের দ্বারা প্রমাণ করিয়াছেন যে, কাতারের পেছনে একাকি দাঁড়িয়ে কোন ব্যাক্তি নামাজ আদায় করলে তার নামাজ জায়িয হইবে। কেননা আনাস [রাদি.] রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর পেছনে একা দাঁড়িয়েছিলেন। যেসব বালক তার সাথে দাঁড়িয়েছিল তাহাদের উপর তো নামাজ ফরযই হয়নি। [তিরমিযী বলেন,] কিন্তু এ দলীল বাস্তব ঘটনার পরিপন্থী। কেননা আনাসের সাথে বাচ্চাদের দাঁড় করানো এটাই প্রমান করে যে, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম বালকদের জন্যও নামাযের ব্যবস্থা করিয়াছেন। অন্যথায় তিনি আনাসকে তাহাঁর ডান পাশেই দাঁড় করাতেন। মূসা ইবনি আনাস হইতে আনাসের সূত্রে বর্ণিত আছে, তিনি [আনাস] রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সাথে নামাজ আদায় করিলেন। তিনি তাকে নিজের ডান পাশে দাঁড় করালেন। এ হাদীস দ্বারা এটাও প্রমান হয় যে, তাহাদের ঘরে বারকাত হওয়ার জন্য রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] নফল আদায় করেছিলেন। জামায়াতে নামাজ পড়ার ফজিলত -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৬২. অনুচ্ছেদঃ কে ঈমাম হওয়ার যোগ্য
২৩৫. আওস ইবনি যামআজ [রঃ] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি আবু মাসউদ আনসারী [রাদি.]-কে বলিতে শুনিয়াছি, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি কুরাআন বেশি ভাল পড়তে জানে সে লোকদের ঈমামতি করিবে। যদি কুরআন পাঠে সবাই সমান হয়, তাহলে যে ব্যক্তি বেশি হাদীস [সুন্নাহ] জানে। যদি সুন্নাহর বেলায়ও সবাই সমান হয়, তাহলে যে ব্যক্তি প্রথম হিজরাত করেছে। যদি এ ব্যাপারেও সবাই সমান হয়, তাহলে যে ব্যক্তি বয়সে বড়। কোন ব্যক্তি যেন অন্যের অধিকার ও প্রভাবিত এলাকায় তার সম্মতি ছাড়া ঈমামতি না করে এবং তার অনুমতি ছাড়া তার বাড়িতে তার নিদিষ্ট আসনে না বসে। মাহমূদ বলেন, ইবনি নুমাইর তাহাঁর হাদীসে [আকসারুহুম সিন্নান-এর স্থলে] আকদামুহুম সিন্নান বর্ণনা করিয়াছেন [যে ব্যক্তি বয়জ্যেষ্ঠ]।
সহিহ। ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[৯৮০], মুসলিম। আবু ঈসা বলেনঃ এ অনুচ্ছেদে আবু সাঈদ, আনাস ইবনি মালিক, মালিক ইবনি হুয়াইরিস ও আমর ইবনি সালামাহ্ [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেনঃ আবু মাসঊদের হাদীসটি হাসান সহীহ। এ হাদীসের আলোকে বিদ্বানগণ বলেছেন, যে ব্যক্তি কুরআন ও হাদীসে রাসূলে বেশি জ্ঞানী, সে-ই লোকদের ঈমামতি করার বেশি হকদার। তাঁরা আরো বলেছেন, বাড়ির মালিক ঈমামতি করার ব্যাপারে বেশি হকদার। কিছু বিশেষজ্ঞ বলেছেন, বাড়ির মালিকের সম্মতি বলে যে কেউ ঈমামতি করিতে পারে। কিন্তু অনেকে এটা পছন্দ করেননি। তাঁরা বলেছেন, বাড়ির মালিকের ঈমামতি করাটাই সুন্নাত। ঈমাম আহমাদ বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর বানীঃ “ অন্যের অধিকার ও প্রভাবিত এলাকায় কেউ যেন ঈমামতি না করে এবং তার সম্মানের আসনে সম্মতি ছাড়া না বসে-এখানে বসার সম্মতি দিলে তার মধ্যে ঈমামতি করার আজ্ঞাও নিহিত রয়েছে। অনুমতি সাপেক্ষে ঈমামতি করিতেও দোষ নেই। জামায়াতে নামাজ পড়ার ফজিলত -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৬৩. অনুচ্ছেদঃ ঈমাম নামাজ সংক্ষিপ্ত করিবে
63
নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ তোমাদের কেউ লোকদের ঈমামতি করলে সে যেন [নামাজ] সংক্ষেপ করে। কেননা তাহাদের মধ্যে ছোট বালক, দুর্বল ও অসুস্থ লোক থাকতে পারে। যখন সে একাকি নামাজ আদায় করে, বয়োবৃদ্ধ তখন নিজ ইচ্ছামত [দীর্ঘ করে] আদায় করিতে পারে।
সহিহ। সহীহ্ আবু দাঊদ হাদীস নং-[৭৫৯], বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ।আবু ঈসা বলেনঃ এ অনুচ্ছেদে আদী ইবনি হাতিম, আনাস, জাবির ইবনি সামুরা, মালিক ইবনি আবদুল্লাহ, আবু ওয়াকিদ, উসমান ইবনি আবুল আস, আবু মাসউদ, জাবির ইবনি আব্দুল্লাহ ও ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেনঃ আবু হুরাইরার হাদীসটি হাসান সহিহ। দুর্বল, বৃদ্ধ ও রুগ্নদের কষ্ট হওয়ার আশংকায় বেশিরভাগ বিশেষজ্ঞ আলিম বলেছেন, ঈমাম যেন নামাজ লম্বা না করে। আবু ঈসা বলেনঃ আবুয্ যান্নাদের নাম আব্দুল্লাহ ইবনি যাকওয়ান। আল-আরাজ হলেন, আব্দুর রহমান ইবনি হুরমুজ আল-মাদীনী তার উপনাম আবু দাঊদ। জামায়াতে নামাজ পড়ার ফজিলত -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৩৭. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] সব লোকের চেয়ে অধিক সংক্ষিপ্ত অথচ পূর্ণাঙ্গ নামাজ আদায়কারী ছিলেন। আবু ঈসা বলেনঃ হাদীসটি হাসান সহীহ।
সহিহ। বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ। আবু আউয়ানাহর নাম ওয়ায্যাহ্। আবু ঈসা বলেনঃ আমি কুতাইবাকে জিজ্ঞেস করলাম, আবু আউয়ানাহর নাম কি? তিনি বলিলেন, ওয়ায্যাহ্। জিজ্ঞেস করলাম, কার ছেলে? তিনি বলিলেন, জানি না। তিনি বাসরার এক মহিলার দাস ছিলেন। জামায়াতে নামাজ পড়ার ফজিলত -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
Leave a Reply