মাইয়্যিতের জানাযার নামাজ আদায় করা

মাইয়্যিতের জানাযার নামাজ আদায় করা

মাইয়্যিতের জানাযার নামাজ আদায় করা  >> সহীহ মুসলিম শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন >> নিম্নে মুসলিম শরীফ এর একটি অধ্যায়ের হাদিস পড়ুন

১৬. অধ্যায়ঃ জানাযাহ্‌ যথাশীঘ্র সম্পাদন করা
১৭. অধ্যায়ঃ মাইয়্যিতের জানাযার নামাজ আদায় করা এবং [ক্ববরস্থানে নেয়ার সময়] তার পিছে পিছে যাওয়া
১৮. অধ্যায়ঃ যার ওপর একশ জনের [মুসলিমের] জানাযাহ্‌ পড়বে তার জন্য এ সুপারিশ করা হইবে
১৯. অধ্যায়ঃ যার ওপর চল্লিশ জন [মুসলিম] জানাযাহ্‌ পড়বে তার জন্য এ সুপারিশ গ্রহণ করা হইবে।
২০. অধ্যায়ঃ যে মাইয়্যিতের ভাল-মন্দ বর্ণনা করা হয়
২১. অধ্যায়ঃ যে শান্তি লাভ করে এবং যার প্রস্থানে শান্তি লাভ করা হয়।
২২. অধ্যায়ঃ জানাযার তাকবীর সম্পর্কে
২৩. অধ্যায়ঃ ক্ববরের উপর জানাযার নামাজ আদায় করা
২৪. অধ্যায়ঃ জানাযাহ্‌ যেতে দেখে দাঁড়িয়ে যাওয়া
২৫. অধ্যায়ঃ জানাযার জন্য দাঁড়ানো থেকে অব্যাহতি
২৬. অধ্যায়ঃ জানাযার সলাতে মাইয়্যিতের জন্য দুআ করা
২৭. অধ্যায়ঃ জানাযার সলাতে ঈমাম মাইয়্যিতের কোন্‌ বরাবর দাঁড়াবে
২৮. অধ্যায়ঃ জানাযাহ্‌ থেকে প্রত্যাবর্তনের সময় জানাযাহ্‌ গমনকারীর সাওয়াব প্রসঙ্গে

১৬. অধ্যায়ঃ জানাযাহ যথাশীঘ্র সম্পাদন করা

২০৭৫. আবু হুরায়রাহ্‌ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] বলেন: তোমরা জানাযার নামাজ যথাসম্ভব তাড়াতাড়ি আদায় কর। যদি নেক্‌কার লোকের জানাযাহ হয়ে থাকে তবে তো কল্যাণকর, কল্যাণের দিকে তাকে আগে বাড়িয়ে দিবে। আর যদি অন্য কিছু হয় তবে তা অকল্যাণ। এ অকল্যাণ অশুভকে তোমাদের গর্দান থেকে দ্রুত সরিয়ে দিবে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২০৫৪, ইসলামিক সেন্টার- ২০৫৯]

২০৭৬. আবু হুরায়রাহ্ [রাদি.] নবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণীতঃ

তাবে মামার-এরক বর্ণনায় হাদীসে উল্লেখ আছে, তিনি বলেন আমি এ হাদীসটি মারফূ হওয়া সম্পর্কে নিশ্চিতভাবে জানি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২০৫৫, ইসলামিক সেন্টার- ২০৬০]

২০৭৭. আবু হুরায়রাহ্‌ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -কে বলিতে শুনেছি: তোমরা জানাযাহ যথাসম্ভব শীঘ্র আদায় কর। কেননা, যদি তা নেককার লোকের জানাযাহ হয়ে থাকে, তবে তোমরা তাকে দ্রুত কল্যাণের নিকটবর্তী করে দাও। আর যদি এর বিপরীত হয়, তা হইবে অকল্যাণকর, যা তোমরা নিজেদের গর্দান থেকে দ্রুত নামিয়ে দাও।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২০৫৬, ইসলামিক সেন্টার- ২০৬১]

১৭. অধ্যায়ঃ মাইয়্যিতের জানাযার নামাজ আদায় করা এবং [ক্ববরস্থানে নেয়ার সময়] তার পিছে পিছে যাওয়া

২০৭৮. আবু হুরায়রাহ্‌ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন: যে ব্যক্তি জানাযার নামাজ আদায় করা পর্যন্ত লাশের সাথে থাকে, তাকে এক ক্বীরাত সাওয়াব দেয়া হইবে। আর যে ব্যক্তি দাফন করা পর্যন্ত লাশের সাথে উপস্থিত থাকে, তাকে দু ক্বীরাত সাওয়াব দান করা হইবে। কেউ জিজ্ঞেস করিল, দু ক্বীরাত বলিতে কি পরিমাণ বুঝায়? তিনি বলিলেন, দুটি বিরাট পাহাড় সমতুল্য।

আবুত্‌ ত্বহির বর্ণিত হাদীস এ পর্যন্ত শেষ হল। বাকী দুজন বর্ণনাকারী আরো বর্ণনা করিয়াছেন যে, ইবনি শিহাব বলেন, সালিম ইবনি আবদুল্লাহ বলেছেন এবং ইবনি উমর [রাদি.] জানাযার নামাজ আদায় করিতে চলে যেতেন। যখন তাহাঁর নিকট আবু হুরায়রাহ্‌ [রাদি.] বর্ণিত হাদীস পৌঁছল তখন তিনি বলিলেন, আমরা তো বহু ক্বীরাত বরবাদ করে দিয়েছি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২০৫৭, ইসলামিক সেন্টার- ২০৬২]

২০৭৯. আবু হুরায়রাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাল্লাল্লাহুআলাইহি ওয়া সাল্লাম]-এর কথা “বিরাট দু পাহাড় সমতুল্য পর্যন্ত” বর্ণিত হয়েছে। আবদুল আলা ও আবদুর রায্যাক্ব উভয়ে হাদীসের পরবর্তী অংশ উল্লেখ করেননি। আবদুল আলা-এর হাদীসে “শেষ না হওয়া পর্যন্ত” এবং আবদুর রায্যাক্ব-এর হাদীসে “ক্ববরে না রাখা পর্যন্ত” বর্ণিত হয়েছে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২০৫৮, ইসলামিক সেন্টার- ২০৬৩]

২০৮০. আবু হুরায়রাহ্ [রাদি.] থেকে এবং তিনি নবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণীতঃ

মামার-এর হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেন। এ বর্ণনায় বলেছেন, যে ব্যাক্তি দাফন করা পর্যন্ত জানাযার অনুসরণ করে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২০৫৯, ইসলামিক সেন্টার- ২০৬৪]

২০৮১. আবু হুরায়রাহ্‌ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] বলেছেন: যে ব্যক্তি জানাযার নামাজ আদায় করে এবং লাশের অনুসরণ করে না তার জন্য রয়েছে এক ক্বীরাত সাওয়াব। আর যে ব্যক্তি লাশের অনুসরণ করে তার জন্য রয়েছে দু ক্বীরাত। কেউ জিজ্ঞেস করিল “দু ক্বীরাত্ব” বলিতে কি পরিমাণ বুঝায়? তিনি বরলেন, এর ছোটটি উহুদ পাহাড় সমতুল্য।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২০৬০, ইসলামিক সেন্টার- ২৯৬৫]

২০৮২. আবু হুরায়রাহ্‌ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] বলেছেন: যে বক্তি জানাযার নামাজ আদায় করে তার জন্য এক ক্বীরাত্ব সাওয়াব, আর যে ব্যক্তি মৃতকে ক্ববরে রাখা পর্যন্ত এর অনুসরণ করে, তার জন্যে রয়েছে দু ক্বীরাত্ব সাওয়াব। আবু হাযিম বলেন, আমি আবু হুরায়রাহ্‌ [রাদি.]-কে জিজ্ঞেস করলাম। ক্বীরাতের পরিমাণ কতটুকু? তিনি বলিলেন, উহুদ পাহাড়ের সমতুল্য।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২০৬১, ইসলামিক সেন্টার- ২০৬৬]

২০৮৩. আবু হুরায়রাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছি: যে ব্যক্তি জানাযার অনুসরণ করে তার জন্য রয়েছে এক ক্বীরাত্ব সাওয়াব। এটা শুনে ইবনি উমর [রাদি.] বলিলেন, আবু হুরায়রাহ্‌ [রাদি.] আমাদের কাছে অতিরঞ্জিত করেছে। এরপর তিনি আয়িশা [রাদি.]- এর নিকট লোক পাঠিয়ে তাঁকে এর সত্যতা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করিলেন। আয়িশা [রাদি.] আবু হুরায়রাহ্‌ [রাদি.]-এর কথাটি সত্যায়িত করিলেন। এরপর ইবনি উমর [রাদি.] বলিলেন, আমরা তো বহু সংখ্যক ক্বীরাত্ব থেকে বঞ্চিত হলাম।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২০৬২, ইসলামিক সেন্টার- ২০৬৭]

২০৮৪. সাদ ইবনি ওয়াক্কাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি আবদুল্লাহ ইবনি উমর [রাদি.]-এর নিকট বসা ছিলেন। এমন সময় খাব্বাব [রাদি.] [মাকসুরা ওয়ালা] এসে উপস্থিত হলেন এবং বলিলেন, হে আবদুল্লাহ ইবনি উমর! আপনি কি আবু হুরায়রাহ্‌ [রাদি.]-এর কথা শুনছেন না? তিনি বলিলেন, তিনি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছেন: যে ব্যক্তি জানাযার সাথে ঘর থেকে বের হয় এবং জানাযার নামাজ আদায় করে, অতঃপর দাফন করা পর্যন্ত জানাযার সাথে থাকে, তাকে দু ক্বীরাত্ব সাওয়াব দান করা হইবে। প্রতিটি ক্বীরাত্ব উহুদ পাহাড় সমতুল্য সাওয়াব লাভ করিবে। ইবনি উমর [রাদি.] এ কথা যাচাই করার জন্য খাব্বাবকে আয়িশা [রাদি.]-এর নিকট পাঠিয়ে দিলেন। খাব্বাব [রাদি.] চলে গেলে ইবনি উমর [রাদি.] মাসজিদের কাঁকর থেকে এক মুষ্টি কাঁকর হাতে নিলেন এবং খাব্বাব ফিরে না আসা পর্যন্ত তা হাতে নিয়ে নড়াচড়া করছিলেন। খাব্বাব ফিরে এসে বলিলেন, আয়িশা [রাদি.] বলেছেন, আবু হুরায়রাহ্‌ [রাদি.] ঠিকই বলেছেন। ইবনি উমর [রাদি.] তাহাঁর কঙ্কর জমিনের উপর ছুঁড়ে মেরে বলিলেন, আমরা অবশ্যই বহু সংখ্যক ক্বীরাত্ব বরবাদ করে দিয়েছি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২০৬৩, ইসলামিক সেন্টার- ২০৬৮]

২০৮৫. রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর গোলাম সাওবান [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন: যে ব্যক্তি জানাযার নামাজ আদায় করে তাকে এ ক্বীরাত সাওয়াব দান করা হয়। আর সে যদি দাফন কার্যেও শারীক থাকে, তবে দু ক্বীরাত্ব সাওয়াব সাওয়াব লাভ করিবে। এক ক্বীরাত্ব উহুদ সমতুল্য।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২০৬৪, ইসলামিক সেন্টার- ২০৭৯]

২০৮৬. [হাম্মাদ] ইবনি বাশ্শার, ইবনিল মুসান্না, যুহায়র ইবনি হারব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] ….. সকলে ক্বাতাদাহ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

একই সূত্রে অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেন। সাঈদ ও হিশাম-এর বর্ণিত হাদীসে আছে, নবী [সাঃআঃ]-কে ক্বীরাত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলিলেন, তা উহুদ পাহাড় সমতুল্য।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২০৬৫, ইসলামিক সেন্টার- ২০৭০]

১৮. অধ্যায়ঃ যার ওপর একশ জনের [মুসলিমের] জানাযাহ পড়বে তার জন্য এ সুপারিশ করা হইবে

২০৮৭. আয়েশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] বলেছেন: কোন মৃত ব্যক্তির ওপর যখন একদল মুসলিম যাদের একশ হইবে জানাযার নামাজ আদায় করে এবং সবাই তার জন্য আল্লাহর কাছে সুপারিশ করে, তবে তার জন্য এ সুপারিশ ক্ববূল করা হইবে।

তিনি [সাল্লাম ইবনি আবু মুত্বী] বলেন, আমি এ হাদীসটি শুআয়ব ইবনি হাব্‌হাব-এর কাছে বর্ণনা করলে তিনি বলিলেন, আমাকে এ হাদীস আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] নবী [সাঃআঃ]-এর সূত্রে বর্ণনা করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২০৬৬, ইসলামিক সেন্টার- ২০৭১]

১৯. অধ্যায়ঃ যার ওপর চল্লিশ জন মুসলিম জানাযাহ পড়বে তার জন্য এ সুপারিশ গ্রহণ করা হইবে।

২০৮৮. আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

কুদায়দ অথবা উসকান নামক স্থানে তার একটি পুত্র সন্তান মারা গেল। তিনি আমাকে বলিলেন, হে কুরায়ব! দেখ কিছু লোক একত্রিত হয়েছে কিনা? আমি বের হয়ে দেখলাম কিছু একত্রিত হয়েছে। আমি তাকে খবর দিলাম। তিনি জিজ্ঞেস করিলেন, বল তাদের সংখ্যা কি চল্লিশ হইবে? বললাম, হ্যাঁ। তিনি বলিলেন, তাহলে লাশ বের করে নাও। আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছি: কোন মুসলিম মারা গেলে, তার জানাযায় যদি এমন চল্লিশজন দাঁড়িয়ে যায় যারা আল্লাহর সাথে কোন কিছুকে শারীক করে না তবে মহান আল্লাহর তার অনুকূলে তাদের প্রার্থনা কবূল করেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২০৬৭, ইসলামিক সেন্টার- ২০৭২]

২০. অধ্যায়ঃ যে মাইয়্যিতের ভাল-মন্দ বর্ণনা করা হয়

২০৮৯. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, একটি জানাযাহ বয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। লোকেরা প্রশংসা করিল। নবী [সাঃআঃ]বলেন, ওয়াজিব হয়েছে, ওয়াজিব হয়েছে, ওয়াজিব হয়েছে। [আরেকবার] একটা জানাযাহ বয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল কিন্তু লোকেরা তার দুর্নাম করিল। নবী [সাঃআঃ]তার সম্পর্কে ওয়াজিব হয়েছে, ওয়াজিব হয়েছে, ওয়াজিব হয়েছে [তিনবার] বলিলেন। তখন উমর [রাদি.] বলিলেন, হে আল্লাহর রসূল! আপনার উপর আমার মা-বাপ উৎসর্গ হোক! একটা জানাযাহ অতিক্রম করলে তার প্রতি ভাল মন্তব্য করা হলে আপনি ওয়াজিব হয়েছে, ওয়াজিব হয়েছে, ওয়াজিব হয়েছে বলিলেন! আর একটা জানাযাহ অতিক্রমকালে তার প্রতি খারাপ মন্তব্য করা হলে আপনি ওয়াজিব হয়েছে, ওয়াজিব হয়েছে, ওয়াজিব হয়েছে-বলিলেন! রসূলূল্লাহ [সাঃআঃ]উত্তরে বললেনঃতোমরা যার সম্পর্কে ভাল মন্তব্য করেছ তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব হয়ে গেছে। আর তোমরা যার সম্পর্কে খারাপ মন্তব্য করেছ তার জন্য জাহান্নাম ওয়াজিব হয়ে গেছে। তোমরা জমিনের বুকে আল্লাহর সাক্ষী, তোমরা জমিনের বুকে আল্লাহর সাক্ষী, তোমরা জমিনের বুকে আল্লাহর সাক্ষী।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২০৬৮, ইসলামিক সেন্টার- ২০৭৩]

২০৯০. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ]-এর কাছ দিয়ে একটা জানাযাহ অতিক্রম করিল। হাদীসের অবশিষ্ট অংশ আনাস-এর সূত্রে আবদুল আযীয-এর হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করা হয়েছে। তবে আবদুল আযীয-এর হাদীসটি পূর্ণাঙ্গ।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২০৬৯, ইসলামিক সেন্টার- ২০৭৪]

২১. অধ্যায়ঃ যে শান্তি লাভ করে এবং যার প্রস্থানে শান্তি লাভ করা হয়।

২০৯১. আবু ক্বাতাদাহ্‌ ইবনি রিব্‌ঈ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

একবার রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর কাছ দিয়ে একটা জানাযাহ বয়ে নিয়ে যাওয়া হলে তিনি বলেন,

مُسْتَرِيحٌ وَمُسْتَرَاحٌ مِنْهُ

“মুস্‌তারীহুন” ও “ওয়া মুসতারাহুন মিনহু” [অর্থাৎ- সে শান্তিলাভকারী এবং তার প্রস্থানে শান্তি লাভ হয়]।

সাহাবীগণ জিজ্ঞেস করিলেন, হে আল্লাহর রসূল! “মুসতারীহুন” ও “ওয়া মুস্‌তারাহুন মিনহু”- এর মানে কি? রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]বলিলেন, ঈমানদার বান্দা হয়ে এ ব্যক্তি দুনিয়ার কষ্ট মুসীবাত থেকে নিষ্কৃতি লাভ করিবে। আর পাপীষ্ট বান্দা হলে এ ব্যক্তি থেকে আল্লাহর বান্দারা, অত্র অঞ্চল, বৃক্ষরাজি ও পশু-পাখি সবাই পরিত্রাণ লাভ করিবে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২০৭০, ইসলামিক সেন্টার- ২০৭৫]

২০৯২. আবু ক্বাতাদাহ্ [রাদি.] নবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণীতঃ

অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেন। ইয়াহ্ইয়া ইবনি সাঈদ-এর বর্ণিত হাদীসে আছে, সে ব্যক্তি দুনইয়ার ক্লেশ থেকে মুক্তি পেছে আল্লাহর রহমাত লাভ করিবে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২০৭১, ইসলামিক সেন্টার- ২০৭৬]

২২. অধ্যায়ঃ জানাযার তাকবীর সম্পর্কে

২০৯৩. আবু হুরায়রাহ্‌ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর জনসাধারণকে নাজাশীর ইনতিকালের সংবাদ শুনালেন, যেদিন তিনি ইনতিকাল করেন। অতঃপর তিনি তাদেরকে নিয়ে নামাজের স্থানে গিয়ে চার তাকবীরে সলাতুল জানাযাহ আদায় করেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২০৭২, ইসলামিক সেন্টার- ২০৭৭]

২০৯৪. আবু হুরায়রাহ্‌ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আবিসিনিয়ার অধিপতি নাজাশীর যে দিন মৃত্যু হয় সে দিন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদেরকে তার মৃত্যুর খবর দিলেন এরপর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, তোমাদের ভাইয়ের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা কর।

ইবনি শিহাব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, সাঈদ ইবনি মুসাইয়্যিব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] আমাকে বলেছেন যে, আবু হুরায়রাহ্‌ [রাদি.] তাহাঁর কাছে হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন যে, রসূলূল্লাহ [সাঃআঃ] তাদের নিয়ে নামাজের স্থান কাতার করিলেন। এরপর তিনি [সাঃআঃ] নামাজ আদায় করিলেন এবং এতে [অতিরিক্ত] চার তাকবীর বলিলেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২০৭৩, ইসলামিক সেন্টার- নেই]

২০৯৫. আমর আন্ নাক্বিদ, হাসান আল হুলওয়ানী ও আব্‌দ ইবনি হুমায়দ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] ….. উভয় সূত্রেই ইবনি শিহাব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

উক্বায়ল [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে। [ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২০৭৪, ইসলামিক সেন্টার- ২০৭৮]

২০৯৬

জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলূল্লাহ [সাঃআঃ] নাজাশীর জন্য গায়েবানা জানাযাহ আদায় করিয়াছেন এবং চার তাকবীরে সলাতুল জানাযাহ আদায় করেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২০৭৫, ইসলামিক সেন্টার- ২০৭৯]

২০৯৭. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, [নাজাশী ইনতিকাল করলে] রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, আজ আল্লাহর এক নেক্কার বান্দাহ্‌ ইনতিকাল করিয়াছেন। এরপর তিনি উঠে গিয়ে আমাদের সামনে ঈমাম হয়ে তার জন্য সলাতুল জানাযাহ আদায় করিলেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২০৭৬, ইসলামিক সেন্টার- ২০৮০]

২০৯৮. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, নাজাশী ইনতিকাল করলে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ তোমাদের এক ভাই ইনতিকাল করিয়াছেন। অতএব তোমরা উঠ এবং তাহাঁর জন্য নামাজ আদায় কর। জাবির [রাদি.] বলেন, আমরা উঠে গিয়ে দুটি সারি বাঁধলাম।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২০৭৭, ইসলামিক সেন্টার- ২০৮১]

২০৯৯. ইমরান ইবনি হুসায়ন [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, তিনি [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমাদের এক [নাজাশী] ইনতিকাল করিয়াছেন। অতএব, তোমরা উঠে তাহাঁর জন্য নামাজ আদায় কর। যুহায়র বর্ণনায় “তোমাদের ভাই” বর্ণিত হয়েছে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২০৭৮, ইসলামিক সেন্টার- ২০৮২]

২৩. অধ্যায়ঃ ক্ববরের উপর জানাযার নামাজ আদায় করা

২১০০. শাবী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

রসূল্লাহ [সাঃআঃ] মৃতকে দাফন করার পর একটা ক্ববরের উপর জানাযার নামাজ আদায় করিয়াছেন এবং চার তাকবীর উচ্চারণ করিয়াছেন। শায়বানী বলেন, আমি শাবীকে জিজ্ঞেস করলাম, এটা আপনার কাছে কে বর্ণনা করিয়াছেন? তিনি বলিলেন, নির্ভরযোগ্য ব্যক্তি আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস [রাদি.]। এট হাসান-এর বর্ণিত হাদীসের শব্দ। আর ইবনি নুমায়র-এর বর্ণনাতে রয়েছে, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] একটা তাজা ক্ববরের নিকট পৌঁছে এর উপর নামাজ আরম্ভ করলে সবাই তাহাঁর পিছনে সারিবদ্ধ হল। তিনি চার তাকবীর উচ্চারণ করিলেন। আমি আমিরকে জিজ্ঞেস করলাম, আপনার কাছে কে বর্ণনা করিয়াছেন? তিনি বলিলেন, নির্ভরযোগ্য ব্যক্তি যার কাছে ইবনি আব্বাস [রাদি.] এসেছিলেন।

[ই.ফা ২০৭৯, ইসলামিক সেন্টার- ২০৮৩]

২১০১. আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস [রাদি.] নবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণীতঃ

অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেন। তাদের কারো হাদীসে এ কথা উল্লেখ নেই যে, নবী [সাঃআঃ] তার জানাযায় চার তাকবীর উচ্চারণ করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২০৮০, ইসলামিক সেন্টার- ২০৮৪]

২১০২. আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস [রাদি.] থেকে এবং তিনি নবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণীতঃ

ক্ববরের উপর তাহাঁর জানাযার নামাজ সম্পর্কে শায়বানীর হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেন। তাদের হাদীসের চার তাকবীরের কথা বর্ণিত হয়নি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২০৮১, ইসলামিক সেন্টার- ২০৮৫]

২১০৩. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] ক্ববরের উপর জানাযার নামাজ আদায় করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২০৮২, ইসলামিক সেন্টার- ২০৮৬]

২১০৪. আবু হুরায়রাহ্‌ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

একটি কৃষ্ণাঙ্গ মহিলা অথবা যুবক মাসজিদে নাবাবীতে ঝাড়ু দিত। কিছুদিন তাকে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] না দেখে তার সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করিলেন। সাহাবীগণ বলিলেন, সে তো মারা গেছে। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ তোমরা আমাকে খবর দিলে না কেন? বর্ণনাকারী বলেন, খুব সম্ভব তারা বিষয়টিকে গুরুত্বহীন মনে করেছিলেন। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ আমাকে তার ক্ববর দেখিয়ে দাও। তারা তাঁকে ক্ববর দেখিয়ে দিলে তিনি [সাঃআঃ] তার ক্ববরের উপর সলাতুল জানাযাহ আদায় করিলেন। অতঃপর তিনি [সাঃআঃ] বললেনঃ এসব ক্ববর অন্ধকারে পরিপূর্ণ হয়ে আছে। মহান আল্লাহ আমার নামাজের দরুন তা আলোকিত করে দিন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২০৮৩, ইসলামিক সেন্টার- ২০৮৭]

২১০৫. আবদুর রহমান ইবনি লায়লা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, যায়দ [রাদি.] আমাদের জানাযাহসমূহে চারটি তাকবীর উচ্চারণ করিতেন। আর তিনি কোন জানাযায় পাঁচ তাকবীরও দিয়েছেন। আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলিলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এরূপ [পাঁচবার] তাকবীর দিতেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২০৮৪, ইসলামিক সেন্টার- ২০৮৮]

২৪. অধ্যায়ঃ জানাযাহ যেতে দেখে দাঁড়িয়ে যাওয়া

২১০৬. আমির ইবনি রবীআহ্‌ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যখন তোমরা জানাযাহ নিয়ে যেতে দেখ তখন দাঁড়িয়ে যাও। যে পর্যন্ত তা তোমাদের পশ্চাতে ফেলে না যায় অথবা তা মাটিতে রেখে দেয়া না হয় [ততক্ষণ দাঁড়িয়ে থাক]।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২০৮৫, ইসলামিক সেন্টার- ২০৮৯]

২১০৭. কুতায়বাহ্ ইবনি সাঈদ, মুহাম্মাদ ইবনি রুমহ, হারমালাহ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] ….. সকলেই ইবনি শিহাব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

একই সানাদে বর্ণনা করিয়াছেন এবং ইউনুস বর্ণিত হাদীসে এরূপ বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছেন- কুতায়বাহ্ ইবনি সাঈদ, ইবনি রুমহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] ….. আম্‌র ইবনি রবীআহ [রাদি.] হইতে বর্ণীত। তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যখন তোমরা জানাযাহ্ দেখিতে পাও এবং তার সাথে যদি না যাও, তবে জানাযাহ্ এগিয়ে না যাওয়া অথবা মাটিতে না রাখা পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থেকো।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২০৮৬, ইসলামিক সেন্টার- ২০৯১]

২১০৮. আবু কামিল, ইয়াকূব ইবনি ইব্রাহীম, ইবনিল মুসান্না, মুহাম্মাদ ইবনি রাফি [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] ….. সকলেই নাফি [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

এ সূত্রে লায়স ইবনি সাদ-এর হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেন। ব্যতিক্রম এই যে, ইবনি জুরায়জ-এর হাদীসের বর্ণনা নিম্নরূপঃ নবী [সাঃআঃ] বলেন, যখন তোমাদের কেউ জানাযাহ্ দেখিতে পায়, তখন তার দাঁড়িয়ে যাওয়া উচিত। আর সে জানাযার অনুসরণ না করে তবে তা অগ্রসর হয়ে তাকে পিছনে ফেলে যাওয়া পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থাকা উচিত।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২০৮৭, ইসলামিক সেন্টার- ২০৯২]

২১০৯. আবু সাঈদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

বর্ণিত। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যখন তোমরা জানাযার অনুগামী হও তখন জানাযাহ মাটিতে না রাখা পর্যন্ত বসবে না।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২০৮৮, ইসলামিক সেন্টার- ২০৯৩]

২১১০. আবু সাঈদ আল খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যখন তোমরা জানাযার পিছনে পিছনে চল, তখন তা মাটিতে না রাখা পর্যন্ত বসো না।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২০৮৯, ইসলামিক সেন্টার- নেই]

২১১১. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেনঃ একবার একটি লাশ নিয়ে যেতে দেখে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] দাঁড়িয়ে গেলেন। আমরাও তাহাঁর সাথে দাঁড়িয়ে গেলাম। আমরা বললাম, হে আল্লাহর রসূল! এতো এক ইয়াহুদী মেয়েলোকের লাশ। তিনি বললেনঃ মৃত্যু একটা ভয়াবহ জিনিস। অতএব, যখন তোমরা জানাযাহ [লাশ] দেখ, দাঁড়িয়ে যাও।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২০৯০, ইসলামিক সেন্টার- ২০৯৪]

২১১২. আবুয্ যুবায়র [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

আবুয্ যুবায়র [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] থেকে আরও বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি জাবির [রাদি.]–কে বলিতে শুনেছেন, নবী [সাঃআঃ] ও তাহাঁর সাহাবীগণ এক ইয়াহূদীর লাশ যেতে দেখে এবং তা চোখের আড়াল না হওয়া পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থাকলেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২০৯২, ইসলামিক সেন্টার- ২০৯৬]

২১১৩. আবুয্ যুবায়র [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

আবুয্ যুবায়র [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] থেকে আরও বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি জাবির [রাদি.]-কে বলিতে শুনেছেন, নবী [সাঃআঃ] ও তাহাঁর সাহাবীগণ এক ইয়াহুদীর লাশ যেতে দেখে এবং তা চোখের আড়াল না হওয়া পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থাকলেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২০৯২, ইসলামিক সেন্টার- ২০৯৬]

২১১৪. আমর ইবনি মুররাহ্ ইবনি আবু লায়লার সূত্র হইতে বর্ণীতঃ

ক্বায়স ইবনি সাদ ও সাহল ইবনি হুনায়ফ [রাদি.] কাদিসিয়্যাতে ছিলেন। তাদের কাছ দিয়ে একটা জানাযাহ্ অতিক্রম করলে তারা উভয়ে দাঁড়িয়ে গেলেন। তাদেরকে বলা হল, এটা তো অত্র এলাকার [এক অমুসলিমের] লাশ! তারা বলিলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর কাছ দিয়ে একটি জানাযাহ্ অতিক্রম করলে তিনি দাঁড়িয়ে যান। তখন কেউ তাকে বলিল, এটা এক ইয়াহূদীর লাশ! তিনি বললেনঃ সেকি একটি প্রাণী নয়?

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২০৯৩, ইসলামিক সেন্টার- ২০৯৭]

২১১৫. আমর ইবনি মুররাহ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

আমর ইবনি মুররাহ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] থেকে এ সূত্রে বর্ণিত হয়েছে। অতঃপর তাঁরা বলিলেন, আমরা একবার রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সাথে ছিলাম। এমন সময় আমাদের নিকট দিয়ে একটি লাশ অতিক্রম করিল।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২০৯৪, ইসলামিক সেন্টার- ২০৯৮]

২৫. অধ্যায়ঃ জানাযার জন্য দাঁড়ানো থেকে অব্যাহতি

২১১৬. ওয়াক্বিদ ইবনি আম্‌র ইবনি মুআয [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

আমরা এক জানাযায় দাঁড়িয়ে ছিলাম। এমন সময় নাফি ইবনি জুবায়র আমাকে দেখিতে পেলেন। তিনি তখন লাশ নীচে রাখার জন্য বসে বসে অপেক্ষা করছিলেন। তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করিলেন, তুমি এখানে দাঁড়িয়ে আছ কেন? আমি উত্তর দিলাম। লাশটি রাখার অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে আছি। কেননা আবু সাঈদ আল খুদরী [রাদি.]-এর সম্পর্কে বর্ণনা করিয়াছেন। নাফি [রাদি.] এ কথা শুনে বলিলেন, মাসঊদ ইবনি হাকাম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] আলী ইবনি আবু ত্বলিব [রাদি.]-এর সূত্রে আমাকে জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] প্রথমে দাঁড়িয়েছেন পরে বসে গেছেন [এ অভ্যাসে পরিত্যাগ করিয়াছেন]।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২০৯৫, ইসলামিক সেন্টার- ২০৯৯]

২১১৭. মাসঊদ ইবনি হাকাম আল আনসারী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

আলী ইবনি আবু ত্বলিব [রাদি.]-কে জানাযার ব্যাপারে বলিতে শুনেছেন : রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] প্রথম দিকে দাঁড়াতেন এবং পরে বসে পড়তেন।

নাফি ইবনি জুবায়র কথাটা এজন্য বর্ণনা করিয়াছেন যে, তিনি ওয়াক্বিদ ইবনি আম্‌র [রাদি.]-কে দেখলেন তিনি লাশ নীচে রাখার অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে আছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২০৯৬, ইসলামিক সেন্টার- ২১০০]

২১১৮. ইয়াহ্ইয়া ইবনি সাঈদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

একই সানাদে বর্ণিত হয়েছে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২০৯৭, ইসলামিক সেন্টার- ২১০১]

২১১৯. আলী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমরা জানাযায় রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে দাঁড়াতে দেখে দাঁড়িয়েছি এবং বসতে দেখে বসে গেছি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২০৯৮, ইসলামিক সেন্টার- ২১০২]

২১২০. শুবাহ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২০৯৯, ইসলামিক সেন্টার- ২১০৩]

২৬. অধ্যায়ঃ জানাযার সলাতে মাইয়্যিতের জন্য দুআ করা

২১২১, জুবায়র ইবনি নুফায়র [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

[তিনি বলেন] আমি আওফ ইবনি মালিক [রাদি.]-কে বলিতে শুনেছি : রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এক জানাযায় যে দুআ পড়লেন, আমি তাহাঁর সে দুআ মনে রেখেছি। দুআয় তিনি এ কথাগুলো বলেছিলেন,

اللَّهُمَّ اغْفِرْ لَهُ وَارْحَمْهُ وَعَافِهِ وَاعْفُ عَنْهُ وَأَكْرِمْ نُزُلَهُ وَوَسِّعْ مُدْخَلَهُ وَاغْسِلْهُ بِالْمَاءِ وَالثَّلْجِ وَالْبَرَدِ وَنَقِّهِ مِنَ الْخَطَايَا كَمَا نَقَّيْتَ الثَّوْبَ الأَبْيَضَ مِنَ الدَّنَسِ وَأَبْدِلْهُ دَارًا خَيْرًا مِنْ دَارِهِ وَأَهْلاً خَيْرًا مِنْ أَهْلِهِ وَزَوْجًا خَيْرًا مِنْ زَوْجِهِ وَأَدْخِلْهُ الْجَنَّةَ وَأَعِذْهُ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ أَوْ مِنْ عَذَابِ النَّارِ ‏

“আল্ল-হুম্মাগ্‌ফির্‌ লাহূ ওয়ার্‌হাম্‌হু ওয়া আ-ফিহী ওয়াফু আন্‌হু ওয়া আক্‌রিম নুযুলাহূ ওয়া ওয়াস্‌সি মুদ্‌খালাহূ ওয়াগ্‌সিল্‌হু বিলমা-য়ি ওয়াস্‌সাল্‌জি ওয়াল বারাদি ওয়ানাক্কিহী মিনাল খ্বাতা-ইয়া- কামা- নাক্কায়সাস্‌ সাওবাল আব্‌ইয়াযা মিনাদ্‌দানাসি ওয়া আব্‌দিল্‌হু দা-রান্‌ খায়রাম্‌ মিন দা-রিহী ওয়া আহলান্‌ খায়রাম্‌ মিন আহ্‌লিহী ওয়া য়াওজান্‌ খায়রাম্‌ মিন যাওজিহী ওয়া আদখিল্‌হুল জান্নাতা ওয়া আইয্‌হু মিন আযা-বিল ক্বব্‌রি আও মিন আযা-বিন্না-র-[অর্থাৎ- হে আল্লাহ! তাকে ক্ষমা করে দাও ও তার প্রতি দয়া কর। তাকে নিরাপদে রাখ ও তার ত্রুটি মার্জনা কর। তাকে উত্তম সামগ্রী দান কর ও তার প্রবেশ পথকে প্রশস্ত করে দাও। তাকে পানি, বরফ ও বৃষ্টি দ্বারা মুছে দাও এবং পাপ থেকে এরূপভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে দাও যেরূপ সাদা কাপড় ময়লা থেকে পরিষ্কার হয়ে যায়। তাকে তার ঘরকে উত্তম ঘরে পরিণত কর, তার পরিবার থেকে উত্তম পরিবার দান কর, তার স্ত্রীর তুলনায় উত্তম স্ত্রী দান কর। তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাও এবং ক্ববরের আযাব ও জাহান্নামের আযাব থেকে বাঁচাও।]।

বর্ণনাকারী আওফ ইবনি মালিক বলেন, তাহাঁর মূল্যবান দুআ শুনে আমার মনে আকাঙ্ক্ষা জাগল, আমি যদি সে মৃত ব্যক্তি হতাম।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২১০০, ইসলামিক সেন্টার- ২১০৪]

২১২২

আওফ ইবনি মালিক [রাদি.] সূত্রে নবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণীতঃ

অত্র হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২১০১, ইসলামিক সেন্টার- ২১০৫]

২১২৩. মুআবিয়াহ্ ইবনি সালিহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

উভয় সানাদে ইবনি ওয়াহ্ব-এর হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২১০২, ইসলামিক সেন্টার- নেই]

২১২৪. আওফ ইবনি মালিক আল আশজাঈ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি নবী [সাঃআঃ]-কে জানাযার সলাতে এভাবে দুআ করিতে শুনেছি :

اللَّهُمَّ اغْفِرْ لَهُ وَارْحَمْهُ وَاعْفُ عَنْهُ وَعَافِهِ وَأَكْرِمْ نُزُلَهُ وَوَسِّعْ مُدْخَلَهُ وَاغْسِلْهُ بِمَاءٍ وَثَلْجٍ وَبَرَدٍ وَنَقِّهِ مِنَ الْخَطَايَا كَمَا يُنَقَّى الثَّوْبُ الأَبْيَضُ مِنَ الدَّنَسِ وَأَبْدِلْهُ دَارًا خَيْرًا مِنْ دَارِهِ وَأَهْلاً خَيْرًا مِنْ أَهْلِهِ وَزَوْجًا خَيْرًا مِنْ زَوْجِهِ وَقِهِ فِتْنَةَ الْقَبْرِ وَعَذَابَ النَّارِ 

“আল্ল-হুম্মাগ্‌ফির্‌লাহূ ওয়ার্‌হাম্‌হু ওয়াফু আন্‌হু ওয়াআ-ফিহী ওয়া আক্‌রিম নুযুলাহূ ওয়াস্‌সি মুদ্‌খালাহূ ওয়াগ্‌সিল্‌হু বিমা-য়িন্‌ ওয়াসালজিন্‌ ওয়াবারাদিন্‌ ওয়ানাক্কিহী মিনাল খ্বাতা-ইয়া- কামা- ইউনাক্কাস্‌ সাওবুল আব্‌ইয়াযু মিনাদ্‌দানাসি ওয়া আব্‌দিল্‌হু দা-রান্‌ খায়রাম্‌ মিন দা-রিহী ওয়া আহ্‌লান্‌ খায়রাম্‌ মিন্‌ আহ্‌লিহী ওয়া যাওজান্‌ খায়রাম্‌ মিন যাওজিহী ওয়াক্বিহী ফিত্‌নাতিল ক্বব্‌রি ওয়াআযা-বিন্ না-র”

[অর্থাৎ- “হে আল্লাহ! তাকে ক্ষমা করে দাও ও তার প্রতি দয়া কর। তার ত্রুটি মার্জনা কর ও তাকে বিপদ মুক্ত কর। তার উত্তম আপ্যায়নের ব্যবস্থা কর ও তার আশ্রয়স্থলকে প্রশস্ত করে দাও। তাকে পানি, বরফ ও বৃষ্টি দিয়ে ধুয়ে মুছে দাও। তাকে পাপরাশি থেকে এভাবে পরিষ্কার করে দাও যেভাবে সাদা কাপড়কে ময়লা থেকে পরিষ্কার করা হয়। তাকে তার বর্তমান ঘরের পরিবর্তে আরও উত্তম ঘর দান কর, তার পরিবার থেকে উত্তম পরিবার দান কর, বর্তমান স্ত্রী অপেক্ষা উত্তম স্ত্রী দান কর এবং তাকে ক্ববর আযাব ও জাহান্নামের আযাব থেকে বাঁচাও।]।

আওফ ইবনি মালিক [রাদি.] বলেন, ঐ মৃত ব্যক্তির প্রতি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর এরূপ দুআ দেখে মনে আকাঙ্ক্ষা জাগল যে, আমি যদি এ মৃত ব্যক্তি হতাম।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২১০৩, ইসলামিক সেন্টার- ২১০৬]

২৭. অধ্যায়ঃ জানাযার সলাতে ঈমাম মাইয়্যিতের কোন্‌ বরাবর দাঁড়াবে

২১২৫. সামুরাহ্‌ ইবনি জুনদুব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি নবী [সাঃআঃ]-এর পিছনে জানাযার নামাজ আদায় করতাম। তিনি উম্মু কাব-এর জানাযাহ আদায় করছিলেন। তিনি নিফাস অবস্থায় মারা গিয়েছিলেন। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তার জানাযাহ আদায়কালে তার মাঝ বরাবর দাঁড়িয়েছিলেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২১০৪, ইসলামিক সেন্টার- ২১০৭]

২১২৬. আবু বাকর ইবনি শায়বাহ্, আলী ইবনি হুজর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] ….. সকলেই হুসায়ন [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] থেকে একই সূত্র হইতে বর্ণীতঃ

অবশ্য তাঁরা উম্মু কাব-এর কথা উল্লেখ করেননি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২১০৫, ইসলামিক সেন্টার- ২১০৮]

২১২৭. সামুরাহ্‌ ইবনি জুনদুব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর যামানায় তরুণ বালক ছিলাম। আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর কথা মনে রাখতে পারতাম। তবে একমাত্র এ কারণে আলোচনা করিতে আমার বিবেক আমাকে বাধা দিত যে, তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর কাছে আমার চেয়ে বয়োঃজ্যেষ্ঠ লোক উপস্থিত থাকত। আমি তাহাঁর পিছনে এক মহিলার জানাযাহ আদায় করলাম। সে নিফাস অবস্থায় মারা গিয়েছিল। তার জানাযাহ আদায়কালে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তার মাঝ বরাবর দাঁড়িয়েছেন।

ইবনিল মুসান্না-এর রিওয়ায়াতে এরূপ বর্ণিত হয়েছে : আমাকে আবদুল্লাহ ইবনি বুরায়দাহ্‌ [রাদি.] শুনিয়েছেন এবং বলেছেন, তিনি [সাঃআঃ] তাহাঁর নামাজ আদায়কালে তার দেহের মাঝ বরাবর দাঁড়িয়েছিলেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২১০৬, ইসলামিক সেন্টার- ২১০৯]

২৮. অধ্যায়ঃ জানাযাহ থেকে প্রত্যাবর্তনের সময় জানাযাহ গমনকারীর সাওয়াব প্রসঙ্গে

২১২৮. জাবির ইবনি সামুরাহ্‌ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ]-এর নিকট রশিবিহীন একটি ঘোড়া হাজির করা হল। তিনি ইবনি দাহদাহ-এর জানাযাহ শেষ করে এর পিঠে আরোহণ করিলেন। আর আমরা তাহাঁর চার পাশে হেঁটে চলছিলাম।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২১০৭, ইসলামিক সেন্টার- ২১১০]

২১২৯. জাবির ইবনি সামুরাহ্‌ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, ইবনি দাহ্‌দাহ [মারা গেলে] রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর জানাযাহ আদায় করিলেন। এরপর তার কাছে একটা লাগামবিহীন ঘোড়া হাজির করা হল। জনৈক ব্যক্তি তা রশি দিয়ে বাঁধল। তিনি [সাঃআঃ]-এর পিঠে আরোহণ করিলেন। ঘোড়াটি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে নিয়ে লাফিয়ে চলতে লাগল। আর আমরা তাহাঁর পিছনে দৌড়িয়ে অনুসরণ করলাম। জাবির বলেন, অতঃপর কাফিলার মধ্যে জনৈক ব্যক্তি বলিল, নবী [সাঃআঃ] বলেছেন, বহু সংখ্যক খেজুরের ছড়া ইবনি দাহ্‌দাহ-এর জন্য জান্নাতে ঝুলে রয়েছে। শুবাহ্‌-এর বর্ণনায় আবু দাহ্‌দাহ উল্লেখ আছে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২১০৮, ইসলামিক সেন্টার- ২১১১]

Comments

Leave a Reply