জানাজার নামাজের কাতার তাকবীর ক্বিরাআত ও দুআ

জানাজার নামাজের কাতার তাকবীর ক্বিরাআত ও দুআ

জানাজার নামাজের কাতার তাকবীর ক্বিরাআত ও দুআ >>আবুদ দাউদ শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন

অধ্যায়ঃ ২১, অনুচ্ছেদঃ ৪৩-৬২=২০টি

অনুচ্ছেদ-৪৩ঃজানাযার সলাতের কাতার সম্পর্কে
অনুচ্ছেদ-৪৪ঃ জানাযায় নারীদের অংশগ্রহণ
অনুচ্ছেদ-৪৫ঃ জানাযায় অংশগ্রহণ ও লাশের অনুগমনের ফযীলাত
অনুচ্ছেদ-৪৬ঃ আগুন সাথে নিয়ে লাশের সাথে যাওয়া
অনুচ্ছেদ-৪৭ঃ লাশের জন্য [সম্মানার্থে] দাঁড়ানো
অনুচ্ছেদ-৪৮ঃ বাহনে চড়ে লাশের সাথে যাওয়া
অনুচ্ছেদ-৪৯ঃ লাশের আগে আগে যাওয়া
অনুচ্ছেদ-৫০ঃ জানাযা দ্রুত বহন করা সম্পর্কে
অনুচ্ছেদ-৫১ঃ ঈমাম আত্মহত্যাকারীর জানাযা পড়বে না
অনুচ্ছেদ-৫২ঃ শারঈ হদ্দ কার্যকরে নিহত অপরাধীর জানাযা পড়া সম্পর্কে
অনুচ্ছেদ-৫৩ঃ মৃত শিশুর জানাযা পড়া
অনুচ্ছেদ-৫৪ঃ মাসজিদে জানাযার সালাত আদায়
অনুচ্ছেদ-৫৫ঃ সূর্য উদয় ও সূর্যাস্তের সময় লাশ দাফন করা সম্পর্কে
অনুচ্ছেদ-৫৬ঃ পুরুষ ও নারীর লাশ একত্রে উপস্থিত হলে কার লাশ আগে থাকিবে
অনুচ্ছেদ-৫৭ঃ জানাযা সলাতে ঈমাম কোথায় দাঁড়াবেন
অনুচ্ছেদ-৫৮ঃ জানাযার সলাতে তাকবীর সংখ্যা
অনুচ্ছেদ-৫৯ঃ জানাযার সলাতে ক্বিরাআত পাঠ
অনুচ্ছেদ-৬০ঃ মৃতের জন্য দুআ করা
অনুচ্ছেদ-৬১ঃ ক্ববরের উপর জানাযা পড়া
অনুচ্ছেদ-৬২ঃ মুশরিকদের দেশে মৃত মুসলিমের জানাযা

অনুচ্ছেদ৪৩ঃজানাযার সলাতের কাতার সম্পর্কে

৩১৬৬. মালিক ইবনি হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ কেউ মারা গেলে এবং মুসলিমদের তিন কাতার লোক তার জানাযা পড়লে [আল্লাহ তার জন্য জান্নাত] ওয়াজিব করে দেন। বর্ণনাকারী বলেন, এ কারনে মালিক [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] জানাযায় লোক সংখ্যা কম হলে তাহাদেরকে তিন কাতারে বিভক্ত করিতেন, এ হাদিস মোতাবেক আমলের উদ্দেশ্যে।

দুর্বলঃ কিন্তু মাওকুফ হাসান। মিশকাত [১৬৮৭]। হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

অনুচ্ছেদ৪৪ঃ জানাযায় নারীদের অংশগ্রহণ

৩১৬৭. উম্মু আতিয়্যাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমাদের মহিলাদেরকে জানাযায় অংশগ্রহণে নিষেধ করা হয়, তবে এ বিষয়ে আমাদের উপর কড়াকড়ি করা হয় নি।

জানাজার নামাজের কাতার তাকবীর ক্বিরাআত ও দুআ – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ৪৫ঃ জানাযায় অংশগ্রহণ লাশের অনুগমনের ফযীলাত

৩১৬৮. আবু হুরাইরাহ[রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেনঃ নাবী [সাঃআঃ] বলিয়াছেন, যে ব্যক্তি লাশের অনুগমন করে এবং তাহাঁর জানাযা আদায় করে তার জন্য এক ক্বীরাত সওয়াব রয়েছে। আর যে ব্যক্তি লাশের অনুগমন করে এবং দাফন শেষ করা পর্যন্ত শরীক থাকে তার জন্য রয়েছে দুই ক্বীরাত সওয়াব। এ দুই ক্বীরাতের ছোট ক্বীরাতটি উহুদ পাহাড়ের সমান অথবা উভয়ের একটি উহুদ পাহাড়ের সমান।

সহীহঃ আল-আহকাম [৬৮] জানাজার নামাজের কাতার তাকবীর ক্বিরাআত ও দুআ – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৩১৬৯. দাউদ ইবনি আমির ইবনি সাদ ইবনি আবু ওয়াক্কাস [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে তার পিতার সুত্র হইতে বর্ণীতঃ

একদা দাউদের পিতা আমির [রাদি.] আবদুল্লাহ ইবনি উমার ইবনিল খাত্তাবের [রাদি.] কাছে উপস্থিত ছিলেন। এমন সময় ক্ষুদ্র কুটিরবাসী খাব্বাব [রাদি.] এসে উপস্থিত হয়ে বলিলেন, হে আবদুল্লাহ ইবনি উমার! আবু হুরায়রা [রাদি.] কি বলছেন তা কি আপনি শুনেছেন? তিনি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছেনঃ যে ব্যক্তি মৃতের ঘর থেকে রওয়ানা হয়ে তার পিছনে পিছনে যায় এবং তার জানাযা পড়ে…অতঃপর সুফিয়ান হাদিসের অনুরূপ। ইবনি উমার [রাদি.] আয়িশাহর [রাদি.] কাছে লোক পাঠালে তিনি বলিলেন, আবু হুরায়রা ঠিকই বলিয়াছেন।

জানাজার নামাজের কাতার তাকবীর ক্বিরাআত ও দুআ – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৩১৭০. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি নাবী [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছিঃ কোন মুসলিম মারা গেলে তার জানাযায় যদি এমন চল্লিশ ব্যক্তি অংশ গ্রহন করে যারা কখনও আল্লাহর সাথে শরীক করে নাই তবে তার জন্য তাহাদের সুপারিশ মঞ্জুর করা হইবে।

জানাজার নামাজের কাতার তাকবীর ক্বিরাআত ও দুআ – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ৪৬ঃ আগুন সাথে নিয়ে লাশের সাথে যাওয়া

৩১৭১. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ উচ্চস্বরে কান্নাকাটি করে এবং আগুন নিয়ে লাশের অনুসরন করা যাবে না। হারূনের বর্ণনায় রয়েছেঃ লাশের আগে আগেও চলা যাবে না।

দুর্বলঃ ইরওয়া [৭৪২]। হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

অনুচ্ছেদ৪৭ঃ লাশের জন্য [সম্মানার্থে] দাঁড়ানো

৩১৭২. আমির ইবনি রবীআহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

বর্ণিত। নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ যদি তোমরা জানাযা বহন করে নিয়ে যেতে দেখো তাহলে তা তোমাদেরকে অতিক্রম না করা পর্যন্ত অথবা নিচে নামিয়ে না রাখা পর্যন্ত তোমরা দাঁড়িয়ে থাকিবে।

জানাজার নামাজের কাতার তাকবীর ক্বিরাআত ও দুআ – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৩১৭৩. ইবনি আবু সাঈদ আল-খুদরী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে তার পিতার সুত্র হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ তোমরা যখন লাশের অনুসরণ করিবে তখন তা নামিয়ে না রাখা পর্যন্ত বসবে না। আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, সুফিয়ান সাওরী এ হাদিসটি সুহাইলের সুত্রে বর্ণনা করেছেন। তিনি তার পিতা হইতে আবু হুরায়রা [রাদি.] সুত্রে বর্ণনা করেছেন। তাতে রয়েছেঃ লাশ মাটিতে না নামানো পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থাকিবে। আবু মুআবিয়াহও হাদিসটি সুহাইলে সুত্রে বর্ণনা করেছেন। তাতে রয়েছেঃ লাশ ক্ববরে না নামানো পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থাকিবে। আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, সুফিয়ান [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] আবু মুআবিয়াহর তুলনায় অধিক স্মৃতি সম্পন্ন।

জানাজার নামাজের কাতার তাকবীর ক্বিরাআত ও দুআ – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৩১৭৪. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমরা নাবী [সাঃআঃ] এর সাথে ছিলাম। এমন সময় আমাদের সামনে দিয়ে একটি লাশ নিয়ে যাওয়া হলে তিনি উঠে দাঁড়িয়ে গেলেন। অতঃপর আমরা তা বহন করিতে অগ্রসর হয়ে দেখি সেটা এক ইহূদীর লাশ। আমরা বলিলাম, হে আল্লাহর রাসূল! এটা তো ইয়াহুদীর লাশ। তিনি বলিলেনঃ নিশ্চয়ই মৃত্যু একটি ভয়াবহ ঘটনা। কাজেই তোমরা কোন লাশ নিয়ে যেতে দেখলে উঠে দাঁড়াবে।

সহীহঃ ইবনি মাজাহ [১৫৪৩] জানাজার নামাজের কাতার তাকবীর ক্বিরাআত ও দুআ – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৩১৭৫. আলী ইবনি আবু তালিব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ] কোন লাশ নিয়ে যেতে দেখলে প্রথমে দাঁড়াতেন, তারপর বসে পড়তেন।

সহীহঃ ইবনি মাজাহ[১৫৪৪] জানাজার নামাজের কাতার তাকবীর ক্বিরাআত ও দুআ – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৩১৭৬. উবাদাহ ইবনিস সামিত [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কাছ দিয়ে লাশ নিয়ে যাওয়া হলে তিনি দাঁড়িয়ে যেতেন এবং তা ক্ববরে না নামানো পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থাকতেন। একবার এক ইয়াহুদী আলিম তাহাঁর কাছে এসে বললো, আমরাও এরূপ করি। একথা শুনে নাবী [সাঃআঃ] বসে গেলেন এবং বলিলেনঃ তোমরা তাহাদের বিপরীত করার জন্য বসে যাও।

হাসানঃ ইবনি মাজাহ [১৫৪৫]। হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

অনুচ্ছেদ৪৮ঃ বাহনে চড়ে লাশের সাথে যাওয়া

৩১৭৭. সাওবান [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

একদা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর জন্য একটি বাহন আনা হলো। তিনি তখন একটি লাশের সাথে সাথে চলছিলেন। তিনি সওয়ারীতে চড়তে অসম্মতি জানালেন। অতঃপর [লাশ দাফন থেকে] অবসর হলে তাঁকে সওয়ারী দেয়া হলে তিনি তাতে চড়লেন। তাঁকে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলিলেনঃ ফেরেশতারা পায়ে হেঁটে লাশের সাথে যাচ্ছিলেন। তাহাদের হেঁটে যাওয়া অবস্থায় আমার বাহনে চড়ে যাওয়া সংগত মনে করিনি। অতঃপর তারা যখন চলে গেলেন তখন আমি সওয়ারীতে আরোহন করলাম।

সহিহ ঃ আহকাম [৭৫]। জানাজার নামাজের কাতার তাকবীর ক্বিরাআত ও দুআ – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৩১৭৮. সিমাক [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি জাবির ইবনি সামুরাহ [রাদি.]-কে বলিতে শুনেছেন ঃ নাবী [সাঃআঃ] ইবনিদ দাহদাহ্‌ [রাদি.]-এর জানাযা আদায় করিলেন। তাতে আমরাও শরীক ছিলাম। অতঃপর একটি ঘোড়া আনা হলে, তিনি তা বেঁধে রাখলেন। পরে তিনি তাতে আরোহণ করলে ঘোড়াটি দ্রুত যেতে থাকে। তখন আমরাও তাহাঁর চারপাশে সাথে সাথে দৌড়িয়ে চলছিলাম।

সহিহ ঃ তিরমিজি [১০২৪]। জানাজার নামাজের কাতার তাকবীর ক্বিরাআত ও দুআ – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ৪৯ঃ লাশের আগে আগে যাওয়া

৩১৭৯. সালিম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে তাহাঁর পিতার হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি নাবী [সাঃআঃ], আবু বকর ও উমার [রাদি.]-কে লাশের আগে আগে চলতে দেখেছি।

সহিহ ঃ ইবনি মাজাহ [১৪৮২]। জানাজার নামাজের কাতার তাকবীর ক্বিরাআত ও দুআ – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৩১৮০. যিয়াদ ইবনি জুবাইর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] তার পিতা হইতে মুগীরাহ ইবনি শুবাহ [রাদি.] সূত্র হইতে বর্ণীতঃ

যিয়াদ ইবনি জুবাইর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] তার পিতা হইতে মুগীরাহ ইবনি শুবাহ [রাদি.] সূত্রে এ হাদিস বর্ণনা করেছেন। বর্ণনাকারী ইউনুস [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, আমার ধারণা, যিয়াদ পরিবারের সদস্যরা আমাকে জানিয়েছেন, যিয়াদ হাদিসটি নাবী [সাঃআঃ] থেকে বর্ণনা করেছেন। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ বাহনে আরোহী ব্যক্তি লাশের পিছনে পিছনে চলবে এবং পায়ে হাটা ব্যক্তি লাশের পিছনে, সামনে, ডানে, বামে এবং সাথে সাথেও যেতে পারবে। অপূর্ণাঙ্গভাবে প্রসবিত বাচ্চার জানাযা পড়তে হইবে এবং তার পিতা-মাতার জন্য ক্ষমা ও রহমাতের দুআ করিতে হইবে।

সহিহ ঃ ইবনি মাজাহ [১৪৮১, ১৫০৭]। জানাজার নামাজের কাতার তাকবীর ক্বিরাআত ও দুআ – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ৫০ঃ জানাযা দ্রুত বহন করা সম্পর্কে

৩১৮১. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ তোমরা মৃতের দাফন-কাফনের কাজ জলদি করিবে। কেননা সে যদি নেককার হয় তবে তো ভালো। তাহাকে তোমরা তার কল্যাণকর পরিণতির দিকে দ্রুত পৌঁছে দিবে। আর যদি সে খারাপ লোক হয় তবে তো অমঙ্গল। তোমরা তোমাদের ঘার থেকে অমঙ্গলকে দ্রুত নামিয়ে দিলে।

সহিহ ঃ ইবনি মাজাহ [১৫৭৭]। জানাজার নামাজের কাতার তাকবীর ক্বিরাআত ও দুআ – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৩১৮২. উয়াইনাহ ইবনি আবদুর রহমান [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে তার পিতার সূত্র হইতে বর্ণীতঃ

তিনি [পিতা] উসমান ইবনি আবুল আসের [রাদি.] লাশের সঙ্গে ছিলেন। তিনি বলেন, আমরা ধীরে ধীরে হাঁটছিলাম। এমন সময় আবু বকরাহ [রাদি.] আমাদের সাথে মিলিত হলেন। তিনি তার চাবুক উঠিয়ে বলিলেন, তোমরা তো দেখেছো যে, আমরা রসূলুল্লাহর [সাঃআঃ] সাথে [লাশ নিয়ে] দ্রুত চলেছি।

সহিহ। কিন্তু উসমান ইবনি আবুল আস কথাটি শায। মাহফূয হলো আবদুর রহমান ইবনি সামুরাহ। যেমন পরের হাদিসে আসছে। নাসায়ী [১৯১২, ১৯৭৩]। জানাজার নামাজের কাতার তাকবীর ক্বিরাআত ও দুআ – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৩১৮৩. উয়াইনাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

উপরের হাদিসের অনুরূপ বর্ণিত। তবে এতে রয়েছে ঃ এটি ছিলো আবদুর রহমান ইবনি সামুরাহ্র [রাদি.] জানাযার ঘটনা। আবু বকরাহ [রাদি.] দ্রুত তার খচ্চর হাঁকালেন এবং [দ্রুত চলতে] তার চাবুক দিয়ে ইশারা করিলেন।

সহিহ। এটাই মাহফূয। জানাজার নামাজের কাতার তাকবীর ক্বিরাআত ও দুআ – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৩১৮৪. ইবনি মাসউদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমরা আমাদের নাবী [সাঃআঃ] এর কাছে জানাযার সাথে চলার নিয়ম সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেনঃ দৌড়ের চেয়ে কিছুটা কম গতিতে চলবে। যদি নেককার হয় তবে আমরা তাহাকে দ্রুত তার উত্তম পরিণতির দিকে পৌঁছে দিচ্ছি। আর যদি সে এর বিপরীত হয় তবে আগুনের বাসিন্দারা ধবংস হয়েছে। জানাযা [লাশ] আগে আগে থাকিবে আর লোকেরা তার পিছনে চলবে। যে ব্যক্তি লাশের আগে চলে সে যেন জানাযার সাথেই যাচ্ছে না।

আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, বর্ণনাকারী ইয়াহইয়া ইবনি আবদুল্লাহ হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। তিনি হলেন, ইয়াহইয়া আল-জাবির। আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, তিনি কূফার অধিবাসী। আর আবু মাজিদা বাসরাহ্‌র অধিবাসী। আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, এই আবু মাজিদা অজ্ঞাত।

দুর্বল ঃ ইবনি মাজাহ [১৪৮৪], যয়ীফ সুনান আত-তিরমিজি [১৬৯/১০২২], মিশকাত [১৬৬৯], যয়ীফ আল-জামিউস সাগীর [৫০৬৬]। হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

অনুচ্ছেদ৫১ঃ ঈমাম আত্মহত্যাকারীর জানাযা পড়বে না

৩১৮৫. জানির ইবনি সামুরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, এক ব্যক্তি অসুস্থ হলে তার মৃত্যুর সংবাদ ছড়িয়ে পড়লো। তার এক প্রতিবেশি এসে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বললো, সে মৃত্যু বরণ করেছে। তিনি বলিলেনঃ তুমি কিভাবে জানলে? সে বললো, আমি দেখে এসেছি। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেনঃ অবশ্যই সে মারা যায়নি। বর্ণনাকারী বলেন, লোকটি ফিরে গেলো এবং পুনরায় তার মৃত্যুর সংবাদ ছড়িয়ে পড়লো। সে আবার এসে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বললো, সে মৃত্যু বরণ করেছে। নাবী [সাঃআঃ] বলিলেনঃ অবশ্যই সে মারা যায়নি। বর্ণনাকারী বলেন, সে ফিরে গেলো এবং পুনরায় তার মৃত্যু সংবাদ ছড়িয়ে পড়লো। রোগীর স্ত্রী তার প্রতিবেশীকে বললো, রসূলুল্লাহর [সাঃআঃ] নিকট গিয়ে এ খবর দাও। সে বললো, হে আল্লাহ্! এর [রোগীর] প্রতি অভিশাপ বর্ষণ করুন। বর্ণনাকারী বলেন, লোকটি রোগীর কাছে এসে দেখলো, সে তার কাছে রক্ষিত তীরের ফলা দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। সে পুনরায় নাবী [সাঃআঃ]-এর কাছে গিয়ে তাঁকে বললো, সে মৃত্যু বরণ করেছে। তিনি বলিলেনঃ তুমি কিভাবে জানলে? লোকটি বললো, আমি তাহাকে তীর দিয়ে আত্মহত্যা করিতে দেখেছি। তিনি বলিলেনঃ তুমি  দেখেছো? সে বললো, হাঁ। তিনি বলিলেনঃ তাহলে আমি তার জানাযা পড়বো না।

জানাজার নামাজের কাতার তাকবীর ক্বিরাআত ও দুআ – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ৫২ঃ শারঈ হদ্দ কার্যকরে নিহত অপরাধীর জানাযা পড়া সম্পর্কে

৩১৮৬. আবু বারযা আল-আসলামী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] মাইয ইবনি মালিকের জানাযা সালাত পড়েননি এবং পড়তে নিষেধও করেননি।

হাসান সহিহ ঃ ইরওয়া [৭/৩৫৩]। হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ

অনুচ্ছেদ৫৩ঃ মৃত শিশুর জানাযা পড়া

৩১৮৭. আয়িশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] এর পুত্র ইবরাহীম [রাদি.] আঠার মাস বয়সে মারা যান। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তার জানাযা সালাত পড়েননি।

হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

৩১৮৮. ওয়াইল ইবনি দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি আল-বাহীকে বলিতে শুনিয়াছি, নাবী [সাঃআঃ] এর পুত্র ইবরাহীম [রাদি.] মারা গেলে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর বসার জায়গাতে তার জানাযা পড়েন। আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, এ হাদিসটি আমি সাঈদ ইবনি ইয়াকূব আত-তালাকানীর সামনে করলাম। ইবনিল মুবারক [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] আপনাদের কাছে এ হাদিস বর্ণনা করেছেন ইয়াকূব ইবনি কাকার হইতে আত্বা সূত্রেঃ নাবী [সাঃআঃ] তাহাঁর পুত্র ইবরাহীমের জানাযা সালাত আদায় করেছেন। তখন তার বয়স ছিল সত্তর দিন।

হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল মুনকার

অনুচ্ছেদ৫৪ঃ মাসজিদে জানাযার সালাত আদায়

৩১৮৯. আয়িশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহর শপথ! রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] সুহাইল ইবনি বাইদার জানাযা মাসজিদের ভিতরেই আদায় করেছেন।

সহিহ ঃ ইবনি মাজাহ [১৫১৮]। জানাজার নামাজের কাতার তাকবীর ক্বিরাআত ও দুআ – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৩১৯০. আয়িশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহর শপথ! রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বাইদার পুত্র-সুহাইল ও তার ভাইয়ের জানাযা মাসজিদের ভিতরেই আদায় করেছেন।

সহিহ ঃ এর পূর্বেরটি দেখুন। জানাজার নামাজের কাতার তাকবীর ক্বিরাআত ও দুআ – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৩১৯১. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ যে ব্যক্তি মাসজিদের ভিতরে জানাযার সালাত পড়ে তার কোন গুনাহ হইবে না।

হাসান ঃ কিন্তু এ শব্দেঃ [আরবি]। সহিহাহ [২৩৫১]। হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

অনুচ্ছেদ৫৫ঃ সূর্য উদয় সূর্যাস্তের সময় লাশ দাফন করা সম্পর্কে

৩১৯২. উক্ববাহ ইবনি আমির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদেরকে তিন সময়ে সালাত আদায় করিতে এবং আমাদের মৃত ব্যক্তিদের দাফন করিতে নিষেধ করেছেন। [তা হলো] ঃ সূর্য উদয়ের সময় হইতে তা উপরে না উঠা পর্যন্ত ; ঠিক দুপুর বেলায় সূর্য পশ্চিম দিকে না ঢলে পড়া পর্যন্ত এবং সূর্য ডুবে যাওয়ার সময় তা সম্পূর্ণ ডুবে না যাওয়া পর্যন্ত অথবা তিনি অনুরূপ কিছু বলিয়াছেন।

সহিহ ঃ আহকাম [১৩০]। জানাজার নামাজের কাতার তাকবীর ক্বিরাআত ও দুআ – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ৫৬ঃ পুরুষ নারীর লাশ একত্রে উপস্থিত হলে কার লাশ আগে থাকিবে

৩১৯৩. আল-হারিস ইবনি নাওফালের মুক্তদাস আম্মার [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি উম্মু কুলসুম [রাদি.] ও তার পুত্রে জানাযায় উপস্থিত ছিলেন। ছেলেকে ইমামের নিকটে রাখা হলে আমি প্রতিবাদ করলাম। উপস্থিত লোকদের মধ্যে ইবনি আব্বাস, আবু সাঈদ আল-খুদরী, আবু ক্বাতাদাহ ও আবু হুরায়রা [রাদি.]-ও ছিলেন। তারা বলিলেন, এটিই সুন্নাত।

সহিহঃ আহকাম [১০৪]। জানাজার নামাজের কাতার তাকবীর ক্বিরাআত ও দুআ – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ৫৭ঃ জানাযা সলাতে ঈমাম কোথায় দাঁড়াবেন

৩১৯৪. নাফি আবু গালিব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] সূত্র হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, একদা আমি আল-মিওবাদের গলিপথে ছিলাম। এ সময় সেখান দিয়ে একটি জানাযা [লাশ] যাচ্ছিল, তার সাথে অনেক লোক ছিল। তারা বলছিল, এটা আবদুল্লাহ ইবনি উমাইরের লাশ। আমিও লাশের পিছনে চললাম। তখন আমি দেখি, হালকা কাপড় পরিহিত এক ব্যক্তি একটি ছোট্ট মাথাবিশিষ্ট ঘোড়ায় বসা এবং তিনি নিজ মাথায় এক টুকরা কাপড় দিয়ে রোদ থেকে আত্নরক্ষা করছিলেন। আমি জিজ্ঞেস করলাম, এ নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিটি কে? লোকেরা বললো, আনাস ইবনি মালিক [রাদি.]। অতঃপর লাশ নামানো হলে আনাস [রাদি.] দাঁড়িয়ে তার জানাযা পড়ালেন। আমি তার পিছনেই দাঁড়ালাম; তার ও আমার মাঝে কোন প্রতিবন্ধক ছিল না। তিনি লাশের মাথা বরাবর দাঁড়ালেন। তিনি চার তাকবীরে সালাত আদায় করিলেন। জানাযার সালাত দীর্ঘও করেননি, একেবারে সংক্ষিপ্তও করেননি। অতঃপর তিনি বসার জন্য গেলেন। লোকেরা বললো, হে আবু হামযাহ! এটি একজন আনসারী মহিলার লাশ [এর জানাযা পড়ুন]। লাশটি তার নিকটে আনা হলো। সে একটি সবুজ গেলাফে আবৃত ছিলো। তিনি তার নিতম্ব বরাবর দাঁড়ালেন। অতঃপর তিনি পূর্বের পুরুষ লোকটির নিয়মেই তার জানাযা পড়ালেন। এরপর তিনি বসে গেলেন। আলা ইবনি যিয়াদ তাহাকে বলেন, হে আবু হামযাহ! রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কি আপনার আদায়কৃত সলাতের নিয়মেই মৃতের জানাযা পড়তেন? তিনিও কি মহিলাদের জানাযায় চার তাকবীর বলিতেন এবং পুরুষের মাথা বরাবর এবং মহিলাদের কোমর বরাবর দাঁড়াতেন? তিনি বলিলেন, হাঁ।

আলা পুনরায় জিজ্ঞেস করেন, হে আবু হামযাহ! আপনি কি রসূলুল্লাহর [সাঃআঃ] সাথে কোন যুদ্ধে যোগদান করেছেন? তিনি বলিলেন, হাঁ আমি তাহাঁর সাথে হুনাইনের যুদ্ধে যোগদান করেছি। মুশরিকরা আমাদের বিরুদ্ধে রওয়ানা হলো। তারা আমাদের উপর কঠিন আক্রমণ করলো। এমনকি আমাদের লোকদের পৃষ্ঠপ্রদর্শন করে পালাতে দেখলাম। শত্রুবাহিনীর এক লোক আমাদের উপর আক্রমণ চালাচ্ছিল। সে তরবারির আঘাতে আমাদের ক্ষত-বিক্ষত করছিল। পরিশেষে আল্লাহ তাহাদের পরাস্ত করিলেন। তিনি তাহাদের নিয়ে আসেন এবং তারা এসে রসূলুল্লাহর [সাঃআঃ] কাছে ইসলাম গ্রহণের বাইআত নিলো।

নাবী [সাঃআঃ] এর সাহাবীদের একজন বলিলেন, আমার একটি মানত আছে। তা হলো, সেদিন যে লোকটি আমাদের আহত করছিল, আল্লাহ যদি তাহাকে আমাদের করায়ত্ত করেন তবে আমি তাহাকে হত্যা করবো। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] নীরব থাকলেন। লোকটিকে উপস্থিত করা হলে সে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে দেখে বললো, হে আল্লাহর রাসূল! আমি আল্লাহর নিকট তওবা করেছি। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তার বাইআত নেয়া থেকে বিরত থাকলেন এবং ঐ সাহাবীকে তার মানত পূর্ণ করার সুযোগ দিলেন। বর্ণনাকারী বলেন, সাহাবী লোকটিকে মারার জন্য রসূলুল্লাহর [সাঃআঃ] নির্দেশের অপেক্ষায় ছিলেন। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যখন দেখলেন, সাহাবী কিছুই করছেন না, তখন তিনি লোকটির বাইআত নিলেন। সেই সাহাবী বলিলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমার মানত কিভাবে পূর্ণ হইবে? তিনি বলিলেনঃআমি তো তোমার মানত পূর্ণ করিতে তার বাইআত গ্রহণে বিরত ছিলাম। তিনি বলিলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি আমাকে ইশারা করেননি কেন? নাবী [সাঃআঃ] বলিলেনঃকোন নাবীর জন্য ইশারা করা শোভনীয় নয়।

আবু গালিব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, মহিলার কোমর বরাবর আনাসের [রাদি.] দাঁড়ানোর বিষয়ে আমি লোকদের জিজ্ঞেস করলে তারা আমাকে বলিলেন, প্রথম যুগে এরূপই করা হতো। কেননা তখন কোন খাটিয়ার ব্যবস্থা ছিল না। সুতরাং ঈমাম মহিলাদের কোমর বরাবর দাঁড়াতেন, যেন লোকদের ও লাশের মাঝে আড়াল সৃষ্টি হয়।

সহিহ ঃ কিন্তু এ কথাটি বাদেঃ [আরবি]। কেননা এটি অজ্ঞাত ব্যক্তিদের ভিন্ন রায়। আহকাম [১০৮-১০৯]। জানাজার নামাজের কাতার তাকবীর ক্বিরাআত ও দুআ – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৩১৯৫. সামুরাহ ইবনি জুনদুব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি নাবী [সাঃআঃ] এর পিছনে এক মহিলার জানাযা পড়েছি। তিনি নিফাসগ্রস্থ অবস্থায় মারা যান। তিনি [সাঃআঃ] জানাযায় তার দেহের মাঝ বরাবর দাঁড়িয়েছিলেন।

সহিহ ঃ আহকাম [১১০]। জানাজার নামাজের কাতার তাকবীর ক্বিরাআত ও দুআ – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ৫৮ঃ জানাযার সলাতে তাকবীর সংখ্যা

৩১৯৬. আশ-শাবী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] একটি নতুন কবর এর পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন সাহাবীগণ কাতারবন্দী হয়ে দাঁড়ালে তিনি [সাঃআঃ] চার তাকবীরে জানাযার সালাত আদায় করিলেন। আমি [আবু ইসহাক্ব] আশ-শাবীকে জিজ্ঞেস করলাম, এ হাদিস আপনাকে কে বর্ণনা করেছে? তিনি বলিলেন, একজন নির্ভরযোগ্য ব্যক্তি যার সাথে আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস [রাদি.] সাক্ষাত করেছেন।

সহিহ ঃ আহকাম [৮৭]। জানাজার নামাজের কাতার তাকবীর ক্বিরাআত ও দুআ – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৩১৯৭. ইবনি আবু লাইলাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

যায়িদ ইবনি আরক্বাম [রাদি.] আমাদের জানাযার সলাতে চার তাকবীর বলিতেন। একবার এক জানাযা সলাতে তিনি পাঁচ তাকবীর দিলেন। আমি এ বিষয়ে তাহাকে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলিলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] পাঁচ তাকবীরও দিতেন। আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, আমি ইবনিল মুসান্নার হাদিসটি ভালভাবে স্মরণ রেখেছি।

সহিহ ঃ আহকাম [১১২]। জানাজার নামাজের কাতার তাকবীর ক্বিরাআত ও দুআ – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ৫৯ঃ জানাযার সলাতে ক্বিরাআত পাঠ

৩১৯৮. ত্বালহা ইবনি আবদুল্লাহ ইবনি আওফ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি ইবনি আব্বাসের [রাদি.] সাথে জানাযার সালাত পড়েছি। তিনি সূরাহ আল-ফাতিহা পাঠ করিলেন। তিনি বলিলেন, ফাতিহা পড়া সুন্নাত।

সহিহঃ আহকাম [১১৯]। জানাজার নামাজের কাতার তাকবীর ক্বিরাআত ও দুআ – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ৬০ঃ মৃতের জন্য দুআ করা

৩১৯৯. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনিয়াছি ঃ তোমরা কোন মৃতের জানাযা পড়লে তার জন্য নিষ্ঠার সাথে দুআ করিবে।

হাসান ঃ আহকাম [১২৩]। হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

৩২০০. আলী ইবনি শাম্মাখ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, একদা আমি মারওয়ানের নিকট উপস্থিত ছিলাম। তখন তিনি আবু হুরায়রা [রাদি.]-কে জিজ্ঞেস করিলেন, মৃতের জানাযায় আপনি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে কোন দুআ পড়তে শুনেছেন? তিনি বলিলেন, আপনি কি এ কথাই আমাকে জিজ্ঞেস করছেন? মারওয়ান বলিলেন, হাঁ। ইবনি শাম্মাখ বলেন, ইতিপূর্বে তাহাদের উভয়ের মধ্যে এ বিষয়ে কথোপকথন হয়। আবু হুরায়রা বলিলেন, তিনি এ দুআ পাঠ করিতেন ঃ

اللَّهُمَّ أَنْتَ رَبُّهَا وَأَنْتَ خَلَقْتَهَا وَأَنْتَ هَدَيْتَهَا لِلإِسْلاَمِ وَأَنْتَ قَبَضْتَ رُوحَهَا وَأَنْتَ أَعْلَمُ بِسِرِّهَا وَعَلاَنِيَتِهَا جِئْنَاكَ شُفَعَاءَ فَاغْفِرْ لَهُ

আল্লাহুম্মা আন্তা রব্বুহা ওয়া আন্তা খলাকতাহা ওয়া আন্তা হাদাইতাহা লি ইসলামি ওয়া আংতা কবাদতা রুওহাহা ওয়া আন্তা আ,লামু বি সাররিহা ওয়া আলা নিয়াতাহা জি,নাকা সুফাআআ ফাগফেরলি। “হে আল্লাহ! তুমিই তার প্রভু, তুমি তাহাকে সৃষ্টি করেছ, তুমি তাহাকে ইসলামের পথে হিদায়াত দিয়েছ, তুমি তার রূহ ক্ববয করেছ, তুমি তার গোপন-প্রকাশ্য সবকিছুই অবহিত। আমরা তোমার কাছে তার সুপারিশকারী হিসেবে এসেছি, তুমি তাহাকে ক্ষমা করে দাও।”

সনদ দুর্বল ঃ মিশকাত [১৬৮৮]। হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৩২০১. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] জানাযার সলাতে এ দুআ পড়তেন ঃ

 اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِحَيِّنَا وَمَيِّتِنَا وَصَغِيرِنَا وَكَبِيرِنَا وَذَكَرِنَا وَأُنْثَانَا وَشَاهِدِنَا وَغَائِبِنَا اللَّهُمَّ مَنْ أَحْيَيْتَهُ مِنَّا فَأَحْيِهِ عَلَى الإِيمَانِ وَمَنْ تَوَفَّيْتَهُ مِنَّا فَتَوَفَّهُ عَلَى الإِسْلاَمِ اللَّهُمَّ لاَ تَحْرِمْنَا أَجْرَهُ وَلاَ تُضِلَّنَا بَعْدَهُ

“হে আল্লাহ! আমাদের জীবিত-মৃত, ছোট-বড়, পুরুষ-নারী, এবং উপস্থিত-অনুপস্থিত সকলকে ক্ষমা করে দিন। হে আল্লাহ! আমাদের মধ্যে আপনি যাকে জীবিত রাখবেন তাহাকে ইসলামের উপর জীবিত রাখেন এবং আমাদের মধ্যে যাকে মৃত্যু দিবেন তাহাকে ঈমানের সাথে মৃত্যু দিন। হে আল্লাহ! এর সওয়াব থেকে আমাদেরকে বঞ্চিত করবেন না এবং এরপর আমাদেরকে পথভ্রষ্ট করবেন না।”

সহিহ ঃ আহকাম [১২৪]। জানাজার নামাজের কাতার তাকবীর ক্বিরাআত ও দুআ – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৩২০২. ওয়াসিলাহ ইবনিল আসকা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদেরকে সাথে নিয়ে মুসলিমদের এক লোকের জানাযার সালাত আদায় করিলেন। তখন আমি তাঁকে এ দুআ করিতে শুনিয়াছিঃ

اللَّهُمَّ إِنَّ فُلاَنَ بْنَ فُلاَنٍ فِي ذِمَّتِكَ فَقِهِ فِتْنَةَ الْقَبْرِ

আল্লা-হুম্মা ইন্না ফুলানাবনা ফুলা-নিন ফী যিম্মাতিকা, ফাকিহি মিন ফিতনাতিল ক্বাবরি , “ হে আল্লাহ! অমুকের পুত্র অমুক আপনার দায়িত্বে থাকলো, আপনি তাহাকে কবর এর  ফিতনাহ ও রক্ষা করুন।”

আবদুর রহমানের বর্ণনায় রয়েছেঃ “এ ব্যক্তি আপনার যিম্মায় ও প্রতিবেশি থাকলো। সুতরাং আপনি তাহাকে কবর এর  বিপদ ও দোযখের আযাব থেকে রক্ষা করুন। আপনি তো প্রতিশ্রুতি রক্ষাকারী ও সত্যের অধিকারী। হে আল্লাহ! আপনি তাহাকে ক্ষমা করে দিন এবং তার প্রতি অনুগ্রহ করুন। কেননা আপনিই একমাত্র ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু। ”

সহিহ ঃ আহকাম [১২৫]। জানাজার নামাজের কাতার তাকবীর ক্বিরাআত ও দুআ – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-৬১ঃ ক্ববরের উপর জানাযা পড়া

৩২০৩. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

একটি কালো মহিলা বা পুরুষ মাসজিদে নাববীতে ঝাড়ু দিতো। একদিন তাহাকে দেখিতে না পেয়ে নাবী [সাঃআঃ] তার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে বলা হয় যে, সে মৃত্যু বরণ করেছে। তিনি [সাঃআঃ] বলিলেনঃতোমরা আমাকে জানালে না কেন? তিনি বলিলেনঃআমাকে তার কবর দেখিয়ে দাও। তারা তাঁকে কবর দেখিয়ে দিলে তিনি কবর এর  পাশে দাঁড়িয়ে জানাযা আদায় করিলেন।

সহিহ ঃ আহকাম [৮৭]। হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-৬২ঃ মুশরিকদের দেশে মৃত মুসলিমের জানাযা

৩২০৪, আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] লোকদেরকে নাজ্জাশীর মৃত্যুর দিন তার মৃত্যু সংবাদ জানালেন। তিনি তাহাদেরকে নিয়ে ঈদের মাঠে গিয়ে সেখানে সারিবদ্ধ হয়ে চার তাকবীরে জানাযা সালাত পড়লেন।

হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৩২০৫. আবু বুরদাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে তার পিতার সূত্র হইতে বর্ণীতঃ

তিনি [পিতা] বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদেরকে নাজ্জাশীর দেশে হিজরাত করিতে নির্দেশ দেন। অতঃপর বর্ণবাকারী পরবর্তী ঘটনা বর্ণনা করেন । নাজ্জাশী বলিলেন, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, তিনি আল্লাহর রাসূল। তিনি সেই রাসূল, যাঁর সম্পর্কে ঈসা ইবনি মারইয়াম [আঃ] সুসংবাদ প্রদান করেছেন। আমি যদি রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে না থাকতাম তবে আমি তাহাঁর কাছে গিয়ে তাহাঁর জুতা জোড়া বহন করতাম।

সনদ দুর্বল। হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস


Posted

in

by

Comments

Leave a Reply