জইফ মিশকাত শরীফ – ঈমান অধ্যায়
জইফ মিশকাত শরীফ – ঈমান অধ্যায় >> জইফ মিশকাত শরীফ এর মুল সূচীপত্র দেখুন
১ ঈমান
- পরিচ্ছেদঃ ঈমান
- পরিচ্ছেদঃ কাবীরা গোনাহ ও মুনাফিকীর নিদর্শন
- পরিচ্ছেদঃ কুমন্ত্রণা
- পরিচ্ছেদঃ তাক্বদীরে বিশ্বাস
পরিচ্ছেদঃ ঈমান
১. আবুযার [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, সর্বোত্তম কাজ হল আল্লাহর জন্য ভালবাসা এবং আল্লাহর জন্য শক্রতা করা।”
তাহক্বীক্ব : হাদীছটির সনদ জইফ। ইয়াযীদ ইবনি আবী যিয়াদ নামের ব্যক্তি জইফ। এছাড়া আরেকজন রাবী আছে, তার নাম উল্লেখ করা হয়নি, সে অপরিচিত। জইফ মিশকাত শরীফ -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ দুর্বল হাদীস
২. মুআয ইবনি জাবাল [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
রসূল [সাঃআঃ] আমাকে বলেছেন, জান্নাতের চাবি হল, লা ইলা-হা ইল্লাল্লাহু বলে সাক্ষ্য প্ৰদান করা।
তাহক্বীক্ব : জইফ। উক্ত হাদীছের সনদে শাহর ইবনি হাওশাব আছে। সে মুআয [রাদি.] থেকে হাদীছ শ্রবণ করেনি। এছাড়াও ইসমাঈল ইবনি আইয়াশ নামের রাবীও জইফ। জইফ মিশকাত শরীফ -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ দুর্বল হাদীস
৩. ওছমান [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
নাবী করীম [সাঃআঃ] যখন মারা গেলেন তখন তাহাঁর ছাহাবীদের অনেকে চিন্তিত হয়ে পড়লেন। এমনকি তাহাদের কারো মনে দ্বিধাও সৃষ্টি হল। ওছমান [রাদি.] বলেন, আমিও তাহাদের অন্যতম। এমন সময় ওমর [রাদি.] আমার নিকট দিয়ে গেলেন এবং আমাকে সালাম দিলেন। কিন্তু আমি বুঝতে পারলাম না। ওমর [রাদি.] আবুবকর [রাদি.]-এর নিকট গিয়ে অভিযোগ করিলেন। অতঃপর উভয়ে আমার নিকট আসলেন এবং আমাকে সালাম করিলেন। অতঃপর আবুবকর আমাকে জিজ্ঞেস করিলেন, ওছমান আপনার কী হয়েছে? আপনি কেন আপনার ভাই ওমরের সালামের জবাব দেননি? আমি বললাম, আমি তো এরূপ করিনি। ওমর [রাদি.] বলিলেন, আল্লাহর কসম! আপনি এরূপ করিয়াছেন। ওছমান [রাদি.] বলিলেন, আল্লাহর কসম! আমি বুঝতে পারিনি যে আপনি এই দিক দিয়ে গেছেন বা আমাকে সালাম দিয়েছেন। এরপর আবুবকর [রাদি.] বলিলেন, ওছমান ঠিকই বলেছেন। অতঃপর আবুবকর [রাদি.] বলিলেন, নিশ্চয় আপনাকে কোন দুশ্চিন্তা এ থেকে বিরত রেখেছিল। আমি বললাম, জি। তিনি আবার জিজ্ঞেস করিলেন, সেটা কী? আমি বললাম, আল্লাহ তাআলা তার নাবীকে তুলে নিলেন। অথচ আমরা তাকে এই বিষয়টি থেকে বাঁচার উপায় জানতে পারলাম না। আবুবকর [রাদি.] বলিলেন, দুশ্চিন্তার কারণ নেই। আমি তাঁকে এ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেছিলাম। একথা শুনে আমি তার দিকে অগ্রসর হলাম এবং বললাম, আমার পিতা-মাতা আপনার জন্য কুরবান হোক! আপনিই এর জন্য উপযুক্ত ব্যক্তি। আবুবকর [রাদি.] বলেন, আমি একদা রসূল [সাঃআঃ]-কে জিজ্ঞেস করলাম এ থেকে বাঁচার উপায় কী? তিনি বলিলেন, যে ব্যক্তি ঐ কালেমা গ্রহণ করিল। যা আমি আমার চাচার কাছে পেশ করেছিলাম; আর তিনি তা প্ৰত্যাখ্যান করেছিলেন। ঐটাই নাজাতের পথ।
তাহক্বীক্ব : জইফ। জইফ মিশকাত শরীফ -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ দুর্বল হাদীস
৪. মুআয বিন জাবাল [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি একদা নাবী করীম [সাঃআঃ]-কে জিজ্ঞেস করেন, কোন ঈমান সর্বোত্তম? উত্তরে তিনি বলিলেন, কাউকে মিত্র ভাবলে আল্লাহর জন্যই ভাববে। আর কাউকে শক্ৰ ভাবলে আল্লাহর সন্তষ্টির জন্যই ভাববে। আর নিজের জিহবাকে আল্লাহর যিকিরে ব্যস্ত রাখবে। মুআয বলিলেন, হে আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]! সেটা কী। তিনি বলিলেন, অন্যের জন্য তাই পছন্দ করিবে যা তোমার জন্য পছন্দ কর। এভাবে নিজের জন্য যা অছসন্দ করিবে অন্যের জন্যও তা অছসন্দ করিবে।
তাহক্বীক্ব : জইফ। এর সনদে যুবান ইবনি ফায়েদ ও ইবনি লাহিয়া নামে দুইজন দুর্বল রাবী আছে। জইফ মিশকাত শরীফ -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ দুর্বল হাদীস
পরিচ্ছেদঃ কাবীরা গোনাহ ও মুনাফিকীর নিদর্শন
৫. ছাফওয়ান ইবনি আসসাল [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
একদিন এক ইহুদী তার সাথীকে বলিল, এই নাবীর কাছে আমাকে নিয়ে চল। তার সাথী বলিল, তাকে নাবী বল না। কারণ তোমার মুখে এই কথা শুনলে সে গর্বে আটখানা হয়ে যাবে। অতঃপর তারা উভয়ে রসূল [সাঃআঃ]-এর নিকট আসল এবং তাঁকে মূসা [আঃ]-এর নয়টি মুজিযা সম্পর্কে প্রশ্ন করিল। তিনি উত্তরে বলিলেন, [১] আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করিবে না। [২] চুরি করিবে না [৩] ব্যভিচার করিবে না [৪] অন্যায়ভাবে কাউকে হত্যা করিবে না- যা আল্লাহ হারাম করিয়াছেন [৫] কোন নিরপরাধ ব্যক্তিকে কোন ক্ষমতাবান হাকিমের কাছে নিয়ে যাবে না- যাতে তিনি তাকে প্রাণদণ্ডে দণ্ডিত করেন [৬] জাদু করিবে না [৭] সূদ খাবে না [৮] কোন সতী-সাধ্বী নারীকে ব্যভিচারের অপবাদ দিবে না [৯] জিহাদকালে পলায়ন করিবে না এবং বিশেষ করে তোমরা ইহুদীদের শনিবারের নিয়ম পালন করিবে না। ছাফওয়ান বলেন, তারা উভয়ে রসূল [সাঃআঃ]-এর পায়ে চুম্বন করিল এবং বলিল, আমরা সাক্ষ্য দিচ্ছি যে আপনি সত্য নাবী। রসূল [সাঃআঃ] বলিলেন, তাহলে আমার অনুসরণে তোমাদের অন্তরায় কোথায়? তারা বলিল, দাউদ [আঃ] আল্লাহর নিকট দুআ করেছিলেন যে, নাবী যেন বরাবর তাহাঁর বংশের মধ্যেই হন। সুতরাং আমাদের আশংকা হয় আমরা আপনার অনুসরণ করলে ইহুদীরা আমাদেরকে হত্যা করিবে।”
তাহক্বীক্ব : জইফ। উক্ত হাদীছের সনদে আব্দুল্লাহ ইবনি সালামা নামে দুর্বল রাবী আছে। ঈমাম বোখারী, ইবনি কাছীর তাকে জইফ বলেছেন। জইফ মিশকাত শরীফ -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ দুর্বল হাদীস
৬, আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
রসূল [সাঃআঃ] বলেছেন, তিনটি বিষয় ঈমানের বুনিয়াদের অন্তর্ভুক্ত। [১] যে ব্যক্তি লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ কালেমা পড়বে, তার প্রতি আক্রমণ করা হইতে বিরত থাকিবে; কোন গুনাহর দরুন তাকে কাফের মনে করিবে না এবং কোন আমলের দরুন তাকে ইসলাম হইতে খারিজ করে দিবে না। [২] জিহাদ- যেদিন হইতে আল্লাহ আমাকে জিহাদের হুকুম দিয়েছেন সেদিন হইতে এই উম্মতের শেষ যামানার লোকেরা দাজালের সাথে জিহাদ করিতে থাকিবে, কোন অত্যাচারী শাসকের অত্যাচার বা কোন সুবিচারকের সুবিচার জিহাদকে বাতিল করিতে পারবে না এবং [৩] তাকদীরে বিশ্বাস করা।
তাহক্বীক্ব : জইফ। ইয়াযীদ ইবনি আবী নুশবাহ নামে একজন জইফ রাবী আছে। জইফ মিশকাত শরীফ -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ দুর্বল হাদীস
পরিচ্ছেদঃ কুমন্ত্রণা
৭. ইবনি মাসউদ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
রসূল [সাঃআঃ] বলেছেন, মানুষের সাথে শয়তানের একটি ছোঁয়া আছে এবং ফেরেশতারও একটি ছোঁয়া আছে। শয়তানের ছোঁয়া হল অমঙ্গলের ভীতি প্ৰর্দশন এবং সত্যকে মিথ্যা প্ৰতিপন্ন করা। পক্ষান্তরে ফেরেশতার ছোঁয়া হল মঙ্গলের সুসংবাদ প্ৰদান এবং সত্যের প্রতি সমর্থন জ্ঞাপন। সুতরাং যে ব্যক্তি দ্বিতীয় অবস্থা গ্ৰহণ করিবে সে যেন মনে করে এটা আল্লাহর পক্ষ হইতে এবং আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করে। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি অপর অবস্থা অনুভব করিবে, সে যেন শয়তান হইতে আল্লাহর নিকট পরিত্রাণ চায়।
তাহক্বীক্ব : জইফ। জইফ মিশকাত শরীফ -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ দুর্বল হাদীস
৮. কাসেম ইবনি মুহাম্মাদ হইতে বর্ণিতঃ
এক ব্যক্তি তাকে জিজ্ঞেস করিল, ছালাতের মধ্যে আমার মনে সন্দেহ সৃষ্টি হয়। এটা আমার পক্ষে বড় কষ্টদায়ক। কাসেম উত্তরে বলিলেন, তুমি তোমার ছালাত পূর্ণ করিতে থাক। কারণ ঐটা তোমার থেকে দূর হইবে না যতক্ষণ না ছালাত পূর্ণ কর এবং বল যে আমি ছালাত পূর্ণ করিনি।
তাহক্বীক : জইফ। মুয়াত্ত্বা মালেক হাদীস নং/৩৩২; মিশকাত হাদীস নং/৭৮; বঙ্গানুবাদ মিশকাক হাদীস নং/৭২। জইফ মিশকাত শরীফ -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ দুর্বল হাদীস
পরিচ্ছেদঃ তাক্বদীরে বিশ্বাস
৯. মুসলিম ইবনি ইয়াসার [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
ওমর ইবনিল খাত্ত্বাব [রাদি.] কে কুরআনের এই আয়াত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হল, যখন তোমার প্রভু আদম সন্তানদের পিঠ হইতে তাহাদের সমস্ত সন্তানকে বের করিলেন। ওমর [রাদি.] বলেন, আমি শুনিয়াছি, রসূল [সাঃআঃ] কে এ সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি উত্তরে বলেন, আল্লাহ্ তাআলা আদম [আঃ] কে সৃষ্টি করিলেন। অতঃপর আপন ডান হাত দ্বারা তাহাঁর পিঠে বুলালেন এবং সেখান থেকে একদল সন্তান বের করিলেন। অতঃপর বলিলেন, এদেরকে আমি জান্নাতের জন্য সৃষ্টি করেছি, জান্নাতের কাজই তারা করিবে। এক সাহাবী প্রশ্ন করিলেন, হে আল্লাহ্র রসূল [সাঃআঃ] তাহলে আমল কেমন হইবে? রসূল [সাঃআঃ] বলিলেন, আল্লাহ তাআলা যখন কোন বান্দাকে জান্নাতের জন্য সৃষ্টি করেন তখন তার দ্বরা জান্নাতের কাজই করিয়ে নেন। অবশেষে জান্নাতীদের কোন কাজ করে মৃত্যুবরণ করে। আর আল্লাহ তায়ালা এর দ্বারা তাকে জান্নাতে প্রবেশ করান। অনুরূপভাবে আল্লাহ যখন কোন বান্দাকে জাহান্নামের জন্য সৃষ্টি করেন, তার দ্বারা জাহান্নামের কাজই করিয়ে নেন। অবশেষে সে জাহান্নামীদের কোন কাজ করেই মৃত্যু বরণ করে এবং আল্লাহ তাকে জাহান্নামে প্রবেশ করান।
তাহক্বীক্ব : জইফ। তিরমিজি হাদীস নং/৩০৭৫; আবু দাউদ হাদীস নং/৪৭০৩; মালেক; মিশকাত হাদীস নং/৯৫; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হাদীস নং/৮৯, ১/৭৬ পৃ:। জইফ মিশকাত শরীফ -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ দুর্বল হাদীস
১০. আবু খুযামা হইতে বর্ণিতঃ
আবু খুযামা তার পিতা হইতে বর্ণনা করেন, আমি একদিন রসূল [সাঃআঃ] কে জিজ্ঞেস বরলাম, হে আল্লাহ্র রসূল [সাঃআঃ]! আমরা যে মন্ত্র পাঠ করে থাকি এবং কোন ঔষধি দ্বারা ঔষধ করে থাকি অথবা কোন উপায় দ্বারা আত্মরক্ষা করার চেষ্টা করি, তা কি তাক্বদীরের কিছু প্রতিরোধ করিতে পারে? তিনি বলিলেন, তোমাদের এ সকল চেষ্টা তাক্বদীরের অন্তর্ভুক্ত।
তাহক্বীক : জইফ। আহমাদ হাদীস নং/২০৬৫; জইফ তিরমিজি হাদীস নং/২১৪৮; জইফ ইবনি মাজাহ হাদীস নং/৩৪৩৭; মিশকাত হাদীস নং/৯৭; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হাদীস নং/৯১, ১/৭৮ পৃ:। জইফ মিশকাত শরীফ -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ দুর্বল হাদীস
১১. আব্দুল্লাহ ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
রসূল [সাঃআঃ] বলেছেন, আমার উম্মতের মধ্যে দুই রকমের লোক রয়েছে, তাহাদের জন্য ইসলামে কোন অংশ নেই; তারা হল মুর্জিয়া ও ক্বাদারিয়া।
তাহক্বীক : জইফ। তিরমিজি হাদীস নং/২১৪৯; ইবনি মাজাহ হাদীস নং/৭৩; মিশকাত হাদীস নং/১০৫; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হাদীস নং/৯৮, উক্ত মর্মে সহীহ হাদীস বর্ণিত হয়েছে। জইফ মিশকাত শরীফ -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ দুর্বল হাদীস
১২. ওমর [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
রসূল [সাঃআঃ] বলেছেন, তোমরা ক্বাদারিয়াদের সাথে উঠা-বসা করা না এবং তাহাদেরকে বিচারক নিযুক্ত কর না।
তাহক্বীক্ব : জইফ। আবুদাউদ হাদীস নং/৪৭১০, ৪৭২০; মিশকাত হাদীস নং/১০৮; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হাদীস নং/১০১, ১/৮১ পৃঃ। জইফ মিশকাত শরীফ -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ দুর্বল হাদীস
১৩. আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
রসূল [সাঃআঃ] বলেছেন, ছয় ব্যক্তির উপর আমি অভিশম্পাত করি এবং আল্লাহও তাহাদের প্রতি লানত করেন। আর প্রত্যেক নাবীর দুআই কবুল করা হয়। [১] যে ব্যক্তি আল্লাহর কিতাবে কিছু অতিরিক্ত যোগ করে [২] যে ব্যক্তি তাক্বদীরে অবিশ্বাস করে [৩] যে ব্যক্তি এই উদ্দেশ্যে জোর করে ক্ষমতা দখল করে যে, আল্লাহ যাকে অপমান করিয়াছেন তাকে সে যেন সম্মান দান করিতে পারে এবং আল্লাহ যাকে সম্মান দান করিয়াছেন তাকে যেন অপমান করিতে পারে [৪] যে ব্যক্তি আল্লাহর ঘর মক্কায় এমন কাজ করে, যা তথায় করা আল্লাহ হারাম করিয়াছেন। [৫] আমার বংশে যে ব্যক্তি আল্লাহ তাআলার করা কোন হারাম কাজকে হালাল করে এবং [৬] যে ব্যক্তি আমার সুন্নাত পরিত্যাগ করে।
তাহক্বীক্ব : জইফ। তিরমিজি হাদীস নং/২১৫৪; মিশকাত হাদীস নং/১০৯; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হাদীস নং/১০২, ১/৮২ পৃঃ। জইফ মিশকাত শরীফ -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ দুর্বল হাদীস
১৪. আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
আমি রসূল [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনিয়াছি, যে তাক্বদীর সম্পর্কে কিছু আলোচনা করিবে, কিয়ামতের দিনে তাকে সে সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হইবে। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি সে সম্পর্কে আলোচনা করিবে না। তাকে প্রশ্নও করা হইবে না।
তাহক্বীক্ব : জইফ। ইবনি মাজাহ হাদীস নং/৮৪; মিশকাত হাদীস নং/১১৫; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হাদীস নং/১০৭, ১/৮৩ পৃঃ। জইফ মিশকাত শরীফ -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ দুর্বল হাদীস
১৫. আলী [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
একদিন খাদীজা [রাদি.] জাহেলী যুগে তার যে দুটি সন্তান মৃত্যুবরণ করেছিল তাহাদের সম্পর্কে নাবী করীম [সাঃআঃ]-কে জিজ্ঞেস করিলেন, উত্তরে তিনি বলিলেন, তারা উভয়ে জাহান্নামে রহিয়াছে। আলী [রাদি.] বলেন, রসূল [সাঃআঃ] যখন খাদীজার চেহারায় অসন্তোষের ভাব লক্ষ্য করিলেন, তখন তিনি বলিলেন, তুমি যদি জাহান্নামে তাহাদের অবস্থান দেখিতে, তবে তুমিও তাহাদেরকে ঘৃণা করিতে। অতঃপর খাদীজা [রাদি.] জিজ্ঞেস করিলেন, আপনার পক্ষের আমার যে সন্তান মারা গেছে তার অবস্থা কী? তিনি বলিলেন, সে জান্নাতে আছে। অতঃপর রসূল [সাঃআঃ] বলিলেন, মুমিনগণ ও তাহাদের সন্তানগণ জান্নাতে থাকিবে এবং কাফের, মুশরিক ও তাহাদের সন্তানরা থাকিবে জাহান্নামে। অতঃপর রসূল [সাঃআঃ] কুরআনের এই আয়াত পাঠ করিলেন, যারা ঈমান এনেছে এবং তাহাদের সন্তানরা তাহাদের অনুসরণ করিবে।
তাহক্বীক্ব : জইফ, মুনকার। এর সনদে মুহাম্মাদ বিন ওছমান নামে একজন অপরিচিত রাবী আছে। আহমাদ হাদীস নং/১১৩১; মিশকাত হাদীস নং/১১৭; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হাদীস নং/১১০, ১/৮৫ পৃঃ। জইফ মিশকাত শরীফ -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ দুর্বল হাদীস
১৬. উবাই ইবনি কাব [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
উবাই ইবনি কাব [রাদি.] নিম্নোক্ত আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন, যখন তোমার প্রতিপালক আদম সন্তানদের পিঠ হইতে তাহাদের সন্তানদের বের করিলেন অর্থাৎ আল্লাহ তাআলা তাহাদের একত্রিত করিলেন এবং তাহাদেরকে বিভিন্নরূপে গঠন করিতে চাইলেন। অতঃপর তাহাদের আকৃতি দান করিলেন এবং কথা বলার শক্তি দিলেন। ফলে তারা কথা বলিতে পারল । অতঃপর আল্লাহ তাআলা তাহাদের নিকট হইতে প্ৰতিজ্ঞা গ্ৰহণ করিলেন এবং তাহাদেরকে নিজেদের সম্পর্কে সাক্ষী করিলেন। তাহাদেরকে জিজ্ঞেস করিলেন, আমি কি তোমাদের প্রতিপালক নই? তারা বলিল, হ্যাঁ; অতঃপর আল্লাহ তাআলা বলিলেন, আমি তোমাদের এ কথার উপর সাত আসমান ও সাত যমীনকে সাক্ষী করছি এবং তোমাদের উপর তোমাদের পিতাকেও সাক্ষী করছি; তোমরা যেন কাল কিয়ামতের দিন এ কথা বলিতে না পার যে, এটা আমরা জানতাম না। তোমরা জেনে রাখা যে, আমি ব্যতীত কোন মাবূদ নেই এবং আমি ব্যতীত তোমাদের কোন প্রতিপালক নেই। সুতরাং তোমরা আমার সাথে কাউকে শরীক কর না। অতঃপর আমি তোমাদের প্রতি আমার রসূল গণকে পাঠাব, তাঁরা তোমাদেরকে আমার এই অঙ্গীকার স্মরণ করিয়ে দিবেন। এতদ্ব্যতীত আমি তোমাদের প্রতি আমার কিতাব নাযিল করব। তখন তারা বলিল, আমরা ঘোষণা করছি যে, নিশ্চয় আপনি আমাদের প্রতিপালক ও আমাদের মাবূদ, আপনি ব্যতীত আমাদের কোন প্রতিপালক নেই, আপনি ব্যতীত আমাদের কোন মাবূদ নেই। তারা এটা স্বীকার করিল। অতঃপর আদম [আঃ]-কে তাহাদের উপর উঠিয়ে ধরা হল, তিনি সকলকে দেখিতে লাগলেন। তিনি দেখলেন তার মধ্যে ধনী-দরিদ্র, সুন্দর-অসুন্দর সবই আছে। তিনি বলিলেন, হে আল্লাহ! যদি আপনি এদের সকলকে সমান করিতেন? আল্লাহ তাআলা বলিলেন, আমি চাই এই প্ৰভেদের মাধ্যমে আমার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হোক। এভাবে তিনি নাবীগণকে দেখলেন, সকলের মধ্যে তাঁরা চেরাগ সমতুল্য, তাহাদের উপর আলো ঝলমল করছে। তাঁরা নবুঅত ও রিসালাত-এর কর্তব্য পালন সম্পর্কে বিশেষ অংগীকারেও আবদ্ধ হয়েছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, আমি নাবীদের নিকট হইতে তাহাদের অংগীকার গ্রহণ করলাম ঈসা ইবনি মারইয়াম পর্যন্ত। অতঃপর উবাই [রাদি.] বলেন, সে সকল রূহের মধ্যে ঈসা [আঃ]-এর রূহও ছিল; আল্লাহ তাআলা তা মারিয়াম [আঃ]-এর নিকট প্রেরণ করিলেন। উবাই [রাদি.] হইতে এটাও বর্ণিত আছে যে, সেই রূহ মারিয়াম [আঃ]-এর মুখ দিয়ে প্রবেশ করেছিল।
তাহক্বীক্ব : জইফ।
মুসনাদে আহমাদ হাদীস নং/৩১২৭০; মিশকাত হাদীস নং/১২২; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হাদীস নং/১১৫, ১/৮৮-৮৯ পৃঃ। জইফ মিশকাত শরীফ -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ দুর্বল হাদীস
১৭. আবু দারদা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
একদিন আমরা রসূল [সাঃআঃ]-এর সাথে ছিলাম এবং দুনিয়াতে যা কিছু হচ্ছে সে সম্পর্কে আলোচনা করছিলাম। তখন তিনি বলেন, তোমরা যখন শুনবে যে, কোন পাহাড় তার জায়গা হইতে চলে গেছে তখন সেটা বিশ্বাস করিবে; কিন্তু যখন শুনবে যে কোন লোক তার স্বভাব পরিবর্তন করেছে তখন তা বিশ্বাস করিবে না। কারণ যার উপর তাকে সৃষ্টি করা হয়েছে সে দিকেই প্রত্যাবর্তন করিবে ।
তাহক্বীক্ব : জইফ। উক্ত হাদীসের সনদে যুহরী নামক রাবী আছে। সে আবু দারদা [রাদি.]-এর যুগ পায়নি। তাই বিচ্ছিন্নতার কারণে জইফ। মুসনাদে আহমাদ হাদীস নং/২৭৫৩৯; মিশকাত হাদীস নং/১২৩; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হাদীস নং/১১৬, ১/৯০ পৄঃ। সিলসিলা জয়িফা হাদীস নং/১৩৫। জইফ মিশকাত শরীফ -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ দুর্বল হাদীস
১৮. উম্মু সালামা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
একদিন তিনি রসূল [সাঃআঃ]-কে বলিলেন, হে আল্লাহ্র রসূল [সাঃআঃ]! আপনি বিষ মিশানো বকরীর যে গোশত খেয়েছিলেন তার কারণে প্রত্যেক বছরেই আপনাকে কষ্ট পেতে হয়। তিনি বলিলেন, আমার কাছে তার কোন কষ্ট পৌঁছে না; কিন্তু কেবল তা-ই পৌঁছে, যা আমার জন্য নির্ধারিত হয়েছে। অথচ আদম [আঃ] তখন মাটির মধ্যেই ছিলেন।
তাহক্বীক্ব : জইফ। আবুবকর আনসী নামক রাবী দুর্বল। তার বর্ণিত হাদীসগুলো ছহীহ হাদীসের বিরোধী।
ইবনি মাজাহ হাদীস নং/১২৪; মিশকাত হাদীস নং/১২৪; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হাদীস নং/১১৭, ১/৯০ পৄঃ। জইফ ইবনে মাজাহ হাদীস নং/১২৪। জইফ মিশকাত শরীফ -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ দুর্বল হাদীস
১৯. আবু সাঈদ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
রসূল [সাঃআঃ] বলেছেন, কাফেরের জন্য কবরে ৯৯টি সাপ নির্ধারণ করা হয়। সেগুলো তাকে কিয়ামত পর্যন্ত কামড়াতে ও দংশন করিতে থাকে। যদি একটি সাপ যমীনে নিঃশ্বাস ফেলে, তাহলে যমীনে কখনো শস্য জন্মাবে না। তিরমিজির বর্ণনায়, ৭০ টির কথা এসেছে ।
তাহক্বীক্ব : জইফ। এর সনদে দার্রাজ আবুস সামহে নামক একজন মুনকার রাবী আছে। ঈমাম তিরমিজি [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হাদিছটি যে সনদে বর্ণনা করিয়াছেন তার মধ্যে দুইজন দুর্বল রাবী আছে। দারেমী হাদীস নং/২৮১৫; তিরমিজি হাদীস নং/২৪৬০; মিশকাত হাদীস নং/১৩৪; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হাদীস নং/১২৭, ১/১০০ পৃঃ। জইফ মিশকাত শরীফ -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ দুর্বল হাদীস
২০. জাবের [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
সাদ ইবনি মুআয [রাদি.] যখন মারা যান, আমরা রসূল [সাঃআঃ]-এর সাথে তাহাঁর জানাযায় হাযির হলাম। রসূল [সাঃআঃ] জানাযা পড়ার পর তাকে যখন কবরে রাখা হল এবং মাটি সমান করে দেওয়া হল, তখন রসূল [সাঃআঃ] সেখানে তাসবীহ পাঠ করিলেন; আমরাও তাহাঁর সাথে দীর্ঘ সময় তাসবীহ পাঠ করলাম। অতঃপর তিনি তাকবীর বলিলেন। আমরাও তাকবীর বললাম। এ সময় রসূল [সাঃআঃ]-কে জিজ্ঞেস করা হল, আপনি কেন এরূপ তাসবীহ ও তাকবীর বলিলেন? তিনি বলিলেন, এই নেক ব্যক্তির কবর অত্যন্ত সংকীর্ণ হয়ে গিয়েছিল। এতে আল্লাহ্ তাআলা তার কবরকে প্রশস্ত করে দিলেন।
তাহক্বীক্ব : জইফ। এর সনদে মাহমূদ ইবনি আব্দুর রহমান নামে একজন অপরিচিত রাবী আছে। মুসনাদে আহমাদ হাদীস নং/১৪৯১৬; মিশকাত হাদীস নং/১৩৫; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হাদীস নং/১২৮, ১/১০১ পৃঃ। জইফ মিশকাত শরীফ -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ দুর্বল হাদীস
Leave a Reply