ছবি সংক্রান্ত হাদিস – ছবি থাকলে সে ঘরে ফেরেশতা প্রবেশ করেন না

ছবি সংক্রান্ত হাদিস – ছবি থাকলে সে ঘরে ফেরেশতা প্রবেশ করেন না

ছবি সংক্রান্ত হাদিস – ছবি থাকলে সে ঘরে ফেরেশতা প্রবেশ করেন না >> বুখারী শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন

পর্বঃ ৭৭, পোশাক-পরিচ্ছদ, অধ্যায়ঃ (৮৮-৯৭)=১০টি

৭৭/৮৮. অধ্যায়ঃ ছবি সম্পর্কিত।
৭৭/৮৯. অধ্যায়ঃ ক্বিয়ামাতের দিন ছবি নির্মাতাদের শাস্তি প্রসঙ্গে।
৭৭/৯০. অধ্যায়ঃ ছবি ভেঙ্গে ফেলা সম্পর্কিত।
৭৭/৯১. অধ্যায়ঃ ছবিওয়ালা কাপড় দিয়ে বসার আসন তৈরী করা।
৭৭/৯২. অধ্যায়ঃ ছবির উপর বসা অপছন্দনীয়।
৭৭/৯৩. অধ্যায়ঃ ছবিওয়ালা কাপড়ে সলাত আদায় করা অপছন্দনীয়।
৭৭/৯৪. অধ্যায়ঃ যে ঘরে ছবি থাকে সে ঘরে (রাহমাতের) ফেরেশতা প্রবেশ করেন না।
৭৭/৯৫. অধ্যায়ঃ ছবি আছে এমন ঘরে যিনি প্রবেশ করেন না।
৭৭/৯৬. অধ্যায়ঃ ছবি নির্মাতাকে যিনি অভিশাপ করিয়াছেন।
৭৭/৯৭. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি ছবি বানায় তাকে ক্বিয়ামাতের দিন তাতে জীবন দানের জন্যে হুকুম করা হইবে, কিন্তু সে অপারগ হইবে।

৭৭/৮৮. অধ্যায়ঃ ছবি সম্পর্কিত।

৫৯৪৯

আবু ত্বালহা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ ফেরেশতা ঐ ঘরে প্রবেশ করে না, যে ঘরে কুকুর থাকে এবং ঐ ঘরেও না, যে ঘরে ছবি থাকে।

লায়স (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) আবু ত্বালহা (রাদি.) হইতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) থেকে (এ বিষয়ে) শুনিয়াছি।(আঃপ্রঃ- ৫৫১৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪১২)

৭৭/৮৯. অধ্যায়ঃ ক্বিয়ামাতের দিন ছবি নির্মাতাদের শাস্তি প্রসঙ্গে।

৫৯৫০

মুসলিম (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা (একবার) মাসরূকের সাথে ইয়াসার ইবনু নুমাইরের ঘরে ছিলাম। মাসরূক ইয়াসারের ঘরের আঙিনায় কতগুলো মূর্তি দেখিতে পেয়ে বললেনঃ আমি আবদুল্লাহ ইবনু মাস্‌ঊদ (রাদি.) থেকে শুনিয়াছি এবং তিনি নাবী (সাঃআঃ) -কে বলিতে শুনেছেন যে, (ক্বিয়ামাতের দিন) মানুষের মধ্যে সব থেকে শক্ত শাস্তি হইবে তাদের, যারা ছবি তৈরি করে। [১২][মুসলিম ৩৭/২৬, হাদীস ২১০৯, আহমাদ ৩৫৫৮] আঃপ্রঃ- ৫৫১৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪১৩)

[১২] প্রাণীর ছবি আঁকা নিষিদ্ধ। প্রাকৃতিক দৃশ্য বা জড় বস্তু এর অন্তর্ভুক্ত নয়।

৫৯৫১

আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ যারা এ জাতীয় (প্রাণীর) ছবি তৈরি করে, ক্বিয়ামাতের দিন তাদের শাস্তি দেয়া হইবে। তাদের বলা হবেঃ তোমরা যা বানিয়েছিলে তাতে জীবন দাও।[৭৫৫৮; মুসলিম ৩৭/২৬, হাদীস ২১০৮] আঃপ্রঃ- ৫৫১৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪১৪)

৭৭/৯০. অধ্যায়ঃ ছবি ভেঙ্গে ফেলা সম্পর্কিত।

৫৯৫২

আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) নিজের ঘরের এমন কিছুই না ভেঙ্গে ছাড়তেন না, যাতে কোন (প্রাণীর) ছবি থাকত।(আঃপ্রঃ- ৫৫২০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪১৫)

৫৯৫৩

আবু যুরআ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি আবু হুরাইরা (রাদি.) -এর সাথে মাদীনাহর এক ঘরে প্রবেশ করি। ঘরের উপরে এক ছবি নির্মাতাকে তিনি ছবি তৈরি করিতে দেখলেন। তিনি বললেনঃ আমি রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) -কে বলিতে শুনিয়াছি- (আল্লাহ বলেছেন) ঐ ব্যক্তির চেয়ে বেশি অত্যাচারী আর কে, যে আমার সৃষ্টি সদৃশ কোন কিছু সৃষ্টি করিতে যায়? তাহলে তারা একটি দানা সৃষ্টি করুক অথবা একটি অণু পরিমাণ কণা সৃষ্টি করুক! তারপর তিনি একটি পানির পাত্র চেয়ে আনলেন এবং (উযূ করিতে গিয়ে) বগল পর্যন্ত দুহাত ধুলেন। আমি জিজ্ঞেস করলামঃ হে আবু হুরাইরা! আপনি রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) থেকে (এ ব্যাপারে) কিছু শুনেছেন কি? তিনি বললেনঃ (হাঁ) অলঙ্কার পরার শেষ প্রান্ত পর্যন্ত (ধোয়া উত্তম)।[৭৫৫৯; মুসলিম ৩৭/২৬, হাদীস ২১১১, আহমাদ ৯০৮৮] আঃপ্রঃ- ৫৫২১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪১৬)

৭৭/৯১. অধ্যায়ঃ ছবিওয়ালা কাপড় দিয়ে বসার আসন তৈরী করা।

৫৯৫৪

আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) (তাবূক যুদ্ধের) সফর থেকে ফিরে আসলেন। আমি আমার কক্ষে পাতলা কাপড়ের পর্দা টাঙিয়েছিলাম। তাতে ছিল (প্রাণীর) অনেকগুলো ছবি। রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) যখন এটা দেখলেন, তখন তা ছিঁড়ে ফেললেন এবং বললেনঃ ক্বিয়ামাতের দিন সে সব লোকের সব থেকে শক্ত আযাব হইবে, যারা আল্লাহর সৃষ্টির (প্রাণীর) সদৃশ তৈরি করিবে। আয়েশা (রাদি.) বলেনঃ এরপর আমরা ওটা দিয়ে একটি বা দুটি বসার আসন তৈরী করি।[২৪৭৯; মুসলিম ৩৭/২৬, হাদীস ২১০৭, আহমাদ ২৪১৩৬] আঃপ্রঃ- ৫৫২২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪১৭)

৫৯৫৫

আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) এক সফর থেকে ফিরে আসলেন। সে সময় আমি নক্‌শাওয়ালা (প্রাণীর) ছবিযুক্ত কাপড় দিয়ে পর্দা লটকিয়ে ছিলাম। আমাকে তিনি তা খুলে ফেলার নির্দেশ দিলেন। তখন আমি খুলে ফেললাম।(আঃপ্রঃ- ৫৫২৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪১৮)

৫৯৫৬

আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

আর আমি ও নাবী (সাঃআঃ) একই পাত্র থেকে (পানি নিয়ে) গোসল করতাম।(আঃপ্রঃ- ৫৫২৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪১৮)

৭৭/৯২. অধ্যায়ঃ ছবির উপর বসা অপছন্দনীয়।

৫৯৫৭

আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি একবার ছবিওয়ালা গদি ক্রয় করেন। নাবী (সাঃআঃ) (তা দেখে) দরজার কাছে দাঁড়িয়ে থাকলেন, প্রবেশ করিলেন না। আমি বললাম, যে পাপ আমি করেছি তা থেকে আল্লাহর কাছে তাওবাহ করছি। তিনি (সাঃআঃ) জিজ্ঞেস করলেনঃ এ গদি কিসের জন্যে? আমি বললামঃ আপনি এতে বসবেন ও টেক লাগাবেন। তিনি (সাঃআঃ) বললেনঃ এসব ছবি প্রস্ততকারীদের ক্বিয়ামাতের দিন আযাব দেয়া হইবে। তাদের বলা হইবে, যা তোমরা তৈরী করেছিলে সেগুলোকে জীবিত কর। আর যে ঘরে ছবি থাকে সে ঘরে ফেরেশতা প্রবেশ করেনা।(আঃপ্রঃ- ৫৫২৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪১৯)

৫৯৫৮

আবু ত্বলহা হইতে বর্ণিতঃ

রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) এর সাথী আবু ত্বলহা হইতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ যে ঘরে ছবি থাকে সে ঘরে ফেরেশতা প্রবেশ করে না। এ হাদীসের (এক রাবী) বুস্‌র বলেনঃ যায়দ একবার অসুস্থ হয়ে পড়ল। আমরা তার সেবা শুশ্রূষার জন্যে গেলাম। তখন তার ঘরের দরজাতে ছবিওয়ালা পর্দা দেখিতে পেলাম। আমি নাবী (সাঃআঃ) সহধর্মিণী মাইমূনাহ (রাদি.) –এর পালিত উবাইদুল্লাহর কাছে জিজ্ঞেস করলাম, ছবির ব্যাপারে প্রথম দিনই যায়দ আমাদের কি জানায়নি? তখন উবাইদুল্লাহ বলিলেন, তিনি যখন বলেছিলেন, তখন কি তুমি শোননি যে, কারুকাজ করা কাপড় বাদে?

ইবনু ওয়াহব অন্য সূত্রে আবু ত্বলহা (রাদি.) থেকে নাবী (সাঃআঃ) হইতে এ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন।(আঃপ্রঃ- ৫৫২৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪২০)

৭৭/৯৩. অধ্যায়ঃ ছবিওয়ালা কাপড়ে সলাত আদায় করা অপছন্দনীয়।

৫৯৫৯

আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আয়েশা (রাদি.) –এর নিকট কিছু পর্দার কাপড় ছিল, তা দিয়ে তিনি ঘরের এক দিকে পর্দা করেন। রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) তাঁকে বললেনঃ আমার থেকে এটা সরিয়ে নাও, কেননা এর ছবিগুলো সলাতের মধ্যে আমাকে বাধা দেয়।(আঃপ্রঃ- ৫৫২৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪২১)

৭৭/৯৪. অধ্যায়ঃ যে ঘরে ছবি থাকে সে ঘরে (রাহমাতের) ফেরেশতা প্রবেশ করেন না।

৫৯৬০

সালিমের পিতা (আবদুল্লাহ ইবনু উমার) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ জিবরীল (আঃ) (একবার) নাবী (সাঃআঃ) এর নিকট (আগমনের) ওয়াদা করেন। কিন্তু তিনি আসতে দেরী করেন। এতে নাবী (সাঃআঃ) –এর খুবই কষ্ট হচ্ছিল। এরপর নাবী (সাঃআঃ) বের হয়ে পড়লেন। তখন জিবরীলের সঙ্গে তাহাঁর সাক্ষাত ঘটল। তিনি যে মনোকষ্ট পেয়েছিলেন সে বিষয়ে তাহাঁর কাছে বর্ণনা করিলেন। তখন জিবরীল (আঃ) বললেনঃ যে ঘরে ছবি বা কুকুর থাকে সে ঘরে আমরা কক্ষনো প্রবেশ করিনা।(আঃপ্রঃ- ৫৫২৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪২২)

৭৭/৯৫. অধ্যায়ঃ ছবি আছে এমন ঘরে যিনি প্রবেশ করেন না।

৫৯৬১

আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ) সহধর্মিণী আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, (একবার) তিনি ছবিওয়ালা গদি খরিদ করেন। রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) যখন তা দেখিতে পেলেন, তখন দরজার উপর দাঁড়িয়ে গেলেন। প্রবেশ করিলেন না। [আয়েশা (রাদি.)] নাবী (সাঃআঃ) –এর চেহারার অসন্তুষ্টি বুঝতে পারলেন। তখন তিনি বললেনঃ হে আল্লাহর রাসুল! আল্লাহর নিকট ও তাহাঁর রসূলের নিকট এ গুনাহ থেকে তাওবাহ করছি। নাবী (সাঃআঃ) বললেনঃ এ গদি কোথা থেকে আসল? আয়েশা (রাদি.) বললেনঃ আপনার উপবেশন ও হেলান দেয়ার জন্যে আমি এটি ক্রয় করেছি। রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) তখন বললেনঃ এসব ছবি নির্মাতাদের ক্বিয়ামাতের দিন আযাব দেয়া হইবে এবং তাদেরকে বলা হইবে তোমরা যা বানিয়েছিলে তা জীবিত কর। তিনি (সাঃআঃ) আরো বললেনঃ যে ঘরে (প্রাণীর) ছবি থাকে, সে ঘরে (রাহমাতের) ফেরেশতা প্রবেশ করে না। (আঃপ্রঃ- ৫৫২৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪২৩)

৭৭/৯৬. অধ্যায়ঃ ছবি নির্মাতাকে যিনি অভিশাপ করিয়াছেন।

৫৯৬২

আবু জুহাইফাহ হইতে (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

যে, নাবী (সাঃআঃ) রক্তের মূল্য, কুকুরের মূল্য ও যিনাকারীর উপার্জন গ্রহণ করিতে নিষেধ করিয়াছেন। আর তিনি সুদ গ্রহীতা, সুদদাতা, অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে উল্‌কি অঙ্কণকারী আর যে তা করায় এবং ছবি নির্মাতাকে অভিশাপ করিয়াছেন।(আঃপ্রঃ- ৫৫২৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪২৪)

৭৭/৯৭. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি ছবি বানায় তাকে ক্বিয়ামাতের দিন তাতে জীবন দানের জন্যে হুকুম করা হইবে, কিন্তু সে অপারগ হইবে।

৫৯৬৩

ক্বাতাদাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি ইবনু আব্বাস (রাদি.)–এর নিকট ছিলাম। আর লোকজন তাহাঁর কাছে নানান কথা জিজ্ঞেস করছিল। কিন্তু জবাবে তিনি নাবী (সাঃআঃ) –এর (হাদীস) উল্লেখ করছিলেন না। অবশেষে তাঁকে ছবির ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হলো, তিনি বললেনঃ আমি মুহাম্মাদ (সাঃআঃ)–কে বলিতে শুনিয়াছি, যে ব্যক্তি দুনিয়ায় কোন প্রাণীর ছবি তৈরি করে, ক্বিয়ামাতের দিন তাকে কঠোরভাবে হুকুম দেয়া হইবে ঐ ছবির মধ্যে জীবন দান করার জন্যে। কিন্তু সে জীবন দান করিতে পারবে না।(আঃপ্রঃ- ৫৫৩০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪২৫)

Comments

Leave a Reply