চুল এর হাদিস । চুলের সুন্নত প্রসঙ্গে বর্ণনা

চুল এর হাদিস । চুলের সুন্নত প্রসঙ্গে বর্ণনা

চুল এর হাদিস । চুলের সুন্নত প্রসঙ্গে বর্ণনা, এই অধ্যায়ে হাদীস =১৭ টি ( ১৭৬৩-১৭৭৯ পর্যন্ত ) >> মুয়াত্তা ইমাম মালিক এর মুল সুচিপত্র দেখুন

অধ্যায় – ৫১ঃ চুল বিষয়ক

পরিচ্ছেদ ১ -চুলের সুন্নত প্রসঙ্গে
পরিচ্ছেদ ২: চুলে চিরুনি করা প্রসঙ্গ
পরিচ্ছেদ ৩: চুলে রং লাগানো প্রসঙ্গ
পরিচ্ছেদ ৪: শোয়ার প্রাক্কালে শয়তান হইতে আশ্রয় প্রার্থনা প্রসঙ্গে
পরিচ্ছেদ ৫: আল্লাহর জন্য ভালবাসা

পরিচ্ছেদ ১ -চুলের সুন্নত প্রসঙ্গে

১৭০৬ আবদুল্লাহ্ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] গোঁফ কামাতে এবং দাড়ি না কাঁটতে নির্দেশ দিয়েছেন।

{১} [সহীহ, মুসলিম ২৫৯]{১} গোঁফ কামান এবং ছাঁটের ব্যাপারে উলামায়ে কিরামের মধ্যে মতবিরোধ আছে। কারো মতে ছেঁটে ফেলা ভাল আর কারো মতে মুড়িয়ে ফেলা উত্তম। স্বয়ং সাহাবীগণের মধ্যেও এই মতবিরোধ ছিল। তাঁদের মধ্যেও কেউ মুড়াতেন আর কেউ ছাঁটতেন। তিরমিজির রেওয়ায়ত মুতাবিক রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ ছাঁটতেন।দাঁড়ি ছাঁটার সম্পর্কে যত হাদীস আছে সবই জঈফ, বিশুদ্ধ মত হচ্ছে রসূল সাঃআঃ দাড়ি ছাঁটেননি বরং তিনি সর্বদা দাড়ি ছেড়ে দিতেন এটা সর্বাধিক বিশুদ্ধ মত।চুল এর হাদিস -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৭০৭ হুমাইদ ইবনি আবদুর রহমান ইবনি আউফ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি মুআবিয়া ইব্নু আবু সুফিয়ান [রাদি.]-এর নিকট সেই বৎসর শুনেছেন, যেই বৎসর তিনি [মুআবিয়া] হজ্জব্রত পালন করিতে গিয়েছিলেন। তিনি মিম্বরের উপর উপবিষ্ট হয়ে খাদেমের হাত হইতে চুলের একটি গুচ্ছ নিয়ে বলিলেন, হে মদীনাবাসিগণ! তোমাদের উলামায়ে কিরাম কোথায়? আমি রাসূলুল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] কে ইহা হইতে নিষেধ করিতে শুনিয়াছি। তিনি [অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ] এটাও বলেছেন যে, বানী ইসরাঈলের মহিলাগণ এই কাজ করেছিল বিধায় তারা ধ্বংস হয়েছে।

[বুখারি ৩৪৬৮, মুসলিম ২১২৭]চুল এর হাদিস -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৭০৮ ইবনি শিহাব [রহঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] প্রথমে বেশ কিছু কাল পর্যন্ত স্বীয় চুল কপালের দিকে ঝুলিয়ে রাখতেন। পরে তাতে সিথি বানিয়ে দিতেন [অর্থাৎ চিরুণি দ্বারা চুলকে মাথার মধ্যভাগে দুই ভাগ করে দিতেন]।

[বুখারি ৩৫৫৮, মুসলিম ২৩৩৬]

মালিক [রহঃ] বলেন, কোন পুরুষের জন্য স্বীয় পুত্রবধুর অথবা শাশুড়ীর চুল দেখাতে কোন ক্ষতি নেই।

চুল এর হাদিস -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৭০৯ বর্ণণাকারী হইতে বর্ণিতঃ

আবদুল্লাহ্ ইবনি উমার [রাদি.] জীবজন্তু খাসি করানোকে খারাপ মনে করিতেন এবং বলিতেন যে, অণ্ডকোষ রাখার অর্থ বংশ জারি রাখা। [হাদীসটি ঈমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

চুল এর হাদিস -এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

১৭১০ সাফওয়ান ইবনি সুলাইম [রহঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছেন, আমি ও ইয়াতীমের অভিভাবক — এই অভিভাবক সংশ্লিষ্ট ইয়াতীমের আত্মীয় হোক কিংবা অনাত্মীয়, যদি তারা আল্লাহ্‌কে ভয় করে, তবে বেহেশতে আমরা একে অপরের এমন নিকট হব যেমন এই দুইটি আঙ্গুল। এই বলে তিনি [অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ্ সা.] শাহাদতের অঙ্গুলি ও মধ্যমার দিকে ইঙ্গিত করলেন।

{১} [বুখারি ৬০০৫, মুসলিম ২৯৮৩]{১} অর্থাৎ ইয়াতীমের অভিভাবক যদি আল্লাহভীরু হয় এবং ইয়াতীমের মালের রক্ষণাবেক্ষণে ঈমানদারী ও আল্লাহ্ভীরুতার পরিচয় দেয়, তা হলে সে বেহেশতে রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ-এর পার্শ্বেই অবস্থান করিবে।চুল এর হাদিস -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

পরিচ্ছেদ ২: চুলে চিরুনি করা প্রসঙ্গ

১৭১১ ইয়াহ্ইয়া ইবনি সাঈদ [রহঃ] হইতে বর্ণিতঃ

একদা আবু কাতাদা আনসারী [রাদি.] রাসূলুল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-এর নিকট বলিলেন, আমার চুল কাঁধ পর্যন্ত [অর্থাৎ বাবরী চুল] আছে। তবে কি আমি উহাতে চিরুনি করব? রাসূলুল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলিলেন, হ্যাঁ, চিরুনি কর এবং চুলের সম্মান কর। অতঃপর আবু কাতাদা কোন কোন সময় দিনে দুইবার চুলে তৈল লাগাতেন। কারণ রাসূলুল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছিলেন, চুলের সম্মান কর।

[বাইহাকী, শাবগ্রন্থ ২/২৬৫/২, ইবনি আসাকির তারিখে দামেস্ক ৮/৫০৯/১, আলবানী বলেন এই হাদীসের সমর্থনে অনেক শাওয়াহেদ রয়েছে যে গুলো সহীহ হওয়ার উপর প্রমাণ করে।]চুল এর হাদিস -এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

১৭১২ আতা ইবনি ইয়াসার [রহঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] মসজিদে বসেছিলেন। এমন সময় এক ব্যক্তি এল যার চুল ও দাড়ি এলোমেলো ছিল। অতঃপর রাসূলুল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] তাকে হাতে ইশারা করে বলিলেন, মসজিদের বাইরে গিয়ে চুল-দাড়ি ঠিক করে আস। লোকটি তাই করিল এবং [চুল-দাড়ি ঠিক করে] পুনরায় এল। অতঃপর রাসূলুল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলিলেন, তোমাদের কেউ স্বীয় চুল-দাড়ি এলোমেলো অবস্থায় শয়তানের মতো থাকার তুলনায় ইহা [চুল-দাড়ি] ঠিক করে রাখা উত্তম নয় কি? {১} [হাদীসটি ঈমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

{১} চুল ও দাঁড়িকে এলোমেলোভাবে রাখা এবং উহার যত না করা বা উহার সম্মান না করাকে রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ শয়তানের মতো হওয়া বলে ফরমায়েছেন। আমাদের দেশে যেই সকল যুবক লম্বা চুল, গোঁফ ও নখ রাখে তাদের অত্র হাদীসের মর্ম উপলব্ধি করিতে অনুরোধ করি।চুল এর হাদিস -এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

পরিচ্ছেদ ৩: চুলে রং লাগানো প্রসঙ্গ

১৭১৩ আবু সালমা ইবনি আবদুর রহমান [রহঃ] হইতে বর্ণিতঃ

আবদুর রহমান ইব্নু আসওয়াদ আমার সঙ্গী ছিলেন। তার চুল ও দাড়ি সাদা ছিল। একদা তিনি চুলে লাল রং [লাল খেজাব বা মেহেদী] লাগিয়ে সকালে আগমন করলেন। তখন সকলে বলল, ইহা বেশ ভাল। তিনি বলিলেন, আমার আম্মা নবী-পত্নী আয়িশা [রাদি.] স্বীয় বাঁদী নুখাইলাকে কসম করে বলে সকালে [আমার কাছে] পাঠিয়েছেন, খেজাব কর। আর ইহাও বলেছেন যে, আবু বাকর সিদ্দীক [রাদি.]-ও খেজাব লাগাতেন। [হাদীসটি ঈমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

মালিক [রহঃ] বলেন, কালো খেজাব সম্বন্ধে কোন হাদীস শুনিনি। কাল রঙের খেজাব ব্যতীত অন্য রঙ হলে ভাল। আল্লাহ্ চাহেন তো কোন রকম খেজাব না লাগানোই সবচেয়ে উত্তম। এতে জনগণের কোন অসুবিধা নাই। {১}

মালিক [রহঃ] বলেন, এই হাদীস দ্বারা বুঝা যাচ্ছে যে, রাসূলুল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] খেজাব লাগাননি। আর যদি তিনি খেজাব লাগাতেন, তবে আয়িশা [রাদি.] আবদুর রহমান ইব্নু আসওয়াদের নিকট নিশ্চয়ই উহা বলে পাঠাতেন।

{১} মুসলিম শরীফে আবু বাকর [রাদি.]-এর পিতা আবু কুহাফা [রাদি.]-এর আলোচনায় আছে যে, রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ বলিলেন, চুলের এই সাদা রং বদলে ফেলুন; তবে কালো রঙ লাগাবেন না। আবু দাঊদ এবং নাসায়ী শরীফে আছে যে, শেষ যুগে এক জাতি কালো খেজাব লাগাবে। তারা বেহেশতের গন্ধও পাবে না। এই প্রসঙ্গে প্রকৃত কথা এই যে, কালো খেজাব লাগানো জায়েয নয়। তবে যেই কালো রং-এ লাল মিশ্রিত আছে, উহা অবশ্য জায়েয আছে।চুল এর হাদিস -এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

পরিচ্ছেদ ৪: শোয়ার প্রাক্কালে শয়তান হইতে আশ্রয় প্রার্থনা প্রসঙ্গে

১৭১৪ ইয়াহ্ইয়া ইবনি সাঈদ [রহঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমার কাছে রেওয়ায়ত পৌঁছেছে যে, খালিদ ইবনি ওলীদ [রাদি.] রাসূলুল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] কে বলিলেন, আমি নিদ্রাবস্থায় [স্বপ্নে] ভয় পাই। রাসূলুল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলিলেন, তুমি [শোয়ার সময়] এই দুআ পাঠ করাহিমাহুল্লাহ

أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ اللهِ التَّامَّةِ مِنْ غَضَبِهِ وَعِقَابِهِ وَشَرِّ عِبَادِهِ وَمِنْ هَمَزَاتِ الشَّيَاطِينِ وَأَنْ يَحْضُرُونِ

আমি আল্লাহ্‌র ক্রোধ ও আযাব হইতে, তার বান্দাগণের উপদ্রব হইতে, শয়তানের প্ররোচনা হইতে এবং আমার নিকট শয়তানের আগমন হইতে আল্লাহ্‌র পূর্ণ কলেমাসমূহের আশ্রয় প্রার্থনা করছি। [হাদীসটি ঈমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

চুল এর হাদিস -এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

১৭১৫ ইয়াহ্ইয়া ইবনি সাঈদ [রহঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, মিরাজ রজনীতে রাসূলুল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] একটি জ্বীন দেখিতে পেলেন। তার হাতে আগুনের লেলিহান শিখা ছিল। রাসূলুল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] তার দিকে দেখলে মনে হত যেন সে রাসূলুল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-এর দিকে ছুটে আসছে। অতঃপর জিবরাঈল [আ] প্রিয় নবীকে বলিলেন, আমি আপনাকে এমন কতকগুলো শব্দ শিক্ষা দিব কি যা পাঠ করলে এই জ্বীনের আগুন নিভে যাবে এবং সে উপুর হয়ে পড়ে যাবে? রাসূলুল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলিলেন, নিশ্চয়ই শিক্ষা দিবেন। অতঃপর জিবরাঈল [আ] বলিলেন, পড়ুনঃ

أَعُوذُ بِوَجْهِ اللهِ الْكَرِيمِ وَبِكَلِمَاتِ اللهِ التَّامَّاتِ اللَّاتِي لَا يُجَاوِزُهُنَّ بَرٌّ وَلَا فَاجِرٌ مِنْ شَرِّ مَا يَنْزِلُ مِنْ السَّمَاءِ وَشَرِّ مَا يَعْرُجُ فِيهَا وَشَرِّ مَا ذَرَأَ فِي الْأَرْضِ وَشَرِّ مَا يَخْرُجُ مِنْهَا وَمِنْ فِتَنِ اللَّيْلِ وَالنَّهَارِ وَمِنْ طَوَارِقِ اللَّيْلِ وَالنَّهَارِ إِلَّا طَارِقًا يَطْرُقُ بِخَيْرٍ يَا رَحْمَنُ

আমি আসমান হইতে আগত ও আসমানের দিকে ধাবিত বস্তুর অমঙ্গল হইতে, মাটিতে সৃষ্ট ও মাটি হইতে বহির্গত বস্তুর অমঙ্গল হইতে, রাত্র-দিনের বালা-মুসিবত হইতে ও রাত্র-দিনের ঘটনাপ্রবাহ হইতে- তবে উত্তম ঘটনা হইতে নয়- হে দয়াময়! [আমি] আল্লাহ্‌র সম্মানিত সত্তার ও তার সেই পূর্ণ কলেমাসমূহের আশ্রয় প্রার্থনা করছি, যা পুণ্যবান ও পাপী কেহই অতিক্রম করিতে পারে না। {১} [সহীহ, আহমাদ ১৫৪৯৮, আলবানী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন

{সিলসিলা সহীহা ২৯৯৫} তবে ঈমাম মালিক কর্তৃক বর্ণিত হাদীসটি মুরসাল]{১} নাসায়ী শরীফে আছে যে, রসূলুল্লাহ্ সাঃআঃ এই দুআ পাঠ করলেন এবং সেই দৈত্য উপুড় হয়ে ভূলুণ্ঠিত হল এবং তার আগুন নিভে গেল।চুল এর হাদিস -এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

১৭১৬ আবু হুরায়রা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

আসলাম গোত্রের এক ব্যক্তি বলল, আমি রাত্রে ঘুমাইনি। রাসূলুল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] জিজ্ঞেস করলেন, কেন ঘুমাওনি? সে উত্তর দিল, আমাকে বিচ্ছু দংশন করেছে। রাসূলুল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলিলেন যে, তুমি যদি পড়তে।

أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ اللهِ التَّامَّاتِ مِنْ شَرِّ مَا خَلَقَ

[আমি সৃষ্টের অপকারিতা হইতে আল্লাহ্‌র পূর্ণ কালিমাসমূহের আশ্রয় প্রার্থনা করছি] তা হলে তোমার কোন ক্ষতি হত না।

[সহীহ, মুসলিম ২৭০৯চুল এর হাদিস -এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

১৭১৭ কাকা ইবনি হাকীম [রহঃ] হইতে বর্ণিতঃ

কাবে আহবার [রহঃ] {তিনি ইহুদীদের বড় আলিম ছিলেন। পরে ইসলাম গ্রহণ করেনা} বলেছেন যে, যদি আমি কয়েকটি শব্দ [কালিমা] পাঠ না করতাম, তা হলে ইহুদীগণ [যাদু করে] আমাকে গাধা বানিয়ে দিত। তাকে জিজ্ঞেস করা হল যে, সেই শব্দগুলো কি? তিনি বললেনঃ

أَعُوذُ بِوَجْهِ اللهِ الْعَظِيمِ الَّذِي لَيْسَ شَيْءٌ أَعْظَمَ مِنْهُ وَبِكَلِمَاتِ اللهِ التَّامَّاتِ الَّتِي لَا يُجَاوِزُهُنَّ بَرٌّ وَلَا فَاجِرٌ وَبِأَسْمَاءِ اللهِ الْحُسْنَى كُلِّهَا مَا عَلِمْتُ مِنْهَا وَمَا لَمْ أَعْلَمْ مِنْ شَرِّ مَا خَلَقَ وَبَرَأَ وَذَرَأَ

আমি সেই আল্লাহ্‌র মহান সত্তার আশ্রয় প্রার্থনা করছি যাঁর চাইতে কোন বস্তুই বড় নয়। আর তার পূর্ণ কলেমাসমূহের আশ্রয় প্রার্থনা করছি যার আগে কোন ভাল কিংবা মন্দ যেতে পারে না, আর তার সমুদয় সুন্দর নামের আশ্রয় প্রার্থনা করছি যা আমার জানা আছে এবং যা আমার জানা নেই; সেই সৃষ্টির অপকারিতা হইতে, যা সৃষ্টি করিয়াছেন এবং বিস্তৃত করিয়াছেন। [হাদীসটি ঈমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

চুল এর হাদিস -এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

পরিচ্ছেদ ৫: আল্লাহর জন্য ভালবাসা

১৭১৮ আবু হুরায়রা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছেন, আল্লাহ্ তাআলা কিয়ামত দিবসে বলবেন, সেই সমস্ত মানুষ কোথায়, যারা আমার সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে পরস্পর পরস্পরকে ভালবাসত? আজ আমি তাদেরকে [আমার আরশের] ছায়াতলে ছায়া দান করব। আজকের দিনটা এমন যে, আমার ছায়া ব্যতীত অন্য কোথাও কোন ছায়া নেই।

[সহীহ, মুসলিম ২৫৬৬]চুল এর হাদিস -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৭১৯ আবু সাঈদ খুদরী [রাদি.] অথবা আবু হুরায়রা {১} [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছেন, যেই দিন আল্লাহ্‌র [আরশের] ছায়া ব্যতীত অন্য কোন ছায়া থাকিবে না, সেই দিন আল্লাহ্ তাআলা সাত প্রকারের মানুষকে তার ছায়াতলে ছায়া দান করিবেন- [১] ন্যায় বিচারক ঈমাম [শাসনকর্তা], [২] ঐ যুবক, যে আল্লাহ্‌র ইবাদতের ভিতর দিয়ে লালিত-পালিত হয়েছে, [৩] ঐ ব্যক্তি, যে নামাজ পড়ে মসজিদ হইতে বের হলে পর আবার মসজিদে কখন যাবে, এই চিন্তায় তার মন মসজিদের প্রতি আকৃষ্ট থাকে অর্থাৎ আবার কখন মসজিদে যাবে এই কথা বার বার তার মনে জাগে, [৪] সেই দুই ব্যক্তি, যার পরস্পরকে আল্লাহ্‌র জন্য ভালবাসে; তারা একত্র হয় আল্লাহ্‌র জন্য এবং আল্লাহ্‌র জন্যই পৃথক হয়, [৫] যে ব্যক্তি নির্জনে আল্লাহ্‌কে স্মরণ করে এবং আল্লাহ্‌র ভয়ে তার দুই চক্ষু অশ্র“সিক্ত হয়, [৬] সেই ব্যক্তি, যাকে কোন সম্ভ্রান্ত পরিবারের রূপসী রমণী [স্বীয় কামভাব চরিতার্থ করার নিমিত্ত] আহ্বান করে, তবে সে এই বলে [উক্ত আহ্বান] প্রত্যাখ্যান করে যে, আমি আল্লাহকে ভয় করি, [৭] সেই ব্যক্তি, যে [আন্তরিকতা সহকারে] কিছু সাদাকাহ্ এমনভাবে গোপনে করেছে যে, তার ডান হস্ত কি সাদাকাহ্ করেছে উহা তার বাম হাত পর্যন্ত জানতে পারেনি।

{২} [বুখারি ৬৮০৬, মুসলিম ১০৩১]নে আবু সাঈদ খুদরী অথবা আবু হুরায়রার রেওয়ায়ত বলে এই দুইজনের মধ্যে সন্দেহ পোষণ করা হয়েছে যে, এতদুভয়ের যেকোন একজন কর্তৃক অত্র হাদীস বর্ণিত হয়েছে। কিন্তু বুখারি ও মুসলিম শরীফের বর্ণনায় আবু হুরায়রা [রাদি.]-এর উল্লেখ রয়েছে।{২} ডান হাত কি সদকা করেছে উহা তার বাম হাত জানতে পারেনি- এর অর্থ অতি গোপনে সদকা করা হয়েছে, যেন রিয়া বা লোক দেখানোর আশংকা না থাকে।চুল এর হাদিস -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৭২০ আবু হুরায়রা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছেন, আল্লাহ্ যখন তার কোন বান্দাকে ভালবাসেন, তখন জিবরাঈলকে বলেন, হে জিবরাঈল। আমি আমার অমুক বান্দাকে ভালবাসি। অতএব তুমিও তাকে ভালবাস। তখন জিবরাঈলও তাকে ভালবাসেন এবং আসমানের অধিবাসীদের [ফিরিশতাগণের] মধ্যে ঘোষণা করেন যে, অমুক ব্যক্তিকে আল্লাহ্ তাআলা ভালবাসেন, অতএব তোমরাও তাকে ভালবাস। সুতরাং আসমানের অধিবাসিগণও তাকে ভালবাসেন এবং তার জন্য যমিনে জনপ্রিয়তা সৃষ্টি করা হয় [ফলে ব্যক্তি জনপ্রিয় হয়] আর যখন আল্লাহ্ তাআলা কারো প্রতি রাগান্বিত হন; মালিক [রহঃ] বলেন, আমার মনে হয় সেই অবস্থাতেও এই প্রকার কিছু সংঘটিত হয় বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

{১} [বুখারি ৭৪৮৫, মুসলিম ২৬৩৭]{১} অর্থাৎ আল্লাহ্ যখন কারো প্রতি রাগ করেন তখন জিবরাঈল [আ], ফেরেশতা, মানুষ ও পৃথিবীর অন্যান্য সৃষ্টিও তাকে অপছন্দ করে এবং তার সাথে শত্রুতা করিতে থাকে।চুল এর হাদিস -এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৭২১ আবু ইদরীস খাওলানী [রহঃ] হইতে বর্ণিতঃ

আমি দামিশকের মসজিদে প্রবেশ করলাম। সেখানে জনৈক যুবককে দেখলাম, তার দাঁতগুলো অতি উজ্জ্বল সাদা [মুক্তার মতো]। তার সঙ্গে অনেক মানুষ ছিল। যখনই কোন ব্যাপারে মতবিরোধ হত, উক্ত যুবকের কথাকেই সনদ [নির্ভরযোগ্য] বলে গণ্য করা হত এবং তার কথার উপরেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হত। আমি [আবু ইদরীস] লোকের কাছে জিজ্ঞেস করলাম, এই যুবকটি কে? তারা বলল, ইনি হলেন মুআয ইব্নু জাবাল [রাদি.]। পরদিন প্রাতঃকালে আমি [মসজিদে] যেয়ে দেখি যে, তিনি [মুআয ইব্নু জাবাল] আমার আগেই সেখানে পৌঁছেছেন এবং নামাজ পড়ছেন। আমি অপেক্ষা করিতে লাগলাম। তিনি নামাজ আদায় শেষ করলে আমি তার সম্মুখে গিয়ে পৌঁছালাম। অতঃপর তাকে সালাম করে বললাম, আল্লাহ্‌র কসম! আমি আপনাকে আল্লাহর ওয়াস্তে ভালবাসি। তিনি বলিলেন, আল্লাহরই জন্য? আমি বললাম, হ্যাঁ, আল্লাহরই জন্যই। তিনি [পুনরায়] বলিলেন, আল্লাহরই জন্য? আমি বললাম, হ্যাঁ, আল্লাহরই জন্য। অতঃপর তিনি আমার চাদরের এক কোণা ধরে [আমাকে] নিজের দিকে টানলেন এবং বলিলেন, আনন্দিত হও! আমি রাসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-এর কাছে শুনিয়াছি, তিনি বলছিলেন, আল্লাহ্ তাআলা বলেন, আমার ভালবাসা সেই সমস্ত লোকের জন্য ওয়াজিব হয়েছে যারা আমার [সন্তুষ্টির] জন্য পরস্পর পরস্পরকে ভালবাসে, আমারই জন্য একত্রে বসে, আমারই জন্য একে অন্যের সাথে সাক্ষাৎ করে এবং আমারই জন্য একে অন্যের জন্য খরচ করে। [হাদীসটি ঈমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

চুল এর হাদিস -এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

১৭২২ আবদুল্লাহ্ ইব্নু আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

মধ্যম পন্থাবলম্বন, একে অন্যকে ভালবাসা এবং সুন্দরভাবে মৌনতা অবলম্বন নবুয়তের পঁচিশ ভাগের এক ভাগের সমান। [হাদীসটি ঈমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন]

চুল এর হাদিস -এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

Comments

One response to “চুল এর হাদিস । চুলের সুন্নত প্রসঙ্গে বর্ণনা”

Leave a Reply