ঘোড়ার হাদিস
ঘোড়ার হাদিস ও দুয়া। ঘোড়াকে যুদ্ধ কৌশল শিক্ষা দেয়া >> সুনানে নাসাই শরিফের মুল সুচিপত্র দেখুন
পর্বঃ ২৮, ঘোড়া, হাদিস (৩৫৬১ – ৩৫৯৩)
১.পরিচ্ছেদঃ ঘোড়ার ললাটে কল্যাণ সংযুক্ত
২.পরিচ্ছেদঃ ঘোড়ার প্রতি ভালোবাসা
৩.পরিচ্ছেদঃ কোন্ বর্ণের ঘোড়া উত্তম?
৪.পরিচ্ছেদঃ যে ঘোড়ার তিন পা সাদা ও এক পা শরীরের বর্ণের
৫.পরিচ্ছেদঃ ঘোড়ার অশুভ হওয়া প্রসঙ্গ
৬.পরিচ্ছেদঃ ঘোড়ার বরকতের বর্ণনা
৭.পরিচ্ছেদঃ ঘোড়ার ললাটের চুল বানিয়ে দেওয়া
৮.পরিচ্ছেদঃ ঘোড়াকে যুদ্ধ কৌশল শিক্ষা দেয়া
৯.পরিচ্ছেদঃ ঘোড়ার দুআ
১০.পরিচ্ছেদঃ গাধাকে ঘোড়ার উপর চড়ানোর ব্যাপারে কঠোর আপত্তি
১১.পরিচ্ছেদঃ ঘোড়াকে ঘাস ও দানাপানি খাওয়ানো
১২.পরিচ্ছেদঃ যে ঘোড়ার ইয্মার১ করা হয়নি, সে ঘোড়ার দৌড়ের শেষ প্রান্ত
১৩.পরিচ্ছেদঃ প্রতিযোগিতার জন্য ঘোড়াকে ইয্মার করা
১৪.পরিচ্ছেদঃ প্রতিযোগিতা
১৫.পরিচ্ছেদঃ জালাব {১} প্রসঙ্গে
১৬.পরিচ্ছেদঃ জানাব {১} সম্পর্কে
১৭.পরিচ্ছেদঃ [গনীমতে] ঘোড়ার অংশ
১.পরিচ্ছেদঃ ঘোড়ার ললাটে কল্যাণ সংযুক্ত
৩৫৬১. সালামা ইবনি নুফায়ল কিন্দী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ [একদিন] আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর নিকট বসা ছিলাম। এমন সময় এক ব্যক্তি বললেনঃ ইয়া রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ], লোকেরা ঘোড়ার মর্যাদাকে ক্ষুণ্ন করেছে, অস্ত্রসস্ত্র রেখে দিয়েছে এবং তারা বলছেঃ যুদ্ধ তার অস্রসস্ত্র রেখে দিয়েছে [এখন আর জিহাদ নেই, জিহাদ শেষ হইয়া গেছে]। এ কথা শুনে তিনি তার প্রতি লক্ষ্য করে বললেনঃ তারা মিথ্যা বলছে। এখনই জিহাদের আদেশ এসেছে। আর সর্বদা আমার উম্মতের একদল দ্বীনের জন্য যুদ্ধ করিতে থাকিবে। এখনই আল্লাহ্ তাহাদের জন্য লোকের অন্তর ঘুরিয়ে দেবেন। আর আল্লাহ্ তাহাদেরকে ওদের দ্বারা রিযিক দান করবেন কিয়ামত পর্যন্ত। আল্লাহ্ তাআলা কিয়ামত পর্যন্ত ঘোড়ার ললাটের সাথে কল্যাণ ও মঙ্গলকে সন্পৃক্ত করে রেখেছেন। আমাকে এ কথা ওহী দ্বারা জনানো হইয়াছে যে, অচিরেই আমাকে তুলে নেয়া হইবে [ইন্তিকাল হইবে]; [চিরদিন] আমাকে রাখা হইবে না। আর তোমরা আমার পরে বিভিন্ন দলে বিভক্ত হইয়া পড়বে। তোমরা একে অন্যের সাথে মারামারি কাটাকাটি করিবে, আর ঈমানদারদের নিরাপদ ঠিকানা হইবে শামে [সিরিয়ায়]।
ঘোড়ার হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৫৬২. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আল্লাহ্ তাআলা কিয়ামত পর্যন্ত ঘোড়ার ললাটে কল্যাণ বেঁধে রেখেছেন। ঘোড়া তিন প্রকার যা দ্বারা মানুষ সওয়াব লাভ করে। আর এক প্রকার ঘোড়া, যা [অসচ্ছলতার জন্য] আচ্ছাদন [ঢাল স্বরুপ] হইয়া থাকে এবং এক প্রকার ঘোড়া বোঝাস্বরুপ হইয়া থাকে। সওয়াবের ঘোড়া তো ঐ ঘোড়া, যাকে [মালিক] আটকে রাখে [লালন পালন করে] আল্লাহর পথে জিহাদের জন্য এবং প্রয়োজনমত তাকে জিহাদে ব্যবহার করা হয়। যা কিছু সে খায়, যা কিছু তার পেটের ভেতরে গায়েব করে, তা সবই তার জন্য সওয়াব লেখা হয়। যদিও নতুন চারণভূমিতে সে তার সামনে উদ্ভাসিত হয়। হাদিসের শেষ পর্যন্ত বর্নণা করেন।
ঘোড়ার হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৫৬৩. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ ঘোড়া কোন লোকের জন্য সওয়াবের কারন হইয়া থাকে, আর কারো জন্য তা আচ্ছদন [ঢালস্বরুপ], আর কারো জন্য তা বোঝা [গুনাহের কারণ] হইয়া থাকে। ঘোড়া ঐ ব্যক্তির জন্য সওয়াবের কারন হইয়া থাকে, যে তাকে আল্লাহর রাস্তায় বাঁধে [প্রতিপালন করে]। আর সে তার রশি বাগান এবং চারণভূমিতে লম্বা করে দেয়, সেই ঘোড়া সে রশিতে যতদুর পর্যন্ত চরবে, তার জন্য নেকী লেখা হইবে। যদি রশি ছিঁড়ে কোন উঁচু স্থানে [টিলায়] বা দুই উঁচু স্থানে চরে, তবে তার প্রত্যেকে পদক্ষেপে তার জন্য নেকী লেখা হইবে এবং হারিসের হাদীসে আছে, তার গোবরেও নেকী লেখা হইবে। যদি ওই ঘোড়া কোন নহরে গিয়ে পানি পান করে, অথচ মালিকের পানি পান করাবার ইচ্ছা না থাকে, তবুও তা মালিকের জন্য নেকী রুপে লেখা হইবে। এইরুপ ঘোড়া সওয়াবের কারন হইয়া থাকে। আর, যে তা স্বাবলম্বী হওয়ার জন্য বেঁধে রাখে, অথবা মানুষের কাছে চাওয়া থেকে বাঁচার জন্য এবং তাতে অর্থাৎ [ঘোড়ার] ঘাড়ে ও পিঠে পালনীয় মহান মহীয়ান আল্লাহর হক-এর কথা বিস্মৃত হয় না [এর যাকাত আদায় করে], তবে তা [ঘোড়া] তার জন্য আচ্ছাদন। আর ওই ব্যক্তির জন্য পাপ, যে ব্যক্তি তাকে গর্ব করা, লোক দেখানো এবং মুসলমানের সাথে শত্রুতার জন্য বাঁধে [পালন করে]। কোন ব্যক্তি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে গাধার কথা জিজ্ঞাসা করলে, তিনি বললেনঃ এ ব্যাপারে এখনও কিছু আমার উপর নাযিল হয়নি। তবে এই আয়াত যা সর্বব্যাপী মূলবিধি [রুপে স্বীকৃত, যাতে সামগ্রিক বিষয় শামিল রয়েছে]। আল্লাহ্ তাআলা বলেনঃ কেউ অণু পরিমাণ নেককাজ করলে তা সে দেখিতে পাবে, আর কেউ অণু পরিমাণ মন্দ কাজ করলে তা-ও সে দেখিতে পাবে।
ঘোড়ার হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২.পরিচ্ছেদঃ ঘোড়ার প্রতি ভালোবাসা
৩৫৬৪. আনাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর নিকট স্ত্রীজাতির পর ঘোড়া অপেক্ষা আর কোন বস্তু প্রিয় ছিল না।
ঘোড়ার হাদিস এর তাহকিকঃ জইফ হাদীস
৩.পরিচ্ছেদঃ কোন্ বর্ণের ঘোড়া উত্তম?
৩৫৬৫. আবু ওয়াহাব [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর সাহাবী ছিলেন, তাহাঁর থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমরা নাবীগণের নামে নাম রাখবে। আর আল্লাহর নিকট সর্বাধিক পছন্দনীয় নাম হল আবদুল্লাহ এবং আবদূর রহমান। ঘোড়া বেঁধে রাখবে [লালন-পালন করিবে] এবং এর মাথায় এবং পেছনে হাত বুলাবে, আর এর গলায় কালাদা পরাবে, তাকে[জাহিল] যুগের অনুকরণীয় ঘুনটীর কালাদা পরাবে না, লাল কাল মিশান [খয়রী] বর্ণের ঘোড়া পছন্দ করিবে, যাহার ললাট এবং সামনের ও পেছনের পা সাদা হয় অথবা টকটকে লাল রঙ এর ঘোড়া, যাহার ললাট সাদা হয় এবং সামনের পা-ও সাদা।
ঘোড়ার হাদিস এর তাহকিকঃ জইফ হাদীস
৪.পরিচ্ছেদঃ যে ঘোড়ার তিন পা সাদা ও এক পা শরীরের বর্ণের
৩৫৬৬. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ নাবী [সাঃআঃ] শিকাল ঘোড়া [ঐ সকল ঘোড়া] পছন্দ করিতেন না যেগুলোর তিন পা সাদা এবং এক পা অন্য বর্ণের [এর দেহের বর্নের] হতো।
ঘোড়ার হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৫৬৭. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
নাবী [সাঃআঃ] থেকে বর্নিত যে, তিনি শিকাল ঘোড়া অপছন্দ করিতেন। আবু আবদুর রহমান [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেনঃ শিকাল ঐ ঘোড়াকে বলা হয়, যাহার তিন পা সাদা এবং এক পা অন্য রঙের হয়। অথবা তিন পা অন্য রঙের এবং এক পা সাদা। আর শিকাল শুধু পায়ে হয়, হাতে হয় না।
ঘোড়ার হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫.পরিচ্ছেদঃ ঘোড়ার অশুভ হওয়া প্রসঙ্গ
৩৫৬৮. সালিম[রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ
নাবী [সাঃআঃ] থেকে বর্ণনা করেন যে, [কুলক্ষণ যদি থেকে থাকে তবে] তিন বস্তুর মধ্যে অশুভ লক্ষণ [অপয়া] রয়েছেঃ নারী, ঘোড়া এবং ঘরে।{১}
{১} নারীর মধ্যে কুলক্ষণ এই যে, যাহার স্বভাব-চরিত্র খারাপ বা যে কটু কথা বলে। ঘোড়ার কুলক্ষণ এই যে, যা কাল রংয়ের হয় এবং লাথি মারে; আর ঘরের কুলক্ষণ হলো- এর প্রতিবেশী ভাল না হওয়া বা যেখানে শীত, বর্ষা ও গরমে আরাম নেই।ঘোড়ার হাদিস এর তাহকিকঃ অন্যান্য
৩৫৬৯. আবদুল্লাহ ইব্ন উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন তিন বস্তুর মধ্যে কুলক্ষণ [অপয়া] রয়েছেঃ নারী, ঘোড়া এবং ঘর।
ঘোড়ার হাদিস এর তাহকিকঃ শায
৩৫৭০. জাবির [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যদি কোন বস্তুতে [কুলক্ষণ] থেকে থাকে, তবে তা ঘর, নারী এবং ঘোড়ার মধ্যে।
ঘোড়ার হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৬.পরিচ্ছেদঃ ঘোড়ার বরকতের বর্ণনা
৩৫৭১. আনাস ইবনি মালিক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ বরকত ঘোড়ার ললাটে।
ঘোড়ার হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৭.পরিচ্ছেদঃ ঘোড়ার ললাটের চুল বানিয়ে দেওয়া
৩৫৭২. জারির [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন ঃ আমি রসূলুল্লাহ [সালল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] কে দেখেছি, তিনি ঘোড়ার ললাটের চুল তাহাঁর দুই আঙ্গুল দিয়ে বানিয়ে দিতেন এবং বলিতেনঃ কিয়ামত পর্যন্ত ঘোড়ার মাথায় খায়ের-বরকত বাঁধা থাকিবে, আর সে খায়ের-বরকত হলো সওয়াব এবং গনীমত।
ঘোড়ার হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৫৭৩. ইব্ন উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ ঘোড়ার ললাটে কিয়ামত পর্যন্ত খায়ের-বরকত নিবদ্ধ থাকিবে।
ঘোড়ার হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৫৭৪. উরওয়া বারিকী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ ঘোড়ার ললাটে কিয়ামত পর্যন্ত কল্যাণ ও মঙ্গল নিবদ্ধ থাকিবে।
ঘোড়ার হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৫৭৫. উরওয়া ইব্ন আবু জাআদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি নাবী [সাঃআঃ] -কে বলিতে শুনেছেনঃ কিয়ামত পর্যন্ত ঘোড়ার ললাটে মঙ্গল ও কল্যাণ নিবদ্ধ থাকিবে, আর তা হলো সওয়াব ও গনীমত।
ঘোড়ার হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৫৭৬. উরওয়া [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমি রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] কে বলিতে শুনেছিঃ কিয়ামত পর্যন্ত ঘোড়ার ললাটে খায়ের-বরকত নিবদ্ধ থাকিবে, আর তা হলো সওয়াব ও গনীমত।
ঘোড়ার হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৫৭৭. উরওয়া ইবনি আবু জাআদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
নাবী [সাঃআঃ] থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ কিয়ামত পর্যন্ত ঘোড়ার ললাটে কল্যাণ ও মঙ্গল নিবদ্ধ থাকিবে, আর তা হলো সওয়াব ও গনীমত।
ঘোড়ার হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৮.পরিচ্ছেদঃ ঘোড়াকে যুদ্ধ কৌশল শিক্ষা দেয়া
৩৫৭৮. খালিদ ইবনি ইয়াযীদ জুহানী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ উকবা ইবনি আমির [রাঃআঃ]আমার নিকট দিয়ে যাওয়ার সময় বলিতেনঃ হে খালিদ! আমাদের সাথে চল, আমরা তীরন্দাযী করবো। একদিন আমি দেরী করলে তিনি বললেনঃ হে খালিদ! এসো, আমি তোমাকে এমন কথা অবহিত করব, যা আমাকে রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বলেছেন। আমি তাহাঁর কাছে গেলে তিনি বললেনঃ রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বলেছেন, আল্লাহ তা ৱআলা এক তীর দ্বারা তিন ব্যক্তিকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। [প্রথম,] তীর প্রস্তুতকারী যদি সে তীর তৈরি করার সময় নেক নিয়্যত রাখে; দ্বিতীয়, তীর নিক্ষেপকারী; তৃতীয়, তীর নিক্ষেপকারীকে তীর সরবরাহকারী [তীরে ফলা সংযোগকারী]। নাবী [সাঃআঃ] আরো বলেছেনঃ তোমরা তীর নিক্ষেপ কর এবং আর আরোহণ কর, আর আরোহণ করার চেয়ে তীর নিক্ষেপ করা আমার নিকট অধিক পছন্দনীয়। আর তিন ধরনের খেলা ব্যতীত কোন খেলা গ্রহণযোগ্য নয়; ১. মানুষ কর্তৃক তার ঘোড়াকে যুদ্ধ কৌশল শিক্ষা দেয়া; ২. নিজ স্ত্রীর সাথে প্রেম খেলা করা; ৩. তীর এবং ধনুক দ্বারা তীর নিক্ষেপ করা। যে ব্যক্তি একবার তীর নিক্ষেপ করা শিক্ষা করে তার প্রতি অনীহার কারণে তা ছেড়ে দেয়, সে এক নিয়ামতের নাশোকরী করে। অথবা তিনি বলেছেনঃ সে যেন তা অস্বীকার করে।
ঘোড়ার হাদিস এর তাহকিকঃ জইফ হাদীস
৯.পরিচ্ছেদঃ ঘোড়ার দুআ
৩৫৭৯. আবু যর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আরবী ঘোড়াকে প্রতি ভোর রাতে দুটো দুআ করার অনুমতি দেয়া হয়ঃ
হে আল্লাহ্! যে মানুষের হাতে তুমি আমাকে সোপর্দ করেছ, আমাকে তার নিকট তার মালের এবং তার পরিবারের মধ্যে অধিক প্রিয় করে দাও, অথবা তিনি বলেছেনঃ তার মালের এবং পরিবারের অধিক প্রিয়দের মধ্য হইতে করে দাও।
أَخْبَرَنَا عَمْرُو بْنُ عَلِيٍّ، قَالَ: أَنْبَأَنَا يَحْيَى، قَالَ: حَدَّثَنَا عَبْدُ الْحَمِيدِ بْنُ جَعْفَرٍ، قَالَ: حَدَّثَنِي يَزِيدُ بْنُ أَبِي حَبِيبٍ، عَنْ سُوَيْدِ بْنِ قَيْسٍ، عَنْ مُعَاوِيَةَ بْنِ حُدَيْجٍ، عَنْ أَبِي ذَرٍّ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ” مَا مِنْ فَرَسٍ عَرَبِيٍّ إِلَّا يُؤْذَنُ لَهُ عِنْدَ كُلِّ سَحَرٍ بِدَعْوَتَيْنِ: اللَّهُمَّ خَوَّلْتَنِي مَنْ خَوَّلْتَنِي مِنْ بَنِي آدَمَ وَجَعَلْتَنِي لَهُ، فَاجْعَلْنِي أَحَبَّ أَهْلِهِ وَمَالِهِ إِلَيْهِ «أَوْ» مِنْ أَحَبِّ مَالِهِ وَأَهْلِهِ إِلَيْهِ “
ঘোড়ার হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১০.পরিচ্ছেদঃ গাধাকে ঘোড়ার উপর চড়ানোর ব্যাপারে কঠোর আপত্তি
৩৫৮০. আলী ইবনি আবু তালিব [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] – কে একটি খচ্চর হাদিয়া দেয়া হল। তিনি তাতে সওয়ার হলে আলী [রাঃআঃ]বললেনঃ যদি আমরা [প্রজননের উদ্দেশ্যে] গাধাকে ঘোড়ার উপর চড়াই, তাহলে আমাদের নিকট এরূপ হইবে [খচ্চর জন্ম নেবে]। তখন রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বললেনঃ এরূপ কাজ তারাই করে, যারা অজ্ঞ।
ঘোড়ার হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৫৮১. আবদুল্লাহ্ ইবনি উবায়দুল্লাহ ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ [একদা] আমি ইবনি আব্বাস [রাঃ]- এর নিকট ছিলাম, তখন এক ব্যক্তি তাহাঁর নিকট জিজ্ঞেস করলোঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কি জুহর এবং আসরে কিরাআত পড়তেন? তিনি বললেনঃ [পড়তেন] না। সে ব্যক্তি বললঃ হয়তো মনে মনে পড়তেন। তিনি বললেনঃ তোমার মাথা, এ তো প্রথম অপেক্ষা মন্দ। রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] আল্লাহর বান্দা ছিলেন। আল্লাহ তাআলা তাঁকে যা আদেশ করিয়াছেন, তিনি তা পৌঁছে দিয়েছেন, আল্লাহর কসম! তিনি আমাদেরকে বিশেষ কিছু বলেন নি, কিন্তু আমাদেরকে তিনটি কাজের নির্দেশ দিয়েছেনঃ ১. আমরা যেন পূর্ণরূপে উযূ করি, ২. আমরা যেন সাদকার মাল না খাই, আর ৩. আমরা যেন গাধাকে ঘোড়ার উপর না চড়াই।
ঘোড়ার হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১১.পরিচ্ছেদঃ ঘোড়াকে ঘাস ও দানাপানি খাওয়ানো
৩৫৮২. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর ঈমান রেখে এবং তাহাঁর ওয়াদাকে সত্য জেনে আল্লাহর পথে ঘোড়া বাঁধবে, তবে তার [ঘোড়ার] ঘাস খাওয়া, পানি পান, পেশাব ও পায়খানা করা তার পাল্লায় পুণ্যরূপে যুক্ত হইবে।
{১} ইয্মার বলা হয়- ঘোড়াকে খাওয়ানোর কারণে মোটাতাজা হওয়ার পর, খাদ্য-পানীয় কমিয়ে দিয়ে হাল্কা-পাতলা শরীরবিশিষ্ট করার মাধ্যমে তাকে প্রশিক্ষণ দেয়া ও তার দেহ গঠন করাকে।ঘোড়ার হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১২.পরিচ্ছেদঃ যে ঘোড়ার ইয্মার১ করা হয়নি, সে ঘোড়ার দৌড়ের শেষ প্রান্ত
৩৫৮৩. ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
বলেনঃ রাসূলুলাহ্ [সাঃআঃ] ঘোড় দৌড় করিয়েছেন। হাফ্য়া নামক স্থান হইতে ঘোড়া ছেড়ে দেন যাহার শেষ সীমা ছিল সানিয়াতুল বিদা পর্যন্ত। আর তিনি যে ঘোড়ার ইয্মার করা হয়নি সেগুলোর দৌড় করিয়েছিলেন সানিয়া হইতে বনী যুরায়ক মসজিদ পর্যন্ত।
ঘোড়ার হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৩.পরিচ্ছেদঃ প্রতিযোগিতার জন্য ঘোড়াকে ইয্মার করা
৩৫৮৪. ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রাসূলুলাহ্ [সাঃআঃ] ঐ সকল ঘোড়ার মধ্যে ঘোড়দৌড় করান, যেগুলোর ইয্মার করা হইয়াছিল। আর তার সীমানা ছিল হাফ্য়া হইতে সানিয়াতুল বিদা পর্যন্ত। তিনি [সাঃআঃ] ঐ সকল ঘোড়ার জন্য যাদের ইয্মার করা হয়নি, সানিয়া হইতে বনী যুরায়কের মসজিদ পর্যন্ত দৌড়ের ব্যবস্থা করেন। আবদুল্লাহ্ [রাঃআঃ]ঐ ঘোড়দৌড়ে শরীক ছিলেন।
ঘোড়ার হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৪.পরিচ্ছেদঃ প্রতিযোগিতা
৩৫৮৫. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তীর, ঘোড়া এবং উট ব্যতীত আর কিছুতে প্রতিযোগিতা নেই।
ঘোড়ার হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৫৮৬. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তীর, উট এবং ঘোড়া ব্যতীত আর কিছুতে প্রতিযোগিতা নেই।
ঘোড়ার হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৫৮৭. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
উট এবং ঘোড়া ব্যতীত আর কিছুতে প্রতিযোগিতা বৈধ নয়।
ঘোড়ার হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৫৮৮. আনাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] -এর আয্বা নামক একটি উটনী ছিল, যা প্রতিযোগিতায় কখনও পরাজিত হতো না। হঠাৎ আরবের এক গ্রাম্য লোক একটি জোয়ান উটের উপর সওয়ার হইয়া আসে এবং তা প্রতিযোগিতায় [আয্বার] চেয়ে অগ্রগামী হইয়া যায়, যা মুসলমানদের জন্য অতি কষ্টের কারণ হয়। রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] লোকদের চেহারার অবস্থা [বিষণ্ণতা] লক্ষ্য করলে, তারা বললেনঃ ইয়া রসূলুল্লাহ! আয্বা পিছে পড়ে গেল! তিনি বললেনঃ আল্লাহ যখন কোন বস্তুকে উঁচুতে উঠান, তখন তিনি তাকে [একবারের জন্য হলেও] নীচু করে থাকেন।
ঘোড়ার হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৫৮৯. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
নাবী [সাঃআঃ] থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ উট ও ঘোড়া ব্যতীত অন্য কিছুতে প্রতিযোগিতা নেই।
{১} জালাব বলা হয় – ঘোড় দৌড় প্রতিযোগিতায় আরোহী তার ঘোড়াকে দ্রুত চলার জন্য এর পেছনে কোন লোককে নিয়োগ করে, যে তাকে উত্তেজিত করিতে থাকে।
ঘোড়ার হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৫.পরিচ্ছেদঃ জালাব {১} প্রসঙ্গে
৩৫৯০. ইমরান ইবনি হুসায়ন [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
নাবী [সাঃআঃ] থেকে, তিনি বলেছেনঃ ইসলামে জালাব, জানাব ও শিগার নেই। আর যে ব্যক্তি লুন্ঠন করে, সে আমাদের দলভুক্ত নয়।
ঘোড়ার হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৬.পরিচ্ছেদঃ জানাব {১} সম্পর্কে
৩৫৯১. ইমরান ইবনি হুসায়ন [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ ইসলামে জালাব, জানাব এবং শিগার {২} নেই।
{২} শিগার বলা হয়- বিনিময়ে বিবাহ; যেমন যদি কেউ তার মেয়েকে কারো কাছে এ শর্তে বিয়ে দেয় যে, সে তার বোনকে মেয়ের মোহরানার বিনিময়ে তার কাছে বিয়ে দেবে।
ঘোড়ার হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৫৯২. আনাস ইবনি মালিক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] [এর উটনী] এক গ্রাম্য লোকের সাথে প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হয় এবং লোকটি অগ্রগামী [বিজয়ী] হয়। এতে সাহাবিগণ মনঃক্ষুণ্ণ হন এবং তাহাঁর নিকট এ বিষয়ে আলোচনা করা হলে তিনি বলেনঃ আল্লাহ তাআলার করণীয় এরূপ যে, কেউ নিজেকে উঁচুতে তুললে আল্লাহ তাকে নীচু করে দেন।
ঘোড়ার হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৭.পরিচ্ছেদঃ [গনীমতে] ঘোড়ার অংশ
৩৫৯৩. আব্বাদ ইবনি আব্দুল্লাহ ইবনি যুবায়র [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলিতেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] খায়বর যুদ্ধের পর যুবায়র ইবনি আওয়ামকে গণীমতের মাল থেকে চার অংশ দেন। এক অংশ তাহাঁর নিজের, এক অংশ যুবায়রের মাতা সাফ্য়্যা বিন্ত আব্দুল মুত্তালিবের- নিকটাত্মীয়ের অংশরূপে এবং দুই অংশ ঘোড়ার জন্য।
ঘোড়ার হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান হাদীস
Leave a Reply