গীবত করা [পরচর্চায়] অংশগ্রহণ করা হারাম।

গীবত করা [পরচর্চায়] অংশগ্রহণ করা হারাম।

গীবত করা [পরচর্চায়] অংশগ্রহণ করা হারাম। >> রিয়াদুস সালেহীন  হাদিস শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন >> নিম্নে রিয়াদুস সালেহীন হাদিস শরীফ এর একটি পরিচ্ছেদের হাদিস পড়ুন

পরিচ্ছেদ – ২৫৫ : গীবত করা [পরচর্চায়] অংশগ্রহণ করা হারাম। যার নিকট গীবত করা হয় তার উচিত গীবতকারীর তীব্র প্রতিবাদ করা এবং তার সমর্থন না করা। আর তাতে সক্ষম না হলে স‎ম্ভব হলে উক্ত সভা ত্যাগ করে চলে যাওয়া

মহান আল্লাহ বলেছেন, ﴿ وَإِذَا سَمِعُواْ ٱللَّغۡوَ أَعۡرَضُواْ عَنۡهُ ٥٥ ﴾ [القصص: ٥٥]  

 “ওরা যখন অসার বাক্য শ্রবণ করে তখন ওরা তা পরিহার করে চলে।” [সূরা কাসাস ৫৫ আয়াত]

তিনি আরও বলেন, ﴿ وَٱلَّذِينَ هُمۡ عَنِ ٱللَّغۡوِ مُعۡرِضُونَ ٣ ﴾ [المؤمنون : ٣]   

অর্থাৎ যারা অসার ক্রিয়া-কলাপ হইতে বিরত থাকে। [সূরা মুমিনূন ৩ আয়াত]

তিনি অন্যত্র বলেছেন, ﴿إِنَّ ٱلسَّمۡعَ وَٱلۡبَصَرَ وَٱلۡفُؤَادَ كُلُّ أُوْلَٰٓئِكَ كَانَ عَنۡهُ مَسۡ‍ُٔولٗا ٣٦ ﴾ [الاسراء: ٣٦]

  অর্থাৎ নিশ্চয় কর্ণ, চক্ষু ও হৃদয় ওদের প্রত্যেকের নিকট কৈফিয়ত তলব করা হইবে। [সূরা বনী ইসরাঈল ৩৬ আয়াত]

তিনি অন্য জায়গায় বলেছেন,

﴿ وَإِذَا رَأَيۡتَ ٱلَّذِينَ يَخُوضُونَ فِيٓ ءَايَٰتِنَا فَأَعۡرِضۡ عَنۡهُمۡ حَتَّىٰ يَخُوضُواْ فِي حَدِيثٍ غَيۡرِهِۦۚ وَإِمَّا يُنسِيَنَّكَ ٱلشَّيۡطَٰنُ فَلَا تَقۡعُدۡ بَعۡدَ ٱلذِّكۡرَىٰ مَعَ ٱلۡقَوۡمِ ٱلظَّٰلِمِينَ ٦٨ ﴾ [الانعام: ٦٨] 

অর্থাৎ তুমি যখন দেখ, তারা আমার নিদর্শন সম্বন্ধে ব্যঙ্গ আলোচনায় মগ্ন হয়, তখন তুমি দূরে সরে পড়; যে পর্যন্ত না তারা অন্য প্রসঙ্গে আলোচনায় প্রবৃত্ত হয় এবং শয়তান যদি তোমাকে ভ্রমে ফেলে, তাহলে স্মরণ হওয়ার পরে তুমি অত্যাচারী সম্প্রদায়ের সাথে বসবে না। [সূরা আন‘আম ৬৮ আয়াত]

1/1536 وَعَنْ أَبِي الدَّردَاءِ رضي الله عنه عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ: «مَنْ رَدَّ عَنْ عِرْضِ أَخِيهِ، رَدَّ اللهُ عَنْ وَجْهِهِ النَّارَ يَومَ القيَامَةِ» . رواه الترمذي، وقال :[ حديث حسن ]

১/১৫৩৬। আবূ দারদা রাঃআঃ হইতে বর্ণিত, নবী সাঃআঃ সাঃআঃ বলেছেন, ‘‘যে ব্যক্তি তার মুসলিম ভাইয়ের সম্ভ্রম রক্ষা করিবে, কিয়ামতের দিনে আল্লাহ তা’আলা জাহান্নামের আগুন থেকে তার চেহারাকে রক্ষা করবেন।’’ [তিরমিযী- হাসান] [1]

2/1437 وَعَنْ عِتبَانَ بنِ مَالكٍ رضي الله عنه فِي حَدِيثِهِ الطَّوِيلِ المَشْهُورِ الَّذِيْ تَقَدَّمَ فِي بَابِ الرَّجَاءِ قَالَ: قَامَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي فَقَالَ: «أَيْنَ مَالِكُ بنُ الدُّخْشُمِ ؟» فَقَالَ رَجُلٌ : ذَلِكَ مُنَافِقٌ لاَ يُحِبُّ اللهَ وَلاَ رَسُولَهُ، فَقَالَ النَّبِيّ صلى الله عليه وسلم  : «لاَ تَقُلْ ذَلِكَ أَلاَ تَراهُ قَدْ قَالَ: لاَ إِلٰهَ إِلاَّ اللهُ يُريدُ بِذَلكَ وَجْهَ اللهِ ! وإنَّ الله قَدْ حَرَّمَ عَلَى النَّارِ مَنْ قَالَ: لاَ إِلٰهَ إِلاَّ اللهُ يَبْتَغي بِذَلِكَ وَجْهَ اللهِ» . متفق عَلَيْهِ

২/১৫৩৭। ইতবান ইবনি মালিক রাঃআঃ হইতে বর্ণিত, যা বিগত ‘আল্লাহর প্রতি আশা’ পরিচ্ছেদে বর্ণিত একটি সুদীর্ঘ হাদিসের অংশ বিশেষ। তিনি বলেন, একদা নবী সাঃআঃ নামায পড়ানোর উদ্দেশ্যে উঠে দাঁড়িয়ে বলিলেন, ‘‘মালেক ইবনি দুখ্শুম কোথায়!’’ একটি লোক বলে উঠল, ‘সে তো একজন মুনাফিক; আল্লাহ ও তাহাঁর রসূলকে ভালবাসে না।’ নবী সাঃআঃ বলিলেন, ‘‘ও কথা বলো না। তুমি কি মনে কর না যে, সে [কালিমাহ] লা ইলাহা ইল্লাল্লাহপড়েছে এবং সে তার দ্বারা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করিতে চায়? যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করার উদ্দেশ্যে [কালিমাহ] ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলে, আল্লাহ তার উপর জাহান্নামের আগুন হারাম করে দেন।’’ [বুখারী, মুসলিম] [2]

3/1538 وَعَنْ كَعْبِ بنِ مَالِكٍ رضي الله عنه فِي حَدِيثِهِ الطَّوِيلِ فِي قِصَّةِ تَوْبَتِهِ وَقَدْ سَبَقَ فِي بَابِ التَّوبَةِ. قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم  وَهُوَ جَالِسٌ فِي القَومِ بِتَبُوكَ : «مَا فَعَلَ كَعْبُ بنُ مَالِكٍ ؟» فَقَالَ رَجُلٌ مِنْ بَنِي سَلِمَةَ: يَا رَسُولَ اللهِ! حَبَسَهُ بُرْدَاهُ وَالنَّظَرُ فِي عِطْفَيْهِ . فَقَالَ لَهُ مُعاذُ بنُ جَبَلٍ: بِئْسَ مَا قُلْتَ، وَاللهِ يَا رَسُولَ اللهِ مَا عَلِمنَا عَلَيْهِ إِلاَّ خَيْراً، فَسَكَتَ رَسُول اللهِ صلى الله عليه وسلم . متفقٌ عَلَيْهِ ৩/১৫৩৮। কা’ব ইবনি মালেক রাঃআঃ হইতে বর্ণিত, যা তাওবাহ পরিচ্ছেদে ২২ নম্বরে সুদীর্ঘ হাদিস তাহাঁর তাওবার কাহিনী অতিবাহিত হয়েছে, তিনি বলেন, তাবূক পৌঁছে যখন নবী সাঃআঃ লোকদের মাঝে বসে ছিলেন, তখন আমার ব্যাপারে বলিলেন, ‘‘কা’ব বিন মালেকের কি হয়েছে?’’ বানু সালেমাহ [গোত্রের] একটি লোক বলে উঠল যে, ‘হে আল্লাহর রসূল! তার দুই চাদর এবং দুই পার্শ্ব [বাহু] দর্শন [অর্থাৎ ধন ও তার অহংকার] তাকে আটকে দিয়েছে।’ [এ কথা শুনে] মু‘আয ইবন জাবাল রাঃআঃ বলিলেন, ‘‘তুমি নিকৃষ্ট কথা বললে। আল্লাহর কসম! হে আল্লাহর রসূল! আমরা তাকে ভালই জানি।’’ সুতরাং আল্লাহর রসূল সাঃআঃ নীরব থাকলেন। [বুখারী, মুসলিম] [3]


[1] তিরমিযী ১৯৩১, আহমাদ ২৬৯৮৮, ২৬৯৯৫

[2] সহীহুল বুখারী ৭৭, ১৮৯, ৪২৪, ৪২৫, ৬৬৭, ৬৮৬, ৮৩৮, ৮৪০, ১১৮৬, ৪০১০, ৫৪০১, ৬৩৫৪, ৬৪২২, ৬৯৩৮, মুসলিম ৩৩, আবূ দাউদ ১৪১১, ইবনু মাজাহ ৬৬০, ৭৫৪, আহমাদ ২৩১০৯, ২৩১২৬

[3] সহীহুল বুখারী ২৭৫৮, ২৯৮৭- ২৯৫০, ৩০৮৮, ৩৫৫৬, ৩৮৮৯, ৩৯৫১, ৪৪১৮, ৪৬৭৭, ৪৬৭৩, ৪৬৭৬, ৪৬৭৭, ৪৬৭৮, ৬২৫৫, ৬৬৯০, ৭২২৫, মুসলিম ২৭৬৯, তিরমিযী ৩১০২, নাসায়ী ৩৮২৪- ৩৮২৬, আবূ দাউদ ২২০২, ৩৩১৭, ৩৩১৯, ৩৩২১, ৪৬০০, আহমাদ ১৫৩৪৩, ১৫৩৪৫, ১৫৩৫৪, ২৬৬২৯, ২৬৬৩৪, ২৬৬৩৭

Comments

2 responses to “গীবত করা [পরচর্চায়] অংশগ্রহণ করা হারাম।”

Leave a Reply