খুতবা শোনা ও দেওয়ার নিয়ম- জুমুআহর নামায কোন সূরাহ পাঠ করিবে

খুতবা শোনা ও দেওয়ার নিয়ম- জুমুআহর নামায কোন সূরাহ পাঠ করিবে

খুতবা শোনা ও দেওয়ার নিয়ম- জুমুআহর নামায কোন সূরাহ পাঠ করিবে >>আবুদ দাউদ শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন

অধ্যায়ঃ ২, অনুচ্ছেদঃ ২২৬-২৪৪ =১৯টি

অনুচ্ছেদ-২২৬ খুত্ববাহ দেয়ার সময় কারো সাথে ইমামের কথা বলা
অনুচ্ছেদ-২২৭ মিম্বারে উঠে ঈমাম বসবেন
অনুচ্ছেদ-২২৮ দাঁড়িয়ে খুত্ববাহ দেয়া
অনুচ্ছেদ-২২৯ ধনুকের উপর ভর দিয়ে খুত্ববাহ দেয়া
অনুচ্ছেদ-২৩০ মিম্বারের উপর অবস্থানকালে দুহাত উপরে উঠানো
অনুচ্ছেদ-২৩১ খুত্ববাহ সংক্ষেপ করা
অনুচ্ছেদ-২৩২ খুত্ববাহর সময় ইমামের কাছাকাছি বসা
অনুচ্ছেদ-২৩৩ বিশেষ কারণে ইমামের খুত্ববাহয় বিরতি দান
অনুচ্ছেদ-২৩৪ ইমামের খুত্ববাহ দেয়ার সময় কাপড় জড়িয়ে বসা সম্পর্কে
অনুচ্ছেদ-২৩৫ খুত্ববাহর সময় (মুসাল্লীদের) কথা বলা সম্পর্কে
অনুচ্ছেদ-২৩৬ উযু নষ্ট হলে ইমামের অনুমতি নেয়া
অনুচ্ছেদ-২৩৭ ইমামের খুত্ববাহ দেয়ার সময় কেউ মাসজিদে এলে
অনুচ্ছেদ-২৩৮ জুমুআহর দিন লোকজনের ঘাড় টপকিয়ে সামনে যাওয়া
অনুচ্ছেদ-২৩৯ ইমামের খুত্ববাহ দানকালে কারো তন্দ্রা আসলে
অনুচ্ছেদ-২৪০ খুত্ববাহ শেষে মিম্বার থেকে নেমে ইমামের কথা বলা
অনুচ্ছেদ-২৪১ কেউ এক রাকআত জুমুআহর নামায পেলে
অনুচ্ছেদ-২৪২ জুমুআহর নামায কোন সূরাহ পাঠ করিবে ?
অনুচ্ছেদ-২৪৩ ঈমাম ও মুক্তাদীর মাঝে প্রাচীর থাকাবস্থায় ইক্বতিদা করা
অনুচ্ছেদ-২৪৪ জুমুআহর ফরয নামাজের পর সুন্নত নামায

অনুচ্ছেদ-২২৬ খুতবা দেয়ার সময় কারো সাথে ইমামের কথা বলা

১০৯১.জাবির ইবনিআবদুল্লা (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) এক জুমুআহর দিনে খুত্বনাহ দেয়ার উদ্দেশ্য মিম্বারে উঠে বলিলেন, সবাই বসে পড়ো।আবদুল্লা ইবনি মাসউদ (রাঃআঃ) একথা শুনে তাৎক্ষণিক মাসজিদের দরজাতেই বসে পড়েন। রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) তাকে দেখে বললেনঃ ওহেআবদুল্লা ইবনি মাসউদ তুমি এগিয়ে এসো।

সহিহ।

ঈমাম আবু দাউদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, এটি মুরসাল হাদিস হিসাবে পরিচিত। বর্ণনাকারীরা এটিআত্বা (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে নাবী (সাঃআঃ) এর সূত্রে বর্ণনা করিয়াছেন। আর বর্ণনাকারী মাখলাদ একজন শায়খ।

খুতবা শোনা -হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-২২৭ মিম্বারে উঠে ঈমাম বসবেন

১০৯২. ইবনি উমার (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) জুমুআহইতে দুটি খুতবা প্রদান করতেন। প্রথমে তিনি মিম্বরে উঠে মুয়াযযিন আযান শেষ না করা পর্যন্ত বসে থাকতেন, অতঃপর ঊঠে দাঁড়িয়ে (প্রথম) খুতবা দিতেন, তারপর বসতেন এবং কোন কথা না বলে আবার দাঁড়াতেন এবং (দ্বিতীয়) খুতবা দিতেন।

সহীহঃ বোখারি ও মুসলিম সংক্ষেপে।

খুতবা শোনা -হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-২২৮ দাঁড়িয়ে খুতবা দেয়া

১০৯৩. জাবির ইবনি সামুরাহ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) দাঁড়িয়ে (প্রথম) খুতবা দিতেন, অতঃপর বসতেন এবং আবার উঠে দাঁড়িয়ে (দ্বিতীয়) খুতবা দিতেন। কেউ যদি তোমাকে বলে তিনি বসে খুতবা দিতেন, সে মিথ্যা বলেছে। জাবির বলেন, আল্লাহর শপথ ! আমি রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর সাথে দুই হাজারের অধিক সংখ্যক ওয়াক্তের নামায আদায় করেছি। {১০৯৩}

হাসানঃ মুসলিম।

হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

১০৯৪. জাবির ইবনি সামুরাহ্‌ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) জুমুআহর নামাজে দুটি খুতবা দিতেন এবং দু খুতবার মাঝখানে বসতেন। তিনি খুতবায় কুরআন পড়তেন এবং লোকদের উপদেশ দিতেন। {১০৯৪}

হাসানঃ মুসলিম।

হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

১০৯৫. জাবির ইবনি সামুরাহ্‌ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি নাবী (সাঃআঃ)-কে দাঁড়িয়ে খুতবা দিতে দেখেছি। তিন (দু খুতবার মাঝে) কিছুক্ষণ বসতেন কিন্তু কোন কথা বলিতেন না। অতঃপর উপরোক্ত হাদিসের অনুরূপ।

হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

অনুচ্ছেদ-২২৯ ধনুকের উপর ভর দিয়ে খুতবা দেয়া

১০৯৬.শুআইব ইবনি রুযাইক্ব আত-ত্বায়িফী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর এক সহাবীর নিকট বসা ছিলাম, যার নাম আল-হাকাম ইবনি হাযন আল-কুলাফী। তিনি আমাদের নিকট হাদিস বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, আমি সাত আট সদস্যবিশিষ্ট প্রতিনিধি দলের সপ্তম বা অষ্টমজন হিসেবে রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর নিকট যাই এবং তাহাঁর সামনে উপস্থিত হয়ে বলি, হে আল্লাহর রসূল ! আমরা আপনার সাক্ষাত পেয়েছি। আপনি মহান আল্লাহর নিকট আমাদের কল্যাণের জন্য দুআ করুন। তখন তিনি কিছু খেজুর দ্বারা আমাদের মেহমানদারী করতে আদেশ করিলেন। সে সময় (মুসলিমদের) অবস্থা ছিল অত্যান্ত করুণ। আমরা বেশ কয়েকদিন (মাদীনাহ্‌তে) অবস্থান করলাম। এ সময় আমরা রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর সাথে জুমুআহর নামাযও আদায় করেছি। জুমুআহর খুত্ববাহ্য় রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) একটি লাঠি অথবা ধনুকের উপর ভর দিয়ে পবিত্র বারকাতপূর্ণ কথার দ্বারা আল্লাহর প্রশংসা করেন এবং তাহাঁর কতক হালকা, উত্তম ও পবিত্র গুণাবলো বর্ণনা করেন। অতঃপর বলেনঃ হে জনগণ ! তোমাদেরকে যা কিছুর আদেশ দেয়া হয়েছে সে সবের প্রতিটি নির্দেশই তোমরা অক্ষরে অক্ষরে পালম করতে সক্ষম হইবে না। কাজেই তোমরা নিজেদেরআমলের উপর অটল থাকো এবং সুসংবাদ প্রদান করো। {১০৯৬}

হাসান।

আবুআলী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, আমি ঈমাম আবু দাউদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি)-কে বলিতে শুনিয়াছি, আমার কতিপয় বন্ধু এ হাদিসের অংশ বিশেষ আমাকে স্মরণ করিয়ে দেন।

হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

১০৯৭. আবদুল্লা ইবনি মাসউদ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) খুতবা দেয়ার সময় বলিতেন, “আলহামদু লিল্লা-হি নাস্‌তাঈনুহু, ওয়া নাসতাগফিরুহু ওয়া নাউযু বিল্লা-হি মিন শুরুরি আনফুসিনা মাঁই ইয়াহদিহিল্লাহু ফালা মুদিল্লা লাহু ওয়া মাই ইউদ্‌লিল ফালা হা-দিয়া লাহু। ওয়া আশ্‌হাদু আল-লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়া আশ্‌হাদু আন্না মুহাম্মাদানআবদুহু ওয়া রসূলুহ। আরসালাহু বিলহাক্বক্বি বাশিরাও অয়া নাযীরা বাইনা ইয়াদাইস্‌ সাআহ। মাঁই ইউত্বিইল্লা-হা ওয়া রসূলুহু ফাক্বাদ রাশাদা ওয়া মাঁই ইয়াসিহিমা ফাইন্নাহু লা ইয়াদুররু ইল্লা নাফসাহু ওয়ালা ইয়াদুররুল্লা-হা শাইয়া”। (সকল প্রশংসা আল্লাহর। আমরা তাহাঁর কাছে সাহায্য ও ক্ষমা চাই। আমারা আমাদের নিজেদের নাফ্‌সের ক্ষতি হইতে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাই। আল্লাহ যাকে হিদায়াদ দেন কেউ তাকে পথভ্রষ্ট করতে পারে না। আর আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করেন তাকে কেউ হিদায়াত করতে পারে না। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন ইলাহ নাই। আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ তাহাঁর বান্দা ও রসূল। মহান আল্লাহ তাঁকে ক্বিয়ামাতের পূর্বে সত্য দ্বীনসহ সুসংবাদ দাতা ও ভীতি প্রদর্শনকারী হিসেবে পাঠিয়েছেন। যে ব্যাক্তি আল্লাহ ও তাহাঁর রসূলুলের অনুগত্য করে সে সঠিক পথে রহিয়াছে। আর যে ব্যাক্তি আল্লাহ তাহাঁর রসূলের অবাধ্য হয় সে তো নিজেরই ক্ষতি সাধন করে, সে আল্লাহর কোন ক্ষতি করতে পারে না)। {১০৯৭}

হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

১০৯৮. ইউনুস (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি ইবনি শিহাব (র)-কে জুমুআহর দিনে রসূলুল্লাহর (সাঃআঃ)-এর খুতবা প্রদান সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি উপরোক্ত হাদিসের অনুরূপ বর্ণনা করেন। তিনি অতিরিক্ত ভাবে বর্ণনা করেনঃ “ওয়া মাঁই ইয়াসিহিমা ফাক্বাদ গাওয়া ওয়া নাসআলুল্লা-হা রব্বানা ইয়াজতানিবু সাখাতাহু ফাইন্নামা নাহ্‌নু বিহি ওয়া লাহু”। (অর্থঃ এবং যে আল্লাহ ও তাহাঁর রসূলের অবাধ্য হয়ে সে পথভ্রষ্ট। আর আমরা আমাদের রব আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি তিনি যেন আমাদেরকে তাহাঁদের অন্তর্ভুক্ত করেন যারা আল্লাহ ও তাহাঁর রসূলের আনুগত্য করে, তাহাঁর সন্তুষ্টি অন্বেষন করে এবং অসন্তুষ্টির পথ পরিহার করে। কারণ আমরা তারই সাথে এবং তারই জন্য (বা আমরা তাহাঁরই জন্য সৃষ্টি হয়েছি এবং তাহাঁরই এখতিয়ারভুক্ত)। {১০৯৮}

{১০৯৮}- এর পূর্বেরটি দেখুন।vcহাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

১০৯৯. আদী ইবনি হাতিম (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

জনৈক বক্তা রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর সামনে বক্তব্য পেশ করতে গিয়ে বললোঃ মাঁই ইউতিয়িল্লাহা ওয়া রসূলুহু ফাক্বাদ রশাদা ওয়া মাঁই ইয়াসিহিমা”। “যে আল্লাহ ও তাহাঁর রসূলের আনুগত্য করলো সে সঠিক পথ পেলো। আর যে তাঁদের নাফরমানী করলো”। একথা শুনে রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বললেনঃ তুমি চলে যাও। তুমি অতিশয় নিকৃষ্ট বক্তা।

সহীহঃ মুসলিম।

খুতবা শোনা -হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১১০০. হারিস ইবনিন নুমান (রাঃআঃ) এর মেয়ের হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) এর মুখ হইতে শুনে সূরাহক্বাফ মুখস্ত করেছি। সূরাটি তিনি প্রতি জুমুআহর খুতবাইতে পাঠ করতেন। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) এর চুলা এবং আমাদের চুলা এক জায়গাতে ছিলো।

সহীহঃ মুসলিম।

খুতবা শোনা -হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১১০১. জাবির ইবনি সামুরাহ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর নামায ছিলো নাতিদীর্ঘ এবং তাহাঁর খুতবাও ছিলো নাতিদীর্ঘ। তিনি খুতবার মধ্যে কুরআনের কিছু আয়াত পাঠ করতেন এবং লোকদের উপদেশ দিতেন। {১১০১}

হাসানঃ মুসলিম।

হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

১১০২. আমরাহ বিনতুআবদুর রহমান (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে তার বোনের হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর মুখ থেকে শুনে শুনে সূরাহক্বাফ মুখস্ত করেছি। তিনি প্রত্যেক জুমুআহর খুতবায় সূরাহ ক্বাফ তিলায়াত করতেন।

সহীহঃ মুসলিম।

খুতবা শোনা -হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১১০৩. আমরাহ্ বিনতুআবদুর রহমান (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) তার এক বোন যিনি তার বযোজ্যেষ্ঠ ছিলেন- সূত্র হইতে বর্ণিতঃ

পূর্বোক্ত হাদিসের অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেন।

হাদিসের তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

অনুচ্ছেদ-২৩০ মিম্বারের উপর অবস্থানকালে দুহাত উপরে উঠানো

১১০৪. হুসাইন ইবনিআবদুর রহমান (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন,উমারাহ ইবনি রুওয়াইবাহ (রাঃআঃ) দেখেন যে, বিশর ইবনি মারওয়ান (জুমুআহর দিন খুতবাকালে) দুআ করছেন। তখনউমারাহ ইবনি রুওয়াইবাহ (রাঃআঃ) বলিলেন, আল্লাহ তোমার এ হাত দুটিকে কুৎসিত করুন। যায়িদাহ বলেন, হুসাইন ইবনিআবদুর রহমান বলেছেন,উমারাহ ইবনি রুওয়াইবাহ (রাঃআঃ) আমার কাছে বর্ণনা করিয়াছেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ)-কে মিম্বরের উপর এর চাইতে অধিক কিছু করতে দেখিনি অর্থাৎ তিনি বৃদ্ধাঙ্গুলির পাশের শাহাদাত অঙ্গুলি দ্বারা ইশারা করা ব্যাতীত অন্য কিছুই করতেন না।

সহীহঃ মুসলিম।

খুতবা শোনা -হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১১০৫. সাহুল ইবনি সাদ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) কে মিম্বরে অবস্থানকালে অথবা অন্যত্র কখনো হাত উঠাতে দেখিনি। তবে আমি দেখেছি যে, তিনি মধ্যমা ও বৃদ্ধাঙ্গুলি মিলিয়ে শাহাদাত অঙ্গুলি দিয়ে ইশারা (করে দুআ) করতেন। {১১০৫}

হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

অনুচ্ছেদ-২৩১ খুতবা সংক্ষেপ করা

১১০৬. আম্মার ইবনি ইয়াসির (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) আমাদেরকে খুতবা সংক্ষিপ্ত করার আদেশ দিয়েছেন।

খুতবা শোনা -হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১১০৭. জাবির ইবনি সামুরাহ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) জুমুআহর দিনে উপদেশ (ওয়াজ) দীর্ঘ করতেন না, বরং তা কয়েকটি সংক্ষিপ্ত বাক্য হতো মাত্র।

হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

অনুচ্ছেদ-২৩২ খুতবার সময় ইমামের কাছাকাছি বসা

১১০৮. সামুরাহ ইবনি জুনদুব (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ তোমরা নসীহইতের সময় উপস্থিত থাকিবে এবং ইমামের নিকটবর্তী হইবে। কারণ যে ব্যাক্তি সর্বদা (উপদেশ হইতে) দূরে থাকে সে জান্নাতবাসী হলে জান্নাতেও বিলম্বে যাবে।

হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

অনুচ্ছেদ-২৩৩ বিশেষ কারণে ইমামের খুতবায় বিরতি দান

১১০৯. আবদুল্লা ইবনি বুরাইদাহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে তার পিতার হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একদা রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) আমাদের সামনে খুতবা দিচ্ছিলেন। এমন সময় শিশু হাসান ও হুসাইন লাল রংয়ের জামা পরিহিত অবস্থায় আছাড় খেতে খেতে এগিয়ে এলে নাবী (সাঃআঃ) খুতবা বন্ধ করে মিম্বার হইতে নেমে তাহাঁদেরকে নিয়ে এসে মিম্বারে উঠে বললেনঃ আল্লাহ সত্যই বলেছেন, “তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তানাদী ফিতনাহ স্বরূপ” (সূরাহ তাগাবুনঃ আয়াত ১৫)। আমি এ দুজনকে দেখে ধৈয্য ধারণ করতে পারিনি। অতঃপর তিনি খুতবা দিতে লাগলেন।

খুতবা শোনা -হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-২৩৪ ইমামের খুতবা দেয়ার সময় কাপড় জড়িয়ে বসা সম্পর্কে

১১১.সাহল ইবনি মুআয ইবনি আনাস (রাঃআঃ) হইতে তার পিতার হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) জুমুআহর দিন ইমামের খুতবা চলাকালে কাউকে হাঁটু উপরে উঠিয়ে কাপড় জড়িয়ে বসতে নিষেধ করিয়াছেন।

হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

১১১১. ইয়ালা ইবনি শাদ্দাদ ইবনি আওস (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি মুআবিয়াহ (রাঃআঃ) এর সাথে বাইতুল মুকাদ্দাসে উপস্থিত ছিলাম। তিনি আমাদের সাথে জুমুআহর নামায আদায় করিলেন। আমি দেখলাম, মাসজিদে উপস্থিত অধিকাংশ লোকই নাবী (সাঃআঃ)-এর সহাবী এবং ইমামের খুতবা চলাবস্থায় তারা সকলেই হাঁটু উপরে উঠিয়ে কাপড় জড়িয়ে বসে আছেন। {১১১১}

দূর্বল। ঈমাম আবু দাউদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, ইমামের খুতবা প্রদানের সময়আবদুল্লা ইবনি উমারও (রাঃআঃ) জড়িয়ে বসতেন। আনাস ইবনি মালিক, শুরাইহ্‌, সাসাআ ইবনি সূহান, সাঈদ ইবনিল মুসায়্যিব, ইবরাহীম নাখয়ী, মাকহূল, ইসমাঈল ইবনি মুহাম্মাদ ইবনি সাদ এবং সুআইম ইবনি সুলামাহ প্রমুখের মতে, ইমামের খুতবা চলাবস্থায় গুটিসুটি মেরে বসাতে কোন দোষ নেই। এগুলো তাহাঁদের সূত্রে মুত্তাসিল কে করলো তা আমি পাইনি। ঈমাম আবু দাউদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন,উবাদাহ ইবনি নুসাই ব্যাতীত অন্য কেউ এরূপ বসা অপছন্দনীয় বলিতেন বলে আমার জানা নাই। হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য

অনুচ্ছেদ-২৩৫ খুতবার সময় (মুসাল্লীদের) কথা বলা সম্পর্কে

১১১২. আবু হুরাইরাহ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ ইমামের খুতবা চলাকালে যদি তুমি কাউকে বলো চুপ করো, তবে তুমি অনর্থক কাজ করলে।

সহীহঃ বোখারি ও মুসলিম।

খুতবা শোনা -হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১১১৩. আবদুল্লা ইবনি আমর (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ মাসজিদে জুমুআহর নামাজে তিন ধরনের লোক এসে থাকে। এক শ্রেণীর লোক জুমুআহয় উপস্থিত হয়ে অনর্থক কথা ও কাজে লিপ্ত হয়। সে তারআমল অনুসারেই তার অংশ পাবে। আরেক শ্রেণীর লোক জুমুআহুয় এসে দুআ করে, মহান ও সর্বশক্তিমান আল্লাহর নিকট প্রার্থণা করে। তিনি ইচ্ছে করলে তাহাঁদের দুআ কবুল করতে পারেন অথবা নাও করতে পারেন। আরেক শ্রেণীর লোক জুমুআহয় উপস্থিত হয়ে চুপচাপ থাকে, কোন মুসলিমের ঘাড় ডিঙ্গিয়ে যায় না এবং কাউকে কষ্ট দেয় না। এই কাজ গুলো ঐ ব্যাক্তির জন্য ঐ জুমুআহ হইতে পরবর্তী জুমুআহ পর্যন্ত এবং অতিরিক্ত আরো তিনদিন পর্যন্ত গুনাএর কাফফারা হইবে কেননা মহান ও সর্বশক্তিমান আল্লাহ বলেছেন, “যে ব্যাক্তি একটি নেকীর কাজ করিবে বিনিময়ে তাকে তার দশ গুন সওয়াব দেয়া হইবে” (সূরাহ আল-আনআমঃ ১৬০)।

হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

অনুচ্ছেদ-২৩৬ উযু নষ্ট হলে ইমামের অনুমতি নেয়া

১১১৪. আয়েশা (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ নামাজের মধ্যে তোমাদের কারো উযু নষ্ট হলে সে যেন তার নাক চেপ ধরে বেরিয়ে যায়।

খুতবা শোনা -হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-২৩৭ ইমামের খুতবা দেয়ার সময় কেউ মাসজিদে এলে

১১১৫. জাবির ইবনিআবদুল্লা (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

এক জুমুআহয় নাবী (সাঃআঃ) এর খুতবা চলাকালে এক ব্যাক্তি মাসজিদে প্রবেশ করলে তিনি তাকে জিজ্ঞেস করলেনঃ হে অমুক! তূমি কি (তাহিয়্যাতুল মাসজিদের দু রাকআত নফল) নামায আদায় করেছো? সে বললো, না। নাবী (সাঃআঃ) বললেনঃ উঠো, নামায আদায় করে নাও।

সহীহঃ বোখারি ও মুসলিম।

খুতবা শোনা -হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১১১৬. জাবির ও আবু হুরাইরাহ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তারা বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) জুমুআহর খুতবা দিচ্ছিলেন, এমন সময় সুলাইক আল-গাতাফানী (রাঃআঃ) মাসজিদে এলে তিনি তাকে জিজ্ঞেস করলেনঃ তুমি কিছু নামায আদায় করেছো কি? তিনি বলিলেন, না। রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বললেনঃ সংক্ষেপে দু রাকআত নামায আদায় করে নাও।

সহীহঃ মুসলিম।

খুতবা শোনা -হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১১১৭. ত্বালহা (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি জাবির ইবনিআবদুল্লা (রাঃআঃ)-কে বলিতে শুনেছেন, সুলাইক আল-গাতাফানী (রাঃআঃ) মাসজিদে এলেন। অতঃপর পূর্বোক্ত হাদিসের অনুরূপ। তবে এতে রয়েছেঃ রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) লোকদের দিকে ঘুরে বললেনঃ তোমাদের কেউ ঈমামমের খুতবা চলাবস্থায় এলে সে যেন সংক্ষেপে দু রাকাআত নামায আদায় করে নেয়।

সহীহঃ মুসলিম।

খুতবা শোনা -হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-২৩৮ জুমুআহর দিন লোকজনের ঘাড় টপকিয়ে সামনে যাওয়া

১১১৮. আবুয্ যাহিরিয়্যাহ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একদা জুমুআহর দিনে আমরা নাবী (সাঃআঃ)-এর সহাবীআবদুল্লা ইবনি বুসর (রাঃআঃ) এর সাথে ছিলাম। এমন সময় এক ব্যক্তি এসে লোকদের ঘাড় ডিঙ্গিয়ে সামনে অগ্রসর হচ্ছিল।আবদুল্লা ইবনি বুসর (রাঃআঃ) বলিলেন, একদা জুমুআহর দিন এক ব্যক্তি লোকদের ঘাড় ডিঙ্গিয়ে অগ্রসর হচ্ছিল। নাবী (সাঃআঃ) তখন খুতবা দিচ্ছিলেন। নাবী (সাঃআঃ) বললেনঃতুমি বসো, তুমি লোকদের কষ্ট দিয়েছো।

খুতবা শোনা -হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-২৩৯ ইমামের খুতবা দানকালে কারো তন্দ্রা আসলে

১১১৯. ইবনি উমার (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ)-কে বলিতে শুনিয়াছি ঃ মাসজিদের মধ্যে তোমাদের কারো তন্দ্রা এলে সে যেন তার স্থান পরির্বতন করে অন্যত্র বসে।

খুতবা শোনা -হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-২৪০ খুতবা শেষে মিম্বার থেকে নেমে ইমামের কথা বলা

১১২০. আনাস ইবনি মালিক (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি দেখেছি যে, একদা রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) খুতবা শেষে মিম্বার হইতে অবতরণ করার পর এক ব্যক্তি নিজ প্রয়োজনে তাহাঁর সামনে এসে হাজির হলো। তিনি (সাঃআঃ) লোকটির প্রয়োজন পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তার সাথেই দাঁড়িয়ে থাকলেন অতঃপর নামাজে দাঁড়ালেন।

ঈমাম আবু দাউদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, সাবিত সূত্রে হাদিসটি পরিচিত নয়। এটি জরীর ইবনি হাযিমের একক বর্ণনা।

দুর্বলঃ সহিহ হচ্ছে হাদিস নং ২০১।

হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

অনুচ্ছেদ-২৪১ কেউ এক রাকআত জুমুআহর নামায পেলে

১১২১.আবু হুরাইরাহ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি (জামআতে এক রাকআত নামায পেলো সে যেন পুরো নামাযই পেয়ে গেলো।

সহীহঃ বোখারি ও মুসলিম।

হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-২৪২ জুমুআহর নামায কোন সূরাহ পাঠ করিবে ?

১১২২.নুমান ইবনি বাশীর (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) দুই ঈদের নামায এবং জুমুআহর নামাযসাব্বিহিস্মা রব্বিকাল আলা ওহাল আতা-কা হাদীসুল গা-শিয়াহ” সূরাহদ্বয় তিলাওয়াত করতেন। নুমান ইবনি বাশীর (রাঃআঃ) বলেন, ঈদ ও জুমুআহ একই দিনে হলে তখনও তিনি এ দুটি সূরাহ পাঠ করতেন।

সহিহঃ মুসলিম।

হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১১২৩. দাহ্হাক ইবনি ক্বায়িস (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

নুমান ইবনি বাশীর (রাঃআঃ)–কে জিজ্ঞেস করিলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) জুমুআহর দিন সূরাহজুমুআহ তিলাওয়াতের পর কোন সূরাহ পাঠ করতেন? তিনি বলেন, তিনি সূরাহ “হাল আতা-কা-হাদীসুল গা-শিয়াহ” তিলাওয়াত করতেন।

সহিহঃ মুসলিম।

হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১১২৪. বনি আবু রাফি (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একদা আবু হুরাইরা (রাঃআঃ) আমাদের সাথে জুমুআহর নামায আদায় করিলেন। তিনি (প্রথম রাকআতে) সূরাহ জুমুআহ পড়লেন এবং দ্বিতীয় রাকআতে সূরাহইযা জা-আকাল মুনা-ফিকূর” তিলাওয়াত করিলেন। ইবনি আবু রাফি (রাঃআঃ) বলেন, আমি আবু হুরাইরা (রাঃআঃ) নামায শেষে প্রত্যাবর্তন কালে আমি তাকে গিয়ে বললাম, আপনি এমন দুটি সূরাহ পাঠ করিয়াছেন যাআলী (রাঃআঃ) কুফাতে পাঠ করতেন। আবু হুরাইরা (রাঃআঃ) বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ)-কে জুমুআহর দিন (জুমুআহর নামায) এ দুটি সূরাহ তিলাওয়াত করতে শুনিয়াছি।

সহিহঃ মুসলিম।

হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১১২৫. সামুরাহ ইবনি জুনদব (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) জুমুআহর নামাযসাব্বিহিসমি রব্বিকাল আলা এবংহাল আতা-কা হাদীসুল গা-শিয়াহ” সূরাহদ্বয় পাঠ করতেন।

হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-২৪৩ ঈমাম ও মুক্তাদীর মাঝে প্রাচীর থাকাবস্থায় ইক্বতিদা করা

১১২৬. আয়েশা (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) তাহাঁর হুজ্রাতে নামায আদায় করছিলেন আর লোকজন হুজরার বাইরে পেছনের দিক থেকে তাহাঁর ইকতিদা করছিলো।

সহিহঃ বোখারি, এর চেয়ে পরিপূর্ণ।

হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-২৪৪ জুমুআহর ফরয নামাজের পর সুন্নত নামায

১১২৭. নাফি (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

একদাআবদুল্লা ইবনি উমার (রাঃআঃ) এক ব্যক্তিকে জুমুআহর দিন (জুমুআহর নামায শেষে) একই জায়গায় দাঁড়িয়ে দু রাকআত নামায আদায় করতে দেখে তাকে বাঁধা দিয়ে বলিলেন, তুমি জুমুআহর নামায চার রাকআত আদায় করিবে নাকি?আবদুল্লা ইবনি উমার রা. জুমুআহর দিন বাড়িতে ফিরে দু রাকআত সুন্নাত নামায আদায় করতেন এবং বলিতেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) এরূপ করিয়াছেন।

সহিহঃ বোখারি ও মুসলিম, তার থেকে মারফুভাবে।

হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১১২৮. নাফি (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ইবনি উমার (রাঃআঃ) জুমুআহর নামাজের পূর্বে দীর্ঘক্ষণ নামায আদায় করতেন এবং বলিতেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) এরূপ করিয়াছেন।

সহিহঃ বোখারি ও মুসলিম, তার থেকে মারফুভাবে।

হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১১২৯. উমার ইবনিআত্বা ইবনি আবুল খুওয়াব (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

নাফি ইবনি জুবায়ির (রাঃআঃ) তাকেউমার (রাঃআঃ) এর ভাগ্নে আস-সায়িব ইবনি ইয়াযীদের নিকট এটা জানার জন্য পাঠালেন যে, আমীর মআবীয়াহ নামায আপনাকে কী করতে দেখেছিলেন। আস-সায়িব ইবনি ইয়াযীদ (রাঃআঃ) বলেন, একদা আমি মুআবীয়াহ (রাঃআঃ) এর সাখে মিহরাবের মধ্যে জুমুআহর নামায আদায় করলাম। সালাম ফিরিয়ে আমি একই স্থানে দাঁড়িয়ে (সু্ন্নত) নামায আদায় করলাম। ঘরে পৌঁছে তিনি লোক মারফত আমাকে বলিলেন, তুমি (আজ) যা করেছো এরূপ আর কখনো করিবে না। জুমুআহর নামায আদায়ের পর কোন কথা না বলে কিংবা মসজিদ হইতে বের না হয়ে সেখানে পুনরায় নামায আদায় করিবে না। কেননা নাবী (সাঃআঃ) আদেশ করিয়াছেন যে, কথা না বলে কিংবা মসজিদ হইতে বের না হওয়া পর্যন্ত এক নামাজের সাথে আরেক নামায মিলানো যাবে না।

সহিহঃ মুসলিম।

হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১১৩০. আত্বা (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

ইবনি উমার (রাঃআঃ) সম্পর্কে বর্ণনা করেন যে, তিনি মাক্কাহ্য় অবস্থানকালে জুমুআহর (ফরয) নামায আদায়ের পর সামনে এগিয়ে (স্থান পরির্বতন করে) দু রাকআত নামায আদায় করতেন। অতঃপর আবার সামনে এগিয়ে (স্থান পরির্বতন করে) চার রাকআত নামায আদায় করতেন। কিন্তু তিনি মদিনায় অবস্থানকালে জুমুআহর (ফরয) নামাজের পর মাসজিদে নামায আদায় না করে বাড়িতে এসে দু রাকআত নামায আদায় করতেন। তাঁকে এর কারণ জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) এরূপ করতেন।

হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১১৩১. আবু হুরাইরাহ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেন, কেউ জুমুআহর (ফরয) নামাজের পর নামায আদায় করতে চাইলে সে যেন চার রাকআত আদায় করে। ইবনি ইউনুসের বর্ণনায় রহিয়াছে, জুমুআহর নামায আদায়ের পরে তোমরা চার রাকআত নামায আদায় করিবে। তিনি বলেন, আমার পিতা আমাকে বলেছেন, হে বৎস! তুমি মাসজিদে দুরাকআত (সুন্নাত) আদায়ের পর গন্তব্যে পৌছলে অথবা বাড়িতে এলে সেখানেও দু রাকআত নামায আদায় করিবে।

সহীহঃ মুসলিম।

হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১১৩২. ইবনি উমার (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) জুমুআহর (ফরয) নামায আদায়ের পর ঘরে ফিরে দু রাকআত নামায আদায় করতেন।

সহীহঃ মুসলিম। বোখারি অর্থগতভাবে। এটি গত হয়েছে হাদিস ১১২৭ নং।

হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১১৩৩. আত্বা (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি ইবনি উমার (রাঃআঃ)-কে জুমুআহর নামাজের পর নামায আদায় করতে দেখেছেন। তিনি (ইবনি উমার) জুমুআহর (ফরয) নামায আদায়ের স্থান থেকে বেশী নয় বরং একটু সরে গিয়ে দু রাকআত নামায আদায় করতেন। বর্ণনাকারীআত্বা বলেন, অতঃপর সেখান থেকে একটু সরে গিয়ে চার রাকআত নামায আদায় করতেন। হাদিসের বর্ণনাকারী ইবনি জুরায়িজ বলেন, আমিআত্বাকে জিজ্ঞেস করলাম, আপনি ইবনি উমার (রাঃআঃ)-কে কতবার এরূপ করতে দেখেছেন? তিনি বলিলেন, কয়েকবার।

হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস


Posted

in

by

Comments

Leave a Reply