খাদ্যদ্রব্য । খাওয়া শুরুর সময় উভয় হাত ধোয়া

খাদ্যদ্রব্য । খাওয়া শুরুর সময় উভয় হাত ধোয়া

খাদ্যদ্রব্য । খাওয়া শুরুর সময় উভয় হাত ধোয়া , এই অধ্যায়ে হাদীস ১১৯ টি (৩৭৩৬ – ৩৮৫৪) >>আবুদ দাউদ শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন

অধ্যায় – ২৮ঃ খাদ্যদ্রব্য, অনুচ্ছেদঃ ১-৫৫=৫৫টি, হাদীসঃ(৩৭৩৬-৩৮৫৪)=১১৯টি

অনুচ্ছেদ-১ঃ দাওয়াত কবুল করা
অনুচ্ছেদ-২ঃ বিয়ের ওয়ালীমা অনুষ্ঠান করা উত্তম
অনুচ্ছেদ-৩ঃ ওয়ালীমা কয়দিন আয়োজন করা যাবে
অনুচ্ছেদ-৪ঃ সফর হইতে ফিরে এসে আহারের আয়োজন
অনুচ্ছেদ-৫ঃ মেহমানদারী সম্পর্কে
অনুচ্ছেদ-৬ঃ অন্যের সম্পদ অন্যায়ভাবে ভোগ রহিত হওয়া সম্পর্কে
অনুচ্ছেদ-৭ঃ দুই প্রতিযোগীর দাওয়াতে অংশগ্রহন না করা সম্পর্কে
অনুচ্ছেদ-৮ঃ মেহমান অবাঞ্ছিত কিছু দেখলে
অনুচ্ছেদ-৯ঃ দুই দাওয়াতদাতা একত্রে এলে কে অগ্রাধিকার পাবে
অনুচ্ছেদ-১০ঃ ইশার সলাত ও রাতের খাবার একত্রে উপস্থিত হলে
অনুচ্ছেদ-১১ঃ খাওয়া শুরুর সময় উভয় হাত ধোয়া
অনুচ্ছেদ-১২ঃ আহারের পূর্বে হাত ধোয়া
অনুচ্ছেদ-১৩ঃ তাড়াহুড়ার সময় হাত না ধুয়ে আহার করা
অনুচ্ছেদ-১৪ঃ খাদ্যদ্রব্যের সমালোচনা করা অপছন্দনীয়
অনুচ্ছেদ-১৫ঃ একসঙ্গে খাওয়া
অনুচ্ছেদ-১৬ঃ খাওয়ার সময় আল্লাহ্‌র নাম নেয়া
অনুচ্ছেদ-১৭ঃ হেলান দিয়ে খাওয়া সম্পর্কে
অনুচ্ছেদ-১৮ঃ পাত্রের উপরিভাগ হইতে খাওয়া সম্পর্কে
অনুচ্ছেদ-১৯ঃ যে দস্তরখানে কিছু অপছন্দনীয় খাবার থাকে সেখানে বসে খাওয়া সম্পর্কে
অনুচ্ছেদ-২০ঃ ডান হাতে খাওয়া
অনুচ্ছেদ-২১ঃ গোশত খাওয়া
অনুচ্ছেদ-২২ঃ লাউ খাওয়া
অনুচ্ছেদ-২৩ঃ সারীদ খাওয়া
অনুচ্ছেদ-২৪ঃ কোন খাদ্যের প্রতি ঘৃণা পোষণ অপছন্দনীয়
অনুচ্ছেদ-২৫ঃ জাল্লালা ও তার দুধ পান নিষেধ
অনুচ্ছেদ-২৬ঃ ঘোড়ার গোশত খাওয়া সম্পর্কে
অনুচ্ছেদ-২৭ঃ খরগোশের গোশত খাওয়া সম্পর্কে
অনুচ্ছেদ-২৮ঃ গুইসাপ খাওয়া সম্পর্কে
অনুচ্ছেদ-২৯ঃ হুবারার গোশত [দ্রুত দৌড়াতে পারে এমন বৃহদাকার পাখি] খাওয়া সম্পর্কে
অনুচ্ছেদ-৩০ঃ কীট-পতঙ্গ ও গর্তের প্রাণী
অনুচ্ছেদ-৩১ঃ যেসব জিনিসের ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা আসেনি
অনুচ্ছেদ-৩২ঃ হায়েনার গোশত খাওয়া সম্পর্কে
অনুচ্ছেদ-৩৩ঃ হিংস্র প্রাণী খাওয়া সম্পর্কে
অনুচ্ছেদ-৩৪ঃ গৃহপালিত গাধার গোশত খাওয়া সম্পর্কে
অনুচ্ছেদ-৩৫ঃ পঙ্গপাল খাওয়া সম্পর্কে
অনুচ্ছেদ-৩৬ঃ ভেসে আসা মৃত মাছ খাওয়া সম্পর্কে
অনুচ্ছেদ-৩৭ঃ যে ব্যক্তি মৃত প্রানী খেতে বাধ্য হয়
অনুচ্ছেদ-৩৮ঃ দুই রং-এর খাদ্য একত্র করা সম্পর্কে
অনুচ্ছেদ-৩৯ঃ পনীর খাওয়া
অনুচ্ছেদ-৪০ঃ সিরকা সম্পর্কে
অনুচ্ছেদ-৪১ঃ রসুন খাওয়া সম্পর্কে
অনুচ্ছেদ-৪২ঃ খেজুর সম্পর্কে
অনুচ্ছেদ-৪৩ঃ পোকায় ধরা খেজুর পরীক্ষা করে খাওয়া
অনুচ্ছেদ-৪৪ঃ খাওয়ার সময় একত্রে দুটি খেজুর নেয়া
অনুচ্ছেদ-৪৫ঃ দু ধরনের বস্তু একত্রে মিশিয়ে খাওয়া
অনুচ্ছেদ-৪৬ঃ আহলে কিতাবের বাসনপত্র ব্যবহার সম্পর্কে
অনুচ্ছেদ-৪৭ঃ সমুদ্রে বিচরনশীল প্রানী সম্পর্কে
অনুচ্ছেদ-৪৮ঃ ঘি –এর মধ্যে ইদুরঁ পড়লে করনীয়
অনুচ্ছেদ-৪৯ঃ খাদ্যদ্রব্যে মাছি পড়লে করনীয়
অনুচ্ছেদ-৫০ঃ পতিত লোকমা
অনুচ্ছেদ-৫১ঃ মালিকের সাথে চাকরের খাদ্য গ্রহণ
অনুচ্ছেদ-৫২ঃ রুমাল ব্যবহার করা
অনুচ্ছেদ-৫৩ঃ খাওয়া শেষে যা বলিতে হয়
অনুচ্ছেদ-৫৪ঃ খাওয়া শেষে হাত ধোয়া
অনুচ্ছেদ-৫৫ঃ যিনি খাওয়ালেন খাওয়া শেষে তার জন্য দুআ করা

অনুচ্ছেদ-১ঃ দাওয়াত কবুল করা

৩৭৩৬. আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ তোমাদের কাউকে যদি ওয়ালীমার দাওয়াত দেয়া হয়, তবে সে যেন তাতে অংশগ্রহণ করে।

খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৩৭৩৭. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ … পূর্বের হাদিসের অনুরূপ। এতে রয়েছে ঃ সে সওম পালনরত না হলে যেন খায়, আর সওম পালনকারী হলে যেন [দাওয়াতদাতার জন্য] দুআ করে।

খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৩৭৩৮. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ তোমাদের কেউ তার ভাইকে দাওয়াত দিলে সে যেন তা কবুল করে, তা বিবাহ অনুষ্ঠান বা প্রীতিভোজ যাই হোক না কেন।

খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৩৭৩৯. নাফি [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] সূত্রে আইয়ূবের সনদ হইতে বর্ণীতঃ

অনুরূপ অর্থের হাদিস বর্ণিত।

আমি এটি সহিহ এবং যঈফেও পাইনি।

খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

৩৭৪০. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ যাকে দাওয়াত দেয়া হয়, সে যেন তাতে সাড়া দেয়, অতঃপর ইচ্ছা হলে খাবে, নতুবা বিরত থাকিবে।

খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৩৭৪১. আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ যাকে দাওয়াত দেয়ার পরও সে তা কবুল করলো না, সে আল্লাহ্ ও তাহাঁর রাসূলের নাফরমানি করলো। আর যে ব্যক্তি দাওয়াত ছাড়াই উপস্থিত হলো, সে চোর হয়ে ঢুকলো এবং লুটেরা হয়ে বের হলো। {৩৭৪১}

দুর্বল ঃ ইরওয়া [১৯৫৪], মিশকাত [৩২২২]। খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৩৭৪২. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলিতেন, নিকৃষ্টতম খাদ্য হলো ঐ বিবাহ অনুষ্ঠানের খাদ্য, যেখানে শুধু ধনীদের দাওয়াত দেয়া হয় এবং গরীবদের উপেক্ষা করা হয়। যে ব্যক্তি দাওয়াত প্রত্যাখ্যান করে সে আল্লাহ্ ও তাহাঁর রাসূলের নাফরমানি করে।

খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-২ঃ বিয়ের ওয়ালীমা অনুষ্ঠান করা উত্তম

৩৭৪৩. সাবিত [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, যাইনাব বিনতু জাহশের বিবাহের ঘটনা আনাস ইবনি মালিক [রাদি.]–এর নিকট আলাপ করা হলে তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যাইনাবের বিয়েতে যেভাবে ওয়ালীমা অনুষ্ঠান করেছেন, অন্য কোন স্ত্রীর বেলায় তাঁকে তদ্রূপ করিতে দেখিনি। তিনি একটি বকরী দিয়ে বিবাহ ভোজের ব্যবস্থা করেছেন।

খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৩৭৪৪. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ] সাফিয়্যাহ্ [রাদি.]-এর বিবাহে খেজুর ও ছাতু দিয়ে ওয়ালীমা করেছেন।

খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-৩ঃ ওয়ালীমা কয়দিন আয়োজন করা যাবে

৩৭৪৫. আবদুল্লাহ ইবনি উসমান আস-সাক্বাফী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে তার গোত্রের এক অন্ধ ব্যক্তির সূত্র হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ ওয়ালীমা অনুষ্ঠান বিবাহের প্রথম দিনে করা জরুরী, দ্বিতীয় দিনের অনুষ্ঠান উত্তম এবং তৃতীয় দিনের অনুষ্ঠান লোক শুনানো ও লোক দেখানোর জন্য। ক্বাতাদাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, আমাকে এক ব্যক্তি বলিয়াছেন, সাঈদ ইবনিল মুনাইয়্যাব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]–কে ওয়ালীমাতে প্রথম দিন দাওয়াত দেয়া হলে তিনি সাড়া দিলেন, দ্বিতীয় দিন দাওয়াত দেয়া হলেও কবুল করিলেন এবং তৃতীয় দিন দাওয়াত দেয়া হলে তিনি দাওয়াত কবুল করিলেন না। তিনি বলিলেন, এসব লোক মানুষকে দেখানোর জন্য এবং শুনানোর জন্য এসব করে থাকে।

দুর্বল ঃ ইরওয়া [১৯৫০]। খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৩৭৪৬. সাঈদ ইবনিল মুসাইয়্যাব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

ক্বাতাদাহ উল্লিখিত ঘটনা প্রসংগে বলেন, তৃতীয় দিনে দাওয়াত করা হলো কিন্তু তিনি তা কবুল করেননি এবং যে লোক তাহাকে দাওয়াত দিতে এসেছিল তিনি তার দিকে ঢিল ছুড়ে মারেন।

খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

অনুচ্ছেদ-৪ঃ সফর হইতে ফিরে এসে আহারের আয়োজন

৩৭৪৭. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] [তাবূকের সফর হইতে] মদিনায় ফিরে এসে একটি উট অথবা গরু যাবেহ করিলেন।

খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-৫ঃ মেহমানদারী সম্পর্কে

৩৭৪৮.আবু শুরাইহ্ আল-কাবী [রাদি.] সূত্র হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ  যে ব্যক্তি আল্লাহ ও আখিরাতের প্রতি ঈমান রাখে সে যেন তার মেহমানকে সম্মান করে। উত্তমরূপে মেহমানদারীর সীমা একদিন একরাত। মেহমানদারী তিনদিন। এরপর অতিরিক্ত দিনগুলোর মেহমানদারী সদাক্বাহ হিসাবে গণ্য। তিনদিন পর আপ্যায়নকারীর বাড়িতে তার বিনা অনুমতিতে মেহমানদের অবস্থান করা উচিৎ নয়। এতে সে বিরক্ত হইতে পারে। মালিক [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-কে প্রশ্ন করা হলো রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর বাণীঃ জাইযাহ একদিন ও একরাত-এর অর্থ কি? তিনি বলেন, কথাটির অর্থ হলো, মেহমানকে সম্মান প্রদর্শন, উপহার প্রদান ও তার নিরাপত্তা বিধান করা একদিন ও একরাত। আর আতিথ্য প্রদান হচ্ছে তিনদিন। {৩৭৪৮}

আবু শুরাইহ বর্ণিত হাদিসটি সহিহ। মালিক ইবনি আনাসের বর্ণনার সনদ সহিহ মাক্বতূ।

{৩৭৪৮} বুখারী, মুসলিম। খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ অন্যান্য

৩৭৪৯. আবু শুরাইহ্‌ আল-কাবী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ মেহমানদারীর সীমা তিন দিন। এর অতিরিক্ত দিনের আতিথ্য প্রদান সদাক্বাহ হিসেবে গণ্য।

খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান সহিহ

৩৭৫০.আবু কারীম [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ একরাত মেহমানদারী করা প্রত্যেক মুসলিমের কর্তব্য। যার আঙ্গিনায় মেহমান নামে, একদিন মেহমানদারী করা তার উপর ঋণ পরিশোধের সমান। সে ইচ্ছা করলে তার ঋণ পরিশোধ করিবে বা ত্যাগ করিবে।

খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৩৭৫১. আল-মিক্বদাম আবু কারীমাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ কোন ব্যক্তি কোন সম্প্রদায়ের নিকট মেহমান হয়ে এলো, [অথচ] বঞ্চিত অবস্থায় তার সকাল হলো, তাহাকে সাহায্য করা প্রত্যেক মুসলিমের কর্তব্য। তাহাদের খাদ্য ও মাল হইতে সে তার রাতের মেহমানদারীর পরিমাণ আদায় করে নিতে পারে। {৩৭৫১}

দুর্বল ঃ মিশকাত [৪২৪৭]। {৩৭৫১} দারিমী, আহমাদ। সানাদে সাঈদ ইবনি আবু মুহাজির অজ্ঞাত। যেমন রয়েছে আত-তাক্বরীব গ্রন্থে। খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৩৭৫২. উক্ববাহ ইবনি আমির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, একদা আমরা বলিলাম, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি আমাদেরকে বাইরে প্রেরণ করে থাকেন। আমরা কোন জনপদে গিয়ে যাত্রাবিরতি করি। তারা আমাদের মেহমানদারী করে না। এ বিষয়ে আপনি কি বলেন? রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদেরকে বলিলেনঃ তোমরা যদি কোন সম্প্রদায়ের নিকট অবতরণ করার পর তারা নিজেদের সার্মথ‌্য মোতাবেক তোমাদের আপ্যায়ন করে তবে তোমরা তা গ্রহন করিবে। যদি তারা তা না করে, তবে তাহাদের কাছ হইতে তাহাদের সামর্থ্যের দিকে লক্ষ রেখে মেহমানের অধিকার আদায় করিবে।

খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-৬ঃ অন্যের সম্পদ অন্যায়ভাবে ভোগ রহিত হওয়া সম্পর্কে

৩৭৫৩. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

মহান আল্লাহর বাণীঃ “হে ঈমানদারগণ! তোমরা একে অন্যের সম্পদ অন্যায়ভাবে ভোগ করো না। তবে ব্যবসায়ের লেনদেন পরস্পরের সন্তুষ্টির ভিত্তিতে হওয়া আবশ্যক…..” [সূরাহ আন-নিসাঃ ২৯]। ইবনি আব্বাস [রাদি.] বলেন, এ আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার পর লোকেরা অন্য কারো বাড়িতে আতিথ্য গ্রহণ করা অন্যায় ভাবলো। অতঃপর সূরাহ আন-নূরের মাধ্যমে উপরের আয়াতের হুকুম রহিত করা হলো। মহান আল্লাহ বলেনঃ “এতে কোন দোষ নেই যে, কোন ব্যক্তি নিজেদের ঘর থেকে খাবে… আলাদা আলাদাভাবে খাও” [সূরাহ আন-নূরঃ ৬১] পর্যন্ত। এ আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার পূর্বে অবস্থা এরূপ ছিলো যে, কোন ধনী লোক কাউকে খাওয়ার দাওয়াত দিলে সে বলতো, আমি এর থেকে খাওয়া অন্যায় মনে করি। [আরবি] অর্থ আপত্তি। সে আরো বলতো, এ খাদ্যে আমার চেয়ে দরিদ্ররাই অধিক হকদার। এ প্রেক্ষিতে অন্য মুসলিমের বাড়িতে খাবার গ্রহণ বৈধ করা হয়, যার উপর আল্লাহর নাম নেয়া হয়েছে। আহলে কিতাবদের খাদ্যদ্রব্যও হালাল করা হয়েছে।

খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান হাদিস

অনুচ্ছেদ-৭ঃ দুই প্রতিযোগীর দাওয়াতে অংশগ্রহন না করা সম্পর্কে

৩৭৫৪. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] দুই প্রতিদ্বন্দী অহংকারকারীর খাদ্য গ্রহন করিতে নিষেধ করেছেন।

খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-৮ঃ মেহমান অবাঞ্ছিত কিছু দেখলে

৩৭৫৫. সাফীনাহ আবু আবদুর রহমান [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

একদা একটি লোক আলী ইবনি আবু ত্বালিব [রাদি.]-কে দাওয়াত করে তার জন্য খাদ্য তৈরি করে [বাড়িয়ে] দিয়ে গেলো। ফাত্বিমাহ [রাদি.] বলিলেন, আমরা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে ডাকলে তিনি আমাদের সঙ্গে আহার করিতেন। আলী [রাদি.] তাঁকে দাওয়াত দিলেন এবং তিনি এসে দরজার চৌকাঠের উপর নিজের হাত রাখলেন। তিনি একটি রঙ্গীন পর্দা ঘরের এক দিকে টানিয়ে রাখা, দেখিতে পেয়ে ঘরে প্রবেশ না করে ফিরে গেলেন। ফাত্বিমাহ [রাদি.] আলী [রাদি.] কে বলিলেন, গিয়ে দেখুন, তিনি কেন ফিরে যাচ্ছেন? সুতরাং আমি তাহাঁর অনুসরণ করলাম, আমি বলিলাম, হে আল্লাহর রাসূল! কিসে আপনাকে ফিরে আসতে বাধ্য করলো? তিনি বলেনঃ আমার জন্য বা কোন নাবীর জন্য কারুকার্য খচিত সজ্জিত ঘরে প্রবেশ করা সমীচীন নয়।

খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান হাদিস

অনুচ্ছেদ-৯ঃ দুই দাওয়াতদাতা একত্রে এলে কে অগ্রাধিকার পাবে

৩৭৫৬. হুমাইদ ইবনি আবদুর রহমান আল-হিম্যারী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে নাবী [সাঃআঃ] এর এক সাহাবীর সূত্র হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ দু ব্যক্তি একই সাথে দাওয়াত করলে তোমার বাড়ির নিকটতর ব্যক্তির দাওয়াত কবুল করিবে।কেননা বাড়ির নিকটবর্তী ব্যক্তি নিকটতর প্রতিবেশী। আর একজন অন্যজনের আগে দাওয়াত দিতে আসে তবে প্রথমে আসা ব্যক্তির দাওয়াত কবুল করিবে। {৩৭৫৬}

দুর্বল ঃ ইরওয়া [১৯৫১], মিশকাত [৩২২৩]। {৩৭৫৬} আহমাদ, বায়হাক্বী। সানাদে ইয়াযীদ ইবনি আবদুর রহমান, যার কুনিয়াত হলো আবু খালিদ দালানী তার সম্পর্কে হাফিয বলেনঃ তিনি প্রচুর ভুল করেন এবং তিনি ছিলেন তাদলীসকারী। খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

অনুচ্ছেদ-১০ঃ ইশার সলাত ও রাতের খাবার একত্রে উপস্থিত হলে

৩৭৫৭. আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ তোমাদের রাতের খাবার উপস্থিত করা হলে এবং ইশার সলাতের ইক্বামাত দেয়া হলে খাবার শেষ না করে সলাতে যাবে না। মুসাদ্দাদের বর্ণনায় রয়েছেঃ আবদুল্লাহ ইবনি উমারের রাতের খাবার পরিবেশন করা হলে বা রাতের খাবার আনা হলে তিনি আহার শেষ না করে কখনও সালাতের জন্য উঠতেন না। এমনকি ইক্বামাত বা ইমামের কিরাআত শুনতে পেলেও তিনি আহার শেষ না করা পর্যন্ত উঠতেন না।

খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৩৭৫৮. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ খাবারের জন্য বা অন্য কোন কারণে সলাতের জামাআত বিলম্বিত করা যাবে না। {৩৭৫৮}

দুর্বল ঃ মিশকাত [১০৭১]। {৩৭৫৮} বায়হাক্বী। সনদের মুহাম্মাদ ইবনি মাইমূন সম্পর্কে ঈমাম বুখারী, ঈমাম আবু দাউদ ও ঈমাম নাসায়ী বলেন ঃ মুনকারুল হাদিস। আবু হাতিম বলেন ঃ তার দ্বারা সমস্যা নেই। দারাকুতনী বলেন ঃ তিনি কিছুই না। ইবনি আদী বলেনঃ তার বেশি হাদিস নেই। যেমনটি এসেছে আত-তাহযীব গ্রন্থে। খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৩৭৫৯. আবদুল্লাহ ইবনি উবাইদ ইবনি উমাইর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি আবদুল্লাহ ইবনি যুবাইরের [রাদি.] সময় আমার পিতার সঙ্গে আবদুল্লাহ ইবনি উমারের [রাদি.] নিকট উপস্থিত ছিলাম। তখন আব্বাদ ইবনি আবদুল্লাহ ইবনিয যুবাইর বলিলেন, আমরা শুনিয়াছি, রাতে আহারকে সলাতের উপর [অর্থাৎ আগে খেয়ে নেয়ার] অগ্রাধিকার দেয়া হতো। আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] তাহাকে বলিলেন, তোমার জন্য দুঃখ হয়! তুমি কি মনে করেছ আগেকার লোকদের রাতের আহার তোমার পিতার রাতের আহারের অনুরূপ ছিল?

খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান হাদিস

অনুচ্ছেদ-১১ঃ খাওয়া শুরুর সময় উভয় হাত ধোয়া

৩৭৬০. আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

একদা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] টয়লেট থেকে বেরিয়ে এলে তাহাঁর সামনে খাবার উপস্থিত করা হলো। সাহাবীগণ বলিলেন, আপনার জন্য উযুর পানি নিয়ে আনবো কি? তিনি বলিলেনঃ আমাকে তো সলাতের জন্য উযু করার আদেশ দেয়া হয়েছে।

খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-১২ঃ আহারের পূর্বে হাত ধোয়া

৩৭৬১. সালমান [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি তাওরাতে পড়েছিঃ “খাবার শুরুর আগে উযু করার মধ্যেই খাবারের বরকত নিহিত।” আমি এ কথা নাবী [সাঃআঃ] এর নিকট বর্ণনা করলে তিনি বলেন খাদ্য গ্রহণের আগে ও পরে উযু করার [হাত ধোয়ার] মাধ্যে খাদ্যের বরকত নিহিত। সুফিয়ান [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] খাওয়ার পূর্বে উযু করা পছন্দ করিতেন না। ঈমাম আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, হাদিসটি যয়ীফ। {৩৭৬১}

দুর্বলঃ যঈফাহ [১৬৮] ,মিশকাত [৪২০৮]।{৩৭৬১} তিরমিজি, হাকিম, আহমাদ। ঈমাম তিরমিজি বলেনঃ আমি এটি ক্বাইসের হাদিস ব্যতীত অবহিত নই। ঈমাম হাকিম বলেনঃ এতে ক্বাইস একক হয়ে গেছেন। শেষ বয়সে তার স্মরণশক্তি পরিবর্তন হয়ে গিয়েছিল। ফলে তার ছেলে তার হাদিসে এমন কিছু ঢুকিয়ে দিয়ে হাদিস বর্ণনা করতো যা হাদিসে ছিল না। খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

অনুচ্ছেদ-১৩ঃ তাড়াহুড়ার সময় হাত না ধুয়ে আহার করা

৩৭৬২. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] পেশাব-পায়খানা সেরে গিরিপথ-থেকে নামলেন। আমাদের সামনে ঢালের উপর খেজুর রাখা ছিল। আমরা তাঁকে খেতে ডাকলে তিনি আমাদের সঙ্গে খেজুর খেলেন কিন্ত পানি স্পর্শ করিলেন না [হাত ধৌত করেননি]।

{৩৭৬২} আহমাদ, বায়হাক্বী। সানাদে আবু যুবাইর একজন মুদাল্লিস এবং তিনি এটি আন আন শব্দে বর্ণনা করেছেন। খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

অনুচ্ছেদ-১৪ঃ খাদ্যদ্রব্যের সমালোচনা করা অপছন্দনীয়

৩৭৬৩. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কখনও খাদ্যের দোষ বর্ণনা করিতেন না। রুচি হলে তিনি খেতেন, আর রুচি না হলে বাদ দিতেন।

খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-১৫ঃ একসঙ্গে খাওয়া

৩৭৬৪. ওয়াহশী ইবনি হারব হইতে পর্যায়ক্রমে তার পিতা ও দাদার সূত্র হইতে বর্ণীতঃ

একদা নাবী [সাঃআঃ] এর সাহাবীগণ বলিলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা খাবার খাই, কিন্ত পরিতৃপ্ত হইতে পারি না।তিনি বলিলেনঃ হয়ত তোমরা বিচ্ছিন্নভাবে খাও। তারা বলিলেন, হাঁ। তিনি বলিলেনঃ তোমরা একত্রে আহার করো এবং খাদ্য গ্রহণের সময় আল্লাহর নাম স্মরণ করো, তাহলে তোমাদের খাদ্যে বরকত দেয় হইবে। ঈমাম আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, যদি তোমাকে কোথাও দাওয়াত করা হয় এবং খাবার সামনে রাখা হয় তাহলে বাড়ির কর্তা অনুমতি না দেয়া পর্যন্ত খাওয়া শুরু করিবে না। {৩৭৬৪}

{৩৭৬৪} ইবনি মাজাহ, আহমাদ। খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান হাদিস

অনুচ্ছেদ-১৬ঃ খাওয়ার সময় আল্লাহ্‌র নাম নেয়া

৩৭৬৫. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি নাবী [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছেনঃ কোন ব্যক্তি তার ঘরে প্রবেশ ও খাদ্য গ্রহণের সময় আল্লাহর নাম নিলে শয়তান [তার সঙ্গীদের] বলে, রাতে এখানে তোমাদের থাকা-খাওয়ার কোন সুযোগ নেই। যখন কোন ব্যক্তি ঘরে প্রবেশের সময় আল্লাহর নাম নেয় না, তখন শয়তান বলে, তোমরা রাতে থাকার স্থান পেলে। সে যখন খাবার সময় আল্লাহর নাম স্মরণ করে না তখন শয়তান বলে, তোমরা রাতে থাকার জায়গা ও খাওয়ার দুটোর সুযোগই পেলে।

খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৩৭৬৬. হুযাইফাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমরা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর সঙ্গে খেতে বসলে রাসূলুল্লাহ্‌র [সাঃআঃ] খাওয়া আরম্ভ করার পূর্বে আমাদের কেউ খাদ্যের দিকে হাত বাড়াতো না। একদা আমরা তাহাঁর সাথে খেতে বসি। তখন এক বেদুঈন এমনভাবে দৌড়ে এলো যেন কেউ তাহাকে পিছন হইতে তাড়া করছে। সে খাওয়ার পাত্রে হাত দিতে যাচ্ছিল তখনই রাসূলূল্লাহ [সাঃআঃ] তার হাত ধরে ফেললেন। অতঃপর একটি বালিকা দৌড়িয়ে আসলো, যেন তাহাকেও কেউ পিছন হইতে তাড়া করছে। সেও খাদ্যের মধ্যে হাত ঢুকাতে যাচ্ছিল। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তার হাতও ধরে ফেললেন। তিনি বলিলেন, যে খাদ্য আল্লাহর নাম নিয়ে খাওয়া হয় না তাতে শয়তান শরীক করে। সে প্রথমে বেদুঈনকে নিয়ে এসেছিল তার সঙ্গে খাদ্যে অনুপ্রবেশ করিতে। আমি তার হাত ধরে ফেলি। ঐ সত্তার শপথ যাঁর হাতে আমার প্রাণ! শয়তানের হাত এখন এই দুজনের হাতের সাথে আমার হাতে মধ্যে বন্দী।

খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৩৭৬৭. আয়িশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ তোমাদের কেউ আহার করিতে বসলে যেন বিসমিল্লাহ বলে খাবার শুরু করে। সে যদি প্রথমে বিসমিল্লাহ বলিতে ভুলে যায় তবে যেন বলেঃ খাবারের শুরুতে আল্লাহর নাম শেষেও আল্লাহর নাম।

খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৩৭৬৮. উমাইয়্যাহ ইবনি মাখশী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সাহাবীদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বসা ছিলেন। তখন এক লোক খাচ্ছিল, কিন্তু আল্লাহর নাম নিয়ে খাওয়া শুরু করেনি। মাত্র এক লোকমা খাবার বাকি থাকতে সে তা মুখে দেয়ার সময় বললোঃ খাবারের শুরুতে ও শেষে বিসমিল্লাহ। তখন নাবী [সাঃআঃ] হেসে দিলেন এবং বলিলেনঃ শয়তান তার সঙ্গে খাচ্ছিল। যখন সে আল্লাহর নাম উচ্চারণ করলো, শয়তান তার পেটের খাবার বমি করে ফেলে দিলো। {৩৭৬৮}

দুর্বলঃ মিশকাত [৪২০৩]। {৩৭৬৮} নাসায়ী আমালুল ইয়াওমি ওয়াল রাইলাহ, আহমাদ, হাকিম। হাকিম বলেনঃ হাদিসের সনদ সহিহ। যাহাবী তার সাথে একমত পোষণ করেছেন। কিন্তু এতে প্রশ্ন রয়েছে। কেননা ঈমাম যাহাবী নিজেই মীযান গ্রন্থে সনদের মুসান্না ইবনি আবদুর রহমান সম্পর্কে বলিয়াছেনঃ তাহাকে চেনা যায়নি। তার সূত্রে জাবির ইবনি সুবহ এক হয়ে গেছেন। ইবনিল মাদানী বলেনঃ তিনি মাজহুল। সুতরাং সনদটি যয়ীফ। খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

অনুচ্ছেদ-১৭ঃ হেলান দিয়ে খাওয়া সম্পর্কে

৩৭৬৯. আলী ইবনিল আক্বমার [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি আবু জুহাইফাহ [রাদি.]-কে বলিতে শুনিয়াছি, নাবী [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ আমি আসনে বসে হেলান দিয়ে খাবার খাই না।

খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৩৭৭০. মুসআব ইবনি সুলাইম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি আনাস [রাদি.]-কে বলিতে শুনিয়াছি, নাবী [সাঃআঃ]-কে আমাকে কোন এক কাজে প্রের‌ণ করিলেন। আমি তাহাঁর নিকট ফিরে এসে দেখি তিনি বসে খেজুর খাচ্ছেন।

খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৩৭৭১. শুআইব ইবনি আবদুল্লাহ ইবনি আমর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে তার পিতার সূত্র হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে কখনো হেলান দিয়ে খাবার খেতে দেখা যায়নি এবং তাহাঁর পিছনে কখনো দুজন লোককে চলতে দেখা যায়নি।

খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-১৮ঃ পাত্রের উপরিভাগ হইতে খাওয়া সম্পর্কে

৩৭৭২. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ তোমাদের কেউ খাওয়ার সময় যেন পাত্রের মাঝখান হইতে না খায়, বরং যে যেন তার কিনারা হইতে খাওয়া শুরু করে। কেননা পাত্রের মাঝখানে বরকত নাযিল হয়।

খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৩৭৭৩. আবদুল্লাহ ইবনি বুস্‌র [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ]-এর একটি বড় কড়াই ছিল। তা চারজন লোক বহন করতো। পাত্রটির নাম ছিল গাররাআ। বেলা কিছুটা উপরে উঠলে এবং লোকেরা চাশতের সলাত আদায় শেষ হলে পাত্রটি নিয়ে আসা হলো। অর্থাৎ তাতে ঝোল মিশ্রিত রুটি ছিল। লোকেরা এর চারদিকে বসলো। লোকের আধিক্যের কারণে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] হাঁটু গেড়ে বসলেন। এক বেদুঈন বললো, এটা কিভাবে বসা হলো! নাবী [সাঃআঃ] বলিলেনঃ নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ আমাকে ভদ্র ও সম্মানিত বান্দা বানিয়েছেন। তিনি আমাকে অবাধ্য ও উচ্ছৃঙ্খল বানাননি। অতঃপর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেনঃ পাত্রের কিনারা হইতে খাও এবং মধ্যখান ছেড়ে দাও। এতে বরকত হইবে।

খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-১৯ঃ যে দস্তরখানে কিছু অপছন্দনীয় খাবার থাকে সেখানে বসে খাওয়া সম্পর্কে

৩৭৭৪. সালিম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে তার বাবার সূত্র হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] দুই জায়গায় আহার করিতে নিষেধ করেছেনঃ যে দস্তরখানে বসে মদ পান করা হয় এবং যেখানে উপুড় হয়ে বসে পেটের উপর ভর দিয়ে খাওয়া হয়। ঈমাম আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, এটা মুনকার হাদিস। জাফার ইবনি বুরকান হাদিসটি যুহরীর নিকট শুনেননি।

খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৩৭৭৫. জাফার [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] সূত্র হইতে বর্ণীতঃ

তার নিকট এ হাদিস যুহরীর সূত্রে পৌঁছেছে। {৩৭৭৫}

আমি এটি সহিহ এবং যঈফেও পাইনি।

{৩৭৭৫} এর পূর্বেরটি দেখুন। খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

অনুচ্ছেদ-২০ঃ ডান হাতে খাওয়া

৩৭৭৬. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ তোমাদের কেউ খাওয়ার সময় যেন তার ডান হাতে খায় এবং যখন পান করে তখনও যেন তার ডান হাতে পান করে। কেননা শয়তান তার বাম হাতে পানাহার করে।

খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৩৭৭৭. উমার ইবনি আবু সালামাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, একদা নাবী [সাঃআঃ] বলিলেনঃ আমার কাছে এসো, আল্লাহর নাম নাও, ডান হাতে খাও এবং তোমার সামনে থেকে খাও।

খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-২১ঃ গোশত খাওয়া

৩৭৭৮. আয়িশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ তোমরা ছুরি দিয়ে গোশত কেটে [খাবে] না। কেননা এটা অনারবদের রীতি, বরং তা দাঁত দিয়ে কামড়ে খাও। কারণ তা অধিক উপকারী ও স্বাস্থ্যকর। ঈমাম আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, হাদিসটি শক্তিশালী নয়। {৩৭৭৮}

দুর্বলঃ মিশকাত [৪২১৫]। {৩৭৭৮} বায়হাক্বী। সানাদে আবু মাশার যয়ীফ। খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৩৭৭৯. সাফওয়ান ইবনি উমাইয়্যাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, একদা আমি নাবী [সাঃআঃ] এর সঙ্গে আহার করছিলাম এবং হাঁড় থেকে গোশত ছিড়ে খাচ্ছিলাম। তখন তিনি বলিলেনঃ হাড়টি তুলে মুখে নাও এবং দাঁত দিয়ে কামড়ে খাও, কারণ তা অধিক উপকারী ও স্বাস্থ্যকর। ঈমাম আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, উসমান [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] সাফওয়ান [রাদি.] হইতে কিছু শুনেননি। এ বর্ণনাটি মুরসাল। {৩৭৭৯}

দুর্বলঃ যঈফাহ [২১৯৩]। {৩৭৭৯} বায়হাক্বী। আবু দাউদ বলেনঃ উসমান হাদিসটি সাফওয়ান থেকে শুনেননি। সুতরাং হাদিসটি মুরসাল। খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৩৭৮০. আবদুল্লাহ ইবনি মাসউদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহর [সাঃআঃ] নিকট সবচেয়ে প্রিয় গোশত ছিল ছাগলের হাড়ের গোশত।

খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৩৭৮১. ঈমাম আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

ঈমাম আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] একই সনদ বর্ণনা করেন যে, নাবী [সাঃআঃ] বাহুর গোশত অধিক পছন্দ করিতেন। বর্ণনাকারী বলেন, এই বাহুর গোশতেই বিষ মিশানো হয়েছিল। নাবী [সাঃআঃ] জানতেন, ইয়াহুদীরা এতে বিষ মিশিয়ে ছিল।

খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-২২ঃ লাউ খাওয়া

৩৭৮২. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, একদা এক দর্জি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে দাওয়াত করলো। সে তাহাঁর জন্য খাবার তৈরী করলো। আনাস [রাদি.] বলেন, আমিও রসূলুল্লাহর [সাঃআঃ] সঙ্গে খাবারের দাওয়াতে গেলাম। সে রাসূলুল্লাহ্‌র [সাঃআঃ] সামনে বার্লির রুটি, লাউ ও শুকনা গোশত দিয়ে তৈরী তরকারী আনলো। আনাস [রাদি.] বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে দেখলাম, তিনি পাত্রের চারপাশে লাউয়ের টুকরা খুঁজছেন। সেদিন হইতে আমিও সর্বদা এ তরকারী পছন্দ করি।

খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-২৩ঃ সারীদ খাওয়া

৩৭৮৩. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্‌র [সাঃআঃ] পছন্দের খাবার ছিল তরকারীর ঝোলে ভিজানো রুটি ও খুরমা এবং মাখন ও আটার সংমিশ্রনে তৈরী রুটি। ঈমাম আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, হাদিসটি যয়ীফ। {৩৭৮৩}

দুর্বলঃ যঈফাহ [১৭৫৮], মিশকাত [৪২২০]। {৩৭৮৩} ইবনি সাদ তাবাক্বাতুল কুবরা, হাকিম। হাকিম ও যাহাবী একে সহিহ বলিয়াছেন। কিন্তু তা সঠিক নয়। কেননা সানাদে বাসরার জনৈক অজ্ঞাত লোক রয়েছে। খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

অনুচ্ছেদ-২৪ঃ কোন খাদ্যের প্রতি ঘৃণা পোষণ অপছন্দনীয়

৩৭৮৪. ক্বাবীসাহ ইবনি হুলব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে তার পিতার সূত্র হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি এক ব্যক্তিকে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে প্রশ্ন করিতে শুনিয়াছি, সে বললো, এমন খাবার আছে কি যা আমি অপছন্দ করবো? তিনি বলিলেনঃ তোমার মনে যেন কোন হালাল বস্তু সংশয় সৃষ্টি না করে। তাহলে তুমি নাসারাদের সদৃশ হইবে। কেননা তারা প্রত্যেক জিনিসে সংশয় বোধ করতো। {৩৭৮৪}

{৩৭৮৪} তিরমিজি, ইবনি মাজাহ, আহমাদ। ঈমাম তিরমিজি বলেনঃ এই হাদিসটি হাসান। খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান হাদিস

অনুচ্ছেদ-২৫ঃ জাল্লালা ও তার দুধ পান নিষেধ

৩৭৮৫. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] জাল্লালার [যে প্রাণী নাপাক বস্তু খায়] গোশত খেতে ও তার দুধ পান করিতে নিষেধ করেছেন।

খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৩৭৮৬. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ] জাল্লালার দুধ পান করিতে নিষেধ করেছেন।

খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৩৭৮৭. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] জাল্লালার উটে আরোহণ করিতে এবং তার দুধ পান করিতে নিষেধ করেছেন।

খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান সহিহ

অনুচ্ছেদ-২৬ঃ ঘোড়ার গোশত খাওয়া সম্পর্কে

৩৭৮৮. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] খায়বার বিজয়ের দিন আমাদেরকে গাধার গোশত খেতে বারণ করেছেন এবং ঘোড়ার গোশত খাওয়ার অনুমতি দিয়েছেন।

খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৩৭৮৯. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, খায়বার বিজয়ের দিন আমরা ঘোড়া, খচ্চর ও গাধা যাবাহ করেছি। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদেরকে খচ্চর ও গাধার গোশত খেতে বারণ করিলেন, কিন্তু ঘোড়ার গোশত খেতে বারণ করেননি।

খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৩৭৯০. খালিদ ইবনিল ওয়ালীদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদেরকে ঘোড়া, খচ্চর ও গাধার গোশত খেতে নিষেধ করেছেন। হায়ওয়াতের বর্ণনায় আছেঃ তিনি হিংস্র জন্তুর গোশত খেতেও নিষেধ করেছেন। ঈমাম আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, ঈমাম মালিক [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] এ মত পোষণ করেন। ঈমাম আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, ঘোড়ার গোশত খাওয়া দোষের কিছু নয় এবং উপরোক্ত হাদিস মোতাবেক আমল করা হয় না। ঈমাম আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, এ হাদিস মানসূখ। রাসূলুল্লাহ্‌র [সাঃআঃ] একদল সাহাবী ঘোড়ার গোশত খেয়েছেন। ইবনিয যুবাইর, ফাদালাহ ইবনি উবাইদ, আনাস ইবনি মালিক, আসমা বিন্তু আবু বাক্‌র, সুওয়াইদ ইবনি গাফালাহ্‌ [রাদি.] ও আলক্বামাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] তাহাদের অন্তর্ভুক্ত। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর কুরাইশগণ ঘোড়া যাবাহ করতো। {৩৭৯০}

{৩৭৯০} নাসায়ী, ইবনি মাজাহ, আহমাদ। সানাদে বাক্বিয়্যাহ ইবনি ওয়ালীদ একজন মুদাল্লিস এবং তিনি এটি আন্‌ আন্‌ শব্দে বর্ণনা করেছেন। এছাড়া সনদের সালিহ ইবনি ইয়াহইয়া সম্পর্কে হাফিয বলেনঃ শিথিল [লাইয়িন]। খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

অনুচ্ছেদ-২৭ঃ খরগোশের গোশত খাওয়া সম্পর্কে

৩৭৯১. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি ছিলাম একজন শক্তিশালী যুবক। আমি একটি খরগোশ শিকার করে তার গোশত ভুনা করলাম। আবু ত্বালহা [রাদি.] আমাকে এর পিছনে দিকের গোশত নিয়ে নাবী [সাঃআঃ] এর নিকট প্রেরণ করিলেন। আমি তা নিয়ে তাহাঁর কাছে উপস্থিত হলে তিনি তা গ্রহণ করিলেন।

খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৩৭৯২. আবু খালিদ ইবনি হুওয়াইরিস [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আবদুল্লাহ ইবনি আমর [রাদি.] আস-সাফাহ নামক স্থানে ছিলেন। মুহাম্মাদ ইবনি খালিদ বলেন, তা মক্কায় অবস্থিত একটি স্থান। এক লোক একটি খরগোশ শিকার করে আনলো। সে বললো, হে আবদুল্লাহ ইবনি আমর! আপনি কি বলেন? তিনি বলিলেন, একদা রাসূলুল্লাহ্‌র [সাঃআঃ] নিকট এর গোশত আনা হয়। তখন আমি সেখানে বসা ছিলাম। তিনি তা আহার করেননি এবং অন্যকে খেতে নিষেধ করেননি। তাহাঁর ধারণা, এর মাসিক ঋতু হয়। {৩৭৯২}

{৩৭৯২} বায়হাক্বী। এর সানাদে খালিদ ইবনি হুওয়াইরিসঃ মাক্ববূল।খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

অনুচ্ছেদ-২৮ঃ গুইসাপ খাওয়া সম্পর্কে

৩৭৯৩. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

একদা তার খালা রাসূলুল্লাহ্‌র [সাঃআঃ] এর জন্য মাখন, পনির ও গুইসাপের গোশত পাঠালে তিনি মাখন ও পনির হইতে খেলেন কিন্তু গুইসাপের গোশত খেলেন না রুচিবোধ না হওয়ায়। নাবী [সাঃআঃ] এর সঙ্গে একত্রে বসে তা খাওয়া হলো। তা হারাম হলে রাসূলুল্লাহ্‌র [সাঃআঃ] এর সঙ্গে বসে তা খাওয়া যেতো না।

খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৩৭৯৪. খালিদ ইবনিল ওয়ালীদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

একদা রাসূলুল্লাহ্‌র [সাঃআঃ] সঙ্গে মাইমূনাহ [রাদি.] এর ঘরে যান। সেখানে গুইসাপের ভাজা গোশত আনা হলো। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তা নিতে হাত বাড়ালে মাইমূনাহ [রাদি.]-এর ঘরে উপস্থিত অন্যান্য স্ত্রীগণ বলিলেন, রসূলুল্লাহর [সাঃআঃ] নিকট বলে দাও যা নিতে তিনি চাইছেন। তারা বলিলেন, এটা গুইসাপের গোশত। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর হাত গুটিয়ে নিলে খালিদ [রাদি.] বলেন, আমি বলিলাম, এটা কি হারাম? তিনি বলিলেনঃ না, কিন্তু এটা আমাদের এলাকায় পাওয়া যায় না। এর গোশত আমার নিকট রুচিকর নয়। খালিদ [রাদি.] বলেন, আমি হাত বাড়িয়ে তা নিয়ে খেলাম এবং রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তা দেখলেন।

খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৩৭৯৫. সাবিত ইবনি ওয়াদিআহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমরা এক সামরিক অভিযানে রাসূলুল্লাহ্‌র [সাঃআঃ] সঙ্গে ছিলাম। আমরা কিছু গুইসাপ ধরলাম। সাবিত [রাদি.] বলেন, আমি একটি গুইসাপ ভূনা করে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর সামনে রাখলে তিনি একটি কাঠ উঠিয়ে তা দিয়ে এর আঙ্গুল গণনা করিলেন। অতঃপর তিনি বলিলেনঃ বনী ইসরাঈলের একটি সম্প্রদায়কে যমীনের বুকে একটি বিচরণশীল প্রাণীতে রূপান্তরিত করে দেয়া হয়েছিল। আমি জানিনা, সেটা কোন প্রাণী? বর্ণনাকারী বলেন, তিনি তা খেলেননা এবং খেতে নিষেধও করিলেন না।

খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৩৭৯৬. আবদুর রহমান ইবনি শিবল [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] গুইসাপের গোশত খেতে নিষেধ করেছেন।

খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান হাদিস

অনুচ্ছেদ-২৯ঃ হুবারার গোশত [দ্রুত দৌড়াতে পারে এমন বৃহদাকার পাখি] খাওয়া সম্পর্কে

৩৭৯৭. বুরাইহ ইবনি উমার ইবনি সাফীনাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে পর্যায়ক্রমে তার পিতা ও দাদার সূত্র হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]- এর সঙ্গে হুবারার গোশত খেয়েছি। {৩৭৯৭}

দুর্বলঃ মিশকাত [৪১২৫]। {৩৭৯৭} তিরমিযীঃ তিনি বলেনঃ এই হাদিসটি গরীব। বায়হাক্বী। সনদের ইবরাহীমকে দারাকুতনী যয়ীফ বলিয়াছেন। ইবনি হিব্বান বলেনঃ তার দ্বারা দলীল গ্রহণ হালাল নয়। ঈমাম বুখারী বলেনঃ মাজহুল। ইবনি হাজার আত-তালখীস গ্রন্থে বলেনঃ এর সনদ দুর্বল। খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

অনুচ্ছেদ-৩০ঃ কীট-পতঙ্গ ও গর্তের প্রাণী

৩৭৯৮. মিলক্বাম ইবনি তালিব্ব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে তার পিতার সূত্র হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সাথে ছিলাম। কিন্তু কখনো হাশরাতুল আরদ হারাম হওয়া সম্পর্কে কিছু শুনিনি। {৩৭৯৮}

{৩৭৯৮} বায়হাক্বী। এর সানাদে গালিব ইবনি হাজরাহ অজ্ঞাত। খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৩৭৯৯. ঈসা ইবনি নুমাইলাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে তার পিতার সূত্র হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি ইবনি উমার [রাদি.]-এর নিকট উপস্থিত ছিলাম। তাহাকে সজারুর গোশত খাওয়া সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি এ আয়াত পড়েনঃ “আপনি বলুন, আমার নিকট যে ওয়াহী এসেছে তাতে এমন কোন বস্তু পাই না যা খাওয়া কারো পক্ষে হারাম….” [সূরাহ আল-আনআমঃ ১৪৫] পূর্ণ আয়াত। বর্ণনাকারী বলেন, এক প্রবীণ শাইখ ইবনি উমার [রাদি.]-কে বলিলেন, আমি আবু হুরায়রা [রাদি.]-কে বলিতে শুনিয়াছি, রাসূলুল্লাহ্‌র [সাঃআঃ] সামনে সজারু সম্পর্কে আলাপ করা হলে তিনি বলেনঃ “নাপাক প্রাণীর মধ্যকার একটি প্রাণী।” ইবনি উমার [রাদি.] বলেন, যদি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] একথা বলে থাকেন তাহলে তিনি ঠিকই বলিয়াছেন, যা আমার জানা ছিলো না। {৩৭৯৯}

{৩৭৯৯} আহমাদ। আহমাদ শাকির বলেনঃ এর সানাদে অজ্ঞাত ব্যক্তি রয়েছে। সানাদে ঈসা ইবনি নুমাইলাকে ইবনি হিব্বান সিক্বাহ বলিয়াছেন এবং তার পিতা তামীলাহ পরিচিত নন। খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

অনুচ্ছেদ-৩১ঃ যেসব জিনিসের ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা আসেনি

৩৮০০. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, জাহিলী যুগের লোকেরা কিছু জিনিস খেতো এবং ঘৃণাবশত কিছু জিনিস পরিহার করতো। এ অবস্থায় আল্লাহ তাহাঁর নাবী [সাঃআঃ]-কে প্রেরণ করিলেন এবং তাহাঁর কিতাব অবতীর্ণ করিলেন এবং তাতে কিছু জিনিস হালাল করিলেন ও কিছু জিনিস হারাম করিলেন। তিনি যা হালাল করেছেন তা হালাল এবং যা হারাম করেছেন তা হারাম, আর যেগুলো সম্পর্কে নীরব থেকেছেন তাতে ছাড় দেয়া আছে। অতঃপর ইবনি আব্বাস [রাদি.] তিলাওয়াত করেনঃ “আপনি বলুন, আমার নিকট যে ওয়াহী এসেছে তাতে এমন কোন জিনিস পাইনি যা আহার করা কারো জন্য হারাম…” আয়াতের শেষ পর্যন্ত।

খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-৩২ঃ হায়েনার গোশত খাওয়া সম্পর্কে

৩৮০১. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] হায়েনা সম্পর্কে প্রশ্ন করলে তিনি বলেনঃ এটা শিকার করার মতো প্রাণী। ইহরাম অবস্থায় তা শিকার করলে একটি মেষ কুরবানী দিতে হয়।

খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-৩৩ঃ হিংস্র প্রাণী খাওয়া সম্পর্কে

৩৮০২. আবু সালাবা আল-খুশানী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] প্রত্যেক শিকারী দাঁতবিশিষ্ট হিংস্র জন্তু খেতে নিষেধ করেছেন।

খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৩৮০৩. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] প্রত্যেক শিকারী দাঁতবিশিষ্ট হিংস্র জন্তু ও প্রত্যেক পাঞ্জাধারী শিকারী পাখী খেতে নিষেধ করেছেন।

খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৩৮০৪. আল-মিক্বদাম ইবনি মাদীকারির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ সাবধান! শিকারী দাঁতযুক্ত হিংস্র জন্তু, গৃহপালিত গাধা এবং চুক্তিবদ্ধ যিম্মীর হারানো মাল খাওয়া হারাম। তবে সে তা পরিত্যাগ করে থাকলে ভিন্ন কথা। কোন ব্যক্তি কোন সম্প্রদায়ের নিকট মেহমান হিসেবে উপস্থিত হওয়ার পর তারা তাহাকে আতিথ্য না করলে সে আতিথ্যের পরিমাণ মাল তাহাদের কাছ হইতে আদায় করে নিতে পারে।

খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৩৮০৫. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] খায়বার বিজয়ের দিন শিকারী দাঁতযুক্ত হিংস্র জন্তু ও প্রত্যেক পাঞ্জাধারী শিকারী পাখী খেতে নিষেধ করেছেন।

খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৩৮০৬. খালিদ ইবনিল ওয়ালীদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্‌র [সাঃআঃ] সঙ্গে খায়বার যুদ্ধে যোগদান করেছি। ইয়াহুদীরা এসে অভিযোগ করলো যে, লোকেরা তাড়াহুড়া করে তাহাদের বাঁধা পশুগুলো লুন্ঠন করে নিয়ে যাচ্ছে। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেনঃ সাবধান! যে কাফিররা তোমাদের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয় ন্যায়সঙ্গত অধিকার ছাড়া তাহাদের মাল আত্মসাৎ করা বৈধ নয়। তোমাদের প্রতি হারাম করা হয়েছে গৃহপালিত গাধা, ঘোড়া, খচ্চর, প্রত্যেক শিকারী দাঁতযুক্ত হিংস্র জন্তু এবং প্রত্যেক পাঞ্জাধারী শিকারী পাখী। {৩৮০৬}

{৩৮০৬} এর সনদ দুর্বল। এটি গত হয়েছে হা/৩৫৯০। খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৩৮০৭. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ] বিড়ালের গোশত খেতে এবং এর বিক্রয়লব্ধ অর্থ ভোগ করিতে নিষেধ করেছেন। {৩৮০৭}

দুর্বলঃ ইরওয়া [২৪৮৭]। {৩৮০৭} এর সনদ দূর্বল। এটি গত হয়েছে হা/৩৪৮০। খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৩৮০৮. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, খায়বারের যুদ্ধের দিন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদেরকে গাধার গোশত খেতে নিষেধ করেছেন এবং ঘোড়ার গোশত খাওয়ার অনুমতি দিয়েছেন।

খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-৩৪ঃ গৃহপালিত গাধার গোশত খাওয়া সম্পর্কে

৩৮০৯. গালিব ইবনি আবজার [রাদি.] সূত্র হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমরা এক বছর দুর্ভিক্ষে পড়লাম। পরিবার-পরিজনের খাওয়ার ব্যবস্থা করার মত সম্পদ আমার ছিলো না, কয়েকটি গাধা ব্যতিত। ইতোপূর্বে নাবী [সাঃআঃ] গৃহপালিত গাধার গোশত খেতে নিষেধ করেছেন। আমি নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট এসে বলিলাম, হে আল্লাহর রসূল! আমারা দুর্ভিক্ষে পড়েছি। মোটাতাজা কয়েকটি গাধা ছাড়া আমার এমন কোন কিছু নেই যা দিয়ে আমি পরিবার-পরিজনের আহারের ব্যবস্থা করবো। অথচ আপনি গৃহপালিত গাধার গোশত খাওয়া হারাম করেছেন। তিনি বলেনঃ তোমার পরিবারের লোকদেরকে মোটাতাজা গাধার গোশত খাওয়াও। নাপাক খাওয়ায় অভ্যস্ত হওয়ার কারণে আমি গৃহপালিত গাধার গোশত খাওয়া হারাম করেছিলাম। {৩৮০৯}

{৩৮০৯} বায়হাক্বী। এর সানাদে উলটপালট [ইযতিরাব] হয়েছে। খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল মুযতারিব

৩৮১০. মিসআর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

আমার মতে গালিব [রাদি.] নাবী [সাঃআঃ] নিকট এ বর্ণনা নিয়ে আসেন। {৩৮১০}

{৩৮১০} বায়হাক্বী। এই সনদটিও মুযতারিব। খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৩৮১১. আমর ইবনি শুআইব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে পর্যায়ক্রমে তার পিতা ও তার দাদার সূত্র হইতে বর্ণীতঃ

তিনি [দাদা] বলেন, খায়বার যুদ্ধের দিন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] গৃহপালিত গাধার গোশত এবং নাপাকী খায় এমন প্রানীর গোশত খেতে ও তাতে সওয়ার হইতে নিষেধ করেছেন। {৩৮১১}

{৩৮১১} নাসায়ী, আহমাদ। খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান সহিহ

অনুচ্ছেদ-৩৫ঃ পঙ্গপাল খাওয়া সম্পর্কে

৩৮১২. আবু ইয়াফুর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি ইবনি আবু আওফার [রাদি.]-এর নিকট শুনিয়াছি, আমি তাহাকে টিড্ডি খাওয়া সম্পর্কে প্রশ্ন করলে তিনি বলিলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্‌র [সাঃআঃ]-এর সাথে ছয়-সাতটি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছি। আমরা তাহাঁর সঙ্গে একত্রে টিড্ডি খেয়েছি।

খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৩৮১৩. সালমান [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে টিড্ডি খাওয়া সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেনঃ আল্লাহ্‌র অসংখ্য সৈন্যবাহিনী রয়েছে। আমি এগুলো খাই না এবং হারামও বলি না। {৩৮১৩}

দুর্বল ঃ মিশকাত [৪১৩৪]। {৩৮১৩} ইবনি মাজাহ্‌,বায়হাক্বী। হাদিসটি মুরসাল। খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৩৮১৪. সালমান [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে টিড্ডি সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেনঃ এরা আল্লাহ্‌র অসংখ্য সৈনিক। {৩৮১৪}

দুর্বলঃ এর পূর্বেরটি দেখুন। {৩৮১৪} এর সনদ দুর্বল। এর পূর্বেরটি দেখুন। খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

অনুচ্ছেদ-৩৬ঃ ভেসে আসা মৃত মাছ খাওয়া সম্পর্কে

৩৮১৫. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ সমুদ্র যা নিক্ষেপ করে বা পানি সরে গেলে যা পাওয়া যায় তা খাও, আর যা মরে ভেসে উঠে তা খেও না। {৩৮১৫}

দুর্বলঃ মিশকাত [৪১৩৩]। {৩৮১৫} ইবনি মাজাহ্‌,বায়হাক্বী। খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

অনুচ্ছেদ-৩৭ঃ যে ব্যক্তি মৃত প্রানী খেতে বাধ্য হয়

৩৮১৬. জাবির ইবনি সামুরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

এক ব্যক্তি তার পরিবার-পরিজন নিয়ে হাররা নামক স্থানে যাত্রাবিরতি করলো। অপর এক ব্যক্তি তাহাকে বললো, আমার একটি উট হারিয়ে গেছে। তুমি তা পেলে ধরে রাখবে। সে উটটি পেয়ে গেলো কিন্তু মালিককে পেলো না। উটটি অসুস্থ হয়ে পড়লে তার স্ত্রী তাহাকে বললো, এটা যাবাহ করো, কিন্তু সে যাবাহ করিতে সম্মত হলো না। উটটি মারা গেলে তার স্ত্রী বললো, এর চামড়া ছাড়াও তাহলে এর গোশত ও চর্বি আগুনে জ্বালিয়ে খেতে পারবো। স্বামী বললো, রসূলুল্লাহকে [সাঃআঃ]-এর প্রশ্ন করে দেখি। সে তাহাঁর নিকট এসে এ সম্পর্কে প্রশ্ন করলে তিনি বলেনঃ তোমার নিকট এমন কি কিছু আছে যা তোমাকে মুর্দা খাওয়া হইতে মুখাপেক্ষিহীন করিতে পারে? সে বললো, না। তিনি বলিলেনঃ তবে তা খাও। বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর উটের মালিক ফিরে এলে সে তাহাকে ঘটনা অবহিত করলো। সে বললো, তুমি যাবাহ করলে না কেন? সে বললো, তোমার উট যাবাহ করিতে লজ্জাবোধ করেছি।

খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান হাদিস

৩৮১৭. ফুজায়ঈ আল- আমিরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি একদা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট এসে বলেন, আমাদের জন্য কি মৃত প্রানী হালাল নয়? তিনি বলিলেনঃ কেন, তোমাদের খাদ্য কি? আমি বলিলাম, সকালে এক পিয়ালা দুধ এবং রাতে এক পিয়ালা দুধ খেয়ে থাকি। আবু নুআইম বলেন, উক্ববাহ আমার নিকট এরুপ ব্যাখ্যা করেছেনঃ সকালে এক পিয়ালা এবং রাতে এক পিয়ালা, আমার পিতার কসম! আমরা সম্পূর্ণ ক্ষুধার্ত থাকি। এমতাবস্থায় তাহাদের জন্য তিনি মৃত প্রানী খাওয়া হালাল করিলেন। ঈমাম আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, আল-গাবূক হচ্ছে রাতের পানীয় এবং আস-সাবূহ সকালের পানীয়। {৩৮১৭}

সনদ দুর্বলঃ মিশকাত [৪২৬১]

{৩৮১৭} বায়হাক্বী। সনদের উক্ববাহ ইবনি ওয়াহাবঃ মাক্ববুল। খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

অনুচ্ছেদ-৩৮ঃ দুই রং-এর খাদ্য একত্র করা সম্পর্কে

৩৮১৮. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ দুধ ও ঘিয়ে ভিজানো সাদা আটার সাদা রুটি আমার খুবই পছন্দ। লোকদের মধ্য হইতে এক ব্যক্তি উঠে গিয়ে ঐ ধরনের রুটি তৈরি করে আনলো। তিনি প্রশ্ন করলেনঃ ঘি কিরুপ পাত্রে ছিল? লোকটি বললো, গুই সাপের চামড়ার পাত্রে। তিনি বলেনঃ এটা তুলে নিয়ে যাও। ঈমাম আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, এ হাদিসটি মুনকার। {৩৮১৮}

সনদ দুর্বল ঃ মিশকাত [৪২২৯]। {৩৮১৮} ইবনি মাজাহ্‌, বায়হাক্বী। হাদিসটি মুনকার। খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

অনুচ্ছেদ-৩৯ঃ পনীর খাওয়া

৩৮১৯. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, তাবূকের ময়দানে নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট পনীরের একটি টিকা আনা হলে তিনি ছুঁড়ি নিয়ে ডাকলেন এবং বিসমিল্লাহ বলে তা টুকরা টুকরা করিলেন।

খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান হাদিস

অনুচ্ছেদ-৪০ঃ সিরকা সম্পর্কে

৩৮২০. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ]-বলেনঃ সিরকা হচ্ছে উত্তম তরকারী।

খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৩৮২১. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ]-বলেনঃ সিরকা উত্তম তরকারী।

খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-৪১ঃ রসুন খাওয়া সম্পর্কে

৩৮২২. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-বলিয়াছেনঃ যে ব্যক্তি রসুন বা পিয়াজ খেয়েছে সে যেন আমাদের থেকে দূরে থাকে অথবা আমাদের মাসজিদ হইতে দূরে থাকে। সে যেন নিজের ঘরে বসে থাকে। তাহাঁর সামনে একত্রে রান্না করা বিভিন্ন প্রকার তরকারী ভর্তি একটি পাত্র আনা হলে তিনি তা হইতে এক ধরনের ঘ্রান পেয়ে প্রশ্ন করিলেন। তাঁকে পাত্রের মধ্যকার তরকারী সম্পর্কে জানানো হলে তিনি বলেনঃ অমুক ব্যক্তির নিকট নিয়ে যাও। লোকটি তাহাঁর সাথেই ছিলো। তিনি যখন দেখলেন সে তা খেতে অপছন্দ করছে তখন তিনি বলিলেনঃ খাও। নিশ্চয়ই আমি এমন এক মহান সত্তার সাথে অতি গোপনে কথা বলি যাঁর সাথে তোমরা কথা বলিতে পারো না।

খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৩৮২৩.আবু সাঈদ আল-খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] সামনে পিয়াজ-রসুন সম্পর্কে কথা উঠলো। বলা হলো, হে আল্লাহ্‌র রাসূল! এর মধ্যে রসূনের গন্ধটাই খুব বেশি। আপনি কি এটা হারাম করেন? নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ তোমরা তা খেতে পারো। তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি তা খায় সে যেন মুখের গন্ধ দূর না হওয়া পর্যন্ত অবশ্যই এ মাসজিদের নিকটে না আসে। {৩৮২৩}

{৩৮২৩} ইবনি খুযাইমাহ, ইবনি হিব্বান, বায়হাক্বী। সানাদে নাজীহ অপরিচিত। ইবনি হিব্বান ছাড়া কেউ তাহাকে সিক্বাহ বলেননি। খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৩৮২৪. হুযাইফাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ যে ব্যক্তি ক্বিবলাহ্‌র দিকে থুথু ফেলে, ক্বিয়ামাতের দিন সে ঐ থুথু নিজের দুচোখের মধ্যখানে পতিত অবস্থায় উপস্থিত হইবে। যে ব্যক্তি এ খারাপ তরকারী [পিয়াজ] খাবে সে যেন আমাদের মাসজিদে না আসে। তিনি কথাটি তিনবার বলিয়াছেন।

খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৩৮২৫. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ যে ব্যক্তি এ গাছ [পিয়াজ] খাবে সে অবশ্যই যেন মাসজিদসমূহের নিকটে না আসে।

খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৩৮২৬. আল-মুগীরাহ ইবনি শুবাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি রসুন খেয়ে নাবী [সাঃআঃ]-এর মুসল্লায় সলাত পড়তে আসলাম। তখন এক রাকআত শেষ হয়েছে। আমি মাসজিদে প্রবেশ করলে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] রসুনের গন্ধ পান। তিনি তাহাঁর সলাত শেষ করে বলিলেনঃ “যে ব্যক্তি এই গাছ [রসূন] হইতে আহার করলো, তার মুখের দুর্গন্ধ দূর হওয়ার পূর্বে সে অবশ্যই যেন আমাদের নিকট না আসে”। আমি সলাত শেষ করে রসূলুল্লাহর [সাঃআঃ]-এর নিকট এসে বলিলাম, হে আল্লাহ্‌র রাসূল! আল্লাহ্‌র কসম! অবশ্যই আপনার হাতটা আমাকে দিন। মুগীরাহ্‌ [রাদি.] বলেন, আমি তাহাঁর হাত জামার ভিতর দিয়ে আমার বুক পর্যন্ত ঢুকালাম। আমার বুকে পট্টি বাঁধা ছিলো। তিনি বলিলেনঃ এটা তোমার জন্য ওজর।

খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৩৮২৭.মুআবিয়াহ ইবনি কুররাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে তার পিতার সূত্র হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] দুটি গাছ খেতে বারন করেছেন। তিনি বলিয়াছেনঃ যে ব্যাক্তি ঐ গাছ দুটো খাবে সে যেনো অবশ্যই আমাদের মাসজিদে না আসে। তিনি আরো বলিয়াছেনঃ তোমাদের যদি একান্তই এটা খেতে হয় তাহলে রান্না করে দুর্গন্ধ দুর করে খাও। বর্ণনাকারী বলেন, গাছ দুটি হলো পিয়াজ ও রসুন।

খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৩৮২৮. আলি [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, কাচাঁ রসুন খেতে নিষেধ করা হয়েছে। রান্না করে খাওয়াতে দোষ নেই।

খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৩৮২৯. আবু যিয়াদ খিয়ার ইবনি সালামাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি আয়িশাহ [রাদি.]–কে পিয়াজ খাওয়া সম্পর্কে প্রশ্ন করিলেন। তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] সর্বশেষ যে খাবার খেয়েছিলেন তাতে পিয়াজ ছিলো। {৩৮২৯}

{৩৮২৯} আহমাদ। সানাদে বাক্বিয়্যাহ ইবনিল ওয়ালীদ একজন মুদাল্লিস এবং তিনি এটি আন্‌ আন্‌ শব্দে বর্ণনা করেছেন। খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

অনুচ্ছেদ-৪২ঃ খেজুর সম্পর্কে

৩৮৩০. ইউসুফ ইবনি আবদুল্লাহ ইবনি সালাম [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি দেখলাম নাবী [সাঃআঃ] এক টুকরা যবের রুটি নিয়ে তাতে একটি খেজুর রেখে বলিলেনঃ এই খেজুর এই রুটির তরকারী। {৩৮৩০}

দূর্বলঃ মিশকাত [৪২২৩]।

{৩৮৩০} এটি গত হয়েছে, হা/৩২৫৯। খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৩৮৩১. আয়িশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ যে ঘরে খেজুর নেই সে ঘরের অধিবাসীরা অভুক্ত।

খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-৪৩ঃ পোকায় ধরা খেজুর পরীক্ষা করে খাওয়া

৩৮৩২. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, একদা নাবী [সাঃআঃ] এর সামনে পুরাতন খেজুর পরিবেশন করা হলে তিনি তা ছিঁড়ে এর মধ্য হইতে পোকা খুঁজে বের করিতে থাকেন।

খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৩৮৩৩. ইসহাক্ব ইবনি আবদুল্লাহ ইবনি আবু ত্বালহা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট পোকায় ধরা খেজুর দেয়া হতো। বাকী অংশ পূর্ববর্তী হাদিসের অনুরুপ।

খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-৪৪ঃ খাওয়ার সময় একত্রে দুটি খেজুর নেয়া

৩৮৩৪. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, তোমার সাথীর অনুমতি ছাড়া একত্রে দুটি খেজুর তুলে খেতে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] নিষেধ করেছেন।

খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-৪৫ঃ দু ধরনের বস্তু একত্রে মিশিয়ে খাওয়া

৩৮৩৫. আবদুল্লাহ ইবনি জাফার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ] তাজা খেজুরের সাথে শসা খেতেন।

খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৩৮৩৬. আয়িশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাজা খেজুর দিয়ে তরমুজ খেতেন। তিনি বলিতেনঃ এর ঠান্ডা ওটার গরম কমাবে, এবং এর গরম ওটির ঠান্ডা কমিয়ে দিবে।

খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৩৮৩৭.বুসর আস-সুলামীর দুই পুত্রের সূত্র হইতে বর্ণীতঃ

তারা উভয়ে বলেন, একদা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদের বাড়িতে প্রবেশ করিলেন। আমরা তাঁকে পনীর ও খেজুর খেতে দিলাম। তিনি পনীর ও খেজুর খুব পছন্দ করিতেন।

খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-৪৬ঃ আহলে কিতাবের বাসনপত্র ব্যবহার সম্পর্কে

৩৮৩৮. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমরা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর সাথে যুদ্ধে যোগদান করতাম। আমরা মুশরিকের পাত্র ও পানপাত্র নিয়ে তা ব্যবহার করতাম। এতে তিনি আমাদের কোনো দোষ ধরেননি।

খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৩৮৩৯. আবু সালাবা আল-খুশানী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

একদা তিনি রাসূলুল্লাহ্‌র [সাঃআঃ] এর নিকট আরজ করিলেন, আমরা আহলে কিতাবের এলাকায় যাতায়াত করি। তারা তাহাদের হাঁড়িতে শুকরের গোশত রান্না করে এবং তাহাদের পানপাত্রে মদ পান করে। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেনঃ যদি তোমরা তাহাদের পাত্র ছাড়া অন্য পাত্র পাও তবে তাতে পানাহার করো। আর যদি তাহাদেরগুলা ছারা অন্য কোনো পাত্র না পাও তবে তাহাদেরগুলা পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে তাতে পানাহার করো।

খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-৪৭ঃ সমুদ্রে বিচরনশীল প্রানী সম্পর্কে

৩৮৪০. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, একদা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কুরাইশদের একটি কাফেলাকে পাকড়াও করিতে আমাদেরকে এক অভিযানে পাঠালেন। তিনি আবু উবাইদাহ ইবনিল জাররাহ [রাদি.]–কে আমাদের অধিনায়ক বানালেন। তিনি আমাদের সাথে এক ব্যাগ খেজুরও দিলেন। এছাড়া আর কিছু আমাদের সাথে ছিলো না। আবু উবাইদাহ ইবনিল জাররাহ [রাদি.] প্রতিদিন আমাদের প্রত্যেককে একটি করে খেজুর দিতেন। আমরা বাচ্চাদের মত তা চুষে খেতাম। অতঃপর পানি পান করতাম। এভাবে আমরা রাত পর্যন্ত সারাদিন কাটিয়ে দিতাম। আমরা নিজেদের লাঠি দিয়ে গাছের পাতা ঝড়িয়ে তা পানিতে ভিজিয়ে খেয়েছি। জাবির [রাদি.] বলেন, আমরা সমুদ্রের কিনারার দিয়ে অগ্রসর হলাম। অতঃপর সমুদ্রের তীরে বালুর ঢিভির ন্যায় একটি বস্তু দেখা গেলো। আমরা গিয়ে দেখলাম, ওটা একটা সামুদ্রিক প্রানী, যার নাম আম্বর [তিমি] মাছ। আবু উবাইদাহ [রাদি.] বলেন, এটা মৃত প্রানী, আমাদের জন্য হালাল নয়। অতঃপর তিনি মত পাল্টিয়ে বলিলেন, না! বরং আমরা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর প্রতিনিধি এবং আমরা আল্লাহর রাস্তায় বের হয়েছি। তোমরাও সংকটাপন্ন অবস্হার সম্মুখীন হয়েছো, সুতরাং এটা খাও। জাবির [রাদি.] বলেন, কেবলমাত্র আমরাই সেখানে অবস্হান করেছিলাম। আমরা সংখ্যায় ছিলাম তিনশো। আমরা প্রতিদিন তা খেয়ে মোটাতাজা হয়ে গেলাম। আমরা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] নিকট ফিরে এসে তাঁকে ঘটনাটি বলিলাম। তিনি বলিলেন, ওটা ছিলো রিযিক। যা আল্লাহ তোমাদের জন্য পাঠিয়েছিলেন। তোমাদের সাথে এর গোশত অবশিষ্ট আছে কি? থাকলে আমাকে খাওয়াও। আমরা মাছের কিছু অংশ রাসূলুল্লাহ্‌র [সাঃআঃ] নিকট পৌছালাম, তিনি তা খেলেন।

খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-৪৮ঃ ঘি –এর মধ্যে ইদুরঁ পড়লে করনীয়

৩৮৪১. মাইমূনাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

একটি ইদুরঁ ঘিয়ের মধ্যে পরে গেলে নাবী [সাঃআঃ] কে তা জানানো হলো। তিনি বলিলেনঃ এর চারপাশের ঘি ফেলে দিয়ে অবশিষ্ট ঘি খাও।

খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৩৮৪২. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ যদি ঘিয়ের মধ্যে ইদুঁর পতিত হয় এবং তা জমাট বাধাঁ হয় তবে ইঁদুর ও তার চার পাশের ঘি ফেলে দিবে। ঘি যদি তরল হয় তবে তার নিকট যাবে না [খাবে না]। {৩৮৪২}

শাযঃ মিশকাত [৪১২৩]।

{৩৮৪২} আহমাদ। খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ শায

৩৮৪৩. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে মাইমুনাহ [রাদি.] সূত্র হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ] যে হাদিস বর্ণনা করেছেন তা ইবনিল মুসাইয়্যাব বর্ণিত যুহ্রীর হাদিসের অনুরূপ। {৩৮৪৩}

সনদঃ পাওয়া যায়নি।

{৩৮৪৩} এটি গত হয়েছে হা/৩৮৪১। খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

অনুচ্ছেদ-৪৯ঃ খাদ্যদ্রব্যে মাছি পড়লে করনীয়

৩৮৪৪. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ তোমাদের কারো পাত্রে মাছি পড়লে তা এর ভিতরে ডুবিয়ে দাও। কেননা তার এক ডানায় রোগ এবং অপর ডানায় নিরাময় রয়েছে। সে জীবাণুযুক্ত পাখা ডুবিয়ে দিতে চেষ্টা করে। কাজেই তা সম্পূর্নভাবে ডুবিয়ে দাও।

খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-৫০ঃ পতিত লোকমা

৩৮৪৫. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] খাওয়া শেষ করে আঙ্গুল চাটতেন এবং বলিতেনঃ তোমাদের কারো লোকমা পরে গেলে সে যেনো তার ময়লা দুর করে তা খেয়ে নেয় এবং শয়তানের জন্য ফেলে না রাখে। তিনি আমাদেরকে থালা পরিস্কার করে খেতে আদেশ দিয়ৈছেন। তিনি আরো বলিয়াছেনঃ তোমাদের কেউই জানে না খাদ্যের কোন অংশে তার জন্য বরকত রয়েছে।

খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-৫১ঃ মালিকের সাথে চাকরের খাদ্য গ্রহণ

৩৮৪৬. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ তোমাদের কারো খাদেম যখন খাবার তৈরী করে তার জন্য পেশ করে; সে বাবুর্চিখানার উত্তাপ সহ্য করেছে; মালিক যেন তাহাকে সাথে নিয়ে খায়। খাদ্যের পরিমান কম হলে সে যেন অন্তত তার হাতে এক বা দুই লোকমা খাদ্য তুলে দেয়।

খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-৫২ঃ রুমাল ব্যবহার করা

৩৮৪৭. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ তোমাদের কেউ আহার করার পর আঙ্গুল চেটে খাওয়ার বা খাওয়ানোর পূর্বে যেন রুমালে হাত না মুছে।

খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৩৮৪৮. ইবনি কাব ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে তার পিতার সূত্র হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ] তিন আঙ্গুল দিয়ে আহার করিতেন এবং আঙ্গুল চেটে খাওয়ার আগে তা মুছতেন না।

খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-৫৩ঃ খাওয়া শেষে যা বলিতে হয়

৩৮৪৯. আবু উমামাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, দস্তরখান তুলে নেয়ার সময় রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিতেনঃ “আল্লাহর জন্য অসংখ্য প্রশংসা, পবিত্রতা ও প্রাচুর্য অবিরতভাবে। হে আমাদের রব! আমরা যেন আপনার দেয়া রিযিক্ব হইতে মুখাপেক্ষিহীন না হই।”

খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৩৮৫০. আবু সাঈদ আল-খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] খাওয়া শেষে বলিতেনঃ “সেই আল্লাহর জন্য সমস্ত প্রশংসা যিনি আমাদেরকে খাওয়ালেন, পান করালেন এবং মুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত করিলেন।” {৩৮৫০}

দুর্বলঃ মিশকাত [৪২০৪]। {৩৮৫০} তিরমিজি, ইবনি মাজাহ, আহমাদ। সনদের ইসমাঈল ইবনি রাবাহ সম্পর্কে হাফিয বলেন ঃ মাজহুল। খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৩৮৫১. আবু আইয়ূব আল-আনসারী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] খাওয়া বা পান করার পর বলিতেনঃ “সমস্ত প্রশংসা সেই আল্লাহর জন্য যিনি খাওয়ালেন, পান করালেন, পেটে প্রবেশ করা সহজ করে দিলেন এবং এগুলো বের হওয়ারও ব্যবস্থা রাখলেন।”

খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-৫৪ঃ খাওয়া শেষে হাত ধোয়া

৩৮৫২. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ যে ব্যক্তি হাত পরিষ্কার না করেই হাতে গোশতের গন্ধ ও তৈলাক্ততা নিয়ে ঘুমালো, এতে তার কোন ক্ষতি হলে এজন্য সে নিজেকেই যেন তিরস্কার করে।

খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-৫৫ঃ যিনি খাওয়ালেন খাওয়া শেষে তার জন্য দুআ করা

৩৮৫৩. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আবুল হাইসাম ইনুত তাইহান [রাদি.] নাবী [সাঃআঃ]-এর জন্য খাবার তৈরি করিলেন। তিনি নাবী [সাঃআঃ] ও তাহাঁর সাহাবীদেরকে তাহাঁর বাড়িতে দাওয়াত করিলেন। তারা খাওয়া শেষ করলে নাবী [সাঃআঃ] বলিলেনঃ তোমাদের ভাইয়ের প্রতিদান দাও। সাহাবীগণ বলিলেন, হে আল্লাহর রাসূল! তার প্রতিদান কি? তিনি বলিলেনঃ কোন লোককে ঘরে প্রবেশ করিয়ে সেখানে পানাহার করানো হলে যদি তার [দাওয়াতদাতার] জন্য দুআ করা হয়, এটাই তার প্রতিদান। {৩৮৫৩}

দুর্বল ঃ ইরওয়া [১৯৯০]। {৩৮৫৩} আবু দাউদ এটি এককভাবে বর্ণনা করেছেন। এর সানাদে নাম উল্লেখহীন জনৈক অজ্ঞাত ব্যক্তি রয়েছে এবং সনদের দালানী হলো ইয়াযীদ ইবনি আবদুর রহমান। তিনি সত্যবাদী কিন্তু তার ভুল ও তাদলীস প্রচুর। খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৩৮৫৪. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

একদা নাবী [সাঃআঃ] সাদ ইবনি উবাদাহ্‌র [রাদি.] বাড়িতে গেলেন। সাদ [রাদি.] রুটি ও যাইতূন তৈল আনলেন। তা খাওয়ার পর নাবী [সাঃআঃ] বলিলেনঃ তোমাদের নিকট রোযাদারগণ ইফতার করেছে, সৎ লোকেরা তোমাদের খাদ্য খেয়েছে এবং ফেরেশতাগণ তোমার জন্য রহমাতের দুআ করেছেন।

খাদ্যদ্রব্য – এই হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস


Posted

in

by

Comments

One response to “খাদ্যদ্রব্য । খাওয়া শুরুর সময় উভয় হাত ধোয়া”

Leave a Reply