ব্যবসা বাণিজ্য এবং ক্রয় বিক্রয় হাদিস সমূহ
ব্যবসা বাণিজ্য এবং ক্রয় বিক্রয় হাদিস সমূহ , এই অধ্যায়ে মোট ১১৭ টি হাদীস (১২০৫ -১৩২১) >> সুনান তিরমিজি শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন
অধ্যায়-১২ঃ ক্রয়-বিক্রয় ও ব্যবসা-বাণিজ্য, অনুচ্ছেদঃ (৫৪-৭৬)=২৩টি
৫৪. অনুচ্ছেদঃ বাগানের ভিতর দিয়ে চলাচলের সময় ফল খাওয়ার অনুমতি
৫৫. অনুচ্ছেদঃ বিক্রীত জিনিস হইতে অনির্দিষ্ট পরিমাণ বাদ দেওয়া নিষেধ
৫৬. অনুচ্ছেদঃ খাদ্যশস্য ক্রয় করার পর তা হস্তগত হওয়ার পূর্বে বিক্রয় করা নিষেধ
৫৭. অনুচ্ছেদঃ কোন লোক তার ভাইয়ের বিক্রয়ের উপর যেন বিক্রয়ের প্রস্তাব না দেয়
৫৮. অনুচ্ছেদঃ মদের ব্যবসায় এবং তৎসম্পর্কিত নিষেধাজ্ঞা
৫৯. অনুচ্ছেদঃ মদ হইতে সিরকা বানানো নিষেধ
৬০. অনুচ্ছেদঃ মালিকের বিনা অনুমতিতে তার পশুর দুধ দোহন করা
৬১. অনুচ্ছেদঃ মৃত জীবের চামড়া ও মূর্তি বিক্রয় করা
৬২. অনুচ্ছেদঃ হেবা [দান] ফিরিয়ে নেওয়া জঘন্য কাজ
৬৩. অনুচ্ছেদঃ আরাইয়া এবং এই সম্পর্কিত অনুমতি প্রসঙ্গে
৬৪. অনুচ্ছেদঃ শুকনা ফলের পরিবর্তে গাছের কাঁচা ফল বিক্রয় নিষিদ্ধ
৬৫. অনুচ্ছেদঃ ক্রেতাকে বিভ্রান্ত করার উদ্দেশ্যে [নকল ক্রেতা সেজে] দর-দাম করা
৬৬. অনুচ্ছেদঃ ওজনে কিছুটা বেশি দেওয়া
৬৭. অনুচ্ছেদঃ অভাবী ঋণগ্রস্তকে সময় দেওয়া এবং তার সাথে ভদ্রতা বজায় রাখা
৬৮. অনুচ্ছেদঃ ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে স্বচ্ছল ব্যক্তির টালবাহানা করা অন্যায়
৬৯. অনুচ্ছেদঃ মুনাবাযা ও মুলামাসা প্রসঙ্গে
৭০. অনুচ্ছেদঃ খাদ্যশস্য ও ফলের ক্ষেত্রে অগ্রিম বেচা-কেনা [বাই সালাম]
৭১. অনুচ্ছেদঃ শরীকানা সম্পদের কোন অংশীদার তার অংশ বিক্রয়ের ইচ্ছা করলে
৭২. অনুচ্ছেদঃ মুখাবারা ও মুআওয়ামা
৭৩. অনুচ্ছেদঃ দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করা
৭৪. অনুচ্ছেদঃ ব্যবসায়ের মধ্যে প্রতারণা করা খুবই জঘন্য অপরাধ
৭৫. অনুচ্ছেদঃ উট অথবা অন্য কোন পশু ধার নেওয়া
৭৬. অনুচ্ছেদঃ মাসজিদের ভিতরে ক্রয়-বিক্রয় করা নিষেধ
৫৪. অনুচ্ছেদঃ বাগানের ভিতর দিয়ে চলাচলের সময় ফল খাওয়ার অনুমতি
১২৮৭.ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ [অপরের] বাগানে প্রবেশের পর কোন লোক তা হইতে খেতে পারে কিন্তু পুটুলি বেঁধে সাথে করে নিয়ে যেতে পারবে না। সহীহ্, ইবনি মা-জাহ [২৩০১], দেখুন পরবর্তী হাদীস
আবদুল্লাহ ইবনি আমর, আব্বাস ইবনি শুরাহ্বিল, রাফি ইবনি আমর, আবু লাহামের মুক্তদাস উমাইর ও আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে । ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবু ঈসা গারীব বলেছেন । আমরা এটাকে শুধু ইয়াহ্ইয়া ইবনি সুলাইমের সনদসূত্রেই জেনেছি । মুসাফিরদেরকে [পথিমধ্যে] বাগানের ফল খাওয়ার পক্ষে একদল আলিম অনুমতি প্রদান করিয়াছেন, আর একদল মূল্য প্রদান না করে ফল খাওয়া মাকরূহ বলেছেন ।
ক্রয় বিক্রয় হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১২৮৮. রাফি ইবনি আমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেছেন, আমি আনসারদের খেজুর গাছে ঢিল ছুঁড়ে বেড়াতাম। তারা আমাকে গ্রেফতার করে রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকটে নিয়ে আসলে তিনি বললেনঃ হে রাফি। তুমি তাহাদের খেজুর গাছে কেন ঢিল ছুঁড়? আমি বললাম, হে আল্লাহ্র রাসূল! ক্ষুধার কারণে। তিনি বললেনঃ আর ঢিল ছুঁড়বে না, নীচে যা পড়বে তা খাবে। আল্লাহ তাআলা তোমার পেট পূর্ণ করে দিন এবং তোমাকে সম্পূর্ণরূপে তৃপ্ত করুন।
যঈফ, ইবনি মাজাহ হাদীস নং-[২২৯৯] এ হাদীসটি হাসান, গারীব সহীহ। ক্রয় বিক্রয় হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস
১২৮৯. আমর ইবনি শুআইব [রঃ] হইতে পর্যায়ক্রমে তার পিতা ও দাদা হইতে বর্ণীতঃ
আমর ইবনি শুআইব [রঃ] হইতে পর্যায়ক্রমে তার পিতা ও দাদার সূত্রে বর্ণিত আছে, গাছের বোঁটায় ঝুলন্ত ফল প্রসঙ্গে নাবী [সাঃআঃ]-কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেনঃ যদি কোন লোক নিরুপায় হয়ে তা খায় কিন্তু পুটুলি বেঁধে না নিয়ে যায় তবে তার কোন অন্যায় হইবে না ।
হাসান, ইরওয়া [২৪১৩] আবু ঈসা এ হাদীসটিকে হাসান বলেছেন । ক্রয় বিক্রয় হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ হাসান হাদীস
৫৫. অনুচ্ছেদঃ বিক্রীত জিনিস হইতে অনির্দিষ্ট পরিমাণ বাদ দেওয়া নিষেধ
১২৯০. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
মুহাকালা, মুযাবানা, মুখাবারা ও সুন্য়া ধরণের কেনা-বেচাকে রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] নিষেধ করিয়াছেন, যদি না [পরিমাণ] অবগত হয়।
সহীহ্, বেচা-কেনার হাদীস
এ হাদীসটিকে আবু ঈসা উল্লেখিত সনদসূত্রে হাসান সহীহ্ গারীব বলেছেন ।ক্রয় বিক্রয় হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫৬. অনুচ্ছেদঃ খাদ্যশস্য ক্রয় করার পর তা হস্তগত হওয়ার পূর্বে বিক্রয় করা নিষেধ
১২৯১. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কোন লোক খাদ্যশস্য কিনে তা হস্তগত হওয়ার পূর্বে যেন বিক্রয় না করে। ইবনি আব্বাস [রাদি.] বলেন, আমি মনে করি এই নির্দেশ প্রত্যেক বস্তুর ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।
সহীহ্, ইবনি মা-জাহ [১৮৬৮,২১৭১] নাসা-ঈ জাবির ইবনি উমার ও আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবু ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। এ হাদীস অনু্যায়ী বেশিরভাগ আলিম আমল করিয়াছেন। কোন জিনিস কিনে হস্তগত হওয়ার পূর্বেই তা বিক্রয়কে তারা মাকরূহ্ বলেছেন। অন্য একদল আলিম বলেছেন, যদি কোন জিনিস খাদ্যশস্য বা পানীয় দ্রব্য না হয় এবং ওজন-পরিমাপ না করে তা ক্রয়-বিক্রয়ের প্রচলন থাকে তবে এরকম জিনিস কিনে হস্তগত হওয়ার পূর্বে বিক্রয় করা যেতে পারে। তাহাদের মতে উল্লেখিত নিষেধাজ্ঞা শুধু খাদ্যশস্যের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। ঈমাম আহ্মাদ ও ইসহাক একথা বলেছেন। ক্রয় বিক্রয় হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫৭. অনুচ্ছেদঃ কোন লোক তার ভাইয়ের বিক্রয়ের উপর যেন বিক্রয়ের প্রস্তাব না দেয়
১২৯২. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমাদের মধ্যে কোন লোক যেন অন্যের বিক্রয়ের প্রস্তাবের উপর নিজের বিক্রয়ের প্রস্তাব না দেয়। একইভাবে তোমাদের মধ্যে কেউ যেন অন্যের বিয়ের প্রস্তাবের উপর নিজের বিয়ের প্রস্তাব না দেয়।
সহীহ্, ইবনি মা-জাহ [১৮৬৮,২১৭১], নাসা-ঈ আবু হুরাইরা ও সামুরা [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবু ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। নাবী [সাঃআঃ] আরো বলেছেনঃ “অন্যের দর-দামের উপর কোন ব্যক্তি যেন নিজের দর-দাম না করে”। একদল আলিমের মতে এ হাদীসে “বাই” বেচা-কেনা অর্থ দরদাম করা। ক্রয় বিক্রয় হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫৮. অনুচ্ছেদঃ মদের ব্যবসায় এবং তৎসম্পর্কিত নিষেধাজ্ঞা
১২৯৩. আবু তালহা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, হে আল্লাহ্র রাসূল! আমি কিছু মদ কিনেছি আমার অধীনস্ত কয়েকটি ইয়াতীমের জন্য। তিনি বলেনঃ তা ঢেলে ফেলে দাও এবং পাত্রগুলো ভাঙ্গে ফেল।
হাসান, মিশকাত তাহকীক ছানী [৩৬৫৯] জাবির, আইশা, আবু সাঈদ, ইবনি মাসউদ, ইবনি উমার ও আনাস [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেন, সাওরী আবু তালহার এ হাদীসটি সুদ্দী হইতে, তিনি ইয়াহ্ইয়া ইবনি আব্বাস হইতে আনাস [রাদি.]-এর সূত্রে বর্ণনা করিয়াছেন। এই পরবর্তী সূত্রটি প্রথম সূত্রের চেয়ে অধিক সহিহ। ক্রয় বিক্রয় হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ হাসান হাদীস
৫৯. অনুচ্ছেদঃ মদ হইতে সিরকা বানানো নিষেধ
১২৯৪. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, মদকে সিরকা বানানো বিষয়ে নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেনঃ না, তা করা যাবে না।
সহীহ্, মিশকাত, মুসলিম
এ হাদীসটিকে আবু ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। ক্রয় বিক্রয় হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১২৯৫. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, শারাবের সাথে সম্পৃক্ত দশ শ্রেণীর লোককে রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] অভিসম্পাত করিয়াছেন। এরা হলঃ মদ তৈরিকারী, মদের ফরমায়েশকারী, মদ পানকারী, মদ বহনকারী, যার জন্য মদ বহন করা হয়, মদ পরিবেশনকারী, মদ বিক্রয়কারী, এর মূল্য ভোগকারী, মদ ক্রেতা এবং যার জন্য মদ ক্রয় করা হয়।
হাসান সহীহ্, ইবনি মা-জাহ [৩৩৮১] এ হাদীসটিকে আবু ঈসা আনাসের হাদীস হিসেবে গারীব বলেছেন। রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর অনুরূপ হাদীস ইবনি আব্বাস, ইবনি মাসউদ ও ইবনি উমার [রাদি.] হইতেও বর্ণিত আছে। ক্রয় বিক্রয় হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ হাসান সহীহ
৬০. অনুচ্ছেদঃ মালিকের বিনা অনুমতিতে তার পশুর দুধ দোহন করা
১২৯৬. সামুরা ইবনি জুনদাব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমাদের কোন লোক কোন পশু পালের নিকট এসে পড়লে সেখানে এর মালিককে পেলে [দুধ দোহনের জন্য] তার অনুমতি চাইবে। সে অনুমতি দিলে দুধ দোহাবে এবং পান করিবে। কোন লোক যদি সেখানে উপস্থিত না থাকে তবে তিনবার ডাক দিবে। তার ডাকে কোন লোক সাড়া দিলে তবে তার নিকট অনুমতি চাইবে। তার ডাকে কোন লোক সাড়া না দিলে সে দুধ দোহাবে, তা পান করিবে কিন্তু সাথে করে নিয়ে যেতে পারবে না।
সহীহ্, ইবনি মা-জাহ [২৩০০] উমার ও আবু সাঈদ [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। সামুরা [রাদি.] হইতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবু ঈসা হাসান গারীব সহীহ্ বলেছেন। এ হাদীস অনুযায়ী একদল আলিম আমল করিয়াছেন। ঈমাম আহ্মাদ এবং ইসহাকও একথা বলেছেন। আলী ইবনি মাদীনী বলেন, সামুরা [রাদি.]-এর নিকট হাসান যে শুনেছেন তা সত্য। সামুরা [রাদি.]-এর নিকট হাসান বাসরীর হাদীস শুনার ব্যাপারে একদল হাদীস বিশারদ ভিন্নমত পোষণ করেন। তারা বলেছেন, সামুরা [রাদি.]-এর নিকট হইতে হাসান [রঃ] শুনে বর্ণনা করেননি, বরঞ্চ তার পান্ডুলিপি হইতে বর্ণনা করিয়াছেন। ক্রয় বিক্রয় হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৬১. অনুচ্ছেদঃ মৃত জীবের চামড়া ও মূর্তি বিক্রয় করা
১২৯৭. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি মক্কা বিজয়ের বছর রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে সেখানে থাকাবস্থায় বলিতে শুনেছেনঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ্ ও তার রাসূল শারাব, মৃত জীব, শূকর ও মূর্তির ব্যবসা হারাম করিয়াছেন। তাঁকে বলা হল, হে আল্লাহ্র রাসূল! মৃত জীবের চর্বি প্রসঙ্গে আপনার বক্তব্য কি? এটাতো ব্যবহার করা হয় নৌকায় প্রলেপের কাজে ও চামড়া প্রক্রিয়াজাত করার কাজে এবং লোকেরা এটা দিয়ে প্রদীপ জ্বালায়। তিনি বললেনঃ না, এটা হারাম। তারপর রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] আরো বললেনঃ আল্লাহ্ তাআলা ইয়াহুদীদের ধ্বংস করে দিন! আল্লাহ্ তাআলা চর্বিকে তাহাদের জন্য হারাম করে দিয়েছিলেন, কিন্তু তারা তা গলিয়ে বিক্রয় করেছে এবং এর মূল্য ভক্ষণ করেছে।
সহীহ্, ইবনি মা-জাহ [২১৬৭], নাসা-ঈ. উমার ও ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবু ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। এ হাদীস অনুযায়ী আলিমগণ আমল করিয়াছেন। ক্রয় বিক্রয় হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৬২. অনুচ্ছেদঃ হেবা [দান] ফিরিয়ে নেওয়া জঘন্য কাজ
১২৯৮. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আমাদের জন্য নিকৃষ্ট দৃষ্টান্ত স্থাপন করা শোভনীয় নয়। দান [হেবা] করার পর যে লোক তা আবার ফিরিয়ে নেয় সে এমন এক কুকুরের সমতুল্য যে বমি করার পর তা আবার ভক্ষণ করে।
সহীহ্, ইবনি মা-জাহ [২৩৮৫], নাসা-ঈ।এ অনুচ্ছেদে ইবনি উমর [রাদি.]-এর সূত্রে নাবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেছেনঃ কোন কিছু দান করে তা আবার ফিরিয়ে নেওয়া কোন ব্যক্তির জন্য হালাল নয়। তবে পিতা নিজ পুত্রকে দান করে তা আবার ফিরিয়ে নিতে পারে।ক্রয় বিক্রয় হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১২৯৯. ইবনি উমার ও ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
ইবনি উমার ও ইবনি আব্বাস [রাদি.]-এর সূত্রে উপরোক্ত হাদীসটি নাবী [সাঃআঃ] হইতে মারফূ হিসেবে বর্ণিত আছে।
সহীহ্, ইবনি মা-জাহ [২৩৮৬]। আবু ঈসা বলেন, ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণিত হাদীসটি হাসান সহিহ। এ হাদীস অনুযায়ী একদল সাহাবী ও তাবিঈ আমল করিয়াছেন। তারা বলেছেন, কোন ব্যক্তির পক্ষে নিজের নিকটাত্মীয়কে কিছু দান করে বা উপহার দিয়ে তা ফিরিয়ে নেওয়ার অধিকার নেই। তবে নিকটাত্মীয় ব্যতীত অন্য কাউকে দান করে এবং তার বিনিময়ে কিছু গ্রহণ না করলে উক্ত দান ফিরত নেওয়া যায়। সুফিয়ান সাওরীও একথা বলেছেন। শাফিঈ বলেছেন, পিতা ব্যতীত অন্য কোন লোক দান বা উপহার ফিরিয়ে নিতে পারবে না। তিনি নিজ মতের সপক্ষে উপরে বর্ণিত ইবনি উমারের হাদীস দলীল হিসাবে গ্রহণ করিয়াছেন। ক্রয় বিক্রয় হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৬৩. অনুচ্ছেদঃ আরাইয়া এবং এই সম্পর্কিত অনুমতি প্রসঙ্গে
১৩০০. যাইদ ইবনি সাবিত [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
মুহাকালা ও মুযাবানা ধরণের বেচা-কেনাকে রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] নিষেধ করিয়াছেন, কিন্তু আরাইয়ার অনুমতি দিয়েছেন-অনুমানে যে পরিমাণ নির্ধারিত হয় তদানুযায়ী বিক্রয় করিতে।
সহীহ্, ইবনি মা-জাহ [২২৬৮, ২২৬৯], নাসা-ঈ। আবু হুরাইরা ও জাবির [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। যাইদ [রাদি.] হইতে মুহাম্মাদ ইবনি ইসহাকও এরকমই বর্ণনা করিয়াছেন। আইয়্যূব, উবাইদুল্লাহ ইবনি উমার এবং মালিক ইবনি আনাস [রঃ] নাফির সূত্রে, তিনি ইবনি উমারের সূত্রে বর্ণনা করিয়াছেন, মুহাকালা ও মুযাবানা ধরণের কেনা-বেচাকে রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] নিষিদ্ধ করিয়াছেন। যাইদ ইবনি সাবিত [রাদি.] হইতে ইবনি উমার [রাদি.] একই সনদে বর্ণনা করিয়াছেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] আরাইয়ার অনুমতি দিয়েছেন। মুহাম্মাদ ইবনি ইসহাকের হাদীসের তুলনায় এ হাদীসটি অনেক বেশি সহিহ। ক্রয় বিক্রয় হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৩০১. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
পাঁচ ওয়াসাকের কম পরিমাণের মধ্যে রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] আরাইয়া পদ্ধতিতে বিক্রয়ের সম্মতি দিয়েছেন।
সহীহ্, বেচা-কেনার হাদীস
মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণিত আছে, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] পাঁচ ওয়াসাক বা তার কম পরিমাণের মধ্যে আরাইয়া পদ্ধতিতে বিক্রয়ের অনুমতি প্রদান করিয়াছেন। ক্রয় বিক্রয় হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৩০২. যাইদ ইবনি সাবিত [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] অনুমান করে পরিমাণ নির্ধারণ করার পর আরাইয়া পদ্ধতিতে বিক্রয়ের অনুমতি প্রদান করিয়াছেন।
সহীহ্, বেচা-কেনার হাদীস, নাসা-ঈ।এ হাদীসটিকে আবু ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণিত হাদীসটি হাসান সহিহ। এ হাদীস অনুযায়ী একদল আলিম আমল করিয়াছেন। তাহাদের মধ্যে ঈমাম শাফি, আহ্মাদ ও ইসহাকও অন্তর্ভুক্ত আছেন। তারা বলেছেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] মুহাকালা ও মুযাবানা নিষিদ্ধ করিয়াছেন এবং তা হইতে আরাইয়াকে বাদ রেখেছেন। তারা দলীল হিসাবে আবু হুরাইরা ও যাইদ [রাদি.]-এর হাদীসকে গ্রহণ করিয়াছেন। তাহাদের মতে আরাইয়ার ফল পাঁচ ওয়াসাকের কম পরিমাণের মধ্যে [পরিপক্ক ফলের বিনিময়ে] কেনা জায়িয। কিছু সংখ্যক আলিমের মতে, এই নির্দেশের মর্মার্থ এই যে, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] দরিদ্র লোকদেরকে এ ব্যাপারে কিছুটা সুযোগ দিতে চেয়েছেন। কেননা, তারা তাহাঁর নিকট আবেদন করে যে, তারা [আরাইয়ার] গাছের কাঁচা ফল কেনার জন্য শুধু পাকা ফলই দিতে পারে সুতরাং তিনি তাজা খেজুর খাওয়ার সুযোগকে বৃদ্ধির জন্য আরাইয়ার পরিমাণ পাঁচ ওয়াসাকের কমের মধ্যে সীমাবদ্ধ করেন। ক্রয় বিক্রয় হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৬৪. অনুচ্ছেদঃ শুকনা ফলের পরিবর্তে গাছের কাঁচা ফল বিক্রয় নিষিদ্ধ
১৩০৩. রাফি ইবনি খাদীজ ও সাহল ইবনি আবু হাসমা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
শুকনো ফলের পরিবর্তে গাছের কাঁচা ফল [সংগৃহীত] বিক্রয় করিতে রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] নিষেধ করিয়াছেন, কিন্তু আরাইয়া ব্যবসায়ীদের আরাইয়া করার অনুমতি দিয়েছেন। তিনি একইভাবে তাজা আঙ্গুরের বিনিময়ে শুকনো আঙ্গুর এবং অনুমানে পরিমাণ নির্ধারণ করে ফল বিক্রয় করিতে নিষেধ করিয়াছেন।
সহীহ্, বেচা-কেনার হাদীস। এ হাদীসটিকে আবু ঈসা উল্লেখিত সনদসূত্রে হাসান সহীহ্ গারীব বলেছেন। ক্রয় বিক্রয় হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৬৫. অনুচ্ছেদঃ ক্রেতাকে বিভ্রান্ত করার উদ্দেশ্যে [নকল ক্রেতা সেজে] দর-দাম করা
১৩০৪. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমরা পরস্পর নাজাশ [ক্রেতাকে ঠকানোর জন্য দ্রব্যের দরদাম] কর না।
সহীহ্, ইবনি মা-জাহ [২১৭৪], নাসা-ঈ। ইবনি উমার ও আনাস [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবু ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। এ হাদীস অনুযায়ী আলিমগণ আমল করিয়াছেন। তারা বেচা-কেনার ক্ষেত্রে নাজাশ করাকে মাকরূহ বলেছেন। আবু ঈসা বলেন, নাজাশ বা তানাজুশ-এর অর্থ হলঃ এক লোক বিক্রেতার মালের দেখাশোনা করে এবং সে তার মালের দর-দাম প্রসঙ্গে ওয়াকিফহাল। যখন কোন ক্রেতা বিক্রেতার নিকট এসে মালের দামাদামি করে, তখন সে এসে উপস্থিত হয়। সে নকল ক্রেতার রূপ নিয়ে এসে ক্রেতার চেয়েও বেশি দাম হাঁকে। এখানে ক্রেতাকে ধোঁকায় ফেলে বিক্রেতার মাল বেশি মূল্যে বিক্রয় করাই তার উদ্দেশ্য। ইহা এক প্রকার প্রতারণা। ঈমাম শাফি বলেছেন, যে লোক নাজাশ করে সে গুনাহ্গার হইবে কিন্তু আইনগতভাবে বিক্রয়টি হালাল হইবে। কেননা, মূল বিক্রেতা প্রতারণা করেনি। ক্রয় বিক্রয় হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৬৬. অনুচ্ছেদঃ ওজনে কিছুটা বেশি দেওয়া
১৩০৫. সুয়াইদ ইবনি কাইস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, হাজার নামক জায়গা হইতে আমি ও মাখরাফা আল-আবদী [রাদি.] কিছু কাপড় আমদানি করলাম। নাবী [সাঃআঃ] আমাদের নিকট এলেন। তিনি আমাদের নিকট হইতে একটি পায়জামা কেনার জন্য দামাদামি করিলেন। আমাদের নিকটই একজন কয়াল [পরিমাপক] উপস্থিত ছিল। পারিশ্রমিকের বিনিময়ে সে ওজন করে দিত। রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] [দ্রব্যের মূল্য পরিশোধকালে] কয়ালকে বলেনঃ ওজন কর এবং কিছুটা বেশি দাও।
সহীহ্, ইবনি মা-জাহ [২২২০]জাবির ও আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। সুয়াইদ [রাদি.] হইতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবু ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। ওজনের সময় একটু বেশি দেওয়াকে বিশেষজ্ঞ আলিমগণ উত্তম বলেছেন। সিমাকের সূত্রে শুবা উক্ত হাদীসটি বর্ণনা করিয়াছেন এবং সনদে আবু সাফওয়ানকে সিমাকের পরে যোগ করিয়াছেন। ক্রয় বিক্রয় হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৬৭. অনুচ্ছেদঃ অভাবী ঋণগ্রস্তকে সময় দেওয়া এবং তার সাথে ভদ্রতা বজায় রাখা
১৩০৬. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে লোক অভাবী ঋনগ্রস্থকে সুযোগ প্রদান করে অথবা ঋণ মাফ করে দেয়, কিয়ামাতের দিবসে আল্লাহ্ তাআলা তাকে নিজের আরশের ছায়ায় আশ্রয় প্রদান করবেন, যেদিন তাহাঁর আরশের ছায়া ছাড়া আর কোন ছায়া থাকিবে না।
সহীহ্, তালীকুর রাগীব [২/৩৭], বেচা-কেনার হাদীস। আবুল ইয়াসার, আবু কাতাদা, হুযাইফা, ইবনি মাসউদ ও উবাদা [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবু ঈসা উল্লেখিত সনদসূত্রে হাসান সহীহ্ গারীব বলেছেন। ক্রয় বিক্রয় হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৩০৭. আবু মাসউদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমাদের পূর্ববর্তী জাতির মধ্যে কোন এক লোকের হিসাব নেওয়া হলে তার কোন কাজ পাওয়া গেল না। সে ছিল ধনীলোক। সে যখন লোকদের সাথে লেন-দেন করত তখন নিজ গোলামদের হুকুম প্রদান করতঃ অভাবী ঋণগ্রস্থদের সাথে সহানুভূতিপূর্ণ আচরন কর। এতে আল্লাহ্ তাআলা বলেনঃ আমি ক্ষমা ও সহানুভূতির ক্ষেত্রে তার চেয়ে বেশী উপযোগী। অতএব, [হে ফেরেশ্তাগণ!] তাকে মুক্তি প্রদান কর।
সহীহ্, বেচা-কেনার হাদীস, মুসলিম। এ হাদীসটিকে আবু ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। আবুল ইয়াসাবের নাম কাব, পিতা আমর। ক্রয় বিক্রয় হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৬৮. অনুচ্ছেদঃ ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে স্বচ্ছল ব্যক্তির টালবাহানা করা অন্যায়
১৩০৮. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেছেনঃ ঋণ পরিশোধ করার ক্ষেত্রে সক্ষম ব্যক্তির টালবাহানা করা অন্যায়। তোমাদের কারো পাওনা পরিশোধ করার জন্য ঋণগ্রস্থ ব্যক্তি কোন সক্ষম ব্যক্তির উপর দায়িত্ব দিলে তা অনুমোদন করা উচিত।
সহীহ্, ইবনি মা-জাহ [২৪০৩], নাসা-ঈ। ইবনি উমার ও আশ-শারীদ [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদ হাদীস বর্ণিত আছে। ক্রয় বিক্রয় হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৩০৯. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ স্বচ্ছল অবস্থা সম্পন্ন লোকদের [ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে] টালবাহানা করা যুলুম। তোমাকে অবস্থা সম্পন্ন ব্যক্তির উপর সোপর্দ করা হলে তুমি তা আনুমোদন করিবে এবং এক বিক্রয় চুক্তির মধ্যে দুই বিক্রয় [শর্ত] অন্তর্ভুক্ত করিবে না।
সহীহ্, বেচা-কেনার হাদীস । আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবু ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। এ হাদীসের তাৎপর্য হলঃ কোন লোক তার [ঋণ ইত্যাদির] দায় স্বচ্ছল লোকের উপর অর্পণ [হাওয়ালা] করলে সে যেন তা অনুমোদন করে। কিছু আলিম বলেছেন, সক্ষম ব্যক্তির উপর ঋণ অর্পণ করা হলে এবং পাওনাদার তা অনুমোদন করলে ঋণগ্রস্থ ব্যক্তি দায় মুক্ত হয়ে যাবে। ঋণদানকারী আর তাকে তাগাদা দিতে পারবে না। এই মত দিয়েছেন ঈমাম শাফি, আহ্মাদ ও ইসহাক।
অন্য একদল আলিম বলেছেন, সক্ষম অবস্থাসম্পন্ন লোকের উপর যে লোকের ঋণ পরিশোধের দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছিল সে যদি দেউলিয়া হয়ে যায়, তবে ঋনদানকারী তার আসল ঋণীকে তাগাদা দেয়ার অধিকারী হইবে। তারা নিজেদের দলীল হিসাবে উসমান [রাদি.] ও অন্যান্য সাহাবীর একটি বক্তব্যকে গ্রহন করেছেনঃ “মুসলমানের মাল বিলীন হইতে পারে না”। ইসহাক বলেন, মুসলমানের মাল বিলীন হইতে পারে না কথার তাৎপর্য এই যে, ঋণগ্রহীতা ঋনদাতাকে অন্য কোন ব্যক্তির নিকট হইতে তাকে স্বচ্ছল ভেবে তার ঋণ আদায় করে নেওয়ার কথা বলে। কিন্তু দেখা গেল যে, সে আসলে দেউলিয়া। এই অবস্থায় মুসলমানের মাল বিনস্ট হইতে পারে না [হাওয়ালাকারীকেই তা পরিশোধ করিতে হইবে]। ক্রয় বিক্রয় হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৬৯. অনুচ্ছেদঃ মুনাবাযা ও মুলামাসা প্রসঙ্গে
১৩১০. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, মুনাবাযা ও মুলামাসা প্রকারের বেচা-কেনাকে রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] নিষিদ্ধ করিয়াছেন।
সহীহ্, বেচা-কেনার হাদীস, নাসা-ঈ। আবু সাঈদ ও ইবনি উমার [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবু ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। এ হাদীসের তাৎপর্য এই যে, বিক্রেতা বলিলঃ আমি যখন তোমার দিকে কিছু নিক্ষেপ করব তখন তোমার ও আমার মাঝে বেচা-কেনা বাধ্যতামূলক হয়ে যাবে। একে বলে মুনাবাযা। মুলামাসার অর্থ হলঃ বিক্রেতা ক্রেতাকে বলিল, অমুক জিনিসটি তুমি র্স্পষ করলে বেচা-কেনা করাতা বাধ্যতামূলক হয়ে যাবে, ক্রেতা যদি পণ্যটি না দেখে থাকে তারপরেও, যেমন মোড়কের মধ্যের জিনিস, খাপের মধ্যের তরবারি ইত্যাদি। এটা এক প্রকার বিক্রয় পদ্ধতি যা জাহিলী যুগে করা হতো। এ উভয় প্রকার বিক্রয় পদ্ধতিতে বিক্রয় করিতে রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] নিষেধ করিয়াছেন। ক্রয় বিক্রয় হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৭০. অনুচ্ছেদঃ খাদ্যশস্য ও ফলের ক্ষেত্রে অগ্রিম বেচা-কেনা [বাই সালাম]
১৩১১. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] যে সময় মাদীনায় আসেন সে সময় বিভিন্ন ধরণের ফলমূল অগ্রিম বেচা-কেনায় এখানকার লোকজন অভ্যস্ত ছিল। তিনি বললেনঃ যে লোক অগ্রিম বেচা-কেনা করিতে চায় সে যেন পরিমাপ, ওজন ও মেয়াদ নির্দিষ্ট করে নেয়।
সহীহ্, ইবনি মা-জাহ [২২৮০], নাসা-ঈ। ইবনি আবী আওফা ও আবদুর রাহমান ইবনি আবযা [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবু ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। এ হাদীস অনুযায়ী সাহাবী ও তাবীঈগণ আমল করিয়াছেন। তাহাদের মতে অগ্রিম বেচা-কেনা জায়িয হইবে খাদ্যশস্য, কাপড়-চোপড় এবং যেসব বস্তুর পরিমান, বৈশিষ্ট্য, অবস্থা ও ধরণ নির্ধারণ করা যায় এমন পণ্যের ক্ষেত্রে।
পশু অগ্রিম বেচা-কেনা করা যায় কিনা এ ব্যাপারে মতের অমিল আছে। পশুর অগ্রিম বেচা-কেনা করাটা একদল সাহাবী ও তাবিঈর মতে জায়িয। এই মত দিয়েছেন ঈমাম শাফি, আহ্মাদ ও ইসহাক। এটাকে আরেকদল আলিম নাজায়িয বলেছেন। সুফিয়ান সাওরী ও কূফাবাসী আলিমগণ এই শেষোক্ত মত গ্রহন করিয়াছেন। আবুল মিনহালের নাম আব্দুর রহমান, পিতা মুতঈম। ক্রয় বিক্রয় হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৭১. অনুচ্ছেদঃ শরীকানা সম্পদের কোন অংশীদার তার অংশ বিক্রয়ের ইচ্ছা করলে
১৩১২. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেছেন, কোন বাগানের মালিকানায় কোন ব্যক্তির সাথে তার আরো শরীক থাকলে, সে তার অংশ বিক্রয়ের জন্য শরীকদেরকে ক্রয়ের প্রস্তাব দেওয়ার পূর্বে যেন সেটা অন্যের নিকট বিক্রয় না করে।
সহীহ্, ইরওয়া [৫/৩৭৩], বেচা-কেনার হাদীস, মুসলিম অনুরূপ । আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসের সনদ পরস্পর সংযুক্ত [মুত্তাসিল] নয়। আমি ঈমাম বুখারীকে বলিতে শুনেছিঃ সুলাইমান ইয়াশকুরী প্রসঙ্গে কথিত আছে যে, জাবির [রাদি.]-এর জিবদ্দশাতেই তিনি মৃত্যু বরণ করেন। আর তার নিকট হইতে বিশর ও কাতাদা [রঃ] কখনও কিছু শুনেননি। বুখারী আরো বলেন, সুলাইমান ইয়াশকুরীর কাছে আমর ইবনি দীনার ব্যতিত আর কেউ শুনেছেন বলে আমার জানা নেই। জাবির [রাদি.]-এর জীবদ্দশায় হয়ত আমর তার নিকট হাদীস শুনেছেন। কাতাদা [রঃ] সুলাইমান ইয়াশকুরীর পাণ্ডুলিপি হইতেই হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। তিনি এটা জাবির [রাদি.]-এর নিকট হইতে অর্জন করেছিলেন। সুলাইমান আত-তাইমী বলেছেন, তারা হাসান বাসরীর নিকট জাবির [রাদি.]-এর পাণ্ডুলিপিটি নিয়ে গেলেন। তিনি এটাকে গ্রহন করিলেন বা তা হইতে রিওয়াত করেন। অতঃপর তারা এটাকে কাতাদার নিকট নিয়ে গেলে তিনিও তা হইতে রিওয়াত করেন। তারপর এটাকে তারা আমার কেছে নিয়ে এলে আমি তা হইতে রিওয়াত করিনি এবং তা ফেরত দেই। ক্রয় বিক্রয় হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৭২. অনুচ্ছেদঃ মুখাবারা ও মুআওয়ামা
১৩১৩. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] মুহাকালা, মুযাবানা, মুখাবারা ও মুআওয়ামা করিতে নিষেধ করিয়াছেন, কিন্তু আরাইয়ার অনুমতি প্রদান করিয়াছেন।
সহীহ্, বেচা-কেনার হাদীস, মুসলিম। এ হাদীসটিকে আবু ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন।
মুহাকালাঃ নিদিষ্ট পরিমাণ গমের বিনিময়ে অনুমান করে ক্ষেতের অপ্রস্তুত শস্য বিক্রয় করা। মুযাবানাঃ নির্দিষ্ট পরিমাণ শুকনা খেজুরের বিনিময়ে গাছের কাঁচা খেজুর অনুমান করে বিক্রয় করা। মুখাবারাদি. ক্ষেতের এক তৃতীয়াংশ বা চতুর্থাংশের বিনিময়ে জমি ভাড়া দেওয়া। মুআওয়ামাঃ কোন নির্দিষ্ট বাগানের ফল দুই তিন বৎসরের জন্য অগ্রীম বিক্রয় করা। অনুবাদক। ক্রয় বিক্রয় হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ নির্ণীত নয়
৭৩. অনুচ্ছেদঃ দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করা
১৩১৪. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর যুগে একবার দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে লোকেরা বলিতে লাগল, হে আল্লাহ্র রাসূল! আমাদের জন্য দ্রব্যমূল্য বেঁধে দিন। তিনি বললেনঃ আল্লাহ্ তাআলাই মূল্য নির্ধারণ করে থাকেন, তিনিই নিয়ন্ত্রণকারী, অপ্রশস্তকারী, প্রশস্তকারী ও রিযিক দানকারী। আমি আমার প্রতিপালকের সাথে এমন অবস্থায় মিলিত হইতে চাই যে, তোমাদের কোন লোক যেন এ দাবি করিতে না পারে [আমার বিরুদ্ধে] যে, তার জান-মালের উপর আমি হস্তক্ষেপ করেছি।
সহীহ্, ইবনি মা-জাহ [২২০০]। আবু ঈসা এ হাদীসটিকে হাসান সহীহ্ বলেছেন। ক্রয় বিক্রয় হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৭৪. অনুচ্ছেদঃ ব্যবসায়ের মধ্যে প্রতারণা করা খুবই জঘন্য অপরাধ
১৩১৫. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
কোন একসময় রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] [বাজারে] একটি খাদ্যশস্যের স্তূপ অতিক্রম করে যাচ্ছিলেন। তিনি নিজের হাতকে স্তূপের মধ্যে প্রবেশ করালেন। তিনি তাহাঁর হাতে ভিজা অনুভব করেন। স্তূপের মালিককে তিনি প্রশ্ন করেনঃ এ কি? সে বলিল, হে আল্লাহর রাসূল! এটা বৃষ্টির পানিতে ভিজে গিয়েছিল। তিনি বললেনঃ ভিজাগুলো স্তূপের উপরে রাখলে না কেন, যাতে লোকেরা দেখিতে পেত? অতঃপর তিনি বললেনঃ প্রতারণাকারী ও ধোঁকাবাজকারীদের সাথে আমাদের কোন সম্পর্ক নেই।
সহীহ্, ইবনি মা-জাহ [২২২৪] ইবনি উমার, আবুল হামরাআ, ইবনি আব্বাস, বুরাইদা, আবু বুরদা, ইবনি নিয়ার ও হুযাইফা ইবনিল ইয়ামান [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবু ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। এ হাদীস অনুযায়ী আলিমগণ মত দিয়েছেন। প্রতারণা ও ধোঁকাবাজিকে তারা খুবই জঘন্য অপরাধ হিসাবে উল্লেখ করিয়াছেন এবং এটাকে হারাম বলেছেন। ক্রয় বিক্রয় হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৭৫. অনুচ্ছেদঃ উট অথবা অন্য কোন পশু ধার নেওয়া
১৩১৬. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, একটি উঠতি বয়সের উটকে রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] ধার হিসেবে গ্রহণ করেন। তিনি ফিরত দেওয়ার সময় এর চেয়েও ভাল উট প্রদান করিলেন এবং বললেনঃ তোমাদের মধ্যে সেই বেশি উত্তম যে উত্তমভাবে ঋণ পরিশোধ করে।
সহীহ্, বেচা-কেনার হাদীস, নাসা-ঈ। আবু রাফি [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবু ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। উক্ত হাদীসটি সালামার সূত্রে শুবা ও সুফিয়ান [রঃ] বর্ণনা করিয়াছেন। এ হাদীস অনুযায়ী একদল বিশেষজ্ঞ আলিম আমল করিয়াছেন। নির্দিষ্ট বয়সের উট ধার হিসেবে গ্রহণ করাতে তারা কোন সমস্যা মনে করেন না। এই মত দিয়েছেন শাফিঈ, আহ্মাদ ও ইসহাক। কিন্তু এটাকে অন্য একদল আলিম মাকরূহ মনে করেন।ক্রয় বিক্রয় হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৩১৭. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
এক ব্যক্তি নিজের পাওনা আদায়ের উদ্দেশ্যে রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে কঠোর তাগাদা দিল। এর ফলে লোকটির উপর সাহাবীগণ রেগে গেলেন। রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ তাকে উপেক্ষা কর, কেননা, পাওনাদারের অধিকার আছে কথা বলার। তিনি আরো বললেনঃ একটি উট কিনে তোমরা তাকে প্রদান কর। তারা উটের তালাশ করিলেন। কিন্তু তার পাওনা উট হইতে অধিক ভালটি ছাড়া অন্য কোন উট পেলেননা। তিনি বললেনঃ তাকে সেটাই কিনে দাও। কেননা, তোমাদের মধ্যে উত্তমরূপে ঋণ পরিশোধকারী লোকই উত্তম।
সহীহ্, বেচা-কেনার হাদীস, নাসা-ঈ। এ হাদীসটি মুহাম্মাদ ইবনি বাশ্শার মুহাম্মাদ ইবনি জাফার হইতে, তিনি শুবা হইতে, তিনি সালামা ইবনি কুহাইল হইতে অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেন। এ হাদীসটিকে আবু ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। ক্রয় বিক্রয় হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৩১৮. রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর আযাদকৃত গোলাম আবু রাফি [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, উঠতি বয়সের একটি উট রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] ধার হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন। তারপর [বাইতুল মালে] যাকাতের উট আসে। আবু রাফি [রাদি.] বলেন, ঐ লোকের উঠতি বয়সের উটটি পরিশোধের জন্য রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাকে নির্দেশ দিলেন। আমি বললাম, [বাইতুল মালে] ছয় বছর বয়সের উটের চেয়ে ছোট উট পাচ্ছি না। রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ তাকে ঐটিই প্রদান কর। কেননা।, উত্তমভাবে ঋণ পরিশোধকারী ব্যক্তিই লোকদের মধ্যে বেশি উত্তম।
সহীহ্, ইবনি মা-জাহ [২২৮৫], মুসলিম। এ হাদীসটিকে আবু ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। ক্রয় বিক্রয় হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৩১৯. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ ক্রয়-বিক্রয় ও তাগাদার ক্ষেত্রে আল্লাহ্ তাআলা নম্রতা পছন্দ করেন।
সহীহ্, সহীহা [৮৯০৯]। জাবির [রাদি.] হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটিকে আবু ঈসা গরীব বলেছেন। উপরোক্ত হাদীসটি আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে সাঈদ আল-মাকবুরীর বরাতে ইবনিস এর সূত্রেও বর্ণিত আছে। ক্রয় বিক্রয় হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৩২০. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আল্লাহ্ তাআলা তোমাদের পূর্বকালের এক লোককে ক্ষমা করে দিয়েছেন। সে যখন বিক্রয় করত নম্রতা দেখাতো, যখন ক্রয় করত বিনয় প্রদর্শন করতো এবং যখন ঋণের তাগাদা প্রদান করত তখনও নম্রতা ও ভদ্রতা প্রদর্শন করত।
সহীহ্, ইবনি মা-জাহ [২২০৩], বুখারী অনুরূপ। এ হাদীসটিকে আবু ঈসা উল্লেখিত সনদসূত্রে সহীহ্ হাসান গারীব বলেছেন।ক্রয় বিক্রয় হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৭৬. অনুচ্ছেদঃ মাসজিদের ভিতরে ক্রয়-বিক্রয় করা নিষেধ
১৩২১. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ মসজিদের ভিতরে তোমরা কোন লোককে বেচা-কেনা করিতে দেখলে বলবে, আল্লাহ্ তাআলা যেন তোমার ব্যবসায়ে কোন লাভ প্রদান না করেন। মাসজিদের মধ্যে তোমরা কোন লোককে হারানো জিনিসের ঘোষণা দিতে দেখলে বলবে, তোমার হারানো জিনিসকে যেন আল্লাহ্ তাআলা ফিরিয়ে না দেন।
সহীহ্, মিশকাত [৭৩৩], ইরওয়া [১৪৯৫] আবু হুরাইরা [রাদি.]-এর হাদীসটিকে আবু ঈসা হাসান গারীব বলেছেন। এই হাদীস অনুযায়ী বিশেষজ্ঞ আলিমগণ আমল করার কথা বলেছেন। তাহাদের মতে মাসজিদের ভিতরে বেচা-কেনা করা নিষেধ। এই মত দিয়েছেন ঈমাম আহ্মাদ ও ইসহাক [রঃ]। মাসজিদের ভিতরে বেচা-কেনা করাটা অন্য একদল বিশেষজ্ঞ আলিমের মতে জায়িয। ক্রয় বিক্রয় হাদিস – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
Leave a Reply