কোরবানির নিয়ম কানুন । আকিকার বর্ণনা
কোরবানির নিয়ম কানুন । আকিকার বর্ণনা , এই অধ্যায়ে মোট হাদীস ৫৬ টি (২৭৮৮ – ২৮৪৩) >>আবুদ দাউদ শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন
অধ্যায় – ১৬ঃ কুরবানীর নিয়ম-কানুন, অনুচ্ছেদঃ ১-২1=২1টি, হাদীসঃ (২৭৮৮-২৮৪৩)=৫৬টি
অনুচ্ছেদ-১: কুরবানী ওয়াজিব হওয়া সম্পর্কে
অনুচ্ছেদ-২: মৃতের পক্ষ হইতে কুরবানী
অনুচ্ছেদ-৩: যে কুরবানী করিতে চায়, সে যিলহাজ্জের দশ তারিখ পর্যন্ত তার চুল কাটবে না
অনুচ্ছেদ-৪: কুরবানীর জন্য কোন ধরনের পশু উত্তম
অনুচ্ছেদ-৫: কুরবানীর পশুর বয়স কত হওয়া চাই
অনুচ্ছেদ-৬: যে ধরনের পশু কুরবানীর উপযুক্ত নয়
অনুচ্ছেদ-৭ঃ কুরবানীর গরু ও উটে কতজন শরীক হওয়া জায়িয
অনুচ্ছেদ-৮ঃ জামাআতের পক্ষ হইতে একটি বকরী কুরবানী করা সম্পর্কে
অনুচ্ছেদ-৯ঃ ঈদগাহে ইমামের কুরবানী করা
অনুচ্ছেদ-১০ঃ কুরবানীর গোশ্ত সংরক্ষণ করে রাখা
অনুচ্ছেদ-১১ঃ পশুকে চাঁদমারীর লক্ষ্য না বানানো এবং কুরবানীর পশুর প্রতি অনুগ্রহ প্রদর্শন
অনুচ্ছেদ-১২ঃ মুসাফিরের কুরবানী করা
অনুচ্ছেদ-১৩ঃ আহলে কিতাবের যাবাহকৃত পশু সম্পর্কে
অনুচ্ছেদ-১৪ঃ বেদুঈনরা দম্ভ প্রকাশার্থে যে পশু যাবাহ করে তার গোশত খাওয়া
অনুচ্ছেদ-১৫ঃ চকমকি পাথর দ্বারা যাবাহ করা
অনুচ্ছেদ–১৬ঃ কোন কিছু নিক্ষেপের মাধ্যমে [বন্য প্রাণী] যাবাহ করা সম্পর্কে
অনুচ্ছেদ-১৭ঃ উত্তমরূপে যাবাহ করা
অনুচ্ছেদ-১৮ঃ পশুর পেটের বাচ্চা যাবাহ করা সম্পর্কে
অনুচ্ছেদ-১৯ঃ এমন গোশত খাওয়া, যা আল্লাহর নামে যাবাহ করা হয়েছে কিনা জানা নাই
অনুচ্ছেদ-২০ঃ আতীরাহ বা রজব মাসের কুরবানী
অনুচ্ছেদ-২১ঃ আক্বীক্বাহ্র বর্ণনা
অনুচ্ছেদ-১: কুরবানী ওয়াজিব হওয়া সম্পর্কে
২৭৮৮. মিখলাফ ইবনি সুলাইম [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমরা রসূলুল্লাহর [সাঃআঃ] সাথে আরাফাহয় অবস্থান করছিলাম। বর্ণনাকারী বলেন, তিনি বলিলেনঃলোকসকল! নিশ্চয়ই প্রতিটি পরিবারের লোকদের উপর প্রতি বছর কুরবানী ও আতীরাহ করা কর্তব্য। তিনি বলিলেন, তোমরা কি জানো, আতীরাহ কি? আতীরাহ হলো, যাকে লোকেরা রাজাবিয়াহ বলিতে থাকে।
আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, আতীরাহ রহিত এবং এর হাদিসও রহিত।
কোরবানির নিয়ম কানুন – হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
২৭৮৯. আবদুল্লাহ ইবনি আমর ইবনিল আস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ আমি কুরবানীর দিনকে ঈদ উদযাপন করিতে নির্দেশপ্রাপ্ত হয়েছি। আল্লাহ এ দিনকে এ উম্মাতের জন্য ঈদ হিসাবে নির্দিষ্ট করেছেন। এক ব্যক্তি বললো, আপনার অভিমত ব্যক্ত করুন, আমি [আমার প্রতিপালিত] দুগ্ধবতী বা মালবাহী পশু ছাড়া অন্য পশু না পেলে কি তা দিয়েই কুরবানী করবো? তিনি বলিলেনঃ না, বরং তুমি তোমার চুল ও নখ কাটবে, গোঁফ ছোট করিবে এবং নাভীর নীচের লোম কাটবে। এ কাজগুলোই আল্লাহর নিকট তোমার পূর্ণাঙ্গ কুরবানী।
দুর্বলঃ মিশকাত [১৪৭৯], আল-জামিউস সাগীর [১২৬৫], যয়ীফ সুনান নাসায়ী [২৯৪/৪৩৬৫]। কোরবানির নিয়ম কানুন – হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-২: মৃতের পক্ষ হইতে কুরবানী
২৭৯০. তাবিঈ হানাশ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি আলী [রাদি.]-কে দুটি দুম্বা কুরবানী করিতে দেখে জিজ্ঞেস করলাম, ব্যাপার কি [দুটি কেন]? তিনি বলিলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাকে ওয়াসিয়্যাত করেছেন, আমি যেন তার পক্ষ হইতে কুরবানী করি। তাই তার পক্ষ হইতেও কুরবানী করছি।
দুর্বলঃ মিশকাত [১৫৪২]। কোরবানির নিয়ম কানুন – হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-৩: যে কুরবানী করিতে চায়, সে যিলহাজ্জের দশ তারিখ পর্যন্ত তার চুল কাটবে না
২৭৯১. উম্মু সালামাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ যার কুরবানীর পশু রহিয়াছে, সে যেন যিলহাজ্জ মাসের নতুন চাঁদ উঠার পর থেকে কুরবানী করার পূর্ব পর্যন্ত তার চুল ও নখ না কাটে।
কোরবানির নিয়ম কানুন – হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ
অনুচ্ছেদ-৪: কুরবানীর জন্য কোন ধরনের পশু উত্তম
২৭৯২. আয়িশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এমন দুম্বা কুরবানী করিতে নির্দেশ করেন, যার শিং নিখুঁত, হাঁটা কালো, দেখিতে কালো এবং শোয়াও কালো [অর্থাৎ পা, চোখ, পেট সবই কালো রঙের]। তিনি বলিলেনঃ হে আয়িশাহ! ছুরি দাও। এরপর বলিলেনঃ এটা পাথরে ঘষে ধারালো করো। আয়িশাহ [রাদি.] বলেন, আমি তাই করলাম। তিনি ছুরি নিলেন, দুম্বাকে ধরে কাৎ করে শোয়ান এবং যাবাহ করার সময় বলিলেনঃ “বিসমিল্লাহ; হে আল্লাহ! আপনি এ কুরবানী মুহাম্মাদ, মুহাম্মাদের পরিবার ও তার উম্মাতের পক্ষ হইতে কবুল করুন।” অতঃপর তিনি দুম্বাটি কুরবানী করিলেন।
কোরবানির নিয়ম কানুন – হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
২৭৯৩. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] নিজ হাতে সাতটি উটকে দাঁড়িয়ে থাকাবস্থায় কুরবানী করেন এবং মদীনাহইতে শিংযুক্ত দুটি ধূসর বর্ণের দুম্বা কুরবানী করেন।
কোরবানির নিয়ম কানুন – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৭৯৪. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] দুই শিংওয়ালা ধূসর বর্ণের দুটি দুম্বা কুরবানী করেন। যাবাহ করার সময় তিনি বিসমিল্লাহ এবং আল্লাহু আকবার পাঠ করেন, এবং তিনি তার পা পশুর ঘাড়ের উপর রাখেন।
কোরবানির নিয়ম কানুন – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৭৯৫. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] কুরবানীর দিন দুটি ধূসর বর্ণের শিংবিশিষ্ট ও খাসী করা দুম্বা যাবাহ করেন। তিনি দুম্বা দুটিকে কিবলাহুমুখী করে শুইয়ে বলেনঃ [আরবি] অতঃপর তিনি বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার বলে যাবাহ করেন।
দূর্বলঃ মিশকাত [১৪৬], যয়ীফ সুনান ইবনি মাজাহ [৬৬৯/৩১২১]কোরবানির নিয়ম কানুন – হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
২৭৯৬. আবু সাঈদ আল-খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এমন শিংবিশিষ্ট মোটাতাজা দুম্বা কুরবানী করেছেন যার চোখ, মুখ ও পা কালো বর্ণের ছিলো।
কোরবানির নিয়ম কানুন – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৫: কুরবানীর পশুর বয়স কত হওয়া চাই
২৭৯৭. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ তোমরা মুসিন্নাহ ছাড়া যাবাহ করিবে না। তবে তা সংগ্রহ করা তোমাদের জন্য কষ্টকর হলে মেষের জাযাআহ যাবাহ করিতে পারো।
কোরবানির নিয়ম কানুন – হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
২৭৯৮. যায়িদ ইবনি খালিদ আল-জুহানী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, একদা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তার সাহাবীদের মধ্যে কুরবানীর পশু বণ্টন করেন। তিনি আমাকে অল্প বয়স্ক একটা জাযাআহ দেন। যায়িদ [রাদি.] বলেন, আমি সেটি নিয়ে তার নিকট গিয়ে বলি, এটা তো জাযাআহ। তিনি বলিলেনঃ এটাই কুরবানী করো। সুতরাং আমি তা-ই কুরবানী করলাম।
কোরবানির নিয়ম কানুন – হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ
২৭৯৯. আসিম ইবনি কুলাইব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে তার পিতার সূত্র হইতে বর্ণীতঃ
তিনি [কুলাইব] বলেন, আমরা বনী সুলাইম গোত্রের মুজাশি নামক নাবী [সাঃআঃ] এর এক সাহাবীর সাথে ছিলাম। একবার বকরীর মূল্য অত্যধিক বৃদ্ধি পেলে তিনি ঘোষককে নির্দেশ দেয়ায় সে ঘোষণা করলো রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিতেনঃ এক বছর বয়সের ছাগলের স্থানে ছয় মাস বয়সের ভেড়া যথেষ্ট। আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, তিনি মাসউদের পুত্র মুজাশি [রাদি.]।
কোরবানির নিয়ম কানুন – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৮০০. আল-বারাআ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কুরবানীর দিন ঈদের সলাতের পর আমাদের সম্মুখে ভাষণ দিলেন এবং বলিলেনঃ যে ব্যক্তি আমাদের মত সলাত আদায় করলো, আমাদের মত কুরবানী করলো, তার কুরবানী সঠিক হলো। আর যে ঈদের সলাতের পূর্বে কুরবানী করলো, তা [কুরবানী না হয়ে] গোশত খাওয়ার বকরী হলো। আবু বুরদাহ ইবনি নিয়ার [রাদি.] দাঁড়িয়ে বলিলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আল্লাহর শপথ! আমি তো সলাতের জন্য বের হওয়ার আগেই কুরবানী করে ফেলেছি। আমি ভেবেছিলাম, আজ পানাহারের দিন। তাই তাড়াহুড়া করে কুরবানীর গোশত নিজে খেয়েছি, পরিবারপরিজন এবং প্রতিবেশীদেরও খেতে দিয়েছি। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেনঃ এটা গোশত খাওয়ার বকরী হলো। আবু বুরদাহ [রাদি.] বলেন, আমার কাছে ছয়মাস পূর্ণ বয়সের একটি ছাগল আছে যা আমার গোশত খাওয়ার বকরীর চেয়েও উত্তম। এটা কি আমার কুরবানীর স্থান পূর্ণ করিবে? তিনি বলিলেনঃ হাঁ, কিন্তু তোমার পরে আর কারো জন্য এরূপ করা জায়িয হইবে না।
কোরবানির নিয়ম কানুন – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৮০১. আল বারাআ ইবনি আযিব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আবু বুরদাহ নামক আমার এক খালু একদা ঈদের সালাতের আগেই কুরবানী করে ফেলেন। ফলে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাকে বলিলেনঃ তোমার বকরী গোশত খাওয়ার বকরী হয়েছে [কুরবানীর বকরী হয়নি]। তিনি বলিলেনঃ হে আল্লাহর রাসূল! আমার কাছে ছয় মাস বয়সের একটি ছাগল আছে। তিনি বলিলেনঃ সেটা কুরবানী করো, তবে তোমার পর আর কারো জন্য এরূপ করা সঠিক হইবে না।
কোরবানির নিয়ম কানুন – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৬: যে ধরনের পশু কুরবানীর উপযুক্ত নয়
২৮০২. উবাইদ ইবনি ফাইরূয [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি আল-বারাআ ইবনি আযিব [রাদি.]-কে জিজ্ঞেস করি, কোন ধরনের পশু কুরবানী করা জায়িয নয়? তিনি বলিলেন, একদা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদের মাঝে দাঁড়ান। আমার আঙ্গুলগুলো তাহাঁর আঙ্গুলের চেয়ে তুচ্ছ এবং আমার আঙ্গুলের গিরাগুলোও তাহাঁর আঙ্গুলের গিরার চেয়ে তুচ্ছ। তিনি আঙ্গুল দ্বারা ইশারা করে বলিলেনঃ চার ধরনের দোষযুক্ত পশু কুরবানী করা জায়ি্য নয়। অন্ধ-যার অন্ধত্ব সুস্পষ্ট, রুগ্ন-যার রোগ সুস্পষ্ট, খোঁড়া-যার খোঁড়ামী সুস্পষ্ট, বৃদ্ধ ও দুর্বল-যার হাড়ের মজ্জা শুকিয়ে গেছে। উবাইদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, আমি বলি, বয়সের কোন দোষ থাকাও আমি অপছন্দ করি। আল-বারাআ [রাদি.] বলেন, তুমি যা অপছন্দ করো তা বর্জন করিবে, তবে অন্যের জন্য তা নিষিদ্ধ করিবে না। আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, এমন দুর্বল যে, তার হাড়ের মজ্জা নাই।
কোরবানির নিয়ম কানুন – হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
২৮০৩. ইয়াযীদ মিসরী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি উতবাহ ইবনি আব্দ আস-সুলামীর নিকট এসে বলি, হে ওয়ালীদের পিতা! আমি কুরবানীর পশুর খোঁজে বের হই, কিন্ত কোন পশুই পছন্দ হয়নি। একটি বকরী পছন্দ হয়েছিল, তার একটি দাঁত না থাকায়, সেটাও বাদ দিয়েছি। এখন এ বিষয়ে আপনি আমাকে পরামর্শ দিন। উতবাহ বলেন, তুমি আমার কাছে সেটা নিয়ে আসোনি কেন? আমি বলি, সুবহানাল্লাহ! দাঁতপড়া পশু কুরবানী আপনার জন্য বৈধ, অথচ আমার জন্য বৈধ নয়! তিনি বলিলেন, হাঁ। তুমি সন্দিহান হয়েছো কিন্ত আমি সন্দিহান হইনি। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কানকাটা, শিংবিহীন, অন্ধ, দুর্বল এবং পা ভাঙ্গা পশু কুরবানী করিতে নিষেধ করেছেন।
মুসফারা হচ্ছে ঐ পশু যার কানকাটার ছিদ্র স্পষ্ট দেখা যায়। মুস্তাসালা হলো ঐ পশু যার শিং গোড়া থেকে ভেঙ্গে গেছে। যাখকা হলো, যে পশুর দৃষ্টিশক্তি লোপ পেয়েছে। মুশায়্যিআহ হলো, যে পশু দুর্বলতার কারণে মেষের সাথে সাথে চলতেও অক্ষম। কাসরা হলো ঐ পশু যার পা ভাঙ্গা। কোরবানির নিয়ম কানুন – হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
২৮০৪. আলী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদেরকে আদেশ করেছেন আমরা যেন কুরবানীর প্রাণীর চোখ-কান ভালভাবে দেখে নেই। আমরা যেন এমন পশু কুরবানী না করি যা কানা যা অন্ধ, কানের অগ্র যা শেষভাগের অংশ কাটা; যার কানের পাশের দিক ফাঁড়া যা গোলাকার ছিদ্র রয়েছে।
যুহাইর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, আমি আবু ইসহাক্বকে বলি, তিনি কান কাটার কথা উল্লেখ করেছেন কিনা? তিনি বলিলেন, না। আমি তাহাকে জিজ্ঞেস বলি, মুকাবালাহ কি? তিনি বলিলেন, যার কানের একপাশে কাটা। আমি বলি, মুদাবারাহ কি? তিনি বল্লেন, যে পশুর কানের শেষের অংশ কাটা। আমি বলি, শারকা কি? তিনি বলিলেন, যার কান ছিদ্র করা হয়েছে। আমি বলি, খারকা কি? তিনি বলিলেন, যে পশুর কান সম্পূর্ণ কাটা। দুর্বল ঃ ভালভাবে দেখে নেয়ার আদেশ কথাটি বাদে। মিশকাত [১৪১৩], ইরওয়া [১১৪৯]। কোরবানির নিয়ম কানুন – হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
২৮০৫. আলী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] কান কাটা এবং শিং ভাঙ্গা পশু দ্বারা কুরবানী করিতে নিষেধ করেছেন। আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, বর্ণনাকারী জুরাই সাদূস গোত্রীও এবং বাসরাহ নিবাসী। তার থেকে ক্বাতাদাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] ছাড়া কেউই হাদিস বর্ণনা করেননি।
দুর্বল ঃ মিশকাত [১৪৬৪], যইফ সুনান ইবনি মাজাহ [৬৭৮/৩১৪৫], ইরওয়া [১১৪৯], যইফ সুনান আত-তিরমিজি [২৫৯/১৫৫৬]। কোরবানির নিয়ম কানুন – হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
২৮০৬,. ক্বাতাদাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] সূত্র হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি সাঈদ ইবনিল মুসাইয়্যিব [র]-কে জিজ্ঞেস করি, আদাব কোন ধরনের পশু? তিনি বলেন, যে পশুর কান বা শিং অর্ধেক বা ততোধিক ভাঙ্গা বা কাটা।
কোরবানির নিয়ম কানুন – হাদিসের তাহকিকঃ মাক্বতু
অনুচ্ছেদ-৭ঃ কুরবানীর গরু ও উটে কতজন শরীক হওয়া জায়িয
২৮০৭.n জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমরা রসূলুল্লাহর [সাঃআঃ] যুগে তামাত্তু হাজ্জ করতাম এবং সাতজন মিলে একটি গরু কুরবানী করতাম। অনুরূপভাবে একটি উটেও সাতজন শরীক হয়ে কুরবানী করেছি।
কোরবানির নিয়ম কানুন – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৮০৮. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ [একটি] গরু সাতজনের পক্ষ হইতে এবং [একটি] উট সাতজনের পক্ষ হইতে [কুরবানী করা যাবে]।
কোরবানির নিয়ম কানুন – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৮০৯/জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমরা রসূলুল্লাহর [সাঃআঃ] সাথে হুদায়বিয়াতে সাতজনের পক্ষ হইতে একটি উট এবং সাতজনের পক্ষ হইতে একটি গরু কুরবানী করেছি।
কোরবানির নিয়ম কানুন – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৮ঃ জামাআতের পক্ষ হইতে একটি বকরী কুরবানী করা সম্পর্কে
২৮১০.জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, ঈদুল আযহার দিন আমি রসূলুল্লাহর [সাঃআঃ] সাথে ঈদগাহে উপস্থিত ছিলাম। তিনি খুত্ববাহ শেষে মিম্বার থেকে নামলেন। একটি বকরী আনা হলো। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] নিজ হাতে যাবাহ করেন এবং বলেনঃ “আল্লাহর নামে শুরু করছি, আল্লাহ মহান। এই কুরবানী আমার ও আমার উম্মাতের যারা কুরবানী করিতে অক্ষম তাহাদের পক্ষ হইতে।”
কোরবানির নিয়ম কানুন – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৯ঃ ঈদগাহে ইমামের কুরবানী করা
২৮১১. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] তাহাঁর কুরবানীর পশু ঈদগাহে যাবাহ করিতেন। ইবনি উমার [রাদি.]-ও অনুরূপ করিতেন।
কোরবানির নিয়ম কানুন – হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ
অনুচ্ছেদ-১০ঃ কুরবানীর গোশ্ত সংরক্ষণ করে রাখা
২৮১২. আমরাহ বিনতু আবদুর রহমান [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি আয়িশাহ [রাদি.]-কে বলিতে শুনিয়াছি ঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] সময়ে জঙ্গলে বসবাসকারী কিছু লোক এসে ঈদুল আযহার জামাআতে উপস্থিত হয়। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেনঃ তোমরা তিন দিনের খাওয়ার পরিমাণ গোশ্ত রেখে বাকী গোশ্ত সদাক্বাহ করে দাও। আয়িশাহ [রাদি.] বলেন, কিছুদিন পর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলা হলো, হে আল্লাহর রাসূল! ইতিপূর্বে লোকেরা তো তাহাদের কুরবানী [গোশ্ত] দ্বারা [অনেকদিন] সুবিধা ভোগ করতো। তারা চর্বি জমা করে রাখতো এবং চামড়া দিয়ে পানির মশক বানাতো। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ এরূপ বলার অর্থ কি? তারা বলিলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি কুরবানীর গোশ্ত তিন দিনের অধিক জমা রাখতে নিষেধ করেছেন। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেনঃ সে সময় তোমাদের নিকট কিছু গরীব লোক এসেছিল বিধায় আমি তোমাদেরকে এরূপ নিষেধ করেছিলাম। কাজেই এখন তোমরা তা খাও, সদাক্বাহ করো এবং জমা করে রাখো।
কোরবানির নিয়ম কানুন – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৮১৩. নুবাইশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ আমরা তোমাদেরকে তিন দিনের অধিক কুরবানীর গোশ্ত খেতে নিষেধ করেছিলাম, যাতে গোশ্ত তোমাদের সকলের নিকট পৌঁছে যায়। আল্লাহ এখন তোমাদের দারিদ্র মোচন করেছেন। কাজেই এখন তোমরা তা খাও, জমা করে রাখো এবং সদাক্বাহ করে নেকী অর্জন করো। জেনে রেখো, এ দিনগুলো পানাহারের দিন এবং মহান আল্লাহকে স্মরণ করার দিন।
কোরবানির নিয়ম কানুন – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-১১ঃ পশুকে চাঁদমারীর লক্ষ্য না বানানো এবং কুরবানীর পশুর প্রতি অনুগ্রহ প্রদর্শন
২৮১৪. শাদ্দাদ ইবনি আওস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহর [সাঃআঃ] নিকট দুটি বৈশিষ্ট সম্পর্কে শুনিয়াছি। এক. মহান আল্লাহ প্রতিটি জিনিসের প্রতি অনুগ্রহ প্রদর্শন বাধ্যতামূলক করেছেন। সুতরাং তোমরা হত্যা করার সময় সঠিক পন্থায় [দ্রুত] হত্যা করিবে। দুই. তোমরা যখন যাবাহ করিবে, দয়া সহকারে উত্তমরূপে যাবাহ করিবে। তোমাদের প্রত্যেকে যেন তার ছুরি উত্তমরূপে ধার দেয় এবং যাবাহকৃত পশুকে আরাম দেয়।
কোরবানির নিয়ম কানুন – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৮১৫. হিশাম ইবনি যায়িদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, একদা আমি আনাসের [রাদি.] সাথে আল-হাকাম ইবনি আইয়ুবের নিকট যাই। সেখানে গিয়ে দেখা গেলো, কতিপয় যুবক একটি মুরগীকে লক্ষ্যবস্তু নির্ধারণ করে তীর ছুঁড়ছে। তখন আনাস [রাদি.] বলিলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] জীব-জন্ত্তকে চাঁদমারীর লক্ষ্যবস্তু বানাতে নিষেধ করেছেন।
কোরবানির নিয়ম কানুন – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-১২ঃ মুসাফিরের কুরবানী করা
২৮১৬. সাওবান [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] সফরে কুরবানী করেন এবং বলেনঃ হে সাওবান! আমাদের জন্য বকরীর গোশতগুলো তৈরি করো। সাওবান [রাদি.] বলেন, মদিনায় পৌঁছা পর্যন্ত তাহাকে এ গোশত খাওয়াতে থাকি।
কোরবানির নিয়ম কানুন – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-১৩ঃ আহলে কিতাবের যাবাহকৃত পশু সম্পর্কে
২৮১৭. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, [আল্লাহর বাণী] ঃ “যে পশুর উপর আল্লাহর নাম উচ্চারণ করা হয় তোমরা তার গোশত খাও” [সূরাহ আল-আনআম ঃ ১১৮] “যে পশুর উপর আল্লাহর নাম উচ্চারণ করা হয়নি, তার গোশত খেয়ো না” [সূরাহ আল-আনআম ঃ ১২১]। এর হুকুম রহিত হয়ে গেছে। এটি আহলে কিতাবের যাবাহ করা পশুর ব্যাপারে প্রযোজ্য নয়। [আল্লাহর বাণী] ঃ “আহলে কিতাবের খাদ্য তোমাদের জন্য হালাল এবং তোমাদের খাদ্য তাহাদের জন্য হালাল” [সূরাহ আল-মায়িদাহ ঃ ৫]।
কোরবানির নিয়ম কানুন – হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
২৮১৮. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
মহান আল্লাহর বাণী, “শয়তানরা তাহাদের সঙ্গীদের মনে বিভিন্ন প্রশ্নের উদ্ভব করে”-এ আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার কারণ সম্পর্কে বর্ণিত আছে, শয়তানের সহযোগীরা বলতো, আল্লাহর যাবাহ করা [মরা জন্ত্ত] তোমরা খাও না, অথচ তোমরা নিজেরা যা যাবাহ করছো তা খাও? অতঃপর আল্লাহ আয়াত অবতীর্ণ করেন, “যে পশুর উপর আল্লাহর নাম উচ্চারণ করা হয়নি, তার গোশত খেয়ো না” … শেষ পর্যন্ত [সূরা আল-আনআম ঃ ১২১]।
কোরবানির নিয়ম কানুন – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৮১৯. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, একদা নাবী [সাঃআঃ] এর নিকট ইয়াহুদীরা এসে বললো, আমরা নিজেরা যা পশু হত্যা করি তা খেয়ে থাকি আর আল্লাহ যা হত্যা করেন তা খাই না। এ প্রেক্ষিতে মহান আল্লাহ অবতীর্ণ করেন, “যে পশুর উপর আল্লাহর নাম উচ্চারণ করা হয়নি, তার গোশত খেয়ো না” … আয়াতের শেষ পর্যন্ত [সূরা আল-আনআম ঃ ১২১]।
সহিহ ঃ কিন্তু এতে ইয়াহুদীদের উল্লেখ করাটা মুনকার। মাহফূয হলো ঃ মুশরিকরা। দেখুন, সহিহ সুনান আত-তিরমিজি [২৪৫৪] সংক্ষিপ্ত সানাদে। কোরবানির নিয়ম কানুন – হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য
অনুচ্ছেদ-১৪ঃ বেদুঈনরা দম্ভ প্রকাশার্থে যে পশু যাবাহ করে তার গোশত খাওয়া
২৮২০. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ঐসব যাবাহকৃত পশুর গোশত খেতে নিষেধ করেছেন যেগুলো আরবের লোকেরা নিজেদের অহঙ্কার প্রকাশার্থে যাবাহ করে। আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, অধস্তন বর্ণনাকারী গুনদার এটি ইবনি আব্বাসের [রাদি.] উক্তি হিসাবে বর্ণনা করেছেন। আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, আবু রাইহানার নাম আবদুল্লাহ ইবনি মাত্বার।
কোরবানির নিয়ম কানুন – হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ
অনুচ্ছেদ-১৫ঃ চকমকি পাথর দ্বারা যাবাহ করা
২৮২১. রাফি ইবনি খাদীজ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, একদা আমি রসূলুল্লাহর [সাঃআঃ] কাছে এসে বলি, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা আগামীকাল সকালে শত্রুর মোকাবিলা করবো। কিন্তু আমাদের কাছে ছুরি নেই। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, এমন বস্তু দ্বারা দ্রুত যাবাহ করো যা দিয়ে রক্ত প্রবাহিত হয়, আল্লাহর নাম নিয়ে যাবাহ করো এবং তা খাও, কিন্তু দাঁত অথবা নখ দিয়ে যাবাহ করো না। আমি এর কারণ তোমাদের বলছি। দাঁত হচ্ছে হাড় আর নখ হলো হাবশীদের ছুরি। সৈন্যদলের কিছু লোক সামনে অগ্রসর হয়ে কিছু গনীমাত লাভ করিল। তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] পিছনের দিকে ছিলেন। তারা গোশতের হাড়ি চুলায় বসালো। তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ঐ ডেগের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তাহাঁর নির্দেশ মোতাবেক গোশতের হাঁড়িগুলো উপুর করে ফেলে দেয়া হলো। তিনি তাহাদের মধ্যে গনীমাত বণ্টন করিলেন এবং একটি উটকে দশটি বকরীর সমান ধরলেন। দলের মধ্যকার একটি উট পালিয়ে যায়। তখন তাহাদের নিকট ঘোড়া ছিলো না। এক লোক [উটকে লক্ষ্য করে] তীর ছুঁড়লে মহান আল্লাহ উটটিকে থামিয়ে দেন। নাবী [সাঃআঃ] বলিলেন, এরূপ পশুর মধ্যেও পালাতে তৎপর পশু আছে, বা বন্য পশুর মধ্যেও থাকে। সুতরাং [যে পশু পালাবে] তোমরা সেটির সাথে এরূপ আচরণ [তীর নিক্ষেপ] করিবে।
কোরবানির নিয়ম কানুন – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৮২২. মুহাম্মাদ ইবনি সাফওয়ান অথবা সাফওয়ান ইবনি মুহাম্মাদ [রাঃ] সূত্র হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি দুটি খরগোশ শিকার করে চকমকি পাথর দিয়ে যাবাহ করলাম। এ ব্যাপারে আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর কাছে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি আমাকে এর গোশত খেতে অনুমতি দিলেন।
কোরবানির নিয়ম কানুন – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৮২৩. আত্বা ইবনি ইয়াসার [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বনূ হারিসাহর জনৈক ব্যক্তির সূত্রে বর্ণনা করেন, সে [লোকটি] উহূদ পাহাড়ের এক উপত্যকায় একটি মাদী উট চড়াচ্ছিল। এমতাবস্থায় উটটি মারা যাওয়ার উপক্রম হলে সে যাবাহ করার জন্য কোন অস্ত্র না পেয়ে একটি পেরেক নিয়ে উটের বুকের উপরের অংশে ঢুকিয়ে দিয়ে রক্ত প্রবাহিত করলো। পরে লোকটি নাবী [সাঃআঃ] এর নিকট এসে বিষয়টি অবহিত করলে তিনি তাহাকে এর গোশত খাওয়ার অনুমতি দেন।
কোরবানির নিয়ম কানুন – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৮২৪. আদী ইবনি হাতিম [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি বলিলাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমাদের কারো হাতে শিকার আসলে তখন কাছে ছুরি না থাকলে সে কি চকমকি পাথর ও লাঠির ধারালো পার্শ্ব দিয়ে তা যাবাহ করিবে, এ বিষয়ে আপনার অভিমত কি? তিনি বলিলেন, যেভাবে সম্ভব রক্ত প্রবাহিত করো এবং আল্লাহর নাম উচ্চারণ করো।
কোরবানির নিয়ম কানুন – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ–১৬ঃ কোন কিছু নিক্ষেপের মাধ্যমে [বন্য প্রাণী] যাবাহ করা সম্পর্কে
২৮২৫. আবুল আশরাআ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে তাহাঁর পিতার সূত্র হইতে বর্ণীতঃ
তিনি [পিতা] বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! যাবাহ কি শুধু কণ্ঠনালী বা সিনার উপর করিতে হইবে? বর্ণনাকারী বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, যদি তুমি তার রানে [বল্লমের] আঘাত করিতে পারলে তা তোমার জন্য যথেষ্ট। ঈমাম আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, এরূপ কেবল সংকটাপন্ন অবস্থা বা বন্য প্রাণীর বেলায় প্রযোজ্য। অন্যথায় নয়।
মুনকার ঃ যয়ীফ আল-জামিউস সাগীর [৪৮২৭], যয়ীফ সুনান ইবনি মাজাহ [৬৮৪/৩১৮৪], যয়ীফ আত তিরমিজি [২৫১/১৫২৬], যয়ীফ সুনান নাসায়ী [৩০১/৪৪০৮], ইরওয়া [২৫৩৫], মিশকাত [৪০৮২]। কোরবানির নিয়ম কানুন – হাদিসের তাহকিকঃ মুনকার
অনুচ্ছেদ-১৭ঃ উত্তমরূপে যাবাহ করা
২৮২৬. ইবনি আব্বাস ও আবু হুরাইরাহ [রাদি.] সূত্র হইতে বর্ণীতঃ
তারা বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] শয়তানের নিয়মে যাবাহ করিতে নিষেধ করেছেন। ইবনি ঈসা বর্ণিত হাদিসে রয়েছেঃ শারীত্বাতিশ শাইতান হলোঃ যাবাহের সময় রগ না কেটে কেবল শরীরের চামড়া তুলে পশুকে রেখে দেয়া, ফলে অধিক কষ্ট পেয়ে পশুটি মারা যায়।
দুর্বলঃ যয়ীফ আল-জামিউস সাগীর [৬০৬৮], ইরওয়া [২৫৩১]। কোরবানির নিয়ম কানুন – হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-১৮ঃ পশুর পেটের বাচ্চা যাবাহ করা সম্পর্কে
২৮২৭. আবু সাঈদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে যাবাহকৃত পশুর পেটের বাচ্চা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেনঃ তোমাদের ইচ্ছে হলে তাও খেতে পারো। মুসাদ্দাদের [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] এর বর্ণনায় রয়েছেঃ আমরা বলি, হে আল্লাহ্র রাসূল! আমরা উস্ট্রী, গাভী ও বকরী যাবাহ করার পর কখনো এর পেটে ভ্রূণ পেয়ে থাকি। আমরা এ ভ্রূণ ফেলে দিব নাকি খাবো? তিনি বলিলেনঃ ইচ্ছা হলে খেতে পারো। কেননা মাকে যাবাহ করাই এর যাবাহের অন্তর্ভুক্ত।
কোরবানির নিয়ম কানুন – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৮২৮. জাবির ইবনি আব্দুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ পশুকে যাবাহ করাই তার পেটের বাচ্চার যাবাহের জন্য যথেষ্ট।
কোরবানির নিয়ম কানুন – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-১৯ঃ এমন গোশত খাওয়া, যা আল্লাহর নামে যাবাহ করা হয়েছে কিনা জানা নাই
২৮২৯. আয়িশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
একদা সাহাবীগণ বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! জাহিলী যুগের কাছাকাছি একটি [নও মুসলিম] দল আমাদের নিকট গোশত নিয়ে আসে। আমরা জানি না তারা আল্লাহর নাম নিয়ে তা যাবাহ করেছে কিনা। আমরা কি এ গোশত খাবো? রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, তোমরা আল্লাহর নাম নিয়ে তা খাও।
কোরবানির নিয়ম কানুন – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-২০ঃ আতীরাহ বা রজব মাসের কুরবানী
২৮৩০. আবুল মালীহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নুবাইশাহ [রাদি.] বলেন, এক ব্যক্তি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে উচ্চস্বরে বললো, আমরা জাহিলী যুগে রজব মাসে আতীরাহ করতাম। এখন এ বিষয়ে আপনি আমাদের কি নির্দেশ দেন? তিনি বলিলেন, আল্লাহর নামে যে কোন মাসেই যাবাহ করিতে পারো, আল্লাহর আনুগত্য করো ও অভাবগ্রস্তকে খাদ্য দাও। নুবাইশাহ [রাদি.] বলেন, লোকটি আবার বললো, আমরা জাহিলী যুগ ফারাআ করতাম, এখন এ বিষয়ে আপনি আমাদের কি আদেশ দেন? তিনি বলিলেন, প্রত্যেক বিচরণকারী পশুতে ফারাআ রয়েছে। তোমরা তোমাদের পশুদেরকে খাদ্য দিয়ে থাকো। এমনকি তা বোঝা বহনের উপযোগী হয়। বর্ণনাকারী নাসর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, হাজ্জীদের বহনের উপযোগী হলে একে যাবাহ করে তার গোশত তুমি সদাক্বাহ করিবে। খালিদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, আমার ধারণা, আবু ক্বিলাবাহ মুসাফিরের জন্য সদাক্বাহ করিতে বলিয়াছেন। কেননা এটাই উত্তম। খালিদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, আমি আবু ক্বিবালাহকে বলি, কয়টি বিচরণকারী পশুতে একটি ফারাআ? তিনি বলিলেন, একশোটি।
কোরবানির নিয়ম কানুন – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৮৩১. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ ইসলামে কোন ফারাআ নাই এবং আতীরাহও নাই।
কোরবানির নিয়ম কানুন – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৮৩২. সাঈদ ইবনিল মুসাইয়্যিব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, ফারাআ হলো পশুর ঐ প্রথম বাচ্চা, যা তারা দেবতার উদ্দেশ্যে যাবাহ করত।
কোরবানির নিয়ম কানুন – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৮৩৩. আয়িশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদেরকে প্রতি পঞ্চাশটি বকরীতে একটি বকরী আতীরাহ করিতে আদেশ করেছেন। আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, কতিপয় লোকের উক্তি হচ্ছে, ফারাআ হলো উটের প্রথম বাচ্চা, যা জাহিলী যুগের লোকেরা তাহাদের দেবতার সন্তুষ্টির জন্য উৎসর্গ করতো। তারা এর গোশত খেতো এবং এর চামড়া গাছে ঝুলিয়ে রাখতো। আতীরাহ হচ্ছে রজব মাসের প্রথম দশ দিনের কুরবানী।
কোরবানির নিয়ম কানুন – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-২১ঃ আক্বীক্বাহ্র বর্ণনা
২৮৩৪, উম্মু কুর্য আল-কাবিয়্যাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছিঃ পুত্রের জন্য একই ধরনের দুটি এবং কন্যার জন্য একটি বকরী আক্বীক্বাহ করিতে হয়। আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, আমি ঈমাম আহমাদকে বলিতে শুনিয়াছি, মুতাকাফিয়ান অর্থ হলো সমবয়স্ক বা এর কাছাকাছি।
কোরবানির নিয়ম কানুন – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৮৩৫. উম্মু কুর্য [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি নাবী [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছিঃ তোমরা পাখিকে তার বাসায় নিরাপদে থাকতে দিবে। আমি তাঁকে এও বলিতে শুনেছিঃ আক্বীক্বাহ্ ছেলের পক্ষ হইতে দুটি এবং মেয়ের পক্ষ হইতে একটি বকরী যাবাহ করিবে।
আক্বীক্বাহ্ খাসী বা বকরী দ্বারা দেয়াতে কোন অসুবিধা নেই। কোরবানির নিয়ম কানুন – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৮৩৬. উম্মু কুর্য [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ [আক্বীক্বাহ] ছেলের পক্ষ হইতে সমবয়স্ক দুটি বকরী এবং মেয়ের পক্ষ হইতে একটি বকরী।
আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, এটিই আসল হাদিস। আর সুফিয়ানের হাদিস সন্দেহযুক্ত। কোরবানির নিয়ম কানুন – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৮৩৭. সামুরাহ [রাদি.] সূত্র হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ প্রত্যেক শিশু তার আক্বীক্বাহর সাথে বন্ধক থাকে। সপ্তম দিনে তার পক্ষ হইতে আক্বীক্বাহ করিতে হয়, মাথা মুড়াতে হয় এবং [মাথায়] রক্ত মাখাতে হয়। ক্বাতাদাহ্কে জিজ্ঞেস করা হলো, রক্ত কিভাবে মাখতে হয়? তিনি বলে, আক্বীক্বাহ্র পশু যাবাহ করে তা থেকে একটু পশম নিয়ে তাতে রক্ত মেখে তা বাচ্চার মাথার নরম তালুতে রেখে দিবে। অতঃপর মাথা থেকে সূতার ন্যায় রক্ত গড়িয়ে পড়লে মাথা ধুইয়ে তা ন্যাড়া করিবে। আবু দাউদ বলেন, রক্তমাখার শব্দটি হাম্মামের ধারণামূলক, অন্যরা তা বর্জন করেছেন। আবু দাউদ বলেন, এখন এ হাদিস আমলযোগ্য নয়।
সহীহঃ তবে “[আরবী]” কথাটি বাদে। মাহফু্য হলো “[আরবি]”। যেমন নীচের বর্ণনাটি। ইরওয়া [১১৬৫]। কোরবানির নিয়ম কানুন – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৮৩৮. সামুরাহ ইবনি জুনদুব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, প্রত্যেক শিশু তার আক্বীক্বাহ্র বিনিময়ে বন্ধক থাকে। তার জন্মের সপ্তম দিনে আক্বীক্বাহ করিতে হয়, মাথার চুল ফেলতে হয় এবং নাম রাখতে হয়। আবু দাউদ বলেন, ইউদমা” শব্দের পরিবর্তে ইউসাম্মা শব্দটি অধিক সঠিক।
কোরবানির নিয়ম কানুন – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৮৩৯. সালমান ইবনি আমির আদ-দাব্বী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, প্রতিটি সন্তানের সাথে আক্বীক্বাহ রয়েছে। সুতরাং তার পক্ষ হইতে রক্ত প্রবাহিত করো এবং তার থেকে কষ্টদায়ক বস্তু দূর করো।
কোরবানির নিয়ম কানুন – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৮৪০. হাসান বাসরী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলিতেন, কষ্টদায়ক বস্তু দূর করা দ্বারা মাথা মুণ্ডানোকে বুঝানো হয়েছে।
কোরবানির নিয়ম কানুন – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ মাকতু
২৮৪১. ইবনি আব্বাস [রাঃ] সূত্র হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] হাসান ও হুসাইনের [রাদি.] পক্ষ হইতে একটি করে দুম্বা আক্বীক্বাহ করেছেন।
সহিহ। কিন্তু নাসায়ীর বর্ণনায় রয়েছেঃ “দুটি দুটি করে”- এটাই অধিক সহিহ। কোরবানির নিয়ম কানুন – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২৮৪২. আমর ইবনি শুআইব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে পর্যায়ক্রমে তার পিতার ও দাদার সূত্র হইতে বর্ণীতঃ
তিনি [দাদা] বলেন, একদা নাবী [সাঃআঃ]-কে আক্বীক্বাহ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেনঃ আল্লাহ কষ্ট পছন্দ করেন না। হয়তো সেজন্যই তিনি আক্বীক্বাহকে কষ্ট নামকরণ করেছেন। তিনি বলেনঃ যার কোন সন্তান জন্মগ্রহণ করে, সে যেন তার পক্ষ হইতে আক্বীক্বাহ করে। সে যেন ছেলের পক্ষ হইতে সমবয়স্ক দুটি বকরী এবং মেয়ের পক্ষ হইতে একটি বকরী যাবাহ করে।নাবী [সাঃআঃ]-কে ফারাআ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেনঃ ফারাআ বৈধ। তোমরা যদি একে এ সময় পর্যন্ত ছেড়ে দাও যে, তা বয়স্ক, শক্তিশালী, ইবনি মাখাদ কিংবা ইবনি লাবূন হয়, তারপর তা কোন বিধবাকে দিয়ে দাও বা আল্লাহর পথে বাহন হিসেবে প্রদান করো, তাহলে এ কাজ একে যাবাহ করে এর গোশত ও লোম চটচটে করার চেয়ে উত্তম হইবে। অথবা তোমার উটকে ভারাক্রান্ত করা ও তোমার দুধের পাত্র উপুর করে দেয়ার চাইতে উত্তম হইবে।
কোরবানির নিয়ম কানুন – হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
২৮৪৩. বুরাইদাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, জাহিলী যুগে আমাদের কারো সন্তান জন্মগ্রহণ করলে সে একটি বকরী যাবাহ করতো এবং শিশুর মাথায় ঐ পশুর রক্ত মেখে দিতো। অতঃপর আল্লাহ যখন দীনে ইসলাম আনলেন, আমরা বকরী যাবাহ করতাম, শিশুর মাথা মুণ্ডন করতাম এবং তাতে যাফরান মাখতাম।
কোরবানির নিয়ম কানুন – হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ
Leave a Reply