কোরআন তেলোয়াত ও সিজদাসমূহ
কোরআন তেলোয়াত ও তিলাওয়াতের সিজদা সমূহ , এই অধ্যায়ে মোট হাদীস ১৫ টি (১৪০১ – ১৪১৫) >>আবুদ দাউদ শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন >> কোরআন তেলোয়াত শুনুন ১১৪ টি সুরার। বাংলা আরবী mp3 সহ, অধ্যায় – ৭ঃ কোরআন তেলোয়াত হাদিস
অধ্যায়ঃ ৭, অনুচ্ছেদঃ ৩২৮-৩৩৫=৮টি, হাদীসঃ (১৪০১-১৪১৫)=১৫টি
অনুচ্ছেদ-৩২৮ সিজদাসমূহের অনুচ্ছেদমালা এবং কুরআন তিলাওয়াতের সিজদা সংখ্যা
অনুচ্ছেদ-৩২৯ যার ধারণা,মুফাস্সল সূরাহগুলোতে সিজদা নেই
অনুচ্ছেদ-৩৩০ যাদের মতে, তাতে একাধিক সিজদা রহিয়াছে
অনুচ্ছেদ-৩৩১ সূরাহ ইযাস-সামাউন-শাক্কাত ও সূরাহ ইক্বরা- এর সিজদা সম্পর্কে
অনুচ্ছেদ-৩৩২ সূরাহ সোয়াদের সিজদা
অনুচ্ছেদ-৩৩৩ বানে আরোহী অবস্থায় কিংবা নামাজের বাইরে সিজদার আয়াত শুনলে
অনুচ্ছেদ-৩৩৪ সিজদাতে কি বলবে?
অনুচ্ছেদ-৩৩৫ ফাজ্রের নামাজের পর যিনি সিজদার আয়াত পাঠ করলে
অনুচ্ছেদ-৩২৮ সিজদাসমূহের অনুচ্ছেদমালা এবং কুরআন তিলাওয়াতের সিজদা সংখ্যা
১৪০১. আমর ইবনিলআস (রাঃআঃ হইতে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃআঃ) তাকে কুরআনের মধ্যে পনেরটি সিজদা পাঠ করিয়েছেন। তন্মধ্যে সূরাহ মুফাস্সলে তিনটি এবং সূরাহ হাজ্জের মধ্যে দুটি। {১৪০১}
ঈমাম আবু দাউদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, আবু দারদা (রাঃআঃ) নাবী (সাঃআঃ) হইতে বর্ণনা করেন যে, সিজদা এগারটি। তবে এ বর্ণনার সানাদ নিকৃষ্ট।
দুর্বল ঃ মিশকাত (১০২৯)। {১৪০১} ইবনি মাজাহ (অধ্যায় ঃ নামাজ ক্বায়িম, অনুঃ কুরআনে সিজদার সংখ্যা, হাঃ ১০৫৭) ইবনি আবু মারইয়াম হইতে। এর সানাদ দুর্বল। আবু দাউদ বলেন, এর সানাদ নিকৃষ্ট। কোরআন তেলোয়াত হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১৪০২, উক্ববাহ ইবনিআমির (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
আমি রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ)-কে জিজ্ঞেস করি, হে আল্লাহর রসূল! সূরাহ হাজ্জে কি দুটি সিজদা রহিয়াছে? তিনি বলেন, হাঁ। যে ব্যক্তি এ দুটি সিজদা আদায় করিবে না সে যেন তা তিলাওয়াত না করে।
হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
অনুচ্ছেদ-৩২৯ যার ধারণা,মুফাস্সল সূরাহগুলোতে সিজদা নেই
১৪০৩. ইবনি আব্বাস (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) মদিনায় আগমনের পর মুফাস্সলের কোথাও সিজদা করেননি। {১৪০৩}
দুর্বল ঃ মিশকাত (১০৩৪)। {১৪০৩} এর সানাদ দুর্বল। আবু দাউদ এটি এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন, সানাদে ইবনি কুদামাহ হচ্ছে হারিস ইবনিউবাইদ। হাফিযআত-তাক্বরীব গ্রন্থে বলেন ঃ সত্যবাদী, তবে ভুল করেন।আত-তাহযীব গ্রন্থে রহিয়াছে ঃ ঈমাম আহমাদ বলেন ঃ তিনি মুয্তারিবুল হাদিস। ঈমাম আবু হাতিম বলেন ঃ তিনি ঐরূপ মজবুত নন। হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১৪০৪. যায়িদ ইবনি সাবিত (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) এর সম্মুখে সূরাহ নাজ্ম তিলাওয়াত করেছি কিন্তু তিনি এ সূরাহ্তে সিজদা করেননি।
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৪০৫. খারিজাহ ইবনি যায়িদ ইবনি সাবিত (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে তার পিতা থেকে নাবী (সাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
পূর্বোক্ত হাদিসের অনুরূপ বর্ণিত। ঈমাম আবু দাউদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, যায়িদ (রাঃআঃ) ঈমাম হওয়া সত্ত্বেও সিজদা করেননি। {১৪০৫}
{১৪০৫} ইবনি খুযাইমাহ (হা/৫৬৬), সহিহ আবু দাউদ. হাদিসের তাহকিকঃ নির্ণীত নয়
অনুচ্ছেদ-৩৩০ যাদের মতে, তাতে একাধিক সিজদা রহিয়াছে
১৪০৬.আবদুল্লা (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) সূরাহ নাজ্ম তিলাওয়াতের পর সিজদা করলে উপস্থিত সকলেই সিজদা করলো। কিন্তু এক ব্যক্তি সিজদা না করে এক মুষ্টি কংকর অথবা মাটি স্বীয় কপালের কাছে নিয়ে বললো, আমার জন্য এটুকুই যথেষ্ট।আবদুল্লা (রাঃআঃ) বলেন, পরবর্তীতে আমি লোকটিকে কাফির অবস্থায় মরতে দেখেছি।
সহিহ ঃ বোখারি ও মুসলিম। হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৩৩১ সূরাহ ইযাস-সামাউন-শাক্কাত ও সূরাহ ইক্বরা- এর সিজদা সম্পর্কে
১৪০৭. আবু হুরাইরাহ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা রসূলুল্লাহর (সাঃআঃ) সাথেইযাস-সামাউন শাককাত্ এবংইক্বরা বিসমি রব্বিকাল্লাযী খালাক্বা সূরাহ দুটিতে সিজদা করেছি। ঈমাম আবু দাউদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, আবু হুরাইরা (রাঃআঃ) ষষ্ঠ হিজরীতে খায়বার যুদ্ধের বছরে ইসলাম কবুল করেন। আর এ সিজদা ছিলো রসূলুল্লাহর (সাঃআঃ) জীবনের শেষ দিকের আমল।
সহিহ ঃ মুসলিম। হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৪০৮. আবু রাফি (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আবু হুরাইরা (রাঃআঃ)-এর সাথেইশার নামাজ আদায় করি। তিনি সূরাহইযাস্-সামাউন শাক্কাত তিলাওয়াত করে সিজদা করিলেন। আমি তাকে বলি, এ সিজদা কিসের? তিনি বলিলেন, আমি আবুল ক্বাসিম (সাঃআঃ) এর পিছনে এ সিজদা করেছি এবং মৃত্যু পর্যন্ত আমি এ সিজদা আদায় করতে থাকবো।
সহিহ ঃ বোখারি ও মুসলিম। হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৩৩২ সূরাহ সোয়াদের সিজদা
১৪০৯. ইবনি আব্বাস (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, সূরাহ সোয়াদের সিজদা আবশ্যক নয়। তবে আমি রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ)-কে এখানে সিজদা করতে দেখেছি।
সহিহ ঃ বোখারি। হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৪১০. আবু সাঈদ আল-খুদরী (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) মিম্বারের উপরসূরাহ সোয়াদ তিলাওয়াতকালে সিজদার আয়াত পৌছলে নীচে নেমে সিজদা করলে লোকজনও তাহাঁর সাথে সিজদা করলো। অতঃপর আরেক দিন তিনি তা তিলাওয়াত করিলেন, তখন সিজদার আয়াত পর্যন্ত পৌছলে লোকজন সিজদার জন্য প্রস্তুত হলে রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বললেনঃ এটা নাবীর জন্য তওবাহ স্বরূপ ছিলো। অথচ আমি দেখেছি তোমরা সিজদা করার জন্য প্রস্তুত। অতঃপর তিনি সিজদা করলে লোকেরাও সিজদা করলো।
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৩৩৩ বানে আরোহী অবস্থায় কিংবা নামাজের বাইরে সিজদার আয়াত শুনলে
১৪১১. আবদুল্লা ইবনি উমার (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) মাক্কাহ বিজয়ের বছরে (বিজয়ের দিন) সিজদার আয়াত পাঠ করলে উপস্থিত সকলেই সিজদা করলো। তাহাঁদের মধ্যে কেউ আরোহী ছিলো এবং কেউ ছিলো মাটিতে সিজদাকারী। এমনকি আরোহী নিজ হাতের উপর সিজদা আদায় করেছে। {১৪১১}
দুর্বল ঃ মিশকাত (১০৩৩)। {১৪১১} ইবনি খুযাইমাহ (১/২৭৯) আবু দাউদ হইতে। এর সানাদে মুসআব ইবনি সাবিত দুর্বল। হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১৪১২.ইবনি উমার (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) আমাদের সামনে সূরাহ পড়লেন। ইবনি নুমাইর বলেন, নামাজের বাইরে, অতঃপর উভয় বর্ণনাকারী বর্ণনা করেন, তিনি সিজদা করলে আমরাও তাহাঁর সাথে সিজদা করতাম। এমনকি (ভীড়ের কারণে) আমাদের কেউ কেউ স্বীয় কপাল রাখার জায়গাও পেতো না।
সহিহ ঃ বোখারি ও মুসলিম। হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৪১৩. ইবনি উমার (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) আমাদের সামনে কুরআন পড়ার সময় সিজদার আয়াত অতিক্রমকালে তাকবীর বলে সিজদা করতেন এবং আমরাও সিজদা করতাম। {১৪১৩}
আবদুর রায্যাক বলেন, ঈমাম সাওরী এ হাদিস পছন্দ করতেন। ঈমাম আবু দাউদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, কেননা এতে তাকবীর উচ্চারণের কথা রহিয়াছে।
মুনকার, তাকবীর শব্দ উল্লেখ দ্বারা। মাহফূয হচ্ছে ঃ তাকবীর ছাড়া। যেমন এর পূর্বেরটিতে রহিয়াছে। {১৪১৩} আবু দাউদ এটি এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। হাদিসের তাহকিকঃ মুনকার
অনুচ্ছেদ-৩৩৪ সিজদাতে কি বলবে?
১৪১৪. আয়েশা (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) রাতে কুরআন তিলাওয়াতের সিজদা করতেন এবং সিজদাতে বারবার বলিতেন ঃ
سَجَدَ وَجْهِي لِلَّذِي خَلَقَهُ وَشَقَّ سَمْعَهُ وَبَصَرَهُ بِحَوْلِهِ وَقُوَّتِهِ
সাজাদা ওয়াজহিয়া লিল্লাযী খালাক্বাহু ওয়া শাক্কা সাম্আহু ওয়া বাসরহু, বি-হাওলিহী ওয়া কুওয়াতিহী।
(অর্থঃ আমার মুখমণ্ডল ঐ সত্ত্বাকেই সিজদা করেছে, যিনি তাকে সৃষ্টি করিয়াছেন, কানে শ্রবণশক্তি এবং চোখে দৃষ্টিশক্তি দান করিয়াছেন। তাহাঁর দয়া ও শক্তির বলেই এগুলো বলীয়ান।)
কোরআন তেলোয়াত হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৩৩৫ ফাজ্রের নামাজের পর যিনি সিজদার আয়াত পাঠ করলে
১৪১৫. আবু তামীমাহ আল-হুজাইমী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
যখন আমরা কাফেলার সাথে মদিনায় আসি তখন ফজরের নামাজের পর আমি লোকদেরকে ওয়ায করতাম, এ সময় সিজদার আয়াত পাঠ করলে আমি সিজদা করতাম। ইবনি উমার (রাঃআঃ) আমাকে পরপর তিনবার নিষেধ করা সত্ত্বেও আমি তার কথায় কর্ণপাত না করায় তিনি পুনরায় নিষেধ করে বলিলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ), আবু বাকর,উমার এবংউসমান (রাঃআঃ)-এর পেছনে নামাজ আদায় করেছি। কিন্তু তাঁরা সূর্য না উঠা পর্যন্ত সিজদা করেননি। {১৪১৫}
{১৪১৫} আহমাদ (হাঃ ৪৭৭১)। আবু দাউদের সানাদে আবু বাহর রহিয়াছে। হাফিয তাকে দুর্বল বলেছেন। কিন্তু তার তাবে করিয়াছেন ওয়াকী আহমাদের নিকট। তিনি নির্ভরযোগ্য রাবী। সুতরাং হাদিসটি সহিহ। কোরআন তেলোয়াত হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
Leave a Reply