কুরবানীর হাদীস । মুসাফির ও মহিলাদের কুরবানী করা।
কুরবানীর হাদীস । মুসাফির ও মহিলাদের কুরবানী করা। >> বুখারী শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন
পর্বঃ ৭৩, কুরবানী, অধ্যায়ঃ (১-১৬)=১৬টি
৭৩/১. অধ্যায়ঃ কুরবানীর বিধান
৭৩/২. অধ্যায়ঃ ইমাম কর্তৃক জনগণের মধ্যে কুরবানীর পশু বন্টন।
৭৩/৩. অধ্যায়ঃ মুসাফির ও মহিলাদের কুরবানী করা।
৭৩/৪. অধ্যায়ঃ কুরবানীর দিন গোশ্ত খাওয়ার আকাঙ্ক্ষা।
৭৩/৫. অধ্যায়ঃ যারা বলে যে, ইয়াওমুননাহারই কুরবানীর দিন।
৭৩/৬. অধ্যায়ঃ ঈদগাহে নহর ও কুরবানী করা।
৭৩/৭. অধ্যায়ঃ নাবী (সাঃ)- এর দুটি শিং বিশিষ্ট মেষ কুরবানী করা। যে দুটি মোটাতাজা ছিলো বলেও উল্লেখিত হয়েছে।
৭৩/৮. অধ্যায়ঃ আবু বুরদাহকে সম্বোধন করে নাবী (সাঃ)- এর উক্তিঃ তুমি বক্রীর বাচ্চাটি কুরবানী করে নাও। তোমার পরে অন্য কারো জন্য এ অনুমতি প্রযোজ্য হইবে না।
৭৩/৯. অধ্যায়ঃ কুরবানীর পশু নিজ হাতে যবহ করা।
৭৩/১০. অধ্যায়ঃ অন্যের কুরবানীর পশু যবহ করা।
৭৩/১১. অধ্যায়ঃ (ঈদের) সলাত আদায়ের পর যবহ করা।
৭৩/১২. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি সলাত আদায়ের পূর্বে যবহ করে সে যেন পুনরায় যবহ করে।
৭৩/১৩. অধ্যায়ঃ যবহে্র পশুর পার্শ্বদেশ পায়ে চাপ দিয়ে ধরা।
৭৩/১৪. অধ্যায়ঃ যবহ করার সময় আল্লাহু আকবার বলা।
৭৩/১৫. অধ্যায়ঃ যবহ করার জন্য কেউ হারামে কুরবানীর পশু পাঠিয়ে দিলে,তাহাঁর উপর ইহরামের বিধান থাকে না।
৭৩/১৬. অধ্যায়ঃ কুরবানীর গোশ্ত থেকে কতটুকু খাওয়া যাবে, আর কতটুকু সঞ্চয় করে রাখা যাবে।
৭৩/১. অধ্যায়ঃ কুরবানীর বিধান।
ইবনু উমর রা বলেছেনঃ কুরবানী সুন্নাত এবং স্বীকৃত প্রথা।
৫৫৪৫
বারা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ আমাদের এ দিনে আমরা সর্বাগ্রে যে কাজটি করব তা হল সলাত আদায় করব। এরপর ফিরে এসে আমরা কুরবানী করব। যে ব্যক্তি এভাবে তা আদায় করিল সে আমাদের নীতি অনুসরন করিল। আর যে ব্যক্তি আগেই যবহ করিল, তা এমন গোশ্তরুপে গন্য যা সে তার পরিবারের জন্য আগাম ব্যবস্থা করিল। এটা কিছুতেই কুরবানী বলে গণ্য নয়। তখন আবু বুরদাহ ইবনু নিয়ার (রাদি.) দাঁড়ালেন, আর তিনি (সলাতের) আগেই যবহ করেছিলেন। তিনি বললেনঃ আমার নিকট একটি বক্রীর বাচ্চা আছে। নাবী (সাঃ) বললেনঃ তাই যবহ কর। তবে তোমার পরে আর কারো জন্য তা যথেষ্ট হইবে না। মুতাররাফ বারা (রাদি.) থেকে বর্ননা করেন, নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি সলাতের পরে যবহ করিল তার কুরবানী পূর্ণ হল এবং সে মুসলিমদের নীতি গ্রহণ করিল।[৯৫১; মুসলিম ৩৫/১, হাদীস ১৯৬১, আহমাদ ১৬৪৮৫] আঃপ্রঃ- ৫১৩৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৩৪)
৫৫৪৬
আনাস ইবনু মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি সলাত আদায়ের পুর্বে যবহ করিল সে নিজের জন্যই যবহ করিল। আর যে ব্যক্তি সলাত আদায়ের পরে যবহ করিল, তার কুরবানী পূর্ণ হল এবং সে মুসলিমদের নীতি গ্রহণ করিল।(আঃপ্রঃ- ৫১৩৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৩৫)
৭৩/২. অধ্যায়ঃ ইমাম কর্তৃক জনগণের মধ্যে কুরবানীর পশু বন্টন।
৫৫৪৭
উকবাহ ইবনু আমির জুহানী (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃ) তাহাঁর সাহাবীগণের মধ্যে কতগুলো কুরবানীর পশু বন্টন করিলেন। তখন উকবাহ (রাদি.)- এর অংশে পড়ল একটি বকরীর বাচ্চা। উকবাহ (রাদি.) বলেন, তখন আমি বললামঃ হে আল্লাহর রাসুল! আমার অংশে পড়েছে একটি বকরীর বাচ্চা। তিনি বললেনঃ সেটাই কুরবানী করে নাও।(আঃপ্রঃ- ৫১৪০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৩৬)
৭৩/৩. অধ্যায়ঃ মুসাফির ও মহিলাদের কুরবানী করা।
৫৫৪৮
আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃ) তাহাঁর কাছে প্রবেশ করিলেন। অথচ মাক্কাহ প্রবেশের পুর্বেই সারিফ নামক জায়গায় তার মাসিক শুরু হয়। তখন তিনি কাঁদতে লাগলেন। নাবী (সাঃ) বললেনঃ তোমার কী হয়েছে? মাসিক শুরু হয়েছে না কি? তিনি বললেনঃ হাঁ। নাবী (সাঃ) বললেনঃ এটা তো এমন এক ব্যাপার যা আল্লাহ আদম (আঃ)- এর কন্যাদের উপর নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন। কাজেই হাজীগণ যা করে থাকে, তুমিও তেমনি করে যাও, তবে তুমি বাইতুল্লাহর তাওয়াফ করিবে না। এরপর আমরা যখন মিনায় ছিলাম, তখন আমার কাছে গরুর গোশ্ত নিয়ে আসা হল। আমি জিজ্ঞেস করলামঃ এটা কী? লোকজন উত্তর করলঃ রাসুলুল্লাহ (সাঃ) তাহাঁর স্ত্রীদের পক্ষ থেকে গরু কুরবানী করিয়াছেন।(আঃপ্রঃ- ৫১৪১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৩৭)
৭৩/৪. অধ্যায়ঃ কুরবানীর দিন গোশ্ত খাওয়ার আকাঙ্ক্ষা।
৫৫৪৯
আনাস ইবনু মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, কুরবানীর দিন নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি সলাত আদায়ের পুর্বে যবহ করেছে, সে যেন পুনরায় যবহ করে। তখন এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বললঃ হে আল্লাহর রাসুল! এটাতো এমন দিন যাতে গোশ্ত খাওয়ার প্রতি ইচ্ছা জাগে। তখন সে তার প্রতিবেশীদের কথাও উল্লেখ করিল এবং বললঃ আমার কাছে এমন একটি বক্রীর বাচ্চা আছে যেটি গোশ্তের ক্ষেত্রে দুটি বক্রীর চেয়েও উত্তম। নাবী (সাঃ) তাকে সেটিই কুরবানী করিতে অনুমতি প্রদান করিলেন। আনাস (রাদি.) বলেনঃ আমি জানি না, এ অনুমতি এ ব্যক্তি ছাড়া অন্যের জন্যেও প্রযোজ্য কিনা? এরপর নাবী (সাঃ) দুটি ভেড়ার দিকে এগিয়ে গেলেন এবং সে দুটিকে যবহ করিলেন। লোকজন ছোট একটি বক্রীর পালের দিকে উঠে গেল। এরপর ওগুলোকে বন্টন করিল কিংবা তিনি বলেছেনঃ সেগুলোকে তারা যবহ করে টুকরো টুকরো করে কাটলো।(আঃপ্রঃ- ৫১৪২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৩৮)
৭৩/৫. অধ্যায়ঃ যারা বলে যে, ইয়াওমুননাহারই কুরবানীর দিন।
৫৫৫০
আবু বাক্রাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
আবু বাক্রাহ (রাদি.) সূত্রে নাবী (সাঃ) হইতে বর্ণিত যে, নাবী বলেছেনঃ কাল আবর্তিত হয়েছে তার সেই অবস্থানের উপর, যেভাবে আল্লাহ আকাশসমুহ ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছিলেন। বছর বার মাসের। তার মাঝে চারটি মাস সম্মানিত। তিনটি পরপরঃ যুল কাদা, যুল-হাজ্জাহ ও মুহাররম। আরেকটি মুদার গোত্রের রজব মাস, সেটি জুমাদা ও শাবানের মাঝখানে। (এরপর তিনি জিজ্ঞেস করলেনঃ) এটি কোন মাস? আমরা বললামঃ আল্লাহ ও তাহাঁর রাসুল অধিক জানেন। তখন তিনি নীরব রইলেন। এমনকি আমরা ভাবলাম যে, তিনি এটিকে অন্য নামে নাম দিবেন। তিনি বললেনঃ এটি কি যুল-হাজ্জ মাস নয়? আমরা বললামঃ হাঁ। তিনি আবার বললেনঃ এটি কোন শহর? আমরা বললামঃ আল্লাহ ও তাহাঁর রাসুল অধিক জানেন। তিনি নীরব রইলেন, এমনকি আমরা ভাবতে লাগলাম, হয়ত তিনি এটির অন্য কোন নাম দিবেন। তিনি বললেনঃ এটি কি মাক্কাহ নগর নয়? আমরা বললামঃ হাঁ। তিনি বললেনঃ এটি কোন দিন? আমরা বললামঃ আল্লাহ ও তাহাঁর রাসুল অধিক জানেন। তিনি নীরব রইলেন। এমনকি আমরা ধারণা করলাম যে, হয়ত তিনি এর নামের পরিবর্তে অন্য নাম দিবেন। তিনি বললেনঃ এটা কি কুরবানীর দিন নয়? আমরা উত্তর করলামঃ হাঁ। এরপর তিনি বললেনঃ তোমাদের রক্ত, তোমাদের ধন-সম্পদ, বর্ননাকারী মুহাম্মাদ বলেন, সম্ভবতঃ আবু বাক্রাহ (রাদি.) বলেছেন, “এবং তোমাদের ইয্যত তোমাদের পরস্পরের উপর এমন সম্মানিত, যেমন সম্মানিত তোমাদের এই দিন, তোমাদের এই শহর, তোমাদের এই মাস। শীঘ্রই তোমরা তোমাদের রবের সাথে সাক্ষাত করিবে। তখন তিনি তোমাদের সম্পর্কে তোমাদের জিজ্ঞেস করবেন। সাবধান! আমার পরে তোমরা পথভ্রষ্ট হয়ে ফিরে যেয়ো না। তোমাদের কেউ যেন কাউকে হত্যা না করে। মনে রেখ, উপস্থিত ব্যক্তি যেন অনুপস্থির ব্যক্তির কাছে (আমার বাণী) পৌঁছে দেয়। হয়ত যাদের কাছে পৌঁছানো হইবে তাদের কেউ কেউ বর্তমানে যারা শুনেছে তাদের কারো চেয়ে বেশী সংরক্ষণকারী হইবে। রাবী মুহাম্মাদ যখন এ হাদীস উল্লেখ করিতেন, তখন বলিতেনঃ নাবী (সাঃ) সত্যই বলেছেন। এরপর নাবী (সাঃ) বললেনঃ দেখ, আমি কি পৌঁছে দিয়েছি? দেখ, আমি কি পৌঁছে দিয়েছি? [৬৭](আঃপ্রঃ- ৫১৪৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৩৯)
৭৩/৬. অধ্যায়ঃ ঈদগাহে নহর ও কুরবানী করা।
৫৫৫১
নাফি (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আব্দুল্লাহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) কুরবানী করার জায়গায় কুরবানী করিতেন। উবাইদুল্লাহ বলেনঃ অর্থাৎ নাবী (সাঃ)- এর কুরবানী করার জায়গায়।(আঃপ্রঃ- ৫১৪৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৪০)
৫৫৫২
ইবনু উমর (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ (সাঃ) ঈদগাহে যবহ করিতেন ও নহর করিতেন।(আঃপ্রঃ- ৫১৪৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৪১)
৭৩/৭. অধ্যায়ঃ নাবী (সাঃ)- এর দুটি শিং বিশিষ্ট মেষ কুরবানী করা। যে দুটি মোটাতাজা ছিলো বলেও উল্লেখিত হয়েছে।
ইয়াহইয়া ইবনু সাঈদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেছেনঃ আমি আবু উমামাহ ইবনু সাহল থেকে শুনিয়াছি, তিনি বলেছেন, মাদীনাহয় আমরা কুরবানীর পশুগুলোকে মোটাতাজা করতাম এবং অন্য মুসলিমরাও মোটাতাজা করিতেন।
৫৫৫৩
আনাস ইবনু মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ নাবী (সাঃ) দুটি মেষ দিয়ে কুরবানী আদায় করিতেন। আমিও কুরবানী আদায় করতাম দুটি মেষ দিয়ে।(আঃপ্রঃ- ৫১৪৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৪২)
৫৫৫৪
আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) দুটি সাদা কালো রং এর শিংওয়ালা ভেড়ার দিকে এগিয়ে গেলেন এবং নিজ হাত দিয়ে সে দুটিকে যবহ করিলেন।
ইসমাঈল ও হাতিম ইবনু ওয়ারদান এ হাদীসটি আইউব, ইবনু সীরীন, আনাস (রাদি.) সূত্রে বর্ননা করিয়াছেন। আইয়্যূব থেকেও এরকমই বর্ননা করিয়াছেন।[৫৫৫৩; মুসলিম ৩৫/৩, হাদীস ১৯৬৬, আহমাদ ১২১৪৮] আঃপ্রঃ- ৫১৪৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৪৩)
৫৫৫৫
উকবাহ ইবনু আমির (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃ) কুরবানীর পশু হিসেবে সহাবীদের মধ্যে বন্টন করে দেয়ার জন্য তাকে এক পাল বকরী দান করেন। তাত্থেকে একটি বক্রীর বাচ্চা বাকী থেকে গেলে তিনি নাবী (সাঃ)-এর নিকট তা ব্যক্ত করেন। নাবী (সাঃ) তাকে বললেনঃ তুমি নিজে তা কুরবানী করে দাও।(আঃপ্রঃ- ৫১৪৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৪৪)
৭৩/৮. অধ্যায়ঃ আবু বুরদাহকে সম্বোধন করে নাবী (সাঃ)- এর উক্তিঃ তুমি বক্রীর বাচ্চাটি কুরবানী করে নাও। তোমার পরে অন্য কারো জন্য এ অনুমতি প্রযোজ্য হইবে না।
৫৫৫৬
বারা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আবু বুরদাহ (রাদি.) নামীয় আমার এক মামা সলাত আদায়ের আগেই কুরবানী করেছিলেন। তখন রাসুলুল্লাহ (সাঃ) তাঁকে বললেনঃ তোমার বক্রী কেবল গোশ্তের বক্রী হল। তিনি বললেনঃ হে আল্লাহর রাসুল! আমার কাছে একটি ঘরে পোষা বক্রীর বাচ্চা আছে। নাবী (সাঃ) বললেনঃ সেটাকে কুরবানী করে নাও। তবে তা তুমি ছাড়া অন্য কারো জন্য ঠিক হইবে না। এরপর তিনি বললেনঃ যে ব্যক্তি সলাত আদায়ের আগে যবহ করেছে, সে নিজের জন্যই যবহ করেছে, আর যে ব্যক্তি সলাত আদায়ের পরে যবহ করেছে, সে তার কুরবানী পূর্ণ করেছে। আর সে মুসলিমদের নিয়ম নীতি অনুসারেই করেছে।
শাবী ও ইবরাহীম উবাইদাহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে অনুরুপ বর্ণনা করিয়াছেন। হুরাইস সূত্রে শাবী থেকে ওয়াকী এরকমই বর্ণনা করেন। শাবী থেকে আসিম ও দাউদ আমার নিকট পাঁচ মাসের দুধের বকরীর বাচ্চা আছে বলে বর্ননা করিয়াছেন। আবুল আহওয়াস বলেনঃ মানসূর আমাদের কাছে দু মাসের দুধের বাচ্চা আছে বলে বর্ননা করিয়াছেন। ইবনু আউন বলেছেনঃ দুধের বাচ্চা।(আঃপ্রঃ- ৫১৪৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৪৫)
৫৫৫৭
বারা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আবু বুরদাহ (রাদি.) সলাত আদায়ের পূর্বে যবহ করেছিলেন। তখন নাবী (সাঃ) তাঁকে বললেনঃ এটার বদলে আরেকটি যবহ কর। তিনি বললেনঃ আমার কাছে একটি ছয়-সাত মাসের বকরীর বাচ্চা ছাড়া কিছুই নেই। শুবাহ বলেন,আমার ধারণা তিনি আরো বলেছেন যে, বক্রীর বাচ্চাটি পূর্ণ এক বছরের বক্রীর চেয়ে উত্তম। নাবী (সাঃ) বললেনঃ তার স্থলে এটিকেই যবহ কর। কিন্তু তোমার পরে অন্য কারো জন্য কখনো এ অনুমতি থাকবে না।
হাতিম ইবনু ওয়ারদান এ হাদীসটি আইউব, মুহাম্মাদ, আনাস (রাদি.) সূত্রে নাবী (সাঃ) থেকে (দুধের বাচ্চা) শব্দে বর্ণনা করিয়াছেন।(আঃপ্রঃ- ৫১৫০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৪৬)
৭৩/৯. অধ্যায়ঃ কুরবানীর পশু নিজ হাতে যবহ করা।
৫৫৫৮
আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃ) দুটি সাদা-কালো রং এর ভেড়া দ্বারা কুরবানী করিয়াছেন। তখন আমি তাঁকে দেখিতে পেলাম তিনি ভেড়া দুটোর পার্শ্বে পা রেখে বিসমিল্লাহ ও আল্লহু আকবার পড়ে তাহাঁর নিজ হাতে সে দুটোকে যবহ করেন।(আঃপ্রঃ- ৫১৫১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৪৭)
৭৩/১০. অধ্যায়ঃ অন্যের কুরবানীর পশু যবহ করা।
এক ব্যক্তি ইবনু উমর (রাদি.)- কে কুরবানীর পশুর ব্যাপারে সহযোগিতা করেছিল। আবু মুসা (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) তার কন্যাদের আদেশ করেছিলেন- তারা যেন নিজ হাতে কুরবানী করে।
৫৫৫৯
আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, সারিফ নামক জায়গায় রাসুলুল্লাহ (সাঃ) আমার কাছে এলেন। সে সময় আমি কাঁদছিলাম। তিনি বললেনঃ তোমার কী হলো? তুমি কি ঋতুবতী হয়ে পড়েছ? আমি বললামঃ হাঁ। তিনি বললেনঃ এটাতো এমন এক ব্যাপার যা আল্লাহ আদামের কন্যাদের উপর নির্দিষ্ট করে রেখেছেন। অতএব হাজীরা যে সকল কাজ আদায় করে তুমিও তা আদায় কর। তবে তুমি বাইতুল্লাহর তাওয়াফ করিবে না। আর রাসুলুল্লাহ (সাঃ) তাহাঁর স্ত্রীদের পক্ষ থেকে গরু কুরবানী করেন।(আঃপ্রঃ- ৫১৫২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৪৮)
৭৩/১১. অধ্যায়ঃ (ঈদের) সলাত আদায়ের পর যবহ করা।
৫৫৬০
বারা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সাঃ)- কে খুতবা দেয়ার সময় বলিতে শুনেছিঃ আমাদের আজকের এ দিনে সর্বপ্রথম আমরা যে কাজটি করব তা হল সলাত আদায়। অতঃপর আমরা ফিরে গিয়ে কুরবানী করব। যে ব্যক্তি এভাবে করিবে সে আমাদের সুন্নাতকে অনুসরণ করিবে। আর যে ব্যক্তি পূর্বেই যবহ করিল, তা তার পরিবার পরিজনের জন্য অগ্রিম গোশ্ত প্রেরণ, তা কিছুতেই কুরবানী নয়। তখন আবু বুরদাহ (রাদি.) বললেনঃ হে আল্লাহর রাসুল! আমি সলাত আদায়ের পূর্বেই যবহ করে ফেলেছি এবং আমার কাছে একটি বক্রীর বাচ্চা আছে, যেটি পূর্ণ এক বছরের বকরীর চেয়ে উৎকৃষ্ট। নাবী (সাঃ) বললেনঃ তুমি সেটির জায়গায় এটিকে কুরবানী কর। তোমার পরে এ নিয়ম আর কারো জন্য নয় কিংবা তিনি বলেছেনঃ আদায়যোগ্য হইবে না।আঃপ্রঃ- ৫১৫৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৪৯)
৭৩/১২. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি সলাত আদায়ের পূর্বে যবহ করে সে যেন পুনরায় যবহ করে।
৫৫৬১
আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
আনাস (রাদি.) নাবী (সাঃ) থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেছেনঃ যে ব্যক্তি সলাত আদায়ের পূর্বে যবহ করেছে সে যেন আবার যবহ করে। তখন এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বললঃ এটাতো এমন দিন যে দিন গোশ্ত খাওয়ার আকাঙ্ক্ষা জাগে। সে তার প্রতিবেশীদের অভাবের কথাও উল্লেখ করিল। নাবী (সাঃ) যেন তার ওজর উপলব্ধি করিলেন। লোকটি বললঃ আমার কাছে এমন একটি ছাগলের বাচ্চা আছে যেটি দুটি মাংসল বক্রীর চেয়ে উৎকৃষ্ট। নাবী (সাঃ) তখন তাকে সেটি কুরবানী করার অনুমতি দান করিলেন। (বর্ণনাকারী বলেনঃ ) আমি জানি না, এ অনুমতি অন্যদের জন্যেও কিনা। তারপর নাবী (সাঃ) ভেড়া দুটির দিকে ঝুঁকলেন অর্থাৎ তিনি সে দুটিকে যবহ করিলেন। এরপর লোকেরা ছাগলের ছোট একটি ক্ষুদ্র পালের দিকে গেল এবং সেগুলোকে যবহ করিল।(আঃপ্রঃ- ৫১৫৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৫০)
৫৫৬২
জুনদুব ইবনু সুফ্ইয়ান বাজালী (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমি কুরবানীর দিন নাবী (সাঃ)- এর নিকট হাজির ছিলাম। তিনি বললেনঃ যে ব্যক্তি সলাত আদায়ের আগে যবহ করেছে, সে যেন এর স্থলে আবার যবহ করে। আর যে ব্যক্তি যবহ করেনি, সে যেন যবহ করে নেয়।(আঃপ্রঃ- ৫১৫৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৫১)
৫৫৬৩
বারা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদিন রাসুলুল্লাহ (সাঃ) সলাত আদায় করে বললেনঃ যে ব্যক্তি আমাদের মত সালাত আদায় করে, আমাদের কিবলাকে কিবলা বলে গ্রহণ করে সে যেন (ঈদের সালাত) শেষ না করা পর্যন্ত যবহ না করে। তখন আবু বুরদাহ ইবনু নিয়ার (রাদি.) দাঁড়িয়ে বললেনঃ হে আল্লাহর রাসুল! আমিতো যবহ করে ফেলেছি। তিনি উত্তর দিলেনঃ এটি এমন জিনিস হল যা তুমি তাড়াহুড়ো করে ফেলেছ। আবু বুরদাহ (রাদি.) বললেনঃ আমার কাছে একটি অল্প বয়সের ছাগল আছে। সেটি পূর্ণ বয়স্ক দটি ছাগলের চেয়ে উৎকৃষ্ট। আমি কি সেটি যবহ করিতে পারি? তিনি উত্তর দিলেনঃ হাঁ। তবে তোমার পরে আর কারো জন্য তা যবহ করা যথেষ্ট হইবে না। আমির (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেনঃ এটি হল তাহাঁর উৎকৃষ্ট কুরবানী।(আঃপ্রঃ- ৫১৫৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৫২)
৭৩/১৩. অধ্যায়ঃ যবহে্র পশুর পার্শ্বদেশ পায়ে চাপ দিয়ে ধরা।
৫৫৬৪
আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃ) দুটি শিংওয়ালা সাদা-কালো রঙের ভেড়া কুরবানী করিতেন। তিনি পশুগুলোর পার্শ্ব তাহাঁর পায়ে চেপে ধরে সেগুলোকে নিজ হাতে যবহ করিতেন।(আঃপ্রঃ- ৫১৫৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৫৩)
৭৩/১৪. অধ্যায়ঃ যবহ করার সময় আল্লাহু আকবার বলা।
৫৫৬৫
আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃ) দুটি সাদা-কালো রং এর শিং ওয়ালা ভেড়া কুরবানী করেন। তিনি ভেড়া দুটির পার্শ্বে তাহাঁর পা রেখে বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার বলে স্বহস্তে সেই দুটিকে যবহ করেন।(আঃপ্রঃ- ৫১৫৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৫৪)
৭৩/১৫. অধ্যায়ঃ যবহ করার জন্য কেউ হারামে কুরবানীর পশু পাঠিয়ে দিলে,তাহাঁর উপর ইহরামের বিধান থাকে না।
৫৫৬৬
মাসরূক (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি আয়েশা (রাদি.)- এর কাছে এসে তাঁকে জিজ্ঞেস করলেনঃ হে উম্মুল মুমিনীন! কোন ব্যক্তি যদি কাবার উদ্দেশ্যে হাদী (কুরবানীর পশু) পাঠিয়ে দেয় এবং নিজে আপন শহরে অবস্থান করে নির্দেশ দেয় যে, তার হাদীকে যেন মালা পরিয়ে নেয়া হয়, তাহলে সেদিন থেকে লোকদের হালাল হওয়া পর্যন্ত কি সে ব্যক্তির ইহরামের হালাতে থাকতে হইবে? মাসরূক বলেনঃ তখন আমি পর্দার আড়াল থেকে তাহাঁর [আয়েশা (রাদি.)] হাতের উপর উপর হাত মারার শব্দ শুনলাম। তিনি বললেনঃ আমি রাসুলুল্লাহ (সাঃ)- এর হাদীর (কুরবানীর পশু) গলায় রশি পাকিয়ে পরিয়ে দিতাম। এরপর তিনি হাদীকে কাবার উদ্দেশ্যে প্রেরণ করিতেন। তখন স্বামী-স্ত্রীর বৈধ কাজ, লোকেরা ফিরে আসা পর্যন্ত নাবী (সাঃ)- এর উপর হারাম হত না।(আঃপ্রঃ- ৫১৫৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৫৫)
৭৩/১৬. অধ্যায়ঃ কুরবানীর গোশ্ত থেকে কতটুকু খাওয়া যাবে, আর কতটুকু সঞ্চয় করে রাখা যাবে।
৫৫৬৭
জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী সাঃআঃ -এর যুগে আমরা মদিনা্য় ফিরে আসা পর্যন্ত কুরবানীর গোশ্ত সঞ্চয় করে রাখতাম। রাবী সুফ্ইয়ান ইবনু উইয়াইনাহ একাধিকবার لُحُومَ الأَضَاحِيِّ এর জায়গায় لُحُومُ الْهَدْيِ বলেছেন। [১৭১৯] আঃপ্রঃ- ৫১৬০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৫৬)
৫৫৬৮
আবু সাঈদ খুদরী (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বর্ণনা করেন যে, তিনি (দীর্ঘিদিন) বাইরে ছিলেন। পরে ফিরে আসলে তাহাঁর সম্মুখে গোশ্ত পেশ করা হল। তিনি বললেনঃ এটি কি আমাদের কুরবানীর গোশ্ত? এরপর তিনি বললেনঃ এটি সরিয়ে দাও, আমি তা খাব না। তিনি বলেন, এরপর আমি উঠে গেলাম এবং বেরিয়ে গিয়ে আমার ভাই আবু ক্বাতাদাহ ইবনু নুমান- এর নিকট এলাম। আবু ক্বাতাদাহ (রাদি.) ছিলেন আমার বৈপিত্রেয় ভাই এবং তিনি ছিলেন বদরী সহাবী। (তিনি বলেন) অতঃপর বিষয়টি আমি তাকে জানালে তিনি বললেনঃ তোমার অনুপস্থিতির সময় এরূপ বিধান চালু হয়েছে। (আঃপ্রঃ- ৫১৬১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৫৭)
৫৫৬৯
সালামাহ ইবনু আকওয়া (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ তোমাদের যে লোক কুরবানী করেছে, সে যেন তৃতীয় দিনে এমন অবস্থায় সকাল অতিবাহিত না করে যে, তার ঘরে কুরবানীর গোশ্ত কিছু থেকে যায়। পরবর্তী বছর আসলে, সাহাবীগণ বললেনঃ হে আল্লাহর রাসুল! আমরা কি তেমন করব, যেমন গত বছর করেছিলাম? তখন তিনি বললেনঃ তোমরা নিজেরা খাও, অন্যকে খাওয়াও এবং সঞ্চয় করে রাখ, কারণ গত বছর মানুষের মধ্যে ছিল অনটন। তাই আমি চেয়েছিলাম, তোমরা তাতে সহযোগিতা কর।[মুসলিম ৩৫/৫, হাদীস ১৯৭৪] আঃপ্রঃ- ৫১৬২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৫৮)
৫৫৭০
আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, মদিনায় অবস্থান কালে আমরা কুরবানীর গোশ্তের মধ্যে লবণ মিশিয়ে রেখে দিতাম। এরপর তা নাবী (সাঃ)- এর সম্মুখে পেশ করতাম। তিনি বলিতেনঃ তোমরা তিন দিনের বেশি খাবে না। তবে এটি বড় ব্যাপার নয়। বরং তিনি তাত্থেকে অন্যদেরকেও খাওয়াতে চেয়েছেন। আল্লাহই বেশি জানেন।
৫৫৭১
ইবনু আযহাবের আযাদকৃত দাস আবু উবায়দ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি উমর ইবনু খত্তাব (রাদি.)- এর সঙ্গে কুরবানীর ঈদের দিন ঈদগাহে হাযির ছিলেন। উমর (রাদি.) খুতবার পূর্বে সলাত আদায় করেন। এরপর উপস্থিত জনতার সামনে খুতবা দেন। তখন তিনি বলেনঃ হে লোক সকল! রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এ দু ঈদের দিনে সিয়াম পালন করিতে নিষেধ করিয়াছেন। তার মধ্যে একটি হল, তোমাদের সিয়াম ভঙ্গ করার দিন ( অর্থাৎ ঈদুল ফিতর)। আর অন্যটি হল, এমন দিন যেদিন তোমরা তোমাদের কুরবানীর পশুর গোশ্ত খাবে।(আঃপ্রঃ- ৫১৬৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৬০)
৫৫৭২
আবু উবায়দ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
আবু উবায়দ বলেনঃ এরপর আমি উসমান ইবনু আফ্ফান (রাদি.)র সময়ও হাযির হয়েছি। সেদিন ছিল জুমুআর দিন। তিনি খুতবা দানের আগে সলাত আদায় করিলেন। এরপর তিনি খুতবাহ দিতে দাঁড়িয়ে বললেনঃ হে লোক সকল ! এটি এমন দিন, যে দিন তোমাদের জন্য দুটি ঈদ একত্রে হয়ে গেছে। কাজেই তোমাদের মধ্যে আওয়ালী (মদীনার চার মাইল পূর্বে অবস্থিত) এলাকার যে ব্যক্তি জুমুআর সলাতের অপেক্ষা করিতে চায়, সে যেন অপেক্ষা করে। আর যে ফিরে যেতে চায়, তার জন্য আমি অনুমতি প্রদান করলাম। [১](আঃপ্রঃ- ৫১৬৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৬০)
[১] ঈদের খুতবা শোনা ঐচ্ছিক, কেউ ইচ্ছে করলে খুতবা না শুনেই ঈদের মাঠ ত্যাগ করিতে পারে। যেমন স্পষ্ট সহীহ হাদীস বর্ণিত হয়েছে আবদুল্লাহ বিন সাইব হইতে বর্ণিত, তিনি বলেন,
(আরবী)
আমি রাসুলুল্লাহ (সাঃ)- এর সঙ্গে ঈদের জন্য উপস্থিত হয়েছিলাম। আমাদেরকে নিয়ে সলাত আদায়ের পর ঘোষণা দিলেন, আমরা ঈদের সলাত পূর্ণ করে ফেলেছি, যে খুৎবার জন্য বসতে পছন্দ কর সে বস। আর যে চলে যাওয়া পছন্দ কর সে চলে যাও। (সহীহ ইবনু মাজাহ ১২৯০, সহীহ আবু দাউদ ১১৫৫, হাকিম ১০৯৩, দারাকুতনী ৩০, বাইহাকী আল-কুবরা ৬০১৯)
অনুরূপভাবে জুমুআহর দিনে হলে সেদিন জুমুআহ সলাত আদায়ও ঐচ্ছিক। অর্থাৎ জুমুআহ মসজিদ হইতে দূরবর্তী এলাকাবাসী নিজ নিজ ওয়াক্তিয়া মাসজিদে ইচ্ছে করলে জুমুআর পরিবর্তে যুহরের সলাত আদায় করিতে পারবে।
৫৫৭৩
আবু উবায়দ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
আবু উবায়দ বলেনঃ এরপর ঈদগাহে উপস্থিত হয়েছি আলী ইবনু আবু ত্বলিব (রাদি.)- এর সময়ে। তিনি খুতবার আগে সলাত আদায় করেন। এরপর লোকজনের উদ্দেশ্যে খুতবাহ দেন। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ (সাঃ) তোমাদের কুরবানীর পশুর গোশ্ত তিন দিনের বেশি সময় খেতে নিষেধ করিয়াছেন। মামার, যুহরী, উবায়দ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) থেকে এরকমই বর্ণিত আছে।(আঃপ্রঃ- ৫১৬৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৬০)
৫৫৭৪
আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ কুরবানীর গোশ্ত থেকে তোমরা তিন দিন পর্যন্ত খাও। আবদুল্লাহ (রাদি.) মিনা থেকে প্রত্যাবর্তন কালে কুরবানীর গোশ্ত খাওয়া থেকে বিরত থাকার কারণে যায়তুন খাদ্য গ্রহণ করিতেন।[মুসলিম ৩৫/৫, হাদীস ১৯৭০] আঃপ্রঃ- ৫১৬৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৬১)
Leave a Reply