হজে কুরবানীর দিন, পশু, ভাগে কুরবানি

হজে কুরবানীর দিন, পশু, ভাগে কুরবানি

কুরবানীর দিন সুন্নাত সম্মত নিয়ম এই যে, প্রথমে  জামরায়  কঙ্কর নিক্ষেপ করিতে হইবে >> সহীহ মুসলিম শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন >> নিম্নে মুসলিম শরীফ এর একটি অধ্যায়ের হাদিস পড়ুন

৫৬. অধ্যায়ঃ কুরবানীর দিন সুন্নাত সম্মত নিয়ম এই যে, প্রথমে [জামরায়] কঙ্কর নিক্ষেপ করিতে হইবে, অতঃপর কুরবানী করিতে হইবে, অতঃপর মাথা মুণ্ডন করিতে হইবে এবং তা ডান পাশ থেকে শুরু করিতে হইবে
৫৭. অধ্যায়ঃ পাথর নিক্ষেপের পূর্বে কুরবানী করা, কুরবানী ও পাথর নিক্ষেপের পূর্বে মাথা মুড়ানো এবং এসবের আগে ত্বওয়াফ করা জায়িয প্রসঙ্গ
৫৮. অধ্যায়ঃ কুরবানীর দিন ত্বওয়াফুল ইফাযাহ্ সম্পন্ন করা উত্তম
৫৯. অধ্যায়ঃ বিদায়ের দিন আল-মুহাস্সাবে অবতরণ এবং সেখানে যুহর ও পরের ওয়াক্তের নামাজ আদায় করা মুস্তাহাব
৬০. অধ্যায়ঃ আইয়্যামে তাশরীক্বের রাতগুলো মিনায় অতিবাহিত করা ওয়াজিব, পানি সরবরাহকারীগণ এ নির্দেশের বহির্ভূত
৬১. অধ্যায়ঃ কুরবানীর গোশ্ত, চামড়া ও উটের পিঠে ব্যবহৃত ঝুলদান- খয়রাত করা এবং এসব দিয়ে কসাইয়ের পারিশ্রমিক পরিশোধ না করা
৬২. অধ্যায়ঃ ভাগে কুরবানী দেয়া জায়িয এবং একটি উট অথবা গরুতে সাতজন পর্যন্ত শারীক হওয়া যায়
৬৩. অধ্যায়ঃ উটকে দণ্ডায়মান অবস্থায় কুরবানী করা মুস্তাহাব
৬৪. অধ্যায়ঃ যে নিজে [মাক্কাতে] যেতে ইচ্ছা রাখে না, তার পক্ষে কুরবানীর পশু হারামে পাঠানো ও গলায় মালা পরানো এবং মালা পাকানো মুস্তাহাব, আর [প্রেরক] ইহরামকারীর অনুরূপ হইবে না এবং এ কারণে তার উপর [ইহরামধারীদের মতো] কোন কিছু হারাম হইবে না
৬৫. অধ্যায়ঃ প্রয়োজনবোধে কুরবানীর পশুর উপর আরোহণ করা জায়িয
৬৬. অধ্যায়ঃ কুরবানীর পশু পথিমধ্যে অচল হয়ে পড়লে কী করিতে হইবে?

৫৬. অধ্যায়ঃ কুরবানীর দিন সুন্নাত সম্মত নিয়ম এই যে, প্রথমে  জামরায়  কঙ্কর নিক্ষেপ করিতে হইবে, অতঃপর কুরবানী করিতে হইবে, অতঃপর মাথা মুণ্ডন করিতে হইবে এবং তা ডান পাশ থেকে শুরু করিতে হইবে

৩০৪৩. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] মিনায় এলেন, অতঃপর জামরায় এসে পাথর নিক্ষেপ করিলেন। অতঃপর তিনি মিনায় নিজ স্থানে ফিরে এলেন এবং কুরবানী করিলেন। অতঃপর হাজ্জাম [ক্ষৌরকার]-কে ইশারায় বললেনঃ মাথার ডান পাশ থেকে শুরু কর, অতঃপর বাম পাশ। অতঃপর তিনি লোকদেরকে নিজের চুল দান করিলেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩০১৮, ইসলামিক সেন্টার- ৩০১৫]

৩০৪৪. হিশাম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

এ সূত্রে উপরোক্ত হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে। আবু বাক্‌র [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] তাহাঁর বর্ণনায় উল্লেখ করিয়াছেন যে, নবী [সাঃআঃ] হাতের ইশারা দিয়ে হাজ্জামকে মাথার ডান পাশ থেকে শুরু করিতে বলিলেন। অতঃপর তিনি কাছের লোকদের মাঝে নিজের চুল দান [বন্টন] করিলেন। রাবী বলেন, অতঃপর তিনি হাজ্জামকে মাথার বাম পাশের চুল কাটার ইঙ্গিত করিলেন। সে তাই করিল। এ চুলগুলো তিনি উম্মু সুলায়ম [রাদি.]-কে দান করিলেন।

আর আবু কুরায়বের বর্ণনায় আছেঃ হাজ্জাম ডান পাশ থেকে ক্ষৌরকার্য শুরু করিল। তিনি লোকদের একটি দুটি করে চুল দিলেন। অতঃপর বাঁ পাশের চুল কাটার নির্দেশ দিলেন এবং সে তাই [মাথা মুণ্ডন] করিল। অতঃপর তিনি বললেনঃ আবু ত্বলহাহ্‌! এখানে আসো। অতএব তিনি এবারের চুলগুলো তাকে দান করিলেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩০১৯, ইসলামিক সেন্টার- ৩০১৬]

৩০৪৫. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] জামরাতুল আক্বাবায় পাথর নিক্ষেপ করিলেন, অতঃপর কুরবানীর উটের নিকট ফিরে এসে তা যাবাহ করিলেন। হাজ্জাম নিকটেই বসা ছিল। তিনি মাথার দিকে হাতের ইশারা করিলেন এবং সে তাহাঁর মাথার ডান পাশের চুল কামিয়ে দিল। তিনি তা নিকটস্থ লোকদের মধ্যে বণ্টন করিলেন। অতঃপর তিনি বলিলেন, মাথার অপরাংশ কামাও। তিনি বলিলেন, আবু ত্বলহাহ্ কোথায়? তখন তিনি সেগুলো তাকেই দান করিলেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩০২০, ইসলামিক সেন্টার- ৩০১৭]

৩০৪৬. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] জামরায় পাথর নিক্ষেপ করিলেন। অতঃপর কুরবানী করিলেন, অতঃপর মাথা কামালেন, তিনি ক্ষৌরকারের প্রতি মাথার ডান পাশ এগিয়ে দিলেন এবং সে তা চেঁছে দিল। অতঃপর তিনি আবু ত্বলহাহ্‌ আল আনসারী [রাদি.]-কে ডাকলেন এবং তাকে [নিজের] চুল দান করিলেন। অতঃপর তিনি মাথার বাম পাশ এগিয়ে দিলেন এবং বলিলেন, কামিয়ে দাও। [অতএব ক্ষৌরকার] তা কামিয়ে দিল। তিনি চুলগুলো আবু ত্বলহাহ্‌ [রাদি.]-কে দিয়ে বলিলেন, এগুলো লোকদের মধ্যে বণ্টন কর।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩০২১, ইসলামিক সেন্টার- ৩০১৮]

৫৭. অধ্যায়ঃ পাথর নিক্ষেপের পূর্বে কুরবানী করা, কুরবানী ও পাথর নিক্ষেপের পূর্বে মাথা মুড়ানো এবং এসবের আগে তাওয়াফ করা জায়িয প্রসঙ্গ

৩০৪৭. আবদুল্লাহ ইবনি আমর ইবনি আস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, বিদায় হজ্জকালে রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] লোকদের সঙ্গে মিনায় অবস্হান করিলেন-যাতে তারা প্রয়োজনীয় বিষয় তাহাঁর কাছ থেকে জেনে নিতে পারে। এ সময় এক ব্যক্তি এসে বলিল, হে আল্লাহর রাসূল! না জানার কারণে আমি কুরবানী করার পূর্বে মাথা কামিয়ে ফেলেছি। তিনি বললেনঃ কোন দোষ নেই, তুমি কুরবানী কর। অতঃপর এক ব্যক্তি তাহাঁর নিকট উপস্হিত হয়ে বলিল, হে আল্লাহর রাসূল! আমি জানতাম না, ফলে পাথর নিক্ষেপের পূর্বে কুরবানী করে ফেলেছি। তিনি বললেনঃ অসুবিধা নেই, তুমি পাথর নিক্ষেপ কর।

রাবী বলেন, অজ্ঞতাবশতঃ কাজ আগে অথবা পরে করা সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]–এর নিকট জিজ্ঞেস করা হলেই তিনি বলেন, তুমি এখন করে নাও, তাতে কোন দোষ নেই।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩০২২, ইসলামিক সেন্টার- ৩০১৯]

৩০৪৮. ঈসা ইবনি ত্বলহাহ্ আত্ তামীমী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

আবদুল্লাহ ইবনি আমর ইবনি আস [রাদি.]-কে বলিতে শুনেছেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর সওয়ারীর উপর অবস্থান করিলেন। লোকেরা তাঁকে বিভিন্ন বিষয়ে জিজ্ঞেস করিতে থাকল। তাদের কেউ জিজ্ঞেস করিল, হে আল্লাহর রাসূল! আমি জানতাম না যে, কুরবানীর পূর্বে পাথর নিক্ষেপ করিতে হয়। তাই আমি পাথর নিক্ষেপের পূর্বে কুরবানী করে ফেলেছি। রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃপাথর নিক্ষেপ কর, এতে কোন দোষ হইবে না। অপর ব্যক্তি এসে বলিল, আমি জানতাম না যে, মাথা কামানোর পূর্বে কুরবানী করিতে হইবে। অতএব আমি কুরবানীর পূর্বে মাথা কামিয়ে ফেলেছি। তিনি বললেনঃ কোন দোষ নেই, তুমি কুরবানী কর। রাবী বলেন, মানুষ অজ্ঞতাবশতঃ যেসব কাজের ক্ষেত্রে পরেরটি আগে করে ফেলেছে, এ সম্পর্কে বা এ জাতীয় বিষয় সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]–কে জিজ্ঞেস করা হলেই আমি তাঁকে বলিতে শুনেছি: তোমরা তা করে নাও, এতে কোন দোষ হইবে না।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩০২৩, ইসলামিক সেন্টার- ৩০২০]

৩০৪৯. যুহরী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

এ সূত্রে উপরোক্ত হাদীস বর্ণিত হয়েছে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩০২৪, ইসলামিক সেন্টার- ৩০২১]

৩০৫০. আবদুল্লাহ ইবনি আমর ইবনি আস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] কুরবানীর দিন ভাষণ দিচ্ছিলেন। এ সময় এক ব্যক্তি তাহাঁর সামনে দাঁড়িয়ে বলিল, হে আল্লাহর রাসূল! আমি জানতাম না যে, এ কাজ অমুক অমুক কাজের পূর্বে করিতে হয়। এরপর আর এক ব্যক্তি এসে বলিল, হে আল্লাহর রাসূল! আমি মনে করেছিলাম এ কাজ অমুক অমুক তিনটি [পাথর নিক্ষেপ, কুরবানী, মাথা কামানো,] কাজের পূর্বে করিতে হয়। তিনি বললেনঃ করে নাও, কোন অসুবিধে নেই।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩০২৫, ইসলামিক সেন্টার- ৩০২২]

৩০৫১. ইবনি জুরায়জ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] থেকে এ সূত্র হইতে বর্ণীতঃ

মুহাম্মাদ ইবনি বাক্‌র–এর বর্ণনা ঈসার বর্ণনার অনুরূপ। তবে তার বর্ণনায় “ঐ তিন কাজ” কথাটুকু উল্লেখ নেই। ইয়াহ্‍ইয়া আল উমাবীর বর্ণনায় আছে: “আমি কুরবানী করার পূর্বে মাথা মুণ্ডন করেছি, পাথর নিক্ষেপের পূর্বে কুরবানী করেছি ইত্যাদি।”

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩০২৬, ইসলামিক সেন্টার- ৩০২৩]

৩০৫২. আবদুল্লাহ ইবনি আমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নবী [সাঃআঃ]–এর নিকট এসে বলিল, আমি যবাহ্ করার পূর্বে মাথা কামিয়ে ফেলেছি। তিনি বলিলেন, কোন দোষ নেই, এখন যবাহ্ কর। [অতঃপর একজন] বলিল, আমি পাথর নিক্ষেপের পূর্বে কুরবানী করেছি। তিনি বললেনঃ কোন ক্ষতি নেই, তুমি এখন পাথর নিক্ষেপ কর।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩০২৭, ইসলামিক সেন্টার- ৩০২৪]

৩০৫৩. যুহরী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

আবদুল্লাহ ইবনি আমর [রাদি.] বলেন যে, আমি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]–কে মিনায় তাহাঁর উষ্ট্রীর উপর অবস্থানরত দেখেছি। এ সময় এক ব্যক্তি তাহাঁর নিকট এলো… উপরোক্ত হাদীসের অনুরূপ।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩০২৮, ইসলামিক সেন্টার- ৩০২৫]

৩০৫৪. আবদুল্লাহ ইবনি আমর ইবনি আস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কুরবানীর দিন জামরাতুল আক্বাবার নিকট অবস্থানরত ছিলেন। আমি এক ব্যক্তিকে তাহাঁর নিকট এসে বলিতে শুনলাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমি পাথর নিক্ষেপের পূর্বে মাথা কামিয়ে নিয়েছি। তিনি বলিলেন, কোন অসুবিধে নেই, পাথর নিক্ষেপ করে নাও। আরেক ব্যক্তি তাহাঁর নিকট এসে বলিল, আমি পাথর নিক্ষেপের পূর্বে কুরবানী করে ফেলেছি। তিনি বলিলেন, কোন দোষ নেই, পাথর নিক্ষেপ করে নাও। অপর এক ব্যক্তি তাহাঁর নিকট এসে বলিল, আমি পাথর নিক্ষেপের পূর্বে বায়তুল্লাহ তাওয়াফ করে ফেলেছি। তিনি বলিলেন, পাথর নিক্ষেপ কর, তাতে কোন অসুবিধে নেই। রাবী বলেন, আমি লক্ষ্য করেছি, সেদিন যে সম্পর্কেই [আগে-পিছে করার ক্ষেত্রে] তাহাঁর নিকট জিজ্ঞেস করা হয়েছে, তিনি বলেছেনঃ কোন দোষ নেই, এখন করে নাও।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩০২৯, ইসলামিক সেন্টার- ৩০২৬]

৩০৫৫. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ]–এর নিকট কুরবানী, মাথা মুণ্ডন, পাথর নিক্ষেপ, আগের অনুষ্ঠান পরে, এবং পরের অনুষ্ঠান আগে হয়ে যাওয়া ইত্যাদি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেনঃ কোন দোষ নেই।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩০৩০, ইসলামিক সেন্টার- ৩০২৭]

৫৮. অধ্যায়ঃ কুরবানীর দিন তওয়াফুল ইফাযাহ সম্পন্ন করা উত্তম

৩০৫৬. ইবনি উমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কুরবানীর দিন তওয়াফুল ইফাযাহ সম্পন্ন করেন, অতঃপর মিনায় ফিরে এসে যুহরের নামাজ আদায় করেন।

নাফি বলেন, ইবনি উমর [রাদি.]-ও কুরবানীর দিন তওয়াফুল ইফাযাহ সম্পন্ন করিতেন, অতঃপর ফিরে এসে মিনায় যুহরের নামাজ আদায় করিতেন এবং বলিতেন, নবী [সাঃআঃ] এরূপ করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩০৩১, ইসলামিক সেন্টার- ৩০২৮]

৩০৫৭. আবদুল আযীয ইবনি রুফাই[রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি আনাস ইবনি মালিক [রাদি.]-কে বললাম, আপনার যা স্মরণ আছে সে সম্পর্কে আমাকে অবহিত করুন যে, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তালবিয়ার দিন [৮ই যিলহজ্জ] যুহরের নামাজ কোথায় আদায় করিয়াছেন? তিনি বলিলেন, মিনায়। আমি বললাম [হজ্জ সমাপনান্তে] বিদায়ের দিন তিনি আসরের নামাজ কোথায় আদায় করিয়াছেন? তিনি বলিলেন, আবত্বাহ উপত্যকায়। অতঃপর তিনি বলিলেন, তোমরা প্রশাসকগণ যা করেন, তদ্রুপ কর।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩০৩২, ইসলামিক সেন্টার- ৩০২৯]

৫৯. অধ্যায়ঃ বিদায়ের দিন আল-মুহাস্সাবে অবতরণ এবং সেখানে যুহর ও পরের ওয়াক্তের নামাজ আদায় করা মুস্তাহাব

৩০৫৮. ইবনি উমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] আবু বকর [রাদি.] ও উমর [রাদি.] আবত্বাহ নামক স্হানে অবতরণ করিতেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩০৩৩, ইসলামিক সেন্টার- ৩০৩০]

৩০৫৯. নাফি [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

ইবনি উমর [রাদি.] মুহাসসাবে যাত্রা বিরতি সুন্নাত মনে করিতেন। তিনি বিদায়ের দিন [১২ অথবা ১৩ যিলহজ্জ] সেখানে যুহরেরর নামাজ আদায় করিতেন।

নাফি বলেন রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] মুহাসসাবে যাত্রা বিরতি করিয়াছেন এবং তাহাঁর পরে খলীফাগণও।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩০৩৪, ইসলামিক সেন্টার- ৩০৩১]

৩০৬০. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আবত্বাহে অবতরণ করা সুন্নাত নয়। রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কেবল এজন্য সেখানে যাত্রা বিরতি করেছিলেন যে, সেখান থেকে তাহাঁর জন্য যাত্রা করা সহজতর ছিল।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩০৩৫, ই .সে. ৩০৩২]

৩০৬১. হিশাম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

এ সূত্রে উপরোক্ত হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত আছে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩০৩৬, ইসলামিক সেন্টার- ৩০৩৩]

৩০৬২. সালিম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

আবু বাকর [রাদি.], উমর [রাদি.] ও ইবনি উমর [রাদি.] আবত্বাহে অবতরণ করিতেন।

যুহরী বলেন, আমাকে উরওয়াহ্ অবহিত করিয়াছেন যে, আয়িশা [রাদি.] আবত্বাহে যাত্রা বিরতি করিতেন না। তিনি বলিতেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কেবলমাত্র [বিশ্রামের জন্য] এখানে যাত্রা বিরতি করিতেন যাতে সামনের পথ অতিক্রম সহজ হয়।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩০৩৭, ইসলামিক সেন্টার- ৩০৩৪]

৩০৬৩. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, মুহাসসাবে যাত্রা বিরতি বাধ্যতামূলক নয়। এটি একটি মাঞ্জিল যেখানে রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যাত্রা বিরতি করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩০৩৮, ইসলামিক সেন্টার- ৩০৩৫]

৩০৬৪. সুলায়মান ইবনি ইয়াসার [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আবু রাফি [রাদি.] বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যখন মিনা থেকে রওনা হলেন তখন তিনি আমাকে আবত্বাহে যাত্রা বিরতির নির্দেশ দেননি। বরং আমি সেখানে পৌঁছে তাঁবু খাটালাম, এরপর রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এসে সেখানে অবতরণ করিলেন। আবু রাফি [রাদি.] রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]–এর মালপত্রের তত্ত্বাবধানে নিয়োজিত ছিলেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩০৩৯, ইসলামিক সেন্টার- ৩০৩৬]

৩০৬৫. আবু হুরায়রাহ্ [রাদি.]–এর সূত্রে রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, ইনশাআল্লাহ আমরা আগামীকাল সকালে খায়ফে বানী কিনানায় অবতরণ করব- যেখানে তারা [কাফিররা] কুফরীর উপর অবিচল থাকার শপথ নিয়েছিল।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩০৪০, ইসলামিক সেন্টার- ৩০৩৭]

৩০৬৬. আবু হুরায়রাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমরা মিনায় থাকা কালে রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদের বললেনঃ আগামীকাল সকালে আমরা কিনানাহ্ গোত্রের ঘাঁটিতে অবতরণ করব যেখানে তারা কুফরির উপর অটল থাকার শপথ করেছিল।

তা হচ্ছে– কুরায়শ ও কিনানাহ্ গোত্র হাশিম ও মুত্ত্বালিব গোত্রদ্বয়ের বিরুদ্ধে এ মর্মে চুক্তিবদ্ধ হয় যে, এরা তাদের সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন করিবে না এবং বাণিজ্যিক লেনদেন করিবে না- যতক্ষণ তারা রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে তাদের হাতে অর্পণ না করিবে– এ হচ্ছে সেই মুহাস্সাব।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩০৪১, ইসলামিক সেন্টার- ৩০৩৮]

৩০৬৭. আবু হুরায়রাহ্ [রাদি.]-এর সূত্রে নবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহ যদি আমাদের বিজয় দান করেন তবে ইনশা-আল্লাহ আমাদের মাঞ্জিল হইবে খায়ফে, যেখানে কুরায়শরা কুফরির উপর অটল থাকার শপথ করেছিল।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩০৪২, ইসলামিক সেন্টার- ৩০৩৯]

৬০. অধ্যায়ঃ আইয়্যামে তাশরীকের রাতগুলো মিনায় অতিবাহিত করা ওয়াজিব, পানি সরবরাহকারীগণ এ নির্দেশের বহির্ভূত

৩০৬৮. ইবনি উমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

আব্বাস ইবনি আবদুল মুত্তালিব [রাদি.] মিনার রাতগুলো মাক্কাতে অতিবাহিত করার জন্য রাসূলুল্লাহ [সা.]-এর নিকট অনুমতি প্রার্থনা করিলেন। কারণ পানি সরবরাহের দায়িত্ব তার উপর ন্যস্ত ছিল। তিনি তাকে অনুমতি দিলেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩০৪৩, ইসলামিক সেন্টার- ৩০৪০]

৩০৬৯. উবায়দুল্লাহ ইবনি উমর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

এ সূত্রে পূর্বোক্ত হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩০৪৪, ইসলামিক সেন্টার- ৩০৪১]

৩০৭০. বকর ইবনি আবদুল্লাহ আল মুযানী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি ইবনি আব্বাস [রাদি.]-এর সাথে কাবার সন্নিকটে বসা ছিলাম। এ সময় এক বেদুঈন তাহাঁর নিকট উপস্থিত হয়ে বলিল, কী ব্যাপার? আমি দেখছি আপনার চাচাতো ভাইয়েরা [আগন্তুকদের] মধু ও দুধ পান করায়। আর আপনারা নাবী্য [খেজুরের তৈরী শরবত] পান করান? তা কি আপনাদের দরিদ্রতার কারণে, না কৃপণতার কারণে? ইবনি আব্বাস [রাদি.] “আল্হামদু লিল্লাহ” উচ্চারণ করে বলিলেন, আমাদের না দারিদ্র্য আক্রান্ত করেছে, না কৃপণতা। প্রকৃত ব্যাপার এই যে, নবী [সাঃআঃ] তাহাঁর সওয়ারীতে চড়ে এখানে এলেন এবং তাঁকে এক পেয়ালা নবীয দিলাম। তিনি তা পান করিলেন এবং অবশিষ্টটুকু উসামাকে পান করালেন। এরপর তিনি বলিলেন, “তোমরা খুবই উত্তম কাজ করছো এবং এরূপই করিতে থাক।” অতএব রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদের যা করার নির্দেশ দিয়েছেন- আমরা তার পরিবর্তন করিতে চাই না।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩০৪৫, ইসলামিক সেন্টার- ৩০৪২]

৬১. অধ্যায়ঃ কুরবানীর গোশ্ত , চামড়া ও উটের পিঠে ব্যবহৃত ঝুলদান- খয়রাত করা এবং এসব দিয়ে কসাইয়ের পারিশ্রমিক পরিশোধ না করা

৩০৭১. আলী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাকে তাহাঁর কুরবানীর উটগুলোর নিকট দাঁড়াতে এবং এগুলোর গোশ্ত, চামড়া ও ঝুল দান- খয়রাত করে দিতে নির্দেশ দিলেন এবং তা দিয়ে কসাইয়ের মজুরি দিতে নিষেধ করিলেন এবং বললেনঃ আমাদের নিজেদের পক্ষ থেকে তার মজুরি পরিশোধ করে দেব।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩০৪৬, ইসলামিক সেন্টার- ৩০৪৩]

৩০৭২. আবদুল কারীম আল জাযারী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

এ সূত্রে উপরোক্ত হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩০৪৭, ইসলামিক সেন্টার- ৩০৪৪]

৩০৭৩. আলী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

এ সূত্রে পূর্বোক্ত হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে। তবে এ বর্ণনায় কসাইয়ের মজুরির কথা উল্লেখ নেই।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩০৪৮, ইসলামিক সেন্টার- ৩০৪৫]

৩০৭৪. আলী ইবনি আবু ত্বলিব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] তাকে তাহাঁর কুরবানীকৃত উটগুলোর নিকট অবস্থানের নির্দেশ দিলেন। তিনি তাকে উটের সমস্ত গোশ্ত, চামড়া ও ঝুল মিসকীনদের মধ্যে বিতরণ করারও নির্দেশ দিলেন এবং তা থেকে কসাইকে মজুরি স্বরূপ কিছু দিতে নিষেধ করিলেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩০৪৯, ইসলামিক সেন্টার- ৩০৪৬]

৩০৭৫. আলী ইবনি আবু ত্বলিব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] তাকে নির্দেশ দিলেন … উপরোক্ত হাদীসের অনুরূপ।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩০৫০, ইসলামিক সেন্টার- ৩০৪৭]

৬২. অধ্যায়ঃ ভাগে কুরবানী দেয়া জায়িয এবং একটি উট অথবা গরুতে সাতজন পর্যন্ত শারীক হওয়া যায়

৩০৭৬. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, হুদাইবিয়ার বছর [৬ষ্ঠ হিজরী] আমরা রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]–এর সাথে প্রতি সাতজনের পক্ষ থেকে একটি উট এবং প্রতি সাতজনের পক্ষ থেকে একটি গরু কুরবানী করেছি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩০৫১, ইসলামিক সেন্টার- ৩০৪৮]

৩০৭৭. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমরা হজ্জের ইহরাম বেঁধে রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সাথে রওনা হলাম। তিনি আমাদেরকে প্রতিটি উট বা গরু সাতজনে মিলে কুরবানী করার নির্দেশ দিলেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩০৫২, ইসলামিক সেন্টার- ৩০৪৯]

৩০৭৮. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সাথে হজ্জ সমাপন করি। আমরা সাত শারীকে একটি করে উট বা গরু কুরবানী করেছি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩০৫৩, ইসলামিক সেন্টার- ৩০৫০]

৩০৭৯. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, হজ্জ ও উমরাহ্ পালনকালে রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সাথে সাতজনে মিলে একটি উট কুরবানী করেছি। এক ব্যক্তি জাবির [রাদি.]-কে জিজ্ঞেস করিল, জাযূর-এ যে কজন শারীক হইতে পারে- বাদানাহ্-তেও কি অনুরূপ শারীক হওয়া যায়? তখন তিনি বলিলেন, উভয় তো একই। জাবির [রাদি.] হুদায়বিয়ায় উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, আমরা ঐদিন ৭০টি উট কুরবানী করেছি। প্রতিটি উটেই ৭ জন শারীক ছিলাম। {২৫}

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩০৫৪, ইসলামিক সেন্টার- ৩০৫১]

{২৫} আধিকাংশ হাদীসে এবং ফিকহের কিতাবে এর দ্বারা উট উদ্দেশ্য, তবে আরবী ভাষাবিদগণ একে ছাগল ও গরুর উপর প্রয়োগ করিয়াছেন ।

৩০৮০. আবু যুবায়র [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.]-কে নবী [সাঃআঃ]-এর বিদায় হজ্জ সম্পর্কে আলোচনা করিতে শুনেছেন। তিনি {[জাবির [রাদি.]} বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদের ইহরাম খোলার সময় কয়েকজন শারীক হয়ে এক-একটি পশু কুরবানীর নির্দেশ দেন। এটা সে সময়ের কথা যখন তিনি তাদেরকে [উমরাহ্ আদায়ের পর] হজ্জের ইহরাম ভঙ্গ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। {২৬}

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩০৫৫, ইসলামিক সেন্টার- ৩০৫২]

{২৬} এ সকল হাদীস থেকে প্রমানিত হয় যে, অংশদারী কুরবানী তথা কয়েকজন মিলে একটি পশু কুরবানী করা জায়িয । ঈমাম শাফিঈর অভিমত হল ভাগে কুরবানী জায়িয, কুরবানী ওয়াজিব হোক আর মুস্তাহাব হোক । কতকের নিয়্যাত কেবল আল্লাহর সন্তোষ্টি অর্জন ও কতকের উদ্দেশ্য কেবল গোশত খাওয়া হোক না কেন, ফলকথা হল সকলেরই ভাগে কুরবানী করা জায়িয । এ হাদীসই তার দলীল, অন্যদিকে ঈমাম আহমাদ, জমহুর উলামা, দাউদ যাহিরীর মতে, নাফলের ক্ষেত্রে ভাগ দেয়া, বৈধ ওয়াজিব এর ক্ষেত্রে নয়, কতক মালিকীদের মত ও এটাই । আর মালিকীদের মতে সাধারণভাবে ভাগে দেয়া বৈধ নয় । কিন্তু এ কথা সহীহ হাদীসসমূহের বিপরীত, সুতরাং গ্রহণযোগ্য নয় । ঈমাম আবু হানিফার মতে, সকলেরই আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্য হয় তবে ভাগে কুরবানী জায়িয, অন্যথায় জায়িয নয় [অর্থাৎ শারীকদের মধ্যে কেউ যেন কেবল গোশত খাওয়ার নিয়্যাত না করে] । আর সকলের ঐকমত্যে ছাগল-বকরীতে শরীকী কুরবানী জায়িয নয় । বর্ণিত হাদীসসমূহ থেকে জানা যায় যে, উট এবং গরুর ক্ষেত্রে সাত সাতজন ব্যক্তি শারীক হইতে পারে । যাবির [রাদি.]-এর শেষ বর্ণনা থেকে জানা যায় যে, তামাত্তু হজ্জ পালনকারীর উপর কুরবানী ওয়াজিব এবং ওয়াজিব কুরবানীতে ভাগে কুরবানী করা জায়িয । আর এটা ঈমাম মালিক ও দাউদ যাহিরী ও অন্যান্যদের কথাকে বাতিল ও রদ করে দেয় । মূলকথা কুরবানী ভাগে না দিয়ে একাই দেয়া উচিত ।

৩০৮১. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে তামাত্তু হজ্জ করেছি। আমরা সাত শারীকে মিলে একটি গরু কুরবানী করেছি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩০৫৬, ইসলামিক সেন্টার- ৩০৫৩]

৩০৮২. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কুরবানীর দিন আয়িশা [রাদি.]-এর পক্ষ থেকে একটি গরু কুরবানী করেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩০৫৭, ইসলামিক সেন্টার- ৩০৫৪]

৩০৮৩. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি. হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর সহধর্মিণীদের পক্ষ থেকে একটি কুরবানী করিয়াছেন। কিন্তু ইবনি বাকর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] কর্তৃক আয়িশা [রাদি.] হইতে বর্ণীত হাদীসে রয়েছে যে, তিনি তাহাঁর হজ্জ উদযাপনকালে একটি গাভী কুরবানী করেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩০৫৮, ইসলামিক সেন্টার- ৩০৫৫]

৬৩. অধ্যায়ঃ উটকে কুরবানী করা দণ্ডায়মান অবস্থায় মুস্তাহাব

৩০৮৪. যিয়াদ ইবনি জুবায়র [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

ইবনি উমর [রাদি.] এক ব্যক্তির কাছে এলেন। সে তার উটকে বসিয়ে কুরবানী করার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। তিনি বলিলেন, এটাকে দাঁড় করিয়ে কুরবানী কর। এটাই তোমাদের নবী [সাঃআঃ]-এর সুন্নাত। {২৭}

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩০৫৯, ইসলামিক সেন্টার- ৩০৫৬]

{২৭} উটের বাম পা দুটি বেঁধে দিয়ে দাঁড়ানো অবস্থায় নহর তথা কুরবানী করা সুন্নাত । দু পা বাঁধার কারণে উট তিন পায়ে দাড়িয়ে থাকিবে । ছাগল এবং গরুকে কাত করে শুইয়ে ফেলে যাবাহ করা উচিত এবং গরুর তিন পা বেঁধে নিয়ে ডানপার্শ্বের এক পা খোলা রাখবে । ঈমাম সাফিঈ, মালিক, আহমাদ ও জমহুরের মতে উটকে দাঁড়িয়ে কুরবানী করা সুন্নাত । ঈমাম আবু হানিফা ও সাওরীর মতে দাঁড়িয়ে বা বসিয়ে উভয় অবস্থায় কুরবানী একই বরাবর । কিন্তু এটা হাদীসের বিপরিত, বিধায় প্রত্যাখ্যাত, বাতিল ।

৬৪. অধ্যায়ঃ যে নিজে [মাক্কাতে] যেতে ইচ্ছা রাখে না, তার পক্ষে কুরবানীর পশু হারামে পাঠানো ও গলায় মালা পরানো এবং মালা পাকানো মুস্তাহাব, আর [প্রেরক] ইহরামকারীর অনুরূপ হইবে না এবং এ কারণে তার উপর [ইহরামধারীদের মতো] কোন কিছু হারাম হইবে না

৩০৮৫. উরওয়াহ্ ইবনি যুবায়র ও আমরাহ্ বিনতু আবদুর রহমান [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

আয়েশাহ [রাদি.] বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] মাদিনাহ্ থেকে তাহাঁর কুরবানীর পশু [মাক্কার হারামে] পাঠাতেন। আমি তাহাঁর কুরবানীর পশুর [গলায় বাঁধার জন্য] মালা তৈরি করে দিতাম। এরপর তিনি এমন কোন জিনিস থেকে বিরত থাকতেন না- যা থেকে ইহরামধারীদের বিরত থাকতে হয়।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩০৬০, ইসলামিক সেন্টার- ৩০৫৭]

৩০৮৬. ইবনি শিহাব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

এ সানাদে [উপরোক্ত হাদীসের] অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩০৬১, ইসলামিক সেন্টার- ৩০৫৮]

৩০৮৭. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমার চোখে সে দৃশ্য ভাসছে- আমি যেন রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর কুরবানীর পশুর [গলায় পরানোর জন্য] মালা তৈরি করে দিচ্ছি। ….. অবশিষ্ট বর্ণনা পূর্বোক্ত হাদীদের অনুরূপ।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩০৬২, ইসলামিক সেন্টার- ৩০৫৯]

৩০৮৮. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি আমার হাত দিয়ে রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর কুরবানীর পশুর মালা বানিয়ে দিয়েছি। এরপর তিনি কোন জিনিস থেকে বিরত থাকতেন না এবং তা পরিহার করিতেন না [যা হজ্জের ইহরামধারীকে পরিহার করিতে হয়]।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩০৬৩, ইসলামিক সেন্টার- ৩০৬০]

৩০৮৯. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি নিজ হাতে রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর কুরবানীর পশুর মালা বানিয়ে দিয়েছি। এরপর তিনি কুরবানীর পশুকে চিহ্নিত করেন ও গলায় মালা বেঁধে দেন। এরপর তিনি বায়তুল্লাহ পাঠিয়ে দেন এবং মাদীনায় অবস্থান করেন। ফলে তাহাঁর উপর এমন কোন জিনিস হারাম হয়নি যা তাহাঁর জন্য হালাল ছিল।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩০৬৪, ইসলামিক সেন্টার- ৩০৬১]

৩০৯০. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর কুরবানীর পশু [মক্কায়] পাঠিয়ে দিতেন। আমি নিজ হাতে এর মালা তৈরি করে দিতাম। অতঃপর তিনি এমন কোন জিনিস থেকে বিরত থাকতেন না- যা থেকে কোন ইহরামবিহীন ব্যক্তি বিরত থাকে না।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩০৬৫, ইসলামিক সেন্টার- ৩০৬২]

৩০৯১. উম্মুল মুমিনীন [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি রঙিন পশমের সূতা যা আমাদের কাছে ছিল, তা দিয়ে এ সব মালা তৈরী করেছি। অতঃপর তিনি ভোরবেলা ইহ্‌রামবিহীন অবস্থায় উপনীত হন এবং আমাদের কাছে আসেন, ইহ্‌রামবিহীন ব্যক্তি নিজ স্ত্রীর সাথে যা করে, তিনিও তাই করিয়াছেন; কিংবা তিনি বলেন, লোকে তার স্ত্রীর কাছে যেভাবে এসে থাকে, তিনিও সেভাবে আসেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩০৬৬, ইসলামিক সেন্টার- ৩০৬৩]

৩০৯২. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি যেন নিজেকে রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর কুরবানী মেষের জন্য মালা তৈরী দেখিতে পাচ্ছি। তিনি তা হারামে পাঠীয়ে দেন এবং আমাদের মাঝে অবস্থান করেন ইহ্‌রামবিহীন ব্যক্তির মতো।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩০৬৭, ইসলামিক সেন্টার- ৩০৬৪]

৩০৯৩. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর কুরবানীর পশুর জন্য মালা তৈরী করে দিতাম এবং তিনি তা নিজের কুরবানী পশুর গলায় পরিয়ে দিতেন, এরপর তা [মক্কায়] পাঠিয়ে দিতেন। অতঃপর তিনি [মাদীনায়] অবস্থান করিতেন এবং এমন কিছু থেকে বিরত থাকতেন না- যা থেকে ইহ্‌রামবিহীন ব্যক্তি বিরত থাকে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩০৬৮, ইসলামিক সেন্টার- ৩০৬৫]

৩০৯৪. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

একবার রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বায়তুল্লাহর হারামে [কুরবানীর উদ্দেশে] ছাগল পাঠান এবং এর গলায় মালা বাঁধেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩০৬৯, ইসলামিক সেন্টার- ৩০৬৬]

৩০৯৫. আয়েশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমরা বকরীর গলায় মালা পরিয়ে তা [কুরবানীর উদ্দেশে বায়তুল্লাহ্য়] পাঠিয়েছি। রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ইহরামবিহীন অবস্থায় ছিলেন এবং কোন জিনিস তাহাঁর জন্য হারাম ছিল না [যা মুহরিমের জন্য হারাম]।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩০৭০, ইসলামিক সেন্টার- ৩০৬৭]

৩০৯৬. আম্রাহ্ বিনতু আবদূর রহমান [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

ইবনি যিয়াদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] আয়িশা [রাদি.]-এর কাছে লিখেন যে, আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস [রাদি.] বলেনঃ যে ব্যক্তি [মাক্কার হারামে] কুরবানীর পশু পাঠায়, হাজীদের জন্য যা করা হারাম তার জন্যও তা করা হারাম যতক্ষণ না ঐ পশু কুরবানী করা হয়। আমি কুরবানীর পশু [হারামে] পাঠীয়েছি। এ ব্যাপারে আপনার অভিমত আমাকে লিখে জানাবেন।” আম্রাহ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, আয়িশা [রাদি.] বলিলেন, ইবনি আব্বাস [রাদি.] যেভাবে বলেছেন, ব্যাপারটি তা নয়। আমি নিজ হাতে রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর কুরবানীর পশুর [গলায় বাঁধার] জন্য মালা তৈরী করে দিয়েছি। রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] নিজ হাতে তা পশুর গলায় বেঁধেছেন, অতঃপর আমার পিতার মাধ্যমে তা [হারাম শরীফে] পাঠিয়েছেন। কিন্তু এর ফলে রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর উপর এমন কোন জিনিষ হারাম হয়নি- যা আল্লাহ তাআলা তাহাঁর জন্য হালাল করিয়াছেন। অতঃপর পশু কুরবানী করা হয়েছে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩০৭১, ইসলামিক সেন্টার- ৩০৬৮]

৩০৯৭. মাসরূক্ব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি আয়িশা [রাদি.]-কে পর্দার আড়াল থেকে হাত তালি দিয়ে বলিতে শুনেছিঃ আমি নিজ হাতে রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর কুরবানীর পশুর জন্য মালা তৈরী করে দিতাম। অতঃপর তিনি [তাহাঁর] কুরবানীর পশু [মক্কায়] পাঠিয়ে দিতেন। কিন্তু পশু কুরবানী হওয়ার সময় পর্যন্ত তিনি এমন কোন জিনিস থেকে বিরত থাকতেন না যা থেকে সাধারণত ইহরাহমধারী ব্যক্তিগণ বিরত থাকে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩০৭২, ইসলামিক সেন্টার- ৩০৬৯]

৩০৯৮. আয়িশাহ্ [রাদি.]-এর সূত্রে নবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণীতঃ

অনুরূপ হাদীস বর্ণিত হয়েছে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩০৭৩, ইসলামিক সেন্টার- ৩০৭০]

৬৫. অধ্যায়ঃ প্রয়োজনবোধে কুরবানীর পশুর উপর আরোহণ করা জায়িয

৩০৯৯. আবু হুরায়রাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এক ব্যক্তিকে একটি উট টেনে নিয়ে যেতে দেখলেন। তিনি বললেনঃ এর পিঠে সওয়ার হও। সে বলিল, হে আল্লাহর রাসূল, এটা কুরবানীর উট। তিনি দ্বিতীয় অথবা তৃতীয়বারে বললেনঃ তোমার জন্য আফসোস! এর পিঠে আরোহণ কর।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩০৭৪, ইসলামিক সেন্টার- ৩০৭১]

৩১০০. আবু যিনাদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

এ সূত্রে পুর্বোক্ত হাদীস বর্ণিত হয়েছে। রাবী বলেন, একদা এক ব্যক্তি গলায় মালা পরিহিত একটি কুরবানী উট হাঁকিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩০৭৫, ইসলামিক সেন্টার- ৩০৭২]

৩১০১. হাম্মাম ইবনি মুনাব্বিহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আবু হুরায়রাহ্ [রাদি.] মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর থেকে এ হাদীস আমাদের নিকট বর্ণনা করিয়াছেন। এরপর তিনি কয়েকটি হাদীস বর্ণনা করেন। তন্মধ্যে একটি এই যে, তিনি বলেন, একদা আক ব্যক্তি কুরবানীর একটি উট হাঁকিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল। এর গলায় মালা পরিহিত ছিল। রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাকে বলিলেন, তোমার জন্য আফসোস! এর পিঠে আরোহণ কর। সে বলিল, হে আল্লাহর রাসূল, এটা কুরবানীর পশু। তিনি বলিলেন, তোমার জন্য আফসোস, এর পিঠে আরোহণ কর, তোমার জন্য আফসোস! এর পিঠে চড়ে যাও।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩০৭৬, ইসলামিক সেন্টার- ৩০৭৩]

৩১০২. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এক ব্যক্তির নিকট দিয়ে যাচ্ছিলেন। সে একটি উট টেনে নিয়ে যাচ্ছিল। তিনি বলিলেন, এর পিঠে চড়ে যাও। সে বলিল, এটা কুরবানীর উট। তিনি দুতিনবার বলিলেন, এর পিঠে চড়ে যাও।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩০৭৭, ইসলামিক সেন্টার- ৩০৭৪]

৩১০৩. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ]-এর নিকট দিয়ে কুরবানীর উট অথবা কুরবানীর পশু নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। তিনি বলিলেন, পিঠে চড়ে যাও। সে বলিল, এটা কুরবানীর উট, কুরবানীর পশু। তিনি বলিলেন, তাহলেও।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩০৭৮, ইসলামিক সেন্টার- ৩০৭৫]

৩১০৪. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ]-এর নিকট দিয়া একটি কুরবানীর ঊট নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল…এরপর পূর্বোক্ত হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩০৭৯, ইসলামিক সেন্টার- ৩০৭৬]

৩১০৫. আবু যুবায়র [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

আমি জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.]-এর নিকট কুরবানীর পশুর পিঠে আরোহণ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করিতে শুনেছি। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছিঃ প্রয়োজনবোধে এর পিঠে আরোহণ করিতে পার, একে কষ্ট না দিয়ে- যতক্ষণ না অন্য সাওয়ারী পাও।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩০৮০, ইসলামিক সেন্টার- ৩০৭৭]

৩১০৬. আবু যুবায়র [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

আমি জাবির [রাদি.]-এর নিকট কুরবানীর পশুর পিঠে আরোহণ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বলেন, আমি নবী [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছিঃ সহানুভূতির সাথে এর পিঠে আরোহণ কর- যদি অন্য কোন সওয়ারী না পাও।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩০৮১, ইসলামিক সেন্টার- ৩০৭৮]

৬৬. অধ্যায়ঃ কুরবানীর পশু পথিমধ্যে অচল হয়ে পড়লে কী করিতে হইবে?

৩১০৭. মূসা ইবনি সালামাহ্ আল হুযালী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

আমি সিনান ইবনি সালামাহ্ উমরাহ্ পালনের জন্য রওনা হলাম। সিনানের একটি কুরবানীর উট ছিল। সে পশুটি হাঁকিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল। পথিমধ্যে পশুটি অচল হয়ে পড়লে এ ব্যাপারে সে অসহায় ও চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়ল এবং [মনে মনে বলিল] এ যদি সামনে অগ্রসর হইতে না পারে, তবে এটাকে কি করে গন্তব্যস্থলে নেয়া যাবে? সে বলিল, যদি মাক্কাহ্ পর্যন্ত পৌছাতে পারতাম তবে এ সম্পর্কে ভালরূপে মাসাআলাহ্ জেনে নিতাম। রাবী বলেন, আমরা দিনের প্রথমভাগে আবার চলতে শুরু করলাম এবং বাত্বহা নামক স্থানে যাত্রা বিরতি করলাম। সিনান বলিল, চল আমরা ইবনি আব্বাস [রাদি.]-এর নিকট গিয়ে [বিষয়টি] আলোচনা করি। রাবী বলেন, সিনান তার নিকটে নিজের উটের কথা বর্ণনা করিল। ইবনি আব্বাস [রাদি.] বলিলেন, তুমি উত্তমরূপে অবহিত ব্যক্তির নিকটই বিষটি বর্ণনা করেছ। রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এক ব্যক্তির মাধ্যমে ষোলটি উট [মাক্কার হারামে] পাঠালেন এবং তাকে এগুলোর তত্ত্বাবধায়ক নিযুক্ত করিলেন। রাবী বলেন, সে রওনা হয়ে গেল এবং পুনরায় ফিরে এসে বলিল, হে আল্লাহর রাসূল! যদি এর মধ্যকার কোন পশু চলচ্ছক্তিহীন হয়ে পড়ে, তবে কি করব? তিনি বললেনঃ তা যাবাহ কর এবং এর [গলায় বাঁধা] জুতা জোড়া রক্তে রঞ্জিত করে এর কুঁজের উপর রেখে দাও। এর গোশত তুমি খাবে না, তোমার সঙ্গীদের কেউও খাবে না।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩০৮২, ইসলামিক সেন্টার- ৩০৭৯]

৩১০৮. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এক ব্যক্তির তত্ত্বাবধানে আঠারটি উট [কুরবানীর জন্য মাক্কার হারামে] পাঠেলেন। …. অবশিষ্ট আবদুল ওয়ারিশের হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেন। তবে এ সানাদে হাদীসের প্রথমাংশের [সিনানের সাথে সংশ্লিষ্ট] ঘটনা উল্লেখ নেই।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩০৮৩, ইসলামিক সেন্টার- ৩০৮০]

৩১০৯. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তার নিকট যুআয়ব আবু ক্ববীসাহ্ [রাদি.] বর্ণনা করিয়াছেন যে, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাকে কুরবানীর উটসহ [মক্কায়] পাঠাতেন এবং বলে দিতেনঃ “এগুলোর মধ্যকার কোন উট দুর্বল হয়ে চলতে অক্ষম হয়ে পড়লে এবং তুমি এর মৃত্যুর আশংকা করলে তা যাবাহ করে দিও। অতঃপর এর [গলায় বাঁধা] জুতা জোড়া রক্ত রঞ্জিত করে এর কুঁজে ছাপ মেরে দিও। তুমি এবং তোমার সঙ্গীদের কেইউ গোশ্ত খাবে না।”

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩০৮৪, ইসলামিক সেন্টার- ৩০৮১]


Posted

in

by

Tags:

Comments

Leave a Reply