কুরবানির পশু , হাজ্জে ইফরাদ, কিরান ও ইহরাম বাঁধার সময়
কুরবানির পশু , হাজ্জে ইফরাদ, কিরান ও ইহরাম বাঁধার সময় >>আবুদ দাউদ শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন
অধ্যায়ঃ ১১, অনুচ্ছেদঃ ১৩-২৬=১৪টি
অনুচ্ছেদ–১৩ঃ হাজ্জীদের কুরবানীর পশুর বর্ণনা
অনুচ্ছেদ–১৪: গরু কুরবানী প্রসঙ্গে
অনুচ্ছেদ–১৫ঃ ইশআর বা উটের কুঁজের পার্শ্বদেশ চিড়ে ফেলা
অনুচ্ছেদ–১৬ঃ কুরবানীর পশু পরিবর্তন
অনুচ্ছেদ-১৭ঃ কুরবানীর পশু [মাক্কাহ্য়] পাঠিয়ে আবাসে অবস্থান করা
অনুচ্ছেদ–১৮ঃ কুরবানীর পশুর পিঠে আরোহণ করা সম্পর্কে
অনুচ্ছেদ-১৯ঃ কুরবানীর পশু গন্তব্যে পৌঁছার আগেই অচল হয়ে গেলে
অনুচ্ছেদ–২০ঃ নিজ হাতে কুরবানী করা এবং অন্যের সহযোগিতা নেয়া
অনুচ্ছেদ-২১ঃ উট কিভাবে যাবাহ করিতে হয়
অনুচ্ছেদ-২২ঃ ইহরাম বাঁধার সময়
অনুচ্ছেদ-২৩ঃ হাজ্জের মধ্যে শর্ত যোগ করা প্রসঙ্গে
অনুচ্ছেদ-২৪ঃ হাজ্জে ইফরাদ
অনুচ্ছেদ –২৫ঃ হাজ্জে কিরান
অনুচ্ছেদ-২৬: হাজ্জের ইহরাম বাঁধার পর তা উমরাহ্য় পরিবর্তিত করা
অনুচ্ছেদ–১৩ঃ হাজ্জীদের কুরবানীর পশুর বর্ণনা
১৭৪৯. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] হুদায়বিয়ার বছর কুরবানীর জন্য যেসব পশু পাঠান তাতে আবু জাহলের উটটিও ছিলো যার নাকে রৌপ্য নোলক লাগানো ছিলো। ইবনি মিনহাল বলেন, স্বর্ণ নোলক ছিলো। নুফাইলী বর্ধিত করেছেন যে, এর দ্বারা মুশরিকদের প্রতি রাগ প্রকাশ উদ্দেশ্য। {১৭৪৯}
হাসান “রৌপ্য” শব্দে। মিশকাত [২৬৪০]। হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
অনুচ্ছেদ–১৪: গরু কুরবানী প্রসঙ্গে
১৭৫০. আয়িশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বিদায় হাজ্জে তাহাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে একটি গাভী কুরবানী করেছেন। {১৭৫০}
কুরবানির পশু এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৭৫১. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তার স্বীয় স্ত্রীদের পক্ষ হইতে একটি গরু করবানী করেন, যারা উমরাহ করেছেন। {১৭৫১}
কুরবানির পশু এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ–১৫ঃ ইশআর বা উটের কুঁজের পার্শ্বদেশ চিড়ে ফেলা
১৭৫২. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] মাদীনাহ থেকে [হাজ্জের উদ্দেশ্যে] মক্কায় যাওয়ার সময় যুল-হুলাইফাতে যুহরের সলাত আদায় করেন। অতঃপর তিনি কুরবানীর উট আনালেন এবং তার কুঁজের ডান পাশে জখম করে রক্ত প্রবাহিত করিলেন, তারপর একজোড়া জুতা তার গলায় বেঁধে দিলেন। পরে তাহাঁর সওয়ারী আনা হলে তিনি তার পিঠে উপবিষ্ট হলেন এবং তা আল-বায়দায় তাহাকে নিয়ে দাঁড়ালে তিনি হাজ্জের তালবিয়া পাঠ করিলেন। {১৭৫২}
কুরবানির পশু এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৭৫৩.শুবাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
উক্ত হাদিসটি আবুল ওয়ালীদের বর্ণিত হাদিসের অর্থানুযায়ী বর্ণিত হয়েছে। তিনি বলিয়াছেন, অতঃপর তিনি [সাঃআঃ] নিজ হাতে রক্ত প্রবাহিত করিলেন। আবু দাউদ বলেন, হাম্মাম বর্ণনা করেছেন, নিজের আঙ্গুল দ্বারা রক্ত প্রবাহিত করেছেন। আবু দাউদ বলেন, হাদিসটি কেবল বাসরাহর বর্ণনাকারীরা বর্ণনা করেছেন
কুরবানির পশু এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৭৫৪. আল-মিসওয়ার ইবনি মাখরামাহ ইবনিল হাকাম [রাদি.] ও মারওয়ান হইতে বর্ণীতঃ
তারা উভয়ে বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] হুদায়বিয়ার বছর রওয়ানা হয়ে যখন যুল-হুলাইফায় পৌঁছেন তখন কুরবানীর পশুর গলায় মালা বেঁধে তাহাকে ইশআর করে ইহরাম বাঁধলেন। {১৭৫৪}
কুরবানির পশু এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৭৫৫.আয়িশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] একটি মেষের গলায় মালা পরিয়ে তা কুরবানীর জন্য [মাক্কাহয়] পাঠিয়ে দেন। {১৭৫৫}
কুরবানির পশু এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ–১৬ঃ কুরবানীর পশু পরিবর্তন
১৭৫৬. আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, উমার ইবনিল খাত্তাব [রাদি.] একটি বুখতী উট কুরবানীর জন্য নির্দিষ্ট করিলেন। অতঃপর তিনশো দীনারে তা কেনার প্রস্তাব এলে তিনি নাবী [সাঃআঃ] এর নিকট এসে বলিলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমি একটি বুখতী উট কুরবানীর জন্য নির্দিষ্ট করেছি। এখন আমাকে এর বিনিময়ে তিনশ দীনার প্রদানের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। আমি কি তা বিক্রি করে সেই মূল্যে অন্য কোনো উট কিনতে পারি? তিনি বলিলেনঃ না, বরং সেটাই যাবাহ করো। আবু দাউদ বলেন, কেননা তিনি ওটাকে ইশআর করেছিলেন। {১৭৫৬}
{১৭৫৬} আহমাদ, বায়হাক্বী, ইবনি খুযাইমাহ। সনদের খালিদ ইবনি আবু ইয়াযীদ সম্পর্কে হাফিয আত-তাক্বরীর গ্রন্থে বলেন ঃ মাক্ববূল। আর আত-তাহযীব গ্রন্থে রয়েছেঃ ঈমাম বুখারী বলে, সালিম থেকেতার শ্রবণের বিষয়টি জানা যায়নি। ঈমাম যাহাবী বলেন ঃ তার মধ্যে জাহালাত রয়েছে।হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-১৭ঃ কুরবানীর পশু [মাক্কাহ্য়] পাঠিয়ে আবাসে অবস্থান করা
১৭৫৭. আয়িশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি নিজ হাতে রসূলুল্লাহর [সাঃআঃ] কুরবানীর পশুর গলায় বাঁধার মালা পাকিয়ে দিয়েছি। আর তিনি [সাঃআঃ] নিজ হাতে তাহাকে ইশআর করে তার গলায় ঐ মালা বেঁধে দিয়েছেন, পরে তা খানায়ে কাবাতে পাঠিয়ে দেন। তিনি মদিনায় অবস্থান করেছেন। কিন্তু এতে স্বাভাবিক অবস্থায় তাহাঁর জন্য যা কিছু হালাল ছিলো সেসবের কিছুই তাহাঁর জন্য হারাম হয়নি। {১৭৫৭}
কুরবানির পশু এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৭৫৮. উরওয়াহ ও আমরাহ বিনতু আবদুর রহমান [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
আয়িশাহ [রাদি.] বলিয়াছেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] মাদীনাহ হইতে [মাক্কাহইতে] কুরবানীর পশু পাঠাতেন, আর আমি সেটির গলায় বাঁধার জন্য মালা তৈরি করে দিতাম। কিন্তু এগুলো প্রেরণ করার পর হাজ্জের উদ্দেশ্যে ইহরামধারী ব্যক্তিকে যা কিছু পরিহার করিতে হয় তিনি তার কিছুই পরিহার করিতেন না। {১৭৫৮}
কুরবানির পশু এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৭৫৯. আয়িশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কুরবানীর পশু পাঠিয়ে দিতেন। আমি নিজ হাতে আমাদের ঘরের তুলা দিয়ে সেটির গলায় বাঁধার জন্য মালা পাকিয়ে দিয়েছি। অতঃপর তিনি আমাদের মধ্যে [ইহরামহীন] হালাল অবস্থায় থাকলেন এবং কেউ স্বীয় স্ত্রীর সাথে যা করে থাকে তিনিও তা করিতেন। {১৭৫৯}
কুরবানির পশু এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ–১৮ঃ কুরবানীর পশুর পিঠে আরোহণ করা সম্পর্কে
১৭৬০. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এক ব্যক্তিকে কুরবানীর উট নিয়ে যেতে দেখে বলিলেনঃ এটির পিঠে চড়ে যাও। লোকটি বললো, এটা কুরবানীর পশু। তিনি বলিলেনঃ তুমি এর পিঠে চড়ো। তিনি দ্বিতীয় বা তৃতীয়বার বলিলেনঃ তোমার জন্য দুঃখ হয়, তুমি এর পিঠে চড়ো। {১৭৬০}
কুরবানির পশু এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৭৬১. আবুয যুবাইর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.]-কে কুরবানীর পশুর পিঠে চড়া সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনিয়াছি ঃ তুমি নিরূপায় হলে অন্য সওয়ারী না পাওয়া পর্যন্ত সদয়ভাবে তার উপর চড়তে পারো। {১৭৬১}
কুরবানির পশু এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-১৯ঃ কুরবানীর পশু গন্তব্যে পৌঁছার আগেই অচল হয়ে গেলে
১৭৬২. নাজিয়াতুল আসলামী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাকে তাহাঁর কুরবানীর পশুর সাথে [মাক্কাহইতে] প্রেরণের সময় বলিয়াছেনঃ এগুলোর কোনটি অচল হয়ে পড়লে তা যাবাহ করে সেটির গলায় বাঁধানো জুতা রক্তের মধ্যে ফেলে দিবে এবং মুসাফিরদের আহারের জন্য রেখে দিবে। {১৭৬২}
কুরবানির পশু এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৭৬৩. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বনূ আসলামের জনৈক ব্যক্তিকে আঠারটি কুরবানীর পশু সহ [মক্কায়] প্রেরণ করিলেন। লোকটি বললো, [পথে] কোন জন্তু অচল হয়ে পড়লে তখন আমি কি করবো? তিনি বলিলেনঃ তা যাবাহ করিবে এবং তার গলায় বাঁধা জুতা রক্তে মেখে তার ঘাড়ে রেখে দিবে। কিন্তু তুমি নিজে এবং তোমার কোনো সাথী এর গোশত খাবে না। আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, আবদুল ওয়ারিসের হাদিসে [আরবী] এর স্থলে [আরবী] শব্দ রয়েছে। {১৭৬৩}
কুরবানির পশু এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ–২০ঃ নিজ হাতে কুরবানী করা এবং অন্যের সহযোগিতা নেয়া
১৭৬৪. আলী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তার নিজ হাতে ত্রিশটি কুরবানীর পশু [উট] যাবাহ করেছেন। পরে তার নির্দেশ মোতাবেক অবশিষ্ট পশুগুলো আমি যাবাহ করেছি। {১৭৬৪}
{১৭৬৪} আহমাদ। সানাদে ইবনি ইসহাক্ব একজন মুদাল্লিস এবং তিনি এটি আন্ আন্ শব্দে বর্ণনা করেছেন। ডক্টর সাইয়্যিদ মুহাম্মাদ সাইয়্যিদ বলেন ঃ তবে তার মুতাবাআত করেছেন অন্যরা।হাদিসের তাহকিকঃ মুনকার
১৭৬৫. আবদুল্লাহ ইবনি কুরত [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ প্রাচুর্য্যময় মহান আল্লাহর কাছে সবচেয়ে মর্যাদাসম্পন্ন দিন হলো কুরবানীর দিন, তারপর মেহমানদারীর দিন, সেটি হলো দ্বিতীয় দিন। বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর পাঁচটি বা ছয়টি কুরবানীর পশু রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর কাছে আনা হলো। যে পশুকে তাহাঁর কাছে আনা হলো তিনি প্রথমে সেটিই যাবাহ করিলেন। এভাবে যাবাহ শেষ হলো। বর্ণনাকারী বলেন, তিনি হালকা একটা কথা বলিয়াছেন, যা আমি বুঝতে পারিনি। পরে আমি আমার [কাছের ব্যক্তিকে] জিজ্ঞেস করলে সে বললো, তিনি বলিয়াছেনঃ কারো ইচ্ছে হলে এখান থেকে গোশত কেটে নিতে পারবে। {১৭৬৫}
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৭৬৬. গারাফা ইবনিল হারিস আল-কিনদী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
আমি বিদায় হাজ্জের দিন রসূলুল্লাহর [সাঃআঃ] সাথে ছিলাম। তাহাঁর কাছে কুরবানীর উট আনা হলে তিনি বলিলেনঃ হাসানের পিতাহাকে ডাকো। সুতরাং আলী [রাদি.]-কে ডাকা হলো। তিনি তাহাকে বলিলেনঃ তুমি অস্ত্রের নিম্নভাগে ধরো, আর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] নিজে উপরিভাগ ধরলেন। তারপর তাঁরা উভয়ে ধারালো অস্ত্রে পশুটি যাবাহ করিলেন। অতঃপর যাবাহ শেষে তাহাঁর খচ্চরে আরোহন করে আলীকে তাহাঁর পেছনে বসিয়ে চলে গেলেন। {১৭৬৬}
{১৭৬৬} বায়হাকী। সানাদে আব্দুল্লাহ বিন হারিস আযাদী সম্পর্কে হাফিয বলেন ঃ মাকবুল অর্থাৎ মুতাবাআতের ক্ষেত্রে। কিন্তু তার কোন মুতাবাআত নেই। সুতারাং তার হাদিস দলীলযোগ্য নয়। হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-২১ঃ উট কিভাবে যাবাহ করিতে হয়
১৭৬৭. জাবির ও আবদুর রহমান ইবনি সাবিত [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] এবং তাহাঁর সাহাবীগণ উটের বাম পা বেঁধে, অবশিষ্ট [তিন] পায়ের উপর খাড়া অবস্থায় তা যাবাহ করিতেন। {১৭৬৭}
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৭৬৮. যিয়াদ ইবনি জুবাইর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
আমি ইবনি উমারের [রাদি.] সাথে মিনাতে ছিলাম। তখন তিনি এক ব্যক্তির পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন, যে তার উটকে বসানো অবস্থায় যাবাহ করিতে প্রস্তুত হচ্ছিল। তিনি বলিলেন, এটিকে ছেড়ে দাও এবং বেঁধে দাঁড় করিয়ে যাবাহ করো। এটাই মুহাম্মাদ [সাঃআঃ] এর সুন্নাত।
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৭৬৯. আলী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাকে তাহাঁর কুরবানীর পশুর দেখাশোনা, চামড়া বিতরণ ও তার আচ্ছাদন সদাক্বাহ করিতে নির্দেশ দেন এবং কসাইকে তা থেকে কিছু না দেয়ার নির্দেশ করেন। বর্ণনাকারী বলেন, তবে কসাইকে আমরা নিজেদের পক্ষ হইতে আলাদাভাবে পারিশ্রমিক দিতাম। {১৭৬৯}
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-২২ঃ ইহরাম বাঁধার সময়
১৭৭০. সাঈদ ইবনি জুবাইর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি আব্দুল্লাহ ইবনি আব্বাস [রাদি.]-কে বলিলাম, হে আবুল আব্বাস! রসূলুল্লাহর [সাঃআঃ] সাহাবীরা রসূলুল্লাহর [সাঃআঃ] ইহরাম বাঁধার মুহূর্ত বিষয়ে যে মতভেদ করছেন তাতে আমি স্তম্ভিত। ইবনি আব্বাস [রাদি.] বলেন, আমি এ বিষয়ে অন্যদের চেয়ে অধিক অবগত। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] শুধু একবারই হাজ্জ করেছেন, আর এটাই তাহাদের মতভেদের মূল উৎস। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] হাজ্জের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলেন। তিনি যুল-হুলাইফাতে তাহাঁর মাসজিদে দু রাকআত সালাত আদায় করিলেন এবং ঐ বসাবস্থায় দু রাকআত শেষ করেই নিজের জন্য হাজ্জ ওয়াজিব করে নিয়ে তালবিয়া পাঠ করিলেন। সুতরাং এখানে কিছু লোক তাঁকে তালবিয়া পড়তে শুনে তারা তাই স্মরণ রেখেছে। অতঃপর তিনি আরোহণ করিলেন এবং উষ্ট্রী তাঁকে পিঠে তুলে নিয়ে দাঁড়ানোর সময়ও তিনি তালবিয়া পড়লেন। সুতরাং আরো কিছু লোক এখানে তাঁকে তালবিয়া পড়তে শুনলো। বস্তুত লোকজন পৃথক পৃথকভাবে দলে দলে আসছিলো। আর তারা তখন তাঁকে তালবিয়া পাঠ করিতে শুনলো যখন তিনি উষ্ট্রীর পিঠে আরোহিত অবস্থায় তালবিয়া পড়লেন। ফলে তারা একথাই বললো যে, উষ্ট্রী তাঁকে তার পিঠে তোলার সময় তিনি তালবিয়া পড়েছেন। এরপর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] সম্মুখে অগ্রসর হলেন। এবার তিনি আল-বায়দার উচ্চভূমিতে চড়লেন এবং এখানেও তালবিয়া পড়লেন। কিছু লোক তাঁকে এখানে তালবিয়া পড়তে শুনে তারা বললো, তিনি তখনই ইহরাম বেঁধে তালবিয়া পড়েছেন এবং পরে উষ্ট্রীর পিঠে ও আল-বায়দার উচ্চভূমিতে, সর্বত্র সর্বাবস্থায় তালবিয়া পড়েছিলেন। অতঃপর সাঈদ ইবনি জুবাইর [রাদি.] বলেন, যে ব্যক্তি ইবনি আব্বাসের বর্ণনানুযায়ী কাজ করে, সে যেন দু রাকআত সালাত শেষে স্বীয় মুসাল্লাতেই ইহরাম বাঁধে। {১৭৭০}
দুর্বল ঃ যয়ীফ সুনান তিরমিজি [৮২৫/১৩৫] সংক্ষিপ্তভাবে এ শব্দে নাবী [সাঃআঃ] প্রত্যেক সলাতের পর তালবিয়া পড়তেন। অনুরূপ যয়ীফ সুনান নাসায়ী [২৭৫৪/১৭৫]। {১৭৭০} আহমাদ। সনদের খুসাইফ ইবনি আবদুর রহমান সম্পর্কে হাফিয আত-তাক্বরীব গ্রন্থে বলেন ঃ স্মরণশক্তি ভাল নয়, তিনি শেষ বয়সে হাদিসের সংমিশ্রণ করিতেন এবং তার ব্যাপারে মুরজিয়া হওয়ার আরোপ রয়েছে। হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১৭৭১. আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলিয়াছেন, এই হচ্ছে তোমাদের বায়দা যেখানে তোমরা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] সম্পর্কে অনুমানে কথা বলছো। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যুলহুলাইফার মাসজিদ থেকেই ইহরাম বেধেছেন। {১৭৭১}
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৭৭২. উবাইদ ইবনি জুরাইজ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
একদা তিনি আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.]-কে বলেন, হে আবু আবদুর রহমান! আমি আপনাকে এমন চারটি আমল করেতে দেখি, যা আপনার অন্য কোনো সাথীকে করিতে দেখি না। তিনি বলিলেন, হে ইবনি জুরাইজ! সেগুলো কি? তিনি বলিলেন, আপনি দুই রুকনে ইয়ামানী ছাড়া অন্য কোন রুকন স্পর্শ করেন না। আপনি সিবতী চামড়ার জুতা পড়েন। আপনি হলুদ রঙ ব্যবহার করেন এবং আপনি মাক্কাহইতে থাকাবস্থায় লোকজন যিলহাজ্জ মাসের চাঁদ দেখে ইহরাম বাঁধে, কিন্তু আপনি তারবিয়ার দিন না আসা পর্যন্ত ইহরাম বাঁধেন না। অতঃপর এর জবাবে আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] বলিলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে দুই রুকনে ইয়ামানী ছাড়া অন্য কোন রুকন স্পর্শ করিতে দেখিনি। আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে পশমহীন জুতা পরতে দেখেছি, তিনি সেটা পরা অবস্থার উযুও করিতেন। সুতরাং আমি তা পরতে পছন্দ করি। হলুদ রং- আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে হলদে রং ব্যবহার করিতে দেখেছি। কাজেই আমি তা পছন্দ করি। আর ইহরাম বাঁধা- আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে তাহাঁর সওয়ারী সফরের উদ্দেশ্যে না দাঁড়ানো পর্যন্ত ইহরাম বাঁধতে দেখিনি। {১৭৭২}
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৭৭৩. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] মদিনায় যুহরের চার রাকআত সলাত আদায় করেন এবং যুলহুলাইফায় পৌঁছে আসরের সলাত আদায় করেন দুই রাকআত। তিনি সেখানেই রাত যাপন করেন এবং সকালে সওয়ারীতে চড়ে সফর শুরু করার সময় তালবিয়া পাঠ করেন। {১৭৭৩}
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৭৭৪. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] [মাদীনাহয়] যুহরের সলাত আদায় করে সওয়ারীতে চড়েন। অতঃপর তিনি আল-বায়দার উচ্চভূমিতে আরোহণের সময় তালবিয়া পাঠ করেন। {১৭৭৪}
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৭৭৫. সাদ ইবনি আবু ওয়াক্কাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] যখন আল-ফুরআ নামক স্থানের দিকে যেতেন তখন সওয়ারীর পিঠে চড়া মাত্রই তালবিয়া পড়তেন। তিনি যখন উহুদের পথে রওয়ানা হইতেন, তখন আল-বায়দা পর্বতে উঠার সময় তালবিয়া পড়তেন। {১৭৭৫}
{১৭৭৫} বায়হাক্বী। সানাদে মুহাম্মাদ ইবনি ইসহাকের হাদিস শ্রবণ সুস্পষ্ট নয়। হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-২৩ঃ হাজ্জের মধ্যে শর্ত যোগ করা প্রসঙ্গে
১৭৭৬. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
একদা যুবাইর ইবনি আবদুল মুত্তালিবের মেয়ে- দবাআহ [রাদি.] রাসূলুল্লাহ্র [সাঃআঃ] কাছে এসে বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমি হাজ্জের ইচ্ছা করেছি। এতে কোন শর্ত করিতে পারব কি? তিনি বলিলেনঃ হাঁ। দবাআহ বলেন, তা কিভাবে? তিনি বলেনঃ তুমি বলো ঃ আমি উপস্থিত, হে আল্লাহ! আমি উপস্থিত, পথে যেখানেই তুমি আমাকে আটক করিবে সেটাই আমার ইহরাম ভঙ্গের স্থান। {১৭৭৬}
হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ
অনুচ্ছেদ-২৪ঃ হাজ্জে ইফরাদ
১৭৭৭. আয়িশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] হাজ্জে ইফরাদ করেছেন। {১৭৭৭}
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৭৭৮. আয়িশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, যিলহাজ্জ মাসের নতুন চাঁদ উদয়ের কিছু আগে আমরা রসূলুল্লাহর [সাঃআঃ] সঙ্গে হাজ্জের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলাম। তিনি যুল-হুলাইফায় পৌঁছে বলিলেনঃ কেউ হাজ্জের ইহরাম বাঁধতে চাইলে বাঁধুক। আর কেউ উমরাহ্র ইহরাম বাঁধতে চাইলে সে যেন উমরাহ্র ইহরাম বাঁধে। উহাইব হইতে মূসা বর্ণিত হাদিসে রয়েছে, তিনি বলিয়াছেনঃ যদি আমার সাথে কুরবানীর পশু না আনতাম তাহলে উমরাহ্র জন্য ইহরাম বাঁধতাম। হাম্মাদ ইবনি সালামাহ্র হাদিসে রয়েছে, আমি হাজ্জের ইহরাম বেঁধেছি, কারণ আমার সাথে কুরবানীর পশু আছে। তারপর উভয় বর্ণনাকারী একইরূপ বর্ণনা করেন। আয়িশাহ [রাদি.] বলেন, যারা শুধু উমরাহ্র ইহরাম বেঁধেছিলো, আমি তাহাদের দলভুক্ত ছিলাম। পথিমধ্যে আমার হায়েয আরম্ভ হলো। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমার কাছে আসলেন, এ সময় আমি কাঁদছিলাম। তিনি জিজ্ঞেস করিলেন ঃ তুমি কাঁদছো কেন? আমি বলিলাম, কতই না ভালো হতো যদি আমি এ বছর [ঘর থেকে] বের না হতাম। তিনি বলিলেনঃ তুমি উমরাহ্ ত্যাগ করো, মাথার খোপা খুলে ফেলো, চুল আঁছড়িয়ে নাও। মূসা বর্ণনায় রয়েছে ঃ এবং হাজ্জের জন্য ইহরাম বাঁধো। সুলাইমান বলেন, মুসলিমরা হাজ্জে যেসব অনুষ্ঠান পালন করে তুমিও তা করো। অতঃপর [মাক্কাহ থেকে] ফেরার রাত এলো আবদুর রহমানকে নির্দেশ করলে তিনি আয়িশাহ [রাদি.]-কে তানঈমে নিয়ে যান। মূসার বর্ণনায় আরো রয়েছে ঃ তিনি পূর্বের উমরাহ্র স্থানে উমরাহ্র ইহরাম বাঁধলেন, বায়তুল্লাহ তাওয়াফ করিলেন। ফলে আল্লাহ তাহাঁর উমরাহ্ ও হাজ্জ উভয়টিই পূর্ণ করিলেন। হিশামের বর্ণনায় রয়েছে ঃ কিন্তু এরূপ করার কারণে তাঁকে কাফফারাহ হিসেবে কুরবানী দিতে হয়নি। আবু দাউদ বলেন, হাম্মাদ ইবনি সালামাহ্র হাদিসে মূসা বর্ধিত করেছেন যে, অতঃপর বাতহা উপত্যকায় প্রবেশের রাতে আয়িশাহ [রাদি.] পবিত্র হন। {১৭৭৮}
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৭৭৯. আয়িশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমরা বিদায় হাজ্জের বছরে রসূলুল্লাহর [সাঃআঃ] সাথে হাজ্জের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলাম। আমাদের মধ্যকার কেউ উমরাহ্র ইহরাম বেঁধেছিলো, কেউ হাজ্জ ও উমরাহ দুটির ইহরাম বেঁধেছিলো এবং কেউ শুধুমাত্র হাজ্জের ইহরাম বেঁধেছিলো। কিন্তু রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] শুধু হাজ্জের ইহরাম বেঁধেছিলেন। যারা শুধু হাজ্জ কিংবা হাজ্জ ও উমরাহ উভয়ের ইহরাম বেঁধেছিলেন তারা কুরবানীর দিন পর্যন্ত ইহরাম খুলতে পারেননি। {১৭৭৯}
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৭৮০. আবুল আসওয়াদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
পূর্ব বর্ণিত সানাদে অনুরূপ বর্ণিত। তবে এতে আরো আছে ঃ যারা কেবল উমরাহর ইহরাম বাঁধেন তারা উমরাহ্ সমাপন করে ইহরামমুক্ত হন।
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৭৮১. আয়িশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, বিদায় হাজ্জের সময় আমরা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর সাথে রওয়ানা হলাম। আমরা উমরাহ্র ইহরাম বাঁধলাম। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেনঃ যাদের সাথে কুরবানীর পশু আছে তারা যেন উমরাহ্র সাথে হাজ্জের ইহরাম বাঁধে এবং উভয়টির যাবতীয় অনুষ্ঠানাদি শেষ না করা পর্যন্ত ইহরাম না খুলে। আয়িশাহ [রাদি.] বলেন, আমি হায়িয অবস্থায় মক্কায় উপস্থিত হলাম। সুতরাং আমি বাইতুল্লাহ তাওয়াফ এবং সাফা ও মারওয়াতে সাঈ করলাম না। আমি বিষয়টি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে অবহিত করলে তিনি বলিলেনঃ চুলের খোপা খুলে ফেলো, মাথায় চিরুনি করো, উমরাহ্র নিয়্যাত বর্জন করে কেবল হাজ্জের ইহরাম বাঁধো। তিনি বলেন, সুতরাং আমি তাই করলাম। অতঃপর আমাদের হাজ্জ সমাপ্ত হলে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাকে আবদুর রহমান ইবনি আবু বাকরের সাথে তানঈম-এ প্রেরণ করিলেন এবং আমি সেখান থেকে উমরাহ করলাম। তিনি বলিলেনঃ এটা তোমার পূর্বের উমরাহ্র পরিপূরক। আয়িশাহ [রাদি.] বলেন, যারা উমরাহ্র ইহরাম বেঁধেছিলো তারা মক্কায় পৌঁছে বায়তুল্লাহ তাওয়াফ এবং সাফা-মারওয়ার মাঝে সাঈ করার পর ইহরাম খুলে ফেলে। তার পর মিনা থেকে ফিরে এসে হাজ্জের জন্য আরেকবার বায়তুল্লাহ তাওয়াফ করে। আর যারা হাজ্জ ও উমরাহ একত্রে আদায় করেছে তারা শুধুমাত্র একবার তাওয়াফ করেছে। {১৭৮১}
সহিহ।ঈমাম আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, ইবরাহীম ইবনি সাদ এবং মামার [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] ইবনি শিহাব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন, তবে এতে “যারা শুধু উমরাহ্র ইহরাম বেঁধেছিল এবং যারা হাজ্জ ও উমরাহ উভয়টির ইহরাম বেঁধেছে তাহাদের তাওয়াফের কথা” বর্ণিত হয়নি।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৭৮২. আয়িশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমরা হাজ্জের জন্য ইহরাম বাঁধলাম কিন্তু সারিফ নামক স্থানে পৌঁছালে আমার হায়িয আরম্ভ হয়। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমার কাছে আসলেন, তখন আমি কাঁদছিলাম। তিনি বলিলেনঃ হে আয়িশা! তুমি কাঁদছ কেন? আমি বলিলাম, গত রাতে আমি ঋতুবতী হয়েছি, আমি তো হাজ্জ করিতে পারলাম না। তিনি বলিলেনঃ সুবহানাল্লাহ! এতো সেই বস্তু যা মহান আল্লাহ আদমের কন্যাদের জন্য নির্ধারিত করেছেন। সুতরাং তুমি বায়তুল্লাহ তাওয়াফ ব্যতীত হাজ্জের অন্যান্য সব কাজ সম্পন্ন করো। আয়িশাহ [রাদি.] বলেন, অতঃপর আমরা মক্কায় প্রবেশ করলে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেনঃ যার সাথে কুরবানীর পশু আছে সে ছাড়া যে কেউ তার ইহরাম উমরাহ্তে পরিণত করিতে পারে। আয়িশাহ [রাদি.] বলেন, কুরবানীর দিন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] স্বীয় স্ত্রীদের পক্ষ হইতে একটি গরু কুরবানী করেন। অতঃপর বাতহার রাতে আয়িশাহ [রাদি.] হায়িয থেকে পবিত্র হলেন। তিনি বলিলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমার সাথীরা হাজ্জ ও উমরাহ্ সম্পন্ন করে ফিরে যাবে, আর আমি কি শুধু হাজ্জ করেই ফিরবো? অতঃপর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আবদুর রহমান ইবনি আবু বাকরকে নির্দেশ দিলে তিনি আয়িশাহ [রাদি.] কে তানঈম নামক স্থানে নিয়ে যান এবং তিনি সেখান থেকে ইহরাম বেঁধে উমরাহ্ করেন। {১৭৮২}
সহিহ, তবে এ কথাটি বাদে ঃ “… من شاء أن يجعلها عمرة”। সঠিক হলো ঃ “اجعلوها عمرة ” ঃ মুসলিম। {যা সামনে আসছে এ গ্রন্থের হা/১৭৮৮।}হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৭৮৩. আয়িশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, একদা আমরা রসূলুল্লাহর [সাঃআঃ] সাথে রওয়ানা হলাম। তাতে হাজ্জ ছাড়া আমাদের অন্য কোন উদ্দেশ্য ছিলো না। আমরা মক্কায় পৌঁছে বায়তুল্লাহ তাওয়াফ করি। অতঃপর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাদেরকে ইহরাম মুক্ত হওয়ার নির্দেশ দিলেন যারা কুরবানীর পশু সাথে আনেনি। সুতরাং যারা কুরবানীর পশু সাথে আনেনি তারা ইহরাম মুক্ত হলো। {১৭৮৩}
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৭৮৪. আয়িশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ আমি যা পরে জানতে পেরেছি তা যদি আগে জানতে পারতাম তাহলে আমি কুরবানীর পশু সাথে আনতাম না। বর্ণনাকারী মুহাম্মাদ ইবনি ইয়াহইয়া বলেন, আমার ধারণা, আমার শায়খ [উসমান ইবনি উমার] বলিয়াছেন, আয়িশাহ [রাদি.] বলিয়াছেন, যারা উমরাহ সমাপ্ত করে ইহরাম খুলেছে আমিও তাহাদের দলভুক্ত ছিলাম। মুহাম্মদ ইবনি ইয়াহইয়া বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে, সকলের কার্যক্রম যেন একইরূপ হয়। {১৭৮৪}
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৭৮৫. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমরা রাসূলূল্লাহর [সাঃআঃ] সাথে হাজ্জে ইফরাদের ইহরাম বেঁধে রওয়ানা হই। আর আয়িশাহ [রাদি.] এলেন উমরাহ্র ইহরাম বেঁধে। তিনি সারিফ নামক স্থানে পৌঁছে ঋতুবতী হলেন। আমরা [মক্কায় ] পৌঁছে বাইতুল্লাহ তাওয়াফ এবং সাফা-মারওয়ার সাঈ সমাপ্ত করি। আমাদের মধ্যে যার সাথে কুরবানীর পশু নেই রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাকে ইহরাম খুলে হালাল হওয়ার নির্দেশ দিলেন। আমরা বলিলাম, হালাল হওয়ার অর্থ কি? তিনি বলিলেনঃ সবকিছুর জন্য হালাল হওয়া। ফলে আমরা আমাদের স্ত্রীদের সাথে সহবাস করলাম এবং গায়ে সুগন্ধি মেখে স্বাভাবিক পোশাক পরলাম। অথচ আমাদের ও আরাফাহ দিবসের মাঝে মাত্র চার দিনের ব্যবধান আছে। অতঃপর আমরা যিলহাজ্জ মাসের অষ্টম তারিখে হাজ্জের ইহরাম বাঁধলাম। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আয়িশাহ [রাদি.] এর কাছে গিয়ে দেখলেন তিনি কাঁদছেন। জিজ্ঞেস করিলেন ঃ তোমার কি হয়েছে? তিনি বলেলেন, আমি ঋতুবতী হয়েছি। অথচ সকল লোক [উমরাহ্ সম্পন্ন করে] ইহরাম খুলে ফেলেছে, আর আমি বায়তুল্লাহ তাওয়াফ করিতে পারিনি। আর লোকজন এখনই হাজ্জের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হইবে। তিনি বলিলেনঃ মহান আল্লাহ তো এটা আদমের সকল কন্যাদের উপর নির্ধারিত করে দিয়েছেন। তুমি গোসল করো এবং হাজ্জের জন্য ইহরাম বাঁধো। সুতরাং তিনি তাই করিলেন এবং যাবতীয় অনুষ্ঠান সম্পন্ন করিলেন, পরে যখন পবিত্র হলেন তখন বায়তুল্লাহ এবং সাফা-মারওয়ার মাঝে সাঈ করিলেন। এরপর রাসূল [সাঃআঃ] বলিলেনঃ তুমি তোমার হাজ্জ ও উমরাহ উভয়টি হইতে হালাল হয়েছো। তখন আয়িশাহ [রাদি.] বলিলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমার মনে [খটকা] হচ্ছে, আমি হাজ্জের সময় বায়তুল্লাহ তাওয়াফ করিনি। সুতরাং তিনি বলিলেনঃ হে আবদুর রহমান! তুমি তাহাকে নিয়ে যাও এবং তাহাকে তানঈম থেকে এর উমরাহ করাও। এটা ছিল মুহাসসাব উপত্যকার রাতের ঘটনা [অর্থাৎ যিলহাজ্জ মাসের চৌদ্দ তারিখ]। {১৭৮৫}
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৭৮৬. আবুয যুবাইর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
জাবির [রাদি.] হইতে এ ঘটনার অংশবিশেষ শুনেছেন। তিনি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর কথা ঃ এবং তুমি হাজ্জের ইহরাম বাঁধো অতঃপর হাজ্জ করো এবং অন্যান্য হাজীগণ যা করে তুমিও তাই করো, কিন্তু বায়তুল্লাহ তাওয়াফ করিবে না এবং সলাত আদায় করিবে না।
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৭৮৭. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমরা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সাথে শুধুমাত্র হাজ্জের জন্য ইহরাম বাঁধি, এতে অন্য কিছু ছিল না। যিলহাজ্জ মাসের চার তারিখে আমরা মক্কায় উপস্থিত হয়ে [বায়তুল্লাহ] তাওয়াফ এবং [সাফা-মারওয়া] সাঈ করি। এরপর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদেরকে ইহরাম খুলে হালাল হবার নির্দেশ দিয়ে বলিলেনঃ আমার সাথে কুরবানীর পশু না থাকলে আমিও ইহরাম খুলে ফেলতাম। তখন সুরাক্বাহ ইবনি মালিক [রাদি.] উঠে বলিলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমাদের এই হাজ্জে তামাত্তু কি এ বছরের জন্য, নাকি সর্বকালের জন্য? রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেনঃ না, বরং এটা সর্বকালের জন্য। ঈমাম আওযাঈ বলেন, আমি এ হাদিস আত্বা ইবনি আবু রাবাহকে বলিতে শুনিয়াছি, কিন্তু স্মরণ রাখতে পারিনি। অবশেষে ইবনি জুরাইজের সাথে সাক্ষাৎ করলে তিনি আমাকে তা যথাযথভাবে স্মরণ করিয়ে দেন। {১৭৮৭}
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৭৮৮. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ও তাহাঁর সাথীরা যিলহাজ্জ মাসের চার তারিখে [মক্কায়] আসেন। তাঁরা বায়তুল্লাহ তাওয়াফ এবং সাফা-মারওয়া সাঈ সম্পন্ন করলে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ যার সাথে কুরবানীর পশু আছে সে ব্যতীত তোমরা সকলেই এ কাজগুলোকে উমরাহ্ গণ্য করো। অতঃপর [অষ্টম তারিখ] তারবিয়ার দিন এলে তারা হাজ্জের ইহরাম বাঁধলেন। অতঃপর [কুরবানীর দিন] দশ তারিখে তারা [মক্কায়] এসে শুধু বায়তুল্লাহ তাওয়াফ করিলেন, সাফা-মারওয়ার মাঝে তাওয়াফ [সাঈ] করিলেন না। {১৭৮৮}
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৭৮৯. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] ও তাহাঁর সাথীরা ইহরাম বেঁধে হাজ্জের উদ্দেশ্যে রওয়ানা করিলেন। নাবী [সাঃআঃ] এবং ত্বালহা [রাদি.] ব্যতীত কারো সাথেই কুরবানীর পশু ছিলো না। আলী [রাদি.] ইয়ামান দেশ থেকে আসলেন, তখন তাহাঁর সাথে কুরবানীর পশু ছিলো। আলী [রাদি.] বলিলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যে উদ্দেশ্যে ইহরাম বেঁধেছেন, আমিও ঐ উদ্দেশ্যেই ইহরাম বেঁধেছি। অতঃপর নাবী [সাঃআঃ] যাদের সাথে কুরবানীর পশু ছিলো না তাহাদের হাজ্জকে উমরাহ্য় রূপান্তরিত করে বায়তুল্লাহ তাওয়াফের নির্দেশ দেন এবং মাথা মুন্ডন করে হালাল হইতে বলিলেন। কিন্তু যাদের সাথে কুরবানীর পশু ছিল তারা ব্যতীত। তারা বলিলেন, আমরা কিভাবে মিনার দিকে রওয়ানা হবো অথচ আমাদের কেউ কেউ স্ত্রী সহবাস করেছে। এসব কথা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর কানে পৌঁছলে তিনি বলিলেনঃ আমার ব্যাপারে আমি যা পরে জেনেছি তা যদি আগে জানতাম, তাহলে আমি কুরবানীর পশু সাথে করে আনতাম না। আমার সাথে কুরবানীর পশু না থাকলে আমিও ইহরাম খুলে ফেলতাম। {১৭৮৯}
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৭৯০ ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ এ সেই উমরাহ্ যার থেকে আমরা উপকৃত হয়েছি। কাজেই যার সাথে কুরবানীর পশু নেই সে সব কিছু থেকে সম্পূর্ণ হালাল হয়ে যাবে। আর উমরাহ্ ক্বিয়ামাত পর্যন্ত হাজ্জের মধ্যে প্রবেশ করলো। ঈমাম আবু দাউদ বলেন, এ হাদিসটি মুনকার এবং এগুলো ইবনি আব্বাসের [রাদি.] বক্তব্য। {১৭৯০}
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৭৯১. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ কোনো ব্যক্তি হাজ্জের ইহরাম বেঁধে মক্কায় উপস্থিত হয়ে বায়তুল্লাহ তাওয়াফ এবং সাফা-মারওয়ার সাঈ করলে সে অবশ্যই হালাল হয়ে গেল। আর এটাই হচ্ছে উমরাহ্। আবু দাউদ বলেন, ইবনি জুরাইজ এক ব্যক্তি হইতে আত্বা সূত্রে বর্ণনা করেন যে, নাবী [সাঃআঃ] এর সাহাবীগণ শুধুমাত্র হাজ্জের ইহরাম বেঁধে [মক্কায়] প্রবেশ করেছিলেন। কিন্তু নাবী [সাঃআঃ] তা উমরাহ্য় রূপান্তরিত করেন। {১৭৯১}
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৭৯২. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] হাজ্জের উদ্দেশ্যে ইহরাম বেঁধে [মক্কায়] পৌঁছে বায়তুল্লাহ তাওয়াফ এবং সাফা-মারওয়া সাঈ করিলেন। ইবনি শাওকার বলেন, কুরবানীর পশু সাথে থাকার কারণে তিনি চুল খাট করেননি এবং ইহরাম থেকেও মুক্ত হননি। তবে যারা সাথে করে কুরবানীর পশু আনেননি তাহাদেরকে তাওয়াফ ও সাঈ করার পর চুল ছেঁটে ইহরাম মুক্ত হওয়ার নির্দেশ দিলেন। ইবনি মানী বর্ধিত করেছেন যে ঃ অথবা মাথা মুন্ডন করে যে হালাল হয়। {১৭৯২}
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৭৯৩. সাঈদ ইবনিল মুসাইয়্যাব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] এর এক সাহাবী উমার ইবনিল খাত্তাবের [রাদি.] কাছে উপস্থিত হয়ে সাক্ষ্য দেন যে, তিনি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে তাহাঁর মৃত্যুশয্যায় হাজ্জের পূর্বে উমরাহ্ করিতে নিষেধ করিতে শুনেছেন। {১৭৯৩}
দুর্বল ঃ যয়ীফ আল-জামিউস সাগীর [৬০৫১]।{১৭৯৩} আবু দাউদ এটি এককভাবে বর্ণনা করেছেন। সানাদে আবু ঈসা আল-খুরাসানী মাজহুল [অজ্ঞাত]। আর আবদুল্লাহ বিন কাসিম মাক্ববূল। যেমন আত-তাক্ববীর গ্রন্থে রয়েছে। হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১৭৯৪. মুআবিয়াহ ইবনি আবু সুফিয়ান [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] এর সাহাবীদের জিজ্ঞেস করেন, আপনারা কি জানেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] অমুক অমুক কাজ করিতে এবং চিতা বাঘের চামড়ার উপর আরোহণ করিতে নিষেধ করেছেন? তাঁরা বলিলেন, হ্যাঁ। মুআবিয়াহ বলিলেন, আপনারা কি জানেন যে, তিনি হাজ্জ ও উমরাহ্কে একত্র করিতে নিষেধ করেছেন? তারা বলিলেন, এটা আমাদের জানা নেই। অতঃপর তিনি বলিলেন, এটাকেও ঐসব নিষিদ্ধ জিনিসের অন্তর্ভুক্ত, কিন্তু আপনারা ভুলে গেছেন।
সহিহ ঃ তবে হাজ্জ ও উমরাহ একত্র করা নিষেধ কথাটি শায। যয়ীফ আল-জামিউস সাগীর [৬০২৩]। হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য
অনুচ্ছেদ –২৫ঃ হাজ্জে কিরান
১৭৯৫. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে হাজ্জ ও উমরাহ উভয়টির জন্যে একত্রে তালবিয়া পাঠ করিতে শুনিয়াছি। তিনি বলিয়াছেনঃ আমি উমরাহ ও হাজ্জের জন্য আপনার দরবারে উপস্থিত। {১৭৯৫}
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৭৯৬. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] যুল-হুলাইফাতে রাত যাপন করেন। অতঃপর সকালে সওয়ারীতে আরোহণ করে বায়দা নামক স্থানে পৌঁছে আল্লাহর প্রশংসা ও তাসবীহ পাঠ করিলেন এবং তাকবীর দিলেন। তারপর তিনি হাজ্জ ও উমরাহ্র তালবিয়া পাঠ করলে লোকেরা ও হাজ্জ ও উমরাহ্র জন্য তালবিয়া পড়ে। পরে আমরা মক্কায় পৌঁছলে তাহাঁর নির্দেশ মোতাবেক লোকেরা তাহাদের ইহরাম খুলে ফেলে। অতঃপর [অষ্টম তারিখ] তারবিয়ার দিনে সবাই হাজ্জের জন্য তালবিয়া পড়লো। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কুরবানীর দিন সাতটি উট দাঁড়ানো অবস্থায় নিজ হাতে কুরবানী করেছেন। আবু দাউদ বলেন, হাদিসটি আনাস [রাদি.] বর্ণনা করেছেন, তার ভাষা হলো ঃ “তিনি [সাঃআঃ] আল্লাহর প্রশংসা, গুনগান ও তাকবীর পাঠের পর হাজ্জের ইহ্রাম বেঁধেছেন। {১৭৯৬}
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৭৯৭. আল বারাআ ইবনি আযিব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যখন আলী [রাদি.]-কে ইয়ামান দেশে শাসক করে প্রেরণ করেন তখন আমিও তার সাথে ছিলাম। তিনি বলেন, আমি তার সাথে কয়েক আওকিয়া সোনার অধিকারী হয়েছিলাম। তিনি বলেন, যখন আলী [রাদি.] ইয়ামান থেকে রসূলুল্লাহর [সাঃআঃ] কাছে আসলেন তখন আলী বলেন, আমি ফাত্বিমাহ [রাদি.]-কে দেখি রঙ্গিন কাপড় পরে আছে এবং ঘরকে সুগন্ধময় করে রেখেছে। সে আমাকে বললো, আপনার কি হয়েছে? রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর সাথীদেরকে ইহরাম খুলে ফেলার নির্দেশ দিয়েছেন, সেজন্য সবাই ইহরাম খুলে ফেলেছেন। আলী [রাদি.] বলেন, আমি তাহাকে বলিলাম, আমি নাবী [সাঃআঃ] এর ইহরামের মতই ইহরাম বেঁধেছি, এ বলে আমি নাবী [সাঃআঃ] এর কাছে এলে তিনি আমাকে বলিলেনঃ তুমি কি জন্য ইহরাম বেঁধেছো? আমি বলিলাম, নাবী [সাঃআঃ] যে উদ্দেশ্যে ইহরাম বেঁধেছেন আমিও ঐ উদ্দেশ্যে ইহরাম বেঁধেছি। তখন তিনি বলিলেনঃ আমি কুরবানীর পশু সাথে এনেছি এবং কিরান হাজ্জের নিয়্যাত করেছি। অতঃপর তিনি বলিলেনঃ আমার জন্য সাতষট্টিটি উট কুরবানী করিবে এবং তোমার নিজের জন্য তেত্রিশ বা চৌত্রিশটি রেখে দেবে আর প্রত্যেকটি উট থেকে আমার জন্য এক টুকরা করে গোশত রেখে দিবে। {১৭৯৭}
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৭৯৮. আবু ওয়াইল [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আস সুবাই ইবনি মাবাদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, আমি হাজ্জ ও উমরাহ্র জন্য একত্রে ইহরাম বাঁধায় উমার [রাদি.] বলিলেন, তুমি তোমার নাবী [সাঃআঃ] এর সুন্নাত অনুসরণ করেছো। {১৭৯৮}
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৭৯৯. আবু ওয়াইল [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আস্-সুবাই ইবনি মাবাদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলিয়াছেন, আমি খৃষ্টান বেদুঈন ছিলাম। ইসলাম কবুলের পর আমি আমার গোত্রের হুযাইম ইবনি সুরমুলা নামক এক ব্যক্তির কাছে এসে তাহাকে বলিলাম, হে অমুক! আমি জিহাদে যোগদান করিতে চাই। আমি দেখছি, আমার উপর হাজ্জ ও উমরাহ ফারয হয়ে গেছে। কাজেই এ দুটাকে আমি কিভাবে একত্র করবো? সে বললো, তুমি উভয়টি একত্রে আদায় করো এবং তোমার জন্য সহজলভ্য কুরবানী করো। সুতরাং আমি উভয়টির জন্য একত্রে ইহরাম বাঁধি। আমি যখন আল-উযাইব নামক স্থানে পৌঁছি তখন সালমান ইবনি রবীআহ এবং যায়িদাহ ইবনি সূহার [রাদি.] এর সাথে আমার সাক্ষাৎ হলো। আর আমি উভয়টির একত্রে ইহরাম বেঁধেছি। তাহাদের একজন আরেকজনকে বলিলেন, এ ব্যক্তি তার উটের চেয়ে অধিক জ্ঞানী নয়। বর্ণনাকারী বলেন, এই মন্তব্যে যেন আমার উপর পাহাড় পতিত হলো। শেষে আমি উমার ইবনিল খাত্তাবের [রাদি.] কাছে গিয়ে বলিলাম, হে আমীরুল মুমিনীন! আমি ছিলাম খৃষ্টান বেদুঈন। আমি ইসলাম কবুল করেছি। আমি জিহাদে অংশ গ্রহনে আগ্রহী। আমি আমার উপর হাজ্জ ও উমরাহ ফরয দেখিতে পাচ্ছি। কাজেই আমি আমার গোত্রের এক লোকের কাছে গেলে সে আমাকে বললো, তুমি একত্রে উভয়টির ইহরাম বাঁধো এবং তোমার জন্য সহজলভ্য কুরবানী করো। ফলে আমি একত্রে উভয়টির ইহরাম বেঁধেছি। উমার [রাদি.] আমাকে বলিলেন, তুমি তোমার নাবী [সাঃআঃ] এর সুন্নাতের হিদায়াত পেয়েছো। {১৭৯৯}
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৮০০. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, উমার [রাদি.] আমাকে বর্ণনা করেছেন, তিনি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছেন ঃ রাতে আমার মহান পরাক্রমশালী প্রতিপালকের পক্ষ হইতে এক আগমনকারী এসে আমাকে বলিলেন, এ কল্যাণময় উপত্যকায় সলাত আদায় করুন এবং বলিয়াছেন, উমরাহ্কে হাজ্জের অন্তর্ভুক্ত করা হলো।
সহিহ ঃ বুখারী। উমরাহ হাজ্জের অন্তর্ভুক্ত হওয়াটা অগ্রগণ্য।বর্ণনাকারী বলেন, নাবী [সাঃআঃ] তখন আল-আক্বীক্ব উপত্যকায় অবস্থানরত ছিলেন। ঈমাম আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, ওয়ালীদ ইবনি মুসলিম আওযাঈ হইতে বর্ণনা করেছেন এবং বলুন, উমরাহ হাজ্জের সংযুক্ত হলো। ঈমাম আবু দাউদ বলেন, অনুরূপভাবে এ হাদিসে আলী ইবনিল মুবারক বর্ণনা করেন, বলুন, হাজ্জের মধ্যে উমরাহ অন্তর্ভুক্ত হলো। {১৮০০}হা দিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৮০১. আর-রাবী ইবনি সাবরাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে তার পিতার হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ্র [সাঃআঃ] সাথে রওয়ানা হলাম। যখন উসফান নামক স্থানে উপনীত হলাম তখন সুরাকাহ ইবনি মালিক আল-মুদলিজী [রাদি.] তাঁকে বলিলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমাদেরকে হাজ্জের নিয়ম নীতি এমনভাবে [উত্তমরূপে] বুঝিয়ে দিন যেভাবে কোন নাবীন দলকে বুঝানো হয়। তিনি বলিলেনঃ মহাশক্তিশালী আল্লাহ তোমাদের হাজ্জের মধ্যে উমরাহকে প্রবেশ করিয়েছেন। সুতরাং তোমরা [মক্কায়] পৌঁছে যে ব্যক্তি বায়তুল্লাহ তাওয়াফ ও সাফা-মারওয়ার মাঝে সাঈ করিবে সে হালাল হয়ে যাবে, কিন্তু যার সাথে কুরবানীর পশু আছে সে ব্যতীত। {১৮০১}
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৮০২. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
মুআবিয়াহ ইবনি আবু সুফিয়ান [রাদি.] তাহাকে জানিয়েছেন যে, তিনি বলিয়াছেন, আমি মারওয়ার পাশে নাবী [সাঃআঃ] এর চুল কাঁচি দিয়ে ছোট করে দিয়েছিলাম অথবা তিনি বলিয়াছেন, আমি নাবী [সাঃআঃ]-কে মারওয়াতে কাঁচি দ্বারা তাহাঁর চুল ছাঁটতে দেখেছি। {১৮০২}
সহিহ ঃ সহিহ বুখারী ও সহিহ মুসলিম। তবে বুখারীতে তার এ কথাটি নেই ঃ [আরবি]। এটাই অধিক বিশুদ্ধ। হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৮০৩. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
মুআবিয়াহ [রাদি.] তাহাকে বলিয়াছেন, আপনি কি জানেন, মারওয়ার উপর এক বেদুঈনের কাঁচি দ্বারা আমি রাসূলুল্লাহ্র [সাঃআঃ] হাজ্জের সময় তাহাঁর চুল ছোট করেছিলাম। {১৮০৩}
সহিহ ঃ তার একথাটি বাদে ঃ “তাহাঁর হাজ্জের সময়।” কেননা তা শায।হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য
১৮০৪. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] উমরাহ্র জন্য ইহরাম বেঁধেছিলেন এবং তাহাঁর সাথীরা হাজ্জের জন্য ইহরাম বেঁধেছিলেন। {১৮০৪}
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৮০৫. আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বিদায় হাজ্জে হাজ্জ ও উমরাহ একত্রে সম্পন্ন করে তামাত্তু হাজ্জ করেছেন। তিনি যুল-হুলাইফাহ থেকে কুরবানীর পশু সাথে নিয়ে যান। সকলকে তামাত্তু করার নির্দেশ দেয়ার পর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] প্রথমে উমরাহ্র জন্য তালবিয়া পড়েন, তারপর হাজ্জের জন্য তালবিয়া পড়েন [ইহরাম বাঁধেন]। তাহাঁর সাথে লোকজনও হাজ্জের সাথে উমরাহ্র নিয়্যাত করে তামাত্তু করলো। কেউ কেউ সাথে কুরবানীর পশু এনেছিলো আবার কেউ কেউ আনেনি। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] মক্কায় পৌঁছে লোকদেরকে বলিলেনঃ যারা সাথে করে কুরবানীর পশু এনেছো, তাহাদের জন্য হাজ্জ আদায় না করা পর্যন্ত [ইহরাম অবস্থায়] নিষিদ্ধকৃত কাজ বৈধ নয়। আর তোমাদের যারা সাথে করে কুরবানীর পশু আনোনি, তারা বায়তুল্লাহ তাওয়াফ এবং সাফা-মারওয়ার সাঈ করে, চুল খাট করে, ইহরাম খুলে ফেলবে এবং হাজ্জের জন্য [নতুন করে] ইহরাম বাঁধবে, অতঃপর কুরবানী করিবে। কিন্তু যারা কুরবানী দিতে অক্ষম তারা হাজ্জের মওসুমে তিনটি সওম এবং বাড়িতে ফিরে সাতটি সওম [মোট দশটি সওম] পালন করিবে। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] মক্কায় পৌঁছে প্রথমে বায়তুল্লাহ তাওয়াফ করিলেন, তারপর হাজরে আসওয়াদ চুম্বন করিলেন। তিনি তাওয়াফের সাত চক্করের প্রথম তিন চক্কর দ্রুত পায়ে চললেন এবং অবশিষ্ট চার চক্করে স্বাভাবিক গতিতে হাঁটলেন। বায়তুল্লাহ তাওয়াফ শেষ করে তিনি মাকামে ইবরাহীমের পাশে দুই রাকআত সলাত আদায় করিলেন, সলাতের সালাম ফিরিয়ে উঠে সাফা পাহাড়ে গিয়ে সাফা-মারওয়ার মাঝে সাতবার সাঈ করিলেন। অতঃপর হাজ্জ সমাপণ করে কুরবানীর দিন [দশম তারিখে] কুরবানী করা পর্যন্ত তিনি ইহরাম অবস্থায় থাকলেন। অতঃপর ফিরে এসে বায়তুল্লাহ তাওয়াফ করিলেন এবং ইহরাম খুলে যেসব জিনিস এ সময় নিষিদ্ধ ছিলো তা হালাল করিলেন। আর যারা সাথে করে কুরবানীর পশু এনেছিলো তারা ও রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে অনুসরণ করলো। {১৮০৫}
সহিহ ঃ কিন্তু তার এ কথাটি শায ঃ “রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] প্রথমে উমরাহ্র জন্য তালবিয়া পড়েন, তারপর হাজ্জের জন্য তালবিয়া পড়েন।”হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য
১৮০৬. হাফসাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলিলেন, হে আল্লাহর রাসূল! কি হলো, লোকজন ইহরাম খুলে ফেলেছে, অথচ আপনি এখনো উমরাহ্র ইহরাম খুলেননি? তিনি বলিলেনঃ আমি আমার মাথার চুল জট পাকিয়েছি এবং আমার কুরবানীর পশুর গলায় মালা পরিয়েছি। সুতরাং কুরবানী না করা পর্যন্ত আমি হালাল হইতে পারবো না। {১৮০৬}
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-২৬: হাজ্জের ইহরাম বাঁধার পর তা উমরাহ্য় পরিবর্তিত করা
১৮০৭,.সুলাইম ইবনিল আসওয়াদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] সূত্র হইতে বর্ণীতঃ
আবু যার [রাদি.] বলিতেন, যে ব্যক্তি হাজ্জের ইহরাম বাঁধার পর তা উমরাহ্তে পরিবর্তন করে এরূপ করা ঠিক নয়। এরূপ করা কেবল তাঁদের জন্যই জায়িয ছিলো, যারা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর সাথে [বিদায় হাজ্জে] ছিলেন। {১৮০৭}
{১৮০৭} আবু দাউদ এটি এককভাবে বর্ণনা করেন। হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ মওকুফ শায
১৮০৮. আল-হারিস ইবনি বিলাল ইবনিল হারিস [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে তার পিতার হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি বলিলাম, হে আল্লাহর রাসূল! হাজ্জের ইহরাম ভেঙ্গে তা উমরাহ্য় পরিবর্তন করা কি কেবল আমাদের জন্যই নির্ধারিত না আমাদের পরবর্তীদের জন্যও? তিনি বলিলেনঃ না, শুধু তোমাদের জন্যই নির্ধারিত। {১৮০৮}
দুর্বল ঃ যয়ীফ ইবনি মাজাহ [৬৪৪], যয়ীফ সুনান নাসায়ী [২৮০৮/১৭৭]। {১৮০৮} নাসায়ী, ইবনি মাজাহ, আহমাদ, দারিমী। সানাদে আবদুল আযীয বিন মুহাম্মাদ সম্পর্কে হাফিয বলেন ঃ তিনি অন্যের কিতাব থেকে হাদিস বর্ণনা করিতে গিয়ে ভুল করেছেন। আর হারিস ইবনি বিলাল সম্পর্কে বলেন ঃ তিনি মাক্ববুল। যেমন আত-তাক্বরীব গ্রন্থে রয়েছে। হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
Leave a Reply