কুমন্ত্রনা কুধারনা ও বাচালতা
কুমন্ত্রনা কুধারনা ও বাচালতা, এই অধ্যায়ে হাদীস = ৪১ টি (১২৯৬ – ১৩৩৬) << আদাবুল মুফরাদ হাদীস কিতাবের মুল সুচিপত্র দেখুন
অধ্যায় – ২২ঃ কুমন্ত্রনা, কুধারনা ও বাচালতা
৬২১. অনুচ্ছেদঃ মনের মধ্যে সৃষ্ট কুমন্ত্রণা।
৬২২. অনুচ্ছেদঃ অলীক ধারণা-অনুমান।
৬২৩. অনুচ্ছেদঃ ক্রীতদাসী বা স্ত্রী তার স্বামীর মাথার চুল কামাতে পারে।
৬২৪. অনুচ্ছেদঃ বগলের লোম উপড়ানো।
৬২৫. অনুচ্ছেদঃ উত্তম ব্যবহার।
৬২৬. অনুচ্ছেদঃ আলাপ-পরিচয়।
৬২৭. অনুচ্ছেদঃ শিশুদের আখরোট দিয়ে খেলা করা।
৬২৮. অনুচ্ছেদঃ কবুতর যবেহ করা।
৬২৯. অনুচ্ছেদঃ যার প্রয়োজন আছে সে-ই যাবে।
৬৩০. অনুচ্ছেদঃ জনসমাবেশের ভেতরে থুথু ফেলার নিয়ম।
৬৩১. অনুচ্ছেদঃ কোন ব্যক্তি একদল লোকের সাথে কথা বলার সময় একজনকে লক্ষ্য করে বলবে না।
৬৩২. অনুচ্ছেদঃ অবাঞ্ছিত দৃষ্টিপাত।
৬৩৩. অনুচ্ছেদঃ অনর্থক কথাবার্তা।
৬৩৪. অনুচ্ছেদঃ দ্বিমুখী চরিত্রের লোক।
৬৩৫. অনুচ্ছেদঃ দ্বিমুখী চরিত্রের লোকের পাপ।
৬৩৬. অনুচ্ছেদঃ অনিষ্টের ভয়ে যাকে পরিহার করা হয় সে নিকৃষ্ট।
৬৩৭. অনুচ্ছেদঃ লজ্জাশীলতা।
৬৩৮. অনুচ্ছেদঃ যুলুম-নির্যাতন।
৬৩৯. অনুচ্ছেদঃ তোমার লজ্জা-শরম না থাকলে যাচ্ছে তাই করিতে পারো।
৬৪০. অনুচ্ছেদঃ ক্রোধ।
৬৪১. অনুচ্ছেদঃ ক্রোধের সময় কি বলবে?
৬৪২. অনুচ্ছেদঃ কারো রাগ উঠলে চুপ হয়ে যাবে।
৬৪৩. অনুচ্ছেদঃ বন্ধুর সার্থে ভালোবাসার আতিশয্য দেখাবে না।
৬৪৪. অনুচ্ছেদঃ তোমার ঘৃণা যেন ধ্বংসের কারণ না হয়।
৬২১. অনুচ্ছেদঃ মনের মধ্যে সৃষ্ট কুমন্ত্রণা।
১২৯৬. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
সাহাবীগণ বলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ! আমাদের মনের মধ্যে এমন কিছু চিন্তার উদ্রেক হয় যা সূর্য উদিত হওয়ার পরিধির মধ্যকার [মূল্যবান] সবকিছুর বিনিময়েও কথায় প্রকাশ করা আমরা মোটেও সমীচীন মনে করি না। তিনি জিজ্ঞেস করেনঃ তোমরা কি তা অনুভব করো? তারা বলেন, হাঁ। তিনি বলেনঃ এটিই ঈমানের সুস্পষ্ট পরিচয়।
[মুসলিম, আবু দাউদ, ইবনি হিব্বান]কুমন্ত্রনা, কুধারনা ও বাচালতা হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১২৯৭. শাহর ইবনি হাওশাব [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
আমি ও আমার মামা আয়শা [রাঃআঃ]-র নিকট উপস্থিত হলাম। মামা বলেন, আমাদের কারো মনের মধ্যে এমন কিছুর উদ্রেক হয়, সে তা ব্যক্ত করলে তার আখেরাত ধ্বংস হয়ে যায় এবং তা প্রকাশ পেলে সেজন্য তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হইবে। রাবী বলেন, আয়েশা [রাঃআঃ] তিনবার “আল্লাহু আকবার” ধ্বনি করার পর বলেন, এই বিষয়ে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল। তিনি বলেছেনঃ তোমাদের কারো অন্তরে তা অনুভব করলে সে তিনবার ‘আল্লাহু আকবার’ বলবে। মুমিন ব্যক্তিই এটা অনুভব করে থাকে।
কুমন্ত্রনা, কুধারনা ও বাচালতা হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১২৯৮. আনাস ইবনি মালেক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যা হয়নি সে সম্পর্কে লোকে অনবরত জিজ্ঞেস করিতে থাকিবে। শেষে সে বলবে, সবকিছুর সৃষ্টিকর্তা হলেন আল্লাহ। তবে আল্লাহকে কে সৃষ্টি করেছে?
[বোখারী, মুসলিম] , কুমন্ত্রনা, কুধারনা ও বাচালতা হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৬২২. অনুচ্ছেদঃ অলীক ধারণা-অনুমান।
১২৯৯. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ ধারণা-অনুমান সম্পর্কে তোমরা সাবধান হও। কারণ অলীক ধারণা পোষণ সবচেয়ে বড় মিথ্যা। তোমরা পরস্পর গোয়েন্দাগিরি করো নাসায়ী, ঝগড়া-বিবাদ করো নাসায়ী, অসাক্ষাতে দোষচর্চা করো নাসায়ী, হিংসা ও ঘৃণা-বিদ্বেষ পোষণ করো না। আল্লাহর বান্দাগণ! সকলে ভাই ভাই হয়ে যাও।
[বোখারী, মুসলিম, তিরমিজী, ইবনি মাজাহ, আহমাদ, ইবনি হিব্বান] ;কুমন্ত্রনা, কুধারনা ও বাচালতা হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৩০০. আনাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
একদা নাবী [সাঃআঃ] তাহাঁর কোন এক স্ত্রীর সাথে ছিলেন। তখন তাহাঁর নিকট দিয়ে এক ব্যক্তি অতিক্রম করলো। নাবী [সাঃআঃ] তাকে ডেকে বলেনঃ হে অমুক! ইনি আমার স্ত্রী অমুক। সে বললো, আমি হয়তো কারো সম্পর্কে ধারণা-অনুমান করিতে পারি, কিন্তু আপনার সম্পর্কে কখনো ধারণা-অনুমানে লিপ্ত হই না। তিনি বলেনঃ শয়তান রক্তপ্রবাহের মত মানুষের ভেতরে বিচরণ করে।
[আবু দাউদ];কুমন্ত্রনা, কুধারনা ও বাচালতা হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৩০১. আবদুল্লাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
যার জিনিস চুরি হয়ে যায় সে ধারণা-অনুমান করিতে করিতে চোরের চেয়েও অগ্রসর হয়ে যায়।
কুমন্ত্রনা, কুধারনা ও বাচালতা হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৩০২. বিলাল ইবনি সাদ আল-আশআরী [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
মুআবিয়া [রাঃআঃ] আবু দারদা [রাঃআঃ]-কে লিখে পাঠানঃ দামিশকের দুষ্কৃতিকারীদের সম্পর্কে আমাকে লিখে পাঠান। তিনি বলেন, আমার সাথে দামিশকের দুষ্কৃতিকারীদের কি সম্পর্ক? আর আমি কোথায় বা তাহাদের চিনবো? তার পুত্র বিলাল বলেন, আমি তাহাদের সম্পর্কে লিখবো । অতএব তিনি তাহাদের তালিকা তৈরি করেন। আবু দারদা [রাঃআঃ] জিজ্ঞেস করেন, কোথা থেকে তুমি জানতে পারলে? তুমি তাহাদের অন্তর্ভুক্ত হলেই কেবল দুষ্কৃতিকারী সম্পর্কে জানতে পারবে। অতএব তোমার নামটি দিয়ে [তালিকা] শুরু করো। তিনি তাহাদের নাম কখনো পাঠাননি।
কুমন্ত্রনা, কুধারনা ও বাচালতা হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল মাওকুফ
৬২৩. অনুচ্ছেদঃ ক্রীতদাসী বা স্ত্রী তার স্বামীর মাথার চুল কামাতে পারে।
১৩০৩. সুকাইন ইবনি আবদুল আযীয ইবনি কায়েস [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, আমি আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাঃআঃ]-র নিকট উপস্থিত হলাম। তখন এক বাঁদী চুল কামাচ্ছিল। তিনি বলেন, চুল চামড়াকে নরম করে।
[তাবারানি]; কুমন্ত্রনা, কুধারনা ও বাচালতা হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৬২৪. অনুচ্ছেদঃ বগলের লোম উপড়ানো।
১৩০৪. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ স্বভাব সুলভ জিনিস পাঁচটি। খতনা করা, নাভীর নিচের লোম কামানো, বগলের লোম উপড়ানো, গোঁফ খাটো করা এবং নখ কাটা।
[বোখারী, নাসায়ী, তিরমিজী]’; কুমন্ত্রনা, কুধারনা ও বাচালতা হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৩০৫. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ পাঁচটি জিনিস স্বভাব সুলভ। খতনা করা, নাভির নিচের লোম কামানো, নখ কাটা, বগলের নিচের লোম উপড়ানো এবং গোঁফ খাটো করা।
কুমন্ত্রনা, কুধারনা ও বাচালতা হাদিস এর তাহকিকঃ অন্যান্য
১৩০৬. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
পাঁচটি জিনিস স্বভাব সুলভ। নখ কাটা, গোঁফ খাটো করা, বগলের লোম উপড়ানো, নাভীর নিচের লোম কামানো এবং খতনা করা। –
[তাহাবী], কুমন্ত্রনা, কুধারনা ও বাচালতা হাদিস এর তাহকিকঃ অন্যান্য
৬২৫. অনুচ্ছেদঃ উত্তম ব্যবহার।
১৩০৭. আবুত তুফাইল [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
আমি বাল্যকালে জিরানা নামক স্থানে নাবী [সাঃআঃ]-কে গোশত বণ্টন করিতে দেখেছি। আমি উটের এক এক টুকরা গোশত বহন করে আনতাম। এই অবস্থায় তাহাঁর নিকট এক মহিলা আসেন। তিনি তার জন্য নিজের চাদরখানা লেছে দেন। আমি জিজ্ঞেস করলাম, ইনি কে? বলা হলো, ইনি নাবী [সাঃআঃ]-এর দুধমাতা।
[আবু দাউদ, হাকিম], কুমন্ত্রনা, কুধারনা ও বাচালতা হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৬২৬. অনুচ্ছেদঃ আলাপ-পরিচয়।
১৩০৮. মুগীরা ইবনি শোবা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
এক ব্যক্তি বললো, আল্লাহ আমীরের অবস্থা সংশোধন করুন। আপনার দ্বাররক্ষী সাক্ষাতপ্রার্থী কতক লোককে চিনে এবং সে তাহাদের অগ্রাধিকার দেয়। আমীর জবাব দেন, আল্লাহ তাকে ক্ষমা করুন। পূর্ব-পরিচয় তো হিংস্র কুকুর ও খ্যাপা উটের সামনেও উপকারী প্রমাণিত হয়।
কুমন্ত্রনা, কুধারনা ও বাচালতা হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল মাওকুফ
৬২৭. অনুচ্ছেদঃ শিশুদের আখরোট দিয়ে খেলা করা।
১৩০৯. ইবরাহীম [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
আমাদের মুরববীগণ আমাদেরকে কুকুরের খেলা ব্যতীত যে কোন খেলাধুলা করার অনুমতি দিতেন। ঈমাম বোখারী [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, অর্থাৎ শিশুদেরকে।
কুমন্ত্রনা, কুধারনা ও বাচালতা হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ মাকতু
১৩১০. আবু উকবা [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
একবার আমি ইবনি উমার [রাঃআঃ]-র সাথে রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলাম। তিনি কতক আবিসিনীয় বালককে অতিক্রম করিলেন, যাদের তিনি খেলাধুলায় মত্ত দেখলেন। তিনি দুটি দিরহাম [রূপার মুদ্রা] বের করে তাহাদের দিলেন।
কুমন্ত্রনা, কুধারনা ও বাচালতা হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল মাওকুফ
১৩১১. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
নাবী [সাঃআঃ] আমার খেলার সাথীদের আমার নিকট পাঠিয়ে দিতেন। তারা খেলনা অর্থাৎ ক্ষুদ্র পুতুল নিয়ে খেলতো।
[বোখারী, মুসলিম], কুমন্ত্রনা, কুধারনা ও বাচালতা হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৬২৮. অনুচ্ছেদঃ কবুতর যবেহ করা।
১৩১২. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এক ব্যক্তিকে একটি কবুতরের পিছু ধাওয়া করিতে দেখলেন। তিনি বলেনঃ এক শয়তান আরেক শয়তানের পিছে লেগেছে।
[আবু দাউদ, ইবনি মাজাহ, মুসনাদ আহমাদ] কুমন্ত্রনা, কুধারনা ও বাচালতা হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান সহীহ
১৩১৩. হাসান [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
উসমান [রাঃআঃ] জুমুআর নামাযের খুতবা দিলেই তাতে কুকুর হত্যা করার এবং কবুতর যবেহ করার নির্দেশ দিতেন
[মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক]। কুমন্ত্রনা, কুধারনা ও বাচালতা হাদিস এর তাহকিকঃ অন্যান্য
১৩১৪. হাসান [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
আমি উসমান [রাঃআঃ]-কে তাহাঁর ভাষণে কুকুর নিধনের এবং কবুতর যবেহ করার নির্দেশ দিতে শুনিয়াছি।
[মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক], মন্ত্রনা, কুধারনা ও বাচালতা হাদিস এর তাহকিকঃ অন্যান্য
৬২৯. অনুচ্ছেদঃ যার প্রয়োজন আছে সে-ই যাবে।
১৩১৫. যায়েদ ইবনি সাবিত [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
একদিন উমার ইবনুল খাত্তাব [রাঃআঃ] তার নিকট এসে [ঘরে প্রবেশের] অনুমতি চান। তিনি তাকে অনুমতি দিলেন। তখন তার মাথা তার বাঁদীর হাতে ছিল এবং সে তাতে চিরুনী করছিল। তিনি তার মাথা সরিয়ে নিলেন। উমার [রাঃআঃ] তাকে বলেন, তাকে অপনার মাথায় চিরুনী করিতে দিন। তিনি বলেন, হে আমীরুল মুমিনীন! আপনি লোক পাঠালে আমিই তো আপনার নিকট যেতে পারতাম। উমার [রাঃআঃ] বলেন, প্রয়োজনটা তো আমার।
[বায়হাকীর সুনানুল কুবরা] কুমন্ত্রনা, কুধারনা ও বাচালতা হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান হাদিস
৬৩০. অনুচ্ছেদঃ জনসমাবেশের ভেতরে থুথু ফেলার নিয়ম।
১৩১৬. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
কেউ লোকজনের মধ্যে [অবস্থানকালে] থুথু ফেললে তা হাত দিয়ে আড়াল করে রাখবে, যাবত না তা মাটিতে পতিত হয়। কেউ রোযা রাখলে যেন [দেহে] তৈল মাখে, যাতে তার চেহারায় রোযার আলামত না দেখা যায়।
কুমন্ত্রনা, কুধারনা ও বাচালতা হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল মাওকুফ
৬৩১. অনুচ্ছেদঃ কোন ব্যক্তি একদল লোকের সাথে কথা বলার সময় একজনকে লক্ষ্য করে বলবে না।
১৩১৭. হাবীব ইবনি আবু সাবিত [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
তারা [সাহাবীগণ] এটাই পছন্দ করিতেন যে, কোন ব্যক্তি কথা বললে কেবল একজনের সামনাসামনি হয়ে কথা বলবে নাসায়ী, বরং সকলকে সম্বোধন করিবে।
কুমন্ত্রনা, কুধারনা ও বাচালতা হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান মাকতু
৬৩২. অনুচ্ছেদঃ অবাঞ্ছিত দৃষ্টিপাত।
১৩১৮. ইবনি আবুল হুযাইল [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
আবদুল্লাহ [রাঃআঃ] তার সাথীদের একজনকে সাথে নিয়ে এক অসুস্থ ব্যক্তিকে দেখিতে যান। তিনি ঘরের মধ্যে প্রবেশ করলে তার সাথের লোকটি এদিকে ওদিকে তাকাতে থাকে। আবদুল্লাহ [রাঃআঃ] তাকে বলেন, আল্লাহর শপথ! যদি তোমার চোখ দুটি ফুঁড়ে দেয়া হতো তবে তা তোমার জন্য কল্যাণকর হতো।
কুমন্ত্রনা, কুধারনা ও বাচালতা হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান মাওকুফ
১৩১৯. নাফে [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
ইরাকবাসী একদল লোক ইবনি উমার [রাঃআঃ]-র নিকট উপস্থিত হয়। তারা তাহাদের এক খাদেমের নিকট একটি সোনার বেড়ি দেখিতে পেলো। তাতে তারা পরস্পরের প্রতি তাকালো। ইবনি উমার [রাঃআঃ] বলেন, খারাপ কাজের জন্য তোমাদের কি ধুর্তামি।
কুমন্ত্রনা, কুধারনা ও বাচালতা হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৬৩৩. অনুচ্ছেদঃ অনর্থক কথাবার্তা।
১৩২০, আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
অনৰ্থক কথাবার্তায় কোন কল্যাণ নাই।
কুমন্ত্রনা, কুধারনা ও বাচালতা হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল মাওকুফ
১৩২১. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ আমার উম্মাতের নিকৃষ্ট লোক হলো যারা বাচাল, ধৃষ্ট-নির্লজ্জ এবং অহংকারে স্ফীত। আর আমার উম্মাতের উত্তম হলো তাহাদের মধ্যকার উত্তম চরিত্রের লোক।
[তিরমিজী, আহমাদ] ,কুমন্ত্রনা, কুধারনা ও বাচালতা হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৬৩৪. অনুচ্ছেদঃ দ্বিমুখী চরিত্রের লোক।
১৩২২. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ দ্বিমুখী চরিত্রের লোক মানুষের মধ্যে সর্বাধিক নিকৃষ্ট। সে এদের নিকট এক রূপ নিয়ে এবং ওদের নিকট ভিন্ন রূপ নিয়ে আবির্ভূত হয়।
[বোখারী, মুসলিম, মুসনাদ আবু আওয়ানাসায়ী, ইবনি হিব্বান] ,কুমন্ত্রনা, কুধারনা ও বাচালতা হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৬৩৫. অনুচ্ছেদঃ দ্বিমুখী চরিত্রের লোকের পাপ।
১৩২৩. আম্মার ইবনি ইয়াসির [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
আমি নাবী [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছিঃ যে ব্যক্তি দুনিয়াতে দ্বিমুখী চরিত্রের, কিয়ামতের দিন তার আগুনের দুইটি মুখ হইবে। এ সময় এক স্থূলকায় ব্যক্তি সেখান দিয়ে গেলে তিনি বলেনঃ এই ব্যক্তি তাহাদের অন্তর্ভুক্ত।
[আবু দাউদ, দারিমি, ইবনি হিব্বান] ,কুমন্ত্রনা, কুধারনা ও বাচালতা হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান হাদিস
৬৩৬. অনুচ্ছেদঃ অনিষ্টের ভয়ে যাকে পরিহার করা হয় সে নিকৃষ্ট।
১৩২৪. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
এক ব্যক্তি নাবী [সাঃআঃ]-এর সাক্ষাত প্রার্থনা করলো। তিনি বলেনঃ তাকে অনুমতি দাও, বংশের নিকৃষ্ট লোক। সে প্রবেশ করলে তিনি তার সাথে নম্র ব্যবহার করেন। আমি বললাম, ইয়া রসূলাল্লাহ! আপনি যা মন্তব্য করার তো করিলেন, অতঃপর নম্র ভাষায় কথা বলিলেন। তিনি বলেনঃ হে আয়েশা! যার অনিষ্ট থেকে আত্মরক্ষার জন্য মানুষ তাকে ত্যাগ করে, সে নিকৃষ্ট লোক।
[বোখারী, মুসলিম] কুমন্ত্রনা, কুধারনা ও বাচালতা হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৬৩৭. অনুচ্ছেদঃ লজ্জাশীলতা।
১৩২৫. ইমরান ইবনি হুসাইন [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ লজ্জাশীলতা কল্যাণই বয়ে আনে। বাশীর ইবনি কাব [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, প্রজ্ঞাপূর্ণ কথার মধ্যে লিপিবদ্ধ আছে, লজ্জাশীলতার মধ্যে রহিয়াছে গাম্ভীর্য, লজ্জাশীলতার মধ্যে রহিয়াছে প্রশান্তি। ইমরান [রাঃআঃ] তাকে বলেন, আমি তোমাকে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] থেকে হাদিস শুনাচ্ছি। আর তুমি তোমার কিতাব থেকে বর্ণনা করছে।
[বোখারী, মুসলিম, তাবারানি]। কুমন্ত্রনা, কুধারনা ও বাচালতা হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৩২৬. ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
লজ্জাশীলতা ও ঈমান সম্পূর্ণ একই প্রকৃতির। এদের একটি তুলে নেয়া হলে অপরটি দূরীভূত হয়ে যায়।
[হাকিম] কুমন্ত্রনা, কুধারনা ও বাচালতা হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৬৩৮. অনুচ্ছেদঃ যুলুম-নির্যাতন।
১৩২৭. আবু বাকরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ লজ্জা-সম্ভ্রম ঈমানের অংগ, আর ঈমানের [মুমিনের] স্থান বেহেশতে। নির্লজ্জতা ও অসভ্যতা যুলুমের অংগ, আর যুলুমের [যালেমের] স্থান হলো দোযখে
। [তিরমিজী, ইবনি মাজাহ, তাহাবী, হাকিম, হিব্বান] কুমন্ত্রনা, কুধারনা ও বাচালতা হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৩২৮. মুহাম্মাদ ইবনি আলী ইবনুল হানাফিয়্যা [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
নাবী [সাঃআঃ] ছিলেন হৃষ্টপুষ্ট মাথাবিশিষ্ট এবং ডাগর চোখবিশিষ্ট। তিনি সামনের দিকে ঝুঁকে হাটতেন, যেন তিনি উচ্চ স্থানে আরোহণ করছেন। তিনি কারো প্রতি দৃষ্টিপাত করলে পূর্ণদেহে সেদিকে ফিরতেন।
[আহমাদ হা/৬৮৪, তিরমিজী, মুসান্নাফ ইবনি শায়বাহ], কুমন্ত্রনা, কুধারনা ও বাচালতা হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান হাদিস
৬৩৯. অনুচ্ছেদঃ তোমার লজ্জা-শরম না থাকলে যাচ্ছে তাই করিতে পারো।
১৩২৯. আবু মাসউদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ পূর্বকালের নাবীগণের বাণীসমূহের মধ্যে মানুষ যেটি লাভ করেছে তা হলো, “তোমার যদি লজ্জাই না থাকে তাহলে তুমি যা ইচ্ছা তাই করিতে পারো”।
[বোখারী ],কুমন্ত্রনা, কুধারনা ও বাচালতা হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৬৪০. অনুচ্ছেদঃ ক্রোধ।
১৩৩০. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
বাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ প্রকৃত বলবান বীর পুরুষ সে নয় যে কুস্তিতে কাউকে ধরাশায়ী করে। আসল বীরপুরুষ হলো সেই ব্যক্তি যে ক্রোধের সময় নিজেকে সংবরণ করিতে পারে।
[বোখারী, মুসলিম, আবু দাউদ, আহমাদ, আবু আওয়া নাসায়ী], কুমন্ত্রনা, কুধারনা ও বাচালতা হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৩৩১. ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
কোন বান্দা আল্লাহর সন্তোষ লাভের বাসনায় তার ক্রোধের ঢোক গলাধঃকরণ [সংবরণ] করলে, আল্লাহর নিকট সওয়াবের দিক থেকে তার চেয়ে অধিক মর্যাদাপূর্ণ কোন ঢোক নাই।
[আহমাদ] .কুমন্ত্রনা, কুধারনা ও বাচালতা হাদিস এর তাহকিকঃ অন্যান্য
৬৪১. অনুচ্ছেদঃ ক্রোধের সময় কি বলবে?
১৩৩২. সুলায়মান ইবনি সুরাদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
দুই ব্যক্তি নাবী [সাঃআঃ]-এর সামনে পরস্পর গালিগালাজ করে। তাতে তাহাদের একজন ক্রোধান্বিত হওয়ায় তার মুখমণ্ডল রক্তিম বর্ণ ধারণ করে। নাবী [সাঃআঃ] তার দিকে দৃষ্টিপাত করে বলেনঃ আমি অবশ্যই এমন একটি বাক্য জানি যা সে বললে নিশ্চয় তার এই রাগ চলে যাবে। তা হলোঃ
أَعُوذُ بِاللَّهِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيمِ
“আউযু বিল্লাহি মিনাশ শাইতানির রাজীম” [আমি অভিশপ্ত শয়তান থেকে আল্লাহর আশ্রয় চাই]।
তখন এক ব্যক্তি উঠে ঐ লোকটির নিকট গিয়ে বললো, তুমি কি জানো, নাবী [সাঃআঃ] কী বলেছেন? তিনি বলেছেনঃ তুমি বলো,
أَعُوذُ بِاللَّهِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيمِ
“আউযু বিল্লাহি মিনাশ শাইতানির রাজীম”।
লোকটি বললো, তুমি কি আমাকে পাগল ঠাওরিয়েছো!
কুমন্ত্রনা, কুধারনা ও বাচালতা হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৩৩৩. সুলায়মান ইবনি সুরাদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
আমি নাবী [সাঃআঃ]-এর সাথে বসা ছিলাম। দুই ব্যক্তি পরস্পরকে গালি দিতে লাগলো। তাতে তাহাদের একজনের চেহারা রক্তিম বর্ণ ধারণ করলো এবং তার শিরা-উপশিরা ফুলে গেলো। নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ অবশ্যই আমি এমন একটি কথা জানি, সে তা উচ্চারণ করলে নিশ্চয় তার রাগ চলে যাবে। লোকজন ঐ লোকটিকে বললো, নিশ্চয় নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তুমি বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করো। সে বললো, আমি কি পাগল হয়ে গেছি। [
বোখারী, মুসলিম], কুমন্ত্রনা, কুধারনা ও বাচালতা হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৬৪২. অনুচ্ছেদঃ কারো রাগ উঠলে চুপ হয়ে যাবে।
১৩৩৪. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমরা জ্ঞান দান করো এবং দীনকে সহজভাবে তুলে ধরো। তোমরা জ্ঞান দান করো এবং দীনকে সহজভাবে তুলে ধরো। তিনি একথা তিনবার বলেন। তুমি ক্রোধান্বিত হলে নীরবতা অবলম্বন করো। কথাটি তিনি দুইবার বলেন।
[আহমাদ, তায়ালিসী, কুমন্ত্রনা, কুধারনা ও বাচালতা হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৬৪৩. অনুচ্ছেদঃ বন্ধুর সার্থে ভালোবাসার আতিশয্য দেখাবে না।
১৩৩৫. আলী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
আলী [রাঃআঃ] ইবনুল কাওয়াকে বলেন, তুমি কি জানো, প্রথম ব্যক্তি কি বলেছেন? তোমার বন্ধুকে সংগত সীমা পর্যন্ত ভালোবাসো। অসম্ভব নয় যে, সে একদিন তোমার শক্র হয়ে যেতে পারে। তোমার শত্রুর সাথে তোমার শত্রুতাকে সীমিত রাখো। অসম্ভব নয় যে, সে একদিন তোমার বন্ধু হয়ে যেতে পারে।
[তিরমিজী হা/১৯৪৭], কুমন্ত্রনা, কুধারনা ও বাচালতা হাদিস এর তাহকিকঃ নির্ণীত নয়
৬৪৪. অনুচ্ছেদঃ তোমার ঘৃণা যেন ধ্বংসের কারণ না হয়।
১৩৩৬. যায়েদ ইবনি আসলাম [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
উমার ইবনুল খাত্তাব [রাঃআঃ] বলেন, তোমার ভালোবাসা যেন কৃত্রিম না হয় এবং তোমার ঘৃণা যেন ধ্বংসকামী না হয়। আমি [রাবী] বললাম, তা কিভাবে হইতে পারে? তিনি বলেন, তুমি যখন ভালোবাসো তখন শিশুর মত হয়ে যাও এবং যখন তুমি ঘৃণা করো তখন তোমার সাথীর [প্রতিপক্ষের] ধ্বংস কামনা করো [এরূপ যেন না হয়]।
[মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক] , কুমন্ত্রনা, কুধারনা ও বাচালতা হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
Leave a Reply