৫ ওয়াক্ত নামাজে উচ্চস্বরে ও নিম্নস্বরে কিরাত পাঠ
কিরাত পাঠ মনোযোগ দিয়ে শুনতে হইবে >> সহীহ মুসলিম শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন >> নিম্নে মুসলিম শরীফ এর একটি অধ্যায়ের হাদিস পড়ুন
৫ ওয়াক্ত নামাজে উচ্চস্বরে ও নিম্নস্বরে কিরাত পাঠ
৩১. অধ্যায়ঃ সলাতে মধ্যম আওয়াজে কিরাআত পাঠ করিবে, যদি সশব্দে কিরাআত পাঠ করাতে অবাঞ্ছিত কিছু বিপদের সম্ভাবনা থাকে
৩২.অধ্যায়ঃ কিরাআত পাঠ মনোযোগ দিয়ে শুনতে হইবে
৩৩.অধ্যায়ঃ ফাজরের সলাতে উচ্চৈঃস্বরে কিরাআত পড়া এবং জিনদের সামনে কিরাআত পড়া
৩৪.অধ্যায়ঃ যুহ্র ও আস্র-এর নামাজের কিরাআত
৩৫. অধ্যায়ঃ ফাজরের নামাজের কিরাআত
৩৬. অধ্যায়ঃ ইশার নামাজের কিরাআত
৩৭. অধ্যায়ঃ ঈমামদেরকে সংক্ষেপে পূর্ণাঙ্গ নামাজ আদায় করানোর নির্দেশ
৩৮. অধ্যায়ঃ নামাজের রুকনগুলো সঠিকভাবে আদায় করা এবং সংক্ষেপে পূর্ণাঙ্গরূপে নামাজ আদায় করা
৩২.অধ্যায়ঃ কিরাত পাঠ মনোযোগ দিয়ে শুনতে হইবে
৮৯০. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
মহান আল্লাহর বাণী-“তাড়াতাড়ি শিখে নেয়ার জন্য আপনি দ্রুত ওয়াহী আবৃত্তি করবেন না”- [সূরাহ আল কিয়ামাহ্ ৭৫ : ১৬]। তিনি এর ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে বলেন, জিবরীল [আঃ] যখন নবী [সাঃআঃ] -এর কাছে ওয়াহী অবতীর্ণ করিতেন তিনি তা আয়ত্ত করার জন্য জিহ্বা ও ঠোঁট নাড়তেন। এটা তাহাঁর জন্য খুবই কষ্টকর হয়ে পড়ত। তাহাঁর অবস্থা থেকেই এটা বুঝা যেত। এর পরিপ্রেক্ষিতে আল্লাহ তাআলা অবতীর্ণ করিলেন: “এ ওয়াহী খুব তাড়াতাড়ি মুখস্থ করার জন্য নিজের জিহ্বা নাড়াবেন না। এটা মুখস্থ করিয়ে দেয়া ও পড়িয়ে দেয়া আমারই দায়িত্ব”- [সূরাহ আল কিয়ামাহ্ ৭৫ : ১৬-১৭]। অর্থাৎ- এটা তোমার অন্তরে পুঞ্জিভূত করে দেয়া এবং তোমাকে পড়িয়ে দেয়া আমার দায়িত্ব। “অতএব আমি যখন তা পাঠ করিতে থাকি তখন তুমি তা মনোযোগ দিয়ে শুনতে থাকো”- [সূরাহ আল কিয়ামাহ্ ৭৫ : ১৮]। অর্থাৎ- এ ওয়াহী আমি অবতীর্ণ করছি, তুমি তা মনোযোগ সহকারে শুন। এর তাৎপর্য বুঝিয়ে দেয়া আমাদেরই দায়িত্ব। “তোমার মুখ দিয়ে তা বলানো আমার দায়িত্ব”- [সূরাহ আল কিয়ামাহ্ ৭৫ : ১৯]। এরপর থেকে যখন জিবরীল [আঃ] তাহাঁর কাছে ওয়াহী নিয়ে আসতেন, তিনি মনোযোগ সহকারে তা শুনতেন। তিনি চলে যাওয়ার পর মহান আল্লাহর ওয়াদা অনুযায়ী নবী [সাঃআঃ] তা পাঠ করিতেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৮৮৬, ইসলামিক সেন্টার- ৮৯৯]
৮৯১. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
মহান আল্লাহর বাণীঃ “এ ওয়াহী তাড়াহুড়া করে মুখস্থ করার জন্য নিজের জিহ্বা নাড়াবেন না”- [সূরাহ আল কিয়ামাহ্ ৭৫ : ১৬]। তিনি এ আয়াতের ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে বলেন, ওয়াহী নাযিল হওয়াকালীন সময়ে নবী [সাঃআঃ] খুব কঠিন অবস্থার সম্মুখীন হইতেন। তিনি তা আয়ত্ত করার জন্য নিজের ঠোঁটদ্বয় নাড়তেন। সাঈদ ইবনি যুবায়র [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, ইবনি আব্বাস [রাদি.] আমাকে বলিলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যেভাবে তাহাঁর ঠোঁট নাড়তেন- আমি তোমাকে তেমন করে দেখাচ্ছি। অতঃপর তিনি {ইবনি আব্বাস [রাদি.} তাহাঁর ঠোঁট নাড়ালেন। সাঈদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, ইবনি আব্বাস [রাদি.] যেভাবে ঠোঁট নেড়েছেন আমিও তেমন করে দেখাচ্ছি। অতঃপর তিনি {সাঈদ [রাহ্ঃ] } নিজের ঠোঁট নাড়লেন, মহান আল্লাহ নাযিল করিলেন:“এ ওয়াহী তাড়াহুড়া করে মুখস্থ করার জন্য বারবার নিজের জিহ্বা নাড়িও না। এটা মুখস্থ করিয়ে দেয়া ও পড়িয়ে দেয়ার দায়িত্ব আমার”- [সূরাহ আল কিয়ামাহ্ ৭৫ : ১৬-১৭]। অর্থাৎ- তোমার অন্তরে তা গেঁথে দেয়া এবং তোমার মুখে তা পাঠ করিয়ে দেয়া আমার দায়িত্ব।- [আল কিয়ামাহ ৭৫ : ১৮]। তুমি তা মনোযোগ দিয়ে শুনতে থাকো ও চুপচাপ থাকো। এরপর তা তোমার মুখ দিয়ে পড়িয়ে দেয়া আমার দায়িত্ব।” এরপর থেকে জিবরীল [আঃ] ওয়াহী নিয়ে আসলে তিনি তা মনোযোগ দিয়ে শুনতেন। জিবরীল [আঃ] চলে যাওয়ার পর নবী [সাঃআঃ] তার পাঠ হুবহু পড়তেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৮৮৭, ইসলামিক সেন্টার- ৯০০]
৩৩.অধ্যায়ঃ ফাজরের সলাতে উচ্চৈঃস্বরে কিরাত পাঠ এবং জিনদের সামনে কিরাআত পড়া
৮৯২. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] জিনদের নিকট কুরআন তিলাওয়াত করেননি এবং তিনি তাদের দেখেননি। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর একদল সহাবাকে নিয়ে উকায বাজারের উদ্দেশ্যে রওনা হলেন। এ সময় আকাশমণ্ডলী থেকে তথ্য সংগ্রহকারী শাইতানদের জন্য আকাশমণ্ডলীর সংবাদ শোনা বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল এবং তাদের উপর উল্কা [জ্বলন্ত আগুনের টুকরা] নিক্ষেপ করা হচ্ছিল। শয়তানেরা তাদের সম্প্রদায়ের কাছে ফিরে আসলে তারা জিজ্ঞেস করিল, তোমাদের কি হয়েছে? তারা বলিল, ঊর্ধ্বলোকের তথ্য ও আমাদের মাঝে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়েছে এবং আমাদের উপর উল্কা নিক্ষেপ করা হয়েছে। সম্প্রদায়ের লোকেরা বলিল, এর কারণ হচ্ছে- নিশ্চয়ই নতুন কিছু ঘটছে। পূর্ব থেকে পশ্চিম পর্যন্ত সমগ্র পৃথিবী বিচরণ করে দেখো তোমাদের মাঝে ও আসমানের খবরাদির মাঝে কোন জিনিস প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারা দলে দলে পূর্ব থেকে পশ্চিম পর্যন্ত সমগ্র পৃথিবী ঘুরে এর কারণ উদঘাটন করার জন্য বেরিয়ে পড়ল। এদের মধ্যে একদল তিহামাহ্ প্রদেশের পথ ধরে উকায বাজারের উদ্দেশ্যে বের হলো। এ সময় নবী [সাঃআঃ] নাখলাহ্ নামক স্থানে তাহাঁর সহাবাদের নিয়ে ফাজরের নামাজ আদায় করছিলেন। তারা যখন কুরআন পড়া শুনতে পেল, খুব মনোযোগ দিয়ে শুনল। অতঃপর তারা বলিল, আমাদের ও আসমানের খবরাদির মাঝেখানে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হওয়ার এটাই একমাত্র কারণ। তারা নিজেদের সম্প্রদায়ের কাছে ফিরে গিয়ে বলিল,
إِنَّا سَمِعْنَا قُرْآنًا عَجَبًا * يَهْدِي إِلَى الرُّشْدِ فَآمَنَّا بِهِ وَلَنْ نُشْرِكَ بِرَبِّنَا أَحَدًا
হে আমাদের জাতির লোকেরা! “ আমরা এক অতীব আশ্চর্যজনক পাঠ [কুরআন] শুনেছি। তা কল্যাণের পথের দিকে হিদায়াত দান করে। এজন্য আমরা এর উপর ঈমান এনেছি। আমরা আর কখনো আমাদের প্রতিপালকের সাথে কাউকে শারীক করব না”- [সূরাহ জিন ৭২ : ১-২]। এ ঘটনার পর আল্লাহ তাআলা তাহাঁর নবী মুহাম্মাদ [সাঃআঃ] -এর উপর ওয়াহী অবতীর্ণ করে বললেনঃ “ বলো আমাকে ওয়াহীর মাধ্যমে অবগত করা হয়েছে যে, জিনদের একটি দল মনোযোগ সহকারে [কুরআন] শুনেছে …..”- [সূরাহ জিন্ ৭২:১] নাযিল করিলেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৮৮৮, ইসলামিক সেন্টার- ৯০১]
৮৯৩. আমির [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
আমি আলকামাকে প্রশ্ন করলাম, জিনদের সাথে সাক্ষাতের রাতে ইবনি মাসউদ [রাদি.] কি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর সাথে ছিলেন? রাবী বলেন, আলকামাহ [রাদি.] বলিলেন, আমি ইবনি মাসউদ [রাদি.] -কে জিজ্ঞেস করলাম, জিনদের সাথে সাক্ষাতের রাতে আপনাদের মধ্যে কেউ কি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর সাথে ছিলেন? তিনি উত্তরে বললেনঃ না, তবে আমরা এক রাতে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর সাথে ছিলাম। আমরা তাঁকে হারিয়ে ফেললাম। আমরা পাহাড়ের উপত্যকায় ও গিরিপথে তাঁকে খুঁজলাম কিন্তু পেলাম না। আমরা মনে করলাম, হয় জিনেরা তাঁকে উড়িয়ে নিয়ে গেছে অথবা কেউ তাঁকে গোপনে মেরে ফেলেছে। রাবী {ইবনি মাসউদ [রাদি.] } বলেন, এ রাতটি আমাদের জন্য এতই দুর্ভাগ্যজনক ছিল যে, মনে হয় কোন জাতির উপর এমন রাত আসেনি। যখন ভোর হলো, আমরা তাঁকে হেরা পর্বতের দিক থেকে আসতে দেখলাম। আমরা বললাম, হে আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] ! আমরা আপনাকে হারিয়ে ফেললাম এবং অনেক খোঁজাখুঁজি করেও আপনার কোন সন্ধান পেলাম না। তাই সারারাত আমরা চরম দুশ্চিন্তায় কাটিয়েছি।মনে হয় এরূপ দুর্ভাগ্যজনক রাত কোন জাতির উপর আসেনি। তিনি বলেনঃ জিনদের পক্ষ থেকে এক আহ্বানকারী আমাকে নিতে আসে। আমি তার সাথে গেলাম এবং তাদেরকে কুরআন পাঠ করে শুনালাম। রাবী [ইবনি মাসউদ [রাদি.] ] বলেন, তিনি আমাদেরকে সাথে করে নিয়ে গিয়ে তাদের বিভিন্ন নিদর্শন ও আগুনের চিহ্ন দেখালেন। তারা তাহাঁর কাছে খাদ্যের জন্য প্রার্থনা করিল। তিনি বলিলেন, যে জন্তু আল্লাহর নামে যবেহ করা হয়েছে তার হাড় তোমাদের খাদ্য। তোমাদের হাতের স্পর্শে তা পুনরায় গোশতে পরিপূর্ণ হয়ে যাবে। উটের বিষ্ঠা তোমাদের পশুর খাদ্য।
অতঃপর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] [আমাদের] বললেনঃ এ দুটো জিনিস দিয়ে শৌচকার্য করো না। কেননা এ দুটো তোমাদের ভাইদের [জিনদের] খাদ্য।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৮৮৯, ইসলামিক সেন্টার- ৯০২]
৮৯৪. দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] থেকে এ সূত্রে হইতে বর্ণীতঃ
উপরে বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে-“ তাদের আগুনের চিহ্ন” পর্যন্ত।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৮৯০, ইসলামিক সেন্টার- ৯০৩]
৮৯৫. শাবী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
এরা তাহাঁর কাছে খাদ্যের জন্য আবেদন করে। এরা জাযীরাতুল আরবের জ্বিন ছিল। শাবীর এই বর্ণনা পর্যন্ত হাদীস শেষ হয়েছে। আবদুল্লাহর হাদীস থেকে এ সূত্রে বর্ণনা কিছুটা ব্যাপক।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৮৯০, ইসলামিক সেন্টার- ৯০৩]
৮৯৬. আবদুল্লাহ [রাদি.] কর্তৃক নবী [সাঃআঃ] থেকে এ সূত্রে হইতে বর্ণীতঃ
“ তাদের আগুনের চিহ্ন” বক্তব্য পর্যন্ত বর্ণিত হয়েছে এবং এর পরের অংশ উল্লেখ নেই।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৮৯১, ইসলামিক সেন্টার- ৯০৪]
৮৯৭. আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, জিন্দের সাথে সাক্ষাতের রাতে আমি নবী [সাঃআঃ] -এর সাথে ছিলাম না। আফসোস! আমি যদি তাহাঁর সাথে থাকতাম।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৮৯২, ইসলামিক সেন্টার-৯০৪]
৮৯৮. মান [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি আমার পিতার কাছে শুনেছি। তিনি বলেন আমি মাসরূককে জিজ্ঞেস করলাম, জিনের রাত, কে নবী [সাঃআঃ] -কে জানিয়ে দিল যে, তারা এসে তাহাঁর কুরআন পাঠ শুনছে? মাসরূক বলেছেন, আমাকে তোমার পিতা অর্থাৎ- ইবনে মাসঊদ বলেছেন যে, গাছই তাদের সম্পর্কে নবী [সাঃআঃ] -কে জানিয়ে দিয়েছিলেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৮৯৩, ইসলামিক সেন্টার-৯০৫]
৩৪.অধ্যায়ঃ যুহ্র ও আস্র-এর নামাজের কিরাআত
৮৯৯. আবু কাতাদাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদের সাথে নিয়ে নামাজ আদায় করিতেন। তিনি যুহর ও আস্রের প্রথম দুরাকআতে সুরা আল ফাতিহাহ্ এবং এর সাথে আরো দুটি সুরাহ্ পাঠ করিতেন। কখনো কখনো তিনি আমাদেরকে শুনিয়ে আয়াত পাঠ করিতেন। তিনি যুহরের প্রথম রাকআত দীর্ঘ করিতেন এবং দ্বিতীয় রাকআত সংক্ষিপ্ত করিতেন। ফাজরের সলাতেও তিনি এরূপ করিতেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৮৯৪, ইসলামিক সেন্টার-৯০৬]
৯০০. আবদুল্লাহ ইবনি আবু কাতাদাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] যুহর ও আস্রের দুরাকআতে সূরাহ্ আল ফাতিহার সাথে একটি করে সুরা পাঠ করিতেন। তিনি কখনো কখনো আমাদেরকে শুনিয়ে আয়াত পাঠ করিতেন। আর শেষের দুরাকআত তিনি কেবল সুরা ফাতিহাই পাঠ করিতেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৮৯৫, ইসলামিক সেন্টার-৯০৭]
৯০১. আবু সাঈদ আল খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমরা যুহর ও আস্রের সলাতে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর কিয়ামের [দাঁড়ানোর] পরিমাণ নিরূপণ করার চেষ্টা করতাম। যুহরের প্রথম দুরাকআতে তাহাঁর কিয়ামের পরিমাণ ছিল সুরা “আলিফ, লাম, মীম, তানযীলুল সিজদা” পাঠ করার পরিমাণ সময়। তার পরবর্তী দুরাকআত আমরা তাহাঁর কিয়ামের পরিমাণ নিরূপণ করেছি ঐ সূরার অর্ধেক পাঠ করার পরিমাণ সময়। আমরা আস্রের দুরাকআতে তাহাঁর কিয়ামের পরিমাণ নিরূপণ করেছি যুহরের শেষের দুরাকআত তাহাঁর কিয়ামের পরিমাণ সময়। আর আস্রের শেষ দুরাকআত তাহাঁর কিয়ামের পরিমাণ ছিল- প্রথম দুরাকআতের অর্ধেক পরিমাণ সময়। আবু বাক্র ইবনি আবু শাইবাহ্ তাহাঁর বর্ণনায় সুরা “আলিফ লাম মীম তানযীলের” উল্লেখ করেননি। তিনি কিয়ামের পরিমাণ ত্রিশ আয়াত পাঠের পরিমাণ সময় উল্লেখ করিয়াছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৮৯৬, ইসলামিক সেন্টার-৯০৮]
৯০২. আবু সাঈদ আল খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] যুহরের প্রথম দুরাকআতে ত্রিশ আয়াত পরিমাণ পাঠ করিতেন এবং শেষের দুরাকআতের প্রতি রাকআতে পনের আয়াত পরিমাণ পাঠ করিতেন। অথবা [রাবীর সন্দেহ] তিনি [আবু সাঈদ] বলেছেন, এর অর্ধেক পরিমাণ। তিনি আসরের প্রথম দুরাকআতের প্রতি রাকআতে পনের আয়াত পরিমাণ পাঠ করিতেন এবং শেষের দুরাকআতে এর অর্ধেক পরিমাণ পাঠ করিতেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৮৯৭, ইসলামিক সেন্টার-৯০৯]
৯০৩. জাবির ইবনি সামুরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, কুফার অধিবাসীরা [তাদের গভর্নর] সাদ [রাদি.] -এর বিরুদ্ধে তার নামাজ সম্পর্কে উমর ইবনিল খাত্তাব [রাদি.] -এর কাছে অভিযোগ করিল। উমর [রাদি.] তাকে ডেকে পাঠালেন। তিনি তার দরবারে উপস্থিত হলেন। উমর [রাদি.] তার নামাজ সম্পর্কে উত্থাপিত অভিযোগ তাকে শুনালেন। সাদ [রাদি.] বলিলেন, আমি তাদেরকে নিয়ে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর অনুরূপ নামাজ আদায় করি। এতে কোনরূপ ত্রুটি করি না। আমি প্রথম দুরাকআত দীর্ঘ করি এবং শেষের দুরাকআত সংক্ষিপ্ত করি। উমর [রাদি.] বলিলেন, হে আবু ইসহাক্ [সাদ] ! এটাই তোমার কাছে আশা করি।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৮৯৮, ইসলামিক সেন্টার-৯১০]
৯০৪. কুতাইবাহ্ ইবনি সাঈদ ও ইসহাক্ ইবনি ইব্রাহীম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] আবদুল মালিক ইবনি উমায়র [রাদি.] -এর সূত্রে হইতে বর্ণীতঃ
এ সানাদে উপরের হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৮৯৯, ইসলামিক সেন্টার-৯১১]
৯০৫. জাবির ইবনি সামুরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি জাবির ইবনি সামুরার কাছে শুনেছি, তিনি বলেন, উমর [রাদি.] সাদকে বলিলেন, তারা তোমার বিরুদ্ধে সব ব্যাপারেই অভিযোগ এনেছে; এমনকি নামাজের ব্যাপারেও। সাদ [রাদি.] বলিলেন, আমি তো প্রথম দুরাকআত লম্বা করে থাকি এবং পরবর্তী দুরাকআত সংক্ষেপ করে থাকি। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর নামাজ আদায়ের নিয়ম অনুসরণ করিতে আমি মোটেও ত্রুটি করি না। উমর [রাদি.] বলিলেন, তোমার কাছে এটাই আশা করি। অথবা তিনি বলেছেন, তোমার সম্পর্কে আমার এটাই ধারণা।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯০০, ইসলামিক সেন্টার-৯১২]
৯০৬. জাবির ইবনি সামুরাহ্ [রাদি.] হইতে এ সূত্রে হইতে বর্ণীতঃ
উপরের হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে। তবে এতে আরো আছে, “সাদ [রাদি.] বলিলেন, বেদুঈনরা আমাকে নামাজ শিখাতে চায়?”
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯০১, ইসলামিক সেন্টার-৯১৩]
৯০৭. আবু সাঈদ আল খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, যুহরের নামাজ শুরু হয়ে যেত। অতঃপর কোন ব্যক্তি প্রয়োজন [প্রস্রাব-পায়খানা] পূরণের জন্য বাকী নামক স্থানে যেত। সে নিজের প্রয়োজন সেরে ওযূ করে এসে দেখত-রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তখনো প্রথম রাকআতেই আছেন। তিনি নামাজ এতটা লম্বা করিতেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯০২, ইসলামিক সেন্টার-৯১৪]
৯০৮. কাযআহ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি আবু সাঈদ আল খুদরীর কাছে আসলাম, এ সময় তার কাছে অনেক লোক উপস্থিত ছিল। তারা তাহাঁর কাছ থেকে চলে গেলে আমি তাকে বললাম, তারা আপনার কাছে যা জিজ্ঞেস করেছে আমি তা জিজ্ঞেস করব না। আমি বললাম, আমি আপনার কাছে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর নামাজ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করব। আবু সাঈদ [রাদি.] বলিলেন, এটা জানার মধ্যে তোমার কোন কল্যাণ নেই। [কেননা, তুমি তাহাঁর মতো নামাজ পড়তে সক্ষম হইবে না]। তিনি পুনর্বার তাই জানতে চাইলেন। তখন আবু সাঈদ [রাদি.] বলিলেন, যুহরের নামাজ শুরু হয়ে যাওয়ার পর আমাদের কোন ব্যক্তি বাকী নামক স্থানে যেত। সে নিজের প্রয়োজন সেরে নিজ বাড়ীতে এসে ওযূ করে পুনরায় মাসজিদে যেত। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তখনো প্রথম রাকআতেই থাকতেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯০৩, ইসলামিক সেন্টার-৯১৫]
৩৫. অধ্যায়ঃ ফাজরের নামাজের কিরাআত
৯০৯. আবদুল্লাহ ইবনি সায়িব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] আমাদেরকে নিয়ে মাক্কায় ভোরের [ফাজরের] নামাজ আদায় করিলেন। তিনি সুরা আল মুমিনূন পড়া শুরু করিলেন। তিনি তা পড়তে পড়তে মূসা ও হারূন [আঃ] অথবা ঈসা [আঃ] -এর আলোচনা সম্পর্কিত আয়াতে পৌছে গেলেন। [এ ব্যাপারে মুহাম্মাদ ইবনি আব্বাদ সন্দেহে পড়ে গেছেন অথবা রাবীদের মধ্যে মতভেদের সৃষ্টি হয়েছে]। এ সময় নবী [সাঃআঃ] -এর কাশি আসলে তিনি রুকূতে চলে গেলেন। আবদুল্লাহ ইবনি সায়িবও সলাতে উপস্থিত ছিলেন।
আবদুর রায্যাকের বর্ণনায় রয়েছে, তিনি কিরাআত পাঠ থামিয়ে দিয়ে রুকূতে চলে গেলেন।
তিনি তার বর্ণনায় আবদুল্লাহ ইবনি আম্রের নাম উল্লেখ করিয়াছেন, কিন্তু ইবনিল আস-এর নাম উল্লেখ করেননি।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯০৪, ইসলামিক সেন্টার-৯১৬]
৯১০. আমর ইবনি হুরায়স [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি ফাজরের সলাতে নবী [সাঃআঃ] -কে
وَاللَّيْلِ إِذَا عَسْعَسَ
“ওয়াল্ লাইলি ইযা- আস্আসা” অর্থাৎ- “শপথ রাতের যখন সে চলে যেতে থাকে”- [সুরা আত্ তাকবীর ৮১ : ১৭] পাঠ করিতে শুনেছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯০৫, ইসলামিক সেন্টার-৯১৭]
৯১১. কুত্বাহ্ ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি নামাজ আদায় করেছি এবং রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদের নামাজ আদায় করিয়েছেন। তিনি
ق وَالْقُرْآنِ الْمَجِيدِ
“কাফ, ওয়াল কুরআ-নিল মাজীদ” অর্থাৎ- “কাফ, সম্মানিত কুরআনের শপথ”- [সুরা কাফ ৫০ : ১] পাঠ করিলেন। তিনি
وَالنَّخْلَ بَاسِقَاتٍ
“ওয়ান্ নাখ্লা বা-সিকা-তিন” অর্থাৎ- “লম্বা খর্জুর বৃক্ষ…”- [সূরাহ কাফ ৫০ : ১০] পর্যন্ত পাঠ করিলেন। রাবী বলেন, আমিও তা পাঠ করলাম কিন্তু এর তাৎপর্য বুঝতে পারতাম না।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯০৬, ইসলামিক সেন্টার-৯১৮]
৯১২. কুত্বাহ্ ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি ফাজরের নামাজের নবী [সাঃআঃ] -কে
وَالنَّخْلَ بَاسِقَاتٍ لَهَا طَلْعٌ نَضِيدٌ
“ওয়ান্ নাখ্লা বা-সিকা-তিন লাহা- তালউন নাযীদ” অর্থাৎ- “লম্বমান খর্জুর বৃক্ষ যাতে আছে গুচ্ছ গুচ্ছ খর্জুর”- [সুরা কাফ ৫০ : ১০] পাঠ করিতে শুনেছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯০৭, ইসলামিক সেন্টার-৯১৯]
৯১৩. যিয়াদ ইবনি ইলাকাহ্ হইতে তার চাচার সূত্রে হইতে বর্ণীতঃ
তিনি [চাচা] নবী [সাঃআঃ] -এর সাথে ফাজরের নামাজ আদায় করিলেন। তিনি প্রথম রাকআতে
وَالنَّخْلَ بَاسِقَاتٍ لَهَا طَلْعٌ نَضِيدٌ
“ওয়ান্ নাখ্লা বা-সিকা-তিন লাহা- তালউন্ নাযীদ”- [সুরা কাফ ৫০ : ১০] পাঠ করিলেন। কখনো তিনি বলেছেন, নবী [সাঃআঃ] সুরা ক্বাফ পাঠ করিলেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯০৮, ইসলামিক সেন্টার-৯২০]
৯১৪. জাবির ইবনি সামুরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] ফাজরের সলাতে
ق وَالْقُرْآنِ الْمَجِيدِ
“কাফ, ওয়াল কুরআ-নিল মাজীদ”-
[সুরা কাফ ৫০:১] পাঠ করিতেন। এরপরে তাহাঁর নামাজগুলো সংক্ষিপ্তাকারের ছিল। [ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯০৯, ইসলামিক সেন্টার-৯২১]
৯১৫. সিমাক ইবনি হারব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] -এর সূত্রে হইতে বর্ণীতঃ
আমি জাবির ইবনি সামুরাহ্-এর কাছে নবী [সাঃআঃ] -এর নামাজ সম্পর্কে জানতে চাইলাম। তিনি বলিলেন, তিনি হালকাভাবে নামাজ আদায় করিতেন। ঐসব লোকের মত [বড় বড় সুরা দিয়ে] নামাজ আদায় করিতেন না।
তিনি আরো বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ফাজরের সলাতে সুরা কাফ বা এ আকারের সুরা পাঠ করিতেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯১০, ইসলামিক সেন্টার-৯২২]
৯১৬. জাবির ইবনি সামুরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] যুহরের সলাতে
اللَّيْلِ إِذَا يَغْشَى
“ওয়াল্ লাইলি ইযা- ইয়াগ্শা-” [সুরা আল লায়ল ৯২ : ১] পাঠ করিতেন এবং আস্রের সলাতেও অনুরূপ কোন সুরা পাঠ করিতেন। ফাজরের সলাতে তিনি এর চেয়ে দীর্ঘ সুরা পাঠ করিতেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯১১, ইসলামিক সেন্টার-৯২৩]
৯১৭. জাবির ইবনি সামুরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নবী [সাঃআঃ] যুহরের সলাতে
سَبِّحِ اسْمَ رَبِّكَ الأَعْلَى
“সাব্বিহিস্মা রব্বিকাল আলা” অর্থাৎ- “তুমি তোমার সর্বোচ্চ প্রতিপালকের নামের ঘোষনা কর”- [সুরা আলা ৮৭:১] পাঠ করিতেন এবং ভোরের [ফাজরের ] সলাতে এর চেয়ে লম্বা সুরা পাঠ করিতেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯১২, ইসলামিক সেন্টার- ৯২৪]
৯১৮. আবু বার্যাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ভোরের [ফাজরের] সলাতে ষাট থেকে একশ আয়াত পর্যন্ত পাঠ করিতেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯১৩, ইসলামিক সেন্টার- ৯২৫]
৯১৯. আবু বারযাহ্ আল আস্লামী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ফাজরের সলাতে ষাট থেকে একশ আয়াত পর্যন্ত পাঠ করিতেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯১৪, ইসলামিক সেন্টার- ৯২৬]
৯২০. উম্মুল ফায্ল বিনতু হারিস [রাদি.] -এর সূত্রে হইতে বর্ণীতঃ
তিনি আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস [রাদি.] -কে
وَالْمُرْسَلاَتِ عُرْفًا
“ওয়াল মুরসালা-তি উরফান” [সূরাহ মুরনামাজ ] পাঠ করিতে শুনলেন। তিনি [উম্মু ফায্ল] বলিলেন, হে বৎস! তুমি এ সুরা পাঠ করে আমাকে স্মরণ করিয়ে দিলে যে, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর কাছে সর্বশেষ যে সূরাটি শুনেছি তা ছিল এ সুরা [সুরা মুরনামাজ ]। তিনি এটা মাগরিবের সলাতে পড়েছিলেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯১৫. ইসলামিক সেন্টার- ৯২৭]
৯২১. যুহরী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে এ সূত্রে হইতে বর্ণীতঃ
উপরের হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে। সালিহ এর বর্ণনায় আরো অতিরিক্ত আছেঃ “এরপর ওফাত পর্যন্ত তিনি সহাবাদের নিয়ে আর নামাজ আদায়ের সুযোগ পাননি।”
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯১৬, ইসলামিক সেন্টার- ৯২৮]
৯২২. মুহাম্মাদ ইবনি জুবায়র ইবনি মুতইম [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, তিনি [জুবায়র] বলেন, আমি রসূলুল্লাহ-কে মাগরিবের সলাতে সুরা আত্ তুর পাঠ করিতে শুনেছি।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯১৭, ইসলামিক সেন্টার- ৯২৯]
৯২৩. যুহরী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে এ সূত্রে হইতে বর্ণীতঃ
উপরের হাসীসের অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯১৮, ইসলামিক সেন্টার- ৯৩০]
৩৬. অধ্যায়ঃ ইশার নামাজের কিরাআত
৯২৪. বারা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] কোন এক সফরে থাকাকালীন ইশার নামাজ আদায় করিলেন এবং প্রথম দুরাকআতের এক রাকআতে “ওয়াত্তীনি ওয়ায্ যাইতূন”” [সুরা আত্ তীন] পাঠ করিলেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯১৯,ইসলামিক সেন্টার- ৯৩১]
৯২৫. বারা ইবনি আযিব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, একদা আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর সাথে ইশার নামাজ আদায় করলাম। তিনি তাতে সুরা আত্ তীন পাঠ করিলেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯২০, ইসলামিক সেন্টার- ৯৩২]
৯২৬. বারা ইবনি আযিব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি নবী [সাঃআঃ] -কে ইশার সলাতে সুরা আত্ তীন পাঠ করিতে শুনেছি। আমি তাহাঁর মতো সুললিত কন্ঠস্বর আর কারো কাছে শুনিনি।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯২১, ইসলামিক সেন্টার- ৯৩৩]
৯২৭. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, মুআয [রাদি.] নবী [সাঃআঃ] -এর সাথে নামাজ আদায় করিতেন, অতঃপর নিজের সম্প্রদায়ে ফিরে এসে তাদের সলাতে ঈমামতি করিতেন। এক রাতে তিনি নবী [সাঃআঃ] -এর সাথে ইশার নামাজ আদায় করিলেন, অতঃপর নিজের সম্প্রদায়ের কাছে ফিরে এসে তাদের সলাতে ঈমাম হলেন। তিনি সুরা আল বাকারাহ্ পড়া শুরু করিলেন। এক ব্যক্তি এতে বিরক্ত হয়ে পড়ল। সে সালাম ফিরিয়ে একাকি নামাজ আদায় করে চলে গেল। লোকেরা তাকে বলিল, হে অমুক! তুমি কি মুনাফিক হয়ে গেছ? সে বলিল, আল্লাহর শপথ! আমি মুনাফিক হয়ে যাইনি। আমি অবশ্যই রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর কাছে যাব এবং তাঁকে এ সম্পর্কে অবহিত করব। সে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর নিকট এসে বলিল, হে আল্লাহর রসূল! আমরা উট চালক, দিনের বেলায় কঠোর পরিশ্রম করি। আর মুআয [রাদি.] আপনার সাথে ইশার নামাজ আদায় করে ফিরে এসে আমাদের ঈমামতি করিলেন এবং সলাতে সুরা আল বাকারাহ্ পড়া শুরু করে দিলেন। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] মুআয-এর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলিলেন, হে মুআয! তুমি কি ফিত্নাহ্ সৃষ্টিকারী! তুমি এ রকম এ রকম সুরা পাঠ করিবে।
সুফ্ইয়ান বলেন, আমি আম্রকে বললাম, আবু যুবায়র জাবির-এর সূত্রে আমাদের বলেছেন যে, তিনি {নবী [সাঃআঃ] } বলেছেন, “তুমি সুরা আশ্ শামস্ সুরা আয্ যুহা সুরা আল লায়ল এবং সুরা আল আলা পাঠ করিবে। আম্র বলিলেন, হ্যাঁ, এ ধরনের সূরাই পাঠ করার কথা বলেছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯২২,ইসলামিক সেন্টার- ৯৩৪]
৯২৮. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, মুআয ইবনি জাবাল আল আনসারী [রাদি.] তার গোত্রের লোকেদের নিয়ে ইশার নামাজ আদায় করিলেন। তিনি কিরাআত দীর্ঘায়িত করিলেন। ফলে আমাদের মধ্য থেকে এক ব্যক্তি [নামাজ ছেড়ে দিয়ে] চলে গেল এবং একাকী নামাজ আদায় করিল। তার সম্পর্কে মুআযকে অবহিত করা হলে তিনি বলিলেন, সে তো মুনাফিক। লোকটি যখন এ কথা জানল- সে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর কাছে চলে গেল এবং মুআয [রাদি.] যা বলেছেন তা তাঁকে জানাল। নবী [সাঃআঃ] তাকে বললেনঃ হে মুআয! তুমি কি ফিত্নাহ্-ফ্যাসাদ সৃষ্টিকারী হইতে চাও? তুমি যখন লোকেদের ঈমামতি করিবে তখন সুরা আশ্ শাম্স, সূরাহ আল আলা, সূরাহ আলাক এবং সুরা আল লায়ল পাঠ করিবে ।
[ ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯২৩, ই.সে ৯৩৫]
৯২৯. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
মুআয ইবনি জাবাল [রাদি.] রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর সাথে ইশার নামাজ আদায় করিতেন। অতঃপর নিজের সম্প্রদায়ে ফিরে এসে তাঁদেরকে নিয়ে পুনরায় ঐ নামাজ আদায় করিতেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯২৪, ইসলামিক সেন্টার- ৯৩৬]
৯৩০. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, মুআয [রাদি.] রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর সাথে ইশার নামাজ আদায় করিতেন। অতঃপর তিনি নিজ গোত্রের মাসজিদে ফিরে এসে তাদেরকে নিয়ে পুনরায় নামাজ আদায় করিতেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯২৫, ইসলামিক সেন্টার- ৯৩৭]
৩৭. অধ্যায়ঃ ঈমামদেরকে সংক্ষেপে পূর্ণাঙ্গ নামাজ আদায় করানোর নির্দেশ
৯৩১. আবু মাসউদ আনসারী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, এক ব্যক্তি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর কাছে এসে বলিল, অমুক লোকের কারণে আমি ফাজরের সলাতে দেরীতে উপস্থিত হই। কারণ সে খুব লম্বা কিরাআত পাঠ করে। [রাবী বলেন] আমি সেদিনকার মতো আর কোন দিনের ওয়াজে নবী [সাঃআঃ] -কে এতোটা গোস্সা হইতে দেখিনি। তিনি বলিলেন, হে জনগণ! তোমাদের মধ্যে এমন কিছু লোক রয়েছে যারা মানুষকে ভাগিয়ে দেয়। তোমাদের যে কেউ ঈমামতি করে সে যেন নামাজ সংক্ষেপ করে। কেননা তার পিছনে বৃদ্ধ, দুর্বল এবং বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত লোকও রয়েছে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯২৬, ই.সে . ৯৩৮]
৯৩২. ইসমাঈল [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] এর সূত্রে হইতে বর্ণীতঃ
উপরের সানাদে হুশায়ম-এর হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯২৭, ইসলামিক সেন্টার- ৯৩৯]
৯৩৩. আবু হুরায়রা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নবী [সাঃআঃ] বলেনঃ তোমাদের কেউ যখন লোকেদের ঈমামতি করে সে যেন নামাজ হালকা এবং সংক্ষেপ কর। কেননা তাদের মধ্যে বালক, বৃদ্ধ, দুর্বল এবং রুগ্ন ব্যক্তিরাও রয়েছে। সে যখন একাকি নামাজ আদায় করিবে, তখন যত ইচ্ছা দীর্ঘ সুরা পড়তে পারে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯২৮, ইসলামিক সেন্টার- ৯৪০]
৯৩৪. হাম্মাম ইবনি মুনাব্বিহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আবু হুরায়রা্হ্ [রাদি.] মুহাম্মাদুর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর কয়েকটি হাদীস বর্ণনা করিলেন। এগুলোর মধ্যে একটি হাদীস এই- রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ তোমাদের কোন ব্যক্তি লোকেদের সলাতে ঈমামতি করিতে দাঁড়ালে সে যেন নামাজ সংক্ষেপ করে। কেননা তাদের মধ্যে যেমন বৃদ্ধরা রয়েছে তেমন দুর্বলরাও রয়েছে। যখন সে একাকি নামাজ আদায় করে তখন নিজ ইচ্ছামত তার নামাজ দীর্ঘ করিতে পারে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯২৯, ইসলামিক সেন্টার- ৯৪১]
৯৩৫. আবু হুরায়রা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যখন লোকেদের নিয়ে নামাজ আদায় করে সে যেন তা সংক্ষিপ্ত করে। কেননা এসব লোকের মধ্যে দুর্বল, রুগ্ন এবং বিভিন্ন প্রয়োজনে ব্যস্ত লোকও থাকতে পারে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯৩০, ইসলামিক সেন্টার- ৯৪২]
৯৩৬. আবু হুরায়রা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এ সূত্রে উপরের হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেন। তবে এ বর্ণনায় রুগ্নের পরিবর্তে বৃদ্ধের উল্লেখ রয়েছে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯৩১, ইসলামিক সেন্টার- ৯৪৩]
৯৩৭. উসমান ইবনি আবুল আস সাকাফী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তুমি তোমাদের গোত্রের লোকেদের সলাতে ঈমামতি কর। রাবী বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আমি আমার অন্তরে কিছু একটা অনুভব করি। তিনি আমাকে বলিলেন, নিকটে আসো। তিনি আমাকে তাহাঁর সামনে বসালেন। অতঃপর আমার বুকের মাঝখানে তাহাঁর হাত রাখলেন। তিনি পুনরায় বলিলেন, ঘুরে বসো। তিনি আমার পিঁছে কাঁধ বরাবর হাত রাখলেন। অতঃপর তিনি বলিলেন,তুমি তোমার গোত্রের লোকেদের ঈমামতি কর। যে ব্যক্তি কোন সম্প্রদায়ের ঈমামতি করে সে যেন নামাজ সংক্ষিপ্ত করে। কেননা তাদের মধ্যে বৃদ্ধ, অসুস্থ, দূর্বল এবং বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত লোক রয়েছে। তোমাদের কেউ যখন একাকী নামাজ আদায় করিবে, সে তখন নিজ ইচ্ছামত নামাজ আদায় করিতে পারে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯৩২, ইসলামিক সেন্টার- ৯৪৪]
৯৩৮. উসমান ইবনি আবুল আস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমার প্রতি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর সর্বশেষ নির্দেশ ছিলঃ তুমি যখন কোন সম্প্রদায়ের ঈমামতি করিবে তখন তাদের নামাজ সংক্ষিপ্ত করিবে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯৩৩, ইসলামিক সেন্টার- ৯৪৫]
৯৩৯. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] সংক্ষিপ্ত অথচ পূর্ণাঙ্গ নামাজ আদায় করিতেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯৩৪, ইসলামিক সেন্টার- ৯৪৬]
৯৪০. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, লোকেদের মধ্যে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর নামাজ ছিল সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত এবং পূর্ণাঙ্গ।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯৩৫, ইসলামিক সেন্টার- ৯৪৭]
৯৪১. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর পেছনে যত সংক্ষিপ্ত এবং পূর্ণাঙ্গ নামাজ আদায় করেছি-এরূপ সংক্ষিপ্ত এবং পূর্ণাঙ্গ নামাজ আর কখনো কোন ইমামের পিছনে আদায় করিনি।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯৩৬, ইসলামিক সেন্টার- ৯৪৮]
৯৪২. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] নামাজ রত অবস্থায় মায়ের সাথে আসা শিশুর কান্না শুনতে পেলে হালকা বা ছোটখাট সূরাহ্ দিয়ে নামাজ শেষ করে দিতেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯৩৭, ইসলামিক সেন্টার- ৯৪৯]
৯৪৩. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, আমি নামাজ শুরু করে তা দীর্ঘ করার ইচ্ছা করি। এমতাবস্থায় আমি শিশুর কান্না শুনতে পাই। আমি তখন তার মায়ের অস্থিরতার কথা চিন্তা করে নামাজ সংক্ষিপ্ত করে দেই।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯৩৮, ইসলামিক সেন্টার- ৯৫০]
৩৮. অধ্যায়ঃ নামাজের রুকন গুলো সঠিকভাবে আদায় করা এবং সংক্ষেপে পূর্ণাঙ্গরূপে নামাজ আদায় করা
৯৪৪. বারা ইবনি আযিব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি মুহাম্মদ [সাঃআঃ] -এর সাথে তাহাঁর নামাজ আদায় করার নিয়ম কানুন ভালভাবে পর্যবেক্ষণ করেছি। তাহাঁর দাঁড়ানো [কিয়াম] , তাহাঁর রুকু এবং রুকু থেকে সোজা হয়ে দাঁড়ানো, তাহাঁর সাজদাহ্ এবং দুসাজদার মাঝে তাহাঁর বসা, অতঃপর তাহাঁর দ্বিতীয় সাজদাহ্, তাহাঁর সালাম ফিরানো, এবং সালাম ও নামাজ শেষ করে চলে যাওয়ার মাঝখানে বসা-এর সবই প্রায় সমান [ব্যবধান] পেয়েছি।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯৩৯, ইসলামিক সেন্টার- ৯৫১]
৯৪৫. হাকাম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, ইবনি আশআস-এর সময় এক ব্যক্তি কূফাবাসীদের উপর আধিপত্য বিস্তার করে। হাকাম তার নাম উল্লেখ করিয়াছেন [মাতার ইবনি নাজিয়াহ্]। সে আবু উবাইদাহ ইবনি আব্দুল্লাহ [ইবনি মাসউদ] কে লোকদের সলাতে ঈমামতি করার হুকুম দিলেন। তিনি নামাজ আদায় করছিলেন। তিনি রুকু থেকে মাথা তুলে একটি দুআ পড়ার পরিমাণ সময় দাঁড়িয়ে থাকতেন। দুআটি হচ্ছে :
اللَّهُمَّ رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ مِلْءَ السَّمَوَاتِ وَمِلْءَ الأَرْضِ وَمِلْءَ مَا شِئْتَ مِنْ شَىْءٍ بَعْدُ أَهْلَ الثَّنَاءِ وَالْمَجْدِ لاَ مَانِعَ لِمَا أَعْطَيْتَ وَلاَ مُعْطِيَ لِمَا مَنَعْتَ وَلاَ يَنْفَعُ ذَا الْجَدِّ مِنْكَ الْجَدُّ
আল্লা-হুম্মা রব্বানা- লাকাল্ হামদু মিলআস্ সামা-ওয়া-তি ওয়ামিল্ আল আরযি ওয়ামিলআ মা-শিতা মিন্ শাইয়িন বাদু আহলাস্ সানা-য়ি ওয়াল্ মাজদি লা-মা-নিআ লিমা-আতাইতা ওয়ালা-মুতিয়া লিমা-মানাতা ওয়ালা-ইয়ানফাউ যাল জাদ্দি মিনকাল জাদ্দ।
অর্থাৎ “হে আল্লাহ্! আমাদের প্রতিপালক প্রশংসা আপনারই জন্য যা আসমান ও জমীন পরিপূর্ণ এবং পরিপূর্ণতা ছাড়াও যতটুকু আপনি ইচ্ছা পোষণ করেন। হে প্রশংসা ও মর্যাদার অধিকারী! আপনি যা দান করবেন তা রোধ করার কেউ নেই। আর আপনি যা রোধ করবেন তা দান করারও কেউ নেই এবং কোনও সম্পদশালীকেই তার সম্পদ আপনার শাস্তি থেকে বাঁচাতে পারবে না।”
হাকাম বলেন, অতঃপর আমি এটা আবদুর রহমান ইবনি আবু লাইলার কাছে উল্লেখ করলাম। তিনি বলিলেন, আমি বারা ইবনি আযিবকে বলিতে শুনেছি, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] –এর নামাজ ছিল : তিনি রুকুতে যেতেন, রুকু থেকে মাথা তুলে দাঁড়াতেন, সাজদাহ্ করিতেন এবং দুসাজদার মাঝে বিরতি দিতেন- এসবগুলোর সময়ের পরিমাণ প্রায় একই ছিল।
শুবাহ্ বলেন, আমি এটা আমর ইবনি মুররাকে বললাম। তিনি বলিলেন, আমি ইবনি আবু লাইলাকে দেখেছি। কিন্তু তার নামাজ তো এরূপ ছিল না।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯৪০, ইসলামিক সেন্টার- ৯৫২]
৯৪৬. হাকাম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
মাতার ইবনি নাজিয়াহ্ যখন কূফার উপর নিজের আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করিল, আবু উবাইদাকে লোকদের সলাতে ঈমামতি করার নির্দেশ দিল। অবশিষ্ট হাদীস পূর্ববৎ।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯৪১, ইসলামিক সেন্টার- ৯৫২]
৯৪৭. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমাদেরকে নিয়ে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যেভাবে নামাজ আদায় করিয়াছেন-আমি তোমাদের নিয়ে অনুরুপভাবে নামাজ আদায় করিতে মোটেই ত্রুটি করবনা। অধস্তন রাবী বলেন, আনাস [রাদি.] একটি কাজ করিতেন যা আমি তোমাদেরকে করিতে দেখি না। তিনি রুকু থেকে মাথা তুলে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে যেতেন। এমনকি কেউ [মনে মনে] বলত, তিনি [সাজদায় যেতে] ভুলে গেছেন। তিনি সাজদাহ্ থেকে মাথা তুলে সোজা হয়ে বসে যেতেন। এমনকি কেউ [মনে মনে] বলত, তিনি [দ্বিতীয় সাজদাহ্ করিতে] ভুলে গেছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯৪২, ইসলামিক সেন্টার- ৯৫৩]
৯৪৮. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর পিছনে যেরূপ সংক্ষিপ্ত ও পূর্ণাঙ্গ নামাজ আদায় করেছি অনুরূপ আর কারো পিছনে আদায় করিনি। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর নামাজের [রুকনগুলোর সময়ের] পরিমাণ প্রায় কাছকাছি ছিল। আবু বকর [রাদি.] -এর নামাজের [রুকনগুলোও] পরস্পর কাছকাছি ছিল। উমর ইবনিল খাত্তাব তাহাঁর সময়ে ফযরের নামাজ দীর্ঘ করে দেন। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যখন
سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ
“সামিআল্লা-হু লিমান হামিদাহ” বলে দাঁড়িয়ে যেতেন -এমনকি আমরা [মনে মনে] বলতাম, তিনি [সাজদায় যেতে] ভুলে গেছেন। অতঃপর তিনি সাজদায় যেতেন। দুসাজদার মাঝখানে তিনি এতক্ষণ বসতেন যে, আমরা [মনে মনে] বলতাম, তিনি [পরবর্তী সিজদায় যেতে] ভুলে গেছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৯৪৩, ইসলামিক সেন্টার- ৯৫৪]
Leave a Reply