কাসামাহ [খুনের ব্যপারে হলফ করা], মুহারিবীন [শত্রু সৈন্য], কিসাস”

কাসামাহ [খুনের ব্যপারে হলফ করা], মুহারিবীন [শত্রু সৈন্য], কিসাস”

কাসামাহ [খুনের ব্যপারে হলফ করা], মুহারিবীন [শত্রু সৈন্য], কিসাস”

পর্বঃ ২৯, কাসামাহ, অধ্যায়ঃ (১-১১)=১১টি

১. অধ্যায়ঃ কাসামাহ খুনের ব্যাপারে হলফ করা
২. অধ্যায়ঃ শত্রু সৈন্য এবং মুরতাদদের বিচার
৩. অধ্যায়ঃ পাথর ও অন্যান্য ধারালো কর্তনকারী ও ভারী জিনিস দ্বারা হত্যা করার দায়ে কিসাস আরোপিত হইবে এবং মহিলা কর্তৃক পুরুষকে হত্যার দায়েও কিসাস আরোপিত হইবে
৪. অধ্যায়ঃ যখন কোন ব্যক্তি অপর কোন ব্যক্তির জীবন অথবা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের উপর আক্রমণ করে, তখন যদি আক্রান্ত ব্যক্তি তা প্রতিহত করে এবং প্রতিহত করার সময় আঘাতকারীর জীবন অথবা অঙ্গের ক্ষতিসাধন করে, তবে এর জন্য তাকে কোন প্রকার ক্ষতিপূরণ দিতে হইবে না
৫. অধ্যায়ঃ দাঁত এবং এর অনুরূপ ব্যাপারে কিসাস [বদলা] সাব্যস্ত করার বর্ণনা
৬. অধ্যায়ঃ মুসলিম ব্যক্তির হত্যা কি অবস্থায় বৈধ
৭. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি সর্বপ্রথম হত্যার প্রচলন করিল- তার পাপের বর্ণনা
৮. অধ্যায়ঃ পরকালে হত্যার পরিণাম, কিয়ামাতের দিন এর বিচারই প্রথম করা হইবে
৯. অধ্যায়ঃ হত্যা, সম্মান এবং মালের হক বিনষ্ট করা হারাম হওয়ার ব্যাপারে কঠোর হুঁশিয়ারী
১০. অধ্যায়ঃ হত্যার স্বীকারোক্তি দেয়াএবং নিহত ব্যক্তির অভিভাবকদের কিসাসের দাবি করা বৈধ, হত্যাকারী ব্যক্তির নিহত ব্যক্তির অভিভাবকের নিকট ক্ষমার আবেদন করা মুস্তাহাব
১১. অধ্যায়ঃ গর্ভের সন্তানের দিয়্যাত এবং ভুলবশত হত্যা এবং ভুলসদৃশ ইচ্ছাকৃত হত্যার দিয়্যাত [রক্তপণ], অপরাধীর ওয়ারিসগণের উপর আবশ্যক হওয়া সম্পর্কে

১. অধ্যায়ঃ

কাসামাহ খুনের ব্যাপারে হলফ করা

৪২৩৪

ইয়াহইয়া এবং রাফি ইবনি খাদীজ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তাঁরা উভয়েই বলেছেন, আবদুল্লাহ ইবনি সাহল ইবনি যায়দ [রাদি.] ও মুহাইয়্যিসাহ ইবনি মাসঊদ বাড়ি থেকে বের হয়ে খাইবার পর্যন্ত এলেন। এরপর সেখান থেকে উভয়েই আলাদা হয়ে গেলেন। তারপর মুহাইয়্যিসাহ্ [রাদি.] আবদুল্লাহ্ ইবনি সাহলকে একস্থানে খুন হওয়া অবস্থায় পেলেন। তখন তিনি তাঁকে দাফন করিলেন। এরপর তিনি এবং হুওয়াইয়িসাহ ইবনি মাসঊদ [রাদি.] ও আবদুর রহমান ইবনি সাহল [রাদি.] রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর নিকট আগমন করিলেন। আর তিনি ছিলেন দলের সর্বকনিষ্ঠ ব্যক্তি। আবদুর রহমান [রাদি.] তাহাঁর উভয় সাথীর আগে কথা বলার জন্য এগিয়ে এলেন। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাকে বলিলেন, তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি বয়সে বড় সে কথা বলার জন্য সামনে এসো। সুতরাং তিনি চুপ করে গেলেন এবং তার সাথী দুজন কথা বলিলেন। আর তিনি তাদের দুজনের সাথে কথা বলিলেন। তারা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আবদুল্লাহ বিন সাহলের [হত্যা ও] হত্যাস্থান বিষয়ে কথা বলিলেন তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাদেরকে বললেনঃতোমরা কি এ ব্যাপারে পঞ্চাশবার হলফ [শপথ] করিতে পারবে [যে হত্যাকারী পার্শ্ববর্তী ইয়াহূদী সম্প্রদায়] তাহলে নিহত ব্যাক্তির কিসাস বা দিয়াত প্রাপ্তির ব্যাপারে হকদার হইবে। প্রতি উত্তরে তারা বলিল, আমরা কিভাবে এ ব্যাপারে হলফ [শপথ] করবো? আমরা তো সেখানে উপস্থিত ছিলাম না। নবী [সাঃআঃ] বললেনঃতাহলে ইয়াহূদীরা পঞ্চাশবার হলফ করে তোমাদের দাবী নাকচ করে দিবে। তারা তখন বলিল, আমরা কিভাবে কাফির সম্প্রদায়ের হলফ গ্রহণ করে নেব? রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যখন ঐ অবস্থা অবলোকন করিলেন, তখন তার দিয়্যাত দিয়ে দিলেন [নিজের থেকে]।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১৯৫, ইসলামিক সেন্টার- ৪১৯৫]

এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৪২৩৫

সাহল ইবনি আবু হাসমাহ এবং রাফি ইবনি খাদীজ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

একদা মুহাইয়িসাহ ইবনি মাসঊদ ও আবদুল্লাহ ইবনি সাহল [রাদি.] উভয়েই খাইবারের দিকে গমন করিলেন। তারা সেখানের এক খেজুরের বাগানের নিকট থেকে পৃথক হয়ে গেলেন। এরপর আবদুল্লাহ ইবনি সাহল [রাদি.] তথায় নিহত হলেন। [এই খুনের জন্য] তারা ইয়াহূদী সম্প্রদায়কে অভিযুক্ত করিলেন। এরপর তাহাঁর ভাই আবদুর রহমান এবং চাচাত ভাই হুওয়াইয়্যিসাহ ও মুহাইয়্যিসাহ্ [রাদি.], নবী [সাঃআঃ]- এর কাছে আগমন করিলেন। আবদুর রহমান [রাদি.] তাহাঁর ভাই এর ব্যাপারে কথোপকথন করিলেন। আর তিনি ছিলেন তাঁদের মধ্যে সবচেয়ে ছোট। তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃবয়োজ্যেষ্ঠকে সম্মান দাও। অথবা বলিলেন, বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তিরই কথা আরম্ভ করা উচিত। তখন তাঁরা দুজন সাথীদের ব্যাপারে কথাবার্তা বলিলেন। এরপর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃতাদের কোন ব্যক্তিকে অভিযুক্ত করে তোমাদের মধ্য থেকে কাউকে পঞ্চাশবার হলফ করে বলিতে হইবে, তাহলে তার দিয়্যাত প্রদান করা হইবে। তখন তারা বলিল, ব্যাপারটি এমন যে, আমরা তথায় তখন উপস্থিত ছিলাম না। এমতাবস্থায় আমরা কিভাবে হলফ করে বলবো? তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃতবে ইয়াহূদীদের মধ্য থেকে কেউ পঞ্চাশবার হলফ করে তোমাদের খুনের দাবী নাকচ করে দেবে। তাঁরা বলিল, হে আল্লাহর রসূল! তারা তো কাফির সম্প্রদায়। তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] নিজের পক্ষ হইতে তাহাঁর “দিয়্যাত” আদায় করে দিলেন।

সাহল [রাদি.] বরেন, এরপর একদা আমি তাদের উট রাখার স্থানে প্রবেশ করলাম। তখন ঐ উটের মধ্য হইতে একটি উটনী আমাকে তার পা দ্বারা লাথি মারল। হাম্মাদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] এই হাদীসটি বর্ণনা করিয়াছেন- অথবা এর অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেন। [ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১৯৬, ইসলামিক সেন্টার- ৪১৯৬]

এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৪২৩৬

সাহল ইবনি আবু হাসমা [রাদি.] সূত্রে নবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণীতঃ

অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। আর তিনি আরবী [তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] নিজের পক্ষ হইতে তাহাঁর “দিয়্যাত” আদায় করে দেন] এ কথা বলেছেন। কিন্তু তাহাঁর বর্ণিত হাদীসে আরবী [উটনী আমাকে লাথি মারল] এ কথা বলেননি। [ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১৯৭, ইসলামিক সেন্টার- ৪১৯৭]

এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৪২৩৭

সাহল ইবনি আবু হাসমাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

সাহল ইবনি আবু হাসমাহ্ [রাদি.] থেকে তাঁদের অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেন। [ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১৯৮ ,ইসলামিক সেন্টার- ৪১৯৮]

এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৪২৩৮

বুশায়র ইবনি ইয়াসার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

বানূ হারিসাহ্‌ গোত্রের আবদুল্লাহ ইবনি সাহল ইবনি যায়দ আনসারী ও মুহাইয়্যিসাহ্‌ ইবনি মাসঊদ ইবনি যায়দ আনসারী [রাদি.] রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সময়ে খাইবার গমন করেন। সেখানকার অধিবাসী ছিল ইয়াহূদী সম্প্রদায়। তখন ইয়াহূদী ও মুসলিমদের মধ্যে চুক্তি বলবৎ ছিল। কোন প্রয়োজনের তাগিদে তখন সেখান থেকে উভয়েই পৃথক হয়ে গেলেন। এরপর আবদুল্লাহ ইবনি সাহল [রাদি.] নিহত হলেন। তাঁকে এক হাউজের মধ্যে নিহত অবস্থায় পাওয়া গেল। তখন তাহাঁর সাথী তাঁকে দাফন করিলেন। এরপর তিনি মাদীনায় ফিরে এলেন। নিহত ব্যক্তির ভাই আবদুর রহমান ইবনি সাহল, মুহাইয়্যিসাহ্‌ ও হুওয়াইয়্যিসাহ্‌ [রাদি.] এসে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর কাছে আবদুল্লাহ [রাদি.]-এর মৃত্যুর ঘটনা এবং যে স্থানে নিহত হলেন সবই বর্ণনা করিলেন। বুশায়র [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] ধারণা করিয়াছেন যে, তিনি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সাহাবী থেকে হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন, রসূল [সাঃআঃ] তাদেরকে বললেনঃ তোমরা এ ব্যাপারে পঞ্চাশবার হলফ করে বলবে, তাহলে তোমরা তোমাদের নিহত ব্যক্তির অথবা তোমাদের সাথীর দিয়্যাতের [খুনের জরিমানা] হকদার হইবে। তারা বললো, হে আল্লাহর রসূল! আমরা তো তখন সেখানে প্রত্যক্ষ দেখিনি এবং উপস্থিতও ছিলাম না। তিনি ধারণা করছেন যে, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ ইয়াহূদীরা পঞ্চাশবার এ ব্যাপারে হলফ করে তোমাদের খুনের দাবী নাকচ করে দেবে। তখন তাঁরা বলিলেন, হে আল্লাহর রসূল! আমরা কিভাবে একটি কাফির সম্প্রদায়ের হলফ গ্রহণ করিতে পারি? বুশায়র [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর নিজের পক্ষ হইতে তার দিয়্যাত আদায় করে দিয়েছেন। [ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১৯৯ , ইসলামিক সেন্টার- ৪১৯৯]

এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৪২৩৯

বুশায়র ইবনি ইয়াসার [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

বানূ হারিসাহ্ গোত্রের এক আনসারী ব্যক্তি যাকে আবদুল্লাহ ইবনি সাহল ইবনি যায়দ নামে ডাকা হতো, সে এবং তার এক চাচাতো ভাই, যাকে মুহাইয়্যিসাহ্ ইবনি মাসঊদ ইবনি যায়দ নামে ডাকা হতো….. এর পরবর্তী হাদীসের অংশটুকু লায়স [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]- এর বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেন এবং তার হাদীসের শেষ কথা—– [তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] নিজের পক্ষ হইতে তার দিয়্যাত আদায় করিয়াছেন] পর্যন্ত বর্ণনা করেন। ইয়াহ্ইয়া [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, আমার নিকট বুশায়র ইবনি ইয়াসার [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বর্ণনা করিয়াছেন, তিনি বলেন, সাহল ইবনি আবু হাসমাহ্ [রাদি.] আমাকে জানিয়েছেন যে, “নিশ্চয় ফার্য হিসেবে আদায়কৃত ঐ সমস্ত দিয়্যাতের উট রাখার স্থানে একটি উটনী আমাকে লাথি মেরেছিল।” [ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪২০০ , ইসলামিক সেন্টার- ৪২০০]

এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৪২৪০

সাহল ইবনি আবু হাসমাহ্‌ আনসারী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, তাদের মধ্য হইতে একদল লোক খাইবারের দিকে গমন করিল। এরপর তারা সেখান হইতে পৃথক হয়ে গেল। তারপর তারা তাদের একজনকে নিহত অবস্থায় পেল। এভাবে হাদীসের শেষ পর্যন্ত বর্ণনা করেন।

বর্ণনাকারী বলেন যে, এতে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] খুনের বদলা [দিয়্যাত] বাতিল হয়ে যাওয়াকে অপছন্দ মনে করিলেন। অতএব, তিনি সদাকাহ্‌র উট থেকে একশ উট দিয়্যাত হিসেবে প্রদান করিলেন। [ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪২০১ , ইসলামিক সেন্টার- ৪২০১]

এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৪২৪১

সাহ্‌ল ইবনি আবু হাসমাহ্‌ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তাহাঁর সম্প্রদায়ের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের মধ্যে গণ্য আবদুল্লাহ ইবনি সাহল এবং মুহাইয়্যিসাহ্‌ [রাদি.] উভয়েই খাইবারের দিকে গমন করিলেন দূর্গম পথ দিয়ে। এরপর এক ব্যক্তি মুহাইয়্যিসাহ্‌ [রাদি.]-এর নিকট এসে খবর দিল যে, আবদুল্লাহ ইবনি সাহল [রাদি.] নিহত হয়েছেন এবং তাঁকে একটি নর্দমা বা কূপের মধ্যে ফেলে রাখা হয়েছে। সুতরাং তিনি তথাকার ইয়াহূদীদের কাছে এসে বলিলেন, আল্লাহর শপথ তোমরাই তাঁকে হত্যা করেছ। তারা আল্লাহর শপথ করে বললো, আমরা তাঁকে হত্যা করিনি! এরপর তিনি স্বীয় সম্প্রদায়ের নিকট ফিরে এলেন এবং তাঁদের কাছে ঐ ঘটনা বর্ণনা করিলেন। পরিশেষে তিনি ও তাহাঁর বড় ভাই হুওয়াইয়িসাহ্‌ এবং আবদূর রহমান ইবনি সাহল [রাদি.] [নবী [সাঃআঃ]-এর কাছে] আগমন করিলেন। এরপর মুহাইয়্যিসাহ্‌ [রাদি.] কথা বলার জন্য অগ্রসর হলেন, যিনি [নিহত ব্যক্তির সঙ্গে] খাইবারে ছিলেন। তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] মুহাইয়্যিসাহ্‌ [রাদি.] কে লক্ষ্য করে বলিলেন, বড় জন! বড় জন! অর্থাৎ বয়ষ্ক ব্যক্তিকে কথা বলিতে দাও। তখন হুওয়াইয়িসাহ্‌ [রাদি.] কথাবার্তা বলিলেন, এরপর মুহাইয়্যিসাহ্‌ [রাদি.]-ও কথা বলিলেন। তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ হয়ত তারা তোমাদের সাথীর খুনের বদলা [দিয়্যাত] আদায় করে দিবে, নতুবা যুদ্ধের জন্য তৈরি হইবে। তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাদের কাছে ঐ ব্যাপারে পত্র লিখলেন। প্রতি উত্তরে তারা লিখল যে, আল্লাহর শপথ নিশ্চয়ই আমরা তাকে হত্যা করিনি। তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] হুওয়াইয়িসাহ্‌, মুহাইয়্যিসাহ্‌ ও আবদূর রহমানকে বলিলেন, তোমরা কি শপথের মাধ্যমে তোমাদের সাথীর রক্তপণ আদায়ের হকদার হইতে সক্ষম হইবে? তাঁরা বলিল, না। তখন তিনি বললেনঃ তাহলে ইয়াহুদীরা তোমাদের কাছে হলফ করে বলুক। তাঁরা তখন বলিল, তারাতো [ইয়াহূদী] মুসলিম নয়। তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] নিজের পক্ষ হইতে তাহাঁর দিয়্যাত [খুনের বদলা] আদায় করে দিলেন। এবং রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাদের একশ উটনী প্রদান করিলেন এবং ঐগুলো তাদের বাড়িতে পৌঁছিয়ে দেয়া হলো। সাহল [রাদি.] বলেন, ঐগুলির মধ্য হইতে একটি লাল রঙের উটনী আমাকে লাথি মেরেছিল। [ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪২০২ , ইসলামিক সেন্টার- ৪২০২]

এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৪২৪২

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর একজন আনসারী সাহাবার হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] খুনের ব্যাপারে হলফ করে বলা —– যা জাহিলী যুগে চলত তা পূর্বের ন্যায় বলবৎ রেখেছেন। [ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪২০৩ , ইসলামিক সেন্টার- ৪২০৩]

এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৪২৪৩

মুহাম্মাদ ইবনি রাফি [রহমাতুল্লাহি আলাইহি], ইবনি শিহাব থেকে একই সূত্রে হইতে বর্ণীতঃ

অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন এবং এ কথা অতিরিক্ত করিয়াছেন যে, —– রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] সে [দিয়্যাতের] ব্যাপারে নিষ্পত্তি করেছিলেন, যা তারা ইয়াহূদীদের উপর [হত্যার] দাবী উত্থাপন করছিল। [ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪২০৪, ইসলামিক সেন্টার- ৪২০৪]

এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৪২৪৪

হাসান ইবনি আলী হুলওয়ানী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

আনসারী লোকদের সূত্রে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে ইবনি জুরাইজ [রাদি.] এর হাদীসের অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। [ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৪২০৫, ইসলামিক সেন্টার ৪২০৫]

এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

২. অধ্যায়ঃ

শত্রু সৈন্য এবং মুরতাদদের বিচার

৪২৪৫

আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

উরাইনাহ্‌ গোত্রের কিছু সংখ্যক লোক মাদীনায় রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট এল। [সেখানের আবহাওয়া তাদের অনুকূলে না হওয়ায়] তারা অসুস্থ হয়ে পড়ল। এতে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাদেরকে বললেনঃ তোমরা ইচ্ছে করলে সদাকাহ্‌র ঐ সব কাছে যেতে পার এবং তার দুধ ও মূত্র পান করিতে পার। তারা তা-ই করিল এবং এতে তারা সুস্থ হয়ে গেল। এরপর তারা রাখালদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে তাদেরকে হত্যা করিল। পরিশেষে তারা ইসলাম ত্যাগ করে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর মাল সম্পদ নিয়ে পলায়ন করে। এ সংবাদ নবী [সাঃআঃ]-এর নিকট পৌঁছলে তিনি তাদের পিছনে লোক পাঠালেন, তাঁরা তাদেরকে গ্রেফতার করিল। এরপর তাদের হাত-পা কেটে দিল এবং তাদের চোখ উপড়ে ফেলল এবং তাদেরকে রৌদ্রে নিক্ষেপ করিল। এভাবে তারা মারা গেল। [ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪২০৬ , ইসলামিক সেন্টার- ৪২০৬]

এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৪২৪৬

আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

“উকল” গোত্রের আটজনের একটি দল রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট আসলো। তারা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর কাছে ইসলামের উপর বাইআত করিল। অতঃপর মাদীনার আবহাওয়া তাদের প্রতিকূল হওয়ায় তারা অসুস্থ হয়ে পড়লে এ ব্যাপারে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট অভিযোগ করিল। নবী [সাঃআঃ] বললেনঃ তোমরা কি আমাদের রাখালের সাথে গমন করে উটের মূত্র এবং দুগ্ধ পান করিতে পারবে?

তখন তারা বলিল, জী-হ্যাঁ। এরপর তারা বের হয়ে গেল এবং এর [উটের] মূত্র ও দুগ্ধ পান করিল। এতে তারা সুস্থ হয়ে গেল অতঃপর তারা রাখালকে হত্যা করে উটগুলো হাঁকিয়ে নিয়ে গেল। এ সংবাদ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট পৌঁছল। তিনি তাদের পিছনে লোক পাঠালেন। তাঁরা তাদেরকে পাকড়াও করে নিয়ে এল। তাদের প্রতি নির্দেশ জারি করা হলো। তখন তাদের হাত-পা কর্তন করা হলো এবং তপ্ত লৌহ শলাকা চোখে প্রবেশ করানো হলো। এরপর তাদেরকে রৌদ্রে নিক্ষেপ করা হলো। অবশেষে তারা মারা গেল।

ইবনি সাব্বাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] ….. বর্ণনা —- এর স্থলে —- উল্লেখ রয়েছে। রাবী বলেন, অতঃপর তাদের চোখগুলো উপড়ে ফেলা হলো। [ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪২০৭ , ইসলামিক সেন্টার- ৪২০৭]

এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৪২৪৭

আনাস ইবনি মালিক [রা.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] – এর নিকট উকল অথবা উরাইনাহ্‌ গোত্রের একদল লোক এলো। মাদীনার আবহাওয়া তাদের [বসবাসের] জন্য উপযোগী হয়নি। তখন রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] তাদেরকে লিকাহর [দুগ্ধবতী উটনীর] নির্দেশ দিলেন। তাদেরকে আরো নির্দেশ দিলেন এর মূত্র ও দুগ্ধ পান করার জন্য। এ হাদীসটি হাজ্জাজ ইবনি আবু উসমানের বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ অর্থে বর্ণিত হয়েছে।

রাবী বলেন যে, এবং তাদের চক্ষুসমূহ উপড়ে ফেলা হল আর তারা রৌদ্রে নিক্ষিপ্ত হল। তারা পানি পান করিতে চাইল, কিন্তু তাদেরকে পানি পান করানো হল না। [ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪২০৮, ইসলামিক সেন্টার- ৪২০৮]

এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৪২৪৮

আবু কিলাবাহ্‌ [র.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, একদা আমি উমর ইবনি আবদুল আযীয [রাদি.]-এর পিছনে বসা ছিলাম। তিনি জনগণের কাছে জানতে চাইলেন, তোমরা কাসামাহ্‌ [খুনের ব্যাপারে হলফ করা] সম্পর্কে কি বল? আম্বাসাহ [র.] বলিলেন, আমাদের কাছে আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] এমন হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। আমি বললাম, আনাস [রাদি.] বিশেষ করে আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করিয়াছেন যে, নবী [সাঃআঃ] –এর কাছে একদল লোক আগমন করিল। এরপর আনাস আইয়ূব এবং হাজ্জাজ এর অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেন।

আবু কিলাবাহ্‌ [র.] বলেন, আমি যখন হাদীসের বর্ণনা শেষ করলাম, তখন বললাম, হে আম্বাসাহ! আপনি কি আমার উপর মিথ্যার অভিযোগ আনলেন? তখন তিনি বলিলেন, না। আমার কাছে আনাস [রাদি.]-এরূপেই হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। হে সিরিয়াবাসী! তোমরা সর্বদাই কল্যাণের মধ্যে থাকিবে যতদিন তোমাদের মাঝে এই লোক বিদ্যমান থাকিবেন। অথবা [রাবীর সন্দেহ] তাহাঁর মত লোক তোমাদের মাঝে অবস্থান করবেন। [অর্থাৎ এ দ্বারা তিনি আবু কিলাবার স্মরণশক্তির প্রশংসা করিলেন।] [ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪২০৯, ইসলামিক সেন্টার- ৪২০৯]

এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৪২৪৯

আনাস ইবনি মালিক [রা.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর নিকট উকল সম্প্রদায়ের আটজন লোক এলো- এ হাদীস উপরে বর্ণিত হাদীসের মতই, শুধু “তাদেরকে তিনি দাগ দেননি” [তপ্ত লৌহ শলাকা দ্বারা কর্তিত স্থানে পুড়ে দেয়া] এ কথাটুকু অতিরিক্ত বর্ণনা করিয়াছেন। [ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪২১০, ইসলামিক সেন্টার- ৪২১০]

এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৪২৫০

আনাস ইবনি মালিক [রা.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, উরাইনাহ্‌ গোত্রের একদল লোক রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর নিকট আগমন করে ইসলাম গ্রহণ করিল এবং তাহাঁর কাছে বাইআত নিল। মাদীনায় অবস্থানকালে তাদের মস্তিষ্কে বিভ্রাটজনিত রোগ দেখা দিল। [–] শব্দের অর্থ [–] মস্তিষ্কের রোগ, কিংবা হৃৎপিণ্ডের রোগ উদরী রোগ। এরপর তিনি উল্লিখিত হাদীসের বর্ণনাকারীর অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেন। শুধু এতটুকু অতিরিক্ত বর্ণনা করেন যে, তাহাঁর [নবী সঃ-এর] কাছে তখন বিশজনের মত আনসারী যুবক ছিল। তাদেরকে তিনি ওদের [ধরার] জন্য প্রেরণ করিলেন। এবং তাদের সঙ্গে একজন এমন অভিজ্ঞ লোক প্রেরণ করিলেন, যিনি তাদের পদচিহ্ন দেখে গন্তব্য স্থল নির্ণয় করিতে সক্ষম। [ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪২১১, ইসলামিক সেন্টার- ৪২১১]

এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৪২৫১

আনাস [রা.] হইতে বর্ণীতঃ

হাম্মাম এর হাদীসে উল্লেখ রয়েছে যে, উরাইনাহ্‌ গোত্রের একদল লোক নবী [সাঃআঃ]-এর নিকট আগমন করিল। আর সাঈদ [রাদি.]-এর হাদীসে উক্‌ল এবং উরাইনাহ্‌ এর কথা উল্লেখ আছে। এরপর তিনি উল্লেখিত হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেন। [ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪২১২, ইসলামিক সেন্টার- ৪২১২]

এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৪২৫২

আনাস [রা.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] ঐ লোকদের চোখে গরম লোহা ঢুকিয়ে দেন। কেননা তারা রাখালদের চক্ষুসমূহে গরম লোহা ঢুকিয়ে দিয়েছিল। [ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪২১৩, ইসলামিক সেন্টার- ৪২১৩]

এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৩. অধ্যায়ঃ

পাথর ও অন্যান্য ধারালো কর্তনকারী ও ভারী জিনিস দ্বারা হত্যা করার দায়ে কিসাস আরোপিত হইবে এবং মহিলা কর্তৃক পুরুষকে হত্যার দায়েও কিসাস আরোপিত হইবে

৪২৫৩

আনাস ইবনি মালিক [রা.] হইতে বর্ণীতঃ

একদা এক ইয়াহূদী একটি মেয়েকে কয়েকটি রূপার টুকরার জন্য পাথর দ্বারা হত্যা করিল। বর্ণনাকারী বলেন, এরপর তাকে এমন অবস্থায় নবী [সাঃআঃ]-এর নিকট আনা হল যে, তখনও তার জীবন অবশিষ্ট ছিল। তখন তিনি তাকে জিজ্ঞেস করিলেন, তোমাকে কি অমুক ব্যক্তি মেরেছে? সে তখন মাথা নেড়ে উত্তর দিল, না। এরপর তিনি তাকে দ্বিতীয়বার জিজ্ঞেস করিলেন, তখনও সে মাথা নেড়ে উত্তর দিল, না। আবার তিনি তাকে তৃতীয়বার জিজ্ঞেস করিলেন, তখন সে বলিল, হ্যাঁ এবং মাথা নেড়ে ইঙ্গিত করিল। রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] [ইয়াহূদীকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে হত্যার কথা স্বীকার করিল] তখন তাকে তিনি দুটি পাথরের মাঝে চাপা দিয়ে হত্যা করিলেন। [ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪২১৪, ইসলামিক সেন্টার- ৪২১৪]

এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৪২৫৪

শুবাহ্‌ হইতে বর্ণীতঃ

উল্লিখিত সানাদে অনুরূপ বর্ণনা করেন। আর ইবনি ইদ্রীসের বর্ণিত হাদীসে উল্লেখ আছে যে, [–] [তখন তিনি তার মাথা দুটি পাথরের মাঝে রেখে পিষে দিলেন।] [ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪২১৫, ইসলামিক সেন্টার- ৪২১৫]

এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৪২৫৫

আনাস [রা.] হইতে বর্ণীতঃ

এক ইয়াহূদী ব্যক্তি কোন এক আনসারী মেয়েকে তার গহনার জন্য হত্যা করিল। এরপর তাকে একটি কূপে ফেলে দিল এবং তার মাথা পাথর দ্বারা পিষে দিল। এরপর তাকে পাকড়াও করা হল এবং রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট আনা হল। তিনি নির্দেশ দিলেন, তার মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত তার উপর পাথর নিক্ষেপ করার জন্য। তখন তার প্রতি পাথর নিক্ষেপ করা হল। অবশেষে সে মারা গেল। [ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪২১৬, ইসলামিক সেন্টার- ৪২১৬]

এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৪২৫৬

ইসহাক্ ইবনি মানসূর [র.] আইয়ূব [র.] হইতে বর্ণীতঃ

উক্ত সানাদে অনুরূপভাবে হাদীসটি বর্ণনা করেন। [ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪২১৭, ইসলামিক সেন্টার- ৪২১৭]

এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৪২৫৭

আনাস ইবনি মালিক [রা.] হইতে বর্ণীতঃ

একদা এক ক্রীতদাসীকে এমন অবস্থায় পাওয়া গেল যে, তার মাথা দুটি পাথরের মাঝে রেখে পিষে দেয়া হয়েছে। তখন তারা [পরিবারের লোকেরা] তাকে জিজ্ঞেস করিল, কে তোমাকে এমন করেছে, অমুক-অমুক ব্যক্তি? এভাবে [জিজ্ঞেস করিতে করিতে] তারা এক ইয়াহূদীর নাম উল্লেখ করিল। তখন সে মাথা নেড়ে [হ্যাঁ সূচক] উত্তর দিল। তখন ইয়াহূদীকে আটকানো হল। সে তা স্বীকার করিল। অতএব রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] তার মাথা পাথর দ্বারা পিষে দেয়ার নির্দেশ দিলেন। [ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪২১৮, ইসলামিক সেন্টার- ৪২১৮]

এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৪. অধ্যায়ঃ

যখন কোন ব্যক্তি অপর কোন ব্যক্তির জীবন অথবা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের উপর আক্রমণ করে, তখন যদি আক্রান্ত ব্যক্তি তা প্রতিহত করে এবং প্রতিহত করার সময় আঘাতকারীর জীবন অথবা অঙ্গের ক্ষতিসাধন করে, তবে এর জন্য তাকে কোন প্রকার ক্ষতিপূরণ দিতে হইবে না

৪২৫৮

ইমরান ইবনি হুসায়ন [রা.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, ইলায়া ইবনি মুন্‌ইয়া অথবা ইবনি উমাইয়াহ্‌ [রাদি.] এক ব্যক্তির সাথে ঝগড়ায় লিপ্ত হল। তখন একজন অপর জনের হাতে দাঁত দিয়ে কামড় বসিয়ে দিল। সে যখন আপন হাত তার মুখ থেকে সজোরে টেনে আনল তখন তার সম্মুখভাগের একটি দাঁত খসে গেল। ইবনি মুসান্না [একটির স্থলে] দুটি দাঁত বলেছেন। উভয়েই তখন নবী [সাঃআঃ]-এর কাছে এসে পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করিল। তখন তিনি বললেনঃ তোমাদের একজন কি এমনভাবে দাঁত দিয়ে কামড় দিলে যেমনভাবে উট কামড় দেয়? তবে এরজন্য কোন [দিয়্যাত] ক্ষতিপূরণ নেই। {দ্রষ্টব্য হাদীস ৪৩৭০} [ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪২১৯, ইসলামিক সেন্টার- ৪২১৯]

এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৪২৫৯

ইবনি ইয়ালা [রা.]-এর সূত্রে নবী [সঃ] হইতে বর্ণীতঃ

ইবনি ইয়ালা [রাদি.]-এর সূত্রে নবী [সাঃআঃ] থেকে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেন। [ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪২২০, ইসলামিক সেন্টার- ৪২২০]

এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৪২৬০

ইমরান ইবনি হুসায়ন [রা.] হইতে বর্ণীতঃ

এক ব্যক্তি অপর ব্যক্তির হাতে কামড় বসিয়ে দিল। তখন সে সজোরে তার হাত টেনে নিল। এতে সে ব্যক্তির দাঁত খসে পড়ল। এ ব্যাপারে নবী [সাঃআঃ]-এর নিকট অভিযোগ দায়ের করা হল। তখন তিনি তা নাকচ করে দেন এবং বলেন, তুমি তো প্রতিপক্ষের গোশ্‌ত খেতে চেয়েছিলে। [ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪২২১, ইসলামিক সেন্টার- ৪২২১]

এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৪২৬১

সাফওয়ান ইবনি ইয়ালা [রা.] হইতে বর্ণীতঃ

ইয়ালা ইবনি মুন্‌ইয়া [রাদি.]-এর এক শ্রমিকের হাতে এক ব্যক্তি কামড় বসিয়ে দিল। তখন সে সজোরে তার হাত টেনে নিল। এতে ঐ ব্যক্তির দাঁত খসে পড়ল। নবী [সাঃআঃ]-এর নিকট এ ব্যাপারে মুকাদ্দমা দায়ের করা হল। তখন তিনি তা নাকচ করে দেন এবং বলেন যে, তুমি তো তার হাত এমনভাবে চিবাতে চেয়েছিলে যেমনভাবে উট চিবায়। {দ্রষ্টব্য হাদীস ৪৩৭১} [ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪২২২, ইসলামিক সেন্টার- ৪২২২]

এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৪২৬২

ইমরান ইবনি হুসায়ন [রা.] হইতে বর্ণীতঃ

এক ব্যক্তি অপর এক ব্যক্তির হাতে কামড় বসিয়ে দিল। সে তখন তার হাত সজোরে টেনে নিল। এতে তার একটি অথবা দুটি দাঁত খসে পড়ল। সে রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট এ ব্যাপারে অভিযোগ দায়ের করিল। তখন রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ তুমি আমার কাছে কি চাও? তুমি কি চাও যে, আমি তাকে নির্দেশ করবো তার হাত তোমার মুখে প্রবেশ করিয়ে দেবে, আর তুমি তা কামড়াবে যেমন উট চিবিয়ে থাকে? তুমি ইচ্ছে করলে তোমার হাত তার মুখের মধ্যে প্রবেশ করিয়ে দিতে পার, সে তখন তা দাঁতে কর্তন করিবে, এরপর তুমিও তা সজোরে টেনে নিও। {দ্রষ্টব্য হাদীস ৪৩৬৬} [ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪২২৩, ইসলামিক সেন্টার- ৪২২৩]

এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৪২৬৩

ইয়ালা ইবনি মুন্‌য়াহ্‌ [রা.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ]-এর নিকট এমন এক ব্যক্তি এসে অভিযোগ দায়ের করিল-যে অপর এক ব্যক্তির হাতে কামড় বসিয়ে দিয়েছিল। সে যখন তার হাত সজোরে টেনে নিল। এতে তার দুটি দাঁত পড়ে গেল। অর্থাৎ-যে ব্যক্তি দাঁত দ্বারা কামড় দিয়েছিল তার দাঁত পড়ে গেল। বর্ণনাকারী বলেন, নবী [সাঃআঃ] তার এ অভিযোগ নাকচ করে দিলেন এবং বলিলেন, তুমি তার হাত এমনভাবে চর্বন করিতে চেয়েছিলে যেমন উট চর্বন করে থাকে। [ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪২২৪, ইসলামিক সেন্টার- ৪২২৪]

এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৪২৬৪

ইয়ালা ইবনি উমাইয়াহ্‌ [রা.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি নবী [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে তাবূকের যুদ্ধ করেছি। বর্ণনাকারী বলেন, ইয়ালা বলিতেন, ঐ যুদ্ধ আমার নিকট একটি নির্ভরযোগ্য [পুণ্যের] কাজ ছিল। আতা [র.] ….. সাফওয়ান [রাদি.] হইতে বর্ণনা করেন যে, ইয়ালা [রাদি.] বলেছেন, আমার একজন শ্রমিক ছিল সে এবং অপর এক ব্যক্তি পরস্পর সংঘর্ষে লিপ্ত হল। এতে একজন অপরজনের হাতে কামড় বসিয়ে দিল। বর্ণনাকারী বলেন, সাফওয়ান [রাদি.] আমাকে খবর দিয়েছেন তাদের দুজনের মধ্যে কে অন্যের হাতে কামড় দিয়েছিল। যে ব্যক্তির হাতে কামড় দিয়েছিল সে ব্যক্তি কামড় দাতার মুখ থেকে তার হাত সজোরে টেনে নিল। এতে তার সম্মুখের দুটি দাঁতের একটি দাঁত পড়ে গেল। তখন উভয়েই নবী [সাঃআঃ]-এর নিকট এসে অভিযোগ পেশ করিল, তখন তিনি দাঁত পড়ে যাওয়ার অভিযোগ নাকচ করে দিলেন। [ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪২২৫, ইসলামিক সেন্টার- ৪২২৫]

এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৪২৬৫

ইবনি জুরায়জ [র.] হইতে একই সূত্রে হইতে বর্ণীতঃ

ইবনি জুরায়জ [র.] হইতে একই সূত্রে উল্লেখিত হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেন। [ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪২২৬, ইসলামিক সেন্টার- ৪২২৬]

এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৫. অধ্যায়ঃ

দাঁত এবং এর অনুরূপ ব্যাপারে কিসাস [বদলা] সাব্যস্ত করার বর্ণনা

৪২৬৬

আনাস [রা.] হইতে বর্ণীতঃ

রাবী [রাদি.]-এর ভগ্নি হারিসার মাতা এক ব্যক্তিকে আহত করিল। এ ব্যাপারে তারা [তার আত্মীয়রা] নবী [সাঃআঃ]-এর নিকট অভিযোগ আনলো। তখন রসূসুল্লাহ্‌ [সাঃআঃ] বললেনঃ আল্‌ কিসাস! আল্‌ কিসাস [বদলা]! অর্থাৎ-এতে কিসাস আরোপিত হইবে। তখন উম্মু রাবী বলিলেন, হে আল্লাহ্‌র রসূল! অমুকের [উম্মু হারিসার] নিকট হইতে কি কিসাস নেয়া হইবে? আল্লাহ্‌র কসম! তাহাঁর নিকট হইতে কিসাস না নেয়া হোক। তখন রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ সুব্‌হানাল্লাহ! [অর্থাৎ- তিনি আশ্চর্যান্বিত হয়ে বলিলেন] হে উম্মু রাবী ! কিসাস নেয়া তো আল্লাহ্‌র কিতাবের নির্দেশ। তিনি বলিলেন, জী না। আল্লাহ্‌র শপথ নিয়ে আরয করছি, তার নিকট হইতে কখনও কিসাস [বদলা] না নেয়া হোক। বর্ণনাকারী বলেন, তিনি বারবার এ কথা বলছিলেন। পরিশেষে আহত ব্যক্তির ওয়ারিশগণ [দিয়্যাত] ক্ষতিপূরণ নিতে সম্মত হল। তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ আল্লাহ্‌র বান্দাগণের মধ্যে এমনও লোক আছে, যদি সে আল্লাহ্‌র নামে শপথ করে কোন কথা বলে তখন আল্লাহ্‌ তাআলা তা সত্যে পরিণত করে দেন। [ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪২২৭, ইসলামিক সেন্টার- ৪২২৭]

এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৬. অধ্যায়ঃ

মুসলিম ব্যক্তির হত্যা কি অবস্থায় বৈধ

৪২৬৭

আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ এমন মুসলিমকে হত্যা করা বৈধ নয়, যে ব্যক্তি সাক্ষ্য দেয় যে, আল্লাহ ছাড়া কোন মাবুদ নেই এবং আমি আল্লাহর রসূল। কিন্তু তিনটি কাজের যে কোন একটি করলে [তা বৈধ]।

১. বিবাহিত ব্যক্তি ব্যভিচারে লিপ্ত হলে; ২. জীবনের বিনিময়ে জীবন, অর্থাৎ কাউকে হত্যা করলে; ৩. এবং স্বীয় ধর্ম পরিত্যাগকারী, যে [মুসলিমদের] দল থেকে বিচ্ছিন্ন [মুরতাদ] হয়ে যায়। [ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪২২৮, ইসলামিক সেন্টার- ৪২২৮]

এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৪২৬৮

আমাশ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

আমাশ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে উল্লেখিত সানাদে অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেন। [ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪২২৯, ইসলামিক সেন্টার- ৪২২৯]

এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৪২৬৯

আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, একদা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদের মাঝে দাঁড়িয়ে বললেনঃ সে সত্তার কসম যিনি ব্যতীত অন্য কোন মাবূদ নেই; এমন কোন মুসলিম ব্যক্তিকে হত্যা করা বৈধ নয় যে সাক্ষ্য দেয় যে, আল্লাহ ব্যতীত অন্য কোন মাবুদ নেই এবং আমি আল্লাহর রসূল। কিন্তু তিন প্রকার ব্যক্তি ব্যতীত- ১. যে বক্তি ইসলাম ধর্ম পরিত্যাগ করে মুসলিমদের দল পরিত্যাগকারী হয়। আহ্মাদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] ……….. অথবা ………. শব্দ বর্ণনায় সন্দেহ করিয়াছেন; ২. বিবাহিত ব্যভিচারী এবং ৩. জীবনের বিনিময়ে জীবন। অর্থাৎ- কিসাস গ্রহণ।

আমাশ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন যে, আমি ইব্রাহীমের নিকট হাদীসটি বর্ণনা করলাম, তিনিও আসওয়াদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর সূত্রে আয়িশা [রাদি.] থেকে অনুরূপ বর্ণনা করেন। [ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪২৩০, ইসলামিক সেন্টার- ৪২৩০]

এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৪২৭০

হাজ্জাজ ইবনি শাইর ও কাসিম ইবনি যাকারিয়্যা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে উভয় সানাদে সুফ্ইয়ান [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেন। তবে তিনি তাহাঁর বর্ণিত হাদীসে ………… [সে সত্তার কসম যিনি ব্যতীত কোন মাবূদ নেই] এ কথার উল্লেখ করেননি। [ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪২৩১, ইসলামিক সেন্টার- ৪২৩১]

এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৭. অধ্যায়ঃ

যে ব্যক্তি সর্বপ্রথম হত্যার প্রচলন করিল- তার পাপের বর্ণনা

৪২৭১

আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যদি কোন ব্যক্তি অত্যাচারিত হয়ে খুন হয়, তবে সে খুনের একাংশ [পাপ] আদম [আঃ]-এর প্রথম পুত্র [কাবিল]-এর উপর বর্তায়। কেননা সে সর্বপ্রথম খুনের প্রথা প্রচলন করেছিল। [ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪২৩২, ইসলামিক সেন্টার- ৪২৩২]

এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৪২৭২

আমাশ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

উক্ত সানাদে হাসীস বর্ণনা করিয়াছেন। তবে জারীর এবং ইসহাক্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর হাদীসে …… [কেননা সে খুনের প্রথা প্রচলন করেছে] এ কথার উল্লেখ আছে। কিন্তু …… [প্রথম] কথাটির উল্লেখ নেই।[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪২৩৩, ইসলামিক সেন্টার- ৪২৩৩]

এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৮. অধ্যায়ঃ

পরকালে হত্যার পরিণাম, কিয়ামাতের দিন এর বিচারই প্রথম করা হইবে

৪২৭৩

আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কিয়ামাত দিবসে মানুষের মধ্যে সর্বপ্রথম খুনের বিচার করা হইবে। [ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪২৩৪, ইসলামিক সেন্টার- ৪২৩৪]

এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৪২৭৪

আবদুল্লাহ [রাদি.]-এর সূত্রে নবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণীতঃ

অনুরূপ বর্ণনা করেন। তবে তাদের কেউ কেউ শুবাহ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে …………… [বিচার করা হইবে] কথাটি বর্ণনা করিয়াছেন। আর কেউ কেউ ………………. [মানুষের মাঝে হুকুম [বিচার] করা হইবে] কথাটি বর্ণনা করিয়াছেন। [ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪২৩৫, ইসলামিক সেন্টার- ৪২৩৫]

এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৯. অধ্যায়ঃ

হত্যা, সম্মান এবং মালের হক বিনষ্ট করা হারাম হওয়ার ব্যাপারে কঠোর হুঁশিয়ারী

৪২৭৫

আবু বাকরাহ [রাদি.]-এর সূত্রে নবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেছেনঃ কাল আবর্তিত হয়ে পূর্বাবস্থায় ফিরে এসেছে, যে অবস্থায় আল্লাহ তাআলা আকাশসমূহ ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছিলেন। এক বছর হয় বার মাসে, তন্মধ্যে চারটি নিষিদ্ধ মাস। [অর্থাৎ- তাতে যুদ্ধ বিগ্রহ করা হারাম] এর তিন মাস হল ধারাবাহিক- ১. যুল কাদা, ২. যুলহাজ্জাহ্ এবং ৩. মুহাররাম। আর রজবও নিষিদ্ধ মাস, যা জামাদিউস্ সানী এবং শাবানের মাঝে অবস্থিত। এর পর তিনি বললেনঃ এটি কোন্ মাস? আমরা বললাম, আল্লাহ ও তাহাঁর রসূল [সাঃআঃ] এ ব্যাপারে অধিক জানেন। বর্ণনাকারী বলেন, এরপর তিনি কিছুক্ষণ চুপ রইলেন। আমরা ভাবলাম যে, তিনি হয়ত এ মাসের নতুন কোন নাম বলবেন। এরপর তিনি বললেনঃ এ-কি “যুলহাজ্জাহ্” মাস নয়? আমরা বললাম, জী-হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ এ কোন্ শহর? আমরা বললাম, আল্লাহ ও তাহাঁর রসূল [সাঃআঃ] অধিক জানেন। বর্ণনাকারী বলেন, তিনি কিছুক্ষণ চুপ রইলেন। এতে আমরা ধারণা করলাম যে, তিনি হয়ত এর অপর কোন নাম রাখবেন। তিনি বললেনঃ এ-কি [মাক্কা] শহর নয়। আমরা বললাম, জী-হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ এ কোন্ দিন? আমরা বললাম আল্লাহ ও তাহাঁর রসূল [সাঃআঃ] অধিক জ্ঞাত। বর্ণনাকারী বলেন, এরপর তিনি কিছুক্ষণ চুপ রইলেন। এতে আমরা ধারণা করলাম যে, তিনি হয়ত এর অন্য কোন নাম বলবেন। তিনি বললেনঃ এ-কি ইয়াওমুন্নাহার [ঈদুল আযহার দিন] নয়? আমরা বললাম, জী-হ্যাঁ, হে আল্লাহ্‌র রসূল! তিনি বললেনঃ তোমাদের জান ও মাল এবং রাবী মুহাম্মাদ বলেন, আমি ধারণা করি এর সাথে তিনি তোমাদের মান সম্ভ্রম এ কথা যুক্ত করে বললেনঃ এগুলো তেমন মর্যাদাপূর্ণ যেমন তোমাদের কাছে আজকার দিবস, এ নগর এবং এ মাসও পবিত্র। তোমরা খুব শীঘ্রই তোমাদের প্রভুর সাথে মিলিত হইবে। তখন তোমাদেরকে তোমোদের কৃতকর্ম সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হইবে। অতএব তোমরা আমার পরে পথভ্রষ্ট হয়ে একে অন্যের সাথে ঝগড়া-ফাসাদে লিপ্ত হয়ো না। সাবধান! তোমাদের উপস্থিতগণ অবশ্যই অনুপস্থিতদের কাছে আমার এ বাণী পৌছে দিবে। সম্ভবতঃ উপস্থিত ব্যক্তি যাদের কাছে আমার বাণী পৌছে দিবে, তাঁরা কেউ কেউ হয়ত এখানকার শ্রোতাদের চেয়ে অধিকতর সংরক্ষণকারী হইবে। এরপর তিনি বললেনঃ ওহে! শুনো, আমি কি আল্লাহর নির্দেশ পৌছে দেইনি?

ইবনি হাবীব তাহাঁর বর্ণনায় ………………….. [রজব নিষিদ্ধ মাস] বর্ণনা করিয়াছেন। আবু বকর [রাদি.]-এর অপর বর্ণনায় …………… [তোমরা আমার পরে ধর্মান্তরিত হয়ো না] বর্ণিত হয়েছে। [ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪২৩৬, ইসলামিক সেন্টার- ৪২৩৬]

এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৪২৭৬

আবু বাক্রাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, যখন ঐদিন [ইয়াওমুন্নাহার] উপস্থিত হল তখন নবী [সাঃআঃ] নিজের উটের উপর উঠলেন। এক ব্যক্তি তাহাঁর উটের লাগাম ধরে রেখেছিল। তখন তিনি বললেনঃ তোমরা জান কি, আজ কোন দিন? তাঁরা বলিলেন, আল্লাহ ও তাহাঁর রসূল [সাঃআঃ] অধিক জ্ঞাত। আমরা ধারণা করলাম যে, তিনি হয়ত এ নাম ব্যতীত অপর কোন নাম বলবেন। এরপর তিনি বললেনঃ আজকের দিন কি ইয়াওমুন্নাহারের নয়? আমরা বললাম, জী-হ্যা, হে আল্লাহর রসূল। তিনি বললেনঃ এটা কোন মাস? আমরা বললাম, আল্লাহ ও তাহাঁর রসূল [সাঃআঃ]-ই সবচেয়ে ভাল জানেন। তিনি বললেনঃ এটা কি যিলহাজ্জ মাস নয়? আমরা বললাম, জী-হ্যাঁ, হে আল্লাহর রসূল! তিনি বললেনঃ এটি কোন শহর? আমরা বললাম, আল্লাহ ও তাহাঁর রসূল [সাঃআঃ]-ই অধিক জ্ঞাত। বর্ণনাকারী বলেন, এতে মনে করলাম যে, তিনি হয়ত এর অন্য কোন নাম বলবেন। এরপর তিনি বলিলেন, এ-কি [মাক্কাহ্] শহর নয়। আমরা বললাম, জী-হ্যাঁ, হে আল্লাহর রসূল! তখন তিনি বললেনঃ নিশ্চয় তোমাদের জান-মাল এবং সম্মান [বিনষ্ট করা] তোমাদের উপর এরূপ হারাম, যেরূপ তোমাদের জন্য আজকের দিন, এ মাস এবং এ নগরের পবিত্রতা বিনষ্ট করা হারাম। তোমাদের উপস্থিতগণ অনুপস্থিতদের কাছে আমার এ বাণী অবশ্যই পৌঁছে দিবে। এরপর তিনি কাল ও সাদা রং-মিশ্রিত দুটি ছাগলের দিকে দৃষ্টিপাত করিলেন এবং ঐ দুটি যাবাহ করিলেন এবং যাবাহকৃত ছাগলের এক অংশ আমাদের মাঝে বন্টন করে দিলেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪২৩৭, ইসলামিক সেন্টার- ৪২৩৭]

এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৪২৭৭

আবু বাকরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, যখন সেদিন [ইয়াওমুন্নাহারের দিন] উপস্থিত হল তখন নবী [সাঃআঃ] একটি উটের উপর উপবেশন করিলেন। রাবী বলেন, এক ব্যক্তি তার লাগাম ধরে রেখেছিল। রাবীর সন্দেহ …….…… শব্দের পরিবর্তে ………..…. [লাগাম] শব্দ বর্ণনা করিয়াছেন। এরপর তিনি ইয়াযীদ ইবনি যুরাই [রাদি.]-এর হাদীসের অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেন। [ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪২৩৮, ইসলামিক সেন্টার- ৪২৩৮]

এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৪২৭৮

আবু বাক্রাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, ইয়াওমুন্নাহার- অর্থাৎ- ঈদুল আযহার দিন আমাদের সামনে রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এক ভাষণে বললেনঃ আজ কোন্দিন? এরপরবর্ণনাকারীগণ, ইবনি আওনেরহাদীসেরঅনুরূপবর্ণনাকরিলেন। কিন্তুতারা …..…………. [তোমাদের মান-সম্মান] এ শব্দটি উল্লেখ করেননি এবং ……………. [অতঃপর তিনি দুটি ছাগলের দিকে দৃষ্টিপাত করিলেন] এবং এর পরবর্তী অংশটুকুও উল্লেখ করেননি। আর তিনি তাহাঁর বর্ণিত হাদীসে তোমাদের এ দিন, এ মাস এবং এ শহরের পবিত্রতার ন্যায় থেকে নিয়ে- ……………………………… [যেদিন তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের সাথে সাক্ষাৎ করিবে। শুনো! আমি কি তোমাদের কাছে আল্লাহর বাণী পৌঁছে দিয়েছি? তখন সকলেই বললো, হ্যাঁ। তখন তিনি বললেনঃ হে আল্লাহ! আপনি সাক্ষী থাকুন] এ পর্যন্ত বর্ণনা করিয়াছেন। [ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪২৩৯, ইসলামিক সেন্টার- ৪২৩৯]

এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

১০. অধ্যায়ঃ

হত্যার স্বীকারোক্তি দেয়াএবং নিহত ব্যক্তির অভিভাবকদের কিসাসের দাবি করা বৈধ, হত্যাকারী ব্যক্তির নিহত ব্যক্তির অভিভাবকের নিকট ক্ষমার আবেদন করা মুস্তাহাব

৪২৭৯

আলকামাহ্ ইবনি ওয়ায়িল [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তাহাঁর পিতা তার কাছে বর্ণনা করিয়াছেন, আমি একদা নবী [সাঃআঃ]-এর সাথে বসেছিলাম। এমন সময় একটি লোক অপর এক ব্যক্তিকে চামড়ার দড়ি দিয়ে বেঁধে টেনে নিয়ে আগমন করিল এবং বলিল, হে আল্লাহর রসূল! এ ব্যক্তি আমার ভাইকে হত্যা করেছে। তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ তুমি কি তাকে হত্যা করেছ? [তখন সে বলিল, যদি সে তা স্বীকার না করতো, তবে আমি তার উপর সাক্ষী দাঁড় করাতাম।] সে তখন বলিল, হ্যাঁ আমি তাকে হত্যা করেছি। তিনি জিজ্ঞেস করিলেন : তুমি তাকে কিভাবে হত্যা করেছ? সে বলিল, আমি এবং সে গাছের পাতা সংগ্রহ করছিলাম। এমন সময় সে আমাকে গালি দিল। এতে আমর রাগ চড়ে গেল। তখন আমি কুঠার দ্বারা তার মাথায় আঘাত করলাম। এভাবে আমি তাকে হত্যা করেছি। তখন নবী [সাঃআঃ] তাকে বললেনঃ তোমার কি এমন কোন সম্পদ আছে যদ্দ্বারা দিয়্যাত [রক্তপণ] পরিশোধ করিবে? তখন সে বলিল, আমার কাছে একটি কম্বল ও কুঠার ব্যতীত আর কিছুই নেই। তখন তিনি বললেনঃ তোমার সম্প্রদায়ের লোকেরা কি তোমার নিকট থেকে এগুলো কিনে নিয়ে তোমাকে মুক্ত করিয়ে নেবে? সে বলিল, আমার সম্প্রদায়ের কাছে আমার এতখানি মর্যাদা নেই। অতএব তিনি তার বন্ধনের দড়ি নিহত ব্যক্তির উত্তরাধিকারদের দিকে ছুঁড়ে দিলেন এবং বললেনঃ তুমি তোমার সাথীকে আটকে রাখ। সে তখন তাকে নিয়ে চলে গেল। যখন সে পিছনের দিকে যাচ্ছিল, তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, যদি সে তাকে হত্যা করে-তবে সেও তার সমকক্ষ হয়ে গেল। এ কথা শুনে সে ফিরে এলো এবং বলিল, হে আল্লাহর রসূল! আমি শুনলাম, আপনি বলছেন : যদি সে তাকে হত্যা করে তবে সে তার সমান হয়ে যাবে। আমি তো তাকে আপনার নির্দেশেই ধরে এনেছিলাম। তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ তুমি কি এ চাওনা যে, সে তোমার এবং তোমার ভাইয়ের পাপের বোঝা গ্রহণ করুক। তখন সে বলিল, তাই কি হইবে? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। তখন সে বলিল, যদি তাই হয়, [তবে ভাল]। এ বলে সে তার বন্ধনের দড়ি নিক্ষেপ করিল এবং তাকে মুক্ত করে দিল। [ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪২৪০, ইসলামিক সেন্টার- ৪২৪০]

এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৪২৮০

ওয়ায়িল [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট এক ব্যক্তিকে হাযির করা হল, যে অপর এক ব্যক্তিকে হত্যা করেছিল। তখন তিনি নিহত ব্যক্তির ওয়ারিসকে তার কাছে হইতে কিসাস গ্রহণের অনুমতি দিলেন। তখন সেতাকে নিয়ে চলল এমনঅবস্থায় যে, তার গলায় একটি চামড়ার দড়ি ছিল, যদ্দ্বারা তাকে টেনে নিয়ে যাচ্ছিল। যখন সে ফিরে যাচ্ছিল তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ হত্যাকারী ও নিহত ব্যক্তি উভয়েই জাহান্নামী। বর্ণনাকারী বলেন, তখন এক লোক ঐ ব্যক্তির সাথে গিয়ে মিলিত হল এবং তাকে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর বাণী শোনাল। সে তখন হত্যাকারীকে ছেড়ে দিল।

ইসমাঈল ইবনি সালিম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, আমি এ ঘটনা হাবীব ইবনি সাবিত [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর নিকট বর্ণনা করলাম। তখন তিনি বলিলেন, আমাকে ইবনি আশ্ওয়া [রাদি.] বর্ণনা করিয়াছেন যে, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] হত্যাকারীকে ক্ষমা করে দেয়ার জন্য তাকে [ইতোপূর্বে] বলেছিলেন, কিন্তু সে তা অস্বীকার করেছিল। [ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪২৪১, ইসলামিক সেন্টার- ৪২৪১]

এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

১১. অধ্যায়ঃ

গর্ভের সন্তানের দিয়্যাত এবং ভুলবশত হত্যা এবং ভুলসদৃশ ইচ্ছাকৃত হত্যার দিয়্যাত [রক্তপণ], অপরাধীর ওয়ারিসগণের উপর আবশ্যক হওয়া সম্পর্কে

৪২৮১

আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

হুযায়ল গোত্রের দুজন মহিলা একে অপরের প্রতি তীর নিক্ষেপ করিল তাতে আহত মহিলার গর্ভপাত হয়ে গেল। তখন নবী [সাঃআঃ] এতে [দন্ড স্বরূপ আহতকারী মহিলাকে] একটি গোলাম অথবা একটি দাসী আযাদ করে দেয়ার হুকুম দিলেন। [ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪২৪২, ইসলামিক সেন্টার- ৪২৪২]

এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৪২৮২

আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, যে ব্যক্তি বানূ লিহ্ইয়ান গোত্রের এক মহিলার গর্ভপাত ঘটানোর জন্য দায়ী ছিল রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এ অভিযুক্ত ব্যক্তির প্রতি একটি গোলাম অথবা একটি দাসী প্রদানের নির্দেশ দেন। এরপর যে মহিলাকে [ক্ষতিপূরণ হিসেবে] গোলাম প্রদানের নির্দেশ দিয়েছিলেন, সে মরে গেল। তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ফায়সালা দিলেন যে, তার পরিত্যক্ত সম্পদ তার সন্তার ও স্বামীর। আর হত্যাকারীর ওয়ারিসগণের উপর দিয়াত [রক্তপণ] প্রদানের হুকুম আরোপিত হইবে। [ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪২৪৩, ইসলামিক সেন্টার- ৪২৪৩]

এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৪২৮৩

আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, হুযায়ল গোত্রের দুজন মহিলা পরস্পর সংঘর্ষে লিপ্ত হল। এতে একজন অপরজনকে পাথর দ্বারা আঘাত করিল। এর দ্বারা সে ঐ মহিলা ও তার গর্ভের সন্তানকে হত্যা করে ফেলল। তখন নিহত মহিলার উত্তরাধিকারীরা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর কাছে অভিযোগ করিল। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] হুকুম দিলেন যে, সন্তানের দিয়্যাত হল একটি দাস কিংবা-দাসী প্রদান করা। নিহত মহিলার দিয়্যাত [রক্তপণ] হত্যাকারী মহিলার ওয়ারিসগণের উপর আরোপিত হইবে। আর [নিহত] মহিলার ওয়ারিস হইবে তার সন্তান এবং তার সাথে অন্য ওয়ারিসগণ। হামাল ইবনি নাবিগাতুল হযালী [রাদি.] বলিলেন, হে আল্লাহর রসূল! আমরা কিভাবে এর ক্ষতিপূরণ প্রদান করবো, যে পান করেনি, খায়নি, কথা বলেনি এবং শব্দও করেনি? সে তো এলো আর গেল। এমন ছন্দযুক্ত বাক্যবলার কারণে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ এ যেন গণকদের ভাই।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪২৪৪, ইসলামিক সেন্টার- ৪২৪৪]

এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৪২৮৪

আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, দুজন মহিলা পরস্পর সংঘর্ষে লিপ্ত হল …… এরপর পূর্ববর্তী হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেন। কিন্তু রাবী তাতে …………… [নিহত মহিলার ওয়ারিস হইবে তার সন্তান আর তার সঙ্গে অন্যান্য ওয়ারিসগণ] এ কথা উল্লেখ করেননি। বরং তিনি উল্লেখ করিয়াছেন, ………………. [তখন কোন ব্যক্তি বলিল, আমরা কিভাবে এর ক্ষতিপূরণ দেব]? আর রাবী তার বর্ণনায় হামাল ইবনি মালিকের নামও উল্লেখ করেননি। [ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪২৪৫, ইসলামিক সেন্টার- ৪২৪৫]

এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৪২৮৫

মুগীরাহ্ ইবনি শুবাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, এক মহিলা তার সতীনকে কুঁড়েঘরের খুঁটি দ্বারা আঘাত করিল। সে ছিল গর্ভবতী মহিলা। [আঘাতকারী মহিলা আঘাত দিয়ে] তাকে মেরে ফেলল। বর্ণনাকারী বলেন যে, তাদের একজন ছিল লিহ্ইয়ান গোত্রের মহিলা। তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] হত্যাকারী মহিলার ওয়ারিসগণের ওপর নিহত মহিলার হত্যার [দিয়াত] ক্ষতিপূরণ প্রদানের নির্দেশ দিলেন এবং গর্ভে নিহত হওয়া [সন্তানের] জন্য একটি দাস [ক্ষতিপূরণ হিসেবে] প্রদানের হুকুম দিলেন। তখন হত্যাকারী মহিলার গোত্রের এক ব্যক্তি বলিল, আমরা এমন শিশুর কিভাবে ক্ষতিপূরণ দেব যে খায়নি, পান করেনি এবং কোন শব্দও করেনি? সে তো এলো আর গেল। এ বাতিলযোগ্য। তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ সে যেন বেদুঈনের মত ছন্দযুক্ত বাক্যে কথা বলিল।

বর্ণনাকারী বলেন, এরপর তিনি তাদের উপর [দিয়্যাত] ক্ষতিপূরণ আদায়ের নির্দেশ দিলেন। [ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪২৪৬, ইসলামিক সেন্টার- ৪২৪৬]

এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৪২৮৬

মুগীরাহ্ ইবনি শুবাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, একজন মহিলা তার সতীনকে তাঁবুর খুঁটি দিয়ে মেরে ফেলল। এ অভিযোগ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট দায়ের করা হল। তখন তিনি হত্যাকারী মহিলার গোত্রের উপর দিয়্যাত প্রদানের নির্দেশ দিলেন। নিহত মহিলাটি ছিল গর্ভবতী। অতএব তিনি গর্ভের বাচ্চার জন্য [দিয়াত হিসেবে] একটি দাস প্রদানের নির্দেশ দিলেন। এতে তার গোত্রের এক লোক বলিল, আমরা কেমন করে তার রক্তপণ আদায় করব যে খায়নি, পান করেনি এবং কোন শব্দও করেনি? তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ এতো বেদুঈনের ছন্দযুক্ত কথার মত একটি কথা বলছে। [ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪২৪৭, ইসলামিক সেন্টার- ৪২৪৭]

এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৪২৮৭

মানসূর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

মানসূর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে উক্ত সানাদে জারীর এবং মুফায্যাল [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেন। [ই ফা ৪২৪৮, ই সে ৪২৪৮]

এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৪২৮৮

মানসূর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

উল্লেখিত হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেন। কিন্তু তিনি তাতে একটু অতিরিক্ত বর্ণনা করিয়াছেন…… এবং সে গর্ভপাত ঘটিয়ে দিয়েছিল। তখন এ ঘটনা নবী [সাঃআঃ] এর নিকট উপস্থাপন করা হল। তিনি এতে একটি গোলাম [দিয়্যাত হিসেবে] প্রদানের জন্য হত্যাকারী মহিলার অভিভাবকের প্রতি নির্দেশ দিলেন। কিন্তু তিনি তাহাঁর বর্ণিত হাদীসে আরবী [মহিলার দিয়্যাত] কথাটির উল্লেখ করেননি। [ই ফা ৪২৪৯, ই সে ৪২৪৯]

এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস

৪২৮৯

মিস্ওয়াক ইবনি মাখরামাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, উমর ইবনি খাত্তাব [রাদি.] জনগনের কাছে একবার [আরবী] মহিলার গর্ভের সন্তান হত্যার ক্ষতিপূরণ সম্পর্কে পরামর্শ চাইলেন। তখন মুগীরাহ্ ইবনি শুবাহ্ [রাদি.] বলিলেন, আমি নবী [সাঃআঃ] এর কাছে একদা উপস্থিত ছিলাম। তখন তিনি এ অপরাধের কারণে একটি দাস অথবা দাসী প্রদানের নির্দেশ দিয়েছেন। রাবী বলেন, তখন উমর [রাদি.] মুগীরাহ্ [রাদি.] কে বলিলেন, এ ব্যাপারে আপনার সঙ্গে সাক্ষ্যদাতা একজন লোক নিয়ে আসুন। বর্ণনাকারী বলেন যে, তখন তার স্বপক্ষে মুহাম্মাদ ইবনি মাসলামাহ [রাদি.] সাক্ষ্য প্রদান করিলেন। [ই ফা ৪২৫০, ই সে ৪২৫০]

এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস


Posted

in

by

Comments

One response to “কাসামাহ [খুনের ব্যপারে হলফ করা], মুহারিবীন [শত্রু সৈন্য], কিসাস””

Leave a Reply