কাবা ঘর ভেঙ্গে পুনর্নির্মাণ এবং দেয়াল ও দরজার অবস্থান
কাবা ঘর ভেঙ্গে পুনর্নির্মাণ >> সহীহ মুসলিম শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন >> নিম্নে মুসলিম শরীফ এর একটি অধ্যায়ের হাদিস পড়ুন
৬৮. অধ্যায়ঃ হাজ্জ পালনকারী ও অন্যান্যের জন্য কাবাহ্ ঘরের অভ্যন্তরে প্রবেশ এবং নামাজ আদায় করা, এর সকল পাশে দুআ করা মুস্তাহাব
৬৯. অধ্যায়ঃ কাবাহ্ ঘর ভেঙ্গে পুনর্নির্মাণ
৭০. অধ্যায়ঃ কাবার দেয়াল ও দরজার অবস্থান
৬৮. অধ্যায়ঃ হজ্জ পালনকারী ও অন্যান্যের জন্য কাবাহ্ ঘরের অভ্যন্তরে প্রবেশ এবং নামাজ আদায় করা, এর সকল পাশে দুআ করা মুস্তাহাব
৩১২১. ইবনি উমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] নিজে এবং উসামাহ্, বিলাল ও উসমান ইবনি ত্বল্হাহ্ আল হাজাবী [রাদি.] কাবার অভ্যন্তরে প্রবেশ করিলেন। অতঃপর তিনি ভিতর থেকে দরজা বন্ধ করে দিলেন এবং কিছুক্ষণ সেখানে অবস্থান করিলেন। ইবনি উমর [রাদি.] বলেন, বের হয়ে আসলে আমি বিলালকে জিজ্ঞেস করলাম, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কী করিয়াছেন? তিনি বলিলেন, তিনি দুটি থাম নিজের বাঁ দিকে, একটি থাম ডান পাশে এবং তিনটি থাম পিছনে রেখে নামাজ আদায় করিলেন। তৎকালে বায়তুল্লাহ ছয়টি থামের উপর দন্ডায়মান ছিল।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩০৯৬, ইসলামিক সেন্টার- ৩০৯৩]
৩১২২. ইবনি উমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, মাক্কাহ্ বিজয়ের দিন রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] [মক্কায়] এলেন এবং কাবার চত্বরে অবতরণ করিলেন। অতঃপর উসমান ইবনি ত্বল্হাহ্ [রাদি.]-কে ডেকে পাঠালেন। তিনি চাবি নিয়ে এলেন এবং [কাবার] দরজা খুললেন। রাবী বলেন অতঃপর নবী [সাঃআঃ] বিলাল উসামাহ্ ইবনি যায়দ ও উসমান ইবনি ত্বলহাহ্ [রাদি.] ভিতরে প্রবেশ করিলেন। নবী [সাঃআঃ] দরজা [ভিতর থেকে] বন্ধ করার নির্দেশ দিলেন, অতএব তা বন্ধ করে দেয়া হলো। তারা কিছু সময় ভিতরে অবস্থান করিলেন। অতঃপর দরজা খোলা হল। আবদুল্লাহ [রাদি.] বলেন, আমি বাইরে সকলের আগে রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে মিলিত হলাম এবং বিলাল তাহাঁর পিছনে ছিলেন। আমি বিলালকে বললাম, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কি কাবার অভ্যন্তরে নামাজ আদায় করিয়াছেন? তিনি বলিলেন, হ্যাঁ। আমি বললাম, কোন্ জায়গায়? বিলাল [রাদি.] বলিলেন, তাহাঁর সামনের দুটি থামের মাঝখানে। ইবনি উমর [রাদি.] বলেন, তিনি কত রাকআত নামাজ আদায় করিয়াছেন, বিলালের নিকট তা জিজ্ঞেস করিতে ভুলে গেছি।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩০৯৭, ইসলামিক সেন্টার- ৩০৯৪]
৩১২৩. ইবনি উমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, মাক্কাহ্ বিজয়ের বছর রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] উসামাহ্ ইবনি যায়দ [রাদি.]-এর উষ্ট্রীতে আরোহণ করে [মক্কায়] আগমন করেন। উসামাহ্ [রাদি.] উষ্ট্রীকে কাবার চত্বরে বসান। অতঃপর রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] উসমান ইবনি ত্বল্হাহ্ [রাদি.]-কে ডাকলেন এবং বলিলেন, আমার নিকট [কাবার] চাবি নিয়ে এসো। তিনি তার মায়ের নিকট উপস্থিত হয়ে চাবি চাইলেন কিন্তু তিনি তাকে চাবি দিতে অস্বীকৃতি জানান। উসমান [রাদি.] বলিলেন, আল্লাহর শপথ! তাঁকে চাবি দিন, অন্যথায় এ তরবারি আমার পিঠ ভেদ করে চলে যাবে। অতঃপর তিনি তাকে চাবি দিলেন। তিনি চাবি নিয়ে নবী[সাঃআঃ]-এর নিকট এসে তাহাঁর নিকট হস্তান্তর করেন। তিনি কাবার দরজা খুললেন। …হাদীসে অবশিষ্ট বর্ণনা পূর্বোক্ত হাম্মাদ ইবনি যায়দের হাদীসের অনুরূপ।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩০৯৮, ইসলামিক সেন্টার- ৩০৯৫]
৩১২৪. ইবনি উমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বায়তুল্লাহ্র অভ্যন্তরে প্রবেশ করিলেন এবং তাহাঁর সঙ্গে ছিলেন উসামাহ্, বিলাল ও উসমান ইবনি ত্বল্হাহ্ [রাদি.]। লোকেরা অনেকক্ষণ দরজা বন্ধ করে রাখল। অতঃপর তা খোলা হল। আমিই সর্বপ্রথম [অগ্রসর হয়ে ভিতরে] প্রবেশ করে বিলালকে জিজ্ঞেস করলাম, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কোন্ স্থানে নামাজ আদায় করিয়াছেন? বিলাল বলিলেন, সামনের দুথামের মাঝখানে। আমি তাকে জিজ্ঞেস করিতে ভুলে গেছি যে, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কত রাকআত নামাজ আদায় করিয়াছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩০৯৯, ই.সে . ৩০৯৬]
৩১২৫. আবদুল্লাহ ইবনি উমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি কাবার নিকটে পৌছলেন। ইতোমধ্যে নবী [সাঃআঃ], বিলাল ও উসামাহ্ [রাদি.] কাবার অভ্যন্তরে প্রবেশ করেন। উসমান ইবনি ত্বল্হাহ্ [রাদি.] দরজা বন্ধ করে দিলেন। তারা কিছু সময় কাবার অভ্যন্তরে অবস্থান করিলেন। অতঃপর দরজা খোলা হল এবং নবী [সাঃআঃ] বেরিয়ে এলেন। আমি সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠলাম এবং বায়তুল্লাহ্র অভ্যন্তরে প্রবেশ করে জিজ্ঞেস করলাম, নবী [সাঃআঃ] কোথায় নামাজ আদায় করিয়াছেন? তারা বলিলেন, এখানে। ইবনি উমর [রাদি.] বলেন, তিনি কত রাকআত সালাত আদায় করিয়াছেন তা আমি তাদের নিকট জিজ্ঞেস করিতে ভুলে গেছি।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩১০০, ইসলামিক সেন্টার- ৩০৯৭]
৩১২৬. সালিম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] থেকে তার পিতা সূত্র হইতে বর্ণীতঃ
তিনি [পিতা] বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] উসামাহ্ ইবনি যায়দ, বিলাল ও উসমান ইবনি ত্বল্হাহ্ [রাদি.] বায়তুল্লাহ্য় প্রবেশ করিলেন। অতঃপর তারা দরজা বন্ধ করে দিলেন। অতঃপর যখন তারা দরজা খুললেন, তখন প্রথমেই আমি ভিতরে প্রবেশ করলাম এবং বিলালের সাথে মিলিত হয়ে তাকে জিজ্ঞেস করলাম, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কি ভিতরে নামাজ আদায় করিয়াছেন? তিনি বলিলেন, হ্যাঁ, তিনি দুইয়ামানী থামের মাঝখানে নামাজ আদায় করিয়াছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩১০১, ইসলামিক সেন্টার- ৩০৯৮]
৩১২৭. আবদুল্লাহ ইবনি উমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি [আবদুল্লাহ] বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ], উসামাহ্ ইবনি যায়দ, বিলাল ও উসমান ইবনি ত্বল্হাহ্ [রাদি.]-কে কাবার অভ্যন্তরে প্রবেশ করিতে দেখলাম। তাদের সঙ্গে আর কেউ প্রবেশ করেনি। অতঃপর দরজা বন্ধ করে দেয়া হল। আবদুল্লাহ ইবনি উমর [রাদি.] বলেন, বিলাল অথবা উসমান ইবনি ত্বল্হাহ্ [রাদি.] আমাকে অবহিত করিলেন যে, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কাবার কেন্দ্রস্থলে ইয়ামানী দুস্তম্ভের {২৯} মাঝখানে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করিলেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩১০২, ইসলামিক সেন্টার- ৩০৯৯]
{২৯} যে দুটি থাম ইয়ামানী রুকনের দিকে অবস্থিত ।
৩১২৮. ইবনি জুরায়জ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
আমি আত্বা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-কে জিজ্ঞেস করলাম- আপনি কি ইবনি আব্বাস [রাদি.]-কে বলিতে শুনেছেনঃ তোমাদেরকে কেবল ত্বওয়াফের নির্দেশ দেয়া হয়েছে, বায়তুল্লাহ্র অভ্যন্তরে প্রবেশের নির্দেশ দেয়া হয়নি?” আত্বা বলিলেন, ইবনি আব্বাস [রাদি.] তো কাবার অভ্যন্তরে প্রবেশ নিষেধ করেননি, বরং আমি তাকে বলিতে শুনেছিঃ উসামাহ্ ইবনি যায়দ [রাদি.] আমাকে অবহিত করিয়াছেন যে, নবী [সাঃআঃ] বায়তুল্লাহ্র অভ্যন্তরে প্রবেশ করে এর সকল পাশে দুআ করিয়াছেন কিন্তু বের হওয়া পর্যন্ত কোন নামাজ আদায় করেননি। তিনি বের হয়ে এসে বায়তুল্লাহর দিকে মুখ করে দুরাকআত নামাজ আদায় করিয়াছেন এবং বলেছেন, এ হল ক্বিবলাহ্। আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম, এর পার্শ্ব বলিতে কী বুঝায়? তা দিয়ে কি কোণ বুঝানো হয়েছে? তিনি [আত্বা] আরও বলিলেন, এর সমস্ত পার্শ্ব ও কোণই ক্বিবলাহ্। {৩০}
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩১০৩, ইসলামিক সেন্টার- ৩১০০]
{৩০} “এটাই ক্বিবলাহ্” অর্থাৎ ক্বিয়ামাত পর্যন্ত এর দিকে মুখ করে নামাজ আদায় করা হইবে । এটা আর রহিত হইবে যেরূপভা্বে পূর্বে বায়তুল মুকাদ্দাস ক্বিবলাহ্ ছিল পরে তা রহিত করা হয় । অথবা উদ্দেশ্য এটাও হইতে পারে যে, কাবাহ্ ঘরে ঈমাম কোথায় দাঁড়াবে এটা শিখানো । ঈমাম যেন এ ঘরের অন্যান্য কোণ বা কিনারায় না দাঁড়ায় । প্রত্যেক দিকেই দাঁড়ায়ে নামাজ আদায় বৈধ হলেও এ কাবাই ক্বিবলাহ্; এর আশেপাশে নির্মিত অন্য কোন মসজিদ নয় ।
উপর্যুক্ত বর্ণনাসমূহের মধ্যে মুহাদ্দিসগণ বিলাল [রাদি.]-এর বর্ণনা গ্রহণ করিয়াছেন, যে বর্ণনাতে কাবার অভ্যন্তরে নামাজ আদায়ের কথা বর্ণিত হয়েছে । উসামাহ্ [রাদি.]-এর বর্ণনা গ্রহণ করেননি । কেননা বিলাল [রাদি.]-এর বর্ণনায় একটি অতিরিক্ত বিষয় প্রমাণিত হয় । আর ঐ ধরনের ক্ষেত্রে ইতিবাচক বর্ণনা নেতিবাচক বর্ণনা্র উপর অগ্রাধিকার পায় । আর এখানে যে সলাতে রুকূ-সাজদাহ্ বিদ্যমান তাই উদ্দেশ্য । এজন্যই ইবনি উমর [রাদি.] বলেন, তথায় কয় রাকআত নামাজ আদায় করা হয়েছিল তা জিজ্ঞেস করিতে আমি ভুলে গেছি । আর উসামাহ্ [রাদি.] নামাজ আদায় করিতে না দেখার কারণ হইতে পারে যে, তিনি দুআ যিকিরে মত্ত ছিলেন এবং রাসূল [সাঃআঃ] হইতে দূরে অবস্থান করছিলেন । অন্যদিকে বিলাল [রাদি.]-এর বিপরীত, কেননা স্বয়ং রাসূল [সাঃআঃ]-এর নিকটে ছিলেন, কাবার দরজা বন্ধ করায় সেখানে আঁধার নেমেছিল এবং রাসূল [সাঃআঃ]-এর সে নামাজ খুব হালকা ছিল । কাবাহ্ অভ্যন্তরে নামাজ আদায় বিষয়ে আলিমদের মাঝে মতবিরোধ আছে । ঈমাম শাফি, সাওরী ও জমহুরের মতে এতে ফারয, নাফ্ল, বিত্র সকল নামাজই আদায় জায়িয আর এটাই শক্তিশালী কথা ।
৩১২৯. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নবী [সাঃআঃ] কাবার অভ্যন্তরে প্রবেশ করিলেন। আর তাতে ছিল ছয়টি স্তম্ভ। একটি থামের পাশে দাঁড়িয়ে তিনি দুআ করিয়াছেন কিন্তু নামাজ আদায় করেননি।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩১০৪, ইসলামিক সেন্টার- ৩১০১]
৩১৩০. ইসমাঈল ইবনি আবু খালিদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
আমি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সহাবী আবু আওফা [রাদি.]-কে জিজ্ঞেস করলাম, নবী [সাঃআঃ] উমরাহ্ আদায়কালে বায়তুল্লাহ্র অভ্যন্তরে প্রবেশ করেছিলেন কি? তিনি বলিলেন, না। {৩১}
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩১০৫, ই.সে ৩১০২]
{৩১} এ থেকে উদ্দেশ্য হল মাক্কাহ্ বিজয়ের পূর্বে হিজরতের ৭ম বর্ষে রাসূল [সাঃআঃ]-এর কাযা উমরাহ্ পালন । কাবার ঘরের ভিতরে প্রবেশ না করার কারণ হল মাক্কার মুশরিকরা কাবার অভ্যন্তরে বিভিন্ন দেব-দেবীর মূর্তি রাখতো এবং সেগুলো সরাতে দিত না । অতঃপর মাক্কাহ্ বিজয়ের সময় রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] মূর্তিসমূহ অপসারণ করার পর তথায় নামাজ আদায় করেছিলেন ।
৬৯. অধ্যায়ঃ কাবা ঘর ভেঙ্গে পুনর্নির্মাণ
৩১৩১. আয়েশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাকে বললেনঃ তোমার জাতির লোকদের কুফরি পরিত্যাগের যুগটি নিকটবর্তী না হলে আমি কাবা ঘর ভেঙ্গে তা ইব্রাহীম [আঃ]-এর ভিত্তির উপর পুনর্নির্মাণ করতাম। কারণ কুরায়শগণ কাবা ঘর নির্মাণের সময় এর আয়তন ছোট করে দিয়েছে। আর তার পেছনে একটি দরজা স্থাপণ করতাম।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩১০৬, ইসলামিক সেন্টার- ৩১০৩]
৩১৩২. হিশাম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
এ সানাদে বর্ণিত।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩১০৭, ইসলামিক সেন্টার- ৩১০৪]
৩১৩৩. নবী [সাঃআঃ]-এর সহধর্মিণী আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, তুমি কি দেখনি যে, তোমার গোত্রের লোকেরা কাবা ঘর নির্মাণের সময় তা ইব্রাহীম [আঃ]-এর ভিত্গুলোর চেয়ে ছোট করে দেয়? আয়িশা [রাদি.] বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহ্র রাসূল! আপনি কি তা ইব্রাহীম [আঃ]-এর ভিতের উপর পুনর্নির্মাণ করিতে চান? রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বললেনঃ তোমাদের কওমের কুফরী পরিত্যাগের যুগটি যদি নিকটতর না হতো। [তবে তাই করতাম]।
আবদুল্লাহ ইবনি উমর [রাদি.] বলেন, যদিও বা আয়িশা [রাদি.] তা রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর মুখে শুনে থাকিবেন। কিন্তু হাজারের নিকটবর্তী উভয় রুকনের স্পর্শ ত্যাগ করিতে দেখিনি। তবে বায়তুল্লাহ ইব্রাহীম [আঃ]–এর গোটা ভিতের উপর পুনর্নির্মিত হয়নি।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩১০৮, ইসলামিক সেন্টার-৩১০৫]
৩১৩৪. নবী [সাঃআঃ]-এর সহধর্মিণী আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছিঃ তোমার সম্প্রদায়ের লোকেরা যদি জাহিলী যুগের কাছাকাছি না হতো অথবা নিকট অতীতে কুফরি ত্যাগ না করত, তবে আমি অবশ্যই কাবায় পুঞ্জীভূত সম্পদ আল্লাহর রাস্তায় খরচ করতাম, এর দরজা ভূমির সমতলে স্থাপন করতাম এবং হাতীমকে কাবার অন্তর্ভুক্ত করে দিতাম।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩১০৯, ইসলামিক সেন্টার- ৩১০৬]
৩১৩৫. সাঈদ ইবনি মীনা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
আমি আবদুল্লাহ ইবনি যুবায়র [রাদি.]-কে বলিতে শুনেছিঃ আমার খালা আয়িশা [রাদি.] আমাকে বলেছেন যে, নবী [সাঃআঃ] বললেনঃ হে আয়িশাহ্! তোমার সম্প্রদায়ের লোকেরা নিকট অতীতে শির্ক পরিত্যাগ না করলে আমি কাবা ঘর ভেঙ্গে এর ভিত ভূমির সমতলে স্থাপন করতাম। এর দুটি দরজা করতাম-একটি পূর্বদিকে, অপরটি পশ্চিমদিকে এবং আল হাজার [হাতীম]-এর ছয় গজ স্থান কাবার অন্তর্ভুক্ত করতাম। কেননা কুরায়শরা কাবা ঘর নির্মাণকালে এর ভিত ছোট করে দেয়।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩১১০, ই.সে ৩১০৭]
৩১৩৬. আত্বা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, ইয়াযীদ ইবনি মুআবিয়ার সময় কাবা ঘর দগ্ধীভূত হয়েছিল- যখন সিরীয় বাহিনী মক্কায় যুদ্ধে লিপ্ত ছিল [৬৩ হিজরী] এবং কাবার যা হবার তাই হল। হজ্জের মৌসুমে লোকদের আগমনের সময় আবদুল্লাহ ইবনি যুবায়র [রাদি.] কাবাকে এ অবস্থায় রেখে দিলেন। তার উদ্দেশ্য ছিল লোকদেরকে উদ্দীপ্ত করা অথবা তাদের মধ্যে সিরীয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হওয়ার মনোবল সৃষ্টি করা। লোকেরা সমবেত হলে তিনি বলিলেন, হে জনগণ! আমাকে কাবা ঘর সম্পর্কে পরামর্শ দিন। আমি কি তা ভেঙ্গে ফেলে সম্পূর্ণ নতুনভাবে গড়ে তুলব, নাকি শুধু এর ক্ষতিগ্রস্ত অংশ মেরামত করব?
ইবনি আব্বাস [রাদি.] বলিলেন, আমার মনে একটি মতের উদয় হয়েছে, আমি মনে করি যে, শুধু ক্ষতিগ্রস্ত অংশ তুমি মেরামত করিবে এবং লোকদের ইসলাম গ্রহণ ও নবী [সাঃআঃ]-এর নুবূওয়াত লাভকালীন সময়ে কাবা ঘর ও পাথরসমূহ যে অবস্থায় ছিল, তা সে অবস্থায় রেখে দিবে। ইবনি যুবায়র [রাদি.] বলিলেন, আপনাদের কারো ঘর অগ্নিদগ্ধ হলে তা সংস্কার না করা পর্যন্ত তিনি স্বস্তি লাভ করিতে পারেন না। অতএব আপনাদের প্রতিপালকের ঘর কী করে এরূপ জীর্ণ অবস্থায় রাখা যেতে পারে? আমি আমার রব-এর কাছে তিনদিন ইস্তিখারা করব [অভিপ্রায় অবগত হবার জন্য] অতঃপর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করব। তিনদিন পর তিনি কাবা ঘর ভেঙ্গে পুনর্নির্মাণের দৃঢ় সিদ্ধান্তে উপনিত হলেন।
লোকেরা আশংকা করিল যে, সর্বপ্রথম যে ব্যক্তি কাবার ছাদে উঠবে, সে হয়ত কোন আসমানী গযবে নিপতিত হইবে। শেষ পর্যন্ত এক ব্যক্তি [ছাদ ভাঙ্গার জন্য] কাবার ছাদে উঠল এবং তার একটি পাথর নীচে ফেলল। লোকেরা যখন দেখল সে কোন বিপদে পড়েনি, তখন তারাও তাকে অনুসরণ করিল এবং কাবা ঘর ভেঙ্গে জমিনের সাথে মিশিয়ে দিল। অতঃপর ইবনি যুবায়র [রাদি.] কতগুলো থাম স্থাপন করে এগুলোর সাথে পর্দা ঝুলিয়ে দিলেন। অবশেষে কাবার দেয়ালের গাঁথুনি উচ্চ হল।
ইবনি যুবায়র [রাদি.] বলিলেন, অবশ্যই আমি আয়িশা [রাদি.]-কে বলিতে শুনেছি, নবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ “লোকেরা যদি নিকট অতীতে কুফরি ত্যাগ না করত এবং আমার নিকটও কাবাকে পুনর্নির্মাণ করার মত অর্থ-সামর্থ্যও নেই- তাহলে আমি অবশ্যই আল-হাজার [হাতীম]-এর পাঁচ গজ স্থান কাবা ঘরের অন্তর্ভুক্ত করতাম এবং লোকদের প্রবেশের জন্য ও বের হবার জন্য এর দুটি দরজা বানাতাম।” ইবনি যুবায়র [রাদি.] বলেন, বর্তমানে আমার হাতে তা নির্মাণের জন্য পর্যাপ্ত অর্থ আছে এবং লোকদের তরফ থেকেও কোন প্রতিবাদের আশংকা নেই। রাবী বলেন, এরপর তিনি হাতীমের পাঁচ গজ এলাকা কাবার অন্তর্ভুক্ত করিলেন। ফলে তা [পুরাতন] ভিতের উপর গড়ে উঠল। {যার উপর ইব্রাহীম [আঃ] তা গড়েছিলেন}। এবং লোকেরা তা অবলোকন করিল। এ ভিতের উপর দেয়াল গড়ে তোলা হল। কাবার দৈর্ঘ্য ছিল আঠার গজ। তা যখন [প্রস্থে] বাড়ানো হল, তখন [স্বাভাবিকভাবেই দৈর্ঘ্য] তা ছোট হওয়ায় দৈর্ঘ্যে তা আরও দশ গজ বৃদ্ধি করা হল এবং এর দুটি দরজা নির্মাণ করা হল, একটি প্রবেশের জন্য এবং অপরটি প্রস্থানের জন্য।
ইবনি যুবায়র [রাদি.] শহীদ হলে হাজ্জাজ [ইবনি ইউসুফ] আবদুল মালিক ইবনি মারওয়ানকে তা লিখে জানাল। সে আরও জানাল যে, ইবনি যুবায়র [কাবা ঘর] সে ভিতের উপর নির্মাণ করেছে। {যা ছিল ইব্রাহীম [আঃ]-এর ভিত} এবং মাক্কার বিশ্বস্ত লোকেরা তা যাচাই করে দেখেছে। আবদুল মালিক তাকে লিখে পাঠালেন যে, কোন বিষয়ে ইবনি যুবায়রকে অভিযুক্ত করার প্রয়োজন আমাদের নেই। সে দৈর্ঘ্যে যতটুকু বর্ধিত করেছে, তা বহাল রাখ এবং হাতীমের দিকে যতটুকু বর্ধিত করেছে, তা ভেঙ্গে পূর্বাবস্থায় নিয়ে আসো। আর সে যে [নতুন] দরজা খুলেছে তা বন্ধ করে দাও। এরপর হাজ্জাজ তা ভেঙ্গে পূর্বের ভিতের উপর পুনর্নির্মাণ করে। {৩২}
[ই.ফা ৩১১১, ইসলামিক সেন্টার-৩১০৮]
{৩২} ইয়াযীদ ইবনি মুআবিয়ার রাজত্বকালে [৬১-৬৩ হি/-৬৮০-৮৩ খ্রি] ইসলামের ইতিহাসে তিনটি জঘন্যতম ও বর্বরোচিত ঘটনা ঘটে। [১] ৬১ হিজরীর মুহার্রম মাসে কারবালা প্রান্তরে রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর প্রিয় দৌহিত্র ঈমাম হুসায়ন [রাদি.] উমাইয়্যাহ্ বাহিনীর হাতে নির্মমভাবে শাহীদ হন । এর প্রতিক্রিয়া স্বরূপ গোটা মুসলিম জাহানে, বিশেষত মাক্কাহ্ ও মাদীনায় পবিত্র নগরীদ্বয়ে গণঅসন্তোষ দেখা দেয় এবং তা বিদ্রোহের রূপ নেয় । তা দমনের জন্য উমাইয়াহ্ সেনাপতি মুসলিম ইবনি উক্ববার নেতৃত্বে সিরিয়া থেকে সৈন্য প্রেরণ করা হয়। [২] ৬৮৩ খ্রীস্টাব্দের ২৬ আগষ্ট হার্রা নামক স্থানে এ বাহিনীর সাথে মাদীনাবাসীদের ভীষণ যুদ্ধ হয় এবং মাদীনাবাসীগণ পরাজিত হয় । এ যুদ্ধে নবী [সাঃআঃ]-এর বহু মুহাজির ও আনসার সহাবী শাহীদ হন এবং বিজয়োল্লাসে উন্মত্ত সিরীয় বাহিনী তিন দিন ধরে মাদীনার পবিত্র নগরী লুন্ঠন করে। অতঃপর তারা মাক্কাহ্ অভিমুখে রওনা হয় । এখানে আবু বাক্র সিদ্দীক্ব [রাদি.]-এর দৌহিত্র আবদুল্লাহ ইবনি যুবায়র [রাদি.] ইতোমধ্যে নিজেকে খলীফা হিসেবে ঘোষণা করেন । পথিমধ্যে সেনাপতি মুসলিমের মৃত্যু হলে হুসায়ন ইবনি নুমায়র সিরীয় বাহিনীর দায়িত্ব গ্রহণ করে । [৩] তারা ৬৮৩ খ্রীস্টাব্দের ২৪ সেপ্টেম্বর মাক্কাহ্ নগরী অবরোধ করে এবং পাহাড়ের উপর থেকে পাথর নিক্ষেপক যন্ত্রের সাহায্যে আল্লাহর ঘর কাবার উপর পাথর বর্ষণ করে অগ্নি সংযোগ করে এবং মারাত্নক ক্ষতি সাধন করে । তারা হাজারে আসওয়াদ ভেঙ্গে তিন টুকরা করে ফেলে । এ বছরের নভেম্বর মাসে ইয়াযীদের মৃত্যু হলে সিরীয় বাহিনী অবরোধ তুলে দামেশ্কে প্রত্যাবর্তন করে । অতঃপর আবদুল্লাহ ইবনি যুবায়র [রাদি.] ইব্রাহীম [আঃ]-এর ভিত-এর উপর কাবা ঘর পুনর্নির্মাণ করেন । ৬৯২ খ্রীস্টাব্দে আরাফাহ যুদ্ধে হাজ্জাজ বাহিনীর হাতে ইবনি যুবায়র [রাদি.] শাহীদ হলে উমাইয়্যাহ রাজ আবদুল মালিক পুনরায় কাবা ঘর সংস্কারের নির্দেশ দেন । হাদীসে সে ঘটনাটি উল্লেখিত হয়েছে ।
৩১৩৭. হারিস ইবনি আবদুল্লাহ ইবনি আবু রবীআহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
আবদুল্লাহ ইবনি উবায়দ বলেন, হারিস ইবনি আবদুল্লাহ প্রতিনিধি হিসেবে আবদুল মালিক ইবনি মারওয়ানের রাজত্বকালে তার নিকট গিয়েছিলেন। আবদুল মালিক বলিলেন, আমি মনে করি না যে, আবু যুবায়র অর্থাৎ ইবনি যুবায়র [রাদি.] আয়িশা [রাদি.]-এর নিকট এমন কিছু শুনেছেন যার দাবি তিনি করে থাকেন। {অর্থাৎ ইব্রাহীম [আঃ]-এর ভিতের উপর কাবাহ ঘরের পুণর্নিমাণের ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর অভিপ্রায় সম্পর্কিত কোন হাদীস তিনি আয়িশা [রাদি.]-এর নিকট শুনেননি}। হারিস বলেন, হ্যাঁ, আমি নিজেই তার নিকট এ হাদীস শুনেছি। আবদুল মালিক বলিলেন, আপনি তাকে কী বলিতে শুনেছেন? হারিস বলেন, আয়িশা [রাদি.] বলেছেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ “তোমার ক্বওমের লোকেরা কাবা ঘরের ভিত [আয়তনে] ছোট করে ফেলেছে। অতীতে তারা শির্ক পরিত্যাগ না করলে আমি তাদের পরিত্যক্ত অংশটুকু কাবার অন্তর্ভুক্ত করে দিতাম। তোমার সম্প্রদায়ের লোকেরা যদি আমার পরে তা পুণর্নিমাণের পদক্ষেপ গ্রহণ করে, তবে এসো, আমি তোমাকে তাদের পরিত্যক্ত অংশটুকু দেখিয়ে দিই”- অতএব রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আয়েশাহ-কে [হাতীম সংলগ্ন] প্রায় সাত গজ স্থান দেখিয়ে দিলেন। এ হাদীস আবদুল্লাহ ইবনি উবায়দ কর্তৃক বর্ণিত। ওয়ালীদ ইবনি আত্বা ও বর্ণনার উপর আরো বৃদ্ধি করিয়াছেন, নবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ “আমি জমিনের সমতলে দুটি দরজাও নির্মাণ করতাম- একটি পূর্বদিকে এবং অপরটি পশ্চিম দিকে। তুমি কি জান তোমার গোত্রের লোকেরা কাবার দরজা [ভূমি থেকে] উঁচুতে স্থাপন করেছে কেন?” আয়িশা [রাদি.] বলেন, আমি বললাম, না। নবী [সাঃআঃ] বললেনঃ “গর্ব ও অহংকারের বশবর্তী হয়ে [তারা এটা করেছে] যাকে কেবল সে ব্যক্তিই কাবার অভ্যন্তরে প্রবেশ করিতে পারে- যাকে তারা অনুমতি দিবে। যখন কোন ব্যক্তি কাবার অভ্যন্তরে প্রবেশের ইচ্ছা করত, তারা তাকে সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠতে দিত। এমনকি সে যখন তাতে প্রবেশ করত, তখন তারা তাকে টেনে নিচে ফেলে দিত”।
আবদুল মালিক হারিসকে জিজ্ঞেস করিলেন, আপনি কি আয়িশা [রাদি.]-কে এ কথা বলিতে শুনেছেন? তিনি বলিলেন, হ্যাঁ। রাবী বলেন, কিছুক্ষণ তিনি হাতের ছড়ি দিয়ে মাটি খুঁড়তে লাগলেন, এরপর বললেনঃ আমি তার [ইবনি যুবায়র] কাজ স্ব অবস্থায় বহাল রাখার আকাঙক্ষা করছি।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩১১২, ইসলামিক সেন্টার- ৩১০৯]
৩১৩৮. ইবনি জুরায়জ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
এ সানাদে ইবনি বাকর-এর হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩১১৩, ইসলামিক সেন্টার- ৩১১০]
৩১৩৯. আবু ক্বাযাআহ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
আবদুল মালিক ইবনি মারওয়ান বায়তুল্লাহ তাওয়াফকালে বলে উঠলেন, আল্লাহ ইবনি যুবায়রকে ধ্বংস করুন- যেহেতু সে উম্মুল মুমিনীন {আয়িশা [রাদি.]}-এর উপর মিথ্যারোপ করিয়াছেন যে, সে তাকে নাকি বলিতে শুনেছে, “রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ হে আয়িশাহ্! তোমার সম্প্রদায় যদি অতীতে কুফরি পরিত্যাগকারী না হতো তবে আমি কাবা ঘর বেঙ্গে তাতে হাতীমের অংশ যুক্ত করে দিতাম। কারণ তোমার সম্প্রদায় কাবার আয়তন ছোট করে দিয়েছে”। [আবদুল মালিকের এ কথার উপর] হারিস ইবনি আবদুল্লাহ ইবনি আবু রবীআহ্ বলিল, হে আমীরুল মুমিনীন! এ কথা আর বলবেন না। কারণ আমি নিজে উম্মুল মুমিনীন {আয়িশা [রাদি.]}-কে এ কথা বলিতে শুনেছি।
অতঃপর আবদুল মালিক বলিলেন, কাবা ঘর ভাঙ্গার পূর্বে যদি আমি তা শুনতে পেতাম, তাহলে ইবনি যুবায়রের ভিতের উপরই তা অটুট রাখতাম।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩১১৪, ইসলামিক সেন্টার- ৩১১১]
৭০. অধ্যায়ঃ কাবার দেয়াল ও দরজার অবস্থান
৩১৪০. আয়েশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট জিজ্ঞেস করলাম, হাতীমের দেয়াল কি বায়তুল্লাহ্র অন্তর্ভুক্ত? তিনি বলিলেন, হ্যাঁ। আমি পুনরায় জিজ্ঞেস করলাম, তবে তার কেন এটাকে বায়তুল্লাহর অন্তর্ভুক্ত করেনি? তিনি বলিলেন, তোমার সম্প্রদায়ের নিকট পর্যপ্ত অর্থ ছিল না। আমি আবার জিজ্ঞেস করলাম, এর দরজা উঁচুতে স্থাপিত হবার কারণ কী? তিনি বলিলেন, তাও তোমার সম্প্রদায়ের কাণ্ড- যাতে তাদের কাঙ্খিত ব্যক্তি তাতে প্রবেশাধিকার পায় এবং অবাঞ্ছিত ব্যক্তি প্রবেশ করিতে না পারে। তোমার ক্বওমের জাহিলিয়্যাত পরিত্যাগের যুগ নিকটতম না হলে এবং আমার যদি এ আশংকা না হতো যে, তাদের অন্তর পরিবর্তিত হয়ে যেতে পারে- তা হলে আমি অবশ্যই [হাতীমের] দেয়াল বায়তুল্লাহর অন্তর্ভুক্ত করে দিতাম এবং কাবার দরজা জমিনের সমতলে স্থাপন করার বিষয়ে বিবেচনা করতাম।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩১১৫, ইসলামিক সেন্টার- ৩১১২]
৩১৪১. আয়েশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি আল্ হাজার [হাতীম] সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট জিজ্ঞেস করলাম। এরপর পূর্বোক্ত আবুল আহ্ওয়াস-এর হাদীসের অনুরূপ। এ বর্ণনায় আছে {আয়িশা [রাদি.] জিজ্ঞেস করিলেন}, “এর দরজা উঁচুতে স্থাপিত হবার কারণ কী যে, সিঁড়ি ব্যতীত তাতে উঠা যায় না?” এতে আরো আছেঃ “তাদের অন্তর পরিবর্তিত হয়ে যাবার আশংকায়”।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩১১৬, ইসলামিক সেন্টার- ৩১১৩]
Leave a Reply