জাম্রাতুল আক্বাবায় কাঁকর নিক্ষেপ ও আল্লাহু আকবার বলা

জাম্রাতুল আক্বাবায় কাঁকর নিক্ষেপ ও আল্লাহু আকবার বলা

উপত্যকার মধ্যস্থলে দাঁড়িয়ে জাম্রাতুল আক্বাবায় কাঁকর নিক্ষেপ করা >> সহীহ মুসলিম শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন >> নিম্নে মুসলিম শরীফ এর একটি অধ্যায়ের হাদিস পড়ুন

৫০. অধ্যায়ঃ মাক্কাহ্ মুআজ্জামাকে বাঁ পাশে রেখে উপত্যকার মধ্যস্থলে দাঁড়িয়ে জাম্রাতুল আক্বাবায় কাঁকর নিক্ষেপ করা এবং প্রতিটি পাথর নিক্ষেপের সময় আল্লাহু আকবার বলা
৫১. অধ্যায়ঃ কুরবানীর দিন সওয়ারীতে আরোহিত অবস্থায় জামরাতুল আক্বাবায় কাঁকর নিক্ষেপ করা মুস্তাহাব এবং নবী [সাঃআঃ]-এর বাণীঃ “আমার নিকট থেকে তোমরা হাজ্জের নিয়ম-কানুন শিখে নাও।”
৫২. অধ্যায়ঃ জামরায় নিক্ষিপ্ত পাথর ক্ষুদ্র হওয়া মুস্তাহাব
৫৩. অধ্যায়ঃ পাথর নিক্ষেপের জন্য মুস্তাহাব সময়
৫৪. অধ্যায়ঃ জামরায় প্রতিবার সাতটি করে নুড়ি পাথর নিক্ষেপ করিবে

৫০. অধ্যায়ঃ মাক্কাহ্ মুআজ্জামাকে বাঁ পাশে রেখে উপত্যকার মধ্যস্থলে দাঁড়িয়ে জাম্রাতুল আক্বাবায় কাঁকর নিক্ষেপ করা এবং প্রতিটি পাথর নিক্ষেপের সময় আল্লাহু আকবার বলা

৩০২২. আবদুর রহমান ইবনি ইয়াযীদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আবদুল্লাহ ইবনি মাসঊদ [রাদি.] উপত্যকার মধ্যখানে দাঁড়িয়ে জামরাতুল আক্বাবায় সাতটি পাথর নিক্ষেপ করিয়াছেন এবং প্রতিটি পাথরের সাথে তাকবীর বলেছেন। রাবী বলেন, তাকে বলা হল, লোকেরা তো উচ্চ স্থানে দাঁড়িয়ে পাথর নিক্ষেপ করে।

আবদুল্লাহ ইবনি মাসঊদ [রাদি.] বলিলেন, সে সত্তার শপথ, যিনি ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই, এ সেই স্থান যেখানে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর উপর সূরাহ্ আল বাক্বারাহ্ নাযিল হয়েছে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৯৯৭, ইসলামিক সেন্টার- ২৯৯৪]

৩০২৩. আমাশ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি হাজ্জাজ ইবনি ইউসুফকে মিম্বারে দাঁড়িয়ে ভাষণ দিতে গিয়ে বলিতে শুনেছিঃ জিবরীল [আঃ] যে ক্রমবিন্যাসে কুরআন মাজীদ সাজিয়েছেন, তোমরা তদনুযায়ী তা সুবিন্যস্ত কর। যেমন, প্রথম সে সূরাহ্ যার মধ্যে গাভী সম্পর্কে আলোচনা এসেছে। এরপর যে সূরায় মহিলাদের সম্পর্কে, এরপর সে সূরাহ্ যার মধ্যে ইমরান-পরিবার সম্পর্কে আলোচনা রয়েছে।

আমাশ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, এরপর আমি ইব্রাহীমের সাথে সাক্ষাৎ করে তাকে হাজ্জাজের বক্তব্য সম্পর্কে অবহিত করলাম। তিনি তাকে গালি দিলেন। এরপর বলিলেন, আবদুর রহমান ইবনি ইয়াযীদ আমাকে বলেছেন যে, তিনি আবদুল্লাহ ইবনি মাসঊদ [রাদি.]-এর সাথে ছিলেন। তিনি জামরাতুল আক্বাবায় এলেন, উপত্যকার মাঝে দাঁড়ালেন এবং জামরাহ্কে নিজের সম্মুখভাগে রাখলেন, এরপর উপত্যকার মাঝে দাঁড়িয়ে সাতটি কাঁকর নিক্ষেপ করিলেন, প্রত্যেকবার নিক্ষেপের সাথে সাথে আল্ল-হু আকবার বলিলেন। রাবী বলেন, আমি বললাম, হে আবু আবদুর রহমান! লোকেরা উপত্যকার উপরিভাগ থেকে পাথর নিক্ষেপ করে। তিনি বলিলেন, সে সত্তার শপথ যিনি ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই, এ সেই স্থান যেখানে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর উপর সূরাহ্ আল বাক্বারাহ্ নাযিল হয়েছিল।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৯৯৮, ইসলামিক সেন্টার- ২৯৯৫]

৩০২৪. আমাশ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি হাজ্জাজকে বলিতে শুনেছি, তোমরা বল না সূরাতুল বাক্বারাহ্…… এরপর ইবনি মুসহির বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৯৯৯, ইসলামিক সেন্টার- ২৯৯৬]

৩০২৫. আবদুর রহমান ইবনি ইয়াযীদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি আবদুল্লাহ [ইবনি মাসঊদ] [রাদি.]-এর সাথে হজ্জ করেন। রাবী বলেন, তিনি [আবদুল্লাহ] জামরায় সাতটি কাঁকর নিক্ষেপ করেন- বায়তুল্লাহকে বামদিকে এবং মিনাকে ডানদিকে রেখে এবং তিনি বলেন, এই সে স্থান যেখানে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর প্রতি সূরাহ্ আল বাক্বারাহ্ নাযিল করা হয়েছিল।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩০০১, ইসলামিক সেন্টার- ২৯৯৭]

৩০২৬. শুবাহ্‌ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

এ সূত্রে উপরোক্ত হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে। তবে তিনি বলেছেন, “তিনি [আবদুল্লাহ] যখন জামরাতুল আক্বাবায় এলেন।”

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩০০১, ইসলামিক সেন্টার- ২৯৯৮]

৩০২৭. আবদুর রহমান ইবনি ইয়াযীদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন আবদুল্লাহ [ইবনি মাসঊদ] [রাদি.]-কে বলা হল, লোকেরা আক্বাবার উচ্চভূমি থেকে পাথর নিক্ষেপ করে। রাবী বলেন, আবদুল্লাহ [রাদি.] উপত্যকার মধ্যভাগে দাঁড়িয়ে তা নিক্ষেপ করিলেন। এরপর তিনি বলেন, সে সত্তার শপথ যিনি ব্যতীত অন্য কোন মাবূদ নেই, যাঁর উপর সূরাহ্ আল বাক্বারাহ্ নাযিল হয়েছে, তিনি এই স্থান থেকে কাঁকর নিক্ষেপ করেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩০০২, ইসলামিক সেন্টার- ২৯৯৯]

৫১. অধ্যায়ঃ কুরবানীর দিন সওয়ারীতে আরোহিত অবস্থায় জামরাতুল আক্বাবায় কাঁকর নিক্ষেপ করা মুস্তাহাব এবং নবী [সাঃআঃ]-এর বাণীঃ “আমার নিকট থেকে তোমরা হজ্জের নিয়ম-কানুন শিখে নাও।”

৩০২৮. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি কুরবানীর দিন নবী [সাঃআঃ]-কে সওয়ারীতে আরোহিত অবস্থায় পাথর নিক্ষেপ করিতে দেখেছি এবং তিনি বলেছিলেনঃ “আমার নিকট থেকে তোমরা হজ্জের নিয়ম-কানুন শিখে নাও। কারণ আমি জানি না- এ হজ্জের পর আমি আর হজ্জ করিতে পারব কিনা।”

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩০০৩, ইসলামিক সেন্টার- ৩০০০]

৩০২৯. উম্মুল হুসায়ন [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সাথে বিদায় হজ্জ করেছি এবং আমি দেখেছি, তিনি জামরাতুল আক্বাবায় পাথর নিক্ষেপ করে সওয়ারীতে চড়ে ফিরে আসেন এবং তার সাথে ছিলেন বিলাল ও উসামাহ্ [রাদি.]। তাদের একজন উটের লাগাম ধরে তা টেনে নিচ্ছিলেন এবং অপরজন সূর্যের তাপের কারণে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর মাথার উপর কাপড় ধরে রাখছিলেন। উম্মুল হুসায়ন [রাদি.] আরো বলেন, রসূলুল্লাহ[সাঃআঃ] অনেক কথা বলিলেন। এরপর আমি তাঁকে বলিতে শুনেছিঃ যদি নাক-কান কাটা কোন কাফ্রী [কালো] ক্রীতদাসকেও তোমাদের নেতা নিয়োগ করা হয় এবং সে আল্লাহর কিতাব অনুযায়ী তোমাদের পরিচালনা করে, তবে তার [নির্দেশ] শোন এবং আনুগত্য কর।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩০০৪, ইসলামিক সেন্টার- ৩০০১]

৩০৩০. উম্মুল হুসায়ন [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সাথে বিদায় হজ্জ করেছি। আমি উসামাহ্ ও বিলালকে দেখেছি যে, তাদের একজন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর উষ্ট্রীর লাগাম ধরে আছেন এবং অপরজন কাপড় দিয়ে তাঁকে রৌদ্র তাপ থেকে ছায়া দান করছেন। এমতাবস্থায় তিনি জামরায় কাঁকর নিক্ষেপ করেন।

ঈমাম মুসলিম বলেন, আবু আবদুর রহীমের নাম খালিদ ইবনি আবু ইয়াযীদ যিনি মুহাম্মাদ ইবনি সালামার মামা- ওয়াকী এবং হাজ্জাজ আওয়ার তার থেকে হাদীস বর্ণনা করেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩০০৫, ইসলামিক সেন্টার- ৩০০২]

৫২. অধ্যায়ঃ জামরায় নিক্ষিপ্ত পাথর ক্ষুদ্র হওয়া মুস্তাহাব

৩০৩১. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি নবী [সাঃআঃ]-কে জামরায় ক্ষুদ্র পাথর নুড়ি [পাথর] নিক্ষেপ করিতে দেখেছি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩০০৬, ইসলামিক সেন্টার- ৩০০৩]

৫৩. অধ্যায়ঃ পাথর নিক্ষেপের জন্য মুস্তাহাব সময়

৩০৩২. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কুরবানীর দিন সূর্য কিছুটা উপরে উঠলে জামরায় পাথর নিক্ষেপ করেন, পুনরায় দ্বিপ্রহরের পরে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩০০৭, ইসলামিক সেন্টার-]

৩০৩৩. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ]… পূর্বোক্ত হাদীসের অনুরূপ।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩০০৮, ইসলামিক সেন্টার- ৩০০৪]

৫৪. অধ্যায়ঃ জামরায় প্রতিবার সাতটি করে নুড়ি পাথর নিক্ষেপ করিবে

৩০৩৪. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ ইস্তিঞ্জায় ব্যবহৃত ঢিলার সংখ্যা বেজোড়, জামরায় নিক্ষিপ্ত পাথরের সংখ্যা বেজোড়, সাফা-মারওয়ার মাঝে সাঈর সংখ্যা বেজোড় এবং তাওয়াফও বেজোড়। অতএব তোমাদের যে কেউ যখন ইস্তঞ্জায় ঢিলা ব্যবহার করিবে সে যেন বেজোড় সংখ্যক ব্যবহার করে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৩০০৯, ইসলামিক সেন্টার- ৩০০৬]


Posted

in

by

Comments

Leave a Reply