কল্যাণের দিকে পথ দেখানো, প্ররোচনা ও পত্র লিখার নিয়ম
কল্যাণের দিকে পথ দেখানো, প্ররোচনা ও পত্র লিখার নিয়ম >>আবুদ দাউদ শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন
অধ্যায়ঃ ৪৩, অনুচ্ছেদঃ ১১৯-১২৯=১১টি
অনুচ্ছেদ-১১৯ঃ প্ররোচনা প্রতিহত করা সম্পর্কে
অনুচ্ছেদ-১২১ঃ বংশের গৌরব
অনুচ্ছেদ-১২২ঃ দলপ্রীতি বা পক্ষপাতিত্ব
অনুচ্ছেদ-১২৩ঃ কেউ কারোর ভালো কিছু দেখে তাহাকে ভালবাসলে
অনুচ্ছেদ-১২৪ঃ পরামর্শ করা
অনুচ্ছেদ-১২৫ঃ কল্যাণের দিকে পথ দেখানো
অনুচ্ছেদ-১২৬ঃ অসৎ বাসনা
অনুচ্ছেদ-১২৭ঃ সুপারিশ করা
অনুচ্ছেদ-১২৮ঃ চিঠিপত্রে প্রথমে নিজের নাম লেখা সম্পর্কে
#129অনুচ্ছেদ-১২৯ঃ যিম্মীর নিকট পত্র লিখার নিয়ম
অনুচ্ছেদ-১১৯ঃ প্ররোচনা প্রতিহত করা সম্পর্কে
৫১১০. আবু যুমাইল [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
আবু যুমাইল [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন একদা আমি ইবনি আব্বাস [রাদি.] কে বলিলাম, আমি আমার অন্তরে যেসব বিষয় অনুভব করি এগুলো কি? তিনি বলিলেন, তা কি? আমি বলিলাম, আল্লাহর কসম! আমি সে বিষয়ে মুখ খুলবো না। বর্ণনাকারী বলেন, তিনি আমাকে বলিলেন, সন্দেহমূলক কিছু? বর্ণনাকারী বলেন, এরপর তিনি হাসলেন এবং বলিলেন, এর থেকে কেউই রেহাই পায়নি, এমনকি মহান আল্লাহ নাযিল করেনঃ
“আমি আপনার উপর যা নাযিল করেছি এ ব্যাপারে আপনি যদি সন্দেহে থাকেন, তাহলে যারা কিতাব পড়ে তাহাদেরকে প্রশ্ন করুন….” [সূরাহ ইউনুসঃ ৯৪]
বর্ণনাকারী বলেন, ইবনি আব্বাস [রাদি.] আমাকে বলিলেন, যখন তুমি মনের মধ্যে এ ধরণের কিছু উদ্রেক হইতে দেখবে, তখন তুমি পাঠ করিবেঃ
“তিনিই আদি তিনিই অনন্ত, তিনিই প্রকাশ্য, তিনি গুপ্ত এবং তিনি সব বিষয়ে সম্যক অবহিত” [সূরাহ হাদীদঃ ৩] {৫১০৮}
{৫১০৮} আবু দাউদ এটি এককভাবে বর্ণনা করেছেন। এই হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
৫১১১, আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ্র [সাঃআঃ] নিকট তাহাঁর কতিপয় সাহাবী [রাদি.] এসে বলিলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা আমাদের অন্তরে এমন কিছু অনুভব করি যা ব্যক্ত করাকে বা যা মুখে বলাকে আমরা গুরুতর মনে করি। আমরা এ ধরণের কথা মনে আসা অথবা পরস্পর সমালোচনা করাকে পছন্দ করি না। তিনি বলিলেনঃ তোমরা কি এরূপ অনুভব করো? তারা বলিলেন, হ্যাঁ তিনি বলিলেনঃ এটা স্পষ্ট ঈমানের লক্ষণ।
এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৫১১২. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নাবী [সাঃআঃ] এর নিকট এসে বললো, হে আল্লাহর রাসূল! আমাদের কারো মনের মধ্যে এমন কিছু উদয় হয় যা মুখে ব্যক্ত করার চেয়ে সে জ্বলে-পুড়ে অঙ্গার হয়ে যাওয়াকে উত্তম মনে করে। তিনি [সাঃআঃ] বলিলেনঃ আল্লাহ মহান, আল্লাহ মহান, আল্লাহ মহান, আল্লাহর জন্য সমস্ত প্রশংসা যিনি শয়তানের এ ধোঁকাকে কল্পনা পর্যন্ত সীমাবদ্ধ রেখেছেন।
এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস অনুছেদ ১২০ঃ যে দাস নিজ মনিবের পরিবর্তে অন্যের পরিচয় দেয়।
৫১১৩. সাদ ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
আমি এ হাদিসটি আমার নিজ কানে শুনিয়াছি স্বয়ং মুহাম্মাদ [সাঃআঃ]এর নিকট হইতে এবং আমার অন্তর তা হিফাযাত করেছে। তিনি বলিয়াছেনঃ যে ব্যক্তি স্বীয় পিতাহাকে ভিন্ন বংশের দলে দাবি করলো অথচ সে জানে যে, তার পিতা কে, তার জন্য জান্নাত হারাম। বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর আমি আবু বাক্রাহ [রাদি.] এর সঙ্গে দেখা করে বিষয়টি তার নিকট উত্থাপন করলে তিনি বলেন, মুহাম্মাদ [সাঃআঃ] থেকে এ হাদিস আমার কান শুনেছে এবং আমার স্মৃতিশক্তি তা হিফাযাত করেছে। আসিম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, আমি বলিলাম হে আবু উসমান! আপনার নিকট দুজন লোক সাক্ষ্য দিয়েছে, তারা কে? তিনি বলেন, তাহাদের একজন হলেন, সাদ ইবনি মালিক [রাদি.] যিনি সর্বপ্রথম আল্লাহর পথে দ্বীন ইসলামের তীর ছুঁড়েছেন। আর দ্বিতীয় ব্যক্তি হলেন যিনি বিশের অধিক লোকের একটি দলের সঙ্গে তায়েফ থেকে হেটে এসেছেন। তিনি তার ফযীলতও বর্ণনা করিলেন।
ঈমাম আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, আন-নুফাইলী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] এ হাদিস বর্ণনা প্রসঙ্গে বলেন, আল্লাহর কসম! এটি আমার নিকট মধুর চেয়েও মিষ্টি অর্থাৎ এর সনদ। আবু আলী বলেন, আমি আবু দাউদকে বলিতে শুনিয়াছি, আমি আহমাদ[রহমাতুল্লাহি আলাইহি] কে বলিতে শুনিয়াছি, কূফাবাসীর হাদিসে নূর নেই। আমি বাসরাহ্বাসীর অনুরূপ দেখিনি, তারা হাদিসটি শুবাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে শিখেছেন।
এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৫১১৪. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ যে ব্যক্তি নিজ মনিব গোত্রের অনুমতি ব্যতীত অন্য কোন গোত্রে পালিয়ে যায় তার উপর আল্লাহ, ফেরেশতাকূল ও সকল মানুষের পক্ষ হইতে লানাত। ক্বিয়ামাতের দিন তার কোন ফরয ও নফল অথবা তাওবাহ ও ফিদইয়া গ্রহণযোগ্য হইবে না।
এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৫১১৫. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে বলিতে শুনিয়াছিঃ যে ব্যক্তি তার পিতার বংশ পরিচয় বাদ দিয়ে অন্য বংশের হওয়ার দাবি করে অথবা নিজেকে প্রকৃত অভিভাবক পরিবারকে বাদ দিয়ে অন্যের পরিচয়ে নিজেকে পরিচিত করে তার উপর আল্লাহর পক্ষ হইতে ক্বিয়ামাত পর্যন্ত অবিরাম অভিশাপ বর্ষিত হইতে থাকিবে।
এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-১২১ঃ বংশের গৌরব
৫১১৬. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ মহান আল্লাহ তোমাদের জাহিলী যুগের মিথ্যা অহংকার ও পূর্বপুরুষদেরকে নিয়ে গর্ব করার প্রথাকে বিলুপ্ত করেছেন। মুমিন হলো আল্লাহভীরু আর পাপী হলো দুর্ভাগা। তোমরা সকলে আদম সন্তান আর আদম [আঃ] মাটির তৈরী। লোকদের উচিৎ বিশেষ গোত্রের ভুক্ত হওয়াকে কেন্দ্র করে অহংকার না করা। এখন তো তারা জাহান্নামের কয়লায় পরিণত হয়েছে। অন্যথায় তোমরা মহান আল্লাহর নিকট ময়লার সেই কীটের চেয়েও জঘন্য গণ্য হইবে যে তার নাক দিয়ে ময়লা ঠেলে নিয়ে যায়।
এই হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
অনুচ্ছেদ-১২২ঃ দলপ্রীতি বা পক্ষপাতিত্ব
৫১১৭. আব্দুল্লাহ ইবনি মাসউদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
যে ব্যক্তি তার কওমের লোকদেরকে অন্যায়ভাবে সাহায্য করে, সে ঐ উটের মত, যেটিকে গর্তে পড়ার পর তার লেজ ধরে টানা হচ্ছে। {৫১১৫}
সহিহ মাওকূফ ও মারফু।{৫১১৫} তিরমিজি, ইবনি মাজাহ, আহমাদ। এই হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য
৫১১৮. আবদুর রহমান ইবনি আব্দুল্লাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে তার পিতা হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন একদা আমি নাবী [সাঃআঃ] এর নিকট গেলাম, তখন তিনি একটি চামড়ার তাঁবুতে ছিলেন … অতঃপর বাকী অংশ উপরের হাদিসের অনুরূপ।
এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৫১১৯. ওয়াসিলাহ ইবনি আক্বকা [রাদি.]-র কন্যা হইতে বর্ণীতঃ
তিনি তার পিতাহাকে বলিতে শুনেছেন, আমি বলিলাম, হে আল্লাহর রাসূল! আসাবিয়্যাত [পক্ষপাতিত্ব] কি? তিনি বলিলেনঃ তুমি তোমার কওমকে অত্যাচার করার জন্য সহযোগিতা করলে। {৫১১৭}
দুর্বল ঃ গায়াতুল মারাম হা/৩০৫। {৫১১৭} ইবনি মাজাহ, আহমাদ, বুখারীর আদাবুল মুফরাদ। সানাদে সালমাহ বিন বিশর রয়েছে। হাফিজ বলেনঃ মাক্ববুল। একই অবস্থা তার মেয়ে ওয়াসিলাহ। এই হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৫১২০. সুরাক্বাহ ইবনি মালিক ইবনি জুশাম আল-মুদলিজী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, একদা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দেয়ার সময় বলেনঃ যে ব্যক্তি পাপাচারে লিপ্ত না হয়ে তার গোত্রের উপর নির্যাতন হওয়া প্রতিরোধ করে সে-ই তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম। ঈমাম আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, আইয়ূব ইবনি সুয়াইদ দুর্বল বর্ণনাকারী। {৫১১৮}
দুর্বল ঃ মিশকাত হা/ ৪৯০৬ {৫১১৮} সানাদে আইয়ূব বিন সুওয়াইদ দুর্বল। এই হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৫১২১. জুবাইর ইবনি মুত্বইম [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেন। যে ব্যক্তি আসাবিয়্যাতের দিকে ডাকে বা গোত্রের দোহাই দিয়ে আহবান করে লোকদেরকে সমবেত করে সে আমার দলভুক্ত নয়। আর ঐ ব্যক্তিও আমার দলভুক্ত নয় যে আসাবিয়্যাতের ভিত্তিতে যুদ্ধ করে এবং সেও নয় যে আসাবিয়্যাতের উপর মারা যায়। {৫১১৯}
দুর্বল ঃ মিশকাত হা/৪৯০৭, গায়াতুল মারাম হা/ ৩০৪। {৫১১৯} ইবনি আদীর কামীল। এর সনদ মুনকাতি। আব্দুল্লাহ বিন আবু সালমাহ ও জুবাইর ইবনি মুত্বঈম এর মাঝে বর্ণনাকারী বাদ পড়েছে।এই হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৫১২২. আবু মূসা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]বলিয়াছেনঃ গোত্রের ভাগনে তাহাদের অন্তর্ভুক্ত।
এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৫১২৩.আবু উক্ববাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
[তিনি ছিলেন পারস্যবাসীর আযাদকৃত গোলাম]। তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]এর সঙ্গে উহুদের যুদ্ধে অংশগ্রহণ করি। এক মুশরিক ব্যক্তির উপর আঘাত হেনে আমি বলিলাম, আমার কাছ থেকে এটা নাও। আমি পারস্যদেশীয় যুবক। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ক্বিয়ামাতের আমার প্রতি দৃষ্টি নিবদ্ধ করে বলিলেনঃ তুমি কেন একথা বললে না যে, আমার পক্ষ হইতে এটা গ্রহণ করো, আমি আনসারী যুবক।
{৫১২১} ইবনি মাজাহ,আহমাদ। সানাদে মুহাম্মাদ ইবনি ইসহাক্ব একজন মুদাল্লিস এবং তিনি এটি আন আন শব্দে বর্ণনা করেছেন। এই হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-১২৩ঃ কেউ কারোর ভালো কিছু দেখে তাহাকে ভালবাসলে
৫১২৪. আল-মিক্বদাম ইবনি মাদীকারিব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ যে ব্যক্তি তার কোন মুসলিম ভাইকে ভালোবাসে, তার উচিৎ তাহাকে তাহাঁর ভালোবাসা সম্পর্কে অবহিত করা।
এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৫১২৫. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
এক লোক নাবী [সাঃআঃ] এর নিকট উপস্থিত ছিলো। এ সময় অন্য এক ব্যক্তি সেখান দিয়ে যাচ্ছিলো। লোকটি বললো, হে আল্লাহর রাসূল! আমি অবশ্যই এ ব্যক্তিকে ভালোবাসি। নাবী [সাঃআঃ] তাহাকে বলিলেনঃ তুমি কি তাহাকে তোমার ভালোবাসার কথা জানিয়েছো? সে বললো, না। তিনি [সাঃআঃ] বলিলেনঃ তুমি তাহাকে জানিয়ে দাও। বর্ণনাকারী বলেন, সুতরাং সে ঐ ব্যক্তির সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বলিলেন, আমি আপনাকে আল্লাহর জন্য ভালোবাসি। সে বললো, যাঁর উদ্দেশ্যে আপনি আমাকে ভালোবাসেন তিনিও আপনাকে ভালোবাসুন।
এই হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
৫১২৬. আবু যার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলিলেন, হে আল্লাহর রাসূল! কোন ব্যক্তি যদি কোন সম্প্রদায়কে ভালোবাসে কিন্তু তারা যে ধরণের আমল করে সে অনুরূপ আমল করিতে পারে না। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]বলিলেনঃ হে আবু যার! তুমি যাদেরকে ভালোবাসো তাহাদের দলভুক্ত হইবে। তিনি বলিলেন, আমি আল্লাহ ও তাহাঁর রাসূলকে ভালোবাসি। তিনি [সাঃআঃ] বলিলেনঃ তুমি যাদেকে ভালোবাসো তাহাদের সাথী হইবে। বর্ণনাকারী বলেন, আবু যার [রাদি.] একই কথার পুনরাবৃত্তি করলে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ও একই উত্তর দেন।
এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৫১২৭. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি নাবী[সাঃআঃ]-এর সাহাবীদেরকে একটি ব্যাপারে এতোটা আনন্দিত দেখিতে পেলাম যে, অন্য কোন ব্যাপারেই এরূপ আনন্দিত হইতে দেখিনি। তা হলো, এক ব্যক্তি বললো, হে আল্লাহর রাসূল! এক ব্যক্তি অপর ব্যক্তিকে তার সৎকাজের জন্য ভালোবাসে, কিন্তু সে তার মতো সৎকাজ করিতে পারে না। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ প্রত্যেক ব্যক্তিই যাকে ভালোবাসে সে তার সাথী হইবে।
এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-১২৪ঃ পরামর্শ করা
৫১২৮. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ পরামর্শদাতা একজন আমানতদার।
এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-১২৫ঃ কল্যাণের দিকে পথ দেখানো
৫১২৯. আবু মাসাউদ আল-আনসারী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, একদা এক ব্যক্তি নাবী [সাঃআঃ]এর নিকটে এসে বললো, হে আল্লাহর রাসূল! আমার কোন বাহন নেই। তাই আমার জন্য একটি বাহনের ব্যবস্থা করে দিন। তিনি বলিলেনঃআমার নিকট তোমাকে বাহন হিসেবে দেয়ার মতো কোন ব্যবস্থা নেই। তবে তুমি অমুকের নিকট যাও, সে হয়তো তোমার সাওয়ারীর ব্যবস্থা করিতে পারবে। অতএব সে তার নিকট গেলে লোকটি তার বাহনের ব্যবস্থা করে দিলো। ঐ ব্যক্তি রসূলুল্লাহ[সাঃআঃ]-কে এ ব্যাপারে জানালে তিনি বলিলেনঃসে ব্যক্তি কোন ভাল কাজের পথ দেখায়, সে উক্ত কাজ সম্পাদনকারীর সমপরিমাণ সওয়াব পায়।
এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-১২৬ঃ অসৎ বাসনা
৫১৩০. আবু দারদা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ কোন বস্তুর প্রতি তোমার ভালোবাসা তোমাকে অন্ধ ও বধির করে দিতে পারে। {৫১২৮}
দুর্বল ঃ যঈফাহ হা/১৮৬৮। {৫১২৮} আহমাদ। সানাদে আবু বকর ইবনি আবু মারইয়াম দুর্বল। এই হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-১২৭ঃ সুপারিশ করা
৫১৩১. আবু মূসা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ তোমরা আমার নিকট সুপারিশ করো, তাহলে তোমরা সাওয়াব লাভ করিতে পারবে। আর নাবীর সিদ্ধান্ত তাই হয় যা আল্লাহর ইচ্ছা করেন।
এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৫১৩২. মুআবিয়াহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
। তোমরা সুপারিশ করো, তাহলে সওয়াব লাভ করিতে পারবে। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ “ তোমরা সুপারিশ করো, সাওয়াব পাবে।” কারণ আমি [মুআবিয়াহ] কোন সিদ্ধান্ত নিতে ইচ্ছাকৃতভাবেই বিলম্ব করি যাতে তোমরা সুপারিশ করে সওয়াব লাভ করিতে পারো। কেননা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ তোমরা সুপারিশ করে সওয়াব অর্জন করো।
এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৫১৩৩. আবু মূসা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] সূত্রে পূর্বোক্ত হাদিসের অনুরূপ বর্ণিত। {৫১৩১}
{৫১৩১} এটি গত হয়েছে হা/৫১৩২। এই হাদিসের তাহকিকঃ নির্ণীত নয়
অনুচ্ছেদ-১২৮ঃ চিঠিপত্রে প্রথমে নিজের নাম লেখা সম্পর্কে
৫১৩৪. আল-আলা [রা.]-এর কোন সন্তান হইতে বর্ণীতঃ
আল-আলা [রাদি.] বাহরাইনে নাবী [সাঃআঃ] কর্তৃক নিযুক্ত গভর্ণর ছিলেন। তিনি যখন নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট চিঠিপত্র লিখতেন তখন তাতে প্রথমে নিজের নাম লিখতেন। {৫১৩২}
{৫১৩২} আহমাদ । সানাদে আলা এর কতিপয় সন্তান মাজহুল । এই হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৫১৩৫. আল-আলা ইবনিল হাদরামী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট চিঠি লিখেছিলেন এবং তাতে প্রথমে নিজের নাম লিখেছিলেন। {৫১৩৩}
এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-১২৯ঃ যিম্মীর নিকট পত্র লিখার নিয়ম
৫১৩৬. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী[সাঃআঃ] রোম সম্রাট হিরাকালের নিকটে চিঠি লিখেছিলেনঃ “আল্লাহর প্রেরিত পুরুষ মুহাম্মাদ [সাঃআঃ]–এর পক্ষ হইতে রোমের সম্রাট হিরাকলের নিকট। যে ব্যক্তি হেদায়াতের অনুসারী তার উপর শান্তি বর্ষিত হোক। ইবনি ইয়াহ্য়াহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণনা করেন, আবু সুফিয়ান [রাদি.] তাহাকে এ ব্যাপারে জানিয়ে দিয়ে বলেন, আমরা হিরাকলের দরবারে উপস্থিত হলে তিনি আমাদেরকে তার সামনে বসালেন। অতঃপর তিনি রসূলুল্লাহ[সাঃআঃ]-এর চিঠি নিয়ে ডাকলেন। তাতে লেখা রয়েছে ঃ বিসমিল্লাহির রহমানির রাহীম; আল্লাহর রাসূল মুহাম্মাদ [সাঃআঃ] –এর পক্ষ হইতে মহান রোম সম্রাট হিরাক্ল–এর প্রতি। যিনি হেদায়েতের অনুসারী তার উপর শান্তি বর্ষিত হোক; অতঃপর।
আবু সুফিয়ানের হাদিস সহিহ।
এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
Leave a Reply