কবিরা গুনাহ ও মুনাফিকির নিদর্শন সমুহের বর্ণনা
কবিরা গুনাহ ও মুনাফিকির নিদর্শন সমুহের বর্ণনা >> মিশকাতুল মাসাবীহ এর মুল সুচিপত্র দেখুন
পর্বঃ ১, অধ্যায়ঃ ১
- অধ্যায়ঃ ১. প্রথম অনুচ্ছেদ
- অধ্যায়ঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
- অধ্যায়ঃ ১. তৃতীয় অনুচ্ছেদ
অধ্যায়ঃ ১. প্রথম অনুচ্ছেদ
৪৯. আবদুল্লাহ ইবনি মাস্ঊদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, এক লোক রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে জিজ্ঞেস করিলও, হে আল্লাহর রসূল! আল্লাহ্র কাছে সর্বাধিক বড় গুনাহ কোন্টা? রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেন, তোমাকে যিনি সৃষ্টি করিয়াছেন, সেই আল্লাহর সাথে কাউকে শারীক করা। অতঃপর পুনরায় সে জিজ্ঞেস করলো, তারপর কোন্টা? তিনি [সাঃআঃ] বললেন, তোমার সন্তান তোমার সাথে খাবে- এ ভয়ে তাকে হত্যা করা। পুনরায় প্রশ্ন করলো, তারপর কোন্টা? তিনি [সাঃআঃ] বললেন, তোমার প্রতিবেশীর স্ত্রীর সাথে ব্যভিচার করা। তিনি {ইব্নু মাসউদ[রাদি.]] বলেছেন, এর সমর্থনে আল্লাহ তাআলা [কুরআনে] অবতীর্ণ করিলেন:
وَالَّذِينَ لَا يَدْعُونَ مَعَ اللهِ إِلَهًا اۤخَرَ وَلَا يَقْتُلُونَ النَّفْسَ الَّتِيْ حَرَّمَ اللّهُ اِلَّا بِالْحَقِّ وَلَا يَزْنُوْنَ ۚ وَمَنْ يَفْعَلْ ذلِكَ يَلْقَ أَثَامًا
“তারাই আল্লাহর প্রকৃত বান্দা, যারা আল্লাহ ব্যতীত অন্য কাউকে মাবূদ হিসেবে গণ্য করে না,আল্লাহ যাদের হত্যা করা হারাম করে দিয়েছেন, আইনের বিধান ছাড়া তাদের [অন্যায়ভাবে] হত্যা করে না এবং ব্যভিচার করে না। আর যে এগুলো করে সে শাস্তির সাক্ষাৎ লাভ করিবে”।– [সূরাহ আল ফুরকান ২৫ : ৬৮]। {১}
{১} সহীহ : বোখারী ৬৮৬১, মুসলিম ৮৬, নাসায়ী ৪০১৩, আবু দাউদ ২৩১০, তিরমিজি ৩১৮২, ইরওয়া ২৩৩৭, সহীহ আত তারগীব ২৪০৩। ঈমাম হাকিম [রাহিমাহুল্লাহ]-এর পাণ্ডুলিপিতে শব্দটি تُزَانِىَ আকারে রয়েছে। তবে মূললিপিতে تُزَانِىَ-এর পরিবর্তে تَزْنِىَ রয়েছে। কবিরা গুনাহ -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
৫০. আবদুল্লাহ ইবনি আমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ.তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন: কাউকে আল্লাহর সঙ্গে শারীক করা, পিতা-মাতার অবাধ্য হওয়া, কাউকে হত্যা করা, মিথ্যা শপথ করা বড় গুনাহ। {১}
{১} সহীহ : বোখারী ৬৬৭৫, নাসায়ী ৪০১১, তিরমিজি ৩০২১, আহমাদ ৬৮৮৪, দারিমী ২৪০৫, সহীহ আল জামি ৪৬০১, সহীহ আত তারগীব ১৮৩১। কবিরা গুনাহ -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
৫১. আর আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
-এর বর্ণনায় মিথ্যা শপথ-এর পরিবর্তে “মিথ্যা সাক্ষ্য” দেয়ার কথা উল্লেখ রয়েছে। {১}
{১} সহীহ : বোখারী ২৬৫৩, মুসলিম ৮৮, তিরমিজি ১৯০১, শামায়িল ১১৩, মুসনাদুল বায্যার ৩৬৩০, শুআবুল ঈমান ৭৮৬৬। কবিরা গুনাহ -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
৫২. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেন : [হে লোক সকল!] সাতটি ধ্বংসাত্মক বিষয় হইতে তোমরা দূরে থাকিবে। সহাবীগণ জিজ্ঞেস করিলেন, হে আল্লাহর রসূল! এ সাতটি বিষয় কী? জবাবে তিনি [সাঃআঃ] বললেন, [১] আল্লাহর সাথে কাউকে শারীক করা। [২] যাদু করা। [৩] শারীআতের অনুমতি ব্যতীত কাউকে [অন্যায়ভাবে] হত্যা করা। [৪] সূদ খাওয়া। [৫] [অন্যায়ভাবে] ইয়াতীমের মাল খাওয়া। [৬] জিহাদের মাঠ থেকে পালিয়ে আসা। [৭] নির্দোষ ও সতী-সাধ্বী মুসলিম মহিলার বিরুদ্ধে ব্যভিচারের অপবাদ দেয়া। {১}
{১} সহীহ : বোখারী ২৭৬৭, মুসলিম ৮৯, নাসায়ী ৩৬৭১, আবু দাউদ ২৮৭৪, শুআবুল ঈমান ৪০০০, সহীহ ইবনি হিব্বান ৫৫৬১, ইরওয়া ১২০২, সহীহ আল জামি ১৪৪, সহীহ আত তারগীব ১৩৩৮। কবিরা গুনাহ -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
৫৩. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন : যিনাকারী যখন যিনা করে তখন আর সে ঈমানদার থাকে না। চোর যখন চুরি করে তখন সে ঈমানদার থাকে না। মদ্যপ যখন মদ পান করে তখন তার আর ঈমান থাক না। যখন ডাকাত এভাবে ডাকাতি করে যে, যখন চোখ তুলে তাকিয়ে থাকে তখন তার ঈমান থাকে না। এভাবে কেউ যখন গনীমাতের মালে খিয়ানাত করে, তখন তার ঈমান থাক না। অতএব সাবধান! [এসব গুনাহ হইতে দূরে থাকিবে]। {১}
{১} সহীহ : বোখারী ২৪৭৫ {শেষ অংশটুকু তথা [وَلَا يَغُلُّ أَحَدُكُمْ حِينَ يَغُلُّ وَهُوَ مُؤْمِنٌ فَإِيَّاكُمْ إِيَّاكُمْ] ব্যতীত], মুসলিম ৫৭, আবু দাউদ ৪৬৮৯, নাসায়ী ৪৮৭০, তিরমিজি ২৬২৫, ইবনি মাজাহ ৩৯৩৬, সহীহাহ্ ৩০০০, সহীহ আত তারগীব ২৩৫৫; শব্দগুলো মুসলিমের। কবিরা গুনাহ -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
৫৪. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
ইবনি আব্বাস [রাদি.] এর বর্ণনায় এটাও আছে, হত্যাকারী যখন অন্যায়ভাবে কাউকে হত্যা করে, সে সময়ও তার ঈমান থাকে না। ইকরিমাহ্ [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, আমি ইবনি আব্বাস [রাদি.]-কে জিজ্ঞেস করলাম, কিরূপ ঈমান তার থেকে বের করে নেয়া হবে? তিনি বললেন, এভাবে [এ কথা বলে] তিনি তার হাতের অঙ্গুলিসমূহ পরস্পরের ফাঁকের মধ্যে ঢুকিয়ে দিয়ে, পরে তা পৃথক করে নিলেন। অতঃপর সে যদি তাওবাহ্ করে, তাহলে পুনরায় ঈমান তার মধ্যে এভাবে ফিরে আসবে- এ কথা বলে পুনরায় তিনি দুই হাতের আঙ্গুলসমূহ পরস্পরের ফাঁকের মধ্যে ঢুকিয়ে দিলেন। আর আবু আবদুল্লাহ ঈমাম বোখারী [রাহিমাহুল্লাহ] বলেছেন, সে মুমিন থাকে না। অর্থাৎ সে প্রকৃত বা পূর্ণ মুমিন থাকে না কিংবা তার ঈমানের নূর থাকে না। এটা বোখারীর বর্ণনার হুবহু শব্দাবলী। {১}
{১} সহীহ : বোখারী ৬৮০৯। কবিরা গুনাহ -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
৫৫. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন: মুনাফিক্বের নিদর্শন তিনটি- [১] যখন কথা বলে, মিথ্যা বলে; [২] যখন ওয়াদা করে, তা ভঙ্গ করে এবং [৩] যখন তার নিকট কোন আমানাত রাখা হয়, তার খিয়ানাত [বিশ্বাসঘাতকতা] করে। ঈমাম মুসলিমের বর্ণনায় আরো আছে, চাই সে নামাজ আদায় করুক ও সিয়াম পালন করুক এবং দাবী করে সে মুসলিম। {১}
{১} সহীহ : বোখারী ৩৩, মুসলিম ৫৯, তিরমিজি ২৬৩১, আহমাদ ৮৬৮৫, শুআবুল ঈমান ৪৪৬৫, সহীহ আত তারগীব ২৯৩৬। اَبُوْ عَبْدُ اللهِ [আবু আবদুল্লাহ [রাদি.]] এটি ঈমাম বোখারীর উপনাম। কবিরা গুনাহ -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
৫৬. আবদুল্লাহ ইবনি আম্র [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন : চারটি স্বভাব যার মধ্যে পাওয়া যাবে, সে খাঁটি মুনাফিক্ব এবং যার মধ্যে তার একটি দেখা যাবে তার মধ্যে মুনাফিক্বের একটি স্বভাব থাকিবে, যে পর্যন্ত না সে তা পরিহার করিবে- [১] যখন তার নিকট কোন আমানাত রাখা হয় সে তা খিয়ানাত করে, [২] যখন কথা বলে, মিথ্যা বলে, [৩] যখন ওয়াদা করে, ভঙ্গ করে এবং [৪] যখন কারো সাথে ঝগড়া-বিবাদ করে, তখন সে অশ্লীলভাষী হয়। {১}
{১} সহীহ : বোখারী ৩৪, মুসলিম ৫৮, আবু দাউদ ৪৬৮৮, তিরমিজি ২৬৩২, আবু দাউদ ৬৭৬৮, সহীহ ইবনি হিব্বান ২৫৪, সহীহ আত তারগীব ২৯৩৭। কবিরা গুনাহ -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
৫৭. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন : মুনাফিক্বের দৃষ্টান্ত সে বকরীর ন্যায়, যে দুই ছাগপালের মধ্যে থেকে [নরের খোঁজে] একবার এ পালে ঝুঁকে আর একবার ঐ পালের দিকে দৌড়ায়। {১}
কবিরা গুনাহ -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
অধ্যায়ঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৫৮. সাফ্ওয়ান ইবনি আস্সাল [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, একদা এক ইয়াহূদী তার সঙ্গীকে বলিল, এসো, আমাকে এ নবী লোকটির নিকট নিয়ে চল। সঙ্গী বলিল, তাঁকে নবী বলবে না, কারণ সে যদি তা শুনে তাহলে সে আনন্দে আত্মহারা হয়ে যাবে। অতঃপর তারা উভয়ে রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট এলো এবং তাঁকে [মূসার] নয়টি স্পষ্ট হুকুম সম্পর্কে জিজ্ঞেস করিল। রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেন : [১] আল্লাহর সাথে কাউকে শারীক করিবে না, [২] চুরি করিবে না, [৩] ব্যভিচার করিবে না, [৪] {শারীআতের অনুমতি ব্যতিরেকে] কউকে হত্যা করিবে না যা আল্লাহ হারাম করিয়াছেন, [৫] [মিথ্যে অপবাদ দিয়ে] কোন নিরপরাধ ব্যক্তিকে হত্যা করবার জন্য আদালতের নিকট নিয়ে যাবে না, [৬] যাদু করিবে না, [৭] সুদ খাবে না, [৮] কোন সতী-সাধ্বীর উপর ব্যভিচারের মিথ্যা অভিযোগ দিবে না, [৯] জিহাদকালে ময়দান তেকে পিঠ ফিরিয়ে পলায়নের উদ্দেশে আসবে না। আর হে ইয়াহূদীরা! তোমাদের জন্য শনিবারের ব্যাপারে আল্লাহ হুকুমের সীমালঙ্ঘন করো না। বর্ণনাকারী [সাফওয়ান] বললেন, তার উভয়ে নবী [সাঃআঃ]-এর দুই হাতে-পায়ে চুম্বন করিল এবং বলিল : আমরা সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, সত্যিই আপনি আল্লাহর নবী! নবী [সাঃআঃ] বললেন, আমার অনুসরণের পথে তোমাদের বাধা কী? তারা বলিল, [সত্যি কথা হল] দাউদ [আঃ] আল্লাহর নিকট দুআ করেছিলেন যে, নবী সবসময় যেন তার বংশে জন্মগ্রহণ করেন। সুতরাং আমাদের ভয় হয়, যদি আমরা আপনার অনুসারী হই তাহলে ইয়াহূদীরা আমাদেরকে হত্যা করিবে। {১}
{১} জইফ : তিরমিজি ২৭৩৩, নাসায়ী ৪০৭৮; হাদিসটি আবু দাঊদে নেই।اَلزَّحَفُ [আয্ যাহাফু] অর্থ বিধর্মীদের সাথে যুদ্ধ বা কাফিরদের সাথে যুদ্ধ। اَلْيَهُوْدُ শব্দের পূর্বে اَعْنِىْ ক্রিয়া গোপন রয়েছে। হাদিসটি ঈমাম নাসায়ী [রাহিমাহুল্লাহ] ২/১৭২ নং পৃষ্ঠায় রক্ত হারাম হওয়া সম্পর্কিত অধ্যায়ে, ঈমাম তিরমিজি [রাহিমাহুল্লাহ] অনুমতি প্রার্থনা এবং তাফসীর অধ্যায় এবং ঈমাম আহমাদ [রাহিমাহুল্লাহ] ৪/২৪০ নং পৃষ্ঠায় বর্ণনা করিয়াছেন। তবে ঈমাম আবু দাউদ [রাহিমাহুল্লাহ]-এর দিকে হাদিসটি নিসবাতকরণে বিবেচনার অবকাশ রয়েছে। কেননা নাবুলসী হাদিসটি তার اَلزَّخَائِرُ [আয্ যাখা-য়ির] নামক গ্রন্থের ১/২৭০ নং পৃষ্ঠায় ঈমাম আবু দাউদ [রাহিমাহুল্লাহ]-এর দিকে নিসবাত করেননি। হাদিসটির সানাদে দুর্বলতা রয়েছে। অর্থাৎ- হাদিসটি দুর্বল; এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস
৫৯. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন: তিনটি বিষয় ঈমানের মূল ভিত্তি বা স্তম্ভ। [১] যে ব্যক্তি লা-ইলা-হা ইল্লাল্ল-হ স্বীকার করে নেয়, তার প্রতি আক্রমণ করা হইতে বিরত থাকা; কোন গুনাহের দরুন তাকে কাফির বলে মনে করিবে না এবং কোন আমালের কারণে তাকে ইসলাম হইতে খারিজ মনে করিবে না [যে পর্যন্ত না তার দ্বারা সুস্পষ্ট কোন কুফ্রী কাজ করা হয়]। [২] যেদিন হইতে আল্লাহ আমাকে নবী করে পাঠিয়েছেন, সেদিন থেকে এ উম্মাতের শেষ দিকের লোকেরা দাজ্জালের সাথে জিহাদ করা পর্যন্ত [ক্বিয়ামাত অবধি] চলতে থাকিবে। কোন অত্যাচারী শাসকের অবিচার অথবা কোন সুবিচারী বাদশার ইনসাফ এ জিহাদকে বাতিল করিতে পারবে না এবং [৩] তাক্বদীরের প্রতি বিশ্বাস। {১}
{১} জইফ : আবু দাউদ ২৫৩২, যঈফুল জামি ২৫৩২। কারণ এর সানাদে ইয়াযীদ বিন আবী নাবশাহ্ নামে একজন অপরিচিত রাবী রয়েছে যদিও হাদিসটি অর্থগতভাবে সহীহ। এই হাদিসটির তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস
৬০. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন: যখন কোন বান্দা ব্যভিচারে লিপ্ত হয় তখন তার থেকে [তার অন্তর থেকে] ঈমান বেরিয়ে যায় এবং তা তার মাথার উপর ছায়ার ন্যায় অবস্থিত থাকে। অতঃপর যখন সে এ অসৎকাজ থেকে বিরত হয় তখন ঈমান তার নিকট প্রত্যাবর্তন করে। {১}
{১} সহীহ : আবু দাউদ ৪৬৯০, তিরমিজি ২৬২৫, সহীহুত্ তারগীব ২৩৯৪; হাদিসের শব্দগুলো তিরমিজির। কবিরা গুনাহ -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
অধ্যায়ঃ ১. তৃতীয় অনুচ্ছেদ
৬১. মুআয [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাকে দশটি বিষয়ে ওয়াসিয়্যাত বা উপদেশ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন : [১] আল্লাহর সাথে কাউকে শারীক করিবে না, যদিও তোমাকে হত্যা করা হয় অথবা আগুনে জ্বালিয়ে দেয়া হয়। [২] পিতা-মাতার অবাধ্য হবে না, যদি মাতা-পিতা তোমাকে তোমার পরিবার-পরিজন বা ধন সম্পদ ছেড়ে দেয়ার হুকুমও দেয়। [৩] ইচ্ছাকৃতভাবে কথনও কোন ফার্য নামাজ ছেড়ে দিও না। কারণ যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে ফারয্ নামাজ পরিত্যাগ করে, আল্লাহ তাআলা তার থেকে দায়িত্ব উঠিয়ে নেন। [৪] মদ পান হইতে বিরত থাকিবে। কেননা তা সকল অশ্লীলতার মূল। [৫] সাবধান! আল্লাহর নাফরমানী ও গুনাহ থেকে বেঁচে থাক, কেননা নাফরমানী দ্বারা আল্লাহর ক্রোধ অবধারিত হয়ে যায়। [৬] জিহাদ হইতে কখনো পালিয়ে যাবে না, যদিও সকল লোক মারা যায়। [৭] যখন মানুষের মধ্যে মহামারী ছড়িয়ে পড়ে আর তুমি সেখানেই রয়েছ, তখন সেখানে তুমি অবস্থান করিবে [পলায়নপর হবে না]। [৮] শক্তি-সামর্থ্য অনুযায়ী নিজের পরিবার-পরিজনের জন্য খরচ করিবে [কার্পণ্য করে তাদের কষ্ট দিবে না]। [৯] পরিবারের লোকেদেরকে আদাব-কায়দা শিক্ষার জন্য কক্ষনও শাসন হইতে বিরত থাকিবে না এবং [১০] আল্লাহ তাআলা সম্পর্কে তাদেরকে ভয় প্রদর্শন করিতে থাকিবে। {১}
{১} হাসান লিগয়রিহী : আহমাদ ২১৫৭০, সহীহুত্ তারগীব ২৩৯৪। এখানে مَوْتٌ দ্বারা প্লেগ, মহামারী উদ্দেশ্য। এই হাদিসটির তাহকীকঃ হাসান লিগাইরিহি
৬২. হুযায়ফাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নিফাক্বের হুকুম রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর যুগেই ছিল। বর্তমানে হয় তা কুফ্রী, না হয় ঈমান। {১}
{১} সহীহ : বোখারী ৭১১৪, নাসায়ী ৩৪৩৩, সহীহ আল জামি ১৭৩২, ইরওয়া ২০৬২। কবিরা গুনাহ -এই হাদিসটির তাহকীকঃ সহীহ হাদিস
Leave a Reply